দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের গুলিতে নিহত বাংলাদেশি ব্যবসায়ী মানিক আজম সজলের (৪৩) মরদেহ দাফন করা হয়েছে। সোমবার ফেনীর দাগনভূঁঞা উপজেলার জগতপুর গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মানিকের খালু মো. করিম বিষয়টি জানিয়েছেন।
নিহত মানিক উপজেলার জগতপুর গ্রামের মোহসেন আলী হাজী বাড়ির নুরুল আমিনের ছেলে।
এরআগে, গত ২২ ফেব্রুয়ারি দুপুর ১টার দিকে দক্ষিণ আফ্রিকার ফ্রি স্টেট প্রদেশের ব্লুমফন্টেইনের বুসাবিলু এলাকায় দুজন কৃষ্ণাঙ্গ সন্ত্রাসী সজলকে গুলি করে হত্যা করে। খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
নিহত সজলের মা কহিনুর বেগম বলেন, ‘দোকান কর্মচারীর সঙ্গে সজলের দ্বন্দ্ব ছিল। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা করে দেন কমিউনিটির লোকজন। ওই কর্মচারীকে ৫ লাখ টাকা দেয়ার সিদ্ধান্ত হলে ১০ হাজার কম দিয়ে বাকি টাকা দিয়েছিল সজল। এই কারণে সজলকে সন্ত্রাসী দিয়ে হত্যা করিয়েছে তার দোকান কর্মচারী।’
নিহতের স্বজনদের বরাত দিয়ে দাগনভূঞা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হাসান ইমাম বলেন, নিহত মানিক আজম সজল দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮ বছর ধরে ব্যবসা করতেন। সেখানে বাংলাদেশি কমিউনিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তার মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
গত বছরের জুলাইয়ে ঢাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেছিলেন বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার সাগর হাওলাদার। তার মৃত্যুর প্রায় এক বছর হতে চলল। এখনো সন্তানের স্মৃতি মন থেকে মুছতে পারেননি সন্তান হারা মা আম্বিয়া বেগম। এখনো রাতে দুচোখের পাতা বুঝতেই সাগরের নানান স্মৃতি তাড়া করে বেড়ায় তাকে। রাত যতই গভীর হোক ঘুম ভেঙে ছুটে যান ছেলের কবরের পাশে। কখনো আবার ছেলের ছবি বুকে জড়িয়ে কাঁদেন নিরবে।
একমাত্র ছেলে সোহাগকে হারিয়ে শোকে পাথর হয়ে আছেন বাবা নুরুল হক হাওলাদারও। ছেলের কথা ভেবে ভেবে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি। কিছুতেই তাকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরাতে পারছে না তার পরিবার। বাড়িতে কেউ গেলে তাকে জড়িয়ে ধরে ফুফিয়ে ফুফিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন নুরুল হক।
স্বজনরা জানিয়েছেন, একমাত্র ছেলেকে হারানোর শোকে মা-বাবা দুজনেই ভেঙে পড়েছেন। তাদের মুখে হাসি নেই এক বছর ধরে। ছেলে বিহীন দুটি ঈদও কেটেছে তাদের আনন্দহীন। মা আম্বিয়া বেগম সারাদিন সাংসারিক কাজের মধ্যেও ছেলের স্মৃতি স্মরণ করে অনবরত কাঁদতে থাকেন।
সম্প্রতি সাগরের বাবা নুরুল হক ও মা আম্বিয়া বেগমকে ঢাকায় ছেলের গুলিবিদ্ধের ঘটনাস্থল ধানমন্ডি আবাহনী ক্লাবের কর্ণারে পুলিশ বক্সের কাছে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন যে স্থানে সাগর গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন সেখানে পিচঢালা পথে সাগরের রক্তের দাগ দুই সপ্তাহের মত ছিল। একথা শুনে সাগরের বাবা-মা আবেগ আপ্লুত হয়ে হাউমাউ করে কান্না শুরু করেন।
সাগরের চাচা মইনুল হোসেন জানান, ২০২৪ সালের মে মাসে সাগর ঢাকায় গিয়েছিল, ওর স্বপ্ন ছিল বিদেশ গিয়ে বেশি টাকা আয় করে বাড়িতে পাকা ভবন তৈরি করবে। সেই ভবনে সবার জন্য আলাদা কক্ষ থাকবে ও বোনের লেখাপড়াসহ মায়ের জন্য কাজের লোক রেখে দেবে। কিন্তু সাগরের স্বপ্ন দূঃস্বপ্নে রূপ নিলো।
তিনি বলেন, সরকারতো আর আমাদের সাগরকে এনে দিতে পারবে না। তারা যে সাহায্য সহযোগিতা করবে তাতে কি আমাদের সাগর ফিরে আসবে। আমরা চাই বিচার। যারা আমার ভাতিজাকে গুলি করে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।
সাগরের একমাত্র ছোট বোন মরিয়ম খানম এখন ৭ম শ্রেণির ছাত্রী। ধীরে ধীরে ভাইয়ের শূণ্যতা বুঝতে শুরু করেছে মরিয়ম। তাই ভাইয়ের কথা ভেবে বাড়ির এককোনে একা-একা চুপচাপ বসে থাকে, কারোর সঙ্গেই কথা বলছে না। কেউ ডাকলেও সাড়া দেয়না।
বাড়িতে শহীদ সাগরের বৃদ্ধ দাদা আব্দুল মজিদ হাওলাদার (৭৫)। বাড়ির উঠানে বসে বাকরুদ্ধ হয়ে নিরবে মূর্ছাযান। কান্নার ভাষাও হারিয়ে ফেলেছেন তিনি। একমাত্র নাতিকে হারিয়ে এখন নিস্তেজ হয়ে আরও অসুস্থ্য হয়ে পড়েছে তিনি।
উল্লেখ্য, বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের বাগধা গ্রামের নুরুল হক হাওলাদারের ছেলে সাগর হাওলাদার (১৭)। বাবা বাগধা মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একজন নৈশ প্রহরী। এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে সাগর ছিল বড়। বাবার রোজগারে তাদের সংসার চলতো না।
তাই ২০২৪ এর জুলাইয়ে কোটাবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরুর দুই মাস পূর্বে সংসারের সচ্ছলতা ফেরাতে জীবন-জীবিকার খোঁজে প্রবল ইচ্ছাশক্তি নিয়ে ঢাকায় গিয়েছিল কিশোর সাগর। সেসময় ধানমন্ডি লেকের পাড়ে একটি চায়ের দোকানে কাজ করতো সে।
২০২৪ এর ১৯ জুলাই আবাহনী মাঠের কর্ণারে পুলিশ বক্সের কাছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ চলাকালে দুপায়ে গুলিবিদ্ধ হয় সাগর। ওইদিনই তাকে ভর্তি করা হয় ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৪ জুলাই মৃত্যুবরণ করে সাগর। গুলিবিদ্ধ হওয়ায় ওই সময় পতিত আওয়ামী লীগের দোসরদের নিষ্ঠুরতার কারণে সাগর যথাযথ চিকিৎসাও পায়নি বলে অভিযোগ তার পরিবারের।
নোয়াখালীতে টানা বৃষ্টি ও ফেনীর মুহুরী নদী থেকে আসা পানিতে আউশ ধান, আমনের বীজতলা এবং গ্রীষ্মকালীন ও শরৎকালীন শাকসবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে দেখা দিয়েছে গোড়া পচাসহ বিভিন্ন রোগবালাই। কৃষকরা বলছে, এতে বাজারে আমন ধানের বীজের দাম বেড়েছে। বড় ধরণের লোকসানের মুখে পড়েছেন প্রান্তিক চাষিরা।
৭ জুলাই জেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এরপর টানা ৪দিনের বৃষ্টিতে জেলার ৬টি উপজেলার ৫৭টি ইউনিয়নে তীব্র জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। এতে আউশের খেত ও আমন ধানের বীজতলা পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। আউশের খেত ও আমনের বীজতলা তলিয়ে যাওয়ায় হুমকির মুখে পড়বে কৃষকরা। ফলে উপজেলার আউশের খেত ও আমনের বীজতলা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুবর্ণচরের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, চারদিক পানির নিচে ডুবে থাকায় নতুন করে বীজতলা তৈরি করার মতো উঁচু জায়গা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। অনেকে উঁচু জায়গা আমনের বীজতলা করার জন্য ভাড়া নিচ্ছে। কিন্ত পুঁজির অভাবে নতুন করে বীজতলা তৈরি করতে হিমশিম খাচ্ছে কৃষকেরা। দ্রুত পানি না নামলে আউশ, আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ব্যাহত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জের কৃষক আমির হোসেন বলেন, ‘আকষ্মিক এমন দুর্যোগের মুখে পড়ে দিশেহারা কৃষক। সবজির মাঠ পানিতে শেষ হয়ে যাওয়ায় দায়দেনা পরিশোধের চিন্তায় দিশেহারা কৃষক। ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য সরকারের পক্ষ থেকে দ্রুত আমাদের সহায়তা প্রয়োজন ‘
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, জেলায় মোট ৫ হাজার ১৯৯ হেক্টর জমির ফসল পানিতে আক্রান্ত আবস্থায় আছে। এরমধ্যে ৮৯১ হেক্টর আমনের বিজতলা, ২ হাজার ৫শ হেক্টর আউশের বীজতলা, ১ হাজার ২শ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৫৭৫ হেক্টর শরৎকালীন সবজি নিমজ্জিত অবস্থায় আছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, এখনো জেলার ৬টি উপজেলার ৫৭ টি ইউনিয়ন জলবদ্ধতার কবলে রয়েছে। এখনো পানিবন্দী হয়ে রয়েছে প্রায় ২৪৯৫০টি পরিবার। ক্ষতির শিকার হয়েছে প্রায় ৯০ হাজার ৪০৩ জন মানুষ। বিভিন্ন উপজেলা পায়ের ৫৮ টি বাড়ি বিধ্বস্ত হয়েছে জলাবদ্ধতায়। বর্তমানে ২৭ টি আশ্রয় কেন্দ্রে প্রায় ১০২৩ জন মানুষ রয়েছে। ২৯ টি মেডিকেল টিম মাঠে কাজ করছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. মীরা রানী দাস বলেন, কবিরহাট, সুবর্ণচর ও সদর উপজেলায় বীজতলা ও সবজি আক্রান্তের হার অপেক্ষাকৃত বেশি। সেনবাগ এবং সুবর্ণচরের তুলনায় কবিরহাট উপজেলায় পানি ধীর গতিতে সরছে। পানি সরে গেলে ক্ষতির পরিমাণ কমে আসবে। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে থেকে কৃষকদের ফসল যাতে রক্ষা করা যায় সে বিষয়ে বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।
ফেনীর তিনটি উপজেলায় বন্যাকবলিত হাজারও মানুষ আশ্রয়ণ থেকে ফিরে নতুন করে নেমেছেন বেঁচে থাকার যুদ্ধে। বন্যার পানি নেমে গেলেও ঘরে ফিরে নতুন সংকটে পড়েছেন ফেনীর দুর্গত এলাকার মানুষ। কর্দমাক্ত ঘরবাড়ি, ভাঙাচোরা আসবাবপত্র আর পঁচে যাওয়া খাদ্যসামগ্রী নিয়ে শুরু হয়েছে বেঁচে থাকার নতুন লড়াই।
পানি নামলেও অনেক এলাকায় এখনো বিদ্যুৎ নেই । ইতোমধ্যে ৯ হাজার ৭৬ জন আশ্রয় কেন্দ্র ত্যাগ করে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে নতুন করে বেঁচে থাকার সংগ্রাম শুরু করেছে।
গত সোমবার (৮ জুলাই) থেকে টানা বৃষ্টি এবং ভারতের ত্রিপুরা সীমান্ত হয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হতে থাকে। এতে ফুলগাজী, পরশুরাম, ছাগলনাইয়া ও ফেনী সদর উপজেলার বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এতে ১৩৭টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, এর মধ্যে ১৩১টি গ্রাম থেকে পানি নেমে গেছে। ছয়টি গ্রামে এখনো পানি আছে।
শনিবার (১২ জুলাই) ফুলগাজী, পরশুরাম ও ছাগলনাইয়ার দুর্গত এলাকা ঘুরে দেখেন ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টা ফারুক ই আজম। স্থানীয় জনগণ তাকে বলেছেন, ত্রাণ লাগবে না, শুধু বাঁধ দিন। তিনি বলেন, দুটোরই দরকার। এখন মানুষকে বাঁচাতে হবে ত্রাণ দিয়ে, পরে জীবন ও জীবিকার জন্য লাগবে টেকসই বেড়িবাঁধ।’
জেলা প্রশাসনের তথ্যানুযায়ী, বন্যায় ফেনী জেলায় কমপক্ষে দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন এবং ১ হাজারের বেশি ঘরবাড়ি আংশিক বা সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে ফসল, সড়ক, সেতু ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের।
জেলা কৃষি, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ বিভাগের দেওয়া তথ্য মতে, এবারের বন্যায় মৎস্যে প্রায় ১০ কোটি টাকার মৎস্যের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। কৃষিতে ৫ হাজার ৫৬৪ দশমিক ৬১ হেক্টর ফসলি জমি দুর্যোগে আক্রান্ত ও প্রাণিসম্পদে ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৭৫০ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পুরোপুরি পানি নেমে যাওয়ার পরই ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত পরিমাণ তুলে ধরা হবে বলে জানান সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
ফেনী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও মৎস্য বিভাগ সূত্র জানায়, বন্যার ফলে ফেনীর পরশুরাম, ফুলগাজী, ছাগলনাইয়া, দাগনভূঞা, সোনাগাজী ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ৮৫৫ হেক্টর আউশ, ৫৫৭ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন সবজি, ৬৯৪ হেক্টর আমনের বীজতলার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। অন্যান্য ফসলসহ জেলায় ৩৬৭০ হেক্টের ফসলি জমি দুর্যোগে আক্রান্ত হয়েছে। অন্যদিকে বন্যায় ফেনীর ছয়টি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ২ হজার ৩০০টি পুকুর, দিঘি ও মৎস্য খামারের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পরশুরামে ১৯টি ও ফুলগাজীতে ১৭টিসহ মোট ৩৬টি স্থানে ভেঙেছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড ফেনীর নির্বাহী প্রকৌশলী আক্তার হোসেন বলেন, ‘মুহুরী, কহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধে আমরা জরুরি ভিত্তিতে জিওব্যাগ ফেলে বাঁধ রক্ষার চেষ্টা করেছি। তবে টেকসই বাঁধ ও নদী খননের কাজ দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার অংশ হতে হবে।
ফুলগাজী উপজেলার কমুয়া এলাকার খামারি মো. হারুন বলেন, গত বছরের বন্যায় অন্তত ২০ লাখ টাকার বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। এবারও পানিতে ডুবে মুরগি মারা গেছে। মাছের ঘের পানিতে ভেসে গেছে। প্রতিবারই বাঁধ ভাঙে, পানি আসে, তারপর সকলে আশ্বাস দেয়। এসব এ জনপদে নিয়মে পরিণত হয়েছে।
ফুলগাজী বাজারের শ্রীপুর সড়কে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে অন্তত ১৫টি দোকান। দোকান হারানো ব্যবসায়ীরা এখনো নদীপাড়ে দাঁড়িয়ে খুঁজে ফিরছেন তাদের জীবিকার স্থান। স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. আবদুল আলিম বলেন, এক দিনে দোকান গেল নদীতে। এত বছর দোকানের আয় দিয়ে সংসার চালাতাম। এখন হাওয়ার মধ্যে দাঁড়িয়ে আছি। সংসারে একমাত্র আয় ছিল দোকানটি, এখন পুরো পরিবার নিয়ে চিন্তায় আছি।
ফুলগাজী উপজেলার গজারিয়া গ্রামের গৃহবধূ রোজিনা আক্তার বলেন, পানি নেমে গেছে, কিন্তু ঘরে ঢোকা যাচ্ছে না। মাটি, কাদা, পঁচা খাবারের গন্ধে শিশুদেরও অসুস্থ লাগছে। আশ্রয়কেন্দ্রেও এখন তেমন কিছু নেই।’
ফেনীর জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম বলেন, জেলায় ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সাড়ে ২৩ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের কাছে শুকনো খাবার, গো-খাদ্য ও শিশু খাদ্যের আরও ৪০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়েছে।
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৩ জুলাই (রবিবার) ২০২৫ তারিখে বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জনাব সৈকত রায়হান, জ্বালানী ও খনিজ সম্পদ বিভাগ -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -জয়দেবপুর, জোবিঅ -টংগী -এর আওতাধীন দাউদপুর, রুপগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ এলাকার ১টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে আনুমানিক ৪০০ টি বাড়ির ৫০০ টি আবাসিক ডাবল চুলার গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ২" ব্যাসের আনুমানিক ১,০০০ ফুট লাইন পাইপ ও ১/২" ব্যাসের আনুমানিক ৩০০ ফুট হোস পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এন্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ -সোনারগাঁও -এর আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোনের পার্শ্ববর্তী এলাকার ৩টি স্পটে অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে ৩ টি অবৈধ চুনা কারখানার সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এ সময় ১.৫" ব্যাসের আনুমানিক ১২০ ফুট লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও ১.৫" পিভিসি পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পানি স্প্রে করে চুনা ভাট্টির মালামাল নষ্ট করা হয়েছে এবং এক্সকেভেটরের মাধ্যমে মালামাল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি অবৈধ বিতরণ লাইন উৎস পয়েন্ট হতে কিলিং/ ক্যাপিং করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বর, ২০২৪ হতে গত ১৩ জুলাই, ২০২৫ তারিখ পর্যন্ত অভিযান পরিচালনা করে ২৭৪টি শিল্প, ২৭৩টি বাণিজ্যিক ও ৪৬,৬১৯টি আবাসিকসহ মোট ৪৭,১৬৬টি অবৈধ গ্যাস সংযোগ ও ১,০০,৬৬৭টি বার্নার বিচ্ছিন্ন সহ উক্ত অভিযানসমূহে ১৯৩ কিলোমিটার পাইপলাইন অপসারণ করা হয়েছে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) গত জুন-২০২৫ মাসে দেশের সীমান্ত এলাকাসহ অন্যান্য স্থানে অভিযান চালিয়ে সর্বমোট ১৩৬ কোটি ৯ লক্ষ ৬২ হাজার টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রকারের চোরাচালান পণ্যসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে।
জব্দকৃত চোরাচালান দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ৪ কেজি ৩৩৮ গ্রাম স্বর্ণ, ১৩,৩৭২টি শাড়ী, ৩,৫০০টি থ্রিপিস/শার্টপিস/চাদর/কম্বল, ৫৪৮টি তৈরী পোশাক, ২,১৪৭ মিটার থান কাপড়, ২,২৫,০৯৬টি কসমেটিক্স সামগ্রী, ৪,৫৭৮টি ইমিটেশন সামগ্রী, ৬,৬৪,৫০৮টি আতশবাজি, ৬,৩৪৫ ঘনফুট কাঠ, ৪,৯০৩ কেজি চা পাতা, ৩১,৯৭৪ কেজি সুপারি, ১৭,৭৬৯ কেজি সার, ১০,৫৪০ কেজি কয়লা, ১৯,২০৪ কেজি সুতা/কারেন্ট জাল, ১,৩২৮টি মোবাইল, ১,৮৫০টি মোবাইল কভার, ৩৭,৫৪১টি মোবাইল ডিসপ্লে, ১৫,৫১৯টি চশমা, ২,১৮২ কেজি বিভিন্ন প্রকার ফল, ৫,৮৪৪ কেজি ভোজ্য তেল, ১,০০০ লিটার ডিজেল, ৩,১৮২ কেজি জিরা, ১,৩৩৬ প্যাকেট বিভিন্ন প্রকার বীজ, ৭,৪৯২ পিস চিংড়ি মাছের পোনা, ১,১৫০ কেজি কফি, ৫,৪৭,২৪৬ পিস চকোলেট, ৭৭৭টি গরু/মহিষ, ১টি কষ্টি পাথরের মূর্তি, ৩টি বাস, ১০টি ট্রাক/কাভার্ড ভ্যান, ৩টি পিকআপ/মাহেন্দ্র, ৭টি প্রাইভেটকার/মাইক্রোবাস, ১৩৮টি নৌকা, ২৭টি সিএনজি/ইজিবাইক, ৬৪টি মোটরসাইকেল এবং ৩৯টি বাইসাইকেল।
উদ্ধারকৃত অস্ত্রের মধ্যে রয়েছে ২টি দেশীয় পিস্তল, ১টি বিদেশী পিস্তল, ২টি দেশীয় একনাল বন্দুক, ৩টি শটগান, ৩টি মর্টার শেল, ১৯টি গুলি এবং ৪টি হ্যান্ড গ্রেনেড।
এছাড়াও গত মাসে বিজিবি কর্তৃক বিপুল পরিমাণ মাদকদ্রব্য জব্দ করা হয়েছে। জব্দকৃত মাদক ও নেশাজাতীয় দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে ১২,৬৮,০১৫ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৭ কেজি ৯২৫ গ্রাম হেরোইন, ১ কেজি ৪৩০ গ্রাম কোকেন, ৮,২৭২ বোতল ফেনসিডিল, ১০,৯৪০ বোতল বিদেশী মদ, ৩৯৩.৫ লিটার বাংলা মদ, ১,৪৩৫ বোতল ক্যান বিয়ার, ১,৬৯৮ কেজি ৭০৭ গ্রাম গাঁজা, ১,২৪,৫৮৭ প্যাকেট বিড়ি ও সিগারেট, ২,৬৪৯ কেজি তামাক পাতা, ৫৩,৯৩৫টি নেশাজাতীয় ট্যাবলেট/ইনজেকশন, ৪,৭৭০ বোতল ইস্কাফ সিরাপ, ১৭ বোতল এলএসডি, ১২,৩৭৬টি এ্যানেগ্রা/সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৯,৬১,০৩৩ টি বিভিন্ন প্রকার ঔষধ ও অন্যান্য ট্যাবলেট।
সীমান্তে বিজিবি’র অভিযানে ইয়াবাসহ বিভিন্ন প্রকার মাদক পাচার ও অন্যান্য চোরাচালানে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৭ জন চোরাচালানী এবং অবৈধভাবে সীমান্ত অতিক্রমের দায়ে ১৫৫ জন বাংলাদেশী নাগরিক ও ৭ জন ভারতীয় নাগরিককে আটকের পর তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে ৩৩৫ জন মায়ানমার নাগরিককে নিজ দেশে ফেরত প্রদান করা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে শ্যামল ছায়া বাসের চাপায় জুয়েল মিয়া (৪৫) নামের অটোরিকসার যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় চালকসহ ৩ জন আহত। নিহত ব্যক্তি উপজেলার বাশঁগাড়ি গ্রামের জালাল মিয়ার ছেলে। তিনি পেশায় একজন নির্মাণ শ্রমিক হিসাবে কাজ করতেন।
সোমবার সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের পান্নাউল্লাহচর এলাকায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ।
স্থানীয় ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, সকালের দিকে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকা থেকে একটি ব্যাটারি চালিত অটোরিকসায় চড়ে কাজে যাচ্ছিলেন নির্মাণ জুয়েল মিয়াসহ আরো ২ জন শ্রমিক। অটোরিকসাটি যখন ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে উঠবে ঠিক সে মুহুর্তে ময়মনসিংহগামী শ্যামল ছায়া নামের ( ঢাকা মেট্রো -ব -১১৪১১৭) একটি বাস চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই একজনের মৃত্যু হয়। এসময় গুরুতর আহতদের উদ্ধারর করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিতসরা তাদেরকে ঢাকায় রেফার্ড করেন।
এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই রুকনুজ্জামান বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল থেকে জুয়েল মিয়া নামের একজন নির্মাণ শ্রমিকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে অটোরিকসাটি আঞ্চলিক সড়কে উঠার সময়ে সামনের দিক থেকে আসা দ্রুত গতির বাসের চাপায় অটোরিকসার যাত্রী নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় নিহতের স্বজনের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
মাগুরায় যাত্রীবাহী বাসের ধাক্কায় সাগর হোসেন (৩০) নামে এক ভ্যানচালক ও রেশমা খাতুন (৩৫) নামে এক গৃহবধূর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
রবিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে মাগুরা সদর উপজেলার আলমখালী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহতদের মাগুরা ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে ভ্যানচালক সাগর মাগুরা সদর উপজেলার গৌরিচরণপুর গ্রামের আওয়াল মোল্ল্যার ছেলে।
নিহত রেশমা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বিকেলে মারা যান। তিনি মাগুরা সদর উপজেলার রাঘবদাইড় ইউনিয়নের দোড়ামতনা গ্রামের আনিসুর রহমানের স্ত্রী। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত অপর নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া যায়নি।
আহতদের মধ্যে যাদের নাম পাওয়া গেছে তারা হলেন— তানিয়া (২০), সোহাগ (২৭), সামসুল (৩৪) এবং সামিহা (৩০)। তাদের মাগুরা সদর হাসপাতাল ও ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, গতকাল (রবিবার) সকালে মাগুরার আলমখালী বাজার থেকে একটি ব্যাটারিচালিত ভ্যান যাত্রী নিয়ে হাটগোপালপুর বাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল। পথে ঝিনাইদহ-মাগুরা মহাসড়কের রামনগর এলাকার ঢালব্রিজ এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ভ্যানটিকে সজোরে ধাক্কা দেয়। এতে ভ্যানচালক সাগর ঘটনাস্থলেই নিহত হন।
দুর্ঘটনার পর বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের খাদে উল্টে যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহতদের উদ্ধার করে মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন।
মহাসড়কের গর্ত এড়িয়ে চলতে গিয়ে ভ্যানটি রাস্তার মাঝখানে উঠে যায়, যার ফলে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে হাইওয়ে পুলিশ।
এ বিষয়ে রামনগর হাইওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মাহবুব হোসেন জানান, রবিবার সকালে মেহেরপুর থেকে যাত্রীবাহী গোন্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দ্যেশে ছেড়ে আসে। পথে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কের রামনগর পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা যাত্রীবাহী বাস ব্যাটারিচালিত ভ্যানটিকে ধাক্কা দেয়। এ সময় বাসটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে খাদে উল্টে যায়। পরে এলাকাবাসী ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহতদের উদ্ধার করে মাগুরা ও ঝিনাইদহ হাসপাতালে পাঠান।
তিনি আরও জানান, এ দুর্ঘটনায় বাসটিকে পুলিশ আটক করেছে। তাছাড়া, মাগুরা থানায় একটি মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে বলেও জানান এসআই মাহবুব।
প্রাকৃতিক উপায়ে হাঁস, দেশি মুরগি, রাঁজহাস, টাইগার মুরগি, তিতির, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিশরী ফাউমি, সোনালি মুরগির ডিম ফুটিয়ে বাচ্চা বিক্রি করে ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে স্বাবলম্বী হয়েছেন জামালপুরের সরিষাবাড়ীর রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু। তার হাত ধরে বহু বেকার নারী-পুরুষ এখন হাস মুরগির খামার গড়ে তুলেছেন। রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের বয়ড়া বাজারের মৃত গিয়াস উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে। এগুলো মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনেও সহায়ক বলে মনে করছেন সচেতন মহল।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিজ বাড়িতে টিনের ঘরেই বসিয়েছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে ডিম ফোটানোর যন্ত্র ইনকিউবেটর। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে নারী-পুরুষরা ডিম নিয়ে আসে হ্যাচারিতে বাচ্চা ফোটানোর জন্য। প্রতি সপ্তাহের সোমবার ও শুক্রবার ক্রেতারা ভিড় জমান হ্যাচারি পল্লিতে বাচ্চা সংগ্রহের জন্য। প্রতিটি ডিম থেকে বাচ্চা ফোটাতে নেওয়া হয় মাত্র ৫ টাকা। আবার ফোনের মাধ্যমে অর্ডার করলেই নির্ধারিত ঠিকানায় পৌঁছে যায় হাঁস বা মুরগির বাচ্চা। প্রাকৃতিক উপায়ে ডিমে তাপ দিয়ে বাচ্চা ফোটানো হয়। ব্যবসার জন্য একসঙ্গে অধিক পরিমাণে ডিম ফোটানোর ক্ষেত্রে ইনকিউবেটরের বিকল্প নেই। আবার যদি কেও ডিম না দিয়ে বাচ্চা কিনতে চায় সেটারও ব্যবস্থা আছে এই হ্যাচারিতে। প্রকারভেদ অনুযায়ী স্বল্পমূল্যে এক দিন বয়সের প্রতিটি হাঁস, মুরগির বাচ্চা ২০ থেকে ৩০ টাকায় বিক্রি হয়।
এছাড়া বিক্রি করা হয় হাঁস, দেশি মুরগি, রাঁজহাস, টাইগার মুরগি, তিতির মুরগি, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিসরী ফাউমি, সোনালি মুরগির বাচ্চা। সেক্ষেত্রে ভালো জাতের হাঁস, মুরগি, রাঁজহাস, কোয়েল পাখি, টার্কি, মিসরী ফাউমি, সোনালি মুরগির ডিম সংগ্রহ করেন হ্যাচারি মালিক ও কর্মচারীরা। সেগুলো পানিতে পরিষ্কার করে বাছাই করে কাঠ দিয়ে বিশেষভাবে বানানো ডিম রাখার পাত্রে সারিবদ্ধভাবে রেখে ফ্যানের বাতাশে রাখা হয়। ২৮ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ডিম থেকে বাচ্চা বের হয়।
হ্যাচারি থেকে বাচ্চা নিয়ে খামার করা রনি আহমেদ বলেন, আমি রাশেদুল ইসলাম রঞ্জুর হ্যাচারির কথা জানতে পারি। সেখানে গিয়ে বিভিন্ন জাতের হাঁস মুরগির বাচ্চা দেখি। সেখান থেকে প্রথমে ২০টি মিসরী ফাউমি মুরগির বাচ্চা কিনে এনে বাড়িতে পালন শুরু করি। কিছুদিন পর মুরগিগুলো ডিম দেওয়া শুরু করে। সেই ডিমগুলো জমিয়ে হ্যাচারিতে গিয়ে আবার বাচ্চা ফুটিয়ে আনি। বর্তমানে আমি বাণিজ্যিকভাবে মিসরী ফাউমি জাতের মুরগি পালন করছি। প্রতিদিন ডিম বিক্রি করে আমার বাড়তি টাকা আসছে।
বয়ড়া কুলঘাট এলাকার কবির মাহমুদ নামে খামার মালিক বলেন, আমি আগে টিনের দোকান করতাম। এই হ্যাচারি হওয়ার পর ৭ মাস আগে আমি প্রথম আমার স্ত্রীকে ২০০ হাস ও মুরগির বাচ্চা কিনে দেই। সেগুলো বাড়িতে পালন করি। সেগুলো বড় হলে বাজারে বিক্রি করে ভালো টাকা লাভ হয়। সেখান থেকেই আমার হাস, মুরগি পালন শুরু।
ডিম নিয়ে বাচ্চা ফোটাতে আসা আব্দুল মান্নান, রহিমা বেগম, মারিয়া আক্তার বলেন, আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে হাঁস মুরগির ডিম সংগ্রহ করে মণ্ডল হ্যাচারিতে নিয়ে আসছি ফোটানোর জন্য। আমাদের বাড়িতে ডিম ফোটানোর জন্য কোনো মুরগি নেই। তা ছাড়া হাঁস কখনো বাচ্চা ফোটায় না। আগে মুরগি দিয়ে হাঁসের বাচ্চা ফোটানো হতো। এখন আর সেই ঝামেলা নেই। বাড়ির কাছে হ্যাচারি আর এখানে কম খরচে ঝামেলা বিহীনভাবে ডিম ফোটানো যায়।
মণ্ডল হ্যাচারির মালিক রাশেদুল ইসলাম রঞ্জু বলেন, আমি এলাকার বেকার নারী ও পুরুষের স্বাবলম্বী করা জন্য ব্যতিক্রমধর্মী একটি হ্যাচারি আমি তৈরি করেছি। ডিম থেকে কোনো প্রকার ঝামেলা ছাড়া স্বল্পখরচে ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে লালন-পালন করে ভালো লাভবান হতে পারবে। আমি এটাতে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। এছাড়া বাচ্চা ফুটিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে তা বিক্রি করি। লাভজনক হওয়ায় উৎপাদন দিন দিন বাড়াতে থাকে। পরে পাইকারি ও খুচরা ক্রেতারা এসে আমার কাছ থেকে এক দিন বয়সের হাঁসের বাচ্চা কিনে তা দেশের বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, বয়ড়া বাজারের রঞ্জু মিয়া একটি ভালো উদ্যোগ নিয়েছে। তার এমন উদ্যোগকে আমরা স্বাগত জানাই। তার এই উদ্যোগের কারণে সরিষাবাড়ীর খামারিরা উপকৃত হবে এছাড়া এলাকার বেকার যুবক ও নারীরা স্বাবলম্বী হবে। বাচ্চা ফোটানো, মুরগি লালন-পালন করার ক্ষেত্রে ভ্যাকসিন, চিকিৎসাসহ সরকারি যত সুযোগ-সুবিধা প্রয়োজন সবই উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে প্রদান করা হচ্ছে।
নওগাঁর মান্দা ইউএনও শাহ আলম মিয়া দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সামান্য চেষ্টা আর সুন্দর মনোভাব, সেই সঙ্গে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে বদলে গেছে নওগাঁ মান্দা উপজেলার চিত্র। উপজেলা সদর থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত অন্ধকার সড়কে যোগ হয়েছে আধুনিক সড়কবাতি, সেই সঙ্গে নওগাঁ রাজশাহী মহাসড়কের ফেরিঘাট ব্রিজের ওপরে যোগ হয়েছে আধুনিক রঙিন বাতি। সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে আত্রাই নদীর পাশ দিয়ে বয়ে চলা অন্ধকার রাস্তাটি আধুনিক এলইডি স্ট্রিট লাইটের আলোতে আলোকিত হয়ে গেছে। এখন সন্ধ্যার পর রাস্তাটি দিয়ে নির্বিঘ্নে গাড়ি-ঘোড়া ও হেঁটে চলাচল করেছে মানুষ। নদীর ওপাশ থেকে দেখলে মনে হয় এযেন এক অন্য রকম আলোর নগরী। উপজেলা সদরের চৌরাস্তাসহ গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাটেও রয়েছে স্ট্রিট লাইটের ব্যবস্থা। মান্দার ইউএনও শাহ আলম মিয়ার উদ্যোগ ও তদারকির কারণে পুরোনো জরাজীর্ণ ভবণ টেন্ডারের মাধ্যমে ভেঙে উপজেলার নতুন ভবনে দপ্তরিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে, চলছে ৫ তলা নির্মাণসহ উপজেলা কমপ্লেক্সের ভেতরের রাস্তা নির্মাণের কাজ। ৫০০ বছরের পুরোনো ঐতিহাসিক কুসুম্বা মসজিদের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নির্মিত হয়েছে সীমানা প্রাচীর, রাস্তা নির্মাণ, দিঘিতে নামার সিঁড়ি, ছাগল-মুরগি জবায়ের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে জবাইখানা, সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে লাগানো হয়েছে টাইলস, মসজিদে আসা মানতকারীদের রান্নার স্থান সংস্কার করা হয়েছে, এছাড়া দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বেশকিছু নিরাপত্তা কর্মী।
স্থানীয় সরকার ও পিআইও অফিসের সহায়তায় করা হয়েছে উপজেলার বিভিন্ন রাস্তাঘাট সংস্কার কাজ, অচল ব্রিজ ব্যবহারের উপযোগী।
মোবাইল আসক্তি ও মাদক থেকে যুব সমাজকে দূরে রাখতে ১৪টি ইউনিয়নকে সংগঠিত করে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন ও প্রথম পুরস্কার মোটরসাইকেল পুরস্কার বিতরণ করেছেন। বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের কাজের উৎসাহ জোগাতে কাজের মূল্যায়ন ও পুরস্কারকের ব্যবস্থা করেছেন ইউএনও।
মান্দাকে বাংলাদেশ সকল মানুষের কাছে তুলে ধরতে তার লেখনিতে মান্দার নাম করণ করেছেন ‘মনোহরা মান্দা’ মান্দাকে ঘিরে লিখেছেন অনেক ছোট গল্প, কবিতা।
ইউএনও শাহ আলম মিয়ার বলেন, আমার কখনো মনে হয়নি মান্দা আমার না। আমি সব সময় চিন্তা করেছি মানুষের সঙ্গে মিশে তাদের কথা শুনে কাজ করার। মান্দাকে আধুনিকভাবে সাজাতে যেটুকু সম্ভব চেষ্টা করেছি। এমন কেউ নেই যে আমার অফিসে এসে আমার সঙ্গে দেখা না করে গিয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিরা, সাংবাদিক, সাধারণ মানুষ সকলকে সঙ্গে নিয়ে আমি কাজ করেছি। মান্দা পথপ্রান্তর, নদী, বিল গ্রামের আকাবাঁকা রাস্তা আমাকে মুগ্ধ করেছে। মান্দাতে দেখার মতো যা কিছু আছে তা অন্য কোথাও নেই। আমি যেখানেই থাকব মান্দার খবর রাখব।
এক সময় দেশের তৃতীয় বৃহত্তর মধুপুর গড়ের শালবন ছিল ইতিহাস ঐতিহ্য খ্যাত। পত্র ঝরা এ বন ছিল সমৃদ্ধ বনাঞ্চলের মধ্যে অন্যতম। প্রাকৃতিক নানা বৈচিত্র্য আর অভয়ারণ্যে বন্যপ্রাণী পাখি ভেষজ গুল্মলতায় দুর্ভেদ্য ছিল। প্রায় ৪৫ হাজার একরের এ বনে ছিল বুনো খাদ্যের বিশাল ভান্ডার। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বুনোখাদ্য, নানা ফরমূলসহ বিরল ও দেশি প্রজাতির জানা অজানা বৃক্ষ লতার সমাহারে সজ্জিত এ বনটি নানা কারণে তার আয়তন সংকুচিত হয়ে গেছে। হারাচ্ছে তার অতীত ঐতিহ্য। খাদ্য ভান্ডার, জীব বৈচিত্র্যেও বিরূপ প্রভাবের দেখা দিচ্ছে। বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে অনেক বৃক্ষ লতা। কমে যাচ্ছে বনের প্রাণীকূল। স্থানীয় জনগোষ্ঠীর বুনোখাদ্যের ভান্ডারে দেখা মেলে না আগের মতো বাহারি আলু লতা পাতাসহ নানা খাদ্য।
বন সংকোচনের ফলে বেড়েছে সামাজিক বনায়ন। শাল গজারি মানানসই বৃক্ষ না বেড়ে, সামাজিক বনায়নে বেড়েছে বিদেশি প্রজাতির আগ্রাসীর দাপুটে বাগান। আর এসব বাগানে বাণিজ্যিক চাষাবাদের ফলে জীব বৈচিত্র্য যেমন কমে যাচ্ছে, তেমনি ঐতিহ্যও হারাচ্ছিল বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
বনের ঐতিহ্য ফেরাতে সরকার বিদেশি প্রজাতির আগ্রাসী গাছ নিষিদ্ধের পাশাপাশি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাসহ শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শালগজারিসহ দেশি প্রজাতির গাছের চারা বীজ রোপণ কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। এ কার্যক্রমের ফলে স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও প্রথাগত বনবাসীদের নিয়ে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা পাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। সে লক্ষ্যে মধুপুর বনাঞ্চলে শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রকল্পের আওতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর গৃহ জরিপ ও জনশুমারি, বনের সীমানা চিহ্নিতকরণ, হারিয়ে যাওয়া বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও মত বিনিময় সভার কার্যক্রম করে যাচ্ছে বন বিভাগ।
জানা গেছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)’র সহায়তায় মধুপুর জয়েনশাহী আদিবাসী উন্নয়ন পরিষদ ও উত্তর বঙ্গের জাতীয় আদিবাসী পরিষদের যৌথ উদ্যোগে জনস্বার্থে ১৮৩৪/২০১০ নং রিট পিটিশন দায়ের করে। ২০১৯ সালের ২৮ আগস্ট প্রদত্ত রায়ে ৯টি ইস্যু গঠন করে উচ্চ আদালত কর্তৃক মামলাটি নিষ্পত্তি করে রায়ে বাদীগণের সমন্বয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটি গঠন করে আদালতের নির্দেশনা সমূহ বাস্তবায়ন করে বিস্তাারিত প্রতিদেন দাখিলের জন্য বলা হয়েছে। সে প্রেক্ষিতে ইস্যুগুলো বাস্তবায়নের জন্য প্রধান বন সংরক্ষকের সভাপতিত্বে বন ভবন ও মধুপুর জাতীয় উদ্যানে পৃথক দুটি সভা করে বন বিভাগ।
সভাসমূহের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আইন অনুযায়ী নিষ্পত্তি করতে মধুপুর শালবন ও শালবন সংলগ্ন এলাকায় বসবাসরত বন নির্ভর জনগোষ্ঠীর প্রতিটি গৃহে জরিপ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহের জন্য ২০ জনের জরিপসহকারিদের একদিনের প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। সে লক্ষ্যে ৯ জুলাই বন বিভাগের দোখলা রেঞ্জের বাংলোতে টাঙ্গাইল বন বিভাগের স্থানীয় জনগোষ্ঠীর অংশ গ্রহণে মধুপুর শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা প্রকল্প আয়োজিত মতবিনিময় সভা সহকারী বন সংরক্ষক মো. আবু সালেহের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে উপস্থিত ছিলেন টাঙ্গাইল বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন, উপজেলা পরিসংখান কর্মকর্তা নারায়ন চন্দ্র, রেঞ্জ কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন,কারিতাসের বাঁধন চিরানসহ বন বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারি,সাংবাদিক ও জরিপসহকারী দল এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ড. আবু নাসের মোহসিন হোসেন বলেন, জলবায়ু ট্রাস্ট ফান্ডের মাধ্যমে এ প্রকল্প শুরু হয়েছে। বনের সীমানা চিহ্নিত, হারিয়ে যাওয়া বন্য প্রাণীর ব্যবস্থা করা, গৃহ জরিপ করাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম করা হচ্ছে।
মধুপুর বনের শাল গজারি পুনঃপ্রতিষ্ঠা পেলে এ বন তার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাবে। সামাজিক বনায়নে শাল গজারিসহ দেশি পরিবেশ সম্মত বনজে ভরে উঠবে লাল মাটির এ শালবন। এমনটাই আশা স্থানীয়দের।
অ্যাপসের মাধ্যমে এ ডাটা সংগ্রহে থাকবে খানার লোকসংখ্যা, জমির পরিমান,আনারস কলা পেঁপেসহ চাষবাদকৃত কৃষি পরিমান, জমি অন্যত্র লিজ দেয়া থাকলে লিজকৃত ব্যক্তির নাম, শালবনে কিকি গাছ লাগাতে পছন্দ এসব তথ্যে সমৃদ্ধ করা হবে। জরিপ শেষে শাল গজারি ও শাল লাগসই গাছ লাগানো হবে। এভাবে শালবন পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা হবে। অশিংদার যারা হবে তারা প্লটের গাছের পরিমাণ প্রভৃতি গাছ ঠিক করবে। লেজারে হিসাব কষে অংশিদার পাবে আবৃতের মূল্য ৪৫% অর্থ। তবে বনায়নের গাছ কাটা হবে না। এভাবে প্রতি আর্বতে একইভাবে টাকা পাবে।
তিনি বলেন, এভাবে বিভিন্ন কার্যক্রমের মাধ্যমে বন উদ্ধার হবে। জীববৈচিত্র্যও রক্ষা পাবে। আগের প্রকল্পগুলোর অভিজ্ঞতার আলোকে বন বিভাগ এভাবেই কাজ করবে।
স্বাধীনতার ৫৩ বছর পেরিয়ে গেলেও গাইবান্ধা জেলা সদর হাসপাতালে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যসেবা যেন এখনো এক অসমাপ্ত স্বপ্ন। ৪১ বছর আগে যাত্রা শুরু করা এ হাসপাতালটি আজও পরিপূর্ণ রূপে দাঁড়াতে পারেনি। ২৫০ শয্যার মর্যাদা পেলেও হাসপাতালটি চলছে ১০০ শয্যার জনবল, যন্ত্রপাতি ও অবকাঠামো নিয়ে। এ হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে এসে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন মানুষ। এ জেলার ২৭ লাখ মানুষের স্বাস্থ্য অধিকার নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সকলের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সচেতন মহল।
জানা গেছে, ১৯৮৪ সালে ৫০ শয্যা নিয়ে গাইবান্ধা সদর হাসপাতালের যাত্রা শুরু হলেও সময়ের প্রয়োজনে শয্যা সংখ্যা বাড়ানো হয় একাধিকবার। সর্বশেষ ২০২০ সালের ২১ অক্টোবর ২৫০ শয্যায় উন্নীত হয়। শয্যা উন্নীত হলেও হাসপাতালে কর্মরত জনবল, অবকাঠামো এবং যন্ত্রপাতি সীমাবদ্ধ রয়ে গেছে ১০০ শয্যার কাঠামোতেই। জনবল সংকট এতটাই প্রকট যে, ১০০ শয্যার হিসেবেও যেখানে ৪৩ জন চিকিৎসকের প্রয়োজন, সেখানে আছেন মাত্র ১৮ জন।
সিনিয়র ও জুনিয়র কনসালটেন্ট মেডিসিন, চক্ষু, কার্ডিওলোজি, অ্যানেস্থেসিয়া, শিশু, চর্ম ও যৌন এছাড়া সিনিয়র কনসালটেন্ট ইএনটি, অর্থ সার্জারি ও জুনিয়র কনসালটেন্ট অর্থপেডিক্সসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসকদের পদগুলো দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে আছে। নেই পর্যাপ্ত নার্স, ওয়ার্ডবয়, ল্যাব টেকনিশিয়ান বা পরিচ্ছন্নতাকর্মী। প্রশাসনিক ও সহকারী পদগুলোতেও শূন্যতা ৬৩টি।
সরেজমিন দেখা যায়, নারী-পুরুষ একাকার হয়ে টিকিট কাউন্টারের সামনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে রোগী ও রোগীর স্বজনরা। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা শিশুসহ, নারী-পুরুষ গাদাগাদি করে নিচতলায় ও দ্বিতীয়তলায় চিকিৎসকের চেম্বারের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। চিৎকার আর গুমট পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে সেখানে। চিকিৎসা নিতে এসে দীর্ঘসময় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে থেকে চমর ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন তারা। পৃথক ফার্মেসি থাকলেও অব্যবস্থাপনার অভাবে নারী-পুরুষ একাকার হয়ে ওষুধও নিচ্ছেন একটি ফার্মেসি থেকেই।
এছাড়া আন্তবিভাগে শয্যা সংকটে নিচতলা ও দ্বিতীয় তলার বারান্দার মেঝেতে শয্যা পেতে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালের ভেতরে, বাহিরে এমনকি ওর্য়াড গুলোর মেঝেতে যত্রতত্র ময়লা-আবর্জানা। নিচতলা ও দোতলার শৌচাগারগুলো অপরিচ্ছন্ন। সেখানে দুর্গন্ধে নিশ্বাস নেওয়া দায়।
আরও জানা যায়, গাইবান্ধা জেলার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মনোযোগের অভাব দীর্ঘদিনের। যদিও মাঝে মধ্যে পর্যবেক্ষণ টিম আসে, কিন্তু কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেই। হাসপাতালটির ব্যবস্থাপনা কমিটি কার্যত নিষ্ক্রিয়।
সম্প্রতি প্রায় ৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৫০ শয্যার নয়তলা হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করা হয় এবং তা ২০২২ সালের এপ্রিল মাসের শুরুর দিকে গণপূর্ত বিভাগ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেন। অথচ ভবন বুঝে পাওয়ার ৩ বছর পেরিয়ে গেলেও চালু হয়নি। কারণ- প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও জনবল না থাকায় আধুনিক এই অবকাঠামো পড়ে আছে অলসভাবে।
আন্তঃবিভাগ সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত গত ৬ মাসে গাইনি, শিশু, স্ক্যানু, মহিলা, পুরুষ ও ডাইরিয়া-এই ছয়টি বিভাগ থেকে রেফার্ড করা হয়েছে ১ হাজার ৫৬৮ জন ভর্তি রোগীকে।
আর জরুরি বিভাগ বলছে, জনবল সংকটের কারণে প্রায় প্রতিদিন গড়ে ৮-১০ জন রোগীকে রেফার করা হচ্ছে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। তবে, জরুরি বিভাগের তথ্য বিভ্রাটের চিত্র ভয়াবহ- কত রোগী রেফার্ড হচ্ছে, কোনো রোগে রেফার্ড হচ্ছে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট রেকর্ড নেই হাসপাতালের জরুরি বিভাগে।
জরুরি বিভাগের সিনিয়র স্টাফ নার্স ইনচার্জ মোজাম্মেল হক সরকার বলেন, যেসব রোগীকে বাহিরে রেফার্ড করারা হয়। তাদের কোনো তথ্য সংরক্ষণ করা হয় না বা সুযোগ থাকে না।
এদিকে, রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করে বলেন, হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা অবৈধ ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে রোগীদের টেনে নিয়ে যাচ্ছে দালাল চক্র। সেবা না পেয়ে রোগীরা যখন দিশেহারা, তখনই দালালদের দৌরাত্ম্যে নিঃস্ব হচ্ছেন গরিব মানুষগুলো। মাঝে মধ্যে কিছু দালাল ধরা পড়লেও শক্তিশালী সিন্ডিকেটের কারণে তারা আবার মুক্ত হয়ে ফিরে আসে আরও বেপরোয়া হয়ে।
হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজি ইনচার্জ ফজলুল বারী বলেন, চারটি এক্সরে মেশিনের মধ্যে এখন শুধু একটি এক্সরে মেশিন চালু আছে। আর বাকি তিনটি নষ্ট। এছাড়া আলট্রাস্নোগ্রামের চারটির মধ্যে চারটিই নষ্ট।
গাইবান্ধার সচেতন নারী সংগঠক নিলুফার ইয়াসমিন শিল্পি বলেন, চিকিৎসাসেবাকে গাইবান্ধায় স্থায়ী করতে হবে। দালাল নির্মূল, নিয়মিত ডাক্তার নিয়োগ, পর্যাপ্ত নার্স ও ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। ৩ বছর ধরে ভবন তৈরি হলেও চালু হয়নি। ডাক্তার নেই, নার্স নেই- এটা সরকারের চরম অবহেলা। আমরা চাই দ্রুত চালু করা হোক।
হাসপাতালের আরএমও আসিফ উর রহমান নানা সংকটের কথা উল্লেখ করে দৈনিক বাংলাকে বলেন, চিকিৎসক সরঞ্জাম যথেষ্ট ঘাটতি। তবুও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
আরও বলেন, বহুতল ভবনটি আমরা বুঝে নিলেও জনবল এবং সরঞ্জমাদির প্রয়োজনীয় কোনটিই এখনো দেওয়া হয়নি। আমরা নিয়মিত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে লিখছি।
রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ হত্যাকাণ্ড চাঁদাবাজির কারণে নয় বরং ভাঙ্গারি দোকানের মালিকানা ও আয়-ব্যয় নিয়ে বিরোধের ফলাফল বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ নূরুল ইসলাম মণি। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের ব্যবসায়িক অংশীদার ও তার ভাড়াটে লোকজনই পৈশাচিকভাবে সোহাগকে হত্যা করেছে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও এমন তথ্য উঠে এসেছে।
এই নৃংশস হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে নূরুল ইসলাম মণি সরকারের কাছে এই নারকীয় হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন। রোববার বিকালে বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়ায় নিহত সোহাগের পরিবারের খোঁজখবর নিতে এসে একথা বলেন তিনি।
এ সময়ে তিনি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে নিহত সোহাগের স্ত্রীকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন এবং সোহাগের পরিবারের যেকোনো প্রয়োজনে পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দেন। এছাড়া, এ ঘটনার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে আইনি সহায়তাসহ সব ধরনের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।
পরে স্থানীয় কাকচিড়া হাইস্কুল মাঠে এক পথসভায় নূরুল ইসলাম মণি বলেন, একটি মহল অত্যন্ত সুকৌশলে মিটফোর্ডের একটি ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বকে চাঁদাবাজি বলে প্রচার করার অপচেষ্টা করছে। মহলটি অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে, অত্যন্ত সুচারুভাবে নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের দায় বিএনপির ঘাড়ে চাপানোর চেষ্টা করছে। যারা এটি করছে, তারা দেশে সময়মতো একটি নির্বাচন হোক তা চায় না। দেশে গণতন্ত্র ফিরে আসুক তা চায় না।
তিনি বলেন, দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য একটি গোষ্ঠী আনুপাতিকহারে নির্বাচনের কথা বলছে। সবচেয়ে বড় গণতান্ত্রিক দেশ আমেরিকা, ইংল্যান্ডসহ পৃথিবীর বহু উন্নত রাষ্ট্রে আনুপাতিকহারে নির্বাচন হয় না। এমনকি যারা তাদের মাথায় এই ভূত চাপিয়ে দিয়েছে সেই ভারতেও আনুপাতিক হারে নির্বাচন হয় না। এটি ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের একটি অপচেষ্টা মাত্র।
বিএনপির এই সিনিয়র নেতা আরও বলেন, দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় দল হচ্ছে বিএনপি। এই মুহূর্তে নির্বাচন হলে বিএনপির রাষ্ট্র ক্ষমতায় যাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। এটা জেনেও আমার নেতা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দেশের এই অবস্থায় একটি জাতীয় সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। তিনি ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে থাকা সবাইকে নিয়ে দেশ পরিচালনা করতে চান।
দেশবিরোধী সব চক্রান্তকারীদের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে নূরুল ইসলাম মণি বলেন, তারেক রহমান সবার মেধাকে কাজে লাগিয়ে দরিদ্র এই দেশটাকে এগিয়ে নিতে চান। তিনি দক্ষ জনশক্তি তৈরি করে বেকারত্বের হাত থেকে দেশকে বাঁচতে যে চান। অভাবি মানুষের অভাব মোচন করতে চান।
সভায় নিহত সোহাগের স্ত্রী লাকি আক্তার বক্তব্য রাখেন। তিনি তার স্বামীর হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। তার স্বামীর মৃত্যু নিয়ে যারা নোংরা রাজনীতি করছেন তাদের তীব্র নিন্দা জানান।
মামলার বাদী নিহত সোহাগের বোন অভিযোগ করেন, মামলার এফআইআর-এ পুলিশ নাম পরিবর্তন করেছে। বেশ কয়েকজনের নাম বাদ দিয়ে নতুন লোকের নাম দেওয়া হয়েছে যাদের আমরা চিনি না, জানি না।
কাকচিড়া হাই স্কুলের সাবেক প্রধান শিক্ষক হারুনুর রশিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন বরগুনা বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ফজলুল হক মাস্টার, পিপি এডভোকেট নুরুল আমিন, জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদ শফিকুজ্জামান মাহফুজ, হুমায়ুন হাসান শাহীন, পাথরঘাটা উপজেলা বিএনপির সভাপতি চৌধুরী মহম্মদ ফারুক, সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলাম, বামনা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ রানা, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জাবেদুল ইসলাম জুয়েল ও জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম নাভিল প্রমুখ।
ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টা মামলায় রংপুর মহানগর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফতেখারুল ইসলাম শুভকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান।
এর আগে শনিবার (১২ জুলাই) রাত ১১টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নগরীর সিও বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃত ইফতেখারুল ইসলাম শুভ রংপুর নগরীর মাহিগঞ্জ ধুমখাটিয়া এলাকার আশরাফুল ইসলামের ছেলে। তার বিরুদ্ধে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগে একাধিক মামলা রয়েছে।
আরপিএমপি কোতোয়ালি থানার ওসি আতাউর রহমান বলেন, গত বছরের জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর গ্রেফতার এড়াতে আত্মগোপনে ছিলেন শুভ।
তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত শুভর বিরুদ্ধে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হত্যা চেষ্টার অভিযোগ এনে আহত মামুনুর রশিদ মামুন, আহত জয়নাল আবেদীন বাপ্পী, আহত রমজান আলী ও আহত শহিদুল ইসলাম পৃথক চারটি মামলা করেছেন।
এসব মামলায় শুভকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
আইনি প্রক্রিয়া শেষে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।