রোববার, ১ জুন ২০২৫
১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অদক্ষ পাইলট নিয়োগ, তদন্ত চান বিমানের পাইলটরা

বিমানের পাইলট। ফাইল ছবি
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা
প্রকাশিত : ২৯ আগস্ট, ২০২২ ১১:৪৮

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে পাইলট নিয়োগ অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির আটটি অভিযোগ তুলেছেন সংস্থাটির পাইলটরা। তদন্ত করার দাবি তুলে তারা বলছেন, বিমানে পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ও দেশীয় আইন লঙ্ঘন হয়েছে। স্বয়ং বিমানের কর্মকর্তাদের স্বজনরা নিয়োগের ক্ষেত্রে সুবিধা পেয়েছেন।

এসব অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়েছে বিমানে পাইলটদের সংগঠন বাংলাদেশে এয়ারলাইন পাইলট অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)। গত বৃহস্পতিবার (২৫ আগস্ট) বাপার পক্ষ থেকে পাইলট নিয়োগে নানা অনিয়মের কথা উল্লেখ করে তদন্ত করতে বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে এক চিঠিতে দেয়া হয়।

বাপার নির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে চিঠিটি দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, বিমানের পাইলট নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি হয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। নিয়োগের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিমানের ট্রেনিং বিভাগের (সিওটি) প্রধানকে। তার স্ত্রী পাইলট হওয়ার জন্য আবেদন করেছেন, যা নিশ্চিতভাবে স্বার্থের দ্বন্দ্ব।

বাপা বলছে, পাইলট নিয়োগের ক্ষেত্রে বিমানের অপারেশনাল নির্দেশনা (ম্যানুয়াল), বাপার সঙ্গে বিমানের ‍চুক্তি চরমভাবে লঙ্ঘন হয়েছে। বাপা এসব নিয়ে প্রশ্ন তুললেও তা আমলে নেয়া হয়নি। নতুন করে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেয়া ওই ফ্লাইট অফিসাররা নিয়মিত ফ্লাইট অফিসার হিসেবে ফ্লাই করতে পারবেন না, যতক্ষণ না তারা ৩০০ ঘণ্টা ফ্লাই করছেন। এসব ফ্লাইট অফিসারের জন্য এখন বিমান বড় অঙ্কের টাকা খরচ করে প্রশিক্ষণ দিচ্ছে।

বাপার ওই চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয়েছে বিমানের প্রশাসন ও ফ্লাইট অপারশেন বিভাগের পরিচালকদের কাছে। বাপার চিঠিতে বলা হয়, বিমানের বোয়িং-৭৭৭ উড়োজাহাজ চালানোর জন্য নতুন করে কোনো পাইলট নিয়োগ দেয়া হয়নি। তবে ক্রু নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছে এবং ক্রুদের বাছাই করে মেইল পাঠানো হয়েছে।

বাপা বলছে, ফ্লাইট অফিসার পদে একজন এয়ারলাইন ট্রান্সপোর্ট পাইলট লাইসেন্সের ক্ষেত্রে ভুয়া সনদ দিয়েছেন। তার সিমুলেটর ট্রেনিং করেননি। পরে তাকে বিমানের খরচে এ প্রশিক্ষণে পাঠানো হয়, যা সম্পূর্ণ অপচয়। বিমানের বোয়িং-৭৭৭-এর জন্য জ্যেষ্ঠ পাইলটদের পাশ কাটিয়ে এক জুনিয়র পাইলটকে পাইলটদের প্রশিক্ষক বানানো হয়েছে, যা অনৈতিক। এতে জ্যেষ্ঠ পাইলটদের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।

বাপার চিঠিতে আরও বলা হয়, গাফিলতির কারণে বোয়ি-৭৮৭ ফ্লাইটের ক্রুদের বিদেশে গিয়ে জেডএফটিটি ও পিপিসি প্রশিক্ষণ পুনরায় (রিটেক) নিতে হচ্ছে। এতে বিমানের একটা বড় অঙ্কের অর্থ খরচ হবে। বিমানের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার স্ত্রীকে পাইলট হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। প্রশিক্ষণের সময় ওই নারী পাইলটের জ্ঞান কম থাকায় তাকে বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানো হয়েছিল। বর্তমানে ওই পাইলটের পক্ষে বোয়িং-৭৭৭-এর ট্রেনিং নেয়াও কষ্টকর হয়ে পড়েছে। এসব অনিয়মের কারণে বিমানের বেশ কয়েকজন পাইলটের লাইসেন্স লঙ্ঘিত হয়েছে এবং ওই পাইলটদের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) চিঠি দিয়ে সতর্ক করেছে।

বাপার পাইলটরা বলছেন, ‘তারা চান বিমানে দক্ষ পাইলট নিয়োগ দেয়া হোক। পাইলট নিয়োগে তদন্ত করা হলে আরও অনিয়ম বেরিয়ে আসবে।’

বাপার পাইলটদের এ চিঠির বিষয়ে বিমানের বক্তব্য আনুষ্ঠানিকভাবে গতকাল রোববার জানতে চাওয়া হয়। তবে বিমান কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য দেয়নি।


জলাবদ্ধতায় অচল সিলেট নগর

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দেবাশীষ দেবু, সিলেট

অতিবৃষ্টির কারণে সিটি নগরের বিভিন্ন এলাকায় তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) পক্ষ থেকে খোলা হয়েছে একটি বিশেষ জরুরি কন্ট্রোল রুম।

এদিকে বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলের কারণে দ্রুত বাড়ছে সুরমা কুশিয়ারাসহ সিলেটের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি। এতে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ঢলে ইতোমধ্যে তলিয়ে গেছে সীমান্তবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চলের সড়ক ও জনপদ।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে গত কয়েক দিন ধরেই বৃষ্টি হচ্ছে সিলেটে। নিম্নচাপ সরে গেলেও তার প্রভাবে বৃষ্টি এখনো অব্যাহত আছে। গত শুক্রবার সকাল থেকে গতকাল শনিবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়।

এদিকে ভারী বৃষ্টিতে শুক্রবার রাত থেকেই সিলেট নগরের অনেক এলাকার বাড়িঘরে পানি ঢুকতে শুরু করে। তলিয়ে যায় সড়ক। শনিবার দুপুরে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত অর্ধশতাধিক এলাকা জলমগ্ন ছিল।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ভারী বৃষ্টিতে নগরীর জিন্দাবাজার, ক্বিন ব্রিজ এলাকা, আম্বরখানা, বন্দরবাজার, টিলাগড়, উপশহর, লালদীঘির পাড়, উপশহর, তেররতন, মাছিমপুর, তালতলা, শিবগঞ্জ, ছড়ারপাড়সহ বিভিন্ন জায়গায় হাঁটুপানি জমে যায়। অনেক বাসা-বাড়িতে পানি ঢুকে পড়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষ।

সিসিক সূত্রে জানা গেছে, বৃষ্টির পানি দ্রুত অপসারণ ও পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের জন্য সিলেট সিটি করপোরেশন ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি (কক্ষ নং-২০৫) কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। সিসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আলী আকবরকে জরুরি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে চালু করা এই কন্ট্রোল রুমের সার্বিক তত্ত্বাবধানে রয়েছেন প্রধান প্রকৌশলী নূর আজিজুর রহমান ও প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা লে. কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ একলিম আবদীন।

গতকাল সিসিকের এক অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করে পরিস্থিতি সরাসরি পরিদর্শন করবেন এবং তাৎক্ষণিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

এ ছাড়া প্রতিদিন বিকেল ৫টার মধ্যে সব ওয়ার্ড থেকে জলাবদ্ধতা নিরসন ও পানি নিষ্কাশনের অগ্রগতির প্রতিবেদন সিসিকের আইসিটি শাখার ই-মেইলে ([email protected]) পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

নগরের চৌহাট্টা এলাকার বাসিন্দা রাজনীতিবিদ ও আইনজীবী জাকির আহমদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, একটু ভারী বৃষ্টি হলেই নগর পানিতে তলিয়ে যায়। বাসার ভেতর পানি ঢুকে অনেক আসবাবপত্র নষ্ট হয়। বছরের পর বছর ধরে এমন অবস্থা চলে আসছে।

সিসিকের কন্ট্রোল রুম চালুকে আইওয়াশ দাবি করে তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসনের নামে বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সিসিক কয়েক হাজার কোটি টাকা খরচ হয়েছে। এতে কাজের চেয়ে লুটপাটই বেশি হয়েছে। তাদের লুটপাট আর অপরিকল্পিত কাজের কারণেই আমাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বন্যার শঙ্কা: এদিকে সিলেটের পাশাপাশি উজানে ভারতের আসাম এবং মেঘালয়েও হচ্ছে ভারী বৃষ্টিপাত। এর পানিও নেমে আসছে। এ অবস্থায় সিলেটের নিম্নাঞ্চলের কিছু কিছু অংশ ডুবে গেছে। ফুঁসছে সুরমা-কুশিয়ারাও। তবে এই দুই নদীর পানি এখনো বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি।

গত কয়েক দিন ধরেই সিলেট অঞ্চলে বন্যার পূর্বাভাস দিয়ে যাচ্ছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।

সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে মোট ৪১০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

আসাম ও মেঘালয়ের বৃষ্টির পানি দ্রুত নেমে আসে সুরমা কুশিয়ারা এবং সারি, সারিগোয়াইন, লোভাছাড়ার মতো পাহাড়ি নদী হয়ে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, জেলার প্রধান দুই নদী সুরমা, কুশিয়ারাসহ সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। সারি-গোয়াইন ও ধলাই নদের পানি বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সূত্রে জানা গেছে, গোয়াইনঘাট, কোম্পানীগঞ্জ, জৈন্তাপুর, জকিগঞ্জ ও কানাইঘাট উপজেলার নিম্নাঞ্চলে দ্রুত পানি বাড়ছে। বৃষ্টি অব্যাহত থাকলেও পরিস্থিতির অবনতি হওয়ার আশঙ্কা আছে। গোয়াইনঘাট উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এসব স্থানে পর্যটকদের ভ্রমণ করতে না যাওয়াটাই ভালো বলে স্থানীয় লোকজন পরামর্শ দিয়েছেন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, পানি বৃদ্ধি পেলেও কারও পানিবন্দি অবস্থায় থাকার খবর পাওয়া যায়নি। স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেছে; পাশাপাশি জনসাধারণকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে শুকনা খাবারের মজুত রাখা হয়েছে।

গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রতন কুমার অধিকারী জানান, উপজেলার গোয়াইনঘাট-রাধানগর সড়কের নিচু অংশের অংশবিশেষ প্লাবিত হয়েছে। তবে বৃষ্টি কমে গেলেই পানি নেমে যাবে। এখনো উপজেলার কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও তারা পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টি অব্যাহত থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি বাড়ছে।

কোম্পানীগঞ্জের ইউএনও আজিজুন্নাহার বলেন, গতকালের চেয়ে আজ পানি কিছুটা কমেছে। নিম্নাঞ্চলে পানি থাকলেও কোনো গ্রাম বা এলাকা প্লাবিত হয়নি। উপজেলায় ৩৫টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তবে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে এখনো কারও আশ্রয় নেওয়ার প্রয়োজন পড়েনি।


অকার্যকর হয়ে পড়েছে বাঁশখালী বেড়িবাঁধ

সাগরের পানি বেড়িবাঁধ উপচে লোকালয় বিরান হওয়ার পথে।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রহিম সৈকত, আনোয়ারা ও বাঁশখালী (চট্টগ্রাম)

চট্টগ্রামের উপকূলীয় উপজেলা বাঁশখালী। বঙ্গোপসাগরের গা ঘেঁষে বিস্তৃত এই জনপদের একমাত্র ঢাল হিসেবে কাজ করে বেড়িবাঁধ। কিন্তু বছরের পর বছর দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা ও নিম্নমানের নির্মাণকাজে সেই ঢাল আজ প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। লক্ষাধিক মানুষ এখন প্রকৃতির করুণার ওপর নির্ভর করে বেঁচে আছে, কারণ যেকোনো সময় একটুখানি জলোচ্ছ্বাসেই ভেসে যেতে পারে তাদের ঘরবাড়ি, চাষের জমি আর স্বপ্ন।

চলমান বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপের প্রভাবে সৃষ্টি হওয়া ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে ঝোড়ো হাওয়া ও প্রচণ্ড ঢেউয়ের ফলে বেড়িবাঁধ ভাঙা অংশ দিয়ে বানের জলের মতো হু-হু করে পানি প্রবেশ করছে। শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায় বেড়িবাঁধ উপচে পানি ঢুকছে লোকালয়ে। বিপরীতে এসব দেখে অসহায় অবস্থায় উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে উপকূলবাসীর।

পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ২০১৫ সালে বাঁশখালীতে ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় ২৫১ কোটি ২৯ লাখ টাকা। পরবর্তী সময় ব্যয় বাড়িয়ে করা হয় ২৯৩ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এ প্রকল্পের ৮৫ শতাংশ কাজ শেষ হলেও, মাত্র দেড় বছরের ব্যবধানে কদমরসুল, খানখানাবাদ, প্রেমাশিয়া, সাধনপুরসহ একাধিক পয়েন্টে বেড়িবাঁধ ভেঙে পড়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলেন, সমস্যা শুধু কাজের মানে নয়, প্রকল্প নকশাতেও। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পানিসম্পদ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সামিউন বাসির বলেন, ‘এ ধরনের ব্যর্থতার পেছনে দুটি বড় কারণ- নিম্নমানের নির্মাণ ও নকশাগত ত্রুটি।’

তিনি আরও বলেন, যদি সঠিক নকশা অনুসরণ করে টেকসই উপকরণ ব্যবহৃত হতো, তাহলে এই পরিণতি আসার কথা ছিল না।

১৯৯১ সালের ২৯ এপ্রিলের ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় আজও বাঁশখালীবাসীর মনে তাজা। সেদিন শুধু বাঁশখালীতেই প্রাণ হারিয়েছিল ৩৫ হাজার মানুষ। সেই স্মৃতিতে প্রতিবছর এপ্রিল মাস এলেই নতুন আতঙ্কে ভোগেন উপকূলবাসী। এ বছরও তার ব্যতিক্রম নয়, কারণ চলমান ঘূর্ণিঝড় শক্তির প্রভাবে আবারও বেড়িবাঁধ উপচে সাগরের পানি গ্রামে ঢুকে পড়ছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, বেড়িবাঁধ নির্মাণকাজে সরাসরি যুক্ত ছিলেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ও সাবেক জনপ্রতিনিধিরা। একাধিক ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রয়েছে অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ। এমনকি অনেকে বলছেন, প্রকল্পের অর্ধেক টাকাও ব্যয়ে যায়নি, বাকিটা গেছে ভাগ-বাঁটোয়ারায়।

একজন স্থানীয় বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘যে এমপি ছিলেন, তিনিও ভাগ পেতেন, ইউপি চেয়ারম্যানরা মাল সরবরাহ করতেন, সব মিলিয়ে বাঁধের এই অবস্থা।’ এই বাঁধের নির্মাণে কাজ পেয়েছে পূর্বে বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ‘হাসান ব্রাদার্স’-এর মতো সংস্থাও, বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় অধিবাসী ও মেরিনার ক্যাপ্টেন মনজুরুল হক টেকসই আধুনিক বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়ে বলেন, জলোচ্ছ্বাসে ক্ষতিগ্রস্ত উপকূলবাসী যখন অসহায়, তখন বহিরাগত গোষ্ঠী উৎসবের মতো করে বঙ্গোপসাগরের সম্পদ লুটছে। এদের কোনো স্থানীয় দায়বদ্ধতা নেই, অথচ তারাই এখন প্রধান সুবিধাভোগী। জেলেদের অভিযোগ, প্রভাবশালীরা নিষিদ্ধ জাল ও আধুনিক ট্রলার দিয়ে মাছের ডিম ও ছোট মাছ পর্যন্ত ধরে ফেলছে, ফলে মাছের বংশবৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছে এবং স্থানীয় জেলেদের মাছ ধরা কঠিন হয়ে পড়ছে। এসব কার্যকলাপ সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রেও দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি ডেকে আনছে।

ঠিকাদার ব্যবসায় জড়িত একজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন প্রথম শ্রেণির ঠিকাদার বলেন, দুর্নীতি শুধু রাজনৈতিক নেতাদের হাতে হয়, ঠিকাদারদের হাতে হয় তেমন নয়, এই কাজে যে সরকারি দপ্তরও জড়িত আছে, পার্সেন্টেস ছাড়া যে ফাইল নড়াচড়া হয় না এই খবর কয়জনে রাখে। টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার জন্য পছন্দের লোকজনদের গোপন তথ্য ফাঁস করে দেওয়ার খবর কেউ বলে না। ধাপে ধাপে পার্সেন্টেসের খেলা বন্ধ করা গেলে কাজের কাজ কিছু হবে।

এই প্রেক্ষাপটে ২০২৪ সালের মে মাসে নতুন করে বাঁশখালী বেড়িবাঁধ উন্নয়নে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছিল একনেক সভায়। সচেতন মহলের দাবি বড় বাজেট মানেই টেকসই কাজ নয়। যদি তদারকি না থাকে, দুর্নীতিবাজদের হাত থেকে রক্ষা না করা যায়, তাহলে ৬০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পও অদূর ভবিষ্যতে আরেকটি দুর্নীতির দৃষ্টান্ত হয়ে উঠতে পারে।

স্থানীয়দের দাবি সেনাবাহিনী বা নৌবাহিনীর অধীনে নির্মাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন হলে তদারকি ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে। তৃতীয় পক্ষ দিয়ে নির্মাণসামগ্রী, ব্যয় ও অগ্রগতি মূল্যায়ন করতে হবে। স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে; গণমাধ্যম ও নাগরিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রকল্প মনিটরিং বাড়াতে হবে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহকারী উপ-প্রকৌশলী তানজির সাইফ বলেন, ইতোমধ্যে মোট পাঁচ প্যাকেজে পাঁচটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে বিধিমোতাবেক চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। বাঁশখালীর অভ্যন্তরীণ সড়ক চলাচলের অনুপযোগী বিদায় সাগরপথে মালামাল আনা হবে তার জন্য জেটি নির্মাণ করতে হবে। বেড়িবাঁধের বেহালদশার কথা বলা হলে তিনি বলেন কিছু হবে না। গত বছর কিছু হয়েছিল? এর মধ্যে আমাদের কাজ শুরু হবে।

বাঁশখালীর বেড়িবাঁধ আজ শুধু একটি প্রকৌশলগত কাঠামো নয়, এটি লক্ষাধিক মানুষের বাঁচা-মরার প্রশ্ন। টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কেবল একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন নয়, এটি রাজনৈতিক সদিচ্ছা, সুশাসন, স্বচ্ছতা এবং জনগণের প্রতি কর্তব্য পালনের একটি পরীক্ষা।


কুষ্টিয়া সীমান্তে ৯ জন বাংলাদেশীকে পুশ-ইন বিএসএফের

বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইন করা বাংলাদেশী ৯ নাগরিক। ছবি: দৈনিক বাংলা 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ৯ জন বাংলাদেশী নাগরিককে পুশ-ইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বিএসএফ। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার ভাগজত ঘাট এলাকায় তাদের হেফাজতে নেয় ৪৭ ব্যাটালিয়ন বিজিবি। পুশ-ইন করা বাংলাদেশী নাগরিকদের মধ্যে রয়েছে ৪ জন পুরুষ, ২ জন নারী, ২ জন কিশোর এবং ১ জন শিশু।

শনিবার বিকেল ৫ টার দিকে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড।

বিজিবি সূত্র জানান, ব্যাটালিয়নের (৪৭ বিজিবি) অধীনস্থ আশ্রায়ন বিওপি’র দায়িত্বপূর্ণ এলাকার সীমান্ত পিলার ১৫৪ হতে আনুমানিক ৩ কিলোমিটার বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভাগজত ঘাট এলাকায় একটি নৌকা থেকে ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিককে নামতে দেখে স্থানীয় জনগণের সন্দেহ হলে তারা বিষয়টি আশ্রায়ণ বিওপিকে অবহিত করে। খবর পেয়ে বিজিবির টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে ৯ জনকে হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করেন।

জিজ্ঞাসাবাদ তারা বলেন, তারা দুটি পৃথক পরিবার এবং প্রায় ৪ (চার) বছর আগে কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী থানার বামনহাট সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করে। তারা দীর্ঘদিন ধরে ভারতের দিল্লি রাজ্যের অন্তর্গত উত্তর-পশ্চিম দিল্লি জেলার রামপুরা থানার অধীনস্থ একটি এলাকায় ইটভাটায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন।

তারা আরও জানায়, সম্প্রতি ভারতের অভ্যন্তরে অবৈধ বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে ধরপাকড়ের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় এবং আত্মসমর্পণকারীদের বিরুদ্ধে কোনো হয়রানি না করার সরকারি ঘোষণায় উৎসাহিত হয়ে নিজেরাই স্থানীয় পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে স্বেচ্ছায় দেশে ফেরার অভিপ্রায় প্রকাশ করে।

পরবর্তীতে গতকাল শুক্রবার তাদেরকে ভারতের জলঙ্গি থানার নিকটবর্তী একটি বিএসএফ ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে থেকে বিএসএফ কর্তৃক কাঁটাতারবিহীন চরাঞ্চলীয় সীমান্ত দিয়ে রাত সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশে প্রবেশ করানো হয়। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তারা পায়ে হেঁটে ও ভাড়াকৃত মোটরসাইকেলে চলাচল করে ভাগজত ঘাট এলাকায় এসে উপস্থিত হয়।

বিএসএফ কর্তৃক পুশ-ইন করা ৯ জন বাংলাদেশি নাগরিক বর্তমানে বিজিবির হেফাজতে রয়েছে এবং তারা শারীরিকভাবে সুস্থ আছে বলে জানান বিজিবি।

বিষয়টি বিজিবি কর্তৃপক্ষ ঘটনার পরপরই সংশ্লিষ্ট থানা ও বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে সকাল সাড়ে ১০ টার সময় সীমান্ত পিলার ৮৫/১০-এস এর নিকটবর্তী স্থানে বিজিবি চর-চিলমারী কোম্পানি ও প্রতিপক্ষ ১৪৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের জলঙ্গি কোম্পানি কমান্ডারের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিজিবি পুশ-ইনের বিষয়ে প্রতিবাদ জানালে বিএসএফ কর্তৃপক্ষ তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে। তবে ভবিষ্যতে এমন ঘটনা ঘটলে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে হস্তান্তর নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেন।


সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রবিউল ইসলাম (শ্যামনগর, সাতক্ষীরা)

জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুন্দরবনে প্রবেশে ৩ মাসের জন্য নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বন বিভাগ। এ বিধিনিষেধ আগামী ১ জুন থেকে শুরু হয়ে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত জারি থাকবে। বিষয়টি সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন জনপদে মাইকিং করে স্থানীয় বনজীবীদের জানানো হয়েছে। তবে কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় সুন্দরবনে ওপর নির্ভরশীল পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি বনজীবী ও ট্রলারচালক বেকার হয়ে পড়বে। প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই ৬৫ দিন সমুদ্রে মাছ ধরার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। এ সময় প্রতি জেলেকে সরকারিভাবে ৮০ কেজি করে চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হয়। তবে সুন্দরবনের জেলেদের জন্য কোনো সহযোগিতা না থাকায় নিষেধাজ্ঞার সময় সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। এ কারণে খাদ্য সহযোগিতার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
আজ শুক্রবার সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জের বুড়িগোয়ালিনী এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বিষণ্ন মুখে বন থেকে ঘরে ফিরছেন জেলেরা। পরের ৩ মাস কীভাবে চলবেন, তা নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। শ্যামনগর উপজেলার সোরা গ্রামের বাসিন্দা ও বনজীবী শফিকুল ইসলাম বলেন, নিষেধাজ্ঞার সময় পরিবার-পরিজন নিয়ে তিন বেলা ঠিকমতো খাবার জোটে না। মহাজনদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে কোনো মতে বেঁচে থাকা ছাড়া আর উপায় নেই।
সাতক্ষীরা রেঞ্জের ট্রলার সমিতির সাবেক সভাপতি আবদুল হালিম জানান, জুন থেকে আগস্ট ট্রলারচালক, চালক সহযোগী ও পর্যটক গাইড সাবই বেকার হয়ে পড়ে। তাঁদের বিকল্প কোনো কাজ থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়। তিনি এই নিষেধাজ্ঞার সময় সুন্দরবনে কর্মরত জেলে ও বাওয়ালীসহ ট্রলারচালক, চালক সহযোগী ও পর্যটক গাইডদের খাদ্য সহযোগিতা ব্যবস্থা করার দাবি জানান।
সুন্দরবন সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী রেঞ্জ কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান জানান, সারা বছর হাজার হাজার বনজীবী সুন্দরবন থেকে মাছ, কাঁকড়াসহ গোলপাতা ও মধু আহরণ করেন। তাই সুন্দরবনের বিশ্রাম দেওয়ার মাধ্যমে সেখানকার প্রকৃতি-প্রতিবেশসহ জীবপ্রাণবৈচিত্র্য রক্ষার জন্য প্রতিবছর এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
বেকার বনজীবীদের খাদ্যসহায়তার বিষয়ে এই বন কর্মকর্তা বলেন, বেকার জেলেদের জন্য খাদ্যসহায়তা চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে ২ বছর আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি লেখা হয়েছে। ইতিমধ্যে মৎস্য মন্ত্রণালয় থেকে বনজীবীদের তালিকাও নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, প্রকৃত বনজীবীরা এ সময়ের জন্য নির্দিষ্ট পরিমাণ খাদ্যসহায়তা পাবেন।


বোরহানউদ্দিনে নিম্নচাপের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্থদের হাফিজ ইব্রাহিমের আর্থিক সহায়তা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ক্ষতিগ্রস্থ টবগী ও হাসাননগরের পানিবন্দী পরিবারকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ভোলা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হয়েছে।

বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাফরুজা সুলতানার দিক-নির্দেশনায় শুক্রবার ( ৩০ মে ) বিকেল ৪ টায় স্থানীয় নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে হাসাননগরের পুরান হাকিমুদ্দিন বাজার ও টবগী ৪নং ওয়ার্ডে পানিবন্দী এলাকা ও ক্ষতিগ্রস্থ বেড়িবাঁধ পরিদর্শন করেন বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন ও যুগ্ন আহ্বায়ক শহীদুল আলম নাসিম কাজী।

এসময় তারা টবগী ও হাসাননগর ইউনিয়নে নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্থ একশত পরিবারের মাঝে হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন শেষে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ন আহ্বায়ক সরোয়ার আলম খাঁন ও যুগ্ন আহ্বায়ক কাজী মো: শহীদুল আলম নাসিম সাংবাদিকদের বলেন, নিম্নচাপের প্রভাবে বোরহানউদ্দিনের মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় নদী তীরবর্তী শতাধিক বাড়িঘর ডুবে যায়। এছাড়া হাকিমুদ্দিন থেকে কাজীরহাটে যে বেড়িবাঁধ রয়েছে সে বেড়িবাঁধের দুটি জায়গায় ছিদ্র হয়ে পড়ায় লোকালয়ে পানি ডুকে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্কেকের সৃষ্টি হয়। পরে আমাদের টবগী ইউনিয়ন বিএনপি নেতা সোহেল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হাওলাদার ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম শেজোয়াল সহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেড়িবাঁধ সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করে দুটি পয়েন্টে মাটি দিয়ে ভরাট করে। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করে প্রাথমিকভাবে একশত ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে হাফিজ ইব্রাহিমের পক্ষ থেকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছি। পর্যায়ক্রমে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারকে বোরহানউদ্দিন উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে আরো সহায়তা করা হবে। তারা বলেন, অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে এই বেড়িবাধটি পুনঃসংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন না করলে বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগে বোরহানউদ্দিন উপজেলা হুমকির মুখে পড়বে। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমাদের আহ্বান এই বেড়িবাঁধটি অতিদ্রুত পুনঃসংস্কার করা হোক।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, বোরহানউদ্দিন উপজেলা শ্রমিকদলের সভাপতি আলমগীর মাতাব্বর, হাসাননগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নজরুল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাসির পাটোয়ারী, সমাজ সেবক সোহেল হাওলাদার, টবগী ইউনিয়ন যুবদল সাধারণ সম্পাদক আওলাদ হাওলাদার, হাসাননগর যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক হান্নান সর্দার, টবগী যুবদল সাংগঠনিক সম্পাদক মাসুম শেফজল, পৌর যুবদল যুগ্ন আহ্বায়ক সুমন পঞ্চায়েত, বোরহানউদ্দিন উপজেলা ছাত্রদল সাধারণ সম্পাদক তানজিল হাওলাদার, পৌর ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন টিপু প্রমূখ।


ফুলবাড়িয়ায় জিয়াউর রহমানের শাহাদাৎ বার্ষিকীতে ফ্রি চক্ষু শিবির

আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৫ ২২:১৬
মো. আল- আমিন (ফুলবাড়িয়া, ময়মনসিংহ)

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. সাইফুল ইসলাম বাদল ফাউন্ডেশনের এর আয়োজনে গ্রামীন জনপদের অসচ্ছল মানুষের জন্য দিন ব্যাপী ফ্রি চক্ষু শিবির অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার (৩০ মে) মহান স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান এর ৪৪ তম শাহাদাৎ বার্ষিকী উপলক্ষে এ ব্যতিক্রমী আয়োজন করেন বিএনপি নেতা,(অব.) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. সাইফুল ইসলাম বাদল।

উদ্বোধনী ও স্বাগত বক্তব্যে (অব.) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. সাইফুল ইসলাম বাদল বলেন, জনসাধারণের মাঝে সেবা দিতেই আজকে চক্ষু শিবিরের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চোখ আমাদের অমূল্য সম্পদ, যার চোখে আলো নেই সে-ই জানে চোখের মূল্য। এসময় তিনি প্রান্তিক পর্যায়ের দরিদ্র ও অসহায় চক্ষু রোগীদের বিনামূল্যে সেবাদানে তাদেরকে বাছাই করে উন্নত চিকিৎসায় ঢাকা নেওয়ার ঘোষণা দেন। এছাড়াও বাছাইকৃত রোগীদের বিনামূল্যে যাতায়াত, খাওয়া, থাকা, অপারেশনসহ ঔষধ ও চশমা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়।

প্রসঙ্গক্রমে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. সাইফুল ইসলাম বাদল বলেন, আপনারা সহায়তা করলে আপনাদের সেবা দিতে আমি সবসময় প্রস্তুত রয়েছি। পরবর্তীতে উপজেলা জুড়ে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প করার ব্যাপারেও তিনি আশ্বাস প্রদান করেন।

অধ্যাপক আনিসুর রহমান আনিস এর সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব আতাউর রহমান সেলিম, প্রধান শিক্ষক আবু ওবায়দা বাবুল, সহকারী শিক্ষক মাওলানা লুৎফর রহমান, ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা যুবদলের সহসভাপতি ও পৌর বিএনপির সদস্য আজহারুল আলম রিপন, ছাত্রদলের যুগ্ন আহবায়ক আনোয়ার হোসেন জনি ফুলবাড়িয়া একতা শক্তি যুব সংঘ এর সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোরশেদ খান প্রমূখ।

অন্যান্যদের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাহজাহান সাজু, উপজেলা বিএনপির সদস্য সামছুর রহমান সুমনসহ শিক্ষক, সাংবাদিক, স্কাউট সদস্য ও সুশীল নেতৃবৃন্দ।

এদিন বৈরী আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে কয়েক শতাধিক নারী পুরুষ চক্ষু সেবা নিতে আসেন। বিনামূল্যে চক্ষু সেবা পেয়ে তারা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান।


নিম্নচাপটি উপকূল অতিক্রম করেছে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

সাগরদ্বীপ ও খেপুপাড়ার মধ্য দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ-বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রমরত গভীর নিম্নচাপটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে উপকূল অতিক্রম করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার রাতে আবহাওয়ার বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নিম্নচাপটি বর্তমানে সাতক্ষীরা ও তৎসংলগ্ন এলাকায় স্থল গভীর নিম্নচাপ আকারে অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর/উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমান্বয়ে দুর্বল হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা/ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

অমাবস্যা ও গভীর নিম্নচাপের কারণে উপকূলীয় জেলা চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, ফেনী, চাঁদপুর, ভোলা, হাতিয়া, সন্দ্বীপ, বরগুনা, পটুয়াখালী, বরিশাল, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বাগেরহাট, খুলনা, সাতক্ষীরা এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহ ১ থেকে ৩ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।

উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে আজ সন্ধ্যা ৭ টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ এবং পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে বলে আবহাওয়া অফিস জানায়।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, অতি ভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবন ও কক্সবাজার জেলাসমূহের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেইসাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।

এছাড়া অভ্যন্তরীণ নদী বন্দর সমূহের জন্য আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ঢাকা, পাবনা, ফরিদপুর, মাদারীপুর, যশোর, কুষ্টিয়া, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে দক্ষিণ/দক্ষিণ-পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৮০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি/বজ্রবৃষ্টিসহ ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দর সমূহকে ২ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

এছাড়া দেশের অন্যত্র একই দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টিসহ অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এসব এলাকার নদী বন্দর সমূহকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া অফিস।


পঞ্চগড়ে স্বজনের মরদেহ দেখে ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩

আপডেটেড ৩০ মে, ২০২৫ ১০:১৫
পঞ্চগড় প্রতিনিধি

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলায় স্বজনের মরদেহ দেখে ফেরার পথে ইজিবাইকে ট্রাকের ধাক্কায় তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় আহত হয়েছেন অন্তত আরও চারজন। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকালে উপজেলার দেবীগঞ্জ পৌরসভার পাকুড়িতলায় দেবীগঞ্জ-বোদা মহাসড়কে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত হলেন- বোদা উপজেলার সাকোয়া ইউনিয়নের নয়াদিঘী এলাকার তাপস কুমার রায়ের স্ত্রী শ্যামলী রাণী (৩০), উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের জোতভূবণপাড়া এলাকার অরুণ কুমার রায়ের স্ত্রী ভরসা রাণী (৩৫) ও দেবীগঞ্জ উপজেলার দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাজারহাট কালিগঞ্জ এলাকার হরেন্দ্র নাথ রায়ের মেয়ে দেবশ্রী রাণী (৭)।

আহতরা হলেন, দেবীগঞ্জ উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের লক্ষীর হাট এলাকার অজয় কুমার রায় (৬০), উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের জোতভূবণ পাড়া এলাকার খোকা বাবু (৫০), বিমলা (৫০) ও দণ্ডপাল ইউনিয়নের রাজার হাট কালিগঞ্জ এলাকার সৌরভ (১১)।

পুলিশ ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বিকেলে মৃত বেয়াইনকে সৎকার কাজ শেষে স্বজনদের নিয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলার ভাউলাগঞ্জ এলাকা থেকে ইজিবাইকে ফিরছিলেন অজয় কুমার রায়। পরে তারা দেবীগঞ্জ পৌর এলাকার পাকুড়িতলায় পৌঁছালে একটি ট্রাক তাদের ইজিবাইকে সজোরে ধাক্কা দিলে চালকসহ ১০ জন যাত্রী মহাসড়কের পাশেই ছিটকে পড়েন।

এসময় ইজিবাইকের সাতজন যাত্রী গুরুতর আহত হন। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের উদ্ধার করে দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শ্যামলী রাণীকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে গুরুতর আহত অন্য ছয়জনের শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের রংপুর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দেবশ্রী রাণী ও ভরসা রাণীর মৃত্যু হয়।

এদিকে, ঘটনার পরপরই ঘাতক ট্রাকটি নিয়ে চালক পালিয়ে যান। পুলিশ নিহতদের মরদের সুরতহাল করে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করে।

দেবীগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) প্রবীর কুমার রায় বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা সেখানে ছুটে যান। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে।


পিরোজপুরে ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেলেন ১৫ জন প্রার্থী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এস এম আবু জাফর (পিরোজপুর)

মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে পিরোজপুরে মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি পেয়েছেন ১৫ জন প্রার্থী।
বৃহস্পতিবার পিরোজপুর জেলা পুলিশ লাইনস ড্রিল সেডে জেলা পুলিশ সুপার ও টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সভাপতি খাঁন মুহাম্মদ আবু নাসের, পুলিশ কনস্টবল রিক্রুটমেন্ট-২০২৫ এর ফলাফল ঘোষণা করেন।

এতে পুলিশ কনস্টেবল পদে ১৫ জন চাকরির সুযোগ পেয়েছেন।
এ সময় ফলাফলে নিজেদের নাম শুনে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন ঘোষিত ও ভবিষ্যৎ পুলিশ কনস্টেবল ও তাদের অভিভাবকরা। কোনো ধরনের ঘুষ, সুপারিশ ও হয়রানি ছাড়াই ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে জেলা পুলিশ সুপারসহ নিয়োগ কমিটির সদস্যদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
নিয়োগপ্রাপ্তদের ফুল দিয়ে ও মিষ্টিমুখ করিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এ সময় টাকা-পয়সা ছাড়া যোগ্যতার ভিত্তিতে চাকরি হওয়ায় সবাইকে ধন্যবাদ জানানো হয়।



পিরোজপুর পৌর এলাকার ৮ নং ওয়ার্ডে বাসিন্দা ও কনস্টেবল এর নিয়োগপ্রাপ্ত মো: শিহাব উদ্দিন সিকদার বলেন, চাকরির আশায় প্রথমে অনলাইনে আবেদন করেছি। এরপর মাঠে এসে যাবতীয় পরীক্ষায় অংশ নিয়েছি। শারীরিক, লিখিত, মৌখিক সবগুলো পরীক্ষায় ভালোভাবে উত্তীর্ণ হয়েছি, চাকরিও হয়ে গেছে। কারও সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করিনি। আমার কাছে এ চাকরিটা এখনও স্বপ্নের মতো লাগছে।
মোঃ শিহাব উদ্দিনের আম্মা বলেন, মাত্র ১২০ টাকায় আবেদন করে আমার ছেলের চাকরি হয়েছে। কোনো ধরনের ঘুষ, সুপারিশ কিছুই লাগেনি। আমরা খুব খুশি হয়েছি।
পিরোজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) খান মুহাম্মদ আবু নাসের বলেন, নিয়োগপ্রাপ্তরা শতভাগ স্বচ্ছতা, দুর্নীতিমুক্ত ও ঘুষমুক্ত পরিবেশে উত্তীর্ণ হয়েছেন। সব মিলিয়ে এ নিয়োগ প্রক্রিয়া স্বচ্ছতার সঙ্গে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে হয়েছে। এখানে কোনো প্রকার অবৈধ লেনদেন বা স্বজনপ্রীতি হয়নি।

এ সময় টিআরসি নিয়োগ বোর্ডের সম্মানিত সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, বরগুনা সদর সার্কেল মোঃ আবদুল হালিম,অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বরিশাল(গৌরনদী সার্কেল)মোসাঃ শারমিন সুলতানা রাখী সহ জেলা পুলিশের বিভিন্ন কর্মকর্তাবৃন্দ।


নিম্নচাপের প্রভাবে ভোলা থেকে সকল রুটের নৌযান চলাচল বন্ধ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউসুফ হোসেন অনিক, ভোলা

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে উপকূলীয় দ্বীপজেলা ভোলায় বুধবার মধ্যরাত থেকে বওয়া ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির প্রভাবে ভোলা থেকে ঢাকা সহ অভ্যন্তরীন রুটের সকল যাত্রীবাহী লঞ্চ ও ফেরী চলাচল বন্ধ ঘোষনা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশন বিআইডব্লিউটিসি।

ভোলা নদী বন্দর সূত্রে জানা যায়, সাগরে নিম্নচাপের কারণে সমুদ্রবন্দর এলাকায় ৩ নম্বর বিপদসংকেত দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বৈরী আবহাওয়া বিরাজ করায় চরফ্যাশন বেতুয়া-ঢাকা, ভোলা-লক্ষ্মীপুর, ভোলা-আলেকজান্ডার, ভোলা-তজুমদ্দিন-মনপুরা, হাতিয়া মনপুরাসহ সকল রুটের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।

নিম্নচাপের প্রভাবে মেঘনা ও তেতুলিয়া নদী উত্তাল থাকায় বুধবার রাত থেকে ভোলার ইলিশা থেকে লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরী ঘাট ও ভোলার ভেদুরিয়া থেকে বরিশালের লাহার হাট ঘাটে কোনো ফেরি চলাচল করেনি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এ দুইটি রুটে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকবে বলে জানা গেছে।

এদিকে ভোলার সব রুটে নৌযান ও ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা। জরুরি প্রয়োজনে পারাপারের অপেক্ষায় ঘাটে গিয়ে বসে থাকতে দেখা গেছে অনেককে। এতে করে বেশি বিপাকে পড়েছে অসুস্থ রোগী ও তাদের স্বজনদের।

মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদী উত্তাল থাকায় মাছ ধরার কোনো নৌকা ও ট্রলার নিয়ে জেলেদের নদীতে যেতে দেখা যায়নি। জেলে ও নৌকার মাঝিদের মাছঘাটে বসে লুডু খেলে ও পরিবারের সাথে সময় কাটাতে দেখা গেছে।

এদিকে নিম্নচাপের প্রভাবে দূর্যোগপূর্ন আবহাওয়া বিরাজমান থাকায় ভোলায় সকাল থেকেই ঝড়ো হাওয়ার সাথে গুড়িগুড়ি বৃষ্টি আবার কখনো ভাড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। জোয়ারে স্বাভাবিক পানির চেয়ে নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেঘনা নদীর তীরবর্তী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে আলিমুদ্দিন বাংলাবাজার, হাকিমুদ্দিন, খাঁসমহল, কাজীরহাট এলাকায় জোয়ারের পানিতে কিছু অংশ প্লাবিত হয়েছে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ভোলার ২৫০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে। গতকাল বুধবার দুপুরের দিকে জোয়ারের পানিতে ভোলার তজুমদ্দিনের নির্মাণাধীন রিং বেড়িবাঁধ কিছুটা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লে রাতে ব্লক ও জিও ব্যাগ দিয়ে সেটি সংস্কার করা হয়েছে। এখন মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত রয়েছে বলে জানা গেছে।


মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রাণ গেল যুবকের

প্রতীকী ছবি।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আতিয়ার রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া)

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় আরিফ মন্ডল (৩৫) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। নিহত যুবক দৌলতপুর উপজেলার প্রাগপুর ইউনিয়নের পাকুড়িয়া ভাঙ্গাপাড়া গ্রামের মুর্শিদ মন্ডলের ছেলে।

নিহতের পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানাগেছে, আরিফ মন্ডল আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে দ্রুতগতিতে কুষ্টিয়ার যাওয়ার পথে ডাংমড়কা এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সে রাস্তায় ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হয়। পরে পথচারীরা তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজনকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন গুরুতর আহত আরিফ মন্ডলকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. হোসেন ইমাম জানান, দূর্ঘটনায় আহত একজন চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছে।

সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত হওয়ার বিষয়ে দৌলতপুর থানার ওসি মো. নাজমুল হুদা জানান, মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে একজন মোটরসাইকেল চালক গুরুতর আহত হলে তাকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া হাসপাতালে ভর্তি করার পর সে মারা যায়।


তিন ষাঁড় একসঙ্গে কিনলে ওমরাহ ফ্রি

রাঙ্গা দুদু, কালা পাহাড় এবং রাজা মানিক নামে তিনটি বিশাল ষাঁড় একসঙ্গে কিনলে ওমরাহ ফ্রি। ছবি: ইউএনবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

কোরবানির জন্য পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় প্রস্তুত করা হয়েছে রাঙ্গা দুদু, কালা পাহাড় এবং রাজা মানিক নামে তিনটি বিশাল ষাঁড়। কুয়াকাটা ডেইরি ফার্ম নামের একটি খামারে ষাঁড় তিনটি সবার নজর কেড়েছে।

ষাঁড় তিনটি একসঙ্গে কিনলে রয়েছে বিশেষ অফার। একসঙ্গে কিনলে ক্রেতাকে নিজ খরচে পবিত্র ওমরাহ করানোর ঘোষণা দিয়েছেন খামারটির স্বত্বাধিকারী মুফতি হাবিবুর রহমান মিছবাহ।

তিনি বলেন, ‘আমি দেশজুড়ে ইসলামের দাওয়াত দিয়ে বেড়াই। খামার এবং কৃষিকাজ করা আমার শখ ছিল, যা এখন পেশায় পরিণত হয়েছে। ৪-৫ বছরের কঠোর পরিশ্রমের পর আমরা শাহিওয়াল এবং ফ্রিজিয়ান জাতের তিনটি ষাঁড় প্রস্তুত করেছি।’

‘বড় জাতের এই পশু তৈরি করতে আমরা কোনো প্রকার মেডিসিন বা ক্ষতিকারক খাবার ব্যবহার করিনি, শুধু স্বাভাবিক খাবার খাওয়ানো হয়েছে। বড় ষাঁড় তিনটি একসঙ্গে কিনলে তাকে আমার পক্ষ থেকে ওমরাহ করানো হবে,’ যোগ করেন তিনি।

খামারের দায়িত্বে থাকা বাদল জানান, ‘আমরা দুজন লোক সার্বক্ষণিক গরুগুলোর পরিচর্যা করছি। নিজ হাতে বানানো সাইলেজ (বায়ুরোধক অবস্থায় সংরক্ষিত সবুজ ঘাস), ঘাস ও খড় খাওয়ানো হয়। এছাড়া, এই ষাঁড় তিনটিকে গোসল করানো হয় দিনে তিনবার।’

খামার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রথম দিকে শখের বশে শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের দুটি গাভি কিনে খামার শুরু করেন হাবিবুর। বর্তমানে তার খামারে রয়েছে অর্ধশতাধিক গরু। এর মধ্যে কিছু দেশীয় জাতের পশু থাকলেও বেশিরভাগই শাহিওয়াল ও ফ্রিজিয়ান জাতের ষাঁড়। তবে কোরবানি উপলক্ষে বিশেষভাবে তিনটি বিশাল ষাঁড় প্রস্তুত করেছেন তিনি।

২০ মণের রাঙ্গা দুদুর দাম হচ্ছে ১৬ লাখ টাকা। রাঙ্গা দুদুর চেয়েও বেশি ওজন নিয়ে প্রস্তুত কালা পাহাড়ের দাম ১৭ লাখ টাকা। তবে ওজন ও বয়সে কিছুটা কম হলেও রাজা মানিকের দাম ১২ লাখ টাকা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মারুফ বিল্লাহ খান বলেন, ‘চলতি বছরে উপজেলায় ২২ হাজারের বেশি গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুতি করা হয়েছে। কেউ যাতে এসব পশুর শরীরে ক্ষতিকারক উপাদান ব্যবহার করতে না পারে, সেজন্য প্রাণিসম্পদ বিভাগ সবসময় নজরদারি করছে।’


বিপৎসীমার ওপর দক্ষিণের চার নদীর পানি, তলিয়ে যাচ্ছে লোকালয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল ব্যুরো

উত্তরপশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের প্রভাবে বাড়তে শুরু করেছে বরিশাল বিভাগের নদ-নদীর পানি। এরই মধ্যে এ বিভাগের চারটি নদীর ৬টি পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বাকি কীর্তনখোলাসহ অন্য নদীর পানিও এখন বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই। ফলে উপকূলের লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে পানি।

গতকাল বুধবার বিকালে বরিশাল পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি অনুসন্ধান বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী তাজুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, বিভাগের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলোর ১২টি পয়েন্টের মধ্যে ৬টি নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর মধ্যে বিষখালী নদীর পানি বরগুনা সদর উপজেলা পয়েন্টে ৩ সেন্টিমিটার, পাথরঘাটা উপজেলা পয়েন্টে ১৭ সেন্টিমিটার, বেতাগী উপজেলা পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার, ভোলা জেলায় মেঘনা নদীর তজুমদ্দিন উপজেলা পয়েন্টে ৬৭ সেন্টিমিটার, পিরোজপুর সদর উপজেলার বলেশ্বর নদীর পানি ১৩ সেন্টিমিটার, উমেদপুর পয়েন্টে কঁচা নদীর পানি ৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

এর বাইরে ভোলা খেয়াঘাট এলাকায় তেঁতুলীয়া নদী, বরিশালের কীর্তনখোলা, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা পয়েন্টে পায়রা এবং বরগুনার আমতলী উপজেলা পয়েন্টে বুড়িশ্বর নদীর পানিও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে।

তাজুল ইসলাম বলেন, বর্ষা মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পায়। আশা করা যাচ্ছে অল্প কদিনের মধ্যে পানি স্বাভাবিক স্তরে চলে আসবে। পানি বৃদ্ধিতে বেড়িবাঁধ, মাছের ঘের, ফসলের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও মনে করেন তিনি।

বরিশাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের সিনিয়র পর্যবেক্ষক মো. মিলন হাওলাদার বলেন, গতকাল বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বরিশালসহ তার আশপাশ অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তা ছাড়া সন্ধ্যা থেকে বাতাসের গতিবেগ বেড়ে যাওয়ায় নদীর পানিও বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ জন্য পায়রা সমুদ্র বন্দরকে-৩ ও নদী বন্দরে-১ নম্বর সর্তক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।


banner close