‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেব না ভুলিতে’- গানে এ কথা বলে গিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। প্রেম ও দ্রোহের কবি হয়ে তিনি তাঁর গানের চরণের মতোই বাংলা ভাষাভাষীর হৃদয়ে বেঁচে আছেন, থাকবেন। বিদ্রোহী, প্রতিবাদী, সুন্দরের উপাসক, জাতীয় জাগরণের প্রতিভূ এবং বহুমাত্রিক ঔজ্জ্বল্যে ঋদ্ধ নজরুল ভারত থেকে প্রথমবার বাংলাদেশের ত্রিশালে আগমন করেন। খুব শৈশবে তিনি এই ত্রিশালে এসেছিলেন। তার বর্ণাঢ্য কৈশোরকে আগলে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠা করা হয় তার নামে বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত দেশের ২১তম সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়টি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় নামেই সমধিক পরিচিত।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন- এই তিনটি শব্দকে মোটো হিসেবে নিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিযাত্রা আমরা শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন- এই তিনটি উদ্দেশ্য নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে কাজ করে যাচ্ছি। শিক্ষা বলতে বর্তমান সময়ের যুগোপযোগী শিক্ষা, দ্বিতীয় হচ্ছে গবেষণা। বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকরা গবেষণা করবেন, প্রত্যেকের নিজস্ব ক্ষেত্রে নতুন নতুন আবিষ্কার করবেন এবং শিক্ষার্থীদের গবেষণামনস্ক করে গড়ে তুলবেন- যাতে তারা ভবিষ্যতে গবেষণার সঙ্গে যুক্ত থাকেন।’
কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘ভেঙে যে গড়তে জানে, সে চিরসুন্দর।’ এখানে সব ভেঙে গড়তে হচ্ছে। যারা গবেষণার ক্ষেত্রে বিমুখ ছিলেন, তাদের গবেষণায় আনতে হচ্ছে। তবে আশাব্যঞ্জক বিষয় হচ্ছে, আমরা গবেষণায় শিক্ষকদের যথেষ্ট সমর্থন পাচ্ছি। প্রথমবারের মতো আমরা আয়োজন করেছি গবেষণা মেলা। ইতোমধ্যে আমরা দুটো আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের আয়োজন করেছি, যেখানে দেশ-বিদেশের বিদগ্ধ গবেষকরা অংশগ্রহণ করেছেন। নতুন জ্ঞান সৃষ্টির জন্য আমাদের এই অগ্রযাত্রা আগামীতেও অব্যাহত থাকবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকদের জন্য প্রতিবছর এ ধরনের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজনের উদ্যোগ নেয়া হবে। আমাদের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী সবাইকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ক্যাম্পাসকে ধারণ করতে হবে। আমরা প্রত্যেকে শুধু যার যার যে কাজ, সেই কাজটুকু ঠিকভাবে করলে আমরা অনেক দূর এগিয়ে যাব, যোগ করেন উপাচার্য।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জার্নাল যেটা দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল, সেটা ছাপার দোরগোড়ায়। বিভিন্ন অনুষদ থেকে জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে, শিগগিরই প্রকাশিত হচ্ছে আইন অনুষদের জার্নাল। কিছুদিন আগেই প্রকাশিত হয়েছে কলা অনুষদের জার্নাল ‘মানববিদ্যা’। এ ছাড়া আমাদের বিভাগগুলো থেকে জার্নাল প্রকাশ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগ, নাট্যকলা ও পরিবেশনা বিদ্যা বিভাগ, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগ, ফোকলোর বিভাগসহ বিভিন্ন বিভাগ নিজস্ব জার্নাল প্রকাশ করছে।
সৌমিত্র শেখর বলেন, ‘কুম্ভীলব বৃত্তি বা প্লেগারজিম চেকার সফটওয়্যার সংযোজন করা হচ্ছে শিগগিরই। আইকিইউসি নানাবিধ গবেষণামূলক কাজ বিশেষত ট্রেনিংয়ের আয়োজন করছে। ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ নজরুলকে নিয়ে গবেষণার কাজ করছে। গবেষণা ও সম্প্রসারণ দপ্তর গবেষণা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তারা সবাই বহুবিধ কাজে ব্যস্ত।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ইতোমধ্যে অ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরির মাধ্যমে সেশনজট দূর করতে পেরেছি। আমরা বিভাগগুলোতে এমন কিছু বিষয় যুক্ত করার কথা ভাবছি যেগুলো যুক্ত হলে পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে শিক্ষার্থীরা নিজেদের খাপ খাওয়াতে পারবে। ত্রিশাল থেকে যেন একজন শিক্ষার্থী জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে যুক্ত হতে পারে, সে ব্যবস্থা ধীরে ধীরে করা হবে। এখানকার আইটি সেকশনকে গুরুত্ব দিয়ে এখানে একটা ইনস্টিটিউটের কথা প্রশাসন ভাবছে। আশা করা যায়, ভবিষ্যতে সে ইনস্টিটিউট আমরা স্থাপন করতে পারব। আইসিটির মধ্য দিয়ে এখানকার প্রত্যেকটি ছেলেমেয়ে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত হবে।’
তিনি জানান, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিলক্ষ্য হচ্ছে সাংস্কৃতিক শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষা, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল, সামাজিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় প্রশাসনবিষয়ক পঠন-পাঠনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ ঘটানো। দেশের আধুনিক ও টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে গবেষণা এবং লাগসই প্রযুক্তি উদ্ভাবনের দ্বারা জাতীয় উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অবদান রাখা।
চলছে বিশাল কর্মযজ্ঞ
বর্তমান সময়ে ক্যাম্পাসে চলছে উন্নয়নের সুবিশাল কর্মযজ্ঞ। ক্যাম্পাসের যেদিকে তাকানো যায় সেদিকেই অবকাঠামোর নির্মাণকাজ চলমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য একনেকে অনুমোদিত ৮৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় বর্তমানে ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। নির্মাণাধীন ভবনগুলোর উল্লেখযোগ্য হলো- ২ হাজার ৯৩২ বর্গমিটার আয়তনে ২য় প্রশাসনিক ভবন, ৯ হাজার ৯৬০ বর্গমিটার আয়তনের ১০ তলা ভবন যেখানে পাঁচটি ইনস্টিটিউট, আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের শ্রেণিকক্ষ এবং আইটি স্পেস থাকবে, ৮২১ বর্গমিটার আয়তনের ৫ তলা অতিথি ভবন নির্মাণ, ৪২ হাজার ২৯৫ বর্গমিটার আয়তনের ১০ তলা একাডেমিক ভবন, ৫ হাজার ৩৩৬ বর্গমিটার আয়তনের স্কুল ও কলেজ ভবন নির্মাণ (নার্সারি হতে দ্বাদশ পর্যন্ত), ১৩ হাজার ৪৯৮ বর্গমিটার আয়তনের শিক্ষক-কর্মকর্তার জন্য ১০ তলা ইউটিলিটি ভবন নির্মাণ, ৬ হাজার ৩৪৭ বর্গমিটার আয়তনের শিক্ষক-কর্মকর্তার জন্য ১০ তলা আবাসিক ভবন নির্মাণ, ১ হাজার ৫৭৩ বর্গমিটার আয়তনের পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের জন্য ৬ তলা আবাস ভবন নির্মাণ, ৭ হাজার ৮১১ বর্গমিটার আয়তনের ৩ তলা মাল্টিপারপাস হল-কাম টিএসসি-কাম জিমনেসিয়াম ভবন নির্মাণ, ১ হাজার ০১৯ বর্গমিটার আয়তনের চিকিৎসা কেন্দ্রের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণ (অফিস, হাসপাতাল ও আবাসিক সুবিধা সংবলিত), ২ হাজার ২৫২ বর্গমিটার আয়তনের ইমাম ও মুয়াজ্জিনের আবাসনসহ ৩ তলা মসজিদ নির্মাণ উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া রয়েছে ক্যাম্পাসের চারিদিকে নিরাপত্তার জন্য সবুজবেষ্টনী নির্মাণ, খেলার মাঠ উন্নয়ন- (ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস, বাস্কেট বল কোর্ট, শিশুপার্ক ও বৃক্ষরোপণ), জলাশয়ে রিটেইনিং স্ট্রাকচার নির্মাণসহ সৌন্দর্যবর্ধন কাজ, সমগ্র ক্যাম্পাসে অভ্যন্তরীণ আরসিসি রাস্তা নির্মাণ, ময়লা পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেইন ও কালভার্ট নির্মাণ ভূমি উন্নয়ন ইত্যাদি। নতুন অ্যাকাডেমিক বিল্ডিংয়ের নিচ তলায় নানারকম সেমিনার, ওয়ার্কশপ, ট্রেনিং আয়োজনের জন্য একটি অডিটোরিয়াম নির্মাণ করা হচ্ছে। জয়ধ্বনি মঞ্চ ছাড়াও আরও বেশ কিছু মঞ্চ করা হবে।
‘দেখব এবার জগৎটাকে’
উচ্চশিক্ষার বিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রসরমান বিশ্বের সঙ্গে সংগতি রক্ষা ও সমতা অর্জন এবং জাতীয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষা ও গবেষণা, বিশেষ করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আধুনিক জ্ঞানচর্চা ও পঠন-পাঠনের সুযোগ সৃষ্টি ও সম্প্রসারণের নিমিত্ত প্রতিষ্ঠা লাভ করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে জাত্যাভিমানের প্রাচীর ডিঙিয়ে সাম্য-মৈত্রী, ভ্রাতৃত্ব এবং মানবতার বলিষ্ঠ প্রত্যয়ের নাম কাজী নজরুল ইসলাম। একইভাবে তাঁর নামে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও একই প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবস্থায় ও পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন অর্জনের মাধ্যমে আলোকিত করছে এই নজরুলতীর্থকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেন জ্ঞানার্জনের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, সে জন্য নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় দেশে এবং দেশের বাইরে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর করা হয়েছে। এর আওতায় নিজেদের মধ্যে শিক্ষক-শিক্ষার্থী বিনিময়, তরুণ গ্র্যাজুয়েটদের ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থা, গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য প্রশিক্ষণ-কর্মশালা আয়োজনসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে একে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারবেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছে ইরানের ফেরদৌসী বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়, আসাম ডাউনটাউন বিশ্ববিদ্যালয়, সিধু-কানহো-বিরসা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশের রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা ইউনিভার্সিটি অব ইঞ্জিনিয়ারিং টেকনোলজি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ও দ্য ইনফিনিটি মেরিটাইম রিসার্চ অ্যান্ড রোবোটিক টেকনোলজি লিমিটেড।
এ ছাড়া সংগীত, নাট্যকলা বিভাগের প্রতিনিধিদল দেশের বাইরে নান্দনিক পরিবেশনার মাধ্যমে প্রশংসা কুড়িয়েছে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে তাদের চলচ্চিত্র প্রদর্শনী হয়েছে এবং পুরস্কৃত হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ক্লাবের কার্যক্রমও উল্লেখ করার মতো। ন্যাশনাল ক্যাম্পাস জার্নালিজম ফেস্ট, আন্তবিশ্ববিদ্যালয় বিজনেস কেইস কম্পিটিশন, আন্তবিশ্ববিদ্যালয় শর্ট ফিল্ম ফেস্টিভাল, ন্যাশনাল সফট স্কিল ফেস্ট, জব ফেয়ার, ক্যারিয়ার ফেস্ট, আন্তবিশ্ববিদ্যালয় আইডিয়া জেনারেশন কনটেস্টের মতো জাতীয় পর্যায়ের বিভিন্ন আয়োজন করে থাকে সংগঠনগুলো। ক্যারিয়ার ও আত্মোন্নয়নের জন্য রয়েছে ক্যারিয়ার ক্লাব, স্কিল ডেভেলপমেন্ট ক্লাব, রিসার্চ সোসাইটি, ডিবেটিং সোসাইটি, নৃ-তার্কিক সংঘ, ফিল্ম অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাব, বিজনেস ক্লাব প্রমুখ। একইভাবে রয়েছে গ্রিন ক্যাম্পাস, রংধনু, সেভ দ্য টুমরো, নির্ভয় ফাউন্ডেশন, অরণ্য, ইনলেপ্ট, রোটারেক্ট ক্লাবের মতো স্বেচ্ছাসেবী ও পরিবেশবাদী সংগঠন। নারী ক্ষমতায়ন নিয়ে কাজ করে উইম্যান পিস ক্যাফে, উইমেন লিডার্সের মতো উদ্যোগ। আরও রয়েছে বিভিন্ন আঞ্চলিক সংগঠন।
সাংস্কৃতিক মননে পরিচালিত বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিবছর উদযাপিত হয় নজরুলজয়ন্তী, রবীন্দ্রজয়ন্তী, বারামখানার উদ্যোগে লালন স্মরণোৎসবের মতো আয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উৎসবমুখর আরও একটি অনবদ্য আয়োজন হচ্ছে ‘কুয়াশা উৎসব’। সংগীত, নাট্যকলা, ফিল্ম কিংবা চারুকলার মতো বিভাগগুলো এসব আয়োজনে বাড়তি মাত্রা যোগ করেছে।
‘তবু আমারে দেব না ভুলিতে’
জীবনের মাত্র অর্ধেকের মতো সময়কালে কাজী নজরুল ইসলামের তুঙ্গস্পর্শী জনপ্রিয়তা ও বিপুলায়তন সৃষ্টি-সম্ভার বাংলা সাহিত্যে তো বটেই, বিশ্বের বিস্ময়। যে কারণে নজরুল অতুলনীয়, একক এবং সবার চেয়ে আলাদা বৈশিষ্ট্যে সমুজ্জ্বল। তিনি আমাদের মাঝে নেই, তবে তাঁর স্মৃতিকে চির জাগরুক রাখতে বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা হয়েছে কবির সাহিত্যকর্ম ও কবিপরিবারের সদস্যদের নামানুসারে। নজরুলের আদর্শ, চেতনা, ভাবনা, সাহিত্য, সংগীত ও নাটক ছড়িয়ে দিতে প্রতিটি বিভাগে ১০০ নম্বরের ‘নজরুল অধ্যয়ন’ কোর্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নজরুলের সাহিত্যকর্মের ওপরে গবেষণার জন্য রয়েছে ‘ইনস্টিটিউট অব নজরুল স্টাডিজ’ নামে একটি ইনস্টিটিউট। জাতীয় কবির বিভিন্ন গান, কবিতা, উপন্যাস, নাটক সর্বোপরি তাঁর জীবনী এবং জীবনকর্মের ওপর গবেষণা চলমান রাখার জন্য বিভিন্ন শাখায় পিএইচডি এবং এমফিল প্রোগ্রাম কোর্স চালু রয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রচলিত বৃত্তিগুলোর নামকরণ হয়েছে কবির পরিজনদের নামে ‘প্রমিলা বৃত্তি’, ‘বুলবুল বৃত্তি’, ‘কাজী অনিরুদ্ধ বৃত্তি’, ‘উমা কাজী বৃত্তি’।
নজরুলের প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘অগ্নিবীণা’ ও দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘দোলনচাঁপা’, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দুটি হলের নাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারের নামকরণ করা হয়েছে গল্পগ্রন্থ ‘ব্যথার দান' এর নামানুসারে। নজরুলের ছোটবেলার ডাকনাম অনুযায়ী নামকরণ করা হয় উপাচার্যের বাসভবনের, ‘দুখু মিয়ার বাংলো’। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে মোট তিনটি মঞ্চ। সবচেয়ে পুরোনো মঞ্চটির নাম নজরুলের জন্মস্থান চুরুলিয়ার নামে, ‘চুরুলিয়া মঞ্চ’। বাকি দুটো কবিতার নামে, ‘গাহি সাম্যের গান মঞ্চ’, ‘জয়ধ্বনি মঞ্চ’। প্রায় ছয় বছর আগে উদ্বোধন করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় স্মৃতিসৌধের, বিদ্রোহী কবিতার অমর এই চারটি শব্দে, ‘চির উন্নত মম শির’। বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে দুটি ক্যাফেটেরিয়া; যা ‘চক্রবাক’ ও ‘চন্দ্রবিন্দু’র নামে দুটো গ্রন্থের নামে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র গেস্ট হাউসের নামকরণ করা হয়েছে নজরুলের লেখা একটি একাঙ্ক নাটক ‘সেতু-বন্ধ’-এর নামানুসারে। পরিবহনের জন্য রয়েছে নজরুল সাহিত্যকর্মের নামে নামাঙ্কিত সাম্যবাদী, ধূমকেতু, প্রভাতী, নতুন পথিক রণভেরী, প্রলয় শিখা, দূরের বন্ধু, আগমনী, ঝিলিমিলি, ঝিঙেফুল, বাঁধনহারা, অগ্রপথিক, বিদ্রোহী, কাণ্ডারি ও দুরন্ত পথিক নামের বাসগুলো। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের ঠিক পাশেই রয়েছে সুউচ্চ নজরুল ভাস্কর্য। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে রয়েছে একাধিক ম্যুরাল। লাইব্রেরিতে রয়েছে নজরুল কর্নার।
এক নবীনবরণে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল নবীন শিক্ষার্থীদের বলেছিলেন, ‘কী চমৎকার একটা বিশ্ববিদ্যালয়। এটা সেই জায়গা, যেখানে বিদ্রোহী কবি হেঁটে গিয়েছেন। আমি মঞ্চ থেকে দেখে ভাবছিলাম, কবি নিজেই হয়তো এই পথে দিয়ে হেঁটে গেছেন। আমি এখন সে পথ দিয়ে হাঁটছি। ভাবতে পার এটা কত বড় সৌভাগ্য।’
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিতে অম্লান
বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু নজরুলকে বাংলাদেশে নিয়ে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণে কবিপরিবার ও তার সৃষ্টিকর্মের নামের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্মানার্থে বিভিন্ন স্থাপনার নামকরণ করা হয়। ২০২২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি প্রায় আড়াই হাজার আবাসন সক্ষমতাসম্পন্ন দুটি নতুন হল উদ্বোধন করা হয়। হল দুটির নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর সহধর্মিণীর নামে; জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল ও বঙ্গমাতা শেখ বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব হল। কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের নামকরণ করা হয়েছে বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের নামে। রয়েছে বঙ্গবন্ধুর সুউচ্চ ভাস্কর্য, যা নির্মাণ করেছেন ভাস্কর শ্যামল চৌধুরী। প্রশাসনিক ভবন, কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার ও বঙ্গবন্ধু হলে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল। বঙ্গমাতা হলে রয়েছে বঙ্গমাতার ম্যুরাল। কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগার, বঙ্গবন্ধু হল, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগ, থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগ এবং ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগসহ বিভিন্ন স্থানে রয়েছে বঙ্গবন্ধু কর্নার। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি প্রস্তাবিত গেটের নাম জয় বাংলা গেট ও জয় বঙ্গবন্ধু গেট।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্যদের শিশুদের চিত্তবিনোদনের জন্য নির্মাণ করা হচ্ছে শেখ রাসেল শিশুপার্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা হলের পাশে কবি নজরুল স্কুল প্রাঙ্গণের সামনের মাঠে এই পার্ক নির্মাণ করা হচ্ছে। পার্কে শেখ রাসেলের আবক্ষ মূর্তি বসানো হবে। থাকবে শিশুদের জন্য নানারকম রাইড এবং অনুষ্ঠানের জন্য একটা অনুষ্ঠানস্থল থাকবে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যকে ঘিরে নির্মাণ করা হচ্ছে বঙ্গবন্ধু স্কয়ার। সৌমিত্র শেখর জানান, ভাস্কর্য ও বঙ্গবন্ধু স্কয়ারকে দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার জন্য আমরা প্রশাসনিকভাবে কাজ করে যাচ্ছি। এই স্কয়ার আমাদের তরুণ সমাজকে বিশেষভাবে আলোকিত করবে। স্কয়ারে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগানো হবে, যা ভাস্কর্যকে আরও বেশি গ্লোরিফাই করবে। আর ভাস্কর্যের ঠিক পেছনেই থাকবে প্রাকৃতিক জলাধার। মূলত বঙ্গবন্ধু স্কয়ার হবে একটি প্রশান্তির বাতায়ন। বঙ্গবন্ধুর জীবন-ইতিহাস নিয়ে ছোট ছোট কিছু স্মারক রাখা হবে। কোথাও কোথাও বঙ্গবন্ধুর বই রাখা হবে, থাকবে বই পড়ার ব্যবস্থাও।
ক্যাম্পাস হবে নন্দনকানন
আমাদের ক্যাম্পাসটিকে একটি নন্দনকানন হিসেবে গড়ার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে সুপরিকল্পিতভাবে রক্তন, বুদ্ধ নারিকেল, সুলতানচাঁপা, উদাল, সুপারি, অশোক, নাগলিঙ্গম, কুরচি, লোহা, গর্জন, শিমুল, পলাশ, আমলকী, বহেরা, হরতকী, নাগেশ্বর, পুত্রঞ্জীব, ঢাকিজাম, লাল সোনাইল, টিকোমা, সিভিটসহ নানা প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। উপাচার্য বলেন, ‘এখন আমাদের লড়াই হচ্ছে গাছকে রক্ষা করা। আমরা প্রতিনিয়ত গাছের ওখানে যাচ্ছি, কোথাও জলাবদ্ধতা তৈরি হলে তার সমাধান করছি, কোথাও জলের স্বল্পতা হলে জল দিচ্ছি। অর্থাৎ একটি গাছকে বড় করার জন্য যে পরিচর্যা দরকার, ইট দিয়ে বেষ্টনী বানিয়েছি। ইতোমধ্যে সর্বসম্মতভাবে জয় বাংলা ভাস্কর্য সরানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। জয় বাংলার মোড় হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার পয়েন্ট। ইতোমধ্যে সীমানাপ্রাচীর দৃশ্যমান। এই প্রাচীরের চারপাশ দিয়ে রাস্তা হবে। এখানে জো বাইক সিস্টেম চালু করা হবে। এই সিস্টেমে শিক্ষার্থীরা সাইকেলে নিমিষেই ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে যাতায়াত করতে পারবে। আমাদের ইতোমধ্যেই এ ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ক্যাম্পাসকে একটা নতুন বিশ্বরূপে গড়ে তুলতে চাই। যেটি হবে নজরুল বিশ্ব। এখানে পা রাখলেই মানুষ আরেকটা জগতে ঢুকবে। একজনের সঙ্গে আরেকজনের সম্পর্ক হবে- তাঁরা হবেন নজরুল বিশ্বের সদস্য। একটি বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের সদস্য। এখানে ২৪ ঘণ্টা কাজের মতো পরিবেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই। সেই পরিবেশ যদি গড়ে তুলতে পারি, তাহলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম আরও বাড়বে বলে বিশ্বাস করি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো তিনটি ভবন কলা, বিজ্ঞান আর প্রশাসনিক। এর মাঝখানে মজা অবস্থায় থাকা পুকুর সংস্কার করে কাজ চলছে দৃষ্টিনন্দন আর আকর্ষণীয় সরোবর করার। পরিকল্পনা অনুযায়ী, পার্শ্ববর্তী জমিন থেকে পুকুরের জলে উঠে আসবে একটি হাত, অঞ্জলি দেয়ার ভঙ্গিতে। যার নামকরণ করা হয়েছে, কাজী নজরুল ইসলামের গান থেকে ‘অঞ্জলি লহ মোর’। সরোবরটির চারিদিকে চমৎকার করে বাঁধাই করা হবে। তিনটে ভবনকে বাঁধবে একই সুতোয়। বিকেল পাঁচটা থেকে যন্ত্রে চলবে গান, মৃদুস্বরে, রাত ১০টা অবধি। মূলত নজরুল সংগীতই হবে, ক্লাসিকও কিছু হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সবার গমনাগমনের জন্য থাকবে এই সরোবরকেন্দ্র উন্মুক্ত।
স্মার্ট ক্যাম্পাস গড়ে তোলার প্রত্যয়
উপাচার্য হিসেবে যোগদানের পরপরই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ রক্ষাথে ‘স্মার্ট ক্যাম্পাস’ গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর যে কথাটি বলেছিলাম, স্মার্ট ক্যাম্পাস চাই। পরবর্তী সময়ে জননেত্রী শেখ হাসিনা যে স্মার্ট বাংলাদেশের ধারণা দিয়েছেন, আমাদের চিন্তার সঙ্গে মিলে যায় সেটা। তাই স্মার্ট বাংলাদেশের অভিমুখে স্মার্ট ক্যাম্পাস। আর স্মার্ট ক্যাম্পাস গড়ার ক্ষেত্রে আমি শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন- এই তিনটি মোটোকে ধারণ করে কাজ করে যাচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘এই স্মার্ট ক্যাম্পাসের অবকাঠামো ও একাডেমিক- উভয় দিক থেকে আমরা এমন অবকাঠামো গড়ে তুলব, যা হবে দৃষ্টিনন্দন। এখানে ভবনগুলো থাকবে সুসজ্জিত। ভবনগুলোর পাশাপাশি বৃক্ষ, লতাগুল্ম, পাখিসমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য থাকবে। পাশাপাশি থাকবে রাস্তার নিরাপত্তা। আমি স্বপ্ন দেখি, শিক্ষার্থীরা নিজস্ব সাইকেলে চলাফেরা করবে। এখানে বাইরের অনাকাঙ্ক্ষিত বা অপ্রত্যাশিত যানবাহন ঢুকবে না। ক্যাম্পাস সম্পূর্ণভাবে সিসিটিভির আওতায় থাকবে। এগুলো হচ্ছে অবকাঠামোগত দিক। আমরা একই সঙ্গে অ্যাকাডেমিক দিক থেকে এখানে এমন শিক্ষার্থী তৈরি করব, যারা লেখাপড়া শেষ করে বাইরে গিয়ে আলো ছড়াবে। এগুলো নিয়ে আমরা ভেতরে-ভেতরে অনেক পরিকল্পনা করছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাইছি আমাদের শিক্ষার্থীরা এই প্রতিযোগিতার বাজারে নিজেদের দক্ষতার পরিচয় দেবে। এ বিষয়ের প্রতি লক্ষ রেখে ইতোমধ্যে আমাদের যে কারিকুলাম, তা আলোচনা-পর্যালোচনা করেছি ঢেলে সাজানোর জন্য। আমাদের স্মার্ট ক্যাম্পাস হবে স্মার্ট এডুকেশন। একটা দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য।’
ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের দাপ্তরিক নথি ব্যবস্থাপনা ও রেকর্ড সংরক্ষণে ডিজিটাল নথি (ডি-নথি) কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। নথির এ প্রক্রিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফাইলের কাজ ডিজিটাল পদ্ধতি অনুসরণ করে সম্পাদিত হবে। উপাচার্যসহ সব পর্যায়ের অনুমোদনকারীরা যেকোনো জায়গা থেকে যেকোনো সময় ফাইল অনুমোদন করতে পারবেন। এতে তাদের সময় সাশ্রয় হবে, কাগজ সাশ্রয়, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জায়গাটিও নিশ্চিত হবে। এ ছাড়া প্রশাসন ও অ্যাকাডেমিক ক্ষেত্রে গতিশীলতা বাড়বে।
বিদেশে উচ্চশিক্ষা অর্জনের স্বপ্ন অনেকেরই থাকে, কিন্তু এই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে প্রয়োজন হয় সঠিক দিকনির্দেশনা ও দক্ষ সহযোগিতার। ঠিক এখানেই NiT Academy Global তার অনন্য ভূমিকা রাখছে। রাজশাহী ভিত্তিক এই প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য। তারা শুধুমাত্র ভিসা প্রসেসিং বা অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং একজন শিক্ষার্থীর পুরো উচ্চশিক্ষা যাত্রার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পথপ্রদর্শক হিসেবে কাজ করে।
NiT Academy Global শিক্ষার্থীদের প্রথমে উপযুক্ত কোর্স ও বিশ্ববিদ্যালয় বেছে নিতে সহায়তা করে, যা তাদের আগ্রহ ও ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার পরিকল্পনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। এরপর শুরু হয় আবেদন প্রক্রিয়া, যেখানে প্রতিটি ডকুমেন্ট প্রস্তুত থেকে শুরু করে আবেদনপত্র সঠিকভাবে জমা দেওয়ার বিষয়েও তারা সহায়তা করে। এছাড়া ভিসা প্রক্রিয়ায় পূর্ণ সহায়তা, সাক্ষাৎকারের প্রস্তুতি এবং প্রয়োজনীয় কনসালটেন্সি সরবরাহ করা হয়। যারা আর্থিকভাবে কিছুটা পিছিয়ে আছেন, তাদের জন্য রয়েছে বৃত্তি সংক্রান্ত পরামর্শ ও সহায়তা।
বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশে উচ্চশিক্ষার জন্য NiT Academy Global শিক্ষার্থীদের পাঠানোর ব্যবস্থা করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, জাপান, চীন, ফিনল্যান্ড, রাশিয়া, ফ্রান্স এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশেষ করে দুবাই)।
NiT Academy Global শুধু একাডেমিক সাপোর্টেই সীমাবদ্ধ নয়, তারা প্রাক-ভ্রমণ সহায়তা, এয়ার টিকেট বুকিং, এয়ারপোর্ট পিকআপ ও হোস্টেল/বাসস্থানের ব্যবস্থাও করে থাকে। এক কথায়, বিদেশে যাওয়ার শুরু থেকে সেখানকার স্থায়ীভাবে থিতু হওয়ার পর্যায় পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে তারা শিক্ষার্থীদের পাশে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটির সেবা গ্রহণ করে অনেক শিক্ষার্থী ইতিমধ্যেই বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য স্থান পেয়েছেন। কেউ যুক্তরাজ্যে, কেউ কানাডায়, কেউবা আবার জাপান কিংবা অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা করছেন। তাদের সাফল্যই NiT Academy Global-এর কার্যক্রমের সফলতা প্রমাণ করে।
যোগাযোগ:
ফোন: +8801612751894
ইমেইল: ceo@nitacademyglobal.com
ঠিকানা: হাউস-১২২, প্রতিতির রান্নাঘর বিল্ডিং, গণকপাড়া, বোয়ালিয়া, রাজশাহী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি করার অনুমতি বাতিল করেছে এবং বর্তমানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের অন্যত্র স্থানান্তরের নির্দেশ দিয়েছে। অন্যথায় তারা যুক্তরাষ্ট্রে বৈধ অবস্থান হারাতে পারে বলে বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ (ডিএইচএস)। হার্ভার্ড এ সিদ্ধান্তকে অবৈধ ও প্রতিশোধমূলক বলে আখ্যা দিয়েছে।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোয়েম বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টুডেন্ট অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম (এসইভিপি) প্রত্যয়ন বাতিলের নির্দেশ দেন।
ডিএইচএসের বিবৃতিতে বলা হয়, হার্ভার্ড কর্তৃপক্ষ বিদেশি শিক্ষার্থীদের বিষয়ে আগেই চাওয়া কিছু তথ্য সরবরাহে ব্যর্থ হওয়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। নোয়েম বলেন, ‘এই প্রশাসন হার্ভার্ডকে জবাবদিহির আওতায় আনছে- যেহেতু তারা সহিংসতা ও ইহুদিবিদ্বেষ ছড়াচ্ছে এবং ক্যাম্পাসে চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সমন্বয় করছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ কোনো অধিকার নয়, বরং একটি সুবিধা, যা তারা অধিক টিউশন ফি নিয়ে বহু বিলিয়ন ডলারের তহবিল ফুলিয়ে তোলার কাজে ব্যবহার করে।’
হার্ভার্ড পাল্টা বিবৃতিতে জানায়, ‘সরকারের এই পদক্ষেপ অবৈধ। আমরা হার্ভার্ডে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উপস্থিতি বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশ থেকে আসা এসব মানুষ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় ও পুরো জাতিকে অসামান্যভাবে সমৃদ্ধ করেন।’ হোয়াইট হাউস এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেনি।
এই সিদ্ধান্তকে ট্রাম্প প্রশাসনের হার্ভার্ডবিরোধী অভিযানের একটি বড় ধাপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। ট্রাম্প দীর্ঘদিন ধরেই ম্যাসাচুসেটসের এই আইভি লিগ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ‘বামপন্থি’ বা ‘মার্কসবাদী’ আদর্শ ছড়ানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করে আসছেন। গত মাসে হার্ভার্ড একটি ২.২ বিলিয়ন ডলারের ফেডারেল তহবিল বরাদ্দ স্থগিতাদেশের মুখে পড়ে, কারণ তারা হোয়াইট হাউসের দেওয়া একগুচ্ছ শর্ত প্রত্যাখ্যান করে।
এসব শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন কাঠামো, নিয়োগ নীতি ও ভর্তি পদ্ধতিতে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল বৈচিত্র্য সংক্রান্ত দপ্তরগুলো বন্ধ করা এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের স্ক্রিনিংয়ে অভিবাসন কর্তৃপক্ষকে সহযোগিতা করা। হার্ভার্ড পরে এই বরাদ্দ স্থগিতাদেশ ঠেকাতে ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করে।
অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ‘ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি’তে নতুন ভাইস-চ্যান্সেলর (ভিসি) নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ইউআইইউ) স্কুল অব বিজনেস এন্ড ইকোনমিক্সের অধ্যাপক ও ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড কো-অপারেশন সেন্টারের (সিআইএসি) পরিচালক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
তিন শর্তে তাকে এই পদে নিয়োগ দিয়ে বুধবার (১৪ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। শর্তগুলোর মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর ধারা ৩১ (১) অনুযায়ী ড. ফরিদ আহমদ সোবহানীর ভিসি পদে নিয়োগের মেয়াদ হবে তার যোগদানের তারিখ হতে চার বছর। তবে রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর যে কোনো সময় এ নিয়োগ আদেশ বাতিল করতে পারবেন; তিনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নির্ধারিত বেতন-ভাতাদি প্রাপ্য হবেন এবং পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধাদি ভোগ করবেন; তিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবেন। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ রয়েছে।
জানতে চাইলে গতকাল শনিবার (১৭ মে) অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী এই প্রতিনিধিকে জানান, ‘ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ভিসি হিসেবে আমাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রজ্ঞাপনটি হাতে পেয়েছি আমি। সংশ্লিষ্ট দুই বিশ্ববিদ্যালয় ট্রাস্টি বোর্ডের সঙ্গে কথা বলে ভিসি হিসেবেক যোগদান করবো।‘
অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ সোসাইটি ফর প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি একাডেমিকস (বিএসপিইউএ) এর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পেশাগত জীবনে এর আগে তিনি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এবং ডিন এবং আন্তর্জাতিক ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের অধ্যাপক এবং ডিন হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তাছাড়া তিনি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির স্কুল অব বিজনেস এন্ড ইকোনমিক্সের অধীনে এমবিএ প্রোগ্রামের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
অধ্যাপক ড. ফরিদ আহমদ সোবহানী দক্ষিণ আফ্রিকার কিম্বারলে অবস্থিত একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ‘সোল প্লাতজে ইউনিভার্সিটির ইকোনমিক্স এন্ড ম্যানেজমেন্ট সায়েন্সেস অনুষদের একজন ভিজিটিং প্রফেসর। তিনি সিডনির অস্ট্রেলিয়ান একাডেমি অব বিজনেস লিডারশিপের একজন রিসার্চ ফেলো। তাছাড়া তিনি মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি টেকনোলজি এমএআরএ-এর অ্যাকাউন্টিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ভিজিটিং প্রফেসর এবং রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের নিয়োগ বোর্ডের এক্সটারনাল মেম্বার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে প্রকাশিত অস্ট্রেলিয়ান জার্নাল অব অ্যাকাউন্টিং, ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফিন্যান্সের এডিটর হিসেবেও অবদান রেখেছেন। হিসাববিজ্ঞানে দক্ষতার পাশাপাশি ড. সোবহানী মানবসম্পদ এবং নেতৃত্বের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন।
ড. সোবহানীর শিক্ষাজীবন শুরু হয় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অ্যাকাউন্টিংয়ে মেজরসহ বিবিএ এবং এমবিএ ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে। তিনি বেলজিয়ামের অ্যান্টওয়ার্প বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকল্প ব্যবস্থাপনায় দ্বিতীয় স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি মালয়েশিয়ার ইউনিভার্সিটি সেন্স মালয়েশিয়া থেকে এইচআর অ্যাকাউন্টিং ক্ষেত্রে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ড. ফরিদ আহমেদ সোবহানী দেশীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিভিন্ন সম্মানিত জার্নাল এবং ম্যাগাজিনে প্রায় ১০০টি গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে একাডেমিকভাবে উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন, যার মধ্যে অ্যাকাউন্টিং, কর্পোরেট
ডিসক্লোজার, এইচআর এবং নেতৃত্বের মতো ক্ষেত্রগুলো তুলে ধরা হয়েছে।
তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃতি সন্তান।
ফিলিপ সি. জেসাপ ইন্টারন্যাশনাল ল’ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা ২০২৫-এর আন্তর্জাতিক পর্বে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি সগৌরবে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছে। ১০৪টি দেশের রেকর্ডসংখ্যক ৮০৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে এটি ছিল প্রতিযোগিতার ৬৬ বছরের ইতিহাসে বৃহত্তম আয়োজন। এর আগে বাংলাদেশ কোয়ালিফাইং রাউন্ডে রেকর্ডসংখ্যক অংশগ্রহণকারী ৪৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ইন্টারন্যাশনাল রাউন্ডের জন্য উত্তীর্ন হয়েছে। দারুণ আইনি দক্ষতা প্রদর্শন করে ন্যাশনাল রাউন্ডে রানার্স-আপ ট্রফি অর্জন করেছে দলটি। এই অসাধারণ সাফল্যের পাশাপাশি, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির এক শিক্ষার্থী প্রিলিমিনারি রাউন্ডে ৮৮ জন প্রতিযোগীর মধ্যে সর্বোচ্চ স্কোর অর্জন করে ‘বেস্ট মুটার' সম্মাননা লাভ করে।
ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আরেকটি দল এই প্রথমবারের মতো মনরো ই. প্রাইস মিডিয়া ল’ ইনটারন্যাশনাল মুট কোর্ট কম্পিটিশন ২০২৪-২৫ এর আন্তর্জাতিক রাউন্ডে কোয়ালিফাই করেছে। উল্লেখ্য, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এই বছর বাংলাদেশ থেকে একমাত্র প্রতিনিধিত্বকারী বিশ্ববিদ্যালয়। এর আগে একমাত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ই এই প্রতিযোগিতার আন্তর্জাতিক পর্বে উন্নীত হয়েছিলো।
এ উপলক্ষে ১৬ই মে ২০২৫ শুক্রবার ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির রেজাকুল হায়দার হলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ল’ মুট কোর্ট-এর আন্তর্জাতিক পর্বে সাফল্যের জন্য প্রতিযোগীতায় অংশগ্রনকারী আইন বিভাগের শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সাথে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের ৫ম ইন্ট্রা-ডিপার্টমেন্ট মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়। উক্ত আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দিয়েছেন বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট, হাই কোর্ট ডিভিশনের বিজ্ঞ মাননীয় বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী। তিনি শিক্ষার্থীদের আইন পেশায় দক্ষতা অর্জনে মুটিং কার্যক্রমের গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি জেসাপ, হেনরি ডুনান্ট, মনরো ই. প্রাইস (অক্সফোর্ড), ও স্টেটসন আন্তর্জাতিক মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ধারাবাহিক সফলতা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের সম্মানজনক উপস্থিতির জন্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান। আইনি উৎকর্ষতা এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির আইন অনুষদের অবদানকে তিনি আন্তরিকভাবে প্রশংসা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য প্রফেসর মো: সামসুল হুদা বলেন এই প্রতিযোগিতাগুলো আইনজীবী হিসেবে শিক্ষার্থীদের প্রস্তত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তিনি ইন্ট্রা-ডিপার্টমেন্ট মুট কোর্ট প্রতিযোগিতাকে শিক্ষার্থীদের আইনি দক্ষতা বিকাশের সূচনাপর্ব হিসেবে আখ্যায়িত করেন এবং ভবিষ্যতে সবার সাফল্য কামনা করেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আপিল বিভাগের সিনিয়র এডভোকেট ড. খালেদ হামিদ চৌধুরী তার বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ধারা এবং মান বজায় রাখার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। এর আগে উদ্ভোধনী বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মামুনুর রশীদ। আরো বক্তব্য দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির অংশগ্রহন ও অসাধারণ সাফল্যের জন্য তিনি প্রশংসা করেন। অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডীন জনাব এ.বি.এম ইমদাদুল হক খান। আইন বিভাগের এমন সাফল্যে সবাই খুব আনন্দিত এবং তাদের যাত্রা আরো সুন্দর হওয়ার জন্য শুভ কামনা জানিয়েছেন বক্তারা । অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন আইন বিভাগের প্রভাষক ও মুট কোর্ট সোসাইটির কো-অর্ডিনেটর ওমর ফারুক তামীম।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসিতে অনুষ্ঠিত ‘বিশ্বকাপ মুট’ বলে খ্যাত ফিলিপ সি. জেসাপ ইন্টারন্যাশনাল ল’ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বক্তব্য দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের শিক্ষার্থী মাহির চৌধুরী আবির এবং সাকিব খন্দকার। এছাড়া মনরো ই. প্রাইস মিডিয়া ল’ ইনটারন্যাশনাল মুট কোর্ট প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনের অভিজ্ঞতা ব্যক্ত করেন আইন অনুষদের শিক্ষার্থী রাইসা চৌধুরী ও রিয়াসাত আজিম।
ফিলিপ সি. জেসাপ ইন্টারন্যাশনাল ল’ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতার ২০২৫ সালের এবারের আসরে, মেমোরিয়াল (লিখিত আইনি যুক্তি) ক্যাটাগরিতে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি বেশ চমকপ্রদ সাফল্য দেখিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির লিখিত সাবমিশন বিশ্বের বেশ কয়েকটি খ্যাতনামা প্রতিষ্ঠান যেমন- ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড (যুক্তরাজ্য), ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো (যুক্তরাষ্ট্র), ইউনিভার্সিটি অফ টরন্টো (কানাডা), নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি (যুক্তরাষ্ট্র), ইউনিভার্সিটি অফ গ্লাসগো (যুক্তরাজ্য), ইউনিভার্সিটি অফ অসলো (নরওয়ে), এবং উল্লেখযোগ্যভাবে, এই বছরের জেসাপ কাপের রানার-আপ ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ কিয়েভ মোহিলা একাডেমি (ইউক্রেন) ইত্যাদিকে ছাড়িয়ে ৭৪ তম হয়েছে। এবছর ২৮ মার্চ থেকে ৬ এপ্রিল পর্যন্ত ওয়াশিংটন ডিসি’র হায়াত রেজেন্সিতে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার এবারের আন্তর্জাতিক পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়টি ইউনিভার্সিটি অফ অক্সফোর্ড (যুক্তরাজ্য), তাসখন্দ স্টেট ইউনিভার্সিটি অফ ল (উজবেকিস্তান), সহ বেশ কয়েকটি জগদ্বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে আইনি যুক্তির লড়াইয়ে মুখোমুখি প্রতিদ্বন্দিতা করে।
এছাড়া, ২০০৮ সালে প্রতিষ্ঠিত মনরো ই. প্রাইস মিডিয়া ল’ মুট কোর্ট প্রতিযোগিতা, বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত মুটিং প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম। এই প্রতিযোগিতায় অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের অধীনস্থ বোনাভেরো ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান রাইটসে বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করেছে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির দলটি। ন্যাশনাল ল’ ইউনিভার্সিটি (NLU) দিল্লির উদ্যোগে এবং সেন্টার ফর কমিউনিকেশন গভর্ন্যান্স, NLU দিল্লি ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বোনাভেরো ইনস্টিটিউট অফ হিউম্যান রাইটসের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল আঞ্চলিক পর্বটি।
বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি (বিইউএফটি)-এর ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের আয়োজনে ১৫ মে ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় ‘লেদার ক্রাফট এক্সিবিশন ২০২৫’। ৬৫ জন শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই প্রদর্শনীটি ২০২৪ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে ২০২৫ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলা চামড়াজাত পণ্য ডিজাইন ও কারুশিল্প বিষয়ক একটি হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ কর্মশালার সফল পরিসমাপ্তির ফসল।
প্রদর্শনীতে শিক্ষার্থীদের হাতে তৈরি নানান রকমের সৃজনশীল ও ব্যবহারিক চামড়াজাত পণ্য স্থান পায়। এতে তাদের দক্ষতা, শৈল্পিকতা এবং বাস্তব জীবনের শিল্প জ্ঞান ফুটে ওঠে।
প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিইউএফটি’র ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোঃ আলমগীর হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি’র সহযোগী অধ্যাপক জনাব উত্তম কুমার রায় এবং বিইউএফটি’র জনসংযোগ বিভাগের পরিচালক মুহাম্মদ ইমতিয়াজ। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তাসহ বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী।
কর্মশালাটি আয়োজন ও সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করেন ফ্যাশন স্টাডিজ বিভাগের প্রভাষক ফাহিমা আখতার। এতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইনস্টিটিউটের বিশেষজ্ঞদের সরাসরি তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীরা বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে।
এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে বিইউএফটি তার শিল্পভিত্তিক ও বাস্তবমুখী শিক্ষার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের পাশাপাশি, দেশের চামড়াশিল্পে উদ্ভাবন ও সৃজনশীলতার প্রসারেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। প্রদর্শনীটি তরুণ ডিজাইনারদের জন্য একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে যা ভবিষ্যতে তাদের পেশাগত দক্ষতা গঠনে সহায়ক হবে।
ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির জন্য অন্তর্বর্তী প্রশাসন গঠনের প্রজ্ঞাপন জারির জন্য আগামীকাল রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। বেঁধে দেওয়া সময়ের মধ্যে প্রজ্ঞাপন না হলে সোমবার থেকে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন তারা।
তবে ছাত্র প্রতিনিধিরা জানান, তারা এবার দাবি আদায়ের সময় জনদুর্ভোগ এড়াতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের কর্মসূচি পালন করবে। শনিবার (১৭ মে) ইডেন মহিলা কলেজের ভেতরে ১ নম্বর ফটকের কাছে এক সংবাদ সম্মেলনে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
সংবাদ সম্মেলন থেকে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-
বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের শিক্ষার্থী জাফরিন আক্তার ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করে শোনান।
ঢাকার এই সাত সরকারি কলেজ হলো- ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি বাঙলা কলেজ ও সরকারি তিতুমীর কলেজ। এসব কলেজে শিক্ষার্থী প্রায় দুই লাখ। শিক্ষক এক হাজারের বেশি।
উল্লেখ্য, এই কলেজগুলো একসময় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। পরে ২০১৭ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর এই সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।
তবে অধিভুক্তির পর থেকে যথাসময়ে পরীক্ষা নেওয়া, ফল প্রকাশসহ বিভিন্ন দাবিতে সময়-সময় আন্দোলন করে আসছিলেন এসব কলেজের শিক্ষার্থীরা। বিগত আট বছরে সমস্যাগুলো বড় আকারে রূপ নেয়। শুরু হয় নানা আন্দোলন।
সবশেষ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে গত জানুয়ারিতে এই সাত কলেজকে আবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলাদা করার কথা জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
চলতি বছরের ১৬ মার্চ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথকীকরণ এবং কলেজগুলোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নের লক্ষ্যে একটি সভা করে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
এর আগে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করার লক্ষ্যে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সংশ্লিষ্ট সব অংশীজনের কাছে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আহ্বান করেছিল বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসব কলেজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে না। অর্থাৎ, উল্লেখিত সেশন থেকেই সাত কলেজ নিয়ে নতুন করে গঠিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটিতে’ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।
শিক্ষার্থীরা আরও দাবি করেছে, নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশ ১৬ জুনের মধ্যে জারি ও নবগঠিত প্রতিষ্ঠানের জন্য বরাদ্দ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক উৎকর্ষ সাধনের লক্ষ্যে কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ-এ উদ্বোধন করা হলো অত্যাধুনিক ‘মাসেল ইঞ্জিন’ জিমনেসিয়াম। এই জিমনেসিয়ামে শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ বিনামূল্যে নিয়মিত শরীর চর্চার সুযোগ পাবেন, যা তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখতে সহায়তা করবে।
জিমনেসিয়ামের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরউল্লাহ শারাফাত। ফিতা কেটে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর তিনি শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চার গুরুত্ব সম্পর্কে উৎসাহব্যঞ্জক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বলেন, “একজন শিক্ষার্থীর পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য শুধু একাডেমিক জ্ঞানই নয়, শারীরিক সুস্থতাও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই জিমনেসিয়াম সেই লক্ষ্যেই একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।”
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষকবৃন্দ, প্রশাসনিক কর্মকর্তারা এবং বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী। জমজমাট সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মাধ্যমে উদযাপন করা হয় এই বিশেষ আয়োজনটি।
‘মাসেল ইঞ্জিন’ জিমনেসিয়ামটিতে রয়েছে আধুনিক ও উন্নতমানের বিভিন্ন শরীরচর্চা উপকরণ—যেমন এক্সারসাইজ বাইক, ওয়েট ট্রেনিং সেটসহ আরও নানা ধরণের জিম ইকুইপমেন্ট। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য সম্পূর্ণভাবে উন্মুক্ত এবং ফ্রি।
কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ সবসময় শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও পার্সোনাল ডেভেলপমেন্ট নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর। এই জিমনেসিয়াম তারই একটি বাস্তব উদাহরণ, যা ভবিষ্যতে আরও স্বাস্থ্য সচেতন ও উদ্যমী প্রজন্ম গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
শিক্ষার্থীদের দাবি আদায় না-হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাটডাউন ঘোষণা করেছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইসউদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১৫ মে) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা শেষে এ ঘোষণা দেন তিনি। পূর্ববর্তী তিন দফাসহ শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার চার দফা দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি করছেন জবির শিক্ষার্থীরা।
অধ্যাপক ড. রইসউদ্দিন বলেন, ‘আমরা জবির দাবি আদায়ের জন্য এসেছি। আমাদের উপরে নির্বিচারে পুলিশ হামলা চালিয়েছে। এটি সম্পূর্ণ অরাজকতা ও অন্যায়। আমরা কারো বিরুদ্ধে এখানে কথা বলতে আসিনি, কোন ষড়যন্ত্র করতে আসিনি। দাবি আদায় না করে আমরা ঘরে ফিরব না। দাবি আদায়ের আগ পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে শাটডাউন চলবে, কোনো ক্লাস-পরীক্ষা চলবে না। দাবি আদায় করেই আমরা ঘরে ফিরব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদেরকে এখান থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য যদি কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে তার পরিণতি ভালো হবে না। আমার চোখের সামনে আমার কোনো শিক্ষার্থীকে কেউ আঘাত করতে পারবে না।’
গতকাল(বুধবার) থেকে জবির শিক্ষার্থীরা কাকরাইলে অবস্থান করছেন। অবস্থান কর্মসূচি পালন করায় অনেক শিক্ষার্থী ক্লান্ত হলেও আন্দোলন থেকে সরে যাননি। কেউ কেউ রাতভর রাস্তায় ঘুমিয়ে আজ সকালেও অবস্থান করছেন।
নতুন দাবিসহ চার দাবি হলো— বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি চালু করা, জবির প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করে অনুমোদন, দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ একনেক সভায় পাস ও বাস্তবায়ন, ১৪ মে শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশের অতর্কিত হামলার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা।
এর আগে (বুধবার) বেলা ১১টার দিকে এই তিন দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনা অভিমুখে লং মার্চে শুরু করেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
লং মার্চটি গুলিস্থান, মৎস্য ভবন পার হয়ে কাকরাইল মসজিদের সামনে পৌঁছালে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। সে সময় আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে গরম পানিও ছোড়া হয়।
পরে শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন। পরে তাদের অনেককে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়।
পরবর্তীতে গতকাল রাতে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম সেখানে বিফ্রিং করতে যান। তবে তার ব্রিফিংয়ে অসন্তুষ্ট হন শিক্ষার্থীরা। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজকে উদ্দেশ্য করে ‘ভুয়া ভুয়া’ স্লোগান দিতে থাকেন তারা। একপর্যায়ে তাকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীদের মধ্য থেকে বোতল ছুঁড়ে মারেন একজন শিক্ষার্থী। এ ঘটনার পরে বিফ্রিং বন্ধ করে চলে যান উপদেষ্টা।
এদিকে, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কাকড়াইল মসজিদের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন জবির শিক্ষার্থীরা।
ক্রীড়াময় উচ্ছ্বাসে ভরে উঠেছিল কানাডিয়ান ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের ক্যাম্পাস। গত ৬ মে থেকে ৮ মে পর্যন্ত চলা ‘ইনডোর স্পোর্টস কার্নিভাল ২০২৫’-এ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো।
এটি ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে প্রথম ইনডোর স্পোর্টস কার্নিভাল, যেখানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা অংশ নেয় চেস, ক্যারম, লুডু, বিলিয়ার্ড ও ফুসবল খেলায়। প্রতিটি খেলায় শিক্ষার্থীদের উৎসাহ, মনোযোগ ও প্রতিযোগিতামূলক মানসিকতা অনবদ্য উদাহরণ সৃষ্টি করেছে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত ভাইস চেয়ারম্যান চৌধুরী জাফরুল্লাহ শরাফাত , যিনি নিজ হাতে বিজয়ীদের পুরস্কৃত করেন এবং তাদের অনুপ্রেরণা দেন।
এই আয়োজন সফল করতে সিইউবি স্পোর্টস ক্লাব এবং মিডিয়া ও ফটোগ্রাফি ক্লাবের অক্লান্ত পরিশ্রম প্রশংসার দাবিদার।
সম্প্রতি ‘আমি প্রবাসী’ চালু করেছে মেশিন লার্নিং চ্যাটবট ভিত্তিক সিভি বিল্ডার, যা ব্যবহার করে দ্রুত ও সহজেই তৈরি করা যাবে পেশাদার সিভি। প্রচলিত পদ্ধতিতে বা অনলাইন টুলস ব্যবহার করে প্রফেশনাল সিভি তৈরি করতে অনেকেই নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন। কিন্তু ‘আমি প্রবাসী’র এই সিভি বিল্ডার দিয়ে খুব সহজেই চ্যাটবটের সঙ্গে চ্যাট করে সিভি তৈরি করা সম্ভব।
এই ফিচারে রয়েছে বাংলা মেশিন লার্নিং চ্যাটবট, যা সহজ প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ব্যবহারকারীর কাছ থেকে তার যাবতীয় তথ্য যেমন- দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও শিক্ষাগত যোগ্যতা ইত্যাদি জেনে নেয়। মাত্র ৫–৭ মিনিটে প্রয়োজনীয় তথ্য গ্রহণ শেষ করে একটি পেশাদার সিভি তৈরি করে দিতে সক্ষম এই ফিচার। সিভি প্রস্তুত হয়ে গেলে পিডিএফ ফরম্যাটে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন ব্যবহারকারীরা; যা তারা তাৎক্ষণিক শেয়ার করতে পারবেন আবার চাইলে ভবিষ্যতে ব্যবহারের জন্য সংরক্ষণ করতে পারবেন।
এখন পর্যন্ত প্রায় ১, ০০,০০০ জন ব্যবহারকারী এই সিভি বিল্ডার ফিচার ব্যবহার করেছেন। এর মধ্যে ৩,৫১২ জনের স্নাতক বা স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে, ২০ থেকে ৩০ বছর বয়সী ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩১,৩৮৯ জন এবং প্রকৌশলীর সংখ্যা ১,৩৩৫ জন।
‘আমি প্রবাসী’ অ্যাপে প্রবেশ করে নতুন ফিচারটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে। যাদের প্রযুক্তিগত দক্ষতা কম, তারাও এটি ব্যবহার করে সহজেই দ্রুত মানসম্পন্ন পেশাদার সিভি তৈরি করতে পারবেন, যা চাকরিক্ষেত্রে তাদের সুযোগ বৃদ্ধি করবে।
‘আমি প্রবাসী’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারিক ই হক বলেন, ‘অনেক মানুষ বিশেষ করে যারা প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত নয়, তারা জানেই না সিভি কী— সেখানে সিভি তৈরি করা তো দূরের কথা। আমাদের সিভি বিল্ডার ফিচার যেকোনো ব্যক্তির জন্য সিভি তৈরি এখন অনেক সহজ করে দিয়েছে। বাংলায় মেশিন লার্নিং চ্যাটবটের সাথে চ্যাট করে যে কেউ এখন সিভি বানাতে পারবেন। বেকারত্বের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে এটি একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ এবং আরও বেশি মানুষকে ভালো চাকরির সুযোগ করে দিতে বর্তমানে এটি সহায়ক একটি ফিচার।’
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) উপাচার্য (ভিসি) ড. শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকরা।
বৃহস্পতিবার (৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে প্রশাসনিক ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সেখানে গিয়ে একাত্মতা প্রকাশের ঘোষণা দেন শিক্ষকরা।
এসময় লিখিত বক্তব্য পাঠ করার পাশাপাশি বক্তব্যও রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. মুহসিনউদ্দিন, ড. হাফিজ আশরাফুল হক ও উন্মেষ রায়।
তারা অভিযোগ করেন, ভিসির কারণে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় এখন ধ্বংসের মুখে। মাসের ২৮ দিনই তিনি ক্যাম্পাসে থাকেন না। কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ডও হয়নি তার সময়ে। বিনা চিকিৎসায় মারা যাওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর করা সহায়তার আবেদনটি তিনি খুলেও দেখেননি। এমনকি শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করার মতো ঘৃণ্য কাজ পর্যন্ত করেছেন তিনি।
এই উপাচার্য থাকলে বিশ্ববিদ্যালয় ধ্বংস হয়ে যাবে বলেও মন্তব্য করেন একাত্মতা প্রকাশ করা ওই শিক্ষকরা।
অবস্থান কর্মসূচিতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সুজয় শুভ, ভূমিকাসহ অন্যরা। অবস্থান কর্মসূচি শেষে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে একটি বিক্ষোভ মিছিল ক্যাম্পাস ও সংলগ্ন সড়ক ঘুরে আসে। মিছিলে ভিসির অপসারণ দাবি করে নানা শ্লোগান দেওয়া হয়।
এ নিয়ে টানা চতুর্র্থ দিনের মতো ভিসি শুচিতা শরমিনের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছে ববির শিক্ষার্থীরা।
এর আগে, সোমবার (৫ মে) তার পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামেন ববির শিক্ষার্থীরা।
সে সময় তারা জানান, আগে ২২ দফা দাবিতে আন্দোলন করলেও উপাচার্য তা মানেননি। বরং আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধেই মামলা দিয়ে দমন-পীড়নের চেষ্টা করেছেন। এ কারণে বর্তমানে ভিসির অপসারণই তাদের একমাত্র দাবি।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বৈষম্যমূলক নীতি, আবাসন ভাতা ও হল নির্মাণসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৭ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি ভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘প্রহসনের বাজেট মানি না, মানবো না’; ‘বৈষম্যের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘বাজেট নিয়ে বৈষম্য মানি না, মানবো না’; ‘ইউজিসির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথেসহ’ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সব আন্দোলনেই সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।’
ইউজিসি চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি যে পদে বসে আছেন, সেই পদে বসতে জবি শিক্ষার্থীদের ত্যাগ আছে। সুতরাং বৈষম্য বন্ধ করুন এবং জবির শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ চার দাবি দ্রুত মেনে নিন। দাবি মেনে না-নিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে।’
কর্মসূচিতে জবি ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি আশিকুর রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালের আন্দোলনে এমন কোনো দিন ছিল না, যেদিন পুরান ঢাকায় আন্দোলন হয়নি। আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন, অথচ আজ আমাদের ওপরই বৈষম্য করছেন।’
‘আবাসন ভাতা ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। আমাদের ৯০-৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী টাকার অভাবে সকালের নাশতা খেতে পারেন না। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি পরিবেশে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি,’ অভিযোগ করেন এই শিক্ষার্থী।
এদিকে, জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলবে, নয়তো চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। ঢাকার মধ্যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাজেটে এত বৈষম্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং তাদের চার দফা দাবি পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে, আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। বাজেট বৃদ্ধির নীতিমালাতেও ত্রুটি আছে, এজন্য আমরা ইউজিসি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি ‘
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধি এবং অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং পুরান ঢাকায় ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ আগামী ১০ মে’র মধ্যে শুরু করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ১৫ দিন অন্তর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও হল নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মুক্তমঞ্চে ব্রিফ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ। আগামী ১৫ মে’র মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।
চাকরির বাজারে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) ক্রমাগত পরিবর্তনশীল প্রভাব নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইসরাইলি বহুজাতিক অনলাইন মার্কেটপ্লেস ফাইভারের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মিকা কাউফম্যান। এআই নির্ভর ভবিষ্যতে নিজেকে টিকিয়ে রাখতে দক্ষতা ও খাপ খাইয়ে নেওয়ার সক্ষমতা বাড়াতে জোর দেন তিনি।
ফাইভারের একটি অভ্যন্তরীণ মেমোর বিস্তারিত বিবরণে তিনি এমন হুঁশিয়ারি দেন। পরবর্তীতে সেটি সামাজিকমাধ্যমেও শেয়ার দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এমন খবর দিয়েছে।
যেভাবে দ্রুতগতিতে প্রযুক্তির বিকাশ ঘটছে, তাতে অনলাইন প্ল্যাটফর্মনির্ভর বাজারসহ শিল্পকারখানা নতুন করে ঢেলে সাজানোর সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে। সেই দিকে আভাস দিয়ে ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জগুলোর মোকাবিলায় উপযুক্ত করে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়তে ফ্রিল্যান্সার্স ও কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
মিকা কাউফম্যান বলেন, ‘কঠিন সত্য হলো—আপনার কর্মসংস্থান দখল করতে আসছে এআই, আমার চাকরিটাও তারা নিয়ে নেবে। এটা আপনাদের জেগে ওঠার ডাক। তাতে হোক না আপনি প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, পণ্য ব্যবস্থাপক, ডেটা বিজ্ঞানী, আইনজীবী, বিক্রেতা কিংবা কোনো ব্যবসায়ী। আপনাদের কর্মসংস্থান কেড়ে নিতে ধেয়ে আসছে এআই।’
“একসময় যেসব কাজকে সহজ বলে বিবেচনা করা হতো, এখন আর সেগুলোর অস্তিত্ব নেই। আবার যে কাজগুলো কঠিন বলে বিবেচনা করা হতো, সেগুলো সহজ হয়ে গেছে। আর যে কাজগুলো অসম্ভব বলে মনো হতো, সেটা এখন নতুন ‘কঠিন কাজ’।”
তিনি বলেন, ‘আপনি যা করছেন, সেখানে যদি একেবারে ব্যতিক্রমী মেধাবী না হন, কয়েক মাসের ব্যবধানে আপনাদের কর্মসংস্থান পরিবর্তনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে,’ বলেন ফাইভারের এই প্রধান নির্বাহী।
সর্বশেষ এআই উদ্ভাবন নিয়ে আরও লেখাপড়া ও দক্ষতা অর্জনে কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। মিকা কাউফম্যান বলেন, ‘এআই প্রোগ্রাম লার্জ ল্যাংগুয়েজ মডেলসের (এলএলএমএস) ওপর দক্ষতা অর্জন করতে হবে।’
যারা এটার কদর বুঝবেন না, অর্থাৎ দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন না, তাদের ক্যারিয়ার ঝুঁকিতে পড়বে বলেও হুশিয়ার করেন ফাইভার প্রধান নির্বাহী। কাজেই কর্মীদের আরও দক্ষতা ও দ্রুততার সাথে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সার্চ জায়ান্ট গুগল ‘সেকেলে’ হয়ে যাবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন মিকা কাউফম্যান।