চট্টগ্রাম নগরীর ষোলশহর এলাকায় চশমা খালের পাশ ঘেঁষে গড়ে ওঠা একটি চারতলা ভবন হেলে পড়েছে। বুধবার সকালে ভবনটি হেলে পড়ার খবরে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ওই সময় ভবনটির ভেতরে থাকা জিনিসপত্র সরানো হয়।
এ ভবনের নাম ফেরদৌস প্লাজা। বেশ কিছুদিন ধরে ভবনটির পাশের চশমা খালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণের জন্য খননকাজ চলছে। এ কাজের জন্যই ভবনের খালসংলগ্ন বেশ কিছু অংশ ১০ দিন আগে ভাঙা পড়ে। ভবনমালিক খোরশেদ আলমের দাবি, এতে ভবনের ভিত্তি অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এ কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে।
বুধবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, হেলে পড়া ভবনটি দেখতে আশপাশে শতাধিক মানুষ ভিড় করেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। হেলে পড়া ভবনের ভেতর থেকে সরানো হচ্ছে আসবাবপত্র। ভবনটিতে বাসা ভাড়া নিয়ে তেমন কেউ থাকতেন না। বেশিরভাগ কক্ষই বাণিজ্যক খাতে ভাড়া দেয়া হয়েছে। চারতলা ভবনের নিচতলায় দোকান, দোতলায় দাঁতের চিকিৎসকের চেম্বার, তৃতীয় তলায় আইটি ফার্ম ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং চতুর্থ তলায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থীদের অফিস রয়েছে।
হঠাৎ ভবন হেলে পড়ায় জিনিসপত্র নিয়ে বিপাকে পড়েন সেখানকার দোকানি ও প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মীরা।
ঘটনাস্থলে পাওয়া যায় ইরেবু নামের একটি আইটি ফার্মের স্বত্বাধিকারী সাদরুল কবিরকে। তিনি একরাশ দুশ্চিন্তা নিয়ে বলেন, ‘মঙ্গলবারও আমরা ঠিকঠাক অফিস করেছি। কিন্তু একদিন পরেই এমন কিছু ঘটে যাবে ভাবিনি। সকালে স্থানীয় পরিচিত এক দোকানির ফোনকলে ভবন হেলে পড়ার বিষয়টি জানতে পারি। আমাদের প্রতিষ্ঠানে ১৮টি কম্পিউটার, চেয়ার-টেবিলসহ নানা জিনিসপত্র আছে। এখন আপাতত নিচে সেগুলো নামিয়ে রাখছি। এসব নিয়ে হঠাৎ কোথায় যাব বুঝে উঠতে পারছি না।’
দোকানি ও প্রতিষ্ঠানের মালিক-কর্মীদের অভিযোগ, ভবনের পাশের খালে প্রতিরোধ দেয়ালের কাজ চললেও এতদিন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কোনো সতর্কতামূলক নোটিশ বা ঘোষণা দেয়নি। সেজন্য তারা পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে জিনিসপত্র সরাতে পারেননি। আবার অফিস চলাকালে বড় দুর্ঘটনা ঘটলে সেটির দায় কে নিত, সেটিও তাদের প্রশ্ন।
সোয়া দুই কাঠা জমির ওপর চারতলা ভবনটি ১৯৯০ সালে নির্মাণ করা হয় বলে জানিয়েছেন ভবনমালিক খোরশেদ আলম। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘পারিবারিক ভবনটি নির্মাণের জন্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ থেকে ১৯৮৬ সালে নকশা অনুমোদন নেয়া হয়েছিল। এতদিন সব ঠিক ছিল। তবে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের কাজের জন্য ভবনের একাংশ ১০ দিন আগে ভেঙে ফেলা হয়। পাশাপাশি ভবন ঘেঁষে থাকা খালে প্রতিরোধ দেয়াল নির্মাণ করা হচ্ছে। এ কারণে ভবনটি হেলে পড়েছে।’
তবে আগাম নোটিশ না দেয়ার বিষয়ে কিছু বলতে চাননি সিডিএর অথরাইজড কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসান। তিনি বলেন, ‘ভবন হেলে পড়ার বিষয়টি শোনার পর সিডিএর লোকজন ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আমরা দুইভাবে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করি। এরমধ্যে একটি হলো একেবারে জরাজীর্ণ ভবনের তালিকা। আরেকটি দুর্ঘটনার পর ঝুঁর্কিপূর্ণ ভবনের তালিকা। সবমিলিয়ে ৫০০-১০০০ ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের তালিকা করে সেটি আমরা সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি। এখন সেগুলো ভাঙার দায়িত্ব তাদের।’
বরগুনায় দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির আয়োজনে বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার সকালে বরগুনা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত প্রতিযোগিতায় বরগুনার ৮ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ গ্রহন করে।
বরগুনা প্রেসক্লাবের সহ সভাপতি ও জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সদস্য রেজাউল ইসলাম টিটুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বরগুনা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যাপক আবদুস ছালাম,জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন নয়ন, বরগুনা জিলা স্কুলের সহকারী শিক্ষক আবদুল ওহাব প্রমুখ।
"ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে সততা ও নিষ্ঠা বোধ জাগ্রত করা না গেলে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়"
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি বরগুনা জেলা কতৃক আয়োজিত বিতর্ক প্রতিযোগিতায় বরগুনা জিলা স্কুল, বরগুনা সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, বরগুনা আদর্শ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়, বরগুনা কলেজিয়েট মাধ্যমিক বিদ্যালয়, বরগুনা ডিকেপি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, গৌড়িচন্না এন এস মাধ্যমিক বিদ্যালয়, সেনাখালি গগন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, চরকগাছিয়া ফাজিল মাদ্রাসা, বরগুনা দারুল উমুল কামিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর অংশ গ্রহন করেন।
পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নওগাঁয় ইনতেফা কোম্পানির পক্ষ থেকে কৃষকদের মাঝে একটি করে ফলজ ও বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ইনতেফা কোম্পানির উদ্যোগে সারা দেশব্যাপি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইনতেফার পরিবেশক মেসার্স কৃষি বিতান এর সৌজন্যে নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর প্রাঙ্গনে চারা বিতরণ কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়।
বৃক্ষরোপন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী নওগাঁর কৃষিবিদ মোঃ রেজাউল করিম, অতিরিক্ত উপ পরিচালক ( উদ্যান), কৃষিবিদ মোঃ মেহেদুল ইসলাম,অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (উদ্ভিদ সংরক্ষণ), উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ ফজলে রাব্বি, উপসহকারী কৃষি অফিসার মোঃ শামছুর রহমান, ইনতেফা কোম্পানির এরিয়া ম্যানেজার জনাব মোঃ আফজাল হোসেন, মার্কেটিং অফিসার মোঃ নাহিদ হোসেন এবং কৃষি বিতান এর স্বত্বাধিকারী এস এম মাহবুব রাব্বী হাসান।
এসময় ১০০ জন কৃষক এর মাঝে একটি ফলজ ও একটি বনজ গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
এসময় সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বক্তারা বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনে গাছ রোপনের কোন বিকল্প নেই। আমাদের প্রত্যেক এর উচিত প্রতিবছর কমপক্ষে দুইটি করে চারা রোপন করা। গাছ আমাদের দেয় অতি মূল্যবান অক্সিজেন ও গাছ গ্রহন করে আমাদের থেকে নির্গত কার্বন ডাই অক্সাইড, গাছ রোপন করে গাছের প্রতি যত্নবান হতে হবে। গাছ আমাদের পরম বন্ধু, গাছ আমাদের ঝড়ঝাপসা থেকে রক্ষা করে। গাছের কারনেই আমরা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা পায়। তাই গাছ লাগিয়ে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
২৪ এর ৪ আগষ্ট ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানে মাগুরায় প্রথম শহীদ হন ছাত্রনেতা মেহেদী হাসান রাব্বি। এই গণঅভ্যুত্থানে মাগুরার মোট ১০ জন ছাত্র-জনতা শহীদ হন।
এই উপলক্ষে মাগুরা পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ড বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদল ও মহিলা দলের আয়োজনে একটি শোক র্্যালি পারনান্দুয়ালী বেপারীপাড়া জামে মসজিদের সামনে থেকে শুরু হয়ে পুরো শহর প্রদক্ষিণ শেষে নবনির্মিত শহীদ রাব্বি স্মৃতিস্তম্ভের সামনে গিয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
এ সময় বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপি'র সদস্য সচিব মনোয়ার হোসেন খান, যুগ্ন আহবায়ক আহসান হাবীব কিশোর, খান হাসান ইমাম সুজা, আলমগীর হোসেন, মিথুন রায় চৌধুরী, সদস্য কুতুব উদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক গোলাম জাহিদ, সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, যুবদলের সভাপতি ওয়াসিকুর রহমান কল্লোল, সিনিয়র সহ-সভাপতি আমিরুল ইসলাম। এছাড়া পৌরসভার ৫ ও ৬ নং ওয়ার্ডের সকল স্তরের নেতাকর্মীরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
বক্তারা বলেন, আসামিদের চিহ্নিত করে মামলা করা হলেও নাম মাত্র কয়েকজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকি আসামিরা প্রকাশ্য দিবালোকে ঘোরাফেরা করছে। আইন- শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদেরকে গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হচ্ছে। শহীদদের পরিবাররা এখনো শংকিত রয়েছে।
গত বছরের ৪ আগস্ট মাগুরায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকে স্বৈরাচার সরকার পতনের আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে স্থানীয় জনতার সাথে মিছিলের সামনে এগিয়ে গেলে মাগুরা শহরের ঢাকা রোড ব্রিজ এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হন মেহেদী হাসান রাব্বি। তিনি ছিলেন একজন মানবিক মানুষ।
আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিবাদ’ পতনের স্মারক হিসেবে আগামী ৫ ও ৬ আগস্ট দেশব্যাপী বিজয় র্যালি করবে বিএনপি।
সোমবার (৪ আগস্ট) দলটির পক্ষ থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, ৫ আগস্ট দেশের সব থানা ও উপজেলায় এবং ৬ আগস্ট সব জেলা ও মহানগরে র্যালি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী বুধবার (৬ আগস্ট) বেলা ২টায় নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকেও বিজয় র্যালি বের হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী ঢাকাবাসীসহ বিএনপি এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে র্যালিতে যোগ দিতে আহ্বান জানিয়েছেন।
ঢাকা মহানগরীর সরকারি সাত কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪০ শতাংশ ক্লাস হবে অনলাইনে, আর বাকি ৬০ শতাংশ ক্লাস সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সচিবালয়ে ঢাকা মহানগরীর সরকারি ৭ কলেজের জন্য প্রস্তাবিত ঢাকা কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন সংক্রান্ত কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত সচিব মজিবর রহমান এ তথ্য জানান।
নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈশিষ্ট্য ও পরিচালনাপদ্ধতি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থা হবে ইন্টারডিসিপ্লিনারি ও হাইব্রিড ধরনের, যেখানে ৪০ শতাংশ অনলাইন, ৬০ শতাংশ অফলাইন (সশরীরে) ক্লাস অনুষ্ঠিত হবে। সব ধরনের পরীক্ষা সশরীরে অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব শিক্ষার্থী প্রথম চারটি সেমিস্টারে নন-মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবে। পরবর্তী চার সেমিস্টারে ডিসিপ্লিন অনুযায়ী মেজর কোর্স অধ্যয়ন করবে। তবে পঞ্চম সেমিস্টারে শর্তপূরণ সাপেক্ষে শিক্ষার্থী ইচ্ছানুযায়ী ডিসিপ্লিন পরিবর্তন করতে পারবে। তবে ক্যাম্পাস পরিবর্তনের সুযোগ থাকবে না।’
কার্যক্রম হবে চারটি স্কুল ভিত্তিক
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনকার মতো একেকটি কলেজে সব বিষয় পড়াশোনা হবে না। এক বা একাধিক কলেজে স্কুলভিত্তিক ক্লাস হবে। সাতটি কলেজকে চারটি স্কুলে বিভক্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠদান ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এর মধ্যে স্কুল অব সায়েন্সের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ ও বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ ক্যাম্পাস। স্কুল অব আর্টস অ্যান্ড হিউম্যানিটিসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ, স্কুল অব বিজনেসের জন্য সরকারি তিতুমীর কলেজ, স্কুল অব ল অ্যান্ড জাস্টিসের জন্য কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হয়েছে।
সবার জন্য সুবিধাজনক স্থানে প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাস নির্ধারণ করা হবে বলে জানানো হয়। কলেজগুলোর বিদ্যমান উচ্চমাধ্যমিক অক্ষুণ্ণ থাকবে। শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তারাও কলেজগুলোতে থাকবেন। তবে পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয় স্তরের জন্য শিক্ষক নিয়োগ করা হবে।
এ বছরের মধ্যেই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য অধ্যাদেশ জারি হবে। তবে এবারের ভর্তি কার্যক্রম বিদ্যমান নিয়মেই হবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও যা থাকবে
একাডেমিক ও প্রশাসনিক কাঠামো সম্পর্কে মজিবর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কার্যক্রম পরিচালিত হবে একাডেমিক কাউন্সিল, সিনেট ও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে। বিশ্ববিদ্যালয়ে একজন প্রক্টর থাকবেন। এছাড়া প্রতিটি কলেজে একজন পুরুষ ও একজন নারী ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন। অর্থাৎ ৭ কলেজে সর্বমোট ১৪ জন ডেপুটি প্রক্টর থাকবেন।
সাত কলেজের পাঁচটিতে আগের মতো উচ্চমাধ্যমিক পর্যায় চালু থাকবে বলে ভারপ্রাপ্ত সচিব জানান। স্নাতক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার্থীরা টাইম, স্পেস ও রিসোর্স শেয়ারিং পদ্ধতিতে একই ক্যাম্পাস ব্যবহার করবে। কেন্দ্রীয়ভাবে ভর্তি প্রক্রিয়া পরিচালিত হবে। প্রতি ডিসিপ্লিনে যৌক্তিকভাবে ছাত্রসংখ্যা নির্ধারণ করা হবে।
প্রতিটি শিক্ষার্থীকে প্রথম বর্ষেই ল্যাপটপ ও আনুষঙ্গিক সামগ্রী দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সব প্রশাসনিক কার্যক্রম (ভর্তি, রেজিস্ট্রেশন, আবেদন ইত্যাদি) আইটি বেসড/ডিজিটাল সিস্টেমে সম্পাদিত হবে। এছাড়াও শিক্ষার্থীরা যেকোনো ধরণের অনুসন্ধান আইটি প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়োগ দেওয়া হবে। কলেজগুলোর প্রয়োজন অনুযায়ী নিয়োগকর্তাদের বণ্টন করা হবে।
বাজেট গ্রহণ ও ব্যবস্থাপনা হবে কেন্দ্রীয়ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে। প্রতিটি কলেজে আধুনিক মানসম্পন্ন লাইব্রেরি, ক্যাফেটেরিয়া, মেডিকেল সেন্টার ও পরিবহন ব্যবস্থা থাকবে।
বিভিন্ন পর্যায়ে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীরা আগের বিদ্যমান একাডেমিক কাঠামো অনুযায়ী শিক্ষা কার্যক্রম শেষ করবেন। অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের সময়মতো পরীক্ষা নেওয়া, রেজাল্ট দ্রুত প্রকাশ করা ও সেশনজট কমাতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা সচিব।
সাত কলেজের বর্তমান শিক্ষকদের কি হবে?
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান বলেন, ‘কলেজের যে মৌলিক বৈশিষ্ট্য, সেখানে আমরা কোনো পরিবর্তন আনছি না। কলেজ কলেজের জায়গায়ই থাকবে। কলেজের শিক্ষকরা কলেজেই থাকবেন। বিদ্যমান কাঠামোয় কলেজের শিক্ষকরাই পাঠদান করবেন। যখন বিশ্ববিদ্যালয় পূর্ণাঙ্গ রূপ পাবে, তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো কলেজের কাঠামোর সঙ্গে একীভূত থাকবে না। তখন নিয়োগ হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের যে যোগ্যতা বলে নিয়োগ দেওয়া হয় সেই অনুযায়ী। কেউ যদি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় আসতে চান, যারা যোগ্য আছেন তারা সাধারণ যে প্রক্রিয়া আছে, সে প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন।’
ঢাকা মহানগরীর ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, সরকারি তিতুমীর কলেজ, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং সরকারি বাঙলা কলেজ দেশের সব সরকারি ডিগ্রি কলেজের সঙ্গে ১৯৯২ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি পায়।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলোতে একাডেমিক ও প্রশাসনিক নানা জটিল সংকটের সৃষ্টি হলে শিক্ষার মানোন্নয়ন ও বিদ্যমান সংকট নিরসনে ২০১৭ সালে সাতটি কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধিভুক্তির পর সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে সংকট আরও ঘনীভূত হওয়ায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে একটি নতুন স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে কলেজগুলোকে পরিচালনার দাবি জানায়।
শিক্ষার্থীদের দাবির পরপরই গত বছরের ২৪ অক্টোবর ‘সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি পর্যালোচনা ও সুপারের সংক্রান্ত কমিটি’ গঠন করা হয়। উচ্চপর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রস্তাব সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠায়।
সংবাদ সম্মেলনে ইউজিসি চেয়ারম্যান এস এম এ ফায়েজ, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য অধ্যাপক তানজীম উদ্দীন খান, সাত কলেজের অন্তর্বর্তী প্রশাসক ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস এবং কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
৪ আগস্ট, ২০২৪, বীরোচিত উত্তরার এ যাবৎকালের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষের দিন ছিল আজ, যা দ্বিতীয় স্বাধীনতার ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা আছে। গত বছরের আজকের এই দিনে প্রায় পুরোটা দিন সকাল থেকে শুরু করে রাত অবধি সংঘর্ষ চলতে থাকে। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ সবাই মিলে শেষ মরণ কামড়টা দেয় এবং শেষে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলোও যোগ দেয় সে হত্যাযজ্ঞে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অসহযোগ ও সরকার পতনের এক দফা দাবিতে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তৎকালীন সরকারপন্থী নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ দিনভর চলতে থাকে। সেদিন ছিল রোববার, ১২টার দিকে উত্তরা আজমপুর এলাকায় সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে।
বেলা ১১টার দিকে উত্তরার বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে উত্তরা বিএনএস টাওয়ারের সামনে জড়ো হয় আন্দোলনকারীরা। তারা বিএনএস থেকে উত্তরা পূর্ব থানা পর্যন্ত সড়ক দখল করে বিক্ষোভ করতে থাকে। পরে ১২টার দিকে আজমপুরের রাজউক কমার্শিয়াল ভবনের সামনে সরকার দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষ শুরু হয়। বিশেষ করে সাবেক এমপি হাবিব হাসানের সঙ্গের লোকজন প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি গুলি করে। সে গুলিতে শেষ পর্যন্ত তিনজন শহীদ হন এবং অসংখ্য লোক আহত হয়। গুলিবিদ্ধদের স্থানীয় কুয়েত মৈত্রী, বাংলাদেশ মেডিকেল ও ক্রিসেন্ট হাসপাতালে পাঠানো হয় বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সালেহ মাহমুদ রায়হান নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘হঠাৎ আজমপুর দুই নম্বর রোড দিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন এসে ভারী অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর গুলি চালায়।’
এদিকে উত্তরা পূর্ব থানার সামনে প্রচুর পরিমাণে পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকলেও তাদের নীরব ভূমিকায় দেখা গেছে। তবে ১২টার দিকে পুলিশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে বলে জানান আন্দোলনকারীরা।
বিজয়ের আগের দিন ৪ আগস্ট দুপুরে উত্তরার আজমপুর বাসস্ট্যান্ড রবীন্দ্র সরণির মুখে বনফুল মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের সামনে গুলিবিদ্ধ হন ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তা মাহমুদুর রহমান খান সোহেলসহ বেশ কয়েকজন বিক্ষোভকারী। রাজপথে তাঁর নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। যে ছবিটা জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শীর্ষ সংবাদে পরিণত হয়। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ততক্ষণে তাঁর অনেক ক্ষতি হয়ে যায়। কিন্তু অনবরত গুলির মুখে সহযোদ্ধারা তাঁর কাছে যেতে পারছিল না।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত বস্ত্র প্রকৌশলী ও জুলাই রেভুলেশনারি অ্যালায়েন্স‘র উপদেষ্টা তালহা জুবায়ের বলেন, ‘সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আজমপুরের আমীর কমপ্লেক্সের সামনে সাবেক সংসদ সদস্য হাবীব হাসানসহ আওয়ামী লীগের ১০-১৫ জন নেতাকর্মী ছিলেন। আমি একা তখন পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলাম। ওই সময় ছাত্ররা বিএনএস সেন্টারের সামনে জড়ো হন। এরপর তারা ধাওয়া দিলে আওয়ামী লীগের লোকজন গুলি ছুড়তে-ছুড়তে পালিয়ে যায়। তবে এর কিছুক্ষণ পরই সাথিলসহ অস্ত্রধারী একটি দল ফ্রেন্ডস ক্লাব মাঠের দিক থেকে এগিয়ে আসে। আপডেট টাওয়ারের দিক থেকে আসে আরেক দল। দুই দলকেই ধাওয়া দেয় ছাত্ররা। এতে ওরা কিছুটা পিছিয়ে যায়। এর পর সাথিল গুলি ছুড়তে-ছুড়তে এগিয়ে আসেন। সামনেই ছিলেন ইতিহাদ এয়ারওয়েজের কার্গো শাখার বিক্রয় ব্যবস্থাপক মাহমুদুর রহমান খান সোহেল। তাঁকে কাছ থেকে গুলি করেন সাথিল। মাহমুদ ভাই লুটিয়ে পড়েন। এরপর তারা আরও এগিয়ে আসে। রবীন্দ্র সরণিতে কামারপাড়া হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ আল মাহিনকে গুলি করলে সেও লুটিয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে মাহমুদ ভাই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ আগস্ট এবং মাহিন সেদিনই মারা যায়। তখন হেলমেট পরা সাথিলের পরিচয় জানতে পারিনি। পরে খোঁজ নিয়ে পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে।
আমরা অনেক ঝুঁকি নিয়ে সোহেল ভাইয়ের দেহটা কোনোমতে বাংলাদেশ মেডিকেলে নিয়ে যাই। পুরো আন্দোলনে তাঁকে আমরা পাশে পেয়েছি। তিনি শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন রকম খাদ্যদ্রব্য নিয়ে আসতেন। আমরা আশ্চর্য হয়ে যেতাম, এরকম উচ্চবিত্ত পরিবারের একজন মানুষ সব ছেড়ে জনতার কাতারে এসে দাঁড়িয়েছেন। সেদিন আনারুল ইসলাম নামে এক সবজি ব্যবসায়ীও সাথিলের গুলিতে আহত হন বলে জানান প্রত্যক্ষদর্শীরা। ৬ আগস্ট তাঁর মৃত্যু হয়।’
সারাদেশের মতো উত্তরার আন্দোলনেও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে। সেটা হলো সাংবাদিকরা পুলিশের এ সমস্ত অপকর্ম লাইভ ভিডিও অথবা ছবি তোলার কারণে তারাও অন্যতম টার্গেটে পরিণত হন। সাংবাদিক দেখলেই পুলিশ সাংবাদিকদের দিকে সরাসরি গুলি ছুড়তে থাকে। ওইদিনের সার্বিক বিষয়ে কথা হয় দৈনিক সমকালের নিজস্ব প্রতিবেদক ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে যুগান্তরের প্রতিবেদক ছিলেন দেলোয়ার হোসেন। হঠাৎ দেখি তিনি কাঁদছেন। আসলে যাদের বাচ্চা আছে, তারা কোনোভাবেই আর নিতে পারছিলেন না। আন্দোলনে এগুলো দেখে আসলে আমরা নিজেদের ধরে রাখতে পারিনি। একটা পরিবারকে দেখেছিলাম, বাবা-মা ছেলে-মেয়ে চারজন এসেছেন রাস্তায়। পুরো পরিবার নেমে এসেছে বাচ্চাদের পাশে। আর পুলিশের কথা কি বলবো? পুলিশের টার্গেট থেকে নিজেদের রক্ষা করাও অন্যতম একটা চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কারণ ইতোমধ্যে চারজন সাংবাদিক শহীদ হয়েছেন পুলিশের গুলিতেই।’
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক সেনা প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) এম হারুন অর রশিদের মৃত্যু হয়েছে। সোমবার (৪ আগস্ট) দুপুরে চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্ট হাউসের একটি রুমের দরজা ভেঙ্গে পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তবে পুলিশ ও সংশ্লিষ্টদের ধারণা হার্ট অ্যাটাক হারুন অর রশিদের মৃত্যু হয়েছে (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন)।
সাবেক সেনাপ্রধানের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, একটি মামলা সংক্রান্ত কাজে হারুন-অর-রশিদ রবিবার (২ আগস্ট) চট্টগ্রামে যান।
তিনি চট্টগ্রাম ক্লাবের গেস্টহাউজে রাতযাপন করছিলেন। তিনি সকালে রুম থেকে বের না হওয়ায় এবং অনেকক্ষণ সাড়া না পেয়ে পুলিশকে খবর দিলে সিএমপির কোতোয়ালি থানা পুলিশ দরজা ভেঙ্গে বিছানায় তার নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন।
পরে গেস্ট হাউজের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করেছে।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের কোতোয়ালি জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) মোহাম্মদ মাহফুজ জানান, চট্টগ্রাম ক্লাব থেকে ফোন পেয়ে পুলিশ গিয়ে সাবেক সেনাপ্রধান হারুন অর রশিদের লাশ উদ্ধার করে সম্মিলিত সাময়িক হাসপাতালে পাঠিয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে তার স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।
১৯৪৮ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি জন্ম গ্রহণ করেন হারুন অর রশিদ। তিনি ২০০০ সালের ২৪ ডিসেম্বর থেকে ২০০২ সালের ১৬ জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর প্রতীক উপাধিতে ভূষিত করে। অবসর গ্রহণের পর তিনি রাষ্ট্রদূত হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৭ বছর। তার স্ত্রী ও এক ছেলে এক মেয়েসহ অসংখ্য আত্মীয় ও গুনগ্রাহী রয়েছেন।
আগামীকাল বিকেল ৫টায় উপস্থাপিত হতে যাচ্ছে জুলাই ঘোষণাপত্র।
জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় এক সুধী সমাবেশে গণঅভ্যুত্থানের সকল পক্ষের উপস্থিতিতে জুলাই ঘোষণাপত্র জাতির সামনে উপস্থাপন করা হবে।
গতকাল এক তথ্য বিবরণীতে এ খবর জানানো হয়।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
এর আগে গত শনিবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করেছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যায়ের (ইবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেছেন, জুলাই আমাদের অস্তিত্ব, আদর্শ এবং প্রেরণা। জুলাই আগস্টের বিপ্লব'ই হলো আগামী দিনের পথ নির্দেশিকা। আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে সুন্দর বাংলাদেশ গড়ব, ফ্যাসিস্টকে আর ফিরতে দেব না। বৈষম্যহীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করতে ও সুশিক্ষিত সমাজ গড়তে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল স্টেকহোলডারকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল ৯ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ অনুষদ ভবনের নিচে জুলাই-আগস্ট ১ম বর্ষপূর্তি উদযাপন কমিটি আয়োজিত ডিজিটাল প্লাটফর্ম ডকুমেন্টেশন প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন তিনি। জানা যায়, এটি সকাল ৯ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত প্রদর্শন করা হবে।
তিনি আরও বলেন, আজকে জুলাই বিপ্লব এই ডিজিটাল ডকুমেন্টেশন আমাদের হৃদয়ে সংগ্রহশালার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগ্রহশালায় আজীবন থাকবে যা বিশ্ববিদ্যালয় সকল শিক্ষার্থী এবং নতুন যারা আসবে সবাই জুলাই বিপ্লবকে উপলব্ধি ও ধারণ করবে। ফ্যাসিস্ট রিজ্যম নির্মুল করার জন্য ছাত্রজনতা যে অবদান রেখেছিল সে সম্পর্কে জানবে।
উল্লেখ্য, এসময় উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম ও জুলাই প্রথম বার্ষিকী বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড.মো. শাহিনুজ্জামান ও কমিটির উপদেষ্টা সদস্য অধ্যাপক ড. আ.ব.ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, অধ্যাপক ড. মো. এমতাজ হোসেন,অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
‘পরিকল্পিত বনায়ন করি, সবুজ বাংলাদেশ গড়ি’ এই প্রতিপাদ্য নিয়ে নওগাঁয় সপ্তাহ ব্যাপী বৃক্ষ মেলা শুরু হয়েছে।
সোমবার (৪ আগস্ট) সকাল সাড়ে ১০টায় শহরের নওজোয়ান মাঠে ফিতা কেটে ও ফেষ্টুন উড়িয়ে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
এরআগে শহরের এটিম মাঠ থেকে একটি র্যালী বের হয়ে নওজোয়ান মাঠে এসে শেষ হয়। নওগাঁ বন বিভাগ ও জেলা প্রশাসন সপ্তাহ ব্যাপী এই বৃক্ষ মেলার আয়োজন করে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী বিভাগীয় বন কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান শাহ্ এর সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিন, নওগাঁর সহকারি বন সংরক্ষক মেহেদীজ্জামান, নার্সারি মালিক সমিতির সভাপতি মোস্তাক আহম্মেদসহ অন্যান্যরা।
অনুষ্ঠানে বন বিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর, কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। এসময় বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গাছের চারা বিতরণ করা হয়।
পরে অতিথিরা মেলার স্টল গুলো ঘুরে দেখেন। এবারে মেলায় ফলজ, বনজ, ভেষজ এবং বাহারি ফুলের চারার সমাহার নিয়ে ৪০টির বেশি স্টল অংশগ্রহণ করেছে।
পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে ২৩১ মেট্রিক টন এস্টারিক্স জাতের আলু রপ্তানি করা হয়েছে। এর আগেও কয়েক দফায় আলু রপ্তানি করা হয় নেপালে।
এ নিয়ে এ বন্দর দিয়ে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত কয়েক ধাপে ২২ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আলু নেপালে রপ্তানি করা হলো।
রোববার (৩ আগস্ট) এ আলুগুলো রপ্তানি করে থিংকস টু সাপ্লাই, মা আইশা কোল্ডস্টোরেজ, জাফরিন এগ্রো, এগ্রোটার্চ বিডি এবং মিয়ামি ট্রেডি নামে দেশের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের কোয়ারেন্টিন পরিদর্শক উজ্জ্বল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলো ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর ও বগুড়া জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আলুগুলো সংগ্রহ করে নেপালে পাঠায়।
তিনি আরও জানান, রপ্তানিকৃত আলুগুলো বন্দর ইয়ার্ডে প্রবেশের পর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় অনুমোদন পাওয়ার পর এগুলো রপ্তানির ছাড়পত্র দেওয়া হয়।
এই চালানে মোট ১১টি বাংলাদেশি ট্রাকে করে প্রতিটিতে ২১ মেট্রিক টন করে আলু পরিবহন করা হয়। ট্রাকগুলো নেপালের মোরাং বিরাটনগরের উদ্দেশে যাত্রা করে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ আগস্ট পর্যন্ত বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর দিয়ে নেপালে মোট ২২ হাজার ৫০ মেট্রিক টন আলু রপ্তানি হয়েছে। এর আগে গত ৩১ জুলাইও সমপরিমাণ আলু এ বন্দর দিয়ে নেপালে রপ্তানি করা হয়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরের একটি সড়কে দুইটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন চারজন।
রবিবার (৩ আগস্ট) বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার রামপুর এলাকার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহতরা হলেন- ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মৈন্দ গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে তুহিন হাসান, একই গ্রামের মকবুল আলীর ছেলে লোকমান হোসেন, জেলার সরাইল উপজেলার বাড়িউড়া গ্রামের আল আমিন মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া ও জেলার বিজয়নগর উপজেলার সাতগাঁও গ্রামের শাহজাহান মিয়ার ছেলে আকরাম এবং রংপুর জেলার গংগাচড়া উপজেলার খামারমোহনা গ্রামের ফজু মিয়ার ছেলে মনিরুজ্জামান (৩০)। তিনি বিজয়নগরের সাতগাঁও গ্রামে এক আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন।
বিজয়নগর থানার ওসি শহীদুল ইসলাম জানান, বিকেলে রামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এসময় পেছন থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি দুইটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। ঘটনাস্থলে মোটরসাইকেল দুইটির পাঁচ আরোহী নিহত হন।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কুরআন বিভাগের ২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহ'র হত্যাকাণ্ডের প্রতিবেদন জমা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি। এবং উচ্চতর তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছে বলে নিশ্চিত করেছে ফাইন্ডিং কমিটি।
রবিবার (৩ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে কলা অনুষদ ভবনে সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি বিষয়টি নিশ্চিত করে।
সাজিদের রহস্যজনক মৃত্যুর বিষয়ে গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে জানান, ভিসেরা রিপোর্ট, ময়নাতদন্তের রিপোর্ট ও সুরতহাল রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে তদন্ত রিপোর্ট সাবমিট করা হয়েছে।
ফ্যাক্টস উল্লেখ্য করে তিনি বলেন, পুকুরে পানিতে পড়ার মৃত্যু আমরা পাইনি। অনুমিত করে বলা যায় পৌনে পাচঁটার আগ পর্যন্ত পুকুর পাড়ে সাজিদকে পাওয়া যায়নি।
ফোনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাজিদের ফোন নাম্বার দুইটা। ১৫ তারিখ রাত ১১ টা ৩০ মিনিটে সাজিদ আব্দুল্লাহ শেষ কল করে যার স্থায়িত্ব ৩ মিনিট ২০ সেকেন্ড। এরপর আর কোন আউট গোইনং কল পাওয়া যায়নি। ১৬ তারিখে ৮ টা ৩০ মিনিটে সাজিদে ফোন কল দেখতে পাই যেটার স্থায়িত্ব ৯ সেকেন্ড এবং অপর প্রান্তে থাকা ব্যক্তির সাথে কথা হয়নি (সাজিদের বন্ধু ও রিপন আলী নামক ব্যক্তির কল ছিল)। এরপরে আবার সাজিদের বন্ধু রাত ৮ টা ৪৯ মিনিটে কল দেয় এবং কলের স্থায়িত্ব ছিল ২০ সেকেন্ড তবে অপর প্রান্ত থাকা ব্যক্তির সাথে কথা হয়নি। এবং কলগুলো কোন টাওয়ারে ম্যাচ করেছে সে সকল তথ্যসমূহ দিয়েছি। মেসেঞ্জার ও ওয়াটসআপ আমাদের হস্তগত হয়নি।
তিনি আরও বলেন, সরকারের উচ্চতর তদন্ত সংস্থার দ্বারা এটা ঘটনার তদন্তের জন্য সুপারিশ করেছি। আমাদেরকে যে ১০ দিন সময় দেয়া হয়েছে সেই ১০ দিনের মধ্যে শেষ করেছি। এ কাজের সাথে ডাক্তার, পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী, সাজিদের সাথে সংযুক্ত ব্যক্তি, সংগঠন, জেলা কল্যাণ সকলের সাথে কথা বলা হয়েছে। তবে ক্রস ম্যাচিং এর জন্য আমাদের পর্যাপ্ত সময় অতিবাহিত হয়েছে। আমার টিম দিনরাত পরিশ্রম করে এ কাজটা সম্পন্ন করেছে। আমাদের কাজ ছিল ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং করা সেই কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছি।
এর আগে ফরেনসিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। তথ্য মতে, সাজিদের শরীরে কোনো বিষাক্ত পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। রিপোর্টে শ্বাসরোধের (asphyxia) ফলে সাজিদের মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। পোস্টমর্টেমের সময় থেকে আনুমানিক ৩০ ঘণ্টা আগে তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ জুলাই বিকেল সাড়ে ছয়টায় শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুর থেকে সাজিদের মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়। সাজিদ আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। এদিকে সাজিদের মৃত্যুর সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে বিক্ষোভ করে আসছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।