কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে চলতি ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। আগামী ২৮ জুলাই থেকে আবারও শুরু হবে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির কার্যক্রম। এ প্রক্রিয়া চলবে ১ আগস্ট পর্যন্ত।
আজ বুধবার আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি অধ্যাপক তপন কুমার সরকারের সই করা জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের কলেজে ভর্তি কার্যক্রম অনিবার্য কারণে বন্ধ আছে। দেশের সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে ভর্তি কার্যক্রমের সময়সীমা আগামী ২৮ জুলাই থেকে ১ আগস্ট পর্যন্ত পুনঃনির্ধারণ করা হলো। একই সঙ্গে চলতি শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের ক্লাস আগামী ৬ আগস্ট মঙ্গলবার শুরু হবে।
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, গত ১৫ জুলাই থেকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়। এ ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কথা ছিল ২৫ জুলাই। তবে ১৮ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করায় বন্ধ রয়েছে একাদশে ভর্তি কার্যক্রম।
চলতি বছর এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় ১১ শিক্ষা বোর্ডে পাস করেন ১৬ লাখ ৭২ হাজার ১৫৩ জন। ফল পুনঃনিরীক্ষণে আরও প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী ফেল থেকে পাস করেন। তবে সারাদেশে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিযোগ্য আসন রয়েছে ২৫ লাখের মতো। সব শিক্ষার্থী ভর্তি হলেও একাদশ শ্রেণিতে ৮ লাখের বেশি আসন ফাঁকা থাকার কথা।
ভর্তি নীতিমালা অনুযায়ী, গত ২৬ মে সকাল ১০টায় একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে অনলাইনে আবেদন শুরুর কথা ছিল। তবে সার্ভারে ত্রুটির কারণে একদিন পর আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথম ধাপে ১৩ জুন পর্যন্ত আবেদন করার সুযোগ পান শিক্ষার্থীরা। ২৩ জুন রাতে প্রথম ধাপের ফল প্রকাশ করা হয়। এরপর ৩০ জুন থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত দ্বিতীয় ধাপে এবং ৯-১০ জুলাই তৃতীয় ধাপে আবেদন নেওয়া হয়।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত হওয়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) ছাত্র আবু সাঈদ হত্যার ঘটনায় বেরোবির পক্ষ থেকে আরেকটি হত্যা মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনিযুক্ত ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী।
আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি একথা জানান। খবর বাসসের।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আবু সাঈদের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, আবু সাঈদ জীবন দেওয়ার কারণে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। এ কারণে আজ আমি এ জায়গায় এসেছি। তার কাছে আমরা সবাই ঋণী। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
ভাইস চ্যান্সেলর বলেন, আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে কোনো শিক্ষক, কর্মকর্তা বা শিক্ষার্থী জড়িত রয়েছে কিনা সেটি তদন্তের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করা হবে।
পুলিশ জানায়, আবু সাঈদ নিহতের ঘটনায় এ পর্যন্ত দুটি হত্যা মামলা হয়েছে। আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী বাদী হয়ে একটি মামলা রুজু করেছেন। সেই মামলায় দু’জন পুলিশ সদস্য গ্রেপ্তার রয়েছেন। অপর মামলাটি পুলিশের পক্ষ থেকে দায়ের করা হয়েছে।
ভিসি অধ্যাপক ড. শওকত আরও বলেন, তার প্রথম লক্ষ্য হলো ছাত্র-ছাত্রীদের দাবিগুলো পর্যায়ক্রমে পূরণের চেষ্টা করা। দ্বিতীয় লক্ষ্য হলো উত্তরবঙ্গের আলোকবর্তিকা হিসেবে বেরোবি ক্যাম্পাসকে শিক্ষা ও গবেষণায় অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া।
তিনি বলেন, আবু সাঈদের এ ক্যাম্পাসে আমি কিছু প্রস্তাব ও পরিকল্পনা গ্রহণ করব। সম্মিলিত সুধী সমাজ, শিক্ষক সমাজ, ছাত্রসমাজ, সাংবাদিক সমাজসহ সবার সঙ্গে পরিকল্পনা করে বৃহত্তর পরিকল্পনা দাঁড় করাব। এ বিশ্ববিদ্যালয় যাতে পূর্ণাঙ্গ আবাসিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে ওঠে সেলক্ষ্যে ছেলে ও মেয়েদের জন্য আরও কয়েকটি হল তৈরি করার পরিকল্পনা গ্রহণ করব। আমি বিশ্বাস করি, আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে এ ধরনের প্রকল্পের জন্য অনুদান পাওয়া যাবে।
ইউজিসি চেয়ারম্যান আবু সাঈদের ক্যাম্পাসে অনুদান দেওয়ার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, বেরোবি ক্যাম্পাস নিয়ে আমাদের স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা থাকবে। আশা করছি, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারবো।
এরআগে গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলীকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বেরোবির ষষ্ঠ ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, বেরোবির ভিসি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার প্রথম দিনই নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেন অধ্যাপক ড. মো. শওকত আলী। নবনিযুক্ত এই ভিসির বাড়ি রংপুর জেলার পীরগঞ্জ উপজেলায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় চার শিক্ষার্থীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, ছাত্রলীগের সদ্য পদত্যাগ করা উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া। মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন। পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মোত্তাকিন সাকিন এবং সাজ্জাদ। তারা চারজনই ফজলুল হক মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী বলে গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাবির প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
তিনি জানান, প্রক্টরিয়াল টিম চারজনকে আটক করে শাহবাগ থানায় সোপর্দ করেছে। ইতোমধ্যে হল কর্তৃপক্ষ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আগামীকাল সকালে কমিটি চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দেবে।
এর আগে গতকাল রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলে গণপিটুনিতে তোফাজ্জল হোসেনের (৩০) মৃত্যুর ঘটনায় মামলা করেছে ঢাবি প্রশাসন।শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহাবুদ্দিন শাহীন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
হলের শিক্ষার্থীরা তোফাজ্জলকে ছাত্রাবাস থেকে মোবাইল ফোন চুরি করেছে বলে সন্দেহ করার পর এই ঘটনা ঘটে। ওই হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক শাহ মোহাম্মদ মাসুম বলেন, তোফাজ্জলকে হলের ভেতরে আটকে রেখে মারধর করেন শিক্ষার্থীরা।
মব হামলার পর হল কর্তৃপক্ষ তোফাজ্জলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের কাছে হস্তান্তর করে। তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসার পরিবর্তে প্রক্টরিয়াল টিম তাকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
পরে পুলিশের পরামর্শে তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নেওয়া হলে রাত পৌনে ১২টার দিকে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ভুক্তভোগীর ন্যায়বিচার নিশ্চিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তদন্তে পূর্ণ সহযোগিতা করছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটানায় বিষয়টিকে ‘অমানবিক’ ও ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে দুঃখ প্রকাশ করেছে ঢাবি প্রশাসন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি মাধ্যমে এই দুঃখের কথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল ফজলুল হক মুসলিম হলের অমানবিক ও অনাকাক্ষিত ঘটনার জন্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুঃখিত ও মর্মাহত। ঘটনার পরই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্রুত প্রয়োজনীয় আইনগত ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। প্রক্টরিয়াল টিম বিষয়টি অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বিলম্ব না করে ঘটনাস্থল ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি দ্রত প্রতিবেদন প্রদানের জন্য এরই মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেছে। সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা দায়ের ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রক্ষা করার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সব মহলকে আশ্বস্ত করা যাচ্ছে যে, এ বিষয়ে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বদ্ধপরিকর।
গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে পিটিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এঘটনায় পর আজ বৃহস্পতিবার হত্যার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। দুপুরে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়। এই কমিটিকে আজ সন্ধ্যার ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। এই কমিটিকে আজ সন্ধ্যার ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীরকে। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিউল আলম খান, অধ্যাপক ড. শেখ জহির রায়হান, জনাব মো. মাহাবুব আলম, ড. আছিব আহমেদ, সহকারী আবাসিক শিক্ষক ড. এম এম তৌহিদল ইসলাম এবং সহকারি প্রক্টর এ. কে. এম. নূর আলম সিদ্দিকী।
এরপর আরেকটি বিজ্ঞপ্তিতে সেই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের হল অফিসে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দিতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গতকাল বুধবার রাতে ফজলুল হক মুসলিম হলে সংগঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটির প্রত্যক্ষদর্শীদের আজ দুপুর বারোটার সময় হল অফিসে উপস্থিত হয়ে তদন্ত কমিটিকে সহায়তা প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।
গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে পিটিয়ে এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত ১২টার দিকে হলের কিছু শিক্ষার্থী এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল টিম ওই ব্যক্তিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. ফারুক মারা যাওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, ১২টার একটু পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী এই লোকটিকে নিয়ে আসে। এরপর ডাক্তার পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করলে এই শিক্ষার্থীদের আর পাওয়া যায়নি। রাত ২টা ১১ মিনিটের দিকে হাসাপাতালে গিয়ে দেখা যায়, লোকটির মরদেহ একটি স্ট্র্যচারে শুইয়ে রাখা হয়েছে।
হাসাপাতাল সংশ্লিষ্টরা জানান, রাত ১২টায় আনার পর থেকে এই মরদেহ এখানেই রেখে দেওয়া হয়েছে। রাত পৌনে ৩টার দিকে মরদেহকে মর্গে নিয়ে রাখা হয়।
পরবর্তী পদক্ষেপ কী জানতে চাইলে ইনচার্জ ফারুক জানান, লাশটির সুরতহাল আমরা করব। এরপর বাকি কাজ শাহবাগ থানার। তারা বাকি পদক্ষেপ নেবেন।
জানা গেছে মৃত লোকটির নাম তোফাজ্জল। তার গ্রামের বাড়ি বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলি ইউনিয়নে। তার বাবা-মা কেউ বেঁচে নেই। বিভিন্ন কারণে তিনি অনেকদিন ধরে মানসিক ভারসাম্যহীন।
যা জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা
ঘটনার শুরুর বর্ণনা দিয়ে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের হলে আজকে ক্রিকেট এবং ফুটবল খেলা চলছিল। দুপুরে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট চলাকালীন সময়ে আমাদের ছয়টি ফোন চুরি হয়। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আমাদের ফুটবল খেলা যখন শুরু হয় তখন সেখানে এই লোকটি আসে। কেউ একজন বলে, এই লোকটিই ফোনগুলো চুরি করে থাকতে পারে। এসময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সে ফোন চুরির বিষয়টি অস্বীকার করলে তাকে ক্যান্টিনে খেতে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে খাবার দিয়ে আমি চলে আসি। এরপর আমি আর কিছু জানি না।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী দুইজন শিক্ষার্থী নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক বাংলাকে বলেন, রাত ৮টার দিকে এই লোকটাকে ধরা হয়। শুরুতে হলের মেইন গেস্টরুমে তাকে চড় থাপ্পড় মারা হয়। এরপর তাকে ক্যান্টিনে নিয়ে গিয়ে জোর করে প্রচুর ডাল আর গোশত খাওয়ানো হয়।
সেখান থেকে নিয়ে হলের এক্সটেনশন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমে তাকে কয়েক দফা পেটানো হয়। এরপর সেখান থেকে আবার মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমে এনে তাকে আরও একদফা পেটানো হয়।
এই শিক্ষার্থীরা বলেন, মারের কারণে এই লোক সেখানে শুয়ে পড়ে। শোয়া অবস্থা থেকে লোকটা উঠতেই পারছে না। এসময় তাকে নাচতে জোর করেন কয়েকজন শিক্ষার্থী। অথচ সেসময় লোকটার পিঠ থেকে রক্ত ঝরছে।
এই শিক্ষার্থীরা বলেন, রাত ৯টার কিছু পর থেকে প্রক্টরিয়াল বডির মোবাইল টিম এবং হলের কয়েকজন হাউজ টিউটর গেস্টরুমের বাইরে দাঁড়ানো ছিলো। অথচ সেসময়ও লোকটাকে গেস্টরুমে আটকে রাখা হয়েছে। আর তাকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয় সাড়ে ১০টার দিকে।
মোবাইল টিমের ভাষ্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা মোবাইল টিমের একজন সদস্য দৈনিক বাংলাকে বলেন, এফএইচ হল থেকে খবর পাওয়ার পর আমাদের বিকালের টিম রাত আনুমানিক ৯টার দিকে সেখানে যায়। তারা জানতে পেরেছে, ৭টা-৮টার দিকে সেই লোকটাকে শিক্ষার্থীরা আটক করে। বিকেল টিমের ডিউটি শেষ হওয়ার পর আমরা রাতের টিম রাত ১০টা ২০ বা ২২ মিনিটের দিকে হলটির গেস্টরুমে যাই। গিয়ে দেখি লোকটাকে অনেক মারা হয়েছে আর সে সেখানে পড়ে আছে। সেখান থেকে এই লোকটিকে নিয়ে হলের তিনজন হাউস টিউটর, চার-পাঁচ জন শিক্ষার্থীসহ রাত এগারোটায় শাহবাগ থানায় আসি। এরপর থানার ওসির সাথে হাউজটিউটররা কথা বলেন। পরে সেখান থেকে লোকটাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। হাসপাতাল থেকে মৃত ঘোষণা করা হলে শিক্ষার্থীরা বের হয়ে চলে যায়। এরপর আমরাও বের হয়ে চলে আসি।
গেইটম্যানের ভাষ্য
হলের মেইন বিল্ডিংয়ের গেস্টরুমের সামনে থাকা একজন গেইটম্যান বলেন, আমি দশটার দিকে ডিউটিতে আসি। তখন দেখি গেস্টরুমের বাইরে হাউস টিউটররা দাঁড়িয়ে আছেন। আমার আগে দায়িত্বে থাকা গেইটম্যানকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে ভিতরে চোর ধরা পড়ছে।
তিনি বলেন, তবে সে সময় ভিতরে কী হচ্ছে সেটা আমি দেখিনি। এর ১০-১৫ মিনিট পর ভিতর থেকে চিৎকার আসলে হাউস টিউটররা আমাকে বলেন, দেখেন তো গিয়ে কী হচ্ছে ভিতরে। এরপর আমি গিয়ে দেখি ঐ লোকটাকে চড় থাপ্পড় দেওয়া হচ্ছে। তবে আমি যাওয়ার পর আর মারতে দেখিনি। পরে হাউস টিউটর, মোবাইল টিম এবং কয়েকজন শিক্ষার্থী এই লোকটাকে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, এরপর রাতে শিক্ষার্থীরা হলে ফিরলে তাদের কথাবার্তায় বুঝেছি, লোকটা মারা গেছে। তখন এই গেস্টরুমের লেগে থাকা রক্তগুলো তারা মুছে ফেলার প্রস্তাব দিলে বললে আমি অপারগতা প্রকাশ করি।
এদিকে এই ঘটনার পুরো রাত পেরিয়ে গেলেও ঘটনাস্থলে আসেননি হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম। ঘটনার সময় বা এর পরে তাকে কয়েকবার ফোন দেওয়া হয়েছেও বলে জানান শিক্ষার্থীরা। তারপরও রিচ করা যায়নি প্রাধ্যক্ষকে। ঘটনার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদও একাধিকবার ফোন দিয়ে পাননি এই প্রাধ্যক্ষকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ এবং সহকারী প্রক্টররা আসার খবর পেয়ে সকাল সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন অধ্যাপক ড. শাহ মো. মাসুম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করতে এখন থেকে ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হবে। আজ বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিটির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি প্রক্টর শেহরীন আমিন। তবে এই ভ্রাম্যমান মোবাইল কোর্ট কীভাবে কাজ করবে তা নিয়ে এখনো তেমন কিছু আলোচনা হয়নি বলে জানা যায়।
সাইফুদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভ্রম্যমান মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ক্যাম্পাসকে বহিরাগতমুক্ত করার লক্ষ্যে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে ক্যাম্পাসে অভিযান পরিচালিত হবে। সে লক্ষ্যে ক্যাম্পাসে অবস্থানকালীন সময়ে প্রত্যেকে শিক্ষার্থীদের তাদের নিজ নিজ পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করা যাচ্ছে। যে সকল শিক্ষার্থীদের পরিচয়পত্র হারিয়ে গেছে সে সকল শিক্ষার্থীদের উপযুক্ত প্রমাণপত্র সঙ্গে রাখার জন্য অনুরোধ করছি।
সীমনাবিহীন হওয়ায় প্রায়ই ঢাবি ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বহিরাগতদের নানান সমস্যা দেখা দেয়। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিয়েও কিছুটা ঝুঁকি রয়ে যায়।
আগে থেকে অনুমতি না নিয়ে কোনো অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্যসহ প্রশাসনের শীর্ষ ব্যক্তিদের নাম ব্যবহার করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ঢাবি কর্তৃপক্ষ। আজ বুধবার ঢাবির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
এতে পূর্বানুমতি ছাড়া আমন্ত্রণপত্র বা ব্যানারে ঢাবির উপাচার্য, প্রো-উপাচার্যদ্বয়, কোষাধ্যক্ষ এবং অপরাপর গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অতিথি হিসেবে উল্লেখ করা থেকে বিরত থাকার জন্য বিভিন্ন সংগঠন বা অনুষ্ঠান আয়োজকদের প্রতি নির্দেশ দেওয়া হয়।
এছাড়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বা প্রক্টরের অনুমতি নেওয়ার জন্য আয়োজকদের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সপ্তম উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক রেজাউল করিম। পাশাপাশি তিনিই জবি থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রথম উপাচার্য।
আজ বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মো. শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে তার নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়। এই নিয়োগের মাধ্যমে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক উপাচার্য ড. সাদেকা হালিমের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জারি করা ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০০৫-এর ১০ (১) ধারা অনুযায়ী প্রফেসর (অবসরপ্রাপ্ত) ড. মো. রেজাউল করিম, সমাজকর্ম বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে উক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাইস-চ্যান্সেলর পদে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। ভাইস চ্যান্সেলর হিসেবে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে ৪ বছর হবে। তবে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে তিনি নিয়মিত চাকরির বয়স পূর্তিতে মূল পদে প্রত্যাবর্তনপূর্বক অবসরগ্রহণের আনুষ্ঠানিকতা সম্পাদন শেষে উক্ত মেয়াদের অবশিষ্টাংশ পূর্ণ করবেন।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ভাইস চ্যান্সেলর পদে তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ অথবা অবসর অব্যবহিত পূর্ব পদের সমপরিমাণ বেতন-ভাতাদি পাবেন এবং বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন।
প্রজ্ঞাপনে আরও বলা হয়, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যেকোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
অধ্যাপক ড. রেজাউল করিম ১৯৮৬ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবেও কাজ করেছেন।
২০০৮ সালে তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন এবং সমাজকর্ম বিভাগের চেয়ারম্যান ও সামজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন হিসেবে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সব রুলস রেগুলেশন তৈরিতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটক আটকে মানববন্ধন ও শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে প্রশাসনিক ভবনে তালা দেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের জিরো পয়েন্টে মূল ফটকের সামনে আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এরপর বিকেল ৪টায় আবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ কর্মসূচি শেষে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন।
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা ঘোষণা দিয়ে বলেন, ‘যদি আজকের (১৭ সেপ্টেম্বর) মধ্যে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রো-ভিসি নিয়োগ না দেওয়া হয় তাহলে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সব একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধ থাকবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘ভিসি নিয়ে নয়-ছয় আর নয় আর নয়’, ‘ঢাবি রাবি ভিসি পেল, চবি কেন পিছিয়ে গেল’, ‘আর নয় বিজ্ঞাপন, দিতে হবে প্রজ্ঞাপন’, ‘ঢাবি রাবি স্বর্গে, চবি কেন মর্গে’, ‘শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য, ভিসি হবে দক্ষ’- ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত বৃহস্পতিবার ভিসি নিয়োগের একটি গুঞ্জন শোনা যায়। রোববার ভিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত আসেনি। আমাদের সঙ্গে এই প্রজ্ঞাপন প্রজ্ঞাপন খেলা বন্ধ করুন। ভিসি নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমাদের এই কর্মসূচি চলবে।’
মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘আমরা ক্লাসে যাওয়ার জন্য মুখিয়ে আছি কিন্তু এখনো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে না। আমরা কি আন্দোলনই করে যাব শুধু? আমাদের সঙ্গে এই প্রজ্ঞাপনের খেলা বন্ধ করুন। বাংলাদেশের অন্যসব স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ দেওয়া হলেও আমরা এখনো ভিসি পাইনি। অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ, অতিসত্বর ভিসি নিয়োগ দিয়ে একাডেমিক কার্যক্রম চালু করার। আমরা শিক্ষার্থী, আমাদের জায়গা হচ্ছে পড়ার টেবিলে। আমাদেরকে পড়ার টেবিলে ফিরিয়ে নিন।’
প্রসঙ্গত, গত ১২ আগস্ট শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরসহ প্রক্টরিয়াল বডি ও সব হলের প্রভোস্ট পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে ১ মাসের বেশি সময় উপাচার্যহীন রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম। এজন্য দ্রুত উপাচার্য ও উপ-উপাচার্য নিয়োগের দাবিতে গত ৮ সেপ্টেম্বর থেকে পঞ্চম দিনের মতো টানা আন্দোলন করে আসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে গণবিবাহের আয়োজন করেছে শিক্ষার্থীরা। তবে পাত্রকে অবশ্যই উক্ত হলের আবাসিক শিক্ষার্থী হতে হবে এবং উপস্থিত করতে হবে দুই পরিবারের অভিভাবকদের। আগামী ২০ সেপ্টেম্বর হল প্রাঙ্গণে এই গণবিবাহ আয়োজিত হবে।
আয়োজকরা বলছেন, সমাজ বিয়ে বিষয়টাকে সহজ করতে তাদের এই আয়োজন। সেদিন যারা সব শর্ত পূরণ করে বিয়ে করতে চাইবে তাদের সেদিনের খরচ বহন করবে হলের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে জহুরুল হক হলের এমন আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে ধুম পড়ে গেছে পাত্রপাত্রী খোঁজার। তবে এখানেও সতর্কবার্তা দিয়েছেন আয়োজকরা।
আয়োজকদের অন্যতম একজন ইংরেজি বিভাগ শিক্ষার্থী আল আমিন সরকার ফেসবুক গ্রুপে লিখেছেন, হঠাৎ করে বিয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়াটাকে নিরুৎসাহিত করছি আমরা। বিয়ে জীবনের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত, তাই আবেগের বসে প্ররোচিত হবেন না আশা করছি। তবে কাউকে নিষেধও করছি না আমরা।
তিনি লেখেন, এই গণবিবাহের মূল টার্গেট হলো ক্যাম্পাসে প্রেমিক যুগলদের সম্পর্কটাকে হালাল এবং সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান করা। তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এটা আমাদের প্রতীকী প্রতিবাদ। যেন সমাজে বিয়ে বিষয়টাকে আরেকটু সহজতর করা হয়। ছেলের চাকরি থাকতেই হবে এরকম বাধ্যবাধকতা বন্ধ করা হয়।
এই আয়োজনের পরিকল্পনা কীভাবে এসেছে জানতে চাইলে আল আমিন সরকার বলেন, আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের সবাই একটা ট্রমাটাইজ পরিস্থিতি অতিবাহিত করছি। তাই আগামী ২০ তারিখ আমরা একটা ভোজের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত নেই। এখানে আমাদের হলের সাবেক বর্তমান শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন। পরে মাথায় আসলো আমাদের হলের অনেক ভাই প্রেম করে। বিয়ে বিষয়টা অনেক জটিল করে রাখাতে অনেকে বিয়ে করতে পারছে না। তাই গণবিবাহের সিদ্ধান্তটা নেই। তবে পাত্রকে অবশ্যই আমাদের হলের হতে হবে। পাত্রী যেকেউ হতে পারে। তবে অবশ্যই এই বিয়ে হবে দুই পরিবারের অভিভাবকদের অনুমতি এবং উপস্থিতিতে।
তিনি বলেন, বিষয়টা প্রথমে আমি আমাদের হলের গ্রুপে পোস্ট দেই। ভালো সাড়া পাওয়ার পর আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রুপে পোস্ট দেই।
এখন পর্যন্ত কত যুগল আগ্রহ দেখিয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অন্য হলের অনেকেই আগ্রহ দেখাচ্ছে। কিন্তু এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমোদন না পাওয়াতে আমরা সেদিকে আগাচ্ছি না। তবে আমাদের হলের দুইজন ভাইয়ের বিয়ে কনফার্ম। উনারা পারিবারিকভাবে বিয়েটা করবেন আর ঘরোয়াভাবে এটির আয়োজন আমরা হলে করবো।
এদিকে জহুরুল হক হলের এমন আয়োজনের পর হাফসাতুল জান্নাত চৈতী নামের এক শিক্ষার্থী সব পাত্রীকে হাতে মেহেদী লাগিয়ে দেওয়া এবং সাজিয়ে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু বোরহান মোহাম্মদ বদরুজ্জামানকে নতুন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
আজ বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ড. বদরুজ্জামান তার বর্তমান পদবী অনুযায়ী সমপরিমাণ বেতন-ভাতা পাবেন এবং ক্যাম্পাসে সার্বক্ষণিক বসবাস করবেন। চার বছরের জন্য তাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর প্রয়োজনে নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
এছাড়া বুয়েটের উপ-উপাচার্য হিসেবে চার বছরের জন্য নিয়োগ পেয়েছেন ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. আবদুল হাসিব চৌধুরী।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মামুন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ। আজ বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে উপসচিব শাহীনুর ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনটি জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ড. মামুন আহমেদকে নিম্নোক্ত শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) পদে নিয়োগ দেওয়া হল। শর্তগুলো হলো, উপ-উপাচার্য পদে তার নিয়োগের মেয়াদ যোগদানের তারিখ হতে চার বছর হবে। উপর্যুক্ত পদে তিনি বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতাদি প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন এবং সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন।
আরও শর্ত হলো, তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি ও আইন দ্বারা নির্ধারিত ও ভাইস চ্যান্সেলর কর্তৃক প্রদত্ত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন। এবং রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজনে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। আজ মঙ্গলবার উপাচার্যের কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়।
সাক্ষাতে ঢাকার চীনা রাষ্ট্রদূতের কয়েকজন কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন। সাক্ষাৎকালে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে চলমান যৌথ সহযোগিতামূলক শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম আরও জোরদার এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, গবেষক, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক দল বিনিময়সহ বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন।
এ ছাড়া বহুমুখী গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত দ্য সেন্টার ফর চায়না স্টাডিজের উন্নয়ন এবং চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ কোর্সের আরও সম্প্রসারণের বিষয়ে তারা আলোচনা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং চীনের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে সেমিনার, কর্মশালা, সম্মেলন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের ব্যাপারেও আলোচনা করা হয়।
উপাচার্য বলেন, বাংলাদেশ এবং চীনের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবৎ চমৎকার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বিরাজ করছে। দুদেশের মধ্যে বিরাজমান এ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও জোরদার হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ব্যাপক আসন সংকটে ভুগছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এ আবাসন সংকট নিরসনে তিনি চীনা রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন। চীনের রাষ্ট্রদূত এ বিষয়ে সম্ভাব্য সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
উপাচার্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা এবং এর শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমের প্রতি গভীর আগ্রহ প্রকাশের জন্য রাষ্ট্রদূতকে ধন্যবাদ জানান।