রোববার, ৫ মে ২০২৪

কুড়িগ্রামে ৬ নম্বর সেক্টরে যুদ্ধকালীন বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা

উত্তরবঙ্গ জাদুঘরে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা। ছবি: দৈনিক বাংলা
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ২২:৪৩

একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে ৬ নম্বর সেক্টরের অধীন যুদ্ধকালীন সাবেক ঊর্ধ্বতন সামরিক মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও সম্মাননা জানাল কুড়িগ্রামের উত্তরবঙ্গ জাদুঘর।

মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৮টায় শহরের খেজুরতলায় অবস্থিত উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের নির্মাণাধীন হলরুমে তাদেরকে বরণ করে নেয়া হয়।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন সাবেক ৬ নম্বর সেক্টরের সাব-সেক্টর কমান্ডার আমেরিকা প্রবাসী বীর মুক্তিযোদ্ধা ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট (অব.) ইকবাল রশীদ, সাবেক সেক্টর অ্যাডজুটেন্ট বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) এ মতিন চৌধুরীসহ আরও ছয়জন বরেণ্য বীর মুক্তিযোদ্ধা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে এই আট বীর সেনানী উত্তরবঙ্গ জাদুঘর ঘুরে দেখেন। জাদুঘরে সংরক্ষিত মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত বিভিন্ন দলিল, যুদ্ধাস্ত্র ও উপকরণ দেখে অভিভূত হয়ে পড়েন তারা। উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের এই অনন্য উদ্যোগের প্রশংসাও করেন। পরে অনুষ্ঠানস্থলে ৬ নম্বর সেক্টরের সাবেক এই বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা প্রদান, উত্তরীয় পরিধান ও মুক্তিযুদ্ধে অনন্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে স্মারক দেয়া হয়।

পরে নির্মাণাধীন উত্তরবঙ্গ জাদুঘর হলরুমে অনুষ্ঠিত মুক্তিযুদ্ধে স্মৃতিচারণমূলক আলোচনা সভায় কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মোতাহার হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর জেনারেল (অব.) মাসুদুর রহমান বীরপ্রতীক, বীর মুক্তিযোদ্ধা লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) ডা. মোহাম্মদ গোলাপ হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আশরাফ উদ দৌলা, বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল (অব.) আমিনুল ইসলাম ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) আব্দুস সালাম।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন পুলিশ সুপার আল আসাদ মো. মাহফুজুল ইসলাম। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন উত্তরবঙ্গ জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্ট্রির চেয়ারম্যান ও একুশে পদকপ্রাপ্ত অ্যাডভোকেট এস এম আব্রাহাম লিংকন।


রূপগঞ্জে অবৈধ অস্ত্রের ছড়াছড়ি

থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী আতিকুর রহমান মঈন তার দুই সহযোগীকে নিয়ে অস্ত্র প্রদর্শন করছেন। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৫ মে, ২০২৪ ০০:০১
রাসেল আহমেদ, রূপগঞ্জ

রূপগঞ্জে দেশি-বিদেশি অবৈধ অস্ত্রের ভয়ানক বিস্তার ঘটেছে। সর্বত্রই আগ্নেয়াস্ত্রের ছড়াছড়ি। র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে যে পরিমাণ অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হচ্ছে তার কয়েকগুণ নিরাপদে চলে যাচ্ছে অপরাধীদের গোপন ডেরায়। আর এতে করে আন্ডারওয়ার্ল্ডে অস্ত্রভাণ্ডার দিনে দিনে সমৃদ্ধ হচ্ছে। ছোটখাটো ঘটনাতেও অস্ত্রের ব্যবহার হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের ক্যাডার মাস্তানরা প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে আধিপত্য বিস্তারের লড়াইয়ে নামছে। মিডিয়ায় অস্ত্রধারীদের ছবি প্রকাশ হওয়ার পরও এসব অস্ত্র উদ্ধার হচ্ছে না।

এতে করে সাধারণ মানুষের মধ্যে নিরাপত্তাহীনতা বাড়ছে। র‌্যাব-পুলিশের অভিযানে দেশি-বিদেশি অস্ত্র উদ্ধার হলেও গত কয়েক বছরে অস্ত্র উদ্ধারে বিশেষ কোনো অভিযান পরিচালনা করা হয়নি। তদন্তের দুর্বলতার কারণে পার পেয়ে যায় গডফাদাররা। ফলে অবৈধ অস্ত্র ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের নেটওয়ার্কও অক্ষত থেকে যাচ্ছে। রূপগঞ্জে কথায় কথায় অস্ত্র প্রদর্শন, গুলি করে মানুষ হত্যা, বুলেটের ভয় দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি যেন অহরহ ঘটনা। উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভায় ৪৭টি সন্ত্রাসী বাহিনীর পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবেও অনেকের কাছে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র। দেশীয় অস্ত্রের পাশাপাশি অত্যাধুনিক অস্ত্রও রয়েছে তাদের হাতে। গত এক যুগে অস্ত্রধারীদের গুলিতে ১৬ জন নিহত হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের হাতে প্রায় সাড়ে ৪০০ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। আর বৈধ অস্ত্র রয়েছে ১১০ জনের কাছে। এর মধ্যে ৬০ জনের অস্ত্র থানার অস্ত্রগারে জমা রয়েছে। বৈধ অস্ত্রের মধ্যে একটির লাইসেন্স বাতিল হয়েছে।

অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপগঞ্জের সন্ত্রাসীরা সাধারণত যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- ওয়ান শুটার গান, পাইপ গান, এলজি, একে-২২, আমেরিকান নাইন এমএম পিস্তল, সেভেন পয়েন্ট সিক্স ফাইভ, নাইন এমএম, পয়েন্ট টু টু ও রিভলবার। এ ছাড়া বিপুলসংখ্যক ম্যাগাজিন, ককটেল, বারুদসহ বিভিন্ন বিস্ফোরকও রয়েছে তাদের কাছে। এসব অস্ত্রের মূল চালান আসে মিয়ানমার থেকে চট্টগ্রাম এলাকা হয়ে এবং ভারত থেকে কুমিল্লা ও সিলেট হয়ে। অধিকাংশ সময় অস্ত্র পরিবহনে ব্যবহার করা হয় ‘কিশোর গ্যাং’ সদস্য ও শিশুদের। সন্ত্রাসীদের কাছে অত্যাধুনিক অস্ত্রের আদলে বানানো বেশ কিছু খেলনা পিস্তলও রয়েছে। অস্ত্রের আধিক্য দেখাতে তারা খেলনা পিস্তল ব্যবহার করে থাকে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র বলছে, রূপগঞ্জে গত এক যুগে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীর হাতে খুন হয়েছেন ১৬ জন। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও থানা পুলিশের তথ্যমতে, উপজেলার বিভিন্ন পর্যায়ে সন্ত্রাসীদের হাতে প্রায় সাড়ে ৪০০ আগ্নেয়াস্ত্র রয়েছে। এছাড়াও বিপুল পরিমাণ আরো অস্ত্র বিভিন্ন অঞ্চলে গোঁপন স্থানে রয়েছে। অস্ত্রগুলো নির্বাচনকালীন, হাউজিং কোম্পানির জমি দখল, ইটের ভাটা দখলসহ নানা দখল বাণিজ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে। কোথাও এসব অস্ত্র ভাড়া দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। একটি ছিনতাইকারীচক্র, ডাকাত সদস্যরাও এসব অস্ত্র ভাড়ায় নিচ্ছে । সূত্র আরও জানায়, মিলকারখানায় জুট ব্যবসায়ী, হাউসিং কোম্পানির দালাল, বালু ব্যবসায়ী, ইটা ব্যবসায়ী, স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের নিয়ন্ত্রণে চলে এসব অস্ত্রের ব্যবহার। এসব অস্ত্রের বেশিরভাগই রিভলভার জাতীয়। মাঝে মাঝে শর্টগান, এসএমজিসহ নানা হাতবোমাও পাওয়া যাচ্ছে। র‌্যাব, পুলিশের অভিযানে গত এক বছরে ১১ টি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। এর মধ্যে বেশির ভাগই আগ্নেয়াস্ত্র। এক পরিসংখ্যানে প্রতি মাসে গড়ে পাঁচজন করে গুলিবিদ্ধ হওয়ার তথ্য মিলছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রূপগঞ্জের দীর্ঘদিনের আলোচিত হত্যাকাণ্ড শিল্পপতি রাসেল ভূঁইয়া, তারেক বিন জামাল, খালেদ বিন জামাল, ছাত্রদল নেতা শফিকুল ইসলাম, যুবলীগ নেতা হাজী বেলায়াতসহ বিভিন্ন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার না হওয়ায় ক্রমেই অবৈধ অস্ত্রের মজুতের সংখ্যা আশংকাজনক হারে বাড়ছে। উপজেলার গোলাকান্দাইল ৫ নং ক্যানেল, মুড়াপাড়ার মাছিমপুর এলাকা, কায়েতপাড়া ইউনিয়ন, চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্র, পূর্বাচল উপশহর, কাঞ্চন পৌরসভা, তারাব পৌরসভা, সদর ইউনিয়নের ইছাপুরা ও ভোলানাথপুর এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে রয়েছে চরম আতঙ্ক। অন্যদিকে পূর্বাচল উপশহরকে ঘিরে গড়ে ওঠা বিভিন্ন আবাসিক কোম্পানির ছত্রছায়ায়ও গড়ে ওঠেছে একটি শক্তিশালী সন্ত্রাসী বাহিনী।

রূপগঞ্জ থানা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালে পুলিশ ১১ টি আগ্নেয়াস্ত্র, ২২টি গুলি উদ্ধার করেছে। এ সময় অস্ত্র ও গোলাবারুদ সংক্রান্ত মামলায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পুলিশের বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা (এসবি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিল মাস পর্যন্ত গুলির ঘটনা ২৫টি ছাড়িয়ে গেছে। এই হিসাবে মাসে গড়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছে পাঁচজনেরও বেশি।

থানা পুলিশ ও গণমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, রূপগঞ্জে রাজনৈতিক শক্তি প্রদর্শন ও আধিপত্য বিস্তারসহ বিভিন্ন মারামারিতে গত ২০২৩ সালে অস্ত্রবাজির অন্তত ১৩টি ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। এসব ঘটনায় অস্ত্র হাতে থাকা ৭ জনের ছবি ও ভিডিও চিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তাদের মধ্যে পেশাদার সন্ত্রাসীর পাশাপাশি যুবলীগ ও ছাত্রলীগের পদধারী নেতাও রয়েছেন।

দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানে দেখা যায়, এসব অস্ত্রধারীর কেউই ধরা পড়েনি। দুর্বৃত্তদের প্রদর্শিত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে পিস্তল, শটগান, এলজি ও বন্দুক। অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহারে উদ্বিগ্ন নাগরিক সমাজ। তারা এসব ঘটনার জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গাফিলতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নকে দায়ী করেছেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০১১ সালে মাছিমপুর এলাকায় নজরুল ইসলামকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর মিরকুটিরছেও এলাকায় আব্দুর রশিদ মোল্লাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ২০২৩ সালের ৩১ মে বরপা এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সংঘর্ষে বিল্লাল নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ২০২৩ সালের ১০ মে চনপাড়া পুনর্বাসন এলাকায় সৈয়দ মিয়া গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। ২০২২ সালের ১১ নভেম্বর সিটি শাহীন নিহত হন। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর ডাকাতদলের গোলাগুলিতে আবুল হোসেন নামে একজন নিহত হয়। ২০১৮ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর পূর্বাচলের ১১ নম্বর ব্রিজের নিচ থেকে সোহাগ, নুর হোসেন ও শিমুল নামে তিন যুবকের গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

রূপগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি মাহফুজুর রহমান হুমায়ুন বলেন, রূপগঞ্জে অবৈধ অস্ত্রের ঝনঝনানি অনেক বেশি। বর্তমানে রূপগঞ্জে অস্ত্রের ব্যবহার বেড়েছে। আমরা চাই রূপগঞ্জে অস্ত্রের ঝনঝনানি বন্ধ হউক।

রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ দীপক সরকার বলেন, ‘রূপগঞ্জে বিভিন্ন সময় অভিযান পরিচালনা করা হয়। বেশকিছু অস্ত্রধারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যারা অস্ত্র নিয়ে ছবি প্রদর্শন করেছে কিংবা যেসব এলাকায় গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে সেসব অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করা হবে।’


গোয়ালন্দে রাস্তার কাজ ফেলে ঠিকাদার লাপাত্তা!

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে চরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ৫ মে, ২০২৪ ০৩:০৭
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে চরাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ একটি রাস্তার কাজ প্রায় এক বছর ধরে ফেলে রেখেছে ঠিকাদার। এতে করে প্রচণ্ড ধুলাবালুর মধ্যে ও ইট-পাথরের ওপর দিয়ে চলাচল করতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দা ও যানবাহন চালকরা। গোয়ালন্দ উপজেলা শহর ও দৌলতদিয়া ঘাটের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষাকারী ৮ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার দৈর্ঘের গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তাটির কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে গত এক বছরে এলজিইডি হতে অন্তত ৬/৭ টি চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে; কিন্তু তাতে কোনোই গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় চরমভাবে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে এলাকার জনসাধারণ।

গোয়ালন্দ উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, উত্তর দৌলতদিয়া এন এইচ ডব্লিউ উজানচর জিসি ভায়া চর দৌলতদিয়া রাস্তাটির দৈর্ঘ ৮ দশমিক ৬৬ কিলোমিটার। ১৩ কোটি ৪৮ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮৬ টাকা ব্যয়ে ১৮ ফুট চওড়া করে রাস্তাটি নির্মানের জন্য নিযুক্ত হয় ইমতিয়াজ আছিফ এম এ ইঞ্জিনিয়ারিং (জাভা) নামে ফরিদপুরের একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ৬ অক্টোবর শুরু হওয়া কাজটি, শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ। ইতোমধ্যে রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ৯টি ছোট সেতু ও কালভার্ট তৈরি করা হয়েছে। অধিকাংশ এলাকাজুড়ে ডব্লিউএমএম এর কাজ হয়েছে। তাবে দুই পাশে মাটির কাজ ও গাইডওয়ালের কাজ এখনো শেষ হয়নি। শুরু করা হয়নি কার্পেটিংয়ের কাজ। ভাঙ্গাই হয়নি রাস্তার অনেক জায়গার পুরোনো পিচ।

এ অবস্থায় প্রচণ্ড খরা ও রোদে ওই রাস্তাজুড়ে প্রচণ্ড ধুলাবালুর সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে রাস্তার দু’পাশের শত শত পরিবার, সাধারণ যাত্রী ও চালকরা স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতেও পারছে না। রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বড় বড় ইট ও পাথরের কারণে স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারছে না যানবাহন। ঘনঘন নষ্ট হচ্ছে হালকা যানবাহনের যন্ত্রাংশ। উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য শেখ রাসেল মাহমুদ বলেন, ‘রাস্তাটির কাজ প্রায় ১ বছর ধরে বন্ধ হয়ে আছে। এতে করে চরের হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। রাস্তার ধুলোবালির মধ্য দিয়ে চলতে চলতে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বিভিন্ন স্থানে বহুবার সমস্যার কথা জানিয়ে আসছি। কিন্তু তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। নিরুপায় হয়ে আমরা এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের কথা চিন্তা করছি।’

গোয়ালন্দ শহরের বাসিন্দা হাবিবুর শেখ বলেন, ‘কিছুদিন আগে তার অন্তঃসত্ত্বা পুত্রবধূ চর দৌলতদিয়া বাবার বাড়ি হতে এই রাস্তা দিয়ে অটোরিকশায় চড়ে শহরে আসছিল। কিন্তু অতিরিক্ত ঝাঁকুনিতে তার গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হয়ে গেছে।’ স্থানীয় বাসিন্দা ছিদ্দিক শেখ বলেন, রাস্তার পাশে তার বাড়ি হওয়ায় ধুলোবালিতে ঘরবাড়ির ওপর আস্তরন পড়ে গেছে। রাস্তার ধুলোয় বাড়ির খাবার-দাবার বিছানাপত্র দ্রুত নোংরা হয়ে যায়। একটা অসহনীয় অবস্থার মধ্যে আছি আমরা। দ্রুত রাস্তার কাজ শেষ হওয়া দরকার।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বিদ্যুৎ কুমার দাস বলেন, ‘রাস্তাটির কাজ গড়ে ৬৫ শতাংশ শেষ হয়েছে। বিল পরিশোধ করা হয়েছে প্রায় ৬০ শতাংশ। কার্পেটিংসহ অবশিষ্ট কাজ দ্রুত শেষ করতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে গত এক বছরে ৬/৭টি চিঠি দিয়ে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবারই তারা দ্রুত কাজ শেষ করার কথা বলে। আশা করি, চলতি মাসেই তারা অবশিষ্ট কাজ শুরু করবে।’ এ বিষয়ে কথা বলতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সিদ্দিকুর রহমান সিদ্দিকের মুঠোফেনে বেশ কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ কারণে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।


সুন্দরবনে আগুন: সকালে কাজ শুরু করবে ফায়ার সার্ভিস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

পূর্ব সুন্দরবনের গহিনে ভয়াবহ আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ও গুলিশাখালীর মাঝামাঝি এলাকায় ওই আগুন লাগে। এ ঘটনায় পুড়ে গেছে কয়েক কিলোমিটার বনাঞ্চল। তবে আগুন এখনো ছড়িয়ে পড়ছে এবং রাত ৯টায় পাওয়া সর্বশেষ খবরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসেনি বলে জানা গেছে। বনে আগুন লাগার খবর পেয়ে বনবিভাগ, স্থানীয় গ্রামবাসী এবং জেলার মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালাচ্ছে। তবে গহিন বনে রাত নেমে আসায় আগুন নেভাতে তাদের বেগ পেতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মোহাম্মদ নুরুল কবির ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. তারেক সুলতান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) আনিসুর রহমান ধারণা করছেন, বনের ভেতর মধু সংগ্রহে মৌয়ালদের দেওয়া আগুন ছড়িয়ে গিয়ে এ ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে।

সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) রানা দেব জানান, বিকালে বনরক্ষী ও বনের ভেতরে কাজ করতে আসা স্থানীয় গ্রামবাসী আগুন দেখতে পায়। এ সময় বনবিভাগের কর্মী ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা চালায়। এদিকে খবর পেয়ে সন্ধ্যার দিকে মোরেলগঞ্জ, শরণখোলা ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ইউপি সদস্য মো. আবু তাহের জানান, আমুরবুনিয়া ফাঁড়ির কাছেই আগুন লেগেছে। বেশ বড় এলাকা। অন্তত দুই থেকে তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে আগুন ছড়িয়েছে।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আবু তাহের মিয়া জানান, আমুরবুনিয়া ফাঁড়ির কাছেই আগুন লেগেছে। বেশ বড় এলাকা। অন্তত দুই কিলোমিটারজুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। যেভাবে আগুন ছড়িয়েছে, সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিনই হবে।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী জানান, আগুনের খবর পেয়ে প্রথমে মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিস ও পরে শরণখোলা ও মোংলা ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটসহ মোট ৩টি ইউনিট আগুন নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে রয়েছে। তবে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রাতে কাজ শুরু করতে না পারলেও, সকাল থেকে কাজ শুরু করবে।

আগুনের এই ঘটনায় কি পরিমাণ বনাঞ্চল পুড়ে গেছে বনের পশু হতাহত হয়েছে কি না তা আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে বলেও জানিয়েছেন বনবিভাগের কর্মকর্তারা।


সুন্দরবনের গহীনে আগুন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৪ মে, ২০২৪ ১৮:২৩
মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি

পূর্ব সুন্দরবনের গহীনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের আমরবুনিয়া ও গুলিশাখালীর মাঝামাঝি এলাকায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। আগুনে পুড়ে গেছে কয়েক মিটার বনাঞ্চল।

চাঁদপাই রেঞ্জের স্টেশন কর্মকর্তা (এসও) আনিসুর রহমান জানান, বনের ভিতর মধু সংগ্রহে মৌওয়ালের আগুনে এই আগুনের সূত্রপাত বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তিনি আরও জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে এরই মধ্যে বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিটসহ বনবিভাগের চারটি ফাঁড়ির বনরক্ষীরা মিলে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছেন। এ ছাড়া পূর্ব সুন্দরবনের বন কর্মকর্তারা সেখানে উপস্থিত থেকে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছেন।

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. আবু তাহের মিয়া জানান, আমুরবুনিয়া ফাঁড়ির কাছেই আগুন লেগেছে। বেশ বড় এলাকা। অন্তত দুই কিলোমিটার জুড়ে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। সবাই নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। যেভাবে আগুন ছড়িয়েছে, সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা কঠিনই হবে।

বাগেরহাট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপসহকারী পরিচালক মো. সাইদুল আলম চৌধুরী জানান, আগুনের খবর পেয়ে এরই মধ্যে মোরেলগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেছে।

আগুনের এই ঘটনায় বনের পশু ও কি পরিমাণ বনাঞ্চল পুড়ে গেছে, তা আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না। এ ঘটনায় তদন্ত কমিটি করা হবে বলেও জানান বন কর্মকর্তা আনিস।


মাগুরা-ফরিদপুর রেল চালু হচ্ছে আগামী বছর

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাগুরা প্রতিনিধি

মাগুরা থেকে ফরিদপুর মধুখালী স্বপ্নের রেলপথ চালু হতে যাচ্ছে শিগগিরই। মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা পর্যন্ত ব্রডগেজ রেললাইন প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের পর ২২ মাসে প্রকল্পের ৪৯ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী বছরের প্রথম দিকেই এই রুটে রেল চলাচল শুরু হবে বলে আশা করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেল কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, ২০২৫ সালের মধ্যেই এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা জমি এখনো বুঝে না পাওয়ায় কাজ কিছুটা ধীরগতিতে এগোচ্ছে। রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালে চার বছর মেয়াদি এ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়, যা শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের ডিসেম্বরে। তবে জমি অধিগ্রহণ ও করোনার প্রাদুর্ভাবসহ নানা জটিলতার কারণে প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০২১ সালের মে মাসে। ওই বছরের ২৭ মে ভার্চুয়ালি ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।

সরেজমিনে গত বুধবার মধুমতী নদীতে নির্মাণাধীন রেল সেতুর মাগুরা প্রান্তে গিয়ে দেখা যায়, পিলার নির্মাণের কাজ চলছে। ইতোমধ্যে বেশ কিছু পিলার দৃশ্যমান হয়েছে। মধুখালী অংশে পুরনো রেললাইন সংস্কারের কাজ চলছে। ওই অংশে বেশ কিছু বক্স কার্ল্ভার্ট নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। তবে মাগুরা অংশে দৃশ্যমান কাজ দেখা যায়নি।
জানতে চাইলে প্রকল্পের পরিচালক আসাদুল হক বলেন, মাঠ পর্যায়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে ২০২১ সালের ডিসেম্বরে। এখন দ্রুত গতিতে কাজ এগুচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও খরচ বাড়েনি। মধুমতী নদীতে রেল সেতুসহ পুরো প্রকল্পের ৪৯ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আশা করা হচ্ছে আগামী বছরের মধ্যে এখানে রেল চলা চল শুরু হবে।’

এখনো মাগুরা অংশে অধিগ্রহণ করা বেশির ভাগ জমি বুঝে পাওয়া যায়নি বলে জানান তিনি। এটাকেই এই মুহূর্তে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন এই কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মাগুরা অংশে রেল প্রকল্পে অধিগ্রহণ করা জমির পরিমাণ ১০৭ একরের মতো। যার মূল্য প্রায় ১১৫ কোটি ৪৩ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। চলতি বছরের জানুয়ারি মাস থেকে অধিগ্রহণ করা এসব জমির বিপরীতে ক্ষতি গ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু হয়েছে। এ পর্যন্ত দু দফায় ১ দশমিক ৯৬ একর জমির ক্ষতি পূরণ হিসেবে প্রায় দেড় কোটি টাকার চেক বিতরণ করা হয়েছে।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবু নাসের বেগ বলেন, ‘জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয়। নানা জটিলতা কাটিয়ে আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে চেক বিতরণ শুরু করেছি। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা চাইলে এখন স্টেশনের কাজ শুরু করতে পারবে। ঈদের আগে আরও কিছু জমি তাদেরকে বুঝিয়ে দেওয়া হবে। এর পর ধাপে ধাপে রেল লাইনের জমির শিগগিরই বুঝিয়ে দেওয়া হবে’।

প্রকল্প পরিচালকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এই প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ১ হাজার ২১৭ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় মধুখালী থেকে কামারখালী হয়ে মাগুরা শহর পর্যন্ত ১৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার মেইন লাইন নির্মাণ, কামারখালী ও মাগুরা স্টেশনইয়ার্ডে ৪ দশমিক ৯ কিলোমিটার লুপলাইন নির্মাণ, দুটি নতুন স্টেশন (কামারখালী ও মাগুরা) নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে ৪৩৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৯দশমিক ৯কিলোমিটার ব্রডগেজ রেলপথ নির্মাণ করছে কাজী নাবিল আহমেদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ক্যাসেলকন স্ট্রাশন কোম্পানি লিমিটেড। অপর দিকে মধুমতী নদীর ওপর ২ হাজার ৪১২মিটার দৈর্ঘ্যের রেল সেতু নির্মাণ কাজ করা হচ্ছে ৪৪৯ কোটি টাকায়। এ কাজের ঠিকাদারি পেয়েছে মীর আক্তার কনস্ট্রাকশন লিমিটেড। বাকি অর্থ ব্যয় হবে জমি অধিগ্রহণসহ অন্যান্য কাজে।


মনু নদীর চাতলাঘাটে অবৈধভাবে বালু উত্তলোন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল ও মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়নের চাতলাঘাটে মনু ব্রিজের একেবারে কাছ থেকে বালু তোলায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে মনু নদীর ব্রিজ, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে রাস্তাঘাট, নদীর বাঁধ ও কৃষিখেত।

আইন অমান্য করে বালু উত্তোলনের পর ডাম্পার ট্রাকে ওভারলোড করা হয়। এরপর বেপরোয়াগতিতে ট্রাকগুলো চলে যায় দেশের বিভিন্ন স্থানে।

একইভাবে কমলগঞ্জের ধলাইপাড় এলাকা থেকেও ধলাই নদীর বালু উত্তোলন হচ্ছে। ব্রিজের পাশ থেকে বালু উত্তোলন করায় ভ্রাম্যমাণ আদালত দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেছে। তবে জরিমানার পরপর কিছুদিন বালু তোলা বন্ধ থাকলেও আবার তা শুরু হয়ে যায়।

সরেজমিনে দেখা যায়, মনু নদীর চাতলাঘাট থেকে বালু উত্তোলন করে কমলগঞ্জের শমশেরনগর-চাতলাপুর সড়ক ব্যবহার করে দিন-রাত বালু পরিবহন করছে ১০ চাকার ডাম্পার ট্রাক। চাতলাঘাট বালুমহাল ইজারা নিলেও বালু উত্তোলনের কথা চাতলাপুর মনু ব্রিজের এক কিলোমিটার নিচ থেকে। তবে দীর্ঘদিন ধরে বেপরোয়াভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে ব্রিজের কয়েকশ গজ দূর থেকেই। এতে মনু নদীর চাতলা ব্রিজ মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়েছে। তা ছাড়া বিশাল এলাকা নিয়ে বালু উত্তোলন ও ডাম্পার ট্রাকে বালু পরিবহনে নদীর বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সড়ক ও জনপথের রাস্তার বিভিন্ন স্থানে ফাটল ও দেবে যাচ্ছে। ট্রাকগুলো উন্মুক্তভাবে বালু পরিবহনের ফলে একদিকে জনস্বাস্থ্যের ক্ষতি হচ্ছে, অন্যদিকে শমশেরনগর বাজার চৌমুহনায় প্রতিনিয়ত যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে। স্থানীয় কৃষকদের আবাদি জমিতে বালু গড়িয়ে পড়ছে এবং কৃষিকাজ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এতে আপত্তি জানিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না বলে কৃষক অভিযোগ তুলেছেন। ট্রাকের কারণে সড়কের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ লিখিতভাবে জানালেও তা কাজে আসছে না।

স্থানীয় বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধার সন্তান মো. হেলাল মিয়া বলেন, ‘বালু উত্তোলনের কারণে আমি খেত করতে পারি না। আমার কলার গাছ, আকাশি গাছ নষ্ট করি ফেলছে। অনেকবার কওয়ার পরেও বেটাগিরি দেখায়। ব্রিজের নিচ থেকে এক কিলোমিটার দূরে থেকে বালু তোলার কথা। এখন তারা ব্রিজের কাছাকাছি আইছে। অফিসার বা কেউ আইলেই তারা টাকা দিয়ে মুখ বন্ধ করি দেয়। বালু ধুইয়া ধুইয়া আমরা জমিনে পড়ে, ফলে কোনো খেত কৃষি করতে পারি না।’

শমশেরনগর বণিককল্যাণ সমিতির সভাপতি আব্দুল হান্নান জানান, ‘বালুবহনকারী ডাম্পার ট্রাক চলার সময় ধুলোবালি উড়ে রাস্তার দুই পাশের দোকানপাটে ও চোখেমুখে এসে পড়ে। এ ছাড়া নিয়মিত যানজটের সৃষ্টি করে।’

সড়ক বিভাগ, মৌলভীবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. কায়সার হামিদ বলেন, ‘বালুবাহী ট্রাকের কারণে রাস্তার ক্ষতি হওয়ায় আমরা ইতোপূর্বে তাদের লিখিতভাবে জানিয়েছি।’

এ ব্যাপারে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে চাতলাপুর মনু নদীর বালুমহাল ইজারাদার মো. জুয়েল আহমদ বলেন, ‘আমার বালু উত্তোলনের কারণে কে খেত করতে পারছে না? এগুলো নিয়ে আপনাদের এত মাথাব্যথা কেন? আপনি নিউজ করেন। অনেক নিউজ হয়েছে। নিউজ করে কোনোকিছু হবে না।’

কুলাউড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘ব্রিজের কাছাকাছি আসার কারণে সম্প্রতি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে তাদের দেড় লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তার পরও বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে।’

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ এ ব্যাপারে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ড. উর্মি বিনতে সালাম বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্বসহকারে খতিয়ে দেখা হবে।’


তীব্র গরমে মরছে মুরগি, কমেছে ডিম ও মাংসের উৎপাদন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী

প্রচণ্ড গরমে প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে খামারের মুরগি। ডিম ও মাংসের উৎপাদনও কমেছে অনেক। এতে করে চরম ক্ষতির মুখে পড়ছেন খামারিরা। ঘরের চালে পানি দিয়ে, বাড়তি ফ্যানের ব্যবস্থা করেও মুরগি সুস্থ রাখতে পারছে না তারা।

দেশের অন্যান্য স্থানের মতো রাজবাড়ীতেও মাসব্যাপী চলছে তীব্র দাবদাহ। এই অসহনীয় গরমে বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষ। দাবদাহ থেকে রেহাই পাচ্ছে না অন্যান্য জীব-জন্তুও। হিটস্ট্রোকের কারণে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন পোল্ট্রি খামারের মুরগি মারা যাচ্ছে। এতে ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন পোল্ট্রি ফার্মের মালিক ও প্রান্তিক খামারিরা। এমন পরিস্থিতিতে ডিম ১৫ থেকে ২০ শতাংশ এবং মুরগির মাংস উৎপাদন ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ পর্যন্ত কমেছে। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে আগামী দিনে মুরগি ও ডিম সরবরাহে সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন খামারিরা।

সরেজমিন গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি ও ফার্ম ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরমে খামারিরা মুরগি সুস্থ রাখতে ঘরের চালে মোটরের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক পানি ছিটানোর পাশাপাশি বাড়তি ফ্যানের ব্যবস্থা করেছেন। এ ছাড়া তাপ সহিষ্ণু করতে মুরগিকে খাওয়ানো হচ্ছে ভিটামিন ‘স’ জাতীয় নানা ওষুধ। এতে খরচ বেড়েছে দ্বিগুণ। তারপরও রোদের তাপ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুরগি অসুস্থ হয়ে মরে যাচ্ছে। ফলে খামারির লোকসানও বেড়ে দ্বিগুণ।

দেশে পোল্ট্রি শিল্পের দ্বিতীয় বৃহত্তম জোন হিসেবে বিবেচনা করা হয় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দকে। এ উপজেলায় অন্তত অর্ধশত পোল্ট্রি হ্যাচারির পাশাপাশি অসংখ্য পোল্ট্রি ফার্ম রয়েছে। মুরগির খাবার, ওষুধের দাম বৃদ্ধিসহ নানা কারণে পোল্ট্রির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে আসছেন। ক্ষতির কারণে ইতিপূর্বেই বন্ধ হয়েছে অসংখ্য খামার। এখন গরমের কারণে এভাবে মুরগি মারা যেতে থাকলে এ ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সোনালী পোল্ট্রি হ্যাচারিজ লি: এর পরিচালক মো. আইয়ুব রানা বলেন, ‘তীব্র গরমের কারণে মুরগির বাচ্চা উৎপাদন মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। যে মুরগির ১৮ সপ্তাহে উৎপাদনে যাওয়ার কথা, সেখানে ২৪ সপ্তাহেও উৎপাদনে যাচ্ছে না। প্রতি সপ্তাহে এই মুরগির পেছনে খরচ হয় ৩ লক্ষ টাকা।’

উপজেলার উজানচর নতুন পাড়া এলাকার খামারি মো. শাহনি শেখের খামারে সোনালী জাতের মুরগি আছে প্রায় আড়াই হাজারের মতো। হিটস্ট্রোকে প্রতিদিন ১০ থেকে ১৫টি করে মুরগি মারা যাচ্ছে। তিনি জানান, মুরগিদের জন্য আলাদাভাবে বাতাসের ব্যবস্থা ও সেডের চালের উপরে সারাদিন ঝর্ণা বসিয়ে পানি দেয়া হচ্ছে। তারপরও মুরগির মৃত্যু বন্ধ করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া গরমের কারণে মুরগির ওজন কমে যাচ্ছে।

ছোটভাকলা ইউনিয়নের খামারি শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমার এখানে প্রায় ১ হাজার ২০০ মুরগি আছে। গত এক মাসে প্রায় ৫০টার মতো মুরগি মারা গেছে। এসব মুরগিকে বেশি শীতল জায়গায় রাখা যায় না, আবার বেশি গরমেও রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তীব্র গরমের কারণে মুরগিকে সুস্থ রাখতে এক বেলা খাবার দেওয়া হচ্ছে। মুরগির খাবার কমিয়ে দিলে উৎপাদন কমে আসবে এটাই স্বাভাবিক।’

গোয়ালন্দ উপজেলা পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. ছিদ্দিক মিয়া বলেন, তীব্র দাবদাহে খামারের মুরগির ওজন ও ডিম উৎপাদন কমে যাচ্ছে। ৪০ দিনে একটি ব্রয়লার মুরগি দুই কেজি ওজন ছাড়িয়ে যায়। এখন তা ১ কেজিও হচ্ছে না। আবার একই কারণে খামারিরা নতুন করে বাচ্চা তুলছেন না, এতে করে বাচ্চার দাম কমে গেছে। কিন্তু হ্যাচারি মালিকদের ব্যায় বেড়েছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা একেবারে পথে বসে যাবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে পোল্ট্রি খামারিদের দাবদাহ মোকাবিলায় বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এগুলো হলো- শেডে সঠিক বায়ু চলাচল নিশ্চিত করা, ধারণ ক্ষমতার চেয়ে কম মুরগি রাখা, মুরগির শরীরে পানি স্প্রে করা, সেডের চালে ভেজা পাটের ব্যাগ রাখা, নিয়মিত পানি ঢালা ও দুপুরে মুরগিকে খাবার না খাওয়ানো ইত্যাদি।


গজারিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় প্রাইভেটকার খাদে পড়ে তিনজন নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে উপজেলার বাউশিয়া এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও দুজন।

নিহতরা হলেন, চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার কাদরা গ্রামের হোসেন আলী বেপারীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৫৮), তার ছোট ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৭), তার মামী রাহেলা বেগম (৫৫)। আহতরা হলেন, আলমগীর হোসেনের বড় ছেলে নজরুল ইসলাম (৩০) ও প্রাইভেট কার চালক ইব্রাহিম খলিল সুজন (৩৩)।

প্রত্যক্ষদর্শী ও আহতরা জানান, ঢাকার ডেমরা এলাকার বাসিন্দা কুয়েত প্রবাসী আলমগীর হোসেন সম্প্রতি দেশে ফিরে শুক্রবার পরিবার নিয়ে গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলায় কাদরা গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন। বেড়ানো শেষ করে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ঢাকার উদ্দেশেরওনা হন। এ সময় তার মামী রাহেলা বেগমকে ডাক্তার দেখানোর উদ্দেশে ঢাকাতে নিয়ে আসছিলেন তিনি। পথে রাত দেড়টার দিকে তাদের প্রাইভেটকারটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের গজারিয়া অংশের বাউশিয়া মানাবে ওয়াটার পার্কের সামনে আসলে পেছন থেকে একটি কাভার্ড ভ্যান প্রাইভেটকারটিকে ধাক্কা দিলে দিলে তা রাস্তার পাশের খাদে পড়ে যায়। এ সময়ে আলমগীর হোসেনসহ ঘটনস্থলেই মারা যান তিনজন। চালকসহ আহত দুইজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা।

গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক বলেন, রাত ১টা ৫০ মিনিটে আমরা দুর্ঘটনার খবর পাই। খবর পাওয়ার ৫ মিনিটের মধ্যে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। হতাহত সবাইকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়েছে।

গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. নাদিয়া আফরিন বলেন, রাত আড়াইটার দিকে আমাদের হাসপাতালে ৫ জন রোগী নিয়ে আসা হয়। তার মধ্যে প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা ৩ জনকে মৃত ঘোষণা করি। আহত নজরুল ও সুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

গজারিয়া হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. হুমায়ুন কবির বলেন, মরদেহগুলো বর্তমানে পুলিশ ফাঁড়িতে রয়েছে। কাভার্ড ভ্যানটিকে শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


প্রান্তিক মানুষকে মূলধারায় আনতে কাজ করছি: সমাজকল্যাণমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, ‘যে জনগোষ্ঠী কিছুটা দুর্বল, যারা নিজেরটা নিজেরা করতে পুরোপুরি সফল নয়, যারা অবস্থানগত, ভৌগোলিক কারণে প্রান্তিক- সেই প্রান্তিক মানুষকে মূলধারায় নিয়ে আসতে চেষ্টা করছি।’

আজ শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার গজারিয়ায় ‘হেনরী ভুবন বৃদ্ধাশ্রম’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, ‘প্রান্তিক মানুষগুলোর জীবন যাতে সুন্দর ও সহজ হয় সেই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করতে হবে। সেটি যদি সব জায়গায় করতে পারি, তাহলেই আমরা কাঙ্ক্ষিত মানবিক বাংলাদেশ গঠন করতে পারব।’

বৃদ্ধাশ্রম উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে দীপু মনি বলেন, বৃদ্ধ বাবা-মাকে একা বাসায় রেখে সংসারের প্রয়োজনে কাজ-কর্মে যেতে হয়। তখন তারা নিঃসঙ্গতাবোধ করেন, বিষণ্নতায় তারা মানসিক সমস্যায় কষ্ট পান। এমন সময়ে তাদের যেকোনো সঙ্গ প্রয়োজন হয়, তারা প্রয়োজন অনুভবও করেন। যে কারণে আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃদ্ধাশ্রম গড়ে উঠছে।

ওই সময় সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি ড. জান্নাত আরা হেনরী, সিরাজগঞ্জ-১ আসনের এমপি তানভীর শাকিল জয়, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবু, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট কে এম হোসেন আলী হাসান ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ তালুকদারসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

সিরাজগঞ্জ-২ আসনের এমপি নারী নেত্রী জান্নাত আরা তালুকদার হেনরী তার ব্যক্তি উদ্যোগে ছয় একর জায়গায় দ্বিতল আধুনিক ভবন নির্মাণ করেছেন। এই ভবনে ৫৬টি কক্ষে ১১২ জন বসবাস করতে পারবেন। ভবনটিতে আছে বিনোদনসহ আছে নানা সুবিধা। সামনে সৌন্দর্য বর্ধন, পুকুরসহ আছে পার্ক সুবিধাও।


রিমান্ড শেষে কেএনএফের ১৬ নারী সদস্য ফের কারাগারে

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা উপজেলায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, পুলিশের অস্ত্র লুট, মসজিদে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া সন্দেহভাজন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) ১৬ নারী সদস্যকে দুদিনের রিমান্ড শেষে আদালতে তোলা হলে শুনানি শেষে তাদের ফের কারাগারে পাঠিয়েছেন বিচারক।

শুক্রবার দুপুরে বান্দরবানের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (আমলি আদালত) বিচারক মোহাম্মদ নাজমুল হোছাইনের আদালত তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

কোর্ট পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) প্রিয়েল পালিত বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রুমা থানার মামলায় ১৬ নারী আসামিকে দুদিনের রিমান্ড শেষে দুপুরে আদালতে হাজির করা হয়েছে এবং আদালত ১৬ জন ১৮ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা ও পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় পাঁচটি মামলা দায়ের করা হয়। পরে ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে, আর এই ঘটনায় আরও চারটি মামলা দায়ের হওয়ায় পর যৌথবাহিনীর সদস্যরা অভিযান শুরু করে এ পর্যন্ত মোট নয়টি মামলায় ৮১ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করে।


গাজীপুরে দুই ট্রেন সংঘর্ষ: উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলে ট্রেন চলাচল শুরু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

গাজীপুরের ছোট দেওড়া এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের সংঘর্ষের প্রায় দুই ঘণ্টা পর ঢাকা থেকে দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেন যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে।

জয়দেবপুর রেলওয়ের স্টেশন মাস্টার মো. হানিফ আলী গণমাধ্যমকে জানান, শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

স্টেশন মাস্টার জানান, জয়দেবপুর আউটার সিগন্যালের কাজীবাড়ি ছোট দেওড়া এলাকায় তেলবাহী ও যাত্রীবাহী দুই ট্রেনের সংঘর্ষ হয়। দুর্ঘটনার ফলে ওই ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। প্রায় দুই ঘণ্টা পর ডাবল লাইনের ডাউন লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

ইতোমধ্যে ১২টা ৫০ মিনিটের দিকে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস জয়দেবপুর স্টেশন হয়ে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেছে। এর কিছু সময় পর একইভাবে একতা এক্সপ্রেস ঢাকা থেকে জয়দেবপুর স্টেশন হয়ে পঞ্চগড়ের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এখন এক লাইন দিয়ে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। বাকি লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করার জন্য কাজ চলছে।

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে ৪ জন আহত হয়েছেন।

বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, ‘সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।


গাজীপুরে ট্রেন দুর্ঘটনায় ঢাকার সঙ্গে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ বন্ধ

ছবি: ইউএনবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

গাজীপুরের জয়দেবপুর রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগন্যালে দাঁড়িয়ে থাকা তেলের মালবাহী ট্রেনের সঙ্গে কমিউটার ট্রেনের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।

বেলা ১১টার দিকে সংঘটিত এ দুর্ঘটনার পর উভয় ট্রেনের বেশ কয়েকটি বগি লাইনচ্যুত হলে ঢাকাসহ দেশের উত্তর ও পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রেল যোগাযোগ বিঘ্নিত হয়।

জয়দেবপুর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক সেতাফুর রহমান বলেন, সকাল ১০টা ৫০ মিনিটে স্টেশনের দক্ষিণ প্রান্তে সিগন্যালম্যানের ভুলের কারণে ঢাকাগামী টাঙ্গাইল কমিউটার ট্রেনটি গাজীপুরগামী মালবাহী ট্রেনকে ধাক্কা দিলে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় কমিউটার ট্রেনের চারটি বগি এবং মালবাহী ট্রেনের পাঁচটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে কমিউটার ট্রেনের লোকোমাস্টারসহ চারজন আহত হন।

তিনি বলেন, লাইনচ্যুত বগিগুলো রেললাইন থেকে সরানোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।


চাঁপাইনবাবগঞ্জ: খরায় পুড়ছে আম, ফলন বিপর্যয়ের শঙ্কায় চাষীরা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

আমের রাজধানী হিসেবে পরিচিত চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার প্রচণ্ড দাবদাহে আম চাষে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। তীব্র তাপপ্রবাহে বোঁটা শুকিয়ে গাছ থেকে ঝরে পড়ছে আম। পরিস্থিতি সামাল দিতে চাষীরা আমগাছে সেচ ও বালাইনাশক স্প্রে দিলেও তেমন কাজে আসছে না। এ অবস্থা অব্যাহত থাকলে এবার জেলায় আমের মারাত্মক ফলন বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষীরা।

আম উৎপাদনে এ বছর এমনিতেই অফ ইয়ার, অর্থাৎ কম ফলনের বছর। তার উপর বিরূপ আবহাওয়া যেন পিছু ছাড়ছে না আম চাষীদের। মৌসুমের শুরুতেই অতিরিক্ত শীতের কারণে আমের মুকুল এসেছে দেরিতে; মুকুল ফোটার সময় হয়েছে বৃষ্টি। তাতে অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে আম এসেছে কম। এ নিয়ে এমনিতেই মুখে হাঁসি ছিল না চাষী ও বাগান মালিকদের। আর এখন তীব্র দাবদাহে ঝরে পড়ছে আম। ফলে আমের ফলন নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন তারা। যাদের সেচ দেয়ার সুবিধা আছে তারা বাড়তি টাকা খরচ করে বাগানে সেচ দিয়ে ও স্প্রে করে আমের ঝরে পড়া রোধের চেষ্টা করছেন।

জেলার বেশ কয়েকটি এলাকার আম বাগান ঘুরে দেখা গেছে, গাছের নিচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ঝরে পড়া ছোট ছোট আম। অন্যান্য বছর এ সময়ে আমের আকার অনেকটা বড় হয়ে যায়, কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এবার আমগুলো তেমন বড় হয়নি। কোনো কোনো বাগানে ডিজেলচালিত সেচযন্ত্র বসিয়ে গাছের গোড়ায় পানি দেওয়া হচ্ছে। আবার অনেক বাগানে সে সুযোগ নেই। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আম ঝরে পাড়া অব্যাহত থাকায় চাষীদের দুশ্চিন্তার শেষ নেই।

জেলা শহরের আমচাষী আব্দুল অহিদ বলেন, এবার আমের মুকুল এমনিতেই কম হওয়ায় গুটিও খুব কম ছিল, কিন্তু পরবর্তীতে বৃষ্টির দরকার থাকলেও এখন পর্যন্ত বৃষ্টির দেখা নেই, চলছে খরা। বৃষ্টির অভাবে বোটা শুকিয়ে প্রতিদিন ঝরে পড়ছে আম। গাছের গোড়ায় পানি দিয়ে সেচ দিচ্ছি, স্প্রে করছি, কিন্তু তারপরও আমের ঝরে পড়া বন্ধ হচ্ছে না। এছাড়া বৃষ্টি না হওয়ায় আমের আকারও বড় হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

আজাইপুর এলাকার আম চাষী আবদুর রাকিব বলেন, ‘আম নিয়ে মন ভালো নেই। প্রচণ্ড খরায় আম ঝরে পড়ছে। গাছে সেচ দিচ্ছি, ছত্রাকনাশক স্প্রে করছি, কিন্তু কাজ হচ্ছে না। প্রচণ্ড দাবদাহে আম ঝরছে তো ঝরছেই। এ পর্যন্ত তিনবার স্প্রে করলাম, উপাদন খরচ বাড়তেই আছে। তার উপর যদি আমের ফলনে মার খাই তাহলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ব।’

শিবগঞ্জ এলাকার আমচাষী আহসান হাবিব বলেন, ‘এবার শীতের কারণে মুকুল দেরিতে এসেছে। তারপর গত ২০ মার্চ যে বৃষ্টি হয়েছিল, তাতে মুকুলের ক্ষতি হয়েছিল। এখন যে তাপদাহ চলছে এর ফলে গাছে যে আম আছে সেগুলোও ঝরে পড়ছে। ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নেমে যাওয়ায় অনেকে গাছে সেচ দিতে পারছে না। আবার কেউ সেচ দিচ্ছে তো খরচ বেড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থায় আমরা শঙ্কায় আছি যে আমের উৎপাদন কমে যাবে এবং আমরা আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ে যাব।’

একই এলাকার আরেক আমচাষী শামীম বলেন, ‘সামগ্রিক দিক বিবেচনা করলে আমাদের জেলায় এবার আমের অবস্থা খুবই খারাপ। কারণ আমরা যে লক্ষ্য নিয়ে বাগানের পরিচর্যা করেছি বা করে যাচ্ছি, সেই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে এবার আমরা পৌঁছাতেই পারব না। কারণ আমার কাছে মনে হচ্ছে, এবার আমের উৎপাদনে বিপর্যয় ঘটবে।’

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার বলেন, ‘আমাদের চাঁপাইনবাবগঞ্জে এবার আমের মুকুল কম হয়েছে। দেখা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে ও মার্চ মাসে সকালের দিকে ঘন কুয়াশা পড়েছে; সেটা ক্ষতি করেছে। আবার বৃষ্টি হয়েছে, হালকা ঝড়ও হয়েছে; এতে যে আম গাছগুলোতে মুকুল ফুল পর্যায়ে ছিল বৃষ্টিতে সে ফুল নষ্ট হয়ে গেছে। তারপর এখন তীব্র তাপদাহ চলছে। এতে আম ঝরে পড়ছে। সামনে শিলাবৃষ্টি, কালবৈশাখী ঝড়ের আশঙ্কাও থাকছে। ফলে আমরা যে কাঙ্ক্ষিত ফলন চাচ্ছি সেটা হয়তো নাও হতে পারে।’

কৃষি বিভাগের হিসেবে চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৩৭ হাজার ৬০৪ হেক্টর জমিতে আমের চাষ হয়েছে। আর এ থেকে এবার জেলায় আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিকটন। গত মৌসুমে জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ৪ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৫ মেট্রিকটন।


banner close