নিম্নআয়ের মানুষকে স্বস্তি দিতে আজ বৃহস্পতিবার থেকে সারা দেশে ওএমএস ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় চাল বিক্রি শুরু করেছে সরকার। এ কর্মসূচির আওতায় প্রতিকেজি চাল বিক্রি হবে ১৫ টাকায়। দেশজুড়ে কর্মসূচির আওতায় চাল পাবে ৫০ লাখ পরিবার।
সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী, সুবিধাভোগীদের মাসে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হবে। এ ছাড়া টিসিবির কার্ডপ্রাপ্তদের মধ্যেও চাল ও আটা বিতরণ করা হবে। সারা দেশে ২ হাজার ৩৬৩টি কেন্দ্রের ডিলারদের মাধ্যমে ওএমএস কার্যক্রম পরিচালনা হচ্ছে। আগামী তিন মাস এ কার্যক্রম চলবে।
দৈনিক বাংলার কুষ্টিয়া প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, জেলায় ২৫ জন ডিলারের মাধ্যমে ওএমএস এর চাল প্রতিকেজি (৫ কেজি) ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় ইউনিয়ন পর্যায়ে চাল বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। মাসে একজন সুবিধাভোগী ৩০ কেজি চাল কিনতে পারবেন। এ ছাড়া টিসিবির কার্ডধারীরাও ওএমএস চালের সুবিধা পাচ্ছেন। সব মিলিয়ে জেলার ২ লাখ ২৭ হাজার মানুষ তিন মাস এই সুবিধা পাবেন।
সকাল সোয়া ৯টার দিকে শহরতলীর মোল্লাতেঘরিয়ায় এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক সাইদুল ইসলাম। এ সময় তিনি বলেন, ‘সরকারের এসব উদ্যোগে বাজারে চালের ঊর্ধ্বমুখী দর নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।’
নওগাঁ প্রতিনিধির পাঠানো তথ্য অনুযায়ী, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শহরের মুক্তির মোড়ে এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। এ সময় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের উপপরিচালক আব্দুস সোবহান, জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আলমগীর কবির জানান, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় জেলার ৯৯টি ইউনিয়নে ২০৩ জন ডিলারের মাধ্যমে ১ লাখ ১৯ হাজার ৩৮টি দরিদ্র পরিবারের মাঝে চাল বিক্রি করা হবে। প্রাথমিক পর্যায়ে ডিজিটাল ডাটাবেজ এর আওতায় যেসব ভোক্তার তথ্য যাচাই-বাছাই করা হয়েছে তারা এই চাল কিনতে পারবেন। পরে পর্যায়ক্রমে সবার তথ্য যাচাই-বাছাই কার্যক্রমের আওতায় নিয়ে এসে এই চাল দেওয়া হবে।
এ ছাড়া, ওএমএস এর মাধ্যমে জেলার নওগাঁ পৌরসভায় ১৩, নজিপুর পৌরসভায় ৪, ধামইরহাট পৌরসভায় ৩ এবং ৮টি উপজেলার ৩৬ জন ডিলারের মাধ্যমে ৩০ টাকা কেজিতে প্রতিদিন ৭২ মেট্রিক টন চাল বিক্রি করা হবে। ভোটার আইডি কার্ডের মাধ্যমে একজন একদিনে সর্বোচ্চ ৫ কেজি করে চাল কিনতে পারবেন।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রোগীবাহী একটি অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার গভীর রাতে, উপজেলার খলিশাকুণ্ডি ইউনিয়নের পিপুলবাড়িয়া মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ডাকাতেরা রাস্তার ওপর গাছ ফেলে অ্যাম্বুলেন্সটি থামিয়ে, অস্ত্রের মুখে রোগীর স্বজনদের কাছ থেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে স্ট্রোকের রোগী লিটনকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল। পথিমধ্যে পিপুলবাড়িয়া মাঠের কাছে যাত্রীছাউনির সামনে গাছ ফেলে রাস্তা অবরোধ করে পাঁচ-ছয়জনের এক ডাকাত দল। দেশীয় অস্ত্র হাতে তারা অ্যাম্বুলেন্সের চালক ও ভেতরে থাকা চারজনকে জিম্মি করে অর্থ ছিনিয়ে নেয়।
অ্যাম্বুলেন্স চালক রতন আহমেদ জানান, রাত ১টার দিকে রোগীকে কুষ্টিয়ায় নিয়ে যাচ্ছিলাম। হঠাৎ ডাকাতেরা গাড়ি আটকে আমার গলায় ছুরি ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ নিয়ে যায়। তারা কাউকে কিছু না বলতে কড়া হুমকি দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
রোগীর এক স্বজন জালাল বলেন, আমরা চালককে কাতলামারী হয়ে না যেতে অনুরোধ করেছিলাম, কিন্তু তিনি ওই পথেই যান। পথে এই ঘটনা ঘটে এবং আমাদের কাছ থেকে নগদ ৩০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় ডাকাতরা।
দৌলতপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল হাসান তুহিন জানান, রাত সাড়ে ১২টার দিকে লিটন নামে একজন রোগী হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসজনিত সমস্যা নিয়ে ভর্তি হন। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। পথে অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতির ঘটনাটি অত্যন্ত উদ্বেগজনক।
এ বিষয়ে দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোলাইমান শেখ বলেন, এখনো পর্যন্ত আমাদের কাছে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশকে এখনই পরিচ্ছন্ন, নিরাপদ এবং সাশ্রয়ী জ্বালানি সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে হবে, যাতে দেশ টেকসই অর্থনৈতিক উন্নয়নের নতুন পথে এগিয়ে যেতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এখন সময় এসেছে বাংলাদেশকে গুরুত্ব সহকারে বিকল্প পরিচ্ছন্ন জ্বালানি বিবেচনা করার, যার মধ্যে বৃহৎ পরিসরে সৌরবিদ্যুৎ স্থাপন অন্যতম।’
গত বৃহস্পতিবার রাতে অ্যানথ্রোপোসিন ইনস্টিটিউটের চেয়ারম্যান কার্ল পেজ এবং তাঁর সহকর্মীদের সঙ্গে এক ভার্চুয়াল সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বিশ্বের ঘনবসতিপূর্ণ এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর একটি হিসেবে বাংলাদেশ দীর্ঘদিন জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীল থাকার সামর্থ্য রাখে না।
কার্ল পেজ তাঁর বক্তব্যে নতুন প্রজন্মের পারমাণবিক প্রযুক্তি ও হাইব্রিড সিস্টেমের সাম্প্রতিক অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এসব প্রযুক্তি নির্ভরযোগ্য, শূন্য-কার্বন বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম। বিশেষ করে ভাসমান বা বার্জ-মাউন্টেড রিঅ্যাক্টর তুলনামূলকভাবে কম খরচে, কম রক্ষণাবেক্ষণে, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান শিল্পখাতের বিদ্যুৎ চাহিদা পূরণ করতে পারবে।
পেজ বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তি আজ আর বিশ্বব্যাংকের মতো বড় উন্নয়ন অর্থায়ন সংস্থাগুলোর কাছে নিষিদ্ধ বিষয় নয়। ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ ইতোমধ্যেই তাদের ক্রমবর্ধমান জ্বালানি চাহিদা পূরণে এ প্রযুক্তি গ্রহণ করছে।’
তিনি উল্লেখ করেন, উদ্ভাবনে বাংলাদেশের শক্তিশালী রেকর্ড রয়েছে, তাই দেশটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানির রূপান্তরে নেতৃত্ব দিতে পারে। এর সুফল হবে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জ্বালানির দাম স্থিতিশীল রাখা এবং শিল্প খাতের প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি।
পেজ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ উদীয়মান প্রযুক্তির জন্য একটি কৌশলগত কেন্দ্র এবং পারমাণবিক উদ্ভাবনে শান্তিপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে।’
অধ্যাপক ইউনূস জানান, অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি একটি নতুন জাতীয় বিদ্যুৎনীতি প্রণয়ন করেছে, যাতে সৌর জ্বালানির গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, পারমাণবিক বিকল্প নিয়ে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে কঠোর গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাই অপরিহার্য।
তিনি বলেন, ‘আমরা অবশ্যই এসব সুযোগ অনুসন্ধান করব। তবে প্রতিশ্রুতিশীল এসব প্রযুক্তি নিয়ে গভীর গবেষণা দরকার। কোনো সন্দেহ নেই—বাংলাদেশকে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা দ্রুত হ্রাস করতেই হবে।’
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং সরকারের সিনিয়র সচিব ও এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার শালবন গ্রামে নিখোঁজের তিন দিন পর শিশু তাসনিয়ার বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুল ইসলামের বাড়ির গোয়ালঘর থেকে তার লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত তাসনিয়া আক্তার (১১)উপজেলার শালবন গ্রামের এরশাদ আলীর মেয়ে। স্থানীয় এলাকাবাসী এ ঘটনায় উত্তেজিত হয়ে পড়লে পরিস্থিতি শান্ত করে রাতে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
এ ঘটনায় দুই নারীকে আটক করেছে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন, উপজেলার বড়তারা ইউনিয়নের শালবন গ্রামের একরামুল হকের স্ত্রী হাবিবা (৩০) ও একই এলাকার আব্দুল রাজ্জাকের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা (৬২)।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত তিন দিন ধরে শিশু তাসনিয়াকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে শুক্রবার সন্ধ্যায় প্রতিবেশী একরামুলের গোয়ালঘরে বস্তাবন্দি অবস্থায় একটি লাশ দেখতে পান স্থানীয়রা। পরে খবর পেয়ে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে একরামুল বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যায়। তবে তার স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ক্ষেতলাল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.আব্দুল করিম বলেন, খবর পেয়ে শিশুর লাশটি উদ্ধার করা হয়েছে। সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর ময়নাতদন্তের জন্য জয়পুরহাট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশের সিমান্তরক্ষী বাহিনীর যৌথ সম্মতিতে বিভিন্ন সময়ে অবৈধ পথে ভারতে গিয়ে কারাভোগ শেষে ১৮ জন বাংলাদেশী নাগরিককে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ।
শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজিপুর সিমান্তের ১৪৭ নম্বর আন্তর্জাতিক মেইন পিলার কাছে বিজিবি সদস্যদের হাতে তাদের হস্তান্তর করা হয়। সকলেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বাসিন্দা।
কুষ্টিয়া বিজিবি ৪৭ ব্যাটালিয়নের অধিন কাজিপুর বিওপি-র কোম্পানী কমান্ডার সুবেদার শাহাব উদ্দিন জানান, দেশের বিভিন্ন সিমান্ত দিয়ে বাংলাদশী নাগরিকরা অভৈধ ভাবে ভারতে প্রবেশের সময় ভারতীয় সিমান্তরক্ষী বাহিনীর হাতে ধরা পড়ে।
পরে তাদের বিভিন্ন মেয়াদে দেওয়া সাজা ভোগ শেষে শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে বিএসএফ সদস্যরা বিজিবিকে হস্তান্তর করে।
ফেরত আসা ১৮জনের তথ্য যাচাই বাছাই শেষে গাংনী থানায় সৌপর্দ করা হবে।
ভারতের গান্দিনা বিএসএফ ১১ ব্যাটেলিয়ন ক্যাম্পের এসি সুনিল কুমার যাদব সহ অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিল।
ভারত থেকে কারাভোগ শেষে বাংলাদেশে ফেরত আসারা হলো, পটুয়াাখালী জেলার মেহেদী, চুয়াডাঙ্গার নুরজাহান, নড়াইলের ফরিদ শেখ, ঝিনাইদহের জিসান মন্ডল, সাইদুল ইসলাম, চাঁদপুরের খোকন বেপারী, সাতক্ষীরার মাজেদা ঢালী, শামিম হোসেন, মিঠুন ঘোষ, খালিদা সরদার, মিলন কুমার, রাজশাহীর আব্দুল কুদ্দুস, যশোরের আহমেদ আলী, মৌলভীবাজারের লিটন দেব, চট্টগ্রামের শুভ মজুমদার, ঢাকার স্বাধীন রাজবংশী, মাদারিপুরের মহিউদ্দিন ফকির, নাসিমা শেখ কুষ্টিয়া।
জেলার সদর উপজেলায় দুটি মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে একজন নিহত এবং চারজন আহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত ৮টার দিকে জেলার হবিগঞ্জ সেতুর ওপর এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত যুবক রাকিব (২২) মাদারীপুর সদর উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের আবু কালামের পুত্র।
আহতরা হলেন; পাঁচখোলা এলাকার দবির ব্যাপারীর পুত্র সোহান ব্যাপারী, জীবন হাওলাদারের পুত্র নাঈম হাওলাদার, শহিদুল সরদারের পুত্র মো. শুভ এবং নিরঞ্জন বাড়ৈর পুত্র অজিত বাড়ৈ।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, দুটি মটরসাইকেল নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে গিয়েছিল নিহত রাকিব এবং আহত নাঈম। বাড়ি ফেরার পথে হবিগঞ্জ ব্রিজের উপর দুই মটরসাইকেলের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই রাকিব মারা যান। মটরসাইকেলের অন্য যাত্রীরা গুরুতর আহত হন।
মাদারীপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আদিল হোসেন দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান,
স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরবর্তীতে তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পঙ্গু হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তিনি জানান, নিহতের মরদেহ মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহটি তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। তবে এ ব্যাপারে থানায় কোনো মামলা হয়নি।
নওগাঁর পত্নীতলা সীমান্ত দিয়ে ১৬ বাংলাদেশি নাগরিককে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। শুক্রবার বেলা ১১টায় নওগাঁর পত্নীতলা ১৪ বিজিবির ক্যাম্প থেকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে ভোরে উপজেলার শীতলমাঠ বিওপির সীমান্ত পিলার ২৫৪/১-এস এর কাছ দিয়ে তাদের বাংলাদেশে পুশইন করা হলে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে।
আটককৃতরা হলেন- নাটোর জেলার মোতালেব শেখ (৪৫), শফিকুল ইসলাম (৩৫), মজনু বিশ্বাস (৪৮), নয়ন খাঁ (২৫), মুকুল শেখ (২৫), মৃধুল শেখ (২০), সামির (১১), বিনা খাতুন (২৯), মিম (৮), মরিয়ম খাতুন (১০), রোজিনা খাতুন (১৮), মিরা খাতুন (৮ মাস), এলিনা খাতুন (২৮), জান্নাতুল সরকার (১০), জোছনা বেগম (৫০) এবং পাবনা জেলার মিরাজ শেখ (১৮)।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়- ভোরে পত্নীতলা ১৪ বিজিবির শীতলমাঠ বিওপির সীমান্ত পিলার ২৫৪/১-এস এর কাছ দিয়ে তাদের পুশইন করে। পরে বিজিবির টহল দল ঘুরকী গ্রামের পাকা রাস্তা সংলগ্ন চা দোকানের পাশে ঘোরাফেরা করতে দেখে তাদের আটক করে। আটকদের মধ্যে সাতজন পুরুষ, পাঁচ শিশু ও চারজন নারী।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো জানানো হয়- আটককৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় তারা বেশ কয়েক বছর পূর্বে রাজশাহী সীমান্ত দিয়ে ভারতে গিয়েছিল। আটকের পর তাদেরকে পত্নীতলা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন বলেছেন, ‘বিএনপি যদি মানুষের ভালোবাসার ম্যান্ডেট নিয়ে জনগনের সরকার গঠন করতে পারে, তাহলে এ দেশের মেধাবী শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ শিক্ষা অর্জনে সহায়তা করবে। বিশেষ করে দেশ নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া তার শাসনামলে নারী শিক্ষায় অগ্রাধিকার দিয়েছেন। শুক্রবার ভোলার চরফ্যাশন উপজেলায় জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের উদ্যোগে ব্রজগোপাল টাউনহলে এসএসসি/ দাখিল পরীক্ষায় ১১০ জন কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
যুবদল নেতা নুরুল ইসলাম নয়ন বলেন, ‘শহীদ রাষ্ট্রপ্রতি জিয়াউর রহমান এ দেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের শিক্ষায় আলোয় আলোকিত ও নিরক্ষরতা দূরীকরণের জন্য তার জীবদ্দশায় নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়েছেন। তারই ধারাবাহিকতায় দেশ নায়ক তারেক রহমান রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য যে ৩১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে শিক্ষার বিষয়টি উল্লেখ রয়েছে।’
এ সময় চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি কয়ছর আহমেদ কমল, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোফরান মহাজন, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী মঞ্জুর হোসেন, পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক খায়রুল ইসলাম সোহেল, ভোলা জেলা বিএনপির সদস্য মমিনুল ইসলাম ভুট্টু, চরফ্যাশন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব বিষয়ক সম্পাদক আহসান উল্যাহ বাহার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক হুমায়ুন কবির সিকদার, চরফ্যাশন প্রেসক্লাব সভাপতি জুলফিকার মাহমুদ নিয়াজ, উপজেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক কামাল গোলদার, উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব জাহিদুল ইসলাম রাসেল, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আবু বকর সিদ্দিক মিলটন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও শিক্ষক প্রতিনিধি ও অবিভিাবকরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন, চরফ্যাশন উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সদস্য আরিফুর রহমান জুয়েল। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় যুবদলের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়নের হাত থেকে এসএসসি/ দাখিল ২০২৫ জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতি শিক্ষার্থীরা সম্মননা স্মারক গ্রহণ করেন।
শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। মাটির কলস, থালা, বাটি, প্রদীপ, গ্লাস কিংবা নানা ধরনের পুতুল—সবই তৈরি হচ্ছে দিন-রাতের শ্রমে। পূজার সময় ঘনিয়ে আসতেই বেড়েছে অর্ডার, বেড়েছে কর্মব্যস্ততাও।
উপজেলার সন্ধ্যানী এলাকার কুমারপাড়ায় এখনো নয়টি পরিবার জীবিকার তাগিদে টিকে আছে এই ঐতিহ্যবাহী শিল্পের সঙ্গে। একসময় সারাবছর মৃৎশিল্পের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও বর্তমানে প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে মাটির তৈরি জিনিসপত্র।মাটি-জ্বালানির দাম বাড়ায় কষ্টে মৃৎ শিল্পীরা।
সরেজমিনে সদর ইউনিয়নের কুমারপাড়া ঘুরে দেখা যায়, রোদ না থাকায় ঘরের ভেতরে ফ্যান চালিয়ে শুকানো হচ্ছে সদ্য তৈরি মাটির কলস, থালা আর প্রদীপ। পুরুষ ও নারী মৃৎশিল্পীরা কেউ মাটির কাজ করছেন, কেউ পূজাকে কেন্দ্র করে রং তুলির আঁচড়ে সাজাচ্ছেন নানান ধরনের পণ্য।
মৃৎশিল্পী জ্যোতির্ময় পাল বলেন, ‘দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে আমরা দিন-রাত কাজ করে যাচ্ছি। কলস আর থালার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তবে মাটি ও জ্বালানির দাম বেড়ে যাওয়ায় খরচ সামলে লাভ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবুও এই শিল্পকে ধরে রাখতে আমরা কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।’
নারী মৃৎশিল্পী বীনা রানী পাল বলেন, ‘আমরা শুধু মাটির জিনিসপত্র বানাচ্ছি না, দেশের ঐতিহ্যকেও বাঁচিয়ে রাখছি। অনেক নারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে এই কাজে যুক্ত করেছি। তারা সংসারে আর্থিকভাবে সহায়তা করতে পারছে। কিন্তু মূলধন ও সরকারি সহযোগিতা ছাড়া এই শিল্প টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’
তিনি আরও জানান, প্লাস্টিকের দাপটে মাটির পণ্যের বাজার অনেকটাই কমে গেছে। তাই টিকে থাকতে তারা এখন দইয়ের বাটি, কাপ, চামচের মতো নতুন নতুন পণ্য বানাচ্ছেন। কিন্তু মূলধনের অভাবে উৎপাদন সীমিত হয়ে পড়ছে। ঐতিহ্য রক্ষায় সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।
নাগরদোলা থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক শিমুল তরফদার বলেন, ‘গ্রামীণ ঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো মৃৎশিল্প। কিন্তু মূলধন ও সহযোগিতার অভাবে একে একে অনেক শিল্পী এই পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন। এখনই সরকারি সহায়তা, প্রশিক্ষণ ও সহজ ঋণের ব্যবস্থা না করলে এই শিল্প বিলীন হয়ে যাবে।’
একসময় গ্রামবাংলার প্রতিটি ঘরে অপরিহার্য ছিল মাটির থালা-বাটি। বিশেষ করে দুর্গাপূজা বা অন্যান্য ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে মাটির কলস, প্রদীপ কিংবা পাত্রের বিকল্প ছিল না। এখনো সেই চাহিদা পুরোপুরি হারিয়ে যায়নি। কিন্তু প্রশ্ন রয়ে গেছে প্লাস্টিকের ভিড়ে কবে পর্যন্ত টিকে থাকবে এই ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প?
ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে ৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সদস্য ড. বদিউল আলম মজুমদার ফলক উন্মোচন করে মেহেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের নতুন ভবনে স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।
ফলক উন্মোচন শেষে নতুন ভবনে আয়োজিত উদ্বোধন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টার একান্ত সচিব মনির হায়দার।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিভাগের সচিব সাইদুর রহমান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব আইএমইডি কামাল উদ্দিন, স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবু জাফর, খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক মুজিবুর রহমান, মেহেরপুর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মুনজুর আহমেদ সিদ্দীক, মেহেরপুর সিভিল সার্জন ডা.একেএম আবু সাঈদ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান, স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব মো. সাইদুর রহমান, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের আইএমইডি সচিব মো. কামাল উদ্দিন, খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (অতিরিক্ত সচিব) মো. ফিরোজ সরকার, ঢাকা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু জাফর, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত (স্বাস্থ্য) পরিচালক ডা. মো. মুজিবুর রহমান। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মেহেরপুর জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তাজ উদ্দিন খান, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক এমপি মাসুদ অরুন, সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি আমজাদ হোসেন, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান, মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মোহাম্মদ আবদুল ছালাম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর আহমেদ সিদ্দিকী, সিভিল সার্জন ডা. এ. কে. এম. আবু সাঈদ এবং হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. শাহরিয়া শায়লা জাহান।
আলোচনা সভায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।
দেশের মধ্যাঞ্চলে অবস্থিত মাদারীপুর জেলা ও এর পৌর শহর। ১৫০ বছর আগে ব্রিটিশ সরকারের আমলে ১৮৭৫ খৃষ্টাব্দে মাদারীপুর পৌরসভাটি গঠিত হয়- যা প্রায় ১১৬ বছর পরে এসে ১৯৯১ সালে প্রথম শ্রেণির পৌরসভার মর্যাদা পায়। সে সময় চেয়ারম্যান ছিলেন বীরমুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান খান। ১ম শ্রেণিতে উন্নীত হবার পরে এখানে পরবর্তীতে চেয়ারম্যান পদ বিলুপ্ত করে মেয়র পদ পুনর্বিন্যাস করা হয়। এরপর জেলা আ. লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক খালিদ হোসেন ইয়াদ পরপর ৩ বার মেয়র পদে নির্বাচিত হয়ে টানা ১৫ বছর অপ্রতিরোধ্য মেয়র হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তার আমলেই সবচেয়ে বেশি পৌরসভার সরকারি খাল-দখল ও নাজুক অবস্থায় চলে যায়। ফলে শহরের ড্রেনেজ ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা সংকোচিত হয়ে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তিতে পড়েন এ শহরের নাগরিকরা। আর ভোগান্তি থেকে উত্তরণের জন্য যুগের পর যুগ অপেক্ষা করেও অবসান ঘটেনি। আজো উদ্ধার হয়নি দখল হওয়া খালগুলো। জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ সরকারি খাল উদ্ধার করা।
এলাকাবাসী বলেন, সাবেক পৌর মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদের কাছে পৌর নাগরিকদের সেবার চাইতে তার কাছে মূখ্য হয়ে উঠেছিল আওয়ামী দলীয় ও রাজনীতিকীকরণ। আর এজন্য প্রভাবশালীদের দখলে চলে যেতে থাকে শহরের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া ছোট-বড় খালগুলো।
দখলদার প্রভাবশালীদের মধ্যে সাবেক নৌমন্ত্রী শাজাহান খান (বর্তমানে কারা অন্তরীণ) ও তার পরিবারবর্গ প্রথমে তাদের বাসার সম্মুখ দিয়ে বয়ে চলা শকুনী-ইটেরপোল-গোপালপুর খালের অংশ দখল করে পাকা স্থাপনা তৈরি করেন এবং এরপর থেকেই শুরু হয় খাল দখলের মহা-উৎসব। এরমধ্যে আড়িয়ালখাঁ নদী থেকে শুরু করে শহরের মধ্য দিয়ে তৈরী হওয়া ষ্টেডিয়ামের পূর্বপাশ ঘেষে হরিকুমারিয়া-হাজিরহাওলা-রানাদিয়া খাল, শকুনী খাল, ইটেরপোল-ছয়না-গোপালপুর খাল, গৈদী খাল, কলেজ রোড হয়ে আমিরাবাদ খাল, কুলপদ্দি খাল, মহিষেরচর খাল কৌশলে দখল করে।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে সারাবছরই এসব খালে জোয়ার-ভাটার পানি থাকতো। এসব খালের পানি কৃষকের সেচকার্যে ব্যবহৃত হতো। এসব কারণে কখনোই জলাবদ্ধতা তৈরি হতো না মাদারীপুর শহরে। ওইসব খালে সারাবছরই দেশী মাছ শিকার করত মানুষ। প্রভাবশালীদের দখলের কারণে অস্তিত্ব হারানো এসব খালের মধ্যে দুয়েকটির উপর দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ড্রেন তৈরি হলেও এসব ড্রেনের বেশিরভাগই অকেজো হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী বলছেন, বেশীরভাগ সরকারি খাল আজো উদ্ধার করতে পারেনি পৌরসভা। সামান্য বৃষ্টি হলেই এসব ড্রেনে পানি ও ময়লা-আবর্জনা আটকে যায় এবং জলাবদ্ধতায় সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েন পৌরবাসি।
এদিকে, ৫ আগষ্ট পরবর্তী সময়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে হত্যা-দুর্নীতির মামলার আসামিসহ অন্যান্য মামলার আসামী হয়ে বাহাউদ্দীন নাসিম দেশের বাইরে পালিয়ে যান ও তার সহোদর সাবেক মেয়র খালিদ হোসেন ইয়াদ অজ্ঞাত স্থানে গা-ঢাকা দিয়েছেন। এরপর এখানে মেয়র পদ ও পৌর নাগরিক সেবার শূন্যতা ও বিড়ম্বনার তৈরি হলে পৌর নাগরিকেরা পড়েন বিপাকে। দৈনন্দিন নাগরিক সেবা থেকে বঞ্চিত হতে থাকে মানুষ। পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা, পয়ঃনিষ্কাশন, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার, মশক নিধন, পানি সঞ্চালন, জলাবদ্ধতা ইত্যাদিতে নাজুক অবস্থার তৈরি হয়। এরই প্রেক্ষিতে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে এখানে পৌর প্রশাসক হিসাবে উক্ত মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুল আলমকে পদায়ন করেন। //
পৌর প্রশাসকের দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তার আন্তরিক প্রচেষ্টা, দিনরাত পরিশ্রমের ফলে নাগরিক সেবা বৃদ্ধি পেতে থাকে। সরকারী খাল উদ্ধার, ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন, মশক নিধন, পয়ঃনিষ্কাশন ইত্যাদি প্রসঙ্গে সরাসরি তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন যে, আমরা সরকার সব খালের পাশ থেকে অনেক অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি, অনেকে তা সরিয়েও নিয়েছেন, ইটেরপোল-ছয়না-গোপালপুর খালের কিছু অংশে আমরা খনন কাজও চালিয়েছি, ডেঙ্গু প্রতিরোধে আমাদের মশক নিধন টিম প্রতিদিন কোনো না কোনো এলাকায় ঔষধ ছিটাচ্ছে, যে কারণে মাদারীপুর পৌর এলাকায় এবার ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব কম। জলাবদ্ধতা ও ময়লা-আবর্জনা থেকে পৌরবাসিকে রক্ষার জন্য আমাদের পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা প্রতিদিনই কোনো না কোনো ড্রেণ পরিস্কার করছে, ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে নিচ্ছে। আমরা নিজেরাও রাতদিন তা তদারকি করছি। অপ্রতুল জনবল ও সরকারী অর্থ বরাদ্ধের সীমবদ্ধতা সত্বেও আমরা দিনরাত কাজ করছি। অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান আমাদের চলমান রয়েছে এবং এটা আরো গতিশীল করা হবে, যতই প্রভাবশালী হোক না কেনো- দখল হওয়া সরকারী খালগুলো উদ্ধারেও আমাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা রয়েছে।
আমার ছেলের লাশ ফেরত চাই। আমার বুকের ধনকে আইনা দেন। ওরে ছাড়া আমি কি করে বাঁচব? বুক চাপরে কাঁদতে কাঁদতে এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন ইরাক প্রবাসী নিহত আজাদ খান (৪৭) এর অসহায় মা।
নিহত আজাদ খান রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের হোসেন মন্ডল পাড়া গ্রামের ইয়াজ উদ্দিনের ছেলে। মাত্র তিন মাস আগে দালালের মাধ্যমে ইরাক গিয়ে তিনি মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের শিকার হন।
নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গত তিন মাস আগে আজাদ ধারদেনা করে ইরাক যান। এক সপ্তাহ আগে ইরাকের বাগদাদ শহর থেকে সে নিখোঁজ হয়। এর মধ্যে তার কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। গত ১৮ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে লিটন নামে অপর এক ইরাক প্রবাসী ফোন করে আজাদের পরিবারকে জানান, আজাদকে হত্যা করে ৩ টুকরো করে লাশ বস্তায় ভরে ময়লার ভাগারে ফেলে রাখা হয়। শহরের পরিচ্ছন্ন কর্মীরা ময়লা পরিস্কার করতে এসে লাশের দুর্গন্ধ পায়। এ সময় তারা বস্তার মুখ খুলে দেখে মানুষের লাশ। তখন তারা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে লাশ তাদের হেফাজতে নেয়।
আজাদের স্ত্রী ময়না বেগম জানান, স্বামীকে বিদেশ পাঠিয়ে আমাদের পরিবার একদম নিঃস্ব হয়ে গেছে। অনেক ধারদেনা করে আমার স্বামীকে বাবুলের মাধ্যমে ৩ মাস আগে ইরাকে পাঠাই। তার যে কাজ দেয়ার কথা ছিলো বাবুল তাকে সেই কাজ না দিয়ে অন্য একটি কাজে দেয়। আমার স্বামী বাবুলের সাথে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু বাবুল তার কোনো ফোন ধরেনি। বাবুল তার ফোন ধরলে হয়তো আজ আমার স্বামীর এই করুন পরিনতি হতো না। আমি আমার স্বামীর হত্যার বিচার চাই।
এ বিষয়ে ইরাক থেকে মুঠোফোনে বাবু্ল জানান, আমি ওর যেখানে গিয়ে ছিলাম সেখান থেকে কুমিল্লার সোহাগ নামে একটি ছেলে তাকে নিয়ে অন্য জায়গায় একটি দোকানে কাজে দেয়। সেই দোকানের মালিক (কফিল) আজাদকে তার বাড়িতে নিয়ে গিয়ে কয়েকদিন ধরে বাড়িঘরের ময়লা ও আশপাশ পরিস্কার করায়। এর মধ্যে আমি সোহাগকে ফোন করে আজাদের খবর জানতে চাই। সোহাগ আমাকে জানায়, আজাদ কফিলের বাসায় আছে। আজ শুনতে পাচ্ছি আজাদকে হত্যা করে লাশ তিন টুকরো করে ফেলা হয়েছে। আমরা ইরাকের বাংলাদেশ এম্বাসিতে বিচার দিয়েছি। অ্যাম্বাসির লোকজন সহ আমরা সেখানে যাচ্ছি। আজাদের লাশ বাগদাদের একটি মর্গে রাখা হয়েছে।
নিহত আজাদের শ্যালক জহরুল হক বাপ্পি মুঠোফোনে জানান, আজাদ আমার দুলাভাই (চাচাতো বোন জামাই)। আমি বাংলাদেশ দূতাবাস, ইরাক সচিবের সাথে কথা বলেছি, আজাদ ভাইকে মেরে ফেলে কয়েক টুকরো করা হয়েছে শতভাগ সত্য। মরদেহ ইরাকে মর্গে আছে। আগামী রবিবার আজাদের হত্যাকারী আসামী কফিলকে কাজুমিয়া আদালতে তোলা হবে। তিনি আরও জানান, আজাদ ভাইয়ের লাশ দেশে আনার চেষ্টা চলছে।
স্বামীর অনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ করায় স্ত্রীকে প্রান নাশের হুমকি দেয়ার প্রতিবাদে শুক্রবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে সংবাদ সন্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শহরের একটি চাইনিজ হোটেলে অনুষ্ঠিত সংবাদ সন্মলনে নীলফামারী প্রাথমিক জেলা অফিসের অফিস সহায়ক সুমি আকতার কল্পনা বলেন, আমার স্বামী হাবিবুল্লাহ পায়েল আমাকে নাকি তালাক দিয়েছে, এখনো তালাকনামা হাতে পাইনি। হাবিবুল্লাহ পায়েল নীলফামারী প্রাথমিক জেলা শিক্ষা অফিসের নৈশ প্রহরী পদে চাকরি করতেন। চাকরি করার সুবাদে তিনি বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরির লোভ দেখিয়ে হাতিয়ে টাকা নিতেন। ফলে চাকরি প্রত্যাশিরা চাকরি না তাকে খুঁজতে বাসায় আসলে আত্নগোপনে চলে যায় হাবিবুল্লাহ। ফলে স্বামী-স্ত্রীর মাঝে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকতো। বাসার খরচও দিতো না। তার অনৈতিকতা নিয়ে আমাদের সম্পর্ক বিষাক্ত হয়ে ওঠে। ফলে সে আমার সাথে সম্পর্ক বিচ্ছেদ করে। তার অপকর্মের কারণে চাকরিচ্যুতও হয়। এসব কারণে সে আমাকে দোষারুপ করে সন্ত্রাসী দিয়ে বাসায় হামলা করে বাসা ছাড়া করেছে। এ ব্যপারে পুলিশকে অভিযোগ দিয়েও মিলছে না প্রতিকার। বর্তমানে সে আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছে। আমাকে চাকরি হারা করতে কর্মস্থলে যেতে বাধার সৃষ্টি করছে। আমি নীলফামারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে অফিস সহায়ক পদে কর্মরত আছি। আমাকে চাকরি হারা করতে সে আমার চরিত্র হননের চেষ্টা করছে। সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। আর তাকে সহযোগিতা করছে আব্দুর নূর, আবু তালেব, মোঃ মামুন, মেজবাউল হক, মতিয়ার রহমান, শ্যামল কুমার, মানিক হোসেন ও মোঃ লিমন।
তিনি বলেন, আমি চাকরি হারা হলে আমার নাবালক বারো বছর বয়সি সন্তান, আমার বৃদ্ধ মা, আমার ছোট বোন ও মিলে চার সদস্যের পরিবার রাস্তায় নামা ছাড়া অন্যকোন পথ থাকবে না।
সংবাদ সন্মেলনে সুমি আকতার কল্পনার সাথে ছিলেন নাবালক ছেলে আহনাফ আবিদ শিহাব, মা আলেয়া খাতুন, ছোটবোন মৌ আকতারসহ সুহৃদজনরা।
শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের মাইজদিহি চা বাগানে বিসমিল্লাহ এনএম জুলফিকার ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দের শতাধিক দরিদ্র্য চা শ্রমিকদের মাঝে শাড়ি বিতরণ করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে বিসমিল্লাহ এনএম জুলফিকার ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে শ্রীমঙ্গল মাইজদিহি চা বাগানে এই কাপড়গুলো বিতরণ হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসমিল্লাহ এনএম জুলফিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ও শিক্ষানবিশ আইনজীবী নাদিরা আক্তার নীরা, ফাউন্ডেশনের ভাইস চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. মোক্তার হোসেন, ট্যুারিস্ট পুলিশের অফিসার ইনচার্জ মো. কামরুল হাসান, সাংবাদক আহাদ মিয়া, সালাহ উদ্দিন শুভসহ স্থানীয় বাগান পঞ্চায়েত সদস্য, চা বাগানের বাবু ও সাংবাদিকরা।
চা শ্রমিকরা জানান, বিসমিল্লাহ এন এম জুলফিকার ফাউন্ডেশন এর উদ্যোগে পূজার আগেই নতুন কাপড় পেলাম। তাদের জন্য প্রাণভরে আশীর্বাদ করছি। নতুন পোষাক হাতে পেয়ে আনন্দে বিমোহিত হয়ে পূজার আগেই আনন্দের হাসি নিয়ে ঘরে ফিরছে মাইজদিহি চা বাগানের শ্রমিকরা।
বিসমিল্লাহ এনএম জুলফিকার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শিক্ষানবিশ আইনজীবী নাদিরা আক্তার নীরা বলেন, আমরা ঢাকা সোনারগাঁও থেকে সম্প্রীতি মৌলভীবাজার জেলার বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ঘুড়তে আসি। শ্রীমঙ্গলের মাইজদিহি চা বাগানে ঘুরতে আসলে হঠাৎ খাবার পানির প্রয়োজন হয়। তখন চা শ্রমিকদের কাছ থেকে আমি পানি পান করি। তাদের সুখ দুঃখের বিষয় নিয়ে অনেক আলাপ হয়েছে। তখন সেই শ্রমিকদের আবদার ছিল পূজার আগে তাদের কিছু সহযোগিতা করতে। আমিও তাদের আশ্বস্ত করেছিলাম। আজ সকালে শতাধিক চা শ্রমিকদের জন্য শাড়ি কিনে এনে তাদের হাতে শাড়িগুলো তুলে দিলাম।
তিনি আরও বলেন, সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সবসময় সুবিধাবঞ্চিত। তাই শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাগানের নিম্ন আয়ের শ্রমিকদের জন্য আমরা বিসমিল্লাহ এনএম জুলফিকার ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কিছু শাড়ি নিয়ে আমরা উপস্থিত হয়েছি। যাতে শ্রমিকরা একটু হলেও আনন্দ পায়। সামর্থ অনুযায়ী আমরা এসেছি আশাকরি অন্য সামাজিক সংগঠনও সুবিধা বঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়াবে।