বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার মীরগঞ্জ ফেরিঘাটটি তিন উপজেলার অন্তত ১০ লাখ মানুষের যাতায়াতের পথ। এ ঘাটে প্রতিদিন কোনো টিকিট ছাড়াই যাত্রীদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হচ্ছে।
জেলা পরিষদের ইজারার নামে যাত্রী, তার সঙ্গে থাকা সরঞ্জাম ও যানবাহনের জন্য আদালাভাবে চাঁদা নেয়া হয়। দিন শেষে এর পরিমাণ দাঁড়ায় কয়েক লাখ টাকা।
আড়িয়াল খাঁ নদীতে অবস্থিত মীরগঞ্জ ফেরিঘাটটি বরিশাল বিভাগীয় ও জেলা শহর এবং রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ৩টি উপজেলার বাসিন্দাদের যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। সড়কপথে যাতায়াত করা প্রতিদিন অন্তত ২০ হাজার মানুষ এ ঘাট ব্যবহার করেন। ইজারার নামে ঘাটে কোনো টিকিট ছাড়াই জনপ্রতি ২৫ টাকা হারে চাঁদা আদায় করা হয়। এ ছাড়া মোটরসাইকেলপ্রতি ৬০, হাতে কার্টন বা বস্তা থাকলে দিতে হয় অতিরিক্ত ৫০ থেকে ২০০ টাকা।
ঘাটের মুলাদী উপজেলার পাড়ে কাঠের বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিল বসিয়ে ইজারাদারের পক্ষে ৬ থেকে ৮ জন মিলে এ চাঁদা আদায় করেন। স্থানীয়রা জানান, একটি অসাধু চক্রসহ মুলাদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান মিঠু তার ছোট ভাই টিপু হাসান খানের নামে ঘাট ইজারা নিয়ে নিজেই চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করছেন।
ইজারার বিষয়ে জেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়, নিয়ম অনুযায়ী ঘাটে রেট চার্ট থাকতে হবে। যাত্রীপ্রতি ৭ টাকার বেশি নেয়া যাবে না এবং ওই টাকার মধ্যেই ট্রলারে খেয়া পারাপারের সুযোগ থাকতে হবে। বহনযোগ্য মালামালের জন্য কোনো টাকা নেয়া যাবে না।
সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা যায়, কোনো রেট চার্ট বা টিকেট ছাড়াই চাঁদা তোলা হচ্ছে। মো. মামুন নামে স্থানীয় এক যাত্রী বলেন, প্রতিবাদ করলেও গত কয়েক বছর ধরে প্রশাসনের সামনে এ অনিয়ম চলছে। আবার একটি অদৃশ্য শক্তির কারণে কেউ জোরালো প্রতিবাদও করতে চান না।
মাহমুদ চৌধুরী নামে স্থানীয় এক সরকারি কর্মকর্তা সম্প্রতি ট্রলারে ১০ টাকা দিয়ে নদী পার হন। ঘাটে তার কাছে ১৫ টাকা দাবি করেন চাঁদা আদায়ে নিয়োজিত ব্যক্তিরা। মাহমুদ চৌধুরী তখন টিকিট চাইলে চাঁদা আদায়কারীরা তাকে জানান, টিকিট ছাড়াই ফেরিঘাটে টাকা নেয়ার নিয়ম আছে। জেলা পরিষদ থেকে ২ কোটি টাকা দিয়ে ফেরিঘাটের ইজারা নিতে হয়। এভাবে টাকা না নিলে মালিকপক্ষের ইজারার আসল টাকাই উঠবে না।
স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ ১৭ জানুয়ারি মুলাদী উপজেলা আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার কুলখানিতে যাওয়ার পথে মীরগঞ্জ ফেরিঘাটের চাঁদাবাজির বিষয়টি লক্ষ করেন। তখন তিনি প্রশাসন ও নেতাদের চাঁদাবাজি বন্ধ করতে নির্দেশ দেন কিন্তু তা এখনো বন্ধ হয়নি।
এ বিষয়ে মুলাদী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তারিকুল হাসান মিঠু বলেন, ‘আমার জানামতে ফেরিঘাট ইজারায় কোনো টিকিটের ব্যবস্থা চালু করার নিয়ম নাই।’ আরও কিছু জানার থাকলে তিনি প্রতিবেদককে জেলা পরিষদে যোগাযোগ করতে বলেন। ফেরিঘাটে অন্যায়ভাবে কিছু হচ্ছে না বলেও দাবি করেন তারিকুল হাসান।
বরিশাল জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, এটা নিয়ে নতুন করে কিছু বলতে চান না। ইজারার নামে ওখানে যা হয় তা সবাই জানে। আর কয়েক মাস ইজারার মেয়াদ আছে। আগামীতে ইজারা দেয়া হবে কি না, তা পরবর্তী সময় আলোচনা করে ঠিক করা হবে।
বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী ইমদাদুল হক বলেন, মীরগঞ্জ ফেরিঘাটটি বাবুগঞ্জ এলাকার মধ্যে হলেও যিনি ইজারা নিয়েছেন তিনি মুলাদীর মানুষ এবং চাঁদাবাজিটাও হচ্ছে মুলাদীর ওপাশে। এটা নিয়ে অনেকবার বসে আলোচনা সত্ত্বেও কোনো সমাধান করা যাচ্ছে না।
এ বিষয়ে জানতে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নুসরাত ফাতিমার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।
মেহেরপুরে সাপে কেটে মৃত্যু হয়েছে ফারিয়া আক্তার নামের ৮ বছর বয়সী তৃতীয় শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীর।
বৃহস্পতিবার রাতে ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় তাকে সাপে কামড় দেয়।
রাত দেড়টার দিকেই পরিবারের সদস্যরা আহত অবস্থায় তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে , জেলার গাংনী উপজেলার বামন্দী ইউনিয়নের ওলিনগর গ্রামের বাবুল আক্তারের মেয়ে ফারিয়া আক্তার প্রতিদিনের ন্যায় বৃহস্পতিবার রাতে তার দাদীর সাথে ঘরের মেঝেতে ঘুমিয়ে ছিল। রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ ফারিয়া কান্না শুরু করে।
পরিবারের অন্য সদস্যরা দ্রুত ফারিয়ার কাছে ছুটে আসে। পরে পরিবারের সদস্যরা ফারিয়ার পায়ে সাপে কাটার চিহ্ন দেখতে পেয়ে তাকে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিলে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে।
ফারিয়ার বাবা বাবুল আক্তার জানান, ঘুমিয়ে থাকা অবস্থায় কখন তাকে সাপে কেটেছে তারা টের পাইনি। যখন তার শ্বাস কষ্ট শুরু হয়েছে তখন সে কান্না শুরু করে। কান্না শুনে পাশের ঘর থেকে গিয়ে দেখি মেয়ের মুখ দিয়ে লালা বের হচ্ছে। পায়ে খেয়াল করে দেখি সাপে কাটা দাগ। তার অবস্থা খারাপ দেখে হাসপাতালে নিলে ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য রুবেল পারভেজ বলেন, এবছর মৌসুমের শুরু থেকেই বৃষ্টির পরিমাণ বেশি হওয়াই খাল- বিল, মাঠ, ঘাট পানিতে ভর্তি হয়ে যাওয়ায় বিষধর সাপ গুলো সব শুকনো জায়গাই এসে আশ্রয় নিচ্ছে। বতর্মানে আমার এলাকার বিভিন্ন বাড়িতেই সাপের দেখা মিলছে। তাই আমার সকলকেই একটু সতর্ক হতে হবে।
কর্ণফুলী টানেলের মেইনটেন্যান্স কাজের জন্য ট্রাফিক ডাইভারসনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ।
আজ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কর্ণফুলী টানেলের রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ (জেট ফ্যান পরিষ্কার/ রক্ষণাবেক্ষণ ও রোড মার্কিং) কাজের জন্য আজ বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) থেকে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত প্রতিদিন দিবাগত রাত ১১টা হতে ভোর ৫টা পর্যন্ত ‘পতেঙ্গা হতে আনোয়ারা’ টিউব ট্রাফিক ডাইভারসন করে ‘আনোয়ারা হতে পতেংগা’ টিউবের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিতভাবে যানচলাচল অব্যাহত রাখা হবে।
এ সময় বিদ্যমান ট্রাফিকের পরিমাণ অনুযায়ী সর্বনিম্ন পাঁচ হতে সর্বোচ্চ দশ মিনিট টানেলের উভয়মুখে যাত্রীদের অপেক্ষমাণ থাকার প্রয়োজন হতে পারে।
কর্ণফুলী টানেলের নিরাপদ ও কার্যকর রুটিন রক্ষণাবেক্ষণ কাজে নাগরিকদের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেছে সেতু কর্তৃপক্ষ।
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার ভজনপুর বাজারে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক শাখায় ডাকাতির চেষ্টার সময় সহিদুল হক (২৮) নামে এক যুবককে স্থানীয়দের সহায়তায় আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) রাতে ব্যাংকের ভেতর থেকে ডাকাতির সরঞ্জামসহ তাকে আটক করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংকের নাইটগার্ড রাতের খাবারের জন্য নিচে নামেন। কিছুক্ষণ পর তিনি ব্যাংকের ভেতরে হঠাৎ লাইটের আলো দেখতে ও শব্দ পান। সন্দেহ হলে তিনি ব্যাংক ম্যানেজার ও কর্মকর্তাদের জানিয়ে স্থানীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং বিষয়টি পুলিশকে অবহিত করেন।
পরে স্থানীয়দের সহায়তায় ব্যাংকের ভেতরে প্রবেশ করে ওই যুবককে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছে থাকা একটি ব্যাগ থেকে ডাকাতির সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়। একই সাথে ব্যাংকের টাকা রাখার ভল্টে ডাকাতির চেষ্টার চিহ্ন দেখতে পান।
খবর পেয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক যুবককে থানায় নিয়ে যায়। আটক সহিদুল ভজনপুর ইউনিয়নের সারাপিগছ এলাকার শুক্রু মোহাম্মদের ছেলে।
ব্যাংকের গার্ড আনিস বলেন, রাতে বাইরে থেকে হঠাৎ ব্যাংকের ভেতর লাইট জ্বলে থাকতে দেখতে পাই। একই সাথে কিছু একটা শব্দ আসতে থাকে। একা প্রবেশের সাহস পাচ্ছিলাম না। সাথে সাথে ব্যাংক ম্যানেজারকে ও কর্মকর্তাদের জানিয়ে স্থানীয়দের সহায়তায় ভেতরে যাই। এরপর ওই ডাকাতকে দেখতে পাই।
স্থানীয় ইউপি সদস্য তবিবর রহমান বলেন, ধারণা করা হচ্ছে আটক ঐ যুবক বিকেলে ব্যাংকে এসে লুকিয়ে ছিল। এর মাঝে রাতে সবাই বের হলে ডাকাতির চেষ্টা করে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক হামিদুল হাসান লাবু বলেন, একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজারের উপর ব্যাংকটির অবস্থান। অনেক রাত পর্যন্ত মানুষের উপস্থিতি থাকে। তারপরও এখানে ডাকাতির চেষ্টা চালিয়েছে। গার্ড আনিস বুঝতে পেরে সবাইকে অবগত করে। খবর পেয়ে পুলিশ এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।
ঘটনার বিষয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন, ব্যাংকের গার্ডের তৎপরতা ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি বড় ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এ বিষয়ে তেঁতুলিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদ ডাকাতির চেষ্টায় আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং এ বিষয়ে তদন্তসহ প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে
কক্সবাজার সদরের ঝিলংজায় বাঁকখালী নদীতে ‘ফুটবল খুঁজতে গিয়ে’ নিখোঁজ স্কুলছাত্রের মৃতদেহ ৪০ ঘন্টা পর উদ্ধার হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের বাংলাবাজার স্টেশন সংলগ্ন বাঁকখাল নদীর ব্রিজ এলাকা থেকে মৃতদেহটি উদ্ধার হয়েছে বলে জানান, স্থানীয় ইউএনও নিলুফা ইয়াসমিন।
মৃত উদ্ধার মিজবাহ উদ্দিন (১৪) কক্সবাজার সদর উপজেলার ঝিলংজা ইউনিয়নের চাঁদের পাড়ার বাসিন্দা নুরুল আলমের ছেলে। সে বাংলাবাজারস্থ আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র ছিল।
স্থানীয়দের বরাতে নিলুফা ইয়াসমিন বলেন, বৃহস্পতিবার সকালে বাংলাবাজার স্টেশন সংলগ্ন বাঁকখালী নদীর ব্রিজের পাশে নিখোঁজ শিশু মিজবাহ উদ্দিনের মৃতদেহ ভাসতে দেখে স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে স্বজনরা মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে। খবরটি শোনার পর তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রওনা হয়েছেন।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে মিজবাহ উদ্দিন স্কুলে সাময়িকী পরীক্ষা শেষে বাড়ী ফিরে। পরে সে প্রতিবেশী বন্ধুদের সঙ্গে বাঁকখালী নদীর তীরে ফুটবল খেলতে যায়। খেলার এক পর্যায়ে ফুটবলটি বাঁকখালী নদীতে গিয়ে পড়ে। এতে ফুটবলটি নিয়ে আসতে গিয়ে সে নিখোঁজ হয়।
বরিশালের মুলাদী উপজেলায় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে আপন দুই ভাই মিলে আরেক ভাইয়ের চোখ তুলে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এ মর্মান্তিক ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম রিপন ব্যাপারী। বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় তিনি রাজধানীর জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
এ ঘটনায় গত ২৫ আগস্ট রিপনের স্ত্রী নূরজাহান বেগম বাদী হয়ে স্বপন ব্যাপারী, রোকন ব্যাপারী, আর্শেদ ব্যাপারীসহ ৮ জনকে আসামি করে বরিশাল জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেছেন।
মামলাটি গ্রহণ করে মুলাদী থানাকে প্রাথমিক তথ্য প্রতিবেদন (এফআইআর) দেওয়ার জমা নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সরকারি কৌঁসুলি নাজিম উদ্দিন পান্না।
এর আগে শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাতে রিপনের মেজো ভাই রোকন ব্যাপারী ও ছোটভাই স্বপন ব্যাপারী লোকজন নিয়ে তার দুই চোখ তুলে নিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একজন আঙুল দিয়ে রিপন ব্যাপারীর বাম চোখ তোলার চেষ্টা করছে। এ সময় আরও দুজন রিপনের পা ও শরীর চেপে ধরে আছে। ঘটনার সময় এক নারীর হাতে একটি উৎপাটিত চোখ দেখা যায়। একই সময় আরেক নারীকে রিপনের মুখমণ্ডলে মারধর করতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থলে রিপনের বাবা উপস্থিত ছিলেন, এবং উৎপাটিত চোখ তার হাতে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।
আহত রিপন ব্যাপারীর ছেলে শাহিন ব্যাপারী বলেন, তার মেজো চাচা রোকন ব্যাপারীর কাছে টাকা ও স্বর্ণালংকার গচ্ছিত রেখেছিলেন তার বাবা (রিপন)। এ ছাড়া জায়গা-জমি নিয়েও কিছু বিরোধ ছিল। ওই বিরোধ মেটাতে চাচারা তার বাবাকে সংবাদ দিয়ে ঢাকা থেকে বাড়িতে ডেকে নেন।
তিনি আরও জানান, গত শুক্রবার বিকেলে তার বাবা ভাইদের সঙ্গে কথা বলতে বাড়িতে পৌঁছলে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। পরে বিরোধ মেটাতে শনিবার সকালে এলাকায় সালিশ বৈঠকের কথা ছিল। কিন্তু রাতে তার দুই চাচা লোকজন নিয়ে রিপন ব্যাপারীর চোখ তুলে নিয়েছেন।
শাহিন আরও বলেন, ভিডিওতে রিপনের বুকে চেপে যাকে আঙুল দিয়ে বাম চোখ উৎপাটন করতে দেখা গেছে, তিনি রোকন ব্যাপারী। রিপনের পা চেপে ধরা ব্যক্তি স্বপন ব্যাপারী। যার হাতে উৎপাটিত একটি চোখ ছিল তিনি রোকন ব্যাপারীর স্ত্রী নুরুন্নাহার বেগম এবং তার মেয়ে সুবর্ণা আক্তার মারধর করেছেন।
শাহিন জানান, চোখ তুলে নেওয়ার পরে স্থানীয় লোকজন তার বাবাকে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে বরিশাল শের ই বাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) সকালে তাকে ঢাকায় জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মুলাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, বরিশাল আদালত থেকে বাদীর লিখিত আবেদনের অনুলিপি ও বিচারকের আদেশ থানায় পৌঁছানোর পরে বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে মামলা করা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের দুটি দল নাজিরপুরসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার রামকৃষ্ণপুর সীমান্তে অভিযান চালিয়ে সাড়ে ২৫ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেছে সিমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী বিজিবি সদস্যরা।
উদ্ধারকৃত গাঁজার আনুমানিক বাজারমূল্য ধরা হয়েছে ৮৯ হাজার ২৫০ টাকা।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে বিজিবি।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আজ ভোর ৫টার দিকে কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর রামকৃষ্ণপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় এ অভিযান চালানো হয়।
সীমান্ত পিলার ১৫৭ এর মেইন পিলার থেকে প্রায় ৩০০ গজ ভেতরে মদনের ঘাট নামক স্থানে হাবিলদার মো. আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে বিশেষ অভিযান পরিচালিত হয়।
এ সময় ভারত থেকে পাঁচার হয়ে বাংলাদেশে আসা ২৫ কেজি ৫০০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করতে সক্ষম হয় বিজিবি সদস্যরা।
উদ্ধারকৃত গাঁজার সিজার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৯ হাজার ২৫০ টাকা। তবে এ ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
বিজিবি জানায়, মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে তাদের এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৯তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ফরিদপুর নজরুল পরিষদের আয়োজনে আলোচনা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সন্ধ্যায় ফরিদপুর মুসলিম মিশন কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট স্বর্ণপদক প্রাপ্ত সমাজসেবক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবদুস সামাদ।
ফরিদপুর নজরুল পরিষদের সভাপতি প্রফেসর মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে
আলোচনা সভায় দৈনিক ফতেহাবাদ সম্পাদক অধ্যাপক এবিএম সাত্তার, বিশিষ্ট নজরুল গবেষক অধ্যাপক সিরাজুল হক, ফরিদপুর সাহিত্য পরিষদের সম্পাদক সাংবাদিক মফিজ ইমাম মিলন, অধ্যক্ষ আব্দুল্লাহ আল মামুন, অধ্যাপক মনিরুল ইসলাম, অধ্যাপক খালিদুজ্জামান মিঠু সহ অন্যান্যরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ফরিদপুর নজরুল পরিষদের সম্পাদক এ্যাডভোকেট আলমগীর ভূঁইয়া।
অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ ও নজরুল সংগীত পরিবেশন করেন শিল্পী লিয়াকত হোসেন, কবি নীলুফার ইয়াসমিন রুবী, শরীফ মাহমুদ সোহান ও বেলায়েত হোসেন।
অনুষ্টানে বক্তরা বলেন, জাতীয় কবির সৃষ্টিকর্ম থেকে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করে তা জীবন ব্যবস্থায় প্রতিফলিত করতে হবে। নজরুলকে নিয়ে যতটা গবেষণা হওয়া উচিত ছিল, তা এখনো হয়নি। ‘গবেষণা ও সম্প্রসারণ কেন্দ্রের মাধ্যমেও কবি নজরুলের বিভিন্ন বিষয়- বিশেষ করে যেগুলো নিয়ে এখনো গবেষণা হয়নি, সেগুলো নিয়ে গবেষণা করে আমাদের জ্ঞানভাণ্ডরে যোগ করতে হবে।’
অনুষ্ঠান শেষে কবির আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
পটুয়াখালীর বাউফলে প্রেমঘটিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয় উর্মী ইসলাম (১৫) নামের এক কিশোরীকে। হত্যার অভিযোগে নিহতের বাবা, মা ও ভগ্নিপতিকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে তারা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে জবানবন্দি দিয়ে হত্যার দায় স্বীকার করেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নিহত কিশোরীর মা আমেনা বেগম, বাবা নজরুল বয়াতি ও ভগ্নিপতি কামাল হোসেন ।
বাউফল সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আরিফ মুহাম্মদ শাকুর বাউফল থানায় প্রেস ব্রিফ করে জানান, নিহত উর্মী ইসলামের (১৫) সঙ্গে স্থানীয় এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে তার মা আমেনা বেগম (৪০), বাবা নজরুল বয়াতি (৪৫) ও ভগ্নিপতি কামাল হোসেন (৩২) মিলে গত ২২ আগস্ট রাত দেড়টার দিকে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এরপর মরদেহ গোপন করতে তারা উর্মীর লাশ কুম্ভখালী খালে ফেলে দেয়।
পরে ২৩ আগস্ট সকালে কুম্ভখালী খাল থেকে উর্মীর ম’রদে’হ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে বাউফল থানা পুলিশের একাধিক টিম তদন্তে নামে। তদন্তে পরিবারের তিন সদস্যের সম্পৃক্ততা বেরিয়ে আসলে মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) রাতে তাদের গ্রেফতার করা হয়।গ্রেপ্তারকৃত আসামিরা বুধবার (২৭ আগস্ট) বিকেলে আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন বাউফল থানার ওসি আকতারুজ্জামান সরকার, বাউফল থানার ওসি (তদন্ত) আতিকুল ইসলাম ও স্থানীয় প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার গণমাধ্যম কর্মীরা।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ (ইকসু) গঠন এবং নির্বাচনের গঠনতন্ত্র বা সংবিধি প্রণয়নের উদ্দেশ্যে ১১ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি অনুমোদন দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ।
বুধবার (২৭ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল হক স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান ও সদস্য-সচিব হিসেবে আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. কামরুল হাসান দায়িত্ব পেয়েছেন।
কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ হলেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আলীনূর রহমান, দা'ওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের
অধ্যাপক ড. শহীদ মুহাম্মদ রেজওয়ান, আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. তোজাম্মেল হোসেন, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. নজিবুল হক, আল-হাদিস এন্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. কাজী মোস্তফা আরীফ।
এছাড়া, বহিরাগত সদস্যবৃন্দ হিসেবে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. একরামুল হক, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. জাফর উল্লাহ তালুকদার, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র এ্যাডভোকেট ব্যারিস্টার ইমাম হোসেন সিডনী।
গঠিত কমিটির আহ্বায়ক হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগ অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি শুনেছি তবে এখনও চিঠি হাতে পাইনি। যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় ছুটি হয়ে গেছে, আগামী শনিবারে বসে সবাইকে নিয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
যানজট ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতে অবশেষে নওগাঁ শহরের প্রধান সড়ক চার লেনে উন্নীত করার প্রস্তাবিত প্রকল্প আবারও গতি পাচ্ছে। দীর্ঘদিন নানা জটিলতায় আটকে থাকা এই প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বুধবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ বিষয়ে এক স্টেকহোল্ডার সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউওালের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির আহ্বায়ক ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক।
সভায় জানানো হয়, নওগাঁ শহরের সান্তাহার মোড় থেকে চৌমাসিয়া চত্বর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ আঞ্চলিক মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নওগাঁ শহর যানজটমুক্ত হয়ে আধুনিক নগরী হিসেবে গড়ে উঠবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন সংশ্লিষ্টরা।
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন যুগ্মসচিব নাজনীন ওয়ারেস, উপসচিব জাহিদুল ইসলাম, নওগাঁ সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাশেদুল হক রাসেল ও উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী নূরে আলম সিদ্দিক। তাঁরা প্রকল্পের বিভিন্ন ধাপ, করণীয় ও সম্ভাব্য সুফল নিয়ে আলোচনা করেন।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘নওগাঁ শহরের প্রধান সড়কটি দ্রুত চার লেনে উন্নীত করা হলে যানজট কমবে, শহর হবে আধুনিক। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে সকল শ্রেণিপেশার মানুষের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
প্রধান অতিথি ড. মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘চার লেন প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে নওগাঁ হবে আধুনিক ও যানজটমুক্ত শহর। তিনি জানান, প্রকল্পটি অনুমোদন হয়ে খুব দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। এজন্য সকলের সার্বিক সহযোগিতাও কামনা করেন।’
সভায় রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, ছাত্রসমাজ, গণমাধ্যমকর্মীসহ সুধীজন উপস্থিত থেকে নিজেদের মতামত তুলে ধরেন।
সভা শেষে প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেন কমিটির সদস্যরা। এ সময় নওগাঁ সড়ক বিভাগাধীন আঞ্চলিক ও জেলা মহাসড়কের অন্যান্য উন্নয়ন কার্যক্রমও দেখা হয়।
নওগাঁর বদলগাছীতে ওড়না পেচানো ফাঁস লাগানো অবস্থায় এক গৃহবধূকে উদ্ধার করা হয়। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয় ওই গৃহবধূর।
তরকারির স্বাদ কম হওয়ায় স্ত্রীকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করায় অভিমানে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে বলে জানা যায়।
বুধবার ২৭ আগষ্ট সকালে উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের জগদ্বীশপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
নিহতের নাম ঝর্ণা খাতুন (২৫)। তিনি জগদ্বীশপুর গ্রামের আকাশ হোসেনের স্ত্রী। এঘটনায় স্বামী আকাশ পলাতক রয়েছে। তাদের ঘরে ৪-৫ বছরের দুটি জমজ ছেলে রয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত মঙ্গলবার ২৬ শে আগস্ট রাত আনুমানিক ৯টার দিকে পরিবারের সবাই একসাথে রাতের খাবার খেতে বসে। কিন্তু তরকারির স্বাদ না হওয়ার কারণে স্বামী আকাশ হোসেন রেগে গিয়ে স্ত্রী ঝর্ণাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে মারধর করে। মারধর সহ্য না করতে পেরে বুধবার সকাল সাড়ে ৫টার দিকে আকাশের স্ত্রী ঝর্ণা বাবার বাড়ির উদ্দেশ্যে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে আকাশ তার স্ত্রীকে বাবার বাড়ি যেতে না দিলে এক পর্যায়ে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। আবারো স্ত্রীকে গালিগালাজ ও মারধর করে স্বামী আকাশ। এদিকে মারধর এবং গালাগালাজ সহ্য করতে না পেরে আকাশের স্ত্রী ঝর্ণা খাতুন এদিন সকাল সাড় ৬টার দিকে রাগ করে নিজ ঘরের ভিতর গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয়। এবং ওড়না পেচিয়ে ফ্যানের সাথে ফাঁস লাগায়।
ফাঁস লাগানোর বিষয়টি স্বামী আকাশ এবং ঝর্ণার শাশুড়ি পেয়ারা বেগম দেখতে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে বাড়িতে থাকা সাবল দিয়ে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ওড়না কেটে নিচে নামায়। এ সময় ডাক চিৎকারে আশেপাশের লোকজন চলে আসে। সাথে সাথে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে উন্নত চিকিৎসার জন্য পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সকাল ৯ টার দিকে জরুরি বিভাগের ডাক্তার তাকে মৃত বলে ঘোষণা করে। এই কথা শুনে ঝর্ণার স্বামী আকাশ এবং শাশুড়ি পিয়ারা বেগম ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। বর্তমানে লাশ জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে মর্গে আছে বলে জানা যায়। খবর পেয়ে বদলগাছী থানার ওসি আনিসুর রহমান, তদন্ত ওসি সাইফুল ইসলাম সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
এদিন বিকেল ৪ টার দিকে জানতে চাইলে বদলগাছী থানার ওসি আনিসুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট সদর হাসপাতালে আছে। এ ঘটনায় নিহতের শ্বাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেছেন, "৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের কারণেই আমরা আজ স্বাধীন দেশের নাগরিক হয়েছি, আর ২৪ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে আমাদের গণতান্ত্রিক ধারা আরও সুদৃঢ় হবে। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছরের দুঃশাসন এক-দুই বছরে দূর করা সম্ভব নয়। আগামী নির্বাচন আমাদের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।"
তিনি আরও বলেন, "আমরা একটি নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছি, তাই সকলের প্রতি অনুরোধ থাকবে—নির্বাচনকে কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের সহিংসতা না ঘটে। সহিংসতা হলে নির্বাচন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে, গণতন্ত্র বিপন্ন হবে। একটি শান্তিপূর্ণ, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজনই আমাদের মূল লক্ষ্য।"
আজ (২৭.০৮.২৬) বুধবার বিকালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার নাসিরাবাদ গ্রামে নদীভাঙন এলাকা পরিদর্শন এবং স্থানীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
নদীভাঙন প্রসঙ্গে শারমীন এস মুরশিদ বলেন, "মেঘনা নদীর ভাঙনে শত শত পরিবার ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও জীবিকার সহায়-সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছে। মসজিদ, মাদ্রাসা ও বাড়িঘর নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনকে জরুরি ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।"
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি মব জাস্টিস ও সাইবার অপরাধ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, "মব জাস্টিসের পেছনে অন্যতম বড় কারণ হলো ভুল তথ্য ছড়ানো—আর এর জন্য মোবাইল এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের অপব্যবহার দায়ী। সাইবার অপরাধ একটি নতুন চ্যালেঞ্জ, এটি সরকার একা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। তরুণ সমাজকে আইটি সেক্টরে দক্ষ হতে হবে এবং এই অপরাধ রোধে এগিয়ে আসতে হবে।"
অবৈধ বালু উত্তোলন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "প্রশাসনের একার পক্ষে এটি বন্ধ করা সম্ভব নয়। স্থানীয় জনগণকে বালুখেকোদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।"
সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন উপদেষ্টার একান্ত সচিব তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়া, বাংলাদেশ হাইওয়ে পুলিশের ডিআইজি (পূর্ব বিভাগ) মোহাম্মদ হাবিবুর রহমান খাঁন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলা প্রশাসক দিদারুল আলম, পুলিশ সুপার এহতেশামুল হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আবু মোছা, পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মনজুর রহমান, নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিব চৌধুরী, সহকারী পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) পিয়াস বসাক, সহকারী কমিশনার (ভূমি) খালেদ বিন মনসুর, নবীনগর থানার ওসি শাহিনুর ইসলাম এবং নবীনগর প্রেসক্লাব সভাপতি মোহাম্মদ হোসেন শান্তি।
ভারতে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের অপরাধে তিন বছর কারাভোগ শেষে বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন ১৭ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরি।
বুধবার (২৭ আগষ্ট) সন্ধ্যার দিকে বেনাপোল সীমান্তের চেকপোস্ট দিয়ে দেশে ফিরেছেন তারা। কলকাতায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের মাধ্যমে তাদের বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এসময় ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ও বিএসএফের কর্মকর্তারা এবং বাংলাদেশের শার্শা উপজেলার এসিল্যান্ড, চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন, বিজিবি কর্মকর্তারা এবং তাদের স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
যারা দেশে ফিরেছেন তারা হলেন- মঈন খান, অবন্তি দাস, নূর আলম, হৃদয় মন্ডল, ইমরান শেখ, মেহেদী হাসান, নাহিদ মোড়ল ফয়সাল শেখ, রানা হাওলাদার, শামীমা আক্তার, শান্তা আক্তার, ইমু খাতুন মিথিলা রহমান, সাইম জমাদ্দার, কমল সর্দার ও নূরজাহান খাতুন। এরা দেশের পাবনা, গাজিপুর, গোপালগঞ্জ, কুষ্টিয়া, নরসিংদী, লক্ষিপুর, খুলনা, নড়াইল, লালমাটিয়া, বাগেরহাট জেলার বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান, দুই দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যোগাযোগের মাধ্যমে বিশেষ ট্রাভেল পারমিটের মাধ্যমে ১৭ জন বাংলাদেশি কিশোর-কিশোরিকে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছেন। ফেরত আসাদের গত তিন বছর আগে ভারতীয় পুলিশ কলকাতা থেকে গ্রেফতার করে এবং পরে আদালতের নির্দেশে তাদের দেড় থেকে ৩ বছরের সাজা দেয়। সাজা শেষে তারা আজ দেশে ফিরেছেন। দেশে ফেরত আসা সবাই পশ্চিম বাংলার বিভিন্ন শেল্টারহোমের হেফাজতে ছিল।