শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪

আধিপত্য নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৫

সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আপডেটেড
৩ মার্চ, ২০২৩ ১৫:০৫
প্রতিনিধি, মাদারীপুর
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, মাদারীপুর
প্রকাশিত : ৩ মার্চ, ২০২৩ ১৩:২২

মাদারীপুরে আধিপত্য নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে সদর উপজেলার মস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতদের মধ্যে ১১ জন মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তারা হলেন এনামুল হক হাওলাদার (৪০), তারাই হাওলাদার (২৮), জয়নাল হাওলাদার (২৭), ধলু মাতুব্বর (৫০), মুন্না হাওলাদার (২৫), ইউনুস হাওলাদার (৫০), অলি মাতুব্বর (৪৫), জাহিদুল মোল্লা (৪২), শওকত ফকির (২৭), ইসরাফিল ফকির (৩৫) ও সাখাওয়াত হোসেন (৩৮)। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় জয়নাল হাওলাদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, মস্তফাপুর ইউনিয়নের বালিয়া এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে তানভীর হাওলাদারের সঙ্গে মাহাবুব মোল্লার আধিপত্য নিয়ে বিরোধ চলছিল। এই বিরোধের জের ধরে আগেও দুপক্ষের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় মাহাবুব মোল্লার সমর্থক আরমান মোল্লার সঙ্গে তানভীর হাওলাদারের সমর্থক আরাফাত হাওলাদারের তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে দুপক্ষের লোকজন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে রাত ১২টা পর্যন্ত মাদারীপুর সদর হাসপাতালে ১১ জনকে ভর্তি করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

সংঘর্ষে আহত সাখাওয়াত হোসেন বলেন, কিশোরদের মধ্যে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাওলাদার আর মোল্লা বংশের লোকজনের মধ্যে মারামারি হয়। মূলত এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য মাহাবুব মোল্লার লোকজন হাওলাদার বংশের লোকজনের ওপর হামলা চালায়। আমরা প্রতিরোধ করতে গিয়ে আহত হয়েছি। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

জানতে চাইলে মাহাবুব মোল্লা বলেন, এলাকায় কিশোররা মারামারি করেছে। এখানে আমার কোনো হাত নেই। মারামারি সম্পর্কে আমি কিছু জানিও না। পরিবেশ শান্ত থাকুক, সেটা আমিও চাই। কিন্তু হাওলাদাররা সুযোগ পেলেই মোল্লাদের ওপর হামলা চালিয়ে উল্টো দোষ চাপিয়ে দেয়।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তন্ময় মণ্ডল বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে দুপক্ষের লোকজনই আহত হয়েছেন। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এ ঘটনায় দুপক্ষের কেউ থানায় অভিযোগ দেয়নি। তারা অভিযোগ দিলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

বিষয়:

 চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রামের বায়েজিদে টেক্সটাইল এলাকার একটি জুতার কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের বেশ কয়েকটি ইউনিট।

শুক্রবার বিকেলে আগুনের এ ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুম সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

বায়েজিদ বোস্তামী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় কুমার সিনহা বলেন, কারখানাটি বিদেশি মালিকানাধীন বলে শুনেছি। আমরা খোঁজ নিচ্ছি।


সাজেকে পণ্যবাহী মাহেন্দ্র খাদে, চালকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

রাঙামাটির সাজেক ভ্যালিতে পণ্য পরিবহনের সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাহাড়ের খাদে পড়ে এক মাহেন্দ্রচালকের মৃত্যু হয়েছে।

শুক্রবার দুপুরে ভ্যালির কংলাক পাহাড়ে যাওয়ার সময় পণ্যবাহী মাহেন্দ্রটি নিয়ন্ত্রণ হারালে চালক নিহত হয়।

নিহত চালক চাঁন মিয়া (৩৫) দীঘিনালা উপজেলার উত্তর রশিক নগর এলাকার তৈয়ব আলীর ছেলে।

জানা যায়, গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারালে এতে থাকা অন্য দুজন লাফ দিয়ে নেমে যায়, তবে রক্ষা হয়নি মাহিন্দ্র চালকের। অন্তত ১৫০ ফুট পাহাড়ের নিচে পড়ে গাছের সাথে আটকে যায় গাড়িটি। এতে মাথা ফেটে ঘটনাস্থলেই নিহত হন চালক।

সাজেক থানার ওসি আবুল হাসান খান দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, আইনগত প্রক্রিয়া শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।


কুলাউড়ায় গাছের সঙ্গে বাঁধা কিশোরীর লাশ উদ্ধার

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ২৯ মার্চ, ২০২৪ ১৬:০৬
কুলাউড়া (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়ায় একটি টিলায় জঙ্গলের ভেতর গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো বাঁধা অবস্থায় রেখা বেগম (২০) নামে এক কিশোরীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দুপুরে উপজেলার বরমচাল ইউনিয়নের নওয়াবাগান এলাকায় ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয়দের ধারণা, এটি হত্যাকাণ্ড। রেখা ওই ইউনিয়নের পশ্চিম সিংগুর গ্রামের রুহুল আমিনের মেয়ে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বছরখানেক আগে একই গ্রামের সেলিম মিয়ার ছেলে রিয়াজ মিয়ার সঙ্গে রেখার বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহের জেরে রেখাকে ২ মাস আগে রিয়াজ তালাক দেয়। গত ২৭ মার্চ হঠাৎ রেখার বাড়িতে এসে তাকে নিয়ে যায় রিয়াজ। এরপর থেকে রেখা নিখোঁজ ছিল। শুক্রবার সকালে স্থানীয়রা নওয়াবাগানের একটি টিলায় জঙ্গলের ভেতর গাছের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো বাঁধা অবস্থায় রেখাকে দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দুপুরের দিকে রেখার লাশ উদ্ধার করে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বরমচাল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৮ নং ওয়ার্ডের সদস্য ময়নুল হক সোনা মিয়া বলেন, ‘রিয়াজ খারাপ চরিত্রের লোক। এলাকায় তার বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।’

কুলাউড়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ক্যশৈনু বলেন, ‘স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে ও প্রাথমিক অবস্থায় এটি হত্যাকাণ্ড বলে মনে হচ্ছে। রেখার সাবেক স্বামী রিয়াজও পলাতক রয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। পরবর্তী ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।’


নতুন আঙ্গিকে সাজানো হচ্ছে সারিয়াকান্দি পর্যটন কেন্দ্র

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তাজুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি (বগুড়া)

উপজেলার যমুনা নদীকে কেন্দ্র করে যে কয়েকটি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে উঠেছে তার মধ্যে অন্যতম হলো সদর ইউনিয়নের দীঘলকান্দি গ্রামের প্রেম যমুনার ঘাট। কালিতলা ঘাটের সৌন্দর্য আরও বাড়াতে পর্যটন মন্ত্রণালয় ইকোনোমিক জোন তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। সেই সঙ্গে যমুনা নদী শাসনের জন্যে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক বিভিন্ন স্পার ও হার্ড পয়েন্ট তৈরি করা হয়েছে। এগুলো হলো সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ, সদরের প্রেম যমুনার ঘাট, হাটশেরপুরের হাসনাপাড়া স্পার, নিজ বলাইল স্পার ও কুতুবপুরের দেবডাঙা এবং কুতুবপুর বাজারের পূর্ব পাশের স্পার।

দীঘলকান্দি হার্ড পয়েন্টটি সিঁড়ি করে নির্মাণ করার জন্য এটি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন হয়ে উঠেছে। ফলে এখানে প্রতিদিন শত শত এবং বর্ষাকালে হাজারো পর্যটকের আগমন ঘটে। তাই স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা পছন্দের এই স্পটের নামকরণ করেছেন প্রেম যমুনা ঘাট, যা উপজেলার মধ্যে অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন স্পট হয়ে উঠেছে। এই প্রেম যমুনার ঘাটে পর্যটকদের বসার জন্য ৮টি ছাউনিসহ বেঞ্চ নির্মাণ করা হয়েছে। সেগুলোতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, প্রয়াত সাংসদ আব্দুল মান্নান ও বর্তমান সাংসদ সাহাদারা মান্নানের ছবি আঁকা রয়েছে। সম্প্রতি ফিস পাস এলাকাতেও দুইটি ছাউনিসহ বেঞ্চ নির্মাণ করা হচ্ছে, যা পর্যটকদের আরও আকৃষ্ট কারবে।

এ ছাড়া পুরো কাঠামো এলাকায় বিভিন্ন ধরনের সৌন্দর্য বর্ধনকারী বৃক্ষ রোপণ করা হয়েছে। পুরো কাঠামোর বড়বড় সিসি ব্লক এবং সিমেন্টের খুঁটিতে বিচিত্র ধরনের রং করা হয়েছে। এতে এ পর্যটন কেন্দ্রের সৌন্দর্য বহুগুণ বেড়েছে। এ ছাড়া এ কেন্দ্রে কয়েক মাস আগে উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস থেকে কালিতলা ও প্রেম যমুনার ঘাটে উন্নত ওয়াশ ব্লকও নির্মাণ করা হয়েছে। ফলে আগের তুলনায় এ পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের আগমনও বেড়েছে।

স্থানীয় চা দোকানি মোমিন মিয়া বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এখানে পর্যটকদের জন্য বসার বেশ ভালো পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। তাই এখানে আগের চেয়ে পর্যটকের আগমনও বেড়ে গেছে। এতে দোকানের বেচাকেনাও বেড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদুর রহমান বলেন, উপজেলাটি পর্যটনকেন্দ্রিক হওয়ায় এখানে বিভিন্ন সময়ে দর্শনার্থীদের আগমন ঘটে। সম্প্রতি পর্যটন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ইকনোমিক জোন গড়ে তোলার লক্ষে কালিতলা ঘাট এলাকায় সৌন্দর্য বন্ধনের কাজ হাতে নিয়েছে। এতে করে এ অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ঘটবে।

বগুড়া জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজমুল হক গণমাধ্যমকে জানান, বিভিন্ন সময়ে যমুনা নদী ভাঙনের হাত থেকে সারিয়াকান্দির জনপদকে রক্ষার জন্য সরকার বিভিন্ন ধরনের স্পার, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ এবং গ্রোয়েন বাঁধ নির্মাণ করে। এগুলো দৃষ্টিনন্দন করে গড়ে তোলার কারণে বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে পর্যটকদের আগমন ঘটে। তারা একই সাথে যমুনা নদীর সৌন্দর্যও উপভোগ করেন। এ পর্যটন কেন্দ্রগুলোর সৌন্দর্য বাড়াতে নানা ধরনের কাজ চলমান। ভবিষ্যতে এখানে একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনাও সরকারের রয়েছে।

বিষয়:

লামায় চেয়ারম্যান-ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য ১১ প্রার্থীর দৌড়ঝাঁপ শুরু

লামা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থীরা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মো. নুরুল করিম আরমান, লামা

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই সারা দেশে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে শুরু হয়েছে ডামাডোল। এ নির্বাচনে কে কোন পদে লড়বেন- এমন আলোচনা এখন বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সর্বত্র।

এবার সারা দেশে ভোট গ্রহণ হবে চার ধাপে। কোন ধাপে, কোন উপজেলায়, কবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে তারও একটি তালিকা ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। সে অনুযায়ী জেলার বৃহত্তর লামা উপজেলায় মে মাসের দ্বিতীয় ধাপে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। নির্বাচন কমিশন কর্তৃক এ তারিখ ঘোষণার পরপরই নির্বাচনকে ঘিরে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১১ জন সম্ভাব্য প্রার্থীর নাম শোনা গেছে। এদের মধ্যে কেউ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস, কেউবা ভোটারদের দুয়ারে দুয়ারে গিয়ে গণসংযোগ, আবার আড্ডা-আলোচনাসহ নানা পরিবেশে প্রার্থিতার জানান দিয়ে দোয়া ও সমর্থন চেয়ে নিচ্ছেন।

শুধু উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপি-সমর্থক এক সম্ভাব্য প্রার্থী ছাড়া অন্য দল থেকে এখন পর্যন্ত ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) কিংবা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোনো প্রার্থীর নাম শোনা যায়নি।

এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয়ভাবে মনোনয়ন ও প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্তের কারণে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে চেয়ারম্যান পদে দুজন সম্ভাব্য প্রার্থী জোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে। এর পাশাপাশি পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে চারজন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পাঁচজন সম্ভাব্য প্রার্থীর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবেন বলে আভাস পাওয়া গেছে।

যে দুজন সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী পদে অংশ নেবেন বলে নিশ্চিত করেছেন, তাদের মধ্যে একজন হলেন উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামাল। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। এ ছাড়া দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্তে এবং বিএনপি নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করার সম্মতি দিলে উপজেলা বিএনপির মো. জাকের হোসেন মজুমদার চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারেন বলে শোনা যাচ্ছে। তিনি বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের সাবেক সদস্য ও ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আমির হোসেন মজুমদারের বড় ছেলে। দলীয়ভাবে উপজেলা বিএনপির সহসভাপতিও তিনি।

মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে বর্তমান উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিল্কি রানী দাশের কথাও শোনা যাচ্ছে। তিনি উপজেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি। গত নির্বাচনে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় তিনি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ভাইস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। আলীকদম সদর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব লিটন দাশের সহধর্মিণী তিনি।

আরেক প্রার্থী হলেন পৌর মহিলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও শীলেরতুয়া উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষক বৈশালী বড়ুয়া। তার স্বামী উজ্জল বড়ুয়া ওষুধ ব্যবসায়ী ও পৌর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। কক্সবাজার জেলার উখিয়া কুতুপালং গ্রামের সম্ভ্রান্ত জমিদার পরিবারের মেয়ে বৈশালী বড়ুয়া। তার বাবা অরবিন্দ বড়ুয়া উখিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের একজন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক।

আরেক প্রার্থী পৌর শহর মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাজমা বেগম। তিনি উপজেলার ইয়াংছামুখ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নাজেম উদ্দিনের সহধর্মিণীও।

অন্যদিকে উপজেলা শহরের ব্যবসায়ী উজ্জল কান্তি দাশের সহধর্মিণী শিল্পী দাশ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলে শোনা যাচ্ছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা স্বপন কুমার দাশের মেয়ে তিনি।

এ ছাড়া উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উপজেলা শাখার সভাপতি শারাবান তহুরাও নির্বাচনে প্রার্থী হবেন বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

ভাইস চেয়ারম্যান (পুরুষ) পদে উপজেলা পরিষদের বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মো. জাহেদ উদ্দিন আবারও নির্বাচন করবেন বলে শোনা গেছে। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি মরহুম মো. আবু তাহের মিয়ার ছেলে ও উপজেলা আওয়ামী যুব লীগের সভাপতি। এ পদে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম মোহাম্মদ ইসমাইলের ছোট ভাই নাছির উদ্দিনের নামও সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকায় উঠে এসেছে। উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন নাছির উদ্দিন।

আরেক সম্ভাব্য প্রার্থী হলেন উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আলী মিয়ার ছেলে আব্বাস উদ্দিন সেলিম। উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি-বিষয়ক সম্পাদকও তিনি। এ ছাড়া পৌরসভা এলাকার নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোহাম্মদ আলমগীরের ছেলে ওসমান গনি শিমুলও নির্বাচন করবেন বলে জানিয়েছেন। জাতীয় পার্টির লামা, আলীকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সমন্বয়ক তিনি।

সরেজমিন উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকা ঘুরে দেখা যায়, তফসিল ঘোষণা না হলেও লামা উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায় নির্বাচনী হাওয়া বইতে শুরু করেছে। প্রার্থী, প্রার্থীর কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মানুষের গায়েও লেগেছে নির্বাচনী হাওয়া।

তবে ভোট নিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের শেষ নেই। পৌরসভা এলাকার ভোটার মোহাম্মদ আলমগীর, লামা সদর ইউনিয়নের ভোটার আনোয়ারা বেগম, ফাইতং ইউনিয়নের হামিদা বেগম, ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ভোটার অনারাম ত্রিপুরার মতে, নির্বাচন এলেই কেবল নেতাদের পা পড়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনপদে। নির্বাচন ঘনিয়ে এলে প্রার্থী এবং তাদের সমর্থকদের আনাগোনা বেড়ে যায়। নির্বাচন চলে গেলে এসব নেতারা আর খোঁজখবর রাখেন না। তবে এবারের নির্বাচন প্রার্থীদের জনপ্রিয়তা যাচাইয়ের নির্বাচন হবে বলে জানান তারা। কারণ দলীয় মনোনয়ন দেওয়া না হলে যোগ্য প্রার্থীকে নির্বাচিত করতে ভোট দিতে পারবেন বলেও জানান তারা।

এদিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, চেয়ারম্যান পদে সম্ভাব্য একাধিক প্রার্থী না থাকায় উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান মো. মোস্তফা জামালকেই পুনরায় দলীয়ভাবে মনোনীত করা হয়। তবে পুরুষ ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।

অন্যদিকে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আমির হোসেন জানায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পাতানো এ নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবে না বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে বিএনপি। কাজেই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে কোনো নেতা-কর্মী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করলে তাকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানান, একটি পৌরসভা ও ৭টি ইউনিয়ন নিয়ে লামা উপজেলা পরিষদ গঠিত। এ উপজেলায় মোট ভোটার সংখ্যা ৮২ হাজার ২১৩ জন। তিনি আরও বলেন, এবার চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর মধ্যে দ্বিতীয় ধাপে লামা উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

বিষয়:

পদ্মায় লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে পড়ে যুবকের মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পদ্মা নদীতে পড়ে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার (২৯ মার্চ) সকাল সোয়া ৭টার দিকে দৌলতদিয়া লঞ্চঘাটে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত যুবক মানিকগঞ্জ শিবালয় উপজেলার শিবালয় ৩ নং ট্রাক টার্মিনালের পাশে আসগর আলী শেখের ছেলে মো. ফিরোজ শেখ (২৮)। তিনি সেলফি পরিবহনে সহকারীর কাজ করতেন।

লঞ্চঘাটে থাকা স্থানীয়রা জানান, হঠাৎ সকালে সোয়া ৭টার দিকে লঞ্চঘাটের পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যায়। তখন আশেপাশের লোকজন গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও দৌলতদিয়া নৌ পুলিশকে খবর দেন। পরে সকাল সাড়ে ৮টার পর গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিস ও আরিচার ডুবুরি দল এসে ৯টার দিকে তাকে উদ্ধার করে।

বাবা আজগর আলী শেখ বলেন, ‘আমার ছেলের ছোটবেলা থেকেই মৃগী রোগের সমস্যা ছিল। গোয়ালন্দে গতকাল রাতে আমার আত্মীয়ের বাড়িতে বেড়াতে গিয়েছিল। সকালে বাড়ি ফেরার সময় দৌলতদিয়া লঞ্চ ঘাটের পন্টুনে লঞ্চের জন্য অপেক্ষা করার সময় মৃগী রোগ উঠলে নদীতে পড়ে গিয়ে তার মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।’

গোয়ালন্দ ফায়ার সার্ভিসের লিডার মো. সাবেকুল ইসলাম জানান, সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সংবাদ পেয়ে দ্রুত লঞ্চঘাটের ঘটনাস্থলে পৌঁছে ঘণ্টাব্যাপী অভিযান চালিয়ে ওই যুবককে উদ্ধার করে দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হয়েছে।

দৌলতদিয়া নৌ পুলিশের এসআই মো. ফরিদুজ্জামান বলেন, ‘আমরা সোয়া ৭টার দিকে সংবাদ পাই লঞ্চঘাটে পন্টুন থেকে এক যুবক নদীতে পড়ে গেছে। সংবাদ পেয়ে দ্রুত ফায়ার স্টেশনকে জানাই। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল এসে তাকে উদ্ধার করে। মৃতদেহের সুরতহাল রিপোর্ট শেষ হয়েছে। পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

বিষয়:

জমে উঠেছে শেরপুরের ঈদবাজার

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে জমে উঠেছে ঈদবাজার। মার্কেটগুলোতে বাড়ছে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাদের ব্যস্ততা। সব বয়সি মানুষের মধ্যে এখন ঈদবাজার নিয়েই যত ভাবনা।

ঈদকে সামনে রেখে বিপণি বিতান, মার্কেটগুলো এখন নতুন নতুন দেশি-বিদেশি হরেক রকম জামা-কাপড়ে ঠাসা। দোকানগুলো ক্র‍েতার ভিড়ে জমজমাট। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সবার জন্য জামা-কাপড়, জুতো, প্রসাধনীসামগ্রী কিনতে ব্যস্ত মানুষ। বিশেষ করে পরিবারের কর্তারা ব্যস্ত পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতে। শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা।

ঈদের জামায় এবার মেয়েদের আলিয়া কাট, সারারা, নাইরা চলছে বেশি। ছেলেদের দৃষ্টি বেশি পাঞ্জাবির দিকে।

নারগিস নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘পরিবারের সদস্যের জন্য প্রায় ১৫ হাজার টাকার কাপড় কিনলাম। গতবারের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। যা সামর্থ্যে কুলাচ্ছে তাই কেনার চেষ্টা করছি।’

ছোট্ট জাবিরা বলে, ‘আমি মার সাথে মার্কেটে এসেছি। আলিয়া কাট জামাটা দেখছি। এটা আমার খুব পছন্দের। বান্ধবীরাও এটা কিনেছে। এই জামাটাই আমি নিব।’

ব্যবসায়ীরা জানান, ১০ রমজানের পর থেকেই তাদের ব্যবসা জমে উঠছে। বর্তমানে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বিভিন্ন মার্কেটে এখন চলছে জমজমাট বেচাকেনা। শিশু, পুরুষ ও মহিলাদের পছন্দের কাপড়-চোপড়ের দোকানগুলোতে এখন বেশ ভিড়। সামনের মাসের শুরুতে জুতা ও প্রসাধনীর দোকানগুলোতে ভিড় আরও বাড়বে।

জননী বস্ত্রালয়ের মালিক চন্দন কুমার বলেন, মার্কেটগুলোতে টাঙ্গাইলের সুতি, জামদানি, জর্জেট এবং সিল্ক শাড়ির চাহিদা এবার অনেক বেশি।

জে আর ফ্যাশনের জিহাদ বলেন, আলিয়া কাট জামার এবার ব্যাপক চাহিদা।

এদিকে ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় জমে উঠেছে ফুটপাতগুলোতেও। বলতে গেলে ফুটপাতেই এখন মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্রদের ঈদের প্রধান বাজার। শ্রমিকশ্রেণির অনেকেই চাঁদ রাতে অথবা ১-২ দিন আগে কেনাকাটা করে। স্বল্প বেতনভোগী ও খেটে খাওয়া মানুষকেও আপাতত কেনাকাটায় খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

বস্ত্র মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিকিকিনি করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর জিনিসপত্র‍ের দাম মানুষের হাতের লাগালের মধ্যেই আছে। তাই মানুষ ঈদবাজারে আগে থেকেই ঝুঁকে পড়েছে।


নোয়াখালীতে ৬৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি শুরু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৩৩
নোয়াখালী প্রতিনিধি

‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার সুলভ মূল্যে প্রাণীজ পুষ্টির সমাহার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নোয়াখালীতে প্রাণিজ আমিষ গরুর মাংসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

এর সঙ্গে আরও রয়েছে ১১০ টাকা দরে এক ডজন ডিম ও ৮০ টাকা কেজি ১ গরুর দুধ। এই কার্যক্রমের আওতায় প্রতিজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১ কেজি মাংস এক কেজি দুধ ও এক ডজন ডিম কিনতে পারবেন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

কার্যক্রম উদ্বোধনের পর সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভলেন্টিয়ারের সহযোগিতায় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের।

প্রথম দিনে দুটি গরু জবাই করে প্রায় ৩৫০ কেজি মাংস বিক্রি করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে এমন সেবা পৌঁছে দিতে পেরে ভালো লাগছে। প্রথম দিনে আমরা প্রায় ৩৫০ জন মানুষের মাঝে এই সেবা দিতে পেরেছি। জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।’

বিষয়:

ঈদ ঘিরে দর্জিদের নির্ঘুম রাত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ডেইজী মউদুদ, চট্টগ্রাম

নগরীর ঘাট ফরহাদবেগের দর্জিপাড়া পরিচিত খলিফা পট্টি নামেই। দর্জিপাড়া বিধায় এখানে সারা বছরই সেলাই মেশিনের শব্দ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে রোজা এলেই এই ব্যস্ততা, যেন মহাব্যস্ততা। দিবারাত্রির কোনো ভোদাভেদ নেই, দর্জি অথবা খলিফাদের চলে রীতিমতো নির্ঘুম রজনী। ঈদকে সামনে রেখে খালি অর্ডার আর অর্ডার। দম ফেলার জো নেই। খালি রাতদিন কাজ আর কাজ। অবিরাম চলছে মেশিন। মেশিনের ঝিকঝিক শব্দ আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় ভিন্ন রকম ব্যস্তময় এক পরিবেশ।

খলিফা পট্টির দর্জিরা তাদের নিপুন হাতের তৈরি পোশাক বন্দর নগরী ছাড়াও নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জাগায় সরবরাহ করে থাকেন। বিভিন্ন এলকার শপিং মলগুলোতেই এসব পোশাক বিক্রি হয় চড়া মূল্যে। দর্জিপাড়ায় কর্মরত ইসমাইল খলিফা এই প্রতিবেদকে জানান, তিনি ২০ বছর ধরে এখানে কর্মরত। সারা বছরেই তো এখানে তারা কাজ করেন। কিন্তু রোজা এলেই সেই ব্যস্ততা ভিন্ন। একদম দম ফেলবার জো নেই। রাতদিন সেলাই আর সেলাই। মেশিনের শব্দ, কাজ করতে করতে ক্লান্তি আসে, অথচ জিরাবার কোনো সুযোগ একেবারেই নেই। খলিফা পট্টিতে সেলাই হয় না এমন পোশাক নেই। সেলোয়ার, কামিজ, কুর্তি, ফ্রক, গাগরা, নায়ারা, কারচুপি, জারদৌসি, লেহেঙ্গা, বেবী ডেস, কোটি, মিনি ও লং স্কার্টসহ যাবতীয় পোশাক এখানে শোভা পায়। দোকান ও কারখানা একসাথে থাকায় অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ খলিফাপট্টি। অনেকের শো রুম না থাকলেও ছোটখাটো কারখানা রয়েছে। প্রায় ৩৫০টি দোকান ও কারখানা মিলিয়ে খলিফাপট্টিতে মেশিনের সরগরম আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকে ডাকে উৎসবের আমেজ।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোররাত ৩টা পর্যন্ত জমজমাট বিকিকিনি চললেও সকাল ১০টা থেকে দোকান ও কারখানায় ব্যস্ততা শুরু হয়। মূলত ঈদকে ঘিরেই চলে তাদের সিংহভাগ কাজ। তাই নির্ঘুম রাতই তাদের জন্য দিন। দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করে ভোররাতে সেহেরি খেয়ে কারিগররা ঘুমাতে যান। কাটিং মাস্টার জুবায়ের এই প্রতিবেদককে জানান, দীঘদিন ধরেই কাজ করছি। সব কিছুই কাটতে ও সেলাই করতে পারি। দেশি-বিদেশি কোনো বিষয় নয়। একবার দেখলেই তা তৈরি করে দিতে পারি। খলিফাপট্টির কাটিং মাস্টার ও সুইং অপারেটররা একেকজন মাস্টারপিস।

সেলাই এর পাশপাশি খলিফাপট্টিতে তৈরি পোশাক বেচাবিক্রি চলে রাতদিন। এসব নগরী ছাড়াও পোশাকশিল্প কারখানায় চলে যায় লটে লটে। পোশাকশিল্প কারখানার মালিক জালালউদ্দীন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এই ব্যবসায়। বর্তমানেও আছি। এখানে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকার পোশাকও রয়েছে।’

আঁখি ফ্যাশনের মালিক আবদুর রহিম। তিনি বলেন, এখানে হাল ফ্যাশনের পোশাক আমরা বিক্রি করি পাইকারি দরে। বড় মার্কেটে গিয়ে সেগুলো ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করেন। খলিফাপট্টির বাণিজ্য ঈদেই রমরমা। সারা বছর এখানে সেলাই ও বিকিকিনি চললেও ঈদেই তাদের মূল লভ্যাংশ উঠে আসে বলে জানালেন ব্যবসায়ী। তবে তিনি হতাশার বাণীও শোনান। তিনি বলেন, এখানকার ব্যবসায়ীদের অনেকেই ধার দেনা করে এমনকি পরিবারের গহনা অলংকার এবং পৈতৃক সম্পদ বন্ধক রেখে পূজির জোগান দেন, কেবল ঈদ বাজারকে টার্গেট রেখেই।’ এই বাণিজ্যে ক্ষুদ্র ঋণ ও সরকারি কোনো সহযোগিতা না থাকায় এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।

বিষয়:

সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কেরানির ঘুষবাণিজ্য

নারায়ণ দাস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের চিত্র সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সর্বত্র। এ যেন ঘুষের স্বর্গরাজ্য। কোনো রাখঢাক নেই। ঘাটে ঘাটে বাঁধা ঘুষের রেট। মুখে মুখে ঘুরছে ফর্দ। ঘুষের কারবার চলছে অনেকটা সাধারণ ব্যাংকিংয়ের মতো। দিনশেষে ঘুষের টাকা বণ্টনে চালু আছে অটোপদ্ধতি। অর্থাৎ নির্বিঘ্নে নির্ধারিত কমিশন পৌঁছে যায় সংশ্লিষ্টদের টেবিলে। আর এসব ঘুষ লেনদেনের প্রধান হলেন অফিস সহকারী (কেরানি) নারায়ণ দাস।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণ দাস সোনাইমুড়ী উপজেলার মকিল্যা গ্রামের সুচি দুলাল দাসের পুত্র। তিনি প্রথমে সোনাইমুড়ী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নকল নবিস থেকে ২০১৭ সালে মোহরার পদে পদোন্নতি পান। নোয়াখালী সদরের রেকর্ড কিপার পদে কর্মরত থেকে ২০২০ সালে বেগমগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে বদলি হন। সেখানে থাকাকালীন জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল খালেকের দলিল কমিশনসংক্রান্ত বিষয়ে আদেশ অমান্য করায় ২০২৩ সালে পুনরায় শাস্তিমূলক বদলি হন একই জেলার কবিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। এরপরে তদবির করে সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী হাবিবুল্লাহর চাকরির মেয়াদ থাকার পরেও ৫ লাখ টাকা চুক্তি করে তাকে সরিয়ে এখানে আসেন। তবে এ অফিসে আসতে জেলা রেজিস্ট্রার আনোয়ারুল বাসিরকে মোট অঙ্কের ঘুষ দিয়েছেন বলে নারায়ণ দাস প্রকাশ্যে বলে বেড়ান।

সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী ও দলিল লেখকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক বাংলাকে জানান, প্রতিটি দলিলের ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহককে উৎস কর ২ শতাংশ, স্ট্যাম্প দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রি বাবদ ১ শতাংশ ও স্থানীয় কর হিসাবে ৩ শতাংশ ব্যাংক চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয়। এর বাইরে প্রতিটি দলিলে নগদ এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা, সামান্য ভুলের জন্য আরও বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়ে থাকে।

সমিতির ফি নামে প্রত্যেক দলিলে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিদিন ৫০-৬০টি দলিল এই অফিসে রেজিস্ট্রি হয়ে থাকে। আর অফিস সহকারী নারায়ণ দাস এই চাঁদা আদায় করে ভাগ পান ১০ হাজার টাকা। কমিশন দলিলে সাব-রেজিস্ট্রারকে ভাঙিয়ে সরকারি ফির অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। হেবা ঘোষণা দলিলে প্রতি লাখে ৪০০ টাকা ও সেরেস্তা ফি প্রতি লাখে ৩-৪ টাকা করে নিয়ে থাকেন নারায়ণ দাস। আর এ টাকা অফিসের অন্যদের ও দলিল লেখকদের মধ্যে ভাগ হয়। অতিরিক্ত অর্থের ঘুষের টাকা থেকে অফিস সহকারী ৩০ ভাগ পেয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারায়ণ দাস বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এখানে বদলি হয়ে এসেছি। এদিক-সেদিক না করলে চলবে কীভাবে।’

সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রার আনসার আহমদ বলেন, তিনি স্থানীয় এটা সত্য। তবে ঘুষের টাকা আদায় ও ভাগাভাগির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

বিষয়:

কুড়িগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের তালুক কালোয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লাডিওলাস ফুল চাষ শুরু করছেন কৃষক নুরবখত আলী। গ্লাডিওলাস ফুলের পাশাপাশি তার জমিতে গাঁদা ও সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। প্রায় ৫০ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস চাষ করে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রির আশা করছেন তিনি।

রংভেদে প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন নুরবখত। বাণিজ্যিকভাবে কুড়িগ্রাম জেলা শহর ছাড়াও লালমনিরহাটে এই গ্লাডিওলাস ফুল বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

ফুল চাষের শুরু সম্পর্কে নুরবখত বলেন, ‘গ্লাডিওলাস ফুল চাষ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী থেকে ২০১৯ সালে প্রদর্শনী প্লট করি। ওই প্রর্দশনী প্লটে ফুলের সমাহার দেখে পরের বছর ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হই। এখন প্রায় তিন একর জমিতে প্রচলিত ফসল আবাদ না করে তেল-বীজ ও ফুলের চাষ করছি।’

তিনি বলেন, ধান, পাট, আলু চাষের চেয়ে ফুল ও বীজের আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি। বিশেষ করে কম সময়ের মধ্যে খেত থেকে গ্লাডিওলাস ফুল বাজারজাত করা সম্ভব। বাজারে সারা বছর ফুলের চাহিদা থাকে। এ ফুল চাষে বাড়তি খরচ ও পরিচর্যার কোনো ঝামেলা নেই। সামান্য সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেই এই ফুল চাষ করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, গ্লাডিওলাস বীজ রোপণের ৭৫ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গ্লাডিওলাস গাছে তেমন কোনো রোগবালাই নেই। কেরাডে ও এন্টকল কীটনাশক ব্যবহার করে গ্লাডিওলাস গাছে ফুলের যত্ন নেওয়া হয়। বাজারে এ ফুলের চাহিদা থাকায় আগামীতে বড় পরিসরে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষকদের নতুন নতুন চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। অন্যান্য ফসল আবাদের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী ও লাভজনক চাষাবাদে আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করছি। গত কয়েক বছর হলো কুড়িগ্রামে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ প্রদর্শনী করি। জেলায় কয়েকজন চাষ শুরু করেছে। নুরবখতের গ্লাডিওলাস ফুলের বাণিজ্যিক চাষ দেখে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আগামীতে জেলায় এই ফুল চাষের পরিধি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

বিষয়:

বাইডেন-জয়ার তিন শাবকের নাম রাখলেন জেলা প্রশাসক

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় তিন বাঘ শাবককে কোলে নিয়ে আদর করলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর ফয়স লেকের চিড়িয়াখানায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঘ জো বাইডেন ও বাঘিনী জয়ার সংসারে জন্ম নিয়েছে ৩টি শাবক। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও চিড়িয়াখানার সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গেলে বাঘ শাবকগুলোকে জনসম্মুখে আনা হয়। এ সময় তিনি শাবক ৩টি কোলে নিয়ে এগুলোর নামকরণ করেন। এ তিন শাবকের নাম দেয়া হয়, প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী।

জেলা প্রশাসকের সহধর্মিণী ও চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত সিদ্দিকী, চিড়িয়াখানার সদস্য সচিব ও এনডিসি হুছাইন মুহাম্মদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন ও চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শুভ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাঘের শাবক দেখতে চিড়িয়াখানায় গিয়ে জেলা প্রশাসক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছিলাম। সময়ের বিবর্তনে সে দুটি বাঘ বংশ বৃদ্ধি করে বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ৩টি শাবকসহ মোট বাঘের সংখ্যা ১৭টি। এর মধ্যে ৫টি বাঘ ও ১২টি বাঘিনী। এখানে সাদা বাঘও রয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাণী বিনিময়ের আওতায় দুটি বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় দিয়ে দুটি জলহস্তী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মাননার্থে সাবেক জেলা প্রশাসক বাঘটির নাম রাখেন জো বাইডেন। বাঘিনী জয়ার জন্ম ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আর বাঘ জো বাইডেনের জন্ম ২০২০ সালে ২৮ ডিসেম্বর। বাঘ জো বাইডেন জন্মের পরপরই তার মা থেকে পরিত্যক্ত হলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনায় লালন-পালন করা হয়। এক বছর লালন করার পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাঁচায় অবস্থিত বাঘ পরিবারের সাথে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে সদস্য হিসাবে রি-ইন্ট্রোডাকশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো সে নিজের সংসার তৈরি করলো। মানুষের হাতে লালন-পালন হয়ে পুনরায় বাঘ পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণের মাধ্যমে বংশবিস্তার করার চক্র একটি বিরল ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, চিড়িয়াখানার পার্শ্ববর্তী প্রায় ১০ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে ছিল, সেগুলো আমরা ইতোমধ্যে উদ্ধার করে সরকারের দখলে নিয়ে এসেছি। সেখানে আমরা বার্ডস পার্ক করার জন্য পরিকল্পনা করেছি এবং কিছু আমেরিকার ফ্ল্যামিংগোর ওয়ার্কঅর্ডার দিয়েছি। এর বাইরে কিছু পেলিক্যান ও কিছু ম্যাকাও পাখি পাওয়া গেলে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ বার্ডস পার্ক করতে পারব বলে আশা রাখি।

বিষয়:

ডলুরায় ৪৮ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সমাধি এবং একজন মধুমিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ

একাত্তর সালে দেশের মাটিকে শত্রুমুক্ত করতে পাকিস্তানি হায়নার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাংলার দামাল ছেলেরা। যখন শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা তখন সঙ্গী মুক্তিযোদ্ধারা সহযোদ্ধাদের লাশ বহন করে যখন যেখানে পেরেছেন সেখানে তাদের কবর দিচ্ছিলেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন। এ আগুনঝরা দিনে আনসারের এক জওয়ান শহীদদের লাশ মর্যাদার সঙ্গে দাফন করার জন্য এগিয়ে আসেন। তিনি আবুল কালাম ওরফে মধু মিয়া।

যুদ্ধে শহীদদের জন্য মধু মিয়া কবরের জায়গা খুঁজতে থাকেন। বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে নিজের দখলে থাকা সরকারি খাস জায়গাকেই উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করেন। ১৯৭১ সালের ১৮ জুলাই সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন মন্তাজ মিয়া। জামালগঞ্জের কামলাবাজ গ্রামে বাড়ি মন্তাজ মিয়ার। আনসার বাহিনীর এই তরুণ দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার অদম্য বাসনায় যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। বালাট সাব-সেক্টরের এই যোদ্ধা মৃত্যুর আগে মীরেরচর গ্রামের কাঁচা মিয়াকে নিজের পাঞ্জাবি ও চশমা দিয়ে বলেছিলেন যুদ্ধে যদি আমি মারা যাই তবে আমার বৃদ্ধ মাতাকে এই দুটো জিনিস দিয়ে দিবেন। এর কিছুদিন পরই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন মন্তাজ মিয়া। মধু মিয়া শহীদ মন্তাজের খবর জানতে পেরে ছুটে যান তার সঙ্গী সাথী নিয়ে। আর শহীদ মন্তাজ মিয়াকে দাফন করেই গোড়াপত্তন হয় ডলুরা শহীদ স্মৃতি সৌধের। তারপর আর থেমে থাকেননি মধু মিয়া। যেখানেই খবর পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন সেখানেই তিনি ছুটে গেছেন।

বাংলাদেশ সরকারের এ অঞ্চলের এমএনএ দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরী ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে মধু মিয়ার কাজের স্বীকৃতি দেন। দাফন-কাফনের পাশাপাশি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের হাসপাতালে পাঠানো এবং প্রত্যেক শহীদকে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী দাফন-কাফনের ব্যবস্থাসহ দাহ করার জন্য তাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করে দেন। আত্মনিবেদিত মধু মিয়া তার এই মহৎ কাজের অংশীদার করতে নিয়ে আসেন মুন্সী তারু মিয়াকে, যিনি মাওলানা হিসেবে জানাজা পড়াতেন। কবর দিতে ও আহত মুক্তিযোদ্ধাদের হাসপাতালে পাঠাতে সাহায্য করতেন আফসার উদ্দিন, কিতাব আলী, আব্দুর রহিম, মগল মিয়া, হযরত আলী ও মাফিজ উদ্দিন। হিন্দু মুক্তিযোদ্ধাদের দাহ করতে পুরোহিত হিসেবে কাজ করার জন্য নিয়ে আসেন নেপু ঠাকুরকে। এরাই ছিলেন প্রবাসী সরকারের ৯ সদস্যবিশিষ্ট অনুমোদিত কমিটি। মধু মিয়ার লেখাপড়া পাঠশালা পর্যন্ত হলেও তিনি ডায়েরিতে লিখে রাখতেন শহীদদের নাম এবং কোথায় কোন যুদ্ধে তারা শহীদ হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে কাউকে দিয়ে এ তথ্যগুলো লিখিয়ে রেখেছেন। আর এটাই হয়েছে আজ ইতিহাস।

মধু মিয়ার ডায়েরি থেকে জানা যায়, ৪২ জন মুসলিম শহীদকে দাফন করা হয়েছে এবং ৬ জন হিন্দু মুক্তিযোদ্ধাকে ডলুরাতে দাহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যেমন সুনামগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধা আছেন ঠিক তেমনি অন্যান্য জেলার মুক্তিযোদ্ধাও আছেন। ডলুরায় যেসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শায়িত আছেন তারা হলেন মন্তাজ মিয়া, রহিম বকস, জবান আলী, সুরুজ মিয়া, হরকুম উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন, মহরম আলী, আব্দুর রহমান, আব্দুছ ছাত্তার, আজমান আলী, আবেদ আলী, আতাহার আলী, লাল মিয়া, চান্দ মিয়া, সিদ্দিক মিয়া, আবু বকর সিদ্দিক, সায়েদুর রহমান, আব্দুল হামিদ খান, আব্দুল খালেক, যোগেন্দ্র দাস, শ্রীকান্ত দাস, অরবিন্দ রায়, কুবীন্দ্রনাথ দাস, সালাউদ্দিন, তাহের মিয়া, আব্দুল হক, মুজিবুর রহমান, নূরুল হক, আব্দুল করিম, সুরুজ মিয়া, সাজু মিয়া, ধনুমিয়া, ফজলুল হক, শামছুল ইসলাম, কেন্তু মিয়া, সিরাজ মিয়া, সমছু মিয়া, তারা মিয়া, দানু মিয়া, মন্নাফ মিয়া, রহিম মিয়া, আলী আহমদ। মধু মিয়ার এই ডায়েরিটি স্থান পেয়েছে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।

স্বাধীনতার পর দেশের শহীদ মুত্তিযোদ্ধাদের কবরকে সংরক্ষিত করার জন্য প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধর্না দিযেছেন মধু মিয়া। কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত মুক্তি সংগ্রাম স্মৃতি ট্রাস্ট শহীদদের কবরগুলি সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়। ৮২ ফুট লম্বা, ৮১ ফুট প্রস্থ ও ৫ ফুট উচ্চতার এই দেয়াল তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের আরেক বীর সেনানী সাব সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল (অব.) এ.এস. হেলালউদ্দিন শহীদদের নাম মার্বেল পাথরে খোদাই করে লিখে গেটে বসিয়ে দেন এবং শহীদদের আত্মীয়-স্বজনদের রাতযাপনের জন্য গেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করেন।

২০০৪ সালের ১৫ মার্চ মধু মিয়া মারা যাওয়ার পর ডলুরা শহীদ স্মৃতিসৌধের ভেতরেই তাকে দাফন করা হয়। ৪২ জন শহীদ এবং তিনি একসঙ্গে ঘুমিয়ে আছেন।

বর্তমানে জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় কবর পাকাকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন, স্মৃতি ফলক নির্মাণ, মূল ফটকে স্থায়ী তোরণ নির্মাণ, বৈদ্যুতিক লাইট পোস্টের বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করা, সমাধির পাশের মাঠে পাশে মুক্তমঞ্চ নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য নির্মাণসহ বসার জন্য ছাউনি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ডলুরা শহীদ মিনারকে ঘিরে রাস্তা ঘাটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ সহজেই কবর জিয়ারত করতে পারছে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এখানে বেড়েছে দর্শনার্থীদের ভিড়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মধুমিয়া আত্মত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে সুনামগঞ্জের মঙ্গলকাটা বাজার থেকে ডলুরা শহীদ মিনার পর্যন্ত সড়কটি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মধুমিয়া সড়ক’ নামে নামকরণের দাবি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

বিষয়:

banner close