দক্ষ মানব সম্পদ গড়ার লক্ষ্যে ও বৈশ্বিক সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে দেশেই আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। শুরুতে ২টি স্কুল বা অনুষদের অধীনে ২টি ডিপার্টমেন্ট নিয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষামূলক কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫টি স্কুল বা অনুষদের অধীনে ১৪টি ডিপার্টমেন্টে ৪০টি প্রোগ্রাম চালু আছে। শুরু থেকে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব জব ওরিয়েন্টেড ও প্রফেশনাল বিভাগ চালু আছে সেগুলো হচ্ছে- বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং, টেক্সটাইল, ফ্যাশন ডিজাইন, ইইই, সিএসই, আইন, ম্যাথ, ফিজিক্স, এডুকেশন, বাংলা, ইংরেজি, ইসলামিক স্টাডি ও শারীরিক শিক্ষা বিভাগ। এ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা যেন প্রতিযোগিতায় নিজেদের চৌকস প্রমাণ করতে পারে সেজন্য শুরু থেকে মানসম্পন্ন শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। ইতোমধ্যে উত্তরা ইউনিভার্সিটি ৯টি সমাবর্তন শেষ করেছে। এ ইউনিভার্সিটি থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৩৩ হাজার শিক্ষার্থী ডিগ্রি অর্জন করে দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছে।
প্রতিষ্ঠাতা পরিচিতি:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির পরিচালনা কর্তৃপক্ষ অত্যন্ত দক্ষ ও যোগ্য, যাদের প্রায় সবাই স্বনামধন্য ও প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা প্রফেসর ড. এম. আজিজুর রহমান জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ের একজন খ্যাতিমান শিক্ষাবিদ ও অর্থনীতিবিদ। তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাগ্রিকালচারাল ইকোনোমিক্স ডিপার্টমেন্ট থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম স্থান অধিকার করে অনার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই ডিপার্টমেন্ট থেকে মাস্টার্স ডিগ্রিও লাভ করেন। বিশ্ব ব্যাংকের বৃত্তি নিয়ে তিনি আমেরিকায় উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করেন। ১৯৮৮ সালে আমেরিকার ভ্যান্ডারভিল্ট ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। দেশে ও বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে তিনি ৩০ বছর অধ্যাপনা করেন। ১৯৮৯ সাল থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত তিনি ইউএস অ্যাম্বাসির ইউএসএইডে ইকোনোমিক অ্যাডভাইজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ড. এম আজিজুর রহমান উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চ্যান্সেলর। শিক্ষাবিদ, প্রাবন্ধিক, গবেষক, সুলেখক ও সমাজসেবী প্রফেসর ড. ইয়াসমীন আরা লেখা হচ্ছেন এ ইউনিভার্সিটির বর্তমান ভাইস চ্যান্সেলর। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে অনার্স ও মাস্টার্স, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএড ও এমএড এবং ভারতের যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
ভিশন ও মিশন:
এক্সিলেন্স ইন হায়ার এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ -এই স্লোগানকে সামনে রেখে গবেষণায় বেশি জোর দিচ্ছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। এ ইউনিভার্সিটির ভিশন বা সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের প্রযুক্তিগত দিক থেকে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং আদর্শ নাগরিক, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও আলোকিত মানুষ সৃষ্টিকরণ।
উত্তরা ইউনিভার্সিটি জীবনঘনিষ্ঠ ও নৈতিক শিক্ষাদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। শুধু জ্ঞানার্জনের মাধ্যমেই আদর্শ নাগরিক সৃষ্টি হয় না। তাই উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে জ্ঞানভিত্তিক শিক্ষার পাশাপাশি মূল্যবোধ সম্পর্কেও দীক্ষা দেওয়া হয়।
স্থায়ী ক্যাম্পাস:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য হচ্ছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সকল নিয়মনীতি মেনে স্থায়ী ক্যাম্পাসে সম্পূর্ণ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। উত্তরা মডেল টাউনের থার্ড ফেইজ সংলগ্ন, প্রায় ৬ বিঘা জমির ওপর স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণ হয়েছে। ৯ তলা ভবনের এ ক্যাম্পাস দেখে যে কারও চোখ জুড়িয়ে যাবে। ভবনের গঠনশৈলী এতটাই আধুনিক, সবদিক থেকেই আলো-বাতাস ভবনের ভেতর প্রবেশ করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে খেলার মাঠ, যেখানে প্রতিনিয়ত নানা আয়োজন ও উৎসব চলতে থাকে। প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে তোলা হয়েছে দৃষ্টিনন্দন ও মনোমুগ্ধকর এই ক্যাম্পাস! চারপাশে সবুজে ঘেরা আর ক্যাম্পসের পাশ ঘিরে তুরাগ নদী বহমান। মূল ভবন দক্ষিণামুখী হওয়াতে প্রতিনিয়ত দখিনা বাতাস প্রবহমান এই ক্যাম্পাসে। লাল কৃষ্ণচূড়ার শামিয়ানা আর শুভ্র কাশফুলের দোলাসহ বিভিন্ন ঋতুর প্রকৃতি এখানে দৃশ্যমান!
যাতায়াত ব্যবস্থা:
আধুনিক রাজধানী ঢাকার উত্তরায় সুবিশাল ভবন নিয়ে নির্মিত হয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির স্থায়ী ক্যাম্পাস। এই ক্যাম্পাসের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো- ঢাকার যেকোনো প্রান্ত থেকে শিক্ষার্থীরা দ্রুত আসা-যাওয়া করতে পারে। এমনকি আশপাশে জেলা গাজীপুর, নরসিংদী, নারায়ণগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল থেকে খুব সহজে যাতায়াত করতে পারবে ছাত্রছাত্রীরা। আর মেট্রোরেল স্টেশন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের খুব সন্নিকটে হওয়ায় যাতায়াতব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত থাকতে হয় না অভিভাবককে।
শিক্ষা কার্যক্রম বাস্তবায়ন:
বর্তমানে উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে ১৪টি বিভাগ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করে যাচ্ছে। শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গবেষণার কাজেও ব্যাপক জোর দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে উত্তরা ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব পলিসি রিসার্স স্থাপন করেছে। শুরু থেকেই মানসম্পন্ন শিক্ষাকে সামনে রেখেই এ ইউনিভার্সিটির শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ইনস্টিটিউশনাল কোয়ালিটি অ্যাশিউরেন্স সেল (আইকিউএসি) গঠনের মাধ্যমে শিক্ষার অভ্যন্তরীণ গুণগতমান উন্নয়নের বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে।
সমৃদ্ধ ও আধুনিক লাইব্রেরি:
শুরু থেকেই এই ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীদের জন্য গ্রন্থাগার সেবা দেওয়ার ওপর জোর দিয়ে আসছে। সপ্তাহে ছয় দিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে গ্রন্থাগার। দৈনিক সংবাদপত্র ও রেফারেন্স বই পড়ার জন্য রয়েছে আলাদা কর্নার। শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের জন্য গ্রন্থাগারে বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যমের ২৫টি দৈনিক পত্রিকা রাখা হয় নিয়মিত। গ্রন্থাগারে রয়েছে লক্ষাধিক বই এবং জার্নাল-ম্যাগাজিন আছে প্রায় ১০ হাজার। এ ছাড়া গ্রন্থাগারে ব্যবহারকারীদের সহায়ক সেবা দেওয়ার জন্য রয়েছে গবেষণা প্রতিবেদন, ই-রিসোর্সের বিশাল সম্ভার, বিশ্বকোষ, অভিধান, হ্যান্ডবুক, ম্যানুয়েল ও এনজিও প্রকাশনা। ব্যবহারকারীরা ই-বুক, ই-জার্নাল ও ই-ম্যাগাজিন পড়তে ও ডাউনলোড করতে পারেন। গ্রন্থাগারে ব্যবহারকারীদের জন্য রয়েছে ওয়াইফাই সংযোগসহ কম্পিউটার ব্যবহারের সুযোগ। গ্রুপ স্ট্যাডি করার জন্য রয়েছে একাধিক বিশেষ কক্ষ। শিক্ষার্থীরা গ্রন্থাগারে না এসেও যেকোনো বইয়ের শিরোনাম, লেখক, কল নম্বর, কি-ওয়ার্ড ও প্রকাশক অনুযায়ী খুঁজতে পারেন ই-লাইব্রেরির সুবাদে। গ্রন্থাগারে শিক্ষকদের জন্য রয়েছে পৃথক ব্যবস্থাপনা।
গবেষণা ও প্রকাশনা:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রতিটি বিভাগই গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ফ্যাকাল্টিদের গবেষণা প্রবন্ধ দেশি ও আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হচ্ছে। প্রতি অনুষদ থেকে জার্নাল প্রকাশ করা হয় এবং গবেষণায় বিশেষ প্রণোদনা দেওয়া হয় শিক্ষকদের। এ ছাড়া বিভিন্ন অনুষদ থেকে নিয়মিতভাবে জার্নাল প্রকাশিত হচ্ছে। ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগ থেকে বিজনেস রিভিউ, আইন বিভাগ থেকে ল’ জার্নাল নিয়মিতভাবে প্রকাশিত হচ্ছে।
উত্তরা ইউনিভার্সিটির প্রত্যেক অনুষদে রিসার্চ সেল গঠিত হয়েছে, যেখানে গবেষণা বিষয়ক প্রশিক্ষণ এবং প্রজেক্ট পরিচালনা করা হয়। প্রতিবছর অসংখ্য শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরামণ্ডলী বিদেশে গবেষণা ও উচ্চশিক্ষা বিষয়ে পড়ালেখা করতে যাচ্ছে। এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গবেষণাকে উৎসাহিত করতে অভ্যন্তরীণ গবেষণা তহবিল গঠন, মানসম্মত গবেষণার জন্য ইনসেনটিভ প্রদান ও গবেষণাপত্র আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশে সহায়তা করে। উত্তরা ইউনিভার্সিটি শুধু ডিগ্রি প্রদানের জন্যই শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে না বরং ইউনিভার্সিটি প্রশাসন এবং শিক্ষকরা চেষ্টা করছেন মানসম্মত ও যুগোপযোগী শিক্ষার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক মানের গ্র্যাজুয়েট তৈরি করতে।
এমওইউ ও স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম:
শিক্ষার্থীদের জ্ঞানার্জন ও শিক্ষকদের জ্ঞানচর্চা আরও সমৃদ্ধ করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যাবশ্যক। তাই উত্তরা ইউনিভার্সিটি যুক্তরাজ্যের বেডফোর্ড শ্যায়ার ইউনিভার্সিটি ও অরচেস্টার ইউনিভার্সিটির সঙ্গে সহযোগিতার স্মারক স্বাক্ষর করেছে। কর্তৃপক্ষ কানাডার কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গেও সহযোগিতার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া উত্তরা ইউনিভার্সিটি সাম্প্রতিককালে কয়েকটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আয়োজন করেছে। এসব আন্তর্জাতিক সম্মেলন বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া, আসাম ও কলকাতায় অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ বছরই উত্তরা ইউনিভার্সিটি বিজনেস কনফারেন্সের আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন করেছে যেখানে আমেরিকা, জাপান ও ভারতসহ দেশ-বিদেশের খ্যাতিমান শিক্ষাবিদরা অংশগ্রহণ করেছেন। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে রয়েছে এমওইউ ও স্টুডেন্ট এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রাম। যার ফলে শিক্ষার্থীরা পাচ্ছে গ্র্যাজুয়েট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট, এমফিল ও পিএইচডি করার সুযোগ।
সম্মাননা ও সাফল্য:
মানসম্পন্ন শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার স্বীকৃতি হিসেবে এ ইউনিভার্সিটি সাম্প্রতিককালে বেশ কিছু সম্মাননায় ভূষিত হয়েছে। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে ‘দা বিজ অ্যাওয়ার্ড-২০১৮ (হংকং), এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, ২০১২, (দিল্লি), এশিয়াস বেস্ট বিজনেস অ্যাওয়ার্ড, সিঙ্গাপুর, ২০১৩, এশিয়ান সিইএফ বিজনেস স্কুল অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ (মুম্বাই), ইউজিসি অ্যাওয়ার্ড, ২০১৪ ও ২০১৫ (আইন বিভাগ) অন্যতম।
সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশে ক্লাব এবং ফোরাম:
শিক্ষার্থীদের একাডেমিক পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ ও বাজার উপযোগী দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ইউইউতে ১২টি ক্লাব ও ১৪টি বিভাগের প্রায় ১৪টি বিভাগীয় ফোরাম রয়েছে। এসব ক্লাব ও ফোরাম বছরজুড়েই জাতীয়পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের কো-কারিকুলার ও এক্সট্রা কারিকুলার কার্যক্রম, সেমিনার, সিম্পোজিয়াম, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে। এ ছাড়া পিঠা উৎসব, বসন্তবরণ, চৈত্রসংক্রান্তি, শিক্ষামেলা ও পাঠচক্রসহ জাতীয় অনুষ্ঠানগুলো বিশেষভাবে পালিত হয় এখানে। উচ্চশিক্ষার নিরন্তন পরিবেশ থাকায় মেধাবী শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষা কার্যক্রম সুন্দর ও সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে পারে। অরাজনৈতিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হওয়ায় নেই কোনো দ্বন্দ্ব, নেই ক্লাস বন্ধ হওয়ার চিন্তা, নেই সেশন জটের ভয়।
শিক্ষার্থীদের জন্য স্কলারশিপ:
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে প্রতি বছর তিনবার অর্থাৎ স্প্রিং, ফল ও সামার সেমিস্টারে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয়। উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে ছাত্রছাত্রীদের জন্য রয়েছে ১০% থেকে ১০০% পর্যন্ত স্কলারশিপ।
এ ছাড়া ক্ষুদ্র-নৃ গোষ্ঠী, নারী, জাতীয় পর্যায়ের খেলোয়াড়, জুলাই-বিপ্লবে আহত ও নিহতদের নিকটাত্মীয়দের জন্য রয়েছে বিশেষ স্কলারশিপ।
দক্ষ মানবসম্পদ ও গ্র্যাজুয়েটদের সফলতা:
সুযোগ্য ও দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা খাতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। দেশের অন্যতম এই বেসরকারি বিদ্যাপীঠটি শিক্ষা, গবেষণা ও বাস্তবভিত্তিক প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শুধু ডিগ্রি অর্জনের সুযোগই দিচ্ছে না, বরং তাদের আন্তর্জাতিক মানের প্রতিযোগিতায় উপযুক্ত করে তুলছে। ফলে এখানে থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থীরা বিসিএস ক্যাডার, জুডিশিয়াল সার্ভিস, আইন পেশা, ব্যাংক খাত, রপ্তানিমুখী শিল্প, কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রি, এনজিও এবং বহুজাতিক কোম্পানিতে সুপ্রতিষ্ঠিত ক্যারিয়ার গড়তে পারছেন। পাশাপাশি, টেক্সটাইল ও ইলেকট্রনিক শিল্প, তথ্যপ্রযুক্তি খাত, সফটওয়্যার ফার্ম, ই-কমার্স ও স্টার্টআপ জগতে তারা দক্ষতার সঙ্গে অবদান রাখছেন। শুধু তাই নয়, সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতেও রয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের গৌরবজনক উপস্থিতি। অনেকে আবার উচ্চশিক্ষা গ্রহণের পাশাপাশি নিজস্ব ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ গড়ে তুলে আত্মনির্ভরশীল তরুণ উদ্যোক্তা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেন। শিক্ষকতা পেশায়ও তারা অবদান রাখছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই বৈচিত্র্যময় কর্মসংস্থান ও পেশাগত সাফল্যই প্রমাণ করে উত্তরা ইউনিভার্সিটি শুধু একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়- এটি একটি দক্ষ মানবসম্পদ নির্মাণের কারখানা।
উচ্চপর্যায়ে কৃতিত্ব:
উত্তরা ইউনিভার্সিটির গণিত বিভাগের ছাত্ররা আন্ডারগ্র্যাজুয়েট গণিত অলিম্পিয়াড ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সালে অংশগ্রহণ করে সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় একাধিকবার প্রথম, তৃতীয়, চতুর্থ ও সপ্তম স্থান অর্জন করেছেন। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের কৃতী ছাত্রী মাহফুজা খাতুন শীলা জাতীয় সাঁতার প্রতিযোগিতা ২০১৬-তে জোড়া স্বর্ণপদক বিজয়ী হয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেছেন। শারীরিক শিক্ষা বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী মিনিতা সুপ্রিয়া মিজান ত্রপী ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত সপ্তম আন্তর্জাতিক কারাতে চ্যাম্পিয়নশিপ ২০১৬-তে বিশেষ সাফল্য অর্জন করেছেন। ইইই বিভাগের শিক্ষার্থী আতিকুর রহমান শরীফ তেল ও গ্যাসবিহীন একটি মোটরযান উদ্ভাবন করেছেন, যা সোলার এনার্জিতে মাত্র ১০ টাকা খরচে সারা দিন চালানো যায়। প্রায় সব অনুষদ এবং বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যতিক্রমধর্মী নানা সৃজনশীল কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এসব সৃজনশীল কর্মকাণ্ডের মধ্যদিয়ে শিক্ষার পরিবেশকে এক আনন্দঘন পরিবেশে পৌঁছে দিয়েছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি সুদক্ষ প্রশাসন এবং নিষ্ঠাবান শিক্ষক ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা।
স্বতন্ত্র ক্যাফে ও উন্নতমানের ক্যান্টিন:
শিক্ষার্থীদের জন্য এ বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে স্বতন্ত্র ক্যাফে ও উন্নতমানের ক্যান্টিন। সকাল-সন্ধ্যা সুস্বাদু খাবার মেলে সহজেই। ক্যাফেটোরিয়াটি শিক্ষার্থীদের প্রিয় আড্ডাস্থল হয়ে উঠেছে। প্রতিদিন শতাধিক শিক্ষার্থী এখানে সকালের নাশতা থেকে শুরু করে দুপুরের খাবার এবং ক্লাসের ফাঁকে চা-কফিতে সতেজতা খুঁজে নেয়। উন্নতমানের খাবার, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ ও স্বল্পমূল্যের কারণে ক্যাফেটোরিয়াটি শিক্ষার্থীদের কাছে দারুণ জনপ্রিয়। বন্ধুদের সঙ্গে হাসি-আড্ডা, পাঠচর্চা কিংবা হালকা বিশ্রাম- সব কিছুতেই ক্যাফেটোরিয়ার ভূমিকা অনন্য।
বক্তব্য
মো. আদনান রহমান, পিএইচডি
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর, স্কুল অব বিজনেস
ডিরেক্টর, ব্র্যান্ড, কমিউনিকেশন অ্যান্ড পিআর
বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক উচ্চশিক্ষা পরিবেশে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্র্যান্ড ইমেজ তার সামগ্রিক সাফল্যে বড় ভূমিকা রাখে। সেই ভাবনাকে সামনে রেখে উত্তরা ইউনিভার্সিটি চালু করেছে নতুন মিডিয়া ক্যাম্পেইন ও আধুনিক প্রচারণা কৌশল। শুধু পাঠ্যক্রম নয়, আজকের শিক্ষার্থীরা দেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল্যবোধ, পরিবেশ, অ্যালামনাই সাফল্য ও সামাজিক দায়বদ্ধতা। এসবই একটি শক্তিশালী ব্র্যান্ডের উপাদান। বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পেইনের মূল লক্ষ্য হলো বাস্তব অভিজ্ঞতা এবং সাফল্যের গল্প তুলে ধরা। আমরা চাই শিক্ষার্থীরা যেন আমাদের বর্তমান এবং প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের গল্প থেকে অনুপ্রেরণা পায়। এভাবেই আমরা বিশ্বাসযোগ্যতা এবং মানবিক সংযোগ তৈরি করতে পারব। আমরা ইউটিউব, ফেসবুক এবং লিংকডইন-এর মতো প্ল্যাটফর্মে সক্রিয়। বিশেষ করে ভিডিও কনটেন্ট এবং ইন্টারেক্টিভ পোস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ছে।
উত্তরা ইউনিভার্সিটি ভবিষ্যতে আরও ডেটাচালিত মার্কেটিং স্ট্র্যাটেজির দিকে এগোচ্ছে। আমরা এআই ও অ্যানালিটিক্স ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের চাহিদা বুঝে কাজ করতে চাই। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আমাদের দৃশ্যমানতা বাড়াতে কাজ করছি। সঠিক ব্র্যান্ডিং-এর মাধ্যমে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেবল শিক্ষার্থী আকর্ষণই করে না বরং সমাজে একটি ইতিবাচক পরিবর্তনের বার্তাও পৌঁছে দিতে পারে।
ড. শাহ আহমেদ
অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর ও চেয়ারম্যান, ইংরেজি বিভাগ
ডিরেক্টর, অফিস অব স্টুডেন্টস অ্যাফেয়ার্স
উত্তরা ইউনিভার্সিটি
উত্তরা ইউনিভার্সিটিতে বিশ্বমানের পড়ালেখার জন্য আমরা বিশ্বমানের সিলেবাস তৈরি করেছি। ইউজিসির নিয়ম মেনে আমাদের দেশের সেরা ইউনিভার্সিটির সিলেবাস ও বিশ্বের টপ ইউনিভার্সিটির সিলেবাসকে সমন্বয় করে এমন একটা উন্নতমানের সিলেবাস তৈরি করেছি যাতে আমাদের ছাত্ররা এই সিলেবাসের ভিত্তিতে দেশে ও বিদেশে চাকরি পেতে পারে। প্রতিটি ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের সফট স্কিলগুলো গুরুত্বসহকারে শেখানো হয়। এতে চাকরির বাজারে অন্যদের থেকে তারা বেশি এগিয়ে থাকে। এ বিশ্ববিদ্যালয় অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় যে শিক্ষাসেবা প্রদান করে থাকে, সে তুলনায় ছাত্রদের শিক্ষা ব্যয় অত্যন্ত কমই মনে হয়। প্রচুর ল্যাব আছে, লাইব্রেরিতে হাজার হাজার বই, কো-কারিকুলার কার্যক্রম, আন্তর্জাতিক মানের ক্লাসরুম, লজিস্টিক্স সাপোর্ট, ইন্টারনেট, মাল্টিমিডিয়াসহ সব সুবিধা দেওয়া হয় শিক্ষার্থীদের। আমাদের উত্তরা ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের প্রথমসারির ইউনিভার্সিটির মধ্যে অন্যতম।
আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যথেষ্ট গবেষণা ফান্ড আছে। সে ফান্ড নিয়ে শিক্ষকরা বিভিন্ন ফিল্ডে রিসার্স করেন। নতুন নতুন নলেজ, নতুন নতুন থিওরি আবিষ্কার করেন। তবে ফ্যাকাল্টিকে প্রজেক্ট জমা দেওয়ার পরে প্রজেক্ট এক্সেপ্ট হওয়ার পরে সেই ফান্ডটা দিয়ে থাকে। এক কথায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা সুনির্দিষ্ট গাইডলাইন মেনে রিসার্স ফান্ড পেতে হয়।
শিক্ষার পরিবেশ বিবেচনায় উত্তরা বিশ্ববিদ্যালয় অদ্বিতীয়। এ ইউনিভার্সিটির চারদিক প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা, শহরের কোলাহল মুক্ত, নির্ভেজাল পরিবেশে সুন্দর অবকাঠামোতে গড়ে উঠেছে উত্তরা ইউনিভার্সিটি। ঢাকা ও এর আশপাশে জেলা থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বাসের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে আসা-যাওয়া করতে পারে। শিক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সেবা চালু রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগে আজ শনিবার ১ নভেম্বর ২০২৫ইং তারিখে অনুষ্ঠিত হলো “প্রমাণভিত্তিক প্রিসিশন অনকোলজি: শিক্ষা, গবেষণা ও ক্লিনিক্যাল প্র্যাকটিসের সমন্বয়” শীর্ষক ফায়ারসাইড আলোচনা সভা। অনুষ্ঠানের মূল আলোচনায় প্রিসিশন অনকোলজির ভবিষ্যৎ, এআই-নির্ভর ক্যান্সার চিকিৎসা, আধুনিক প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা এবং গবেষণাভিত্তিক চিকিৎসার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়।
ফায়ারসাইড আলোচনা সভা প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডা. মো. শাহিনুল আলম। তিনি বলেন, এ ধরনের অনুষ্ঠান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য অত্যন্ত শিক্ষণীয়। অনকোলজি বিভাগে এআই-ভিত্তিক অত্যাধুনিক রেডিওথেরাপি মেশিন কেনার জন্য ৩৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রয়োজনে আরো বরাদ্দ দেয়া হবে। বিএমইউ-তে একটি ক্যান্সার গবেষণা ও চিকিৎসা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে, যাতে রোগীরা আধুনিক সেবা পান এবং শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিতে পারেন। এ বিষয়ে শিগগিরই ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুরের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি (এমওইউ) হবে।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালক ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল ইউনিভার্সিটির ক্লিনিক্যাল অনকোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর ডা. সৈয়দ মো. আকরাম হুসাইন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর ডা. হান চং তোহ, ডেপুটি সিইও (স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপস), ন্যাশনাল ক্যান্সার সেন্টার সিঙ্গাপুর এবং প্রফেসর, ডিউক-এনইউএস মেডিকেল স্কুল। তিনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রিসিশন অনকোলজির অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে উচ্চমানের ক্যান্সার চিকিৎসা ও গবেষণার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন তিনি।
অনুষ্ঠানে অনকোলজি বিভাগের এমডি ও এফসিপিএস রেসিডেন্টরা তাঁদের কারিকুলাম শেয়ার করেন এবং কেস প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন। ছাত্র-ছাত্রীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠানটি প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয় পরিবেশ তৈরি করে।
অনুষ্ঠানে ‘এআই ইন রেডিওথেরাপি কনটোউরিং (AI in Radiotherapy Contouring)’ বিষয়ে উপস্থাপনা করেন ডা. মাহমুদ হাসান, নওরিন এম ভিশন টিম।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ.এস.এম সালেহ আহমেদ বলেছেন, বিশ্ব আজ নানা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যার মধ্যে অন্যতম হলো প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের দ্রুত গতি। এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মেলানো এখন বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতির স্বার্থে আমাদের আরও প্রযুক্তিনির্ভর হতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আপনাদের মাধ্যমেই এই চ্যালেঞ্জগুলো সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব। আপনারা শুধু দক্ষ প্রকৌশলী বা প্রযুক্তিবিদ হিসেবেই নয় বরং সৎ, পেশাদার, দেশপ্রেমিক ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন নাগরিক হিসেবেও দেশের সেবা করবেন এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
বৃহস্পতিবার চুয়েটের কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এতে গেস্টস অব অনার ছিলেন চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. সালেহ হাসান নকীব। সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম বিভাগের বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়াউদ্দীন, তড়িৎ ও কম্পিউটার কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী দেলোয়ার হোসেন, পুর ও পরিবেশ কৌশল অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. আসিফুল হক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. এ.এইচ. রাশেদুল হোসেন, মেকানিক্যাল অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. কাজী আফজালুর রহমান এবং শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন পুরকৌশল বিভাগের ২০ ব্যাচের ছাত্র আসহাব লাবিব ও ইইই বিভাগের ২০ ব্যাচের ছাত্রী উম্মে মাবরুরা উমামা।
বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ। এর পরপরই ২৩তম বিশ্ববিদ্যালয় দিবস উপলক্ষে এক আনন্দ র্যালি রেব করা হয়। র্যালিতে রং-বেরঙের প্ল্যাকার্ড ও ফেস্টুন সহকারে চুয়েটের শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও ছাত্র-ছাত্রীরা অংশগ্রহণ করেন। পরে কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়াম-সংলগ্ন এলাকায় বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের স্মারক বৃক্ষরোপণ করা হয়। চুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ১২৬ জন মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২৩ লাখ ৩৪ হাজার টাকার বৃত্তি প্রদান করা হয়।
গেস্টস অব অনারের বক্তব্যে চুয়েটের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মাহমুদ আব্দুল মতিন ভূইয়া বলেন, বর্তমানে চুয়েট খুব দ্রুত আধুনিকায়নের পথে অগ্রসর হচ্ছে। আমাদের অনেক বাধা রয়েছে কিন্তু এরপরেও আমরা চুয়েটে আধুনিক গবেষণাগার নির্মাণ ও ডিজিটাল সেবাকে সমুন্নত করছি যাতে স্মার্ট ক্যাম্পাস গঠনের উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা ভবিষ্যতে চুয়েটকে বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে বিনির্মাণ করতে পারি। আমরা এমন এক শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তুলতে চাই যেখানে জ্ঞান, উদ্ভাবন এবং মানবিকতা একসূত্রে গাঁথা থাকবে।
আনোয়ারা উপজেলার দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আধুনিক শিক্ষাব্যবস্থার সুবিধা তো দূরের কথা, মৌলিক নিরাপদ শ্রেণিকক্ষের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত। বিগত পাঁচ বছর ধরে জরাজীর্ণ টিনশেড ঘরে চলছে এই বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
গত ৫ বছর আগে পুরোনো সেমিপাকা স্কুলটি ভেঙে নতুন স্কুল ভবন তৈরির কাজ শুরু করে। সেই ভবনের কাজ শুরুর কিছুদিন পরই কাজ বন্ধ করে পালিয়ে যায় ঠিকাদার।
সরেজমিনে ভবন নির্মাণকাজ পরিদর্শন করে দেখা যায়, বিল্ডিংয়ের স্তম্ভের কয়েকটি জায়গায় পাইলিং শেষ করা হয়েছে। তবে এই লোহাগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় রাখা হয়েছে। জম ধরেছে ফেলে রাখা এসব লোহাগুলোতে। এছাড়া আর কোনো কাজ করা হয়নি। স্কুলের পাশে জায়গা না থাকায় প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে গিয়ে বেড়িবাঁধের পাশে টিন দিয়ে কয়েকটি রুম করে চালানো হচ্ছে স্কুলের কার্যক্রম।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সদস্য আবুল হোসেন বলেন, ‘এই এলাকার গণজনবসতিপূর্ণ এলাকা, প্রায় ৫ হাজার বাসিন্দাদের এই একটিই স্কুল। আশেপাশে আর স্কুল নেই, বিভিন্ন রাজনৈতিক এবং স্থানীয় সমস্যার কারণে স্কুলের কাজটি সম্পন্ন হয়নি। যার কারণে এই এলাকার ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।
জানা যায়, ২০২১ সালে দিকে মাল্টিপারপাস ডিজাস্টার শেল্টার প্রজেক্ট (এমডিএসপির) আওতায় দক্ষিণ তৈলারদ্বীপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণকাজ শুরু করা হয়। প্রকল্পটির বরাদ্দ দেওয়া হয় ৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা। কাজ শুরু হওয়ার পর সংশ্লিষ্টরা পাইলিংয়ের কাজ করে যাতে ব্যয় হয় ৯০ লাখ টাকার মতো। এরপর কাজটি বন্ধ হয়ে যায়। বর্তমানে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। তামান্না আক্তার নামের স্কুলের ৫ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী বলে, ক্লাসে বর্ষাকালে বৃষ্টি পড়ে, গ্রীষ্মে টিনের গরমে পড়তে পারি না। আমাদের আশেপাশের বন্ধুরা সুন্দর সুন্দর স্কুলে পড়ে আমরাও চাই টিনের স্কুলের পরিবর্তে নতুন একটা স্কুল হোক, যাতে আমরা ভালো করে পড়তে পারি।
স্কুলের প্রধান শিক্ষক জয়নাব বেগম বলেন, এই স্কুলে বর্তমানে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষক রয়েছে। ১৯৯৬ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০১৩ সালে এটি জাতীয়করণ করা হয়। আগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি ছিল ২০২১ সালে স্কুল স্থানান্তরের পর থেকে শিক্ষার্থী কমে যাচ্ছে। জরাজীর্ণ এই টিনের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার পরিবেশ না থাকায় আমাদের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। এ সময় তিনি দ্রুত স্কুলের নির্মাণকাজ শুরু করার দাবি জানান।
এ বিষয়ে আনোয়ারা উপজেলা প্রকৌশলী জাহেদুল আলম চৌধুরী বলেন, প্রকল্পটি বাতিল করা হয়েছে। বিস্ট্রিম প্রকল্পের আওতায় আরেকটি প্রকল্পের মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করা হবে। আপাতত অস্থায়ী স্কুলটি সংস্কার করে শিক্ষার পরিবেশ তৈরি করা হবে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের আয়োজনে দুই দিনব্যাপী ৭ম বার্ষিক অ্যাথলেটিক্স প্রতিযোগিতা- ২০২৫, গতকাল বিকেলে সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় মোট ৩৬টি ইভেন্টে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশগ্রহণ করেন। গতকাল বিকেলে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল আজীম আখন্দ। তিনি শিক্ষার্থীদের খেলাধুলায় পারদর্শিতা ও সক্রিয় অংশগ্রহণের প্রশংসা করে বলেন, “সুস্থ ও সুন্দর জীবন গড়ে তুলতে হলে খেলাধুলার চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।”।
২৭ অক্টোবর প্রথম দিনের সকালে ছাত্রদের দীর্ঘ লাফ ও ছাত্রীদের চাকতি নিক্ষেপ ইভেন্টের মধ্য দিয়ে প্রতিযোগিতার সূচনা হয়। সকাল ১০টায় আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন ও অ্যাথলেটিক্স পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মতিউর রহমান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল অনুষদের ডিন, শিক্ষার্থী কল্যাণ ও পরামর্শদান কেন্দ্রের পরিচালক, প্রক্টর, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও অতিথিবৃন্দ। জাতীয় সঙ্গীত ও পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বর্ণাঢ্য এ আয়োজনের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন শরীরচর্চা শিক্ষা বিভাগের পরিচালক জনাব মো. মাহফুজ রেজা।
দুই দিনের প্রতিযোগিতায় ছাত্রদের মধ্যে সর্বোচ্চ পদক অর্জন করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল চ্যাম্পিয়ন হয়, এবং রানার্স আপ হয় শেখ রাসেল হল। অপরদিকে ছাত্রীদের মধ্যে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল চ্যাম্পিয়ন এবং আলেমা খাতুন ভাসানী হল রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
ব্যক্তিগত ইভেন্টে দ্রুততম মানব হয়েছেন টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র মো. ফেরদাউস, এবং দ্রুততম মানবী হয়েছেন এফটিএনএস বিভাগের ছাত্রী সমাপ্তী খান। সেরা খেলোয়াড় (ছাত্র) নির্বাচিত হয়েছেন মো. ফেরদাউস (টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) এবং রানার্স আপ হয়েছেন মো. শাকিল আহমেদ (ফার্মেসি বিভাগ)। সেরা খেলোয়াড় (ছাত্রী) নির্বাচিত হয়েছেন তাবাচ্ছুমা আক্তার (মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ) এবং রানার্স আপ হয়েছেন সমাপ্তী খান (এফটিএনএস বিভাগ)।
এছাড়া শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অংশগ্রহণে ১০০ মিটার দৌড় ও গোলক নিক্ষেপ ইভেন্টও অনুষ্ঠিত হয়। ছাত্রদের ৪×১০০ মিটার রিলে ইভেন্টের মাধ্যমে দুই দিনব্যাপী এ প্রতিযোগিতার সকল ইভেন্টের সফল সমাপ্তি হয়।
আগামী ২০২৬ শিক্ষাবর্ষ সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি লটারির মাধ্যমে হবে নাকি ভর্তি পরীক্ষার ভিত্তিতে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তীব্র আলোচনা। এদিকে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ডিজিটাল লটারি চালু রাখার দাবি জানিয়েছে।
অন্যদিকে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ভর্তি পরীক্ষার পক্ষে মত এ নিয়ে চলমান বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তার মধ্যে বুধবার (২৯ অক্টোবর) বৈঠকে বসতে যাচ্ছে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো।
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার পরিচালক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল বলেন, আগামী শিক্ষাবর্ষে স্কুল ভর্তি নিয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। লটারি পদ্ধতি থাকবে নাকি ভর্তি পরীক্ষা ফিরবে সে বিষয়ে আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। সেখানেই আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এর আগে, এবার সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষকরা ভর্তির সময় পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। সোমবার (২৭ অক্টোবর) দেশের সরকারি স্কুলের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি (বাসমাশিস) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব রেহেনা পারভীনের কাছে লিখিতভাবে এ বিষয়ে আবেদন করেন।
আবেদনে শিক্ষকরা বলেছেন, শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ ও অভিভাবকের উৎকণ্ঠা লাঘবে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সব শ্রেণিতে লটারির পরিবর্তে প্রতিযোগিতামূলক ভর্তি পরীক্ষা পুনর্বহাল করা জরুরি। অন্যথায়, দেশের বিভিন্ন স্থানে অস্থিতিশীল বা বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।
এছাড়াও সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সব শ্রেণিতে লটারির মাধ্যমে ভর্তি ও সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম।
এক বিবৃতিতে তারা বলেন, লটারির মাধ্যমে ভর্তি ব্যবস্থা চালু করা হলে ভর্তি প্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতার আওতায় আসবে। পাশাপাশি কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ভর্তি কোচিংয়ের চাপ থেকে রেহাই পাবে।
নরসিংদীতে বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকতনে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ কৃতি ছাত্রীদের সংবর্ধনা ও ক্রেস্ট প্রদান অনুষ্ঠান মঙ্গলবার দুপুরে নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকতন মাঠে আয়োজন করা হয়েছে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন ম্যানেজি কমিটির সভাপতি, নরসিংদী সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি, নরসিংদী জেলা বিএনপির সহসভাপতি খবিরুল ইসলাম বাবুল।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাটিরপাড়া কালীকুমার ইনস্টিটিউশন স্কুল অ্যান্ড কলেজ এর গভর্নিং বডির সভাপতি মোহাম্মদ ইলিয়াস আলী ভূইয়া, বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজসেবক মো. ইলিয়াস মিয়া, নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন পিটিএ শিক্ষক-অভিভাবক কমিটির সভাপতি মো. মুকুল হোসেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নরসিংদী বালিকা উচ্চ বিদ্যানিকেতন এর প্রধান শিক্ষক তুষার কান্তি ঘোষ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে খবিরুল ইসলাম বাবুল শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, আজকের কৃতিত্ব ভবিষ্যতের দ্বার উন্মোচনের একটি ধাপ মাত্র। শিক্ষা শুধু সার্টিফিকেট অর্জনের বিষয় নয়, বরং নৈতিকতা, দেশপ্রেম, সময়ের মূল্য দেওয়া এবং মানুষ হয়ে ওঠার এক নিরবিচার প্রস্তুতি। তোমাদের মধ্যে থেকেই আগামী দিনের শিক্ষক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, প্রশাসক ও সমাজ সংস্কারক গড়ে উঠবে। তাই আজ থেকেই লক্ষ্য স্থির করে এগিয়ে যেতে হবে।
অনুষ্ঠানে অভিভাবকরা, সুশীল সমাজের গণ্যমান্য ব্যক্তিরা এবং ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে কৃতি শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় পর্যাপ্ত অবকাঠামো ও শ্রেণি কক্ষ সজ্জিত প্রাথমিকের জন্য পৃথক শিক্ষক নিয়োগ থাকা সত্ত্বেও আনুপাতিক হারে বাড়ছে না শিক্ষার গুণগত মান। আশানূরৃপ বাড়ছে না শিক্ষার্থী। শিক্ষকদের নানামুখী প্রশিক্ষণ কোর্স করিয়েও শুধুমাত্র আন্তরিক পাঠদানের কারণে কাঙ্ক্ষিত হারে বাড়ছে না কোমলমতি শিক্ষার্থীর সংখ্যা। অনুন্নত অবকাঠামো ভাঙা চূড়া টিনের ঝাপের বেড়া দিয়ে গড়া বেসরকারি কিন্ডারগার্টেন ও নূরানী মাদ্রাসাগুলোতে হুহু করে বাড়ছে ছাত্র-ছাত্রী। অথচ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারি প্রাথমিকের চেয়ে অপেক্ষাকৃত দক্ষ-প্রশিক্ষণহীন শিক্ষকরা মেধা নয় শ্রম দিয়ে এগিয়ে নিচ্ছে, অভিভাবকদের আকৃষ্ট করছে শিখন লিখনে । যে কারণে অনুপাতিক শিক্ষার্থী পাচ্ছে তারা। অপরদিকে, আধুনিক অবকাঠামো শিক্ষা উপকরণ সরকারি সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত চাকরি ভাবাপন্নতা বেতন প্রাপ্তি বিভাগীয় প্রশিক্ষণ থাকা সত্ত্বেও দায়বদ্ধতা, জবাবদিহিতার অভাব, পাঠদানে কিছু কিছু শিক্ষকের অবহেলা, আন্তরিকতার অভাব, অভিভাবকদের সাথে যোগাযোগের দীর্ঘ সূত্রতা, নূরানী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠার সরকারি নীতিমালার অভাব, শিক্ষার্থী ভর্তির টার্গেট না থাকা, অনেকগুলো প্রধান শিক্ষকের পদ খালী, অনেক গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় না থাকা, রেকর্ডকৃত জমি না পাওয়া, ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি অভিভাবকদের দুর্বলতা, মাদ্রাসাগুলো অধিক সময় যত্নসহকারে পাঠদানসহ নানা কারণে আশানুরূপ বাড়ছে না সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়োর শিক্ষার্থী। এসব তথ্য স্থানীয় অভিভাবক শিক্ষক ম্যানেজিং কমিটিসহ সংশ্লিষ্টদের কথা বলে জানা গেছে। তবে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলছে, সব স্কুলই এক রকম নয় তবে কিছু শিক্ষক অসল টাইপের থাকতে পারে।
তারমতে, ১১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬৬টির প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য। ভারপ্রাপ্ত ও চলতি দায়িত্ব দিয়ে চালাতে গিয়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তিনি বলেন, অন্যান্য চাকরি জীবনের স্কেলের সাথে পার্থক্য থাকায় শিক্ষকদের বিকল্প কর্মের চিন্তা করতে গিয়ে তারা হতাশায় ভোগে। করোনাকালীন সময়ে স্কুল বন্ধ থাকায় মাদ্রাসাগুলোতে ছাত্র চলে যাওয়ায় প্রভাব পড়ার কথা জানান তিনি। অপরদিকে, জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রান্তিক পর্যায়ে আগামী প্রজন্মকে একটি আনন্দময় শৈশব উপহার দিতে প্রাথমিক স্তরে মধুপুরে ১৫টি বিদ্যালয়ে মিনি পার্ক করার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে পরিধি আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সংশ্লিষ্টরা মনে করছে শিশু বান্ধব পরিবেশ পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের মানসিক বিকাশ ঘটবে পাঠদানে মনযোগী হবে এগিয়ে যাবে বাধ্যতামূলক শিক্ষা। এমনটাই মনে করছে স্থানীয়রা।
সরজমিনে পাহাড়িয়া এলাকার আমলিতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায় পঞ্চম শ্রেনীতে ১০ জন উপস্থিত। চতুর্থতে ১৪, দ্বিতীয় ও তৃতীয়তে ১২, প্রথমে ২১ ও প্রাক প্রাথমিকে ১৩ জন শিক্ষার্থীর উপস্থিতি। এ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক খায়রুল জানালেন, ১০৮ জন শিক্ষার্থী তাদের। উপস্থিতি হার ৮০% এর মতো। স্থানীয় মানুষের সচেতন না থাকায় ধর্মীয় মাদ্রাসার প্রতি অভিভাবকদের আগ্রহ ঝুঁক বেশি। স্কুলে তাদের সন্তানদের পড়াতে অনিহার কারণে শিক্ষার্থীর সংখ্যা কম বলে তিনি জানান।
এভাবে পিরোজপুর কুড়াগাছা অরনখোলা ভুটিয়া গাছাবাড়িসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, গ্রামে গ্রামে পাড়া মহল্লায় ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার মতো অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। যে কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে বাড়ছে না আনুপাতিকহারে শিক্ষার্থী, বরং কমে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। তবে মাদ্রাসাগুলোতে শিক্ষকদের পড়ার মান পছন্দসই, ধর্মীয় শিক্ষার প্রতি আগ্রহ, অভিভাবকদের সাথে নিবিড় যোগাযোগ, আন্তরিকতার সাথে পাঠদান বাড়ির কাজ নিয়মিত পড়া আদায় নামাজ কোরআন শিক্ষার কারণে বিনা মূল্যে বাধ্যতামূলক প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা, উপবৃত্তির মতো সুযোগ সুবিধা গ্রহণ না করে উল্টো মাদ্রাসাগুলো বই খাতা কলম উপকরণ কিনে বেতন দিয়ে পড়াচ্ছে অভিভাবকরা। এমনটাই মনে করছে স্থানীয়রা।
মহিষমারা কলেজের প্রতিষ্ঠাতা ও দেশসেরা পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রভাষক ছানোয়ার হোসেন বলেন, দায়বদ্ধতা না থাকার কারণে এমনটি হচ্ছে। তারমতে, সরকারি স্কুলের কিছু কিছু শিক্ষকদের সঠিকভাবে দায়িত্ব পালনে অবহেলা। ধর্মীয় চিন্তা, মানবিক মূল্যবোধের অভাব ও দায়বদ্ধতার অভাবে এমনটি হচ্ছে বলে তিনি মনে করেন ।
টিআইবির সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) মধুপুরের সভাপতি বজলুর রশিদ খান চুন্নু বলেন, শিক্ষকদের আন্তরিকতার অভাবে সরকারি ভাবে অনেক প্রশিক্ষণ দিয়েও এগোচ্ছে না, গুণগত পরির্বতন হচ্ছে না। হোম ভিজিট সঠিকভাবে না করায় প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যবস্থার চিত্র কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁচ্ছে না। তিনি বৈষম্যহীন অভিন্ন শিক্ষাব্যবস্থার কথা জানান তিনি।
নূরে মদিনা নূরানী মাদ্রাসা কুঠালপাড়ার মোহতামীম নূরুল আমিন বলেন, তাদেরকে পড়াশোনা দেখিয়ে অভিভাবকদের কাছ থেকে বেতন নিতে হয় তাদের। ফাঁকি দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তাদের পড়াশোনার মান অভিভাবকদের পছন্দসই যে কারণে শিক্ষার্থী বাড়ছে।
প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি পিরোজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবু ছাইদ বলেন, শিক্ষকরাই হলো প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়নের চাবি কাঠি। তারা আন্তরিক হলে, চেষ্টা করলে মান উন্নয়ন কোন ব্যাপার না।
মধুপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম খান বলেন, করোনা কালিন সময় থেকে বিদ্যালয়গুলো শিক্ষার্থী কমছে। সে ধকল কাটিয়ে উঠতে সময় লাগতেছে। তবে কিছু কিছু শিক্ষকের আন্তরিকতারও অভাব রয়েছে তবে সীমাদ্ধতাও রয়েছে।
মধুপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার জুবায়ের হোসেন বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় জেলা প্রশাসকের উদ্যোগে শিশু শিক্ষা বান্ধব পরিবেশ গড়ার জন্য মিনি পার্ক করা হচ্ছে। এতে শিশুরা বিনোদন পাবে পাঠে মনোযোগ বাড়বে। তবে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিক্ষকদের যখন চাকরির নিশ্চিয়তা পায় তখন তাদের মধ্যে অনেকেই সঠিক দায়িত্ব পালন করতে চায় না। যে কারণে এমনটি হতে পারে বলে তার ধারণা।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক হিজাব নিয়ে কটাক্ষের প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে 'চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বস্তরের নারী শিক্ষার্থী' ব্যানারে এই মানববন্ধন আয়োজিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক নাহিমা আক্তার দ্বীপা, সহ ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা এবং সহ দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাত। আরো বক্তব্য রাখেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদের জিএস নাজিফা তাসফিয়াহ, বিজ্ঞান ,গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক নিশাত সালসাবিল শিকদার এবং ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাওফিকা রহমান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন হলের প্রতিনিধি ও অন্যান্য নারী শিক্ষার্থীবৃন্দ।
চাকসুর ছাত্রীকল্যাণ সম্পাদক নাহিমা আক্তার দ্বীপা বলেন, "রাকসুতে বিজয়ী হিজাব পরিহিত বোনদের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। সেই সাথে তিনি ক্লাসে হিজাবীদের কটাক্ষ করে থ্রি কোয়ার্টার প্যান্ট এবং মদ হাতে ক্লাসে আসতে চেয়েছেন। তার এই বক্তব্য ধর্মীয় অনুশাসন ও দেশের আইনের পরিপন্থী। আমরা তার বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। একই সাথে প্রতিবাদ জানাচ্ছি এরকম মানসিকতার সেইসব শিক্ষকের কাজকে, যারা অনবরত হিজাবকে কটাক্ষ করে আসছেন।"
চাকসুর সহ-দপ্তর সম্পাদক জান্নাতুল আদন নুসরাত বলেন "একজন শিক্ষক, যিনি সমাজের পথপ্রদর্শক হওয়ার কথা, তিনি যখন নারীদের পোশাক নিয়ে বিদ্রূপ করেন, তখন তা একটি পুরো শ্রেণিকে, একটি পরিচয়কে, একটি বিশ্বাসকে অপমানিত করে। আজকের এই প্রতিবাদ কেবল একজন শিক্ষকের শাস্তির দাবিতে নয়। আমাদের প্রতিবাদ সেই মানসিকতার বিরুদ্ধে, যা একজন শিক্ষকের কণ্ঠে বিদ্বেষ জাগায়, একজন নারীর পোশাক নিয়ে উপহাস করতে শেখায় এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মতো জায়গাকে বৈষম্যের জায়গায় পরিণত করে। আমরা চাই, আমাদের হিজাবী বোনেরা হোক গর্বিত, নিরাপদ ও মর্যাদাবান। আমরা ন্যায়ের পক্ষে, সম্মানের পক্ষে, মর্যাদার পক্ষে দাঁড়িয়েছি।"
চাকসুর সহ-ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক জান্নাতুল ফেরদাউস রিতা বলেন, "রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গনযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষকের মন্তব্য নারীর প্রতি অবমাননা এবং নারীর মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করে। তিনি পোশাকের স্বাধীনতা চেয়েছেন অথচ একজন শিক্ষার্থীর বোরকা পড়ার যে স্বাধীনতা, তা তিনি মানতে পারছেন না। আমরা মনে করি এরকম দ্বি-চারিতামূলক আচরণ শিক্ষাঙ্গনে ভারসাম্য নষ্ট করে।"
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদের বিজ্ঞান ,গবেষণা ও তথ্যপ্রযুক্তি সম্পাদক নিশাত সালসাবিল শিকদার বলেন, "আমাদের নির্বাচিত হিজাব ও নিকাব পরা বোনেরা ডাকসু, জাকসু, রাকসু এবং চাকসুতে নিজেদের যোগ্যতা, দক্ষতা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছেন। তাঁরা প্রমাণ করেছেন -হিজাব কখনও কাজের সক্ষমতায় বাধা নয়। হিজাব আমাদের ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত, সম্মান ও বিশ্বাসের প্রতীক। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে এ নিয়ে কটাক্ষ শুধু হতাশাজনকই নয়, গভীরভাবে উদ্বেগজনকও। আরও দুঃখজনক যে, তিনি মদ্যপানকেও স্বাভাবিক করার প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন যা সামাজিক অবক্ষয়ের অন্যতম কারণ। আমরা এই অগ্রহণযোগ্য কাজের জন্য তাঁর উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানাচ্ছি, যাতে ভবিষ্যতে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর এধরনের হীন মানসিকতা প্রকাশের সাহস না পান।"
ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী তাওফিকা রহমান বলেন, "চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অনিন্দিতা সরকার প্রথা হিজাব নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন। আমরা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু, আদৌ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করবে কিনা এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করছি।"
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া হল সংসদের জিএস নাজিফা তাসফিয়াহ বলেন, "ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ২৮ ধারায়, কেউ কোনো ইলেক্ট্রনিক মাধ্যমে ধর্মীয় অবমাননামূলক বক্তব্য দিলে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের শাস্তব এবং অর্থদন্ডের কথা উল্লেখ আছে। আমরা কী এই আইনগুলো কী শুধু লিখিত আইনই রয়ে যাবে? এগুলোর বাস্তবায়ন কী আমরা কখনোই দেখবো না?"
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ আল মামুনের বিতর্কিত মন্তব্যের জেরে মধ্যরাতে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
সোমবার (২৭ অক্টোবর) দিবাগত রাত ১১টায় বিশ্বিবদ্যালয়ের জোহা চত্বর থেকে তারা এই বিক্ষোভ শুরু করেন।
অধ্যাপক মামুন তার ফেসবুকে রাকসু হল সংসদের নারীদের শপথ গ্রহণের ছবি দিয়ে লেখেন ‘এই ব্যক্তিগত স্বাধীনতা আমি এন্ডর্স করছি। কাল আমি এরকম ব্যক্তিগত স্বাধীনতা পরে ও হাতে নিয়ে ক্লাসে যাবো। পরবো টু-কোয়াটার, আর হাতে থাকবে মদের বোতল। মদ তো ড্রাগ না! মদ পান করার লাইসেন্সও আমার আছে! শিবির আইসেন, সাংবাদিকরাও আইসেন!’
তার এই পোস্টের পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শুরু হয় ব্যাপক সমালোচনা। পরবর্তীতে তিনি পোস্টটি ডিলিট করে দেন। এরপরই শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভের ডাক দেন। হল থেকে শিক্ষার্থীরা জোহা চত্বরে জড়ো হন। তারপর সেখান থেকে পশ্চিমপাড়ায় মেয়েদের হলগুলোর সামনে দিয়ে বিক্ষোভ নিয়ে যান তারা। এ সময় হল থেকে অন্য মেয়েরাও যুক্ত হন বিক্ষোভে।
এ সময় তারা ‘মামুনের দুই গালে, জুতা মারো তালে তালে’, ‘মামুনের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না, ‘মদখোরের ঠিকানা, এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘তোমার আমার পরিচয়, হিজাব হিজাব’, ‘রাবিয়ানদের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
যশোরের কেশবপুর উপজেলার গোপসেনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জরাজীর্ণ ভবন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় শিক্ষার্থীরা গাছতলায় ও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৫৮ সালে প্রতিষ্ঠিত। স্থানীয় শিক্ষা অনুরাগীদের সহায়তায় মাটি দিয়ে গেথে টিন দিয়ে ছাওয়া একটা রুমে ক্লাস নেওয়া হতো। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে তিন রুমবিশিষ্ট সরকারিভাবে একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ভবনটি উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন। ফলে প্রায় দুই শত শিশু খোলা আকাশের নিচে ও গাছতলায় পাঠদান করছেন। এছাড়া ছেলে-মেয়েদের ব্যবহারের জন্য নেই প্রয়োজনীয় ওয়াসরুম। ফলে নানা সমস্যার মধ্যে পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা। প্রকৃতির ইচ্ছায় যেদিন ঝড়-বৃষ্টি হয়, সেদিন আর ঠিকমতো ক্লাস করা হয় না তাদের। নিরুপায় শিক্ষকরাও। লেখাপড়ায়ও ভালো অবস্থানে প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যাপারে খোঁজ-খবরসহ তথ্য জানতে সেখানে গেলে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয় জনতা এই প্রতিনিধিকে ঘিরে ধরে এবং সাংবাদিকদের মাধ্যমে সরকারের কাছে বহুতল ভবন দাবি করেন শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও এলাকাবাসী। ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী সোহেল ও জান্নাতুল বলে, বিদ্যালয়ে ক্লাসরুম না থাকায় তারা গাছতলায় ও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করে। যেদিন দুর্যোগ দেখা দেয়, সেদিন আর ক্লাস করা হয় না। এছাড়া প্রয়োজনীয় বাথরুম ও কমনরুম না থাকায় অনেক সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। অভিভাবক নজরুল ইসলাম ডালি এবং হাসান আলী খান বলে, প্রতিষ্ঠানটির বিল্ডিং জরাজীর্ণ হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা অফিস পরিত্যক্ত ঘোষণা করেন আমাদের সন্তানরা খুব কষ্টে ক্লাস করে, আমরা সব সময় আতঙ্কে থাকি কোন সময় কী হয়ে যায়। এরপর এখানে ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তিনি সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বহুতল ভবন বরাদ্দের দাবি জানান।
প্রতিষ্ঠানের (ভারপ্রাপ্ত) প্রধান শিক্ষক মো. আবুল খালেক বলেন, প্রতিষ্ঠানের জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকির কারণে পরিত্যাক্ত ঘোষণা করেন যার ফলে শিক্ষার্থীদের গাছতলায় ও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আপাতত নিজেদের অর্থায়নে কোনো রকমে একটা টিন সেট করে, খোলা আকাশের নিচে গাছতলায় ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। এরপর এখানে ছেলে-মেয়েদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই তিনি সরকারের কাছে দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের জন্য একটি বহুতল ভবন বরাদ্দের জন্য জোর দাবি জানান।
ভারপ্রাপ্ত সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহির উদ্দিন বলেন, আমরা প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বিদ্যালয়ের ছবি দিয়ে একটি আবেদন পাঠানো হয়েছে। বর্তামনে শিক্ষকদের ক্লাস নিতে খুব সমস্যা হচ্ছে। তিনি ছেলে-মেয়েদের জন্য একটি বহুতল ভবন বরাদ্দ দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করছি।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সুইমিংপুলে সাঁতার কাটতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সায়মা হোসেনের মৃত্যু হয়েছে। রোববার (২৬ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরপরই ক্যাম্পাসে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রাতে বিক্ষোভে ফেটে পড়েন শিক্ষার্থীরা। তাদের অভিযোগ, এটি নিছক কোনো দুর্ঘটনা নয়; বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শারীরিক শিক্ষা বিভাগ ও মেডিকেল সেন্টারের অবহেলা এবং দায়িত্বহীনতার কারণেই সায়মার মৃত্যু হয়েছে।
অন্যদিকে, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোসা. রোখসানা বেগম প্রাথমিকভাবে দাবি করেছেন, সায়মার মৃত্যু ‘হার্ট অ্যাটাক’-এর কারণে হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীরা এই দাবি প্রত্যাখ্যান করে তাৎক্ষণিকভাবে বিক্ষোভ শুরু করেন।
রাত ৯টার পর বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ জানিয়ে তারা ঘটনার সঠিক কারণ উদঘাটন, দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা এবং সুইমিংপুল ও চিকিৎসা সেবার নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।
এসময় রাকসুর নবনির্বাচিত ভিপি (সহসভাপতি) মোস্তাকুর রহমান জাহিদ বলেন, আমরা এতক্ষণ ধরে আন্দোলন করতেছি, কিন্তু প্রশাসন থেকে প্রতিনিধি আসতে এত সময় লাগে কেন জানি না। প্রশাসন মনে করে ওরা আন্দোলন করতেছে করুক, তারপর যখন ক্লান্ত হয়ে যাবে তখন আমরা যাবো৷ প্রত্যেকটা আন্দোলনেই তারা এমন করেছে। আমাদের ভাই-বোনদের ইচ্ছে করে কষ্ট দিচ্ছে। শুধু মন্নুজান হল না, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকটা হলের শিক্ষার্থীরা সঠিক তদন্ত ও বিচার চাই। আমরা এখান থেকে বিচার নিশ্চিত করে যাবো ইনশাআল্লাহ।
রাকসুর জিএস (সাধারণ সম্পাদক) সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, কয়েকটা বিষয় প্রশাসনকে অবশ্যই জবাব দিতে হবে। একজন শিক্ষার্থী সাঁতার প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে, তাহলে তার ফিটনেস কেন চেক করা হয়নি? ফিটনেস চেক ছাড়া শরীরচর্চা বিভাগ শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকা একজন শিক্ষার্থীকে কীভাবে সাঁতারের প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে অনুমতি দিলো? এটার জবাব তাদের দিতে হবে। সুইমিংপুলে স্বচ্ছ পানি কেন ছিল না এবং আধা ঘণ্টা ধরে একজন শিক্ষার্থী সুইমিংপুলে থাকলেও সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তারা কেন দেখতে পেলেন না— তারও জবাব দিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এছাড়াও রাবি মেডিকেল সেন্টারে আগেও বাংলা বিভাগের এক ভাইকে নিয়ে গেলে আধমরা অবস্থায় রামেকে পাঠানো হয়। আজও তারা আমার বোন সায়মাকে সঠিকভাবে কোনো চিকিৎসা দিতে পারেনি কেন? এবং অবশ্যই সায়মা হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত অনতিবিলম্বে নিশ্চিত করতে হবে।
সাভারের আশুলিয়ার খাগান এলাকায় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে সিটি ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থীর হামলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে দুই ইউনিভার্সিটির মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটেছে।
রোববার (২৬ অক্টোবর) দিবাগত রাতে সংঘর্ষের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির শত শত শিক্ষার্থী রাতে ঘটনাস্থলে জড়ো হন। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম ও পুলিশ তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন।
পরে প্রক্টর ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনুরোধে শিক্ষার্থীরা ব্যাচেলর প্যারাডাইসের সামনে অবস্থান নেন। এসময় সিটি ইউনিভার্সিটির হামলাকারী শিক্ষার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যায় ড্যাফোডিলের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে অশোভনমূলক আচরণ থেকে ঘটনাটির সূত্রপাত। ঘটনাটি ব্যাচেলর প্যারাডাইস নামক একটি ভবনের সামনে। এ নিয়ে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। পরে রাত ৯টার দিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশীয় অস্ত্র ও ইট-পাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীদের ওই বাসায় হামলা ও ভাঙচুর করলে পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাভার থানার দু’টি টিম ঘটনাস্থলে মোতায়েন করা হয়।
সংঘর্ষের পর সিটি ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসে আগুন জ্বলতে দেখা গেছে। এরআগে রাত ১২টার পর ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ভেতরে ঢুকে প্রশাসনিক ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনায় ভাঙচুর চালায়। লুট করা হয় কম্পিউটারসহ গুরুত্বপূর্ণ মালামাল, পুড়িয়ে ফেলা হয় তিনটি বাস ও একটি প্রাইভেটকার। আরও পাঁচটি যানবাহন ভাঙচুর হয়।
সংঘর্ষের সময় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ভোররাত পর্যন্ত চলা এ সংঘর্ষে উভয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তত অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। অভিযোগ উঠেছে, দীর্ঘ চার ঘণ্টা ধরে সংঘর্ষ চললেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো সহায়তা পাননি শিক্ষার্থীরা। ঘটনাস্থলে এখনো টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে।
তবে সাভার থানার ডিউটি অফিসার এসআই হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে আছেন। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ঘটনা যেন নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে সেই চেষ্টা করা হচ্ছে।’
কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন অফিসের নিয়োগ পরীক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে ‘ছাত্র জনতা’ ব্যানারে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ মিছিল করেন। পরে তারা কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
জানা যায়, গত শুক্রবার সকালে কুষ্টিয়া সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অধীন ৭ ক্যাটাগরিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। তবে এর আগের রাতে এবং পরীক্ষার দিন সকালে ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হোসেন ইমামের নিজস্ব বাসা থেকে বেশ কয়েকজন নারী-পুরুষকে ফাইল হাতে বের হতে দেখা যায়।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকরা তাদের ছবি ও বক্তব্য সংগ্রহের চেষ্টা করলে তারা দ্রুত সরে যান। পরে ঘটনাটির একাধিক ভিডিও ও স্থিরচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার সৃষ্টি হয়। তারই ধারাবাহিকতায় বিক্ষুব্ধ জনতা শনিবার দুপুরে সিভিল সার্জন অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তারা দাবি জানান, নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করতে হবে এবং ঘটনার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে।
বিক্ষোভে অংশ নেন চাকরি প্রার্থী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক নেতা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এই নিয়োগ পরীক্ষা সম্পূর্ণভাবে ত্রুটিপূর্ণ ও অনৈতিকভাবে পরিচালিত হয়েছে। আমরা শুনেছি আজকেই ফল প্রকাশের পরিকল্পনা আছে। তাই তড়িঘড়ি করে আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি। আজকের মধ্যেই পরীক্ষা বাতিল ও নতুন পরীক্ষার ঘোষণা দিতে হবে, না হলে কাল পুরো কুষ্টিয়া অচল করে দেবো।’
অভিযোগের বিষয়ে কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. শেখ মোহাম্মদ কামাল হোসেন জানান, বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর জানিয়েছেন।
তার ভাষায়, ‘২৪ অক্টোবর সুষ্ঠু পরিবেশে ১৪টি কেন্দ্রে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিও জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করেছে। বিষয়টি তদন্তের জন্য আমরা মন্ত্রণালয়ে জানিয়েছি।’
অন্যদিকে অভিযুক্ত আরএমও ডা. হোসেন ইমাম অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘ভোররাতের ঘটনাটি সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না। আমার পৈত্রিক বাড়িতে তিনটি ফ্লোরে আলাদা আলাদা মেস রয়েছে। পরীক্ষার্থীরা সেখানে অবস্থান করছিল, তবে তারা কেনো সাংবাদিকদের দেখে পালিয়েছে, তা আমার জানা নেই।’
বিক্ষোভের সময় কার্যালয়ের ভেতরে অবস্থান করছিলেন সিভিল সার্জন। অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলে থাকায় কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। বিকেল পর্যন্ত বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল।
এ ঘটনায় এখনো জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তবে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের অভ্যন্তরে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।