দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে ফিল্ড ওয়ার্কে গিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মারধরের শিকার হওয়ার ঘটনায় দিনাজপুরের নবাবগঞ্জ থানায় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। এরপর পুলিশ অভিযুক্ত আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে পাঁচজনকে জামিন দিয়েছেন আদালত। বাকি তিনজনকে আদালতের আদেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস ওয়াহিদ সোমবার দৈনিক বাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জবি শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় রাতে সবুজ মিয়া (২৯), রেজওয়ান আহম্মেদ (১৮), আশরাফুল ইসলাম (১৭), প্রভাস কিস্কু (৩৬), আজিজুল হক (৩৯), জাহিদুল ইসলাম (৪৫), মানিকুল ইসলাম (৩২) ও সালমা আক্তার (২১) নামে স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটের সাত কর্মচারী ও এক দর্শনার্থীসহ আটজনকে আটক করা হয়েছিল। পরে শিক্ষার্থী অনামিকা আক্তার নবাবগঞ্জ থানায় মামলা করলে সেই মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই আটজনকে দুপুরে আদালতে উপস্থাপন করা হয়।
আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) রবিউল ইসলাম রবি বলেন, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোস্তানছির বিল্লাহ গ্রেপ্তার আট আসামিকে আদালতে উপস্থাপন করেছিলেন। বিচারক রিমেন্ট রায় তাদের মধ্যে পাঁচজনকে জামিন দেন, বাকি তিনজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
রোববার দিনাজপুর স্বপ্নপুরী পিকনিক স্পটে ফিল্ড ওয়ার্কে গিয়ে হামলার শিকার হন জবি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা। হামলায় অন্তত ১২ জন আহত হন। তাদের দিনাজপুরের এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
জবি শিক্ষার্থীরা বলছেন, স্বপ্নপুরী পার্কে কর্মচারীরা এক নারী শিক্ষার্থীর সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করলে তার বন্ধুরা এর প্রতিবাদ করেন। এ সময় পার্কের কর্মচারীরা জড়ো হয়ে লাঠিসোঁটা ও রড নিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান।
ফিল্ড ওয়ার্কে অংশ নেয়া ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শ্রেয়সী শিকদার মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা ১৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা বিভাগের ফিল্ড ওয়ার্কের কাজে দিনাজপুরের স্বপ্নপুরীতে আসি। রাইডে কর্মরত এক ছেলে আমাদের এক বান্ধবীকে ব্যাগ ফেরত আনার সময় উত্ত্যক্ত করলে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়। পরে তারা হঠাৎ করে জড়ো হয়ে লাঠিসোঁটা, রড নিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ চালায়। আমাদের সহপাঠীরা গুরুতর আহত হয়েছে। হামলায় দুই শিক্ষার্থীর মাথা ফেটেছে, এক শিক্ষার্থীর পা ভেঙেছে। আহতদের নিয়ে আমরা এখনো দিনাজপুর মেডিকেলে আছি।’
বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘আমাদের এক ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করলে পার্কের কর্মচারীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে অতর্কিতভাবে তারা রড ও লাঠি দিয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর আঘাত করেন। এ ঘটনায় আমাদের শিক্ষকসহ ১৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। তারা বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা গুরুতর আহত হয়েছেন। আমি সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছি। অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনার ব্যাপারে আমরা আইনি ব্যবস্থা নেব।’
বড় বড় ব্যানার-ফেস্টুন আর তোরণে ঢেকে আছে রাজবাড়ী পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়ক। গাছে বড় বড় পেরেক মেরে ও সড়কের বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে শুরু করে ল্যাম্পপোস্ট, এমনকি শহরের সৌন্দর্যবর্ধনে সড়ক ডিভাইডারের মাঝে লাগানো গাছে দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক নেতা ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের পোস্টার এবং ওয়াজ মাহফিল, বিভিন্ন কোম্পানির ব্যানার, পোস্টার ও প্লাকার্ড।
নিয়মনীতি ও আইনের তোয়াক্কা না করেই সড়কগুলোতে বাঁশ ও কাঠের কাঠামোতে লাগানো হয়েছে এসব ব্যানার ও ফেস্টুন। এতে যেমন নষ্ট হচ্ছে শহরের সৌন্দর্য তেমনি ঘটছে নানা ধরনের দুর্ঘটনা। তাই শহর থেকে এসব ব্যানার-ফেস্টুন ও প্লাকার্ড অপসারণের দাবি শহরবাসীর।
সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজবাড়ী পৌরসভার জেলা পরিষদের সামনে থেকে বড়পুল মোড় পর্যন্ত, বড়পুল থেকে শুরু করে ১নং রেলগেট পর্যন্ত তোরণ, বিলবোর্ড আর ব্যানার-ফেস্টুনের রাজত্ব। বিভিন্ন কোচিং সেন্টারসহ নানা বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান লাগিয়েছে ব্যানার ও পোস্টার। এতে সৌন্দর্য হারাচ্ছে সবুজের রাজবাড়ী শহর।
রাজবাড়ী পৌরসভার বেশ কয়েকজন বাসিন্দারা বলেন, ‘রাজবাড়ী ছোট্ট একটি শহর। এই শহরের সৌন্দর্য-ঐতিহ্য রয়েছে। জেলা পরিষদ থেকে রাজবাড়ীর ১নং রেলগেট, ১নং রেলগেট হয়ে রাজবাড়ী মুরগির ফার্ম পর্যন্ত শহরের সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য সড়ক ডিভাইডারের মাঝে সবুজ গাছ লাগিয়েছে পৌরসভা। তবে বর্তমানে ব্যানার-ফেস্টুন রাজবাড়ী শহরের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। এগুলো দ্রুত অপসারণের দাবিও তাদের।’
শহরের শ্রীপুর এলাকার ব্যবসায়ী ওয়াজিফ হোসেন বলেন, ‘কয়েক দিন আগেই সড়ক ভবনের আগে তিন রাস্তার মোড়ে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় এক আরোহীর মৃত্যু হয়। তিনি রাস্তা পার হওয়ার সময় প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই মোড়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের ব্যানার ও প্লাকার্ড থাকার কারণে রাস্তার বিপরীত পাশে কিছু দেখতে পাননি তিনি। ফলে ওই দুর্ঘটনাটি ঘটে। তাই অতিদ্রুত শহরের বিভিন্ন মোড়ে থাকা ব্যানার-ফেস্টুন ও প্লাকার্ড অপসারণ করতে হবে। তা না হলে আরও বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।’
শহরের বড়পুল এলাকার বাসিন্দা শিমুল, হাসান, তৈয়ব, অতুল বলেন, ‘রাস্তার মাঝখানে এত প্লাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার যে, রাস্তার বিপরীত পাশে কিছু দেখা যায় না। এতে নানা ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই রাজবাড়ী শহরবাসীর দাবি শহরের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে এগুলো অপসারণ করতে হবে।’
ইউসিসি কোচিং সেন্টারের ৩৫টি ফেস্টুন লাগিয়েছে শহরের বিভিন্ন স্থানে। রাজবাড়ী ইউসিসি কোচিং শাখার পরিচালক মেহেদী চিশতি বলেন, ‘আমরা শুধু কলেজের সামনে ফেস্টুনগুলো লাগিয়ে থাকি।’
রাজবাড়ী পৌরসভার মেয়র আলমগীর শেখ তিতু বলেন, ‘আমরা মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে ব্যানার-ফেস্টুন অপসারণ করি। কিছুদিন পর নেতা ও ব্যবসায়ীরা আবার ব্যানার-ফেস্টুন লাগানো শুরু করেন। দ্রুত আমরা কঠোর অবস্থানে যাব। কোনোভাবেই শহরের সৌন্দর্য নষ্ট হতে দিব না।’
কক্সবাজারের উখিয়ায় অস্ত্রসহ জুনায়েদ (১৯) নামে এক রোহিঙ্গা তরুণকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন, ১৪ এপিবিএন-এর অধিনায়ক (অতি. ডিআইজি) মো. ইকবাল।
তিনি জানান, ১৪ এপিবিএন-এর সহ-অধিনায়ক (পুলিশ সুপার) মো. সাইফুজ্জামানের নির্দেশনায় ইরানীপাহাড় পুলিশ ক্যাম্পের ক্যাম্প কমান্ডার অংশু কুমার দেবের নেতৃত্বে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮/ওয়েস্ট-এর ব্লক-আই/১৮ এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জুনায়েদকে আটক করা হয়।
এসময় তার কাছ থেকে ১টি ওয়ান শুটারগান, রিভলবারের গুলি ৭টি, শটগানের কার্তুজ ৪টি (২টি ফায়ারকৃত), রাইফেলের গুলি ১৩টি এবং রাইফেলের গুলির খোসা (১৯টি) উদ্ধার করা হয়।
এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
গ্রিন রাউজান আর ক্লিন রাউজান গড়ার প্রত্যয়ে অনন্য এক নজির সৃষ্টি করল রাউজান পৌরসভা মেয়র জমিরউদ্দীন পারভেজ। তিনি সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর নির্দেশে পৌর এলাকাকে প্লাস্টিকমুক্ত ও আবর্জনামুক্ত করার লক্ষ্যে এলাকায় প্রথমবারের মতো বসালেন আবর্জনার হাট। বিশেষ করে দুস্থ ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষরা এলাকার প্লাস্টিক বোতল আর ময়লা বস্তা ভর্তি করে এনে হাটে বিক্রি করবে, আর প্রতিবস্তা ১০০ টাকায় কিনে নেবে পৌরসভা।
উল্লেখ্য, সারা বাংলাদেশের পৌরসভার ইতিহাসে এই উদ্যোগ ও আয়োজন প্রথমবারের মতো বলে জানান মেয়র জমিরউদ্দীন পারভেজ।
গত ২০২২ সালে প্রথম পৌরসভায় এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন পিংকসিটিখ্যাত রাউজানের সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় রাউজান পৌরসভার অপচনশীল বর্জ্য সংগ্রহ কর্মসূচি দেশজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। এই কৌশল অনুসরণ করার জন্য দেশের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতাভুক্ত পৌরসভাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে সরকারি সংস্থা। পরিবেশ অধিদপ্তরের বিভাগীয় পর্যায়ের এক বৈঠকে রাউজান পৌরসভার মেডিকেল বর্জ্য সংগ্রহ কর্মসূচির প্রশংসা করা হয়। এই কর্মসূচি দেশের অন্য পৌরসভায় অন্তর্ভুক্ত করে বাস্তবায়নের সুপারিশও করা হয়।
রাউজান পৌরসভা সূত্রে জানা যায়, বিগত ২০২২ সালের শেষের দিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ স্মারকমূলে জারি করা এক চিঠিতে বলা হয়, তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতিকরণ (পৌর) প্রকল্পের আওতায় যেসব পৌরসভা অন্তর্ভুক্ত আছে, সেসব পৌরসভা বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় রাউজান পৌরসভার কৌশল গ্রহণ করে প্রকল্প হাতে নিতে হবে। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, রাউজানের সংসদ সদস্য ফজলে করিম চৌধুরীর পরামর্শে রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দীন পারভেজ প্রায় এক বছর আগে পৌরসভার পরিবেশবান্ধব ও পরিচ্ছন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। সংসদ সদস্য প্রায় প্রতি সপ্তাহে বর্জ্য কেনার হাটে উপস্থিত থেকে ক্রেতা-বিক্রেতাকে প্রেরণা দিয়ে আসছিলেন। এই প্রক্রিয়া ও বর্জ্যহাট চলমান রেখে মেয়র প্রশংসিত হয়েছেন।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে মেয়র বলেন, ‘পৌরসভাকে দূষণমুক্ত, পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশবান্ধব রাখার জন্য এই কর্মসূচি চলমান রেখেছি। এই কর্মসূচির আওতায় সুবিধাবঞ্চিত ও দুস্থ মানুষের কাছ থেকে প্রতিবস্তা ১০০ টাকা করে কিনে নিচ্ছি। এতে ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে। শত শত মানুষ প্রতি হাটে কয়েক বস্তা বর্জ্য নিয়ে হাজির হয়। এতে করে এলাকা প্লাস্টিক ও আবর্জনামুক্ত হচ্ছে, তারাও লাভবান হচ্ছে আর্থিকভাবে।
পরিচ্ছন্নতা ও দূষণমুক্ত এ কর্মসূচি নিয়ে জনগণকে সচেতন করতে পৌরসভার উদ্যোগে নানা আয়োজন অব্যাহত রয়েছে। সামাজিক সংগঠন, গার্লস গাইড, স্কাউট ছাড়াও ছাত্রছাত্রীদের মাঝেও এ কর্মসূচি ছড়িয়ে দেয়ার নানান প্রচেষ্টা রয়েছে পৌরসভার।’
একটি সূত্র জানায়, এ পর্যন্ত প্রায় ৫০ হাজার বস্তা বর্জ্য সংরক্ষিত হয়েছে। সংরক্ষিত প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে প্লাস্টিক সরঞ্জাম এবং পচনশীল আবর্জনা থেকে জৈব সার ও মাছ-মুরগির খাদ্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
রাউজান পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে ৪০ শতক জায়গায় প্রতিষ্ঠিত ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ ফ্যাক্টরিতে পচনশীল বর্জ্য থেকে এ পর্যন্ত ৩৫ টন সার এবং ৭ টন লার্ভা উৎপাদিত হয়। প্রায় ১০০ টন বর্জ্য থেকে এসব উৎপাদিত হয়।
পৌরসভার কনজারভেন্সি ইন্সপেক্টর মো. এরফান উদ্দীন আবীর বলেন, এই ১০০ টন বর্জ্য যদি এলাকার আনাচ-কানাচে পড়ে পচে যেত, তাতে পরিবশে দূষিত হতো, মিথেন গ্যাস প্রভাব ফেলত বায়ুমণ্ডলে। প্লাস্টিক ফ্যাক্টরি থেকেও রিসাইক্লিং করে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন প্লাস্টিক সামগ্রী, যেমন তার, প্লাস্টিক চিপস ইত্যাদি। কয়েক মাসের মধ্যেই সেসব পণ্য রপ্তানি শুরু হবে, যা এখন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার হাজিপুর ইউনিয়নে জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরীর উদ্ভাবন এক রোপণে পাঁচবার ফলন দেয়া পঞ্চব্রীহি ধানের ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন সিলেট কৃষি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ২০ শিক্ষার্থী ও ২ শিক্ষক।
শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার হাজিপুর গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়টির একজন অধ্যাপক ও একজন সহকারী অধ্যাপকসহ মোট ২০ জন শিক্ষার্থী শিক্ষা সফরে যান।
শুরুতেই বিশিষ্ট জিন বিজ্ঞানী ড. আবেদ চৌধুরী তার বাড়িতে রাখা পঞ্চব্রীহি ধানের মডেল দেখিয়ে এ ধান চাষাবাদ, ফসল পরিচর্যা ও কাটা এবং ফলন সম্পর্কে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সামনে উপস্থাপন করেন। এরপর শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের এ ধান সম্পর্কে নানা প্রশ্নের জবাব দেন ড. আবেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘বছরে বোরো মৌসুমে প্রথমবার রোপণের ১১০ দিন থেকে ১২০ দিনে ফসল কাটা হয়। পরবর্তীতে ৪৫ দিন পর দুবার (৯০ দিনে) আউশে এ ধানের ফলন হয়। এরপর আমনের সময় আরও দুবার ফলন পাওয়া যায়।’
এ ধানের চাষাবাদ সরেজমিনে গিয়ে দেখে মুগ্ধ হয়েছেন সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, ‘বর্তমানে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন একটি বিরাট হুমকি। আমরা যদি পতিত ও কৃষি জমিতে সারা বছরের জন্য পঞ্চব্রীহি ধান লাগাতে পারি, তাহলে তা বায়ুমণ্ডলের গ্রিণহাউস গ্যাস শোষণ করে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবেলায় বিরাট সহযোগিতা করবে।’
টিলাগাঁও ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালিক বলেন, ‘আমি প্রথমেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের এলাকার কৃতি সন্তান ড. আবেদ চৌধুরীকে। উনার এই উদ্ভাবন আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে। আমরা স্বপ্ন দেখি দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। এখানে সবাই বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা এসেছেন। আজকে এই শিক্ষাসফর শিক্ষার্থীদের হাতে কলমে বিজ্ঞান শেখায় আগ্রহী করে তুলবে। সর্বোপরি আমি আজকের এই শিক্ষাসফরের আয়োজকবৃন্দকে ধন্যবাদ জানাই।’
নাটোরের গুরুদাসপুরে পাওনা টাকা পরিশোধ করতে না পারায় আসাদ আলী (৫৫) নামে এক কৃষককে শিকলবন্দী করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার বাহাদুরপাড়া গ্রামের একটি বাড়ির বারান্দায় আসাদ আলীকে শিকলবন্দী করে রাখা হয়। তিনি সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার ঈশ্বরপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আসাদ জানান, তিন বছর আগে নাটোরের গুরুদাসপুরের বাহাদুরপাড়া গ্রামের আব্দুল আজিজের কাছ থেকে ৮০ হাজার টাকা নেন তিনি। দুই বছরে ২০ হাজার টাকা সুদ এবং আসল ৩০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন। বাকি ৫০ হাজার টাকা এ বছরের শুরুতে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু হঠাৎ করেই অভাবগ্রস্থ হয়ে পড়ায় বাকি টাকা সময়মতো পরিশোধ করতে পারেননি তিনি।
ওই কৃষক আরও জানান, শনিবার সকালে আব্দুল আজিজ ও তার বাবা আফজাল হোসেনসহ কয়েকজন লোক তাকে তার নিজ বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান। এরপর আজিজের বাড়ির বারান্দায় কোমরে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয় তাকে।
এ সময় টাকা পরিশোধ করতে না পারলে হাত পা ভেঙে ফেলার হুমকিও দেয়া হয় বলে অভিযোগ করেন আসাদ আলী।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত আব্দুল আজিজ শিকলবন্দী করে রাখার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘অনেক দিন হলো পাওনা টাকা ফেরত চেয়েও সে টাকা দিতে পারেনি। তাই তাকে এনে শিকলবন্দী করে রাখা হয়েছে, যেন সে পালিয়ে যেতে না পারে।’
এ বিষয়ে গুরুদাসপুরে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা. মোনায়ারুজ্জামান বলেন, ‘সন্ধ্যার পর খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকেই পাওয়া যায়নি।’
ওসি বলেন, ‘এ বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা অমলেন্দু কুমার দাশ। ভারতের কারাগারে বন্দি ৩ শতাধিক বাংলাদেশি এবং বাংলাদেশের কারাগারে বন্দি ভারতের ১৯ নাগরিককে মুক্ত করে মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি।
সমাজের আর ১০ জনের মতো ৯টা-৫টার সরকারি চাকরি, বাজার আর সংসার-ধর্ম করেই কাটিয়ে যেতে পারতেন জীবনটা। কিন্তু পরের দুঃখে কাতর মানবিক এ মানুষটিকে জীবন এখন অন্য এক মোড়ে নিয়ে দাঁড় করিয়েছে। গাঁটের পয়সা খরচ করে নিরপরাধ ব্যক্তিদের কারামুক্ত করা এখন তার নেশায় পরিণত হয়েছে।
অমলেন্দু কুমার দাশ মৌলভীবাজার সদর উপজেলার দক্ষিণ বাড়ন্তি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। সরকারি চাকরির পাশাপাশি তিনি মানবকল্যাণমূলক কাজ, লোকসাহিত্য ও গবেষণাধর্মী লেখা-লেখিসহ লোকজসংস্কৃতি রক্ষায় কাজ করছেন।
অমলেন্দু কুমার দাশ জানান, ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩ শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিককে ভারতের বিভিন্ন কারাগার থেকে মুক্ত করে তাদের স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। তাকে এ কাজে তাড়া করে ফেরে বৃদ্ধা মায়ের চোখের জল, অনেক বন্দির করুণকাহিনি ও নীরব চাহনি।
শুরুর কথা অমলেন্দু এভাবে বলছিলেন দৈনিক বাংলাকে। ভারতের আসামের পাথারকান্দির জয়ন্তী বিশ্বাস ছেলেকে নিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে মেয়ের বাড়ি বেড়াতে এসে গ্রেপ্তার হয়ে মৌলভীবাজার কারাগারে বন্দি হন। আদালত তাদের ১ মাসের জেল দেন। কিন্তু সাজার মেয়াদ শেষ হলেও নানান প্রশাসনিক জটিলতায় তারা নিজ দেশে যেতে পারছিলেন না। ১৪ মাস পর আসামের এমএলএ কৃষ্ণেন্দু পালের অনুরোধে অমলেন্দু বাবু প্রায় দুই মাস সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দৌড়ঝাঁপ করে তাদের মুক্তির আদেশ হাতে পান। অবশেষে ১৬ মাসের বন্দিজীবন শেষে মা-ছেলেকে আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে নিজ দেশে ফিরিয়ে দেন। এ সময় তাদের কান্নাতে সেদিন বর্ডার এলাকার পরিবেশ অন্যরকম হয়ে ওঠে। মা-ছেলের ঘরে ফেরার আনন্দে অমলেন্দু বাবুর এ ধরনের কাজে উৎসাহ বেড়ে যায়।
পরবর্তীতে তিনি মৌলভীবাজার জেলা কারাগারের সব ভারতীয় বন্দি এবং সিলেট জেলা কারাগারের কয়েকজন বন্দিকে ভারতে নিজ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেন। এই বন্দিদের অনেকেই ১৪/১৯ বছরপর্যন্ত বাংলাদেশের কারাগারে মুক্তিপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে দিন কাটাচ্ছিলেন।
অমলেন্দু বাবুর এ মহতী কাজ মিডিয়াতে প্রচার হলে ভারতীয় কয়েকজন সংবাদকর্মী ও সমাজসেবক অমলেন্দু বাবুকে জানান, আসামের বিভিন্ন কারাগারে অনেক বাংলাদেশি নাগরিক বন্দি রয়েছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৮ থেকে এ পর্যন্ত উভয় দেশের আইনি ও প্রশাসনিক জটিলতা নিরসন করে আসাম ও মেঘালয় রাজ্যের বিভিন্ন কারাগারের বন্দির পরিবারকে খুঁজে বের করে ৩ শতাধিক বাংলাদেশি নাগরিককে নিজ দেশে স্বজনদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।
তিনি আরও জানান, বেতনের একটা অংশ তিনি এ কাজে ব্যয় করে থাকেন। পুরো কাজটি স্বেচ্ছাশ্রমের মানসিকতা থেকে করছেন। অসহায় বন্দিদের মুক্ত করা এখন তার নেশায় পরিণত হয়েছে। বন্দিদের মুক্ত করার আনন্দে তিনি সব কষ্ট ও যন্ত্রণা ভুলে যান। ভুক্তভোগী পরিবারের কাছে অমলেন্দু দাশ একজন মহামানব। সাধারণ মানুষের কাছে তিনি মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে পরিচিত।
অবশেষে বিয়ের পিঁড়িতে বসছেন টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সাজানপুর উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ পাল। কনে কালিহাতী উপজেলার মগড়া গ্রামের সত্যপালের মেয়ে স্বর্ণা পাল, তিনি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। তবে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এই বিয়ের বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জানিয়েছেন।
জানা গেছে, গোপালপুর পালপাড়ার বাসিন্দা রতন লাল পালের ছেলে রনি প্রতাপ পাল গত শুক্রবার আশীর্বাদ অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন। আগামী ১৫ ডিসেম্বর তার বিয়ের বাকি কাজ সম্পন্ন হবে।
বিদ্যালয়ে সহশিক্ষা চালু থাকায়, গত জুলাই মাসে ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিয়ে করতে রনি প্রতাপ পালকে নোটিশ ধরিয়ে দিয়েছিলেন প্রধান শিক্ষক। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
রনি প্রতাপ পাল বলেন, ‘কোনো চাপে নয়, পরিবারের পছন্দেই বিয়ে করতে যাচ্ছি, সবার দোয়া চাই। এখন পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ছোটখাটো অনুষ্ঠান করায় কাউকে বলা হয়নি, বিয়ের অনুষ্ঠানে অবশ্যই প্রধান শিক্ষককে দাওয়াত দেয়া হবে।’
বিয়ের বিষয়ে অবগত না থাকায়, প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম এ বিষয়ে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
নিয়মবহির্ভূত বিয়ের নোটিশ দেয়ায় ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে একাধিক সরকারি তদন্ত চলমান রয়েছে। প্রধান শিক্ষকের বহিষ্কার চেয়ে ছাত্রছাত্রী, অভিভাবক, সাবেক শিক্ষকরা ও স্থানীয়রা মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক পদে ওই বিদ্যালয়ে যোগ দেন রনি প্রতাপ পাল। গত ২৬ জুলাই তাকে নোটিশ দিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
নোটিশে বলা হয়, ‘বিদ্যালয়ে যোগদানের পর আপনাকে বারবার মৌখিকভাবে তাগিদ দিয়েছি বিবাহ করার জন্য। কিন্তু অতীব দুঃখের বিষয়, কয়েক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও আপনি বিবাহ করেননি। বিদ্যালয়টিতে সহশিক্ষা চালু রয়েছে। অভিভাবকরা অবিবাহিত শিক্ষক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে পারেন। সুতরাং বিদ্যালয়ের বৃহত্তর স্বার্থে নোটিশপ্রাপ্তির ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে বিবাহের কার্য সম্পন্ন করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার জন্য আপনাকে বিশেষভাবে নির্দেশ দেয়া হলো।
নোটিশটি পাওয়ার দুই দিন পর সহকারী শিক্ষক রনি প্রতাপ প্রধান শিক্ষককে লিখিত জবাব দেন। জবাবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিভাবকরা আমার বিয়ের চেষ্টা করছেন। কিন্তু বাংলাদেশের হিন্দুদের বিয়ের পাত্রপাত্রী বাছাইয়ে গোত্র বা বর্ণের বিষয় রয়েছে। এ ছাড়া হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা শ্রাবণ থেকে কার্তিক পর্যন্ত বিয়ে করাটা শুভ মনে করেন না। সুতরাং পারিবারিক ও ধর্মীয় রীতির কারণে আগামী অগ্রহায়ণ মাসে আমার অভিভাবকরা আমাকে বিবাহ করাবেন।
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা নিয়ে মোংলা বন্দরে ভিড়েছে এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেস। ইন্দোনেশিয়া থেকে ৩১ হাজার ৩০০ মেট্টিক টন কয়লা নিয়ে শনিবার দুপুরে বন্দরের পশুর চ্যানেলের হারবাড়িয়ার-১২ নম্বর অ্যাংকোরেজে ভিড়েছে জাহাজটি।
জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট মেসার্স টগি শিপিং অ্যান্ড লজিস্টিক লিমিটেডের খুলনার সহকারী ব্যবস্থাপক খন্দকার রিয়াজুল হক জানান, ইন্দোনেশিয়ার ‘মোয়ারা পান্তাই’ বন্দর থেকে ৪৯ হাজার ৭০০ টন কয়লা নিয়ে গত ৪ সেপ্টেম্বর এ দেশের (বাংলাদেশ) উদ্দেশে ছেড়ে আসে এমভি বসুন্ধরা ইমপ্রেস। এরপর জাহাজটি ১৭ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরে ভিড়ে। সেখানে ১৮ হাজার ৪০০ টন কয়লা খালাস করে। সেখানে খালাসকৃত কয়লা লাইটারেজ করে আনা হচ্ছে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে। জাহাজটি বাকি কয়লা নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে মোংলা বন্দরে আসে শনিবার। দুপুরে কয়লাবাহী এ জাহাজটি মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের হাড়বাড়িয়ার-১২ নম্বর অ্যাংকোরেজে ভিড়ে।
তিনি আরও জানান, বিকেল থেকেই এ জাহাজটি হতে কয়লা খালাস করে লাইটারেজ করে রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রে নেয়া শুরু হয়েছে।
নওগাঁয় মাঠে কাজ করার সময় ও নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে দুই নারীসহ বজ্রপাতে তিন জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বিকেলে মহাদেবপুর ও পোরশা উপজেলায় পৃথক বজ্রপাতে তাদের মৃত্যু হয়।
নিহতরা হলেন- মহাদেবপুর উপজেলার রাইগাঁ ইউনিয়নের সিলিমপুর গ্রামের নেপাল পাহানের স্ত্রী শ্রীমতি পাহান (২৭) ও একই গ্রামের মৃত সুবেন্দ্রনাথ পাহানের স্বামী সবানী পাহান (৬৫) এবং পোরশা উপজেলার চকবিষ্ণপুর গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে রফিকুল ইসলাম (৫০)।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে মহাদেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাফফর হোসেন বলেন, নিহত শ্রীমতি পাহান ও সবানী পাহান বাড়ির পাশেই মাঠে কাজ করছিলেন। এসময় বৃষ্টি শুরু হওয়ার পর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হঠাৎ সেখানে বজ্রপাত ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই তারা দুজন মারা যান। নিহতের পরিবারের কোনো অভিযোগ নেই।
অন্যদিকে পোরশা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, নিহত রফিকুল ইসলাম দুপুরে বাড়ি থেকে বের হয়ে পুনর্ভবা নদীতে মাছ ধরতে যান। মাছ ধরার সময় বৃষ্টি শুরু হলে বিকেল ৪টার দিকে হঠাৎ সেখানে বজ্রপাত ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই রফিকুল ইসলাম মারা যান। পরে খবর পেয়ে নিহতের পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসেন। নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ নেই। পারিবারিকভাবে মরদেহ দাফনের প্রস্ততি নিয়েছেন।
চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পরিত্যাক্ত অবস্থায় অবৈধভাবে নিয়ে আসা প্রায় দুই কেজি স্বর্ণ উদ্ধার করেছে কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
শনিবার দুপুরে বিমানবন্দরে মালিকবিহীন দুটি লাগেজ স্ক্যানের মাধ্যমে এসব স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার স্বর্ণের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় দেড় কোটি টাকা।
কাস্টমস গোয়েন্দারা জানান, শুক্রবার রাতে মধ্যপ্রচ্যের দেশ ওমানের রাজধানী মাস্কট থেকে ওমান এয়ারের ডব্লিউওয়াই৩১৩ ফ্লাইটে মালিকবিহীন ব্যাগ দুটি চট্টগ্রামে আসে। কিন্তু শনিবার দুপুর পর্যন্ত কোনো যাত্রী এই ব্যাগগুলো নিতে না আসায় স্ক্যান করে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রামের কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক বশির আহমেদ বলেন, ‘ব্যাগগুলো স্ক্যান করার পর সেখানে অবৈধভাবে নিয়ে আসা পণ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। পরবর্তীতে একটা লাগেজের ভেতর থাকা রাইচ কুকারে লুকানো অবস্থায় বিশেষভাবে লোহার আস্তরণ দিয়ে মোড়ানো তিনটি স্বর্ণের বার পাওয়া যায়। উদ্ধার এসব স্বর্ণের ওজন ১ কেজি ৮৫৬ গ্রাম। যার বাজারমূল্য ১ কোটি ৪৮ লাখ ১৮ হাজার ৫০০ টাকা।’
এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এর আগে শুক্রবার সকালে ১ কেজি ৭০০ গ্রাম ২৪ ক্যারেটের কাঁচা সোনা ও ২২ ক্যারেটের ১০০ গ্রাম স্বর্ণালংকারসহ মোহাম্মাদ আলী নামের এক ব্যক্তিকে আটক করে বিমানবন্দর কাস্টমসের কর্মকর্তারা।
নওগাঁর রানীনগরে একটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত চক্রের ৯ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র, নগদ টাকা ও লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধার করা হয়।
শনিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক।
এর আগে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার বড়গাছা ইউনিয়নের গহেলাপুর (হিন্দুপাড়া) গ্রামের প্রণব সাহার বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তাররা হলেন— উপজেলার গহেলাপুর (মধ্যপাড়া) গ্রামের মোজাম্মেলের ছেলে মমিন মন্ডল (২৬), গহেলাপুর কবিরাজপাড়া গ্রামের জলিলের ছেলে মাসুদ রানা (২৮), পশ্চিম গোবিন্দপুর গ্রামের জনাব আলীর ছেলে জাকির হোসেন জেমস (৩৫), বিষ্ণুপুর গ্রামের শামটানের ছেলে ইমদাদুল স্বপন (৩২), একই গ্রামের জামালের ছেলে মুনচুর মন্ডল (৩২), পশ্চিম চকবলরাম গ্রামের রাজ্জাকের ছেলে ইমদাদুল হক বুলেট (২৭), পূর্ব বালুভরা গ্রামের মিলনের ছেলে হাফিজুল হ্যাপি (২৬), গহেলাপুর নিশ্চিন্দাকুড়ি গ্রামের সিরাজুল ইসলামের ছেলে মাসুদ রানা (৩২) ও হিন্দুপাড়া গ্রামের সিরাজুলের ছেলে সরন আলী (২২)।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার ডাকাত দলের সদস্য মাসুদ রানার নেতৃত্বে শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার গলোপুর (হিন্দুপাড়া) গ্রামের প্রণব সাহার বাড়িতে ডাকাতি হয়। ডাকাত সদস্যরা ঘরে ঢুকে তার স্ত্রীর হাত-পা বেঁধে দেশীয় অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে নগদ ২৬ হাজার টাকা, ৬ আনা স্বর্ণের গহনা, পিতলের তৈরি ছোট একটি মূর্তিসহ বাড়ির বিভিন্ন মালামাল লুট করে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এ ঘটনায় বাড়ির মালিক প্রণব সাহা থাকায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। লুট হওয়া নগদ টাকাসহ মালামাল উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় আরও কেউ জড়িত আছে কিনা তা তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গাজিউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ফৌজিয়া হাবিব খান, রানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদসহ পুলিশের অন্যান্য কর্মকর্তারা।
কুমিল্লায় অভিযান চালিয়ে ১০৮ বস্তা আলু জব্দ করে সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করেছে ভোক্তা অধিদপ্তর। এ সময় অনিয়মের অভিযোগে দুটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়।
শনিবার দুপুরে শহরের চকবাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. আছাদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, কুমিল্লা জেলা কার্যালয়ের উদ্যোগে চকবাজারে পাইকারদের বেচাকেনা মনিটরিং কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এ সময় তাদের মজুদ, বিক্রয় রশিদ যাচাই করা হয়। অভিযানে মেসার্স অরবিন্দ এন্টারপ্রাইজে বসে বগুড়া ও চাপাইনবাবগঞ্জ এলাকার রশিদ নকল করা হচ্ছে। সেখানে তারা নিজেদের মতো দর নির্ধারণ করছিলেন। এ সময় অভিযান দেখে একজন পালিয়ে যায়। পরে গোডাউন তল্লাশি করে ১০৮ বস্তা আলু জব্দ করা হয়। জব্দ করা আলু ৩৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হয়।
এদিকে অভিযানে মূল্য তালিকা প্রদর্শন না করা এবং ক্রয়ের ভাউচার সংরক্ষণ না করায় অন্য দুটি প্রতিষ্ঠানকে ৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ইসরাইল হোসেন, চকবাজার ব্যবসায়ী সমিতি এবং জেলা পুলিশের একটি প্রতিনিধিদল উপস্থিত ছিল।
আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে আমার কাছে কোনো আবেদন আসেনি। এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করতে হবে। এরপর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আইন মন্ত্রণালয়ের কাছে মতামত চাইবে।
শনিবার সকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া রেলওয়ে জংশনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
আনিসুল হক বলেন, ‘খালেদা জিয়া দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বদন্যতা ও মহানুভবতায় তিনি এখন মুক্ত হয়ে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভালো চিকিৎসা পাচ্ছেন।’
বিএনপির হরতাল কর্মসূচির বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘কেউ আইন ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার একাধিক অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তার নির্বাচনী এলাকা আখাউড়ায় যান আইনমন্ত্রী। পরে তিনি সড়কপথে কসবায় পৌঁছান। সেখানে তিনি একাধিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন।