এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষার দিন পরীক্ষা শেষ হলে এবং যেদিন পরীক্ষা থাকবে না সেদিন স্বাভাবিক নিয়মেই শ্রেণি কার্যক্রম চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশারের সই করা চিঠিতে আজ মঙ্গলবার এ তথ্য জানানো হয়।
চিঠিতে বলা হয়, আগামী ৩০ জুন চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। যেসব কেন্দ্রে স্কুল ও কলেজ একসঙ্গে রয়েছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শ্রেণি কার্যক্রম পরীক্ষার দিনগুলোতে পরীক্ষা শেষে এবং যেদিন পরীক্ষা নেই, সেদিন চলমান রাখার জন্য বলা হলো।
চিঠিটি সব পরীক্ষাকেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পাঠানো হয়েছে। শ্রেণি কার্যক্রম চলমান রাখতে গিয়ে পাবলিক পরীক্ষায় যেন বিঘ্ন সৃষ্টি না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ বিষয়ে সবাইকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৯টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। এখন চলছে ভোট গণনার প্রস্তুতি। এ নির্বাচনে ভোট হয়েছে ব্যালট পেপারে। গণনা হচ্ছে ওএমআর (অপটিক্যাল মার্ক রিডার) পদ্ধতিতে। ভোট গণনা সরাসরি দেখানো হবে এলইডি স্ক্রিনের মাধ্যমে। এজন্য রয়েছে ১৪টি এলইডি স্ক্রিন।
চাকসু নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, চাকসু নির্বাচনে হাতে লাগানো অমোচনীয় কালি উঠে যাওয়াসহ বিচ্ছিন্ন কিছু অভিযোগ ছাড়া নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে। উৎসবমুখর পরিবেশে ভোটগ্রহণ হয়েছে। বিকেল ৪টা পর্যন্ত ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মো. কামাল উদ্দিন বলেন, খুবই শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর পরিবেশে চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের আগ্রহ-উদ্দীপনা দেখে সত্যি ভালো লাগছে। আমাদের পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সিভিল প্রশাসনের লোকবল রয়েছে। ক্যাম্পাসকে নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা হয়েছে।
দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন, হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনকে ঘিরে বুধবার সকাল থেকেই চবিতে ঈদের উৎসব বিরাজমান। শিক্ষার্থীরা দলে দলে শাটলে ও বাসে এসে সবুজের রাজ্য খ্যাত চবি ক্যাম্পাসে নামছেন। সকাল নয়টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে এখনো চলমান রয়েছে। ভোট প্রদানের পর শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোন হাতে ছবি, ভিডিও নিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠেছেন। তবে এসব আনন্দের অংশ হতে পারেনি ২৪২ জন ভোটার।
দীর্ঘ ৩৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচন এবং হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনের কারণে বুধবার সকাল থেকেই চবি ক্যাম্পাসে উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে। শাটল ট্রেন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে করে দলে দলে শিক্ষার্থীরা ছুটে আসেন সবুজে ঘেরা ক্যাম্পাসে।
সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া ভোটগ্রহণ দুপুর পর্যন্ত উৎসবমুখর পরিবেশে চলতে থাকে। ভোট প্রদান শেষে শিক্ষার্থীরা স্মার্টফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে আনন্দ-উচ্ছ্বাস ভাগাভাগি করেন।
তবে এই আনন্দের অংশ হতে পারেননি ২৪২ জন শিক্ষার্থী, যারা বৈধ ছাত্র হয়েও ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
চাকসু নির্বাচনে এবার ২৭ হাজার ৫০০ ভোটারের মধ্যে ২৪২ জন ভোটার রয়েছে পিএইচডি ও এমফিল গবেষক শিক্ষার্থী। যারা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গেও তারা যুক্ত আছেন। এতে নৈতিকতার দিক থেকে ভোট প্রদান করতে পারবেন না তারা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষক জানান, “চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২৭ হাজার ৫০০ ভোটারের মধ্যে ২৪২ জন পিএইচডি ও এমফিল পর্যায়ের শিক্ষার্থী। নিয়ম অনুযায়ী তারাও এবার ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ফলে এসব শিক্ষকদেরও ভোটার হিসেবে ধরা হয়েছে, যেহেতু তারা এখনো শিক্ষার্থী হিসেবে নিবন্ধিত।
তবে আমি নিজেও নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছি। ভোটকেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তা, হোস্টেল, হল ও প্রবেশপথসহ বিভিন্ন পয়েন্টে শিক্ষকরা দায়িত্ব পালন করছেন। তাই আমি মনে করি, ভোটার তালিকায় নাম থাকলেও আমাদের ভোট প্রদান করা নৈতিক হবে না। এ কারণেই সংশ্লিষ্ট সবাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে আমি বিশ্বাস করি।”
রাজধানীর শাহবাগ মোড় ব্লকেড কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা।
আন্দোলনকারী ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর সদস্যসচিব দেলাওয়ার হোসেন আজিজী বুধবার বলেন, দাবি পূরণ করে প্রজ্ঞাপন জারির জন্য আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছি। এর মধ্যে প্রজ্ঞাপন জারি না হলে দুপুর ১২টায় শাহবাগ মোড় ব্লকেড কর্মসূচি পালনের জন্য রওনা দেবেন তারা।
সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারীকে জমায়েত হতে দেখা গেছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন আন্দোলনরত শিক্ষক-কর্মচারীরা। তবে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হাইকোর্ট মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। পরে সেখানেই অবস্থান নেন তারা। সেখান থেকে রাতে নতুন কর্মসূচির কথা জানান শিক্ষকনেতা দেলাওয়ার হোসেন আজিজী।
মূল বেতনের ২০ শতাংশ (ন্যূনতম ৩ হাজার টাকা) বাড়িভাড়াসহ তিন দফা দাবিতে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা গত রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবরোধ কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। এতে সারা দেশ থেকে আসা বিপুল সংখ্যক শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন। কিন্তু সেখানে বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি তারা। লাঠিপেটা, সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান থেকে পানি ছুড়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ। পরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-কর্মচারীরা। সেখানে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারাও সংহতি জানান।
শিক্ষক-কর্মচারীদের বাকি দুটি দাবি হলো শিক্ষক ও কর্মচারী উভয়ের জন্য চিকিৎসা ভাতা দেড় হাজার টাকা এবং কর্মচারীদের উৎসব ভাতা ৭৫ শতাংশ করা।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, শিক্ষকদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে শতাংশের হিসাবে বাড়িভাড়া দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধপত্র পাঠিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এ বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০ শতাংশ হারে বাড়িভাড়া দিলে ৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা, ১৫ শতাংশ হারে দিলে ২ হাজার ৪৩৯ কোটি, ১০ শতাংশ হারে দিলে ১ হাজার ৭৬৯ কোটি এবং ৫ শতাংশ হারে দিলে ১ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা প্রয়োজন। এই হিসাব অনুযায়ী বাড়িভাড়া দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনার জন্য অনুরোধ করা হয়।
মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষকদের দাবির সঙ্গে একমত মন্ত্রণালয়, আমাদের পক্ষ থেকে সুপারিশ করা হয়েছে; বাকিটা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ওপরই নির্ভর করছে। এক্ষেত্রে আমাদের পক্ষ থেকে আর তেমন কিছু করার নেই।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়ি ভাড়া পাঁচশ টাকা বাড়িয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয় গত পাঁচই আগস্ট। মূলত এই প্রজ্ঞাপন ঘিরেই আবারো আন্দোলনে নামেন শিক্ষকরা।
জারি করা এই প্রজ্ঞাপনকে অপমানজনক উল্লেখ করে মূল বেতনের ২০ শতাংশ বাড়িভাড়া দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে কর্মসূচির ডাক দেয় তারা। যেখানে পুলিশের বাঁধা, লাঠিপেটা, টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে।
শিক্ষকদের এই আন্দোলনে একাত্মতা ঘোষণা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। রাজনৈতিক দলের অনেক নেতাও শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলা-নির্যাতনের নিন্দা জানিয়েছেন। শিক্ষকদের এই আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি বা এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ।
দীর্ঘ ৩৫ বছর পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু), হল ও হোস্টেল সংসদ নির্বাচন আজ। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলবে ভোটগ্রহণ। এবারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ওএমআর ব্যালট পদ্ধতিতে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন জানান, প্রতিটি ব্যালটে থাকবে ২৪ অঙ্কের নিরাপত্তা কোড ও একটি গোপন কোড, যা মেশিনে শনাক্তযোগ্য।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদ ভবনে স্থাপন করা হয়েছে ১৫টি ভোটকেন্দ্র ও ৬১টি ভোটকক্ষ। প্রতিটি ভোটকক্ষে সর্বোচ্চ ৫০০ জন ভোটার ভোট দিতে পারবেন। চাকসুর ২৬টি পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪১৫ জন প্রার্থী, আর হল ও হোস্টেল সংসদের ২৪টি পদের জন্য লড়বেন ৪৯৩ জন। মোট ভোটার সংখ্যা ২৭ হাজার ৫১৬ জন। ভোটাররা পছন্দের প্রার্থীর নামের পাশে বৃত্ত পূরণ করে ভোট দেবেন। একাধিক বৃত্ত পূরণ করলে সেই ভোট বাতিল হবে।
এবারের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে মোট ১৩টি প্যানেল। এর মধ্যে রয়েছে—ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, স্বতন্ত্র, বাম, বৈচিত্র্য ঐক্য, বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র মজলিস, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন, ও সুফীপন্থি শিক্ষার্থীদের ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’।
নির্বাচন ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয় ও আশপাশের এলাকায় গড়ে তোলা হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা বলয়। নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখা, পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিস, রিজার্ভ ও স্ট্রাইকিং ফোর্স, গোয়েন্দা সংস্থা, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট। মাঠে থাকবেন পাঁচজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, ১ হাজার ৫০ জন পুলিশ সদস্য এবং র্যাবের সাইকেল ইউনিটের ৪০ জন সদস্য। প্রয়োজনে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সহায়তাও নেওয়া হতে পারে। প্রত্যেক ভোটারকে ভোট দেওয়ার আগে তিন স্তরের নিরাপত্তা তল্লাশি অতিক্রম করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ড. হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী বলেন, শিক্ষার্থীরা যেন নিরাপদে ও নির্বিঘ্নে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারে, সেজন্য নেওয়া হয়েছে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা। বাইরের কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। সাংবাদিকদের জন্য গোপন ব্যালট কক্ষ ছাড়া ক্যাম্পাসে থাকবে অবাধ প্রবেশাধিকার।
বুধবার ক্যাম্পাসে প্রবেশ করা যাবে তিনটি নির্ধারিত পথ দিয়ে—কাটা পাহাড়, ৩ নম্বর গোডাউন এবং শহীদ মিনারের দক্ষিণের আর্চওয়ে। বৈধ বিশ্ববিদ্যালয় আইডি কার্ড সঙ্গে রাখা বাধ্যতামূলক। প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা ব্যাংক পে-স্লিপ দেখিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন।
ভোটকক্ষে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকার সঙ্গে আইডি যাচাই শেষে ভোটারদের হাতে দেওয়া হবে পাঁচটি ব্যালট পেপার। গোপন কক্ষে নির্ধারিত পেন দিয়ে বৃত্ত পূরণ করতে হবে। নির্বাহী সদস্য পদে সর্বোচ্চ পাঁচটি, হল সংসদে তিনটি ও হোস্টেল সংসদে তিনটি ভোট দেওয়া যাবে। নির্ধারিত সংখ্যার বেশি ভোট দিলে কেবল সংশ্লিষ্ট পদটির ভোট বাতিল হবে।
ভোট শেষ করে ব্যালট বাক্সে ভোট ফেলে বিকল্প পথ দিয়ে ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে হবে, যাতে ভিড় এড়ানো যায়। নির্বাচন কমিশন ভোটারদের ভদ্র আচরণ ও সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছে।
শিক্ষার্থীদের যাতায়াতের সুবিধার্থে শাটল ট্রেন ১১ বার বিশ্ববিদ্যালয় ও নগরীর মধ্যে চলাচল করবে। পাশাপাশি চলবে ৩০টি বাস। চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল সাড়ে ৭টা এবং শেষ ট্রেন রাত ১০টা ১০ মিনিটে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রথম ট্রেন ছাড়বে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে এবং শেষ ট্রেন রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে।
নিউমার্কেট ও ষোলশহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ১০টি বাস ছাড়াও সকাল ১০টায় যুক্ত হবে আরও ৫টি অতিরিক্ত বাস। ক্যাম্পাস থেকে বিকেল ৩টা, ৪টা ও সাড়ে ৫টায় ফিরতি বাস ছেড়ে যাবে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) বাংলাদেশ যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে এবং বাকৃবি চ্যাপ্টারের আয়োজনে ‘ফেস্টিভাল অব ইউথ ২০২৫’-এর অংশ হিসেবে এবং ‘জুলাই আন্দোলনের প্রথম বার্ষিকী’ উপলক্ষে ‘ন্যাশনাল পলিসি কম্পিটিশন ২০২৫’-এর ফাইনাল রাউন্ড প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। গত সোমবার সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল মাকসুদ জায়েদী। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ডিন কাউন্সিলের কনভেনর অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক ড. মো. মতিউর রহমান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বলেন, তারুণ্যের চিন্তা ও ভাবনা আগামী দিনের জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই ধরনের প্রতিযোগিতা তরুণ প্রজন্মকে নীতি, উন্নয়ন ও নেতৃত্ব বিষয়ে নতুনভাবে ভাবতে উদ্বুদ্ধ করে।
এ বছর সারাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন। প্রাথমিকভাবে জমাকৃত ২২টি ধারণাপত্রের মধ্য থেকে ৫টি দলকে ফাইনাল রাউন্ডে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়। দুটি পর্বে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতার প্রথম পর্বে অংশগ্রহণকারী দলগুলো তাদের নীতিগত প্রস্তাবনা ও প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করে। দ্বিতীয় পর্বে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হয় আইডিআরওএফ, প্রথম রানার্স আপ ডেলটা–২১০০ এবং দ্বিতীয় রানার্স আপ বাউ নোভা।
উল্লেখ্য, ‘ন্যাশনাল পলিসি কম্পিটিশন’ দেশের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জাতীয় নীতি, উন্নয়ন ও নেতৃত্ব বিষয়ে গঠনমূলক আলোচনায় সম্পৃক্ত করার একটি অনন্য প্ল্যাটফর্ম। প্রতিযোগিতার মাধ্যমে তরুণ মেধাবীরা জাতীয় নীতিনির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণে অনুপ্রাণিত হবে বলে আয়োজকরা আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ অধ্যাদেশ সংশোধন এবং গতকাল (সোমবার) ঢাকা কলেজে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে রাজধানীর সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেছে কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরা। এতে গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছেন কর্মজীবী ও অফিসগামী মানুষ।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল নিয়ে শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবস্থান নেন। তারা সেখানে ব্যানার-প্ল্যাকার্ড হাতে অধ্যাদেশ সংশোধনের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নতুন ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’ অধ্যাদেশের বর্তমান ধারায় ঢাকা কলেজের ইন্টারমিডিয়েট শাখা বিলুপ্ত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এতে দেশের অন্যতম প্রাচীন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শত বছরের ঐতিহ্য নষ্ট হবে বলে মনে করেন তারা।
এর আগে সোমবার ঢাকা কলেজে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন-২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের পদযাত্রা শুরুর প্রস্তুতির সময় কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে ‘দালাল’ মন্তব্যের অভিযোগে এক শিক্ষার্থীকে শিক্ষকরা ধরে কমনরুমে আটকে রাখেন। খবর পেয়ে অন্য শিক্ষার্থীরা প্রশাসনিক ভবন ঘেরাও করে সহপাঠীকে ছাড়িয়ে আনেন।
এসময় উচ্চ মাধ্যমিকের শিক্ষার্থীরাও স্নাতকের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়ান।
আর একদিন পর বহুল প্রত্যাশিত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের শেষ সময়ে প্রার্থীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন হল থেকে হল, কটেজ ও বিভিন্ন ক্যাম্পাসে। এ সময় লিফলেট, ইশতেহার ও ব্যালট নম্বর নিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে নিজেদের পরিচয় তুলে ধরছেন তারা। শিক্ষার্থীদের নানা প্রতিশ্রুতি দিয়ে নিজেদের ভোট দিতে অনুরোধ করছেন তারা। ক্যাম্পাসজুড়ে একরকম উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি হয়েছে।
প্রার্থীদের দাবি, তারা শিক্ষার্থীদের মৌলিক চাহিদা বাস্তবায়নে অগ্রধিকার দিতে চান। কেউ প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, আবাসন ও যাতায়াত সংকট নিরসনে। আবার কেউ প্রতিশ্রতি দিচ্ছেন, খাবার ও স্বাস্থ্য সেবার মান উন্নয়নে। তবে সকল প্রর্থীদেও একটাই আশা, বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেবে।
এদিকে স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও সুন্দর উপহার দিত্যে প্রস্তুত প্রশাসন ও কমিশন। নির্বাচনে সার্বিক নিরাপত্তা দেয়ায় কমিশন ও প্রশাসনের লক্ষ্য। চাকসু প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মনির উদ্দিন বলেন, সব অভিযোগই নির্বাচন কমিশন খতিয়ে দেখবে।
আসন্ন চাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে এবার একজন ভোটার ভোট দেবেন ৪০টি পদে। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের ২৬টি ও হল সংসদের ১৪টি পদে ভোট দিতে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সর্বোচ্চ ১০ মিনিট। ফলে একজন শিক্ষার্থীকে গড়ে প্রতি ২০ সেকেন্ডে একটি করে ভোট দিতে হবে। পাঁচটি অনুষদ ভবনে ভোটকেন্দ্র থাকবে ১৫টি ও বুথ থাকবে ৭০০টি। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের জন্য আলাদা বুথ থাকবে। তবে পদ বেশি হওয়ায় ভোট দিতে সময় লাগতে পারে। নির্বাচন পরিচালনা কমিটি বলছে, সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে ভোটকেন্দ্রের ভিড় ও শৃঙ্খলা বজায় রাখার স্বার্থে।
নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সূত্রে জানা গেছে, একজন শিক্ষার্থীকে পাঁচটি ব্যালট পেপার দেওয়া হবে। এর মধ্যে চারটিতে থাকবে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। অন্য একটিতে থাকবে হল সংসদের প্রার্থীদের নাম ও ব্যালট নম্বর। এতে ভোটাররা দ্রুত বুঝতে পারবেন কোন ব্যালটে কোনো পদ রয়েছে। ভোট গণনা হবে অপটিক্যাল মার্ক রিডার বা ওএমআর পদ্ধতিতে।
চাকসু নির্বাচনে দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের জন্য পৃথক ভোট কেন্দ্রের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সোমবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ভোটের দিন চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলায় দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীদের ভোট গ্রহণ করা হবে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন জানান, দৃষ্টিহীন শিক্ষার্থীরা সোমবার আমাদের কাছে আলাদা ভোট কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনারের উপস্থিতিতে ভোট দেওয়ার দাবি নিয়ে এসেছিল। আমরা তাদের দাবিটি গ্রহণ করেছি।
তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের দিন প্রতিটি ভোট কক্ষে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। বিদ্যুৎ চলে গেলেও ফুটেজ সংরক্ষিত থাকবে। প্রতি কেন্দ্রে দুটি করে মেডিকেল টিম থাকবে। ১৪ অক্টোবর (আজ) থেকে পরিচয়পত্র ছাড়া কেউ ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবেন না। ভোটের দিনও কেবল পরিচয়পত্র নিয়েই ভোটকেন্দ্রে যাওয়া যাবে।
নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সব প্রার্থীর ডোপ টেস্ট সম্পন্ন করেছি। এটি আমাদের মাদকমুক্ত সমাজ গঠনের প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন। নির্বাচনের দিন শিক্ষার্থীদের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে শাটল ট্রেনের সূচি বাড়ানো হয়েছে, পাশাপাশি অতিরিক্ত বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্বচ্ছ, সুষ্ঠু ও সুন্দর নির্বাচন উপহার দিতে পারব আশা করছি বলেন তিনি।
এদিকে নির্বাচনকে ঘিরে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী প্রস্তুত থাকবে, যারা প্রয়োজনে তিন মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা বাহিনী, বিএনসিসি ও রোভার স্কাউট সদস্যরাও দায়িত্বে থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক হোসেন শহীদ সরওয়ার্দী বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের দুইটি প্রবেশপথে প্রতিদিন টহল দিচ্ছে দুইটি করে টহল টিম। বহিরাগতদের প্রবেশেও কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের ক্ষেত্রে আইডি কার্ড বহন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম যৌথভাবে বহিরাগতদের প্রবেশ ঠেকাতে কাজ করবে। ৫টি ভবনের জন্য আলাদা নিরাপত্তা স্তর নির্ধারণ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণের সময় প্রিসাইডিং অফিসারের অনুমতি ছাড়া কোনো নিরাপত্তাকর্মী কাউকে ভবনে প্রবেশ করতে দেবে না।
আগামী বুধবার অনুষ্ঠিত হবে চাকসু নির্বাচনের ভোট। কেন্দ্রীয় ও হল সংসদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে নয় শতাধিক প্রার্থী। আর মোট ভোটার ২৭ হাজার ৫২১ জন। যার মধ্যে ছাত্রী প্রায় সাড়ে ১১ হাজার। নির্বাচনে চাকসুর ২৬টি পদের বিপরীতে নির্বাচন করবেন ৪১৫ জন। আর ১৪টি হল ও একটি হোস্টেল সংসদের বিভিন্ন পদে ৪৯৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানিয়েছে, ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ১৫ অক্টোবর সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ চাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৯০ সালে। দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আবার ভোট হতে যাচ্ছে।
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের বাড়িতে এখন কিন্ডারগার্ডেন স্কুল। ভৈরবের কৃতি সন্তান জিল্লুর রহমানের জন্মস্থান শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়া এলাকায়। তিনি স্বাধীনতার পর ৫ বার কিশোরগঞ্জ-৬ ( ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসন থেকে সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট তারিখে সাবেক সরকারের পতন ঘটলে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত পালিয়ে যায়। সেই সময়ে দেশে বিশৃঙ্খল অবস্থায় সারাদেশের মতো জিল্লুর রহমানের নিজ বাসভবনটি দুর্বৃত্তরা ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে ক্ষতিসাধন করে। ঘটনার দিন তার বাসভবনে কেউ ছিল না। এমনিতেই তার বাসায় কেউ থাকত না। তবে তিনি ২০০৯ সালে দেশের রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর তার একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন তার আসনে সংসদ সদস্য হন ৪ বার। পাপন বিসিবি সভাপতিও ছিলেন তখন। রাজনৈতিক কারণে পাপন মাঝেমধ্যে ভৈরবের পৈতৃক বাসায় আসা যাওয়া করতেন। মূলত জিল্লুর রহমান ঢাকায় গুলশানের নিজ বাসভবনে থাকতেন রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে। এ কারণে তার পরিবারের সবাই গুলশানের বাসায় বসবাস করতেন। একজন কেয়ারটেকার ভৈরবের বাসভবন দেখাশুনা করত। তার বাসভবনটি আইভি ভবন নামে পরিচিত। তার স্ত্রী মরহুম আইভি রহমানের স্মৃতি স্বরুপ বাসভবনের নাম।
৫ আগস্টের পর পাপনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। অনেকের ধারণা পাপন সপরিবারে বিদেশে পালিয়ে গেছেন। তার ভৈরবের বাসভবনটি ৫ আগস্ট বিকেলে দুর্বত্তরা ভাঙচুর- লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করে ব্যাপক ক্ষতিসাধন করলে প্রায় এক বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল। যদিও তার বংশধর আছে কিন্ত কেউ বাড়িতে যায়নি বা সংস্কার করেনি বাসভবনটি। বাসার প্রধান গেইটটি তালাবদ্ধ থাকত। অনেক উৎসুক মানুষ বাড়ির বাইরে থেকে পরিত্যক্ত বাড়িটি দেখত।
বর্তমানে হঠাৎ এলাকাবাসী ও গণমাধ্যম কর্মীদের চোখে পড়ল তার বাসভবনে কিন্ডারগার্ডেন স্কুল। পরে খবর নিয়ে জানা গেল তার বাসভবনটি সানফ্লাওয়ার কিন্ডারগার্ডেন স্কুল কর্তৃপক্ষকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। জিল্লুর রহমানের বংশধর মরহুম তারা মিয়ার ছেলে নঈম আহমেদ এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পার্টনার। কিন্ডারগার্ডেন স্কুলটির মূল মালিক ভৈরবের প্রবীণ শিক্ষক অধ্যক্ষ আবদুল বাসেত। তার পার্টনারের সহায়তায় বাসভবনটি ভাড়া নেওয়া হয়েছে। তবে নিচতলাটি ভাড়া নিয়ে স্কুল পরিচালনা করা হলেও দুতলা ভাড়া দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে কিন্ডারগার্ডেন মালিক অধ্যক্ষ আবদুল বাসেতের সাথে প্রতিনিধির কথা হলে তিনি বলেন, আমার স্কুলটি ১৯৮৭ সাল প্রতিষ্ঠিত করি। তখন জিল্লুর রহমানের চাচাত ভাই তারা মিয়া আমার পার্টনার ছিল। তিনি মারা গেছেন। এখন তার ছেলে নঈম পার্টনার হিসেবে আমার সাথে আছে। নঈম জিল্লুর রহমানের ওয়ারিশের কারো সাথে আলাপ করে বাড়িটি ভাড়ার ব্যবস্থা করে দেয়। ৫ আগস্টের পর বাসভবনটি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত করে দুর্বৃত্তরা। ভৈরবের কৃতি সন্তান জিল্লুর রহমান ছিলেন অহিংস নেতা। তিনি কারো ক্ষতি করেছেন আমার জানা নেই। বাসভবনটির সংস্কার মেরামত করতে আমার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। এটাকা আমি ভাড়া থেকে কর্তন করে নিব। এভাবেই কথা হয়েছে। তবে আমি নিচতলা ভাড়া নিলেও দুতলা ভাড়া নেইনি। তিনি বলেন বাসভবনটি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় এখন ভাল থাকবে এবং আমিও একটি ভাল বাড়ি পেলাম ভাড়া হিসেবে। এ কারণে আমি বাসভবসটি স্কুলের জন্য ভাড়া নিয়েছি।
স্কুলের পার্টনার নঈম আহমেদের সাথে এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে বক্তব্য নেওয়ার জন্য জিল্লুর রহমানের পরিবারের কাউকে পাওয়া যায়নি। তার দুজন মেয়ে আছে, কিন্ত তারা কোথায় আছে জানা নেই বা তাদের ফোন নাম্বার নেই। এ কারণে তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রশাসনিক অনিয়ম, ক্ষমতার অপব্যবহার, অবৈধ নিয়োগ এবং আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে তীব্র বিতর্কের কেন্দ্রে রয়েছে। প্রিন্সিপাল মঞ্জুয়ারা পারভিনকে অপসারণের পর থেকেই প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশে জটিলতা দেখা দিয়েছে, যা জেলা প্রশাসন ও দুদকের নজরেও এসেছে।
তদন্ত ও অনুসন্ধান সূত্রে জানা যায়, শিক্ষক আলিউল করিম প্রামানিক, রাশেদ-উল-ইসলাম, মিলন, তোতা এবং এক প্রাক্তন সদস্যের নেতৃত্বে একটি প্রভাবশালী মহল পরিকল্পিতভাবে মব তৈরি করে। লক্ষ্য ছিল অধ্যক্ষকে জোরপূর্বক পদত্যাগ করতে বাধ্য করা এবং পরে আলিউল করিম প্রামানিককে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ করানো। অভিযোগ রয়েছে, জোরপূর্বক পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্ত শুরু হয় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে তিন সদস্যের কমিটি দ্বারা। পরে তদন্তের ভার এডিসি (শিক্ষা)-এর কাছে হস্তান্তর করা হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয় রিপোর্ট পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে, তা এখনও কার্যকর হয়নি। দুদক জানিয়েছে, বিষয়টি জেলা প্রশাসনের অধীনে তদন্তাধীন। ২৫ ফেব্রুয়ারি ৩৪৩ নম্বর স্মারক অনুযায়ী, জেলা প্রশাসনকে কেবল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে; রিপোর্ট পাঠানোর নয়। ফলে সভাপতির বক্তব্য ও সরকারি অবস্থান মেলেনি।
মো. রমিজ আলমকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, যিনি একই সঙ্গে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের দায়িত্বও পালন করছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, এতে তদন্তের স্বচ্ছতা প্রশ্নবিদ্ধ। অধ্যক্ষকে কোনো শুনানি দেয়া হয়নি, এবং অভিযোগকারীর তালিকায় কোনো শিক্ষক বা কর্মচারীর নামও নেই।
প্রিন্সিপাল মঞ্জুয়ারা পারভিন বলেছেন, ‘চাকরিজীবনে আমি একটি টাকাও অবৈধভাবে গ্রহণ করিনি। পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদন ছাড়া কোনো আর্থিক সিদ্ধান্ত নেইনি। সকল নিয়োগ ও পদোন্নতি জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে হয়েছে। আমার ছুটির আবেদনও উপেক্ষা করা হয়েছে; সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং বেতন স্থগিত রাখা হয়েছে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুযায়ী, কোনো বিভাগীয় মামলা ১৮০ কার্যদিবসের মধ্যে নিষ্পত্তি না হলে বরখাস্তকৃত শিক্ষক স্বয়ংক্রিয়ভাবে পুনর্বহাল হবেন এবং বেতন-ভাতা পুনরায় প্রদান করা হবে। সরকারি নির্দেশনায় স্পষ্ট বলা হয়েছে- যতই ক্ষমতার খেলাবাজি বা প্রশাসনিক অবহেলা হোক, ন্যায় ও নীতির বিজয় নিশ্চিত। অধ্যক্ষ মঞ্জুয়ারা পারভিন আবেদন করেছেন, কিন্তু সভাপতি বা কর্তৃপক্ষ এখনও পদক্ষেপ নেননি। এটি শুধু একটি ব্যক্তির নয়, পুরো প্রতিষ্ঠানের ন্যায়পরায়ণতার পরীক্ষা।
অর্থনৈতিক অনিয়মের অভিযোগও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে। অধ্যক্ষের নামে ১২টি চেক উত্তোলনের অভিযোগের কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি। ব্যাংক ও হিসাব শাখা সূত্রে জানা যায়, চেকগুলো বেতন ও পাওনাদারদের টাকা বিতরণে ব্যবহৃত হয়েছে; কোনো চেকই অধ্যক্ষ নিজে উত্তোলন করেননি।
অধ্যক্ষ দাবি করেছেন, ২০১২ সালে যোগদানের সময় কলেজের ফান্ড প্রায় ৩.৫ কোটি টাকা ছিল; ২০২৪ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত তা ১৯ কোটি টাকার বেশি হয়েছে। যদি দুর্নীতি হতো, ফান্ড এত বৃদ্ধি পেত কীভাবে?
কলেজের সব আয় অটোমেশন প্রক্রিয়ায় আনা হয়েছে। এতে আত্মসাতের পথ বন্ধ হয়েছে এবং আর্থিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। শিক্ষার মান ও সহশিক্ষা কার্যক্রমে প্রতিষ্ঠানটি রংপুরের শীর্ষে। তবে এই পদক্ষেপই ক্ষুব্ধ করেছে একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীকে, যারা অধ্যক্ষকে সরানোর জন্য ষড়যন্ত্র চালিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষক আলিউল করিম প্রামানিক পূর্বে একাধিকবার শাস্তি পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ঘনিষ্ঠ হিসেবে কলেজের ব্যবস্থাপনায় প্রভাব বিস্তার করছেন। রাশেদ, তোতা ও মিলনসহ তাদের সহযোগীরাও রাজনৈতিক প্রভাব ও প্রশাসনিক ছত্রছায়ায় কার্যক্রম চালাচ্ছেন।
চাকরিচ্যুত কৃষি শিক্ষক আলতাফ হোসেনকে বেআইনি পুনঃনিয়োগ কেন্দ্র করে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ২০০৬ সালে চাকরিচ্যুত হওয়া সত্ত্বেও ২১ মে ২০২৫ তারিখে তাকে পুনঃনিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সভাপতি ডিসি রবিউল ফয়সালের প্রস্তাবে নিয়োগ ও বেতন প্রদানের ফলে হাইকোর্টের আদেশের পরিপন্থী হয়েছে। তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বর্তমানে প্রতিষ্ঠান নিয়ম-শৃঙ্খলা ভঙ্গ, শিক্ষক-কর্মচারীর মধ্যে বিভাজন এবং প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলায় জর্জরিত। অনেক শিক্ষক ক্লাস না নিয়ে অনিয়ম করছেন, পরীক্ষার সন্মানি বিতরণেও বৈষম্যের অভিযোগ উঠেছে। আলিউল করিম প্রামানিক ও সহযোগীরা কিছু সরকারি কর্মকর্তাকে সুবিধা দিয়ে সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করছেন।
প্রভাবশালী গোষ্ঠীর আধিপত্যের কারণে শিক্ষক-কর্মচারী প্রকাশ্যে মুখ খুলতে ভয় পাচ্ছেন। তবে অভিভাবক ও স্থানীয় বিশিষ্টজনরা বলছেন, ‘মঞ্জুয়ারা পারভিনের মতো সৎ ও দক্ষ অধ্যক্ষ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের জন্য অপরিহার্য।’
একই সঙ্গে, শিক্ষার্থীদের অধিকারও ঝুঁকিতে। ক্ষমতার খেলায় পড়ুয়াদের শিক্ষার মান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে- এটি শুধু প্রশাসনিক সমস্যা নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষার নিরাপত্তারও প্রশ্ন উত্থাপন করছে।
রংপুর কালেক্টরেট স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহার শুধুমাত্র একটি প্রতিষ্ঠানের নয়, পুরো শিক্ষাব্যবস্থার জবাবদিহিতার প্রশ্ন তুলে ধরেছে। ঘটনাগুলি প্রমাণ করছে, শক্তি ও পদমর্যাদার খেলায় ন্যায় ও নীতির বিজয় কতটা ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
আগামী ১৬ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) সকাল ১০টায় একযোগে দেশের সব শিক্ষা বোর্ডে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হবে। ফলাফল জানা যাবে সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইট, কেন্দ্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং মোবাইল ফোনের এসএমএসের মাধ্যমে।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. খন্দোকার এহসানুল কবিরের সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ঢাকা, রাজশাহী, কুমিল্লা, যশোর, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট, দিনাজপুর, ময়মনসিংহসহ বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ফলাফল সেদিন সকাল ১০টায় প্রকাশ করা হবে।
শিক্ষার্থীরা www.educationboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের ‘Result’ কর্নারে গিয়ে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের EIIN নম্বর দিয়ে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবে। এছাড়া নির্ধারিত শর্ট কোড 16222–এ SMS পাঠিয়েও ফল জানা যাবে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, শিক্ষা বোর্ড, শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা পত্রিকা অফিসে ফলাফল পাওয়া যাবে না। ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করা যাবে ১৭ অক্টোবর থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত https://rescrutiny.eduboardresults.gov.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে।
ফল প্রকাশ উপলক্ষে একই দিন সকাল ১০টায় মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার সভাকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হবে। সেখানে বাংলাদেশের আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের পক্ষে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের সাংবাদিকরা উপস্থিত থাকার আহ্বান জানানো হয়েছে।
‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি আইন–২০২৫’ দ্রুত বাস্তবায়নের দাবিতে রাজধানীর সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ভবন অভিমুখে পদযাত্রা শুরু করেছেন।
সোমবার (১৩ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে নীলক্ষেত দিয়ে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা শিক্ষা ভবনের দিকে রওনা দিয়েছেন। আর শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচিকে ঘিরে এলাকাজুড়ে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য, প্রস্তুত রাখা হয়েছে জলকামান ও সাঁজোয়া যান।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, সরকার ঘোষিত প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় আইন দ্রুত বাস্তবায়নের কোনো সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ না থাকায় তারা খুব অনিশ্চয়তায় রয়েছেন।
এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা আর কোনো কালক্ষেপণ চাই না। বিশ্ববিদ্যালয় যে মডেলেই হোক, অংশীজনদের মতামতের আলোকে দ্রুত খসড়া হালনাগাদ করে অধ্যাদেশ দিতে হবে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২৬ মার্চ সরকার রাজধানীর সাত সরকারি কলেজকে পৃথক করে নতুন একটি বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের ঘোষণা দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) প্রস্তাবিত নাম নির্ধারণ করে ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি’। কলেজগুলো হলো—ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, মিরপুর বাংলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজ। এই কলেজগুলোর সমন্বয়ে গঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের চূড়ান্ত অধ্যাদেশের দাবিতে আজ পদযাত্রা কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের ৫৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছর ব্যাচটির মোট ১৯৩ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে ৫০ জন শিক্ষার্থী বিশ্বের মোট ৬টি দেশে ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছে।
তন্মধ্যে থাইল্যান্ডে ৩৩, মালয়েশিয়া ১০, জাপান ২, ইন্দোনেশিয়া ৩, জার্মানি ১ ও নেপাল ১ জন ইন্টার্নশিপের সুযোগ পেয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের ১২টি স্থানে এই ইন্টার্নশিপ কার্যক্রম পরিচালিত হবে। গত শুক্রবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম মিলনায়তনে ওই ইন্টার্নশিপ উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যাল লিমিটেডের এগ্রোভেট ও ক্রপ কেয়ার ডিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জয়ন্ত দত্ত গুপ্ত। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের চেয়ারম্যান ও ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভেটেরিনারি অনুষদের সম্মানিত শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে পুরো ইন্টার্নশিপের রোডম্যাপ নিয়ে প্রেজেন্টেশন দেন বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে.এইচ.এম. নাজমুল হুসাইন নাজির।
এ সময় ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান বলেন, আমাদের ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী বিদেশে যাচ্ছে, আগামী বছর এই সংখ্যা ১০০ হবে আশা রাখি। মনে রাখতে হবে সততা, আন্তরিকতা, কঠোর পরিশ্রম এবং সময়মতো উপস্থিতিই হবে প্রকৃত পরিচয়। প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাতে হবে, লগবুক আন্তরিকতার সঙ্গে পূরণ করে তত্ত্বাবধায়কের স্বাক্ষর নিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের মর্যাদা রক্ষায় ভদ্র, যত্নশীল ও পরিশ্রমী থাকতে হবে। বিদেশে বা দেশে, এমন আচরণ করতে হবে যাতে সবাই শ্রদ্ধা করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রদত্ত সুযোগ ও সময় ব্যবহারিকভাবে শেখার সঠিক সময়, এটিই মনে রাখতে হবে।
উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, তোমাদের পাঠ্যক্রমে এখন ইন্টার্নশিপ আছে। আগে ইন্টার্নশিপ বা ফিল্ড ভিজিট কিছুই ছিল না। এখন তোমরা সরকারি খামার, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও গ্রামে গিয়ে বাস্তব অভিজ্ঞতা নিচ্ছো, এটাই শেখার জন্য তোমাদের সুবর্ণ সুযোগ।
১৬ - ১৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের সুকুন অ্যারেনা ইনডোর কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এশিয়ান থ্রোবল প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ বাংলাদেশের সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাব - এসপিএসসি রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
প্রতিযোগিতায় মলোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতের পুরষ ও মহিলা থ্রোবল খেলোয়াড়বৃন্দ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এবারের আসরে পুরুষ নারী উভয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। প্রধান অতিথি হিসেব পুরষ্কার বিতরণ করেন এশিয়ান থ্রোবল ফেডারেশনের সভাপতি ডঃ মুস্তাপা কামাল দাতো ( মলয়েশিয়া) । এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান থ্রোবল ফেডারেশনের সহ সভাপতি ডঃ লতিফ উদ্দিন ( ভারত) ও রেজাউল করীম ( বাংলাদেশ)। রেফারি হিসেবে খেলা পরিচালনা করেন শ্রীলংকার রমেশ মেহরাজ, ফায়াজ মারুফ ও মালয়েশিয়ার সলেহিন।
দাবায় অত্র প্রতিষ্ঠানের মহিলা ক্যান্ডিডেট মাষ্টার ওয়ার্শিয়া খুসবু তিন তিনবার হয়েছে এশিয়ান স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন ।
বাংলাদেশে মহিলা দাবারুদের মধ্যে ওয়ার্শিয়া খুসবু হচ্ছে সর্ব্বোচ্চ রেটেডধারী দাবারু। এদিকে বিশ্ব ক্যাডেট দাবায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের তিন শিক্ষার্থী আজান মাহমুদ, সাফায়াত কিবরিয়া আজান ও সিদরাতুল মুনতাহা এখন কাজাখস্তান অবস্হান করছে। বাংলাদেশ দাবা ফডারেশনের বরাতে জানা গেছে এখন পর্যন্ত আজান মাহমুদ অস্ট্রেলিয়ার বেতিরবেকভ কে ও সাফায়াত কিবরিয়া আজান হারিয়ে দিয়েছে ফ্রান্সের ক্যান্ডিডেট মাষ্টার নিকট ভলেন্টিনকে ও জার্মানির প্রাদিপ হারসিলকে, সিদরাতুল মুনতাহা রুখে দিয়েছে হাঙ্গেরির শক্ত প্রতিপক্ষ মেদভেগি মারিয়াকে ও চাইনিজ তাইপের দাবারু চ্যাং হাসিন তি কে । আগামী ২অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষুদে দাবারুদের এ বিশ্ব দাবা প্রতিযোগিতা চলবে। চলতি বছর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত
জাতীয় স্কুল দলগত দাবা প্রতিযোগিতায় অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের দাবা দল।
এই প্রতিষ্ঠানের দুটি দলই চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে যা বাংলাদেশে দাবার অঙ্গনে বিরল।
সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি, বাড্ডা জোন, ঢাকা মহানগরী আয়োজিত ৫২তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ বালক - বালিকা উভয় বিভাগে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, মালিবাগের হ্যান্ডবল দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। দাবার ৪ টি ক্যাটাগরীর ৩ টিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবারুরা। তার হলেন বালক মধ্যম দলের সায়ান মিরাব হাসান, বালক বড় দলের সিয়াম চৌধুরী ও বালিকা বড় দলের নীলাভা চৌধুরী।
বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহযোগিতায় আয়োজিত উম্মুক্ত কারাতে প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাবের ছেলেমেয়েদের কারাতে দল ৭ টি স্বর্ণ, ৯ টি রৌপ্য ও ১৯ টি ব্রোন্জ পদক জিতে নিয়েছে যেখানে বাংলাদেশ সিতোরিউ কারাতে দো ইউনিয়ন আয়োজিত উক্ত প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে প্রায় এগারোশত কারাতে খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে।
ক্রীড়াঙ্গন ছাড়াও সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়েও নিজ প্রতিষ্ঠানকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের উচ্চ শিখরে । যার ধরাবাহিকতায় অত্র স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী আরিজ আনাস জাতীয় বায়োলজি অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিলিপাইনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে ব্রোন্জ পদক অর্জন করে এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের আমন্ত্রন লাভ করে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠান তথা বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনার জন্য সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইনজ্ঞিনিয়ার জনাব এম এ রশিদ এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের অধ্যক্ষ ও সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাবের সভপতি কর্নেল মোঃ শামসুল আলম, পি এস সি ( অবঃ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলতার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষর্থী সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কোচ ও অভিভাবকবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।