সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বেসরকারি মাধ্যমিক ও নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পর কলেজেরও ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১০ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন সরকারি ও বেসরকারি কলেজের শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকবে। ৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব খোদেজা আক্তারের সই করা অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়। এর আগে ১১ থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত মোট ১৫ দিন মাধ্যমিক স্তরে শ্রেণি কার্যক্রম চালু থাকার কথা জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রমজানের প্রথম ১০ দিন নিয়মিত পাঠদান চলবে বলে জানায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
উল্লেখ্য, ওই সময় পবিত্র রমজান মাস থাকবে। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে ১১ বা ১২ মার্চ পবিত্র রমজান মাস শুরু হতে পারে। এর আগে ২০২৪ সালে দেশের সরকারি ও বেসরকারি কলেজের ছুটির তালিকা অনুমোদন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রতিষ্ঠানপ্রধানের তিন দিনের সংরক্ষিত ছুটিসহ বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে মোট ৭১ দিন বন্ধ থাকবে এসব প্রতিষ্ঠান।
ছুটির তালিকা অনুযায়ী, পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতর, গ্রীষ্মকালীন অবকাশ, জাতীয় শিশু দিবস, স্বাধীনতা দিবস, ইস্টার সানডেসহ বেশ কয়েকটি সরকারি ছুটির সমন্বয়ে টানা ৩০ দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি থাকবে। এ ছুটি শুরু হবে ১০ মার্চ। চলবে ১৮ এপ্রিল পর্যন্ত।
ঠাকুরগাঁওয়ে খাদ্য বিষক্রিয়ায় ১১ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। এর মধ্যে সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে। হঠাৎ একসঙ্গে শিক্ষার্থীরা অসুস্থ হয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন অভিভাবকরা। বৃহস্পতিবার সকালে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার ভুল্লী কুমারপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে একে একে তাদের হাসপাতালে নিয়ে যায় অভিভাবক ও স্কুল কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, প্রতিদিনের মতো শিক্ষার্থীরা সকালে স্কুলে আসে এবং অ্যাসেম্বলি শেষে ক্লাসে ফিরে যায়। কিছুক্ষণ পরেই একে একে শিক্ষার্থীরা বমি ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হতে থাকে। এতে বিদ্যালয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। প্রথমে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হলেও গুরুতর অবস্থায় সাতজনকে ভর্তি করা হয়।
অসুস্থ শিক্ষার্থীরা জানান, সবাই বিদ্যালয়ের পানি পান করেছিলেন। এরপরেই তারা অসুস্থ বোধ করতে শুরু করেন।
তবে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আনারকলি বেগম এবং প্রধান শিক্ষক মো. ইলিয়াস আলী জানান, মুখরোচক খাবার খাওয়া ও খালি পেটে দীর্ঘ সময় বিদ্যালয়ে থাকার কারণেও এমনটা হতে পারে।
ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ‘অসুস্থ শিক্ষার্থীদের মধ্যে শ্বাসকষ্টের উপসর্গ দেখা গেছে। বর্তমানে তারা চিকিৎসাধীন।’
এ ঘটনায় তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
জাস্টিস ফর অল-এর বার্মা টাস্ক ফোর্স নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল আজ ঢাকার গোল্ডেন টিউলিপ - দ্য গ্র্যান্ডমার্ক হোটেলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সরকারকে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের জন্য একটি সুসংহত, স্বীকৃত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক শিক্ষা কাঠামো গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে।
বক্তারা রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের চলমান চ্যালেন্জগুলো এবং শিক্ষার ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন।
মূল বক্তারা:
-নাদিন মাঞ্জা
সাবেক চেয়ার,মার্কিন যুক্তরোষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (USCIRF)
কো-চেয়ার ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম রাউন্টটেবিল (ওয়াশিংটন,ডিসি);
চেয়ার,ইনস্টিটিউট ফর গ্লোবাল এনগেজমেন্ট(IGE)
-রিচার্ড রিওচ
চেয়ার ইন্টারন্যাশনাল ওয়াকিং গ্রপ অন শ্রীলঙ্কা;
সাবেক মুখপাত্র,অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল;
সহ-প্রতিষ্ঠাতা,বেীদ্ধ হিউম্যানিটারিয়ান প্রজেক্ট
-সামীর হোসেন
প্রতিষ্ঠাতা,পাথফাউন্ডার পলিসি স্ট্র্যাটেজিস (ওয়াশিংটন,ডিসি)
সাবেক নীতিনির্ধারণ পরামর্শক,হোয়াইট হাউস ও মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর (রোহিঙ্গা ও উইঘুর সংকট বিষয়ে)
-ইমাম আব্দুল মালিক মুজাহিদ
চেয়ার,বার্মা টাস্ক ফোর্স ইউএসএ;
প্রেসিডেন্ট,জাস্টিস ফর অল (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা);
পুরস্কারপ্রাপ্ত লেখক ও প্রযোজক;
প্রতিষ্ঠাতা,মুসলিম নেটওয়ার্ক টিভি
এই প্রতিনিধিদল, যেটি বিশিষ্ট আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও নীতিনির্ধারণ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত, কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরে বহু বছরের গবেষণা ও সাম্প্রতিক মাঠ পরিদর্শনের ভিত্তিতে তাদের মূল সুপারিশ উপস্থাপন করে। তারা মাননীয় অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনুসের কাছে একটি আনুষ্ঠানিক স্মারকলিপিতে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ওপর জোর দেয়:
১. রোহিঙ্গা শিক্ষার জন্য একটি একীভূত জাতীয় নীতিমালা নির্দেশনা জারি করা;
২. একটি স্বীকৃত সার্টিফিকেশন ব্যবস্থা প্রবর্তন করা, যা উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের পথ উন্মুক্ত করবে;
৩. মার্কিন মুসলিম ত্রাণ সংস্থাগুলোকে শিক্ষা উদ্যোগে অবদান রাখার সুযোগ দেওয়া, যাতে বিপুল পরিমাণ দাতব্য সম্পদ ও দক্ষতা কাজে লাগানো যায়।
“বাংলাদেশ সরকার ও জনগণ রোহিঙ্গাদের প্রতি যে পরিমাণ সহানুভূতি দেখিয়েছে, তা বিশ্বের আর কোনো দেশ দেখায়নি,” বলেন ইমাম আবদুল মালিক মুজাহিদ, জাস্টিস ফর অল-এর সভাপতি ও বার্মা টাস্ক ফোর্সের চেয়ারম্যান। “এখন সময় এসেছে পরবর্তী সেতু নির্মাণের—শিক্ষা। একটি সুসংহত ও স্বীকৃত শিক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করবে যেন রোহিঙ্গা শিশু, বিশেষ করে মেয়েরা, তাদের ভবিষ্যৎ থেকে বঞ্চিত না হয়।”
প্রতিনিধিদলের অনুসন্ধান ১,০০০ রোহিঙ্গা নারীর ওপর করা জরিপ, শিক্ষাবিদ ও প্রশাসকদের সঙ্গে বিস্তৃত পরামর্শ এবং একাধিক শিবিরে স্কুল পরিদর্শনের ওপর ভিত্তি করে। গবেষণায় দেখা যায়, রোহিঙ্গা স্কুল-যুগের জনসংখ্যার ৫২ শতাংশ নারী হলেও তাদের মধ্যে মাত্র ৩ শতাংশ শিক্ষায় অন্তর্ভুক্ত।
“কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবিরে আমার সফরের সময় আমি এমন পরিবারগুলোর সঙ্গে দেখা করেছি যারা জানে, শিক্ষাই তাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের চাবিকাঠি,” বলেন নাদিন মানজা, যুক্তরাষ্ট্রের কমিশন অন ইন্টারন্যাশনাল রিলিজিয়াস ফ্রিডম (USCIRF)-এর সাবেক চেয়ার। “বাংলাদেশের জন্য শিবিরে শিক্ষা প্রদান কেবল মানবিকতার কাজ নয়—এটি একটি কৌশলগত বিনিয়োগ। অশিক্ষিত প্রজন্ম নির্ভরতা ও অনিরাপত্তা বাড়াবে,কিন্তু শিক্ষিত প্রজন্ম শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উভয় দেশের (বাংলাদেশ ও বার্মা) জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমাধানে অবদান রাখতে পারে।”
“শিক্ষা হলো গণহত্যার ভয়াবহতার মধ্যে বন্দি তরুণদের পুনরুদ্ধারের জীবনরক্ষাকারী পথ,” বলেন প্রতিনিধিদলের সদস্য রিচার্ড রিওচ, যিনি অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল-এর সাবেক মুখপাত্র। “যেভাবে তাদের খাদ্য ও পানির প্রয়োজন, ঠিক তেমনই প্রয়োজন শিক্ষা থেকে পাওয়া মানসিক যত্ন ও দক্ষতা প্রশিক্ষণ। আমরা এ শিক্ষা বিশ্বজুড়ে অর্জন করেছি—শিক্ষাই তাদের নতুন জীবনের পাসপোর্ট। রোহিঙ্গা শিক্ষক ও অভিভাবকদের নিবেদন আমাদের দেখিয়েছে, তাদের সন্তানদের শিক্ষার প্রতি অঙ্গীকারই সেই দৃঢ় মনোবলের প্রতিফলন, যা গণহত্যাও নিভিয়ে দিতে পারেনি।”
প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ সরকারকে ধন্যবাদ জানায়, বিশেষ করে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (RRRC) দপ্তরকে, উন্মুক্ত সংলাপ ও মাঠপরিদর্শনে সহায়তার জন্য। তারা কমিশনার মিজানুর রহমান-এর প্রশংসা করেন, যিনি রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের নেতা, জাতিসংঘ সংস্থা ও এনজিওগুলোর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছেন মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিতের নতুন পথ অনুসন্ধানে।
ইমাম মুজাহিদ বলেন,
“জাস্টিস ফর অল প্রস্তুত আছে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে অংশীদারিত্বে কাজ করতে, যাতে যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ের ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বার্ষিক দানশীলতা রোহিঙ্গা শিক্ষাকে শক্তিশালী করতে কাজে লাগে এবং কোনো শিশুই যেন পিছিয়ে না থাকে।”
জাস্টিস ফর অল – বার্মা টাস্ক ফোর্স সম্পর্কে
জাস্টিস ফর অল একটি যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা, যা বিশ্বব্যাপী সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় কাজ করে। এর বার্মা টাস্ক ফোর্স রোহিঙ্গাদের অধিকারের জন্য নীতি প্রভাব, আইনগত জবাবদিহিতা এবং মানবিক অংশীদারিত্বের মাধ্যমে কাজ করে। গত এক দশকে সংস্থাটি কংগ্রেসে নীতি প্রচার, আইসিসিতে (ICC) মামলা উপস্থাপন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গণহত্যা বন্ধ ও রোহিঙ্গাদের অধিকার ও মর্যাদা রক্ষায় প্রচারণা চালিয়েছে।
আমেরিকান মুসলমানদের সম্পর্কে
আমেরিকায় প্রায় ৫০ লাখ মুসলমান বাস করেন। তাদের রয়েছে ৩,০০০-এর বেশি মসজিদ এবং ৫০০-এর বেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তারা প্রতিবছর যাকাত ও সদকার মাধ্যমে প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার দান করেন।
পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পবিপ্রবি) রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (RTC) ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত প্রশিক্ষণ কোর্সের অংশগ্রহণকারীদের মাঝে সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গত মঙ্গলবার কৃষি অনুষদের কনফারেন্স কক্ষে এ সনদ বিতরণ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (RTC) পরিচালক প্রফেসর ড. মামুন উর রশিদ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আরটিসির ডেপুটি রেজিস্ট্রার মো. বেলাল হোসেন।
অনুষ্ঠানে ‘Machine Learning for Innovation and Optimization in Agri-Food Supply Chain’ এবং ‘Intensive English Program (IEP)’ শীর্ষক দুটি ওপেন কোর্সের শিক্ষক ও শিক্ষার্থী প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে সনদ বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতি প্রফেসর ড. মামুন উর রশিদ বলেন, ‘বর্তমান পৃথিবী প্রযুক্তির সঙ্গে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। মেশিন লার্নিং কোর্সটি যেভাবে সাজানো হয়েছে, তাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষণার্থীরা তাদের একাডেমিক কার্যক্রম ও গবেষণা আরও তরান্বিত করতে পারবে। পাশাপাশি ল্যাংগুয়েজ কোর্সটি শিক্ষার্থীদের ভাষা ও যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধিতেও সহায়ক হবে। ভবিষ্যতে এমন দক্ষতাভিত্তিক কোর্স আরও চালুর প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কৃষি ও খাদ্য সরবরাহ ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের জন্য মেশিন লার্নিং ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার সময়ের দাবি। শিক্ষার্থীদের এই প্রযুক্তিতে দক্ষ করে গড়ে তুললে ভবিষ্যতের কৃষি হবে আরও টেকসই, উদ্ভাবননির্ভর ও প্রতিযোগিতামূলক।’
আয়োজনে কোর্স কো-অর্ডিনেটর প্রফেসর ড. মো. তাকিবুর রহমান, রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. মো. ইকতিয়ার উদ্দিন, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন ও ছাত্রবিষয়ক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো. সুজাহাঙ্গির কবির সরকার, ভাষা ও যোগাযোগ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর বদিউজ্জামান, শিক্ষক সুলতানা জাহান এবং জনসংযোগ ও প্রকাশনা বিভাগের ডেপুটি রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইমাদুল হক প্রিন্সসহ বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
মাত্র ১০ ও ১৬ মাসে পবিত্র কোরআন হিফজ সম্পন্ন করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ঝিনাইদহ আল-কলম হিফয মাদ্রাসার দুই শিক্ষার্থী। তাদের এই অসাধারণ অর্জনের স্বীকৃতি হিসেবে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ পুরস্কার হিসেবে ওমরাহ হজে পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। হিফজ সম্পন্নকারী শিক্ষার্থীরা হলেন মিয়া মোহাম্মদ মোস্তফা (১১) ও তানভীর মাহমুদ ইফাদ (১১)। মিয়া মোহাম্মদ মোস্তফা ঝিনাইদহের আল-কলম হিফয মাদ্রাসার শিক্ষার্থী। তিনি ২০২৪ সালের মে মাসে হিফজ শুরু করেন এবং অসুস্থতা জনিত কারণে চার মাস বিরতি থাকা সত্ত্বেও মাত্র ১০ মাস ১৮ দিনে পুরো কোরআন মুখস্থ সম্পন্ন করেন। তার বাড়ি মাগুরা সদর উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের উপশহর পাড়ায়। পিতা মিয়া মোহাম্মদ হাসান জাকির একজন ব্যবসায়ী। অন্য শিক্ষার্থী তানভীর মাহমুদ ইফাদ একই মাদ্রাসার ছাত্র। তিনি ১৬ মাসে কোরআন হিফজ সম্পন্ন করে সাফল্যের সাথে তা শেষ করেন। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার লক্ষীকোল গ্রামের পিতা কে. এম. তিতুর ছেলে তিনি।
এ উপলক্ষে মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদাণ ও সম্মাননা প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আওয়াল, ইসলামী ফাউন্ডেশনে উপপরিচালক রেজাউল করিম, আল-কলম ফাউন্ডেমনের চেয়ারম্যান শায়খ মুহাম্মদ সাইদুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে পুরো কোরআন হিফজ করা অত্যন্ত কঠিন ও বিরল অর্জন। এই দুই শিক্ষার্থীর অধ্যবসায় ও মনোযোগ অন্য শিক্ষার্থীদের জন্য অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে।
মাদ্রাসার পরিচালক শায়খ মুহাম্মদ সাইদুর রহমানবলেন, ‘তাদের এই অসাধারণ কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ওমরাহ হজে পাঠানো হবেÑযাতে তারা আল্লাহর ঘরে গিয়ে শুকরিয়া আদায় করতে পারে।’ এই অর্জনে শিক্ষার্থীদের পরিবার ও স্থানীয় এলাকাবাসীর মধ্যে আনন্দের জোয়ার বয়ে গেছে।
কুমিল্লার লাকসামে শতবর্ষী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিজরা রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের জায়গা দখলের চেষ্টার প্রতিবাদে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও এলাকাবাসী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে। মঙ্গলবার সকালে কুমিল্লা–চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের বিজরা বাজার এলাকায় এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া মানববন্ধন শেষে অংশগ্রহণকারীরা একটি বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে বিজরা বাজারের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিদ্যালয়টি প্রায় ১৩ শতক জায়গা ব্যবহার করে আসছে, যা বিএস ও আরএস রেকর্ডে বিদ্যালয়ের মালিকানায় রয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি একটি চিহ্নিত ভূমিদস্যু চক্র জায়গাটি দখলের চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ আবুল খায়ের বলেন, প্রায় ৭০ বছর ধরে এই জায়গাটি বিদ্যালয়ের মাঠ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এখানে প্রতিদিন ছাত্র-ছাত্রীরা খেলাধুলা করে। কিছু ভূমিদস্যু যারা ইতোমধ্যে বাজারের অনেক জায়গা দখল করেছে, এখন স্কুলের জায়গায় চোখ দিয়েছে। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি বিদ্যালয়ের জমি যেন কোনোভাবেই দখল না হয়।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি আবুল হোসেন বলেন, এই বিদ্যালয় আমাদের গর্বের প্রতীক। আমি আমার জীবন দিয়েও বিদ্যালয়ের জায়গা রক্ষা করব। কোনো চক্রকে স্কুলের সম্পত্তি দখল করতে দেওয়া হবে না।
অভিভাবক ও স্থানীয় জনসাধারণও এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তারা বলেন, শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে কোনোভাবেই দখলদারদের স্বার্থ হাসিলের সুযোগ দেওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, বিজরা রহমানিয়া চিরসবুজ উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ লাকসাম উপজেলার অন্যতম প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যা দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে আসছে।
ছবি বিকৃত করে ফেসবুকে পোস্ট করা এবং অশালীন মন্তব্য করার অভিযোগে শাহবাগ থানায় সাইবার সুরক্ষা আইনে মামলা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও সহকারী প্রক্টর শেহরীন আমিন ভূঁইয়া (মোনামি)। গতকাল সোমবার দুপুরে শাহবাগ থানায় এ মামলা দায়ের করেন তিনি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক উম্মে সালমা এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমা, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো. জাকারিয়া।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডাকসুর আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক মো. জাকারিয়া ফেসবুকে লিখেছেন, অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাইবার ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। সাইবার ইউনিট আশ্বাস দিয়েছে, পরবর্তী সময় কোনো শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী ছবি বা ভিডিও বিকৃত করাসহ যেকোনো সাইবার বুলিংয়ের শিকার হলে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ব্যবস্থা নেবে।
মামলায় ওই শিক্ষিকার এডিট করা আপত্তিকর ছবি ফেসবুকে দিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করার অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলায় আসামি হিসেবে সাংবাদিক ও অ্যাকটিভিস্ট মুজতবা খন্দকার, লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট মহিউদ্দিন মোহাম্মদ, ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী নিরব হোসাইন ও আশফাক হোসাইনের (ইভান) নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এর বাইরে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদেরও আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহারে শেহরীন আমিন ভূঁইয়া বলেছেন, ‘বিভিন্ন ফেসবুক আইডি থেকে ক্রমাগত আমার ছবি এডিট করে অশালীনভাবে পোস্ট করা হচ্ছে এবং আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ, অশালীন ও মানহানিকর মন্তব্য করা হচ্ছে।’
এ ঘটনায় মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন উল্লেখ করে আসামিদের বিরুদ্ধে সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শেহরীন আমিন ভূঁইয়া।
আন্দোলনের মুখে শর্তসাপেক্ষে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সোমবার সন্ধ্যায় এ তথ্য জানান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।
এস এম মাসুদুল হক বলেন, ‘আমরা আবেদন করা ১ হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির অনুমোদনের জন্য ফাইল প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পাঠিয়েছিলাম। শর্তসাপেক্ষে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্তির অনুমোদন দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়।’
মাসুদুল হক আরও বলেন, ১ হাজার ৮৯টি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার মধ্যে যেগুলো চলতি বছর জারি করা এমপিও নীতিমালার শর্ত পূরণ করেছে, সেগুলোকে এমপিওভুক্ত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগকে। যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে মাদ্রাসাগুলো এমপিওভুক্ত করা হবে।
দেড় হাজারের বেশি অনুদানভুক্ত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির আবেদন গত ৮ থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত গ্রহণ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, দেশে অনুদানভুক্ত ১ হাজার ৫১৯টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা ও সহকারী শিক্ষকেরা তিন হাজার টাকা করে অনুদান পেয়ে থাকেন। এর বাইরে দেশে আরও ৫ হাজার ৯৩২টি স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসা রয়েছে, যেগুলো সরকারি কোনো অনুদান পায় না।
শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এ বছরের শুরুতে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোকে প্রথমে এমপিওভুক্ত করে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়েছিল কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ।
দীর্ঘদিন ধরে জাতীয়করণের দাবি জানিয়ে আসা স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাশিক্ষকেরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন দেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর। এর মধ্যে তাঁদের এক পদযাত্রায় পুলিশ লাঠিপেটা ও জলকামান ব্যবহার করে। বয়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের পিটুনির সে ঘটনা আলোড়ন তোলে। এর একপর্যায়ে গত ২৮ জানুয়ারি ইবতেদায়ি মাদ্রাসাকে পর্যায়ক্রমে জাতীয়করণের ঘোষণা দেন মাদ্রাসা অনুবিভাগের যুগ্ম সচিব এস এম মাসুদুল হক।
গত ২৫ জুন ইবতেদায়ি মাদ্রাসা এমপিওভুক্তির নীতিমালা জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর মোট ছয়টি পদ এমপিওভুক্ত হবে। ইবতেদায়ির প্রধান বেতন পাবেন দশম গ্রেডে আর সাধারণ, বিজ্ঞান ও আরবি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকের বেতন হবে ১৩তম গ্রেডে। আর ক্বারী বা নুরানি বিষয়ের সহকারী শিক্ষকেরা ১৬তম গ্রেডে বেতন পাবেন। আর প্রতিটি ইবতেদায়ি মাদ্রাসার অফিস সহায়ক পদ সৃষ্টি করা হয়েছে, যে পদে নিয়োগপ্রাপ্তরা ২০তম গ্রেডে বেতন পাবেন।
নীতিমালা অনুসারে, মাদ্রাসাগুলোর শিক্ষক পদে এনটিআরসিএর সুপারিশের ভিত্তিতে নিয়োগ হবে। আর নীতিমালায় মাদ্রাসাগুলোর ম্যানেজিং কমিটি গঠনের নির্দেশনা এসেছে। প্রধান শিক্ষক ও অফিস সহায়ক পদে ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে নিয়োগ হবে বলে নীতিমালায় জানানো হয়েছে।
এমপিওভুক্তির জন্য ইবতেদায়ি মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়েছে। একাডেমিক স্বীকৃতি, প্রতিষ্ঠানের জমি, প্রাতিষ্ঠানিক অবকাঠামো, শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সংখ্যা, বার্ষিক পরীক্ষার গড় নম্বর, পরিবেশ ইত্যাদি সূচকে নম্বর নির্ধারণ করে মাদ্রাসাগুলোর গ্রেডিং করা হবে।
নীতিমালায় মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে সাত সদস্যের এমপিও কমিটি গঠন করা হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর মাদ্রাসাগুলোর কাগজপত্র যাচাই করে এমপিও দেবে। প্রথমে মাদ্রাসাগুলোকে এমপিও কোড দেওয়া হবে। শিক্ষক-কর্মচারীরা এমপিওভুক্তির তারিখ থেকে বা এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে শূন্য পদে নিয়োগপ্রাপ্ত হলে যোগদানের তারিখ থেকে এমপিও পাবেন।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত প্রাণীকল্যাণ সংগঠন ‘অ্যানিম্যাল সেভিয়র্স অব বাউ (এএসবি)’- এর ২০২৫-২৬ সেশনের ১০১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ নির্বাহী কমিটি গঠিত হয়েছে।
নবগঠিত ওই কমিটিতে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম ও কোষাধ্যক্ষ নির্বাচিত হয়েছেন একই অনুষদের মাইক্রোবায়োলজি এন্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুল প্রতীক সিদ্দিক। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ভেটেরিনারি অনুষদের ইন্টার্ন শিক্ষার্থী সন্দ্বীপ সাহা এবং গণমাধ্যম ও প্রকাশনা সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন ভেটেরিনারি অনুষদের শিক্ষার্থী মো. আশিকুজ্জামান। গত রবিবার রাত সাড়ে ৯টায় ওই কমিটি প্রকাশ করা হয়। ১০১ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটিতে মোট ৮ জন বিদেশি শিক্ষার্থীও রয়েছেন। কমিটিতে দায়িত্বপ্রাপ্ত অন্যান্যরা হলেন- সহ-সভাপতি আল ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক (চিকিৎসা) মো. আবু বাশেদ সোজাউদ্দৌলা সৈকত, সাংগঠনিক সম্পাদক (রেস্কিউ) মো. জায়েদুল ইসলাম, দপ্তর সম্পাদক মো. আনামুল হক, সহকারী কোষাধ্যক্ষ বিজয় কুন্ডু, ওষুধ বিশ্লেষণ ও যোগাযোগ সম্পাদক কানিজ ফাতেমা বিনতি, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ইউরেকা জোশী, তথ্য ও প্রযুক্তি সম্পাদক হাফসা খাতুন, ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা সম্পাদক আদনান রহমান। এছাড়া কমিটিতে মোট ৫০ জন সদস্য রয়েছেন।
নব নির্বাচিত কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. মাহবুব আলম বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজেদের পড়াশোনার পাশাপাশি যে আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পথপ্রাণী ও মালিকবিহীন পশুপাখির সেবায় এগিয়ে এসেছে, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। আমি বিশ্বাস করি, এই সংগঠন শুধু প্রাণীদের চিকিৎসা বা উদ্ধার কার্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; এটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে করুণা, দায়িত্ববোধ ও বাস্তব অভিজ্ঞতার এক জীবন্ত পাঠশালা হিসেবে কাজ করবে।
ইউনিভার্সিটি অব ইনফরমেশন টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্সেস (ইউআইটিএস)-এর লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস অনুষদের উদ্যোগে ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি., বুধবার দুপুর ০২:০০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাকক্ষে “ফয়জুর রহমান চৌধুরী বৃত্তি ২০২৫” প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস অনুষদের সম্মানিত ডিন জনাব সৈয়দা আফসানা ফেরদৌসী-এর সভাপতিত্বে উক্ত বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আবু হাসান ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউআইটিএস-এর মাননীয় কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সিরাজ উদ্দীন আহমেদ।
এছাড়া ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. মোহাম্মদ ফিরোজ আল মামুন খান, সমাজকর্ম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান জনাব তাহরিনা তানজিম তিথি, ইউআইটিএস রিসার্চ সেন্টারের পরিচালক ড. অরূপ সাহা, ইংরেজি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান জনাব নাঈমা আফরিন এবং অনুষদের অন্যান্য সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের উপস্থিতিতে এই বর্ণাঢ্য ও গুরুগম্ভীর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়।
শিক্ষাবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে আলহাজ্ব সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান-এর প্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখার প্রয়াসে শিক্ষার্থীদের ১৭ ধরনের বৃত্তির সাথে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। এখানে শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষৎ গড়ার পথকে সুগম করতে মরহুম জনাব ফয়জুর রহমান চৌধুরীর সুযোগ্য সন্তানদের প্রেরিত এই বৃত্তি একটি মহৎ ও মানবিক গুণ সম্পন্ন জাতি গঠনের প্রয়াস।
লিবারেল আর্টস অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস অনুষদের ইংরেজি ও সমাজকর্ম বিভাগের মোট ১৪ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে শিক্ষাগত ফলাফল ও শিষ্টাচার মূল্যায়নের ভিত্তিতে মর্যাদাপূর্ণ “ফয়জুর রহমান চৌধুরী বৃত্তি ২০২৫” প্রদান ও শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক জনাব মেহেরাজুর রহমান। বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বাঙ্গিণ উন্নতি ও কল্যাণ কামনা করে অনুষ্ঠানটির সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
জুলাইবিরোধী শক্তির আস্ফালনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। এ সময় জুলাইবিরোধীদের পূর্নাঙ্গ তালিকা করে তাদের শাস্তি নিশ্চিতসহ দুর্নীতির খতিয়ান, দুর্নীতির শ্বেতপত্র এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে। রোববার দুপুর দেড়টা নাগাদ ক্যাম্পাসের বটতলা থেকে একটি মিছিল বের হয়ে প্রধান ফটক হয়ে প্রশাসন ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে শিক্ষার্থীরা।
এ সময় শিক্ষার্থীদের ‘একশন টু একশন, ডাইরেক্ট একশন’, ‘জেগেছে রে জেগেছে, ছাত্রসমাজ জেগেছে’, ‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘দালালদের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে, ডাইরেক্ট একশন’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য নূরউদ্দীন বলেন, এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য পালিয়ে যাওয়া সালামের প্রশাসনের যে প্রক্টর ছিল, ট্রেজারার ছিল, প্রো-ভিসি ছিল তাদের বিরুদ্ধে কোনোপ্রকার আইনানুগ ব্যবস্থা না নিয়ে হাতেগোণা কয়েকজন চুনোপুঁটি যারা সহকারী প্রক্টর ছিল কিংবা কোনো বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ছিল তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ইবি শাখার সাবেক সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, যারা শেখ হাসিনার গণহত্যাকে বৈধতা দিয়েছিল লেখনির মাধ্যমে, টকশোর মাধ্যমে, তাদের সকলকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, গণহত্যার সাথে যারা জড়িতে তাদের বিচারের পাশাপাশি বিগত ষোলো বছরে বিভিন্ন দুর্নীতি ও অন্যায়ের সাথে জড়িতদের যেন শাস্তির আওতায় আনা হয় এমনটা চেয়েছিলাম। সেই তদন্ত কমিটির নাকি একটি রুমও বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। কিন্তু তারা এখনও কেন সেই ফলাফল দিতে পারছে না? তাদের ভয় কিসের? আপনাদের যদি ভয় থাকে তাহলে ক্যাম্পাসে আসার দরকার নাই। যদি আপনাদের গাটস না থাকে তাহলে দায়িত্ব থেকে সরে যান। আপনাদের জায়গায় অন্য কেউ আসবে। দুর্নীতির যে খতিয়ান, দুর্নীতির যে শ্বেতপত্র সেটিও এক সপ্তাহের মধ্যে প্রকাশ করতে হবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগে আজ শনিবার ১ নভেম্বর ২০২৫ইং তারিখে অনুষ্ঠিত হলো “প্রমাণভিত্তিক প্রিসিশন অনকোলজি: শিক্ষা, গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের সমন্বয়” শীর্ষক ফায়ারসাইড আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের মূল আলোচনায় প্রিসিশন অনকোলজির ভবিষ্যৎ, এআই-নির্ভর ক্যান্সার চিকিৎসা, আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং গবেষণাভিত্তিক চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
ফায়ারসাইড আলোচনা সভা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত শিক্ষণীয়। অনকোলজি বিভাগে এআই-ভিত্তিক অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি মেশিন কেনার জন্য ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো বরাদ্দ দেয়া হবে। বিএমইউ-তে একটি ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে, যাতে রোগীরা আধুনিক সেবা পান এবং শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এ বিষয়ে শিগগিরই ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হবে।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হুসাইন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. হান চং তোহ, ডেপুটি সিইও (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপস), ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুর এবং প্রফেসর, ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুল। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রিসিশন অনকোলজির অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে উচ্চমানের ক্যান্সার চিকিৎসা ও গবেষণার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অনকোলজি বিভাগের এমডি ও এফসিপিএস রেসিডেন্টরা তাঁদের কারিকুলাম শেয়ার করেন এবং কেস প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে ‘এআই ইন রেডিওথেরাপি কনটোউরিং (AI in Radiotherapy Contouring)’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন ডা. মাহমুদ হাসান, নওরিন এম ভিশন টিম।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ.এস.এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, বিশ্ব আজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার মধ্যে অন্যতম হলো প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের দ্রুত গতি। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে আমাদের আরও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের মাধ্যমেই এই চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। আপনারা শুধু দক্ষ প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ হিসেবেই নয় বরং সৎ, পেশাদার, দেশপ্রেমিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবেও দেশের সেবা করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বৃহস্পতিবার চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে গেস্টস অব অনার ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন, পুর ও পরিবেশ কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এ.এইচ. রাশেদুল হোসেন, মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের ছাত্র আসহাব লাবিব ও ইইই বিভাগের ২০ ব্যাচের ছাত্রী উম্মে মাবরুরা উমামা।
বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ। এর পরপরই ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক আনন্দ র্যালি রেব করা হয়। র্যালিতে রং-বেরঙের প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন সহকারে চুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম-সংলগ্ন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়। চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১২৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়।
গেস্টস অব অনারের বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, বর্তমানে চুয়েট খুব দ্রুত আধুনিকায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের অনেক বাধা রয়েছে কিন্তু এরপরেও আমরা চুয়েটে আধুনিক গবেষণাগার নির্মাণ ও ডিজিটাল সেবাকে সমুন্নত করছি যাতে স্মার্ট ক্যাম্পাস গঠনের উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে চুয়েটকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিনির্মাণ করতে পারি। আমরা এমন এক শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে জ্ঞান, উদ্ভাবন এবং মানবিকতা একসূত্রে গাঁথা থাকবে।
আনোয়ারা উপজেলার দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সুবিধা তো দূরের কথা, মৌলিক নিরাপদ শ্রেণিকক্ষের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। বিগত পাঁচ বছর ধরে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
গত ৫ বছর আগে পুরোনো সেমিপাকা স্কুলটি ভেঙে নতুন স্কুল ভবন তৈরির কাজ শুরু করে। সেই ভবনের কাজ শুরুর কিছুদিন পরই কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার।
সরেজমিনে ভবন নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের স্তম্ভের কয়েকটি জায়গায় পাইলিং শেষ করা হয়েছে। তবে এই লোহাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে। জম ধরেছে ফেলে রাখা এসব লোহাগুলোতে। এছাড়া আর কোনো কাজ করা হয়নি। স্কুলের পাশে জায়গা না থাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে বেড়িবাঁধের পাশে টিন দিয়ে কয়েকটি রুম করে চালানো হচ্ছে স্কুলের কার্যক্রম।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ‘এই এলাকার গণজনবসতিপূর্ণ এলাকা, প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দাদের এই একটিই স্কুল। আশেপাশে আর স্কুল নেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং স্থানীয় সমস্যার কারণে স্কুলের কাজটি সম্পন্ন হয়নি। যার কারণে এই এলাকার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
জানা যায়, ২০২১ সালে দিকে মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার শেল্টার প্রজেক্ট (এমডিএসপির) আওতায় দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটির বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কাজ শুরু হওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা পাইলিংয়ের কাজ করে যাতে ব্যয় হয় ৯০ লাখ টাকার মতো। এরপর কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। তামান্না আক্তার নামের স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ক্লাসে বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ে, গ্রীষ্মে টিনের গরমে পড়তে পারি না। আমাদের আশেপাশের বন্ধুরা সুন্দর সুন্দর স্কুলে পড়ে আমরাও চাই টিনের স্কুলের পরিবর্তে নতুন একটা স্কুল হোক, যাতে আমরা ভালো করে পড়তে পারি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়নাব বেগম বলেন, এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। ১৯৯৬ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। আগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল ২০২১ সালে স্কুল স্থানান্তরের পর থেকে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ এই টিনের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এ সময় তিনি দ্রুত স্কুলের নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। বিস্ট্রিম প্রকল্পের আওতায় আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হবে। আপাতত অস্থায়ী স্কুলটি সংস্কার করে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা হবে।