তাদের বাইরের জগৎটা খুবই ছোট। দৌলতদিয়া পূর্বপাড়ার (যৌনপল্লি) বাইরে যাতায়াত একেবারেই সীমিত। কিন্তু তাদের মনের দুয়ার খুলে দিয়েছে ছোট্ট এক পাঠাগার। এখানে বইয়ের রাজ্যে ঘুরে ঘুরে তাদের স্বপ্নগুলো ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে দূর দিগন্তে। যেখানে অপেক্ষা করে আছে সোনালি ভবিষ্যৎ।
বলছিলাম যৌনপল্লির শিশুদের কথা। ছোট্ট জীবনে তাদের বঞ্চনার ভার কিন্তু বিশাল। কয়েকটি বেসরকারি সংস্থার মাধ্যমে লেখাপড়া কিছুটা শিখলেও তাতে সামাজিক নিগ্রহ কমছে না এতটুকু। একটা পর্যায়ে গিয়ে তাই এরা মায়ের পেশা গ্রহণ করে নতুবা নেশার রাজ্যে ডুবে যায়। শিশুগুলোকে তাই ইতিবাচক পরিবেশ দিতে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া পূর্বপাড়ায় গড়ে তোলা হয়েছে পাঠাগার। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা মুক্তি মহিলা সমিতির সহযোগিতায় তাদের ভবনে ‘গিভ বাংলাদেশ’ নামের একটি সংগঠন স্থাপন করেছে দুই হাজার বইয়েরসুদৃশ লাইব্রেরি। এখানে বিদ্যালয় ছুটির পরে প্রতিদিন বই পড়তে আসে এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা।
সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের সংগঠন ‘চাইল্ড ক্লাবের’ উদ্যোগে এ লাইব্রেরি স্থাপন করা হয়েছে।
লাইব্রেরিতে পড়তে আসা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফকির আব্দুল জব্বার গার্লস স্কুলের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার বলে, ‘ক্লাসের বইয়ের বাইরে অন্য বই পড়ার কোনো অভিজ্ঞতা আমার ছিল না। বইয়ে যে এত আনন্দ থাকে তা কখনো বুঝতেও পারিনি। এখন আমি প্রতিদিন স্কুল শেষে এই লাইব্রেরিতে বই পড়তে আসি। গল্প, কবিতা কম-বেশি পড়লেও আমার রূপকথার গল্প বেশি ভালো লাগে। লাইব্রেরিতে মেকু কাহিনী, দীপু নাম্বার টু, একি কাণ্ড, তোমাদের জন্য রূপকথা, মা, একাত্তরের দিনগুলি, হাজার বছর ধরেসহ নানান বই রয়েছে।’
দৌলতদিয়া চাইল্ড ক্লাবের সহসভাপতি লাবণী আক্তার জানান, মন খারাপ থাকলে এখন তারা লাইব্রেরিতে এসে বই পড়ে। এতে নতুন নতুন নানা বিষয় জানতে পারে।
মুক্তি মহিলা সমিতির প্রকল্প পরিচালক মো. আতাউর রহমান খান বলেন, যৌনপল্লির শিশু ও স্থানীয় সুবিধাবঞ্চিত সাত শতাধিক শিশু নিয়ে ‘চাইল্ড ক্লাব’ নামের একটি সংগঠন রয়েছে। এই সংগঠনের শিশুরা এখানে বই পড়তে আসে। ইচ্ছা মতো বই বাড়িতে নিয়ে গিয়েও পড়তে পারে। এই শিশুরা যেন জীবন সম্পর্কে বীতশ্রদ্ধ না হয়ে পড়ে, তাই বইয়ের মাধ্যমে তাদের সুন্দর পৃথিবীর স্বপ্ন দেখানোর চেষ্টা।
গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক খন্দকার আবির হোসেন নূর জানান, গিভ বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন বিগত ৮ বছর ধরে যৌনকর্মীদের শিশুদের সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়তে কাজ করে যাচ্ছে। গত এক বছর থেকে এখানকার শিশুদের জন্য শুরু হয়েছে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা। সেটার অংশ হিসেবেই ‘দৌলতদিয়া চাইল্ড ক্লাব’-এর ৬৫০ জন শিশুর জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এ পাঠাগার।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ৩০ লক্ষ টাকার মাদক উদ্ধার করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। এসময় ১৫০ গ্রাম হেরোইন, ৩ কেজি ৮ গ্রাম গাঁজা, ৩৫ পিস ইয়াবা, ১৯২ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট, ৮৯২ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট এবং ৫৯০ কেজি অবৈধ কারেন্ট জাল আটক করা হয়। মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবির পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়।
বিজিবি সূত্র জানান, মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) মধ্য রাতে সীমান্তের ধর্মদাহ বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার ডিজিটি মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ৫০ গ্রাম হেরোইন এবং ৩৫২ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করা হয়। যার আনুমানিক মূল্য ২,০৫,৬০০ টাকা।
এর আগে গত ১৮ আগস্ট সন্ধা ৬টার দিকে উপজেলার উদয়নগর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পদ্মা নদীর মধ্যবর্তী স্থান থেকে ভারতীয় ৫৯০ কেজি কারেন্ট জাল আটক করেন (৪৭ বিজিবি)। যার মূল্য ২৩,৬০,০০০ টাকা। পরে একই দিন রাত ১১টার দিকে রামকৃষ্ণপুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ পুরাতন ঠোটারপাড়া এলাকায় ভারতীয় ১০০ গ্রাম হেরোইন, ৩ কেজি ৮ গ্রাম গাঁজা, ৩৫ পিস ইয়াবা এবং ১৯২ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করেন তারা। যার মূল্য ২,৮১,৪০০ টাকা। ওই দিন একই সময় সীমান্তের জয়পুর বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ময়ারামপুর মাঠে অভিযানে ভারতীয় ৩০০ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করতে সক্ষম হয় (বিজিবি)। যার মূল্য ৯০,০০০ টাকা।
এছাড়াও পার্শ্ববার্তী মেহেরপুর জেলার ধলা বিওপির দায়িত্বপূর্ণ ধলা মাঠের মধ্যে মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) ভোর সাড়ে ৪ টার দিকে ভারতীয় ২৪০ পিস সেনেগ্রা ট্যাবলেট আটক করেন তারা। যার মূল্য ৭২,০০০ টাকা।
৪৭ ব্যাটালিয়ন এর পৃথক অভিযানে আটককৃত মাদকদ্রব্যের সর্বমোট মূল্য ৩০,০৯,০০০ টাকা। আটককৃত মাদকদ্রব্য এবং কারেন্ট জাল ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়ন স্টোরে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিজিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মাহবুব মুর্শেদ রহমান, পিএসসি জানান, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বিজিবি। ভবিষ্যতেও চোরাকারবারীসহ মাদক আটকে বিজিবি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের ছিনতাই চক্রের প্রধান বিল্লাল ওরফে অগ্নি বিল্লাল ওরফে ভাগনে বিল্লালকে (২৯) গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রো পলিটন পুলিশ (ডিএমপি)’র কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি )।
ডিএমপি’র মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ তথ্য জানানো হয়।
সিটিটিসি গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে যে, মোহাম্মদপুর ও আদাবর এলাকার ছিনতাইকারী বিল্লাল সাভারের শামলাপুর এলাকায় অবস্থান করছে।
আজ মঙ্গলবার রাত ১টার দিকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃত বিল্লাল মোহাম্মদপুর ও আদাবরসহ বিভিন্ন এলাকায় চাপাতি ও বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রের মুখে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে ছিনতাই করত।
এতে আরও বলা হয়, বিল্লালের বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর ও আদাবর থানায় সাতটি গ্রেফতারি পরোয়ানাসহ বিভিন্ন অপরাধের ছয়টি মামলা রয়েছে।
গ্রেফতারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন বলেও জানানো হয়।
জেলার মুরাদনগরে সংবাদ সংগ্রহকালে সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার প্রধান আসামি শুক্কুর আলীকে (৩৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব।
গতকাল সোমবার র্যাবের যৌথ অভিযানে চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
শুক্কুর আলী উপজেলার রহিমপুর গ্রামের মজিদ মিয়ার ছেলে।
গ্রেফতারের পর শুক্কর আলীকে সোমবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে কুমিল্লা নিয়ে আসে র্যাব।আজ মঙ্গলবার সকালে তাকে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন মুরাদনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদুর রহমান।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩০ জুলাই মুরাদনগরে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজিব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচারের প্রতিবাদে ছাত্র জনতার ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।
এ সময় মিছিলে অতর্কিত হামলা করে দুষ্কৃতকারীরা। হামলায় ৭ জন সাংবাদিক আহত হয়।
এ ঘটনায় দৈনিক খোলা কাগজের কুমিল্লা প্রতিনিধি শাহ ইমরান বাদি হয়ে ৪জনকে জ্ঞাত ও ১০/১২ জনকে অজ্ঞাত করে মুরাদনগর থানায় মামলা দায়ের করে।
মুরাদনগর থানার ওসি আরো জানান, সাংবাদিকদের উপর হামলা মামলার আসামী শুক্কুরকে চট্টগ্রাম থেকে র্যাব গ্রেফতার করে। আজ সকালে মুরাদনগর থানায় হস্তান্তর করে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা শেষে রিমান্ড আবেদন করে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হবে।
টানা বৃষ্টি ও জোয়ারের পানির তীব্র স্রোতে জেলার রামগতি উপজেলার ‘তেগাছিয়া সেতুর’ একাংশ ধসে পড়েছে। এতে হাতিয়ার সঙ্গে রামগতির যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে প্রায় এক মাস। সড়কে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ওই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষ। হুমকির মুখে তেগাছিয়া বাজারও। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ও ব্যবসা-বাণিজ্য।
জেলা প্রশাসক ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, গত ২০ জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় একমাস ধরে রামগতির সাথে হাতিয়ার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড, এলজিইডি ও স্থানীয় এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, রামগতি-হাতিয়ার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এই সড়কটি। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন ছোট-বড় কয়েকশ যানবাহন চলাচল করে। ২০১৮ সালের শুরুর দিকে রামগতি উপজেলার চরগাজীর তেগাছিয়া খালের ওপর নির্মিত পুরোনো ব্রিজটি ভেঙে প্রায় পাঁচ কোটি টাকা খরচ করে ১০০ মিটার দীর্ঘ একটি স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হয়। সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) লক্ষ্মীপুর সেতুটি নির্মাণ করে । পাশেই তেগাছিয়া বাজারে মৎস্য অধিদপ্তর প্রায় ছয় কোটি টাকা ব্যয়ে আরেকটি আধুনিক মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র গড়ে তোলে। রামগতির মেঘনা নদী হতে আহরিত ইলিশ ও বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ ওই অবতরণ কেন্দ্রে বিক্রি করেন জেলেরা। এছাড়া আশপাশে ২০টি শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান ও ১০টি হাট-বাজার রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ও হাট বাজারের মানুষ যাতায়াত করে এই সেতু দিয়ে। গত এক মাস ধরে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে গেলেও কোন উদ্যোগ নেয়া হয়নি। ফলে চরম দুর্ভোগে রয়েছেন লক্ষাধিক মানুষ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বর্ষার শুরু থেকেই তেগাছিয়া খালে তীব্র স্রোত বয়ে চলে। টানা বৃষ্টি ও মেঘনার অস্বাভাবিক জোয়ারের স্রোতে সেতুর উত্তর পাশের প্রায় ১০০ মিটার সংযোগ সড়ক ধসে যায়। এতে করে গত এক মাস ধরে রামগতির সাথে হাতিয়া ও ২০টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সেতু এলাকা ও সংলগ্ন বাজার। এতে করে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন মানুষ। সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় বিভিন্ন শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের পড়ালেখা ব্যাহত হচ্ছে।
মালামাল আনা-নেওয়া করতে না পারায় বন্ধ হওয়ার পথে বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। আশপাশের নারী-শিশুসহ বিভিন্ন বয়সী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা সেতুর সংযোগ সড়কে কাঠ দিয়ে কোনোরকম ঝুঁকি নিয়ে পার হচ্ছেন। এতে করে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তেগাছিয়া বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে নদীতে অস্বাভাবিক জোয়ার ও টানা বৃষ্টিতে এলাকাটি প্লাবিত হয়। জমে থাকা ওই পানি খাল দিয়ে নদীতে যেতে প্রবল স্রোতের সৃষ্টি হয়। এতে সেতুটির সংযোগ সড়কের একপাশ থেকে মাটি ধসে যায়। প্রতিদিনই সেতুর দুই পাশ ও বাজারের বেশিরভাগ দোকানপাট ভাঙনের শিকার হচ্ছে। সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কার করার ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দেয়া হয়নি বলে তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এলাকাবাসী জানায়, গত এক মাস ধরে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী ও রোগীসহ সব ধরনের লোকজন চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। ধসে যাওয়া অংশটি দ্রুত মেরামত না করলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে সেতুটি ভেঙে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে ভাঙন প্রতিরোধ করা না হলে শত বছরের পুরোনো তেগাছিয়া বাজারটি বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কবে নাগাদ সেতুর সংযোগ সড়ক নির্মাণ বা বিকল্প পথের ব্যবস্থা হবে,তাও নিশ্চিত নয়। ফলে পড়ালেখা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করে পড়ালেখা স্বাভাবিক করার দাবি শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ উজ জামান খান বলেন, তেগাছিয়া খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের। কিন্তু সেতুটি স্থানীয় সরকার বিভাগের।
সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে গেছে। পাশাপাশি বাজারের কিছু এলাকায় ভাঙন দেখা দিয়েছে। এই নিয়ে কাজ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙন কবলিত এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন প্রতিরোধের উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে স্থানীয় সরকার বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, ইতিমধ্যে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
দ্রুত সময়ের মধ্যে ধসে যাওয়া সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ করা হবে।
লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক রাজীব কুমার সরকার দুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, ভাঙন প্রতিরোধ ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।
প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। সড়কটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ওই অঞ্চলে একটি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র রয়েছে। হাতিয়া, বয়ারচরের সঙ্গে রামগতির যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম এ সড়ক। শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নতুন ভবনের নির্মাণকাজ শেষ। চলছে রংয়ের কাজ। এরই মধ্যে তিনতলা ভবনটির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রং মিস্ত্রিকে দিয়ে সেসব ফাটলে রংয়ের মোটা প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়ার চেষ্টা করছে। এর আগেও এ ভবনটির দেয়ালে প্লাস্টার ও মেঝে ঢালাইয়ের কাজে নষ্ট সিমেন্ট ব্যবহারের অভিযোগও উঠেছিল এ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন নির্মাণাধীন ভবনে এমনই চিত্র লক্ষ্য করা গেছে।
স্থানীয়রা জানান, শুরু থেকেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে আসছিল। এনিয়ে এলাকাবাসী, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য ও শিক্ষকরা মানসম্মত নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ জানালে তারা তা আমলে নেয়না। উল্টো আওয়ামী লীগের ক্ষমতা দেখিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক কর্মচারীদের হুমকি দেওয়া হতো, নানাভাবে তাদের হেনস্তা করা হতো। এ নিয়ে এলাকাবাসী কয়েকবার কাজ বন্ধ করে দিলেও পরবর্তীতে ক্ষমতার জোরে আবারও একইভাবে কাজ শুরু করেন। আর এজন্যই কাজ শেষ না হতেই ভবনের পিলার, ছাদ, দেয়াল, মেঝে ও বেলকনির বিভিন্ন অংশে ফাটল দেখা দিয়েছে। পরে রং মিস্ত্রিকে দিয়ে ফাটল অংশে রংয়ের মোটা প্রলেপ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, এদিকে ভবনের রংয়ের কাজ, বারান্দা, সিঁড়ি ও কয়েকটি ঘরের মেঝের প্লাস্টার ফিনিশিংয়ের কাজ এখনও শেষ হয়নি। নিয়মানুযায়ী ভবনের সকল কাজ শেষ হলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পুরো ভবনের কাজ দেখে সন্তুষ্ট হয়ে ছাড়পত্র দিলে তবেই ভবন হস্তান্তর করতে পারবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সে সব নিয়ম না মেনেই গত মাসেই ভবন হস্তান্তরের তারিখসহ ফলক বসানো হয়েছে। ফলকে প্রকল্পের নাম, প্রকল্পিত ব্যয়, ভিত্তি, নির্মাণকারী বিভাগসহ হস্তান্তরের তারিখ লেখা রয়েছে।
উপজেলা এলজিইডি অফিস সূত্রে জানা যায়, ২০২৩ সালে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) প্রকল্পের আওতায় বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ তলা ভিত্তির ৩ তলা ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)। ১ কোটি ১৭ লাখ ১৬ হাজার ৫৫৩ টাকার দরপত্রে কাজটি পায় নওগাঁর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মো. তানজিমুল ইসলাম। ওই বছরের মাঝামাঝি সময়ে ভবন নির্মাণকাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।
স্থানীয় বাসিন্দা মোহন সরকার বলেন, এ স্কুলের কাজ শুরুর প্রথম থেকে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করেছে। আমরা যতবার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহারে বাঁধা দিয়েছি তৎকালীন আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা বিভিন্নভাবে হুমকি ধামকি দিয়েছে। যার জন্য পরবর্তীতে কেউ আর তাদের বাঁধা দিতে পারেনি। শুনেছি নওগাঁর এই ঠিকাদার নাকি আওয়ামী লীগের বড় নেতা তার প্রভাবে ইঞ্জিনিয়ারও তাদের পক্ষে ছিল। ৫ আগস্টের পর সে ঠিকাদার পালিয়ে আত্মগোপন করলেও তার প্রভাব কমেনি। কয়েকমাস আগেই ভবনের দেয়াল প্লাস্টারের কাজ করার সময় নষ্ট সিমেন্ট দিয়ে কাজ করার সময় আমরা বাঁধা দেয়। পরে ইঞ্জিনিয়ার অফিসকে জানানো হলে তারা এসে সে সিমেন্ট সরিয়ে ফেলে ও এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিবে বলে জানায়। এখন আবার ভবনে ফাটল ধরছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলেন, বিদ্যালয়ের কাজে নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করে কাজ করলে আমি বিষয়টি আমি শিক্ষা অফিসে জানালে তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান আমাকে হুমকি দেয় যে আমার চাকরি খেয়ে ফেলবে। পরবর্তীতে চোখের সামনে খারাপ কাজ করলেও আমরা আর কেউ বাঁধা দিতে সাহস পায়নি। গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের সরকারের পতন হলে ওই ঠিকাদার আর বিদ্যালয়ে আসেনি, তবে তাঁর ম্যানেজার নুর আলম আসে। এরপরও কোনো কাজ সঠিক না হলে আমরা বললেও তারা গুরুত্ব দেয় না। উল্টো শিক্ষকদের সাথে খারাপ আচরণ করে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তানজিমুল ইসলামের ফোনে বারবার ফোন করা হলেও তার ব্যবহৃত নাম্বারটি বন্ধ পাওয়া যায়। অন্যদিকে তার ম্যানেজার নুর আলমের নাম্বারে বারবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
বড়তারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মেহেদী হাসান বাবলা বলেন, বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের কাজের শুরু থেকেই আমাদের মতামতকে সম্পূর্ণ অগ্রাহ্য করা হয়েছে। ভবন নির্মাণকারক প্রতিষ্ঠানের স্বত্তাধিকারী তানজিমুল ইসলাম প্রথমে কয়েকবার আসলেও গত ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তিনি আর আসেননি। তারপর থেকে তার ফোন নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া যায়। শুধু তার ম্যানেজার নুর আলম সাইটে আসে মাঝে মধ্যে। তাদের কোনো সমস্যার কথা বললেও তারা তা সংশোধন করে দিতো না। এ নিয়ে তাদের সাথে আমার কয়েকবার কথা কাটাকাটিও হয়েছে। এসব বিষয়ে উপজেলা এলজিইডি অফিসে বললে তারা উল্টো সেসব কাজ সঠিক বলে বুঝানো হতো।
তিনি আরও বলেন, ভবনের প্লাস্টার কাজে নষ্ট সিমেন্ট ব্যবহার করেছিল। আমরা অভিযোগ জানালে এলজিইডি অফিস তা সরিয়ে ফেলতে বললে ঠিকাদারের লোক সরিয়ে ফেলে। তবে, দেয়াল প্লাস্টারের কাজের ফিনিশিং ভাল হয়নি। বিভিন্ন জায়গায় উঁচু নিচু হয়েছে। যার ফলে রংয়ের কাজও ভাল হচ্ছে না। ভবনের টপরুমসহ কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে। বিষয়টি আমরা শিক্ষা অফিসকে জানালে এলজিইডি অফিসের লোকজন এসে সেসব ঠিক করে দিবে বলে আশ্বাস দিয়ে গেছেন।
ক্ষেতলাল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাসিরউদ্দিন বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিষয়টি আমাকে জানিয়েছেন। আমি এলজিইডি অফিসকে এ বিষয়ে জানিয়েছি। তারা এক-দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব ঠিক করে দিবেন বলে জানিয়েছেন।
ক্ষেতলাল এলজিইডি উপসহকারী প্রকৌশলী তাহেরুল ইসলাম বলেন, বিদ্যালয় ভবনের যেসব ক্রুটি ছিল আমরা তা ঠিক করে দেওয়া জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি। তারা সেসব নিয়ে কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, ঠিকাদার তানজিমুল কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের রাজনীতি সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এখন তিনি কোথায় আছেন বা কোন নাম্বার ব্যবহার করেন তা আমরা জানি না। তবে, আমরা সাইটের ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার নুর আলমের সাথে যোগাযোগ করি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলার বিটঘর ইউনিয়নের টিয়ারা গ্রামের মাদ্রাসাছাত্র মোহাম্মদ হোসাইন (১৩) নিখোঁজ হওয়ার দেড় মাস পেরিয়ে গেলেও তার কোনো সন্ধান মেলেনি। শোকে পাগল হয়ে পড়েছেন তার বাবা-মা।
মোহাম্মদ হোসাইন ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের ভাদুঘরে অবস্থিত "আলা হযরত তাহফিজুল কোরআন মাদ্রাসার" ছাত্র। সে ইতোমধ্যে ১৭ পারা কোরআন শরীফ হিফজ করেছে। তার বাবা কামাল পারভেজ একজন ব্যবসায়ী। চার ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে হোসাইন তৃতীয়।
কামাল পারভেজ জানান, গত ৫ জুলাই সকাল ১০টার দিকে মাদ্রাসা থেকে ডাবলু বাড়ি মোড়ের উদ্দেশে বের হয় হোসাইন। এরপর থেকে সে নিখোঁজ। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তার সন্ধান না পেয়ে সেদিন রাতেই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি।
তিনি আরও জানান, নিখোঁজের কিছুদিন পর থেকে বিভিন্ন অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে কয়েক দফায় টাকা দাবি করা হয়েছে। বিষয়টি তাৎক্ষণিকভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
হোসাইনের বাবা বলেন, "দেড় মাস ধরে ছেলের খোঁজে দিনরাত ছুটছি। কোথায় আছে, কেমন আছে— কিছুই জানি না। আমি ও তার মা অসুস্থ হয়ে পড়েছি। পুলিশকে একাধিকবার জানিয়েও কোনো অগ্রগতি দেখতে পাচ্ছি না। আমাদের সংসার ভেঙে গেছে। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার প্রতি অনুরোধ করছি— দয়া করে আমার ছেলেকে খুঁজে দিন।"
এ বিষয়ে এখনো পর্যন্ত পুলিশ কোনো তথ্য জানাতে পারেনি বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে।
বাগেরহাট জেলা থেকে সংসদীয় ৪ টি আসনকে কেটে ৩ টি আসন করার প্রতিবাদে জেলার সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটি জেলায় অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করেছে। ঘোষিত কর্মসূচীর মধ্যে ২১ আগষ্ট খুলনা-মংলা ও মাওয়া-খুলনা মহাসড়কের কাটাখালী ও নওয়াপাড়ায় অবরোধ, ২৪ আগষ্ট খুলনা-মংলা, মাওয়া-খুলনা, খুলনা-বরিশাল মহাসড়কের কাটাখালী, নওয়াপাড়া, সাইনবোর্ড মোড়, ডিসি অফিস ও নির্বাচন অফিস অবরোধ করা হবে। একই দিন ঢাকা নির্বাচন কমিশন অফিসের সামনে বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। ২৫ আগষ্ট ঢাকা নির্বাচন কমিশন অফিসের সম্মুখে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচী ঘোষনা করেছে।
বাগেরহাট প্রেসক্লাবে জেলা সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিম সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচী ঘোষনা করেন।
মঙ্গলবার (১৯ আগষ্ট) সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে এই কর্মসূচী ঘোষনা করা হয়। এ সময়ে সর্বদলীয় কমিটির সদস্য সচিব শেখ মুহাম্মদ ইউনুস, জেলা বিএনপির সমন্বয়ক এম এ সালাম, জেলা জামায়াতের আমির মাও. রেজাউল করিম, বিএনপির সদস্য সচিব মোজাফ্ফর রহমান আলম, জামায়াতের নায়েবে আমির এ্যাড. আব্দুল ওয়াদুদ, বিএনপি নেতা ফকির তারিকুল ইসলাম, ওয়াজিয়ার রহমান, সাহেদ আলী রবি প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে আগামী ২৫ আগষ্ট নির্বাচন কমিশনের শুনানীতে যদি বাগেরহাটের ৪ আসন পূনঃবহাল করা না হলে বাগেরহাট অচল কর্মসূচী গ্রহন করার ঘোষনা দেওয়া হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশ আলোচনায় থাকেন ঢাকাই সিনেমার নায়িকা পরীমনি। এক সময় তার জন্মদিন নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। এবার সন্তানদের জন্মদিন পালন নিয়ে কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের ওপর ক্ষেপেছেন অভিনেত্রী।
সন্তান জন্মের পর অভিনেত্রী জানিয়েছিলেন, ধুমধাম করে আর নিজের জন্মদিন পালন করবেন না। সন্তানের জন্মদিন ভালোভাবে পালন করবেন। ঠিক এমনটাই করে আসছিলেন। কথামতো গত ১০ আগস্ট ছেলের তৃতীয় জন্মদিন নিজের মতো করেই উদযাপন করেছেন পরীমনি। তবে এ অনুষ্ঠান নিয়ে বেজায় চটেছেন নায়িকা।
সবকিছু ঠিকমতোই ছিল। সন্তানের জন্মদিনের ছয় দিন পর অভিনেত্রী লক্ষ্য করলেন, ব্যক্তিগত ওই অনুষ্ঠানের ফুটেজ সামাজিক মাধ্যমে ঘুরে বেড়াচ্ছে। অতিথিদের অনেকে অনুষ্ঠানটি ব্যবসা বানিয়ে সামাজিক মাধ্যম ছড়িয়েছে। এত ক্ষুব্ধ পরীমনি।
গত শনিবার অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘আমার সব রকম আনন্দে যাদের আমি কাছে চাইছি কিন্তু তারা প্রত্যেকেই প্রমাণ করছে তারা আমার জীবনে মলমুত্র মাত্র। খেয়াল করে দেখবেন, গত ১০ তারিখ থেকে ব্যক্তিগত কারণে আমি ফেসবুকে অ্যাকটিভ নই। আজ ফেসবুকে ঢুকতেই দেখি আমার জীবনের আনন্দ নিয়ে টানাটানি করা শুরু করেছে। আমার বাচ্চাদের নিয়ে ১০ তারিখ একটা ইভেন্ট ছিল- আমার একান্ত নিজস্ব কাছের মানুষদের নিয়ে যেটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু কিছু উল্লুক বেহায়ার মতো আমার ইভেন্টে এসে রিলস আর ব্যবসায়িক ব্লগে সামাজিক মাধ্যম ভরে ফেলছে! যেখানে আমি এখন পর্যন্ত একটা ছবিও পোস্ট করিনি। এমনকি আমার পরিবারের এবং সত্যি যাদের কাছে পরিবারের মানুষের গুরুত্ব আছে তারা কিন্তু কেউ এরকম করে নাই।’
এদিকে গত মাসে অভিনেত্রী স্পষ্ট জানিয়েছিলেন, তার সন্তানরা ব্যবসায়িক উপাদান নয়। তাদের নিয়ে যেন কনটেন্ট ব্যবসা বন্ধ করা হয়। কিন্তু নিজের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে সেটি ঠেকাতে পারেননি তিনি।
এ বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে পরীমনি লিখেছেন- ‘যারা অনুষ্ঠানে এসে মানুষের জীবনের অতি মূল্যবান সময়টা পাবলিক করে তারা আমার গালি খাবা, যা তোমরা ডিজার্ভ করো- তোমরা ভিখারির মতো মাসভরে কিছু ডলার কামাও। এ ধরনের মানুষ বা কনটেন্ট ক্রিয়েটর যদি সামনে পড়ে তাহলে তিন মিনিট থাপড়িয়ে দেব। কারণ আগেই বলেছিলাম আমার বাচ্চারা কোনো ব্যবসায়িক উপাদান না। ভালো লাগেনি তখন?’
জয়পুরহাটের কালাইয়ে পরীক্ষার ফি দিতে না পারায় দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে মূল্যায়ন পরীক্ষার কক্ষ থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। আর এ বিষয়ে সোমবার দুপুরে শিক্ষার্থীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
সোমবার সকালে (১৮ আগস্ট) উপজেলার পুনটে অবস্থিত মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুল নামে একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুলে ঘটনাটি ঘটেছে।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি (৮) উপজেলার জালাইগাড়ী গ্রামে সাইফুল ইসলামের মেয়ে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, স্কুলটিতে জাতীয় পতাকার স্ট্যান্ড থাকলেও স্ট্যান্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় নাই। কোমলমতি শিশুদের উত্তপ্ত গরমে টিনের কক্ষে ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। আবার স্কুলে খোলা মাঠে গাছের নিচে ক্লাস করানো হচ্ছে। আবার স্কুলে কোচিং করানো নিষেধ থাকলেও করানো হচ্ছে শিক্ষার্থীদের কোচিং।
স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলে, সুরাইয়া মনি ক্লাসের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে আসলে প্রধান শিক্ষক পরীক্ষা দিতে না দেওয়ায় তখন স্কুলের মাঠে দাঁড়িয়ে কাঁদতে থাকে।
চতুর্থ শ্রেণির আরেক শিক্ষার্থী নাহিদা আক্তার বলে, এ স্কুলে পড়ার জন্য প্রতিমাসে বেতন ৩০০ টাকা, কোচিং করার জন্য ৩০০ টাকা দিতে হয়। আর পরীক্ষা সময়ে পরীক্ষার ফি ১৮০ টাকা দিতে হয়।
শিক্ষার্থী সুরাইয়া মনি বলে, আমাকে হেড স্যার টাকার জন্য পরীক্ষা দিতে দেননি। তিনি বলেন, তোর বাবা টাকা দিতে পারেনা, তোর পরীক্ষা দিতে হবে না। তুই বাড়ি যা বলে ঘাড় ধরে বের করে দেয়। এজন্য আমি স্কুলের মূল্যায়ন পরীক্ষা দিতে পারিনি। আমার সহপাঠীরা সবাই পরীক্ষা দিচ্ছিল। আমি পরীক্ষা না দিতে পারায় বের করলে দিলে বাহির দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলাম।
সুরাইয়া মনির বাবা সাইফুল ইসলাম বলেন, আমরা গরীব মানুষ। দিনমজুর দিয়ে সংসার চালাই। প্রতি মাসেই স্কুলে বেতন দেই। হয়তো এক-দুই দিন দেরি হয়। আমার মেয়ের কোন মাসের বেতন বকেয়া নেই। শুধু পরীক্ষার ফি বাকি ছিল। যেটা আমি আজকে দিতে গিয়ে দেখি আমার বাচ্চাকে রুম থেকে বের করে রুমের বাহিরে দাঁড়িয়ে রেখেছে। আর বাচ্চা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছে। এ দৃশ্য দেখার চেয়ে আমার মরণ ভালো ছিল।
এ বিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের প্রধান শিক্ষিক এমিলি ইয়াসমিন রিনা বলেন, আমি কোন কথা বলতে পারবো না। কি করতে পারেন, করেন।
কালাই উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) রাশেদুল ইসলাম বলেন, কিন্ডারগার্টেন স্কুলের বিষয়ে আমাদের কিছু করার নেই। এসব প্রতিষ্ঠান ব্যক্তি মালিকানাধীন। শুধু আমরা এসব প্রতিষ্ঠানে সরকারি বই বিতরণ করা হয়ে থাকে।
কালাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শামিমা আক্তার জাহান বলেন, এবিষয়ে মঞ্জুর আইডিয়াল স্কুলের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীর বাবা একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক অভিযানে ৩৯ বোতল মদ, ২ কেজি গাঁজা, ১১৩৬ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট এবং ৪টি মহিষ আটক করেছে বাংলাদেশ বর্ডারগার্ড (বিজিবি)। সোমবার (১৮ আগস্ট) বিকাল ৪টার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান ব্যাটালিয়ন ৪৭ (বিজিবি)।
বিজিবি সূত্র জানান, সুনির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সোমবার (১৮ আগস্ট) ভোর ৪ টার দিকে চরচিলমারী বিওপির দায়িত্বপূর্ণ চিলমারী সুগারঘাট নামক এলাকায় ভারতীয় ৪টি মহিষ আটক করা হয়। যার মূল্য-৪,৫০,০০০ টাকা। একই দিন ভোর ৫টার দিকে ঠোটারপাড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্তের শকুনতলা মাঠে ভারতীয় ২ কেজি গাঁজা এবং ৫০০ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করেন তারা। যার মূল্য ১,৫৭,০০০ টাকা।
এর আগে একই দিন রাত ৩টার দিকে চল্লিশপাড়া বিওপির দায়িত্বপূর্ণ চল্লিশপাড়া মাঠে ভারতীয় ৩৯ বোতল মদ ও গত রবিবার (১৭ আগস্ট) রাত ১১টার দিকে নিচপাড়া মাঠ থেকে ভারতীয় ৬৩৬ পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট আটক করেন ব্যাটালিয়ন ৪৭ (বিজিবি)। যার মূল্য ২,৪৯,৩০০ টাকা।
আটককৃত মহিষ কাস্টমে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে এবং মাদকদ্রব্য ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়ন মাদক ষ্টোরে জমা করার কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে বিজিবি সূত্রে জানানো হয়। এসকল আটককৃত মহিষ ও মাদকদ্রব্যের সর্বমোট মূল্য ৮,৫৬,৩০০ টাকা।
কুষ্টিয়া ব্যাটালিয়ন (৪৭ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোঃ মাহবুব মুর্শেদ রহমান পিএসসি বলেন, সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং মাদক পাচারসহ সব ধরনের অবৈধ কার্যক্রম প্রতিরোধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে ৪৭ বিজিবি। ভবিষ্যতেও চোরাকারবারীসহ মাদক আটকে বিজিবি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত থাকবে বলে জানান তিনি।
আলফ্রেড সরেন হত্যাকাণ্ডের পর ২৫ বছর পার হয়ে গেল। ২০০০ সালের ১৮ আগস্ট নওগাঁর মহাদেবপুর উপজেলার ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে ভূমিদস্যুদের হামলায় নিহত হন এই আদিবাসী নেতা। এই দীর্ঘ সময়েও বিচার হয়নি সেই হত্যাকাণ্ডের। আলফ্রেড সরেন হত্যা মামলার বিচারকাজ কবে শেষ হবে, শেষ পর্যন্ত তা কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে এ নিয়ে আদিবাসীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে সংশয়। এর ওপর অব্যাহত রয়েছে হুমকি-ধমকি। ওদিকে আদিবাসীদের অনেকেই ইতোমধ্যে ভীমপুর আদিবাসী পল্লি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছেন।
আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন এর মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মরণে সোমবার দুপুরে ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে শ্রদ্ধাঞ্জলি,শোক র্যালি আলোচনা সভার মাধ্যমে তার হত্যার বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার দাবি জানানো হয়।
সেদিন যা ঘটেছিল
২০০০ সালের ১৮ আগস্ট ভীমপুর আদিবাসী পল্লিতে ভূমিদস্যু হাতেম-গদাই গংদের সন্ত্রাসীরা হামলা চালায়। তারা পল্লির ১১টি পরিবারের বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগ করে। হামলায় আদিবাসী নারী-শিশুসহ প্রায় ৩০ জন গুরুতর আহত হন। এ সময় আদীবাসীদের কয়েকটি শিশুকে সন্ত্রাসীরা পার্শ্ববর্তী পুকুরেও ছুড়ে ফেলে।
সন্ত্রসীরা যখন আদিবাসী পল্লিতে হামলা চালায় তখন দুপুর ১২টা। দিনটি ছিল শুক্রবার। হামলার প্রতিবাদে ওই দিন জুমার নামাজের পর নওগাঁ-মহাদেবপুর সড়কের চৌমাসিয়ার মোড়ে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে আদিবাসীরা।
আদিবাসী নেতা আলফ্রেড সরেন কর্মসূচির সব আয়োজন শেষ করে দুপুর ১২টার দিকে খাবার খেতে বাড়িতে যান। পল্লির অধিকাংশ পুরুষ তখন চৌমাসিয়ার মোড়ে সমাবেশস্থলেই ছিল। আলফ্রেড বাড়িতে যেতেই সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা চালায়। আলফ্রেড বুঝতে পেরে নিজের ঘর ছেড়ে অন্য ঘরে আশ্রয় নেন। আলফ্রেড যে ঘরটিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন সন্ত্রাসীরা সেটিতে আগুন ধরিয়ে দিয়ে তাকে ঘর থেকে বেরিয়ে আসতে বাধ্য করে। তিনি ঘরের বাইরে আসামাত্র সন্ত্রাসীরা তাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
বর্বরোচিত এই ঘটনা পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের আদিবাসী জনগোষ্ঠী, প্রগতিশীল রাজনৈতিক দলসহ সচেতন মহলে ব্যাপক আলোড়ন ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আদিবাসীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানান।
আলফ্রেড সরেন হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ওপর বিভিন্ন সময়ে পরিচালিত অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি মিডিয়াসহ সর্বস্তরের মানুষ সোচ্চার হয়ে রাস্তায় নেমে আসে। আদিবাসীদের পক্ষে দেশব্যাপী ব্যাপক জনমত গঠিত হয়।
হত্যাকাণ্ডের আগের দিনের চিঠি
২০০০ সালের ৯ আগস্ট নওগাঁর মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবসে এক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেদিন আলফ্রেড সরেন নওগাঁর সিপিবি নেতা ময়নুল হক মুকুল, মহসীন রেজাসহ আরও কয়েকজনের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে তাকে হত্যা করা হতে পারে। সবাই তাকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছিলেন বলে জানান তৎকালীন নওগাঁ জেলা সিপিবির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক মকুল।
মহসীন রেজা জানান, হত্যাকাণ্ডের আগের দিন ১৭ আগস্ট আলফ্রেড মহাদেবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা দেওয়ান আমজাদ হোসেন তারাকে একটি চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তাকে হত্যা করতে পারে এমন সন্দেহভাজন ১০ জনের নাম উল্লেখ করা ছিল।
সভাস্থলে যে খবর আসে
আদিবাসীদের ডাকা চৌমাসিয়ার মোড়ে সেই সভায় সেদিন বক্তব্য দেয়ার জন্য উপস্থিত ছিলেন নওগাঁ সিপিবির তৎকালীন সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা ময়নুল হক মুকুল। এ সময় তার সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ‘তখন দুপুর সাড়ে ১২টা হবে। হঠাৎ আমার নজর চলে যায় ভীমপুর গ্রামের দিকে। ভালো করে তাকিয়ে দেখি কুণ্ডলী পাকিয়ে ধোঁয়া উঠছে। আমি সবাইকে সেটা দেখতে বলি। ইতোমধ্যে মাঠের মধ্য দিয়ে গ্রামের উদ্দেশে দৌড় দেন আদিবাসীরা। আমিও আদিবাসীদের পিছু পিছু গ্রামে গিয়ে উপস্থিত হই। ততক্ষণে সব শেষ। আমি, মহসীন রেজা, শহীদ হাসান সিদ্দিকী স্বপনসহ আরও কয়েকজনকে খবরটা জানিয়ে দেই। তবে আমার কাছে অবাক লেগেছে সেদিন পুলিশের তৎপরতা দেখে। অতি দ্রুত পুলিশ কীভাবে খবর পেয়ে সেখানে উপস্থিত হলো সেটা একটা প্রশ্ন। তখনই আমার ধারণা হয়েছিল পুলিশকে ম্যানেজ করেই ঘটনাটি ঘটিয়েছিল হাতেম-গদাই গং। পুলিশ সেখান থেকে তড়িঘড়ি করে আলফ্রেডের লাশ নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে আমি আদিবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বাধা দেই। পুলিশকে বাধ্য করি লাশের ময়নাতদন্তের জন্য।
মামলার বর্তমান অবস্থা
আলফ্রেড সরেন হত্যার ঘটনায় তার ছোট বোন রেবেকা সরেন বাদী হয়ে হত্যা ও জননিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা করেন। মামলায় পুলিশ ৯১ আসামির নামে আদালতে চার্জশিট দেয়। এর মধ্যে পুলিশ কয়েকজন আসামিকে গ্রেপ্তার করে। ওই সময় নওগাঁ দায়রা জজ আদালতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয় এবং ৪১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছিল। জোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর জননিরাপত্তা আইন বাতিল করে। ওই সময় পলাতক শীতেষ চন্দ্র ভট্টাচার্য ওরফে গদাই (বর্তমানে প্রয়াত) ও হাতেম আলীসহ ৬০ জনের বেশি আসামি জননিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট পিটিশন করলে মামলাটি হাইকোর্ট ৩ মাসের জন্য স্থগিত করে। এরপর আসামিরা জামিনে বেরিয়ে আসে।
মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী মহসীন রেজা বলেন, ‘আলফ্রেড সরেনকে হত্যার পর তার বোন রেবেকা সরেন মহাদেবপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলার তদন্ত চলাকালে আলফ্রেডের বড় ভাই জননিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেন। পরবর্তীতে দুটি মামলা একসঙ্গে তদন্ত করে একটি অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
‘নওগাঁ জেলা জজ আদালতে মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হলে আসামিরা জননিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করে। পরবর্তীতে এই রিটগুলো খারিজ হয়ে গেলে আলফ্রেড হত্যার বিচার কার্যক্রম চলতে থাকে। আসামিরা হাইকোর্টে রিটের খারিজের আদেশের বিরুদ্ধে আপিলেট ডিভিশনে মোকদ্দমা আনে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আপিলেট ডিভিশনে সে মোকদ্দমা শুনানি শেষে আপিল ডিভিশনের বিচারক পুনরায় সেই রিটগুলো শুনানির জন্য হাইকোর্টে পাঠান। রিটগুলো হাইকোর্টে শুনানির জন্য অপেক্ষমাণ রয়েছে। আর আলফ্রেড হত্যার বিচার কার্যক্রম বর্তমানে নওগাঁর দায়রা জজ আদালতে স্থগিত অবস্থায় রয়েছে।
রেবেকা সরেন যা বললেন
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আলফ্রেড সরেন হত্যা মামলার বাদী ও আলফ্রেডের ছোট বোন রেবেকা সরেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘২০০০ সালের ১৮ আগস্ট আমার ভাইকে ভূমিদস্যুরা নির্মমভাবে চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এই হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যে ছিলেন হাতেম ও গদাই। ‘এই হত্যার পর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করি ও আমার বড় দাদা জননিরাপত্তা আইনে আরেকটি মামলা করেন। এই ঘটনার সময় যে পরিবারগুলো বসবাস করত তারা মামলার সাক্ষী হওয়ায় তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়া হতো। জীবনের ভয়ে তারা পল্লি ছেড়ে বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে।’
রেবেকা বলেন, ‘২০১২ সালে আমার ছোট ভাইকেও একইভাবে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হয়। তারা এখনও আমাদের ওপর বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। আর মাথা উঁচু করে ঘুরে বেড়াচ্ছে। যে জমির জন্য আমার ভাইকে হত্যা করা হয়েছে সে জমিগুলোও তারা দখল করে খাচ্ছে।’
কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘আমার ভাইকে হত্যার পর মা-বাবা পাগলের মতো হয়ে যান। সেভাবেই তারা মারা গেছেন। হত্যাকাণ্ডের ২২ বছর পরও আমরা বিচার পাইনি। বিচার পাব কি না তা নিয়েও আমরা সংশয়ে আছি। একটি স্বাধীন দেশে আমরা কখনও এমনটা ভাবতে পারিনি। যারা আমার ভাইকে হত্যা করেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানাচ্ছি।’
কথা হলে আদিবাসী অধিকার কর্মী আজাদ হোসেন মুরাদ বলেন, আলফ্রেড সরেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকার আদায়ের জন্য কাজ করতেন। ভূমিদস্যুদের হামলায় তিনি নিহত হন। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার আজও সম্পন্ন হয়নি, যা নিয়ে আদিবাসী সংগঠন ও স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা রয়েছে। অবিলম্ব আলফ্রেড হত্যার বিচার দাবি করছি।
বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে জলবায়ু পরিবর্তনের থাবা দিন দিন গভীর হচ্ছে। লবণাক্ততা, ঘূর্ণিঝড়, এবং মৎস্য সম্পদের হ্রাসের মুখে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর জীবিকা আজ হুমকির সম্মুখীন। কিন্তু এই সংকটের মাঝেই জেগে উঠেছে এক অনন্য সম্ভাবনা—সামুদ্রিক শৈবাল চাষ। পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ফিশারিজ বায়োলজি অ্যান্ড জেনেটিক্স ডিপার্টমেন্ট এবং AIRD-এর যৌথ উদ্যোগে (পাইলটিং স্মল স্কেল ম্যাক্রোঅ্যালগি কালচার ফর আমেলিওরেটিং লিভলিহুড অফ কোস্টাল কমিউনিটিস অ্যান্ড এড্রেসিং কার্বন ডাই অক্সাইড রেমিডেশন ”) প্রকল্প শুধু অর্থনৈতিক মুক্তিই আনবে না, জলবায়ু সংকট মোকাবেলায়ও রাখতে পারে অনন্য অবদান।
বাংলাদেশের ৭১০ কিলোমিটার দীর্ঘ উপকূলীয় এলাকা এবং ২৫,০০০ বর্গকিলোমিটার উপকূলীয় জলরাশি সীউইড চাষের জন্য অত্যন্ত উপযোগী। বর্তমানে দেশে প্রায় ২০০ প্রজাতির সীউইড পাওয়া যায়, যার মধ্যে ১৯টি বাণিজ্যিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে উলভা ইনটেসটিনালিস (Ulva intestinalis) (স্থানীয়ভাবে “ডেললা”) অন্যতম, যা সহজে চাষযোগ্য এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর। এটি দ্রুত বৃদ্ধি পায়, লবণাক্ত পানিতে টিকে থাকে এবং পরিবেশ থেকে কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।
প্রধান গবেষক ড. মো. রাজীব সরকারের মতে, " সামুদ্রিক শৈবাল কে আমি সামুদ্রিক সবজি বলে থাকি কারণ এটি উচ্চ মানের প্রোটিন, ভিটামিন , মিনারেলস থাকে। এখানে থাকা এন্টি অক্সিডেন্ট এর কারণে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। সীউইড থেকে বায়োপ্লাস্টিক, বায়োডিসেল তৈরি করা যায় , এই লক্ষে আমরা প্রকল্পে সীউইড থেকে কিছু ভ্যালু এডেড প্রোডাক্ট তৈরি করি। যার পুষ্টিগুণ অনেক বেশি বিশেষ করে নারীদের ক্ষেত্রে আয়রন এর অভাব পূরণ করে এবং মানুষের মানসিক হতাশা দূর করে, এছাড়াও প্রতি কেজি শুকনো শৈবাল ০.৫ কেজি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে।”
প্রকল্পের সাইট হিসেবে বরগুনার কুয়াকাটা, লেবুরচর, গঙ্গামতি ও চোরপাড়া অঞ্চলে রশি ও জালের মাধ্যমে শৈবাল চাষ করা হয়, যেখানে স্থানীয় জেলেরা সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। তার মধ্যে গঙ্গামতি ও লেবুরচরে শৈবালের ফলন সবচেয়ে বেশি ।এই শৈবাল চাষের পদ্ধতি অনেক সহজ কারণ এতে জমি বা রাসায়নিক সারের প্রয়োজন নেই।
এই উলভা শৈবালের গুঁড়া থেকে তৈরি হচ্ছে নানা রকম মূল্য সংযোজিত পণ্য, যা স্থানীয় অর্থনীতিকে নতুন গতি দিতে পারে। তারই পরিপেক্ষিতে তারা তৈরি করেছে নানা রকম পুষ্টি গুণ সমৃদ্ধ খাবার সহ ব্যবহারিক জিনিস পত্র যেমন নরি শিট; এটি জাপানি সুশিতে ব্যবহৃত হয় ও প্রোটিনসমৃদ্ধ । সেই সাথে রপ্তানির বিশাল সুযোগ রয়েছে। সীউইড ট্যাবলেট; আয়োডিন, আয়রন, ভিটামিন 12 ও খনিজ সমৃদ্ধ এই ট্যাবলেট হজম ও থাইরয়েড হরমোন ব্যালান্স করতে সাহায্য করে।
সীউইড আইসক্রিম; ২৫% দুধের পরিবর্তে উলভা ব্যবহার করে খনিজ সমৃদ্ধ ও স্বাস্থ্যকর এই খাবার টি শহুরে স্বাস্থ্যসচেতন দের কাছে এটি জনপ্রিয় হতে পারে। এছাড়া আরো তৈরি করা হয়েছে সীউইড দিয়ে বিস্কুট, জিলাপি, মিষ্টি, রোল সহ সাবান ও ফেসপ্যাক; যা স্থানীয় বাজার ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এসব পণ্যের ব্যপক চাহিদা হতে পারে। পরীক্ষামূলক ভাবে এসব পণ্য ব্যবহার করে সুফল ও পাওয়া গেছে। ফেসপ্যাক ব্যবহার করে এক শিক্ষার্থী মাহজাবিন বলেন, "এটি ব্যবহারে ত্বক নরম ও মসৃণ থাকে, সেই সাথে ত্বক ঠান্ডা থাকে" ।
বিভিন্ন খাবারের টেস্ট পর্যবেক্ষণ করে শিক্ষার্থীরা এই পণ্যগুলোর ব্যাপারে অনেক সম্ভাবনার কথা ব্যক্ত করেন। আশিকুর রহমান নামে এক শিক্ষার্থী জানান, "আমি সীউইড সম্পর্কে আগে শুনেছি, এখন খেয়ে দেখলাম আসলেই এগুলোর স্বাদ অতুলনীয়, এগুলো বাজারে আসলে ভালো মার্কেট চাহিদা পাবে বলে আমি আশাবাদী, সেই সাথে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি .."।।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সীউইড গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। সীউইড চাষের মাধ্যমে প্রতি কেজিতে প্রায় ০.৭ কেজি কার্বন ডাই অক্সাইড শোষিত হয়। এটি “ব্লু কার্বন ” ধারণার অন্তর্ভুক্ত, যেখানে সামুদ্রিক উদ্ভিদ কার্বন ডাই অক্সাইড শোষণ করে জলবায়ু পরিবর্তন রোধে সহায়তা করে। সীউইড চাষে যুক্ত হয়ে লাভবান হতে পারবে স্থানীয় জেলে, নারী ও বেকার যুবকরা। UNDP, ILO, এবং Innovision Consulting-এর মতো সংস্থাগুলোর সহায়তায় প্রশিক্ষণ ও প্রযুক্তি সরবরাহ করা হচ্ছে। কক্সবাজারে একটি ৪৫–৬০ দিনের চাষচক্রে একজন চাষি গড়ে ১২,০০০–১৫,০০০ টাকা আয় করছেন।এটি রপ্তানি করে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব। বিশ্বে সীউইডের বাজার ২০২৮ সালের মধ্যে ২৬ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রকল্পটি এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে থাকলেও, এর সম্ভাবনা অফুরন্ত। AIRD-এর সহকারি গবেষক ড. মো. আরিফুল আলমের ভাষায়, "এই সীউইড গুলো উপকূলীয় এলাকায় বিশেষ করে কুয়াকাটা ও কক্সবাজারে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায় ও চাষের ব্যপক সম্ভাবনা আছে। সীউইডে থাকা ওমেগা 3 এবং ওমেগা 6 ফ্যাটি এসিড শিশুর মেধা বিকশিত করে,গ্যাস দূর করে, কোলেস্টেরল এর মাত্রা কমিয়ে দেয়। তাই এই সম্ভবনা সারাদেশে ছড়িয়ে দিতে পারলে উপকূলীয় অঞ্চল হবে টেকসই উন্নয়নের রোল মডেল।”
সর্বোপরি উলভা শৈবাল শুধু একটি সবুজ উদ্ভিদ নয়—এটি উপকূলবাসীর জন্য আশার বার্তা বয়ে এনেছে। জলবায়ু সংকটের এই যুগে, প্রকৃতির সহজ সমাধানই হয়তো আমাদের রক্ষার শেষ অবলম্বন। সমুদ্র আজ শুধু মাছের ভাণ্ডার নয়, এটি হয়ে উঠতে পারে সবুজ অর্থনীতির নতুন চাবিকাঠি।
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি পরিষদ গতকাল সোমবার (১৮ আগষ্ট) নড়াইলে দেড় হাজার রোগীকে বিনামূল্যে চক্ষুচিকিৎসাসেবা ও ৫০ জন রোগীর চোখে লেন্স সংযোজন করা হয়েছে ।
দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান নড়াইল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিপরীতে আতিয়ার রহমানের নিজ বাসভভনে আয়োজন করা হয় । খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের সহযোগিতায় প্রতি মাসের শেষ সোমবারে এই আয়োজন করা হয়ে থাকে ।
আয়োজকরা জানান, শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি পরিষদের উদ্যোগে প্রতিমাসের শেষ শুক্রবার বিনামূল্যে পারিবারিক চিকিৎসা, ওষুধ প্রদান, আইনি পরামর্শ, প্রেসার, রক্ত ও ডায়াবেটিস পরীক্ষার আয়োজন করা হয়। এছাড়া জেলার বিভিন্ন এলাকায় মেডিকেল ক্যাম্প ও চক্ষুশিবিরের আয়োজন করা হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় এবার বড় পরিসরে সোমবার বিনামূল্যে দেড় হাজার রোগির চক্ষুচিকিৎসা অনুষ্ঠিত হলো। এর মধ্যে বাছাই শেষে প্রথম পর্যায়ে ৫০ জনের চোখে লেন্স সংযোজন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বাকিদের ধাপে ধাপে চিকিৎসা দেয়া হবে।
এ চক্ষুক্যাম্পে উপস্থিত ছিলেন-জেলা প্রশাসক শারমিন আক্তার জাহান, সিভিল সার্জন ডাক্তার আব্দুর রশিদ, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুল ইসলাম, জেলা জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা আলমগীর হুসাইন, সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা শরীফ হুমায়ুন কবীর, বিএনপি নেতা তবিবুর রহমান মনু জমাদ্দার, শরীফ আতিয়ার রহমান স্মৃতি পরিষদের সভাপতি বীরমুক্তিযোদ্ধা এস এ মতিন, শরীফ আতিয়ার রহমানের বড় ছেলে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ডাক্তার শরীফ জাহাঙ্গীর আতীক প্রিন্স, ছোট ছেলে ডাক্তার শরীফ শামীম আতীক, খুলনা বিএনএসবি চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার আসিফ হাসান ও ডাক্তার জোবায়ের রিয়াল, বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি নড়াইল ইউনিটের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ইসমাইল হোসেন লিটনসহ অনেকে।