মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪

রাবিতে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে মেসে থাকার সুযোগ

ফাইল ছবি
আপডেটেড
২৬ মে, ২০২৩ ১৮:২৯
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশিত : ২৬ মে, ২০২৩ ১৮:২৭

আগামী ২৯ মে শুরু হতে যাওয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষাকে সামনে রেখে ক্যাম্পাসের হলগুলোর পাশাপাশি নগরীর মেসগুলোতেও ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা বিনামূল্যে থাকতে পারবেন। রাজশাহী মেস মালিক সমিতি ভর্তিচ্ছু ৬০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য এই ব্যবস্থা রাখছে।

শুক্রবার সকালে রাজশাহী মহানগর মেস মালিক সমিতির সভাপতি এনায়েতুর রহমান এ সব তথ্য জানান।

তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনো ধরনের অর্থ নেয়া হবে না। তাদের কোনো ধরনের সমস্যা হলে তারও সমাধান করা হবে। তবে শিক্ষার্থীর সঙ্গে অতিরিক্ত কেউ আসলে জনপ্রতি প্রতিদিন ৩০০-৫০০ টাকা করে দিতে হবে।

এনায়েতুর রহমান বলেন, রাবিতে এবার এক লাখ ৭৮ হাজার শিক্ষার্থী পরীক্ষায় অংশ নেবেন। ৮০-৮৫ হাজার শিক্ষার্থী নিজেরাই আগে থেকে ব্যবস্থা করে নেয়। আর মেস মালিক সমিতি এবার ৫০-৬০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য ব্যবস্থা করছে। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন। তারা তথ্য নিয়ে রাখছেন। ২৮ মে দুপুর ১২টার পরে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য মেসে জায়গা বরাদ্দ দেয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, রাজশাহী নগরীতে প্রায় ৫ হাজার মেস আছে। তাদের সমিতির অধীনে প্রায় এক হাজার ৮০০ মেস আছে। আর সব মেসেই তারা খেয়াল রাখবেন, যেন কোনো শিক্ষার্থীর আবাসিক সমস্যা না হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৯ মে ‘সি’ (বিজ্ঞান) ইউনিট, ৩০ মে ‘এ’ (মানবিক) ইউনিট এবং ৩১ মে ‘বি’ (বাণিজ্য) ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। চারটি গ্রুপে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

বিজ্ঞান, মানবিক ও বাণিজ্য ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চার শিফটে অনুষ্ঠিত হবে। প্রতি ইউনিটে পরীক্ষা সকাল ৯টা থেকে ১০টা, দ্বিতীয় গ্রুপের পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, তৃতীয় গ্রুপের পরীক্ষা বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত এবং চতুর্থ গ্রুপের পরীক্ষা বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি গ্রুপের ভর্তি পরীক্ষার সময়কাল এক ঘণ্টা।


জবিতে ক্লাস-পরীক্ষা চালু রেখে বর্ষবরণে শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আপডেটেড ১৫ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:৩৫
জবি প্রতিনিধি

বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষা চালু রেখেই আগামী ১৮ এপ্রিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ‘বাংলা নববর্ষ ১৪৩১’ উদযাপন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ওইদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষা ও ক্লাস-চালু রয়েছে পাশাপাশি এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসন থেকে কোন সুস্পষ্ট নির্দেশনা না থাকায় বিভ্রান্তিতে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা।

ঈদের ছুটিতে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে বাংলা নববর্ষ উদযাপনের জন্য ১৪ এপ্রিলের পরিবর্তে ১৮ এপ্রিল অনুষ্ঠানমালা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮ এপ্রিল প্রাণ রসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগ, নৃবিজ্ঞান বিভাগ, ফার্মেসি, গনিত, পরিসংখ্যান বিভাগসহ বেশকিছু বিভাগে পরীক্ষা ও ক্লাস রয়েছে। এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি বিভাগেই সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা রয়েছে। এছাড়াও ক্লাস বন্ধের কোনো নোটিশও দেয়নি বিভাগগুলো।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, বাংলা নববর্ষ উদযাপনের মতো এতো বড় একটা আয়োজনে ক্লাস পরীক্ষা নেয়া কোনোভাবেই কাম্য নয়। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি দেয়া উচিত।

নৃবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী জাহিদ হাসান বলেন, ‘বর্ষবরণ উদযাপনের দিন পরীক্ষা না নেয়াই ভালো। দেখা যায় আমরা যারা সংস্কৃতিমনা তাদের সেদিন এই প্রোগ্রামে থাকার আগ্রহ থাকে। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ে ধুমধাম করে প্রোগ্রাম হওয়ার সময়ে পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়াটা বেমানান মনে হয়। পরীক্ষার পরিবেশ এসময়ে থাকেনা।’

গনিত বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রিদয় আহমেদ বলেন, ‘আমরা অনেক শিক্ষার্থী বিভিন্ন কালচারাল প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করতে চাই। কিন্তু একই দিনে আমাদের মিড পরীক্ষা রাখা হয়েছে। সাধারণ মিছিলে, মাইকের শব্দে যখন ক্লাস করা কষ্টকর হয়, সেখানে এতো বড় আয়োজনে পরীক্ষার পরিবেশ পাওয়া নিয়ে আমরা চিন্তিত।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম জানান, এ বিষয়গুলো বিভাগের ইখতিয়ারে থাকে। কিছু ডিপার্টমেন্ট ইতিমধ্যে তাদের পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করেছে। বিভাগগুলো পরীক্ষা নিলে আমাদের বাঁধা নেই। তবুও এ বিষয়ে আমি উপাচার্যের সঙ্গে কথা বলে বিস্তারিত জানাতে পারবো।

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।


নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এবং ছাত্রলীগ ও যুবলীগ নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আজ সোমবার সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রামের বিচারক জহিরুল কবির শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

মামলায় বলা হয়, ২০২২ সালের ১ জুন নূর বাংলা নিউজ বিডি নামের একটি পেজ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শিক্ষামন্ত্রী, ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে নিয়ে ‘কটূক্তি’ করেন এবং ফেসবুকে পোস্ট করেন। পরে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমগ্র বাংলাদেশস‍হ বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে।

আদালত সূত্র জানায়, ২০২২ সালের ১৪ জুন ছাত্রলীগ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক আইন সম্পাদক শাহরিয়ার ইয়াসির আরাফাত বাদী হয়ে সাইবার ট্রাইব্যুনাল চট্টগ্রাম ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। এতে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হককে আসামি করা হয়।

ট্রাইব্যুনালের সরকারি কৌঁসুলি মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, এক ছাত্রলীগ নেতার করা মামলা তদন্তের জন্য আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ২ বছর আগে। তদন্ত শেষে সিআইডি সাবেক ডাকসু ভিপি নুরুল হকের বিরুদ্ধে আদালতে প্রতিবেদন দেয়। আজ আদালত তা গ্রহণ করে নুরুলের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির নির্দেশ দেন।

বিষয়:

জবিতে ঈদুল ফিতরের জামাত সকাল সাড়ে ৮টায়

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১০ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৫৮
জবি প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে পবিত্র ঈদুল ফিতরের নামাজের একমাত্র জামাত সকাল সাড়ে ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে। নামাজে ইমামতি করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জামে মসজিদের সহকারী ইমাম শেখ মো. সালাহ উদ্দিন।

বুধবার মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম ও খতিব মো. ছালাহ উদ্দিন ঈদ জামাত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

খতিব মো. ছালাহ উদ্দিন বলেন, এবার তিনি ছুটিতে থাকায় সহকারী ইমাম নামাজ পড়াবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থী যারা আছেন তারা মসজিদে ঈদের নামাজ পড়তে আসেন। পাড়া-মহল্লার সকলের জন্যে এই জামাত উন্মুক্ত, যে কেউ চাইলে নামাজ পড়তে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও শিক্ষকরা থাকবেন কিনা বিষয়টি তিনি এখনও নিশ্চিত নন। কিন্তু গত বছর কোষাধ্যক্ষ ঈদের জামাত এখানে আদায় করেছিলেন।

এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিম ও কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হুমায়ুন কবীর চৌধুরী সকলকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. জাকির হোসেন এবং সাধারণ সম্পাদক ড. শেখ মাশরিক হোসেন।


কোরিয়ান রাষ্ট্রদূতের ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটি পরিদর্শন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে নিযুক্ত কোরিয়ার রাস্ট্রদূত পার্ক ইয়াং সিক ২৮ মার্চ ঢাকার সাভারের বিরুলিয়ায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) পরিদর্শন করেন। ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অফিস কর্তৃক ‘অ্যাম্বাসেডর ও ক্লক’ প্রোগ্রামের অধীনে ‘সমসাময়িক কোরিয়া: গণতন্ত্র, অর্থনীতি, শান্তি নিরাপত্তা’- শীর্ষক সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন।

রাষ্ট্রদূত কোরিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে নিরঙ্কুশ একাডেমিক অংশীদারিত্ব এবং একটি সুন্দর সবুজ ক্যাম্পাস থাকার জন্য ডিআইইউ-এর কার্যক্রমের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরের পর বাংলাদেশ-কোরিয়া সম্পর্ক বহুপক্ষীয় দিক দিয়ে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে এবং অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। পার্ক ইয়ং সিক, তার বক্তব্যে কর্মসংস্থান পারমিট সিস্টেমের অধীনে কোরিয়ার ঐতিহাসিক দিকগুলোর ওপর জোর দিয়ে বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে সমর্থন করে এবং প্রশিক্ষকদের ক্ষমতা ও গবেষণার সুযোগগুলোকে শক্তিশালী করে বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য আরও বেশি অভিবাসী গন্তব্যের সুযোগের রূপরেখা দেন।

সেমিনারে ইউনিভার্সিটির প্রো-ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এস এম মাহবুব উল হক মজুমদার তার বক্তব্য শেয়ার করেন। এ ছাড়া সেমিনারে ড্যাফোডিল ফ্যামিলির গ্রুপ সিইও ড. মোহাম্মদ নুরুজ্জামান, ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. ফখরে হোসেন, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টারের পরিচালক ড. তানভীর আবীর এবং ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের উপ-পরিচালক সৈয়দ রায়হান-উল-ইসলামসহ ফ্যাকাল্টি মেম্বার, কর্মকর্তা, প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। বিজ্ঞপ্তি


একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান, ডিজিটাল নথির আওতায় আসবে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্য ড. মো. আবু তাহের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নুর নওশাদ, চবি প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯তম উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের। বিভাগের সভাপতি, অনুষদের ডিন, একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক দায়িত্ব পালনসহ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। সেই অভিজ্ঞতার আলোকেই চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে নতুন করে ঢেলে সাজাতে চান এই শিক্ষাবিদ। একান্ত সাক্ষাৎকারে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে তার প্রত্যাশা ও পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন দৈনিক বাংলাকে।

প্রশ্ন: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য; আপনার অনুভূতি জানতে চাই?

উত্তর: প্রথমত আল্লাহর কাছে শোকরিয়া, তিনি আমাকে সুযোগ দিয়েছেন। দ্বিতীয়ত মহামান্য রাষ্ট্রপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী মহোদয়ের নিকট বিশেষ কৃতজ্ঞতা জানাই। একই সঙ্গে আমার ওপর যে গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে তা সর্বোচ্চ সততা, নিষ্ঠা, আন্তরিকতার সহিত পালনের পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় এই বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।

প্রশ্ন: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে আপনার পরিকল্পনা জানতে চাই।

উত্তর: আমি চাই বঙ্গবন্ধু বিশ্ববিদ্যালয়কে যেভাবে দেখতে চেয়েছিলেন সেভাবে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত হবে। বঙ্গবন্ধু চেয়েছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞান সৃষ্টি হবে, জ্ঞান বিতরণ হবে, জ্ঞান সংরক্ষণ হবে। এই তিন উদ্দেশ্য নিয়ে তিনি ইউজিসি প্রতিষ্ঠা করেন, যা সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের দেখভাল করে। দ্বিতীয়ত, বিভিন্ন মত-দ্বিমত থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভালোর জন্য যে সিদ্ধান্ত সেখানে আমাদের একমত হতে হবে। তৃতীয়ত, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও অবকাঠামোগত মাস্টারপ্ল্যান থাকতে হবে। সেগুলোর আবার ন্যাশনাল পলিসির সঙ্গে সমন্বয় থাকতে হবে। পাশাপাশি আমি চাই আমাদের সব শিক্ষক তার নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করবে।

প্রশ্ন: একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে কী ভাবছেন?

উত্তর: আমাদের একাডেমিক একটা মাস্টারপ্ল্যান থাকতে হবে। সব শিক্ষককে অবশ্যই গবেষণামুখী হতে হবে এবং গবেষণা করতে হবে। গবেষণার পাশাপাশি তারা নানা রকম আর্টিকেল প্রকাশ করবে যেটা থেকে আমাদের শিক্ষার্থীরা উপকৃত হবে। এ জন্য একাডেমিক মাস্টারপ্ল্যান লাগবে। র‍্যাংঙ্কিয়ে শীর্ষে পৌঁছতে হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্রসহ সব অংশীজনকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। আমাদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থাকবে, সেটারও অবসান করতে হবে।

প্রশ্ন: গবেষণায় এখনো অনেকটা পিছিয়ে আছে চবি। আপনার পরিকল্পনা কী?

উত্তর: ইউজিসি সাড়ে ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। তবে যা বরাদ্দ দেওয়া হয়, সেটিও ব্যবহার করা হচ্ছে না। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বারবার বলছেন গবেষণার কথা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আমাদের ওপর যে দায়িত্ব সেটা আমরা ঠিকঠাক পালন করছি? আমাদের মূল কাজ হচ্ছে শিক্ষকতা করা ও গবেষণা করা। সব শিক্ষককে অবশ্যই গবেষণা করতে হবে। গবেষণা করলেই শিক্ষকরা আধুনিক শিক্ষা ও যুগের পরিবর্তনের সঙ্গে সবাই মানিয়ে চলতে পারবে।

প্রশ্ন: ডিজিটাল থেকে স্মার্টের পথে বাংলাদেশ। তবে চবি এখনো মান্ধাতার পদ্ধতিতেই দাপ্তরিকসহ সব কার্যক্রম চালাচ্ছে। চবি কবে স্মার্ট হবে?

উত্তর: আমি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করে এসেছি (ইউজিসি) সেখানে ৯৫ শতাংশ কাজই ডি-নথি (ডিজিটাল-নথি) সিস্টেমে হয়। ডি-নথিতে সবকিছু সময় ও তারিখসহ উল্লেখ থাকে। তবে এখানে এসে দেখছি এখনো পুরোনো সিস্টেম রয়ে গেছে। ডিজিটালের উদ্দেশ্য দুটো- একটা হচ্ছে পেপারলেস অফিস, অন্যটি ক্যাশলেস সোসাইটি। আমি চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়কেও ডি-নথির আওতায় আনার চেষ্টা করব। এতে সহজে অনলাইনেই সব করা যাবে।

প্রশ্ন: শাটল ও আবাসিক সমস্যা নিরসনে কী পদক্ষেপ নেবেন?

উত্তর: আমি মাত্র দায়িত্ব নিয়েছি। হলের বিষয়গুলো নিয়ে হল প্রভোস্ট ও হাউস টিউটরদের সঙ্গে বসব। তারপর বিষয়টি সিন্ডিকেটে নিয়ে যাব। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী করণীয় হবে। হলগুলোতে অছাত্র কেউ থাকলে সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিতে হবে। শাটল ট্রেনের সমস্যার বিষয়ে যোগাযোগ ও রেলসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করব।

প্রশ্ন: চবিতে দীর্ঘদিন সমাবর্তন হচ্ছে না। সমাবর্তন কবে হবে?

উত্তর: আমি শুরুতেই ডিনদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছি সমাবর্তনের বিষয়ে। সব অনুষদের ডিন একমত হয়েছেন। এখন বাকি পর্ষদে পাস হয়ে এলে আমরা রাষ্ট্রপতির কাছে সময় চাইব। তিনি সময় দিলে এ বছর সমাবর্তন হবে।

প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) ও ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়ে আপনার চিন্তা-ভাবনা কী?

উত্তর: টিএসসির জন্য আমরা সরকারের কাছে প্রজেক্ট সাবমিট করব। ছাত্র সংসদ নির্বাচনের বিষয়টা রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত। সরকার থেকে শুরু করে সব অংশীজন যদি চায় তখন সেটা নিয়ে এগুনো যাবে। আমি একা সিদ্ধান্ত নিলে কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে দায়ভার আমাকেই নিতে হবে।

প্রশ্ন: শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে কী বলতে চান?

উত্তর: ছাত্রছাত্রীদের বলব, ‘পড়াশুনা, পড়াশুনা ও পড়াশুনা’। সবাইকে ক্লাসমুখী হতে হবে। সহশিক্ষা কার্যক্রমে যুক্ত থাকতে হবে। পাশাপাশি দেশ ও পরিবারের কল্যাণে কাজ করতে হবে। মা-বাবা অনেক স্বপ্ন নিয়ে তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠায়। সে স্বপ্নপূরণ করতে হবে।


ভুয়া ইমেইল খুলে জবি উপাচার্যের নামে স্ক্যাম

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. সাদেকা হালিমের নামে ভুয়া ইমেইল আইডি খুলে বিভিন্ন মানুষকে স্ক্যাম মেসেজ পাঠানোর অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তর থেকে বৃহস্পতিবার পাঠানো সতর্কীকরণ বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, একটি অসাধু মহল [email protected] নামের ইমেইল অ্যাড্রেসটি থেকে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে স্ক্যাম মেসেজ পাঠাচ্ছে। এই ইমেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নয় এবং এর সঙ্গে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়র কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই। স্ক্যামের উদ্দেশ্যে তৈরি করা এ ইমেইলটি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে।

এ ছাড়া সবাইকে এই অসাধু উদ্দেশ্যে তৈরি ইমেইল থেকে আসা সব বার্তা পরিহার করে চলতে এবং এ বিষয়ে সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করতে অনুরোধ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

এ বিষয়ে কোতোয়ালি থানায় জিডি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জিডির বিষয়টি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি থানার ওসি শাহীনুর রহমান বলেন, বিষয়টি তদন্তের জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইমের অধীনে পরিচালিত সিটি-সাইবার ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, তারা বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করেছে। তদন্তের স্বার্থে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ জিডির বিস্তারিত গোপন রেখেছে।


বুয়েট ও আয়ারল্যান্ডের বিশ্ববিদ্যালয় ডুয়েল মাস্টার্স প্রোগ্রাম শুরু করবে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

সম্প্রতি বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি (বুয়েট) এবং আয়ারল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিক (ইউএল) একটি ডুয়েল মাস্টার্স প্রোগ্রাম শুরু করার জন্য যৌথ স্মারক চুক্তি সই করেছে। ইউনিভার্সিটি অব লিমেরিকের ভাইস প্রেসিডেন্ট, গ্লোবাল অ্যান্ড কমিউনিটি এনগেজমেন্ট, প্রফেসর নাইজেল হিলি এবং বুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর সত্য প্রসাদ মজুমদার সম্প্রতি আয়ারল্যান্ডের লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই চুক্তি সই করেন।

বুয়েটের বেশকিছু স্নাতক ১৯৯৮ সাল থেকে লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের উচ্চতর অধ্যয়ন এবং প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। বুয়েট ২০১৭ সাল থেকে ইউরোপীয় কমিশনের ইরাসমাস+ প্রোগ্রামের অর্থায়নে ইন্টারেন্যাশনাল ক্রেডিট মোবিলিটি প্রোগ্রাম এ ইউএলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। দুটি প্রতিষ্ঠান ২০১৯ সালে এ-সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক সই করে।

ডুয়েল মাস্টার্স প্রোগ্রামের চুক্তি সই অনুষ্ঠানে অধ্যাপক হিলি বলেন, ‘এই স্মারক চুক্তি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দুটির মধ্যে সম্পর্ককে সুদৃঢ় করবে। এটি বুয়েট তথা বাংলাদেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের লিমেরিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডভান্স মাস্টার্স প্রোগ্রামে অংশগ্রহণের মধ্যে দিয়ে লিমেরিকের মতো একটি শহর, যেখানে বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বহুজাতিক কোম্পানিগুলো অবস্থিত, সেখানে প্রবেশের দ্বার উন্মুক্ত করবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি ইউএল এবং বুয়েটের মধ্যে এই ইউনিভার্সিটি টু ইউনিভার্সিটি অংশীদারত্ব প্রতিষ্ঠায় আনন্দিত। এটি সময়োপযোগী, উভয়পক্ষের জন্য উপকারী এবং উভয় সরকারের প্রচেষ্টার সঙ্গে সমন্বয়মূলক। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, চুক্তিটি আগামী দিনগুলোতে ইউএল এবং বুয়েটের মাঝে আরও নতুন যৌথ প্রোগ্রামের সূচনা করবে। যা এই ঐতিহাসিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করে তুলবে।’

বুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক মজুমদার বলেন, বুয়েট প্রতিবছর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ মেধাবীদের একটি উল্লেখযোগ্য অংশকে তাদের শিক্ষার্থী হিসেবে গ্রহণ করে। এসব প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের বিশ্বের সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য উচ্চশিক্ষার আনুষ্ঠানিক মাধ্যম প্রয়োজন। যাতে তারা স্নাতকোত্তর অধ্যয়নের জন্য ভর্তি প্রক্রিয়ার অনিশ্চয়তা দূর করে অবিলম্বে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে প্রস্তুত হয়।

তিনি আরও বলেন, ‘লিমেরিক ইউনিভার্সিটির যে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা এবং আয়ারল্যান্ডজুড়ে যে বহুজাতিক কোম্পানির ইন্ডাস্ট্রিয়াল নেটওয়ার্ক রয়েছে তা আমাদের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা উন্নয়নে এবং বিশ্বমানের গবেষণায় অংশ নিতে সাহায্য করবে। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের পরবর্তী শিল্প বিপ্লবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে।’ বিজ্ঞপ্তি

বিষয়:

২৪৭ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রুতিকটু নাম পাল্টে হলো ‘রুচিশীল’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রাথমিক শিক্ষা হচ্ছে শিশুদের বুনিয়াদি শিক্ষা। তবে স্থানীয় এলাকার কিছু নেতিবাচক নাম দিয়ে তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নামকরণ হওয়ার কারণে শিশু অবস্থায় বা পরবর্তী সময় তারা নানারকম ট্রলের শিকার হয়। অনেক সচেতন অভিভাবক এমন নামের বিদ্যালয়গুলোতে তাদের সন্তানদের পড়াতেও চান না। অনেক শিশু লজ্জা পেয়ে এসব বিদ্যালয়ে আসতে চায় না। অথচ এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হয়েছে বিভিন্ন সময়ে। সচেতনমহলের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল শ্রুতিকটু শোনায় এমন বিদ্যালয়গুলোর নাম পরিবর্তন করার। অবশেষে এমন একটি দায়িত্বশীল যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক অর্থ দাঁড়ায় এ ধরনের ২৪৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করেছে তারা।

গতকাল বুধবার ২৪৭ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে স্বাক্ষর করেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ কবির উদ্দীন।

প্রজ্ঞাপনে দেখা যায়, শ্রুতিকটু নামের প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর বেশিরভাগই নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, খুলনা, নীলফামারী, পঞ্চগড় ও সিরাজগঞ্জ জেলায় অবস্থিত। এছাড়াও রাজশাহী, বগুড়া, চট্টগ্রাম, জামালপুর, ময়মনসিংহ, বরিশাল, ভোলা, বরগুনা, ঠাকুরগাঁও, রংপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বাগেরহাট, যশোর, মাগুরা, চুয়াডাঙ্গা, নড়াইল, মুন্সীগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, ঢাকা, সিলেট ও হবিগঞ্জ এলাকায় এ ধরনের কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে যেগুলোর নাম পাল্টানো হয়েছে।

উদাহরণ হিসেবে নাটোরের কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের তথ্য তুলে ধরা যায়। নাটোর সদরের একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নাম বলদখাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এলাকার নামে বিদ্যালয়টির নামকরণ। কিন্তু, শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শিখতে আসে মাথা উঁচু করে চলার জন্য। বাংলায় বলদ শব্দটা ব্যবহৃত হয় মূর্খ অর্থে। তাই বলদ শব্দযুক্ত কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আসলে থাকা উচিত নয় যা ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ভবিষতে ট্রলের শিকার করতে পারে। তাই প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বিদ্যালয়টির নাম বদলে দেওয়া হয়েছে স্বপ্নসিঁড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রুচিশীল এই নামটি ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মানুষের মতো মানুষ হওয়ার স্বপ্নের সিঁড়ি হবে এমনটাই প্রত্যাশা নাম বদলের সঙ্গে জড়িত বিশেষজ্ঞ কমিটির।

একইভাবে খুলনার কয়রার খাসিটানা উচ্চবিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে উদয়ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা পাটাচোরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে করা হয়েছে ছায়াবীথি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, নাটোরের লালপুর উপজেলার গোদাগাছা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সালামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার চোরমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে মাতৃছায়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার চুলধরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে ফুলছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার ভন্ডগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে বর্ণমালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ এখাবে শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে।

একইভাবে কুড়িগ্রামের রৌমারীর ঝগড়াচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম বদলে করা হয়েছে আনন্দধারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ার মাথাফাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম বদল করে রাখা হয়েছে মাধবীলতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, একই উপজেলার বোদা ময়নাগুড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম বদল করে রাখা হয়েছে দোলনচাঁপা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।

গত বছরের ১৯ জানুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নামকরণ ও বিদ্যমান নাম পরিবর্তন নীতিমালা-২০২৩ জারি করে মন্ত্রণালয়।

ওই সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষাসচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অনেকগুলোর নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক ভাবার্থ সংবলিত। যা শিশুর রুচি, মনন, বোধ ও পরিশীলিতভাবে বেড়ে ওঠার অন্তরায়। এ জন্য মন্ত্রণালয় এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মানানসই নামকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পর্যায়ক্রমে দেশব্যাপী এ রকম নেতিবাচক ভাবার্থ সংবলিত নাম পরিবর্তন করা হবে।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে ৬৫ হাজার ৫৬ টি। এগুলোয় শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ কোটি ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৯১। শিক্ষক আছেন ৩ লাখ ৬২ হাজার ৭০৯ জন।


জবিতে এক শিক্ষককে সাময়িক,আরেকজনকে স্থায়ী বরখাস্ত

৭ শিক্ষার্থী সাময়িক বহিষ্কার
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জবি প্রতিনিধি

ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে কেন স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া যৌন হয়রানির ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকেও স্থায়ীভাবে বহিষ্কার কেন করা হবে না- তা জানতে চেয়ে নোটিশ দেওয়া হয়েছে।

আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৫তম সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

গত বছরের সেপ্টেম্বরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের এক ছাত্রীর মানসিক পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এ বি এস মাণিক মুনসীকে বিভাগের সব কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এরপর গত ২১ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৪তম (জরুরি ভিত্তিতে ডাকা) সিন্ডিকেট সভায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়।

সিন্ডিকেটের সদস্য অধ্যাপক ড. নূরে আলম আব্দুল্লাহ জানান, গণিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাণিক মুনসীর বিরুদ্ধে নিজ বিভাগের ছাত্রীকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন হয়রানির অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেন স্থায়ী বরখাস্ত করা হবে না সেই জবাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে সত্যতা পাওয়ায় সিন্ডিকেট সভায় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের প্রভাষক আবু শাহেদ ইমনকে দ্বিতীয় কারণ দর্শানোর নোটিশ অর্থাৎ কেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হবে না, সেই জবাব চাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর আগেই তাকে সাময়িক বহিষ্কার ও প্রথম নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

তিনি আরও জানান, আইন বিভাগের শিক্ষার্থী ফাইরুজ সাদাফ অবন্তিকার আত্মহত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি এখনো প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ ছাড়া সিন্ডিকেট সভায় উপস্থিত একধিক সদস্য জানান, বারবার শিক্ষা ছুটি নিয়ে তা শেষ হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে না আসায় ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. জিয়াউল হক শেখকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় শৃঙ্খলা কমিটির সুপারিশে পরীক্ষায় নকল করার অপরাধে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও জরিমানা করার সিদ্ধান্ত হয়। আর গত ৮ মার্চ গাজীপুরে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ জবির ৭ শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।


প্রধানমন্ত্রীর কাছে খোলা চিঠিতে যা লিখলেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঢাবি প্রতিনিধি

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি চলমান থাকবে কি থাকবে না, এ বিষয়টিকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ এবং বুয়েট শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থানের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা।

মঙ্গলবার এই খোলা চিঠি প্রকাশ করা হয়েছে।

খোলা চিঠি

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,

আমরা বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমানে স্নাতক পর্যায়ে অধ্যয়নরত পাঁচ হাজারেরও অধিক শিক্ষার্থী আপনার প্রতি যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা রেখে সবিনয়ে আমাদের দু-চারটি কথা এবং আর্জি আপনার কাছে নিবেদন করছি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের স্বপ্নসারথি, বঙ্গবন্ধুর দর্শন অনুসরণ করে আপনি দৃঢ় পায়ে এগিয়ে চলেছেন। আপনি দেশকে জ্ঞানে-বিজ্ঞানে এগিয়ে যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে নিরলস শ্রম দিয়ে যাচ্ছেন, সেই একই স্বপ্ন বুকে ধারণ করে নিজেদের শ্রম-মেধা-মনন কাজে লাগিয়ে নিরঙ্কুশ অধ্যবসায়ের পর আপনার গর্বের এই দেশসেরা প্রতিষ্ঠানে আমরা পড়ার সুযোগ করে নিয়েছি।

আমরা করোনার সেই বিপদ মুহূর্তে বানিয়েছি লো কষ্ট ভ্যান্টিলেটর, ক্লিন সিটির আশায় পরিত্যক্ত মাস্ক থেকে বানাচ্ছি কনক্রিট, আরও খুঁজছি বিদ্যুতের সহজ উপায়, বানাচ্ছি আর্টিফিশিয়াল আর্মস, সার্জিক্যাল টুলস, পদ্মা সেতু নির্মাণে আমাদের শিক্ষক এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের অবদান অনবদ্য।

শুধু দেশেই না, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে অন্য দেশের দলগুলো- যাদের জন্য বরাদ্দ থাকে আমাদের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি অর্থ এবং গবেষণাগারের সুবিধা- তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আমরা ছিনিয়ে আনছি বিজয়। আপনি নিঃশর্তভাবে আমাদের অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন এসব গবেষণা খাতে।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি আমাদের অভিভাবক। আমরা নিজেদের মেধা ও শ্রমের সবটুকু দিয়ে বিজ্ঞানের অবাক করা দুনিয়ার একটা অংশের নেতৃত্বে বাংলাদেশকে দেখতে চাই। আমরা ত্রাসের রাজনীতির মারপ্যাঁচ বুঝি না। আমরা শুধু দেশকে, দেশের মানুষকে ভালোবাসতে জানি। নিজেদের কাজ দিয়ে তা আমরা প্রমাণ করতে বদ্ধপরিকর।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি মানবকল্যাণব্রতী। আপনি আমাদের সবার অভিভাবক, দেশের অভিভাবক। আমরা জানি দেশের কোথাও কোনো দুঃখজনক পরিস্থিতি চললে, দেশের কোথাও সংকট চললে, আপনার হৃদয়ে গভীর রক্তক্ষরণ হয়।

বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, উনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, আশির দশকে স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে এ দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর মধ্যে জনমত গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রেখেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। অথচ বিগত বছরগুলোতে আমরা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার নেতিবাচক দিকগুলোই প্রত্যক্ষ করেছি। ছাত্ররাজনীতির মাধ্যমেই শিক্ষার্থীদের মাঝে সূচনা ঘটেছে আধিপত্য, দাপট, র‌্যাগিং, শিক্ষকদের অপমান, চাঁদাবাজি, শিক্ষার্থী নিপীড়ন, খুনোখুনিতে মেতে ওঠার মতো ঘটনা এবং এর ব্যাপ্তি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে, এর চরমতম মূল্য হিসেবে আমরা আমাদের কেমিকৌশল ৯৯-এর সাবেকুন্নাহার সনি আপু, যন্ত্রকৌশল ০৯-এর আরিফ রায়হান দ্বীপ ভাই এবং সর্বশেষ তড়িৎকৌশল ১৭-এর আবরার ফাহাদ ভাইকে হারিয়েছি।

শুধু আবরার ফাহাদ ভাইয়ের হত্যাকাণ্ডই নয়, এর আগেও অসংখ্য শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের দ্বারা কিংবা ছাত্ররাজনৈতিক দাপটের দ্বারা অমানুষিকভাবে নিপীড়িত হওয়ার ঘটনা রয়েছে, যা আমাদের বুয়েটের র‌্যাগিং স্টোরি আর্কাইভে সারি সারি আকারে লিপিবদ্ধ আছে।

বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার শাহরিয়ারকে স্ট্যাম্প দিয়ে রাতভর বেধড়ক মারধর করা হয়। ১৭ ব্যাচের মেহজাদ গালিবকে নগ্ন করে সোহরাওয়ার্দী হলের ছাদে তুলে স্ট্যাম্প দিয়ে সারারাত মারা হয়। ১৫ ব্যাচের সামিউত তৌসিফকে মেরে হাত-পা ভেঙে দেয়। মারতে মারতে তিনটা স্ট্যাম্প ভেঙে ফেলা হয়। সামিউত তৌসিফ ছিলেন এক মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের সন্তান, তার চাচা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ। তার লিগামেন্ট ছিঁড়ে পায়ে ফ্র্যাকচার হয়ে যায়।
সালাম না দেওয়ায় সাখাওয়াত অভির হাত ভেঙে ফেলে আবরার ফাহাদের হত্যাকারী অমিত সাহা। সৌমিত্র লাহিড়ী থাপ্পড় দিয়ে কানের পর্দা ফাটিয়ে ফেলে একজনের। এ রকম আছে আরও অসংখ্য কাহিনি।

দাপটের আড়ালে ছাত্ররাজনীতি আমাদের ক্যাম্পাসে উন্মুক্তভাবে বিচরণের অধিকার, ক্যাম্পাসের সুস্থ একাডেমিক পরিবেশ, আমাদের স্বাধীনতা, হলের মেসের টাকার সৎ ব্যবহার, ক্যাম্পাস মাদকমুক্ত থাকা, নবীন আগত বুয়েটিয়ানদের একটি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন উপভোগের অধিকার-সবকিছুই হারিয়ে গিয়েছিল। ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েটের পরিবেশ ছিল সর্বোচ্চ নিরাপদ ও শিক্ষাবান্ধব। মৌলবাদী শক্তিকেও রুখে দিতে আমরা ঐক্যবদ্ধ।

বুয়েট শিক্ষার্থীরা বরাবরই একটি নিরাপদ এবং সুস্থ ক্যাম্পাস চেয়ে এসেছে, যেখানে ক্ষমতা-চর্চার লোভ-লালসার শিকলে আবারও জিম্মি হয়ে যাবে না সবার নিরাপত্তা, শিক্ষাঙ্গনের উপযুক্ত পরিবেশ।

সুস্থ নেতৃত্ব এবং নৈতিকতা বিকাশের সব উপাদান ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির উপস্থিতি ছাড়াও গত কয়েক বছরে উপস্থিত ছিল এবং এতে সুস্থ নেতৃত্বের চর্চায় শিক্ষার্থীরা তাদের উপযুক্ত পরিবেশ পেয়েছে।

প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের বার্ষিক উৎসব আয়োজন, প্রতিটি ডিপার্টেমেন্টের নিজস্ব সহশিক্ষা কার্যক্রম এবং একাডেমিক অর্গানাইজেশন, সামাজিক উন্নয়নমূলক কাজ, বিভিন্ন ক্লাবের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে আনন্দের সঙ্গে সম্পন্ন হচ্ছে।

আবাসিক হল এবং ক্যাম্পাসে কোনো প্রকার রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং ক্ষমতা-চর্চা ছাড়াই বিভিন্ন জাতীয় দিবসে সভা-সেমিনার আয়োজন, জাতীয় সহশিক্ষা কার্যক্রমের বিভিন্ন প্রতিযোগিতা আয়োজন, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্জনসহ ক্যাম্পাসের ভেতরে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান সফলভাবেই আয়োজিত হয়েছে।

বর্তমান বুয়েটে শিক্ষার্থীবান্ধব পরিবেশ থাকায় নিজ নিজ প্রকৌশল ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণামুখী কাজে মনোনিবেশ করতে অনুপ্রাণিত হওয়ার হার উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।

একটি রাজনীতিবিহীন নিরাপদ ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য দেশব্যাপী জনগণের কাছে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত এবং সমাদৃত হয়েছে। রাজনীতিমুক্ত বুয়েট ক্যাম্পাসের গত চার বছরেরও বেশি সময় ধরে আমাদের এসব সফলতা আমাদের জানান দেয়, আমরা আমাদের বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতি ছাড়াও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন নেতৃত্ব গঠন এবং বিকাশ প্রয়োজন, তা করতে পারি। স্মার্ট বাংলাদেশ এর লক্ষ্য অর্জনে আমরা নিরন্তর কাজ করে যেতে পারি।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি জেনে খুশি হবেন যে বাকি সব প্রকৌশল-প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বুয়েটেও থিসিসের জন্য রিসার্চ টাস্ক চতুর্থ বর্ষে আবশ্যক হলেও আমাদের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরা আগে থেকে বিভিন্ন রিসার্চ প্রজেক্টে নিজ ইচ্ছায় অংশগ্রহণ করছে।
এ ছাড়া, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন প্রকৌশল প্রতিযোগিতায়, বিতর্ক প্রতিযোগিতায়, কুইজ প্রতিযোগিতায়, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বুয়েটিয়ানদের সাফল্য গত সাড়ে চার বছরে সুস্পষ্টভাবে বেড়েছে।

আপনি জেনে আরও খুশি হবেন যে, তথ্য-প্রযুক্তিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি-আন্তর্জাতিক কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় আমাদের অর্জন স্বর্ণপদক। ইয়ং ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড সাইন্টিস্ট অ্যাওয়ার্ডের মতো বিশ্ব সমাদৃত অ্যাওয়ার্ড পেয়েছে বুয়েটের ছয়জন এবং শুধু গত বছরেই চার শিক্ষার্থী।

জন হপকিন্স রাইস ইউনিভার্সিটির মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানের হেলথকেয়ার চ্যালেঞ্জে আমাদের উপস্থিতি এবং পুরস্কার প্রাপ্তি এখন নিয়মিত। থাইল্যান্ড-মালয়েশিয়ার আইইইই কম্পিটিশনে আমাদের বুয়েটিয়ানদের বানানো ড্রোন একের পর এক পুরস্কার জিতেছে। মার্স রোভার চ্যালেঞ্জেও আমাদের দলের সাফল্য নিয়মিত। শুধু প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নয়, সর্বশেষ বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্টে উদ্যোক্তা হিসেবে স্বীকৃত হয়েছে বুয়েটের এক স্টার্টআপ।

একইসঙ্গে সিনিয়র-জুনিয়র কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নামিয়েছে বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ফেস্ট, ডিপার্টমেন্টাল ডে- যেখানে অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা আমাদের সহপাঠীরাও যথেষ্ট খুশি হয়েছে আমাদের আয়োজনে।

এ আয়োজন ও অংশগ্রহণ সম্ভব হয়েছে শুধু একটি নিরাপদ ছাত্ররাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের কারণে। যেখানে হল রেসিডেন্ট কোনো শিক্ষার্থীকে চিন্তায় থাকতে হয়নি যে হলে তাকে র‌্যাগের সম্মুখীন হতে হবে বা এটাচড কোনো শিক্ষার্থীরও উদ্বেগ ছিল না যে ক্যাম্পাসে আসলে তাকে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সম্মুখীন হতে হবে।

ছাত্ররাজনীতি বন্ধ হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত প্রতিটি জাতীয় দিবস সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শনপূর্বক আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করে আসছি। আমরা শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের জাতীয় মূল্যবোধ ও ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মনে-প্রাণে ধারণ করি।

দেশের গৌরবময় ইতিহাস, ত্যাগ-তিতিক্ষা আমরা অন্তরে লালন করি, ভবিষ্যতে পথচলায় অনুপ্রেরণা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতীয় মূল্যবোধ, দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ আমাদের সবার জন্যই প্রযোজ্য এবং একান্ত পালনীয়। আমরা সাংগঠনিক রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে এসেই এই সচেতনতা রাখি।

অথচ, অত্যন্ত দুঃখজনক হলেও সত্য যে কতিপয় ব্যক্তি বা গণমাধ্যমের তৎপরতায় ছাত্ররাজনীতিবিহীন বুয়েট ক্যাম্পাসকে জাতীয় চেতনার বিরোধী মতাদর্শের স্থান হিসেবে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বিষয়টিতে আমরা অত্যন্ত ব্যথিত।

আমরা বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে দেশের সংবিধান ও প্রচলিত আইনের ব্যাপারে যথেষ্ট শ্রদ্ধাশীল। তাই দেশের যেকোনো স্থানের মতো আমাদের ক্যাম্পাসকে আমরা অবশ্যই যেকোনো প্রকারের সন্ত্রাস, মৌলবাদ বা নিষিদ্ধ গোষ্ঠী থেকে নিরাপদ রাখতে সর্বদা তৎপর।

সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক মহল থেকেই বলা হচ্ছে, ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ মৌলবাদী বা সন্ত্রাসী সংগঠনের কার্যক্রম বিদ্যমান এবং এর ফলশ্রুতিতেই তারা বুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্ররাজনীতির চর্চার পক্ষে যুক্তি দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা আপনাকে নির্দ্বিধায় বলতে চাই, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীরা যদি যেকোনো মুহূর্তে এসব নিষিদ্ধ সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর যেকোনো কার্যকলাপ ক্যাম্পাসে চলমান দেখি, শিগগির তার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেব এবং প্রশাসনকে অবহিত করব।

এমনকি ভবিষ্যতে যদি ক্যাম্পাসে এ ধরনের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে সেটার বিরুদ্ধেও আমাদের অবস্থান দৃঢ়।

বুয়েট ক্যাম্পাসে এই চার বছর আমরা নির্বিঘ্নে কাটিয়েছি, সেখানে ছায়া হয়ে ছিলেন আমাদের শিক্ষকরা। আমাদের মতো দেশজুড়ে লাখো শিক্ষার্থী এমন একটা ক্যাম্পাসের স্বপ্ন নিয়েই বাড়ি ছাড়ে, যেখানে তাদের ওপর অকারণে জুলুম হবে না, নির্যাতিত হতে হবে না, দিন-রাত কারও ভয়ে তটস্থ থাকতে হবে না, বাবা-মাকে দুশ্চিন্তায় চোখের পানি ফেলতে হবে না।

চার বছর আগে আপনার দৃঢ় এবং দ্রুত হস্তক্ষেপে আমরা নতুন করে এই ক্যাম্পাসে বাঁচতে শিখেছি। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস এই ছোট্ট একটা চাওয়ার কারণে আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি হুমকি, হচ্ছি লাঞ্ছিত, অপদস্থ।

আমরা, আমাদের ছোট ভাই-বোনেরা আরও একবার সেই অন্ধকার দিনগুলোর সাক্ষী হতে চাই না। মাননীয় উপাচার্য এবং সব শিক্ষকের প্রতি আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে। আমরা জানি তারা তাদের সন্তানদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তায় সর্বদা সচেষ্ট আছেন এবং থাকবেন।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার কাছে সবিনয়ে অনুরোধ, আপনি আমাদের পাশে দাঁড়ান। আপনি সব সময় শিক্ষার্থীদের পাশে থেকেছেন। আমরা জানি, এই দুর্দিনে আপনি আমাদের ছেড়ে যাবেন না।

আমাদের স্বনামধন্য অ্যালামনাই, বুয়েটের অধ্যাপক ইমেরিটাস, প্রফেসর ড. আইনুন নিশাত বলেছেন যে, দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নতুন অধ্যাদেশ করে শিক্ষকদের রাজনীতি, রাজনৈতিক কার্যকলাপ ইত্যাদির অনুমতি দেওয়া হয়। কিন্তু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও বুয়েটের জন্য অধ্যাদেশের খসড়া যখন বঙ্গবন্ধুর সামনে উপস্থাপন করা হয়, তখন তিনি বলেছিলেন যে এই দুটো বিশ্ববিদ্যালয় নষ্ট করা চলবে না। খসড়া অর্ডিন্যান্স বঙ্গবন্ধু ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। বুয়েটের শিক্ষকরা তার সঙ্গে দেখা করার চেষ্টা করেছিলেন। এই এজেন্ডাতে তিনি দেখা করতে রাজি হননি। তখন শিক্ষকরা কথা বলতেন তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলীর সঙ্গে।

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বুয়েটের পড়াশোনার পরিবেশের গুরুত্ব, দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে বুয়েটের প্রকৌশলী এবং দক্ষ প্রযুক্তিবিদের গুরুত্ব বঙ্গবন্ধুর চিন্তায় প্রাধান্য পেয়েছে সবসময়। আপনারা সবাই জানেন, দেশের জন্য এই সময়ে মেধাবী ও দক্ষ প্রকৌশলীর গুরুত্ব কতটা।

আমরা উন্নত বিশ্বের দিকে তাকিয়ে দেখি, তারা তাদের জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রসার, কাঠামোগত উন্নয়নকে নিরবচ্ছিন্ন করার লক্ষ্যে বিশেষভাবে তাদের প্রকৌশলীদের সমৃদ্ধ করার ব্যবস্থা করছে। কিন্তু বলতে ভীষণ কষ্ট হয়, অনেক কষ্টে পাওয়া সেই আকাঙ্ক্ষিত পরিবেশ এবং ভবিষ্যৎ প্রকৌশলীরা আজ ছাত্ররাজনীতির করাল গ্রাসের থাবা থেকে নিজেকে রক্ষার যুদ্ধ করতে করতে জর্জরিত।

এই বিদ্যাপীঠে ঠিকমতো রুটিনমাফিক পড়াশোনা ও গবেষণায় মনোনিবেশ করার পর কোনো শিক্ষার্থীর পক্ষে রাজনৈতিক কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার সময় দেওয়া সম্ভব নয়। অত্যন্ত ভারাক্রান্ত মন নিয়ে বলছি, বঙ্গবন্ধুর ভালবাসার মাটিতে দাঁড়িয়ে আজ এই ভবিষ্যৎ প্রকৌশলীদের দিনের পর দিন রাস্তায় থাকার কথা নয়।

আমাদের চাওয়া, বুয়েটকে ঘিরে আমাদের জাতির জনকের যে ভিশন ছিল, তাকে বাস্তবায়ন করা হোক। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বুঝতে পেরেছিলেন যে বুয়েটের প্রকৃতি ভিন্ন। তাই তিনি নিজে রাজনীতির আওতা থেকে এই বিশ্ববিদ্যালয়কে বাইরে রেখেছিলেন। আজ যখন তারই গড়ে তোলা রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা বুয়েটের মতো বিশেষায়িত একটি বিশ্ববিদ্যালয়কে যেকোনো মূল্যে রাজনীতির আওতায় আনার কথা বলে, আমরা বিশ্বাস করি তখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ও সিদ্ধান্তকে অপমান করা হয়।

দেশমাতা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার প্রতি আমাদের আকুল আবেদন, বুয়েটকে নিয়ে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, যে পলিসি গ্রহণ করেছিলেন, তার বাস্তবায়ন করুন। বুয়েটকে ছাত্র রাজনীতির বাইরে রাখুন, প্রয়োজনে আইন সংস্কার করে হলেও। কারণ সুবিচারের জন্যই আইনের সৃষ্টি।

আমাদের অনুরোধ, আপনি দয়া করে আমাদের ক্যাম্পাসে আসুন। ছাত্ররাজনীতিহীন বুয়েট গত কয়েক বছর ধরে শিক্ষার্থীদের জন্য যে আদর্শ ক্যাম্পাস হয়ে উঠেছে, সেটা আমরা আপনাকে দেখাতে চাই। আমরা আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আমরা প্রযুক্তিবিদ্যায় বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পেছনে ফেলে দেব খুব শিগগির।

আহসান উল্লাহ হল আয়োজিত নবীনবরণ ও সমাপনী সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে উপ-উপাচার্য মহোদয় বলেছিলেন, ‘ছাত্ররাজনীতিবিহীন ক্যাম্পাসে আমরা ভালো আছি, সৃজনশীল কাজ করছি, আমরা র‌্যাঙ্কিংয়ে ফোকাস করছি।

সেই অনুষ্ঠানে স্যার আরও বলেন, ‘ইউনিভার্সিটি শুড গো হায়ার। আমি ইন্টারভিউ দিয়েছি প্রথম আলোতে, আমরা কিছু পলিসি রোল আউট করেছি। যদি পলিসিগুলো বাস্তবায়িত হয়, তাহলে ডাউন দ্য রোড মেবি উইদিন ফাইভ-সিক্স ইয়ার্স, তোমরা এই বুয়েটের র‌্যাঙ্কিং ৫০-এর মধ্যে দেখতে পারবা।’
শেষ কয়েক বছর এই প্রত্যয় নিয়েই প্রতিটি প্রকৌশল বিভাগে আমরা অক্লান্ত পরিশ্রম করছি, ইতোমধ্যে যার ফলও পেতে শুরু করেছি। আমাদের এই পথচলা আপনিই নির্বিঘ্ন রাখতে পারেন। সেই আশাতেই এই চিঠি। আমরা আপনার হাজারো সন্তান-আপনার সহযোগিতার প্রতীক্ষায় আছি।

নিবেদক

বুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীরা


নতুন কারিকুলামে অটিজম শিশুরা আরও বেশি শিখবে: শিক্ষামন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

নতুন কারিকুলামে অটিজম শিশুরা আরও বেশি শিখতে পারবে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। তিনি বলেছেন, আগে যে পদ্ধতি ছিল, তা অটিজম শিক্ষার্থীদের জন্য আরও চাপের ছিল। বর্তমানে নতুন কারিকুলামের মাধ্যমে অটিজম শিশুরা আরও বেশি শিখতে পারবে।

আজ মঙ্গলবার বিশ্ব অটিজম দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে সাধারণ যে শিক্ষার্থীরা আছেন, তারাও উপলব্ধি করতে পারবেন। দলগত কাজ করলে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীরা দ্রুত মূল ধারায় ফিরতে পারবেন। তবে সেক্ষেত্রে প্রশিক্ষিত শিক্ষকের অত্যন্ত প্রয়োজন।’

মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা ন্যাশনাল একাডেমি ফর অটিজম অ্যান্ড নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজএবিলিটিজের (নায়েম) নাম শুনেছেন। সেটার ডিজাইন আমাদের প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন। সেখান থেকে আমাদের সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের প্রস্তুত করা হবে। সেখানে শুধু অটিজম শিক্ষার্থীদের দেখাশোনা হবে, তা না। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়াও হবে। যারা প্রশিক্ষণ পাবেন, তারা সেখান থেকে মাস্টার ট্রেইনার হবেন। তারা দেশব্যাপী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আমাদের অটিস্টিক সন্তানদের কীভাবে মূল ধারায় আনা যায়, সে লক্ষ্যে কাজ করবেন। যাতে তারা সাধারণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অংশ নিতে পারেন সে ব্যবস্থা করবেন।’

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘বিশ্ব অটিজম শুধু পালন নয়, প্রান্তিক পর্যায় থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরে অটিস্টিক শিশুদের বিষয়ে সচেতনতা ও তাদের অধিকারের প্রশ্নে সবার দায়িত্বশীল হতে হবে। যারা অটিস্টিক তাদের আগে সামাজিকভাবে গুটিয়ে রাখা হতো। তবে এখন তাদের নিয়ে আজ এ দিবস পালন এটা ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রগতি। আমাদের সন্তাদের মধ্যে যারা অটিস্টিক তাদের দায়িত্ব আমাদের নিতে হবে। তাদের চাহিদা আমাদের বুঝতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষাপ্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব সোলেমান খান, মাদরাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক অধ্যাপক নেহাল আহমেদ প্রমুখ।


এইচএসসি পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ

ফাইল ছবি
আপডেটেড ২ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:৫৭
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

২০২৪ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।

এ পরীক্ষা শুরু হবে ৩০ জুন থেকে। লিখিত পরীক্ষা শেষ হবে ১১ আগস্ট। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ১২ আগস্ট থেকে ২১ আগস্টের মধ্যে শেষ করতে হবে।

মঙ্গলবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর আবুল বাশার স্বাক্ষরিত এ রুটিন প্রকাশ করা হয়।‌

রুটিন অনুযায়ী, প্রথম দিন বাংলা প্রথমপত্রের পরীক্ষা হবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে পরীক্ষা চলবে দুপুর ১টা পর্যন্ত।

এর আগে চলতি বছর ২০২৪ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা জুন মাসের শেষ সপ্তাহে শুরু করার প্রস্তাব পাঠায় আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর আজ ৩০ জুন পরীক্ষার তারিখ ঠিক করে রুটিন প্রকাশ করা হয়েছে।

রুটিন দেখতে এখানে ক্লিক করুন...


জাবিতে যৌন হয়রানি: দৈনিক বাংলায় রিপোর্টের পর ঢাবিতে নিয়োগ আটকালো শিক্ষকের

আপডেটেড ১ এপ্রিল, ২০২৪ ২১:২৬
ঢাবি প্রতিনিধি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন ইনিস্টিউটের (আইবিএ) প্রভাষক পদে নিয়োগ পেতে যাওয়া এক শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠায় সেই নিয়োগ আটকে দিয়েছে ইনিস্টিউটটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম বোর্ড অব গভর্ন্যান্স।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল এই বোর্ডের সভাপতিত্ব করেন। উপাচার্য সংলগ্ন লাউঞ্জে আজ (সোমবার) বিকেল তিনটায় এই বোর্ডের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠা শিক্ষকের নাম সাজু সাহা। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক। বিভাগেরই এক সাবেক ছাত্রী এই শিক্ষককের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেন।

সম্প্রতি সাজু সাহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ'র প্রভাষক পদের জন্য আবেদন করেছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছারের সভাপতিত্বে হওয়া নিয়োগ বোর্ড সাজু সাহাসহ চারজনকে নিয়োগের জন্য মনোনীত করেন। আজ অনুষ্ঠিত হওয়া বিজি (বোর্ড অব গভর্ন্যান্স) বোর্ডে এটি পাশ হওয়ার কথা ছিলো। এর আগে আজ সোমবারই যৌন হয়রানির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসে সংবাদ প্রকাশ করে দৈনিক বাংলা।

বিজি বোর্ডের সিদ্ধান্ত নিয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়নি। এটি এখন রিভিউ করার জন্য সিলেকশন বোর্ডে পাঠানো হয়েছে।

সিলেকশন বোর্ডের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো- উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. সীতেশ চন্দ্র বাছার বলেন, বিষয়টা আজকে বোর্ড অব গভর্ন্যান্সে উঠেছিলো। কিন্তু এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়নি। সেখান থেকে এটি আমাদের কাছে পাঠানো হয়েছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য।

এর আগে আজ সোমবার দৈনিক বাংলার প্রকাশিত সংবাদে ভুক্তভোগী সেই শিক্ষার্থীর বরাত দিয়ে বলা হয়, অধ্যাপক সাজু সাহা কাউন্সেলিং করানোর নামে তাকে নিপীড়ন করেছেন উল্লেখ করে সাবেক ওই ছাত্রী বলেন, ‘তিনি আমার গায়ে হাত দিয়েছেন। আমাকে তার সঙ্গে হুক-আপ করার প্রস্তাব দিয়েছেন। উনার প্রস্তাব গ্রহণ করার জন্য রেস্টুরেন্টে আমার পা পর্যন্ত ধরতে চেয়েছেন। এ সবের ট্রমায় আমি এক সেমিস্টার ক্লাসেও নিয়মিত হতে পারিনি।’

তিনি বলেন, ‘এসব আমি এতোদিন উপস্থাপন করার সাহস পাইনি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইরুজ অবন্তিকার ঘটনার পর আমি এগুলো সামনে আনার সাহস পাই।’

সাবেক ওই ছাত্রী আরও বলেন, ‘সাজু সাহা ভয়ে আছেন; আমার অভিযোগের ব্যাপারে। কারণ, তিনি তো জানেন, তিনি আমার সঙ্গে কি করেছেন! ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গেলেও উনি নিশ্চিত একই কাজ করবেন সেখানকার নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। উনার বিচার নিশ্চিত করেই ছাড়বো আমি, শুধু সময়ের অপেক্ষা।’

এদিকে আজ সোমবার এই শিক্ষার্থী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্টি সেক্সুয়াল হ্যারাসমেন্ট সেলে অভিযুক্ত শিক্ষককের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।অন্যদিকে এদিন দুপুরেই এই শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা করেছেন অধ্যাপক সাজু সাহা।


banner close