খাগড়াছড়ির গুইমারায় ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (ইউপিডিএফ) কর্মী অংথুই মারমা নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে গুইমারার দেওয়ান পাড়া মিশন স্কুল এলাকায় তিনি দুর্বৃত্তের হামলায় গুলিবিদ্ধ হন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, নিহত অংথুই মারমা ওরফে আগুন গুইমারার বুদংপাড়া যৌথ খামার এলাকার কংলোঅং মারমার ছেলে।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহম্মদ রশীদ বলেন, গোলাগুলির খবর পেয়ে পুলিশ অংথুই মারমার মরদেহ উদ্ধার করেছে। ধারণা করা হচ্ছে, প্রতিপক্ষের গুলিতে তিনি নিহত হয়েছেন। অংথুই মারমা ইউপিডিএফের কর্মী ছিলেন। তার মরদেহ থানায় আছে। ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।
জুলাই অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে অনেক অর্জন হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
তিনি বলেন, আমরা কাঠামোগত সংস্কার করে একটি পর্যায়ে উপনীত হতে পারবো যার মাধ্যমে পরবর্তী নির্বাচিত সরকার দেশকে সুষ্ঠু অর্থনীতি ও বৈষম্যহীন যাত্রায় অগ্রসর করতে পারবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আজ বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট ) বিকালে ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) মিলনায়তনে ছাত্র জনতার জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনের অংশ হিসেবে আয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠানমালায় তিনি একথা বলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বাণিজ্য এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
উপদেষ্টা বলেন, প্রস্তাবিত সংস্কারসমূহ স্বল্প সময়ে শতভাগ বাস্তবায়ন করা না গেলেও উপযুক্ত রোডম্যাপ নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে। কিভাবে আরো ভালো পারফর্ম করা যায় ,একটা ভালো নির্বাচন ডেলিভার করা যায় এ ব্যাপারে সকল উপদেষ্টা প্রধান উপদেষ্টার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ।
জুলাই পরবর্তী এক বছরে অনেক অর্জন হয়েছে উল্লেখ করে উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন , আমরা বাজার ব্যবস্থায় সিন্ডিকেশন নির্মূল করতে পেরেছি। টিসিবির কার্যক্রম কে অন্তর্ভুক্তিমূলক করতে পেরেছি।এক কোটি পরিবারকে কার্ড দেওয়ার কার্যক্রম হাতে নিয়েছি।আমাদের ম্যাক্রো ইকনোমিতে ব্যালেন্স সারপ্লাস,আমাদের ফিনান্সিয়াল একাউন্টে আমরা সারপ্লাস, রিজার্ভ যেটা সম্ভবত ১০ বিলিয়নে নেমে গিয়েছিল সেটা এখন ৩০ বিলিয়নে উঠে এসেছে। রপ্তানি বিগত ৩২ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়েছে।বৈষম্য দূরীকরণেও আমাদের অগ্রগতি হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
উপদেষ্টা বলেন , জুলাইয়ে যে আন্দোলন শুরু হয়েছিল এবং আমরা যে সমন্বিতভাবে,সমস্বরে অন্যায়ের বিরুদ্ধে না বলতে পেরেছি তার জন্য আমাদের মূল্য দিতে হয়েছে। ছোট্ট শিশু প্রিয়া গোপ থেকে ইয়ামিনকে জীবন দিতে হয়েছে। জুলাই আগস্টে আরো যে স্যাক্রিফাইস করতে হয়েছে তা অবর্ণনীয়। সেই দায়বোধ থেকে জুলাইকে স্মরণ করতে এসেছি, আরো বেশি জানতে এসেছি।
বিশেষ অনুষ্ঠানমালার মধ্যে ছিলো দুইজন জুলাই যোদ্ধার স্মৃতিচারণ, শোন মহাজন, টেস্টিমনি অব মার্টায়ার্স ফ্যামিলি ও কত বিপ্লবী বন্ধুর রক্তে রাঙা তথ্যচিত্র প্রদর্শন, জুলাই কেন্দ্রীক গীতি আলেখ্য ও আলোচনাসভা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো: আব্দুর রউফ বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানের তাৎপর্যকে হৃদয়ে ধারণ করে যদি আন্তরিকতা,সততা ও নিষ্ঠার সাথে দায়িত্ব পালন করা যায় তবেই আমরা বৈষম্যহীন, মানবিক ও কল্যাণমূলক এক টেকসই রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান বলেন,বিগত সতের বছর ক্রণিং ক্যাপিটালিজম হয়েছে।কতিপয় মানুষকে সুবিধা দেওয়ার জন্য সমগ্র রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করা হয়েছে। এই ব্যবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে জুলাই এর চেতনাকে ধারণ করে বৈষম্যহীন ন্যায় ভিত্তিক সমাজ কাঠামো,ন্যায় ভিত্তিক নীতি কাঠামো ও ন্যায় ভিত্তিক আচরণ প্রতিষ্ঠা করা দরকার।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ এর চেয়ারম্যান বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ ফয়সল আজাদ।ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী আরিফুল ইসলাম আরিফ ও সায়লা আক্তার শশী জুলাই অভ্যুত্থানের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন।
‘জুলাই পুনর্জাগরণ’ ও ‘তারুণ্যের উৎসব ২০২৫’ উদযাপন উপলক্ষ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের আওতাধীন রাষ্ট্রায়াত্ত বাণিজ্যিক ব্যাংক, বিশেষায়িত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সারাদেশে একযোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি মিরপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক স্টাফ কলেজ প্রাঙ্গনে ০৬ আগস্ট ২০২৫ তারিখে শুভ উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মাননীয় উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। প্রধান অতিথি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক অনেক ক্ষেত্রে কস্ট অব ফান্ডের চেয়ে কম সুদ হারে ঋণ বিতরণ করে সরকারি কর্মসূচি বাস্তবায়ন, দেশের খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অজর্ন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব নাজমা মোবারেক। বিশেষ অতিথি বলেন, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১০৩৮ টি শাখার মাধ্যমে ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে কৃষি খাতের উন্নয়ন ও সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। এসময় বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সঞ্চিয়া বিন্তে আলী, পরিচালনা পর্ষদের পরিচালক ড. এম. ছায়েদুর রহমান এবং মাকছুমা আকতার বানু, উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আঃ রহিম এবং মোহাঃ খালেদুজ্জামান, প্রধান কার্যালয় ও কৃষি ব্যাংক কমপ্লেক্স এর সকল মহাব্যবস্থাপক, সংশ্লিষ্ট উপ-মহাব্যবস্থাপক, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়ন (সিবিএ) এর নেতৃবৃন্দ ও অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের সকল কার্যালয় ও শাখা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত থেকে বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।
মাগুরার ঐতিহ্যবাহী সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ ও চলাচলের রাস্তায় দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতার কারণে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের।
বর্ষা মৌসুমের পুরো সময়টাই স্কুলের মাঠ পানিতে ডুবে থাকে। পানি নিষ্কাশনের নেই কোন ব্যবস্থা। বিদ্যালয়ের ভেতরে একটি পুকুর থাকলেও সেটা সামান্য বৃষ্টিতে ভরে উপচে মাঠ ও অভ্যান্তরিন রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। ফলে প্রায়ই মেয়েদের জুতা মোজা ভিজে যায়। ভেজা অবস্থায় ক্লাস করে অনেকে অসুস্থ হয়ে পড়ে। আর অসুস্থতার কারণে তারা প্রায় স্কুলে আসতে পারে না। এতে লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আবার দীর্ঘদিন ধরে পানি জমে থাকায় মশা মাছির উপদ্রব বাড়ছে। এ কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থী হুমায়রা জানায়, আমরা পানির কারণে ঠিকমতো স্কুলে আসতে পারি না । আমাদের লেখাপড়ার অনেক ক্ষতি হচ্ছে । এছাড়া প্রায়ই মেয়েরা পানির মধ্যে পড়ে যাওয়ার কারণে জামা কাপড় নোংরা হয়ে যায়। ফলে পরের দিন তারা স্কুলে আসতে পারে না।
বিদ্যালয়ে ঢুকেই প্রশাসনিক ভবন তার পেছনে রয়েছে পুকুর আর পুকুরের সাথেই রয়েছে ক্লাসরুম। বিদ্যালয় এর শেষ প্রান্তের মাঠে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে স্কুরের ছয়তলা একটি ভবন নির্মাণের কাজ চলছে। আর এ কারণেই ভবন নির্মাণের রড, ্ইট বালু, পাথরসহ বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ে ভারী যানবাহন চলাচলের ফলে ক্লাস রুমে যাওয়ার রাস্তায় বেশ কিছু ফাটল দেখা দিয়েছে। রাস্তাটি পুকুরের সাথে হওয়ায় পানির চাপে আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে। যে কোনো সময় এটা ভেঙে পুকুরে পড়ে যাওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই রাস্তা দিয়ে চলাচল করছে।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক নির্মল কুমার জোয়ার্দার বলেন, জলাবদ্ধতার কারণে শিক্ষার্থীরা ঠিকমতো স্কুলে আসতে পারে না। এ ছাড়া রাস্তায় ফাটল এবং জলাবদ্ধতার বিষয়টি জানিয়ে জেলা প্রশাসনের নিকট একটি লিখিত আবেদন দেয়া হয়েছে । বৃষ্টির পানি বের হওয়ার কোন ড্রেনেস ব্যবস্থা না থাকায় বছরের ৩/৪ মাস মাঠে পানি থাকে। চারি পাশে বড় বড় ভবন নির্মান হওয়ায় পানি বের হওয়ার কোন জায়গা নেই তাই মাঠে দ্রুত মাটি ভরাট প্রয়োজন।
মাগুরা সরকারি উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে লেখাপড়ায় অনেক সুনাম রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে জলাবদ্ধতা থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া অনেকটা পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষক শিক্ষার্থীদের দাবি দ্রুত মাঠে মাটি ভরাট এবং রাস্তা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা করা জরুরী। পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করে দ্রুত শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
বরগুনার আমতলী পৌরসভা কার্যালয় সড়কের উপর নির্মাণ সামগ্রী রাখা হয়েছে। সড়ক জুড়ে নির্মাণ সামগ্রী রাখায় যানবাহন ও ১৫ হাজার মানুষের চলাচলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। দ্রুত এ নির্মাণ সামগ্রী অপসারণের দাবী ভুক্তভোগীদের।
জানাগেছে, গত বছর জুলাই মাসে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অর্থায়ণে আমতলী পৌরসভার কেন্দ্রিয় লেকে সৌন্দর্য বর্ধণে ১২ কোটি ৫৬ লাখ ৯৮ হাজার ৩২৩ টাকা বরাদ্দ হয়। মেসার্স ইসলাম ব্রাদার্স লিমিটেড নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ওই কাজ পায়। শুরুতে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পৌরসভা কার্যালয়ের সামনের সড়কে নির্মাণ সামগ্রী রেখে কাজ শুরু করেন। ওই সময় থেকেই যানবাহন ও মানুষের চলাচলে ভোগান্তির শিকার হয়। গত তিন মাস ধরে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। কিন্তু ওই প্রকল্পের নির্মাণ সামগ্রী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান সড়কে ফেলে রাখে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, গত তিন মাস ধরে লেকের কাজ বন্ধ কিন্তু সড়কে নির্মাণ সামগ্রী ফেলে রেখেছেন ঠিকাদার।এ সড়ক দিয়ে একে সরকারী মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একে সংলগ্ন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, পৌরসভা কার্যালয়ে সেবা গৃহিতা ও পৌর শহরে অন্তত ১৫ হাজার মানুষ যাতায়াত করছে। নির্মাণ সামগ্রী সড়ক ফেলে রাখায় যানবাহন ও মানুষ চলাচলে ভোগান্তির শিকার হতে হয়। দ্রুত সড়ক জুড়ে ফেলে রাখা নির্মাণ সামগ্রী অপসারণের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ঘুরে দেখাগেছে, সড়কের বেশীর ভাগ স্থান জুড়ে নির্মাণ সামগ্রী বালু ও পাথর স্তুপ করে রাখা হয়েছে। বালু ও পাথর সড়কে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে।
ব্যাটারীচালিত অটোরিক্সা চালক ইসমাইল হোসেন বলেন, সড়কে নির্মাণ সামগ্রী রেখে দেয়ায় গাড়ী চালাতে সমস্যা হচ্ছে। অনেক সময় পাথর গাড়ীর চাকার নিচে পড়ে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা থাকে। সড়ক থেকে দ্রুত এ নির্মাণ সামগ্রী অপসারণের দাবী জানান তিনি।
মাহেন্দ্র চালক সোলায়মান বলেন, সড়কে বালু ও পাথর ফেলে রাখায় গাড়ী নিয়ে দ্রুত চলাচল করতে ভয় লাগে। গত তিন মাস ধরেই এমনভাবে চলে আসছি। পৌরসভা কর্তৃপক্ষ দেখে না দেখার ভান করছে।
পথচারী সোহেল, রিপন ও শিবলী ও শরীফ বলেন, সড়কে বালু ও পাথর স্তুপ করে রাখায় গাড়ী ও মানুষ চলাচলে বেশ সমস্যা হচ্ছে। যেহেতু কাজ বন্ধ সেহেতু নির্রমাণ সামগ্রী অপসারণ করে রাখাই ভালো।
পৌরসভার কেন্দ্রিয় লেক সৌন্দর্য বর্ধণ প্রকল্পের সদস্য সচিব রুবেল খাঁন বলেন, কাজ বন্ধ থাকায় বেশ কিছু নির্মাণ সামগ্রী সড়কের পাশে রাখা হয়েছে।
প্রকল্পের রিজিওনাল কো-অর্ডিনেটর এএসএম আবুল কালাম বলেন, প্রজেক্টের জায়গা না থাকায় নির্মাণ সামগ্রী সড়কের পাশে রাখা ছিল। ওই নির্মাণ সামগ্রীগুলো দ্রুত সরিয়ে নেয়া হবে।
আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পৌর প্রশাসক মোঃ রোকনুজ্জামান খাঁন বলেন, মানুষের ভোগান্তি দিয়ে কোন কাজ করা যাবে না। দ্রুত সময়ের মধ্যেই সড়ক থেকে নির্মাণ সামগ্রী সরিয়ে নেয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
পররাষ্ট্র বিষয়ক উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেছেন, গত এক বছরে বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবমুখী পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেছে, যেখানে জাতীয় স্বার্থ ও পারস্পরিকতা অগ্রাধিকার পেয়েছে, এবং একই সঙ্গে বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক প্রধান শক্তিগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্ক রক্ষা করা হয়েছে।
সম্প্রতি বাসসকে দেওয়া এক একান্ত সাক্ষাৎকারে উপদেষ্টা বলেন, ‘সামগ্রিকভাবে আমরা বিশ্বাস করি, গত এক বছরে আমরা বাংলাদেশের স্বার্থকে সামনে রেখে সব দেশের সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করেছি, আমরা কতটা সফল হয়েছি তা জনগণ এবং সিভিল সোসাইটি মূল্যায়ন করবে।’
উপদেষ্টা বলেন, এই ভারসাম্যপূর্ণ কূটনীতি গত এক বছরে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতির সফলতার মূল কেন্দ্রবিন্দু ছিল এবং অন্তর্বর্তী সরকারের আন্তর্জাতিক কৌশলে এটাই চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করছে।
তৌহিদ বলেন, বর্তমান প্রশাসন ‘বাংলাদেশ-কেন্দ্রিক’ একটি কৌশল নিচ্ছে যা ‘আলোকিত স্বার্থবোধ’-এর ভিত্তিতে গঠিত। তিনি বলেন, ‘যদি আমরা ভারতকে কিছু দিই, তাহলে আমি আশা করব আমরা ভারতের কাছ থেকেও সমপরিমাণ বা তার চেয়েও বেশি কিছু পেতে পারব- এটি কেবল ভারতের ক্ষেত্রেই নয়, সব দেশের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য।’
কূটনীতিতে প্রফেসর ইউনূসের প্রভাব
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কূটনীতিতে ভূমিকা তুলে ধরে তৌহিদ বলেন, অধ্যাপক ইউনূসের আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা ‘এই সরকারের একটি সম্পদ’।
তিনি বলেন, প্রফেসর ইউনূসের সুনাম অনেক সময় দরজা খুলে দেয় এবং এমন ফলাফল বয়ে আনে যা সাধারণ কূটনৈতিক প্রক্রিয়ায় অর্জন করা কঠিন হতো।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি ফোন কলের মাধ্যমে প্রফেসর ইউনূস সংযুক্ত আরব আমিরাতে বন্দী অনেক বাংলাদেশির সাধারণ ক্ষমা নিশ্চিত করতে সহায়তা করেন- এটি ইউনূস স্যারের অনুরোধেই সম্ভব হয়েছে। আমি এটাকে আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করি, এবং আমরা এটি ব্যবহার করছি।’
তিনি উল্লেখ করেন, শান্তিতে নোবেল বিজয়ী ইউনূসের দারিদ্র্য বিমোচন ও সামাজিক ব্যবসায় আজীবন অবদানের কারণে বিশ্বজুড়ে তার নাম সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়, যা বাংলাদেশকে এক অনন্য কূটনৈতিক সুবিধা এনে দিয়েছে।
‘তার প্রতি যে সম্মান রয়েছে তা কেবল রাজনৈতিক পরিসরে সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা সরকার, নাগরিক সমাজ, ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং বহুপাক্ষিক প্ল্যাটফর্ম জুড়ে বিস্তৃত,’ যোগ করেন তৌহিদ। তিনি বলেন, এই ধরনের ‘সফট পাওয়ার’ কৌশলগতভাবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে।
ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক
‘তৌহিদ বলেন, আগের ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকার ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখলেও বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারও ভারতের সঙ্গে শক্তিশালী কর্মসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করছে, যদিও কিছু জটিলতা এখনো রয়ে গেছে।
‘আমরা এক ধরনের ভারসাম্য তৈরি করার চেষ্টা করেছি’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করছি এবং বিশ্বাস করি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিকতা ভিত্তিক একটি ভারসাম্যপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারব।’
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাম্প্রতিক কিছু চ্যালেঞ্জের কথা উল্লেখ করে, যেমন বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতা ও স্থলবন্দর সংক্রান্ত অমীমাংসিত বিষয়, তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য এখনো চলমান রয়েছে।
তবে তিনি উল্লেখ করেন, দুইটি নির্দিষ্ট প্রবণতায় লক্ষণীয় হ্রাস দেখা গেছে, ভারতের দিকে ক্রস-বর্ডার কেনাকাটায় যাওয়া এবং চিকিৎসা ও পর্যটনের জন্য ভ্রমণ।
উপদেষ্টা বলেন, ‘আমি এটা বাংলাদেশ জন্য ক্ষতি হিসেবে দেখি না।’ তিনি মনে করেন এই ভোক্তা ভ্রমণ হ্রাসের অর্থনৈতিক প্রভাব কম।
চিকিৎসা পর্যটন সম্পর্কে তিনি বলেন, আগের মতো মানুষ এখন আর ছোটখাটো চিকিৎসার জন্য ভারত যাচ্ছে না, বরং চীন ও থাইল্যান্ডের মতো দেশে যাচ্ছে, বিশেষত যেসব সেবা এখনো বাংলাদেশে নেই।
‘আগে অনেক মানুষ ছোটখাটো চিকিৎসার জন্যও ভারতে যেত, যা আসলে অপ্রয়োজনীয় ছিল’ বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, চিকিৎসার জন্য ভারত ভ্রমণ কমে যাওয়ায় দেশের বিশেষায়িত হাসপাতালগুলোর রোগীর সংখ্যা বেড়েছে, যা দেশের স্বাস্থ্যখাতের জন্য একটি ইতিবাচক অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সীমান্তে হত্যা ও পুশ-ইন বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ
হোসেন বলেন, বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)-এর হাতে মানুষ হত্যার ঘটনায় বাংলাদেশ এরইমধ্যে আরও জোরালো ভাষায় প্রতিবাদ জানিয়েছে এবং এসব ঘটনার বিরুদ্ধে স্পষ্ট ও দ্ব্যর্থহীন নিন্দা জানিয়েছে।
তিনি জানান, গত এক বছরে বর্তমান সরকার আগের সরকারের তুলনায় ভারতকে আরও কঠোর ভাষায় প্রতিবাদপত্র দিয়েছে, যা কূটনৈতিক অবস্থানের ক্ষেত্রে আরও দৃঢ়তা প্রকাশ করে।
তিনি বলেন, সরকার ভারতকে অনুরোধ করেছে যেন এ ধরনের ‘নৃশংস কর্মকাণ্ড’ আর যেন না ঘটে, এবং প্রতিটি সীমান্ত হত্যার ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছে। বাংলাদেশ বলেছে, যারা এই হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী, তাদের শনাক্ত করে যথাযথ আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
তিনি বলেন, ‘‘বিশ্বের আর কোথাও সীমান্তে মানুষকে মারাত্মক অস্ত্র ব্যবহার করে গুলি করে হত্যা করা হয় না। ভারত বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন অজুহাত দেয়, কিন্তু সেগুলোর কোনোটিই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা বারবার ভারতকে বলে আসছি, এটা গ্রহণযোগ্য নয়।’
উপদেষ্টা আরও বলেন, বাংলাদেশ সীমান্ত হত্যার বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিবাদ অব্যাহত রাখবে।
তৌহিদ সীমান্তে অনিয়মিতভাবে ‘পুশ-ইন’ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন, যেখানে শুধু বাংলাদেশি নয়, ভারতীয় বাংলা ভাষাভাষী নাগরিকদেরও ঠেলে পাঠানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘এমনকি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীও এতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এতে প্রমাণ হয় যে এই পদ্ধতি সঠিক নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা ভারতকে বলেছি, মানুষ ফেরত পাঠানোর জন্য একটি নির্ধারিত প্রক্রিয়া রয়েছে। আমরা সেই প্রক্রিয়া মেনেই লোক ফেরত পাঠিয়ে আসছি। আমাদের পক্ষ থেকে দায়িত্ব পালনে ঘাটতি নেই। কিন্তু এই ধরনের অনিয়মিত পুশ-ইন গ্রহণযোগ্য নয়, এবং আমরা চাই এটি বন্ধ হোক। আমরা এ বিষয়েও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।’
পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা
গত এক বছরে বাংলাদেশ পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেছে। এই প্রচেষ্টার মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি, অর্থনৈতিক সহযোগিতা সম্প্রসারণ, এমনকি পাকিস্তানি নাগরিকদের জন্য ভিসা বাতিলও।
তৌহিদ হোসেন বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে পাকিস্তানের প্রতি কোনো ধরনের নীতি পরিবর্তনের ইঙ্গিত নেই। সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগ কেবল কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করার উদ্দেশ্যে নেওয়া, যাতে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত থাকে।
তিনি বলেন, ‘কেউ কেউ বলেন, আমরা নাকি পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকছি কিন্তু আমরা আদৌ কোনো ঝুঁক নিচ্ছি না; আমরা যা করছি তা হলো পাকিস্তানের সঙ্গে একটি স্বাভাবিক সম্পর্ক গড়ে তোলা, যাতে আমাদের স্বার্থ রক্ষা পায়।’
তিনি আরও বলেন, এই ধরনের কূটনৈতিক উদ্যোগ হলো সামগ্রিকভাবে একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতি রক্ষার অংশ।
তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, গত সরকার আমলে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ককে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করা’ হয়েছিল, যা ছিল অপ্রয়োজনীয়।
চীনের সঙ্গে সম্পর্ক
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বাংলাদেশের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের দীর্ঘস্থায়িত্ব ও ধারাবাহিকতা পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিবর্তন হলেও বাংলাদেশ-চীন দ্বিপক্ষীয় অংশীদারিত্ব স্থিতিশীলই থেকেছে।
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক সরকার পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কখনো খারাপ হয়নি।’ তিনি ঢাকা ও বেইজিংয়ের মধ্যকার এই সম্পর্কের গভীর ভিত্তি তুলে ধরেন।
কিছু মহলে বাংলাদেশ ‘চীনের খুব কাছাকাছি’ চলে যাচ্ছে বলে যে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়, উপদেষ্টা তা প্রত্যাখ্যান করেন। তিনি বলেন, চীনের সঙ্গে ঢাকার সম্পৃক্ততা জাতীয় স্বার্থে প্রোথিত।
তিনি বলেন, ‘চীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক আমাদের নিজেদের স্বার্থে আর অবশ্যই চীনেরও স্বার্থ রয়েছে।’
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দুই দেশের সহযোগিতা একতরফা নয়; বরং এটি পারস্পরিক লাভ এবং অভিন্ন অগ্রাধিকারভিত্তিক।
তিনি বলেন, ‘আমরা একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিচ্ছি।’ তিনি বোঝাতে চান, বাংলাদেশের চীনের সঙ্গে সম্পৃক্ততা অন্য কোনো দেশের সঙ্গে সম্পর্কের খরচে হচ্ছে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক
তৌহিদ হোসেন পুনর্ব্যক্ত করেন যে, বৈশ্বিক পরাশক্তিগুলোর মধ্যে ক্রমবর্ধমান ভূ-রাজনৈতিক মেরুকরণের মধ্যেও বাংলাদেশ একটি ভারসাম্যপূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে চলেছে।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশগুলো বাংলাদেশের চীনের সঙ্গে সম্পর্ক গভীর না করাকে পছন্দ করলেও ঢাকা নিজের জাতীয় স্বার্থ রক্ষার দিকেই বেশি মনোযোগী, কোনো নির্দিষ্ট বলয়ের সঙ্গে নিজেকে সম্পৃক্ত করতে আগ্রহী নয়।
তিনি বলেন, ‘আমরা আসলে চীনের দিকে ঝুঁকছি না; আমরা আমাদের স্বার্থ রক্ষা করছি এবং একই সময়ে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেও আমাদের সম্পর্ক রয়েছে।’
তৌহিদ স্বীকার করেন যে, বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতি ক্রমবর্ধমানভাবে দ্বি-মেরুভিত্তিক হয়ে উঠেছে, তবে তিনি যুক্তি দেন যে, বলয়ের সীমানা সবসময় এতটা কঠোর বা পরিষ্কার নয়।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ব পরিস্থিতি দ্বিমেরু এই বলয় ও সেই বলয় কিন্তু এটি নিখুঁত নয়।’
তিনি দেখান, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রও পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক এগিয়ে নিচ্ছে, যদিও তাদের ভারতের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক রয়েছে এবং একইসঙ্গে চীনের ইসলামাবাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কও রয়েছে।
এই জটিলতাই, তার মতে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য বাস্তববাদী এবং স্বার্থভিত্তিক পররাষ্ট্র সম্পৃক্ততা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।
তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় ১৫ শতাংশ শুল্ক হ্রাসে বাংলাদেশের সাফল্যের কথা তুলে ধরেন।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন
তৌহিদ হোসেন স্বীকার করেন, গত আট বছর ধরে বাংলাদেশ মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে ১০ লাখেরও বেশি জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিলেও অর্থবহ প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা এখনও দূরবর্তী।
তবে তিনি সম্প্রতি বিমসটেক সম্মেলনে মিয়ানমারের একটি অগ্রগতি উল্লেখ করেন, যেখানে দেশটি তাদের কিছু নাগরিককে যাচাই করার বিষয়টি স্বীকার করেছে।
তিনি বলেন, ‘এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া। তবে আমরা আশাবাদী। যদিও রাখাইন রাজ্যে শান্তি ফিরে না এলে প্রত্যাবাসন সম্ভব নয়। আমরা আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করি, কাউকে জোর করে ফেরত পাঠানো আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়।’
কূটনৈতিক মিশন সম্প্রসারণ
গত এক বছরে ঢাকা তার বৈশ্বিক কূটনৈতিক উপস্থিতি বৃদ্ধির চেষ্টা করেছে, যার অংশ হিসেবে নিউজিল্যান্ডে একটি নতুন হাইকমিশন এবং মালয়েশিয়ার জহর বাহরুতে একটি কনস্যুলেট খোলার প্রস্তুতি চলছে।
হোসেন বলেন, ‘আমরা নিউজিল্যান্ড ও জহর বাহরুতে তিন মাসের মধ্যে মিশন খুলতে পারব, কারণ আমরা এর জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছি।’
তিনি জানান, মালয়েশিয়ায় অভিবাসী বাংলাদেশিদের সহায়তায় পেনাং-এ আরেকটি কনস্যুলেট খোলার পরিকল্পনাও রয়েছে।
এছাড়া, আরও ছয়টি দূতাবাস ও কনস্যুলেটের অনুমোদন দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, যা দ্বিপাক্ষিক সম্পৃক্ততা জোরদার এবং প্রবাসীদের কনস্যুলার সেবা নিশ্চিত করার সরকারের প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত করে।
সবচেয়ে জরুরি প্রস্তাবগুলোর মধ্যে রয়েছে চীনের গুয়াংজুতে একটি কনস্যুলেট এবং আয়ারল্যান্ডে একটি পূর্ণাঙ্গ দূতাবাস।
তৌহিদ বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করব অর্থ উপদেষ্টাকে এসব জরুরি মিশনের অনুমোদনের জন্য রাজি করাতে।’ তিনি আরও বলেন, বাকি মিশনগুলো আগামী এক বছরে পর্যায়ক্রমে চালু করা হতে পারে, বাজেট অনুমোদনের ওপর নির্ভর করে।
প্রবাসী কল্যাণে সংস্কার
হোসেন বলেন, মধ্যপ্রাচ্য ও মালয়েশিয়ায় প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের দুর্ভোগ লাঘব করা বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান অগ্রাধিকারগুলোর একটি।
তিনি পাসপোর্ট ইস্যু সংক্রান্ত সেবা উন্নয়নের জন্য নেওয়া নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করেন। উদাহরণস্বরূপ, ওমানের ক্ষেত্রে, এখন ই-পাসপোর্ট সরাসরি আবেদনকারীর বাড়িতে পৌঁছে যাচ্ছে ওমান পোস্টের মাধ্যমে, ফলে দ্বিতীয়বার ব্যক্তিগতভাবে যেতে হচ্ছে না।
তিনি বলেন, ‘আমরা চাই প্রবাসীরা যেন কাজের সময় হারিয়ে না ফেলে। আমরা মিশনগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছি যেন তারা সেবা প্রত্যাশীদের জন্য ছায়াযুক্ত অপেক্ষাকক্ষ তৈরি করে—জেদ্দায় এটি ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে।’
হোসেন আরও বলেন, অভিবাসন খরচ অত্যধিক হওয়ার পিছনে অবৈধ কার্যক্রম এবং শোষণও অন্যতম কারণ।
এই সমস্যাগুলোর সমাধানে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রস্তাব করেছে, মধ্যপ্রাচ্যের ব্যস্ততম মিশনগুলোতে অতিরিক্ত একজন করে প্রবাসী কল্যাণ কর্মকর্তা এবং পাসপোর্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হোক, যাতে বড় প্রবাসী জনগোষ্ঠীকে আরও ভালোভাবে সেবা দেওয়া যায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সংস্কার
তৌহিদ বলেন, ‘আমরা মন্ত্রণালয়ে কাউকেই চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিচ্ছি না। গত এক বছরে এভাবে একজনকেও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।’
তিনি বলেন, প্রায় ৭০টি মিশন পরিচালনায় শুধু ৪০০ জন ক্যাডারের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে, যাদের এক-তৃতীয়াংশই সদর দপ্তরে কর্মরত।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে কোনো পোস্ট ফাঁকা রাখা হবে না। প্রয়োজনে ইউরোপে কিছু পোস্ট ফাঁকা রাখব।’
তৌহিদ উপসংহারে বলেন, সরকার এমন কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা সমস্ত দেশের সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠনমূলক, ভারসাম্যপূর্ণ ও বাস্তবসম্মত, এবং যা বাংলাদেশের দীর্ঘমেয়াদি জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করবে।
জুলাই পুনর্জাগরণ ও তারুণ্যের উৎসব-২০২৫ উদযাপনের অংশ হিসেবে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করেছে পদ্মা ব্যাংক পিএলসি।
৬ আগস্ট বুধবার গুলশানে বৃক্ষ রোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোঃ তালহা (চলতি দায়িত্বে)। এই সময় উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মোহাম্মদ ইমতিয়াজ উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও মীর শফিকুল ইসলাম- সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, হেড অব রিটেইল ব্যাংকিং ও কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স এন্ড কমিউনিকেশন ডিভিশন, মোঃ রিয়াজুল ইসলাম- হেড অব সিআরএমডি, হোসনে আরা আক্তার- চিফ লিগাল অফিসার এবং মোঃ ফারুকুজ্জামান- চিফ অপারেটিং অফিসার সহ অন্যান্য কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের আওতাধীন পদ্মা সেতু সাইট অফিসে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষের মানব সম্পদ উন্নয়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় ‘সেটেলমেন্ট অব অডিট অবজারভেশন’ বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত প্রশিক্ষণে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জনাব মোহাম্মদ আবদুর রউফ, সচিব, সেতু বিভাগ ও নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। প্রশিক্ষণে রিসোর্স পার্সন হিসেবে ছিলেন জনাব মোঃ ইকবাল হোসেন, উপপরিচালক, পরিবহন অডিট অধিদপ্তর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সচিব মহোদয় সরকারি অর্থের যথাযথ ব্যবহার ও অপচয়রোধ করার পাশাপাশি আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা বজায় রেখে দায়িত্ব পালন, দলিলাদি এবং নথিপত্র সংরক্ষণ করার নির্দেশনা প্রদান করেন। সরকারি বিধিবিধান মান্য করে অর্থ ব্যয়ের উপর জোর দেন, যাতে ভবিষ্যতে অডিট আপত্তি না হয়।
সেতু সচিব মহোদয় বলেন সরকারি সম্পদ কর্মকর্তাগণের নিকট জনগণের আমানত স্বরূপ, তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন এবং সরকারি সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে জনগণের কোন প্রকার ভোগান্তি না হয় সেই বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ প্রদান করেন।
এছাড়াও, সচিব সেতু বিভাগ সকলকে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন এবং সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীগণকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ প্রদানের মাধ্যমে দক্ষ জনশক্তিতে রুপান্তর করার জন্য গুরুত্বারোপ করেন। প্রশিক্ষণে সেতু বিভাগ, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ এবং পদ্মা সেতু সাইট অফিসের কর্মকর্তাগণ অংশগ্রহণ করেন।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ার জামালদীতে ট্রেলার ট্রাকের ধাক্কায় দেয়াল ধসে দুই শিশু আহত হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় এক শিশুকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে এ ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা হোসেন্দী-জামালদী সড়ক একঘন্টা অবরোধ করে বিক্ষোভ করে।
বৃহস্পতিবার (০৭ আগস্ট) সকাল এগারোটার দিকে হোসেন্দী-জামালদী সড়কের হাজী সিরাজুল হক স্কুল সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত দুই শিশু হলো, গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদী গ্রামের মফিজ উদ্দিনের ছেলে সারাফাত (৫) ও একই গ্রামের বিল্লাহ হোসেনের মেয়ে জামিয়া (৫)। তারা দুজনেই হাজী সিরাজুল হক স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী বলে জানা গেছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, সম্পর্কে শারাফাত এবং জামিয়া চাচাতো ভাই-বোন। স্কুল থেকে বাসায় ফিরে প্রাইভেট পড়তে যাবার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে ছিল তারা। এসময় রাস্তায় স্থানীয় সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির একটি ট্রেলার ট্রাক জামালদী বাস স্ট্যান্ডের দিকে যাচ্ছিল। গাড়ি দেখে তারা রাস্তার পাশের দেয়ালের দিকে সরে যায়। কিন্তু ট্রেলার ট্রাকটি দেয়ালটিতে ধাক্কা দিলে সেটি দুই শিশুর উপর ধসে পড়ে। এ সময় আশপাশ থেকে লোকজন ছুটে এসে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। উত্তেজিত জনতা দিনের বেলায় এই সড়ক দিয়ে বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রির মালবাহী ট্রাক চলাচল বন্ধের দাবিতে রাস্তা বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করে। এ সময় উত্তেজিত জনতা ঘাতক ট্রেলার ও একটি প্রাইভেটকার ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসে গজারিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। তাদের আশ্বাসে আন্দোলনকারীরা রাস্তা থেকে সরে গেলে প্রায় একঘন্টা পরে দুপুর সাড়ে বারোটার দিকে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে আহতদের স্বজনরা জানিয়েছেন,' এ ঘটনায় আহত দুই শিশুর মধ্যে সারাফাতের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পাঠানো হয়েছে। আহত অপরজন জামিয়া স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে'।
বিষয়টি সম্পর্কে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে সামুদা কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিতে যাওয়া হলে স্থানীয় গণমাধ্যম কর্মীদের ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা। তবে তাদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থাপক ( মানব সম্পদ বিভাগ) মো.হাফিজুর রহমান বলেন , 'ট্রেলার ট্রাকের মালিক আমরা নই। আমরা একটি এজেন্সি থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনি। গাড়ি সংক্রান্ত বিষয়ে সকল দায়ভার তাদের'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, ' এরকম একটি খবর আমি পেয়েছি। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। ঘাতক গাড়িটি স্থানীয় জনতা আটক করেছে আমরা তা উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছি। এ ব্যাপারে এখনো পর্যন্ত কেউ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেনি'।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আশরাফুল আলম বলেন, ' খবর পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলাম। দুই পক্ষের সাথে আমার কথা হয়েছে। আজ বিকেলে বিষয়টি নিয়ে আমরা বসব'
চট্টগ্রাম নগরের দুই নম্বর গেট থেকে অক্সিজেনগামী সড়ক অতিবৃষ্টির কারণে সৃষ্ট পানির ঢলে দেবে গেছে।
প্রাকৃতিক দুর্যোগে বন্ধ রয়েছে সড়কের এক পাশের যান চলাচল। ফলে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অব্যাহত বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে গাড়ির সংখ্যাও কম। এতে সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে নগরবাসীকে।
বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নগরীর বায়েজিদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামশুল আলম।
তিনি বলেন, বুধবার দিবাগত রাতের কোনো এক সময়ে স্টারশিপ ব্রিজ নামক স্থানের সড়ক দেবে গেছে। এর ফলে ওই সড়ক দিয়ে অক্সিজেনগামী যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। দুর্ঘটনা এড়াতে পুলিশের একটি টিম দায়িত্ব পালন করছে সেখানে।
তিনি আরও জানান, সড়কটির একাধিক জায়গায় ফাটল ধরে দেবে গেছে। দেবে যাওয়ার অংশে বাঁশ দিয়ে বেড়া দেওয়া হয়েছে এবং লাল ফিতা দিয়ে বেঁধে দেওয়া হয়েছে চারপাশ। বর্তমানে সড়কের এক পাশ দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে যানবাহন চলাচল করছে।
স্থানীয় বাসিন্দা আবু সালেহ বলেন, এই সড়কটি অনেক আগে থেকেই ভাঙবে ভাঙবে-এমন পরিস্থিতিতে ছিল। আমরা নিয়মিত যাওয়া-আসার সময় শঙ্কায়ও ছিলাম। আজ তা সত্যি হলো।
তিনি আরো বলেন, ঘটনা না ঘটা পর্যন্ত কর্তৃপক্ষের টনক নড়ে না।
বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) সকালে পিবিও আমবাগান আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বিজন রায় বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
আজ সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ২৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।
বুধবার দিবাগত রাত থেকেই চট্টগ্রামে টানা বৃষ্টি হয়েছে। তবে সকালের দিকে বৃষ্টি কমলেও জলজটের কবলে পড়ে অফিসগামী ও কর্মস্থলগামী মানুষ।
চট্টগ্রামের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়কে জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেলেও বেলা বাড়ার সাথে সাথে তা কমতে শুরু করেছে। তবে তীব্র হয়েছে গণপরিবহন সংকট।
পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়(পাবিপ্রবি)-তে বিভিন্ন সময় সংঘটিত অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের দায়ে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের পাবিপ্রবি শাখার ২৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৬ জনকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার, ৪ জনকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার, ৭ জনকে ৩ বছরের জন্য স্থগিত এবং ১১ জনের শিক্ষাগত সনদ আজীবনের জন্য বাতিল করা হয়েছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বিজন কুমার ব্রক্ষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।তিনি জানান, গত ২৬ জুলাই অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩তম রিজেন্ট বোর্ড সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ছাত্ররাজনীতি সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তাই সংশ্লিষ্টরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধিমালার পরিপন্থীভাবে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকায় এই কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
শাস্তিপ্রাপ্তদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকও রয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মতে, এই সিদ্ধান্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণ বিধিমালা, ২০২৫ এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ নিয়ে নির্বাচন কমিশন (ইসি)’র নবম কমিশন সভা শুরু হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সভাপতিত্বে তার সভাকক্ষে (কক্ষ নং-৩১৪) কমিশন সভা শুরু হয়।
ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) মো. শরিফুল আলম জানিয়েছেন সভায় রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০২৫। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২ (সংশোধন) অধ্যাদেশ ২০২৫ এবং বিবিধ বিষয়ে আলোচনা হবে।
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংস্কারকাজে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।তবে ১৪ টি বিদ্যালয়ের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত অবকাঠামো মেরামত করতে বরাদ্দ আসে। বরাদ্দের টাকা ছাড় দিতে কর্মকর্তারা উৎকোচ দাবি করায় প্রধান শিক্ষকরা প্রাক্কলন অনুযায়ী কাজ করতে পারেননি বলে অভিযোগ উঠেছে।
তথ্য বলছে, নোয়াখালী সোনাইমুড়ীতে বন্যা পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত ১২২ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এর মধ্যে ১৪ টি স্কুল মেরামতের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয় স্কুলের ভবনে রং, পলেস্টার,দরজাওয়ালা রং,আসবাবপত্র মেরামতসহ স্কুলের অন্যান্য কাজ সংস্কার করতে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে উপজেলার পোরকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গিয়ে দেখা যায়, বন্যা পরবর্তী স্কুলের ফ্লোর, কেচি গেইট ও দরজা-জানলা রং করতে ১ লক্ষ ৪৯ হাজার ৮৯০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক নাসিম আরা কোন রকম দরজা জানালা কাজ করে বিল পেতে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেছেন। রথি- গোবিন্দপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক কাজ ও মাঠ ভরাটের জন্য ৩৬ হাজার ৪১৬ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্কুলের প্রধান শিক্ষক মরিয়মের নেছা কয়েকটি বাল্ব লাগিয়েছেন।স্কুলের মাঠ ভরাট না করে বিল পেতে একইভাবে উপজেলা শিক্ষা অফিসে আবেদন করেছেন। তবে তিনি এখনো বিল পাননি। কাবিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের গাইড ওয়াল নির্মাণ,ফ্লোর সংস্কার,দরজা জানালা রং করতে ৫ লাখ ৬৬ হাজার ৬৮৫ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। ওই স্কুলে এখনো পর্যন্ত ঠিকাদার কাজ ধরেননি। উপজেলার নবাবগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮৭৩ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। স্কুলের ভবনের ভিতরে ও বাহিরে আস্তর ফেলে পুনরায় করা, ফ্লোর সংস্কারের এই টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। মেসার্স ইডিপিজ কর্পোরেশনের স্বত্বাধিকারী মাহফুজ আলম স্কুলের কাজটি টেন্ডারের মাধ্যমে পান। তিনি নামে মাত্র কাজ করাচ্ছেন বলে জানান স্কুলের প্রধান শিক্ষক লাকি সাহা। গান্ধী মেমোরিয়াল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৯৯ হাজার ২৫২ টাকা বরাদ পান। স্কুলের বাইরে বন্যায় রং নষ্ট হয়। পুনরায় রং করতে ও ১২ টি চেয়ার সংস্কার করতে এ বরাদ্দ পেয়েছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক গৌরী মজুমদার। তবে তিনি স্কুলের ভবনের বাইরের রং এখনো করাননি। চেয়ার কিনতে অনলাইনে অর্ডার করেছেন। কাজ সমাপ্তি দেখিয়ে উপজেলা শিক্ষা অফিসে বিল জমা দিয়েছেন। উপজেলা শিক্ষা অফিসার চেকে স্বাক্ষর করে বিল ছাড় দিয়েছেন। তবে তিনি এখনো টাকা উত্তোলন করেননি। এটাকার একটি অংশ উপজেলা শিক্ষা অফিসে দিতে হবে বলে প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন।
সোনাইমুড়ী উপজেলা প্রকৌশলী ইমদাদুল হক জানান, ১৪ টি স্কুলের মধ্যে ১০ টি স্কুল উপজেলা প্রকৌশলী বিভাগ তদারকি করছে। আর ৪ টি স্কুল পরিচালনা কমিটি ও প্রধান শিক্ষকরা বন্যা পরবর্তী স্কুল মেরামত কাজ করাচ্ছে।দু একটি স্কুলে পলেস্টারের কাজ চলমান।তবে বৃষ্টির কারণে রঙের কাজ করানো সম্ভব হচ্ছে না।
সোনাইমুড়ি উপজেলা শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, তিনি এখনো সংস্কার কাজ সরেজমিনে দেখেননি। তবে কাজ চলমান রয়েছে।এ সংস্কার কাজে কোন স্কুল থেকেই কোন টাকা দাবি করেনি শিক্ষা অফিসের কোন কর্মকর্তারা বলে তিনি দাবি করেন।
সরকারি তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে জাপানি নাগরিকদের জনসংখ্যা রেকর্ড পরিমাণে হ্রাস পেয়েছে। এই হ্রাসের সংখ্যা ৯ লক্ষাধিক। দেশটি তার চিরকালীন নিম্ন জন্মহারের সঙ্গে লড়াই করছে।
টোকিও থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
অনেক উন্নত দেশ নিম্ন জন্মহার নিয়ে লড়াই করছে, তবে জাপানে এই সমস্যা প্রকট, দেশটিতে বছরের পর বছর ধরে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা এই পরিস্থিতিকে ‘নীরব জরুরি অবস্থা’ বলে অভিহিত করে এর বিপরীতমূখী প্রবণতা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে আরও নমনীয় কর্মঘণ্টা ও বিনামূল্যে ডে কেয়ারের মতো পরিবার-বান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন।
গত বছর, জাপানির সংখ্যা ৯ লাখ ৮ হাজার ৫৭৪ বা ০ দশমিক ৭৫ শতাংশ কমে ১২ কোটি ৬৫ লাখে দাঁড়িয়েছে।
বুধবার অভ্যন্তরীণ বিষয়ক মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১৯৬৮ সালে জরিপ শুরু হওয়ার পর থেকে টানা ১৬ বছরে এই হ্রাস সবচেয়ে বড়।
তবে, ২০১৩ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে বিদেশি বাসিন্দার সংখ্যা ছিল সর্বোচ্চ ।
দেশের মোট জনসংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় ০দশমিক ৪৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। সর্বশেষ পরিসংখ্যানগুলো এমন এক সময় এসেছে যখন সরকার দৃঢ়ভাবে কম জন্মহার বাড়ানোর জন্য লড়াই করছে। এদিকে মুদ্রাস্ফীতি ও কিছু ভোটারের মধ্যে অন্যান্য উদ্বেগের কারণে ‘জাপানিজ ফার্স্ট’ স্লোগান দিয়ে একটি নতুন বিরোধী দলের উত্থান ঘটেছে। অভিবাসী বিরোধী দলটির দাবি বিদেশিরা জাপানি নাগরিকদের তুলনায় বেশি কল্যাণও সুবিধা ভোগ করছে।
বয়স অনুসারে, ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জাপানি নাগরিকরা জনসংখ্যার প্রায় ৩০ শতাংশ, আগের বছরের তুলনায় সামান্য বৃদ্ধি পেয়ে ১৫ থেকে ৬৪ বছর বয়সীদের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের মতে, ক্ষুদ্র মোনাকোর পরে জাপান বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম বয়স্ক জনসংখ্যার দেশ।
জুন মাসে প্রকাশিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, গত বছর জাপানে জন্ম সংখ্যার রেকর্ড প্রথমবারের মতো ৭ লাখের নিচে নেমে আসে।
তথ্যে অনুযায়ী দেশটিতে ২০২৪ সালে ৬ লাখ ৮৬ হাজার ০৬১ নবজাতক জন্মগ্রহণ করে, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ৪১ হাজার ২২৭ জন কম । ১৮৯৯ সালে রেকর্ড শুরু হওয়ার পর থেকে এই সংখ্যা সর্বনিম্ন।