দক্ষিণ আফ্রিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের মধ্যে চারজনের মরদেহ শুক্রবার সকালে দাফন সম্পন্ন হয়েছে। নিহতদের বাড়ি ফেনী জেলার বিভিন্ন এলাকায়। তাদের নিজ নিজ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার বিকেলে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে দেশে আনা হয় চারজনের মরদেহ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থানীয় সময় ভোরে দক্ষিণ আফ্রিকার ওয়েস্টার্ন কেপ প্রদেশের লোকানকায় সড়ক দুর্ঘটনায় ১০ বছরের এক শিশুসহ ছয় বাংলাদেশি নিহত হন। ওই বাংলাদেশিদের বহনকারী একটি প্রাইভেট কার ওয়েস্টার্ন কেপ থেকে কেপটাউন বিমানবন্দরে যাচ্ছিল।
দুর্ঘটনায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পাঁচজনের। নিহতরা হলেন আবুল হোসেন (৪৫) ও তার ছেলে নাদিম হোসেন (১০)। এ ছাড়া রাজু আহমেদ (৩৪), ইসমাইল হোসেন (৩৮) ও মোস্তফা কামাল (৪০)। এ ঘটনায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আনিসুল হক মিলন (৩৮)।
নিহতদের স্বজনরা জানান, ১০ বছরের শিশু নাদিমের মরদেহ দক্ষিণ আফ্রিকায় দাফন করা হয়েছে। এখন আনা হয়েছে আবুল হোসেন, রাজু, ইসমাইল ও মোস্তফার মরদেহ। আনিসুলের মরদেহ পরে আসবে।
ফেনী সদর উপজেলার বিরলী গ্রামের বাসিন্দা নিহত ইসমাইল হোসেনের ভাই নিজাম উদ্দিন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা ৪০ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইটে চারজনের মরদেহ দেশে আসে। বিমানবন্দরে আনুষ্ঠানিকতা শেষে পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত ১১টায় মরদেহ নিয়ে তারা ফেনীর উদ্দেশে রওনা হন। পরে মরদেহ নিয়ে নিজ বাড়িতে আসেন।
নিজাম উদ্দিন জানান, শুক্রবার সকালে নিজ এলাকায় পারিবারিক কবরস্থানে ওই চারজনের মরদেহ দাফন করা হয়েছে।
জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার আয়মাপুর গ্রামে অনুষ্ঠিত হয়েছে একদিনব্যাপী ঐতিহ্যবাহী পাখি তলার মেলা, যা স্থানীয়দের কাছে জামাই মেলা নামেও সুপরিচিত। বহু প্রাচীন এই মেলাকে ঘিরে শনিবার সকাল থেকেই গ্রামজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দূরদূরান্ত থেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে মানুষজন ভিড় করছেন মেলাপ্রাঙ্গণে।
মেলায় শিশু-কিশোরদের বিনোদনের জন্য উঠেছে রঙিন নাগরদোলা, চড়কি ও বিভিন্ন খেলার রাইড। তাদের উচ্ছ্বাসে মেলার চারদিক আরও প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি বসেছে হস্তশিল্পের পসরা কাঠ, বাঁশ, মাটির তৈরি খেলনা, ঘর সাজানোর সামগ্রী, বাঁশের তৈরি নানান ব্যবহার্য জিনিসপত্র। রঙিন মিঠাই, জিলাপি, ছানামিঠাইসহ ঘরোয়া মিষ্টির গন্ধে মেলার চারপাশ সরব।
মেলার অন্যতম আকর্ষণ ছিল গ্রামের ঐতিহ্যবাহী লাঠিখেলা। স্থানীয় লাঠিয়াল দলের মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী দেখতে ভিড় জমিয়েছে উৎসুক জনতা। প্রবীণদের মতে, এ ধরনের আয়োজন গ্রামবাংলার হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
আইমাপুর গ্রামের দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমার বাপ-দাদারা এই মেলা করে গিয়েছেন, পর্যায়ক্রমে আমরাও করছি। আগামীতে আমাদের সন্তানরা করবে। ১০০ বছরেরও অধিক সময় ধরে এ মেলা হয়ে আসছে। মেলার প্রধান আকর্ষণ গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের লাঠি খেলা। মেলার দিনে এ গ্রামের সকলেই জামাইদের আমন্ত্রণ করেন। এ কারণে এই মেলাটি জামাই মেলা নামেও পরিচিত।
দিনব্যাপী আয়োজিত এই মেলায় সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। গান, নাচ আর নানা পরিবেশনায় মুখর হয়ে উঠবে সমগ্র মেলাপ্রাঙ্গণ। উৎসব-উদ্দীপনা, পারিবারিক মিলন মেলা আয়মাপুরের পাখি তলার মেলা যেন গ্রামবাংলার সংস্কৃতির এক জীবন্ত প্রতিচ্ছবি।
প্রযুক্তির বহুমাত্রিক ব্যবহারের মাধ্যমে জনতার সামগ্রীক মুক্তি অর্জনে, ‘দক্ষতা জনশক্তি-দেশ গঠনের মূল ভিত্তি’ বাস্তবায়নের আহ্বানে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ (আইডিইবি) দিনাজপুর জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার ‘গণ প্রকৌশল দিবস -২০২৫ ও আইডিইবির ৫৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী’ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সকাল সাড়ে দশটায় দিনাজপুর ইনস্টিটিউট প্রাঙ্গনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার দিনাজপুর এর উপপরিচালক ও দিনাজপুর পৌরসভার প্রশাসক মো. রিয়াজ উদ্দিন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট এর অধ্যক্ষ প্রকৌশলী মো. আব্দুল ওয়াদুদ মন্ডল, আইডিইবির যুগ্ম আহ্বায়ক (রংপুর অঞ্চল) মো. আব্দুছ ছাত্তার শাহ। সম্মানিত অতিথি ছিলেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি মো. মোকাররম হোসেন।
ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার সহসভাপতি (নির্বাহী প্রকৌশলী-দিনাজপুর পৌরসভা) প্রকৌশলী মো. মিনারুল ইসলাম খান। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. সাজিউল ইসলাম সাজু।
আইডিইবির চাকরিবিষয়ক সম্পাদক (সহকারী প্রকৌশলী-দিনাজপুর সড়ক বিভাগ) প্রকৌশলী মো. শাহানুর রহমান এর সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সাবেক সেক্রেটারি প্রকৌশলী মো. আব্দুল আউয়াল, ডিইএব জেলা শাখার সভাপতি মো. মনজুর মোরশেদ সুমন।
ওই র্যালিতে আইডিইবি দিনাজপুর জেলা শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা, প্রকৌশলী, শিক্ষার্থীছাড়াও দিনাজপুরের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন।
দেশের অসংখ্য দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার প্রধান উৎস-ভূমিসংক্রান্ত জটিলতা। এই সমস্যা নিরসনে আইনি কাঠামোর পাশাপাশি প্রয়োজন একটি সচেতন প্রজন্ম। এই ভাবনা থেকেই মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসন এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে: স্কুলের পাঠ্যক্রমে নয়, বরং একটি নিজস্ব পুস্তিকা ‘ভূমিকথা’-র মাধ্যমে ভবিষ্যতের নাগরিকদের ভূমিসচেতন করে তোলার কাজ শুরু করেছে তারা।
সম্প্রতি এই কর্মসূচি ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে এবং দেশের অন্যান্য প্রান্তের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কাছে মডেল কার্যক্রম হিসাবে অনুসরণীয় হয়ে উঠেছে। ভূমি বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান, আইন ও সেবা সম্পর্কে নাগরিকদের সচেতনতা বৃদ্ধির উপর জোর দেওয়া পুস্তিকাটি সাধারণ নাগরিক, শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের কাছে অত্যন্ত সহজ ও প্রাঞ্জল ভাষায় ভূমি বিষয়ক মৌলিক ধারণাগুলো তুলে ধরেছে।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাতের ঐকান্তিক ইচ্ছা, পরিকল্পনা ও সঠিক দিক-নির্দেশনায় এই প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেছে। ভূমি ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও নাগরিক অংশগ্রহণ নিশ্চিত করাই ছিল এই বই প্রকাশের মূল লক্ষ্য। বর্তমানে ভূমি বিষয়ক সেবা গ্রহণ পদ্ধতির ডিজিটাল পদ্ধতি চালু থাকলেও সে সম্পর্কে ব্যাপক অজ্ঞতা রয়েছে। অনেকে জানেন না কোন সেবা কোথায় পাওয়া যায়, কীভাবে দলিল তৈরি করতে হয় বা নামজারি করতে হয়। এই অজ্ঞতার কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত হয়রানির শিকার হন এবং প্রতারিত হন। এই প্রেক্ষাপটে ‘ভূমিকথা’ সাধারণ নাগরিককে ভূমি বিষয়ক মৌলিক ধারণা, প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস এবং আধুনিক ডিজিটাল সেবাসমূহ সম্পর্কে সচেতন করতে সহায়ক হবে। এটি ভূমি সম্পর্কিত ভুল ধারণা দূর করে ভোগান্তি কমাতে সাহায্য করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
‘ভূমিকথা’ নামক ৯৪ পৃষ্ঠার পুস্তিকাটি ভূমি সংক্রান্ত মৌলিক জ্ঞান ও সেবা সম্পর্কিত তথ্যসমৃদ্ধ একটি সহায়িকা হিসেবে কাজ করছে।
এটি ভূমি সংক্রান্ত বিদ্যমান ও প্রচলিত সরকারি আইন/বিধিমালা/নীতিমালা/পরিপত্র অনুসরণ করে প্রণীত। পুস্তিকাটিতে ভূমি কেনার আগে কী কী যাচাই করতে হয়, ভূমি রেজিস্ট্রেশনের সময় কী কী কাগজপত্র লাগে, নামজারি কীভাবে করতে হয়, ভূমি উন্নয়ন কর কীভাবে ও কেন পরিশোধ করতে হয়, ভূমি সেবা সংক্রান্ত অফিসসমূহ ও প্রদেয় সেবাসমূহ, ভূমি বিরোধ/মামলা কীভাবে ও কোথায় নিষ্পত্তি হয়, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন, ২০২০ এবং অনলাইন/ডিজিটাল ভূমি সেবাসমূহ এর মতো গুরুত্বপূর্ণ ও বহুল জিজ্ঞাসিত বিষয়গুলো সহজ ও বাস্তবধর্মী ভাষায় উপস্থাপন করা হয়েছে।
‘ভূমিকথা’র সম্পাদক অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) শরীফ উল্যাহ জানান, উত্তরাধিকার আইন, হিন্দু উত্তরাধিকার আইনের সারসংক্ষেপসহ ভূমি সংক্রান্ত ব্যবহারিক শব্দাবলির (ইংরেজি থেকে বাংলা) পরিচিতিও এই বইয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ভূমিবিষয়ক এই জ্ঞান নিয়ে কেউ পেশা গড়তে চাইলে তার জন্যও এটি একটি মূল্যবান পুস্তিকা। জেলা প্রশাসনের পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রাথমিকভাবে জেলার সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে এটি বিতরণ করা হচ্ছে এবং এটি নিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সেমিনার ও কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, পর্যায়ক্রমে এই পুস্তিকাটি বাংলাদেশের সকল নাগরিক, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের হাতে পৌঁছাতে পারলে ভূমি বিষয়ক কার্যক্রম আরও বেশি ফলপ্রসূ হবে।
এদিকে, শনিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে জমকালো আয়োজনে এই কর্মসূচির চূড়ান্ত কুইজ প্রতিযোগিতা ও সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টায় লিখিত কুইজ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্ব শুরু হয়। পরে দুপুর ১২টায় দলগত কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। একক কুইজে সর্বোচ্চ ৪৭ নম্বর পেয়ে প্রথম হওয়া জুবাইদা খাতুন অর্পাকে ২৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট প্রদান করা হয়। আর দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী তৌছিফ আহমেদকে ১৫ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী হাবিবা আক্তারকে দেওয়া হয় ১০ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড। এছাড়া, চতুর্থ থেকে দশম স্থান অর্জনকারী প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে ৫ হাজার টাকা করে প্রাইজবন্ড দেওয়া হয়।
দলগত চ্যাম্পিয়নকে ১৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট দেওয়া হয়। দ্বিতীয় স্থান অধিকার পেয়েছে ১০ হাজার টাকা এবং তৃতীয় স্থান অধিকারী স্কুল পায় ৫ হাজার টাকার প্রাইজবন্ড ও ক্রেস্ট।
জানা যায়, মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক ফাতেমা তুল জান্নাত চলতি বছরের মে মাসে ‘ভূমিকথা’ নামক ছোট এই পুস্তিকাটি প্রকাশের পরিকল্পনা করেন। ভূমি বিষয়ক মৌলিক জ্ঞান ও ভূমি সেবার গুরুত্বপূর্ণ তথ্যসমৃদ্ধ এই বইটি প্রকাশের পর মুন্সীগঞ্জের ছয়টি উপজেলার প্রায় ১০ হাজার নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নায়েবে আমীর ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, একটি রাজনৈতিক দল নির্বাচন সংস্কার চায় না। তারা পুরোনো নিয়মে নির্বাচনের আয়োজন করতে চাইছে এবং অন্তবর্তী সরকার সে দলের ফাঁদে পা দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসাথে আয়োজনের সিদ্ধান্ত জনগণের সঙ্গে প্রতারণা। আলাদা গণভোট হলে দেশের ৮০ ভাগ মানুষ সংস্কারের পক্ষে রায় দিত। সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন নয়- এটি বিশ্বাসঘাতকতা। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের উদ্যোগে চৌমুহনী বাজার মুজিবুল হক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত বিশাল নির্বাচনী জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জনসভায় প্রধান বক্তা ছিলেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমীর অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শাহজাহান, যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মুনা কনভেনশন সেন্টারের ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ও বায়তুল মামুর মসজিদের ইমাম মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন।
শ্রীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের আমীর মাওলানা আবদুল হাকিমের সভাপতিত্বে এবং মনির হোসাইন ও রবিউল হোসেন মিলনের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ভিপি শাহাব উদ্দিন, চৌদ্দগ্রাম উপজেলা আমীর মাহফুজুর রহমান, সেক্রেটারি বেলাল হোসাইন, পৌর আমীর মাওলানা ইব্রাহীম, শিবির নেতা আলা উদ্দিন, জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি খায়রুল ইসলাম, সাবেক সেক্রেটারি শাহ মিজানুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা মাওলানা আবদুল্লাহ আল নোমান, ডা. ফজলুর রহমান, বিভিন্ন মাদরাসার অধ্যক্ষরা ও স্থানীয় নেতারা।
কার্তিকের সোনালি রোদ ঠিকরে পড়ছে। দিগন্তে চোখ পাতলেই দেখা যায় ধানের খেত সোমত্ত হয়ে উঠছে। সবুজ থেকে ধীরে ধীরে হলুদ হচ্ছে ধানগাছের শরীর। ঋতুচক্রে এখন হেমন্ত কাল। কিন্তু উত্তরের হেমন্ত মূলত শীতেরই আগমনী বার্তা দেয়। ঘাসে ঘাসে শিশির বিন্দু কণা। সকালে এখন শীতের আবেশ। সেই আবেশ ছড়িয়ে পড়েছে গর্ন্ধবপুর নওগাঁও গ্রামসহ পুরো উত্তরে। প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শীতের।
শীত মানেই বড়ি দিয়ে আলু ফুলকপির ঝোল, সিম-বেগুন, পাঁচ মিশালি চচ্চড়ি, কচুর শাক, বা কৈ-শোল মাছের ঝাল। আর গরম ভাতে ঘি আর কালোজিরে বা পোস্ত দেয়া ছোট্ট ছোট্ট ডালের বড়ি ভাজা হলে তো এক থালা ভাত নিমেষে শেষ! শীতের খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে মাছ-সবজিতে বড়ির প্রচলন দীর্ঘদিনের।
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী শীতের পিঠাপুলি খাবারের মত বড়ির বেশ কদর রয়েছে। মুখরোচক সুস্বাদু এই খাদ্য অতিযত্ন সহকারে শৈল্পিকভাবে তৈরি করে আসছে রূপগঞ্জের ৫টি গ্রামের প্রায় ৭০টি পরিবার। শীতের শুরু থেকে চার মাস এই বড়ি তৈরির কাজে বেশ ব্যস্ত সময় পার করেন তারা। ডালের বড়ি মূলত নারীরাই তৈরি করেন। পুরুষরা সহযোগিতা করেন।
কারিগররা বলেন, বাজারে ডালের দাম বৃদ্ধির কারণে এখন বিক্রি কম। তবু বসে নেই এই মাসকলাই-কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগররা। এই বড়ি স্থানীয়দের চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ হচ্ছে দেশে-বিদেশে।
কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আত্মীয়-স্বজনের হাত ঘুরে সুস্বাদু বড়ি এখন প্রবাসী বাঙালীদের রসনা তৃপ্ত করছে। এ উপজেলার মানুষ যারা দুবাই, সৌদি আরব, কাতার-ওমান, আরব-আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইতালি, ফ্রান্সসহ বিভিন্ন দেশে কর্মরত রয়েছেন তাদের জন্য পাঠানো হচ্ছে এই বড়ি। রূপগঞ্জের ৭০টি পরিবার মাসে প্রায় ৪২শ কেজি ডালের বড়ি তৈরি করে আসছে। যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮৪ লাখ টাকা।
সরেজমিনে দেখা যায়, এই বড়ি বানানোর কাজ শুরু হয় ভোর ৫টার দিকে। সেই কর্মযজ্ঞ দেখতে ভোরবেলা রওনা হই সিএনজিযোগে। তারাব পৌর এলাকা থেকে গর্ন্ধবপুর এলাকা। এরপর আঁকাবাঁকা কাঁচা সড়ক ধরে পূর্বে ছুটে চলি। প্রায় আধা কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে না করতেই আটকে গেল দুই চোখ। বাড়ির উঠানে বসে লোকজন পরিষ্কার করছেন টিন। পুরোনো সেই টিনের ওপর কেউবা দিচ্ছেন নারকেল তেলের প্রলেপ। কেউ ফেটিয়ে যাচ্ছেন মিহি করে বেটে নেয়া মাষকলাই। আবার কেউ তৈরি করছেন ডালের বড়ি। বাড়ির নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা কিংবা শিশু সবাই কোনো না কোনোভাবে বড়ি বানানোর কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকছেন। এটাই যে সেই নওগাও, তা আর বুঝতে বাকি রইল না।
কারিগররা আরো বলেন, শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত বাজারে নানা ধরনের সবজির সমাহার দেখা যায়। গ্রামাঞ্চলের খালবিল নদীতে প্রচুর মাছ ধরা পড়ে। এই সময়ে মাছের সাথে প্রচুর পরিমাণে বিভিন্ন ধরনের সবজি বাজারে ওঠে। আর এই মাছ ও সবজি রান্নাতে ব্যবহার হয় সুস্বাদু কুমড়া বড়ি। সেই চাহিদা পূরণ করছে নওগাও, গন্ধবপুর বারোবিঘা, নিমেরটেক, টান মুশরী গ্রামের মাসকলাই ও কুমড়া বড়ি তৈরির কারিগর।
পরিবারের কাজের ফাঁকে কুমড়া বড়ি তৈরি করে বাড়তি উপার্জনের একটি অন্যতম মাধ্যম হিসেবে বেছে নিয়েছেন গ্রামের নারী ও পুরুষরা।
নওগাঁও গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি কুমড়া বড়ি তৈরি করে শুকানোর জন্য রোদে দিয়েছেন। আর এ কাজে নারীদের পাশাপাশি পুরুষরাও কাজ করছেন। ডাল ভেদে দাম নির্ধারণ হয় কুমড়া বড়ির। ১৮০ টাকা কেজি থেকে শুরু করে ২৫০ টাকা কেজি পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়। ভোর থেকে উপকরণ তৈরির প্রস্তুতি শুরু করে সূর্য উঠা পর্যন্ত চলে এই কাজ। শীতের প্রখর রোদে দুই-তিন দিন শুকিয়ে বাজারজাতের জন্য প্রস্তুত করা হয় কুমড়া বড়ি।
নগরপাড়া এলাকার গৃহবধূ নাজনীন সুলতানা বলেন, শীত আসলে ঘরে ডালের বড়ি থাকা চাই। ডালের বড়ির সাথে ফুলকপি আর কৈ মাছ দিয়ে সুস্বাদু তরকারি তৈরি করি।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জজ বলেন, ডালের বড়ি বা কুমরোর বড়ি আসলেই মজাদার খাবার। দিন দিন এগুলো হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রক্ষণা বেক্ষণ করতে হবে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে হবে।
বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে জোরপূর্বক জমিদখল, বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা করে আহতের বিচার ও নিজের এবং বাবার পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন এক নারী।
গত শুক্রবার সকালে সারিয়াকান্দি মডেল প্রেসক্লাবে হাজির হয়ে আপন মামার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পাঠ করেন নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকার জয়নাল আবেদীনের মেয়ে শারমিন আক্তার জনি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি উল্লেখ করেন, গত ৮নভেম্বর আনুমানিক সকাল ১১ ঘটিকায় উপজেলার নারচী ইউনিয়নের বাঁশগাড়ী এলাকায় তার আপন মামা সামছুল মোল্লা, দুলা মিয়া, মুন বাবু, রশিদুল, নাহিদ ও লাইলীসহ বেশ কয়েকজন মিলে তার মা রহিমা বেগম, বাবা জয়নাল আবেদীনসহ তার চাচা-চাচিকে অকথ্য ভাষায় গালাগালিজ করেন এবং বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেন। এসবের প্রতিবাদ করতে গেলে তারা কিছু বুঝে ওঠার আগেই তার মামার বাহিনী অতর্কিত হামলা চালায়। এক পর্যায়ে জনির আপন মামা সামছুল মোল্লা জনির বাবাকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় কুড়াল দিয়ে আঘাত করেন এবং তার মা ও চাচা-চাচিকে রড দিয়ে বেধরক পিটায়। কুড়ালের আঘাতে জয়নাল আবেদীনের মাথায় গভীর ক্ষতের সৃষ্টি হয় এবং অনবরত রক্তক্ষরণ চলতে থাকে। এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী পিছু হটে। এরপর এলাকাবাসীর সহযোগীতায় আহতদের প্রথমে সারিয়াকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসা হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক আহতদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চিকিৎসাপত্র প্রদান করেন এবং জয়নাল আবেদীনের মাথায় রক্তক্ষরণ বন্ধে ৬টি সেলাই দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্যে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে প্রেরণ করেন। এখন তিনি সেখানেই চিকিৎসাধীন আছেন বলেও জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, এর আগেও গত অক্টোবর মাসে এ জমি দখলের উদ্দেশ্যে সামছুল মোল্লার মেয়ে জামাই নাহিদের নেতৃত্বে বগুড়া থেকে প্রায় শতাধিক সন্ত্রাস বাহিনী জয়নাল আবেদীনকে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করার হুমকি দেয়। একই দিনে সন্ত্রাস বাহিনী ধারালো অস্ত্র দিয়ে জমিতে রোপনকৃত ১৫টি বনজ ও ফলজ বৃক্ষ কর্তন করে এবং এরকমই গাছের মতো তাদের দেহ থেকে মাথা আলাদা করার হুমকিও প্রদান করে। এটা সমাধান করার জন্যে মাত্র ৭দিন সময় বেঁধে দেয় সন্ত্রাসরা। সাত দিনের মধ্যে আমরা তাদের কথা মতো জমি না ছাড়ার পেক্ষিতে গত ৮নভেম্বর শনিবার এই হামলার ঘটনা ঘটায়।
সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে শারমিন আক্তার জনি তাদের পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। পরবর্তীতে ওই পরিবারের কোনো ক্ষতি হলে সামছুল মোল্লাসহ তার বাহিনী প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী থাকবে বলেও তিনি লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
বিচারকের ছেলেকে হত্যা ও স্ত্রীকে আহত করার ঘটনায় পুলিশ হেফাজতে থাকা আসামির বক্তব্য মিডিয়ায় প্রচারের সুযোগ দেওয়ার অভিযোগে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারকে ১৯ নভেম্বর আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শনিবার সকালে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মামুনুর রশীদ এ আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, মিডিয়ায় প্রচারিত বিভিন্ন সংবাদ থেকে আদালতের দৃষ্টিগোচর হয়েছে যে, বৃহস্পতিবার রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের বাসায় অভিযুক্ত লিমন মিয়া কৌশলে প্রবেশ করে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে (১৭) ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত ও শ্বাসরোধ করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এছাড়া তাঁর স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে হত্যার উদ্দেশ্যে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করে। এর প্রেক্ষিতে ঘটনাস্থল থেকে লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে এবং রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।
পরে বিভিন্ন গণমাধ্যমে দেখা যায়, লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেয় যা আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি বনাম রাষ্ট্র ৩৯ বিএলডি ৪৭০সহ বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ার সামনে বক্তব্য প্রদান করার সুযোগ দেওয়ায় কেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।
হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় আক্রমণ করে ক্যান্ডকাপসহ পালিয়েছেন এক আ.লীগ নেতা। তাকে ধরতে সাঁড়াশি অভিযানে নেমেছে পুলিশ। রাতভর অভিযানের পরও তাকে ধরা যায়নি। পলাতক জসিম উপজেলার পুটিজুরী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ইউপি সদস্য।
এরআগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে পুটিজুরী বাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তারের কিছুক্ষণ পরই জসিম মেম্বার ও সহযোগীরা পুলিশের উপর হামলা চালায়। এতে পুলিশের এসআই মহসিন রেজা সৌরভ আহত হলে জসিম মেম্বার পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। স্থানীয়রা জানান, পুলিশ জসিম মেম্বারকে গ্রেপ্তার করার পরে সে চিৎকার করে উঠলে তার সহযোগীরা তাকে পুলিশের হাত থেকে ছিনিয়ে নেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জুলাই আন্দোলনে অস্ত্রসহ হামলার ঘটনায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া তিনি একাধিক মামলার আসামি হিসেবে দীর্ঘদিন ধরেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারিতে ছিলেন।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, নাশকতার চেষ্টার অভিযোগে জসিম মেম্বারকে ধরতে গেলে সে পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায়। আর হ্যান্ডকাপসহ পালিয়ে যাওয়ার মতো কোনো ঘটনা ঘটেনি।
গাজীপুরের কোনাবাড়িতে শনিবার ভোরের আলো ফোটার আগেই ফ্ল্যাটে মিলেছে স্ত্রীর লাশ। এ সময় গুরুতর আহত স্বামীকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার ভোরে বাইশমাইল এলাকার নওয়াব আলী মার্কেট এলাকার স্থানীয় একতা টাওয়ারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত রহিমা খাতুন ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার আমতৈল গ্রামের কসাই এমরান হোসেনের স্ত্রী । তিনি একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, ইমরান কসাই এর কাজ করেন। তার স্ত্রী রহিমা খাতুন ও মেয়ে শারমিনকে নিয়ে বাইমাইল এলাকায় একতা টাওয়ারের ৫ম তলার ফ্ল্যাটে ভাড়ায় বসবাস করতেন। শুক্রবার দিবাগত রাতে অজ্ঞাত পরিচয় দুর্বৃত্তরা ওই বাসায় প্রবেশ করে ইমরান ও তার স্ত্রীকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই রহিমা খাতুনের মৃত্যু হয়। শনিবার ভোরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইমরানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ও স্ত্রীর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই), সিআইডিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
কোনাবাড়ি থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন আহম্মেদ বলেন, লাশ উদ্ধারের কিছুক্ষণ পর তল্লাশি চালালে স্বামী এমরান হোসেনের পালস পাওয়া যায়। তাই তাকে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার স্ত্রী রহিমার লাশ শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ব্যাপারে নিহতের মেয়ে শারমিনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার দালাল বাজারে বিদ্যুতের শর্টসার্কিট থেকে অগ্নিকাণ্ডে ৬টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) গভীর রাতে বাজারের তেমুহনীতে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা জানায়, আজাদের সিএনজি অটোরিকশার গ্যারেজে বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। মুহূর্তের মধ্যেই আগুন আশে পাশের দোকান গুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ১টি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় প্রায় ১ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই ৬টি দোকান পুড়ে গেছে।
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার রঞ্জিত কুমার সাহা জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বিদ্যুতের শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তাৎক্ষণিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় করা যায়নি।
জলবায়ু ন্যায্যতার দাবিতে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিশাল ‘গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক’ (বৈশ্বিক জলবায়ু ধর্মঘট) অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার অ্যাকশনএইড বাংলাদেশ-এর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে ১৩ যুব সংগঠনের পাঁচ শতাধিক তরুণ জলবায়ু কর্মী এই সমাবেশে যোগ দিয়ে একটি সবুজ, ন্যায্য ও সমতাপূর্ণ বিশ্বের দাবি জানিয়েছে।
সমাজের সর্বস্তরের তরুণ জলবায়ু কর্মীরা একত্রিত হয়ে বৈশ্বিক জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় বিশ্বনেতাদের কাছ থেকে ন্যায়বিচার-কেন্দ্রিক পদক্ষেপের দাবি জোরদার করেছেন। তরুণরা বিভিন্ন রঙিন ফেস্টুন, ব্যানার ও প্ল্যাকার্ডের মাধ্যমে তাদের কণ্ঠকে জোরালো করে তুলেছে। জীবাশ্ম জ্বালানিতে অর্থায়ন বন্ধ করা; জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ স্থানান্তর করা এবং সবার জন্য সবুজ, সমতাপূর্ণ, ন্যায্য ও টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন তারা।
তরুণ জলবায়ু কর্মীরা সম্মিলিতভাবে ন্যায্য রূপান্তরের এজেন্ডাটি পুনঃউল্লেখ করে দাবি জানিয়েছে, কপ-৩০ যেন একটি সিদ্ধান্তমূলক কপ হয়, যেখানে গ্লোবাল সাউথের জনগণের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হয়। তারা জোর দিয়ে বলেন, বৈশ্বিক জলবায়ু আলোচনা এবার ব্যর্থ হওয়া উচিত নয়। বিশ্বনেতাদের কাছে ফাঁকা প্রতিশ্রুতি থেকে বেরিয়ে এসে সুনির্দিষ্ট ন্যায়বিচার-কেন্দ্রিক পদক্ষেপ গ্রহণ এবং বৃহত্তর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে তারা।
এই ধর্মঘটে কেবল ঢাকা নয়, খুলনা, নেত্রকোনা, বান্দরবান, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, পঞ্চগড়, পটুয়াখালী, ভোলা, রাজশাহী, মানিকগঞ্জ, জামালপুর, শেরপুর, হবিগঞ্জ, নোয়াখালী, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, বরগুনা, কুড়িগ্রাম, টেকনাফ, চট্টগ্রাম, কক্সবাজারসহ ২৪টিরও বেশি জেলা থেকে এবং গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম লোকাল ইয়ুথ হাবের হাজারেরও বেশি অ্যাক্টিভিস্ট ও তরুণরা ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার’-এর সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেয়।
দেশজুড়ে এই প্রাণবন্ত ও শান্তিপূর্ণ জলবায়ু পদযাত্রায় তরুণরা জলবায়ু ন্যায়বিচার এবং ন্যায্য ও সমতাপূর্ণ রূপান্তরের জন্য তাদের আন্দোলনকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিভিন্ন হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে স্লোগান দেয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: জাস্ট ট্রানজিশন নাউ, ফান্ড আওয়ার ফিউচার, ক্লাইমেট ফাইন্যান্স, স্টপফসিলফুয়েল, ক্লাইমেট জাসটিস নাউ, পে আপ ফর লস অ্যান্ড ড্যামেজ, ক্লাইমেট স্ট্রাইক, অ্যান্ড ফসিল ফুয়েল।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জেনেভা ক্যাম্পে ককটেল তৈরির গোপন কারখানার সন্ধান পাওয়ার পাশাপাশি ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার জেনেভা ক্যাম্পে গোপন ককটেল তৈরির একটি কারখানায় অভিযান চালায় পুলিশ।
মোহাম্মদপুর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে ৩৫টি ককটেল ও ককটেল তৈরির বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, কার্যক্রম নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ আগামী ১৭ নভেম্বরকে কেন্দ্র করে ককটেল তৈরি করছিল। ককটেলগুলো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহের কথা ছিল।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে অসহায় ভ্যানচালক আবদুল মমিনের হাতে নতুন টিনসেড ঘর তুলে দিয়েছে স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশন। শুক্রবার সংগঠনটির ‘আশ্রয়ন প্রকল্প’-এর উদ্যোগে জগন্নাথদীঘি ইউনিয়নের ভারত সীমান্তবর্তী সাতঘড়ীয়া গ্রামে ঘর পেয়ে খুশিতে আবেগাপ্লুত হন তিনি।
ঘর হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে মোনাজাত করেন উপজেলা সম্মিলিত ওলামা পরিষদের সভাপতি ও চিওড়া আজগরিয়া ফাযিল মাদ্রাসার সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা আনোয়ার উল্লাহ। স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের পরিচালক মনির হোসেন খোকন, চিওড়া ইউনিয়ন ব্লাড ডোনেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ হোসেন নয়ন, পাঁচরা জনকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা নুর মোহাম্মদ সুমন, উপদেষ্টা আবুল হাশেমসহ সংগঠনটির সদস্য ও গ্রামবাসী।
নতুন ঘর পেয়ে আবদুল মমিন বলেন, ‘ভ্যান চালিয়ে কোনোমতে সংসার চলত। টাকার অভাবে জরাজীর্ণ ঘরে থাকতে হতো। এই নতুন ঘর পেয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি এবং স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
স্বপ্নপূরণ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন জানান, আবদুল মমিনের আবেদন পেয়ে সরেজমিন পরিদর্শনের পর প্রবাসী ও দেশের মানবিক ব্যক্তিদের সহায়তায় ঘরটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর আগে ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অসহায় পরিবারকে আরও পাঁচটি নতুন ঘর প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘প্রবাসীদের দেওয়া অনুদান যথাযথভাবে পৌঁছে দিতে আমাদের কার্যক্রম ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।