বাজেট না থাকায় আসন্ন ৫টি সংসদীয় আসনের উপনির্বাচনে সিসি ক্যামেরা থাকছে না বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) রাশেদা সুলতানা।
বগুড়ার ২টি আসনের উপনির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা জানান। বগুড়া জেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে এ সভা হয়।
বিএনপি দলীয় এমপিদের পদত্যাগের কারণে শূন্য হওয়া বগুড়ার ২টিসহ ৫টি আসনে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
রাশেদা সুলতানা বলেন, ‘পর্যাপ্ত বাজেট না থাকায় ৫ আসনের উপনির্বাচনে নিরাপত্তার কাজে সিসি ক্যামেরা থাকছে না। আর সিসি ক্যামেরার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। যদি পরবর্তী কোনো নির্বাচনে সরকার আমাদের বাজেট দেয়, তখন সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। কিন্তু এই উপনির্বাচনগুলোয় সিসি ক্যামেরা থাকবে না।’
ইভিএম প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘আমাদের আগে ৮০টি আসন কভার করার মতো ইভিএম মেশিন ছিল। কিছু ইভিএম নষ্ট হয়েছে। কিন্তু এখনো ৬০-৭০ আসনের নির্বাচন কভার করার মতো মেশিন আছে।’
এই মতবিনিময়ের পর জেলা প্রশাসনের সভাকক্ষে দুই আসনের প্রার্থীদের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন ইসি রাশেদা সুলতানা।
মতবিনিময় শেষে দুই প্রার্থীর সঙ্গে কথা হয়। এর মধ্যে বগুড়া-৬ আসনের নৌকার প্রার্থী রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলাপ হয়েছে। আমরা নিশ্চয়তা দিয়েছি নিয়ম মেনেই ভোটের প্রচার-প্রচারণা চালাবো।’
ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ বলেন, ‘সার্বিকভাবে নির্বাচনের পরিবেশ সুন্দর আছে। আশা করছি ভোটগ্রহণও সুষ্ঠু হবে।’
জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৮ হাজার ৪৬৯। ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা ১১২টি। আর ভোট কক্ষের সংখ্যা ৭৭৭টি, এর মধ্যে অস্থায়ী কক্ষ থাকবে ৪২টি।
এই আসনে মোট প্রিসাইডিং কর্মকর্তা থাকবেন ১১২ জন। সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ৭৭৭ এবং পোলিং অফিসার থাকবেন ১ হাজার ৫৫৪ জন।
আর বগুড়া-৬ (সদর) আসনে মোট ভোটার রয়েছেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৭৪৩ জন। ভোট কেন্দ্র হবে ১৪৩টি ও কক্ষ থাকবে ১ হাজার ১৭টি।
এ আসনে ১৪৩ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, ১ হাজার ১৭ সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও ২ হাজার ৩৪ জন পোলিং কর্মকর্তা নির্বাচনে থাকবেন।
চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের রাউজান ওয়াপদা অফিস পার হওয়ার সময় চোখে পড়ে সীমানা প্রাচীর ঘেরা বিশাল এক এলাকা। সেখানে নানা নির্মাণকাজ চলছে। বিশাল এলাকাটিকে প্লটে ভাগ করা হচ্ছে। আছে একটি তিনতলা ভবনও। জানা গেল এটি রাউজান বিসিক শিল্পনগর এলাকা। তবে ভবনের ভেতর গিয়ে কাউকে পাওয়া গেল না। অফিসের একটি কক্ষে আছেন পাঁচজন আনসার সদস্য, তারা শিল্প এলাকার পাহারায় নিয়োজিত। একটু ঘুরে দেখতেই নজরে এলো বিসিক শিল্প এলাকার দুরবস্থা। ফাঁকা প্লটগুলোতে ঝোপঝাড়। পশ্চিম পাশের সীমানা প্রাচীর ধ্বসে পড়েছে। ভরাট করা মাটি সীমানা প্রাচীরের নিচ দিয়ে বাইরে চলে গেছে। তবে শিল্পনগরে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবারহ করতে সাব-স্টেশন করা হয়েছে। স্থাপন করা হয়েছে গ্যাস সরবরাহের পাইন লাইনও।
স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গত একবছর তিনমাস ধরে এই শিল্পাঞ্চলের কাজ বন্ধ। এর কারণ ঠিকাদার পালিয়ে গেছেন। আবার জনবলও নিয়োগ হয়নি। বরাদ্দ দেওয়া হয়নি প্লট। ফলে শুরুতেই মুখ থুবড়ে পড়েছে রাউজান বিসিক শিল্পনগর। ২০২২ সালে ৩৫ একর জমিতে রাউজান বিসিক শিল্পনগর নির্মাণের কাজ শুরু হয়। শিল্পনগরে ১৮৪টি শিল্প প্লট তৈরির কাজ চলছিল। ৭০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হওয়ার কথা। হযরত গোফুর আলী বোস্তামী এন্টারপ্রাইজ নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান শিল্পনগর ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, তোরণ নির্মাণ ও তিনতলা বিশিষ্ট অফিস ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছিল। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক রাউজান পৌরসভার মেয়র জমির উদ্দিন পারভেজ। গতবছরের ৫ আগস্ট থেকে তিনি আত্মগোপনে। তবে তার আগেই জুলাই মাসে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ বুঝিয়ে দিয়েছে বলে দাবি সংশ্লিষ্টদের। রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জিসান বিন মাজেদ বলেন, ‘প্রকল্পটি র্সম্পকে আমার তেমন কোনো ধারণা নেই। এটির সাথে যারা সংশ্লিষ্ট তারা কখনো এ বিষয়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেনি। তবে বিসিক শিল্পনগর প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এ অঞ্চলের মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আসবে। বহু মানুষের কর্মসংস্থান হবে।’
জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরের পূর্ণাঙ্গ কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল জনবল নিয়োগের মাধ্যমে। পাশাপাপশি লটারির মাধ্যমে ব্যবসায়ী ও উদ্যোক্তাদের প্লট বরাদ্দ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল কর্তৃপক্ষের। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ২০২১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে একনেক সভায় অনুমোদিত হয় দেশের বিভিন্ন স্থানের সাতটি শিল্পাঞ্চল। তার মধ্যে চট্টগ্রাম ছিল তিনটি-মিরসরাই, সন্দ্বীপ ও রাউজান। রাউজান বিসিক শিল্পনগরের জন্য বরাদ্দ করা হয় প্রায় ৮০ কোটি টাকা।
বিসিক জানায়, রাউজানের এই শিল্পনগরে থাকবে ১৮৪টি শিল্প প্লট। এখানে পোশাক কারখানা, প্লাস্টিক কারখানা, খেলনা তৈরির কারখানাসহ কুটির শিল্পের মধ্যে পড়ে এমন কারখানা গড়ে উঠবে।
বিসিক চট্টগ্রাম জেলার উপমহাব্যবস্থাপক এস এম এম আলমগীর আলকাদেরী বলেন, ‘রাউজান সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব ও জঙ্গল রাউজান মৌজায় ৩৫ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। এখানে দ্রুত ১৮৪টি শিল্প প্লট তৈরির কাজ শুরু হবে। জনবল সংকট ও রাজনৈতিক পালাবদলের কারণে কাজে কিছুটা ধীরগতি তৈরি হয়। এখন কোন সমস্যা নেই। দ্রুত শিল্পনগর বাস্তবায়নে আমরা কাজ করছি।’
পঞ্চগড় সদর উপজেলার ৩ নং সদর ইউনিয়নের মোলানী পাড়া ও পূর্ব শিং পাড়া এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরে যোগাযোগ ব্যবস্থার চরম দুর্ভোগে ভুগছেন। প্রায় দশ হাজার মানুষের বসবাস থাকা সত্ত্বেও এ দুইটি গ্রামের প্রধান সড়ক এখনো পাকা হয়নি। ফলে প্রতিদিনের যাতায়াতে নানান ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয়রা জানান, বৃষ্টির দিনে কাঁচা রাস্তাগুলো কর্দমাক্ত হয়ে যায়। হাঁটাচলা করা তো দূরের কথা, স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রোগী ও গর্ভবতী নারীকে হাসপাতালে নেওয়ার সময় চরম সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। শুকনো মৌসুমে ধুলাবালিতে নাক-মুখে শ্বাসকষ্টসহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হয়।
এলাকার কয়েজন জানান প্রতিবার নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি মিললেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি।
মোলানী পাড়ার বাসিন্দা এক প্রবীণ ব্যক্তি বলেন, ‘আমরা বহু বছর ধরে এই সড়ক পাকাকরণের দাবি জানাচ্ছি। গ্রামের প্রায় দশ হাজার মানুষ প্রতিদিন এ রাস্তায় চলাচল করে। কিন্তু এখনো কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এটা আমাদের জন্য খুব কষ্টকর।
স্থানীয় শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘প্রতিদিন স্কুলে যেতে খুব কষ্ট হয়। বর্ষায় কাদা আর শুকনো মৌসুমে ধুলার কারণে আমাদের পড়াশোনায় প্রভাব পড়ে।’
অবিলম্বে এই সড়কগুলো পাকা করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় জনগণ। তাদের মতে, যোগাযোগব্যবস্থা উন্নত হলে শিক্ষা, চিকিৎসা ও স্থানীয় অর্থনীতিতেও নতুন গতি আসবে।
মো. আব্দুল লতিফ প্রধান জানান, ৩ নং সদর ইউনিয়ন অনেক পুরাতন ইউনিয়ন। এই ইউনিয়নের কিছু অংশ পৌরসভায় চলে যায়। ১৯৮৪ সালে পঞ্চগড় পৌরসভা স্থাপণ হয়। মাহি পাম থেকে মোলানী, পূর্ব শিং পাড়া থেকে ব্যারিস্টার বাজার পৌরসভা এবং জেলার বিভিন্ন জায়গায় হইতে এ রাস্তা যাতায়াত করা হয়। পঞ্চগড় সদর উপজেলা এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী কৃষ্ণ চন্দ্র রায় তিনি জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এ রাস্তার বিষয় কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
জনদুর্ভোগ লাগবে দ্রুত কাপ্তাই হ্রদের পানির উচ্চতা কমনোর জন্য ৩ দিনের আল্টিমেটাম দিয়েছে রাঙামাটি সচেতন নাগরিক ঐক্য। বৃহস্পতিবার সকালে এ সংগঠনের ব্যানারে রাঙামাটির সাধারণ জনগণের পক্ষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি জমা দেয়া হয়। স্মারকলিপি গ্রহণ করেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জোবাইদা আক্তার।
এ সময় রাঙামাটি সচেতন নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক জুই চাকমা, ডা. মোহাম্মদ ইব্রাহিম, পলাশ চাকমা, নুরুল আবচার, শাখাওয়াত হোসেন, মো. বাদশাসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম কাপ্তাই হ্রদে দীর্ঘদিন যাবত ড্রেজিংয়ের ব্যবস্থা না হওয়ায় তলদেশ ভরাট হয়ে গেছে। হ্রদ সৃষ্টির সময় হ্রদের পানির ধারণ ক্ষমতা ছিলো ১০৯ ফুট। কিন্তু ক্রমান্বয়ে তলদেশ ভরাট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে কাপ্তাই হ্রদের পানি ১০৫ থেকে ১০৬ ফুট হলেই পানির উচ্চতা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। এতে বর্ষা মৌসুমে রাঙামাটি পৌর এলাকাসহ লংগদু, বাঘাইছড়ি, বরকল, বিলাইছড়ি ও জুরাছড়ি উপজেলার হাজার হাজার বসতঘর ও বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ফসলী জমি পানিতে তলিয়ে যায়।
চলতি বছরও অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রায় দুমাস যাবত হাজার হাজার মানুষ পানিতে তলিয়ে আছে। এতে মানুষের দুর্ভোগ চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পানিবন্দি মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা, শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
এছাড়াও গত দুমাস যাবত হ্রদের পানিতে ডুবে আছে রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ঝুলন্ত সেতু। যার ফলে রাঙামাটির পর্যটন ব্যবসায় ধস অব্যাহত রয়েছে। আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে টানা ১০ দিনের ছুটি থাকলেও পর্যটকদের আকর্ষণীয় ঝুলন্ত সেতুটি পানিতে ডুবে থাকায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা চরমভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
এ সময় জনগণের দুর্ভোগ লাঘবে এবং পর্যটন ব্যবসার ধস ঠেকাতে আগামী ৩ দিনের মধ্যে কাপ্তাই হ্রদের পানি কমিয়ে সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আনার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়।
অন্যথায় ভুক্তভোগী সাধারণ জনতাকে সাথে নিয়ে আরো জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলার হুশিয়ারী দেন সংগঠনের নেতারা।
মাগুরা ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট সদর হাসপাতালে রোগী সেবার মানোন্নয়নে ৪টি হুইলচেয়ার প্রদান করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে আনুষ্ঠানিকভাবে হুইলচেয়ারগুলো হস্তান্তর করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান। তিনি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মহসিন উদ্দিনের কাছে এগুলো তুলে দেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মেহেদী হাসান, জেলা বিএনপির সদস্য আলমগীর হোসেন, সাবেক থানা বিএনপি সভাপতি কুতুব উদ্দিন কুতুব, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মাসুদ খান কিজিল, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিমসহ বিএনপির বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান বলেন, মাগুরা সদর হাসপাতাল নানা সমস্যায় জর্জরিত। দুর্ঘটনায় আহত বা অসুস্থ রোগীদের দ্রুত বিভিন্ন ওয়ার্ডে নেওয়ার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। বিশেষ করে হাসপাতালের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় রোগী স্থানান্তরের ক্ষেত্রে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই সমস্যা মোকাবেলায় আমরা ৪টি হুইলচেয়ার প্রদান করেছি।
তিনি আরও বলেন, ‘সদর হাসপাতালে বিশুদ্ধ পানির সংকট রয়েছে। এ সমস্যার সমাধানে আমরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছি। জনগণ আমাদের সাথে থাকলে আমরা ভবিষ্যতে হাসপাতালের সেবার মান আরও উন্নয়নে কাজ করতে চাই।
নওগাঁর মান্দা উপজেলায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা অবস্থায় অজ্ঞাতপরিচয় এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার পরানপুর ইউনিয়নের হলুদঘর গ্রামের পাশে পাকা রাস্তার ধারে লাশটি পড়ে থাকতে দেখে স্থানীয়রা থানায় খবর দেন।
খবর পেয়ে মান্দা থানা পুলিশের একটি দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহত নারীর বয়স আনুমানিক ৩২ বছর বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে এখন পর্যন্ত তার নাম-পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ঘটনাটি এলাকায় চরম চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের অনেকে বিষয়টিকে রহস্যজনক হিসেবে মনে করছেন।
মান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনসুর রহমান বলেন, “লাশটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে নিহতের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। আমরা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছি। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য প্রস্তুতি চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে পুলিশ বলছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডও হতে পারে। তবে ময়নাতদন্ত ও তদন্ত রিপোর্ট না পাওয়া পর্যন্ত কিছুই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত জানতে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
রাজবাড়ীর পাংশায় আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে পৌর শহরে সৃষ্ট যানজট নিরসনে কাজ করছে পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতি।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি মো. বাহারাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মো. দেলোয়ার সরদারের নেতৃত্বে সমিতির অন্যান্য সদস্যদের সহযোগিতায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
এসময় পৌর শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলোতে লাল রঙ দিয়ে যানবাহন চলাচলের নির্দেশনা আঁকা হয়। যাতে ভিড়ের সময় যানবাহন নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবং পথচারীরাও নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন।
পাংশা শিল্প ও বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার সরদার জানান, দুর্গাপূজা উপলক্ষে প্রতিদিন শহরে ভিড় বেড়ে যায়। বিশেষ করে পূজামণ্ডপ, বাজার ও শপিং সেন্টার ঘিরে যানজট সৃষ্টি হয়। এজন্যই আগে থেকেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সমিতির সভাপতি বাহারাম হোসেন জানান, শুধু পূজার সময়ই নয়, সারাবছরই যেন পৌর শহরে শৃঙ্খলিতভাবে যান চলাচল করতে পারে—সেই দিকেও সমিতি নজর দেবে। এ কাজে স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে। এ কাজে তারা বাজারের ব্যবসায়ী, ভ্যানচালক, অটোচালক ও অন্যান্য যানবাহনের চালকসহ আগত জনসাধারণের সহযোগিতা কামনা করেছেন। যাতে করে পাংশা বাজারের যানজট নিরসন করা সম্ভব জয়।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ বণিক সমিতির এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের দাবি, এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকলে পাংশা শহরে যানজটের ভোগান্তি অনেকটাই কমে আসবে।
দীর্ঘদিন পর বেনাপোল চেকপোস্টে ভারত গমনে যাত্রীদের কোলাহল দেখা গেছে। দুর্গাপূজার ছুটি কাটাতেই হাজার হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে যাচ্ছে। কেউ যাচ্ছে দূরগাপূজা উৎসব পালন করতে কেউবা চিকিৎসা করতে কেউ যাচ্ছে বেড়াতে। গত দুদিনে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী ভারতে গেছেন বলে ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট এর পর ভারত সরকার বাংলাদেশীদের জন্য ভারতীয় ভিসা বন্ধ করে দেয়। পরবর্তীতে সীমিত পরিসরে চিকিৎসা ভিসা কিছু ইমারজেন্সি ভিসা প্রদান করেন। সে সময়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ থেকে ৭০ থেকে ৮০ জন পাসপোর্ট যাত্রী ভারত যেত। তবে ২৮ তারিখ থেকে শুরু হওয়া সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই দুর্গাপূজার কারণে ভারত সরকার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রীদের ভিসা প্রদানে আরো একটু শিথিল করেছেন। এখন প্রতিদিন ২০০০ থেকে আড়াই হাজার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাত্রী ভারতের গমন করছেন। ভারত থেকেও প্রতিদিন আসে ৪ শ থেকে ৫ শত পাসপোর্ট যাত্রী। হঠাৎ করে ভারত গমনে পাসপোর্ট যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বেনাপোল চেকপোস্টে যাত্রীদের কোলাহল দেখা যাচ্ছে। এদের মধ্যে কেউ যাচ্ছে পূজা উৎসব পালন করতে কেউ চিকিৎসা করতে কেউ আবার পরিবার নিয়ে যাচ্ছে বেড়াতে। যাচাই-বাছাই করেই পাসপোর্ট-যাত্রীদের ভারত ভ্রমণের অনুমতি দেয়া হচ্ছে।
বেনাপোল ইমিগ্রেশন এর ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণের পাসপোর্ট যাত্রী পারাপার বৃদ্ধি পেয়েছে। গত দুই দিনে প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পাসপোর্ট যাত্রী বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে গমন করেছেন। পূর্বের ন্যায় ভারত সরকার বাংলাদেশী যাত্রীদের ভিসা প্রধানের ব্যবস্থা করলে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারত ভ্রমণ অনেক বেড়ে যাবে। যাত্রী পারাপার বেশি হলে সরকারি রাজস্ব আদায় বেশি হবে এখান থেকে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌর এলাকার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মাঝিকাড়ায় অবস্থিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে (২০২৩ সালে)। কিন্তু ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫ পর্যন্তও দৃষ্টিনন্দন তিনতলা এ ভবনটি তালাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছে।
কমপ্লেক্সের ভেতরে রয়েছে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের নাম সম্বলিত স্মৃতিফলক। ভবনের প্রথম তলায় মার্কেট, দ্বিতীয় তলায় অফিসের জন্য ছয়টি কক্ষ এবং তৃতীয় তলায় একটি সম্মেলন কক্ষ নির্মিত হয়েছে।
২০১২ সালে মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনায় ৬৪ জেলার ৪২১টি উপজেলায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়। এ প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় ১ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। প্রথমে ২০১৫ সালের জুনে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও প্রকল্পের মেয়াদ দুই দফা বাড়িয়ে ২০২৩ সালের জুনে শেষ করা হয়। প্রতিটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা।
যদিও ২০২৪ সালে সারাদেশে ৩৪টি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স একসঙ্গে উদ্বোধনের পরিকল্পনা ছিল, তা এখনও বাস্তবায়ন হয়নি। এদিকে নবীনগরের মুক্তিযোদ্ধারা বর্তমানে পৌর ভবন সংলগ্ন অফিসে স্থান সংকুলান ও সুযোগ-সুবিধার অভাবে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।
অপরদিকে ২ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত আধুনিক এই ভবনটি দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ থাকায় ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতির শিকার হচ্ছে। ভাঙা জানালার কাঁচ, ক্ষতিগ্রস্ত শাটার, বৃষ্টির পানি জমা, এমনকি একমাত্র নলকূপ চুরি হয়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। মূল গেইট না থাকায় ভবন এলাকায় অবাধে যাতায়াত করছে সাধারণ মানুষ।
নীতিমালা অনুযায়ী এই ভবনের ভাড়া থেকে শতকরা ১৫ ভাগ ব্যয় হবে মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে এবং বাকি ৮৫ ভাগ জমা হবে সরকারি কোষাগারে। কিন্তু উদ্বোধনে বিলম্বের কারণে সরকার যেমন রাজস্ব হারাচ্ছে, তেমনি ভবনটিও ধীরে ধীরে অকার্যকর হয়ে পড়ছে।
এ বিষয়ে নবীনগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার সামসুল আলম বলেন—
“আমরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে ভবনটি বুঝে পাওয়ার দাবি জানিয়েছি। তিনি জানিয়েছেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অচিরেই ভবনটি বুঝিয়ে দেওয়া হবে।”
নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রাজিব চৌধুরী বলেন—
“ভবনটি সংস্কারের পর শিগগিরই উদ্বোধন করে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি এসেছে। দ্রুতই তা করা হবে।”
নারায়ণগঞ্জ শহরের জিমখানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ২৪ জনকে আটক করেছে যৌথবাহিনী। এদের মধ্যে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা প্রদান করা হয়। বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে জিমখানা লেকপার্ক এলাকায় পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সাজাপ্রাপ্ত ৫ জন হলেন- মো. ফয়সাল (২১), রিফাত (২০), জুবায়ের ভূইয়া রানা (৩৬), মো. মোস্তফা হোসেন (২৬) ও অভিনন্দী (৩০)। তাদেরকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। এছাড়া আটককৃত আরও ১৯ জনের মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় যাচাই বাছাইয়ের জন্য নেওয়া হয়েছে। তাদের নাম পরিচয় পাওয়া যায়নি। এছাড়া অপর তিন জনের কাছ থেকে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। তারা হলেন- আলম চাঁন, পারভীন আক্তার ও আফরিনা ওরফে হাসি।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সদর উপজেলার জিমখানা এলাকায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এর সমন্বয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এই অভিযানে জিমখানা এলাকার মাদক কারবারি আলম চাঁন কে আটক করা হয়। এছাড়া আলম চাঁন এর নিজ বসতঘর তল্লাশি করে প্রায় দেড় কেজি গাঁজা, ২৫০ মিলি বিদেশি মদ, ৩টি বড় ছোড়া, ১টি স্টীলের চাপাতি, ১টি টেটা, ২টি লোহার পাইপ উদ্ধার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে ও অস্ত্র আইনে নিয়মিত মামলা করা হবে। এছাড়া আলম চাঁন এর বিরুদ্ধে সদর থানায় ১০টি মাদক মামলা রয়েছে।
এছাড়া পারভীন আক্তার এর কাছ থেকে ২৪ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ও আফরিনা ওরফে হাসি এর কাছ থেকে ৩৬ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার সহ তাদের আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হবে।
এদিকে ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে গাঁজা রাখা ও সেবনের অপরাধে বিভিন্ন মেয়াদে ৫ জনকে সাজা প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট টি এম রাহসিন কবির। এদের মধ্যে মো. ফয়সাল ও রিফাতকে ১২ দিন, জুবায়ের ভূইয়া রানাকে ২০ দিন, মো. মোস্তফা হোসেনকে ১৪ দিন এবং অভিনন্দীকে ৭ দিন কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী গণমাধ্যমকে বলেন, অভিযান পরিচালনা করে ২৪ জনকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে ১৬ জনকে সদর মডেল থানায় প্রেরণ করে যাচাই বাছাই করা হচ্ছে। এছাড়া তিনজন আগে থেকে ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি ছিলেন। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আর ভ্রাম্যমান আদালত বসিয়ে ৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়েছে।
চট্টগ্রাম জেলা বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ জেলা, যেখানে নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহ, স্যানিটেশন সুবিধা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বৃষ্টির পানি সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এসব প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য উন্নয়ন সাধিত হয়েছে, যা স্থানীয় জনগণের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করেছে।
সরাদেশে নিরাপদ পানি সরবরাহ প্রকল্পের আওতায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগ, চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নিরাপদ পানি সরবরাহের জন্য প্রায় ২৫ হাজার সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। চট্টগ্রাম জেলার উপজেলাসমূহে জলস্তরের (Water table) উচ্চতা খুবই নিচে চলে যাওয়ায় এবং নদী-নালা শুকিয়ে যাওয়ার কারণে টিউবওয়েলের মাধ্যমে পানি উত্তোলন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলশ্রুতিতে জনগণ সুপেয় পানি হতে বঞ্চিত হচ্ছে এবং দূষিত পানি পান করার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এলাকার মানুষ। এ পরিস্থিতিতে চট্টগ্রাম জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তদারকিতে স্থাপিত গভীর নলকূপসমূহ জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহ করে যাচ্ছে।
বিশেষ করে সীতাকুন্ড উপজেলায় মাটির নিচে পাথরের স্তর থাকার কারণে স্বাভাবিকভাবে নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে না। ফলে চরম পানি সংকটের সম্মুখিন হয়েছে ওই এলাকার মানুষ। বর্তমানে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় উন্নত প্রযুক্তি Hydraulic Rig পদ্ধতি ব্যবহার করে সীতাকুন্ড উপজেলায় গভীর নলকূপ স্থাপন করেছে। এতে জনগণের সুপেয় পানির অভাব পূরণ হয়েছে এবং উক্ত প্রযুক্তি ব্যবহার করে নলকূপ স্থাপনের কাজ চলমান রয়েছে।
তাছাড়া বিভিন্ন উপজেলায় কমিউনিটি বেসড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীম এবং রুরাল পাইপড ওয়াটার সাপ্লাই স্কীমের মাধ্যমে জনগণের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ কাজ চলমান রয়েছে। সর্বোপরি এ প্রকল্পের মাধ্যমে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম জনগণের জন্য সহজলভ্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহের ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে।
পিইডিপি-৪ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা ও উপজেলায় বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৬০০টি ওয়াশব্লক নির্মাণ এবং ১,১৩৫টি সাবমার্সিবল পাম্পযুক্ত গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন এলাকায় মাটির নিচে পাথুরে স্তর থাকায় গভীর নলকূপ স্থাপন করা সম্ভব ছিল না। এতে করে বিদ্যালয়ে সুপেয় পানি বা স্যানিটেশন ব্যবস্থা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়ী থেকে পানি নিয়ে আসতে হত। এ পরিস্থিতিতে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর ব্যবস্থাপনায় Hydraulic জরম পদ্ধতি ব্যবহার করে গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়।
তছাড়া বিভিন্ন উপজেলার দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এবং বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সন্দ্বীপেও বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ওয়াশব্লক নির্মাণ ও গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সমূহে কোমলমতি শিশুদের স্যানিটেশন সুবিধা উন্নত করার জন্য এবং নিরাপদ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম এর তদারকিতে উক্ত কাজসমূহ সম্পন্ন করা হয়।
মানবসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প-এর আওতায় ১৪,৭০০টি টুইনপিট ল্যাট্রিন নির্মাণ করা হয়েছে, যা স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি ঘটিয়েছে এবং জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করেছে। তাছাড়া ৫টি Large Piped Water Supply Scheme এর কাজ চলমান রয়েছে এবং ২৬৬ Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে জনগণের মাঝে সুপেয় পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। প্রতিটি Small Piped Water Supply Scheme এর মাধ্যমে ৩০-৪০ টি পরিবার পানি পাচ্ছে। তাছাড়া জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রাম উক্ত প্রকল্পের মাধ্যমে ৪২ টি কমিউনিটি ক্লিনিকে নতুন টয়লেট নির্মাণ, ২৮টি পাবলিক টয়লেট নির্মাণ এবং ৬৩ টি হ্যান্ড ওয়াশিং বেসিন নির্মাণ করে।
বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে পানি সরবরাহ প্রকল্পের মাধ্যমে চট্টগ্রামের উপকূলীয় অঞ্চলে ৬,৩৩৬টি রেইন ওয়াটার হার্ভোস্টিং ও ৬৩০ টি রেইন ওয়াটার ক্যাচমেন্ট এরিয়া নির্মাণ করা হয়েছে। এটি বৃষ্টির পানি সঞ্চয়ের মাধ্যমে পানি সংকট মোকাবেলা করতে সহায়তা করেছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব থেকে উপকূলীয় জনগণের পানির অভাব দূর করার উদ্দেশে পরিচালিত হয়েছে। এই প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জন্য নিরাপদ পানি সরবরাহ করা সম্ভব হয়েছে, যা পানিবাহিত রোগের প্রতিরোধ এবং জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
৩২ পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও মানব বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় সাতকানিয়া পৌরসভায় জনগণের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ৪০টি কমিউনিটি ও পাবলিক টয়লেট নির্মাণ, ৪৭টি কমিউনিটি বিন নির্মাণ, ড্রেন নির্মাণ, ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট ও পাম্প হাউজ নির্মাণ করেছে।
বাংলাদেশে ৩০টি পৌরসভায় পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন প্রকল্পের আওতায় বাঁশখালী ও চন্দনাইশ পৌরসভায় ইমপ্রুভড হাউসহোল্ড টয়লেট নির্মাণ করা হয়। এতে জনগণের স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নতি হয়। তাছাড়া উক্ত পৌরসভাসমূহে ড্রেন নির্মাণের কাজ ও চলমান রয়েছে। তাছাড়া খুব অল্প সময়ের মধ্যে এ দুটি পৌরসভার জনগণের মাঝে পানি সরবরাহ আরম্ভ হবে।
প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়নে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, চট্টগ্রামকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে, যেমন দূরবর্তী অঞ্চলে টিউবওয়েল স্থাপন এবং স্যানিটেশন সুবিধার জন্য অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা ইত্যাদি। তবে এসব প্রকল্পের সফল বাস্তবায়ন চট্টগ্রাম জেলার জনগণের জীবনযাত্রায় একটি বড় পরিবর্তন এনে দিয়েছে। নিরাপদ পানি সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়ন এ অঞ্চলের জনগণের স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং সাধারণ জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে।
শতাধিক চৌবাচ্চায় লাল, নীল, হলুদ, সাদা, কালো আর কমলা রঙের মাছের ঝলকানি। রঙিন এই মাছের সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন আগত দর্শনার্থীরা। শখের বশে শুরু হলেও আজ সেটিই পরিণত হয়েছে এক সফলতার গল্পে। কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় এখন রঙিন মাছ চাষ করে হয়েছেন লাখপতি। জয়ের সাফল্য দেখে রঙিন মাছ চাষে স্বপ্ন দেখছেন কুমিল্লার তরুণরা।
পড়াশোনা শেষ করে চাকরির পেছনে না ছুটে জয় বেছে নেন ভিন্ন পথ। ইউটিউব দেখে ২০১৯ সালে মাত্র ১ হাজার ৩০০ টাকা ব্যয়ে দুটি ড্রামে শুরু করেন রঙিন মাছ চাষ। প্রথমে ছিল শুধু শখ, কিন্তু বর্তমানে তা রূপ নিয়েছে বাণিজ্যিক খামারে। বুড়িচং উপজেলার মণিপুর ও নাঙ্গলকোটে তার রয়েছে তিনটি খামার, ‘আর বি ফিস ফার্ম’ নামে, যেখানে চাষ হচ্ছে প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মাছ।
তার হ্যাচারিতে এখন ৯০ প্রজাতির মাছের পোনা উৎপাদন হয়। দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন মানুষ এসে রঙিন মাছের পোনা কিনে নিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘরের অ্যাকুরিয়ামে শোভা পায় জয়ের হ্যাচারির রঙিন মাছ।
তখন অনেকেই জয়ের কাজ দেখে হাসাহাসি করে। তবে দীর্ঘ পরিশ্রম আর একাগ্রতায় তিনটি হ্যাচারির মালিক হন জয়। দুটি তার গ্রামের বাড়ি নাঙলকোটে। আরেকটি বুড়িচং উপজেলার কাবিলা-মণিপুর এলাকায়। তার হ্যাচারিতে রঙিন মাছের পোনার মধ্যে রয়েছে এলবাইনো ব্লুটুপাস, গ্রীন বেনবেল্ট, ডাম্বু মোজাইক, এলবাইনো পিঙ্ক মোজাইক, গ্লুকই, ফরকে গোল্ড, ব্লু মেটাল, ব্লু হেড সামুরাই, রেড ড্রাগন, গ্রীন ড্রাগন, আরটিপি, লবস্টার বা ক্রে ফিস, মুনটেল বেলুনমলি।
জয় বলেন, ‘হ্যাচারির মধ্যে ৪৪টি হাউসে নিয়ম করে মাছের পোনাকে যত্নআত্তি করতে হয়। সকাল-বিকেল অক্সিজেন চেক করে খাবার দিতে হয়।’ পোনা পরিচর্যাকারী রাকিব উল্লাহ জানান, ‘নিয়ম করে হ্যাচারিতে অক্সিজেন দিতে হয়। তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে পোনার খাবার দিতে হয়। নিয়মের ব্যত্যয় ঘটলে পোনা মরে যাওয়ার সম্ভবনা থাকে।’
স্থানীয় আবদুর রশীদ নামে এক বাসিন্দা জানান, ‘দূর-দূরান্ত থেকে শৌখিন লোকজন এসে মাছের পোনা কিনে নিয়ে যায়।’ ক্রেতা আবুল খায়ের জানান, ‘তিনি মাছের পোনা কিনে নিয়েছেন। সাশ্রয়ী দামে পোনা কিনেছেন। বাড়তি হিসেবে হ্যাচারি থেকে নিয়মিত মনিটরিং করা হয়।’ জয়ের এমন সাফল্য দেখে তরুণরা এখন রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে উৎসাহিত হচ্ছে।
আরেক স্থানীয় ব্যক্তি জানান, ‘কুমিল্লা ছাড়াও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা যেমন; চট্টগ্রাম, দিনাজপুর, রংপুর, বগুড়া, রাজশাহীতে যা তার এই উৎপাদিত মাছের পোনা। এছাড় অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও বিক্রি হচ্ছে তার মাছ।’
রঙিন মাছের প্রতি মানুষের আগ্রহ দিন দিন বাড়ছে। বাসার অ্যাকুরিয়াম সাজাতে প্রতিদিনই ক্রেতারা ভিড় করছেন জয়ের খামারে। উদ্যোক্তা হিসেবে জয়ের সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে স্থানীয় অনেক তরুণ এখন নতুন খামার গড়ে তোলার কথা ভাবছেন।
হ্যাচারির মালিক প্রজেশ্বর চন্দ্র জয় বলেন, শুরুতে অনেকেই হাসাহাসি করেন। ধীরে ধীরে যখন সফলতা এসে ধরা দিতে লাগল তখন সমালোচনাকারীরা আমার হ্যাচারিতে এসে বিনিয়োগ করতে চায়। তবে রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শেখার কোনো শেষ নেই বললেন হ্যাচারির মালিক জয়। তাই শুধু হ্যাচারি করলেই হবে না, প্রতিনিয়ত শেখতে হবে।
রঙিন মাছের পোনা উৎপাদনে শুধু সফল উদ্যোক্তা হয়ে ওঠেনি বরং জয় এখন এলাকার তরুণদের কাছে হয়ে উঠেছেন অনুপ্রেরণার প্রতিক।
এ বিষয়ে কুমিল্লার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. বেলাল হোসেন বলেন, কুমিল্লা দেশের মৎস্য উৎপাদনে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রঙিন মাছ চাষের সম্ভাবনা।
মৎস্য কর্মকর্তা আরও বলেন, জয় একটি অসাধারণ উদ্যোগ নিয়েছে। তরুণরা চাইলে খুব সহজেই এ খাত থেকে লাভবান হতে পারবেন। সে জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে পরমার্শ দিতে প্রস্তুত আছে মৎস্য কর্মকর্তারা।
শখের বশে শুরু হলেও আজ রঙিন মাছ চাষ প্রজেশ্বর চন্দ্র জয়ের জীবনে এনেছে সাফল্য। শুধু নিজেই নয়, আশপাশের তরুণদেরও অনুপ্রাণিত করছেন তিনি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ও সরকারি সহায়তা পেলে রঙিন মাছ চাষে দেশের অন্যতম সম্ভাবনাময় রপ্তানি শিল্পে পরিণত হতে পারে।
কৃষিকাজের আড়ালে বাংলা মদ উৎপাদন ও বিক্রি করে নিজের নাম লিখিয়েছেন কালো তালিকায়। এলাকার ছোট থেকে বড় সর্ব মহলে পরিচিত নাম কামাল হোসেন। কেরানীগঞ্জ উপজেলার রোহিতপুর ইউনিয়নের পোড়াহাটি গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে কামাল যিনি দীর্ঘদিন ধরে একই পেশায় নিজেকে সম্পৃক্ত রেখে শুধু নামেই পরিচিতি পাননি হয়েছেন আঙুল ফুলে কলাগাছ। মদের টাকায় পারিবারিকভাবে সচ্ছলতার পাশাপাশি বাড়িতে গড়ে তুলেছেন আলিসান ভবন। মদের কারখানার সামনেই নির্মিত ভবন থেকেই দেখভাল করেন নিজ সাম্রাজ্যের।
এলাকাবাসী বলছে তার কারণে এলাকার যুবকরা বিপদগামী হচ্ছে। এলাকাবাসী প্রশাসন সবাই যেনেও বাধা দেওয়া হয় না এই অবৈধ কাজে। তার কাজে সার্বিক সহযোগিতা করেন একই এলাকার রবি, হান্নান ও গফফার। পুলিশ ফাঁড়ির পেছনেই বিশাল মদের কারখানা দীর্ঘদিন যাবত কী করে চলছে এর উপযুক্ত জবাব নেই ফাঁড়িতে দায়িত্বরত কর্মকর্তার। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেরানীগঞ্জ (সার্কেল) মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন কবির জানান, পুলিশ ফাঁড়ির কাছে কিংবা দূরে মদের কারখানা কোথাও থাকবে না। তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নতুন সোনাকান্দা আদর্শ পুলিশ ফাঁড়ির ৫০০ গজের ভেতরে পোড়াহাটি এলাকায় একটি ধইঞ্চা খেতে দুটি ড্রামের চুলায় জ্বাল দেওয়া হচ্ছে মদ। পাশেই বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে আছে কাঁচা মদ ভর্তি ২০-২৫টি ড্রাম। কোথাও কম পচা কোথাও আবার বেশি। কিছু পলিথিন ভর্তি রেডি বাংলা মদ। স্থানীয় যুবসমাজ খেতের বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করছে মদের ড্রাম।
স্থানীয় যুবক জহিরুল ইসলাম জানান, কামাল ও তার সহযোগীরা প্রায় ৮-১০ বছর যাবত এ কাজ করে আসছে। এলাকাবাসী ও প্রশাসনের অসহযোগীয় আমরা চক্রটিকে ধরতে পারছিলাম না। অবশেষে গ্রামের যুবসমাজ একত্র হয়ে ১৫-২০ ড্রাম মদ উদ্ধার করে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সামনে ধ্বংস করেছি। আমাদের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সরকারি ইস্পাহানি কলেজের শিক্ষক আসকর আলী জানান, এমন জঘন্য ব্যক্তি কোনো এলাকায় থাকলে সে এলাকা ভালো থাকতে পারে না। আমরা মাদক কারবারি কামালের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই।
তবে অভিযুক্ত কামালের ছেলে জানিয়েছেন, বাবাকে বারবার বলার পরও তাকে ফেরানো যায়নি। আর বাড়ি বাবার নয় নিজেদের টাকায় করেছেন বলে জানান তিনি।
এব্যাপারে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল হক ডাবলু জানান, স্থানীয় লোকজন কিছু বাংলা মদ উদ্ধার করে ধ্বংস করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করতে আসেনি। তদন্তসাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
একসময় নওগাঁ শহরের অলিগলিতে প্রতিদিন ভেসে আসত প্যাডেল চালিত রিকশার পরিচিত ‘ক্রিং ক্রিং’ আর ‘টুং টাং’ বেলের শব্দ। সেই রিকশার চাকা ঘুরে চলত শত শত পরিবারের জীবনযাপন। কিন্তু সময়ের পালাবদলে সেই ঐতিহ্য প্রায় বিলুপ্তির পথে।
আধুনিকতার ছোঁয়ায় ও লাভজনক আয়ের আশায় শহরের প্রায় সব রিকশাচালকই এখন ঝুঁকছেন ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার দিকে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার প্রতি ঝুঁকছে চালকরা:
প্যাডেল রিকশায় পরিশ্রম বেশি হলেও আয় কম। পক্ষান্তরে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালিয়ে কম শ্রমে বেশি আয়ের সুযোগ থাকায় অনেকেই বদলে ফেলেছেন পেশার ধরন। ফলে শহর ও গ্রামাঞ্চলে অটোরিকশার সংখ্যা বাড়ছে লাফিয়ে লাফিয়ে।
প্যাডেল রিকশার চালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, মানুষ এখন আর প্যাডেলের রিকশায় উঠতে চায় না। তাই বেশির ভাগ সময় অলস বসে থাকতে হয়। আগে দিনে ২০০-৩০০ টাকা আয় হতো, এখন সেটা ৮০-১০০ টাকায় নেমে এসেছে। এত অল্প আয়ে সংসার চালানো কঠিন হয়ে গেছে।
ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক মিঠু হোসেন জানান, রিকশায় খাটুনি বেশি, অথচ আয় কম। অটোরিকশা চালিয়ে দিনে ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় করা যায়। কিস্তিতে কেনা যায় বলেও অনেকের পক্ষে এটি সহজলভ্য।
উৎপাদন বাড়ছে, ব্যয়ও বাড়ছে:
নওগাঁয় বর্তমানে প্রায় ৫০টি কারখানায় প্রতি মাসে গড়ে ২৫০টি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা তৈরি হচ্ছে। তবে কাঁচামালের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন ব্যয়ও বেড়েছে অনেক গুণ। রড ও শিটের দাম বিগত দুই বছরে বেড়েছে ৩০-৪০ শতাংশ।
শরিফুল ইসলাম নামের একজন কারখানা মালিক জানান, একটি অটোরিকশার ফ্রেম বা বডি তৈরিতে খরচ পড়ে অন্তত ৮০ হাজার টাকা। ব্যাটারিসহ পুরো অটোরিকশার খরচ দাঁড়ায় প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা। অনেক সময় এনজিও থেকে উচ্চ সুদে ঋণ নিয়ে কাজ করতে হয়, কারণ ব্যাংক ঋণ পেতে হলে জমি বা ঘরের কাগজ লাগে, যা সবার পক্ষে সম্ভব হয় না।
কর্মসংস্থানের নতুন দিগন্ত:
নওগাঁ বিসিক শিল্প নগরীর উপব্যবস্থাপক শামীম আক্তার মামুন বলেন, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চাহিদা বাড়ায় নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হয়েছে। কারখানার সংখ্যাও বেড়েছে। শিল্প সম্ভাবনা আরও বাড়াতে কারিগরি প্রশিক্ষণসহ প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে বিসিক।’
হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্য:
যেখানে এক সময় অভ্যন্তরীণ যাতায়াতে একমাত্র ভরসা ছিল প্যাডেল চালিত রিকশা, সেখানে এখন তা অতীত হতে চলেছে। শহরে বর্তমানে হাতে গোনা মাত্র ৩টি প্যাডেল রিকশা দেখা যায়, যার চালকরাও অধিকাংশই বয়সে প্রবীণ। একসময় যে রিকশাগুলোর নির্মাণে ব্যস্ত ছিল ৫০টিরও বেশি কারখানা, যার মাসিক উৎপাদন ব্যয় প্রায় ২ কোটি টাকা। এখন সেগুলোও ধীরে ধীরে রূপ নিচ্ছে স্মৃতিতে।
এক সময়ের অপরিহার্য বাহন হয়তো আগামী প্রজন্মের কাছে রয়ে যাবে কেবল ইতিহাসের পাতায় কিংবা জাদুঘরের প্রদর্শনীতে।