জ্বালানি তেলসহ বিভিন্ন উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ধান চাষের খরচ। তাই ধান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কৃষকরা। এর পরিবর্তে তারা ভুট্টা চাষে ঝুঁকে পড়েছেন। কৃষকরা বলছেন, আগের বছর ধান চাষ করে লোকসান গুনেছেন তারা। অন্যদিকে আবাদে অপেক্ষাকৃত কম খরচ হওয়ায় ভুট্টা চাষে লাভ ধানের চেয়ে বেশি। সে কারণেই গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে এবার তারা ধান চাষের উপযোগী জমিতেও ভুট্টা লাগিয়েছেন।
সরেজমিনে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃত মাঠজুড়ে ধানের পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে ভুট্টাগাছ। খেতে ফসলের পরিচর্যা করছেন কৃষকরা। অপেক্ষাকৃত উঁচু জমিতে ভুট্টার চাষ করা হয়েছে। অথচ গত বছরের এই সময়ে এখানকার জমিগুলোতে শুধুই ধানের চাষ করা হয়েছিল।
কৃষকরা জানান, সেচ পাম্পের যন্ত্রাংশ, জ্বালানি তেল ও সারের দাম বেড়ে যাওয়ায় ধান চাষে খরচ এখন অনেক বেড়ে গেছে। এখানে এক বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করতে বীজতলা তৈরি, বীজ রোপণ, শ্রমিকের মজুরি, হালচাষ, সার, কীটনাশক ও মাড়াইসহ খরচ ২৭ থেকে ৩০ হাজার টাকা। অন্যদিকে ধান বিক্রির সময় ন্যায্য দাম না পাওয়ায় লাভ তো দূরের কথা, খরচের টাকা তুলতেই তাদের হিমশিম খেতে হয়।
কৃষকদের অভিযোগ, সরকারিভাবে ধান-চাল সংগ্রহের মৌসুমে তারা সরাসরি খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে ধান বিক্রি করতে পারেন না। কার্যালয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা সিন্ডিকেট তৈরি করে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ধান কিনে থাকেন। ধান কাটা মৌসুমে কৃষকদের যখন টাকার অভাব চরমে, তখন সরকারের কাছে বিক্রি করতে না পেরে ওই ব্যবসায়ীদের কাছে ধান বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন। ব্যবসায়ীরা তাদের জিম্মি করে সরকার নির্ধারিত দরের চেয়েও কম টাকায় ধান কিনে নেন। ফলে লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। এ কারণেই তারা ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছেন।
ফলুয়ারচর গ্রামের ধানচাষি মাইদুল ইসলাম বলেন, ‘গত বছর ধান চাষ করে লোকসান হয়েছে। তাই এবার বোরোর সব জমিতে ভুট্টা লাগিয়েছি। শুধু আমি না, এ গ্রামের অনেকেই বোরোর আবাদ ছেড়ে এ বছর ভুট্টার আবাদ করেছেন।’
মাইদুল ইসলাম আরও বলেন, ‘বাজারে ধানের দাম কম ছিল। তাই ধান দিতে রৌমারী খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। আমার শুকনো ধানকে ভেজা ও চিটা বলে আমাকে ফেরত পাঠায়। আমরা গরিব মানুষ, আমাদের এভাবে ঘোরানোর দরকার কী।’
সরকারি দামে ধান বিক্রি করতে না পারার আক্ষেপ জানালেন চরশৌলমারী গ্রামের জয়নাল আবেদীনও। তিনি বলেন, ‘ধান বিক্রি করতে গেয়েছিলাম। ৮৫০ টাকা করে দেবে বললে ফেরত নিয়ে আসছি।’
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক অফিসের একাধিক সূত্রও অসাধু কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যবসায়ীদের গড়ে তোলা সিন্ডিকেটের তথ্য স্বীকার করে নিয়েছে। তবে অফিসের কোনো কর্মকর্তা এ বিষয়ে মুখ খুলতে রাজি হননি। ব্যবসায়ীরা অবশ্য কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করছেন। ব্যবসায়ী মো. ময়নাল হক বলেন, ‘সরকারিভাবে ধান নেয়ার মালিক উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তারা। কিন্তু কৃষকরা তাদের ধান দিতে পারে না। তাই আমরা ধান দিয়ে থাকি।’
ধান আবাদ নিয়ে যখন কৃষকরা এমন নাকাল, তখন তারা ভুট্টা আবাদে আশার আলো খুঁজে পেয়েছেন। তারা বলছেন, প্রতি বিঘায় ভুট্টা চাষে খরচ হয় ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা। ফলন হয় প্রতি বিঘায় ৮০ থেকে ৯০ মণ। জমি থেকে মণপ্রতি কাঁচা ভুট্টা বিক্রি হয় ১ হাজার থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায়। আর শুকনো ভুট্টা বিক্রি হয় ১ হাজার ৩০০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকায়। সে হিসাবে ধানের তুলনায় ভুট্টার আবাদ আর্থিক দিক থেকে অনেক বেশি নিরাপদ।
ভুট্টাচাষি আবু সাইদ বলেন, ‘তেলের দাম বেশি হওয়ায় ধান চাষ করিনি। এবার আমি দুই বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করছি। ভুট্টা চাষে খরচ কম। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে গত বছরের চেয়ে এবার ভুট্টা চাষে বেশি লাভ হবে।’
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বিভিন্ন কারণে গত বছরের তুলনায় এ বছর ২০০ হেক্টর জমিতে ধান চাষ কম হয়েছে। অন্যদিকে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে ভুট্টার আবাদ।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বোরো ধানের আবাদ অনেক কম হয়েছে। বিপরীতে ব্যাপক হারে বেড়েছে ভুট্টার আবাদ। গত বছর ভুট্টার আবাদ হয়েছিল ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে প্রায় ৪ হাজার ৮২৫ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে।
জেলার আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চতরা বিলাঞ্চল চরমপন্থি ময়েজ বাহিনীর আস্তানায় অস্ত্র তৈরি কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ।
মঙ্গলবার ভোরে আতাইকুলা থানা পুলিশ ওই আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করেছে। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে অস্ত্র তৈরির কাজে নিযুক্ত দুজনকে আটক করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, আতাইকুলা থানার অন্তর্গত আটঘরিয়া উপজেলার প্রত্যন্ত চতরা বিলাঞ্চলে সন্ত্রাসী ময়েজ বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ডিবি ও আতাইকুলা থানা পুলিশ মঙ্গলবার ভোরে ওই বিলে ময়েজ বাহিনীর আস্তানায় বিশেষ অভিযান চালায়। এ সময় বিলের মধ্যে লুকানো ঘাঁটি থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র, অস্ত্র তৈরির ছাঁচ, কাটিং মেশিন, ড্রিল মেশিন, লোহার পাত, গানপাউডারের মতো উপকরণসহ বিপুল পরিমাণ অস্ত্র তৈরির সরঞ্জাম উদ্ধার করা করা হয়।
এ সময় আস্তানা থেকে অধিকাংশ সন্ত্রাসী পালিয়ে গেলেও দুজন আটক হয়। এরা হলো সদর উপজেলার মনির হোসেন (৪০) ও রেজাউল ইসলাম (৪২)।
আটক ব্যক্তিরা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, স্থানীয়ভাবে সংগঠিত ডাকাতি ও চাঁদাবাজির জন্য এসব অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল।
স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, চতরা বিলের দুর্গম চরাঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরেই ময়েজ বাহিনীর তৎপরতা চলছিল। দিনের বেলায় তেমন দেখা না গেলেও রাতে তারা অস্ত্রসহ মহড়া দিত। এতে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছিল। বিলে বিপুল সংখ্যক আইনশৃংখলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।
আতাইকুলা থানার ওসি হাবিবুল ইসলাম জানান, আটঘরিয়া উপজেলার লক্ষীপুর ইউনিয়নের প্রত্যন্ত চতরা বিলকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ডাকাতিসহ নানা অপরাধের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে রেখেছিল ময়েজ বাহিনী। বেশ কয়েকদিন পর্যবেক্ষণ করার পর আজ ভোরে ওই বিলের আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করা হয়। আস্তানা থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ৮ চেম্বার বিশিষ্টি একটি রিভলবার, একটি ওয়ার শুটারগান এবং অস্ত্র তেরির সরঞ্জাম উদ্ধারসহ দুজনকে আটক করা হয়েছে। তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে এবং অন্যদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করা হচ্ছে।
শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ের কর্ণজোড়া ও পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে প্রায় ৪০ লাখ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন চোরাই পণ্য জব্দ করেছে বিজিবি।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ভোরে কর্ণজোড়া বিজবি ক্যাম্পের সদস্যরা এসব চোরাই পণ্য জব্দ করে।
বিজিবির পক্ষ থেকে ১৯ আগষ্ট দুপুরে এক প্রেসবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।
বিজিবি জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শেরপুর জেলার শ্রীবরদী উপজেলার গারো পাহাড়ের কর্ণজোড়া সীমান্ত এলাকায় চোরাচালানবিরোধী অভিযান চালায় কর্ণঝোরা ক্যাম্পের টহলরত সদস্যরা। এসময় বিজিবি’র উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারীরা চোরাই পথে আনা মালামাল ফেলে পালিয়ে যায়। একইসময় বিজিবির অপর একটি দল পার্শ্ববর্তী ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট সীমান্ত এলাকায় অভিযান চালায়। দুই স্থান থেকে ৫৫৮টি মোবাইল ডিসপ্লে, ২৪০ কেজি জিরা, ২ হাজার পিস ভারতীয় জেলিট গার্ড, ১০ হাজার ৮ পিস জিলেট গার্ড কার্টিজ, ১২শ পিস স্ক্রীণ শাইন ক্রিম ও একটি ডিসকভার মোটরসাইকেল, ২৮০ বক্স পন্ডস ফেসওয়াশ জব্দ করে। এসবের বাজার মূল্য প্রায় ৪০ লাখ টাকা বলে জানা গেছে।
সিলেটের কোম্পানীগঞ্জে অভিযান চালিয়ে আরও ৫০ হাজার ঘনফুট পাথর উদ্ধার করেছে পুলিশ।
সোমবার (১৮ আগস্ট) সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত উপজেলার পাড়ুয়া-ভাংতি এলাকায় এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সিলেটের ভোলাগঞ্জে সাদাপাথরে লুটের ঘটনায় প্রশাসনের নজরদারি জোরদার করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় প্রতিদিন চলছে উদ্ধার অভিযান। গতকাল (সোমবার) থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ লাখ ঘনফুট সাদা পাথর উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) উজায়ের আল মাহমুদ আদনান বলেন, ‘গতকাল (সোমবার) সন্ধা থেকে রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জে পাড়ুয়া-ভাংতি এলাকায় অভিযান চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার ঘনফুট সাদা পাথর উদ্ধার করা হয়। এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি। এখন পর্যন্ত খনিজ সম্পদ ব্যুরোর মামলায় ১১ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া সাদাপাথরে লুটপাটে জড়িতদেরও আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।’
এর আগে, সোমবার বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার টিলাপাড়া, রঙ্গিটিলা, কান্দিপাড়া ও সালিয়া গ্রামে অভিযান চালিয়ে ধানখেত এবং কারো কারো বাড়ির উঠান, পথের ধারে ঘাস লতাপাতায় লুকানো অবস্থায় রাখা প্রায় ৫ হাজার ১০০ ঘনফুট পাথর উদ্ধার করে প্রশাসন।
এদিকে, সাদাপাথর লুটপাট নিয়ে দেশজুড়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনার মধ্যেই সোমবার ওএসএডি করা হয়েছে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদকে। এ ছাড়া অন্য একটি আদেশে বদলি করা হয়েছে কোম্পানীগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আজিজুন্নাহারকেও।
পাবনায় মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালিক শ্রমিকদের কোন নোটিশ না দিয়ে মালিক এমডি শামীম কোম্পানির সকল মেশিন ও যাবতীয় মালামাল ও শ্রমিকদের বকেয়া বেতন না দিয়ে কোম্পানি বন্ধ করে দেয় এর প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছে কর্মচারীবৃন্দ।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের সকল কর্মচারীবৃন্দ আয়োজনে এই ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্যদেন, বাংলাদেশ ভূমিহীন আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক শেখ নাসির উদ্দিন, মিলন শেখ, হারুন খান, আম্বিয়া খাতুন, রাজিয়া খাতুন, রনি শেখ, মাসুদ রানা, ফজলুল হক।
বক্তারা বলেন, মেরিনার্স ফুড এন্ড এগ্রো লিমিটেডের মালিক শ্রমিকদের কোন নোটিশ না দিয়েই মালিক এমডি শামীম পুলিশের সহযোগিতায় কোম্পানির সকল মেশিন ও যন্ত্রপাতি মালামাল নিয়ে যায়। শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকদের সকল পাওনা ও বকেয়া বেতন আদায়ের দাবিতে এবং মালিক পক্ষের করা শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত হারুন এর নিঃস্বার্থ মুক্তির দাবিসহ সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবি করেন বক্তারা।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে আন্দোলনরত শ্রমিকরা।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ৩০ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় ১৫০ গ্রাম হেরোইন, ৩ কেজি ৮ গ্রাম গাঁজা, ৩৫ পিস ইয়াবা, ১৯২ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট, ৮৯২ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৫৯০ কেজি অবৈধ কারেন্ট জাল আটক করা হয়। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি সূত্র জানান, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মধ্য রাতে সীমান্তের ধর্মদাহ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ডিজিটি মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৫০ গ্রাম হেরোইন এবং ৩৫২ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২,০৫,৬০০ টাকা।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট সন্ধা ৬টার দিকে উপজেলার উদয়নগর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পদ্মা নদীর মধ্যবর্তী স্থান থেকে ভারতীয় ৫৯০ কেজি কারেন্ট জাল আটক করেন (৪৭ বিজিবি)। যার মূল্য ২৩,৬০,০০০ টাকা। পরে একই দিন রাত ১১টার দিকে রামকৃষ্ণপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ পুরাতন ঠোটারপাড়া এলাকায় ভারতীয় ১০০ গ্রাম হেরোইন, ৩ কেজি ৮ গ্রাম গাঁজা, ৩৫ পিস ইয়াবা এবং ১৯২ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করেন তারা। যার মূল্য ২,৮১,৪০০ টাকা। ওই দিন একই সময় সীমান্তের জয়পুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ময়ারামপুর মাঠে অভিযানে ভারতীয় ৩০০ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করতে সক্ষম হয় (বিজিবি)। যার মূল্য ৯০,০০০ টাকা।
এছাড়াও পার্শ্ববার্তী মেহেরপুর জেলার ধলা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ধলা মাঠের মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে ভারতীয় ২৪০ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করেন তারা। যার মূল্য ৭২,০০০ টাকা।
৪৭ ব্যাটালিয়ন এর পৃথক অভিযানে আটককৃত মাদকদ্রব্যের সর্বমোট মূল্য ৩০,০৯,০০০ টাকা। আটককৃত মাদকদ্রব্য এবং কারেন্ট জাল ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়ন স্টোরে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মাহবুব মুর্শেদ রহমান, পিএসসি জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। ভবিষ্যতেও চোরাকারবারীসহ মাদক আটকে বিজিবি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ছিনতাই চক্রের প্রধান বিল্লাল ওরফে অগ্নি বিল্লাল ওরফে ভাগনে বিল্লালকে (২৯) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি )।
ডিএমপি’র মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
সিটিটিসি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার ছিনতাইকারী বিল্লাল সাভারের শামলাপুর এলাকায় অবস্থান করছে।
আজ মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত বিল্লাল মোহাম্মদপুর ও আদাবরসহ বিভিন্ন এলাকায় চাপাতি ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ছিনতাই করত।
এতে আরও বলা হয়, বিল্লালের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় সাতটি গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ বিভিন্ন অপরাধের ছয়টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানানো হয়।
জেলার মুরাদনগরে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার প্রধান আসামি শুক্কুর আলীকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার র্যাবের যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্কুর আলী উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মজিদ মিয়ার ছেলে।
গ্রেফতারের পর শুক্কর আলীকে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা নিয়ে আসে র্যাব।আজ মঙ্গলবার সকালে তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে ছাত্র জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এ সময় মিছিলে অতর্কিত হামলা করে দুষ্কৃতকারীরা। হামলায় ৭ জন সাংবাদিক আহত হয়।
এ ঘটনায় দৈনিক খোলা কাগজের কুমিল্লা প্রতিনিধি শাহ ইমরান বাদি হয়ে ৪জনকে জ্ঞাত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত করে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করে।
মুরাদনগর থানার ওসি আরো জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার আসামী শুক্কুরকে চট্টগ্রাম থেকে র্যাব গ্রেফতার করে। আজ সকালে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শেষে রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির তীব্র স্রোতে জেলার রামগতি উপজেলার ‘তেগাছিয়া সেতুর’ একাংশ ধসে পড়েছে। এতে হাতিয়ার সঙ্গে রামগতির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় এক মাস। সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। হুমকির মুখে তেগাছিয়া বাজারও। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও ব্যবসা-বাণিজ্য।
জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, গত ২০ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় একমাস ধরে রামগতির সাথে হাতিয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রামগতি-হাতিয়ার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় কয়েকশ যানবাহন চলাচল করে। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে রামগতি উপজেলার চরগাজীর তেগাছিয়া খালের ওপর নির্মিত পুরোনো ব্রিজটি ভেঙে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) লক্ষ্মীপুর সেতুটি নির্মাণ করে । পাশেই তেগাছিয়া বাজারে মৎস্য অধিদপ্তর প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র গড়ে তোলে। রামগতির মেঘনা নদী হতে আহরিত ইলিশ ও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ওই অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি করেন জেলেরা। এছাড়া আশপাশে ২০টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ১০টি হাট-বাজার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও হাট বাজারের মানুষ যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। গত এক মাস ধরে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে গেলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ষার শুরু থেকেই তেগাছিয়া খালে তীব্র স্রোত বয়ে চলে। টানা বৃষ্টি ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের স্রোতে সেতুর উত্তর পাশের প্রায় ১০০ মিটার সংযোগ সড়ক ধসে যায়। এতে করে গত এক মাস ধরে রামগতির সাথে হাতিয়া ও ২০টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সেতু এলাকা ও সংলগ্ন বাজার। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মানুষ। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
মালামাল আনা-নেওয়া করতে না পারায় বন্ধ হওয়ার পথে বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। আশপাশের নারী-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা সেতুর সংযোগ সড়কে কাঠ দিয়ে কোনোরকম ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। এতে করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তেগাছিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে এলাকাটি প্লাবিত হয়। জমে থাকা ওই পানি খাল দিয়ে নদীতে যেতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়। এতে সেতুটির সংযোগ সড়কের একপাশ থেকে মাটি ধসে যায়। প্রতিদিনই সেতুর দুই পাশ ও বাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট ভাঙনের শিকার হচ্ছে। সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কার করার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, গত এক মাস ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও রোগীসহ সব ধরনের লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ধসে যাওয়া অংশটি দ্রুত মেরামত না করলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেতুটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে শত বছরের পুরোনো তেগাছিয়া বাজারটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কবে নাগাদ সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ বা বিকল্প পথের ব্যবস্থা হবে,তাও নিশ্চিত নয়। ফলে পড়ালেখা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করে পড়ালেখা স্বাভাবিক করার দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ উজ জামান খান বলেন, তেগাছিয়া খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কিন্তু সেতুটি স্থানীয় সরকার বিভাগের।
সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গেছে। পাশাপাশি বাজারের কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ভাঙন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই অঞ্চলে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে। হাতিয়া, বয়ারচরের সঙ্গে রামগতির যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ। চলছে রংয়ের কাজ। এরই মধ্যে তিনতলা ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রং মিস্ত্রিকে দিয়ে সেসব ফাটলে রংয়ের মোটা প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগেও এ ভবনটির দেয়ালে প্লাস্টার ও মেঝে ঢালাইয়ের কাজে নষ্ট সিমেন্ট ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছিল এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নির্মাণাধীন ভবনে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে আসছিল। এনিয়ে এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকরা মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানালে তারা তা আমলে নেয়না। উল্টো আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া হতো, নানাভাবে তাদের হেনস্তা করা হতো। এ নিয়ে এলাকাবাসী কয়েকবার কাজ বন্ধ করে দিলেও পরবর্তীতে ক্ষমতার জোরে আবারও একইভাবে কাজ শুরু করেন। আর এজন্যই কাজ শেষ না হতেই ভবনের পিলার, ছাদ, দেয়াল, মেঝে ও বেলকনির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পরে রং মিস্ত্রিকে দিয়ে ফাটল অংশে রংয়ের মোটা প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এদিকে ভবনের রংয়ের কাজ, বারান্দা, সিঁড়ি ও কয়েকটি ঘরের মেঝের প্লাস্টার ফিনিশিংয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। নিয়মানুযায়ী ভবনের সকল কাজ শেষ হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুরো ভবনের কাজ দেখে সন্তুষ্ট হয়ে ছাড়পত্র দিলে তবেই ভবন হস্তান্তর করতে পারবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সে সব নিয়ম না মেনেই গত মাসেই ভবন হস্তান্তরের তারিখসহ ফলক বসানো হয়েছে। ফলকে প্রকল্পের নাম, প্রকল্পিত ব্যয়, ভিত্তি, নির্মাণকারী বিভাগসহ হস্তান্তরের তারিখ লেখা রয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পের আওতায় বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভিত্তির ৩ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ১ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৩ টাকার দরপত্রে কাজটি পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. তানজিমুল ইসলাম। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহন সরকার বলেন, এ স্কুলের কাজ শুরুর প্রথম থেকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করেছে। আমরা যতবার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে বাঁধা দিয়েছি তৎকালীন আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে। যার জন্য পরবর্তীতে কেউ আর তাদের বাঁধা দিতে পারেনি। শুনেছি নওগাঁর এই ঠিকাদার নাকি আওয়ামী লীগের বড় নেতা তার প্রভাবে ইঞ্জিনিয়ারও তাদের পক্ষে ছিল। ৫ আগস্টের পর সে ঠিকাদার পালিয়ে আত্মগোপন করলেও তার প্রভাব কমেনি। কয়েকমাস আগেই ভবনের দেয়াল প্লাস্টারের কাজ করার সময় নষ্ট সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার সময় আমরা বাঁধা দেয়। পরে ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে জানানো হলে তারা এসে সে সিমেন্ট সরিয়ে ফেলে ও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে বলে জানায়। এখন আবার ভবনে ফাটল ধরছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করলে আমি বিষয়টি আমি শিক্ষা অফিসে জানালে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি দেয় যে আমার চাকরি খেয়ে ফেলবে। পরবর্তীতে চোখের সামনে খারাপ কাজ করলেও আমরা আর কেউ বাঁধা দিতে সাহস পায়নি। গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হলে ওই ঠিকাদার আর বিদ্যালয়ে আসেনি, তবে তাঁর ম্যানেজার নুর আলম আসে। এরপরও কোনো কাজ সঠিক না হলে আমরা বললেও তারা গুরুত্ব দেয় না। উল্টো শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানজিমুল ইসলামের ফোনে বারবার ফোন করা হলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে তার ম্যানেজার নুর আলমের নাম্বারে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মেহেদী হাসান বাবলা বলেন, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের কাজের শুরু থেকেই আমাদের মতামতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। ভবন নির্মাণকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী তানজিমুল ইসলাম প্রথমে কয়েকবার আসলেও গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি আর আসেননি। তারপর থেকে তার ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। শুধু তার ম্যানেজার নুর আলম সাইটে আসে মাঝে মধ্যে। তাদের কোনো সমস্যার কথা বললেও তারা তা সংশোধন করে দিতো না। এ নিয়ে তাদের সাথে আমার কয়েকবার কথা কাটাকাটিও হয়েছে। এসব বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি অফিসে বললে তারা উল্টো সেসব কাজ সঠিক বলে বুঝানো হতো।
তিনি আরও বলেন, ভবনের প্লাস্টার কাজে নষ্ট সিমেন্ট ব্যবহার করেছিল। আমরা অভিযোগ জানালে এলজিইডি অফিস তা সরিয়ে ফেলতে বললে ঠিকাদারের লোক সরিয়ে ফেলে। তবে, দেয়াল প্লাস্টারের কাজের ফিনিশিং ভাল হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় উঁচু নিচু হয়েছে। যার ফলে রংয়ের কাজও ভাল হচ্ছে না। ভবনের টপরুমসহ কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে। বিষয়টি আমরা শিক্ষা অফিসকে জানালে এলজিইডি অফিসের লোকজন এসে সেসব ঠিক করে দিবে বলে আশ্বাস দিয়ে গেছেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসিরউদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি এলজিইডি অফিসকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। তারা এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব ঠিক করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
ক্ষেতলাল এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী তাহেরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় ভবনের যেসব ক্রুটি ছিল আমরা তা ঠিক করে দেওয়া জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা সেসব নিয়ে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার তানজিমুল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন তিনি কোথায় আছেন বা কোন নাম্বার ব্যবহার করেন তা আমরা জানি না। তবে, আমরা সাইটের ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার নুর আলমের সাথে যোগাযোগ করি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের টিয়ারা গ্রামের মাদ্রাসাছাত্র মোহাম্মদ হোসাইন (১৩) নিখোঁজ হওয়ার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। শোকে পাগল হয়ে পড়েছেন তার বাবা-মা।
মোহাম্মদ হোসাইন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভাদুঘরে অবস্থিত "আলা হযরত তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার" ছাত্র। সে ইতোমধ্যে ১৭ পারা কোরআন শরীফ হিফজ করেছে। তার বাবা কামাল পারভেজ একজন ব্যবসায়ী। চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে হোসাইন তৃতীয়।
কামাল পারভেজ জানান, গত ৫ জুলাই সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসা থেকে ডাবলু বাড়ি মোড়ের উদ্দেশে বের হয় হোসাইন। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান না পেয়ে সেদিন রাতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, নিখোঁজের কিছুদিন পর থেকে বিভিন্ন অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে কয়েক দফায় টাকা দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
হোসাইনের বাবা বলেন, "দেড় মাস ধরে ছেলের খোঁজে দিনরাত ছুটছি। কোথায় আছে, কেমন আছে— কিছুই জানি না। আমি ও তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। পুলিশকে একাধিকবার জানিয়েও কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের সংসার ভেঙে গেছে। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি অনুরোধ করছি— দয়া করে আমার ছেলেকে খুঁজে দিন।"
এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোনো তথ্য জানাতে পারেনি বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বাগেরহাট জেলা থেকে সংসদীয় ৪ টি আসনকে কেটে ৩ টি আসন করার প্রতিবাদে জেলার সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জেলায় অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করেছে। ঘোষিত কর্মসূচীর মধ্যে ২১ আগষ্ট খুলনা-মংলা ও মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের কাটাখালী ও নওয়াপাড়ায় অবরোধ, ২৪ আগষ্ট খুলনা-মংলা, মাওয়া-খুলনা, খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের কাটাখালী, নওয়াপাড়া, সাইনবোর্ড মোড়, ডিসি অফিস ও নির্বাচন অফিস অবরোধ করা হবে। একই দিন ঢাকা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। ২৫ আগষ্ট ঢাকা নির্বাচন কমিশন অফিসের সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করেছে।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচী ঘোষনা করেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগষ্ট) সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। এ সময়ে সর্বদলীয় কমিটির সদস্য সচিব শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ সালাম, জেলা জামায়াতের আমির মাও. রেজাউল করিম, বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফ্ফর রহমান আলম, জামায়াতের নায়েবে আমির এ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলাম, ওয়াজিয়ার রহমান, সাহেদ আলী রবি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৫ আগষ্ট নির্বাচন কমিশনের শুনানীতে যদি বাগেরহাটের ৪ আসন পূনঃবহাল করা না হলে বাগেরহাট অচল কর্মসূচী গ্রহন করার ঘোষনা দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনায় থাকেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। এক সময় তার জন্মদিন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এবার সন্তানদের জন্মদিন পালন নিয়ে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ওপর ক্ষেপেছেন অভিনেত্রী।
সন্তান জন্মের পর অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, ধুমধাম করে আর নিজের জন্মদিন পালন করবেন না। সন্তানের জন্মদিন ভালোভাবে পালন করবেন। ঠিক এমনটাই করে আসছিলেন। কথামতো গত ১০ আগস্ট ছেলের তৃতীয় জন্মদিন নিজের মতো করেই উদযাপন করেছেন পরীমনি। তবে এ অনুষ্ঠান নিয়ে বেজায় চটেছেন নায়িকা।
সবকিছু ঠিকমতোই ছিল। সন্তানের জন্মদিনের ছয় দিন পর অভিনেত্রী লক্ষ্য করলেন, ব্যক্তিগত ওই অনুষ্ঠানের ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতিথিদের অনেকে অনুষ্ঠানটি ব্যবসা বানিয়ে সামাজিক মাধ্যম ছড়িয়েছে। এত ক্ষুব্ধ পরীমনি।
গত শনিবার অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আমার সব রকম আনন্দে যাদের আমি কাছে চাইছি কিন্তু তারা প্রত্যেকেই প্রমাণ করছে তারা আমার জীবনে মলমুত্র মাত্র। খেয়াল করে দেখবেন, গত ১০ তারিখ থেকে ব্যক্তিগত কারণে আমি ফেসবুকে অ্যাকটিভ নই। আজ ফেসবুকে ঢুকতেই দেখি আমার জীবনের আনন্দ নিয়ে টানাটানি করা শুরু করেছে। আমার বাচ্চাদের নিয়ে ১০ তারিখ একটা ইভেন্ট ছিল- আমার একান্ত নিজস্ব কাছের মানুষদের নিয়ে যেটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু উল্লুক বেহায়ার মতো আমার ইভেন্টে এসে রিলস আর ব্যবসায়িক ব্লগে সামাজিক মাধ্যম ভরে ফেলছে! যেখানে আমি এখন পর্যন্ত একটা ছবিও পোস্ট করিনি। এমনকি আমার পরিবারের এবং সত্যি যাদের কাছে পরিবারের মানুষের গুরুত্ব আছে তারা কিন্তু কেউ এরকম করে নাই।’
এদিকে গত মাসে অভিনেত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তার সন্তানরা ব্যবসায়িক উপাদান নয়। তাদের নিয়ে যেন কনটেন্ট ব্যবসা বন্ধ করা হয়। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে সেটি ঠেকাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পরীমনি লিখেছেন- ‘যারা অনুষ্ঠানে এসে মানুষের জীবনের অতি মূল্যবান সময়টা পাবলিক করে তারা আমার গালি খাবা, যা তোমরা ডিজার্ভ করো- তোমরা ভিখারির মতো মাসভরে কিছু ডলার কামাও। এ ধরনের মানুষ বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর যদি সামনে পড়ে তাহলে তিন মিনিট থাপড়িয়ে দেব। কারণ আগেই বলেছিলাম আমার বাচ্চারা কোনো ব্যবসায়িক উপাদান না। ভালো লাগেনি তখন?’
জয়পুরহাটের কালাইয়ে পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে মূল্যায়ন পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সোমবার সকালে (১৮ আগস্ট) উপজেলার পুনটে অবস্থিত মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুল নামে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি (৮) উপজেলার জালাইগাড়ী গ্রামে সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটিতে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড থাকলেও স্ট্যান্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নাই। কোমলমতি শিশুদের উত্তপ্ত গরমে টিনের কক্ষে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আবার স্কুলে খোলা মাঠে গাছের নিচে ক্লাস করানো হচ্ছে। আবার স্কুলে কোচিং করানো নিষেধ থাকলেও করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কোচিং।
স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলে, সুরাইয়া মনি ক্লাসের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে আসলে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় তখন স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে।
চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার বলে, এ স্কুলে পড়ার জন্য প্রতিমাসে বেতন ৩০০ টাকা, কোচিং করার জন্য ৩০০ টাকা দিতে হয়। আর পরীক্ষা সময়ে পরীক্ষার ফি ১৮০ টাকা দিতে হয়।
শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি বলে, আমাকে হেড স্যার টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে দেননি। তিনি বলেন, তোর বাবা টাকা দিতে পারেনা, তোর পরীক্ষা দিতে হবে না। তুই বাড়ি যা বলে ঘাড় ধরে বের করে দেয়। এজন্য আমি স্কুলের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমার সহপাঠীরা সবাই পরীক্ষা দিচ্ছিল। আমি পরীক্ষা না দিতে পারায় বের করলে দিলে বাহির দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম।
সুরাইয়া মনির বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। দিনমজুর দিয়ে সংসার চালাই। প্রতি মাসেই স্কুলে বেতন দেই। হয়তো এক-দুই দিন দেরি হয়। আমার মেয়ের কোন মাসের বেতন বকেয়া নেই। শুধু পরীক্ষার ফি বাকি ছিল। যেটা আমি আজকে দিতে গিয়ে দেখি আমার বাচ্চাকে রুম থেকে বের করে রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে রেখেছে। আর বাচ্চা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। এ দৃশ্য দেখার চেয়ে আমার মরণ ভালো ছিল।
এ বিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিক এমিলি ইয়াসমিন রিনা বলেন, আমি কোন কথা বলতে পারবো না। কি করতে পারেন, করেন।
কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এসব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি মালিকানাধীন। শুধু আমরা এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণ করা হয়ে থাকে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, এবিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।