শনিবার, ১ নভেম্বর ২০২৫
১৭ কার্তিক ১৪৩২

বিসিএস জটে পিএসসি

আপডেটেড
১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৬:১৮
হাসান মেহেদী
প্রকাশিত
হাসান মেহেদী
প্রকাশিত : ১৯ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:৪০

হাসান মেহেদী

বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে জটে পড়েছে পিএসসি। একসঙ্গে চারটি বিসিএস পরীক্ষা আটকে গেছে। ফলে মন্ত্রণালয়, দপ্তর ‍ও অধিদপ্তরে প্রথম শ্রেণির পদগুলোতে নিয়োগ দেওয়া যাচ্ছে না।

জনপ্রশাসন সূত্র বলছে ৪৩ হাজারের বেশি পদ শূন্য পড়ে আছে।

চাকরির মেয়াদ শেষে প্রতিদিনই কর্মকর্তারা অবসরে যাচ্ছেন, কিন্তু বিসিএসের মাধ্যমে প্রতিবছর সেসব পদ পূরণ করতে পারছে না সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। শূন্য পদগুলোতে আটকে থাকা ৪ বিসিএসের মাধ্যমে ক্যাডার ও নন-ক্যাডার পদে অন্তত ১৬ হাজার পদ পূরণ করা যাবে।

পর্যালোচনায় দেখা গেছে, ৪ বছর পার হলেও ৪০তম বিসিএসের নিয়োগ শেষ করতে পারেনি পিএসসি। ৩ বছর ধরে আটকে আছে ৪১তম বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া, যেটির লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আর দুই বছরে ৪৩তম বিসিএস পৌঁছেছে লিখিত পরীক্ষা পর্যন্ত। গত এক বছরে ৪৪তম বিসিএস সবেমাত্র পার করেছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা।

এই ৪টি বিসিএসের বাইরে একমাত্র ব্যতিক্রম ৪২তম বিশেষ বিসিএস পরীক্ষা। যেটিতে প্রিলিমিনারি ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেয়ার কারণেই তা এক বছরে শেষ করতে পেরেছে পিএসসি।

পিএসসির তথ্য মতে, গত ৫ বছরে ৫টি বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত স্বাস্থ্য ক্যাডারে ৪২তম (বিশেষ) বিসিএস ছাড়া একটিরও নিয়োগ সম্পন্ন হয়নি। ফলে বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা লাখো চাকরিপ্রার্থীর মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছে।

এই পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এক বছরের মধ্যে একটি বিসিএসের নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করার লক্ষ্য নিয়ে কাজ করছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। কর্মকর্তারা বলছেন, আগামী মাসে ৪৫তম বিসিএসের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ১২ মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে চান তারা।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বলছে, প্রতি বছরই সরকারি চাকরি থেকে অবসর নিচ্ছেন বিসিএস কর্মকর্তারা। কিন্তু প্রতিবছর বিসিএস পরীক্ষা নিয়ে নতুনদের নিয়োগ না হওয়ায় বর্তমানে প্রথম শ্রেণির ৪৩ হাজার ৩৩৬টি পদ ফাঁকা রয়েছে। এর মধ্যে মন্ত্রণালয় ও বিভাগে ১ হাজার ২৪৮টি; দপ্তর ও অধিদপ্তরে ২০ হাজার ৩৫৫টি; বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং এসিল্যান্ডের কার্যালয়ে ৬৭৪টি; স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান ও করপোরেশনে প্রথম শ্রেণির পদে ২১ হাজার ৫৯টি পদ ফাঁকা রয়েছে।

এই বিষয়ে ৪০তম বিসিএসে সুপারিশপ্রাপ্ত একজন প্রার্থী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘স্নাতক সম্পন্ন করার পর চাকরির বাজারে আমার প্রথম সফলতা ছিল ৪০তম বিসিএস। এই একটি বিসিএসই চার বছর কেটে গেল। কিন্তু এখনো চূড়ান্ত নিয়োগপ্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়নি। গত ৩০ মার্চ ৪০তমের চূড়ান্ত ফল দেয়ার সাড়ে ৬ মাস গত হলেও এখনো প্রজ্ঞাপন পাচ্ছি না। এর মাঝেই ৪১তম ও ৪৩তম বিসিএসের লিখিত ফলসহ ৪৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষাও ঝুলে আছে। এদিকে নন-ক্যাডার সুপারিশ নিয়েও একটা ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘এভাবে চলতে থাকলে এক বছরে বিসিএসের নিয়োগ সম্পন্ন করার যে লক্ষ্য পিএসসি হাতে নিচ্ছে, সেটির সফলতা নিয়েও আমাদের মতো চাকরিপ্রত্যাশীরা সন্দিহান।

বাড়ে আবেদনের সময়

বিসিএস আবেদনে বিজ্ঞপ্তি দেয়ার পর প্রথমপর্যায়েই একাধিকবার সময় বাড়ানো হয়। আবেদনকারীদের কোনো একটি পক্ষ থেকে দাবি জানালেই সময় বাড়িয়ে দেয় পিএসসি। ফলে শুরুতেই হোঁচট খায় নিয়োগ প্রক্রিয়া। গত ৫ বছরে প্রায় সবকয়টি বিসিএসেই আবেদনের সময় বাড়ানো হয়েছে। ৪৩তম বিসিএসে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সম্মান শেষবর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষা না হওয়ায় ৩ দফা ও ৪৪তম বিসিএসে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা আটকে যাওয়ায় এক মাস আবেদনের সময় বাড়ানো হয়। এখনো এসব বিসিএসের প্রক্রিয়া ঝুলে রয়েছে।

পিএসসি কর্মকর্তারা বলছেন, ‘করোনা মহামারির কারণে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ থাকা, আবেদনের সময় বাড়ানো, শিক্ষকরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে খাতা মূল্যায়ন না করার কারণে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করতে সময় লেগে যাচ্ছে। পিএসসি সবসময় শিক্ষার্থীবান্ধব। তাই শিক্ষার্থীরা দাবি জানালে সেটাকে আমলে নিয়ে পরীক্ষার সুযোগ দিতে হয়। আবার পিএসসির আলাদা কোনো পরীক্ষক নেই। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের দিয়ে খাতা দেখাতে হয়। ফলে শিক্ষকরা নিজেদের কাজের ফাঁকে এই কাজগুলো করে থাকেন। সে কারণে পরীক্ষার কাজ দ্রুত শেষ করা যায় না। আবার অনেক সময় শিক্ষকরা সঠিকভাবে খাতা মূল্যায়ন না করেই জমা দেন। সে সব খাতা আবার কয়েক ধাপে যাচাই-বাছাই করে ফল প্রকাশ করতে হয়।’

এসব বিষয়ে নিয়ে সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি এ বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।

জানতে চাইলে সরকারি কর্ম কমিশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কোনো কাজই আটকে নেই। দ্রুত সময়ের মধ্যে সব পরীক্ষার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে কাজ চলছে। করোনাসহ নানা জটিলতায় কিছুটা বেশি সময় লাগছে। কিন্তু কমিশন নতুন করে একটা পরিকল্পনা করেছে যেখানে আগামী এক বছরের মধ্যে একটা বিসিএস নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ করা হবে। ৪৫তম বিসিএসকে মডেল হিসেবে ধরে আমরা এই সময়সীমা বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি।’

পরীক্ষকদের ভুলের স্বীকার ৪১তম বিসিএস

৪১তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শেষ হয়েছে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর। লিখিত পরীক্ষার ৯ মাস পেরোলেও এখন পর্যন্ত ফল প্রকাশ করতে পারেনি পিএসসি। ৩১৮ পরীক্ষকের অবহেলার কারণে এই দেরি হচ্ছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

নিয়ম অনুযায়ী, একজন পরীক্ষক খাতা মূল্যায়ন করার পর তার মূল্যায়ন সঠিক হয়েছে কি না, সেটি যাচাইয়ের জন্য ওই খাতা দ্বিতীয় ধাপে একজন নিরীক্ষক পুনরায় পরীক্ষা করেন। পুনর্নিরীক্ষণ করার সময় নিরীক্ষক দেখেন, যেখানে যেমন নম্বর দেয়ার কথা ছিল, তা দেয়া হয়েছে কি না আবার নম্বর যোগ করতে কোথাও ভুল হয়েছে কি না। এই প্রক্রিয়া শেষ হলে তবেই ফল চূড়ান্ত করা হয়।

পিএসসি বলছে, পরীক্ষকরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাতা মূল্যায়ন শেষ করতে পারেনি। পুনর্নিরীক্ষণের সময় দেখা গেছে কোনো কোনো পরীক্ষক সব প্রশ্নের উত্তর মূল্যায়ন না করেই খাতা জমা দিয়েছেন। কেউ কেউ নম্বরের যোগফলে ভুল করেছেন। এসব কারণে ফের ওই সব খাতা তৃতীয় পরীক্ষকের কাছে পাঠিয়ে মূল্যায়ন করতে হচ্ছে। ত্রুটি রয়েছে এমন ৩১৮ শিক্ষককে পিএসসিতে ডেকে এনে ফল সংশোধন করতে হচ্ছে। এদের মধ্যে আবার কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে ঠিকভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। যে কারণে সময় বেশি লাগছে। তবে নির্ভুল পরীক্ষা ও ফল প্রকাশ করতে এই সময় নেয়া হচ্ছে।

এই বিষয়ে পরীক্ষানিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের কাজ গুছিয়ে এনেছি। কমিশন বললেই সে অনুযায়ী আমরা বাস্তবায়ন করব।’

৪০তম নন-ক্যাডার নিয়োগে জটিলতা

৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার কারণে ক্যাডার পদে সুপারিশ পায়নি এমন ৮ হাজার ১৬৬ প্রার্থী পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। নিয়মানুযায়ী, এতদিন একটি বিসিএসের ‍চূড়ান্ত ফল প্রকাশের পর নন-ক্যাডারের আবেদন নেয়া হতো। তা পরের বিসিএসের চূড়ান্ত ফল প্রকাশের আগে পর্যন্ত বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে যত চাহিদা আসত সেখান থেকে নিয়োগ দেয়া হতো। কিন্তু পিএসসি এখন ৪০তম বিসিএসের নন-ক্যাডার নিয়োগ শুরুর আগেই অন্যান্য বিসিএসের নন-ক্যাডারের পদ সংরক্ষণ করার কথা ভাবছে। এমন আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন প্রার্থীরা। এ কারণে নন-ক্যাডারের নতুন নিয়ম বাতিল করে আগের নিয়মে নিয়োগের দাবি জানিয়েছেন চাকরিপ্রার্থীরা।

উল্লেখ্য, চাকরির মর্যাদা, সুযোগ-সুবিধা ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার কারণে দিন দিন বিসিএসের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে চাকরিপ্রার্থীদের। একেকটা বিসিএসে ৩ থেকে ৪ লাখেরও বেশি প্রার্থী আবেদন করছেন। যেই সংখ্যক প্রার্থী চূড়ান্ত পরীক্ষায়ে উত্তীর্ণ হচ্ছেন সীমিত পদের কারণে সেই সংখ্যক প্রার্থীকে ক্যাডার পদে নিয়োগ দেয়া যাচ্ছে না। ফলে নন-ক্যাডার পদেও বেড়েছে প্রতিযোগিতা।

২০১০ সাল থেকে উত্তীর্ণ হয়েও নিয়োগবঞ্চিত প্রার্থীদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের নন-ক্যাডারে প্রথম শ্রেণির পদে নিয়োগ দেয়া শুরু করে পিএসসি। এর পরও সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ২০১৪ সাল থেকে বিসিএসের মাধ্যমে দ্বিতীয় শ্রেণির পদে নিয়োগ শুরু হয়। এর প্রেক্ষিতে ৩০ মে এক বিজ্ঞপ্তিতে ৪০তম বিসিএসে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নন-ক্যাডার পদে ৯ম, ১০ম, ১১তম ও ১২তম গ্রেডে আবেদন চায় পিএসসি। কিন্তু নন-ক্যাডারে পিএসসি অন্য বিসিএসের জন্য পদ সংরক্ষণ করতে চাওয়ায় এই জটিলতা তৈরি হয়েছে।

এই বিষয়ে নন-ক্যাডারে নিয়োগের জন্য অপেক্ষমাণ প্রার্থী সানজিদ সৈকত দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘পিএসসি বিধির কথা বলে নন-ক্যাডারে নিয়োগ সংকুচিত করছে। এটা আসলে শুভংকরের ফাঁকি। কারণ বিধি আগেও ছিল। নতুন নিয়মের দোহাই দিয়ে নন-ক্যাডারে চাকরি বিষয়ে বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করছে। আমরা চাই দ্রুত এই সমস্যার সমাধান করা হোক।’

ভেরিফিকেশনে আটকে যায় নিয়োগ

পিএসসি চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করার পর গেজেটের মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ দেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। জনপ্রশাসন গেজেট প্রকাশ না করা পর্যন্ত কোনো মন্ত্রণালয় নিয়োগ দিতে পারে না।

সুপারিশপ্রাপ্ত প্রার্থীদের সম্পর্কে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে ভেরিফিকেশন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সবকয়টি সংস্থার তথ্য যাচাই-বাছাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে নিয়োগ দেয়া হয় না। ফলে পিএসসি তাদের পরীক্ষাপর্ব শেষ করলেও ভেরিফিকেশনের প্রক্রিয়ার কারণেও নিয়োগে দেরি হচ্ছে। অনেক সময় বিসিএসে উত্তীর্ণ হয়েও মামলা, বিরোধী রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাসহ নানা কারণে গোয়েন্দা সংস্থার ভেরিফিকেশনে বাদ পড়ে যাচ্ছেন প্রার্থীদের অনেকেই।

৩৩ থেকে ৩৮তম পর্যন্ত ৬টি বিসিএসে নিয়োগে পিএসসির সুপারিশ এবং তাদের গেজেটভুক্ত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এসব বিসিএসে ১৮ হাজার ৮৫৩ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করে পিএসসি। কিন্তু তাদের মধ্যে ১৮ হাজার ২২২ জন নিয়োগ পান। ৬১৫ জন প্রার্থী নিয়োগ পাননি।

তবে গত দুই বছরে স্বাস্থ্য ক্যাডারে নিয়োগ দিতে ৩৯তম ও ৪২তম দুটি বিশেষ বিসিএস হয়েছে। এই বিসিএসে পিএসসির সুপারিশ ও জনপ্রশাসনের গেজেটে কাউকে বাদ দেয়া হয়নি।


ফলভিত্তিক শিক্ষণ পদ্ধতিতেই রয়েছে একাডেমিক উৎকর্ষের চাবিকাঠি: আইআইইউসির-ভিসি

ও.বি.ই বিষয়ক কর্মশালার সমাপনীতে বক্তব্য রাখছেন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী।
আপডেটেড ২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ২২:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী বলেছেন, আধুনিক শিক্ষণ পদ্ধতি ও আউটকাম বেইজড এডুকেশনের পূর্ণাঙ্গ ধারণা অর্জন ছাড়া একাডেমিক উৎকর্ষতা অর্জন সম্ভব নয়। শিক্ষকরা যদি এই পদ্ধতিকে যথাযথভাবে প্রয়োগ করতে পারেন, তাহলে শিক্ষার্থীদের শেখার মান ও দক্ষতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে। তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা যেন আধুনিক ও ফলভিত্তিক শিক্ষাব্যবস্থায় নিজেদের দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে একাডেমিক উৎকর্ষে অবদান রাখেন-সেটিই আইআইইউসির লক্ষ্য। গত মঙ্গলবার আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাস্যুরেন্স সেল (আইকিউএসি)-এর উদ্যোগে পিএসএসি সদস্য ও নবনিযুক্ত শিক্ষকদের জন্য আয়োজিত দুই দিনব্যাপী ‘আউটকাম বেইজড এডুকেশন (ও.বি.ই)’ বিষয়ক কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এই কর্মশালার উদ্বোধনী দিনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন আইকিউএসির পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আকতারুজ্জামান খান। কর্মশালায় রিসোর্স পারসন হিসেবে ছিলেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইটিই) বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মোস্তফা আমির ফয়সাল এবং কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগের প্রভাষক জামিল আসা-আদ। ‘আউটকাম বেইজড এডুকেশন’ বিষয়ক কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদী আরও বলেছেন, আপনারা হচ্ছেন ভবিষ্যতের পরিবর্তনের দূত। আপনারা যত বেশি দক্ষ ও আধুনিক হবেন, তত বেশি শিক্ষার্থীরা অনুপ্রাণিত হবে। এই কর্মশালার মাধ্যমে আপনারা যে জ্ঞান অর্জন করেছেন, তা যেন শ্রেণিকক্ষে প্রয়োগ করেন এটিই আমাদের প্রত্যাশা।

আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক ড. শাহ মু. ছানাউল করিমের সঞ্চালনায় আয়োজিত এ কর্মশালায় পিএসএসি সদস্য ও নবনিযুক্ত শিক্ষকরা ও.বি.ই. কারিকুলাম, কোর্স ফাইল ব্যবস্থাপনা এবং কার্যকর মূল্যায়ন পদ্ধতি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নেন। কর্মশালায় বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, আইকিউএসির অতিরিক্ত পরিচালক ড. মোহাম্মদ মনজুর আলমসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএসএসি সদস্য ও নবনিযুক্ত শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।


বাকৃবি ইনোভেশন হাবে তরুণ উদ্ভাবকদের স্টার্টআপ ফান্ড প্রদান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

তরুণ উদ্যোক্তাদের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) অনুষ্ঠিত হলো ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব প্রোগ্রামের (ইউআইএইচপি) ফাইনাল পিচ প্রেজেন্টেশন ডে। প্রায় তিন মাসব্যাপী মেন্টরশিপ ও প্রোটোটাইপ উন্নয়ন কার্যক্রম শেষে অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের উদ্ভাবনী প্রজেক্ট উপস্থাপন করে। গত শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষ (বিএইচটিপিএ) প্রকল্প পরিচালক জনাব মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার। উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি ইনোভেশন হাবের সভাপতি ও ফোকাল পয়েন্ট অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, সদস্য অধ্যাপক ড. মো সহিদুজ্জামান ও অধ্যাপক ড. মো. রোস্তম আলী, ইউআইএইচপির ইউনিভার্সিটি ইনোভেশন হাব ম্যানেজার জাকেরা রহমানসহ বাকৃবির শিক্ষার্থীরা। প্রোগ্রামটি সার্বিকভাবে সঞ্চালনা করেন ইউআইএইচপির সিনিয়র প্রোগ্রাম অফিসার নাহিয়ান বিন আব্দুল্লাহ।

জানা যায়, বাকৃবিতে গত ১ আগস্ট মোট ১৮টি দল নিয়ে প্রোগ্রামটির তৃতীয় ও চতুর্থ কোহর্টের কার্যক্রম শুরু হয়। প্রায় তিন মাসের নিবিড় মেন্টরশিপ শেষে আজকের অনুষ্ঠানে ১২টি দল (প্রতি কোহর্ট থেকে ৬টি করে) জুরি বোর্ডের সামনে তাদের প্রোটোটাইপসহ চূড়ান্ত প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী দলগুলোর মধ্যে মোট ৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা, যেখানে কোহর্ট ৩-এর বিজয়ী দলগুলোকে মোট ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা এবং কোহর্ট ৪-এর বিজয়ী দলগুলোকে মোট ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়। এর আগে বাকৃবিতে ১ম ও ২য় কোহর্ট সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং আগামী জানুয়ারি মাসের পর ৫ম ও ৬ষ্ঠ কোহর্টের কার্যক্রম শুরু হবে।

ফাইনালে জুরি বোর্ডের সদস্যরা ছিলেন- ডিইআইইডি থেকে জনাব আবদুল্লাহ আল মামুন, বাকৃবি থেকে অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় থেকে জনাব মো. নিজামুল আলম এবং বিএইচটিপিএ থেকে ডিইআইইডির সহকারী প্রকল্প পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) জনাব মো. মাহাবুল আলম।


জয়পুরহাটের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ভিন্ন রকম উপস্থিতি

জেলায় ১২৭ প্রধান শিক্ষক ও ১৯৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাব্বিউল হাসান, জয়পুরহাট

জয়পুরহাটে শহরের ‘মডেল’ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর গাদাগাদি আর গ্রামাঞ্চলের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এক প্রকার শিক্ষার্থী শূন্যতা। সঙ্গে আছে শিক্ষক সংকট ও অবকাঠামোগত দুর্বলতাও। শহরের বিদ্যালয়ের তুলুনায় গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোর লেখাপড়ার মান সন্তোষজনক নয়। সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলামের কথাতেও এমন ইঙ্গিত বহন করছে। এছাড়া জেলায় ১২৭টি প্রধান শিক্ষক ও ১৯৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, এ জেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৩৭১টি। মঞ্জুরিকৃত ৩৭১ জন প্রধান শিক্ষকের বিপরীতে কর্মরত আছেন ২৪৪ জন। ২০৭৬ জন সহকারী শিকক্ষকের বিপরীতে ১৮৮০ জন। ১২৭টি প্রধান শিক্ষক ও ১৯৬ জন সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে।

অপরদিকে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে কোন কর্মকর্তার পদ শূন্য নেই। একজন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, দুই সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, একজন তদারকি (মনিটরিং) কর্মকর্তা ও পাঁচটি উপজেলায় ৫ জন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, ১৫ জন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা কর্মরত আছেন। শুধু কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত অবস্থায় রয়েছেন।

জয়পুরহাট জেলা সদরের একটি ও তিনটি উপজেলা সদরের তিনটি মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গ্রামাঞ্চলের তিনটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সরেজমিনে এসব চিত্র দেখা গেছে।

জানা গেছে, গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়ে অবকাঠামোগত কিছু সমস্যা রয়েছে। শহরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা অনেক বেশি। সেই তুলুনায় গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই। আবার গ্রামাঞ্চলের বিদ্যালয়গুলোতে নজরদারিও কম হয়।

মডেল স্কুলে শিক্ষার্থীর গাদাগাদিঃ জয়পুরহাট শহরের মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থী সংখ্যা ১ হাজার ৫৫১ জন। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত প্রতিটি শ্রেণিতে তিনটি শাখা রয়েছে। বিদ্যালয় ভবনের ১৭টি কক্ষ রয়েছে। এরমধ্যে ১৬টি শ্রেণি কক্ষ একটি অফিস কক্ষ। একটি কক্ষে গাদাগাদি করে শতাধিক শিক্ষার্থী বসে। পঞ্চম শ্রেণিতেই ৩৫১ জন শিক্ষার্থী। ফলে ক্লাস নিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় শিক্ষকদের।

আক্কেলপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৪৩২ জন শিক্ষার্থী। ১০ জন শিক্ষক আছেন। নয়টি শ্রেণিকক্ষ রয়েছে। ক্ষেতলাল মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩১৪ জন শিক্ষার্থী। নয় জন শিক্ষক রয়েছেন। এরমধ্যে একজন পুরুষ আট জন নারী। ১০২ জোড়া ব্রেঞ্চ আছে। কালাই মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৩৪৩ জন শিক্ষার্থী। নয় জন শিক্ষক আছেন। ব্রেঞ্চের স্বল্পতা নেই।

জয়পুরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির দুই জন শিক্ষার্থী বলেন, তিনজনের ব্রেঞ্চে গদাগাদি করি কখনো চার জন আবার কখন পাঁচ জন বসে। ক্লাসে পাঠদানের মনোযোগ কম হয়। একজন অভিভাবক বলেন, আমার ছেলে শহরের স্কুলে পড়ে। ভর্তি পাওয়া গেলেও গাদাগাদির কারণে ভালোভাবে শিখতে পারছে না। তাই আলাদা করে প্রাইভেট পড়াতে হচ্ছে।

জয়পুরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরর প্রধান শিক্ষক মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির হার সন্তোষজনক। তবে একটি ওয়াশব্লক। এ কারণে বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে। শিক্ষার্থীর তুলুনায় ১৫০ জোড়া ব্রেঞ্চ ঘাটতি আছে।

জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাসুদুল হাসান বলেন, জয়পুরহাট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রচুর শিক্ষার্থী রয়েছে। ওয়াশব্লক ও ব্রেঞ্চের সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে চাহিদা দেওয়া হয়েছে।

গ্রামাঞ্চলের স্কুলে এক প্রকার শূন্যতা:

অন্যদিকে গ্রামে চিত্র একেবারেই ভিন্ন। শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। আক্কেলপুর উপজেলা সদর থেকে দক্ষিণে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে অনন্তপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থী মাত্র ৮৮ জন। শিক্ষার্থীর উপস্থিতিও মাঝেমধ্যে অনেক কম হয়। শ্রেণিকক্ষের ব্রেঞ্চগুলো বেশিভাগই ফাঁকা থাকে।

কালাই উপজেলা সদর থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে কাথাইল গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মোট ১২৯ জন শিক্ষার্থী। এখানে ছয় জন শিক্ষক আছেন। এরমধ্যে একজন প্রশিক্ষণে রয়েছেন। শিক্ষার্থীর উপস্থিতি কম।

ক্ষেতলাল উপজেলা সদর থেকে প্রায় প্রায় ১১ কিলোমিটার দুরত্বে বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ে মোট ৭৫ জন শিক্ষার্থী। একটি শ্রেণিক্ষে ৪ জন শিক্ষার্থীকে দেখা যায়। প্রধান শিক্ষক মেহেদী হাসান বলেন, গ্রামে মেলা হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা চলে গেছেন।

শিক্ষক সংকট ও নেতৃত্বের ঘাটতি:

জেলার অনেক বিদ্যালয়ে শিক্ষক সংকট রয়েছে। বেশির ভাগ বিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক নেই। যেসব স্কুলে আছেন, তারা শিক্ষা অফিসের নানা কাজে ব্যস্ত থাকেন।

ডিজিটাল শিক্ষার অভাবঃ

সরকারি উদ্যোগ থাকলেও ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান কার্যত অনুপস্থিত। শহর ও গ্রাম—কোনো বিদ্যালয়েই প্রোজেক্টর বা মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবহার করা হয় না।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জহুরুল ইসলাম বলেন, যে বিদ্যালয়গুলোতে লেখাপড়ার মান ভালো হয়। অভিভাবকরা সেখানেই শিক্ষার্থীদের ভর্তি করান। বিদ্যালয়গুলোতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে পাঠদান করানো হয়।


চাকসু নির্বাচিতরা শপথ নিলেন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) এবং হল ও হোস্টেল সংসদে নির্বাচিতরা শপথ নিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদ মিলনায়তনে চাকসু নির্বাচনে নির্বাচিত ২৩৫ জন শপথ গ্রহণ করেন। শপথ পাঠ করান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইয়াহ্ইয়া আখতার। আর হল সংসদে নির্বাচিতদের স্ব স্ব হলের প্রভোস্টরা শপথবাক্য পড়ান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপউপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. কামাল উদ্দিন, উপউপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন। শপথ অনুষ্ঠানের শুরুতে দাঁড়িয়ে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করেন সবাই। এরপর পবিত্র কোরআন, গীতা, ত্রিপিটক এবং বাইবেল পাঠ করা হয়। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ এবং চব্বিশের ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

প্রায় ৩৫ বছর পর গত ১৫ অক্টোবর চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। চাকসুর ২৬টি পদের মধ্যে ২৪টিতেই জয় পেয়েছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের প্রার্থীরা।

চাকসুতে নির্বাচিতরা হলেন, ভিপি পদে ইব্রাহীম হোসেন (ইব্রাহীম রনি), জিএস পদে সাঈদ বিন হাবিব, এজিএস আইয়ুবুর রহমান (তৌফিক), খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক মোহাম্মদ শাওনসহ খেলাধুলা সম্পাদক তামান্না মাহবুব প্রীতি, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক হারেজুল ইসলাম (হারেস মাতাব্বরসহ) সাহিত্য সম্পাদক, জিহাদ হোসাইন (জিহাদ আহনাফ), দপ্তর সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল নোমানসহ দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাত, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক নাহিমা আক্তার (দ্বীপা) এবং সহছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা।

এছাড়া বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক মো. মাহবুবুর রহমান, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক তানভীর আঞ্জুম শোভন, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক তাহসিনা রহমান, স্বাস্থ্য সম্পাদক আফনান হাসান ইমরান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক মো. মোনায়েম শরীফ, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক মেহেদী হাসান সোহান, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক মো. ইসহাক ভূঁঞাসহ যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক ওবাইদুল সালমান, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বি তৌহিদ, পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাহী সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে, জান্নাতুল ফেরদাউস সানজিদা, আদনান শরীফ, আকাশ দাস, সালমান ফারসী ও মো. সোহানুর রহমান।

প্রসঙ্গত, ১৯৭০ সালে চাকসুর প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ১৯৭২-৭৪, ১৯৭৯-৮১ সালে এবং ১৯৯০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সর্বশেষ চাকসুর নির্বাচন হয়।


নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের নব্য সদস্য মূল্যায়ন অনুষ্ঠান সম্পন্ন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরামের কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৫-এর নবীন সদস্যদের মূল্যায়ন অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ভবনের ৫ম তলায় সাংবাদিক ফোরামের অফিস কক্ষে নতুন সদস্যদের ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়। ভাইভা বোর্ডে সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি শাকিল বাবু, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক রোকন বাপ্পি, সাধারণ সম্পাদক আবু ইসহাক অনিকসহ ও বিভিন্ন কার্যকরী সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। প্রতি বছরের মতো এবারও সাংবাদিক ফোরামের ৪র্থ নবীন সদস্য আহ্বানের মাধ্যমে একগুচ্ছ প্রতিভাবান ও প্রচণ্ড গতিশীল, ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় আগ্রহী নতুন মুখ নিয়ে সম্পন্ন হয় নব্য সদস্যদের এ মৌখিক ভাইভা পর্ব। ২০২৫ সালের ৬ থেকে ২০ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে নতুন সদস্য সংগ্রহের আহ্বান করা হয়েছিল। ফোরামের পথ চলায় চিরকাল স্বপ্ন সারথি হয়ে কাজ করে যাবে।’

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক ফোরাম স্বীকৃতি লাভ করে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর। সংগঠনটির সদস্যরা স্বাধীনভাবে ও নিষ্ঠার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জনপ্রিয় জাতীয় দৈনিক, টিভি চ্যানেল ও মাল্টিমিডিয়াগুলোতে কাজ করে চলেছে অবিরাম। বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখালেখি, ফটো বা ভিডিওগ্রাফি এবং গ্রাফিক্স বা পোস্টার ডিজাইনের মাধ্যমে সাংবাদিকতা করতে আগ্রহী এমন নবীন শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দিয়ে সাংবাদিক ফোরামের সাথে যুক্ত করে নতুন দিগন্ত উন্মোচনে ভূমিকা রাখে এ সংগঠন।

উল্লেখ্য, সাংবাদিকতার মান বজায় রাখা এবং নতুন প্রজন্মকে পেশাদার সাংবাদিক হিসেবে তৈরি করতে সাংবাদিক ফোরামে ৪র্থ বারের মতো এ নবীন সদস্য সংগ্রহ ও তাদের মূল্যায়ন অনুষ্ঠান আয়োজন করে।


পাকসু নির্বাচন চায় অধিকাংশ শিক্ষার্থী

*২৪ বছরেও পবিপ্রবিতে হয়নি ছাত্র সংসদ নির্বাচন *পবিপ্রবিয়ান ফেসবুক গ্রুপে গণ-ভোট দেয় ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী *পবিপ্রবি প্রশাসনের গড়িমসি
আপডেটেড ২৩ অক্টোবর, ২০২৫ ১৮:৩৬
পবিপ্রবি প্রতিনিধি

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পবিপ্রবি) দক্ষিণ বঙ্গের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলাদেশের উল্লেখযোগ্য একটি বিদ্যাপীঠ। পবিপ্রবির আইনে উল্লেখ না থাকলেও বিধিমালায় রয়েছে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (পাকসু)-এর গঠনতন্ত্র। ক্যাম্পাসের অধিকাংশ শিক্ষার্থী চায় পাকসু নির্বাচন। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নিতে দেখা যায়নি।

দেশের উল্লেখযোগ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ইতোমধ্যেই ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে গেছে বাকি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নিয়েছে পদক্ষেপ, ঘোষণা দিয়েছে নির্বাচন তারিখ। পবিপ্রবির বিধিমালার ক্রমিক-১১ এর ১৩৯ পৃষ্ঠা থেকে ১৫৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (পাকসু) ও হল সংসদের গঠনতন্ত্র উল্লেখ থাকলে ২৪ বছরেও পবিপ্রবিতে হয়নি ছাত্র সংসদ নির্বাচন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ বাবদ ভর্তির সময় নেওয়া হয় মোটা অঙ্কের টাকা এবং হল সংসদ বাবদ প্রতি সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের থেকে নেওয়া হয় নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা। এই লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা ব্যয় হওয়ার খাতগুলো নিয়ে রয়েছে শিক্ষার্থীদের মাঝে অস্পষ্টতা। পবিপ্রবির টিএসসিতে ছাত্র সংসদের একটি বড় কক্ষ বরাদ্দ থাকলেও ৫ আগস্টে পরবর্তীকালে অন্য কোনো সংগঠনের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয় যা পবিপ্রবির প্রশাসনের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ব্যাপারে উদাসীনতার প্রতিফলন।

পবিপ্রবিয়ান ফেসবুক গ্রুপে গণ-ভোট নেওয়া হলে সেখানে প্রায় ২ হাজার শিক্ষার্থী ভোট দেয় যেখানে ৯০ ভাগ শিক্ষার্থী ‘পাকসু চাইর’ পক্ষে ভোট দেয়। পবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম সাথে সাধারণ শিক্ষার্থীরা এ বিষয়ে আলোচনা করলে তিনি বলেন, ‘অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে যায় তাহলে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েও হব’ তবে এ বিষয়ে পরবর্তীতে তার কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

আইন ও ভূমি প্রশাসন অনুষদের ২৩-২৪ সেশনের শিক্ষার্থী শামীমা সুলতানা বলেন, ‘পাকসু হওয়াটা অত্যন্ত জরুরি। এতে করে ভবিষ্যতে একক কোনো পক্ষের আধিপত্য থাকবে না। আমরা পাকসু চাই, অনুসরণ নয় দৃষ্টান্ত স্থাপনে আমাদের কাজ করা উচিত। আমাদের সকল কার্যক্রম অনলাইন গ্রুপে সীমাবদ্ধ না রেখে সকলকে এ দাবি নিয়ে শক্তভাবে নিজের অবস্থান তুলে ধরা উচিত।’

কৃষি অনুষদের ২২-২৩ সেশনের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল ওয়াদুদ জানান, ‘পবিপ্রবির ছাত্র সংসদ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ের পথ উন্মোচন করবে। দেশের বেশির ভাগ ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়ে গেছে, আমাদের ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নিয়ে আগ্রহ ও কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। দ্রুত পাকসু নির্বাচন বাস্তবায়নের জন্য প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।’

পবিপ্রবি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. জান্নাতীন নাঈম জীবন বলেন, ‘ছাত্র সংসদ নির্বাচন শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। শিক্ষার্থীদের অধিকার আদায়ে কার্যকর ছাত্র সংসদ থাকা জরুরি। ইসলামী ছাত্রশিবির আশা করে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মতামত গ্রহণ করে সুষ্ঠু ছাত্র সংসদ নির্বাচনের লক্ষ্যে সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ এবং তফসিল ঘোষণা করবে।

পবিপ্রবি ছাত্রদলের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম রাতুল বলেন, ‘আমরা ছাত্র সংসদ নির্বাচন চাই, বাকিটা প্রশাসনের উপর নির্ভর করছ।’

পবিপ্রবির অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের সাথে এ বিষয়ের কথা উল্লেখ করে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, তিনি জরুরি কাজে ঢাকায় ব্যস্ত আছেন এবং এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়র রেজিস্ট্রারের সাথে সাক্ষাৎ করার পরামর্শ দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. ইকতিয়ার উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রশাসন এ বিষয়ে এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি এবং কোনো প্রক্রিয়া অবলম্বন করেছে বলে আমার জানা নেই। আমি উপাচার্যের আদেশে মূলত কাজ করে থাকি আমাকে উপাচার্য মহোদয় আদেশ দিলেই আমি এ বিষয়ে কার্যক্রম শুরু করব।’


রাউজান কাঁঠালভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খসে পড়ছে পলেস্তার

ঝুঁকিতে শিক্ষার্থীরা
রাউজান উপজেলার ১১নং পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাঁঠালভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাউজান (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

রাউজানের পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের কাঁঠালভাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জরাজীর্ণ ভবনে বসে ক্লাস করছে। ১৯৬৬ সালে নির্মিত এই বিদ্যালয় ভবনটির পলেস্তারা খসে পড়ে শিক্ষার্থীদের মাথার ওপর। বিদ্যালয়টি পরিদর্শনকালে দেখা যায় পিলারগুলো ও দেওয়ালে ফাটল সৃষ্টি হয়েছে। ২২০ জন শিক্ষার্থী ও ৭ শিক্ষক নিয়ে থাকা ৫৯ বছরের পুরোনো এই বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবনটির পাশে অপর একটি ভবন রয়েছে তিন কক্ষবিশিষ্ট। এই ভবনের একটি কক্ষে বসেন শিক্ষকরা। অপর দুটি কক্ষে বসে পাঠ নেয় দুটি শ্রেণির শিক্ষার্থীরা। এখানে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গা না থাকায় অবশিষ্ট শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিতে হয় আগের পুরোনো জরাজীর্ণ ভবনে। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বসার জায়গা না থাকায় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও বাধ্য হয়ে শিক্ষার্থীদের সেখানে বসিয়ে ক্লাস নিতে হচ্ছে। শিক্ষার্থীরা বলেছে ক্লাস চলাকালীন ছাদ থেকে বালু খসে পড়ে তাদের মাথার ওপর ও চোখে-মুখে।’

কাঁঠালভাঙ্গা এই বিদ্যালয়টির মতো এই উপজেলার আরও বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়েও রয়েছে শিক্ষার্থীদের বসার জায়গার সংকট। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ সংকটে থাকা বিদ্যালয়গুলো নতুন নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল। কিছু কিছু নতুন ভবনের কাজ শেষ হলেও এখনো অন্তত ২০টি বিদ্যালয়ের ভবন অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নুরনবী ও উপজেলা প্রকৌশলী আবুল কালাম, বলেন কয়েকটি ভবন নির্মাণ করা যাচ্ছে না জমি-সংক্রান্ত বিরোধ থাকার কারণে। অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে থাকা ভবনগুলো নির্মাণের দায়িত্ব পেয়েছিল পতিত সরকারের আমলে আওয়ামীপন্থি ঠিকাদাররা। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে সেসব ঠিকাদার এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেলে নির্মাণ কাজে স্থবিরতা সৃষ্টি হয়। পরে প্রশাসন উদ্যোগ নিয়ে বিকল্প ব্যবস্থায় ভবনগুলোর নির্মাণকাজ শেষ করার কাজ করছে। ইতোমধ্যে কিছু ভবনের কাজ শেষ হয়েছে।


বিনামূল্যে পাঠ্যবই বিতরণে ৪৪৫ কোটি টাকার প্রস্তাব অনুমোদন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) দাখিল ও কারিগরির ৬ষ্ঠ শ্রেণি, ৭ম শ্রেণি ও ৮ম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার। এই কাজটি পেয়েছে মোট ২৯৮টি প্রতিষ্ঠান, এতে ব্যয় হবে ৪৪৪ কোটি ৮০ লাখ ৮৭ হাজার ৬৬১ টাকা।

বুধবার (২২ অক্টোবর) ভার্চুয়ালি অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৬ষ্ঠ শ্রেণি, দাখিল ৬ষ্ঠ শ্রেণি ও কারিগরি ৬ষ্ঠ শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ৯৮টি দরপত্রের ৪ কোটি ৩৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৮১ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৭৭টি প্রতিষ্ঠান৷ এতে মোট ব্যয় হবে ১৩৭ কোটি ৮৭ লাখ ১৯ হাজার ৯৫০ টাকা।

মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৭ম শ্রেণি, দাখিল ৭ম শ্রেণি ও কারিগরি ৭ম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ১০০টি দরপত্রের মোট ৪ কোটি ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৯২ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৯১টি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় হবে ১৫০ কোটি ০১ লাখ ৫৫ হাজার ৬১৪ টাকা৷

এছাড়া বৈঠকে একই বিভাগে অপর এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন) ৮ম শ্রেণি, দাখিল ৮ম শ্রেণি ও কারিগরি ৮ম শ্রেণির বিনামূল্যে বিতরণের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকার৷

সুপারিশকৃত দরদাতা প্রতিষ্ঠান হলো ১০০টি দরপত্রের মোট ৪ কোটি ০২ লাখ ৩৪ হাজার ৬৯৮ কপি পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের নিমিত্ত ৯০টি প্রতিষ্ঠান। এতে ব্যয় হবে ১৫৬ কোটি ৯২ লাখ ১২ হাজার ০৯৭ টাকা।


মন্ত্রণালয়ে গেলেন ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের প্রতিনিধি দল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

অনুদানভুক্ত ও অনুদানবিহীন সব স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনরত ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ১৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠকে যোগ দিয়েছেন।

বুধবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে তারা শিক্ষাভবন মোড়ে দিয়ে সচিবালয় অভিমুখে যান । প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন সংগঠনের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান এবং সদস্য সচিব মাওলানা মো. আল আমিন।

জানা গেছে, প্রতিনিধি দলে নীলফামারী, চট্টগ্রাম, বগুড়া, ভোলা, নেত্রকোনা, পটুয়াখালী, ময়মনসিংহ, পিরোজপুর, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, বরগুনা, সাতক্ষীরা ও গোপালগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলার শিক্ষক নেতারা অংশ নিয়েছেন।

এর আগে সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রার চেষ্টা করলে পুলিশ প্রেস ক্লাবের সামনে ব্যারিকেড দিয়ে তাদের আটকে দেয়। সরেজমিনে দেখা যায়, সেখানে পুলিশ সদস্য ও শিক্ষকরা মুখোমুখি অবস্থানে ছিলেন। এ সময় জলকামান ও রায়ট কার রাখা হয়। পদযাত্রা আটকে দেওয়ায় প্রেস ক্লাব থেকে পল্টনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে সোমবার (২০ অক্টোবর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে চলমান অবস্থান ধর্মঘট থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদ্রাসা শিক্ষক ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান কাজী মোখলেছুর রহমান ঘোষণা দেন— সরকার তাদের দাবি না মানলে ২২ অক্টোবর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করা হবে।

শিক্ষকরা দাবি করেছেন, চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারির জাতীয়করণের ঘোষণার দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। পাশাপাশি, এমপিওভুক্তির লক্ষ্যে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে প্রেরিত ১ হাজার ৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ফাইল দ্রুত অনুমোদন দিতে হবে।

অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে— অনুদানবিহীন স্বীকৃত ইবতেদায়ী মাদ্রাসাগুলোর এমপিও আবেদনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো প্রাক-প্রাথমিক পদ সৃষ্টি এবং ইবতেদায়ী মাদ্রাসার জন্য আলাদা অধিদপ্তর স্থাপন।


প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করছে গুড নেইবারস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সালাহউদ্দিন শুভ, মৌলভীবাজার

একজন শিক্ষার্থী তখনই সাফল্যের শেখরে পৌঁছাতে পারে, যখন শিক্ষক তাকে সঠিক পথে পরিচালিত করেন, অভিভাবক তাকে উৎসাহ দেন, আর সে নিজে আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে। সে পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে মঙ্গলবার ইউনেস্কো হামদান প্রকল্পের আয়োজনে গুড নেইবারস বাংলাদেশ মৌলভীবাজার কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের সহ‌যোগিতায় শিক্ষক, ছাত্র’ অভিভাবক’ সমন্বয় সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

মৌলভীবাজার সিডিপির প্রকল্প ব্যবস্থাপক এন্ড্রিকো মণ্ডলের সভাপতিত্বে ও শিক্ষক নীহার কান্তি দেবের সঞ্চালনায় আমন্ত্রীত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মীর আব্দুল্লাহ আল মামুন ও সিডিপি চেয়ারপারসন বিলকিস বেগম।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ইউনেস্কো হামাদান প্রকল্পের ফ্যাসিলিটেটর মো. ওলিউল্লাহ, শিক্ষক শান্ত কুমার সিংহ, অনামিকা সিনহা, অভিভাবক মনজুর আহমেদ জুবেল, তাসনিমা সুলতানা, শিক্ষার্থী স্নেহা সিনহা, ইকবাল আহমেদ প্রমুখ।

সভায় বক্তারা বলেন, আজকের (মঙ্গলবার) এই সেমিনারের মূল উদ্দেশ্য হলো- শিক্ষার তিনটি প্রধান পক্ষ-অভিভাবক, ছাত্র এবং শিক্ষক- এই তিন পক্ষের মধ্যে একটি দৃঢ় সমন্বয় গড়ে তোলা। এ সময় ২৭০ জন অভিভাবক, ছাত্র, শিক্ষক সমন্বয় সে‌মিনারে উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য- গুড নেইবারস বাংলাদেশ তার শিক্ষা কার্যক্রম সম্প্রসারণ ও শক্তিশালী করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিটি শিশুর উচ্চ মানের শিক্ষা এবং তাদের পূর্ণ সম্ভাবনায় পৌঁছানোর সুযোগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গুড নেইবারস বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। গুড নেইবারস হলো- একটি আন্তর্জাতিক মানবিক ও উন্নয়নমূলক বেসরকারি সংস্থা যা জাতিসংঘের অর্থনৈতিক ও সামাজিক কাউন্সিলে (ইউএন ইকোসক) জেনারেল কনসালটেটিভ স্ট্যাটাসে সদস্যপদ রয়েছে।

গুড নেইবারস বাংলাদেশ, ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠিত, শিশু সুরক্ষা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, নারীর ক্ষমতায়ন, আয়বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, ডিআরআর, এবং রোহিঙ্গা জরুরি অবস্থার জন্য ১৩টি জেলায় ১৭টি কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিডিপি) এবং ৫টি বিশেষ প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করছে। গুড নেইবারস সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষায় অবদানের জন্য ২০০৭ সালে এমডিজি-২ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছে।


প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের ঝরে পড়া রোধে ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মধুপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের ঝরে পড়া রোধে আনন্দে লেখাপড়া নিশ্চিত করতে ব্যাতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে জেলা প্রশাসক। ১ শত ৬০ টি বিদ্যালয়ে ১টি করে প্লে-গ্রাউন্ড করা হবে। দোলনা স্লিপার, ব্যালেন্সার, বাসকেট বল, প্রজাপতি ফটো সেশন পয়েন্ট, রোপ ল্যাডার ও বাংলাদেশের মানচিত্র সংবলিত ম্যুরাল নির্মাণ করা হচ্ছে।

‘বিশ্বকে বদলে দিতে, বিকশিত হই আনন্দের সাথে’ - এই প্রতিপাদ্যে টাঙ্গাইলের ১২টি উপজেলায় ১৬০ টি বিদ্যালয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুদের আনন্দের সাথে লেখাপড়া নিশ্চিত করতে এবং স্কুল থেকে শিশুদের ঝরে পড়া রোধে এমন ব্যতিক্রমী উদ্যাগ নিয়েছে টাঙ্গাইলের জেরা প্রশাসক শরীফা হক।

মঙ্গলবার টাঙ্গাইল সদরের খাগজানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্লে গ্রাউন্ডের শুভ উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক শরীফা হক।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) সঞ্জয় কুমার মহন্ত, টাঙ্গাইল পৌরসভার সিইও আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেওয়ান আসিফ পেলে, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. সাহাব উদ্দিন, জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক শরীফা হক সাংবাদিকদের জানান, একটি জাতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হচ্ছে শিশুরা। আর তাই পৃথিবীর যা কিছু সুন্দর, সত্য এবং শুদ্ধ তার মধ্যে দিয়ে শিশুদের বড় করে তোলা আমাদের দায়িত্ব। শিশুদের সর্ব্বোচ বিকাশ ঘটে তখনই যখন তারা আনন্দের সাথে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়।

তিনি বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে বেশীরভাগ শিশু সুষ্ঠু বিকাশের উপযুক্ত পরিবেশ থেকে বঞ্চিত। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে শিশুদের খেলাধুলার পর্যাপ্ত সুযোগ রয়েছে। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর শিশুরাও যেন আমাদের সীমিত সামর্থ্যের সবটুকু দিয়ে আনন্দে বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়।

আমার বিশ্বাস আমরা যদি শিশুদের প্রতি একটু যত্নশীল হই, তারা বিকশিত হবে আদর্শ, কর্মক্ষম, সুযোগ্য সুনাগরিক হিসেবে। সেই সুনাগরিক যারা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, সমাজের প্রতি দায়িত্বশীল, পরিবেশ সচেতন এবং মানবিক মূল্যবোধ সম্পন্ন মানুষ।

তিনি বলেন, আনন্দের সাথে শিশুদের শিক্ষার সুযোগ নিশ্চিত করতে পারলে আক্ষরিক অর্থেই তারা আমাদের সম্পদ হয়ে উঠবে। এই শিশুরাই একসময় এদেশের প্রতিটি সেক্টরে অবদান রাখবে, দেশকে উন্নতির শিখরে নিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করতে স্কুলগুলোতে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন তিনি। এর আগে তিনি জেলার স্কুলগুলোতে দৃষ্টিনন্দন গাছের রোপণ কার্যক্রম করেছে।


বাকৃবিতে ১৫তম হল হিসেবে যাত্রা করল 'বেগম খালেদা জিয়া হল'

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাকৃবি প্রতিনিধি

নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট সমাধানে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) নবনির্মিত ‘বেগম খালেদা জিয়া হল’ এর উদ্বোধন হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫তম হল হিসেবে আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করেছে হলটি। গত সোমবার সন্ধ্যায় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের শুরুতে হলটির নাম ফলক উন্মোচন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।

হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. আবদুল কাদেরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, ডিন পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার, প্রভোস্ট পরিষদের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রুহুল আমিন, পরিকল্পনা ও উন্নয়ন শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোশাররফ উদ্দীন ভূঞা, কোষাধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. হুমায়ূন কবির, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল আলীম এবং রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ ড. মো. হেলাল উদ্দীন।

অনুষ্ঠানে বিভিন্ন হলের হাউস টিউটর, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও নবনির্মিত হলের নারী শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১০ তলা বিশিষ্ট হলটির একটি ব্লকের নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়েছে। আংশিক নির্মাণ শেষে প্রথম দফায় ৩৭৫ জন ছাত্রীকে আবাসন বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, যার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে ৪৪টি কক্ষ। নির্মাণকাজ সম্পূর্ণ হলে হলটিতে মোট ১২০০ জন শিক্ষার্থী থাকার সুযোগ পাবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, আজকের এই দিন বাকৃবির ইতিহাসে স্মরণীয় একটি দিন কারণ ‘বেগম খালেদা জিয়া হল’ এমন একজন মহীয়সী ব্যক্তির নামে নামকরণ করা হয়েছে, যিনি ঐক্যের প্রতীক এবং সত্যিকার অর্থে তিনি একজন অনুসরণীয়, অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। আমরা সবাই কায়মনোবাক্যে উনার সুস্বাস্থ্য এবং দীর্ঘায়ুর জন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করি এবং বাংলাদেশের ঘরে ঘরে উনার মত মহিয়সী নারী জন্মগ্রহণ করুক এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করি।

তাছাড়া ‘বেগম খালেদা জিয়া হল’ এর শিক্ষার্থীরা মেধা ও মননশীলতায় অনন্য নজির সৃষ্টি করবে বলেও উপাচার্য আশা প্রকাশ করেন।


প্রতিদিনের জীবনযাত্রার জন্য দরকারি ফিন্যান্স বিষয়ে বিনামূল্যে কোর্স চালু করলো টেন মিনিট স্কুল ও বিকাশ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রতিদিনের লেনদেন, আয়-ব্যয় এর পরিকল্পনা, সঞ্চয়, ঋণ, বিনিয়োগ, বিমা, জরুরি তহবিল ব্যবস্থাপনা সহ আর্থিক লেনদেনে নিরাপদ থাকার উপায় জানাতে বিনামূল্যে বিশেষ কোর্স চালু করেছে অনলাইন শিক্ষাভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুল ও দেশের বৃহত্তম মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান বিকাশ। মোবাইল ভিত্তিক আর্থিক লেনদেনের এই যুগে সব শ্রেণির মানুষ বিশেষ করে তরুণদের আর্থিক ব্যবস্থাপনায় আরও দক্ষ, সচেতন এবং নিরাপদ করে তুলতে পাঁচটি মডিউলে মোট ২৫টি শিক্ষামূলক ভিডিও নিয়ে কোর্সটি চালু করেছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

উন্নত বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও ডিজিটাল লেনদেন বাড়ছে। মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস) সহ বিভিন্ন ধরনের ডিজিটাল আর্থিক সেবা ব্যবহার করার মাধ্যমে ইতোমধ্যে একটা অভ্যাসগত পরিবর্তনও শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে ডিজিটাল লেনদেন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের হার বেশি। ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের ক্যাশবিহীন অভিযাত্রায় জরুরি হয়ে পড়েছে ডিজিটাল আর্থিক ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে জানা। প্রযুক্তি ভিত্তিক লেনদেনে তৈরি থাকতে ছোট ছোট পরামর্শ এবং মৌলিক তথ্যে সাজানো হয়েছে কোর্সগুলোকে।

সম্প্রতি, টেন মিনিট স্কুল এর ফেসবুক পেজে লাইভ ইভেন্টে ‘মানি জ্ঞানী: ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল মাস্টারি’ কোর্সটির উদ্বোধন করা হয়। ‘টাকা, লেনদেন ও আয়-ব্যয় এর হাতেখড়ি’, ‘নিজের জন্য একটুখানি পার্সোনাল ফিন্যান্স’, ‘ডিজিটাল জগতে আর্থিক লেনদেন’, ‘ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সিকিউরিটি’ এবং ‘সুনাগরিকদের জন্য এডভান্সড ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি’ – এই পাঁচটি মডিউলের কোর্স প্রশিক্ষক হিসেবে আছে আয়মান সাদিক সহ টেন মিনিট স্কুল ও বিকাশ এর এক্সপার্টরা। ভিডিও সেশনগুলোর মাধ্যমে জানার পর কতটা জানা হলো তা যাচাইয়ের জন্য রয়েছে সহজ কিছু প্রশ্ন-উত্তর পর্ব। সম্পূর্ণ ফ্রি এই কোর্সটি শেষ করার পর অংশগ্রহণকারীদের জন্য রয়েছে ডিজিটাল সার্টিফিকেট।

কোর্সটিতে অংশ নিতে চাইলে টেন মিনিট স্কুল এর ওয়েবসাইট থেকে অথবা সরাসরি এই লিংকে https://tinyurl.com/yc6rh6t3 ক্লিক করে ‘ফ্রি-তে ভর্তি হোন’ বাটনটিতে ট্যাপ করতে হবে। এখানে মোবাইল নাম্বার বা ইমেইল আইডি দিয়ে ওটিপি বসিয়ে সাবমিট করতে হবে। এরপর আগ্রহী শিক্ষার্থীর নাম, পাসওয়ার্ড বসিয়ে নিশ্চিত করলেই শিক্ষার্থীরা কোর্সটিতে অংশ নিতে পারবেন।

টাকার ইতিহাস থেকে শুরু করে ক্যাশ টাকা ও ডিজিটাল টাকার ব্যবহার, সুবিধা-অসুবিধা ও গুরুত্ব নিয়ে তৈরি করা হয়েছে ‘টাকা, লেনদেন ও আয়-ব্যয় এর হাতেখড়ি’ মডিউলটি। ‘নিজের জন্য একটুখানি পার্সোনাল ফিন্যান্স’ মডিউলে শেখানো হয় ব্যক্তিগত অর্থায়ন অর্থাৎ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে খরচের পরিকল্পনা, সঞ্চয়, লোন ও বিনিয়োগ করা বিষয়ে। প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ডিজিটাল পদ্ধতিতে সহজে, নিরাপদে ও তাৎক্ষণিক টাকা লেনদেন করা যায়। ডিজিটাল লেনদেনে অভ্যস্ততা ও এর মাধ্যমে খুব সহজেই প্রতিদিনকার লেনদেন সম্পন্ন করার বিষয়গুলো শেখানো হবে ‘ডিজিটাল জগতে আর্থিক লেনদেন’ মডিউলে।

একজন দায়িত্বশীল নাগরিক হিসেবে দেশের বৃহত্তর আর্থিক ব্যবস্থায় অংশ নিতে সাহায্য করবে ‘সুনাগরিকদের জন্য এডভান্সড ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি’ মডিউলটি। এখানে ট্যাক্স, ইমার্জেন্সি ফান্ড, মুদ্রাস্ফীতি, বিমা, শেয়ার বাজার বা বন্ডের মতো উচ্চতর বিনিয়োগের গভীর দিক এবং দেশের আর্থিক নীতি কীভাবে অর্থনীতিকে প্রভাবিত করে এসব বিষয়ে আলোকপাত করা হবে। তবে ডিজিটাল মাধ্যমে টাকা লেনদেনের সময় নিজেকে সুরক্ষিত রাখা অত্যন্ত জরুরি। তাই ‘ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল সিকিউরিটি’ মডিউলটিতে শেখানো হবে কীভাবে প্রতারকদের হাত থেকে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট, মোবাইল ওয়ালেট এবং ব্যক্তিগত আর্থিক তথ্যগুলো নিরাপদে রাখা যায়।

বিকাশ তার যাত্রা শুরুর সময় থেকেই নতুন প্রজন্মকে আলোকিত করতে বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞান, দক্ষতা ও সচেতনতা বাড়াতে কাজ করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সহ সকলকে ক্যাশবিহীন ডিজিটাল আর্থিক জীবনযাত্রায় প্রস্তুত করতেই টেন মিনিট স্কুল-এর সাথে যৌথভাবে ডিজিটাল ফিন্যান্সিয়াল লিটারেসি বিষয়ক এই কোর্সটি চালু করছে বিকাশ।


banner close