রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপাচার্যের সামনে দুটি বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চেয়ার ছোড়াছুড়ির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় জিমনেসিয়ামে আন্তঃবিভাগ বাস্কেটবল প্রতিযোগিতার ফাইনাল খেলা চলাকালে ‘স্লেজিং’ (উত্ত্যক্ত) করাকে কেন্দ্র করে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্তঃবিভাগ বাস্কেটবল-২০২৩ প্রতিযোগিতায় ১৬টি দলের মধ্যে রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও মার্কেটিং বিভাগ ফাইনাল খেলায় অংশ নেয়। খেলা শুরু হয় শনিবার সন্ধ্যা ৬টায়। খেলার প্রথমার্ধে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ ২১ পয়েন্ট অর্জন করে, অন্যদিকে প্রতিপক্ষ দল মার্কেটিং বিভাগের পয়েন্ট ছিল ১৯। খেলা চলাকালে এক পর্যায়ে দুপক্ষের শিক্ষার্থীরা নিজেদের দলের হয়ে ‘স্লেজিং’ করতে থাকেন। পরে শিক্ষার্থীরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে একে অপরকে লক্ষ্য করে চেয়ার ছোড়া শুরু করেন। এসময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে কয়েকজন শিক্ষক আহত হন। তাদের মধ্যে একজন হলেন, ড. এস এম মোখলেসুর রহমান। তিনি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। চোখে আঘাত পেয়ে একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন তিনি।
এসময় লাঠিসোটা হাতে বেশ কিছু শিক্ষার্থীকে আশেপাশে ঘোরাঘুরি করতেও দেখা যায়। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা সেখান থেকে চলে যান। একইসঙ্গে ফাইনাল খেলা স্থগিত ঘোষণা করা হয়।
এসময় ঘটনাস্থলে আরও উপস্থিত ছিলেন সহ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল-ইসলাম ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক অবায়দুর রহমান প্রামাণিক, আন্তঃবিভাগ গেমস সাব কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আব্দুল হালিম এবং বাংলাদেশ বাস্কেটবল ফেডারেশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম ফরহাদসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্মকর্তা ও বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শরীরচর্চা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে আমাদের ফাইনাল খেলাটি স্থগিত করতে হলো। পরবর্তীতে খেলা হবে কি-না বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সিদ্ধান্ত নেবে। খেলা চলমান পয়েন্ট থেকে হবে কি-না আবার নতুন করে শুরু হবে সেই সিদ্ধান্তও পরে জানানো হবে।’
শরীরচর্চা বিভাগের পরিচালক আরও বলেন, ‘আমরা যদি এ অবস্থায় খেলা পরিচালনা করি তাহলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হবে। এ জন্য প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী খেলাটি সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, ‘আপাতত খেলাটি স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তীতে ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান-উল ইসলাম বলেন, ‘খেলাধুলার মধ্যে বিশৃঙ্খলা আমাদের কাম্য নয়। আমরা শিক্ষার্থীদেরকে সুন্দর পরিবেশে খেলাধুলার মাধ্যমে সুস্থ বিনোদন দিতে চাই। এ ঘটনায় দুই বিভাগের দুই শিক্ষার্থীকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আগামীকাল (রোববার) বিভাগের চেয়ারম্যান ও চিহ্নিত দুইজনকে নিয়ে প্রক্টর দপ্তরে বসে বিষয়টির সমাধান করব।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ বলেছেন, ‘গতানুগতিক পদ্ধতিতে চলার সময় এটা না। আমাদের তরুণ প্রজন্মের প্রত্যাশা অনেক বেশি। তাদের প্রত্যাশাকে ধারণ করে আমাদের চলতে হবে।’
আজ মঙ্গলবার উচ্চশিক্ষায় নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে প্রতিষ্ঠিত সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি ৩১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনে বিশ্ববিদ্যালয়টির মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠান তিনি এসব কথা বলেন।
ইউজিসি চেয়ারম্যান বলেন, ‘আমি যখন ছাত্র ছিলাম, এখনকার তরুণদের মতো এত বুদ্ধিমান বা সমৃদ্ধ ছিলাম না। কিন্তু এখনকার তরুণরা সবকিছু জানে, চেনে। এখনও আমি তরুণ প্রজন্মের কাছ থেকে শিখছি, তারাই আমাদের জাতির ভবিষ্যৎ। আমরা একসাথে থেকে কাজ করতে পারলে অবশ্যই এগিয়ে যাবো।’ সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটির প্রতি সহযোগিতা সবসময় অব্যাহত থাকবে বলেও প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের চেয়ারপারসন কাজী জাহেদুল হাসান বলেন, ‘উচ্চমানের নারী শিক্ষার বিস্তারই আমাদের মূল উদ্দেশ্য। আমরা চেষ্টা করি যেন আমাদের ছাত্রীরা এমনভাবে তৈরি হয়ে বের হবেন, যেন তারা জীবনে স্বাবলম্বী হয়ে সম্মানিত একটা পেশায় থাকতে পারেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে লক্ষ্য নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টি যাত্রা শুরু করেছিল, তা পূরণে তারা অনেকখানি সফল হয়েছে এবং প্রতিনিয়ত সেজন্য কাজ করে যাচ্ছে।’
উপাচার্য ড. পারভীন হাসান বলেন, ‘শিক্ষা ও সৃজনশীল কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষার্থীরা যুগের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কর্মক্ষেত্রে এগিয়ে যাচ্ছে। শুধু শিক্ষাদান নয়, পেশাগত জীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রেও এ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সবসময় সহযোগিতা করছে।’
ট্রেজারার ড. আহমেদ আবদুল্লাহ জামাল বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের উচ্চশিক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে এগিয়ে যাবে বলে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার ইলিয়াস আহমেদ, ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের চেয়ারপারসন হাসান শিরাজী, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড লিটারেচার বিভাগের চেয়ারপারসন আবদুস সেলিম, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারপারসন শাহনাজ পারভীন, সোশিওলজি অ্যান্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন ড. ফজিলা বানু লিলি এবং জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের চেয়ারপারসন সজীব সরকারসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
আলোচনা অনুষ্ঠানের আগে ইউজিসির চেয়ারম্যান বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ঘুরে দেখেন। উল্লেখ্য, নারীদের উচ্চশিক্ষায় অবদান রাখতে ১৯৯৩ সালে যাত্রা শুরু করে সেন্ট্রাল উইমেন্স ইউনিভার্সিটি।
উচ্চ মাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল আগামী ১৪ নভেম্বর প্রকাশ করা হবে। আজ শুক্রবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকার এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, আগামী ১৪ নভেম্বর এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হবে। সব শিক্ষা বোর্ড একযোগে ওই দিন খাতা পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করবে।
প্রতি বছরই এসএসসি ও সমমান এবং এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর পরীক্ষার্থীরা তা পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ পান। গত ১৬ অক্টোবর এইচএসসির খাতা পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু হয়। যা চলে গত ২২ অক্টোবর পর্যন্ত। খাতা পুনর্নিরীক্ষণের জন্য শিক্ষার্থীদের পত্র প্রতি ১৫০ টাকা ফি দিতে হয়েছে।
গত ১৫ অক্টোবর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়। এবার গড় পাসের হার ৭৭ দশমিক ৭৮ শতাংশ। জিপিএ-৫ পেয়েছেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। গতবার এই হার ছিল ৭৮ দশমিক ৬৪ শতাংশ।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানে যে বিষয়গুলোর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে শুধু ওই বিষয়গুলোর ফল পুনর্নিরীক্ষণের সুযোগ ছিল। পরীক্ষা বাতিল হওয়ায় যে বিষয়গুলোয় সাবজেক্ট ম্যাপিং করে ফল প্রকাশ করা হয়েছিল সে বিষয়গুলোয় ফল পুনর্নিরীক্ষণ করতে পারেননি শিক্ষার্থীরা।
সমাজবিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষাবিদ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহকে অজ্ঞাত দুষ্কৃতকারী গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় টেলিফোনে হত্যার হুমকি দেয়।
এ ঘটনার নিন্দা প্রকাশ করেছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী, শিক্ষার্থীসহ দেশের অনেক শিক্ষাবিদ। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোস্তাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত বার্তায় এ নিন্দা জানানো হয়।
বার্তায় বলা হয়, উপাচার্য যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সংস্কার কার্যক্রমের উদ্যোগ গ্রহণ, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সব বৈষম্য দূরীকরণের পদক্ষেপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতিরোধ, বিগত সময়ের দুর্নীতির শ্বেতপত্র প্রকাশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের গভর্নিং বডি গঠনসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন এবং অধিভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যখন সুফল পেতে শুরু করেছে ঠিক সেই সময় একটি স্বার্থান্বেষীমহল এ সংস্কার ও সার্বিক উন্নয়ন কার্যক্রমকে ব্যর্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে হুমকি দিয়ে দুর্নীতি প্রতিরোধের কার্যক্রমকে নানাভাবে বাধাগ্রস্ত করার অপচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস ভর্তির আবেদন শুরু হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে অনলাইনে আবেদন করতে পারছেন আগ্রহী শিক্ষার্থীরা। আবেদন প্রক্রিয়া চলবে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত।
গতকাল সোমবার স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিজিএমই) ওয়েবসাইটে এ-সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
ডিজিএমইর অতিরিক্ত মহাপরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা) অধ্যাপক রুবিনা ইয়াসমিন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এইচএসসির সিলেবাসের ভিত্তিতে ভর্তি পরীক্ষা হবে। পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্ন থাকবে, প্রতিটি প্রশ্নে এক নম্বর থাকবে, মোট ১০০ নম্বর। বিষয়ভিত্তিক নম্বর বণ্টন হবে- জীববিজ্ঞান ৩০, রসায়ন ২৫, পদার্থবিজ্ঞান ২০, ইংরেজি ১৫ এবং সাধারণ জ্ঞান (বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি) ১০।
ভর্তি পরীক্ষার সময় হবে এক ঘণ্টা। প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তরের জন্য এক করে নম্বর দেওয়া হবে। এ ছাড়া প্রতিটি ভুল উত্তরের জন্য দশমিক ২৫ নম্বর কাটা হবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের আবাসন সমস্যা সমাধানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের অস্থায়ী উদ্যোগের পরিকল্পনায় এগিয়ে এসেছে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। প্রাথমিকভাবে ৭০০ শিক্ষার্থীর আবাসনের ব্যবস্থা করতে এ ফাউন্ডেশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করেছে। কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাসে স্থায়ী হল নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা সেখানে আবাসিক সুবিধা পাবেন।
মঙ্গলবার সকালে উপাচার্যের সম্মেলন কক্ষে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ ও উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ওই এমওইউতে সই করেন।
পরে আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০০ শিক্ষার্থীর জন্য প্রাথমিকভাবে আবাসনের ব্যবস্থা করব। স্বাস্থ্যসম্মত খাবার-দাবারসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য ১০০ কম্পিউটার নিয়ে একটি ল্যাব থাকবে। আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকেই আমরা পুরোদমে কাজ শুরু করব।’
প্রাথমিকভাবে ছেলেদের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা অচিরেই মেয়েদের জন্যেও হলের ব্যবস্থা করব। কারণ ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের অভিভাবকরা বেশি দুশ্চিন্তায় থাকেন।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ভবিষ্যতে ৫ হাজার শিক্ষার্থীর আবাসন ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা করছি। সেক্ষেত্রে অন্যান্য দাতা প্রতিষ্ঠান আমাদের সহযোগী হিসেবে কাজ করলে বিষয়টি আরও সহজ হবে।
শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেন, ‘অস্থায়ী আবাসনে সব ধর্মের শিক্ষার্থীরাই জায়গা পাবে। তবে হলের ভেতরে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকে শিক্ষার্থীদের বিরত রাখার চেষ্টা করব আমরা।’
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাডেমিক ভবন থেকে শুরু করে হল সংকটসহ নানা সমস্যা রয়েছে। এগুলো সমাধানে ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘরিয়ায় দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হলেও তা ঝুলে আছে। ছয় বছরেও নির্মাণ কাজের তেমন অগ্রগতি না থাকায় শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে প্রকল্পের কাজ সেনাবাহিনীকে দেওয়ার দাবি জানায়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় তাতে সায় দিলেও এখনো বিষয়টি সুরাহা হয়নি। এমন অবস্থায় শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা সমাধানে অস্থায়ী উদ্যোগের চেষ্টা চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বাসা ভাড়া নিয়ে আবাসন সংকটের সমাধান ও পুরনো জেলখানার পাশের জমিতে ভবন নির্মাণে দাতা খোঁজার পরিকল্পনার কথাও এর আগে বলেছিলেন উপাচার্য রেজাউল করিম।
আস-সুন্নাহর সঙ্গে এমওইউ সইয়ের পর উপাচার্য বলেন, আমাদের অন্যতম পরিকল্পনা ছিল কোনো দাতব্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হওয়া। অর্থাৎ তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধান করা যায় কিনা।
আজকে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এগিয়ে এসেছে। তাদের সঙ্গে চুক্তির শর্ত মোতাবেক আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একমত হয়েছি। এই মহৎ উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনকে কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
জগন্নাথের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস প্রতিষ্ঠা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক শিক্ষার্থী এ কে এম রাকিব বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে আবাসনের যে ব্যবস্থা করছে, তা প্রশংসার। তবে দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নিয়ে প্রশাসনের তেমন কোনো অগ্রগতি দেখছি না।’
এমওইউ সইয়ের অনুষ্ঠানে জনসংযোগ, তথ্য ও প্রকাশনা দপ্তরের পরিচালক আনোরুস সালাম, ছাত্র উপদেষ্টা এবং প্রক্টর অধ্যাপক মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের শতভাগ ডোপ টেস্টের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ৩৫০ টাকায় নিজস্ব ল্যাবে এই টেস্ট করা হবে। ডোপ টেস্ট পজিটিভ হলে আবাসিক হলের সিট বাতিল হবে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সোমবার বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে চবি উপ-উপাচার্যের (প্রশাসন) সম্মেলনকক্ষে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন।
প্রসঙ্গত, ডোপ টেস্ট হলো একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে কোনো ব্যক্তির শরীরে নিষিদ্ধ বা ক্ষতিকর মাদকদ্রব্য বা অন্যান্য মানসিক উদ্দীপক পদার্থের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয়। সাধারণত এই পরীক্ষা রক্ত, মূত্র, লালারস বা চুলের নমুনা ব্যবহার করে করা হয়।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ক্যাম্পাস এবং আশপাশের এলাকাগুলো একটা সময় মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছিল। সেই জায়গা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর হলে আসন বরাদ্দ দিয়েছি। আসন বরাদ্দের সময় বলেছিলাম আবাসিক শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্ট বাধ্যতামূলক। তখন ডোপ টেস্ট করে হলে উঠাতে পারিনি, কারণ বিশ্ববিদ্যালয় খুলতে দেরি হবে এ জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘পূর্বে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক) ডোপ টেস্ট করার কথা ছিল কিন্তু, সেখানে খরচ অনেক বেশি। আমরা প্রাথমিকভাবে নিজস্ব ল্যাবে টেস্ট করার পরিকল্পনা করেছি। এজন্য আবাসিক হলে অবস্থানরত শিক্ষার্থীদের এই টেস্টের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে কোনো শিক্ষার্থীর টেস্ট পজিটিভ হলে আমরা তার হলের আসন বাতিল করব, বাকি শাস্তি দেশের আইন অনুযায়ী হবে।’
তিনি আরও বলেন, শুধু শিক্ষার্থীরাই না- এখানের নিরাপত্তাকর্মীসহ অনেকেই মাদকাসক্ত। পর্যায়ক্রমে সবাইকে এই পরীক্ষার আওতায় আনা হবে।
ডোপ টেস্ট কমিটির কো-অর্ডিনেটর ও জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান বলেন, ‘আগামী ১২ তারিখ আমরা এ এফ রহমান হলের শিক্ষার্থীদের ডোপ টেস্টের মধ্য দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করব। আমরা কাজটি আমাদের শিক্ষার্থীদের মাদকাসক্ত প্রমাণিত করার জন্য করছি না বরং, সচেতনতা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে কাজটি করছি। আমরা মাদক থেকে শিক্ষার্থীদের উত্তরণের জন্য এ উদ্যোগ নিয়েছি।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেন ডোপ টেস্ট কমিটির কো-অর্ডিনেটর জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আতিয়ার রহমান, শাহ আমানত হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. গোলাম কিবরিয়া, বিশ্ববিদ্যালয় মেডিকেলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডা. মোহাম্মদ আবু তৈয়ব।
হল অনুযায়ী ডোপ টেস্টের তারিখ
এ এফ রহমান হল ১২, ১৩ ও ১৪ ডিসেম্বর; আলাওল হল ১৫, ১৬ ও ১৭ ডিসেম্বর; শহীদ আব্দুর রব হল ১৮, ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর; মাস্টার দা সূর্যসেন হল ২১, ২২ ও ২৩ ডিসেম্বর; শাহ আমানত হল ২৫, ২৬, ২৭, ২৮ ও ২৯ ডিসেম্বর; সোহরাওয়ার্দী হল ৩০, ৩১ ডিসেম্বর ও ১, ২ জানুয়ারি; শাহজালাল হল ৩, ৪, ৫ ও ৬ জানুয়ারি এবং শিল্পী রশিদ চৌধুরী হোস্টেল ৭ জানুয়ারি।
আসন্ন এসএসসি ২০২৫ ব্যাচের জন্য সাইফুরস আয়োজন করতে যাচ্ছে ইংশিল এক্সাম চ্যালেঞ্জ। দেশজুড়ে সাইফুরস- এর প্রতিটি শাখায় আয়োজন করা হয়েছে এ প্রতিযোগতামূলক ইংরেজি পরীক্ষাটি।
দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে পরীক্ষাগুলোকে। প্রথম পর্বে চারটি এবং ২য় পর্বে ২টি পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। এই প্রতিযোগিতায় ৬ দিনেই এসএসসি ইংরেজির প্রস্তুতি আসবে হাতের মুঠোয়।
প্রথম পর্বে সাইফুরস- এর প্রতিটি ব্রাঞ্চে অনুষ্ঠিত চারটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে প্রথম, ২য় এবং ৩য় স্থান অর্জনকারীর প্রত্যেকেই পাবে নিশ্চিত সব পুরস্কার।
আর ২য় পর্বের দুটি পরীক্ষায় অশগ্রহণকারীদের মধ্যে দেশসেরা তিন বিজয়ী ১ম, ২য় এবং ৩য় স্থান অর্জনকারীদের জন্য রয়েছে ল্যাপটপ, ট্যাব এবং স্মার্টফোন।
দেশসেরা ৪র্থ থেকে ১০ম স্থান অর্জনকারীরাও পাবে অন্যান্য স্মার্টফোনসহ বিভিন্ন ইলেকট্রনিক গ্যাজেটস।
কোনো রেজিষ্ট্রেশন ফি ছাড়াই প্রতিযোগিতাটিতে একদম ফ্রিতে অংশ নেওয়া যাবে।
রেজিস্ট্রেশন করতে ভিজিট করতে হবে ssc.saifur’s.com.bd.
সারা দেশের যে কোনো স্থান থেকে শিক্ষার্থীদেরকে অবশ্যই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। রেজিস্ট্রেশনের শেষ সময় ৮ জানুয়ারী ২০২৫।
আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আনুষ্ঠানিকভাবে তিতুমীর কলেজকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরে সম্ভাব্যতা যাচাই’ কমিটি ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষার্থীরা।
সোমবার সকালে তিতুমীর কলেজ ক্যাম্পাসে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রিলি মাস্টার্স ১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী মোশাররফ হোসেন রাব্বী। তিনি বলেন, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে যে কমিটি হয়েছে সেটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে প্রকাশ করতে হবে। কমিটি প্রকাশের পর ৩ কর্মদিবসের মধ্যে তিতুমীর কলেজে এসে সরেজমিনে পরিদর্শন করার মাধ্যমে কাজ শুরু করতে হবে। কমিটি প্রকাশের ১৫ দিনের মধ্যে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তর সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের বিষয়ে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রদান করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিটির বিষয়ে ৩ দফা দাবি মেনে না নেওয়া হলে পরবর্তী কর্মসূচির দিকে ধাবিত হতে বাধ্য হব।’
রাষ্ট্র বিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্স ২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী আবদুল হামিদ বলেন, ‘গত ১৮ নভেম্বর আলোচনায় মন্ত্রণালয় আমাদের দাবির যৌক্তিকতা বুঝতে পারে এবং তিতুমীর বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের জন্য একটি শক্তিশালী কমিটি করার সিদ্ধান্ত নেয়, যা প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়ার কথা থাকলেও তা প্রকাশে তালবাহানা শুরু করা হয়। এর প্রতিবাদে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা রাতেই আবার রাস্তায় নামে। পরবর্তীতে রাতেই সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয় এবং তারা এটি নিশ্চিত করেন যে ১৯ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বসে আমাদের বিষয়ে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
১৯ নভেম্বর তারা আমাদের সঙ্গে পুনরায় আলোচনায় বসেন, যেখানে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. এম আমিনুল ইসলাম এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। এ আলোচনায় সিদ্ধান্ত আছে যে তিতুমীর কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় করার সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে একটি পৃথক কমিটি হবে এবং এই কমিটি গঠনের জন্য ৭ দিন সময়ের কথা বলেন নাহিদ ইসলাম।’ যোগ করেন তিনি।
আবদুল হামিদ আরও বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে মন্ত্রণালয়ের এই সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে সব কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষার্থীদের ক্যাম্পাসে ফিরে আসেন। আমরা তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা শান্তিপূর্ণভাবে ৭ দিন ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক কার্যক্রমের অংশগ্রহণ করি। কিন্তু ৭ দিন অতিবাহিত হওয়ার পরও তারা কমিটি করার বিষয়ে কোনো আপডেট আমাদের দেয়নি। আমরা তাদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করি কিন্তু বারবারই বলা হয় কমিটি করার প্রক্রিয়া চলমান, অপেক্ষা করুন। অপেক্ষা করতে করতে ৭ দিন পার হয়ে যায়।
সময় শেষ হওয়ার পর তারা শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারীর ব্যক্তিগত সহকারী মুসতাহসিন তাসমিম রহমান অনিদ্র জানান, কমিটি করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্টদের অনুলিপি দেওয়া হবে। কিন্তু সেই অনুলিপি এখনো আমাদের কাছে এসে পৌঁছায়নি। মন্ত্রণালয়ের এমন দোদুল্যমান সিদ্ধান্তে তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা ব্যথিত।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের আগামীকাল মঙ্গলবারের চূড়ান্ত পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে। সোমবার ঢাবির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহালুল হক চৌধুরীর সই করা বিজ্ঞপ্তিতে পরীক্ষা স্থগিতের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের ২০২৩ সালের চতুর্থ বর্ষের স্নাতক পরীক্ষার সময়সূচি থেকে মঙ্গলবারের পরীক্ষা অনিবার্য কারণে স্থগিত করা হলো। স্থগিত করা পরীক্ষার পরিবর্তিত সময়সূচি শিগগিরই ঘোষণা করা হবে। এ ছাড়া পূর্বঘোষিত সময়সূচির অন্যান্য পরীক্ষা অপরিবর্তিত থাকবে।
গতকাল রোববার ঢাবি অধিভুক্ত সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল কলেজ ক্যাম্পাসে হামলায় অবকাঠামোগত বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়। আর এ কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কবি নজরুল সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজে যে ক্ষতি হয়েছে সেখানে ক্লাস করারও পরিস্থিতি নেই। সব কলেজে একই পরীক্ষা। একটি কলেজে পরীক্ষা না নেওয়া গেলে সাতটি কলেজের পরীক্ষা স্থগিত রাখতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) চারুকলা অনুষদের ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষক সহকারী অধ্যাপক ও সহকারী প্রক্টর জাহিদুল হককে হত্যার হুমকিদাতা ও তার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার ও শাস্তির দাবিতে প্রতিবাদে মানববন্ধন, চিত্রাঙ্কণ কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এসময় হুমকিদাতাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বহিষ্কার ও সন্ত্রাসবিরোধী বিশ্বজিৎ ভাস্কর্য স্থাপনের দাবি জানান তারা।
রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বরে মানববন্ধন করেন চারুকলা অনুষদের শিক্ষকরা। এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একটি মিছিল পুরো ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে মানববন্ধনে যোগ দেন। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ফ্যাসিস্টদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ফ্যাসিস্টদের ঠিকানা, জগন্নাথে হবে না’, ‘এক জাহিদ মরে গেলে লক্ষ জাহিদ ঘরে ঘরে’সহ নানা শ্লোগান দেন। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী চিত্রাঙ্কন কর্মসূচি পালন করেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, কীভাবে একজন কর্মচারী বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষককে গুলি করে মারার হুমকি দেয়। এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার নাহলে আমরা শিক্ষার্থীরা মাঠে থাকবো। যারা হুমকি দিচ্ছে তাদেরকে আমরা ছেড়ে কথা বলবো না। ছাত্র আন্দোলনে সে শিক্ষার্থীদের পাশে ছিলো এটা কি তার অপরাধ? অভিযুক্ত কাজী মনির ও হুমকিদাতা সালাউদ্দিন মোল্লা স্পষ্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধী ছিলো। এখন সে বাইরে বসে হত্যার হুমকি দিচ্ছে।
ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষার্থী অতুল রায় বলেন, ফ্যাসিস্টের দোসররা বিদেশে পালিয়েছেন। পালিয়েও আমাদের হুমকি দেয়। শিক্ষকদের হুমকি দেয়া মানে আমাদের ছাত্র আন্দোলনকে হুমকি দেয়া। জবিতে ফ্যাসিস্ট আমলের যারা রয়ে গেছে তাদের আমরা খুঁজে বের করবো এবং সব অভিযুক্তদের যেকোনো মূল্যে আইনের আওতায় আনতে চাই। জবি প্রশাসন আমাদের পূর্ণ সহায়তা করবে আশাকরি। প্রশাসন আমাদের দাবি না মানলে আমরা সব ক্লাস বর্জন করবো।
প্রিন্ট মেকিং বিভাগের চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, আমাদের স্নেহভাজন জাহিদুল হককে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছে, সে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরও। আমরা ব্যথিত বোধ করছি, এজন্য এখানে দাঁড়িয়েছি।
ভাস্কর্য বিভাগের চেয়ারম্যান ইমাম হোসেন সুমন বলেন, আমাদের যে কলিগের উপরে হত্যার হুমকি এসেছে সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন জাতীয় অংশীজন। বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে তার চিন্তা সবসময় ছিলো। আন্দোলনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষেও তার শক্ত ভূমিকা ছিল।
চারুকলা অনুষদের চেয়ারম্যান ও ডিন আলপ্তগীন তুষার বলেন, আজ আমরা ভাস্কর্য বিভাগের শিক্ষকরা সম্মিলিত হয়েছি শিক্ষক মোহাম্মদ জাহিদুল হককে হত্যার হুমকির সঙ্গে জড়িত সকল দুর্বৃত্তদের বহিষ্কারের দাবিতে। উনিও শিক্ষক আমিও শিক্ষক। আজ জাহিদকে হুমকি দিয়েছে কাল আমাকে দিবে।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ভাস্কর্য বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জাহিদুল হককে গুলি করে হত্যার হুমকি দেয়ার অভিযোগ উঠেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব দপ্তরের কর্মকর্তা সালাউদ্দিন মোল্লার বিরুদ্ধে। গত বৃহস্পতিবার হত্যার হুমকির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে উপাচার্য বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন এই শিক্ষক। পাশাপাশি কোতোয়ালি থানায়ও সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপের অনুমোদন দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ স্কলারশিপে ১০০ বাংলাদেশিকে পাকিস্তানে পড়ার সুযোগ দেওয়ার বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম সামা টিভি গতকাল বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায়। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সরকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের পড়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার পর- সৌহার্দ্যের অংশ হিসেবে ১০০ বাংলাদেশি শিক্ষার্থীকে স্কলারশিপ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তান। এতে করে বাংলাদেশিদের পাকিস্তানে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার পথ সুগম হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বাংলাদেশ ও পাাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি সূত্র সামা নিউজকে জানিয়েছেন, বাংলাদেশে নিযুক্ত পাকিস্তানি হাইকমিশনার এ বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে বেশি কাজ করছেন। স্কলারশিপ দেওয়ার জন্য পাকিস্তানি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো বাংলাদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে নিজস্ব পোর্টালে যুক্ত করবে।
এদিকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যে আগেও শিক্ষা-বিষয়ক সহযোগিতামূলক সম্পর্ক ছিল। তবে এটি অনেক দিন বন্ধ ছিল। কিন্তু শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দেশের মধ্যে আবারও এই সহযোগিতামূলক সম্পর্ক নতুন করে শুরু হতে যাচ্ছে।
এরই মধ্যে অন্যান্য খাতেও সহযোগিতামূলক সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে পাকিস্তানের করাচি থেকে সরাসরি চট্টগ্রামে এসে নোঙর করে একটি পণ্যবাহী জাহাজ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) অটোরিকশার ধাক্কায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী (৫৩ ব্যাচ) আফসানা করিম রাচি নিহতের ঘটনায় রিকশা চালককে গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবিতে মশাল মিছিল করেছে প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা।
আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার প্রাঙ্গন থেকে মিছিল বের করেন তারা। মিছিলটি বটতলা এলাকা ঘুরে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে নিহত আফসানা করিমের স্মরণে এক মিনিট নিরাবতা পালনের পর সেখানে একটি সমাবেশ করেন তারা।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘হত্যাকারীর কালো হাত, ভেঙ্গে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘ বিচার চাই বিচার চাই, রাচি হত্যার বিচার চাই’, তুমি কে আমি কে, রাচি রাচি’, ‘ক্যাম্পাসে লাশ পড়ে, প্রশাসন কি করে’, ‘অটোরিকশার সিন্ডিকেট, ভেঙ্গে দাও, গুঁড়িয়ে দাও’, ‘আমার বোন কবরে, খুনি কেন বাহিরে’, ‘লাশের উপর রাজনীতি, চলবে না চলবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
সমাবেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন বলেন, ‘আমাদের দাবি ছিল এগারোটি। কিন্তু সেই দাবিগুলোর মধ্যে কিছু কিছু দাবি রয়েছে যেগুলো প্রক্রিয়া শেষ হতে একটু বেশি সময় লাগবে। এজন্য আমরা রাচিকে ধাক্কা দেওয়া ঘাতক রিকশা চালককে দ্রুত গ্রেপ্তার করে সর্বোচ্চ আওতায় আনার এক দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছি। আমরা ইতিমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে কয়েকবার গিয়েছি। আমরা ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটামও দিয়েছিলাম কিন্তু প্রশাসন এখনো পর্যন্ত খুনিকে শনাক্ত করতে পারেনি। আমরা কালকে যখন উপাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম তখন পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি। আমরা উপাচার্যের কাছে গিয়ে আমাদের দাবিগুলো উত্থাপনের পর তিনি তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেন এবং আশুলিয়া থানায় একটি মামলা দায়ের করার ব্যবস্থা করেন। যতক্ষণ না পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ঘাতক রিকশা চালকে আইনের আওতায় না আনবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাব। তবে আমরা উপাচার্যকে দুই দিন সময় দিতে চাই। আমাদের দাবি মেনে না নেওয়া হলে আগামী রোববার থেকে আমরা পূনরায় কর্মসূচী রাখব।’
এসময় মার্কেটিং বিভাগের প্রথম বর্ষের আরেক শিক্ষার্থী জান্নাতুন নিসা মীম বলেন, ‘আমরা আজকে রাচির হত্যাকারীকে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের এক দফা দাবিতে মশাল মিছিল করেছি। রাচির হত্যাকারীকে শনাক্ত করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত না করা পর্যন্ত কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক কার্যক্রমে অংশ নিব না।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শামসুন নাহার হলের সামনে বেগম রোকেয়ার গ্রাফিতিতে কালো রং দিয়ে চোখ-মুখ ঢেকে দেন হলটির এক শিক্ষার্থী। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে শুরু হয় সমালোচনা। পরে ওই শিক্ষার্থীকে ডেকে পাঠান হল কর্তৃপক্ষ। কর্তৃপক্ষের কাছে নিজের ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন হলটির প্রাধ্যক্ষ নাসরিন সুলতানা।
বুধবার প্রাধ্যক্ষ গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ওই শিক্ষার্থীকে ডেকেছিলাম। একজন সাইকোলজিস্টও সঙ্গে ছিলেন। আমরা মেয়েটার সঙ্গে কথা বলে কিছু অসংলগ্ন কথাবার্তা পেয়েছি। কথা বলার পর মেয়েটি তার ভুল বুঝতে পেরে ক্ষমা চেয়েছেন। ভবিষ্যতে এমন কোনো কাজ করবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন। গ্রাফিতিটিকে তিনি আগের মতো আবার ঠিক করে দেবেন বলেও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, বেগম রোকেয়ার গ্রাফিতিতে কালো রং দেওয়ার ঘটনাটি সামনে আসে গতকাল মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর)। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ অন্যরা এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সমালোচনা করেন।