স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে কর্মস্থল ময়মনসিংহের পথে রওনা হয়েছিলেন আনোয়ার হোসেন। বগুড়ার তিনমাথা এলাকায় পৌঁছাতেই পুলিশ থামিয়ে দিয়েছে সেই বাস। নামিয়ে দিয়েছে যাত্রীদের। মাঘ মাস হলেও বেলা ১টায় সূর্য যখন ঠিক মাথার ওপর, সেই সময়টিতে আনোয়ার হোসেনকে পাশে স্ত্রী আর কোলে বাচ্চা নিয়ে উদ্বাস্তুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হয় মহাসড়কে।
দিনাজপুর থেকে আসা আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘যেই বাসে চড়ে ময়মনসিংহে যাচ্ছিলাম, পুলিশ সদস্যরা ওই বাসটি জব্দ করে নিয়ে গেছে। বাসে প্রায় অর্ধশত যাত্রী ছিল, সবাইকে নামিয়ে দিয়েছে। ঘণ্টাখানেক হলো এখানে দাঁড়িয়ে আছি। কিছু পাচ্ছি না।’
বৃহস্পতিবার দুপুরে বগুড়া শহরের তিনমাথা নিরালা পাম্প এলাকার বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কের প্রথম বাইপাসে গিয়ে দেখা যায় এমন চিত্র। সেখানে আনোয়ার হোসেনের মতো আরও প্রায় অর্ধশত যাত্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। পরিবার-পরিজনসহ সবাইকে এভাবে বাস থেকে রাস্তায় নামিয়ে দেয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ সবাই।
বাধ্য হয়ে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অধৈর্য যাত্রীরা যা বললেন তার সারমর্ম এ রকম, ‘মাঝপথে এভাবে নামিয়ে দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে রাখা মানে গায়ে পড়ে হয়রানি করা। পরিবার ও বেডিংপত্র নিয়ে রাস্তায় দিশেহারার মতো দাঁড়িয়ে আছি। চারপাশের রাস্তার ধুলায় দম বন্ধ হয়ে আসছে। কিছু বলারও নেই। শক্তি থাকলে সবাই প্রয়োগ করে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী ৪ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিভাগীয় জনসভা। সেখানে নিরাপত্তা দিতে কাজ করবেন বগুড়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) সদস্যরা। আর তাদের যাতায়াতের জন্য প্রয়োজন ছয়টি বাস। সেই বাস সংগ্রহ করতেই মহাসড়কে নেমেছে পুলিশ, রাস্তায় যাত্রী নামিয়ে দিয়ে বাসগুলো রিকুইজিশনে জব্দ করছে। ভুক্তভোগী যাত্রীরা বলছেন, বগুড়া কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনালের অবস্থান ওই তিনমাথা থেকে মাত্র দুই কিলোমিটার দূরত্বে। সেখানে গিয়ে থেমে থাকা বাসগুলো রিকুইজিশন করলে অন্তত যাত্রাপথে থাকা যাত্রীদের ভোগান্তি হতো না।
তিনমাথার নিরালা পাম্প এলাকায় গিয়ে একাধিক বাসের অন্তত ৫০ জন যাত্রীকে দেখা গেল সড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে। কেউ মালামাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন, কেউ রাস্তার ওপর বসে পড়েছেন। অনেকে রিকশা-ভ্যান খোঁজার চেষ্টা করছেন, যেন সামনে কিছুটা এগিয়ে যাওয়া যায়। পাশেই বগুড়া জেলা পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের দুই কর্মকর্তা ও এপিবিএনের দুই সদস্যকে মহাসড়ক দিয়ে ঢাকাগামী বাসগুলো থামিয়ে কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করতে দেখা গেল।
এ সময় কয়েকজন বাসযাত্রীর সঙ্গে কথা হয় দৈনিক বাংলার। তাদের একজন জহুরুল ইসলাম, পেশায় কাপড় ব্যবসায়ী। পাঁচ সহযোগীকে নিয়ে কাপড় বিক্রি করতে গিয়েছিলেন দিনাজপুরে। সেখান থেকে বাসে ফিরছিলেন টাঙ্গাইলে। কিছু মালামালও ছিল সঙ্গে। পথে বগুড়ার তিনমাথায় তাদের নামিয়ে দেয় পুলিশ।
জহুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমিসহ বাসের সব যাত্রীকে নামিয়ে দিয়েছে। ড্রাইভার সব কাগজ দেখিয়ে পুলিশদের অনেক অনুরোধ করেছিল। তবু গাড়ি ধরে নিয়ে গেছে। আমি তো মূর্খ মানুষ, এত কিছু বুঝি না। শুধু বুঝি, এই দুপুরে ঘণ্টাখানেক হলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে আছি। আজ রোদও বেশি, ক্ষুধাও লেগেছে অনেক। এই মালামাল নিয়ে কই যাব এখন?’
ঠাকুরগাঁও থেকে ময়মনসিংহ যাচ্ছিলেন মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ফারজানা রহমান। তিনি বলেন, ‘একাই রওনা দিয়েছিলাম। এখন ১ ঘণ্টা হলো রাস্তায় দাঁড়িয়ে। বাসায় বলার সাহস পাচ্ছি না। জানলে আম্মু-আব্বু টেনশনে জ্ঞান হারাবে। ওনারা সরকারি কাজে গাড়ি জব্দ করবেন ভালো কথা, তবে এভাবে মাঝপথে কেন? এখন কী করব কিছুই বুঝতে পারছি না। ওনারা বলেছেন অন্য গাড়িতে উঠিয়ে দেবেন।’
পরে অবশ্য যাত্রীদের অন্য বাস পেতে সহযোগিতা করেছে পুলিশ। তবে সে ক্ষেত্রেও স্বাভাবিকভাবেই বেগ পেতে হয়েছে। কারণ মহাসড়কে আন্তজেলা বা দূরপাল্লার বাসগুলোতে মাঝপথে ফাঁকা আসন পাওয়া যায় না বললেই চলে। সে কারণেই রিকুইজিশন করা বাসগুলো থেকে নামিয়ে দেয়া যাত্রীদের বাস পেতেও দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়েছে।
জানতে চাইলে বগুড়ার ট্রাফিক পরিদর্শক (টিআই) মাহাবুবর রশিদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘রাজশাহীতে সমাবেশে আসবেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে এপিবিএন সদস্যরা ডিউটিতে যাবেন। তাদের যাতায়াতে ছয়টি বাস প্রয়োজন। সেগুলো সংগ্রহ করা হচ্ছে। চারটি বাস এরই মধ্যে রিকুইজিশন করা হয়েছে।’
মহাসড়কে মাঝপথে বাস থামিয়ে রিকুইজিশন নিয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে যাত্রীদের অসুবিধার কথা স্বীকার করে নিলেন পুলিশের এ কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘সাময়িকভাবে কিছু অসুবিধা হয়েছে যাত্রীদের। তবে পরের বাসগুলোতে আমরাই তাদের উঠিয়ে দিচ্ছি।’
অদূরেই টার্মিনাল রয়েছে- জানাতেই মাহাবুবর রশিদ বলেন, ‘মহাসড়ক ছাড়া টার্মিনালে গিয়ে বাস রিকুইজিশন করা সম্ভব হয় না। সেখানে পরিবহনসংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে সহযোগিতা করেন না।’
এ বিষয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) বগুড়ার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন ইসলাম তুহিন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটি আইনের মধ্যে না থাকলে রাস্তায় যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাস রিকুইজিশন করা মানবাধিকার লঙ্ঘন হবে। এই ব্যবস্থাটার পরিবর্তন হওয়া উচিত। রাষ্ট্রের অনেক অর্থ আছে, ব্যয়ের খাত আছে। সাধারণ মানুষ কোথাও ভ্রমণ করতে গেলে গাড়ি ভাড়া করে। তেমনি সরকারি দপ্তরের লোকজনও গাড়ি ভাড়া করে গন্তব্যে যাবে।’
জানতে চাইলে বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) হেলেনা আকতার দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘রাস্তায় যাত্রী নামিয়ে গাড়ি রিকুইজিশন করার কথা নয়। তবে রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশের জন্য এপিবিএন সদস্যরা আগামীকাল রওনা দেবেন। এ জন্য গাড়ি জরুরি ছিল। রাষ্ট্রীয় প্রয়োজনে আমাদের এ কাজ করতে হয়েছে।’
ভারতের ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিওনের (এনসিআর) নয়ডা শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে এক বাংলাদেশি তরুণের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। শাহরিয়ার নামের ওই তরুণ ভারতে পড়তে গিয়েছিলেন।
উত্তরপ্রদেশের আওতাধীন গ্রেটার নয়ডার বেটা-২ এলাকা থেকে গত রোববার সন্ধ্যায় ওই তরুণের লাশ উদ্ধার করা হয়। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
পুলিশ জানিয়েছে, শাহরিয়ারের বাড়িওয়ালা পুলিশকে খবর দেন। বাড়িওয়ালা পুলিশকে বলেন, এক দিনের বেশি সময় ধরে ওই তরুণকে দেখতে না পেয়ে তিনি খোঁজ নিতে যান। পরে ঘরের ভেতরে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলে থাকা লাশ দেখতে পান।
গ্রেটার নয়ডা-১ সার্কেল অফিসার হেমন্ত উপাধ্যায় জানান, লাশটি ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে কোনো সুইসাইড নোট মেলেনি।
বাড়ির মালিক জানিয়েছেন, শাহরিয়ার ওই বাসায় উঠেছিলেন রুপা নামের এক নারীর সঙ্গে। রুপা বিহারের বাসিন্দা। দুজনই নিজেদের বিবাহিত দাবি করে ৮ হাজার টাকা ভাড়ায় কক্ষটি নেন। তারা ১৭ নভেম্বর সেখানে উঠেছিলেন।
পুলিশ বলছে, রুপাকে সর্বশেষ ২১ নভেম্বর বাসা থেকে বেরিয়ে যেতে দেখা গেছে।
সার্কেল অফিসার উপাধ্যায় বলেন, ‘ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে। তদন্ত চলছে।’
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে গোপনে সরানো হয়েছে চট্টগ্রামের অন্যতম সন্ত্রাসী ছোট সাজ্জাদ এবং তার স্ত্রী তামান্না শারমীনকে। এর মধ্যে সাজ্জাদকে রাজশাহী এবং তামান্নাকে ফেনী কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছে। কয়েকদিন আগে তাদের সরানো হলেও সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হয়।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. ইকবাল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি থেকে ১৫ মার্চ সাজ্জাদ হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে ছিলেন। বন্দি থাকা অবস্থায় চট্টগ্রামে ডাবল মার্ডারসহ একের পর এক হত্যাকাণ্ডে নাম জড়ায় সাজ্জাদ হোসেন ও তার বাহিনীর। গত ১০ মে দিবাগত রাতে দিকে নগরের বহদ্দারহাট বাড়ইপাড়া এলাকা থেকে শারমিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
“সোনালী আঁশের সোনার দেশ, পরিবেশবান্ধব বাংলাদেশ”—এই স্লোগানকে সামনে রেখে উন্নত প্রযুক্তি নির্ভর পাটবীজ উৎপাদন ও সম্প্রসারণ শীর্ষক প্রকল্পের আওতায় নীলফামারীতে চাষীদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের হলরুমে এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়। সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম।
প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের প্রশিক্ষণ মনিটরিং কর্মকর্তা ও যুগ্ম সচিব ড. মো. মনজুরুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে জেলার পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা এ.টি.এম. তৈবুর রহমান, অতিরিক্ত উপপরিচালক জাকির হোসেন, উপসহকারী পাট উন্নয়ন কর্মকর্তা নুররেজা সুলতানাসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
ব্রহ্মপুত্রের ভাঙ্গন ও বন্যায় রৌমারীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের বসতবাড়ী ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে ভুমিহীন ও গৃহহীন হয়ে সংকটে পড়েন এ অঞ্চলের মানুষ। সাম্প্রতিক বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ফ্রেন্ডশিপ বাংলাদেশ সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবার গুলোকে সহায়তার জন্য এগিয়ে এসেছেন। দুর্যোগকালীন সহায়তার পাশাপাশি পরিবারভিত্তিক আয়বর্ধক প্রশিক্ষণ দেওয়ায় বদলে যেতে শুরু করেছে ৩৬০টি পরিবারের জীবনমান।
সংস্থাটির তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর রৌমারী উপজেলার ১২টি চরের ৩৬০টি দরিদ্র পরিবারকে বিভিন্নভাবে উন্নয়নমুখী সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে। শীত ও গ্রীষ্ম দুই মৌসুমে সবজি বীজ সরবরাহ,আধুনিক কৃষি প্রশিক্ষণ, ভেড়া বিতরণসহ নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে ফ্রেন্ডশিপ। বন্যার সময়েও সবজি উৎপাদন চালু রাখতে কমিউনিটি ভিত্তিক সবজি চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বস্তায় আদা চাষ, ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন এবং জৈব সার ব্যবহারের প্রচার ও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।পারিবারিক বন্ধন সুদৃঢ় রাখতে পরিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ ও আইনগত বিষয়ে নিয়মিত পরামর্শও দিচ্ছে সংস্থাটি। সম্প্রতি চরশৌলমারী ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার মিয়ার চরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গ্রামের ৩০টি বন্যাকবলিত পরিবার শুধু আয়বৃদ্ধিমূলক কাজেই নয়, সামাজিক উন্নয়নেওযুক্ত হয়েছেন।
মিয়ার চর গ্রামের আছিয়া বেগম জানান, ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড প্রকল্পের সহায়তায় তিনি ৪ হাজার ১০০ টাকা মূল্যের একটি ভেড়া পেয়েছিলেন। বর্তমানে তার পাঁচটি ভেড়া হয়েছে, যার বাজার মূল্য প্রায় ৪৭ হাজার টাকা।
আরেক কৃষক গোলজার আলী বলেন, “আধুনিক সবজি চাষের প্রশিক্ষণ পেয়ে বাড়ির আঙিনায় উৎপাদিত সবজি বিক্রি করে এ বছর ২২ হাজার টাকা আয় করেছি।এতে সংসারের খরচ চালিয়ে কিছু টাকা সঞ্চয়ও করতে পেরেছি।”
একই গ্রামের শেফালী বেগম জানান, কেঁচো সার উৎপাদনের প্রশিক্ষণ নিয়ে তিনি এখন প্রতি মাসে প্রায় ১৫ শত টাকার ভার্মি কম্পোস্ট বিক্রি করছেন।
আছমা বেগম জানান, তিনি ২৫টি বস্তায় আদাচাষ করেছেন এবং প্রতি বস্তা থেকে এক থেকে দেড় কেজি আদা পাওয়ার আশা করছেন।গ্রামের আরও অনেকে বস্তায় আদা চাষ, সবজি উৎপাদন, জৈব সার তৈরি ও ভেড়া পালন করে পরিবারের আয় বাড়াতে সক্ষম হয়েছেন।
আবু হানিফ বলেন, “আমাদের সুশাসন বিষয়ক প্রশিক্ষণদেওয়া হয়েছে। পারিবারিক নির্যাতন, বাল্যবিবাহ, বহুবিবাহ, তালাক, সংবিধান ও সংসদ সম্পর্কে জেনেছি। এখন কোনো আইনি সহায়তা লাগলে ফ্রেন্ডশিপ বিনামূল্যে পরামর্শ দেয়।”
একই গ্রামের এছাহাক আলী ও বেলায়েত হোসেন জানান, আগে হাট থেকে রাসায়নিক সার কিনতে হতো; এখন নিজেরাই জৈব সার তৈরি করে ব্যবহার করছেন। ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করে কীট দমন করছেন এবং সরকারি সেবা পেতে বিভিন্ন দপ্তরে যোগাযোগের সক্ষমতাও বেড়েছে।ফ্রেন্ডশিপের ট্রানজিশনাল ফান্ড (এএসডি) প্রকল্পের রিজিওনাল ম্যানেজার কৃষিবিদ মোঃ আশরাফুল ইসলাম মল্লিক জানান, ফ্রেন্ডশিপ লুক্সেমবার্গ-এর সহায়তায় কুড়িগ্রাম সদর, চিলমারী ও রৌমারী উপজেলার মোট ২৮টি চরে ৮৪০ জন সদস্যকে আয়বৃদ্ধি, সুশাসন এবং স্থানীয় অবকাঠামো উন্নয়নে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, “ফ্রেন্ডশিপ প্রকল্পের পাশাপাশি কৃষিসম্প্রসারণ অধিদপ্তরও উপকারভোগীদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিগত সহায়তা ও সর্বাত্মকসহযোগিতা প্রদান করছে।
”উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান পাইকাড় জানান, “চরাঞ্চল ভেড়া পালনের জন্যঅত্যন্ত উপযোগী। এ বছর ফ্রেন্ডশিপের উদ্যোগে ৩৬০ পরিবারকে ভেড়া ও প্রশিক্ষণ দেওয়াহয়েছে। প্রতিটি ভেড়াকে বিনামূল্যে টিকা ও কৃমিনাশক দেওয়া হয়েছে। এতে স্বল্প খরচে দ্রুত আয় বৃদ্ধির সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা চরাঞ্চলের মানুষকে স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করছে।
শুষ্ক মৌসুমে কখনো গলা, কখনো কোমর, কখনোবা হাঁটুপানি থাকে বমুখালে। এ পানি পেরিয়ে শিশুদের যেতে হয় বিদ্যালয়ে। খাল পার হওয়ার সময় পানিতে ভিজে যায় কাপড়, বই খাতাও। এই অবস্থা চলছে কয়েক বছর। আবার বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টিতে খাল ভরপুর হয়ে গেলে ওপারের সব শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে আসা বন্ধ করে দেয়। এতে শিক্ষায় পিঁছিয়ে পড়ে দুর্গম পাহাড়ি এলাকার শিক্ষার্থীরা। একান্ত আলাপকালে এমনটিই জানালেন-লামার বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ।
শ্যামল কান্তি দাশ বলেন, ব্রিজ না থাকায় এই বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে শিশুদের সাঁতার শিখতে হয়। না হয় বিদ্যালয়ে আসতে পারে না। অনেক সময় খাল পারাপারের ভয়ে অধিকাংশ অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠান না। শুধু তায় নয়, বটতলীপাড়া থেকে গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়েও প্রায় দুইশ শিক্ষার্থী প্রতিদিন এ খাল পার হয়ে বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসা করে।
শিক্ষক শ্যামল কান্তি দাশ জানান, গত ১৫ নভেম্বর পারাপারের সময় এক শিক্ষার্থী পানিতে ভেসে গেলে সহপাঠীদের চিৎকারে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। যদি বিদ্যালয়ের পূর্ব পাশের এই বমুখালে একটি ব্রিজ নির্মিত হতো, তাহলে শিশু শিক্ষার্থীরা এই ঝুঁকি থেকে রেহাই পেত, পাশাপাশি যাতায়াতের সুবিধা পেত দুইপারের কয়েক হাজার স্থানীয় বাসিন্দাও।
জানা যায়, উপজেলার গজালিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বটতলীপাড়া বমুখালের এক পাড়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৭০টি বসতি পরিবার। অন্য পাড়ে রয়েছে পূর্ববটতলীপাড়া, তুলাতলী হামিদচরপাড়া, তুলাতলী মুরুংপাড়া, চিন্তাবরপাড়াসহ ৯টি পাড়ার প্রায় ৫ হাজার পাহাড়ি-বাঙালি জনবসতি। প্রতিদিন বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দুই শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সহস্রাধিক স্থানীয় বাসিন্দা এই খাল পার হয়ে বটতলী-গজালিয়া বাজারে যাতায়াত করে আসছেন। বিশেষ করে ব্রিজ না থাকায় কৃষিপণ্য বাজারজাতে চরমভাবে বিঘ্ন ঘটছে। এতে কৃষকরা লোকসানের মুখে পড়েন।
সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা যায়, ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ে যাওয়ার জন্য খাল পার হচ্ছিল। দুই-একজন ক্লান্তও, নিচ্ছিল দম। তীরে উঠেই রোদে ভেজা জামা- কাপড় শুকাচ্ছিল কয়েকজন।
এ সময় কথা হয় স্থানীয় বাসিন্দা মো. ছগির উদ্দিনের সঙ্গে। তিনি বলেন- গত ১৫ নভেম্বর দুই শিশু সাঁতার কেটে পশ্চিমপাড়া আসছিল। কিন্তু খালের মাঝখান থেকে নাজিম উদ্দিন নামে এক শিশু ভেসে যায়। সঙ্গে থাকা শিশুটির চিৎকারে পার্শ্ববর্তী লোকজন এগিয়ে এসে প্রায় তিনশ ফুট দূর থেকে ভেসে যাওয়া ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেন।
বটতলীপাড়ার গ্রাম সরদার মো. মনির উদ্দিন জানান, আমাদের কাছে এই দৃশ্য নতুন কিছু নয়। দীর্ঘবছর ধরে এ অবস্থা চললেও খালে সেতু নির্মাণের উদ্যোগ স্থানীয় প্রশাসন নিয়েছে কি না, জানি না।
চতুর্থ শ্রেণির রোকশানা আক্তার (৯) বলে, বাড়ি তুলাতলী হামিদ চরপাড়া গ্রামে। পড়ালেখাকরি বটতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দুই পাড়ার মাঝখানে বয়ে যাওয়া বমু নামক এই খাল সাঁতরে আমার যেতে হয় বিদ্যালয়ে। ‘খাল পার হতে আমার অনেক ভয় হয়। শিশু শ্রেণি থেকে চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত অনেক কষ্ট করেছি। আমরা এই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি করছি।
একই কথা জানায় তৃতীয় শ্রেণির শফিকুল ইসলাম, আনিশা আক্তার ও পঞ্চম শ্রেণির মো. রাহান মিয়াও।
এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক শামসুল হক বলেন, ‘আমার দুই ছেলে এই বিদ্যালয়ে পড়ে। সপ্তাহখানেক আগে আমার এক ছেলে খাল পার হতে গিয়ে খালের কুমে পড়েছিল, আমি এসে উঠিয়ে বিদ্যালয়ে পৌঁছে দিয়েছি। বমুখালের ওপর একটি ব্রিজ হলে ভালো হয়।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশিষ বিশ্বাস বলেন, বমুখালের বটতলীপাড়া বিদ্যালয়-সংলগ্ন স্থানে একটি ব্রিজ নির্মাণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
গজালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান উসাচিং মার্মা জানান, বমুখাল পাড়ি দিয়ে বটতলীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ গজালিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী। এলাকার লোকজন দীর্ঘদিন ধরে বমুখালের ওপর ব্রিজ নির্মাণের দাবি করে আসছেন। ব্রিজটি নির্মাণ হলে কৃষকরাও উপকৃত হবেন।
এ বিষয়ে লামা উপজেলা প্রকৌশলী আবু হানিফ বলেন, শিশু শিক্ষার্থী এবং জনস্বার্থে ওই খালের ওপর ব্রিজ নির্মাণ জরুরি। আমরা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বটতলী ও পূর্ব বাইশফাঁড়িতে ব্রিজ স্থাপনের জন্য প্রস্তাবনা পাঠিয়েছি। অনুমোদন পেলে ব্রিজ নির্মাণের কাজ শুরু করব।
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মিয়াপুর ক্ষেতুপাড়া শাখার গ্রামীণ ব্যাংকের সাইনবোর্ডে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত রোববার রাতের যেকোনো সময় আগুন দেওয়া হয়। স্থানীয়দের ধারণা ব্যাংকে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল দুর্বৃত্তরা। কিন্ত সাইনবোর্ডের আগুন দেখেই স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছে।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন স্থানে গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় আগুন দেওয়ার ঘটনার জের ধরে সাঁথিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের একটি শাখায় আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার গভীর রাতে উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের মিয়াপুর ক্ষেতুপাড়া শাখায় দুর্বৃত্তরা ব্যাংকের সাইনবোর্ডে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ ঘটনায় সাইনবোর্ডের অংশ পুড়ে যায়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আগুনের ভিডিওতে দেখা যায় কে বা কারা প্রথমে সাইনবোর্ডে তেল জাতীয় কিছু ঢালছে। পরে তাতে আগুল লাগিয়ে দেয়।
সাঁথিয়া থানার ওসি আনিসুর রহমান জানান, গ্রামীণ ব্যাংকে আগুন দেওয়ার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা রুজু হবে।
চট্টগ্রামের হালদা নদীতে অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার চালনার মাধ্যমে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের অপরাধে তিনজনকে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এক লাখ টাকা জরিমানা করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সোমবার বিকালে হালদা নদীর মদুনাঘাট এলাকায় এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট শাহেদ আরমান বলেন, হালদা নদীতে অভিযান পরিচালনা করার সময় অবৈধভাবে ইঞ্জিনচালিত ড্রেজার চালনার মাধ্যমে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের অপরাধে মো. ইব্রাহিম, মো. হান্নান ও মো. সবুজকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ড এবং অনাদায়ে ১৫ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হালদা নদীর জীববৈচিত্র্য রক্ষায় জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
অভিযান পরিচালনাকালে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শওকত আলী, নৌপুলিশ এবং হালদার সংশ্লিষ্ট পাহারাদার সহযোগিতা করেন।
মিয়ানমার থেকে মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশি সিমেন্ট পাচারের সময় ৯ চোরাকারবারিকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। সোমবার বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কোস্ট গার্ডের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, একটি চক্র মিয়ানমার থেকে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য এনে তার বিনিময়ে বাংলাদেশি পণ্য পাচার করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার সকাল ৯টার দিকে কোস্ট গার্ড জাহাজ কামরুজ্জামান সেন্টমার্টিনের ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ–পূর্ব-সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে একটি সন্দেহজনক ফিশিং ট্রলার থামিয়ে তল্লাশি চালানো হয়। এ সময় ট্রলার থেকে শুল্ককর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে বহন করা প্রায় ২ লাখ ৪৭ হাজার টাকা মূল্যের ৪৫০ বস্তা সিমেন্ট জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ৯ চোরাকারবারিকে।
জব্দ করা মালামাল, ট্রলার ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ডের ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, ‘পাচার ও চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
নওগাঁর মান্দায় ৬০ বস্তা রাসায়নিক সার জব্দ করেছে উপজেলার প্রশাসন। সোমবার দুপুর দেড়টার দিকে উপজেলার ভারশোঁ বাজারের পাশ থেকে সারগুলো জব্দ করা হয়। এর আগে স্থানীয়রা সারগুলো তিনটি ভটভটিতে করে পরিবহনের সময় আটক করে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করেন মান্দা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাবিল নওরোজ বৈশাখ ও উপজেলা কৃষি অফিসার শায়লা শারমিন।
কৃষি অফিস ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মান্দা উপজেলার দেলুয়াবাড়ি বাজারে ডিলারের কাছ থেকে ২০ বস্তা টিএসপি ও ৪০ বস্তা এমওপি সার কিনে পলেথিন দিয়ে ঢেকে তিনটি ভটভটিতে করে চৌবাড়িয়া হাটের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। দেলুয়াবাড়ি-চৌবাড়িয়া সড়কের মাঝামাঝি ভারশোঁ গ্রামের বাজারের পাশে স্থানীয়দের মাঝে সন্দেহ হলে ভটভটি আটকিয়ে চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে সারগুলো দেলুয়াবাড়ি বাজারে ডিলারের কাছ থেকে কিনে রাজশাহী জেলার তানোর উপজেলার তালান্দো নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল বলে জানা যায়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ সময় টহলরত সেনাবাহিনীও সেখানে উপস্থিত হয়। পরে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অফিসারকে জানানো হলে ঘটনাস্থলে তারা আসেন। তবে সারের মালিকদের এ সময় পাওয়া যায়নি। পরে সারগুলো জব্দ করা হয়।
কৃষকদের অভিযোগ- ডিলারদের কাছে তারা চাহিদা মতো সার পান না। অথচ বেশি দাম দিয়ে কালোবাজারে বাইরের উপজেলার কৃষকদের কাছে বিক্রি করা হচ্ছে। কৃষি অফিসের নজরদারি না থাকায় ডিলাররা সুযোগ নিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়।
মান্দা উপজেলা কৃষি অফিসার শায়লা শারমিন বলেন, সারগুলো দেলুয়াবাড়ি বাজারে তিনজন ডিলারের কাছ থেকে বাইরের উপজেলার কৃষকরা কিনেছিল বলে জানতে পেরেছি। তবে ঘটনাস্থলে ক্রেতারা ছিলেন না। পরে সারগুলো জব্দকরে কুসুম্বা ইউনিয়নের পরিষদে নেওয়া হয়েছে। সেখানে ন্যায্যমূল্যে কৃষকদের মাঝে সারগুলো বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হবে।
পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কের ঘটখালী এলাকায় পুলিশের ধাওয়া খেয়ে একদল ডাকাত লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। পরে স্থানীয় জনতার হাতে একজন ডাকাত আটক হয়।
জানা গেছে, গত রোববার রাতে ঘটখালী বিএম অটো গ্যাস পাম্পের পাশে মঞ্জুগাজীর মেশিনারিক দোকানে ৭-৮ সদস্যের একটি ডাকাত দল ডাকাতি করে। খবর পেয়ে আমতলী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া করে।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ডাকাতরা প্রথমে মহিপুরে যায়, সেখানে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে ডাকাতদল আবারও আমতলীর দিকে ফিরে আসে। সোমবার সকাল ১০টার দিকে পুলিশ পুনরায় তাদের ধাওয়া দিলে ডাকাতরা কুকুয়া ইউনিয়নের হাজারটাকার বাঁধ এলাকায় প্রবেশ করে।
এ সময় স্থানীয় জনতা ডাকাত আমিরুল ইসলামকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে আসে।
আমিরুল ইসলাম পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার রাধানগর এলাকার ফোরকান শেখের ছেলে। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি পিকআপ গাড়ি জব্দ করেছে।
স্থানীয়দের দাবি, পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ডাকাতদল গাড়ি ফেলে পালিয়ে যাচ্ছিল। এলাকাবাসী ধাওয়া দিয়ে একজনকে আটক করতে সক্ষম হয়।
আমতলী থানার ওসি দেওয়ান জগলুল হাসান বলেন, আমতলী ও মহিপুর থানায় দুজন ডাকাতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া অন্য ডাকাতদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।
কেশবপুরের উন্নয়ন, জনসেবা, সুসমন্বয় ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতার বিষয়ে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন যশোরের নতুন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশেক হাসান। তিনি বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন আগামী জাতীয় নির্বাচনকে। তিনি বলেছেন, আগমী নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরাপেক্ষ করতে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। প্রশাসন দায়িত্ব পালন করবেন, তবে সমাজের সব স্তরের মানুষের সম্মিলিত ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সোমবার সকালে কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারী, গণ্যমান্য ব্যক্তি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই বক্তব্য তুলে ধরেন জেলা প্রশাসক। উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সভাকক্ষে এ মতবিনিময় হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রেকসোনা খাতুন। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজ, কেশবপুর থানা ওসি মো. আনোয়ার হোসেন, কেশবপুরের সাবেক পৌর মেয়র আব্দুস ছামাদ বিশ্বাস, উপজেলা জামায়াতের আমীর অধ্যাপক মোক্তার আলী, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সহকারী অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাক, পল্লী বিদ্যুৎ কেশবপুরের ডিজিএম মো. আব্দুর রব, জামায়াতের আমীর জাকির হোসেন, কেশবপুর নিউজ ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. হারুনার রশীদ বুলবুল, প্রেসক্লাব কেশবপুরের সভাপতি ওয়াজেদ খান ডবলু, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. রকোনুজ্জামান, মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. ফিরোজ খান, এনপিপির সম্রাট হোসেনসহ বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থানীয় নেতারা।
বরগুনার নবনিযুক্ত জেলা প্রশাসক তাসলিমা আক্তার বলেছেন, সামনে আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এ নির্বাচনে কোন দল বা ব্যক্তির আলাদা সুবিধা নেওয়ার সুযোগ নেই। প্রশাসনের কারো দুর্নীতি বা স্বজনপ্রীতির সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেলে তার বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে আছে।
সোমবার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়ন পরিষদ, পাথরঘাটা থানা, পাথরঘাটা পৌরসভা এবং উপজেলা পরিষদ- পরিদর্শন করে এ কথা বলেন তিনি।
পরিদর্শন শেষে তিনি উপজেলা পরিষদের সভাকক্ষে সর্বস্তরের জনসাধারণ, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক দলের নেতা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন। সভায় বিএনপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা এবং তাদের অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তাসলিমা আক্তার। বক্তারা আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, এলাকার সমস্যা, সম্ভাবনা ও উন্নয়ন অগ্রগতির নানা বিষয় উপস্থাপন করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান।
১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস- উদযাপন উপলক্ষে নান্দাইল উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার বেলা ১২টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে অনুষ্ঠিত এ সভায় সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফাতেমা জান্নাত । বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) জনাব রেবেকা সুলতানা ডলি। জনাব শামীমা সুলতানা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবাব পরিকল্পনা কর্মকর্তা। নান্দাইল, ঈশ্বরগঞ্জ ও গৌরীপুর থানার ইনচার্জ মেজর মুর্শেদ আলী।
নান্দাইল থানা অফিসার ইনচার্জ জনাব খন্দকার জালাল উদ্দীন মাহমুদ।
রাজনৈতিক দলের নেতাদের মধ্যে উপস্থিত জনাব মিজানুর রহমান লিটন , যুগ্ম আহবায়ক উপজেলা বি.এন.পি, জনাব নজরুল ইসলাম ফকির যুগ্ম আহবায়ক নান্দাইল পৌর বিএনপি, মনিরুজ্জামান মনির সদস্য সচিব নান্দাইল পৌর বিএনপি।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে ১৪ ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন উপলক্ষে শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কালোব্যাজ ধারণ, আলোচনা সভা, দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
এছাড়া ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবস- যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপনের জন্য প্রভাতফেরি, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, উপজেলা পরিষদ চত্বরে আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান, কুচকাওয়াজ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক রচনা প্রতিযোগিতার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
অনুষ্ঠান সুন্দর ভাবে পরিচালনার জন্য বিভিন্ন উপ - কমিটি গঠিত হয়।সভায় উপস্থিত ছিলেন , বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক সমাজ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
সভায় বক্তারা শহীদ বুদ্ধিজীবীদের ত্যাগ ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে সবাইকে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, “জাতীয় দিবসগুলোকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সবার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানগুলো সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হবে।”