দক্ষ মানব সম্পদ গড়ার লক্ষ্যে ও বৈশ্বিক সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। শুরুতে ২টি স্কুল বা অনুষদের অধীনে ২টি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি স্কুল বা অনুষদের অধীনে ১৪টি ডিপার্টমেন্টে ৪০টি প্রোগ্রাম চালু আছে। শুরু থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব জব ওরিয়েন্টেড ও প্রফেশনাল বিভাগ চালু আছে সেগুলো হচ্ছে- বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল, ফ্যাশন ডিজাইন, ইইই, সিএসই, আইন, ম্যাথ, ফিজিক্স, এডুকেশন, বাংলা, ইংরেজি, ইসলামিক স্টাডি ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগ। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যেন প্রতিযোগিতায় নিজেদের চৌকস প্রমাণ করতে পারে সেজন্য শুরু থেকে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উত্তরা ইউনিভার্সিটি ৯টি সমাবর্তন শেষ করেছে। এ ইউনিভার্সিটি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে।
প্রতিষ্ঠাতা পরিচিতি:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য, যাদের প্রায় সবাই স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. এম. আজিজুর রহমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একজন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনোমিক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্ট থেকে মাস্টার্স ডিগ্রিও লাভ করেন। বিশ্ব ব্যাংকের বৃত্তি নিয়ে তিনি আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার ভ্যান্ডারভিল্ট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনি ৩০ বছর অধ্যাপনা করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইউএস অ্যাম্বাসির ইউএসএইডে ইকোনোমিক অ্যাডভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ড. এম আজিজুর রহমান উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর। শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সুলেখক ও সমাজসেবী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন আরা লেখা হচ্ছেন এ ইউনিভার্সিটির বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড ও এমএড এবং ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ভিশন ও মিশন:
এক্সিলেন্স ইন হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ -এই স্লোগানকে সামনে রেখে গবেষণায় বেশি জোর দিচ্ছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। এ ইউনিভার্সিটির ভিশন বা সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং আদর্শ নাগরিক, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত মানুষ সৃষ্টিকরণ।
উত্তরা ইউনিভার্সিটি জীবনঘনিষ্ঠ ও নৈতিক শিক্ষাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। শুধু জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই আদর্শ নাগরিক সৃষ্টি হয় না। তাই উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যবোধ সম্পর্কেও দীক্ষা দেওয়া হয়।
স্থায়ী ক্যাম্পাস:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সকল নিয়মনীতি মেনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উত্তরা মডেল টাউনের থার্ড ফেইজ সংলগ্ন, প্রায় ৬ বিঘা জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়েছে। ৯ তলা ভবনের এ ক্যাম্পাস দেখে যে কারও চোখ জুড়িয়ে যাবে। ভবনের গঠনশৈলী এতটাই আধুনিক, সবদিক থেকেই আলো-বাতাস ভবনের ভেতর প্রবেশ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে খেলার মাঠ, যেখানে প্রতিনিয়ত নানা আয়োজন ও উৎসব চলতে থাকে। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর এই ক্যাম্পাস! চারপাশে সবুজে ঘেরা আর ক্যাম্পসের পাশ ঘিরে তুরাগ নদী বহমান। মূল ভবন দক্ষিণামুখী হওয়াতে প্রতিনিয়ত দখিনা বাতাস প্রবহমান এই ক্যাম্পাসে। লাল কৃষ্ণচূড়ার শামিয়ানা আর শুভ্র কাশফুলের দোলাসহ বিভিন্ন ঋতুর প্রকৃতি এখানে দৃশ্যমান!
যাতায়াত ব্যবস্থা:
আধুনিক রাজধানী ঢাকার উত্তরায় সুবিশাল ভবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত আসা-যাওয়া করতে পারে। এমনকি আশপাশে জেলা গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল থেকে খুব সহজে যাতায়াত করতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। আর মেট্রোরেল স্টেশন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব সন্নিকটে হওয়ায় যাতায়াতব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয় না অভিভাবককে।
শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন:
বর্তমানে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে ১৪টি বিভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজেও ব্যাপক জোর দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে উত্তরা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব পলিসি রিসার্স স্থাপন করেছে। শুরু থেকেই মানসম্পন্ন শিক্ষাকে সামনে রেখেই এ ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাশিউরেন্স সেল (আইকিউএসি) গঠনের মাধ্যমে শিক্ষার অভ্যন্তরীণ গুণগতমান উন্নয়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
সমৃদ্ধ ও আধুনিক লাইব্রেরি:
শুরু থেকেই এই ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার সেবা দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে আসছে। সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে গ্রন্থাগার। দৈনিক সংবাদপত্র ও রেফারেন্স বই পড়ার জন্য রয়েছে আলাদা কর্নার। শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের জন্য গ্রন্থাগারে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের ২৫টি দৈনিক পত্রিকা রাখা হয় নিয়মিত। গ্রন্থাগারে রয়েছে লক্ষাধিক বই এবং জার্নাল-ম্যাগাজিন আছে প্রায় ১০ হাজার। এ ছাড়া গ্রন্থাগারে ব্যবহারকারীদের সহায়ক সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে গবেষণা প্রতিবেদন, ই-রিসোর্সের বিশাল সম্ভার, বিশ্বকোষ, অভিধান, হ্যান্ডবুক, ম্যানুয়েল ও এনজিও প্রকাশনা। ব্যবহারকারীরা ই-বুক, ই-জার্নাল ও ই-ম্যাগাজিন পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারেন। গ্রন্থাগারে ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সংযোগসহ কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ। গ্রুপ স্ট্যাডি করার জন্য রয়েছে একাধিক বিশেষ কক্ষ। শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে না এসেও যেকোনো বইয়ের শিরোনাম, লেখক, কল নম্বর, কি-ওয়ার্ড ও প্রকাশক অনুযায়ী খুঁজতে পারেন ই-লাইব্রেরির সুবাদে। গ্রন্থাগারে শিক্ষকদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যবস্থাপনা।
গবেষণা ও প্রকাশনা:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রতিটি বিভাগই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফ্যাকাল্টিদের গবেষণা প্রবন্ধ দেশি ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতি অনুষদ থেকে জার্নাল প্রকাশ করা হয় এবং গবেষণায় বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয় শিক্ষকদের। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদ থেকে নিয়মিতভাবে জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে। ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে বিজনেস রিভিউ, আইন বিভাগ থেকে ল’ জার্নাল নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রত্যেক অনুষদে রিসার্চ সেল গঠিত হয়েছে, যেখানে গবেষণা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং প্রজেক্ট পরিচালনা করা হয়। প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরামণ্ডলী বিদেশে গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ে পড়ালেখা করতে যাচ্ছে। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গবেষণাকে উৎসাহিত করতে অভ্যন্তরীণ গবেষণা তহবিল গঠন, মানসম্মত গবেষণার জন্য ইনসেনটিভ প্রদান ও গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশে সহায়তা করে। উত্তরা ইউনিভার্সিটি শুধু ডিগ্রি প্রদানের জন্যই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে না বরং ইউনিভার্সিটি প্রশাসন এবং শিক্ষকরা চেষ্টা করছেন মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে।
এমওইউ ও স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম:
শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন ও শিক্ষকদের জ্ঞানচর্চা আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যাবশ্যক। তাই উত্তরা ইউনিভার্সিটি যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ড শ্যায়ার ইউনিভার্সিটি ও অরচেস্টার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সহযোগিতার স্মারক স্বাক্ষর করেছে। কর্তৃপক্ষ কানাডার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও সহযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া উত্তরা ইউনিভার্সিটি সাম্প্রতিককালে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এসব আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, আসাম ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছরই উত্তরা ইউনিভার্সিটি বিজনেস কনফারেন্সের আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে যেখানে আমেরিকা, জাপান ও ভারতসহ দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করেছেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে রয়েছে এমওইউ ও স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম। যার ফলে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে গ্র্যাজুয়েট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট, এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ।
সম্মাননা ও সাফল্য:
মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার স্বীকৃতি হিসেবে এ ইউনিভার্সিটি সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘দা বিজ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ (হংকং), এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, ২০১২, (দিল্লি), এশিয়াস বেস্ট বিজনেস অ্যাওয়ার্ড, সিঙ্গাপুর, ২০১৩, এশিয়ান সিইএফ বিজনেস স্কুল অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ (মুম্বাই), ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ ও ২০১৫ (আইন বিভাগ) অন্যতম।
সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশে ক্লাব এবং ফোরাম:
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ ও বাজার উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউইউতে ১২টি ক্লাব ও ১৪টি বিভাগের প্রায় ১৪টি বিভাগীয় ফোরাম রয়েছে। এসব ক্লাব ও ফোরাম বছরজুড়েই জাতীয়পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কো-কারিকুলার ও এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এ ছাড়া পিঠা উৎসব, বসন্তবরণ, চৈত্রসংক্রান্তি, শিক্ষামেলা ও পাঠচক্রসহ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো বিশেষভাবে পালিত হয় এখানে। উচ্চশিক্ষার নিরন্তন পরিবেশ থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা কার্যক্রম সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারে। অরাজনৈতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় নেই কোনো দ্বন্দ্ব, নেই ক্লাস বন্ধ হওয়ার চিন্তা, নেই সেশন জটের ভয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ:
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে প্রতি বছর তিনবার অর্থাৎ স্প্রিং, ফল ও সামার সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ১০% থেকে ১০০% পর্যন্ত স্কলারশিপ।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী, নারী, জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়, জুলাই-বিপ্লবে আহত ও নিহতদের নিকটাত্মীয়দের জন্য রয়েছে বিশেষ স্কলারশিপ।
দক্ষ মানবসম্পদ ও গ্র্যাজুয়েটদের সফলতা:
সুযোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। দেশের অন্যতম এই বেসরকারি বিদ্যাপীঠটি শিক্ষা, গবেষণা ও বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রি অর্জনের সুযোগই দিচ্ছে না, বরং তাদের আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় উপযুক্ত করে তুলছে। ফলে এখানে থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা বিসিএস ক্যাডার, জুডিশিয়াল সার্ভিস, আইন পেশা, ব্যাংক খাত, রপ্তানিমুখী শিল্প, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, এনজিও এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে সুপ্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার গড়তে পারছেন। পাশাপাশি, টেক্সটাইল ও ইলেকট্রনিক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাত, সফটওয়্যার ফার্ম, ই-কমার্স ও স্টার্টআপ জগতে তারা দক্ষতার সঙ্গে অবদান রাখছেন। শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতেও রয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের গৌরবজনক উপস্থিতি। অনেকে আবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নিজস্ব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গড়ে তুলে আত্মনির্ভরশীল তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। শিক্ষকতা পেশায়ও তারা অবদান রাখছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থান ও পেশাগত সাফল্যই প্রমাণ করে উত্তরা ইউনিভার্সিটি শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়- এটি একটি দক্ষ মানবসম্পদ নির্মাণের কারখানা।
উচ্চপর্যায়ে কৃতিত্ব:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির গণিত বিভাগের ছাত্ররা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গণিত অলিম্পিয়াড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে অংশগ্রহণ করে সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় একাধিকবার প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ ও সপ্তম স্থান অর্জন করেছেন। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কৃতী ছাত্রী মাহফুজা খাতুন শীলা জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতা ২০১৬-তে জোড়া স্বর্ণপদক বিজয়ী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেছেন। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মিনিতা সুপ্রিয়া মিজান ত্রপী ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সপ্তম আন্তর্জাতিক কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৬-তে বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছেন। ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান শরীফ তেল ও গ্যাসবিহীন একটি মোটরযান উদ্ভাবন করেছেন, যা সোলার এনার্জিতে মাত্র ১০ টাকা খরচে সারা দিন চালানো যায়। প্রায় সব অনুষদ এবং বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যতিক্রমধর্মী নানা সৃজনশীল কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে শিক্ষার পরিবেশকে এক আনন্দঘন পরিবেশে পৌঁছে দিয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি সুদক্ষ প্রশাসন এবং নিষ্ঠাবান শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা।
স্বতন্ত্র ক্যাফে ও উন্নতমানের ক্যান্টিন:
শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে স্বতন্ত্র ক্যাফে ও উন্নতমানের ক্যান্টিন। সকাল-সন্ধ্যা সুস্বাদু খাবার মেলে সহজেই। ক্যাফেটোরিয়াটি শিক্ষার্থীদের প্রিয় আড্ডাস্থল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে সকালের নাশতা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার এবং ক্লাসের ফাঁকে চা-কফিতে সতেজতা খুঁজে নেয়। উন্নতমানের খাবার, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও স্বল্পমূল্যের কারণে ক্যাফেটোরিয়াটি শিক্ষার্থীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডা, পাঠচর্চা কিংবা হালকা বিশ্রাম- সব কিছুতেই ক্যাফেটোরিয়ার ভূমিকা অনন্য।
বক্তব্য
মো. আদনান রহমান, পিএইচডি
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, স্কুল অব বিজনেস
ডিরেক্টর, ব্র্যান্ড, কমিউনিকেশন অ্যান্ড পিআর
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক উচ্চশিক্ষা পরিবেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ড ইমেজ তার সামগ্রিক সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখে। সেই ভাবনাকে সামনে রেখে উত্তরা ইউনিভার্সিটি চালু করেছে নতুন মিডিয়া ক্যাম্পেইন ও আধুনিক প্রচারণা কৌশল। শুধু পাঠ্যক্রম নয়, আজকের শিক্ষার্থীরা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ, পরিবেশ, অ্যালামনাই সাফল্য ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। এসবই একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ডের উপাদান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং সাফল্যের গল্প তুলে ধরা। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের গল্প থেকে অনুপ্রেরণা পায়। এভাবেই আমরা বিশ্বাসযোগ্যতা এবং মানবিক সংযোগ তৈরি করতে পারব। আমরা ইউটিউব, ফেসবুক এবং লিংকডইন-এর মতো প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। বিশেষ করে ভিডিও কনটেন্ট এবং ইন্টারেক্টিভ পোস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ছে।
উত্তরা ইউনিভার্সিটি ভবিষ্যতে আরও ডেটাচালিত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির দিকে এগোচ্ছে। আমরা এআই ও অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের চাহিদা বুঝে কাজ করতে চাই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের দৃশ্যমানতা বাড়াতে কাজ করছি। সঠিক ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেবল শিক্ষার্থী আকর্ষণই করে না বরং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তাও পৌঁছে দিতে পারে।
ড. শাহ আহমেদ
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও চেয়ারম্যান, ইংরেজি বিভাগ
ডিরেক্টর, অফিস অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স
উত্তরা ইউনিভার্সিটি
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিশ্বমানের পড়ালেখার জন্য আমরা বিশ্বমানের সিলেবাস তৈরি করেছি। ইউজিসির নিয়ম মেনে আমাদের দেশের সেরা ইউনিভার্সিটির সিলেবাস ও বিশ্বের টপ ইউনিভার্সিটির সিলেবাসকে সমন্বয় করে এমন একটা উন্নতমানের সিলেবাস তৈরি করেছি যাতে আমাদের ছাত্ররা এই সিলেবাসের ভিত্তিতে দেশে ও বিদেশে চাকরি পেতে পারে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের সফট স্কিলগুলো গুরুত্বসহকারে শেখানো হয়। এতে চাকরির বাজারে অন্যদের থেকে তারা বেশি এগিয়ে থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় যে শিক্ষাসেবা প্রদান করে থাকে, সে তুলনায় ছাত্রদের শিক্ষা ব্যয় অত্যন্ত কমই মনে হয়। প্রচুর ল্যাব আছে, লাইব্রেরিতে হাজার হাজার বই, কো-কারিকুলার কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক মানের ক্লাসরুম, লজিস্টিক্স সাপোর্ট, ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়াসহ সব সুবিধা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। আমাদের উত্তরা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রথমসারির ইউনিভার্সিটির মধ্যে অন্যতম।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যথেষ্ট গবেষণা ফান্ড আছে। সে ফান্ড নিয়ে শিক্ষকরা বিভিন্ন ফিল্ডে রিসার্স করেন। নতুন নতুন নলেজ, নতুন নতুন থিওরি আবিষ্কার করেন। তবে ফ্যাকাল্টিকে প্রজেক্ট জমা দেওয়ার পরে প্রজেক্ট এক্সেপ্ট হওয়ার পরে সেই ফান্ডটা দিয়ে থাকে। এক কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে রিসার্স ফান্ড পেতে হয়।
শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় অদ্বিতীয়। এ ইউনিভার্সিটির চারদিক প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা, শহরের কোলাহল মুক্ত, নির্ভেজাল পরিবেশে সুন্দর অবকাঠামোতে গড়ে উঠেছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। ঢাকা ও এর আশপাশে জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সেবা চালু রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)—এর ১৪১তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট কক্ষে অনুষ্ঠিত। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিন্ডিকেট চেয়ারম্যান ও চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চুয়েটের স্থাপত্য ও পরিকল্পনা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ রাশিদুল হাসান, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন, চুয়েটের ইনস্টিটিউট অব রিভার, হারভার অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এর পরিচালক অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, ইনস্টিটিটিউট অব ইনফরমেশন এন্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মশিউল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ এর অধ্যাপক ড. মো. সেকান্দর চৌধুরী, অবসারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক (টিএসসি) এবং ডিএমডি (বিটিবিএল) প্রকৌশলী খান আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইলিয়াছ উদ্দিন আহাম্মদ, চুয়েটের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. সুনীল ধর এবং চুয়েটের মানবিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল।
এছাড়াও অনলাইনে সংযুক্ত ছিলেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহিদুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) এর তড়িৎ ও ইলেকট্রনিক কৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আয়নাল হক, শিক্ষা মন্ত্রণালয় এর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়) মিজ আলিফ রুদাবা। উক্ত সিন্ডিকেট সভায় সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
নূরানী স্কলারশিপ বৃত্তি পরীক্ষায় মেধা যাচাইয়ে টাঙ্গাইল, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহের ২৫টি উপজেলা থেকে এবার ৮ হাজার শিশু শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেলা নূরানী শিক্ষক ফাউন্ডেশন বৃত্তি পরীক্ষার আয়োজন করেন। ধাপে ধাপে এই ৪ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় এই বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের শাহ্পুর তাহিরীয়া দারুস্ সুন্নাহ্ হাফিজিয়া ও নূরানী মাদ্রাসা এবং কালিহাতীর রাজাফৈর কওমীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও আবু আশরাফ খান (অব. জজ) মাদ্রাসায় বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে জেলার ভূঞাপুর, মধুপুর, গোপালপুর, ধনবাড়ী ও জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন মাদ্রাসা এই বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কালিহাতীর রাজাফৈর কওমীয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ও আবু আশরাফ খান (অব. জজ) মাদ্রাসায় বৃত্তি পরীক্ষা প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী সাবিহা, দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী আতিয়া ও হাসান বলে- তারা এর আগে কখনো বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেননি। এবারই প্রথম অংশ নিয়েছেন, পরীক্ষায় অংশ নিতে পেরে তারা আনন্দিত।
অভিভাবকরা বলেন, এই স্কলারশিপ বৃত্তি পরীক্ষায় শিশুদের পড়াশোনায় উৎসাহ তৈরি করছে এবং বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে সারা বছরের পড়াশোনার মেধার বিকাশ ঘটে।
মাদ্রাসার শিক্ষকরা বলেন- এটি শুধু বৃত্তি পরীক্ষা নয়, এই পরীক্ষার মাধ্যমে পড়ার উন্নয়ন ঘটে এবং পড়াশোনায় ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে প্রতিযোগিতা ও শিক্ষার্থীদের পাঠ্যভাসে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়। এছাড়া ধর্মীয় শিক্ষায় শিশুদের আগ্রহ বাড়াতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
টাঙ্গাইল জেলা নূরানী শিক্ষক ফাউন্ডেশন সভাপতি শেখ মাহদী হাসান শিবলী বলেন- টাঙ্গাইল, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ ও ময়মনসিংহের ২৫টি উপজেলা থেকে এবার ৮ হাজার শিশু শিক্ষার্থী বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন এবং ধাপে ধাপে পরীক্ষাগুলো বিভিন্ন উপজেলায় বৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
মাহদী হাসান শিবলী আরও বলেন- ২০১৭ সাল থেকে টাঙ্গাইল জেলা নূরানী শিক্ষক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এই পরীক্ষার আয়োজন করে আসছেন। পরীক্ষায় উত্তীর্ণ মেধাবী মেধাবী শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার হিসেবে বাইসাইকেল, শিক্ষা উপকরণ ও সম্মাননা ক্রেস্টসহ বিভিন্ন পুরস্কার প্রদান করে থাকেন। পাশাপাশি ফাউন্ডশন থেকে শ্রেষ্ঠ শিক্ষকদেরও সম্মাননা প্রদান করেন। তারা এই ধারাবাহিকতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত রাখবেন।
তিন দফা দাবিতে দেশজুড়ে ৩ দিনের পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি শুরু করেছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। এতে করে সারাদেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। পূর্ব ঘোষিত তিন দফা দাবি আদায়ে দীর্ঘদিনের আন্দোলনের পরও সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান অগ্রগতি না পাওয়ায়, এই কর্মসূচির ডাক দিয়েছে প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক সংগঠন ঐক্য পরিষদ।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) শুরু হওয়া এই কর্মবিরতি চলবে বৃহস্পতিবার (২৭ নভেম্বর) পর্যন্ত।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাতে সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবেরা বেগম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সহকারী শিক্ষক পদকে এন্ট্রি পদ ধরে ১১তম গ্রেড দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির জটিলতা নিরসন—এই তিন দফা দাবির বিষয়ে আমরা বহুদিন ধরে সরকারের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু আশ্বাসের বাইরে কোনো বাস্তব অগ্রগতি দেখা যায়নি। তাই বাধ্য হয়েই আমরা পূর্ণ দিবস কর্মবিরতিতে যাচ্ছি।
তিনি আরও জানান, টানা তিন দিন পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলবে। দাবি আদায়ে অগ্রগতি না হলে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনসহ ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশনে যাওয়ারও ঘোষণা রয়েছে সংগঠনের।
অন্যদিকে, রাতে প্রকাশিত আরেকটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক শাহীনূর আকতার বলেন, ৩ দফা দাবিতে সহকারী শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন। সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত বাস্তবায়নের আশ্বাস দেওয়া হলেও দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় কর্মসূচি জোরদার করতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, গত ১ নভেম্বর আমরা সংবাদ সম্মেলন করে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিলাম। কিন্তু এর মধ্যে সরকার কোনো উদ্যোগ দেখায়নি। তাই সারা দেশের সহকারী শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান—ন্যায্য তিন দফা দাবি আদায়ে কর্মসূচি সফল করুন।
সংগঠনের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, দাবি পূরণ না হলে বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনসহ আগামী ১১ ডিসেম্বর থেকে লাগাতার অনশন শুরু করবেন সহকারী শিক্ষকরা।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, দেশে বর্তমানে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৭টি এবং এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক ৩ লাখ ৮৪ হাজার। গত ২৪ এপ্রিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় প্রধান শিক্ষকদের বেতন ১১তম থেকে ১০তম গ্রেডে এবং ১৩তম গ্রেডের শিক্ষকদের ১২তম গ্রেডে উন্নীত করার উদ্যোগ নেয়। তবে এতে সহকারী শিক্ষকরা অসন্তুষ্ট।
তাদের ভাষ্য, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, নার্স, কৃষি কর্মকর্তা, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর ও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি নিয়েই দশম গ্রেড পাচ্ছেন। অথচ প্রাথমিকের সহকারী শিক্ষকরা স্নাতক ডিগ্রির পাশাপাশি সিএনএড, বিপিএড বা বিটিপিটি কোর্স সম্পন্ন করেও এখনো ১৩তম গ্রেডে রয়েছেন।
পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা ছুটি শেষে নির্ধারিত সময়ে কর্মস্থলে যোগদান না করায় চাকরিচ্যুত হয়েছেন কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের অধ্যাপক ড. বিকাশ চন্দ্র সিংহ।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।
অফিস আদেশ সূত্রে, আইসিটি বিভাগের অধ্যাপক ড. বিকাশ চন্দ্র সিংহ যুক্তরাষ্ট্রের Old Dominion University-এর অধীনে পোস্ট ডক্টোরাল গবেষণা ছুটি শেষে তিনি যোগদান না করে ২০২৩ সালের ১০ জুন থেকে গত বছরের ৯ জুন পর্যন্ত ১ (এক) বছরের শিক্ষাছুটির মেয়াদ বৃদ্ধির আবেদন করলে তার আবেদনটি ২ অক্টোবর (২০২৩) ছুটি-সংক্রান্ত স্ট্যান্ডিং কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হলে তা বিবেচিত হয়নি।
পরে স্ট্যান্ডিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত বছরের ৩ নভেম্বর তাকে কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দিলেও তিনি যোগদান না করে বিনা অনুমতিতে কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকেন। পরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী শৃঙ্খলা বিধির চরম লঙ্ঘন হওয়ায় গত ১০ জুন থেকে তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হলো।
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের আদমপুরে মৈতৈ মণিপুরি সম্প্রদায়ের সেবামূলক সংগঠন অয়েকপম ফাউন্ডেশনের মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ছে। পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন স্কুল ও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির ৪৫টি স্কুলের ৬১৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। গত শনিবার বেলা ১১টায় উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের তেতইগাঁও রসিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ে এ মেধাবৃত্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।
কমলগঞ্জের আদমপুরের অয়েকপম ফাউন্ডেশনের সমাজসেবামূলক কাজে জড়িত থাকলেও ৪ বছর ধরে সংগঠনটি বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থীর অংশগ্রহণে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা চালু করে। প্রথমে উপজেলার বিভিন্ন কেজি স্কুলের শিক্ষার্থীদের নিয়ে মেধাবৃত্তি পরীক্ষা চালু করেছিল। কমলগঞ্জ উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষর্থীদের আগ্রহে ২০২২ সাল থেকে কেজি স্কুলের বাহিরে গিয়ে সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে অয়েকপম মেধাবৃত্তি চালু করে।
অয়েকপম ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অয়েকপম অঞ্জু বলেন, ‘উপজেলার সকল স্কুলের আগ্রহে ৩ বছর থেকে তারা উন্মুক্ত করে এ উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হয়। এবার তৃতৃতীয় শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণির ৪৫টি স্কুলের ৬১৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেছে। বেলা ১১টা থেকে শুরু করে দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে সুন্দর ও সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয়।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে তেতইগাঁও রসিদ উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস বেগম অতিথি হিসেবে পরীক্ষাকেন্দ্র পরদির্শন করেন করেন বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও সাংবাদিকরা।
মেধাবৃত্তির পরিক্ষায় আহ্বায়ক শিক্ষক ও সাংবাদিক মুজিবুর রহমান বলেন, ‘অয়েকপম পরিবারের গুরুজন অয়েকপম রাজকিশোর সিংহের স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষে তার সুযোগ্য সন্তান আমেরিকা প্রবাসী অয়েকপম ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠা করেন অয়েকপম ফাউন্ডেশন। মণিপুরীদের শিক্ষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি তথা আর্থসামাজিক উন্নয়নে কার্যকর ভূমিকা রেখে আসলেও পরবর্তীতে ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম নিজ সম্প্রদায়ের বাইরেও পরিচালনা করছে। ফাউন্ডারের জন্মস্থান জেলার জুড়ি উপজেলায় হওয়াতে জুড়ি উপজেলাকে সঙ্গে নিয়ে জেলাব্যাপী কাজ করার স্বপ্ন দেখেন।’
পঞ্চাশ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২ হাজার প্রতিযোগী নিয়ে শনিবার সকালে আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রাম (আইআইইউসি)-এর বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের বর্ণাঢ্য আয়োজনে উদ্বোধন হলো আইআইইউসির ৮ দিনব্যাপী ১৬ তম প্রযুক্তি উৎসব টেক ফেস্ট ২০২৫। ২২ নভেম্বর, ২০২৫ শনিবার সকাল এগারটায় কুমিরাস্থ নিজস্ব ক্যাম্পাসে আইআইইউসির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আলী আজাদীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আট দিনব্যাপী এই টেক ফেস্ট-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী। গেস্ট অব অনার ছিলেন ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বাংলাদেশ এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ। বিশেষ অতিথি ছিলেন ইঞিজনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মানজারে খোরশেদ আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন এবং টেক ফেস্ট-২০২৫ অর্গানাইজিং কমিটির কনভেনার প্রফেসর মোহাম্মদ সামসুল আলম। বিশেষ অতিথি হিসাবে আরও বক্তব্য রাখেন আইআইইউসির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ শাহজাহান, আইআইইউসির ট্রেজারার প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান এবং আইআইইউসির রেজিস্ট্রার কর্নেল মোহাম্মদ কাশেম পিএসসি (অবঃ)। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, সিসিই বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর রাজু আহমেদ, সিএসই বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আমানউল্লাহ, ফার্মাসি বিভাগের চেয়ারম্যান কাজী আশফাক আহমেদ চৌধুরী এবং আকিজ গ্রুপের হেড অব মার্কেটিং সাজ্জাদুল ইসলাম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বর্তমান পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। এ যুগ হলো আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্সের যুগ। এআই এখন চিকিৎসা, প্রকৌশল, ব্যবসা, গবেষণা, এমনকি দৈনন্দিন জীবনেও গভীর প্রভাব ফেলছে। তাই সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হলে শিক্ষার্থীদের এআই-এ দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
প্রফেসর ড. এ. এম. সরওয়ারউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ছাত্রদের উচ্চ আকাঙ্ক্ষা থাকতে হবে বড় স্বপ্ন দেখার মানসিকতা থাকতে হবে। জীবনে হতাশ হওয়া যাবে না। ব্যর্থতা আসবে, চ্যালেঞ্জ আসবে, কিন্তু ইতিবাচক মনোভাব ধরে রেখে এগিয়ে যেতে পারলেই সাফল্য নিশ্চিত। শিক্ষার্থীদের প্রতি আমার আহ্বান, নিজেদের সক্ষমতা বিশ্বাস করুন, মনোযোগী থাকুন, সৎ থাকুন এবং কঠোর পরিশ্রম করুন। তবেই আপনারা নিজেদের ভবিষ্যৎকে সুন্দর ও অর্থবহ করে গড়ে তুলতে পারবেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইউনিভার্সিটি অব ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজি বাংলাদেশ এর ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আবু ইউসুফ বলেন, সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বলে তুলনা করতে ও মানতে আমি রাজি নই। আমার কাছে বিশ্ববিদ্যালয় মানেই বিশ্ববিদ্যালয়। দুটোই জ্ঞান সৃষ্টি ও চর্চার কেন্দ্র। তিনি বলেন এই যুগে হাত গুটিয়ে বসে থাকার সুযোগ নেই। ছয় মাস পরপর নতুন প্রযুক্তি আসছে।
উল্লেখ্য এই টেক ফেস্টের ১৮টি ইভেন্টে দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি অর্ধ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ২ হাজার প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করছে।
বর্ণাঢ্য আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ২০২৪-২৫ সেশনের নবীন শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানাল বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাকৃবি শাখা। শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে আয়োজিত নবীনবরণ ও ক্যারিয়ার গাইডলাইন প্রোগ্রামে অংশ নেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী।
অনুষ্ঠানে শাখা শিবিরের সভাপতি আবু নাছির ত্বোহার সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম। এছাড়া অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভোস্ট কাউন্সিলের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. রহুল আমিন, মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. আবু জোফার মো. মোসলেহ উদ্দিন, কৃষিতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো মশিউর রহমান, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেনসহ আরও অনেকে।
নবীনবরণ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠ সাজানো হয় ফুল, ব্যানার ও লাল গালিচায়, পাশাপাশি ছবি তোলার জন্য রাখা হয় বাসের আদলে তৈরি বিশেষ স্টল এবং মতামত জানাতে ‘ছাত্রশিবির নিয়ে ভাবনা বোর্ড’। সকাল সাড়ে ৮টা থেকে নবীনরা জমায়েত হতে থাকে। তাদের জন্য উপহার হিসেবে ব্যাগ, টি-শার্ট, প্যাড, বই, কলমদানি ও চাবির রিং প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে কৃষিবিষয়ক বিভিন্ন সেক্টরে সফল শিবিরের সাবেক নেতারা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন, আর বক্তৃতার বিরতিতে ইঙ্গিত সংসদের শিল্পীরা ইসলামী সঙ্গীত পরিবেশন করেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, ইসলামী ছাত্রশিবির সবসময় লেজুড়বৃত্তিক রাজনীতির বিপক্ষে। ইসলাম ও রাষ্ট্রের স্বার্থে যারা কাজ করবে, শিবির তাদের সহযোগিতা করবে কিন্তু কখনো লেজুড়বৃত্তি করবে না। এই প্রজন্মে অন্ধ আনুগত্য, ভাই পলিটিক্স চলবে না। এখন আর জোর করে মিছিলে নিয়ে যাওয়ার কথা বলারও সাহস কেউ পাবে না, ৫ আগস্টের কবর রচনা হয়ে গেছে।
সমাপনী বক্তব্যে শাখা সভাপতি আবু নাসির ত্বোহা বলেন, ‘বাকৃবির নবীন শিক্ষার্থীরা সত্যিই ভাগ্যবান, কারণ দীর্ঘ ৩৪ বছর পর আমরা আবার এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পেরেছি।
রাঙামাটিতে কোটাবিরোধী ঐক্য জোটের ডাকা ৩৬ ঘণ্টার হরতাল বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় প্রত্যাহার করে নিয়েছে আন্দোলনকারীরা।
সংগঠনটির নেতারা বলেন, যারা হরতাল পালনে আমাদের সহযোগিতা করেছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। ২১ নভেম্বর পরিক্ষা স্থগিত হওয়ায় আমরা হরতাল প্রত্যাহার করে নিয়েছি।
কোটাবিরোধী ঐক্য জোটের নেতা নুরুল আলম বলেন, নিয়োগ পরিক্ষা স্থগিত হোক আমরা এটা চাইনি। আমরা বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলেছি। আমরা হরতাল প্রত্যাহার করে নিচ্ছি। আমাদের আন্দোলন থেমে যায়নি। আমাদের আন্দোলন চলমান থাকবে। আগামীকাল শনিবার পর্যন্ত অপেক্ষা করব জেলা পরিষদ নির্দিষ্ট কোনো বার্তা আমাদের দিচ্ছে কি না।
আমাদের ছয় দাবি হলো- ‘৭% কোটা, ৯৩% মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, প্রশ্নপত্র ফাঁস অনিয়মের অভিযোগের কারণে শিক্ষা ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে প্রশ্নপত্র ট্রেজারির মাধমে সংরক্ষণ, পরিক্ষা খাতার মূল্যায়ন জেলা প্রশাসনের অধীনে করা, নিয়োগ পরিক্ষার আগে উপজেলা কোটা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা এবং পরিক্ষা শেষে সকল পরিক্ষার্থীর নাম, রোল নম্বর এবং ঠিকানা প্রকাশ করা।
এদিকে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদে শিক্ষক নিয়োগে কোটা নয়, মেধাকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবিতে বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে আজ শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় কোটাবিরোধী ঐক্যজোট।
সকাল থেকে হরতালের সমর্থনে রাঙামাটি শহরের বনরূপা, তবলছড়ি, দোয়েল চত্বরসহ ৮-১০টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অবস্থান নিয়েছিল আন্দোলনকারীরা। এতে স্কুল-কলেজ ও অফিসগামী সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছিল। হরতালের অংশ হিসেবে বিভিন্ন সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেছে। এতে রাঙামাটির সঙ্গে চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি শহরের একমাত্র সিএনজি সার্ভিসসহ শপিংমলগুলোও কার্যত বন্ধ ছিল।
বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের যোগ্য প্রভাষকদের ভূতাপেক্ষ পদোন্নতি জিও (GO) জারির দাবিতে সারাদেশের মতো মাগুরাতেও ‘NO PROMOTION NO WORK’ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে সরকারি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের শহীদ মিনার চত্বরে প্রভাষক পরিষদের ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
জানা যায়, বিসিএস সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারের ৩২তম থেকে ৩৭তম ব্যাচের প্রভাষকরা দীর্ঘদিন ধরে সহকারী অধ্যাপক পদে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির ন্যায়সঙ্গত দাবি জানিয়ে আসছেন। তবে দীর্ঘ অপেক্ষার পরও জিও জারি না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তারা। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা দেশব্যাপী কোনো পদোন্নতি নেই, কোনো কাজ নেই কর্মসূচি পালন করছেন।
ওই কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন, ইংরেজি প্রভাষক মো. রাজিবুল হাসান (৩৪তম বিসিএস), গণিতের প্রভাষক সৈয়দ ইমরুল হাসান (৩৩তম বিসিএস), রসায়ন প্রভাষক লিটন সরকার (৩৬তম বিসিএস), অর্থনীতির প্রভাষক শিউলি বিশ্বাস (৩৫তম বিসিএস), দর্শন প্রভাষক মো. মিন্টু মিয়া (৩৬তম বিসিএস) এছাড়া আরও অনেক প্রভাষক এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
বক্তারা বলেন, যোগ্যতার ভিত্তিতে ন্যায্য পদোন্নতি পাওয়া তাদের অধিকার। দ্রুততম সময়ে ভূতাপেক্ষ পদোন্নতির জিও জারি করে সংকট নিরসনের জন্য তারা সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তারা।
শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের নবগঠিত কমিটির মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে সদর উপজেলা বিএনপির কার্যালয়ে কলেজ শাখা নবগঠিত কমিটির সভাপতি আব্দুল্লাহ আল কোরাইশীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেত্রী জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও শেরপুর-১ সদর আসনের বিএনপির প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরপুর সদর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আলহাজ মো. হযরত আলী, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি সাইফুল ইসলাম স্বপন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব নেয়ামুল হাসান আনন্দ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসেম সিদ্দিকী বাবু, সাধারণ সম্পাদক নাঈম হাসান উজ্জ্বল, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকির হোসেন, শেরপুর সদর উপজেলা যুবদলের সভাপতি পারভেজ আহমেদ, শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রায়হান ইসলাম রাব্বি, সিনিয়র সহসভাপতি সম্রাট আহমেদ সিহাব, সাংগঠনিক সম্পাদক নিতামনি আক্তার নীরাসহ আরও অনেকে।
এ সময় ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের সঠিক পথে চলার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এমপি প্রার্থী ডা. সানসিলা জেবরিন প্রিয়াঙ্কা বলেন, আমরা শেরপুর সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসকে সুন্দর ও শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। ছাত্রদলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে লেখাপড়া করে নিজেকে গড়ে তোলার পাশাপাশি স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আদর্শকে সবার মাঝে ছড়িয়ে দিতে হবে। মাদকমুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত শেরপুর গড়ে তুলতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপি নেতা আলহাজ মো. হযরত আলী বলেন, কোন অছাত্র ছাত্রদল করতে পারবেনা। তার যুবদলসহ অন্যসংগঠন করার সুযোগ রয়েছে। ছাত্রদলের কেউ নেশাগ্রস্ত বা চাঁদাবাজির সাথে যুক্ত হলে ছাত্রদলে থাকতে পারবেনা।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে ঢাকা মহানগরের সরকারি সাত কলেজের সমন্বয়ে (ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, মিরপুর সরকারি বাংলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা মহিলা কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ও কবি নজরুল সরকারি কলেজ) ‘ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার জন্য সরকার নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের খসড়া অধ্যাদেশের ওপর শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সুধীজনের কাছ থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি মতামত পাওয়া গেছে। অনলাইনে প্রাপ্ত ও প্রত্যক্ষ মতামত পর্যালোচনা করে খসড়াটি পুনর্মূল্যায়ন ও পরিমার্জনের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ।
মানসম্মত শিক্ষা, সময়মতো পরীক্ষা গ্রহণ ও ফল প্রকাশ-এ সব বিষয়ে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক চাহিদাকে সামনে রেখে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি অধ্যাদেশ ২০২৫’-এর খসড়া প্রণয়ন করে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগে পাঠানো হয়।
খসড়া অধ্যাদেশটি গত ২৪ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে অংশীজন/সর্বসাধারণের মতামত আহ্বান করা হয়। এ বিষয়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক এবং সুধীজনের কাছ থেকে পাঁচ হাজারেরও বেশি মতামত পাওয়া যায়। অনলাইন ও সরাসরি মতামত গ্রহণের পাশাপাশি শিক্ষক, শিক্ষার্থী, শিক্ষাবিদ ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এ পর্যন্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উদ্যোগে তিনটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
এছাড়া, খসড়া অধ্যাদেশের উপর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের মতামত গ্রহণ করে মতামত সংগ্রহ কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ প্রাপ্ত প্রতিটি মতামত আইনগত ও বাস্তবতার নিরিখে গুরুত্ব সহকারে পর্যালোচনা করছে। অনলাইনে প্রাপ্ত ও প্রত্যক্ষ মতামত পর্যালোচনা করে খসড়াটি পুনর্মূল্যায়ন ও পরিমার্জনের কাজ শুরু হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অধ্যাদেশ চূড়ান্তকরণসহ সামগ্রিক প্রক্রিয়া সম্পন্নকরণ কিছুটা সময়সাপেক্ষ। প্রস্তুতিকালীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রমের ধারাবাহিকতা কোনোভাবেই যেন ব্যাহত না হয় সে বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ সচেতন ও সক্রিয় রয়েছে। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজ পরিচালনার জন্য ইতোমধ্যে একজন অন্তর্বর্তী প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, ক্লাস পরিচালনা ইত্যাদি বিষয়ে অন্তর্বর্তী প্রশাসন, সাত কলেজের অধ্যক্ষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের অংশগ্রহণে ১১ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় করণীয় নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্তর্বর্তী প্রশাসন পরিচালনা এবং ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন ও পাঠদানের জন্য অন্তর্বর্তী প্রশাসনের অপারেশন ম্যানুয়েলও অনুমোদন করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন করে ক্লাস শুরুর তারিখ আগামী ২৩ নভেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।
দেশে উচ্চশিক্ষার গুরুত্ব, সংশ্লিষ্ট অংশীজনের ব্যাপকতা এবং সাত কলেজের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পদ সংরক্ষণ, কলেজগুলোর স্বাতন্ত্র্য, সম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা ও সংশ্লিষ্ট অন্য বিষয় সমন্বয়ের জটিলতা বিবেচনায় বস্তুনিষ্ঠভাবে এবং বিধিবদ্ধ পদ্ধতি অনুসরণ করে অধ্যাদেশের খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ হলেও এর মাধ্যমে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্য ও সমন্বিত সিদ্ধান্তে পৌঁছানো সম্ভব হবে বলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ বিশ্বাস করে।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা কার্যক্রমকে দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হিসেবে বিবেচনা করছে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং অভিভাবকসহ সকল অংশীজনের ন্যায্য স্বার্থ রক্ষা এবং দেশের উচ্চশিক্ষা ব্যবস্থার মানোন্নয়নে ইতিবাচক একাডেমিক পরিবেশ প্রতিষ্ঠা করা এ বিভাগের প্রধান লক্ষ্য। ব্যক্তিগত ধারণা, অসম্পূর্ণ তথ্য বা গুজবের ভিত্তিতে বিভ্রান্তি বা পারস্পরিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি না করে সবাই দায়িত্বশীল আচরণ করবেন-মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ এ প্রত্যাশা করে।
এছাড়া শিক্ষার্থীদের মূল্যবান শিক্ষা জীবন এবং সামগ্রিক শিক্ষা কার্যক্রম যাতে কোনোভাবেই ব্যাহত না হয়, সে বিষয়ে সকলকে সচেতন থাকতে বিশেষভাবে আহ্বান জানানো হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ কার্যক্রম শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের হাতে নির্ধারিত সময়ে বই পৌঁছে দিতে এবং সময় বাঁচাতে এবার অনলাইন পদ্ধতিতে চালান নিষ্পত্তি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
সম্প্রতি এনসিটিবির সচিব প্রফেসর মো. সাহতাব উদ্দিনের সই করা এক স্মারকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, মুদ্রণকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ২০২৬ শিক্ষাবর্ষের ইবতেদায়ি, মাধ্যমিক (বাংলা ও ইংরেজি ভার্সন), দাখিল, এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনাল এবং কারিগরি স্তরের বই মুদ্রণ ও সরবরাহ কাজ শুরু করেছে।
স্মারকে জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের জন্য নতুন কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে এনসিটিবির নির্ধারিত টেকনিক্যাল স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান থেকে পাঠ্যপুস্তক বুঝে নেওয়া এবং সরবরাহ করা বই গ্রহণের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনলাইনে চালানের অনুমোদন দেওয়ার কথা বলা বলা হয়েছে।
এতে আরও জানানো হয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোতেও পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ ও গ্রহণ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। এছাড়া প্রত্যেক জেলা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে নিজ নিজ ইউজার অ্যাকাউন্টে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নাম, মোবাইল নম্বর ও স্বাক্ষর হালনাগাদ করে আপলোড করতে হবে।
অনলাইন চালান ব্যবস্থাপনা প্রসঙ্গে স্মারকে বলা হয়েছে, জেলা/উপজেলা/থানা শিক্ষা কর্মকর্তাদের https://nctb.ihealthscreen.org ঠিকানায় প্রবেশ করে 'Chalan Management'-এ গিয়ে বিদ্যমান ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে অনলাইনে পাঠ্যপুস্তকের চালানের অনুমোদন দিতে হবে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, স্যার ইকবাল ছিলেন মেধা ও প্রতিভায় অনন্য। তিনি একাধারে একজন দার্শনিক, চিন্তাবিদ ও কবি, যিনি সমকালীন বিশ্বের রাজনৈতিক, সামাজিক ও আধ্যাত্মিক প্রবণতাকে গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি কেবল তাত্ত্বিক চিন্তায় সীমাবদ্ধ ছিলেন না; তার লেখনিতে এবং দর্শনে মানবরাজ্য, স্বাধীনতা, আত্মমর্যাদা ও সাম্যের মূল্যবোধ প্রতিফলিত হয়। স্যার ইকবালের চিন্তাধারা আজও শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং সাধারণ মানুষকে প্রেরণা জোগাচ্ছে।
সোমবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান মিলনায়তনে ‘Allama Iqbal’s Theory of ‘Khudi’—শীর্ষক আন্তর্জাতিক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন তিনি। আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের আয়োজনে সেমিনারে অতিথি বক্তারা আল্লামা ইকবালের ‘শাহীন’ (ঈগল) এবং ’খুদি’ এর ধারনা বিশ্লেষণ করেন।
সেমিনারে আলোচক ছিলেন পাকিস্তানের পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের উর্দু ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের পরিচালক অধ্যাপক ড. বাশিরা আম্ব্রিন এবং লাহোরের ইউনিভার্সিটি অব এডুকেশনের পরিচালক অধ্যাপক ড. ওহীদ উর রহমান খান। সেমিনার আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তোজাম্মেল হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন।
সেমিনারে অধ্যাপক ড. বাশিরা আম্ব্রিন বলেন, ‘খুদি’ হলো মানুষের আত্মচেতনা, শক্তি, মর্যাদা ও আলোকিত সত্তা, যা ব্যক্তিকে কর্মঠ, সাহসী, সৃজনশীল ও ঈমানী শক্তিতে উজ্জীবিত করে। এটি কোনো স্বার্থপরতা নয়, বরং কর্ম, সংগ্রাম ও লক্ষ্য স্থির করার মাধ্যমে ভাগ্যের নির্মাতা হওয়ার অনুপ্রেরণা। খুদি মানুষকে নিয়তি-নির্ভরতা থেকে মুক্ত করে এবং আত্মমর্যাদা বা ‘খুদ্দারি’ দ্বারা স্বাবলম্বী হতে শেখায়, কারণ ভিক্ষা ও দুর্বলতা খুদিকে নষ্ট করে। ইকবালের মতে, খুদির পূর্ণ বিকাশের তিনটি ধাপ হলো— ইতা’আত (অনুগত্য), জব্তে-নফ্স (আত্মসংযম) এবং নিয়াবত-ই-ইলাহি (খলিফাতুল্লাহ) হওয়া। ইকবালের মূল বক্তব্য হলো, খুদির জাগরণেই ব্যক্তিগত উন্নতি এবং মুসলিম উম্মাহর শক্তি, মর্যাদা ও নবজাগরণের পথ নিহিত।
অধ্যাপক ড. ওহীদ উর রহমান খান বলেন, আল্লামা ইকবালের দর্শনে শাহীন (ঈগল) হলো তার খুদি (আত্মসত্তা) ধারণার মূর্ত প্রতীক এবং আদর্শ মুসলিম ব্যক্তির রূপরেখা, যা উচ্চাকাঙ্ক্ষা, জাগতিক প্রলোভনমুক্ত জীবন, সম্পূর্ণ আত্মনির্ভরশীলতা, তীক্ষ্ণ আধ্যাত্মিক দূরদৃষ্টি এবং সাধারণের থেকে স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখে একাকীত্বে থাকার গুণাবলীকে নির্দেশ করে। শাহীনের জীবন হলো অবিরাম সংগ্রাম (জিহাদ-এ-আকবর), যা তাকে আত্ম-উপলব্ধি এবং উন্নতির পথে চালিত করে। মূলত, ইকবাল এই শক্তিশালী প্রতীকটি ব্যবহার করেছেন মুসলিম যুবসমাজকে তাদের হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারে অনুপ্রাণিত করতে এবং জড়তা ত্যাগ করে স্বাধীনতা, ক্ষমতা ও চেতনার নবজাগরণ ঘটাতে উৎসাহিত করার জন্য।
আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এতে প্রাধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপউপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সেমিনার বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. তোজাম্মেল হোসেন, থিওলজি ও ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দার আলী, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলাম মাওলা, IQAC এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. নাজিমউদ্দিন, আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের প্রফেসর ড. এ কে এম শামসুল হক সিদ্দিকী।