শীত মানেই পিঠা। এই সময়টায় দেশের সব এলাকাতেই বিশেষ করে ভাঁপা পিঠার বেশ কদর থাকে। ফুটপাতে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানগুলোতে সাধারণ ভাঁপা পিঠা বিক্রি হয় ১০ টাকায়। বিশেষভাবে তৈরি ভাঁপার দাম ২০-৩০ থেকে ৫০-১০০ টাকাও অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তাই বলে একটি ভাঁপা পিঠার দাম কিনা ৫ হাজার টাকা! না, এমন কোনো ভাঁপার তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি।
তবে নরসিংদীর জেলখানা মোড়ের পিঠার দোকানের মালিক মালেক মিয়া তেমনই এক পিঠা তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন। মালেক মিয়ার এ ঘোষণাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না। কেননা গত বছরই তিনি এমন একটি ভাঁপা পিঠা তৈরি করেছিলেন, যার দাম ছিল ১ হাজার টাকা!
নরসিংদীর ভেলানগরে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে জেলখানা মোড়ের ফুটওভারব্রিজের নিচেই মালেক মিয়ার দোকান। গিয়ে দেখা যায়, মালেক মিয়া তিনজন সহযোগীকে নিয়ে পাঁচটি চুলায় তৈরি করছেন পিঠা। সুগন্ধি চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড়সহ দুধের সর-মালাইয়ের গন্ধে ম-ম করছে চারপাশ। ২০ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত দামের পিঠা তৈরি হচ্ছে চুলাগুলোতে। আর সেই পিঠা কিনতে দোকানে ক্রেতাদের দীর্ঘ লাইন। সেই লাইনে কেবল স্থানীয়রা নয়, আশপাশের জেলা থেকে আসা মানুষও রয়েছেন।
মালেক মিয়া জানান, আতপ চালের গুঁড়া, খেজুরের গুড় ও নারকেলের পাশাপাশি সুগন্ধি পোলাও চালের গুঁড়া, কিশমিশ, খেজুর, পেস্তাবাদাম, কাঠবাদাম, কাজুবাদাম, মোরব্বা, মাওয়া, মালাই, দুধের সরসহ নানা উপকরণ তিনি ব্যবহার করেন ভাঁপা পিঠায়। পিঠার দাম যত বেশি হয়, তাতে উপকরণের পরিমাণ ও বৈচিত্র্যও বাড়ে। ১ হাজার টাকা দামের একটি পিঠার ওজন সব মিলিয়ে হয় প্রায় চার কেজি।
কুমিল্লার দেবীদ্বার থেকে পিঠা নিতে এসেছিলেন মো. ফারুক আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ছেলে টিভিতে মালেক মিয়ার পিঠার খবর দেখে আবদার করেছে। সেই আবদার মেটাতেই এসেছি। যা দেখছি, মনটা ভরে গেছে। ১ হাজার টাকার একটি, ৫ টাকার একটি পিঠা নিচ্ছি।’
নরসিংদীর স্থানীয় শিক্ষক মো. তারিকুল ইসলামও ছিলেন ক্রেতাদের সারিতে। তিনি বলেন, ‘প্রতি শীতেই মালেক মিয়ার সুস্বাদু ভাঁপা পিঠা খেতে আসি। আজও এসেছি। ক্রেতাদের অনেক ভিড়। অনেকক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে। ২০০ টাকার একটি পিঠা বাসায় নেয়ার জন্য অর্ডার করেছি।’
মালেক মিয়া বলেন, ‘ছোট-বড় সব ধরনের পিঠার বিক্রিই ভালো। বড় পিঠা হলে তো ১৫ থেকে ২০ জন মিলেও খাওয়া যায়। তাই অনেক মানুষ বাড়িতে পিঠা নেয়ার জন্য আসে। সন্ধ্যা ৬টায় শুরু করি, রাত ১০টার মধ্যে বিক্রি শেষ হয়ে যায়।’
কথা প্রসঙ্গেই মালেক জানালেন ৫ হাজার টাকা দামের পিঠা তৈরির কথাও। তিনি বলেন, ‘১ হাজার টাকা দামের পিঠার কথা সবাই জানে। প্রতিদিনই কয়েকটি বিক্রি হয়। আগ্রহী ক্রেতা পেলে এবার ৫ হাজার টাকা দামের পিঠা বানিয়ে খাওয়াতে চাই। এক দিন আগে অর্ডার করলেই এই পিঠা তৈরি হয়ে যাবে।’
পিঠা বিক্রিই অবশ্য মালেক মিয়ার একমাত্র পেশা নয়। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি অটোরিকশা চালান। অন্য মৌসুমে সন্ধ্যা থেকে বিক্রি করেন পান-সিগারেট। শীত এলেই সন্ধ্যার পর শুরু হয় তার পিঠার দোকান; চলে ফাগ্লুন মাস পর্যন্ত।
নীলফামারী জেলা পরিষদের উদ্যোগে ৫’শ ৭০ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেয়া হচ্ছে। এসব শিক্ষার্থীর মাঝে ৩৭লাখ বিতরণ করা হবে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে (১৪আগস্ট) নীলফামারী জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে প্রধান অতিথি থেকে শিক্ষাবৃত্তি বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহিদুল ইসলাম এনডিসি।
জেলা পরিষদের প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা(উপ-সচিব) দীপঙ্কর রায়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(সার্বিক) জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র, নীলফামারী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী প্রেসক্লাবের সভাপতি(ভারপ্রাপ্ত) আতিয়ার রহমান ও সাধারণ সম্পাদক নুর আলম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ৭০জনের মাঝে শিক্ষাবৃত্তির চেক তুলে দেয়া হয়।
জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় জানান, ৫৭০জনের মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭১জন, উচ্চ মাধ্যমিকের ৯১জন এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের ৩০৮জন মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছেন।
জেলা পরিষদের প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীকে ১০হাজার এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের মেধাবী শিক্ষার্থীকে ৫হাজার করে বৃত্তি দেয়া হচ্ছে এককালীন। আজকে আমরা ৭০জনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু করা হলো।
এছাড়াও অনুষ্ঠানে ৫জন জুলাই যোদ্ধাকে ৫০হাজার এবং একজন শ্রবণ প্রতিবন্ধীকে হেয়ারিং এইড কেনার জন্য ২০হাজার টাকার সহায়তা প্রদান করা হয় জেলা পরিষদের উদ্যোগে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিভাগীয় কমিশনার শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, স্বপ্ন দেখতে হবে অনেক বড়। স্বপ্ন নিয়েই এগুতে হবে। তাহলেই গন্তব্যে পৌঁছানো সম্ভব।
বিভাগীয় কমিশনার বলেন, মোবাইল আসক্তি কমাতে হবে। মোবাইলের অপব্যবহার শিক্ষার্থীদের ক্ষতি করছে।
পিরোজপুর সদর উপজেলার ১৩৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেনীর শিক্ষার্থীদের নিয়ে পিরোজপুর সদর উপজেলা প্রশাসন এর আয়োজনে 'Know My Village' প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগষ্ট) সকাল ১০.৩০ মিনিটে পিরোজপুর সদর উপজেলা পরিষদের শহীদ ওমর ফারুক মিলনায়তনে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান,বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ত্ব করেন পিরোজপুর সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মামুনুর রশীদ।সঞ্চালনা করেন সদর উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ নজরুল ইসলাম মোল্যা।
উক্ত প্রতিযোগিতায় পিরোজপুর সদর উপজেলার ১৩৪ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেনী নিয়ে ক গ্রপ ও তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেনী নিয়ে খ গ্রুপে মোট ২৬৮ জন শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করেন।
এদের মধ্য থেকে দুই গ্রুপের মোট দশ-দশ বিশ জনকে পুরুষ্কার হিসেবে মেডেল প্রদান করা হয় ও অংশগ্রহণকারী সকল শিক্ষার্থীদের মাঝে সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক পিরোজপুর বলেন, আমাদের প্রত্যেককে নিজ গ্রামের সম্পর্কে জানতে হবে, আমাদের গ্রামে কি কি আছে, কি কি সামাজিক প্রতিষ্ঠান আছে, বিশেষ ব্যক্তিত্ত্ব, স্কুল, মসজিদ, মাদ্রাসা সহ বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের জানতে হবে।
বক্তব্যে তিনি স্কুলের শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে বলেন, প্রত্যেকটি ছাত্র-ছাত্রীদের সুন্দর ভাবে গড়ে তুলতে লেখাপড়ার পাশাপাশি সামাজিক ও আচার ব্যবহার ভালো করার শিক্ষা দিতে হবে এবং ভালো কার্যক্রম এর প্রতি উদ্ভুদ্ধ করতে হবে।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রেসক্লাব পিরোজপুরের সাধারন সম্পাদক এস এম আবু জাফর, সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ শাহিন ফকির সহ বিভিন্ন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকগণ এবং অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের অভিবাবকবৃন্দ।
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলে তিস্তা নদীর পানি আবারও বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বুধবার সকাল ৬টা থেকে তিস্তা নদীর পানি নীলফামারীর ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার ১৪ই আগষ্ট সকাল ৯টায় তিস্তার পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। (পানি সমতল) ৫২.৩০ সেন্টিমিটার।
ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের পানি পরিমাপক নূরুল ইসলাম জানান বুধবার ভোর থেকে ৩য় দফায় তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। বুধবার সকাল ৬টায় তিস্তার পানি ডালিয়া তিস্তা ব্যারেজ পয়েটে বিপৎসীমার ৫২ দশমিক ২২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় বিপৎসীমা ৫২ দশমিক ৩০ সেন্টিমিটার। অর্থ্যাৎ যা বিপদসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপড় দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানির গতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
তিস্তার পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করায় ডিমলা উপজেলার পূর্বছাতনাই, পশ্চিম ছাতনাই, টেপাখড়িবাড়ী, খগাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানি, ঝুনাগাছ চাপানি ও গয়াবাড়ী ইউনিয়নের ১৫টি চরসহ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ওইসব ইউনিয়নের জনপ্রতিনিধিরা। অপরদিকে জলঢাকা উপজেলার ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী, কৈমারী ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে ফসলি জমি নষ্ট সহ ঘর বাড়ীতে পানি উঠেছে বলে জানান জনপ্রতিনিধিরা।
জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো: মনোয়ারুল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে এ যাবত ডিমলা উপজেলার পাঁচ হাজার দুই’শ জন পরিবার পানিবন্দি হয়ে রয়েছে। তারা উঁচু জায়গায় আশ্রয় নিয়েছেন। পানিবন্দিদের জন্য ২০ টন চাল,শুকনো খাবার,বস্ত্র. প্রয়োজনীয় ঔষধ উপজেলা অফিসে দেওয়া হয়েছে। আজকে আমরা পানিবন্দি এলাকা পরিদর্শনে যাবো। সেখানো প্রয়োজনীয় যা কিছু লাগবে সবগুলো দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। ফসলি জমির ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে এখনো পুরোটা জরিপ করা হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ড নীলফামারীর ডালিয়া বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে তিস্তার পানি আজ সকাল ৯টায় বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে পানির গতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে রাখা হয়েছে।
পটুয়াখালীর দুমকি থানা ভবন সংলগ্ন পুলিশ কর্মকর্তার বাসায় দুঃসাহসিক চুরির ঘটনা ঘটেছে। চোর চক্র গেটের তালা ভেঙ্গে বাসায় ঢুকে আলমিরা ও ওয়ার ড্রপ ভেঙ্গে নগদ টাকা ২৫হাজার ও চারভরি ওজনের স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে গেছে।
গত বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুরে দুমকি থানার সাবেক (ওসি) শাহনেওয়াজ'র ৫তলা ভবনে এ দুঃসাহসিক চুরি সংঘটিত হয়েছে। সিলেট রেঞ্জের কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা মোঃ শাহনেয়াজের স্ত্রী
গৃহকত্রী শাহনাজ বেগম জানান, ৫/৬দিন আগে থানা ভবনের পাচিল ঘেষা তার ৫তলা ভবনের চতুর্থ তলার বাসাটি তালাবদ্ধ রেখে তারা স্বপরিবার ঢাকা যান। বুধবার সকালে দুমকি এসে বাসার দরজা খোলা দেখতে পান। ভেতরে ঢুকে আলমারী ও ওয়ারড্রপ ভাঙ্গা, মালামাল ওলট-পালট দেখে চুরির বিষয়টি নিশ্চিত হন। ওই ভবনের পাশ্ববর্তী ফ্লাটের ভাড়াটিয়াদের ডাকাডাকি করলেও ৩য় তলায় বসবাসরত ভাড়াটিয়াদের বাহির থেকে দরজা আটকে দেয়া হয়। চোরচক্র বাসার আলমীরা ও ওয়ারড্রপ ভেঙ্গে নগদ ২৫ হাজার টাকা ও চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার নিয়ে গেছে।
এদিকে থানা ভবনের আশপাশে এভাবে চুরির ঘটনায় এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
এ বিষয়ে দুমকি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ জাকির হোসেন জানান, তিনি অফিসের কাজে বাইরে আছেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
ঠাকুরগাঁওয়ে প্রাথমিক শিক্ষার মানোন্নয়নে কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের সভাপক্ষে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। অর্ধদিন ব্যাপী এই কর্মশালায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোফাজ্জল হোসেন এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা।
প্রাথমিক পর্যায় থেকে কিভাবে একটি শিশুর জন্য শিক্ষা ও শিক্ষার পরিবেশ বিদ্যালয়ে গড়ে তোলা যায় এ বিষয়ে জোর দেয়া হয়েছে কর্মশালায়। অংশগ্রহণকারীরা শিক্ষার মানোন্নয়নে নিজেদের অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ প্রদান করেন।
ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ইশরাত ফারজানা শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধে কো - কারিকুলাম এক্টিভিটি বারানোর নির্দেশ দেন। সাথে কাব দল গঠন, হলদে পাখি দলগঠন ও মা সমাবেশ নিয়মিত করার নির্দেশ দেন। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী উপস্থিতি শতভাগ নিশ্চিৎ করতে অভিভাবকদের সঙ্গে নিয়মিত খোঁজখবর ও নিম্ন আয়ের পরিবারের বাচ্চাদের শিক্ষা উপকরণ সহায়তারও আশ্বাস দেন তিনি। লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত সমস্যা লিখিত আবেদন করার নির্দেশও দেন জেলা প্রশাসক।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের আয়োজনে কর্শশালায় অংশ নেন ৫ উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিগণ। এছাড়াও গণমাধ্যম কর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
জিয়াউর রহমানের খাল খনন প্রকল্প শুধু কৃষির উন্নয়নের জন্য নয়, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্যও জরুরি। জলাবদ্ধতা দূর করতে এই প্রকল্পটি অত্যন্ত কার্যকর বলে জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাজী আমিনুর রশিদ ইয়াছিন। তিনি বলেন জিয়াউর রহমানের খাল খনন প্রকল্পটি এত বছর পরেও খুবই প্রাসঙ্গিক।
বৃহস্পতিবার ১৪ই আগস্ট সকালে কুমিল্লার শুভপুর ও চানপুর এলাকায় খাল খনন কর্মসূচির উদ্বোধন করে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে খাল খনন ও সংস্কার না হওয়ায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে অর্ধ লক্ষাধিক মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। জলাবদ্ধতার হাত থেকে তাদেরকে রক্ষা করতে এই কর্মসূচি।
তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩১ দফার সঙ্গে এই খাল খনন প্রকল্প যুক্ত হচ্ছে। আগামীতে তারা আবারও খাল খনন শুরু করবেন। বিবেকবোধ থেকে এই কাজ শুরু করেছেন বলেও জানান তিনি।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইউসুফ মোল্লা টিপু এবং মানবিক সংগঠন ‘বিবেক’-এর সঙ্গে যৌথভাবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তারা বলেন, জনগণের কল্যাণে কাজ করাই বিএনপির লক্ষ্য।
স্থানীয় বাসিন্দারা বিএনপি ও বিবেক সংগঠনের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, যে কাজ সিটি কর্পোরেশন করতে পারেনি, সেই কাজ বিএনপি করে দেখিয়েছে।
এদিকে স্থানীয় বাসিন্দা আবুল হোসেন বলেন, খাল ভরাট ও দখলের কারনে গত দুই যুগ ধরে জলাবদ্ধতায় এই এলাকায় বসবাসরত বাসিন্দারা অনেক কষ্ট পেয়েছে। দূষিত পানির কারনে শিশুদের চর্মরোগে ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। অনেকে বাড়িঘর থেকে চলে গিয়ে অন্যত্র সরে গেছে। যাদের যাওয়ার জায়গা ছিলো না তারা ভোগান্তি সহ্য করে থেকে গেছেন। এই নিয়ে কত জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্টদের কাছে ধর্ণা দেয়া হয়েছে তার কোন হিসেব নেই। এখন বিএনপির পক্ষ থেকে জলাবদ্ধতা দূরকরণে যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে এই এলাকার মানুষজন আশার আলো দেখছেন।
কুমিল্লা মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিবেক এর প্রতিষ্ঠাতা ইউসুফ মোল্লা টিপু বলেন, যতদিন পর্যন্ত জলাবদ্ধতা দূর না হবে ততদিন পর্যন্ত খাল খনন ও সংশ্লিষ্ট কাজগুলো করা হবে। বিএনপির নেতাকর্মীরা এই কাজে নিবেদিত প্রান।
ময়মনসিংহের ভালুকায় বিপুল পরিমাণ বিদেশি মদ ও দেশীয় অস্ত্রসহ তোফাজ্জল হত্যা মামলার আসামী এবং স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা বাহাদুর (২৮)কে গ্রেফতার করেছে যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারকৃত বাহাদুর উপজেলার জামিরদিয়া ডুবালিয়া পাড়ার গ্রামের উজ্জ্বল মিয়ার ছেলে।
যৌথবাহিনী গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাতে তার বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ১১৩ বোতল বিদেশি মদ, ৪টি দেশীয় অস্ত্র এবং মাদক বিক্রির নগদ ৬০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়। অভিযানের পর বাহাদুরকে ভালুকা মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ভালুকা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ হুমায়ুন কবির জানান, গ্রেফতারকৃত বাহাদুরের বিরুদ্ধে মাদক ও অস্ত্র আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া তার নামে পূর্বে তোফাজ্জল হত্যা মামলা রয়েছে। তাকে আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে চানাচুর গলায় আটকে সুয়াইফা নামে ১১ মাস বয়সী এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে সরিষাবাড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মাইজবাড়ী ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে। সুয়াইফা কোনাবাড়ী গ্রামের সাইদুল রহমানের মেয়ে। এ ঘটনায় এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পরিবার সুত্রে জানা যায়, রাত ৮ টার দিকে বাড়ীতে সুয়াইফার ৫ বছর বয়সী খালাতো বোন বেড়াতে আসে। এসময় তার খালাতো বোনকে চানাচুর খেতে দেয় সুয়াইফার মা ছানুয়ারা। পরে সবার অগোচরে খালাতো বোন সুয়াইফার মুখে চানাচুর দেয়। এসময় সুয়াইফার গলায় আটকে গেলে সে চিৎকার করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে পরিবারের সদস্যরা আসলে তার মুখে ও গলায় চানাচুর দেখতে পায়। কিছুক্ষন পর তার শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে পড়লে তাকে সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার সময় পথিমধ্যে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার সাইদুর রহমান শাওন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডাক্তার সাইদুর রহমান শাওন বলেন, শিশুটিকে হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী তার গলায় চানাচুর আটকে শ্বাসরোধ হয়েই শিশুটির মৃত্যু হয়।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার দড়িগোবিন্দপুর এলাকায় দুই মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের ত্রিমুখী সংঘর্ষে ২ স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরও ৩ জন। বুধবার রাতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলো-দড়িগোবিন্দপুর গ্রামের কোরবান আলীর ছেলে আরাফাত হোসেন (১৬) ও একই গ্রামের ইমরান হোসেনের ছেলে শিহাব (১৬)। আরাফাত ঝিনাইদহ শহরের মল্লিক শহিদুল ইসলাম কারিগরি স্কুল এন্ড কলেজের ও শিহাব কাঞ্চননগর মডেল স্কুল এন্ড কলেজের ৯ম শ্রেণীর ছাত্র ছিলো।
স্থানীয়রা জানায়, রাত ৮ টার দিকে শিহাব ও আরাফাত মোটরসাইকেলে পার্শবর্তী বয়েরাতলা বাজারে যাচ্ছিলো। পথে দড়িগোবিন্দপুর মৌরিবাড়ি এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরসাইকেল ও বাইসাইকেলের সাথে ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে ৫ জন আহত হয়। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে শিহাব, আরাফাত ও বাইসাইকেল চালককে ফরিদপুরে রেফার্ড করে। ফরিদপুরে যাওয়ার পথে শিহাব ও ঢাকায় যাওয়ার পথে আরাফাত মারা যায়।
ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ না থাকায় মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
কুষ্টিয়ায় ৪,৩৭৫ পিস ইয়াবাসহ সনি (৩৭) নামের যুবক র্যাবের জালে ধরা পড়েছে। ১৪ আগষ্ট (বৃহস্পতিবার) আনুমানিক রাত ১২ টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের নবাব সিরাজউদ্দৌলা রোড় (এন এস) রোড় এবং শশীভুষন প্রামাণিক রোড়ের একটি ভাড়া বাসায় আিভযান পরিচালনা করে সনি নামের যুবকে আটক করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার পিপিএম । বৃহস্পতিবার রাতে তার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। আটককৃত সনি পাবনা জেলার দোগাছী থানাধীন কুলনিয়া এলাকার আব্দুস সাত্তারের ছেলে। র্যাব সুত্রে জানা যায়, র্যাব-১২, সিপিসি-১, কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুদীপ্ত সরকার পিপিএম এর নেতৃত্বে র্যাবের একটি চৌকষ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের প্রেক্ষিতে কুষ্টিয়া শহরের নবাব সিরাজউদ্দৌলা রোড় (এন এস) রোড় এবং শশীভুষন প্রামাণিক রোড় এলাকায় একটি মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে। অভিযানে ৪,৩৭৫ পিস ইয়াবাসহ সনিকে আটক করে। যার আনুমানিক মূল্য ১৩,১২,৫০০/- টাকা। পরবর্তীতে আটককৃত আসামিকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কুষ্টিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়।
সারাদেশের ন্যায় নীলফামারীতে আনসার ও ভিডিপি'র উদ্যোগে ফলজ, বনজ, ঔষধি বৃক্ষরোপণ ও বিতরণ কর্মসূচির শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) সকালে জেলা আনসার ও ভিডিপি কার্যালয় চত্বরে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী নীলফামারী জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া পিভিএম। এসময় নীলফামারী সার্কেল অ্যাডজুট্যান্ড জোসনা বেগম, ডোমার আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা নরেশ চন্দ্র রায়, সদর উপজেলা আনসার ও ভিডিপি'র প্রশিক্ষক মো. রকিবুল ইসলাম সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
জেলা কমান্ড্যান্ট মোঃ মাজহারুল ইসলাম ভূঁইয়া জানান, বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সম্মানিত মহাপরিচালক মহোদয়ের নির্দেশনা মোতাবেক নীলফামারীতেও আনসার ভিডিপি'র উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত দেশব্যাপী চলবে এ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি। এসব চারা যাতে সুস্থ্য ও স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠে সে জন্য উপযুক্ত পরিচর্যা করা হবে। এছাড়াও আমাদের এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
সিরাজগঞ্জের যমুনা সেতু অবরোধ প্রত্যাহার করেছে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে ১ ঘন্টা পর যমুনা সেতু হয়ে রাজধানীর সাথে উত্তরাঞ্চলের যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মানের ডিপিপি দ্রুত অনুমোদন ও পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের দাবিতে যমুনা সেতু পশ্চিম গোলচত্বরে মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করে শিক্ষার্থীরা। দুপুর ১ টা ১৫ মিনিটে ১৭ ই আগস্ট একনেক সভায় ডিপিপি অনুমোদনের দাবি জানিয়ে কর্মসূচি শেষ করা হয়।
এ সময় অবরোধ করা শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস নির্মানের দাবি জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান ও বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে শিক্ষার্থীরা বলেন, রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস নির্মানের ডিপিপি অনুমোদনের সরাসরি সিদ্ধান্ত না দেওয়া অবধি অবরোধসহ আন্দোলন কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।
এদিকে অবরোধের কারণে বন্ধ হয়ে যায় ঢাকার সাথে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলা সহ ২২ জেলার যান চলাচল। গোল চত্বরের দুই পাশে অন্তত ১০ কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হয়। তীব্র গরমে ভোগান্তিতে পড়ে যাত্রীরা।
স্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মানের দাবিতে ২৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার সকাল নয়টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত একই দাবিতে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় রেলপথ অবরোধ করে রাখে শিক্ষার্থীরা। অবরোধের শেষে আজ বৃহস্পতিবার দিনব্যাপি যমুনা সেতু ও রেল সেতু অবরোধ কর্মসূচি ঘোষনা দেন তারা। তবে জনসাধারণের ভোগান্তি বিবেচনায় আজ রেল অবরোধ কর্মসূচি থেকে সড়ে আসে শিক্ষার্থীরা।
২০১৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টির ক্যাম্পাস নির্মানে সর্বশেষ ৫১৯ কোটি টাকার একটি প্রকল্প জমা রয়েছে একনেকে অনুমোদনের অপেক্ষায়। সর্বশেষ একনেক সভায় প্রকল্পটির অনুমোদন না পাওয়ায় আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা।
সিলেটের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর থেকে লুট হওয়া পাথর উদ্ধারে গতকাল বুধবার রাতভর অভিযান পরিচালনা করেছে যৌথবাহিনী। অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে লুট হওয়া ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে ফের সাদাপাথর এলাকাসহ ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া লুট হওয়া পাথর পরিবহনকারী বেশ কয়েকটি ট্রাক জব্দ করেছে প্রশাসন।
বুধবার (১৩ আগস্ট) দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে সিলেট নগরী ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ভোলাগঞ্জ এলাকায় জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে এই অভিযান পরিচালনা করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহার বলেন, বুধবার রাতে ৬ সদস্যের একটি দল যৌথবাহিনীর সহায়তায় বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ১২ হাজার ঘনফুট পাথর জব্দ করে ফের পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথরসহ ধলাই নদীর বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আজ বৃহস্পতিবার জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ফের অভিযান পরিচালনা করা হবে। লুট হওয়া পাথর উদ্ধার শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই অভিযান চলবে বলে জানান তিনি।
এর আগে বুধবার (১৩ আগস্ট) সন্ধ্যায় সিলেট সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়ে এক জরুরি সমন্বয় সভায় লুট করা পাথর উদ্ধারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পাশাপাশি সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
প্রশাসনের জরুরি বৈঠক শেষে রাত ১২টার পর অভিযানে নামে জেলা প্রশাসন ও যৌথবাহিনী। সিলেট নগরী ও সাদাপাথর এলাকায় রাতভর অভিযান পরিচালিত হয়।
অভিযানে বিভিন্ন স্থান থেকে সাদাপাথরের লুট করা স্তুপকৃত পাথর জব্দ করা হয়। পরে সেগুলো সাদাপাথর এলাকায় নিয়ে ফের প্রতিস্থাপন করা হয়।
এছাড়া সিলেট-ভোলাগঞ্জ সড়কের ওসমানী বিমানবন্দর এলাকায় সিলেট ক্লাবের সামনে যৌথবাহিনী চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় বেশ কয়েকটি ট্রাক আটকেও পাথর জব্দ করা হয়।
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) উপকমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, সাদাপাথর থেকে চুরি হওয়া পাথর উদ্ধারে আমরা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে চেকপোস্ট বসিয়ে অভিযান পরিচালনা করেছি। লুট করা পাথর উদ্ধারে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান থাকবে।
এর আগে, নজিরবিহীন লুটপাটের পর পর্যটনকেন্দ্র সাদাপাথর রক্ষায় নড়ে বসে প্রশাসন। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সন্ধ্যায় সিলেট বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সার্কিট হাউসে জরুরি সমন্বয় সভার আহ্বান করা হয়। সভায় লুট হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার রাতে সিলেট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সভায় সাদাপাথর রক্ষায় ৫টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সেগুলো হলো:
১. জাফলং ইসিএ এলাকা ও সাদাপাথর এলাকায় ২৪ ঘণ্টা যৌথবাহিনী দায়িত্ব পালন করবে।
২. গোয়াইনঘাট ও কোম্পানীগঞ্জে পুলিশের চেকপোস্টে যৌথবাহিনীর সার্বক্ষণিক উপস্থিতি থাকবে।
৩. অবৈধ পাথর ভাঙা (ক্রাশিং) মেশিন বন্ধ ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্নের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
৪. পাথর চুরির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার ও তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।
৫. চুরি হওয়া পাথর উদ্ধার করে আগের অবস্থানে ফেরানো হবে।
সাদাপাথর লুটপাটের ঘটনায় মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে সিলেট জেলা প্রশাসন। কমিটিকে আগামী রোববারের (১৭ আগস্ট) মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা রয়েছে। এরপর লুটপাটের ঘটনা অনুসন্ধানে গতকাল সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) একটি দল।
দুদক জানিয়েছে, পাথর লুটপাটে প্রভাবশালী ব্যবসায়ী, উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও কিছু স্থানীয় বাসিন্দার সম্পৃক্ততা থাকতে পারে। পাশাপাশি স্থানীয় প্রশাসনের দায় সবচেয়ে বেশি এবং পর্যটন খাতের ক্ষতির সঙ্গে প্রশাসনের যোগসাজশ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও প্রভাবশালীদের লাগামহীন লুটপাটে অপূর্ব প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান সাদাপাথরসহ সিলেটের একাধিক পাথর কোয়ারি প্রায় ধ্বংসের মুখে পড়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলো সরকারকে কোয়ারি খুলে দেওয়ার দাবিতে বিভিন্ন আন্দোলন চালায়, যার মধ্যে ছিল মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন, ধর্মঘট ইত্যাদি। এই দাবির আড়ালে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ‘পাথরখেকো চক্র’ প্রকাশ্যে ও গোপনে সাদাপাথরের পাথর লুট করে নিয়ে যায়।
এর মধ্যে সাদাপাথর থেকে পাথর লুটপাটে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাহাব উদ্দিনের সব দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে।