রোববার, ১২ অক্টোবর ২০২৫
২৬ আশ্বিন ১৪৩২

এশিয়ান থ্রোবল চ্যাম্পিয়নশিপ এ বাংলাদেশের সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাবের রানার্স আপ ট্রফি অর্জন ও ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী আরিজ আনাসের সাফল্য।

আপডেটেড
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৩৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ১১ অক্টোবর, ২০২৫ ২১:৩৬

১৬ - ১৭ সেপ্টেম্বর মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরের সুকুন অ্যারেনা ইনডোর কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত এশিয়ান থ্রোবল প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ বাংলাদেশের সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাব - এসপিএসসি রানার্সআপ হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে।
প্রতিযোগিতায় মলোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ভারতের পুরষ ও মহিলা থ্রোবল খেলোয়াড়বৃন্দ এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। এবারের আসরে পুরুষ নারী উভয় বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। প্রধান অতিথি হিসেব পুরষ্কার বিতরণ করেন এশিয়ান থ্রোবল ফেডারেশনের সভাপতি ডঃ মুস্তাপা কামাল দাতো ( মলয়েশিয়া) । এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান থ্রোবল ফেডারেশনের সহ সভাপতি ডঃ লতিফ উদ্দিন ( ভারত) ও রেজাউল করীম ( বাংলাদেশ)। রেফারি হিসেবে খেলা পরিচালনা করেন শ্রীলংকার রমেশ মেহরাজ, ফায়াজ মারুফ ও মালয়েশিয়ার সলেহিন।

দাবায় অত্র প্রতিষ্ঠানের মহিলা ক্যান্ডিডেট মাষ্টার ওয়ার্শিয়া খুসবু তিন তিনবার হয়েছে এশিয়ান স্কুল দাবায় চ্যাম্পিয়ন ।
বাংলাদেশে মহিলা দাবারুদের মধ্যে ওয়ার্শিয়া খুসবু হচ্ছে সর্ব্বোচ্চ রেটেডধারী দাবারু। এদিকে বিশ্ব ক্যাডেট দাবায় সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের তিন শিক্ষার্থী আজান মাহমুদ, সাফায়াত কিবরিয়া আজান ও সিদরাতুল মুনতাহা এখন কাজাখস্তান অবস্হান করছে। বাংলাদেশ দাবা ফডারেশনের বরাতে জানা গেছে এখন পর্যন্ত আজান মাহমুদ অস্ট্রেলিয়ার বেতির‍বেকভ কে ও সাফায়াত কিবরিয়া আজান হারিয়ে দিয়েছে ফ্রান্সের ক্যান্ডিডেট মাষ্টার নিকট ভলেন্টিনকে ও জার্মানির প্রাদিপ হারসিলকে, সিদরাতুল মুনতাহা রুখে দিয়েছে হাঙ্গেরির শক্ত প্রতিপক্ষ মেদভেগি মারিয়াকে ও চাইনিজ তাইপের দাবারু চ্যাং হাসিন তি কে । আগামী ২অক্টোবর পর্যন্ত ক্ষুদে দাবারুদের এ বিশ্ব দাবা প্রতিযোগিতা চলবে। চলতি বছর গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় আয়োজিত
জাতীয় স্কুল দলগত দাবা প্রতিযোগিতায় অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের দাবা দল।
এই প্রতিষ্ঠানের দুটি দলই চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ হওয়ার গৌরব অর্জন করে যা বাংলাদেশে দাবার অঙ্গনে বিরল।

সম্প্রতি বাংলাদেশ জাতীয় স্কুল, মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতি, বাড্ডা জোন, ঢাকা মহানগরী আয়োজিত ৫২তম গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ বালক - বালিকা উভয় বিভাগে সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ, মালিবাগের হ্যান্ডবল দল চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। দাবার ৪ টি ক্যাটাগরীর ৩ টিতেই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দাবারুরা। তার হলেন বালক মধ্যম দলের সায়ান মিরাব হাসান, বালক বড় দলের সিয়াম চৌধুরী ও বালিকা বড় দলের নীলাভা চৌধুরী।
বাংলাদেশ কারাতে ফেডারেশনের সহযোগিতায় আয়োজিত উম্মুক্ত কারাতে প্রতিযোগিতা ২০২৫ এ সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাবের ছেলেমেয়েদের কারাতে দল ৭ টি স্বর্ণ, ৯ টি রৌপ্য ও ১৯ টি ব্রোন্জ পদক জিতে নিয়েছে যেখানে বাংলাদেশ সিতোরিউ কারাতে দো ইউনিয়ন আয়োজিত উক্ত প্রতিযোগিতায় সারা দেশ থেকে প্রায় এগারোশত কারাতে খেলোয়াড় অংশগ্রহণ করে।

ক্রীড়াঙ্গন ছাড়াও সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ শিক্ষবিষয়ক বিভিন্ন প্রতিযোগিতায়েও নিজ প্রতিষ্ঠানকে পৌঁছে দিয়েছে সাফল্যের উচ্চ শিখরে । যার ধরাবাহিকতায় অত্র স্কুলের ইংরেজি মাধ্যমের শিক্ষার্থী আরিজ আনাস জাতীয় বায়োলজি অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ফিলিপাইনে আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডে ব্রোন্জ পদক অর্জন করে এবং মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের আমন্ত্রন লাভ করে।

জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠান তথা বাংলাদেশের সুনাম বয়ে আনার জন্য সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ এর প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ইনজ্ঞিনিয়ার জনাব এম এ রশিদ এবং সাউথ পয়েন্ট স্কুল এন্ড কলেজ মালিবাগের অধ্যক্ষ ও সাউথ পয়েন্ট স্পোর্টস ক্লাবের সভপতি কর্নেল মোঃ শামসুল আলম, পি এস সি ( অবঃ) জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সফলতার জন্য অত্র প্রতিষ্ঠানের শিক্ষর্থী সহ সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, কোচ ও অভিভাবকবৃন্দকে অভিনন্দন জানান।


সাপোর্টেড ডিসটেন্স লার্নিং শিক্ষা কার্যক্রম চালু করল ভূঁইয়া একাডেমি

বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হকসহ অতিথিরা
আপডেটেড ২০ আগস্ট, ২০২৩ ১৬:০৮
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো সাপোর্টেড ডিসটেন্স লার্নিং শিক্ষা কার্যক্রম চালু করছে বেসরকারী আইনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভূঁইয়া একাডেমি। প্রতিষ্ঠানটি যুক্তরাজ্যের স্বনামধন্য হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় এলএলবি (অনার্স) সাপোর্টেড ডিসটেন্স লার্নিং শিক্ষা কার্যক্রমের নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। গেল বৃহস্পতিবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উক্ত শিক্ষা কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শিক্ষা সমঝোতা বিষয়ক এ অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক; বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী, ভূঁইয়া একাডেমির অধ্যক্ষ ড. রাবিয়া ভূঁইয়া, হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাসোসিয়েট ডিন ড. বারবারা হেনরি এবং ইন্টারন্যাশনাল ডিরেক্টর সায়াজ মিয়াসহ গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।

আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, বর্তমানে অনেক বিচারপতিসহ অনেক স্বনামধন্য আইনজীবী আছেন যারা ভূঁইয়া একাডেমি থেকে এসেছেন এবং জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। ভূঁইয়া একাডেমিই প্রথম বাংলাদেশে ব্রিটিশ পাঠ্যক্রম ও প্রেক্ষাপটের আন্তর্জাতিক শিক্ষা কার্যক্রম চালু করার উদ্যোগ নেয়।

তিনি বলেন, আমি তাদের এ প্রচেষ্টাকে সাধুবাদ জানাই এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। সেসঙ্গে হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই। আশা করছি এই ডিসটেন্স লার্নিং প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাথে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে।

ভূঁইয়া একাডেমি বাংলাদেশে হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র অংশীদার হিসেবে কাজ করতে যাচ্ছে। এই এলএলবি (অনার্স) সাপোর্টেড ডিসটেন্স লার্নিং কার্যক্রম সরাসরি এবং অনলাইন প্ল্যাটফর্ম উভয় মাধ্যমকে একত্রিত করে শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের আইনি শিক্ষা প্রদান করতে সক্ষম।

হার্টফোর্ডশায়ার বিশ্ববিদ্যালয় ৫৫০টিরও বেশি কোর্স নিয়ে ৭০ বছর যাবত বিশ্বব্যাপী আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদেরকে পড়াশোনার সুযোগ করে দিচ্ছে। ভূঁইয়া একাডেমি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত বেসরকারি আইনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যা দূরশিক্ষণ আইন প্রোগ্রামের জন্য পরিচিত। দূরশিক্ষা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে ভূঁইয়া একাডেমি এবং ইউনিভার্সিটি অব হার্টফোর্ডশায়ার বাংলাদেশে আইনি শিক্ষার এক নতুন যুগের পথ প্রশস্ত করছে।


কলেজে ক্লাস শুরুর আগে

আপডেটেড ১৭ আগস্ট, ২০২৩ ২০:৫৯
মাহাথির আরাফাত

পছন্দের কলেজে মনোনীত হওয়ার পর তোমরা হয়তো সবাই উদগ্রীব হয়ে বসে আছ কবে ক্লাস শুরু হবে, কবে যাবে তোমাদের কাঙ্ক্ষিত ক্যাম্পাসে। পুরোদমে ক্লাস শুরু হতে বেশ কিছু দিন লাগতে পারে। তার আগে নিজেকে আরো গুছিয়ে নেওয়া জরুরি। নতুন পরিবেশে গিয়ে যাতে সমস্যায় না পড়তে হয় সেজন্য আগেভাগে সব জেনে নাও।

ভর্তি প্রক্রিয়া

ভর্তির কার্যক্রম যথাযথভাবে সেরে ফেল। কলেজে জমা দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যা যা দরকার সব জোগাড় করে রাখো। এখন প্রতিটি কলেজেরই অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থাকে। তাই নিজের কলেজের ফেসবুক পেইজ খুঁজে বের করে অবশ্যই ফলো করবে। কলেজের যাবতীয় নোটিশ বা ভর্তিসংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ওখান থেকেই জানতে পারবে।

বই কেনা

বই কেনা শুরু করে দাও। বিশেষ করে বাংলা, ইংরেজি ও আইসিটি। এইচএসসির প্রতিটি বিষয়ই দুটি করে পত্র। আপাতত প্রথম পত্রটাই কিনে রাখো। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, কোন প্রকাশনীর বই কিনবে তা স্যার কিংবা সিনিয়র কারো সঙ্গে পরামর্শ করে নিতে পারো। তাছাড়া অনেক কলেজ থেকেই নির্দিষ্ট একটা বুকলিস্ট দেওয়া হয়। তোমাদের কলেজে তেমন কোনো বাধ্যবাধকতা আছে কিনা তা আগে থেকে জেনে নিয়ো।

প্রাইভেট-কোচিং

এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে অনেকে প্রাইভেট পড়া শুরু করে দিয়েছ হয়তো। কোন স্যার কী পড়ান, কতটুকু পড়ান, কেমন বোঝান- এসব খুঁটিনাটি বিষয় সিনিয়র কারো সঙ্গে যাচাই-বাছাই করে তারপর প্রাইভেট বা কোচিং শুরু করলে ভালো হয়।

সিলেবাস আয়ত্ত করা

আগের পড়াশোনা থেকে এখন আরেকটু ওপরের ধাপে এসেছ তোমরা। নতুন শ্রেণির পড়ার সিলেবাসটা আয়ত্ত করো আগে। তবে বাংলা ব্যাকরণ ও ইংরেজি ব্যাকরণ আগের থেকে তুলনামূলক সহজ হয়েছে। পূর্বের শ্রেণিতেই তোমরা অনেক কিছু পড়ে এসেছ। এখন কিছু টপিক কেবল বেড়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করো। তাছাড়া আগে সকল বিষয়ের প্রশ্নের প্যাটার্ন ও মান বণ্টন জেনে পড়তে গেলে ভালো লাগবে।

পড়ার টেবিল

এখন পড়ার টেবিল সাজাও নতুন বই দিয়ে। পুরনো বইগুলো টেবিল থেকে সরিয়ে ফেল। ঝকঝকে তকতকে করে রাখবে পড়ার টেবিল। এতে পড়ার আগ্রহ পাবে। তবে শুরুতেই এত সিরিয়াস পড়াশোনা করার দরকার নেই। হাসি-আনন্দে অল্প অল্প পড়ো। মাত্র তো কলেজে পা দিলে। কীভাবে পড়তে হবে, কতটুকু পড়তে হবে তা নিজে নিজেই একসময় বুঝতে পারবে।

ক্যাম্পাস

কলেজের ক্যাম্পাসে মানিয়ে নেওয়া শিখতে হবে। ভিন্ন একটা পরিবেশে প্রবেশ করবে তোমরা। পড়ার পরিবেশ, সহপাঠী, কলেজের ভবন, স্যার-ম্যাডাম সবই যেন অপরিচিত। তাই হীনম্মন্যতা ভর করতে পারে কারো কারো। দ্বিধাবোধ হবে হয়তো। এজন্য নিজেকে গুটিয়ে নিলে চলবে না। সহপাঠীদের সঙ্গে নম্র-ভদ্র ব্যবহার করবে। বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ হলে সব কিছু ‌কাটিয়ে উঠা সহজ হয়। চেষ্টা করবে কলেজের ইউনিফর্ম পরে ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে। ইউনিফর্ম বানিয়ে রাখো এখনই। বাসায় পরে ট্রায়াল দাও। কেননা হঠাৎ করে নতুন পোশাক পরলেও আমাদের লজ্জা ও অস্বস্তিবোধ হয়।

এক্সট্রা কারিকুলাম

কলেজের লাইব্রেরি, বিতর্ক ক্লাব, স্পোকেন ইংলিশ ক্লাব, খেলাধুলার সংগঠন, সাহিত্য সংগঠন ইত্যাদি বিষয়েও খোঁজখবর নিতে পারো। পড়াশোনার পাশাপাশি একজন ভালো শিক্ষার্থীর এসব ক্ষেত্রেও মনোযোগী হওয়া উচিত। যার যে-বিষয়ের প্রতি ঝোঁক আছে, সে সেখানে সময় দিতে পারো।

সবার কলেজ-জীবনের জার্নি স্বাচ্ছন্দ্যে ভরে উঠুক এই কামনা করি।


লক্ষ্মীপুরের ভ্রমণ কন্যা নাজমুন নাহার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জিহাদ হোসেন রাহাত

দেশের দক্ষিণের জেলা লক্ষ্মীপুরের জেলা সদরে জন্ম জন্মগ্রহণ করেন আলোকিত নারী নাজমুন নাহার। বিশ্ব ভ্রমনের তীব্র ইচ্ছা, চেষ্টা আর ব্যাপক সংগ্রামের মাধ্যমে নিত্য সব দৃষ্টান্ত স্থাপন করে যাচ্ছেন। নিজ জনপদের মানুষের কাছে তিনি লক্ষ্মীপুরের ভ্রমণ কন্যা হিসেবে অর্জন করেছেন ব্যাপক পরিচিতি। শুধু তাই নয় লক্ষ্মীপুর ছাপিয়ে তিনি আজ হয়ে উঠেছেন- বাংলাদেশের ভ্রমণ কন্যা। দীর্ঘ প্রায় দুই যুগ ধরে লাল সবুজের পতাকা হাতে নাজমুন নাহার করছেন বিশ্ব ভ্রমণ। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ১৬৭টি দেশ ভ্রমণের ঐতিহাসিক রেকর্ড গড়ার কৃতিত্ব অর্জন করেছেন বাংলাদেশের নাজমুন নাহার। সম্প্রতি তিনি সেন্ট লুসিয়া ভ্রমণের মাধ্যমে অর্জন করেন এই গৌরব।

আনন্দের বিষয় হলো, সেন্ট লুসিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফিলিপ জোসেফ পিয়ের এক বিশেষ সাক্ষাতে ভ্রমণ কন্যা নাজমুন নাহারকে ১৬৭ দেশে বিশ্ব শান্তির বার্তা ও লাল-সবুজের পতাকা বহনের কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দন জানানোর পাশাপাশি তাকে ‘সুপার ব্রেভ গার্ল’ বলে আখ্যায়িত করেন। দেশটির শীর্ষ দৈনিক পত্রিকা ‘দ্য ভয়েস’ বাংলাদেশের নাজমুন নাহাররের বিশ্ব ভ্রমণ নিয়ে সম্প্রতি প্রকাশ করেছে এক বিশেষ ফিচার। খ্যাতনামা সাংবাদিক মার্বেলা অ্যান্থনির লেখায় উঠে আসে ভ্রমণ কন্যা নাজমুন নাহারের স্বপ্ন, জীবন সংগ্রাম ও বিশ্ব অভিযাত্রার কঠিন থেকে কঠিনতম সব চ্যালেঞ্জের কথা।

লক্ষ্মীপুরের এই ভ্রমণ কন্যা বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের সুনাম অক্ষুন্ন রেখে এভাবেই বাংলাদেশকে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন বিশ্ব দরবারে। চলতি বছরের (২০২৩) মে মাস থেকে নাজমুন নাহার এবারের অভিযাত্রা শুরু করেছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশ সুরিনাম ও গায়ানা থেকে ক্যারাবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ ত্রিনিবাদ টোবাগো, গ্রেনাডা, সেন্ট ভিন্সেন্ট অ্যান্ড গ্রানাডা, বার্বাডোস ও ১৬৭তম দেশ হিসেবে সেন্ট লুসিয়া পর্যন্ত। এ বছরের জুলাই মাসের মধ্যভাগ থেকে লক্ষ্মীপুর সহ পুরো দেশ জুড়ো আলোচিত ভ্রমণ কন্যা নাজমুন নাহার। তিনি ভ্রমণ করতে চান বিশ্বের প্রতিটি দেশ।

ভারতের ভুপালের পাঁচমারিতে ২০০০ সালে ‘ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল অ্যাডভেঞ্চার প্রোগ্রামে’ অংশগ্রহণ করার মাধ্যমে সূচনা হয় তার প্রথম বিশ্ব ভ্রমণের। নাজমুন নাহার ২০১৮ সালের ১ জুন শততম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন জাম্বিয়া ও জিম্বাবুয়ের সীমান্তের ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাতের উপর।

তিনি ১৫০ তম দেশ ভ্রমণের মাইলফলক সৃষ্টি করেন আফ্রিকা মহাদেশের দেশ সাওতমে অ্যান্ড প্রিন্সিপে। দীর্ঘ ২২ বছর ধরে তিনি পৃথিবীর এক দেশ থেকে আরেক দেশে বিভিন্ন জনপদের মাঝে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশের লাল-সবুজের পতাকাকে। বলা চলে, বিশ্ব দরবারে তিনি এখন লাল সবুজের প্রতিনিধিত্ব করছেন। ভ্রমণ পিপাসু নাজমুন নাহার ভ্রমণ ছাড়াও পরিবেশ রক্ষা ও বাল্যবিবাহ বন্ধের লক্ষ্যে নিয়মিত সারা পৃথিবীর মানুষের মাঝে সচেতনতার বার্তা দিয়ে যাচ্ছেন। তিনি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সময় ‘নো ওয়ার অনলি পিস, সেভ দ্য প্ল্যানেট’ এই শান্তি ও ঐক্যের বার্তাগুলো পৌঁছান। এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোয় শিশু ও তরুণদেরকে উৎসাহিতও করেন। পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশ তিনি ভ্রমণ করেছেন সড়ক পথে। দীর্ঘ ২২ বছরের বিশ্ব অভিযাত্রার মাঝে তিনি মুখোমুখি হয়েছেন বহু প্রতিকূলতার। মৃত্যুমুখে পতিত হয়েছেন বহুবার।

শত প্রতিকূলতা পেরিয়ে লাল সবুজের পতাকা হাতে একের পর এক দেশ ভ্রমণ করে চলছেন তিনি। দীর্ঘ ২২ বছরে বেশ কয়েকবার বিশ্ব গণমাধ্যমের শিরোনামও হয়েছেন নাজমুন নাহার। বিশ্বের অসংখ্য দেশের প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধানসহ বিখ্যাত ব্যক্তিরা তাকে সংবর্ধিত করেছেন বহুবার। নাজমুন নাহার তার এই বিরল কাজের জন্য তিনি পৃথিবীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্মাননা ‘পিস টর্চ বিয়ারার অ্যাওয়ার্ড’ পেয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।

এছাড়াও দেশ-বিদেশে মোট ৫০টিরও বেশি সম্মাননা অর্জন করেছেন তিনি। সুইডেনের লুন্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এশিয়ান স্টাডিজ বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন ভ্রমণ কন্যা নাজমুন নাহার। হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড এশিয়া বিষয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সিউল ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতেও পড়েছেন লক্ষ্মীপুরের এই ভ্রমণ কন্যা।


গুচ্ছে ভর্তি: যা ভাবছেন শিক্ষার্থীরা

আপডেটেড ৪ মার্চ, ২০২৩ ১৯:৫৯
মো. আব্দুল আহাদ

উচ্চমাধ্যমিক পাসের পর শিক্ষার্থীদের উচ্চশিক্ষার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়। দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি প্রক্রিয়াকে সহজ ও শিক্ষার্থী-অভিভাবকদের ভোগান্তি দূর করতে করোনা-পরবর্তী সময়ে সমন্বিত পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। ফলে বিগত দুই বছরে ২০২০-২১ সেশন ও ২০২১-২২ সেশনে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হয়, যাতে প্রথমবার ২০টি এবং দ্বিতীয়বার মোট ২২টি বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে। আসন্ন ২০২২-২৩ সেশনেও গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অংশগ্রহণ করবে বলে জানা গেছে। গুচ্ছের ভর্তির ভালো-মন্দ জানার জন্য বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলছেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মো. আব্দুল আহাদ

গুচ্ছ পদ্ধতি সম্পর্কে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রেদোয়ান আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কষ্ট, সময় ও অর্থ লাঘবের লক্ষ্যে এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হলেও বর্তমানে আমার কাছে হিতে বিপরীত মনে হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের সময় ও অর্থ কিছুই সাশ্রয় হচ্ছে বলে আমার মনে হচ্ছে না।’ তিনি আক্ষেপের সুরেই বলেন, ‘এই পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার ফলে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে যে ধরনের আমেজের সৃষ্টি হতো, তা এখন আর নেই। একবারে সব পরীক্ষা হয়ে যাওয়ার চিরচেনা সে দৃশ্য আর দেখা যায় না। সার্বিক দিক বিবেচনায় আমার মনে হয়, গুচ্ছে এখনো অনেক সমস্যা রয়েছে। সমস্যাগুলো সমাধান করা গেলে এর সুফল পাবে আমাদের দেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেল হোসেন বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এখনো বাড়ছে এবং সময়েরও অনেক অপচয় হচ্ছে। কর্তৃপক্ষের এ ব্যাপারে আরও সচেতন হওয়া দরকার বলে তিনি মনে করেন। তবে এ পদ্ধতিতে তিনি কিছু সুবিধাও দেখেন। একটি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমেই একই সঙ্গে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়, যার থেকে নিজের পছন্দ অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ তৈরি হচ্ছে। শুধু তা-ই নয় এই পদ্ধতিতে আগের তুলনায় অধিক শিক্ষার্থী পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে, যা দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাবেয়া ভূইয়া অন্তুর বলেন, ‘গুচ্ছ ভর্তি পদ্ধতি আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্য আশীর্বাদ হওয়ার কথা থাকলেও এটি রীতিমতো অভিশাপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কখনো কখনো পছন্দমতো বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা বিষয়ের আশায় শিক্ষার্থীদের দৌড়াতে হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়, দেশের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে, যা সময়সাপেক্ষ এবং কষ্টসাধ্য। গুচ্ছের দীর্ঘমেয়াদি ভর্তি কার্যক্রমের কারণে বেশকিছু বিভাগ অন্য বিভাগ থেকে পিছিয়ে পড়ছে, পাশাপাশি অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজটেরও আশঙ্কা দেখা দিচ্ছে।

সদ্য ভর্তি হওয়া নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নবীন শিক্ষার্থী আফনান সুলতানা বলেন, ‘প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা-আলাদা ভর্তি পরীক্ষা না দিয়ে একটি পরীক্ষার মাধ্যমে অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ সত্যিকার অর্থেই আমার কাছে সুবিধাজনক মনে হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ভর্তি জটিলতা এবং প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের আলাদা-আলাদাভাবে আবেদনের ফলে আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে, যা আমার মতো মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানের জন্য কষ্টকর ছিল। এ ছাড়া এই পদ্ধতিতে ভর্তি কার্যক্রমের ফলে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ছি। গুচ্ছের বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমাদের সেশনের শিক্ষার্থীরা যেখানে এক সেমিস্টার শেষ করে ফেলছে, সেই সময় আমরা এখনো ঠিকমতো ক্লাস শুরু করতে পারছি না। ক্লাস শুরু হতে তাদের পরবর্তী সেশনের মেডিকেল শিক্ষার্থীরাও শ্রেণিকক্ষে বসতে পারবে। এ ছাড়া ভর্তি বাতিল সময় কম পাওয়াসহ নানাবিধ সমস্যা এ পদ্ধতিতে লক্ষ করেছি। আমরা আশা করছি এসব সমস্যার সমাধান করে অচিরেই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাব্যবস্থায় নতুন সময়োপযোগী পদ্ধতি বাস্তবায়ন করবে প্রশাসন।’


ইউডাতে রেডিও দিবসের মুক্ত আলোচনা

মুক্ত আলোচনায় বক্তব্য রাখেন ইউডার প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মুজিব খান
আপডেটেড ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৮:৫৪
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

এক সময় রেডিও ছিল মানুষের বিনোদন ও সংবাদ জানার প্রধান মাধ্যম। যুগ পাল্টানোর সঙ্গে সঙ্গে এখন আর রেডিওর সেই আবেদন নেই। তবে এই বেতারের প্রভাব এখনো হারিয়ে যায়নি।

গত সোমবার বিশ্ব রেডিও দিবস উপলক্ষে আয়োজিত মুক্ত আলোচনায় এসব কথা বলেন বক্তারা। রাজধানীর ধানমন্ডিতে ইউনিভার্সিটি অব ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভের (ইইউডা) যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগ এই মুক্ত আলোচনার আয়োজন করে।

আলোচনায় মূল বক্তা ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মুজিব খান। তিনি বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে যোগাযোগের ক্ষেত্রে বড় অবদান রেখেছে রেডিও। এর মাধ্যমেই দেশের সর্বত্র বার্তা পৌঁছে দেয়া গেছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের অনেক যুদ্ধেই রেডিও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এখনো সমাজে রেডিওর প্রভাব রয়েছে।

আলোচনায় অংশ নেন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও রেডিও টুডের ডিজিটাল ডিপার্টমেন্টের সাবেক প্রধান মৃদুল পাল এবং সিটি এফএমের সাবেক রেডিও জকি রিশাদ হাসান। তারা বলেন, এখনো রেডিও মানুষের অনভূতিতে নাড়া দেয়। রেডিওতে শুধু কণ্ঠ শুনে অগণিত মানুষ ভক্ত হয়। এখনো সমাজে অনেক অবদান রেখে চলছে রেডিও।

ইউডার যোগাযোগ ও গণমাধ্যম বিভাগের প্রধান এম মাহবুব আলমের সভাপতিত্বে আয়োজনে আরও অংশ নেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমাদুল্লাহ মিয়া, ডেপুটি রেজিস্ট্রার ফয়জুন নাহার, প্রভাষক ইসমাইল সিরাজি ও প্রভাষক মাহাদী হাসানসহ বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীরা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিভাগের শিক্ষার্থী উ মিমি মারমা।


টিফিনের জমানো টাকায় পাবলিক লাইব্রেরি

আপডেটেড ৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ১৯:০৯
আনিসুল ইসলাম নাঈম

‘শিশুদের হাসি পাঠাগার’ স্কুল শিক্ষার্থীদের টিফিনের জমানো টাকায় প্রতিষ্ঠিত একটি পাবলিক লাইব্রেরি। স্কুলে পড়াকালীন আমাদের উপজেলায় কোনো পাবলিক লাইব্রেরি ছিল না। তাই আমরা পাঠ্যবই ছাড়া অন্য কোনো বই পড়তে পারতাম না। আর কোনো শিক্ষার্থী বা শিশু যাতে আমাদের মতো এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হয়, সে জন্যই শিশুদের হাসি পাঠাগার। হোসেনপুর সরকারি মডেল পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হয়।’ কথাগুলো বলছিলেন শিশুদের হাসি পাঠাগারটির প্রতিষ্ঠাতা মাহমুদুল হক রিয়াদ। পাঠাগারটির শুরুর গল্প জানতে চাইলে মাহমুদুল জানান, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কিশোরগঞ্জে বইমেলা চলছিল। তখন সিদ্ধান্ত নেই আমরা একত্রে টাকা জমিয়ে কিছু বই কিনব। বইগুলো সবাই মিলে পড়ব। একজনের পড়া শেষ হলে আরেকজন পড়বে। তারপর প্রায় ৫ হাজার টাকায় ২৭টি বই ক্রয় করি। সেই থেকে আমাদের পথচলা শুরু। আস্তে আস্তে বইগুলো পড়ে শেষ করি এবং অন্য বন্ধুদের দেই। একদিন সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নিলাম সবার টিফিনের টাকা নিয়ে আরও বই কিনব। এভাবে এখন পর্যন্ত চলছে আমাদের যাত্রা। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার প্রশিকা অফিস ভবনের একটি রুমে লাইব্রেরিটি পরিচালিত হচ্ছে।’

লাইব্রেরির সদস্যরা প্রতিদিন ১ টাকা হারে মাসিক ৩০ টাকা চাঁদা প্রদান করেন। এতে সদস্য সংখ্যা সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ জন হবে। লাইব্রেরিতে সব মিলিয়ে বর্তমানে ৯ শর ওপরে বই সংগ্রহ রয়েছে। পাঠাগার দিয়ে শুরু করলেও সংগঠনের কার্যক্রম ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে:

শিশুদের হাসি পাঠাগার অ্যাপ্লিকেশন

শিশুদের হাসি পাঠাগারের রয়েছে নিজস্ব অ্যাপ্লিকেশন। এই অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে যে কেউ ঘরে বসেই বই পড়ার সুযোগ পাবে। শিশুদের হাসি পাঠাগারের অ্যাপ্লিকেশনে সব বইয়ের তথ্য রয়েছে। অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করেই পাঠাগারের সদস্য হওয়া যায়। আর সদস্য নিশ্চিত হয়ে গেলে নির্দিষ্ট বইয়ের জন্য আবেদন করলে শিশুদের হাসি পাঠাগারের ভলান্টিয়াররা পাঠকের বাসায় বই পৌঁছে দিয়ে আসে ৷ বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করে থাকে। করোনায় স্কুল বন্ধ থাকাকালীন স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে শহর অঞ্চলের প্রায় ৯০ শতাংশ শিশু অনলাইন ক্লাসে যুক্ত হয়েছিল। তারা যেন স্মার্টফোনে ঘরে বসেই বই পড়তে পারে, সে জন্যই অ্যাপ্লিকেশনটা তৈরি করা হয়েছে ৷ তারা জ্ঞানমূলক বই পড়ে নিজের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের নেতৃত্ব দেবে ৮ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুরা। তাদের জ্ঞাননির্ভর ও দক্ষ হিসেবে গড়ে তুলতে কাজ করছে শিশুদের হাসি পাঠাগার। এখন পর্যন্ত প্রায় ৬০ জন ব্যবহারকারী এই অ্যাপ্লিকেশন মাধ্যমে তাদের কাঙ্ক্ষিত সুবিধা গ্রহণ করছে।

ভ্রাম্যমাণ লাইব্রেরি প্রজেক্ট

গ্রামের বেশির ভাগ শিশুই স্মার্ট ফোনের সঙ্গে যুক্ত নয়। তারা যেন শিশুদের হাসি পাঠাগারের সেবা থেকে বঞ্চিত না হয়, বই পাঠে পিছিয়ে না যায়, সে জন্য এই উদ্যোগ গ্রহণ। প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুলগুলোতে শিশুদের হাসি পাঠাগার বই নিয়ে হাজির হচ্ছে। একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য তাদের একদম বিনামূল্যে বই প্রদান করা হয়। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পড়া শেষ করে তারা আবার এই বই ফেরত দেয়। এভাবে তাদেরও বই পাঠের আওতায় আনা হয়েছে। এই প্রজেক্টের আওতায় ২০০-এর ওপরে শিশুর হাতে বই পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।

মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা

শিশুদের হাসি পাঠাগার অমর একুশে রচনা প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিবস ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ছড়া আবৃত্তি, কবিতা আবৃত্তি ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতা আয়োজন থাকে। এখানে শিশুদের প্রতিভা বিকশিত হওয়ার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে অনেক কিছু জানা যায়।

আরও যত কার্যক্রম

এ ছাড়া শিশুদের হাসি পাঠাগার পিছিয়ে থাকা স্কুলগুলোতে বিজ্ঞান সেমিনার ও স্বাস্থ্য সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে। অসচ্ছল শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহযোগিতা, শিক্ষা সরঞ্জাম বিতরণ করছে নিয়মিত। পাশাপাশি বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ ও মাদকবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

সংগঠন নিয়ে ভবিষ্যতের লক্ষ্য

মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে লাইব্রেরি সেবা আমরাই প্রথম চালু করেছি। আমাদের মতো প্রত্যেক উপজেলায় এমন ডিজিটাল লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা হোক। বর্তমানে ভাড়া একটি কক্ষে লাইব্রেরির কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। ভবিষ্যতে একদিন স্থায়ী জায়গা পেলে আমাদের আর কোনো ভাবনার কারণ থাকবে না।


হিমালয়ের দুর্গম গিরিতে নির্ভীক শাকিল

আপডেটেড ৩১ জানুয়ারি, ২০২৩ ১৬:২৬
শাকিব হুসাইন

গল্পটা এক তরুণ পর্বতারোহীর। নাম ইকরামুল হাসান শাকিল। জন্ম গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ১৯৯৪ সালে। গাজীপুরের জনতা উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করে উত্তরা ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হন। তিন ভাইয়ের মধ্যে ইকরাম সবার বড়। ২০১৯ সালে বাবা মো. খবির উদ্দিন মারা গেলে সংসারের ভার এসে পড়ে ইকরামের ওপর। সংসার ও পড়াশোনার খরচ চালাতে সুপারশপে বিক্রয়কর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন।

এই জীবন সংগ্রামের মধ্যেও সৃজনশীল কাজ চালিয়ে গেছেন তিনি। খেলাধুলায়ও ভালো ছিলেন। ছোটবেলা থেকেই ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা ছিল ইকরামের। ছোটবেলা থেকেই চাইতেন, তার নাম ও ছবি যেন পত্রিকার পাতায় ছাপা হয়। গাজীপুরে ধূমপানের বিরুদ্ধে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করেছেন তিনি। সেখান থেকেই শুরু। তার পর ২০১০ সালে যোগ দেন পদাতিক নাট্যসংসদ বাংলাদেশে। এই নাট্যদলের হাত ধরেই তার প্রথম ভারতে যাওয়া। ‘নুরু মিয়ার কিচ্ছা’ নামে একটি নাটক লিখেছেন তিনি, তা এখন মঞ্চস্থ করছে পদাতিক।

২০১৩ সালে যোগ দেন ‘বাংলা মাউন্টেইনিয়ারিং অ্যান্ড ট্রেকিং ক্লাব’-এ। পর্বতারোহণের প্রাথমিক প্রশিক্ষণ নেন ভারত থেকে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রথমবারের মতো ২০ হাজার ২৯০ ফুট উচ্চতার কেয়াজো-রি পর্বতশৃঙ্গ জয় করতে যান এম এ মুহিতের নেতৃত্বে সাত পর্বতারোহী। তাদের একজন ইকরামুল হাসান। তবে শেষ পর্যন্ত মুহিত, ইকরাম ও কাজী বাহলুল শৃঙ্গটি জয় করেন। ২০১৭ সালে লারকে পিক জয়ের অভিযানেও ছিলেন তিনি। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে খুব কাছাকাছি গিয়ে তা জয় করা হয়নি। পরের বছর ভারতের নেহরু ইনস্টিটিউট অব মাউন্টেইনিয়ারিং থেকে উচ্চতর প্রশিক্ষণ নেন তিনি। প্রশিক্ষণের সময়ই তিনি জয় করেন ‘দ্রৌপদী-কা-ডান্ডা-২’ শৃঙ্গ।

২০১৯ সালে বাংলাদেশসহ পাঁচ দেশের আট পর্বতারোহী ‘হিমলুং’ জয়ের অভিযানে নামেন । সেই দলে অংশ নিয়ে তিনি প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে হিমলুংয়ের চূড়ায় পা রাখেন।

ইকরামুলের স্বপ্ন আকাশসমান। সব সময় নিজের সেরাটাই ছুঁতে চায়। তাই তো নেমে পড়েছেন এক দুর্গম অভিযানে। এ সম্পর্কে তিনি জানান, নেপালে এর আগেও কয়েকবার পর্বত অভিযানে এসেছি। সে সময় সুউচ্চ পাহাড়ের চূড়ায় উঠে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করেছি। তবে এবার যে কারণে এসেছি সেটি আমার জন্য একটু বেশিই রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। এমনকি এ কাজে সফল হতে পারলে লাল-সবুজের হয়ে প্রথমবারের মতো প্রতিনিধিত্ব করতে পারব।

হিমালয় পর্বতের পশ্চিমে নেপাল তিব্বতের সীমান্ত এলাকা হিলশা থেকে শুরু করে পূর্বের কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত ১ হাজার ৭০০ কিলোমিটার দুর্গম পথ পাড়ি দিচ্ছি। মূলত দীর্ঘ এই পথকে ‘গ্রেট হিমালয় ট্রেইল’ বলা হয়ে থাকে। আর তাইতো একবুক স্বপ্ন নিয়ে লাল-সবুজের হয়ে প্রথমবার মতো এই অভিযান করছি।

১০ জুলাই ঢাকা থেকে নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডুর ত্রিভুবন ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টে পৌঁছাই। মূলত সেদিন থেকেই আমার ট্রেকিংয়ের পরিকল্পনা শুরু করতে হয়েছিল।

‘গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল’-এর আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি নিতে কাঠমান্ডুতে ১৫ দিন কেটে গেল। এর মাঝে সব ধরনের জটিলতা নিয়ে আলাপ-আলোচনা মিটিয়ে ফেলতে হলো। ২৫ জুলাই কাঠমান্ডু শহর ছেড়ে বাসে চেপে পৌঁছালাম নেপালগঞ্জে।

হাতে বেশি সময় নেই। তাই নেপালগঞ্জ থেকে তারা এয়ারলাইনসের ছোট একটি যাত্রীবাহী বিমানে করে ৪৯ মিনিটের আকাশপথে যাত্রা শেষে পৌঁছালাম সিমিকোটে। সেখানে পরিবেশের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়নি। কেননা, এখানকার প্রকৃতির মেজাজ সম্পর্কে ক্ষুদ্র ধারণা ছিল। মূলত সেই অভিজ্ঞতাই আমাকে সাহস জুগিয়েছে।

জুলাইয়ের ২৮ তারিখ সকাল থেকে অভিযান শুরু করলাম। একটানা চার দিন ট্রেকিং করে পশ্চিম নেপালের তিব্বত বর্ডারে ৩ হাজার ৬৪২ মিটার উচ্চতার হিলশা গ্রামে পৌঁছাই।

আগস্টের প্রথম সকালেই হিলশা থেকে মূল অভিযান শুরু করে হোমলা জেলার ইয়ারি, তুমকোট, মোছু, তাপলুং, কেরমি, ধারাপুরি, সিমিকোট হয়ে মোগু জেলায় পৌঁছাতে হয়েছে।

এরপর খানিকটা বিশ্রাম নিয়ে আবারও মোগু জেলার পিপলান, বাম, গামগাধি, রারা, মাঙরি। সেখান থেকে তিয়ার হয়ে আপার ডোলপা জেলায় প্রবেশ করি। এভাবে নেপালের উঁচু-নিচু দুর্গম বিপজ্জনক পথ ধরে টানা ৪১ দিনের ট্রেকিং শেষে বর্তমানে মুস্তাং জেলার অন্নপূর্ণা সার্কিট করে বাংলাদেশ নেপালের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ নেপাল ফ্রেন্ডশিপ অভিযানে ২টি ৬ হাজার মিটারের পর্বত অভিযানে অংশগ্রহণ করি এবং ডোলমা খাং (৬,৩৩২ মি.) পর্বত সফলভাবে আরোহণ করে ফের গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইলের মানাসলু সার্কিট, রুবি ভ্যালি শেষ করে এখন ল্যাংটাং অঞ্চলে আছি।

তিনি আরও বলেন, নেপালের সব থেকে রিমোট (প্রত্যন্ত অঞ্চল), সীমাবদ্ধ, দুর্গম ও বিপজ্জনক এই দীর্ঘ উচ্চ হিমালয়ের পথ পাড়ি দিতে অতিক্রম করতে হয়েছে ১৮টি কঠিন পর্বতের পাস। যার মধ্যে ৯টি ৫ হাজার মিটারের ওপরে; ছারকোলা (৫১৪৯ মি.), ইয়ালা লা (৫৪১৪ মি.), নিঙমা গ্যানজেন (৫৫৬৪ মি.), নাঙলা (৫৩৮৮ মি.), মোলা লা (৫০২৭ মি.), নেওয়ার (৫৫৫৭ মি.), তুচে লা (৫১২১ মি.), থ্রঙলা পাস (৫,৪১৬ মি.), লারকে পাস (৫,১০৬ মি.) এবং ৯টি চার হাজার ও তিন হাজার মিটারের; নারা লা (৪৫৬০ মি.), অনামি (৪৪৫৮ মি.), ইয়াম বোর লা (৪৮১৩ মি.), শিমেন লা (৪৩৫৪ মি.), খোমা লা (৪৫৬৫ মি.), ভিমা লুজুঙ লা (৪৪৯৮ মি.), মানাগি পাস (৩,০৪৫ মি.), পাসাং পাস (৪,৮৫০ মি.), খুরপু পাস (৩,৭৬০ মি.) ছিল।

ট্রেইলে পাড়ি দিতে গিয়ে বৈরী আবহাওয়ার মধ্যে পথ হারিয়ে প্রায় দুই দিন আটকে ছিলাম। এ সময় শরীরে শক্তি জোগাতে অনাহারে দিন-রাত কাটাতে হয়েছে। শুধু হালকা শুকনো জাতীয় খাবার পেটে গিয়েছে। এভাবেই দুর্গম পথে কয়েক দিন কাটাতে হয়েছে।

এমনকি কখনো কখনো পাথুরে পথ নামতে গিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে বিপদের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবুও স্বপ্ন জয়ের পথে ধীরে ধীরে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে সেখান থেকে আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছি।

‘গ্রেট হিমালয়ান ট্রেইল’-এর অসংখ্য বরফগলা খরস্রোতা ঠাণ্ডা পানির নদীতে নেমে পার হতে হয়েছে। হিমালয় পর্বতের কোল ঘেঁষে কত গ্রাম, নদী, জঙ্গল, পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে গিয়ে অসংখ্য রোমাঞ্চকর বৈচিত্র্যময় সুন্দর ও ভয়ানক অভিজ্ঞতাও হয়েছে, যা কখনোই ভোলার নয়। ভয়ানক সুন্দর এই পৃথিবীর বুকে মৃত্যুকে আলিঙ্গন করতেও যেন দ্বিধা নেই।

হিলশা থেকে শুরু করে পূর্বের কাঞ্চনজঙ্ঘা বেসক্যাম্প পর্যন্ত টানা ১৭০০ কিলোমিটার পথ ১৫০ দিনে পাড়ি দিতেই আমি এখন হিমালয়ের গভীরে অবস্থান করছি। কিন্তু অর্থাভাবে সেই স্বপ্ন ধীরে ধীরে ফিকে হতে বসেছে। নিজেকে ভয়ংকর সুন্দরের সঙ্গে আলিঙ্গন ও দেশের জন্য গৌরবের কৃতিত্ব বয়ে আনতে প্রয়োজন পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতা।

অভিযানটি সম্পন্ন করতে এখনো প্রায় ৬ লাখ টাকা প্রয়োজন। অভিযান শুরুর আগে দারাজ, বিএমটিসি পাশে দাঁড়ালেও এখনো সম্পূর্ণ অর্থ জোগান হয়নি। সম্পূর্ণ টাকা জোগাড় করতে না পারলে মাঝপথেই ফিরে আসতে হবে।

অত্যন্ত বিপৎসঙ্কুল এবং কষ্টসাধ্য পর্বতাভিযান এই গ্রেট হিমালয় ট্রেইল। সারা বিশ্বে এখন পর্যন্ত ৫০ জনেরও কম পর্বতারোহী এই অভিযান পুরোটা সফলভাবে সম্পন্ন করেছেন। এই অভিযানে সফল হতে পারলে ইতিহাসের পাতায় নাম উঠবে লাল-সবুজের পতাকার।


ওয়ার্ল্ড ইকোনমিকস কাপে বাংলাদেশের ছয় পদক

আপডেটেড ২৭ ডিসেম্বর, ২০২২ ২০:৩৫
আবীর হাসান

বাংলাদেশের তরুণরা সব সময়ই সম্ভাবনাময়ী। অর্থনীতির বিশ্বকাপে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা জিতে নিয়েছে ছয় পদক। তিনটি রৌপ্য ও তিনটি ব্রোঞ্জ পদক পেয়েছে তারা। বাংলাদেশের পাশাপাশি ছিল জাপান, যুক্তরাজ্য, জার্মানি। এদের পেছনে ফেলেই লাল-সবুজের প্রতিনিধিত্ব করেছে বাংলাদেশি তরুণরা। চীনে আয়োজিত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিকস কাপ থেকে তরুণদের এই অর্জন এসেছে। ২০২০ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হয় বিশ্বজুড়ে অর্থনীতিপড়ুয়া স্কুল শিক্ষার্থীদের এই প্রতিযোগিতা। গত দুই বছর করোনা মহামারির কারণে পুরো প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হয় অনলাইনে। বৈশ্বিক পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ এ বছর অংশ নেয় ৩৮টি দেশের ৫২টি দলের ২৬৫ প্রতিযোগী। বিশ্ব অর্থনীতির ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব খুঁজে বের করার লক্ষ্যেই সূচনা হয় ওয়ার্ল্ড ইকোনমিকস কাপের।

এবার বাংলাদেশ দলে ছিল মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ফাহিম মোশাররফ রাতুল ও রায়হান হক, ম্যাপললিফ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের আসহাব রিবাত। এরা প্রত্যেকেই রৌপ্যপদক জয় করেছে। পাশাপাশি গ্রীনহারেল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অনুশ্রী চক্রবর্তী, মাস্টারমাইন্ডের রুবাইয়া হাসাইয়ান ফারহিন এবং ইন্টারন্যাশনাল হোপ স্কুলের ইহান ফায়াজ ফারুক জয় করেছে ব্রোঞ্জপদক।

জাতীয় পর্যায়ে বাংলাদেশ ইকোনমিকস অলিম্পিয়াড আয়োজিত প্রতিযোগিতায় প্রায় দেড় হাজার প্রতিযোগীর মধ্য থেকে জাতীয় ক্যাম্পের জন্য বাছাই করা হয় ২২ সদস্যকে। সেখান থেকে যাচাই-বাছাই করে ছয় সদস্যকে নিয়ে তৈরি হয় অর্থনীতির বিশ্বকাপের ‘টিম বাংলাদেশ’।

ইকোনমিকস ওয়ার্ল্ড কাপের আসরটি তিনটি ভিন্ন ধাপে অনুষ্ঠিত হয়। প্রথম ধাপের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয় অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোর ওপর। বহুনির্বাচনী পদ্ধতিতে মূলত ম্যাক্রো ও মাইক্রো ইকোনমিকসের ভেতর থেকেই প্রশ্নগুলো করা হয়। দ্বিতীয় ধাপে প্রতিযোগীদের ১৫০ মিনিটের মধ্যে চিন্তাভাবনা করে কিছু প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করে আনতে হয়। সর্বশেষ ধাপে তাদের একটি বিষয় দেয়া হয়, যা থেকে ২৪ ঘণ্টার ভেতর দলগতভাবে একটি প্রেজেন্টেশন দিতে হয় জুরি বোর্ডের সামনে। আর সেই প্রেজেন্টেশনের ভেতর সৃজনশীলতা ও উদ্ভাবনী চিন্তা অবশ্যই থাকতে হবে।

বাংলাদেশ দলের ফাহিম মোশাররফ রাতুল জানিয়েছেন, ‘আমাদের সবারই এই প্রথম এ ধরনের প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার অভিজ্ঞতা হলো। তাই বাংলাদেশকে অর্থনীতির এই বিশ্ব আসরে তুলে ধরার ব্যাপারটা মাথায় ছিল। এই অর্জনে আমরা গর্বিত। দেশকে সম্মানিত করতে পেরে আমাদের দারুণ ভালো লাগছে। বাংলাদেশের তরুণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সময়ে দেশ ও দেশের গণ্ডি পেরিয়ে সাফল্য বয়ে আনছে। আমরা সব সময় চাই, আমাদের এই ধারাবাহিকতা যেন অব্যাহত থাকে।’

এবারের প্রতিযোগিতা বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ছিল বলে জানায় অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা। বিশ্বখ্যাত এমআইটি, অক্সফোর্ড ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে গঠিত জুরি বোর্ড প্রতিযোগীদের বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গত বছরের প্রথম আসরেও একটি স্বর্ণ, দুটি রৌপ্য ও দুটি ব্রোঞ্জপদক অর্জন করে।


দেশে গ্রিন শিপবিল্ডিংয়ের অনেক সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে: দীপু মনি

বুয়েটে শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে টোয়িং ট্যাংক। সার্বিক উন্নয়নে এটি অসাধারণ ভূমিকা রাখবে বলে আশাবাদি দীপু মনি।
আপডেটেড ২২ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:৩৬
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দুই দিনব্যাপী ১৩তম আন্তর্জাতিক মেরিন টেকনোলজি সম্মেলন-মারটেক ২০২২ এর শেষ দিন ছিল বৃহস্পতিবার। গতকাল বুধবার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) সূচনা হয় এ অনুষ্ঠানের। এ সম্মেলনের আয়োজক ছিল বিশবিদ্যালয়ের নৌযান ও নৌযন্ত্র কৌশল বিভাগ। অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের উপাচার্য প্রফেসর ড. সত্যপ্রসাদ মজুমদার, উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আব্দুল জব্বার খাঁন, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান প্রমুখ।

সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী। এ সম্মেলনের লক্ষ্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উৎসাহ প্রদান, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক যোগাযোগ উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক নৌ প্রযুক্তি বিষয়ক গবেষণায় জ্ঞান বিনিময়। এবারের আয়োজনের আলোচ্য বিষয়বস্তুর মধ্যে ছিল শিল্প বিপ্লব ৪.০ (ইন্ডাট্রিয়াল রেভ্যুলিউশন ৪.০) এবং সমুদ্র অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি)।

আয়োজনের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রিন শিপবিল্ডিংয়ের অনেক সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আমাদের এই কাজগুলোর সঙ্গে টেকসই উন্নয়ন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার বিষয়গুলো মাথায় রেখে গবেষণা ও উন্নয়ন করতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বুয়েটে শীঘ্রই চালু হতে যাচ্ছে টোয়িং ট্যাংক। সার্বিক উন্নয়নে এটি অসাধারণ ভূমিকা রাখবে।’


banner close