আগামীকাল সোমবার ফের ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে টানা চার ঘণ্টা অবরোধ করার পর আজ রাত ৮টায় শাহবাগ মোড় ছেড়েছে চাকরিতে কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালসহ চার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী এবং চাকরি প্রত্যাশীরা।
এরপর থেকে এই রাস্তায় যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু করে। তার আগে আজ রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে চানখারপুল, সায়েন্সল্যাব এবং বাংলামোটর মোড় ছেড়ে দিয়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে এসে জড়ো হন।
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক নাহিদ ইসলাম বলেন, ক্লাস পরীক্ষা বর্জন করে চলমান ছাত্র ধর্মঘট অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য চলবে। একই সঙ্গে আগামীকালও সারা দেশে ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচি চলবে। আজকে শাহবাগ থেকে বাংলামটর পর্যন্ত অবরোধ গিয়েছে, কালকে ফার্মগেট পর্যন্ত যাবে। আমাদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ছে শহর থেকে শহরে। আগামী দিনে এটা আরও ছড়িয়ে পড়বে। আমরা সংবিধানের সকল নাগরিকের সমান অধিকার আদায়ে লড়াই করছি। আমাদের আদালত দেখালে আমরা সংবিধান দেখাব।
তিনি বলেন, আমাদের আদালতের জন্য অপেক্ষা করার কথা বলা হচ্ছে। আমরা ৫০ বছর অপেক্ষা করছি। আর কত? শিক্ষার্থীদের পিঠ দেওয়ালে লেগে গেছে। হয় কোটা দূর করতে হবে নয়তো পুরো বাংলাদেশকে শতভাগ কোটার আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
চলমান এই সমস্যা সমাধানে লক্ষে আজ সন্ধ্যা ৭টার কিছু পর সরকারের তরফ হতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠকে বসেন আন্দোলনের তিন সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম, হাসনাত আবদুল্লাহ আর সারজিস আলম।
আলোচনার কথা বলে তাদের তুলে নিয়ে গেছে পুলিশ বলে আন্দোলনকারীদের একটি মহল এসময় দাবি করে। আন্দোলনের কর্মী হাসিব আল ইসলাম সে সময় বলেছিলেন, আমাদের আন্দোলনের তিন সমন্বয়ককে প্রশাসন তাদের সঙ্গে কথা বলতে নিয়ে গেছে। উনাদের না নিয়ে আমরা শাহবাগ ছাড়বো না।
আলোচনার নামে যদি আমাদের ভাইদের গ্রেপ্তার করা হয় তাহলে ছাত্র সমাজ এর উপযুক্ত জবাব দেবে। পরে আলোচনা শেষ না করেই পরিস্থিতি ঠাণ্ডা করতে চলে আসতে হয় আন্দোলনকারীদের।
এর আগে, ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রোববার দুপুর থেকে সায়েন্সল্যাব, চানখারপুল আর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন আন্দোলনকারীরা। এতে এই চারটি মোড়ের আশেপাশের সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে।
বেলা ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ ব্যানারে শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করতে শুরু করেন। একই সময়ে চানখারপুল মোড় অবরোধ করেন অমর একুশে হল, ফজলুল হক মুসলিম হল শহীদুল্লাহ্ হলসহ আশেপাশের কলেজের শিক্ষার্থীরা।
আর দুুপুর আড়াইটা থেকে সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করেন ঢাকা কলেজসহ আশেপাশের কলেজের শিক্ষার্থীরা। ৩টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহবাগ মোড় দখল শেষে শিক্ষার্থীদের একটি অংশ ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ের দিকে আসেন এবং চারপাশের রাস্তা বন্ধ করে দিয়ে অবরোধ শুরু করেন।
এ সময় আটকে পড়া যাত্রী ও বাস চালকদের আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, আপনারা যেসব যাত্রী, গাড়িচালক ভাইয়েরা, ভিতর বসে আছেন আপনার এবং আপনার সন্তানের জন্যই আমাদের আন্দোলন। আপনাদের যাদের কোনো কোটা নেই আপনারা সন্তানরা যেন পড়ালেখা করে চাকরি পায় কোনো কোটার কারণে বঞ্চিত না হয় সেজন্যই আমাদের এই আন্দোলন। দয়া করে আমাদের সহযোগিতা করুন। আপনারা ছেলে যখন কোটা না থাকলেও চাকরি পাবে তখনের আনন্দ চিন্তা করে আজকের সামান্য এই কষ্ট সহ্য করুন।
এরপর শিক্ষার্থীরা কয়েক ভাগ হয়ে একটি অংশ মিন্টোরোড মোড়, আরেকটি অংশ পরীবাগ মোড় ও পরবর্তীতে বাংলা মোটরে অবস্থান নেন। এসময় কিছু শিক্ষার্থীদের রাস্তার ওপর ফুটবল, ক্রিকেট, লুডুসহ বিভিন্ন খেলা খেলে সময় পার করতে দেখা গেছে।
এর আগে পূর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে অবস্থান নেন।এতে শিক্ষার্থীরা নিজেদের বিভাগ, হল এবং ইনিস্টিটিউটের ব্যানারে অবস্থানে যোগ দেন। এরপর এই মিছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বর টিএসসি হয়ে শাহবাগ এসে মোড় অবরোধ করেন।
আর বিজ্ঞান অনুষদের হলগুলো তাদের হল থেকে চানখারপুল আর ঢাকা কলেজসহ আশেপাশের কলেজগুলো সেখান থেকে সায়েন্সল্যাব অবরোধ করা হয়। এসময় শিক্ষার্থীরা ‘একাত্তরের পথ ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’; ‘কোটা ছেড়ে কলম ধরো, বাংলা ব্লকেড সফল করো’; ‘দফা এক দাবি এক, কোটা নট কামব্যাক’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
গতকাল শনিবার বিক্ষোভ মিছিল শেষে আন্দোলনকারীদের সমন্বয়করা বাংলা ব্লকেড কর্মসূচির ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতোমধ্যে ঢাকার সায়েন্সল্যাবসহ বিভিন্ন মহাসড়ক, সড়ক অবরোধ করে সেখানে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। তবে আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রথযাত্রা তাদের এই অবরোধ কর্মসূচির আওতামুক্ত থাকবে।
এদিকে আজ দুপুরে গণভবনে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, লেখাপড়া বাদ দিয়ে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে গিয়ে শিক্ষার্থীদের কোটাবিরোধী আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
শেখ হাসিনা বলেন, শিক্ষার্থীরা মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করার আন্দোলন করছে। যারা এর আগে আন্দোলন করেছিল, তারা আগে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় কত পাস করত, এখন কত করছে। এটা সাবজুডিস ম্যাটার, আদালতে বিচারাধীন।
তিনি বলেন, পড়াশোনা বাদ দিয়ে আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে শিক্ষার্থীরা সময় নষ্ট করছে। এ আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা নেই।
কোটা বাতিলের পরিপত্র পুনর্বহালের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের অন্য দাবিগুলো হলো, পরবর্তী সময়ে সরকার কোটাব্যবস্থা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ নিতে চাইলে ২০১৮ সালের পরিপত্র বহাল সাপেক্ষে কমিশন গঠন করে দ্রুত সময়ের মধ্যে সরকারি চাকরিতে সব গ্রেডে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাদ দেওয়া, সংবিধান অনুযায়ী অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কথা বিবেচনা করা, চাকরির নিয়োগ পরীক্ষায় কোটা–সুবিধা একাধিকবার ব্যবহারের সুযোগ বন্ধ করা, কোটায় যোগ্য প্রার্থী না পাওয়া গেলে শূন্য পদগুলোয় মেধা অনুযায়ী নিয়োগ দেওয়া এবং দুর্নীতিমুক্ত, নিরপেক্ষ ও মেধাভিত্তিক আমলাতন্ত্র নিশ্চিত করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।
দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, শিগগিরই সে সমস্যার সমাধান হবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা চৌধুরী রফিকুল আবরার।
মঙ্গলবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানগুলোতে যে অচলাবস্থা চলছে, তা দুঃখজনক। এজন্য মন্ত্রণালয়ও উদ্বিগ্ন। তবে আলোচনা করেই এ সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। শিগগিরই এসব ঘটনার সমাধান হবে।’
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার ফলে শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে। এ ধরনের পরিস্থিতি কারও কাম্য নয়। তবে সবকিছু আলোচনার মাধ্যমে সমাধান হবে।
চলমান সমস্যাগুলো দ্রুততম সময়ে সমাধান করা হবে এবং এক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সব ধরনের সহযোগিতা করবে বলেও আশ্বস্ত করেন উপদেষ্টা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আজ মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) থেকে বৈধ শিক্ষার্থী ব্যতিত কোন বহিরাগত বা অতিথি অবস্থান করতে পারবে না।
ডাকসু ও হল সংসদ নির্বাচন ২০২৫-এর চীফ রিটার্নিং অফিসার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য আজ এক বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশনা প্রত্যাখান করে এবার ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আমতলায় সংবাদ সম্মেলনে ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে সকালে বিভিন্ন হল থেকে শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কে আর মার্কেটে এসে জড়ো হন। এসময় শিক্ষার্থীরা 'রাজপথ ছাড়ি নাই', 'রাজপথ ছাড়বো না', 'প্রশাসনের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে'সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকেন।
শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত ৬ দফা দাবি হলো-
১. অবৈধভাবে হল ভ্যাকেন্টের নির্দেশনা দুপুর ২ টার মধ্যে প্রত্যাহার করে আদেশ তুলে নিতে হবে।
২. হলগুলোতে চলমান সব ধরনের সুবিধা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে হবে।
৩. এই প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উপর শিক্ষকদের মদদে বহিরাগত দিয়ে হামলার দায়ে প্রক্টোরিয়াল বডিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে হবে।
৪. বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দ্বারা ককটেল বিস্ফোরণ, লাইব্রেরি ও স্থাপনা ভাঙচুর এবং দেশীয় অস্ত্র দ্বারা শিক্ষার্থীদের উপর হামলা এবং নারী শিক্ষার্থীদের হেনস্তার ঘটনার জন্য উপাচার্যকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।
৫. হামলার সাথে জড়িত শিক্ষকবৃন্দ: কৃষি অনুষদের আসাদুজ্জামান সরকার স্যার, তোফাজ্জল স্যার, শরীফ আর রাফি স্যার, কামরুজ্জামান স্যার, পশুপালন অনুষদের বজলুর রহমান মোল্যা স্যার, জেনেটিক্সের মুনির স্যার, ডেইরি বিজ্ঞান বিভাগের আশিকুর রহমান স্যার এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
৬. গত ১ মাস ধরে চলমান যে একক কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলন করে আসছি, সেই একক ডিগ্রি অবিলম্বে প্রদান করতে হবে। তিনটি ভিন্ন ডিগ্রি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
শিক্ষার্থীরা জানায়, এই ছয় দফা দাবি দ্রুত মেনে না নিলে পুরো বাকৃবি লকডাউন এবং ব্ল্যাকআউট করে দেয়া হবে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি, তবে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছাড়ছি না।
কম্বাইন্ড ডিগ্রির দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের উপর বহিরাগতদের হামলার পর বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণার সিদ্ধান্তে হল ছাড়তে বাধ্য হচ্ছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) শিক্ষার্থীরা। সকাল ৯ টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) সকাল থেকেই বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে দেখা যায়। ক্যাম্পাসে মোতায়েন রয়েছে র্যাব, পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবি।
তবে হল যারা ছাড়ছেন তারা বেশিরভাগই ছাত্রী। ছেলেদের হল ঘুরে দেখা যায়, তারা হল ছাড়ার বিপক্ষে।
এসময় জুলাই ৩৬ হলের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের পরীক্ষা চলছিল। হঠাৎ করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির সম্মুখীন হবো। নিরাপত্তা সংকটে বাধ্য হয়েই হল ছাড়তে হচ্ছে, তবে আমরা চাই দ্রুতই স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসুক এবং আবার পড়াশোনা শুরু করতে পারি।”
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল পরবর্তী উদ্ভুত পরিস্থিতিতে রাত সাড়ে ৯ ঘটিকায় অনলাইনে অনুষ্ঠিত জরুরী সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয় এবং সকল ছাত্র-ছাত্রীদের (১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯ টার মধ্যে হল ত্যাগের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় বাস্তব অভিজ্ঞতার গুরুত্বকে সামনে রেখে সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিক (ইউএপি)-এর কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগে একটি বিশেষ আইটি কর্মশালার আয়োজন করেছে দেশের অন্যতম বিকাশমান আইটি কোম্পানি ‘সার্ভিসিং২৪’।
সার্ভার, স্টোরেজ, আইটি হার্ডওয়্যার, সাইবার সিকিউরিটি ও নেটওয়ার্কিং এই পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিখাত নিয়ে অনুষ্ঠিত ওয়ার্কশপটিতে সহযোগী আয়োজক হিসেবে ছিল ইউনিভার্সিটি অফ এশিয়া প্যাসিফিক-এর সাইবার সিকিউরিটি ক্লাব-সিএসই।
এই কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে সার্ভিসিং২৪-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) নাসির ফিরোজ বলেন, “বর্তমান যুগে বাস্তবভিত্তিক জ্ঞান অর্জন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সার্ভিসিং২৪ এদেশের তরুণদের যুগোপযোগী আইটি দক্ষতায় দক্ষ করে তুলতে বদ্ধপরিকর। আমরা বিশ্বাস করি- এ ধরনের ওয়ার্কশপ শিক্ষার্থীদের দেশে ও বিদেশে আইটি সেক্টরে অবদান রাখতে এবং তাদের ক্যারিয়ার গড়তে সাহায্য করবে।”
ওয়ার্কশপে সার্ভিসিং২৪-এর অভিজ্ঞ টেকনিক্যাল টিম শিক্ষার্থীদের সামনে আধুনিক সার্ভার প্রযুক্তি, স্টোরেজ সলিউশন এবং নেটওয়ার্কিংয়ের বিভিন্ন দিক হাতে-কলমে উপস্থাপন করে। পাশাপাশি সাইবার সিকিউরিটির সমসাময়িক বিষয়েও গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়। শিক্ষার্থীরা এই আয়োজনের মাধ্যমে শুধু প্রযুক্তিগত দিকই নয়, বরং আইটি ক্যারিয়ার গঠনে প্রয়োজনীয় দক্ষতা, পরিকল্পনা এবং সঠিক দিক নির্ধারণ সম্পর্কেও দিকনির্দেশনা পান।
ওয়ার্কশপ শেষে অংশগ্রহণকারীদের নিয়ে একটি কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় এবং সনদপত্র সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে ইউএপি-এর সিএসই বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ সার্ভিসিং২৪-এর এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
‘সার্ভিসিং২৪’ সম্পর্কে: ‘সার্ভিসিং২৪’ বাংলাদেশের দ্রুত বর্ধমান, আইএসও-সার্টিফাইড এবং সাসটেইনেবিলিটি গুরুত্বারোপ করা একটি আইটি সার্ভিসেস ও টিপিএম প্রোভাইডার। কোম্পানিটি ২০২৩ সাল থেকে টেকসই পদ্ধতিতে ও আস্থার সঙ্গে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে আইটি সেবা দিয়ে আসছে। এক্ষেত্রে ‘সার্ভিসিং২৪’ এর গ্রাহক সন্তুষ্টির হার ৯৯ শতাংশ। কোম্পানিটি পরিবেশবান্ধব উপায়ে দেশের আইটি খাতের টেকসই উন্নয়নে অগ্রগণ্য ও প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি নূরুল ইসলাম সাদ্দাম বলেছেন, বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচন নিয়মিতভাবে করতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে শিক্ষার জায়গা। ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিত ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। প্রতি বছরে নির্দিষ্ট সময় ছাত্র সংসদ নির্বাচন নিয়মিতভাবে করতে হবে।
বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুর দেড়টার দিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে হাফেজে কুরআন সংবর্ধনা অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
সাদ্দাম বলেন, প্রতিটা ক্যাম্পাসে ছাত্র সংসদ নির্বাচন নীতিমালার আলোকে রুটিন মাফিক সম্পন্ন করতে হবে। যেহেতু ছাত্র সংসদ কোন দলীয় বিষয় নয়, নির্বাচনের মাধ্যমে তারা নির্বাচিত হয়ে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি হন। সুতরাং এগুলো নিয়মিতভাবে করার জন্য আহ্বান থাকবে। যে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের নীতিমালা করা হয়নি সেখানে অতিসত্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসি অধীনস্ত তারা একটা কমিটি গঠন করে একটা সাধারণ নীতিমালা প্রণয়ন করুক। বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সেগুলোকে অনুমোদনের মাধ্যমে ছাত্র সংসদ চালু করুক।
উদ্বেগ প্রকাশ করে সেক্রেটারি বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে যেভাবে আমাদের মত প্রকাশে গণতন্ত্রের চর্চার হওয়ার কথা ছিল কার্যত সেটা হয় না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর থেকে ৭১ অব্দি ৩০ টা ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছে। কিন্তু ৭১ পরবর্তী সময় আমরা মাত্র সাত থেকে আটটা নির্বাচন দেখেছি। এ কেমন গণতন্ত্র! স্বাধীনতা পেয়েছে কিন্তু স্বাধীনতা বা সেই মুক্তির স্বাদ আমরা পাইনি। ছাত্র সংসদ আদায় করতে গেলেও আন্দোলন, সংগ্রাম, অনশন, অফিস ঘেরাও এই ধরনের কর্মসূচির মাধ্যমে ছাত্রদের মৌলিক অধিকারগুলো আদায় করতে হচ্ছে। এটা লজ্জাজনক।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়, ইউজিসি ও শিক্ষকদের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতিটি ক্যাম্পাসে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ছাত্র সংসদ নির্বাচনের মাধ্যমে মেধাবী নেতৃত্ব বাছাই হয়ে দেশ, জাতি কল্যাণে ও জাতীয় রাজনীতিতে তারা যেন অবদান রাখতে পারে এ সুব্যবস্থা রাষ্ট্র পরিচালনাকারীরা করবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল সংসদ নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ জন প্রার্থী চূড়ান্তভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।
এর মধ্যে ৭৩ জন প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন এবং একজনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এর আগে মোট ১ হাজার ১০৯টি মনোনয়নপত্র জমা পড়েছিল।
আজ বুধবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রার্থীদের মধ্যে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ৫৯ জন, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হলে ৩১ জন, সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে ৬২ জন, জগন্নাথ হলে ৫৫ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৫৮ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ৭৫ জন, রোকেয়া হলে ৪৫ জন, সূর্যসেন হলে ৭৫ জন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৬০ জন, শামসুন নাহার হলে ৩৫ জন, কবি জসীম উদ্দীন হলে ৬৮ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৭৩ জন, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৫৯ জন, শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে ৩৬ জন, অমর একুশে হলে ৭৬ জন, কবি সুফিয়া কামাল হলে ৩৮ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৬৮ জন এবং স্যার এ এফ রহমান হলে ৬২ জন রয়েছেন।
প্রার্থিতা প্রত্যাহারকারীদের মধ্যে রয়েছেন কবি সুফিয়া কামাল হলে ২ জন, ফজলুল হক মুসলিম হলে ৬ জন, অমর একুশে হলে ৫ জন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে ৫ জন, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে ৬ জন, কবি জসীম উদ্দীন হলে ১ জন, হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলে ৫ জন, ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে ১১ জন, স্যার এ এফ রহমান হলে ৫ জন, সূর্যসেন হলে ৪ জন, বিজয় একাত্তর হলে ৯ জন, শেখ মুজিবুর রহমান হলে ৯ জন, জগন্নাথ হলে ৪ জন এবং শামসুন নাহার হলে ১ জন।
বুধবার, ২০শে আগষ্ট, ২০২৫, সকাল ১১ টায় বিশেষ অতিথিদের নিয়ে আরবী ভাষা ও সংস্কৃতির উপর এক প্রাণবন্ত অনুষ্ঠান উদযাপন করলো এমারেল্ড ইন্টারন্যশনাল স্কুল ঢাকা।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই তিনজন সম্মানিত অতিথিকে স্কুলের ম্যানেজমেন্ট টিম এবং প্রধান উপদেষ্টা জনাব এম এম রনক (Mr. M M Ronok) ফুলের তোড়া ও তাদের নামের ইসলামিক ক্যালিওগ্রাফি দিয়ে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান।
প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের লিবীয় দূতাবাসের মিশন উপপ্রধান জনাব আব্দালফাত্তাহ এ. এ. খিতরেশ (Mr. Abdalfattah A. A. Khitresh)। তার সঙ্গে ছিলেন চৌধুরী লেদার অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জনাব ইমরান চৌধুরী (Mr. Imran Chowdhury) এবং বিজনেস ইন বাংলাদেশের সহ-প্রতিষ্ঠাতা জনাব রাজিব (Mr. Rajib)।
শিক্ষার্থীরা আজ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে তাদের মেধার ও আরবী ভাষায় লব্ধ জ্ঞানের এক মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী দিয়ে অতিথিদের মুগ্ধ করে। এমারেল্ড এর শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাসী ও সাবলীল আরবি কথোপকথনের মাধ্যমে তাদের ভাষার দক্ষতা প্রদরশীত হয়, যা দর্শকদের মন ভুলিয়ে দেয় এবং তাদের ভাষা কার্যক্রমের সাফল্য EISD তুলে ধরে। নতুন প্রজন্ম থেকে আলোকিত ও সপ্রতিভ শিক্ষার্থী তৈরি করে বিশ্বকে আত্মবিশ্বাসী ও মুসলিম নেতৃত্ব দেয়ার যে প্রতিশ্রুতি EISD স্কুল দিয়েছে, আজকের তাদের পরিবেশনা তারই একটি প্রমাণ।
শিক্ষার্থীদের পরিবেশনা শেষে, অতিথিদেরকে মধ্যাহ্নভোজের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়, যেখানে তারা স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে আরও গভীরভাবে মতবিনিময় করার সুযোগ পান। এই অনুষ্ঠানটি কেবল সংস্কৃতি এবং ভাষার উদযাপনই ছিল না, বরং শিক্ষাবিদ ও পেশাদার জগতের মধ্যে এক অর্থপূর্ণ চিন্তাধারার আদান-প্রদানও ছিল।
ইআইএসডি-তে আরবি সপ্তাহের সাফল্য একটি সামগ্রিক শিক্ষা পদ্ধতিকে তুলে ধরে, যা শিক্ষা, নৈতিকতা এবং ইসলামী সংস্কৃতির সমন্বয় সাধন করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এই প্যানেল ঘোষণা করেন।
প্যানেল থেকে ভিপি পদে (সহ-সভাপতি) নির্বাচন করবেন আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে (সাধারণ সম্পাদক) শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস পদে (সহকারী সাধারণ সম্পাদক) তানভীর আল হাদী মায়েদ।
প্যানেল থেকে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে নির্বাচন করবেন আরিফুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে এহসানুল ইসলাম, কমনরুম, পাঠকক্ষ ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে চেমন ফারিয়া ইসলাম মেঘলা।
আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মেহেদী হাসান, সাহিত্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক পদে আবু হায়াত মো. জুলফিকার জিসান, ক্রীড়া বিষয়ক সম্পাদক পদে চিম চিম্যা চাকমা, ছাত্র পরিবহন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. সাইফ উল্লাহ (সাইফ) নির্বাচন করবেন।
গবেষণা ও প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক পদে ১৫ জুলাইয়ে আহত সানজিদা আহমেদ তন্বীর সম্মানে খালি থাকবে বলে জানিয়েছেন রাকিব।
সমাজসেবা সম্পাদক পদে সৈয়দ ইমাম হাসান অনিক, ক্যারিয়ার উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. আরকানুল ইসলাম রূপক, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক পদে আনোয়ার হোসাইন এবং মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে মো. মেহেদী হাসান মুন্না নির্বাচিত হবেন।
এছাড়া সদস্যপদের জন্য প্যানেল থেকে নির্বাচন করবেন মো. জারিফ রহমান, মাহমুদুল হাসান, নাহিদ হাসান, মো. হাসিবুর রহমান সাকিব, মো. শামীম রানা, ইয়াসিন আরাফাত আলিফ, মুনইম হাসান অরূপ, রঞ্জন রায়, সোয়াইব ইসলাম ওমি, মেহেরুন্নেসা কেয়া, ইবনু আহমেদ, সামসুল হক আনান এবং নিত্যানন্দ পাল।
২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন ১০ লাখ ৭৭ হাজার ৫৮২ জন শিক্ষার্থী। গত ৩০ জুলাই থেকে শুরু হওয়া আবেদনের সময় শেষ হওয়ার কথা ছিল ১১ আগস্ট। তবে পরে বাড়িয়ে দেওয়া হয় ১৫ আগস্ট রাত ৮টা পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যেই আবেদন জমা পড়ে প্রায় সাড়ে ১০ লাখ।
গতকাল সোমবার মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকার কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. রিজাউল হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবারের আবেদনে বোর্ডভিত্তিক ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি আবেদন পড়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডে—২ লাখ ২৯ হাজার ৫৪৩ জন। মাদরাসা বোর্ডে আবেদন করেছেন ১ লাখ ৫৭ হাজার ১৮২ জন শিক্ষার্থী। দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ড থেকেও আবেদন পড়েছে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক, ১ লাখ ২৯ হাজার ১৪ জন।
রাজশাহী ও যশোর বোর্ড থেকে যথাক্রমে ১ লাখ ১৯ হাজার ৪৬৩টি আবেদন জমা পড়েছে। চট্টগ্রাম বোর্ডে আবেদন ৯২ হাজার ১৬১, কুমিল্লা বোর্ডে ৯২ হাজার ৪৮৪, সিলেট বোর্ডে ৬২ হাজার ৩৭৯, ময়মনসিংহ বোর্ডে ৫১ হাজার ৮৭১ এবং বরিশাল বোর্ডে পড়েছে ৪০ হাজার ৬৩৪টি আবেদন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে আবেদন জমা পড়েছে ৩৮ হাজার ৬৮৭টি, আর বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচএসসি প্রোগ্রামে আবেদন করেছেন মাত্র ৭০১ জন।
দেশের ৯ হাজার ১৮১টি কলেজ ও মাদরাসায় একাদশ শ্রেণিতে আসন রয়েছে ২২ লাখের বেশি। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি পর্যায়ে রয়েছে প্রায় ৯ লাখ আসন এবং সরকারি-বেসরকারি পলিটেকনিকে রয়েছে আরও ২ লাখ ৪১ হাজার আসন। সব মিলিয়ে একাদশ শ্রেণি ও সমমানের প্রতিষ্ঠানে মোট আসন রয়েছে প্রায় ৩৩ দশমিক ২৫ লাখ। অথচ এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪২৬ জন। ফলে ভর্তি নিয়ে শিক্ষার্থীদের তেমন কোনো চাপ নেই।
গত ২৪ জুলাই প্রকাশিত ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় পাস করা শিক্ষার্থীরা অনলাইনে আবেদন করেছেন পছন্দক্রম অনুযায়ী। এতে অটো মাইগ্রেশন সুবিধা প্রযোজ্য থাকবে। যারা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছেন, যোগ্য হলে তারাও আবেদন প্রক্রিয়ায় যুক্ত হয়েছেন।
নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, চলতি খ্রিষ্টাব্দসহ ধারাবাহিকভাবে পূর্ববর্তী দুই খ্রিষ্টাব্দে দেশের যেকোনো শিক্ষা বোর্ড ও বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এসএসসি বা সমমান পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা অনলাইনে ভর্তি হওয়ার যোগ্য বিবেচিত হবেন।
১৭ই আগস্ট (রবিবার), অতীশ দীপঙ্কর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয় এক অসাধারণ মুহূর্তের উন্মোচন! বহুল প্রতীক্ষিত ক্যাম্পাস ফুটসাল চ্যাম্প (সিএফসি) সিজন-১ ট্রফি ট্যুরের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ট্রফি উন্মোচন করা হয়। দেশজুড়ে পাবলিক ও প্রাইভেট মিলিয়ে ২৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে এই বিশাল টুর্নামেন্টের আগমন বার্তা নিয়ে আসা এই দিনটি ছিল প্রাণবন্ত এবং উৎসবে ভরপুর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ জাহাঙ্গীর আলম, ট্রাস্টি বোর্ডের সম্মানিত সদস্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সিরাজুল হক চৌধুরী, রেজিস্ট্রার জনাব মোঃ আব্দুল কাইউম সরদার, সহযোগী অধ্যাপক ও প্রক্টর শারমিন আক্তার এবং এডাস্ট স্পোর্টস কমিটির মেম্বার সেক্রেটারি প্রভাষক মোঃ ফয়জুল হাসান সহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দ, খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীরা সম্মিলিতভাবে এই ঝলমলে ট্রফি উন্মোচন করেন। তাদের হাতে যখন ট্রফিটি উন্মোচিত হয়, তখন পুরো ক্যাম্পাস উল্লাস ও করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে।
শুধু ট্রফি উন্মোচনই নয়; এর পাশাপাশি ছিল নানা ধরনের মজার গেমস ও অ্যাক্টিভিটিস, যেখানে ছাত্র-ছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। গান, খেলা আর হাসি-ঠাট্টায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে এক আনন্দঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে।
সিএফসি সিজন-১ ট্রফি ট্যুরের এই সফল আয়োজন দেশজুড়ে তরুণদের মাঝে ফুটবলের প্রতি ভালোবাসা, ঐক্য এবং একতার এক দারুণ মেলবন্ধন তৈরী করবে বলে মনে করেন আয়োজকরা। আজকের এই উৎসবমুখরতা আগামী দিনে টুর্নামেন্টের পথচলাকে আরও রোমাঞ্চকর ও প্রাণবন্ত করে তুলবে বলেও বিশ্বাস করেন তারা।
ক্যাম্পাস ফুটসাল চ্যাম্প (সিএফসি) সিজন ১ এর স্পনসর ও সহযোগী স্পনসর হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুলডোজার্স, এক্টিভ প্লাস, টিকিটো, গিগাবাইটস, উত্তরা মোটরস, কান্ট্রিসাইড, মিকলো, ওয়ান পার্সেন্ট ও ইউনাইটেড হেলথ কেয়ার।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের জন্য প্রকাশিত ষষ্ঠ বিজ্ঞপ্তিতে আবেদনকারী প্রার্থীদের মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থীদের প্রাথমিক সুপারিশের ফল চলতি সপ্তাহে প্রকাশ করা হতে পারে। এ জন্য প্রয়োজনীয় সব প্রস্তুতি শেষ করেছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।
গতকাল রোববার এনটিআরসিএর সংশ্লিষ্ট সূত্র এসব তথ্য জানিয়েছে।
সূত্র বলছে, ফল প্রকাশের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলেই দ্রুততম সময়ে সুপারিশের ফল প্রকাশ করা হবে।
এ বিষয়ে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ষষ্ঠ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সুপারিশ প্রকাশের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পাওয়া মাত্রই ফল প্রকাশ করা হবে।
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান) শিক্ষক নিয়োগের জন্য গত ১৬ জুন ষষ্ঠ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে শূন্য পদ ছিল ১ লাখ ৮২২টি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফরম পূরণ ও ফি পরিশোধ করে সফলভাবে আবেদন করেন ৫৭ হাজার ৮৪০ জন।
বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, একজন প্রার্থী শূন্য পদের তালিকা থেকে তার আবেদনে সর্বোচ্চ ৪০টি প্রতিষ্ঠানে পছন্দ দিতে পেরেছেন।
২০০৫ সাল থেকে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিচ্ছে এনটিআরসিএ। তবে শুরুর ১০ বছর শিক্ষক নিয়োগের ক্ষমতা ছিল সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডি বা ম্যানেজিং কমিটির হাতে।
২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর সরকার এনটিআরসিএকে সনদ দেওয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশের ক্ষমতাও দেয়।
এরপর পাঁচটি গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চলতি বছরের ৩১ আগস্ট পর্যন্ত ১ লাখ ৩২ হাজার ৮৯৮ জন শিক্ষক নিয়োগের চূড়ান্ত সুপারিশ করে এনটিআরসিএ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. এ এস এম আমানুল্লাহ জানিয়েছেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রতি বছর প্রায় দশ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে। এর ৪০ ভাগ কোনো না কোনো কাজে যুক্ত হতে পারছে, ২০ ভাগ স্ব-উদ্ভাবিত কর্মসংস্থান করেছে। আর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ বেকার থাকছে।
গতকাল শনিবার এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভ (ইআরআই) আয়োজিত ‘বাংলাদেশে চাহিদাভিত্তিক শিক্ষা: সমস্যা ও সম্ভাবনা’ বিষয়ক সেমিনারে তিনি এই তথ্য দেন।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এডুকেশন রিফর্ম ইনিশিয়েটিভের (ইআরআই) চেয়ারম্যান ও সাবেক শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী আ ন ম এহছানুল হক মিলন। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ল্যাব, ডেমোনেস্ট্রেটর, শিক্ষক, অধ্যক্ষ সবই থাকা সত্ত্বেও ল্যাব প্রাকটিক্যাল হচ্ছে না। এটা শুধু নৈতিক অবক্ষয়ের অবনমন। এর উত্তরণ ঘটাতে হবে।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ বলেন, বিদেশে অদক্ষ শ্রমিক প্রেরণ নিরুৎসাহিত করতে হবে, তাদের দক্ষ শ্রমিক করতে হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয় সেরা শিক্ষক সম্মাননা ব্যক্তিগত যোগাযোগ রক্ষাকারীকে না দিয়ে প্রকৃতই সেরা শিক্ষককে দেওয়ার সুপারিশ করেন উপাচার্য।
ড. এ এস এম আমানুল্লাহ চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, আধুনিক শিক্ষা কমিশন গঠন এখন সময়ের দাবি।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, বিগত ৫২ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্রের কোনো গুণগত উন্নতি হয়নি। আমরা বাংলাদেশে একটি বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করতেও ব্যর্থ হয়েছি।
ভিসি বলেন, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশের অবস্থা এক সময় বাংলাদেশের মতোই ছিল। কিন্তু আজ সেই দেশগুলোর মাথাপিছু আয় বহুগুণে বেড়েছে। আর এর জন্য চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার একটি বড় অবদান রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব মোকাবিলায় শিক্ষার্থীদের গড়ে তোলার জন্য সিলেবাস পরিবর্তনের কাজ হাতে নিয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়।
এদিকে একই অনুষ্ঠানে জানানো হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা মোট শিক্ষার্থীর ১১ শতাংশ। এর মধ্যে প্রায় অর্ধেক, অর্থাৎ ৪ দশমিক ৫ শতাংশ বেকার।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, গুণগত শিক্ষার অভাবই শিক্ষার সবচেয়ে বড় সমস্যা। প্রতি বছর এসএসসিতে ২.৫ লাখ শিক্ষার্থী জিপিএ-৫ পেলেও বাস্তব শিক্ষার উন্নতি হচ্ছে না। প্রায় ১০ লাখ শিক্ষার্থী এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেয়, কিন্তু যারা জিপিএ-৫ পায় না, তারা কোথায় যাচ্ছে—এমন প্রশ্ন রাখেন তিনি।
প্রবন্ধে বলা হয়, দেশে ডিগ্রি পাস শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১১ শতাংশ। এর মধ্যে ৪.৫ শতাংশ বেকার। তাই জব মার্কেটের চাহিদা অনুযায়ী নতুন প্রজন্মকে শিক্ষিত করতে হবে।
ড. মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, বাংলাদেশের প্রকৌশলীরা পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল ও রূপপুর পারমাণবিক প্রকল্পে সহায়ক ভূমিকা রাখলেও মূল দায়িত্ব পালন করেছে চীন, রাশিয়া ও জাপানের প্রকৌশলীরা। অথচ স্থানীয় প্রকৌশলীরা দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পড়াশোনা করেছে। মূল সমস্যা হলো চাহিদাভিত্তিক শিক্ষার অভাব।