নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় যাত্রীবাহী বাস ও বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।
শনিবার বিকেলে বেগমগঞ্জের দুর্গাপুর ইউনিয়নের সরুরগো পোল এলাকায় নোয়াখালী-ফেনী আঞ্চলিক মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশুর নাম জোসনা আক্তার (১১)। সে নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার নাটেশ্বর ইউনিয়নের কাশিপুর গ্রামের মোল্লাবাড়ির সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়, পরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আহতদের মধ্যে পাঁচজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন সোনাইমুড়ীর কাশিপুর গ্রামের মোল্লাবাড়ির আল আমিন (৮), জহুরা বেগম (৫৫), আবুল খায়ের (৬০), রিজভী (২৭), বেলাল হোসেন (৫৫), মনোয়ারা (৫৫)।
হাইওয়ে পুলিশ জানায়, বিকেল পৌনে ৪টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে বাঁধন পরিবহনের একটি বাস নোয়াখালীর সোনাপুরের দিকে যাচ্ছিল। নোয়াখালী-ফেনী আঞ্চলিক সড়কের সরুরগো পোল এলাকায় বাসটি রং সাইডে ঢুকে পড়ে। এ সময় চালক নিয়ন্ত্রণ হারালে বাসটির সঙ্গে সোনাইমুড়ীর কাশিপুর থেকে ছেড়ে আসা বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে মাইক্রোবাসে থাকা শিশু জোসনা মারা যায়। আহত হন মাইক্রোবাসের আরও ১০ যাত্রী।
চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মফিজ উদ্দিন ভূঁইয়া দৈনিক বাংলাকে বলেন, দুর্ঘটনায় বরযাত্রীবাহী মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। এ কারণে মাইক্রোবাসের যাত্রীরা বেশি হতাহত হন। বাসটি আটক করা গেলেও চালক পালিয়ে গেছেন। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
নেত্রকোণার পূর্বধলায় ‘পূর্বধলা কাচারী আশ্রায়ন’ প্রকল্পে’র ৮ বছরের শিশু ধর্ষণে’র অভিযোগে ঘটক আবু তাহেরকে আটক করেছে পূর্বধলা থানার পুলিশ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুর দেড়টায় পশ্চিম পূর্বধলা কাচারী আশ্রায়ন প্রকল্প এলাকার নিজ বসত ঘর-৩ নং থেকে তাকে আটক করা হয়েছে। আবু তাহের (৫৫) উপজেলার পূর্বধলা সদর ইউনিয়নে’র মৃত ঝাটু চৌকিদারে’র ছেলে।
পূর্বধলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিশুটি বোবা। তাকে মঙ্গলাবার সন্ধ্যায় আশ্রায়ণ প্রকল্পে’র নিজ বসত ঘরে ডেকে এনে ধর্ষণ করে। পরে শিশুটির চিৎকার শুনে তার মা শিশুটিকে উদ্ধার করে। পরদিন বুধবার ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে পূর্বধলা থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পূর্বধলা থানার মামলা নং-৪।
পরবর্তীতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে এসআই এস.এম শফিউল্লাহ সঙ্গীয় ফোর্সসহ তাকে আটক করে।
ওসি রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘পশ্চিম পূর্বধলা আশ্রায়ন প্রকল্পে শিশু ধর্ষণে’র অভিযোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে আবু তাহের নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে নেত্রকোণা আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।’
ভাগ্না-ভাগ্নীর বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ শুনার আনন্দে হাতি নিয়ে স্কুলে হাজির মামা। স্কুলের আঙ্গিনায় হাতির পিঠে উঠে আনন্দ উপভোগ করেন স্কুলের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক ও অভিবাবক। বাড়তি আনন্দ উপভোগ করতে থাকেন একে একে সবাই। প্রায় সময় মৌলভীবাজারে রাস্তায় হাতি নিয়ে ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষকে আনন্দ দেন হাতির মালিক সালমান। কমলগঞ্জ উপজেলার সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আম্বিয়া কিন্ডার গার্টেন স্কুলে দেখা যায় এমন চিত্র।
হাতির মালিক সালমান বলেন, ‘আমাদের ২টা হাতি। প্রায় সময় আমি ও মাহুত এভাবে ঘুরে ঘুরে সবাইকে আনন্দ দেই। তবে কারো কাছ থেকে আমরা টাকা নেই না। স্থানীয় পৌর এলাকায় প্রতিষ্টিত কমলগঞ্জের সুনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আম্বিয়া কিন্ডার গার্টেনে আমার ভাগিনা পড়াশোনা করে। তাদের বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশ হয়েছে জেনে আমি মাহুতের সহযোগীতায় হাতিকে নিয়ে সেখানে যাই। রেজাল্ট প্রকাশ হয়। ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলের বাহিরে বের হয়। তখন তাদেরকে হাতির মাধ্যমে বিভিন্ন অঙ্গ ভঙ্গি দেখিয়ে আনন্দ দেই। পরে আমার ছোট ভাগিনাকে হাতির উপড়ে বসে বাড়িতে নিয়ে আসি। আসার পথে শত শত মানুষ হাতি ও আমাদের ছবি তুলতে ব্যস্ত সময় পাড় করে। তিনি আরও বলেন,আমরা হাতিকে বিভিন্ন জায়গায় সার্কাস ও গাছ টানার কাজে ব্যবহার করে থাকি।’
আম্বিয়া কিন্ডার গার্টেন শিক্ষক মোস্তাফিজুর রহমান জানান, আসলে এখন হাতির সংখ্যা খুব কম দেখা যায়। এক সময় হয়তো বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আমাদের স্কুলে বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্ট প্রকাশের দিন ছিল আজ। প্রায় সময় দেখি সখের বসে হাতির মালিক ঘুরে ঘুরে সাধারণ মানুষদের আনন্দ দিয়ে থাকেন। উনার ভাগনী ও ভাগিনা আমাদের স্কুলে পড়াশোনা করেন। তাদের ও রেজাল্ট জানানো হয়। সেই আনন্দের খবর শুনে তিনি হাতি নিয়ে আমাদের স্কুলে হাজির হন। তখন আমাদের বাচ্চারা রেজাল্টের পাশাপাশি বাড়তি আনন্দ উপভোগ করেন।
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাসচাপায় দুই শিশু নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চকরিয়ার ডুলহাজারা এলাকায় (চট্টগ্রাম-কক্সবাজার) মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত দুই শিশু হলো, ডুলহাজারা ইউনিয়নের মাইজ পাড়া সৌদি প্রবাসী নাছির উদ্দিনের দুই সন্তান আব্দুর রহমান (৮) ও সাবা আক্তার (৬)। এতে গুরুতর আহত হয়ে প্রবাসী নাছির উদ্দিনের এক ভাতিজী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন ইউপি চেয়ারম্যান হাসানুল ইসলাম আদর।
মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল বাহার মজুমদার বলেন, ‘ডুলহাজারা এলাকায় দুই শিশু তাড়াহুড়ো করে সড়ক পার হতে গিয়ে বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়। তাদের মরদেহ উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পাঠানো হয়েছে। বাসটি পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের (ইউএন) মহাসচিবের শান্তিরক্ষা এজেন্ডার সাতটি অগ্রাধিকারের প্রতি সমর্থন অব্যাহত রাখবে।
তিনি বলেন, ‘আমাদের নীতিগত অবস্থান, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বৈদেশিক নীতি-আদর্শের মধ্যে নিহিত, যা আমাদের একটি পথপ্রদর্শক শক্তি হিসাবে কাজ করে। এই অবস্থানটি ধারাবাহিকভাবে আমাদেরকে শান্তির সংস্কৃতির প্রচারসহ জাতিসংঘের শান্তি প্রচেষ্টায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে বাধ্য করে, শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রাখা এবং শান্তি বিনির্মাণে সহায়তা করা।’
আজ ঢাকায় প্রাপ্ত একটি বার্তা অনুসারে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বুধবার ঘানার আক্রায় জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায় প্যানেলিস্ট হিসেবে বক্তব্য রাখছিলেন। সে সময় এসব কথা বলেন।
মোমেন একটি উচ্চ পর্যায়ের বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন, তিনি জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের ঢাকার পক্ষে শান্তিরক্ষার অঙ্গীকার করেছেন।
এর আগে, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী তার হাঙ্গেরির সমকক্ষ পিটার সিজ্জার্তোর সঙ্গে মন্ত্রিসভার সাইডলাইনে বৈঠক করেন।
দুই পররাষ্ট্রমন্ত্রী উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে পারস্পরিক স্বার্থের বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করেন।
ঢাকার ধামরাইয়ে বাসচাপায় দুই পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ধামরাইয়ের থানা রোড এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে একজনের নাম সোহেল পারভেজ (৩২), বাড়ি টাঙ্গাইল জেলায়। অন্যজনের নাম-পরিচয় এখনো জানা যায়নি।
ধামরাই ফায়ার সার্ভিসের সিনিয়র স্টেশন অফিসার সোহেল রানা বলেন, ‘সকাল সোয়া ৯টার দিকে আমাদের কাছে দুর্ঘটনার খবর আসে। ঘটনাস্থলে গিয়ে একজনকে মৃত অবস্থায় পাই।’
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবুল হাসান জানান, ‘আমি যতটুকু শুনেছি, সকালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের থানারোড এলাকায় সেলফি পরিবহনের একটি বাস থামিয়ে যাত্রী নামাচ্ছিল। এসময় পেছন থেকে আসা ঢাকাগামী সেলফি পরিবহনের আরেকটি বাস এটিকে ওভারটেকিংয়ের চেষ্টা করে। এসময় আইল্যান্ড ঘেঁষে অপেক্ষারত তিন পথচারীকে চাপা দেয় সেলফি পরিবহনের একটি বাস। এতে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার পর আরও একজনের মৃত্যু হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ জনতা সেলফি পরিবহনের একটি বাস আটক করে ভাঙচুর চালিয়েছে। তবে বাসটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় পরবর্তীতে আইনগত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’
পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবি ও ভুয়া ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে নগদ অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে এক প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ ছাড়া বিকাশের মাধ্যমে প্রতারণার দায়ে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বুধবার গাজীপুর মহানগর পুলিশের সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- জামালপুরের সরিষাবাড়ী থানার বাঘমারা গ্রামের আলহাজ মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া, শেরপুর জেলার তাতীহাটি পূর্বপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার ছেলে আকিল হাসান ও তার শ্বশুর কালিয়াকৈর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের দধী মণ্ডলের ছেলে শফিকুল ইসলাম।
উপকমিশনার মোহাম্মদ ইব্রাহীম খান বলেন, গাজীপুর মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার ফজলুল করিমের নাম ও ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ফেসবুক আইডি তৈরি করে প্রতারক লিটন। পরে আউটসোর্সিংয়ে চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে নগদ টাকা আত্মসাৎ করেন লিটন। এ ঘটনায় পুলিশের সাইবার টিম ওই ফেসবুক আইডি শনাক্ত করে জামালপুর জেলায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
পুলিশ কর্মকর্তা আরও বলেন, গ্রেপ্তার লিটনের জব্দকৃত দুটি মোবাইল ফোন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, লিটন পুলিশ, র্যাব, ফায়ার সার্ভিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম, ছবি দিয়ে একাধিক ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎ করে আসছে।
ভুক্তভোগী পুলিশ কর্মকর্তা ফজলুল করিম বলেন, তার নাম ও ছবি ব্যবহার করে প্রতারক লিটন অন্তত ২০০ মানুষের কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ করেছে। চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে কারও কাছে ১০ হাজার, কারও থেকে ২০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে সে সরকারি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ছবি, নাম ব্যবহার করে দীর্ঘ দিন ধরে প্রতারণা করছে।
এদিকে, বিকাশ, নগদ এজেন্টদের পিন নম্বর সুকৌশলে সংগ্রহ করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় আকিল হাসান ও তার শ্বশুর শফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এ ব্যাপারে উপকমিশনার কামাল হোসেন বলেন, গত ১৯ নভেম্বর সদর থানায় একটি বিকাশ, নগদ অ্যাকাউন্টসহ মোবাইল ফোন এবং নগদ ৫০ হাজার টাকা চুরির মামলা হয়। মামলা তদন্ত করে গতকাল গাজীপুর মহানগর টঙ্গী পূর্ব ও কালিয়াকৈর থানা এলাকা থেকে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানান, তারা বিকাশ প্রতারণার ঘটনা ধারাবাহিকভাবে ঘটিয়ে আসছে। তাদের চক্রের সদস্যরা বিকাশ এজেন্ট দোকানকে টার্গেট করে তাদের লেনদেনকালে সুকৌশলে এজেন্টদের বিকাশ, নগদের পিন নম্বর সংগ্রহ করে। এজেন্টদের বিকাশ পিন নম্বর সংগ্রহের পরবর্তীতে তারা রাতে বা সুবিধামতো দিনের যেকোনো সময় বিকাশ, নগদ অ্যাকাউন্ট চালুকৃত মোবাইল ফোনটি চুরি করে পিন নম্বর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে। গ্রেপ্তারের পর বাদীর চুরি হওয়া মোবাইল ফোন এবং নগদ ৪৫ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া গ্রেপ্তারকৃতরা বাদীর নগদ এজেন্ট ও বিকাশ পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট থেকে ৩ লাখ ৪৪ হাজার ৯০০ টাকা বিভিন্ন পার্সোনাল এবং এজেন্ট নম্বর দিয়ে টাকা উত্তোলন করে নেয়।
নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ মসজিদের দুটি ব্যাংক হিসাব থেকে সোয়া তিন কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিরণ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী।
রোববার ঋণখেলাপির দায়ে নোয়াখালী-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণের মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেছেন নোয়াখালী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। পরে ওই দিন রাতে এমপির অনুসারীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ইসলামী ব্যাংকের একটি পে-অর্ডারের ছবি দিয়ে ঋণ পরিশোধের বিষয়টি প্রচার করেন। এতে দেখা যায়, গত ২৬ নভেম্বর মামুনুর রশিদ কিরণ ইসলামী ব্যাংকের একটি পে-অর্ডারে এএসটি ভেভারেজ কোম্পানির অ্যাকাউন্টে এক কোটি ৪০ লাখ টাকা ঋণ পরিশোধ করেছেন। আবার ওই দিনই ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মসজিদের হিসাব থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা এবং ২৩ নভেম্বর সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে দুই কোটি তোলা হয়।
জানা যায়, বেগমগঞ্জ উপজেলার চৌমুহনী বড় জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি পদে সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণ ও সাধারণ সম্পাদক পদে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি এমপি কিরণের অনুসারী সামছুল হক দায়িত্ব পালন করছেন। চৌমুহনী বড় মসজিদ কমপ্লেক্সের নামে সাউথইস্ট ব্যাংক ও ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের চৌমুহনী বাজার শাখায় দুটি হিসাব রয়েছে। দৈনিক বাংলার হাতে আসা ব্যাংক দুটির হিসাব বিবরণীতে দেখা যায়, এ বছরের ২৩ নভেম্বর সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরনের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের মাধ্যমে সাউথইস্ট ব্যাংক থেকে দুই কোটি এবং ২৬ নভেম্বর ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক থেকে এক কোটি ২০ লাখ টাকা তোলা হয়েছে ।
নোয়াখালী জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থিতার জন্য দাখিল করা সংসদ সদস্য মামুনুর রশিদ কিরণে মনোনয়নপত্রে দেখা যায়, প্রস্তাবকারী হিসেবে ওই মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক এবং সমর্থনকারী হিসেবে এমপি কিরণের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের নাম ও স্বাক্ষর রয়েছে।
ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের মসজিদের হিসাব বিবরণী থেকে পাওয়া একটি মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করা হলে নম্বরটি চৌমুহনী মিতালি বেকারির মালিক ও মসজিদ কমিটির সাবেক সেক্রেটারি হাজি মোহাম্মদ খলিলুর রহমানের। মুঠোফোনে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি ১৫ বছর ওই মসজিদের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। মসজিদের সভাপতি, সেক্রেটারি ও কোষাধ্যক্ষের যৌথ স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালনার প্রস্তাব করলেও এমপি সাহেবের ইচ্ছায় শুধু সভাপতি ও সেক্রেটারির স্বাক্ষরে ব্যাংক হিসাব পরিচালিত হয়। আমার ৮০ বছর বয়স। তাই এ বছরের শুরুতে দায়িত্ব ছেড়ে দিই। পরে শামসুল হককে দায়িত্ব দেন এমপি সাহেব। আমি দায়িত্ব ছাড়ার সময় দুটি ব্যাংকে মসজিদের নামে অ্যাকাউন্টে আনুমানিক চার থেকে সাড়ে চার কোটি টাকা ছিল। এখন ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন মুসল্লি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘মসজিদের টাকা ব্যাংকে সঞ্চয় করে রাখা হয়। টাকা উঠাতে হলে সদস্যদের প্রস্তাব ও রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে কী কাজ করা হবে তা সুনির্দিষ্ট করে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সেখানে কেউ সিগনেচার অথরিটি আছেন বিধায় পারসোনাল কাজে টাকা ওঠাবেন, এটা কোনো নিয়মের ভেতর পড়ে না- এটা নিন্দনীয়। একটি মসজিদের টাকা তছনছ করে তিনি অনৈতিক কাজ করেছেন।’
ব্যাংক থেকে টাকা ওঠানোর বিষয়ে মুঠোফোনে জানতে চাইলে ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকের ব্যবস্থাপক রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘চৌমুহনী বড় মসজিদের একটি অ্যাকাউন্ট এ ব্যাংকে আছে। মসজিদের সভাপতি এবং সেক্রেটারি রেগুলেশনের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা করেন। আদালতের অনুমতি ছাড়া আমি কোনো অ্যাকাউন্টের তথ্য দিতে পারি না। আপনিই বলেন আপনার নিজের অ্যাকাউন্টের কোনো তথ্য যদি কেউ জানতে চায়. তা আমি কি দিতে পারব?’
এ বিষয়ে জানতে সাউথইস্ট ব্যাংক চৌমুহনী শাখার ব্যবস্থাপক নুর উদ্দিন আবসার মুঠোফোনে বলেন, ‘ব্যাংক হিসাবের বিষয়ে মসজিদ কমিটি বলতে পারবে। আদালতের অনুমতি ছাড়া আমরা কোনো তথ্য দিতে পারব না।’
মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক সামছুল হক মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি আপনাকে বলব, আমি এখন ব্যস্ত আছি। মসজিদের সংস্কার কাজ চলছে। তারপর আপনি যখন জানতে চেয়েছেন আমি আপনাকে ফোন দেব। এখন রাজনৈতিক কারণে ব্যস্ত আছি।’
এমপি মামুনুর রশিদ কিরণের ম্যানেজার মহিউদ্দিনের মুঠোফোনে টাকা তুলে নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি ‘এটা যারা চেক দিয়েছে তাদের জিজ্ঞেস করেন, কার নামে দিয়েছে’ বলে ফোন কেটে দেন।
এ বিষয়ে নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মামুনুর রশিদ কিরণ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘টাকাগুলো রেজ্যুলেশনের মাধ্যমে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নিয়েছি। আমার বিরুদ্ধে কিছু লোক আছে যারা মসজিদে আসে না, মিটিংয়ে আসে না, মসজিদের উন্নতি চায় না। আমি তো কখনো মসজিদের ক্ষতি করিনি। যেকোনো কাজ করি নিঃস্বার্থভাবে। আমরা এস আলমের কাছে ফ্যাক্টরি বিক্রি করেছি, জানুয়ারিতে টাকা দেবে। তাদের (মসজিদ কমিটি) সঙ্গে আমার কথা হয়েছে ছয় মাস, ছয় মাস না আমরা দু-তিন মাসের মধ্যে টাকা দিয়ে দেব, আগামী মাসেই টাকা দিয়ে দেব। এগুলো আমরা হাওলাত নিয়েছি, তা পরিশোধ করে দেব,এটা এমন কী,এটা তো কোনো সমস্যা না।’
ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘একটা অনলাইন নিউজ পোর্টালে যা লিখেছে তা সঠিক নয়। আমাদেরকে এস আলম ১৫ কোটি টাকা দিয়েছে। ওখান থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের পাওনা টাকা পে অর্ডার করে দিয়েছি।’
নাটোরে গুলিসহ একটি রিভলবার, একটি চাইনিজ কুড়াল ও ২০ পিস ইয়াবাসহ দুজনকে আটক করেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর।
আজ বুধবার দুপুরে শহরের পটুয়াপাড়া মৎস্য ভবনের সামনে থেকে তাদেরকে আটক করা হয়।
জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ লুৎফর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শহরের পটুয়াপাড়া মৎস্য ভবনের সামনে অভিযান চালিয়ে তারা মোটরসাইকেলসহ দাঁড়িয়ে থাকা দুই যুববকে সন্দেহ হলে তল্লাশী করে। তল্লাশীকালে রিয়াজুল ইসলাম অন্তরের কোমর থেকে গুলি ভর্তি একটি রিভলবার, একটি চাইনিজ কুড়াল ও ২০ পিস ইয়াবা উদ্ধার এবং তাদেরকে আটক করা হয়।
পরে আটককৃতদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা দায়ের করে সদর থানায় সোপর্দ করা হয়। এ সময় তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও জব্দ করা হয়। প্রাথমিকভাবে আটককৃতরা জানান, অস্ত্র ও মাদক বিক্রির জন্য তারা এগুলো তাদের কাছে রেখেছিল।
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে গলায় গলায় পেঁচিয়ে মোস্তফা কামাল (৪২) নামে এক ব্যবসায়ী ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
আজ বুধবার দুপুরে উপজেলার ফলদা ঘোনাপাড়া থেকে গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মৃত মোস্তফা কামাল ঘাটাইল উপজেলার লোকেরপাড়া ইউনিয়নের আনন্দপাড়া গ্রামের আমির আলীর ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, কামাল ও স্ত্রী রুনা খাতুনের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আছে। তার স্ত্রীর পরকীয়া আসক্ত হওয়া নিয়ে প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ লেগে থাকত। এতে মানসিকভাবে হতাশ হয়ে পড়েন কামাল। গতকাল মঙ্গলবার রাতের কোনো সময় শশুর বাড়িতে এসে সে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে।
নিহতের বড় ভাই সাজেদুল করিম বলেন, ‘কামাল হতাশাগ্রস্থ হয়ে তার স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে ফাঁস দিতে পারে বলে আমরা ধারণা করছি।’
এ বিষয়ে ফলদার ইউপি সদস্য আব্দুর রাজ্জাক জানান, গাছে মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে স্থানীয়রা পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ঘটনায় ভূঞাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আহসান উল্লাহ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এসময় তার পকেট থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটে স্ত্রীর পরকীয়া করার বিষয়টি লেখা আছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ার সলঙ্গায় এক পরিবারে বড় ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে তাকে দেখতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে ছোট ভাইয়ের।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হন বড়ভাই আলহাজ নূর মুহাম্মাদ তালুকদার তোতা (৮৩)। চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মৃত্যু হলে মৃত ভাইকে দেখতে যান ছোটভাই জহুরুল ইসলাম তালুকদার (৭৮)। সে রাতেই ১১টার দিকে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয় তার।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মোখলেসুর রহমান।
মৃত আলহাজ নূর মুহাম্মাদ তালুকদার রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংকের সাবেক এজিএম ও মৃতের ছোটভাই গোলকপুর ফাজিল ডিগ্রী মাদরাসার সাবেক অধ্যক্ষ জহুরুল ইসলাম তালুকদার।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আলহাজ নূর মুহাম্মাদ তালুকদার তোতা বনবাড়িয়া গ্রামের একজন গর্বিত কৃতিসন্তান। তিনি বনবাড়িয়া বাইতুন নূর জামে মসজিদ, নূরানী মাদরাসা ও কবরস্থানের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। পাশাপাশি তার ছোট ভাই জহুরুল ইসলাম এলাকায় শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি।
চেয়ারম্যান বলেন, আজ বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয় বনবাড়িয়া নূরানি মাদরাসায় মৃতদের জানাজা শেষে বনবাড়িয়া কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বৃদ্ধ মা, দুই ছেলে ও এক ছেলের স্ত্রীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে।
৯৯৯-এ কল করে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যরা মুক্ত হন। গতকাল মঙ্গলবার সকালে মধুপুর পৌর এলাকার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের পুন্ডুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়দের সূত্রে জানা যায়, নির্যাতনের শিকাররা হলেন ওই গ্রামের মৃত নুরুল ইসলামের স্ত্রী শাফিয়া বেগম (৫৫), বড় ছেলে আলমগীর হোসেন, ছোট ছেলে জুব্বার আলী ও আলমগীরের স্ত্রী জ্যোসনা বেগম। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আলমগীরকে ময়মনসিংহ মেডিকেলে এবং শাফিয়া ও জ্যোসনাকে মধুপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা আরও জানান, পুন্ডুরার মৃত নুরুল ইসলামের দুই ছেলে আলমগীর, জুব্বারের সঙ্গে প্রতিবেশী কালু মিয়া সেখসহ তার ভাইদের সঙ্গে ১.১৯ একর জমি নিয়ে বিরোধ বহুদিন থেকে। দুই পক্ষের মধ্যে মামলা-মোকদ্দমা চলছে। মঙ্গলবার সকালে কালু মিয়া গং বিবদমান ৬০ শতক জমিতে গিয়ে ঘর নির্মাণ শুরু করেন। আলমগীর, জুব্বাররা বাধা দিতে গেলে তাদের প্রথমে পিটিয়ে পরে গাছের সঙ্গে বেঁধে ফেলে তারা। মা শাফিয়া ফেরাতে গেলে প্রতিপক্ষ তাকেও গাছে বেঁধে ফেলে। পরে নির্যাতিতদের পক্ষে ৯৯৯-এ কল করে সাহায্য চাওয়া হলে মধুপুর থানা পুলিশ এসে বাঁধা অবস্থা থেকে তাদের উদ্ধার করে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, ওয়ার্ড কাউন্সিলর হারুন অর রশীদ ও স্থানীয় মাতাব্বররা ঘটনাস্থলে এসে উভয় পক্ষকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। মধুপুর থানাকে ফোন করে জানানো হয়।
এ বিষয়ে মধুপুর থানার ওসি মোল্লা আজিজুর রহমান জানান, দুই পক্ষকে ডেকে এনে আপিল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শান্তি রক্ষায় জমিতে যেতে বারণ করা হয়েছে।
সাভারের আশুলিয়ায় ইতিহাস পরিবহনের একটি চলন্ত বাসে যাত্রীবেশে অগ্নিসংযোগ করেছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কোন হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার বাড়ইপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, সকালে ইতিহাস পরিবহনের (ঢাকা মেট্টো- ব ১৫- ৩২৯৫) একটি বাস চন্দ্রা থেকে ছেড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। সকাল সাড়ে ১০ টার দিকে বাসটি নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাড়ইপাড়া এলাকায় পৌছলে দৃর্বৃত্তরা যাত্রীবেশে বাসে উঠে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায়। এসময় স্থানীয় লোকজন বাসের আগুনের দ্রুত নিভিয়ে ফেললে তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাদরুজ জামান বলেন, পুড়ে যাওয়া বাসটি সড়ক থেকে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাসে কেউ যাত্রীবেশে আগুন লাগিয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণা। বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এঘটনায় জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে। বিস্তারিত পরে জানানো হবে।
কক্সবাজারের উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরাকান রোহিঙ্গা স্যালুভেশন আর্মি (আরসা) ও রোহিঙ্গা স্যালিডারিটি অর্গানাইজেশন (আরএসও) সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ১৭ ও ১৫ তে এ ঘটনা ঘটে। এতে পৃথক স্থানে চারজন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন।
নিহতরা হলেন ১৭ নম্বর ক্যাম্পের এইস/৭৭ ব্লকের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে আবুল কাসেম (৩৫)। তিনি আরসা সদস্য বলে ধারণা করা হচ্ছে। এছাড়াও ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৩ ব্লক এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলীর ছেলে মোহাম্মদ জোবায়ের (১৬) ও ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৩ ব্লক এলাকার বাসিন্দা কামাল উদ্দিনের ছেলে জয়নাল উদ্দিন (২৭)। তারা দুজনও আরএসও সদস্য বলে ধারণা করছে আইশৃঙ্খলা বাহিনী।
পুলিশ ও ক্যাম্পের একাধিক সূত্র বলছে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ১৭ নম্বর ক্যাম্পের সি/৭৭ ব্লক এলাকায় ১০ থেকে ১২জন আরসা সদস্য একত্রিত হয়ে ১৭ নম্বর ক্যাম্পের এইস/৭৭ ব্লকের বাসিন্দা আবুল বশরের ছেলে আবুল কাসেমের মাথায় ২ রাউন্ড গুলি করে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন কাসেম।
এ ঘটনার পর ১৫ নম্বর ক্যাম্পের জি/৩ ব্লক এলাকায় আরএসও সদস্যদের লক্ষ্য করে ১২ থেকে ১৩ রাউন্ড গুলি চালায় আরসার সদস্যরা। এতে আরএসও সদস্য জোবায়ের ও জয়নাল নিহত হন।
এরআগে গতকাল মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ তে ইমাম হোসেন (৩০) নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ নিয়ে ক্যাম্পে ২৪ ঘন্টায় ৪ জন নিহত হয়েছে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বলেন, ক্যাম্প ১৫ এবং ক্যাম্প ১৭ এলাকায় আরসা ও আরএসও সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে তিনজন নিহত হয়েছে। বর্তমানে ক্যাম্প এলাকায় পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। নিহতদের ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ক্যাম্পের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ৮ আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) অধিনায়ক এডিশনাল ডিআইজি মো. আমির জাফর বলেন, নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ধে এসব হত্যাকান্ড ঘটছে। তবে আমাদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাধারণত রোহিঙ্গারা নিরাপদে রয়েছে। যারা এসব ঘটনা ঘটাচ্ছে তাদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ৮ মাসে নিহত ৫৬ রোহিঙ্গার মধ্যে ১৭ রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা), ২১ আরসা সদস্য, ৩ আরএসও সদস্য ও ১ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। খুন হওয়া অন্যরা সাধারণ রোহিঙ্গা।