মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
৩ আষাঢ় ১৪৩২

এসপির ভাড়া দেয়া বাড়িতে নকল সারের কারখানা

কারখানার সামনে ট্রাকে লোড করা টিএসপি সারের বস্তা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত
আরিফুজ্জামান তুহিন
প্রকাশিত : ৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ০৯:২৯

  • আরিফুজ্জামান তুহিন

২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সাভারের হেমায়েতপুরে ট্রিপল সুপার ফসফেট (টিএসপি) সারের একটি নকল কারখানা সিলগালা করে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাড়ে পাঁচ বছর পরে এসেও ওই কারখানায় আবার নকল সার পাওয়া গেছে। কারখানাটি থেকে নকল সার নিয়ে বগুড়ার সরকারি বাফার গোডাউনে গিয়ে সম্প্রতি একটি চালান ধরা পড়েছে।

ওই সময় সার কারখানাটির মালিক ছিলেন যমুনা মিশ্র ফার্টিলাইজারের মালিক সাইদুর রহমান। সিলগালার পর আবারও কারখানা চালু করে সেখানেই নকল সারের ব্যবসা করছিলেন তিনি। সিলগালা হওয়া কারখানাটি দুই বছর আগে চালু হয়েছিল।

দৈনিক বাংলার অনুসন্ধানে দেখা গেছে, পুলিশের রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) ঢাকার কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার মিজানুর রহমানের কাছ থেকে ভাড়া নিয়ে কারখানাটি চালাচ্ছিলেন সাইদুর রহমান। বছর দুয়েক এটি সিলগালা অবস্থায় ছিল। তারপর আবারও ভাড়া নিয়ে একই কাজ করছিলেন তিনি।

সাভার থানার হেমায়েতপুরের আলীপুর ব্রিজসংলগ্ন ৫৩ নম্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশে গোডাউনটির অবস্থান। বাড়িটি চারপাশ উঁচু প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। রয়েছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা। সেখানেই তৈরি হয় নকল সার। গোডাউনটির মালিক মিজানুর রহমান এখনো ঢাকার কমান্ড্যান্ট পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবেই কর্মরত আছেন।

এসপি মিজানের বিরুদ্ধে ২০১২ ও ২০১৭ সালে দুটি পৃথক দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত করেছিল দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযোগ ছিল, তিনি জ্ঞাত আয়বহির্ভূত বিপুল সম্পদ আয় করেছেন। নকল সারের কারখানা পরিচালনা করেছেন। ওই দুটি অভিযোগ থেকেই তিনি মুক্তি পান।

টেলিফোনে এসপি মিজানুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘আমি সেটা আরেকজনকে ভাড়া দিয়েছি। সেখানে কী হয় সেটা আমি জানি না।’ এর আগেও তো এই একই ব্যক্তি সেখানে নকল সার তৈরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন, তাহলে আবার কেন ভাড়া দিলেন, জানতে চাইলে তিনি এর কোনো উত্তর দিতে চাননি।

সরেজমিনে নকল সারের সন্ধানে

গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের পতেঙ্গা টিএসপি কমপ্লেক্স থেকে ছেড়ে আসা ১৭টি ট্রাকের মধ্যে ১২টি ট্রাক ২৮ আগস্ট সকাল ১০টার মধ্যে হেমায়েতপুরে সাইদুর রহমানের গোডাউনে এসে পৌঁছায়। এর মধ্যে ছয়টি ট্রাকের সুনির্দিষ্ট সন্ধান নিতে পেরেছে দৈনিক বাংলা। এগুলো হলো ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-০৫৮৭, ঢাকা মেট্রো-ট-১১-১০৪১, ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৯৩২৩, ঢাকা মেট্রো-ট-১৬-৫৩৮৫, ঢাকা মেট্রো-ট-১৪-০৮৯৯ ও ঢাকা মেট্রো-ট-১৮-৩০১৫। ওপরে ট্রাকগুলোর মধ্যে মেট্রো-ট-১৮-৩০১৫ নম্বরের ট্রাকটিতে গত ২৮ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টায় নকল সার আনলোড করা হয়। নকল সার আনলোডের ভিডিও এই প্রতিবেদক গোপনে ধারণ করেন।

গত ২৮ আগস্ট রাত সাড়ে নয়টা থেকে দশটা পর্যন্ত এই প্রতিবেদক কারখানার ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, হাজার হাজার নকল সারের বস্তা। ট্রাক থেকে আসল সার নামিয়ে আলাদা করে স্তূপকারে রাখা হয়েছে। আর নকল সারের বস্তার মুখ সেলাই করে তোলা হচ্ছে ট্রাকে। নকল টিএসপি কারখানার ভেতরে দেখা যায়, এসিডি মিশিয়ে চুন নরম করা হচ্ছে। তারপর একটি হাঁড়িতে সেই চুন ফেলা হচ্ছে। হাঁড়ি যন্ত্রের সাহায্যে ঘুরছে। কিছু সময় পর সেখান থেকে অবিকল টিএসপি সার বের হচ্ছে। সেই টিএসপি সার শুকানোর পর বস্তায় ভরা হচ্ছে। এরপর সরকারি আসল সার ট্রাক থেকে নামিয়ে সেখানে নকল সার তোলা হচ্ছে।

নকল সারের কারখানা চালানোর অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে সাঈদুর রহমান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এটা আগে করতাম এখন করি না।’

২৮ আগস্ট এই প্রতিবেদক কারখানার ভেতর গিয়ে নকল সার উৎপাদন এবং ট্রাকে বোঝাই করার দৃশ্য ভিডিও করেছে জানালে সাইদুর রহমান বলেন, এখন থেকে আর করব না। চলেন আমরা কোথাও দেখা করি। যেখানে আসতে বলবেন সেখানে আসব।

বগুড়ায় নকল সার যেভাবে ধরা পড়ল

দৈনিক বাংলার এই প্রতিবেদক বগুড়ার বাফার গোডাউনের ইনচার্জ মো. মোস্তফা কামালকে গত ২৯ আগস্ট সকাল ১০.৩০টায় সুনির্দিষ্ট ৬টি ট্রাকের নম্বর দিয়ে জানান, ট্রাকে আসল সারের বদলে নকল সার এসেছে। এই সারগুলো পরীক্ষা করার অনুরোধ জানান তিনি।

টেলিফোনে মোস্তফা কামাল দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘ট্রাকে আসা সার দেখে আমার নকল মনে হয়নি। তারপরও দেখব।’

এ প্রসঙ্গে তাকে পাল্টা প্রশ্ন করা হয়, ‘নকল সার দেখে বোঝার সুযোগ নেই। আপনাকে নকল বুঝতে গবেষণাগারে পাঠাতে হবে।’

গত ২৯ আগস্ট সকালে বগুড়া সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কুমার পাল রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠান নমুনা সার। রাজশাহী মৃত্তিকা সম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটে পাঠানো নমুনা সারের বিষয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর প্রতিবেদন আসে, সেখানে বলা হয় ওই সার আসল নয়, নকল। এদিনই এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে সন্ধ্যায় বগুড়া শহরের তিন মাথা রেলগেট এলাকায় বাফার গুদাম চত্বর থেকে ১৩ জনকে আটক করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১২)।

গত শুক্রবার বগুড়া বাফার টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. মাজহারুল ইসলাম বাদী হয়ে বগুড়া সদর থানায় নকল সার দেয়ার অভিযোগে এমএইচআরের মালিক মো. মোয়াজ্জেম হোসেন ও তার প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বাকি ১৬ ব্যক্তি হলেন ট্রাকের চালক ও চালকের সহকারী।

নকল সারের হোতা যারা

বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) মালিকানাধীন চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় টিএসপি সার কারখানার সার দেশের ২৬টি বাফার গোডাউনে ট্রাকে করে পৌঁছে দেয়ার কাজ পেয়েছে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে এম.এইচ.আর করপোরেশন ও সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে আসল সার বদলিয়ে নকল সার গছিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

চলতি বছরের গত ১৭ মার্চ টিএসপি কমপ্লেক্স লিমিটেডের উপ-মহাব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক) মোহাম্মদ সোলায়মান সৈয়দ এন্টারপ্রাইজের মালিক আহসান হাবিবসহ আরও এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে যশোর কোতোয়ালি থানায় সরকারি টিএসপি পরিবহনকালে চুরি করে নকল টিএসপি দেয়ার অভিযোগে মামলা করেন।

ভেজাল সারে খাদ্য নিরাপত্তা বিঘ্নের শঙ্কা

ঢাকার মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের দুজন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিএসপি ফসফেট সমৃদ্ধ রাসায়নিক সার। এ সারে শতকরা ২০ ভাগ ফসফরাস, ১৩ ভাগ ক্যালসিয়াম এবং ১.৩ ভাগ গন্ধক থাকে। ফসফরাস ফসলের শিকড়ের বৃদ্ধিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশের মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের সাবেক পরিচালক বিশিষ্ট মৃত্তিকা বিজ্ঞানী ড. মো. মকবুল হোসেন টেলিফোনে বলেন, নকল সারে যে উপাদান থাকার কথা সেটা থাকে না। এখন গাছে নানান ধরনের নিউট্রিয়েন্টস বা অনুখাদ্যের প্রয়োজন হয়। যদি গাছ সেগুলো পর্যাপ্ত না পায় তাহলে গাছের ফলন কমে যাবে। কৃষক টিএসপি ভেবে টাকা দিয়ে সার কিনল কিন্তু সেটি আসলে টিএসপি না। এটা কৃষকের সঙ্গে প্রতারণা।


হারিয়ে যাচ্ছে বর-কনের বাহন পালকি

গ্রামবাংলার ঐতিহ্য পালকি। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৭ জুন, ২০২৫ ১৮:০৯
নজরুল ইসলাম লিখন, রূপগঞ্জ

পালকি ছিল এক সময় গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য, বর-কনের বাহন। এটা ছাড়া বিয়ের কথা ভাবাই যেত না। সারা দেশের মতো রূপগঞ্জেও একই অবস্থা ছিল। কালের বির্বতনে চিরায়ত গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের ধারক পালকি রূপগঞ্জে আজ আর চোখে পড়ে না। পালকি এখন মিউজিয়াম পিস হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে আছে জাদুঘরে। বেহারাদের সুর করে সেই গ্রাম ঘুরে মাঠ-ঘাট-প্রান্তর পেরিয়ে গন্তব্যের কাছে দূর থেকে সেই ছয় বেহারাদের আর দেখা যাচ্ছে না। তাদের ছন্দিত লয়ে হাঁটার সঙ্গে সঙ্গে এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে নাইয়র, বিয়ের কনে বর কিংবা মান্যগন্য ব্যক্তিদের নিয়ে যাওয়ার এ চক্রবিহীন যান সম্ভবত তার অন্তিম যাত্রা করেছে। ছন্দের জাদুকর সত্যেন্দ্রনাথ দত্তের ভাষায়, রবীন্দ্রনাথের কবিতায়, হেমন্তের গানে কিংবা ভুপেন হাজারিকার মাদল তালে চলা পালকি এখন ঐতিহ্যের খাতায় নাম লিখিয়েছে।

সেই ন্যাংটা পুঁটো ছেলেটা আর বলে না পালকি চলে পালকি চলে.....আদুল গাঁয়ে যাচ্ছে কারা হনহনিয়ে। রবি ঠাকুরের ‘বীর পুরুষ’ কবিতার খোকা তার মাকে পালকিতে নিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদের সাথে লড়ে যখন ওরা আসে তেড়ে ‘হারে রে রে’ বলে। সেই ভীষণ যুদ্ধের বর্ণনাও দিতে পারে না মাকে। মাও বলতে পারে না, ভাগ্যেস খোকা ছিল তার সঙ্গে। দাদা তার সদ্য বিয়ে হওয়া দিদিকে আর বলে না, আর কটাঁ দিন থাক না দিদি, কেঁদে কেটে কঁকিয়ে, দুদিন বাদে তো নিয়েই যাবে পালকি করে সাজিয়ে। ‘মৈমনসিং গীতিকার’ দেওয়ানা মদিনা ও ছুটবে না পালকিতে আবের পাংখা নিয়ে আর পালকি বহরের সেই পরিচিত দৃশ্য এখন আর দেখা যায় না।

আধুনিক যোগাযোগের গোগ্রাসে পালকি হারিয়ে যাচ্ছে বিস্মৃতির অতল তলে প্রাচীন বাংলার এ বাহনটি। এক সময় গ্রাম-বাংলার হাটবাজারে পালকি সাজিয়ে রাখা হত। বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার আগেই পালকিওয়ালাদের কাছে ছুটে যেতেন বরের লোকজন। পালকি কাঠ দিয়ে তৈরি করা হতো। ছয়জন মিলে পালকি বহন করতো। সামনে পেছনে দুজন ও মাঝখানে দুজন করে পালকি কাঁদে নিত। প্রথমে বরকে পালকিতে করে তার নিজ বাড়ি থেকে কনের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হতো। বিয়ের কার্যক্রম সম্পূর্ণ হওয়ার পর বর-কনেকে এক সঙ্গে আবার বরের বাড়িতে নিয়ে আসতো।

আসলে পালকি নামটির উৎপত্তি ফারসি ও সংস্কৃত উভয় ইন্দো ভারতীয় ভাষা থেকে আর সেই সঙ্গে ফরাসি থেকেও। পল্লীকবি জসিম উদ্দিন তাঁর স্মৃতি কথায় এ গাঁ থেকে ওগাঁয়ে যাওয়া বেহারাদের পালকি নিয়ে চলার যে বিবরণ দিয়েছেন তা আমাদের আবহমান গ্রামবাংলার ঐতিহ্যের অংশ। বিলুপ্ত এ পালকি এখন বিভিন্ন জাদুঘরে শোভা পাচ্ছে। বিয়ে বাড়িতে নব বর-বধুদের আনা নেয়ায় পালকি ব্যবহার করা হতো। চক্রযানের বিপ্লবে পালকির জায়গা দখল করে নিয়েছে আধুনিকতার এ যুগে প্রাইভেটকার, নোহা, বাস ও মাইক্রোবাস। হালের লাঙ্গল যেমন গ্রামেও অচল তেমনি ধনী গরিব নির্বিশেষে সকলের নানা অনুষ্ঠানে ব্যবহার করছে আধুনিক যান্ত্রিক যানবাহন। এসব যানের রমরমা ব্যবসাও এ কারণেই জমে ওঠেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় ইদানিং বর-কনের বাহনে যোগ হয়েছে হেলিকপ্টারও। রূপগঞ্জের মুড়াপাড়া এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে বর যাত্রা গিয়েছেন সফিক মিয়া। হেলিকপ্টারে বর-কনে বহনের ঘটনা তখন পুরো এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল। ছড়ায় বলা হতো বউ সাজবে কালকি, চড়বে সোনার পালকি! সোনার বরনী কন্যা এখন আর পালকিবদ্ধ পরিবেশে যাবে না, উঠবে আসল বা নকল ফুলের সাজানো এয়ারকন্ডিশন গাড়িতে।


পাবনায় বাস- ট্রাক মুখোমুখি সংঘর্ষে ট্রাকচালক নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা প্রতিনিধি

মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর সাড়ে চারটার দিকে পাবনা বাইপাস মহাসড়কের ইয়াকুব ফিলিং স্টেশন এর সামনে দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত ট্রাকচালক সেলিম হোসেন (৩৮) মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার সাহারবাটি গ্রামের মৃত আব্দুল গনির ছেলে।

আহতরা হলেন- বাসের হেলপার তারেক (৩৫) ট্রাকের হেল্পার আলামিন (৩৫)। তাদের রাজশাহী মেডিকেল। কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, ট্রাকচালক সেলিম সুনামগঞ্জ থেকে পাথর ভর্তি করে মাওয়া যাচ্ছিলেন।অপরদিক পাবনা এক্সপ্রেস বাসটি ঢাকা থেকে পাবনা বাস টার্মিনালে যাত্রী নামিয়ে হেলপার আলামিন গাড়ি গ্যারেজ করার জন্য দ্রুতগতিতে গাড়ি চালিয়ে ইয়াকুব ফিলিং স্টেশনের সামনে পৌঁছালে ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

স্থানীয় লোকজন ফায়ার সার্ভিসকে জানালে তাৎক্ষিনক ফায়ার সার্ভিসের একটি টিম আহত তিনজনকে উদ্ধার করে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ট্রাক চালক সেলিম কে মৃত ঘোষণা করেন।

অপরদিকে আহত ট্রাকের হেলপার ও বাসের হেলপারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্থানান্তর করা হয়।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুস সালাম জানান, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে সদর থানা হেফাজতে আনা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাক ও বাসটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


নৌকা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে আওরাখালী বাজারের কারিগররা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের আওরাখালী বাজারে বর্ষার আগমনের আগেই শুরু হয়েছে নৌকা তৈরির ব্যস্ততা। বেলাই বিল ঘিরে গড়ে ওঠা এই ঐতিহ্যবাহী নৌকার বাজারে ইতোমধ্যে কাঠমিস্ত্রিরা দিনরাত পরিশ্রম করে তৈরি করছেন নানা আকার-আকৃতির কাঠের নৌকা। বর্ষার পানিতে ভাসিয়ে মাছ ধরা, কৃষিকাজ কিংবা সাধারণ যাতায়াতের জন্য এসব নৌকা স্থানীয় মানুষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।

স্থানীয়দের মতে, এই বাজারে প্রায় বিশটির বেশি দোকান বা কাঠের কারখানা রয়েছে, যেখানে কাজ করছেন শতাধিক শ্রমিক। নৌকা তৈরির মৌসুম শুরু হতেই এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। কাঠের উপর নির্ভরশীল এই শিল্পটি শুধু বর্ষাকালেই নয়, বছরের অনেকটা সময় জুড়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করছে এলাকার বহু মানুষের জন্য।

একজন অভিজ্ঞ কারিগর জানান, "আমরা ছোট-বড় নানা আকারের নৌকা তৈরি করি। চাহিদা অনুযায়ী ডিজাইন এবং কাঠ ব্যবহার করে নৌকা বানানো হয়। ছোট নৌকার দাম শুরু হয় আট হাজার টাকা থেকে, আর বড় নৌকার দাম গিয়ে ঠেকে প্রায় ৩০ হাজার টাকায়।"

নৌকা কিনতে আসা এক কৃষক বলেন, "প্রতি বছর বর্ষার আগে একটা নৌকা কিনতে হয়। বিলের ভেতর যাতায়াত, ফসল তোলা আর মাছ ধরার কাজে এটি খুবই দরকারি।"

এই বাজারের ব্যবসায়ীরা মনে করেন, সরকারি সহায়তা পেলে এই নৌকা শিল্প আরও প্রসারিত হতে পারে। নৌকা রপ্তানির সুযোগ সৃষ্টি হলে দেশের বাইরেও এই হস্তশিল্পের পরিচিতি ছড়িয়ে পড়তে পারে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন অনেকেই।

প্রাকৃতিক জলাভূমিকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা আওরাখালীর এই নৌকা বাজার শুধুই ব্যবসার স্থান নয়—এটি গ্রামীণ জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। বর্ষা যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই যেন এখানে নতুন জীবনের স্পন্দন ফিরে আসছে।


চট্টগ্রামের কোনো হাসপাতালে নেই করোনার বিশেষ প্রস্তুতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে আবারও বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। গত ছয় দিনে মোট ৯ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে ৫ জন পুরুষ এবং ৪ জন নারী। বর্তমানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে ৩ জন করোনা রোগী ভর্তি আছেন। যেকোনো সময় রোগীর সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। অথচ ঘোষিত দুই করোনা বিশেষায়িত হাসপাতালে আইসোলেশন বেড প্রস্তুত করা ছাড়া আর কোনো প্রস্তুতি নেওয়া হয়নি। তবে হাসপাতালসংশ্লিষ্টরা বলছেন, সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে কোনো বিধিনিষেধ মানা হচ্ছে না। টিকিট কাউন্টার, ল্যাব, জরুরি বিভাগ, ডাক্তারের কক্ষ, ঔষধাগার সব জায়গায় রোগীদের ভিড়। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখা হচ্ছে না। তা ছাড়া কারও কারও মুখে মাস্কও নেই।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালের ১৮টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ১৭টির ভেন্টিলেটর নষ্ট। মাত্র একটি সচল থাকলেও মাঝে মধ্যে সেটিও বন্ধ হয়ে যায়। অথচ ২০২০ সালে করোনা মহামারির শুরুতে এখানে প্রথমে ১০টি, পরে আরও ৮টি আইসিইউ বেড স্থাপন করা হয়। মোট ১৮টি নিবিড় পরিচর্যা বেড স্থাপন করলেও এখন সেগুলোর যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ে আছে। এগুলো মেরামতের জন্য ঢাকা থেকে লোক আসবে। সেগুলো দ্রুত মেরামতের চেষ্টা অব্যাহত আছে। ১৮টি আইসিইউ বেডের মধ্যে ৮টিতে রোগী ভর্তি করা হলেও মাত্র একটির ভেন্টিলেটর চালু আছে। বেশির ভাগ মনিটর নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে হাসপাতালে কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সেবা চালু থাকলে হাইফ্লো নজেল অক্সিজেন ও অন্য যন্ত্রপাতি প্রয়োজন।

হাসপাতালের পরিসংখ্যান দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট রয়েছে। হাসপাতালে সরকার অনুমোদিত পদের সংখ্যা সব মিলিয়ে ২৪২টি। বর্তমানে সংযুক্তি, ওএসডি, নিয়মিতসহ ১২৬ জন ডাক্তার আছেন। নার্স আছেন ১৩৪ জন। চিকিৎসক, নার্স, স্টাফসহ মোট জনবল আছে ৩৫৬ জন। তবে সবাই নিয়মিত নয়। ২০২০ সালে করোনা রোগীদের জন্য এখানে ২২ জন চিকিৎসককে আনা হলেও বর্তমানে তারা কেউই নেই। সবাইকে ইতোমধ্যে বদলি করা হয়েছে। ২০২৪ সালের কাঠামো অনুযায়ী হাসপাতালে ১৭৭ জন ডাক্তার থাকার কথা থাকলেও আছেন মাত্র ৪২ জন। এর মধ্যে ২০ জন চিকিৎসক বিভিন্ন বিভাগে প্রশাসনিক পালন করছেন। সে জন্য রোগীদের নিয়মিত চিকিৎসাসেবা দিতে পারেন না।

হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত তত্ত্বাবধায়ক ডা. একরাম হোসেন বলেন, ‘মেডিসিন ওয়ার্ডে ২০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে। করোনা রোগীদের জন্য ৫টি আইসিইউ বেড প্রস্তুত করা হয়েছে। বাকি সব আইসিইউ শিগগিরই প্রস্তুত হয়ে যাবে। সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে। আমরা ইতোমধ্যেই ডাক্তার, নার্সসহ জনবল বাড়ানোর জন্য অধিদপ্তরে বলেছি। করোনা পরীক্ষার জন্য ২ হাজার কিটের জন্য আমরা চাহিদা পাঠিয়েছিলাম। সেগুলো আসা শুরু হয়েছে। শিগগিরই আমরা করোনা পরীক্ষা শুরু করতে পারব।’

জেলা সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমাদের ৪০ হাজার কিটের চাহিদা দেওয়া আছে। আপাতত ১ হাজার কিট এসেছে। আমরা যেখানে যত প্রয়োজন কিট দেব। বেশি প্রয়োজন হলেও আনা যাবে। আতঙ্কিত না হয়ে সবাইকে সচেতন, সতর্ক হওয়ার অনুরোধ করছি।’

এদিকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) আওতাধীন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মাতৃসদন ও শিশু হাসপাতাল (মেমন-২) এর পরিস্থিতিও একই। ৫০ শয্যার এই হাসপাতালে ডাক্তার আছেন মাত্র ৪ জন ও নার্স আছেন ১৪ জন। হাসপাতালের তৃতীয় তলায় ১০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

জানতে চাইলে চসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. হুসনে আরা বলেন, ‘আমাদের ১০টি আইসোলেশন বেড প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়া আমাদের অন্য কোনো প্রস্তুতি নেই। ঈদের ছুটি থাকায় আপাতত রোগীর সংখ্যা কম। চসিক মেয়র বলেছেন করোনা পরীক্ষার জন্য আমাদের কিট কিনে দেওয়া হবে। এরপর আমরা পরীক্ষা শুরু করব। আমাদের হাসপাতালে অক্সিজেন আছে; কিন্তু সেন্ট্রাল অক্সিজেন ব্যবস্থা, আইসিইউ ব্যবস্থা নেই। বাইরে থেকে করোনা পরীক্ষা করে আমাদের এখানে আইসোলেট করা যাবে।’


নওগাঁয় ৫২ কেজিতে আমের মন, প্রশাসনের নিয়ম মানছে না ব্যবসায়িরা

নওগাঁর আমের বাজার। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁয় বাজারে উঠতে শুরু করেছে আম। বাজারে ক্ষীরসাপাত/হিমসাগর, নাক ফজলি, ল্যাংড়া/হাড়িভাঙ্গা ও আম্রপালি আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে প্রশাসনের নিয়ম মানতে চান না ব্যবসায়িরা। ব্যবসায়িদের আগমন কম হওয়ায় ও সিন্ডিকেটের কারণে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় হতাশ আম চাষীরা। এতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে চাষীদের। প্রশাসনের নজরদারী বাড়ানোর দাবী চাষীদের।

জেলার সাপাহার উপজেলা সদরে বৃহৎ আমের বাজারে প্রায় ৩৫০টি আড়ৎ রয়েছে। এখন পর্যন্ত চালু হয়েছে ৮০-৯০ টি। যেখানে প্রতিদিন অন্তত ৮-১০ কোটি টাকার বাণিজ্য হচ্ছে। যা স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হচ্ছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে- এ বছর জেলায় আম বাগানের পরিমাণ ৩০ হাজার ৩০০ হেক্টর। যা থেকে প্রায় ৪ লাখ টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা থেকে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার অধিক বাণিজ্যের আশা।

বরেন্দ্র এলাকা হওয়ায় এ জেলার আম অত্যন্ত সুস্বাদু । ফলে দেশজুড়ে আমের বেশ কদর রয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকা সহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ হয়ে থাকে। দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বাজারে আসতে শুরু করেছে আম। সাপাহার উপজেলা সদরে জিরো পয়েন্টে আমের বৃহৎ বাজার। আমের ভরা মৌসুমে জিরো পয়েন্ট থেকে গোডাউনপাড়া পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের এক পাশে বসে আমের বাজার। তবে মৌসুমের শুরুতে এক কিলোমিটার জুড়ে বাজার বসেছে। বাজারে ল্যাংড়া, খিরসা/ হিমসাগর, নাকফজলি, হাড়ি ভাংগা, আম্রপালি ও ব্যানানা ম্যাংগো পাওয়া যাচ্ছে।

চাষীরা বাগান থেকে আম পেড়ে সকাল থেকে ভ্যান, ভটভটি সহ বিভিন্ন যানবাহনে করে এ বাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে আসছে। তবে ব্যবসায়িদের আনাগোনা কম থাকায় বেচাকেনা কম। বিক্রির জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে চাষীদের। আবার দামও তুলনামুলক কম। প্রতিমণ আম ল্যাংড়া ৮০০-১৫০০ টাকা, নাকফজলি ও খিরসা/ হিমসাগর ১২০০-১৬০০ টাকা, হাড়ি ভাংগা ১৫০০-২৫০০ টাকা, আম্রপালি ২২০০-২৮০০ টাকা এবং ব্যানানা ম্যাংগো ২৫০০-২৮০০ টাকা মন দরে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর আম সংগ্রহের যে সময়সূচী নির্ধারণ করা হয়েছে তা কাজে আসছে না। প্রচন্ড গরমে আম পেঁকে ঝরে পড়ছে। এ কারণে সব ধরনের আম প্রায় ১০ দিন আগেই বাজারে চলে আসছে।

আম চাষীদের দীর্ঘ দিনের দাবী ছিল কেজি দরে আম বেচা-কেনা। দাবীর প্রেক্ষিতে গত ৫ জুন রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে কেজি দরে আম বেচাকেনা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ী, আড়ৎদার ও আম চাষীদের নিয়ে আলোচনা হয়। কেজিদরে আম বেচাকেনার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টোচিত্র। ব্যবসায়িদের সিন্ডিকেটের কাছে হার মানছে চাষীরা। তারা ক্যারেট সহ ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে আম বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছে। কেজি দরে আম বেচা-কেনা করতে সাপাহার উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমের বাজারে সচেতনতামুলক মাইকিং করা হলেও বাস্তবে তা হচ্ছে না। প্রশাসনের দায়সারা ভাব মনে করছেন আম চাষীরা।

আম চাষীরা বলছেন, ‘মৌসুমের শুরু থেকে অনাবৃষ্টি ও প্রচন্ড খরা বিরাজ করছিল। গাছে মুকুলের পরিমান বেশি দেখা দিলেও আম আসার পরিমাণ ছিল কম। ভাল দাম পাওয়ার কথা থাকলেও তার উল্টোচিত্র। আম চাষীদের দীর্ঘদিনের দাবীর প্রেক্ষিতে কেজি দরে আম বেচা-কেনার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তবে কেজি দরে আম বেচাকেনা চালু হলে লাভবান হবেন চাষীরা।

উপজেলার কোরালডাঙ্গা গ্রামের আম চাষী আব্দুল মতিন বলেন, তিনবিঘা জমিতে আম্রপালি জাতের আমবাগান রয়েছে। প্রচন্ড গরমের কারণে গাছ থেকে আম ঝরে পড়ছে। বাধ্য হয়ে আম নামাতে হচ্ছে। কিন্তু বাজারে আমের দাম ভাল পাওয়া যাচ্ছে না। গত বছর মৌসুমের শুরুতে তিন হাজার টাকার ওপরে মণ বিক্রি হয়েছে। আর এ বছর ‍দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা মণ। আবার ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে বিক্রি করতে হচ্ছে। ব্যবসায়িরা কেজি দরে কিনতে চাচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে আগের নিয়মে দিতে হচ্ছে।

সাপাহার গোডাউন পাড়ায় বরেন্দ্র এগ্রো পার্ক এর উদ্যোক্তা আম চাষী সোহেল রানা বলেন- কেজি দরে আম বেচাকেনা নিয়ে আম চাষীদের দীর্ঘ দিনের দাবীর প্রেক্ষিতে রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে সবার সম্মতিক্রমে এক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। কেজি দরে আম বেচাকেনার কথা থাকলেও বাস্তবে তার উল্টোচিত্র দেখা যাচ্ছে। তারা কেজি দরে আম কিনতে চাচ্ছেন না। আড়ৎদার ও ব্যবসায়িরা সিন্ডিকেট করে আম বেচা-কেনা বন্ধ করে দেয়। প্রশাসন শুধু মাইকিং করে দায় সারতে চাচ্ছেন। কেজি-দরে আম বেচাকেনা বাস্তবায়ন করতে প্রশাসনের সহযোগিতা প্রয়োজন। এটা বাস্তবায়ন হলে আম চাষীরা লাভবান হবে।

সাপাহার আড়ৎদার সমিতির সভাপতি শ্রী কার্তিক সাহা বলেন, ‘প্রশাসনের নিয়ম মানতে চান না ব্যবসায়িরা। কেজি দরে আম না কিনে ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে কিনছেন তারা। ওজন বিভ্রান্ত হওয়ায় অনেক ব্যবসায়ি এখনো এ বাজারে আসছে না। এতে অর্থনৈতিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হতে হচ্ছে। আমের মণের ওজন নির্ধারণ করা না হলে ব্যবসায়িরা আসতে চাচ্ছে না। অন্য জেলাগুলোতে আগের নিয়মে আম বেচা-কেনা হচ্ছে। তিনি বলেন- কেজি দরে আম কেনা হলে বাছাই করে ভালগুলো কেনা হচ্ছে। এতে করে আম চাষীরা চিল্লাপাল্লা করছে। তারাও এ ঝামেলা চাননা বলেন গড় ৫০-৫২ কেজিতে মণ হিসেবে বিক্রি করছে।

নওগাঁর জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল আউয়াল বলেন, ‘চলতি মাসের শুরুর দিকে রাজশাহী বিভাগীয় পর্যায়ে কেজি দরে আম বেচা-কেনা নিয়ে উপজেলা প্রশাসন, ব্যবসায়ী, আড়ৎদার ও আম চাষীদের সাথে আলোচনা হয়। ইতোমধ্যে জেলায় আম বেচাকেনা শুরু হয়েছে।’


কীটনাশক ও বিষমুক্ত ফল, সবজি ও ফসল আবাদে ফুলবাড়িয়ায় পার্টনার কংগ্রেস

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

কীটনাশক ও বিষমুক্ত ফল, সবজি ও ফসল আবাদের লক্ষ্যে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল অ্যান্ড রুরাল ট্রান্সফরমেশন ফর নিউট্রিশন, এন্টারপ্রেনরশিপ অ্যান্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) এর আওতায় পার্টনার কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছে।

গতকাল সোমবার (১৬ জুন) উপজেলা কৃষি বিভাগের আয়োজনে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আরিফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ি ময়মনসিংহের উপ-পরিচালক ড. মোছাঃ নাছরিন আক্তার বানু।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি ফসলি জমিতে কীটনাশক ব্যবহারে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় শরীরে পিপিই ও মাস্ক পড়ে কীটনাশক স্প্রে করার বিষয়ে গুরুত্বরোপ ও নির্দেশনা প্রদান করেন।

ড. মোছাঃ নাছরিন আক্তার বানু বলেন, ফুলবাড়িয়া উপজেলার মাটি অনেক ভালো। ফসলি জমিতে আগাছা সরাতে হবে, তাহলে আবাদ আরও বেশি ভালো হবে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে মানবদেহে মারাত্মক প্রভাব পড়ে।

এসময় তিনি আরও বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কীটনাশক ও বিষমুক্ত ফল, সবজি ও ফসল উৎপাদনে বিশেষ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। মাঠপর্যায়ে এ কার্যক্রম ইতিমধ্যেই ভালো সাড়া ফেলেছে।

এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন, উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ নূর মোহাম্মদ। অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার আ র ম আতিকুর রহমান, বাকতা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাখন, কালাদহ ইউনিয়নের নজরুল ইসলাম মাস্টার, কৃষক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, কৃষানী আকলিমা আক্তার প্রমুখ।


গৃহস্থরা ওজনে আর খুচরা আম ক্রেতারা ঠকছেন দামে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জয়পুরহাট প্রতিনিধি

গৃহস্থদের কাছ থেকে ৭০০-৮০০ টাকায় ৪৫ কেজিতে এক মণ নাক ফজলি আম কিনছেন পাইকারি দোকানিরা। তারা সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে এক মণ বিক্রি করছেন। প্রতি মণ আমে নিচ্ছেন ৫ কেজি ধলতা। এতে গৃহস্থরা ওজনে আর খুচরা আম ক্রেতারা দামে ঠকছেন। পাইকারি বিক্রেতারা প্রতি মণে অর্ধেকেরও বেশি টাকা লাভ করছেন। জয়পুরহাটের আক্কেলপুর পৌর শহরে রেলগেট এলাকায় এভাবেই সিন্ডিকেট করে আম বেচাকেনা হচ্ছে। খুচরা ক্রেতারা ও গৃহস্থরা আম ক্রয়-বিক্রয়ে প্রশাসনের নজরদারির দাবি জানিয়েছেন।

নওগাঁর বদলগাছি উপজেলায় প্রচুর নাক ফজলি আমের উৎপাদন। বদলগাছির এই নাক ফজলি আম অনান্য এলাকার চেয়ে সুস্বাদুও। প্রতি বছর আমের মৌসুমে আক্কেলপুর পৌর শহরের কিশোর মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়কে আমের পাইকারি বাজার বসে। এবারও আমের পাইকারি বাজার বসছে। প্রতিদিন ভোর ৫টা থেকে ৭টা পর্যন্ত আম বেচাকেনা হয়। বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন ও পাইকারিরা এসে আম কিনেন।

গৃহস্থ ও খুচরা আম ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদের আগে নাক ফজলি আম ১ হাজার ৪০০ টাকা মণ বিক্রি হয়েছে। ঈদের পর নাক ফজলি আমের আমদানি বেড়েছে। এ কারণে আমের মণে ৬০০ থেকে ৪০০ টাকা দাম কমেছে। ৪০ কেজিতে মণ হলেও পাইকারিরা গৃহস্থদের কাছে ৪৫ কেজি মণে আম কিনছেন। পাইকারিরা দোকানে সেই আম ১ হাজার ২০০ টাকায় ৪০ কেজিতে মণ বিক্রি করছেন।

বদলগাছির ভাণ্ডারপুর গ্রামের গৃহস্থ মনোয়ার হোসেন বলেন, আক্কেলপুর বাজারে ৮০০ টাকা দরে তিন মণ আম বিক্রি করেছি। তিন মণ আমে আমাকে ১৫ কেজি আম বেশি দিতে হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে তাদের কাছে ৪৫ কেজিতে পাইকারিরা আম কিনছেন। এটি চরম অন্যায়। আমরা প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

খুচরা বিক্রেতা বেলাল হোসেন বলেন, রেলগেট এলাকার দোকান থেকে এক মণ নাক ফজলি আম ১ হাজার ২০০ টাকায় কিনলাম। দোকানিরা প্রতি মণে ৪০০-৫০০ টাকা লাভ করছে। আবার গৃহস্থদের কাছে নেওয়া ওজন দিচ্ছেন না। মৌসুমি আম বিক্রেতা হারুন বলেন, ৪৫ কেজিতে আম বিক্রি হয়। আমরা দূরে নিয়ে গিয়ে আম বিক্রি করি। তবে রেলগেট এলাকার দোকানিরা একটু বেশি দামে বিক্রি করছেন।


জেলের জালে ধরা পড়ল ২৩ কেজির কোরাল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর কুয়াকাটা সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে মামুন জমাদ্দার (৪০) নামে এক জেলের জালে ২৩ কেজি ওজনের বিশাল একটি সামুদ্রিক কোরাল মাছ ধরা পড়েছে। পরে মাছটি ২৪ হাজার টাকায় বিক্রি করা হয়।

গতকাল রোববার সকালে কুয়াকাটা মাছ বাজারের মনি ফিস নামে মৎস্য আড়তে মাছটি বিক্রি করার জন্য আনা হয়। ডাকের মাধ্যমে ১ হাজার ৫০ টাকা কেজি দরে ২৪ হাজার ১৫০ টাকায় মাছটি কিনে নেন কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ।

জানা গেছে, পটুয়াখালীর মহিপুর সদর ইউনিয়নের নিজামপুর গ্রামের জেলে মামুন জমাদ্দার ১২ জুন রাতে সমুদ্রে জাল ফেলেন এবং ১৪ জুন রাতে জাল তুললে তিনি তার জালে এই বিশাল আকৃতির সামুদ্রিক কোরাল মাছটি পান।

জেলে মামুন জমাদ্দার বলেন, এত বড় মাছ পাব সেটা ভাবতেও পারিনি। প্রায় দুই মাস মাছ ধরতে পারিনি। কারণ মাছ ধরায় সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। এই অবরোধের পর মাছটি পেয়ে ভালো দামে বিক্রি করতে পেরে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হয়েছি। মাছটির ক্রেতা কুয়াকাটা মাছ বাজারের ব্যবসায়ী মো. মোস্তাফিজ বলেন, আমাদের এলাকায় বড় বড় হোটেলগুলোতে সামুদ্রিক বড় কোরাল মাছের চাহিদা রয়েছে। আশা করছি মাছটি বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ করতে পারব। তবে এলাকায় বিক্রি না হলে ঢাকায় পাঠিয়ে দেব।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে জেলেরা সমুদ্রে মাছ ধরতে নেমেছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই জেলেদের জালে বড় মাছ ধরা পড়বে। জেলেরা সঠিকভাবে নিষেধাজ্ঞা পালন করেছে বিধায় সামনের দিনগুলোতে তাদের জালে ভালো সংখ্যক মাছ ধরা পড়বে।


দুর্ভোগের আরেক নাম শ্যামনগর বুড়িগোয়ালিনী খেয়াঘাট

আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৫ ১৬:১০
রবিউল ইসলাম, শ্যামনগর (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

দুর্ভোগের আরেক নাম সুন্দরবন সংলগ্ন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনী গাবুরা খেয়াঘাটটি। দীর্ঘদিন ধরে চরম দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন শতশত মানুষ ঝুকি নিয়ে খোলপেটুয়া নদীটি পার হচ্ছে। সংস্কারের অভাবে শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাটের বেহাল দশার সৃষ্টি হয়েছে। এতে স্থানীয়দের দুর্ভোগ দিনে দিনে চরম আকার ধারণ করছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটকে পারে, এমন টি জানিয়েছে ভুক্তভোগী মহল।

খোলপেটুয়া নদীর এই ঘাট দুটি বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়নে পারাপারের একমাত্র মাধ্যম।

স্থানীয়রা জানান, খেয়াঘাটের খুব খারাপ অবস্থা। প্রবীণ নারী-পুরুষ, গর্ভবতী নারী বা অসুস্থ রোগী ও শিক্ষার্থীদের পারাপারে খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়। অনেক সময় দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। বর্ষাকালে তাদের দুর্ঘটনার ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়।

বোট মাঝি আলামিন বলেন, এই ঘাটে আমাদের বোট ধরতে (ঘাটে ভিড়াতে) বেশ সমস্যায় মধ্যে পড়তে হয়। ধরার জন্য ভালো কোন জায়গা নেই। বিশেষ করে ঝড় আর তুফানের সময় বেশ বেগ পেতে হয়। মোটরসাইকেল তোলা খুব কষ্টকর হয়ে যায়। ভুক্তভোগী আনোয়ারা বেগম বলেন, নারীদের নৌকায় উঠতে বেশ সমস্যা হয়। কারো সাহায্য ছাড়া ওঠা সম্ভব নয়।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ রবিউল ইসলাম বলেন, বুড়িগোয়ালিনী পাড়ের খেয়াঘাটটি সম্পুর্ন ভাবে চলাচলে অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এঘাট দিয়ে ওঠা নামা করার সময় প্রায় সাধারন মানুষ দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে। ওই এলাকার শতশত ভুক্তভোগী মহল বুড়িগোয়ালিনী-গাবুরা খেয়াঘাট সংস্কারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।


কুষ্টিয়ায় সেনাবাহিনীর অভিযানে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার

উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে সেনাবাহিনী ও পুলিশের যৌথ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ উদ্ধার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সোমবার (১৬ জুন) ভোর রাতে এই অভিযান চালানো হয়েছে বলে জানাগেছে। দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ প্রতিবেদককে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

আস আই আরও বলেন, উপজেলার হোগলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সোনাইকুন্ডি গ্রামে আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরীর ছোট ভাই মিন্টু চৌধুরীর বাড়ির এরিয়ায় রবিবার দিবাগত ভোর ৪ টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান পরিচালনা করেন।

পরিচালিত এ অভিযানে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক নলয়ালা বন্দুকের ১টি বাট ও ১টি পাইপ, ৪০টি গুলির ঠোশ, ৬টি ফালা (বল্লভ), ৬টি রামদা, ১টি চাকু ও ১টি বন্দুকের পাইপ পরিষ্কার করার ব্রাশ উদ্ধার করা হয়। পরিচালিত অভিযানে কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এ ঘটনায় দৌলতপুর থানার ডিউটি অফিসার এস আই পলাশ বলেন, পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধারকৃত অবৈধ দেশীয় অস্ত্র ও আগ্নেয় অস্ত্রের বিচ্ছিন্ন অংশ দৌলতপুর থানায় জব্দ আছে এবং আইনি প্রক্রিয়ায় মামলার প্রস্তুতি চলছে। এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।


সোনারগাঁ পৌরসভার কর্মচারীর বিরুদ্ধে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে রাতের আঁধারে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরির অভিযোগ ওঠেছে পৌরসভার এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে। পৌরসভার খণ্ডকালীন কর্মচারী (গাড়ি চালক) শ্যামল মিয়ার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ ওঠে। গত শুক্রবার রাতের আঁধারে নৈশ প্রহরী আবুল হোসেনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে একটি ময়লা টানার গার্ডেজ পিকআপ ভ্যানের চাকা খুলে নিয়ে যায়। গাড়ির চাকা খুলে নেওয়ার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়। পরে গত শনিবার বিকালে খুলে নেওয়া চাকা ফেরত দিয়ে যায় গাড়িচালক শ্যামল মিয়া।

বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার বিভিন্ন গাড়ির যন্ত্রাংশ উধাও হয়ে যায় বলে জানিয়েছেন পৌর কর্মচারীরা। এছাড়া পৌর এলাকার নয়টি ওয়ার্ডে ময়লা আর্বজনা ফেলার ৯টি লোহার তৈরি ডাস্টবিনের হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। সেই ডাস্টবিনের রক্ষণাবেক্ষণ গাড়িচালক শ্যামল মিয়া করে থাকেন বলে পৌরসভার একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে জানিয়েছেন পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মাশরেকুল আলম।

জানা যায়, সোনারগাঁ পৌরসভার খাস নগর দিঘিরপাড় গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে মো. শ্যামল মিয়া দীর্ঘ ৮ বছর ধরে সোনারগাঁ পৌরসভার ময়লার গাড়ি, পানির গাড়ি, ভেকু, রোড রুলারসহ বিভিন্ন গাড়িচালক হিসেবে কর্মরত আছেন। সেই গাড়িগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব তিনিই করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন সময়ে পৌরসভার গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশ উধাও হয়ে যায়। গত শুক্রবার রাত পৌনে ১১টার দিকে পৌরসভার নৈশ প্রহরী আবুল হোসেনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে ময়লার গাড়ি পিকআপ ভ্যানের একটি চাকা খুলে নিয়ে যায়। পরে বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন গত শনিবার বিকালে ফেরত দিয়ে যায়।

সোনারগাঁ পৌর এলাকার লাহাপাড়া গ্রামের আমির হোসেন বলেন, পৌরসভার কর্মকর্তাদের যোগসাজসে গাড়িগুলোর যন্ত্রাংশ চুরি হয়। দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ির যন্ত্রাংশ চুরি হলেও এ বিষয়ে তারা কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এছাড়া পৌর এলাকার ময়লা ফেলার ডাস্টবিনগুলো কোথায় গেল? কে নিয়ে গেল? কারও কোনো মাথাব্যথা নেই।

আদমপুর গ্রামের ইমরান খাঁন জানান , তার বাড়ির সামনে একটি লোহার ডাস্টবিন ছিল। সেখানে আশপাশের বাড়ির লোকজন ময়লা ফেলত। এখন সেই লোহার ডাস্টবিন নেই। ডাস্টবিন না থাকায় ময়লাগুলো মাটিতে ফেলে পরিবেশ দূষণ করছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌরসভার একাধিক কর্মচারী জানিয়েছেন, বিভিন্ন সময়ে গাড়ির যন্ত্রাংশগুলো চুরি হয়ে গেলেও কেউ এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেয়নি। সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে সিসিটিভি ক্যামেরা বন্ধ করে নৈশ প্রহরীর সামনে গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে যায়। বিষয়টিও ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। ধারণা করা হচ্ছে লোহার ডাস্টবিনগুলো কারও যোগসাজসে সে চুরি করতে পারে। সোনারগাঁ পৌরসভার নৈশ প্রহরী আবুল হোসেন বলেন, রাত পৌনে ১১টার দিকে গাড়িচালক শ্যামল গাড়ির চাকা খুলে নিয়ে যায়। পরদিন শনিবার বিকালে এলাকার লোকজনের সামনে ফেরত দিয়েছে।

অভিযুক্ত গাড়িচালক শ্যামল মিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, গাড়ির চাকা ঠিক করার জন্য খুলে নেওয়া হয়েছে। তবে খারাপ কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। সিসিটিভি বন্ধ করার বিষয়ে কোনো উত্তর দেননি তিনি।

সোনারগাঁ পৌর নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশরেকুল আলম বলেন, অফিসে এসে চুরির বিয়য়টি জানতে পেরেছি। গাড়িচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।


জাফলংয়ে উপদেষ্টাদের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ, ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা

আপডেটেড ১৬ জুন, ২০২৫ ১১:০০
ইউএনবি

সিলেটের জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়িবহরে গতিরোধ ও বিক্ষোভের ঘটনায় সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খানকে প্রধান আসামি করে ১৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ৯ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, বাকিদের অজ্ঞাতনামা হিসেবে মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

রবিবার (১৫ জুন) রাতে গোয়াইনঘাট থানার উপপরিদর্শক ওবায়দুল্লাহ বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন বলে জানানো হয়েছে।

এ বিষয়ে সিলেটের পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচারিত ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অভিযুক্তদের শনাক্তে কিছুটা সময় লেগেছে। ইতোমধ্যে পুলিশ অভিযানে নেমেছে বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া, গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সরকার তোফায়েল আহমেদ জানান, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বেআইনিভাবে সংঘবদ্ধ হয়ে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও অবরোধ সৃষ্টি করার অভিযোগ আনা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সদ্য বহিষ্কৃত যুবদল নেতা জাহিদ খানকে মামলার প্রধান আসামি করা হয়েছে, দ্বিতীয় আসামি হিসেবে রয়েছেন ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি ও আজির উদ্দিন। এ ছাড়াও মামলায় আরও সাতজনের নাম উল্লেখ রয়েছে।’

গত শনিবার (১৪ জুন) জাহিদ খান ও আজিরের নেতৃত্বে জাফলংয়ে বিক্ষোভের ঘটনা ঘটে। এতে বন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খানের গাড়িবহরের গতিরোধ করা হয়। ঘটনার প্রায় ৩০ ঘণ্টা পর এ মামলা দায়ের করে পুলিশ।


মাদক ও অস্ত্রসহ সাতক্ষীরার সাবেক এমপির ছেলে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরার আ.লীগের সংরক্ষিত আসেনের সাবেক এমপি রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে যৌথবাহিনী। এসময় তার ছেলে সাফায়েত সরোয়ার রুমনকে আটক করা হয়েছে।

রবিবার (১৫ জুন) দুপুরে শহরের আব্দুর রাজ্জাক পার্কস্থ বিলাশবহুল বাড়িতে ২ ঘণ্টাব্যাপী অভিযানে নেতৃত্ব দেন সেনাবাহিনীর সাতক্ষীরা ক্যাম্পের মেজর ইফতেখার আহমেদ।

সাফায়াত সরোয়ার রুমন আশাশুনির কাদাকাটি গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে এবং তার মা রিফাত আমিন সাতক্ষীরা জেলা মহিলা আ.লীগের সাবেক সভানেত্রী ও আ.লীগের সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি ছিলেন।

যৌথবাহিনীর অভিযানের শুরুতেই দুইতলা হতে রুমন লাফিয়ে নিজতলা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করে। তখন যৌথবাহিনী রুমনকে আটক করে বাড়িতে তল্লাশি করে মাদক ও অস্ত্র উদ্ধার করে।

সেনাবাহিনীর মেজর ইফতেখার আহম্মেদ অভিযান শেষে সাংবাদিকদের বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে রিফাত আমিনের বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ৩ শতাধিক ইয়াবা বড়ি ও একটি রাইফেল, একটি তলোয়ার এবং মদ ও খালি মদের বোতল উদ্ধার করা হয়েছে এবং সাবেক এমপির ছেলে সাফায়াত সরোয়ার রুমনকে আটক করা হয়েছে। এ ব্যাপারে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।


banner close