প্রতিষ্ঠান : বাংলাদেশ রেলওয়ে
পদের নাম : গেটকিপার/গেটম্যান
পদের সংখ্যা : ১৫০৫
বিস্তারিত জানতে ও আবেদন করতে ক্লিক করুন এখানে -
সারাদেশে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের লক্ষ্যে আয়োজিত জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা আগামীকাল রোববার (২৮ ডিসেম্বর ২০২৫) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। আগামী ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারিত সূচি অনুযায়ী এই পরীক্ষা চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এবারের পরীক্ষায় মোট পাঁচটি বিষয়ে ৪০০ নম্বরের মূল্যায়ন করা হবে, যেখানে প্রথম দিনে শিক্ষার্থীরা বাংলা বিষয়ের পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
পরীক্ষাটি সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন করতে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরীক্ষার্থীদের জন্য ছয়টি বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, প্রতিটি পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা শুরুর অন্তত ৩০ মিনিট আগে কেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে নিজ নিজ আসন গ্রহণ করতে হবে। পরীক্ষার সময়বণ্টনের ক্ষেত্রে জানানো হয়েছে যে, বিজ্ঞান এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বিষয়ের পরীক্ষা একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এই দুই বিষয়ের জন্য দেড় ঘণ্টা করে মোট তিন ঘণ্টা সময় বরাদ্দ থাকবে এবং প্রশ্নপত্রে উল্লিখিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা গ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্রের ওএমআর (OMR) ফরম পূরণের ক্ষেত্রে অত্যন্ত সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। উত্তরপত্রে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর এবং বিষয় কোড যথাযথভাবে লিখে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। বিশেষভবে সতর্ক করা হয়েছে যে, কোনো অবস্থাতেই উত্তরপত্রটি ভাঁজ করা যাবে না। প্রয়োজনীয় হিসাব-নিকাশের জন্য পরীক্ষার্থীরা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত সাধারণ সায়েন্টিফিক ক্যালকুলেটর ব্যবহারের সুযোগ পাবে। তবে কেন্দ্রসচিব ব্যতীত অন্য কোনো ব্যক্তি বা পরীক্ষার্থী মোবাইল ফোনসহ কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস সঙ্গে রাখতে পারবে না। এই নিয়মগুলো কঠোরভাবে প্রতিপালন নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মূলত স্বচ্ছতা বজায় রাখা এবং নির্বিঘ্নে পরীক্ষা সম্পন্ন করতেই এই সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নিয়েছে শিক্ষা বিভাগ।
পরীক্ষার সময়সূচি
# প্রতিটি পরীক্ষার সময়:
সকাল ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত।
∎ বাংলা (১০১) –২৮ ডিসেম্বর,
রোববার
∎ ইংরেজি (১০৭) –২৯ ডিসেম্বর,
সোমবার
∎ গণিত (১০৯) –৩০ ডিসেম্বর,
মঙ্গলবার
∎ বিজ্ঞান (১২৭) এবং বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (১৫০) –৩১ ডিসেম্বর,
বুধবার
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর ২০২৫) ‘ডিকলোনাইজেশন অ্যান্ড মওলানা ভাসানী’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন শুরু হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড রিসার্চ ইন আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস (কারাস)-এর উদ্যোগে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার (সি আর আবরার) মওলানা ভাসানীর আদর্শ ও রাষ্ট্রচিন্তার ওপর আলোকপাত করেন। কারাসের চেয়ারম্যান ও ইমেরিটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন কারাসের পরিচালক অধ্যাপক ড. আশফাক হোসেন এবং মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইউনিভার্সিটি অব ব্রুনাই দারুসসালামের সহযোগী অধ্যাপক ড. ইফতেখার ইকবাল।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার বলেন, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী কেবল একজন রাজনৈতিক নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধারণ মানুষের বিবেক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী এক দূরদর্শী চিন্তক। তাঁর রাজনীতি কখনোই গদি দখলের জন্য ছিল না, বরং তিনি সবসময় দরিদ্র কৃষক ও শ্রমজীবী মানুষের অধিকার রক্ষায় সোচ্চার ছিলেন। ১৯৫৭ সালে তাঁর ঐতিহাসিক ‘আসসালামু আলাইকুম’ উচ্চারণের মাধ্যমেই তিনি পাকিস্তানি শাসনব্যবস্থার চরম বৈষম্যকে সবার সামনে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন। উপদেষ্টার মতে, ভাসানীর কাছে শিক্ষার প্রকৃত অর্থ ছিল চেতনার জাগরণ এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানোর সাহস অর্জন করা।
সভাপতির বক্তব্যে ইমেরিটাস অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী মওলানা ভাসানীকে একজন মহান সমাজবিপ্লবী হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, ভাসানী সবসময় নদী, মাটি ও প্রান্তিক মানুষের কথা রাজনীতির মূল ধারায় নিয়ে এসেছেন। তাঁর সংগ্রামের লক্ষ্য ছিল সাম্য এবং গণতান্ত্রিক সমাজতান্ত্রিক সমাজ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা। বর্তমান বিশ্বের বিভিন্ন সংকট নিরসনে মওলানা ভাসানীর দেখানো পথই প্রকৃত মুক্তির দিশা হতে পারে বলে তিনি মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্যে অধ্যাপক আশফাক হোসেন মওলানা ভাসানীর বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবন ও উপমহাদেশের কৃষক আন্দোলনে তাঁর অনন্য অবদানের কথা স্মরণ করেন।
সম্মেলনের প্রথম দিনে উদ্বোধনী অধিবেশন শেষে মওলানা ভাসানীর জীবন ও সংগ্রামের ওপর একটি দুর্লভ আলোকচিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। আগামীকাল বুধবার সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বি-উপনিবেশায়ন ও ভাসানীর বিশ্বদর্শন নিয়ে বিশেষ প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে অধ্যাপক আহমেদ কামাল ও অধ্যাপক ড. মাহবুব উল্লাহর মতো বিশিষ্ট গবেষকরা অংশ নেবেন। এ ছাড়া সম্মেলনের শেষ পর্যায়ে কারাস গবেষক দলের পক্ষ থেকে ঐতিহাসিক ‘ফারাক্কা লংমার্চ’-এর রাজনৈতিক ও সামাজিক তাৎপর্য নিয়ে একটি বিশেষ পর্যালোচনা অধিবেশন পরিচালিত হবে। মূলত মওলানা ভাসানীর বৈপ্লবিক রাষ্ট্রচিন্তাকে বর্তমান প্রজন্মের সামনে নতুনভাবে তুলে ধরাই এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে ‘ফজলুর রহমান মুহুরী স্মৃতি বৃত্তি–২০২৫’ উপলক্ষে বৃত্তি পরীক্ষা ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় উপজেলার আলমনগর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, আলমনগর ঐক্য ফোরামের সভাপতি এইচ. এম. শান্তি। সভাপতিত্ব করেন আলমনগর ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক ও স্মৃতি বৃত্তি কমিটির সভাপতি শরিফুল ইসলাম। বৃত্তি পরীক্ষার নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব পালন করেন সহকারী অধ্যাপক আক্তার হোসেন। কেন্দ্র সচিব ছিলেন আলমনগর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. কামাল হোসেন। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বানিয়াচং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। সহকারী কেন্দ্র সুপার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন মো. খালিলুর রহমান।
আয়োজকরা জানান, এলাকার মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এ স্মৃতি বৃত্তির আয়োজন করা হয়েছে। বৃত্তি পরীক্ষায় পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়। শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল পরিবেশে পরীক্ষা সম্পন্ন হয়।
উপস্থিত অভিভাবকরা বলেন, বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মেধা যাচাইয়ের পাশাপাশি পড়াশোনায় আগ্রহ ও প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা তৈরি হয়, যা ভবিষ্যতে তাদের শিক্ষাজীবনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিল ভাটা নদীর বাঁকে সমাজকল্যাণ সংঘ, আলমনগর। আয়োজকরা ভবিষ্যতেও এ ধরনের শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ অব্যাহত রাখার প্রত্যাশা জানান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষকের বিরুদ্ধে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান প্রক্রিয়ায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। তিনি ৬ মাসের ছুটিতে যাওয়ার আগে নিজের প্রভাব খাটিয়ে ছাত্রকে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান নিশ্চিত করতে নিয়মবিরোধী তৎপরতা চালিয়েছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক পিএইচডি গবেষণারত মোহাম্মদ শামছিল আরেফিন (রেজিস্ট্রেশন নং: ৩৫, রোল নং: ২০১৯-০১, শিক্ষাবর্ষ ২০১৮-১৯) পিএইচডি থিসিস মূল্যায়ন ও মৌখিক পরীক্ষার কমিটি ২০২৩ সালের ৫ মার্চ অনুষ্ঠিত হয়। যা বিভাগীয় একাডেমিক কমিটির ৭৮৫তম সভায় (বিষয়-৯, বিবিধ-৬), ৪ জুন অনুষ্ঠিত ৪৯তম ফ্যাকাল্টি সভায় (৫নং সিদ্ধান্ত) এবং পরবর্তীতে ২৫ জুলাই অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪৪তম একাডেমিক কাউন্সিলে (বিষয়-২) অনুমোদিত হয়। তবে এ বছর ২০২৫ সালের শেষপান্তে এসে প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষক ও থিসিস সুপারভাইজার এই পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান প্রক্রিয়াটি অত্যন্ত দ্রুততার সাথে সম্পন্ন করার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। গত ১৮ নভেম্বর থিসিস মূল্যায়নের জন্য ৩ জন মূল পরীক্ষকের মধ্যে তৃতীয় মূল পরীক্ষককে থিসিস না পাঠিয়ে বিকল্প সদস্য পরীক্ষককে পাঠানো হয়। যা একাডেমিক নিয়মের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে অভিযোগ পাওয়া যায়, পিএইচডি প্রার্থীকে অনৈতিক সুবিধা দেওয়ার জন্য তড়িঘড়ি করে মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ২৬ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে থিসিস পাঠানোসহ অনলাইনে রিপোর্ট চলে আসে। ২৭ নভেম্বরে মৌখিক পরীক্ষার তারিখ ৩০ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখে নেওয়ার জন্য ঘোষণা করা হয়। থিসিস পাঠানোর দিন থেকে ১২ দিনের মাথায় অর্থাৎ ৩০ নভেম্বর, ২০২৫ তারিখ পিএইচডি থিসিসের মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন হয়। এভাবে মাত্র ১২ দিনে দেশের প্রথমসারির একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককে পিএইচডি ডিগ্রি দেওয়ার ব্যবস্থা করা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে অকল্পনীয় ঘটনা বলে অনেকেই মন্তব্য করেছেন।
জানা যায়, নির্ধারিত ৩ জন মূল পরীক্ষকের মধ্যে তৃতীয় মূল পরীক্ষক ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপউপাচার্য বর্তমানে কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আশিষ কুমার পাণিগ্রাহীকে থিসিস না পাঠিয়ে বিকল্প সদস্যকে থিসিস পাঠানো হয়েছে। এতে মূল্যায়ন কমিটির নিরপেক্ষতা ও উচ্চশিক্ষার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ বর্তমানে থিসিস সুপারভাইজার ছাড়াও বাকি দুজন পরীক্ষকই একই বিশ্ববিদ্যালয় এবং একই বিভাগের (প্রাণিবিদ্যা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়) যা রহস্যজনক বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।
যথাযথভাবে থিসিস মূল্যায়ন না করেই তড়িঘড়ি করে অনলাইনে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন বিষয়টি স্বীকার করে চবি প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মোসাসম্মৎ রাশেদা চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২-৩ দিনে একটি পিএইচডি থিসিস অধ্যয়ন করে মূল্যায়ন করা ও রিপোর্ট তৈরি করা একেবারেই অসম্ভব। কমপক্ষে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগে। এ ক্ষেত্রে তড়িঘড়ি করে অনলাইনে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকদয়।’
জানা যায়, পরীক্ষকদয় যথাযথভাবে থিসিস মূল্যায়ন না করেই তড়িঘড়ি করে অনলাইনে রিপোর্ট পাঠিয়ে দিয়েছেন যা হয়তো আগে থেকেই তৈরি করে রাখার নির্দেশনা ছিল, নতুবা মাত্র ২-৩ দিনে একটি পিএইচডি থিসিস অধ্যয়ন করে মূল্যায়ন করা ও রিপোর্ট তৈরি করা একেবারেই অসম্ভব। সাধারণত কোনো মূল পরীক্ষককে থিসিস পাঠানোর পর তিনি লিখিতভাবে ওই থিসিস মূল্যায়নে অপারগতা প্রকাশ করলে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শে বা অনুমতি নিয়ে মূল পরীক্ষকের পরিবর্তে বিকল্প সদস্যকে পাঠানো হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে সে নিয়ম না মেনে মূল পরীক্ষককে থিসিস না পাঠিয়েই বিকল্প একজনকে থিসিস পাঠানো হয়েছে। এর ফলে পুরো প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এই সমগ্র অনিয়মের পেছনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের একজন সিনিয়র শিক্ষকের ব্যক্তিস্বার্থই প্রাধান্য পেয়েছে। মোহাম্মদ শামছিল আরেফিনের পিএইচডি থিসিসটির তত্ত্বাবধায়ক অন্যত্র পদায়িত হবেন বিধায় তিনি গত ১ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখে ছয় মাসের লিয়েন ছুটিতে যান। তাই তার ছাত্রকে দ্রুততম সময়ে নিজের প্রভাব খাটিয়ে পিএইচডি ডিগ্রি প্রদান নিশ্চিত করতেই নিয়মবিরোধী এই ব্যতিক্রমী দ্রুততা ও তৎপরতা দেখানো হয়েছে। এতে পিএইচডি থিসিসের মানের সাথে আপস করে করা হয়েছে, যা পিএইচডি থিসিস মূল্যায়নের নিয়মবিরোধী ও অগ্রহণযোগ্য। পিএইচডির মতো উচ্চতর ডিগ্রির ক্ষেত্রে এই ধরনের অনিয়ম ভবিষ্যতে খারাপ দৃষ্টান্ত তৈরি করবে যা পুরো একাডেমিক কাঠামোর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
চবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মমতাজ উদ্দিন আহমদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ফাইলটি আমাদের উপাচার্য্য মহোদয়ের অফিসে। এখনো আমার কাছে আসেনি। তাই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না।’
পিএইচডি গবেষণারত চবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক মোহাম্মদ শামছিল আরেফিন বলেন, ‘আমার সরাসরি সুপারভাইজার হচ্ছেন অধ্যাপক ড. মঞ্জুরুল কিবরিয়া। উনার সাথে কথা বললে ভালো হয়।’ পরে নিজে কথা বলে, (প্রতিবেদকের সাথে) এরপর কথা বলবেন বললেও আর যোগাযোগ করেননি।
বৃটিশ কাউন্সিলের ডেপুটি ডিরেক্টর মারিয়া রেহমান বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ-এর সঙ্গে উপাচার্যের সভাকক্ষে সাক্ষাৎ করেছেন। এসময় ব্রিটিশ কাউন্সিলের শিক্ষা বিভাগের প্রধান তৌফিক হাসান তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সাক্ষাৎকালে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্রিটিশ কাউন্সিলের মধ্যে চলমান শিক্ষা ও গবেষণা সহযোগিতা আরও জোরদার করার বিষয়ে আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী এবং গবেষক বিনিময় নিয়েও বৈঠকে আলোচনা করা হয়।
এসময় প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম গ্রহণ এবং যৌথভাবে জার্নাল প্রকাশের মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিকীকরণের জন্য ব্রিটিশ কাউন্সিলের উপ-পরিচালকের সহযোগিতা কামনা করেন। ব্রিটিশ কাউন্সিলের সহযোগিতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তরুণ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য কর্মশালা এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচি আয়োজনের বিষয়েও তাঁরা আলোচনা করেন।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) হয়েছে দ্বাদশ সমাবর্তন। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়াম মাঠে এই সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন শুরু হয়। সমাবর্তনে বিভিন্ন শিক্ষা বর্ষের অন্তত পাঁচ হাজার নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েট অংশ নিয়েছেন। গাউন ও টুপি পরে পুরোনো শিক্ষার্থীরা বন্ধুদের সঙ্গে মিলিত হয়ে স্মৃতিচারণায় মেতে ওঠেন, ফিরে যান শিক্ষাজীবনের ফেলে আসা দিনগুলোতে। ক্যাম্পাসজুড়ে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ ও আনন্দঘন আবহ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা প্রফেসর ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ। দুপুরে সমাবর্তন বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এস এম এ ফায়েজ।
এ সমাবর্তনে জ্ঞান কেবল ব্যক্তিগত উন্নয়নের জন্য নয়, বরং এটি দায়িত্বের সৃষ্টি করে আহ্বান জানিয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার বলেছেন, সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করাই শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য।
সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ৬০, ৬১ ও ৬২তম ব্যাচের মোট ৫ হাজার ৯৬৯ জন শিক্ষার্থী অংশ নেন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকরা পদযাত্রার মাধ্যমে সমাবর্তনস্থলে যোগ দেন। গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করায় শিক্ষার্থীদের মাঝে উচ্ছ্বাস ও গর্বের অনুভূতি ছড়িয়ে পড়ে পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে।
অনুষ্ঠানে গ্র্যাজুয়েটদের উদ্দেশ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব বলেন, ‘ন্যায়ের পক্ষে বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলা এবং নিজেদের অর্জন দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজে লাগানোই একজন গ্র্যাজুয়েটের মূল দায়িত্ব।’
বক্তারা আরও বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে থাকা এবং ন্যায্যতাকে গুরুত্ব দেওয়ার মানসিকতা গড়ে তুলতে হবে। একই সঙ্গে জুলাই যোদ্ধাদের আদর্শ স্মরণ করে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানানো হয়। পাশাপাশি গণতান্ত্রিক উত্তরণ যেন সঠিক পথে এগিয়ে যায়, সে বিষয়ে সবার সহযোগিতা কামনা করা হয়।
ভৈরবে বেসরকারি স্কুলের আয়োজনে বৃত্তি পরীক্ষায় বসেছে ৬৩ স্কুলের ৫৩৩ শিক্ষার্থী। সরকারিভাবে বৃত্তি পরীক্ষায় সুযোগ না থাকায় বেসরকারি আয়োজনে বৃত্তি পরীক্ষা দিতে পেরে আনন্দিত শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় ভৈরব পৌর পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় স্কুলে পরীক্ষা শুরু হয়েছে৷
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এই বছর বর্তমান সরকার সারাদেশে অনুষ্ঠিতব্য মেধা যাচাই নামকরণে বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি স্কুলগুলোকে সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। এই কারণে কিশোরগঞ্জ ভৈরবের বেসরকারি স্কুল সমূহের উদ্যোগে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বেসরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। পরীক্ষা সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত চলে। পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন ভৈরবের ৬৩টি স্কুলের ৫৩৩ জন শিক্ষার্থী। এছাড়াও আয়োজিত বৃত্তি পরীক্ষার পরবর্তী পরীক্ষাগুলো হবে ১৭, ১৮ ও ২০ ডিসেম্বর হবে।
পরীক্ষায় অংশ নিয়ে পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থী নাফিজা আক্তার শসী বলেন, ‘আমাদের সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার সুযোগ হয়নি তবে আজকে (গতাকাল সোমবার) বেসরকারি স্কুলের আয়োজিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে খুব আনন্দ লাগছে। কারণ আমরা আমাদের নিজেদের মেধা যাচাইয়ের একটি সুযোগ পেয়েছি।
এ সময় শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, সরকার দেশের বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেয়নি। সেজন্যই আমাদের সন্তানদের মেধা যাচাইয়ের জন্য বেসরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে নিয়ে এসেছি। আমাদের দাবি সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় বেসরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ করতে পারে সেই দাবি জানান।
ভৈরব উদয় স্কুল পরিচালক মতিউর রহমান সাগর বলেন, সরকারের সিন্ধান্ত অনুযায়ী শুধু মাত্র সরকারি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সরকারি বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। সেজন্যই আমরা বেসরকারি স্কুলের উদ্যোগে ৬৩টি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বেসরকারিভাবে বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এতে উপজেলার সকল বেসরকারি স্কুলের ৫৩৩ জন শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছেন। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবক খুবই আনন্দিত।
এ বিষয়ে ভৈরব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কে.এম মামুনুর রশীদ জানান, ‘সরকারি বা বেসরকারি দুটিই একে-অপরের পরিপূরক। যেখানে সরকারিভাবে সম্ভব নয় সেখানেই বেসরকারি সংস্থা গুলি কার্যক্রম সম্পাদন করে থাকে। তেমনিভাবে ভৈরবে আজকে অত্যন্ত সুশৃঙ্খল পরিবেশে বেসরকারিভাবে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার নেতৃত্বে একটি কমিটির মাধ্যমে ভৈরবের ৬৩টি স্কুলের ৫৩৩ জন শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে। আমি পরীক্ষার বিভিন্ন হল রুম পরিদর্শন করেছি। সেখানে শিক্ষার্থীরা সুষ্ঠু পরিবেশে বৃত্তি পরীক্ষা দিচ্ছেন।
বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (বাউবি) পুনরায় চালু করেছে বহু প্রতীক্ষিত ‘স্কুল অব ল’। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের আইন বিষয়ের অধ্যাপক ড. নাহিদ ফেরদৌসীকে বাউবি আইন-১৯৯২ এবং সংশোধনী-২০০৯ এর ৬(৩) ধারা অনুযায়ী স্কুলটির ডিন হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তিনি গত মঙ্গলবার পূর্বাহ্নে আনুষ্ঠানিকভাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম. এরশাদুল বারী ২০০৫ সালের ১১ অক্টোবর ‘স্কুল অব ল’ প্রতিষ্ঠা করেন। পরবর্তীতে সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আর. আই. এম. আমিনুর রশীদ-এর দায়িত্বকালীন সময়ে ৩ সেপ্টেম্বর ২০০৯ তারিখে বোর্ড অব গভর্নরসের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এক অফিস আদেশের মাধ্যমে স্কুলটির সকল কার্যক্রম স্থগিত করা হয়। একইসঙ্গে এলএলবি প্রোগ্রাম এবং শিক্ষকদের দায়িত্ব ন্যস্ত করা হয় সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলে এবং স্থাবর–অস্থাবর সম্পত্তি ও জনবল ন্যস্ত করা হয় প্রশাসন বিভাগে। এতদিন এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম প্রোগ্রাম দুটি সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুলের অধীনে পরিচালিত হয়ে আসছিল।
বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম যুগোপযোগী আইন শিক্ষা নিশ্চিতকরণ এবং চলমান এলএলবি (অনার্স) ও এলএলএম প্রোগ্রামকে আরও মানসম্মত ও গতিশীল করতে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। শিক্ষার্থীদের ক্রমবর্ধমান আগ্রহ ও ভর্তি চাহিদার প্রেক্ষিতে বোর্ড অব গভর্নরসের অনুমোদনক্রমে পুনরায় পৃথকভাবে ‘স্কুল অব ল’ চালু করা হয়। স্কুলটি পুনরায় চালুর মাধ্যমে বাউবি দেশে আইন শিক্ষার সম্প্রসারণ ও মানোন্নয়নে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে এবং উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ বি এম ওবায়দুল ইসলামের দূরদর্শী নেতৃত্ব ও শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) বিভিন্ন আবাসিক হলের সংস্কার কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা এবং পরবর্তী করণীয় নির্ধারণে এক গুরুত্বপূর্ণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল ক্লাসরুমে আয়োজিত এই সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ এবং বিভিন্ন আবাসিক হল ও ভবনের কারিগরি নিরীক্ষণ, মূল্যায়ন ও মনিটরিং বিষয়ক সেন্ট্রাল কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
সভায় আবাসিক হলগুলোর চলমান সংস্কার কাজের সার্বিক অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এ সময় সংস্কার কাজগুলো সুষ্ঠু ও যথাযথভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি—তিন স্তরের কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। পাশাপাশি সংস্কার কাজ সঠিকভাবে তদারকি করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ এই সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অফিসের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক, ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী, হিসাব পরিচালক এবং প্রকৌশল দপ্তরের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ‘বেগম রোকেয়া দিবস’ পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, রোকেয়া হল প্রাঙ্গণে বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এসময় রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগমসহ হলের আবাসিক শিক্ষক এবং হল সংসদের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. এম. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী পুষ্পস্তবক অর্পণকালে বেগম রোকেয়ার স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেন, পিছিয়ে পড়া নারীদের ভাগ্যোন্নয়নে তিনি কাজ করে গেছেন।
বেগম রোকেয়ার আদর্শ অনুসরণ করে একটি বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণে এগিয়ে আসার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি চট্টগ্রাম ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অটাম―২০২৫ সেশনে বিদায়ী ছাত্রছাত্রীদের 'ফেয়ারওয়েল প্রোগ্রাম ২০২৫' আবেগঘন অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর (সোমবার) বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ তাহের হোসাইন সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামে বিদায়ী ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি বিভাগের শিক্ষক তাসমিয়া ফাতিমাকেও বিদায় জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বিভাগের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের শুভকামনায় সিক্ত হয় বিদায়ী শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ ওসমান তাঁর বক্তব্যে বিদায়ী শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মজীবনে সফলতার জন্য দিকনির্দেশনা দেন। তিনি শৃঙ্খলা, আন্তরিকতা এবং মানবিক মূল্যবোধ ধরে রেখে এগিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন।
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের অর্জন ভবিষ্যৎ জীবনের ভিত্তি তৈরি করে, তাই শেখা বিষয়গুলো বাস্তব জীবনে প্রয়োগ করার আহবান জানান।
অনুষ্ঠানের বিশেষ অতিথি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর সালাহউদ্দিন আহমেদ বিভাগের শিক্ষার মান, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্ক এবং ক্যাম্পাসে ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ভূমিকা তুলে ধরে নতুন প্রজন্মকে সৃজনশীল ও দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠতে উৎসাহিত করেন।
এছাড়া গেস্ট অনার হিসেবে উপস্থিত থাকা অক্সফোর্ড গ্র্যাজুয়েট মি. এলেন কাজেনস জ্ঞানচর্চায় ইংরেজি ভাষা শিক্ষার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন।
অনুষ্ঠানে বিদায়ী ব্যাচের শিক্ষার্থীরা তাদের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের স্মৃতি, শিক্ষকদের সহায়তা এবং সহপাঠীদের সাথে পথচলার অভিজ্ঞতা শেয়ার করে।
তাদের প্রতি শুভকামনা জানিয়ে বিভাগীয় শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষা শুধু ডিগ্রিতে সীমাবদ্ধ নয়, এটি চরিত্র গঠনের মাধ্যম। শিক্ষার্থী ও সহকর্মীরা মিস তাসমিয়া ফাতিমার কর্মজীবনের স্মৃতিচারণ করেন। সকল সহকর্মী ও শিক্ষার্থীরা এই শিক্ষককে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে বিদায় জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে ইংরেজি বিভাগের কালচারাল ক্লাবের উদ্যোগে বর্ণিল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়।
বিভাগীয় প্রধান মুহাম্মদ তাহের হোসাইন সেলিম সকল বিদায়ী শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন। এসময় তিনি সকলের উদ্দেশ্যে বলেন, এই ডিপার্টমেন্ট তোমাদের, সুতরাং ডিপার্টমেন্টের সার্বিক উন্নয়নে তোমাদের ভূমিকা ও সহযোগিতা কামনা করি।
অনুষ্ঠানে বিভাগীয় শিক্ষিকগণের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জিয়াউল হক, মাইমুনা খাতুন, বিপাশা বড়ুয়া, তাসমিয়া ফাতিমা, প্রজ্ঞা মজুমদার, নাঈমা আক্তার, আয়েশা আক্তার, সানজিদা সুলতানা, ইলিয়াছ শাহরিয়ার প্রমুখ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের উদ্যোগে ‘A Study on the Foreign Policy of Bangladesh to Address the Challenges of Globalization in the Domains of National Security, Climate Change and Labor Migration’ শীর্ষক এক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৮ ডিসেম্বর (সোমবার) সৈয়দ ইমতিয়াজ আহমেদ কনফারেন্স রুমে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের Higher Education Acceleration and Transformation (HEAT) Project -এর আয়োজনে এই অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, হিট প্রজেক্টের এসপিএম অধ্যাপক ড. এ এস এম আলী আশরাফ। এছাড়া হিট প্রজেক্টের এএসপিএম অধ্যাপক ড. সৈয়দা রোযানা রশীদ অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
সেমিনারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান জাতীয় নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও শ্রম অভিবাসনের মতো বিষয়গুলোর উপর বিশেষ নজর দেওয়ার উপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, এক্ষেত্রে সরকারি, বেসরকারি এবং প্রাইভেট সেক্টরসহ সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বিভিন্ন সেক্টরের মধ্যে বিভাজন দূর করে জাতীয় স্বার্থে পরস্পরের হাত ধরে চলতে হবে। জাতীয় নিরাপত্তা, জলবায়ু পরিবর্তন ও শ্রম অভিবাসন বিষয়ে আমাদের সংলাপ চালিয়ে যেতে হবে। এছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ এক্ষেত্রে সহায়তা করবে বলেও তিনি তার বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
সমাবর্তন প্রত্যাশী অধিকাংশ গ্র্যাজুয়েটের দাবি উপেক্ষা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) আসন্ন দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠান আয়োজনের প্রতিবাদে রাজধানীতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে।
রোববার (৭ ডিসেম্বর) বেলা ৩টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন গ্র্যাজুয়েটরা।
মানববন্ধন থেকে বক্তারা রাবি প্রশাসনকে গ্র্যাজুয়েটদের অসন্তোষ নিয়ে সমাবর্তন আয়োজন থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান।
রাবির ৬২ ব্যাচের শিক্ষার্থী আলী ইউনুস হৃদয়ের সঞ্চালনায় শুরুতে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি আব্দুল মজিদ অন্তর।
আব্দুল মজিদ বলেন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চরম অবহেলার সঙ্গে এই দায়সারা সমাবর্তন আয়োজন করতে যাচ্ছে। সমাবর্তন প্রত্যাশীরা যে ৩ দফা দাবি জানিয়েছেন, তার প্রতি সংহতি জানাচ্ছি। আশা করি, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো ইতিবাচকভাবে বিবেচনা করবে।
সঞ্চালনায় আলী ইউনুস হৃদয় বলেন, গ্র্যাজুয়েটদের মাঝে যে চরম অসন্তোষ তৈরি হয়েছে তা দিন দিন ক্ষোভে রূপান্তর হচ্ছে। শিক্ষার্থীদের আবেগ ও অনুভূতি প্রশাসনকে অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। তাহলেই এই মহতী আয়োজন সফল হবে। কাউকে বঞ্চিত করে এই আয়োজন সফল হতে পারে না।
৬২ ব্যাচের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী অর্বাক আদিত্য বলেন, আমরা দাবি জানিয়ে যাচ্ছি কিন্তু প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপ নেই। তারা কাদের জন্য তাড়াহুড়ো করে এই আয়োজন করছে আমরা বুঝছি না, এখানে কার কোন স্বার্থ রয়েছে? ইতোমধ্যে সমাবর্তন আয়োজনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনিয়মের অভিযোগ উঠছে। দায়সারা সমাবর্তন নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটরা কখনও মানবে না। প্রশাসনকে অবিলম্বে তিন দফা দাবি মেনে নিতে হবে।
সমাবেশে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম বলেন, যে দায়সারা আয়োজন করতে যাওয়া হচ্ছে তা লজ্জাজনক। নিবন্ধিত গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি এই অবজ্ঞা কোনোভাবে সমর্থনযোগ্য হতে পারে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ও মর্যাদার কথা বিবেচনা করে প্রশাসনকে ৩ দফা দাবির ব্যাপারে ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানাই।
একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও রাবির ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী রাসিব নাহিদ বলেন, কর্মব্যস্ত ডিসেম্বর মাসে সপ্তাহের মাঝামাঝি সময় আয়োজিত সমাবর্তনে উপস্থিত হওয়া আমাদের জন্য অত্যন্ত কঠিন। দায়সারা এই আয়োজন ইতোমধ্যে বয়কটের ডাক দেওয়া হয়েছে। যদি প্রশাসন কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ধারাবাহিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হবে।
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ছিলেন। এর আগে, শনিবার ( ৬ ডিসেম্বর) রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেট চত্বরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সমাবর্তন নিয়ে ৩ দফা জানান গ্র্যাজুয়েটরা। সেখানে দাবি মানা না হলে সমাবর্তন বর্জনের ডাক দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৫৩ সালে প্রতিষ্ঠার পর দীর্ঘ ৭২ বছরের ইতিহাসে মাত্র ১১টি সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে। একাদশ সমাবর্তনটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৯ সালে। অনুষ্ঠিতব্য দ্বাদশ সমাবর্তনের তারিখ বার বার পেছানোর কারণে ব্যাপক সমালোচনা চলছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি দ্বাদশ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা থাকলেও তা একই বছরের ১৩ জানুয়ারি স্থগিত ঘোষণা করা হয়। এর আগে ২০২৩ ও ২০২৪ সালে কয়েকবার তারিখ দিয়েও পরে অনিবার্য কারণবশত সমাবর্তন স্থগিত করা হয়েছিল।