ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আব্দুল্লাহ আল জাহিদ নামে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) এক শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ছিনতাইকারীরা শিক্ষার্থীর কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।
ভুক্তভোগী আব্দুল্লাহ আল জাহিদ বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (রামেক) জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
জানা যায়, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ সংলগ্ন রেলগেট এলাকা থেকে ক্যাম্পাসের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় ৫-৭ জনের একটি ছিনতাইকারী দল তার পথরোধ করে। এ সময় তারা সঙ্গে থাকা মোবাইল ও মানিব্যাগ দিতে বলে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোবাইল দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে পেছন থেকে একজন ছুরিকাঘাত করে। পরে তার সঙ্গে থাকা অন্যরা মোবাইল ও মানিব্যাগ কেড়ে নিয়ে চলে যায়।
এরপর আহত অবস্থায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পুলিশ বক্সের সামনে আসলে পুলিশ সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে পাঠায়। পরে ভুক্তভোগীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
জাহিদের সহপাঠী ও বাংলা বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সোহাগ রানা বলেন, এর আগেও ছিনতাইয়ের অনেক ঘটনা ঘটেছে। ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের মেরে আহত করা সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। প্রায়ই ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু প্রশাসন এগুলো আটকাতে ব্যর্থ। বারবার দাবি জানানোর পরও প্রশাসন ক্যাম্পাসে ছিনতাই রোধে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেনি।
এ বিষয়ে চন্দ্রিমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাছুদ পারভেজ বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আহত অবস্থায় আমাদের পুলিশ বক্সের সামনে আসে। সেসময় পুলিশ সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্স ডেকে তাকে মেডিকেল সেন্টারে পাঠায়।
সার্বিক বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর পুরঞ্জিত মহলদার বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে শুনেছি ঘটনাটি ক্যাম্পাসের বাইরে ঘটেছে। সেসময় আহত জাহিদ পুলিশের সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও তারা এগিয়ে আসেনি। এ বিষয়ে দ্রুত তদন্ত করা হবে। আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে।
হালদা নদী রক্ষায় সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টার বিকল্প নেই। শুধু প্রশাসন কিংবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষে একা হালদাকে রক্ষা করা সম্ভব নয় বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বক্তারা।
সোমবার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত ‘হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র ও মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে অংশীজনের উদ্বুদ্ধকরণ সেমিনার’-এ এসব মতামত উঠে আসে। এ সেমিনারটি আয়োজন করে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়, যার অর্থায়ন করে মৎস্য অধিদপ্তর চট্টগ্রামের হালদা নদীর প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজননক্ষেত্র উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্প (২য় পর্যায়)।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. শওকত আলীর সভাপতিত্বে সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছিলেন প্রকল্প পরিচালক মুহাম্মদ মিজানুর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন।
ইউএনও তিনি তার বক্তব্যে বলেন, হালদায় মাছ নিধনে বিষ প্রয়োগকারীদের তথ্য দিলে পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেন।
বক্তারা বলেন, পাহাড়ি ঢলে যেমন মা মাছ ডিম ছাড়ে, তেমনি উজান থেকে বালু নামায় নদীটির নাব্যতা কমে যাচ্ছে। এজন্য ম্যানুয়ালি বালু অপসারণ জরুরি হয়ে পড়েছে। এছাড়া ডলফিন বা মা মাছের মৃত্যুর কারণ নির্ণয়ে হালদার নিজস্ব ল্যাব স্থাপনের আহ্বান জানানো হয়। নদীকে দূষণমুক্ত রাখতে সংলগ্ন সব কারখানাকে ইটিপির আওতায় আনা, শাখা খালগুলোর খনন, প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং স্লুইসগেট যথাসময়ে খোলা-বন্ধ রাখার উপর গুরুত্বারোপ করেন তারা।
বক্তারা আরও বলেন, বর্শি, ভাসা জাল, ঘেরা জাল ও বিষ প্রয়োগের মাধ্যমে মাছ নিধন বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সঙ্গে টেনারি বর্জ্য, পোল্ট্রি ফার্মসহ যে কোনো বর্জ্য থেকে হালদাকে রক্ষা করাও সময়ের দাবি।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুজন কানুনগো, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিয়াজ মোর্শেদ, ফরহাদাবাদ ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শফিউল আজম, মেখল ইউনিয়ন পরিষদের রাশেদুল আলম, থানার সেকেন্ড অফিসার নাজমুল হাসান, সাংবাদিক কেশব কুমার বড়ুয়া, এইচ এম মনসুর আলী, সাংবাদিক খোরশেদ আলম শিমুল, মো. বোরহান উদ্দিন, জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত ডিম সংগ্রহকারী কামাল সওদাগর, ডিম সংগ্রহকারী সমিতির সভাপতি মো. শফিউল আলম, শহিদুল হক, আশু বড়ুয়া প্রমুখ।
চারিদিকে চা বাগান আর সবুজ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা পরিবেশের মধ্যে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের সাতগাঁও ইউনিয়নের ইছামতী চা বাগানে অবস্থিত মঙ্গলচণ্ডী মন্দিরে শুরু হয়েছে দেশের একমাত্র আগাম দুর্গাপূজা। বাদ্যযন্ত্র, উলুধ্বনি, অঞ্জলি ও আরতী প্রদানের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে পূজা চলছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও শারদীয় দুর্গাপূজার ছয়দিন আগেই শুরু হয়েছে এই বিশেষ পূজা। সোমবার সকালে দেবী দুর্গার প্রথম রূপ শৈলপুত্রী পূজার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পৌরাণিক নিয়ম অনুযায়ী আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে দেবীর ব্রহ্মচারিণী, চন্দ্রঘণ্টা, কুষ্মাণ্ডা, স্কন্দমাতা, কাত্যায়নী, কালরাত্রী, মহাগৌরী ও সিদ্ধিদাত্রী রূপের পূজা অনুষ্ঠিত হবে।
হবিগঞ্জ থেকে পূজা দেখতে আসা অন্নপূর্ণা চক্রবর্তী বলেন, ‘দুর্গাপূজা আমাদের সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব। সাধারণত ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত পূজা হয়ে থাকে। কিন্তু এখানে নয়দিন ধরে দেবীর ভিন্ন ভিন্ন রূপে পূজা হয়। ফলে আনন্দের দিনগুলোও বেড়ে যায়। আমরা এসে বিভিন্ন রূপের পূজা প্রত্যক্ষ করেছি।
খুলনা থেকে আগত বিশ্বজিৎ সাহা জানান, ‘পরিবারের সঙ্গে জীবনে প্রথমবারের মতো নবদুর্গা পূজা দেখতে এসেছি। এখানে মা দুর্গার অনেকগুলো প্রতিমা রয়েছে। এরকম আয়োজন আগে কখনও দেখিনি, সত্যিই অসাধারণ।’
শ্রী মঙ্গলচণ্ডী সেবাশ্রম নবরূপে নবদুর্গা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজন ভট্টাচার্য জানান, প্রায় ৫০০ বছর আগে এখানে দেবী মঙ্গলচণ্ডীর পূজা শুরু হয়েছিল। সেই ধারাবাহিকতায় ১৫ বছর আগে নবদুর্গা পূজার বিশেষ আয়োজন চালু হয়, যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলচণ্ডী নবদুর্গা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল ভৌমিক দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘বাংলাদেশে এটিই একমাত্র আগাম দুর্গাপূজা, যা টানা ১৫ বছর ধরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দেবীর ৯টি রূপের পূজা শেষে দশমীতে সম্পন্ন হবে বিসর্জন।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে ভক্তরা ও দর্শনার্থীরা ভিড় করছেন এই পূজা দেখতে। উৎসবমুখর পরিবেশে হাজারো মানুষের সমাগমে পূজামণ্ডপ এলাকা রূপ নিয়েছে এক মহাসমারোহে।’
ভরা মৌসুমেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা নেই বরিশালে। সংকটের কারণে চাহিদামতো রপ্তানি করতে পারছে না ব্যবসায়ীরা। এতে ধস নেমেছে ব্যবসায়, আর সাধারণ ক্রেতারা পড়েছেন আকাশছোঁয়া দামের চাপে।
বরিশাল নগরীর পোর্ট রোড মৎস্য আড়তের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, আগে প্রতিদিন এক থেকে দেড় হাজার মণ ইলিশ আসত মোকামে। বর্তমানে দিনে ৩০ থেকে ৪০ মণও মিলছে না। ইলিশের এমন টানাপড়েন বাজারে তৈরি করেছে অস্থিরতা। সাধারণ ক্রেতা থেকে খুচরা বিক্রেতা সবাই পড়েছেন বিড়ম্বনায়।
এবার দুর্গাপূজায় ভারতে ১ হাজার ২০০ টন ইলিশ রপ্তানির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। ইতোমধ্যে ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে বরিশালের চারটি প্রতিষ্ঠান রপ্তানির অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন অনিশ্চয়তায়।
গত বছরের তুলনায় রপ্তানির পরিমাণ কমেছে উল্লেখযোগ্য হারে। ব্যবসায়ীরা জানান, গত বছর রপ্তানি শুরুর ৬ দিনে বরিশাল থেকে ভারতে গিয়েছিল প্রায় দেড়শ মণ ইলিশ। কিন্তু এবার একই সময়ে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৮০ মণ।
মোকামে ইলিশের দামও রেকর্ড গড়েছে, ৫০০ গ্রামের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ৬৪ হাজার টাকায়,৯০০ গ্রামের ইলিশ ৮০ হাজারে, এক কেজি ওজনের ইলিশ ৯২ হাজারে, ১২০০ গ্রামের ইলিশের দাম ছাড়িয়েছে ৯৭ হাজার টাকা। ছোট সাইজের ইলিশেও ব্যাপক ওঠানামা দেখা যাচ্ছে। আড়তদারদের অভিযোগ, গত বছরের তুলনায় সরবরাহ কয়েকগুণ কমে গেছে। ফলে ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়ছেন।
আল আমিন হাওলাদার নামে এক ক্রেতা জানান,আমরা নিম্ন আয়ের মানুষ বাজারে মাছ কিনতে এলে দাম দেখেই ফিরে যেতে হয়, কেনার সামর্থ্য থাকে না। ইলিশের এমন সংকট যদি চলতে থাকে, ভবিষ্যতে হয়তো এই মাছ একেবারেই হারিয়ে যাবে।
বরিশাল পোর্টরোড মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতি সভাপতি কামাল সিকদার বলেন,গত বছর বরিশাল থেকে ২৪ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল ভারতে। কিন্তু এবার বেশি দাম দিয়েও পর্যাপ্ত ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না।
বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মো. জহিরুল ইসলাম আকন্দ জানান, নদীতে ইলিশের আগমন এখন বড় চ্যালেঞ্জের মুখে। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পৌরসদরের আদালতপাড়ায় অবস্থিত বউ সাঁজ বিউটি পার্লার থেকে ১০ লাখ ১৮ হাজার টাকার জাল নোট, একটি বিদেশি পিস্তল ও ৩ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত রোববার সন্ধ্যায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
জানা গেছে, জব্দ হওয়া সব জাল নোটের সিরিয়াল নম্বর একই- ট ৮৬২৭৩৬৯। অভিযানের সময় পার্লার মালিক বিলকিস বেগমকে পাওয়া যায়নি। তবে ঘটনাস্থল থেকে পার্লারের তিনজন নারী কর্মচারীসহ চারজনকে আটক করে পুলিশ। সোমবার তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে আদালতে চালান করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- শেফালী আক্তার সাথী (৪২), স্বামী আলাউদ্দিন, গ্রাম কিশোরপুর, নবীনগর ; তাশলিমা আক্তার, পিতা: আব্দুল সালাম, করিমশাহ এলাকা, নবীনগর পূর্বপাড়া ; খাদিজা আক্তার, পিতা: মৃত আমিন মিয়া, নবীনগর পূর্বপাড়া ; লাকী বেগম পিতা: সুলতান খন্দকার, গ্রাম: ইব্রাহিমপুর।
এ ঘটনায় এলাকায় চরম আতঙ্ক ও উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সমাজসেবিকা সাবিনা ইয়াসমিন পুতুল বলেন, ‘জনবহুল এলাকায় এ ধরনের ঘটনা সত্যি আতঙ্কের। আমরা চাই সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের আইনের আওতায় আনা হোক এবং কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়।’
এদিকে গ্রেপ্তারকৃত ম্যানেজার শেফালী আক্তার সাথীর দাবি, তারা ঘটনার সাথে জড়িত নন। তার ভাষ্য, এক যুবতী হাইড্রা ফেসিয়ালের কথা বলে পার্লারে এসে দরদাম করার পর একটি ব্যাগ রেখে বাইরে যায়। কিছুক্ষণ পর পুলিশ এসে সেই ব্যাগ থেকেই জাল নোট ও অস্ত্র উদ্ধার করে।
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, এক মেয়ে হাতে ব্যাগ নিয়ে পার্লারের সামনে নামছে। তবে সে আসলেই পার্লারে প্রবেশ করেছে কিনা তা ফুটেজে স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, সচেতন এলাকাবাসী ও ছাত্র সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। তারা পার্লারের সুনাম নষ্টের ষড়যন্ত্রকারীদের গ্রেপ্তার এবং আটক কর্মচারীদের মুক্তির দাবি জানান।
অভিযান পরিচালনাকারী নবীনগর থানার ওসি মো. শাহীনুর ইসলাম জানান, ‘একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে এই পার্লার থেকে জাল নোট ছাপানো ও সঞ্চয়ের কাজ চালিয়ে আসছিল। তারা আসন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবকে কেন্দ্র করে জাল নোট বাজারজাতের প্রস্তুতি নিচ্ছিল। গ্রেপ্তারকৃতদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলেও জানান তিনি।’
সিরাগঞ্জের এনায়েতপুরের চাঁদপুরে যমুনার তীব্র স্রোতে ঘূর্ণাবর্তে প্রায় ২৫টি বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। গবাদিপশুসহ ঘরবাড়ির টিনের চাল চোখের সামনে নদী গর্ভে চলে যাওয়ায় এলাকাজুড়ে ভাঙন আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে ঘরবাড়ি ছাড়াও মসজিদ, মাদ্রাসা, সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চবিদ্যালয়সহ প্রায় ৫ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হয়ে যেতে পারে।
গত রোববার দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, কেউ ঘরের খুঁটি খুঁলছে, কেউবা টিনের চাল সরিয়ে অন্যত্র নিয়ে যাচ্ছে। নারীরা বিছানাপত্র ও রান্নার জিনিসপত্র নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছে। আশপাশের বহু মানুষসহ যমুনা পাড়ে বয়স্ক ও শিশুদের ভিড়। গত শুক্রবার বিকালের দিকে যমুনার তীব্র স্রোত ও ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে সদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের চাঁদপুর চরের বসতি লালচাঁন, জুড়ান, সাইফুল, রবি, ইয়াদুল, ডা. এরশাদের বাড়িসহ বেশ কয়েকটি বাড়ি কয়েক মিনিটের মধ্যে নদীতে চলে যায়।
বয়োবৃদ্ধ আতাহার মণ্ডল জানান, ৭৩ বছব বয়সে প্রায় ২৫ বার নদী গর্ভে চলে গেছে তার বসতভিটা। তবে এভাবে হঠাৎ করে যমুনার আগ্রাসী থাবায় লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। এ গুলো দেখলে কেউ স্বাভাবিক থাকতে পারবে না। বেশ কয়েক বছর ধরেই চাঁদপুর এলাকায় নদীভাঙনে কয়েকশত ঘরবাড়ি নদীতে চলে গেছে। অবশিষ্ট এলাকা রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। এখন আমরা যাব কোথায়?
এ বিষয়ে সদিয়া দেওয়ানতলা সংকরহাটি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রশিদ জানান, ভাঙন এলাকা থেকে মাত্র ৫৫ মিটার দুরে হাইস্কুল কমপ্লেক্স ভবন। এছাড়া অন্তত ৫টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় হুমকিতে রয়েছে। কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর শিক্ষাজীবন অনিশ্চিতের দিকে। দ্রুত স্থায়ী তীর সংরক্ষণে জিওব্যাগ ডাম্পিং করতে হবে। ভাঙন অব্যাহত থাকলে স্কুলগুলো নদীগর্ভে চলে যাবে।
সমাজসেবক হাফিজুর রহমান, শিক্ষক ইকবাল হোসেন ও আব্দুল মমিন, শিক্ষার্থী মনিরুল ইসলাম জানান, নদীভাঙনের ভয়াবহতা দেখে আমরা হতবাক, চোখের সামনে কয়েশ মিটার এলাকা বিলীন হয়েছে। প্রায় ৩০টি বসতভিটা নদীতে চলে যাওয়ায় আমরাও আতঙ্কিত। এই চরের আশপাশের অন্তত ১২টি ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় কয়েক হাজার মানুষ বসতি স্থাপন করেছিল। ভাঙনে সবাই এখন আতঙ্কিত। ক্ষতিগ্রস্ত সকল অসহায় পরিবারকে বিশেষ সহায়তা দেওয়ার দাবি জানাই।
এদিকে ভাঙন এলাকা পরিদর্শনে এসে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ পারভেজ জানান, প্রায় ৩০০ মিটার এলাকা ও বেশ কিছু বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়েছে। দ্রুত জিওব্যাগ ডাম্পিংসহ ভাঙন রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সুন্দরবনের সংলগ্ন নদী-খাল থেকে নিদারুণভাবে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে, কিছু ক্ষেত্রে সীমান্তপথে পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়দের মতে, দিনে কিংবা গভীর রাতে ট্রলার ও নৌকা ব্যবহার করে নির্বিচারে এ আহরণ চলছে, যা বনভূমি ও নদীর তলদেশীয় পরিবেশের ভারসাম্য বিপন্ন করছে।
অবৈধ আহরণকারীদের অর্থের লোভে পরে প্রান্তিক জেলেদেরও এ কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। স্থানীয় সূত্রে বলা হয়, কয়েকশো মণ শামুক একদিনে সংগ্রহ করা হচ্ছে এবং তা সামগ্রিকভাবে সংঘবদ্ধ চক্রের মাধ্যমে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সীমান্তপথে পাচার করা হচ্ছে। কিছু ব্যবসায়ী এসব শামুক ১৫ টাকা দরে কিনে ৮০ টাকা দরে বিক্রি করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
পরিবেশবিদ ও গবেষকরা জানান, শামুক-ঝিনুক নদীর তলদেশের মাটির গুণগত মান বজায় রাখতে, মাটির উর্বরতা রক্ষায় এবং নদীতে বাস করা মাছের খাদ্য চক্র বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। অধ্যাপক আশেক এলাহী ও গবেষক গৌরাঙ্গ নন্দীর মত অনুযায়ী, ব্যাপক হারে এ প্রাণীর নিধন হলে নদী জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশগত ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার ভয় রয়েছে। সুন্দরবনে আনুমানিক ২৬০ প্রজাতির প্রাণী রয়েছে- তাদের মধ্যে শামুক ও ঝিনুকের গুরুত্ব উল্লেখযোগ্য।
আইনি দিক থেকেও সমস্যা গুরুতর। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নদী, খাল ও প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে শামুক ও ঝিনুক কুড়িয়ে নেওয়া বা পরিবহন করা নিষিদ্ধ। এ ধরনের কার্যক্রম পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) ও জলজ সম্পদ সংরক্ষণ আইন, ১৯৫০-এর আওতায় অপরাধ হিসেবে দণ্ডনীয়।
তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, সাতক্ষীরার রেঞ্জ—পশ্চিম সুন্দরবনের পশুরতলা খাল, কৈখালীর মাদার নদী ও জয়াখালীর খালসহ বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে শামুক আহরণ হয়ে থাকে। আগাস্ট মাসের শুরুতে বন বিভাগের এক অভিযানে পার্ক সংলগ্ন মালঞ্চ নদী থেকে শামুক ও ঝিনুক ভর্তি নৌকা জব্দ করে মুন্সিগঞ্জ ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির সদস্য ও নৌপুলিশ। পরে কদমতলা স্টেশন থেকে উদ্ধার করা দশ বস্তা শামুক-ঝিনুক নদীতে ছেড়ে দেওয়া হয়।
শ্যামনগর উপজেলার পরিবেশকর্মী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘শুধু নৌকা জব্দ করলেই হবে না; চক্রের মূলহোতাদের সনাক্ত করে তাদের উৎসকে নির্ণয় করতে হবে। আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনগণের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরী।’ সাতক্ষীরা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম ফজলুল হক বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে; শামুক-ঝিনুক সংগ্রহ ও পাচার নদী সংরক্ষণ আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন—অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।
ময়মনসিংহের সদর উপজেলা থেকে প্রায় ১৬ কিলোমিটার দূরে মোক্ষপুর ইউনিয়নের কইতর বাড়ি (খলাবাড়ি) এলাকায় আড়াই একর জমিতে বিদেশি রেড লেডি জাতের পেঁপে চাষ করেছেন কৃষক রফিকুল ইসলাম। পেঁপের বাম্পার ফলন হাওয়ায় ত্রিশালের রফিক হয়েছেন আর্থিকভাবে লাভবান।
বিদেশি জাতের পেঁপে চাষের কিছু বিশেষ সুবিধা আছে, যা রফিককে সফল হতে সাহায্য করেছে। এই জাতের পেঁপের স্বাদ, রং এবং আকার ভালো হওয়ায় বাজারে এর চাহিদা অনেক বেশি এবং দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে।
এছাড়াও বিদেশি জাতের পেঁপেতে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম, তাই ফলন নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি নেই। রফিক বলেন, পেঁপে চাষের সময় জমিতে যেন পানি জমে না থাকে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে পাশাপাশি চারা রোপণের আগে জমি ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিতে হবে। তাহলেই জমিতে পেঁপের ভাল ফলন হবে।
ত্রিশাল উপজেলা কৃষি কমকর্তা তানিয়া রহমান বলেন, রফিকের বাগানে বাম্পার ফলন হয়েছে। এক একটি গাছে ৪০ কেজির মতো করে পেঁপে এসেছে। ১৪ থেকে ১৫ লাখ টাকা লাভ হবে বলে জানিয়েছে রফিক। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে আমরা তার বাগানের নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছি।
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বারবাজারের বাদুরাগাছা গ্রামে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী শাহ গাজীকালুর চম্পাবতীর মাজার কমিটির বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। সোমবার সকালে মাজার প্রাঙ্গণে মাজার কমিটি আয়োজিত এই সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সভাপতি মো. মাহাবুবুর রহমান।
সে সময় কমিটির সিনিয়র সহসভাপতি মনিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান, সহ-সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন, কোষাধ্যক্ষ শফিকুল ইসলামসহ অন্যান্য সদস্যরা।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, একটি মহল সম্প্রতি মাজারের কমিটির বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের মিথ্যা অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে। যার কোনো ভিত্তি বা প্রমাণ নেয়।
কমিটির নেতৃবৃন্দ জানান, প্রতিবছর মাজারে দুটি বড় মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। একটি ফাল্গুন মাসে, অন্যটি ভাদ্র মাসে। সর্বশেষ আয়োজিত মাহফিলে বিভিন্ন খাত থেকে আয় হয়েছিল ৪ লাখ ৩৮ হাজার ১১৬ টাকা। এর মধ্যে ব্যয় হয়েছে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯২০ টাকা। অবশিষ্ট ৩ লাখ ৩৮ হাজার ১১৬ টাকা বর্তমানে বারবাজার সোনালী ব্যাংকে জমা আছে। তাই প্রশ্ন থেকেই যায়-এখানে ১৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আসলো কীভাবে?
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা দাবি করেন, বিগত ১৭ বছর ধরে যারা মাজার কমিটি পরিচালনা করেছেন, তারা কখনোই আর্থিক হিসাব দেননি, এমনকি কোনো ব্যাংক হিসাবও খোলা হয়নি। অথচ বর্তমান কমিটি গঠিত হওয়ার পর থেকেই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার মাধ্যমে সব কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
কিশোরগঞ্জে পুলিশি বাঁধায় হেযবুত তাওহীদের গোলটেবিল বৈঠক পণ্ড হয়ে গেছে। সোমবার সকাল ১১ টার দিকে শহরের একটি রেস্তোরাঁয় কনফারেন্স রুমে গোলটেবিল বৈঠক শুরু হওয়ার পর বেলা সোয়া ১১ টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত হয় কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল। পরে পুলিশের বাঁধার কারণে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি হয়নি।
কেন্দ্র ঘোষিত ‘রাষ্ট্র সংস্কারের প্রস্তাবনা- তওহীদভিত্তিক আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা’ শিরোনামে ওই বৈঠকের আয়োজন করেছিল সংগঠনের জেলা শাখা।
এ বৈঠক আয়োজনের কয়েক দিন আগে থেকেই জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের দাওয়াত দেয়া হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও অনুষ্ঠান সম্পর্কে প্রচার-প্রচারণা চালানো হয়।
সদর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন অনুষ্ঠানে এসে ওই বৈঠকের অনুমতি নেই বলে বাঁধা দেন। ফলে হেযবুত তওহীদের নেতা–কর্মীরা বৈঠক করতে পারেননি। পরে সংগঠনের লিফলেট বিতরণ করে উপস্থিতিদের বিদায় দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এ অনুষ্ঠান করার জন্য প্রশাসনের কাছ থেকে তারা কোনো অনুমতি নেয়নি। অনুমতি ছাড়া এগুলো করা ঠিক না। এ জন্য আমরা তাদের অনুষ্ঠান বন্ধ করেছি।’
যশোর ও খুলনার ভবদহ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়েছে।
আজ রাজধানীর পান্থপথে পানি ভবনে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষে স্বাক্ষর করেন যশোর পানি উন্নয়ন সার্কেল, খুলনার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী ও প্রকল্প পরিচালক বি. এম. আব্দুল মোমিন। সেনাবাহিনীর পক্ষে স্বাক্ষর করেন ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেডের প্রকল্প পরিচালক লে. কর্নেল মামুন উর রশিদ, এএফডব্লিউসি, পিএসসি।
প্রকল্পের আওতায় যশোর ও খুলনা অঞ্চলের হরিহর নদী (৩৫ কিমি), হরি-তেলিগাতি নদী (২০ কিমি), আপারভদ্রা নদী (১৮.৫ কিমি), টেকা নদী (৭ কিমি) ও শ্রী নদী (১ কিমি)সহ মোট ৫টি নদীর ৮১.৫ কিমি পুনঃখনন করা হবে। এ জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩৯৯৮ দশমিক ১৯ লক্ষ টাকা। সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী সেনাবাহিনী “অর্পিত ক্রয়কার্য (Delegated Procurement)” পদ্ধতিতে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
নদী খননের পাশাপাশি নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নয়ন, ড্রেজড মাটি সংরক্ষণ ও স্থানীয় জনগণের চলাচলের রাস্তা হিসেবে ব্যবহারযোগ্য করা হবে। পরিবেশবান্ধব পুনঃখনন নিশ্চিত করতে টার্ফিং ও বৃক্ষরোপণ কার্যক্রমও হাতে নেওয়া হবে।
এ সময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. এনায়েত উল্লাহ বলেন, ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং সেনাবাহিনী যৌথভাবে কাজটি বাস্তবায়ন, তদারকি ও অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করবে। কাজ সম্পন্ন হলে এ অঞ্চলের দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা নিরসনে বড় পরিবর্তন আসবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো. এনায়েত উল্লাহ ছাড়াও অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাপাউবোর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল, খুলনার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আমিনুল ইসলাম; সেনাবাহিনীর স্টাফ অফিসার-১ (পরিকল্পনা) লে. কর্নেল তানভীর আহমেদ, পিএসসি; যশোর পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী পলাশ কুমার ব্যানার্জী এবং সেনাবাহিনীর প্রকল্প কর্মকর্তা মেজর গাজী নাজমুল হাসান।
নীলফামারীতে এস.এস.সি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ৭০ জন মেধাবী শিক্ষার্থীকে জেলা পরিষদের উদ্যোগে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়েছে। সোমবার পরিষদের হলরুমে পাঁচ হাজার টাকা করে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান করা হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে শিক্ষার্থীদের হাতে এই অর্থ তুলে দেন জেলা পরিষদ প্রশাসক ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।
সভাপতিত্ব করেন জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান বলেন, ‘আজকের (সোমবার) মেধাবীরাই আগামী দিনের সম্পদ। শুধু ফলাফলে নয়, সৎ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক হিসেবেও গড়ে উঠতে হবে। জেলা পরিষদের এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে। শিক্ষা খাতে সহযোগিতা ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।’
প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দীপঙ্কর রায় জানান, ‘শিক্ষাই জাতির অগ্রগতির মূল ভিত্তি। এ বৃত্তি শিক্ষার্থীদের স্বপ্নপূরণে সহায়ক হবে। প্রতি বছরই মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ানো হবে। ভবিষ্যতে এর পরিধি আরও বাড়ানো হবে।’
ফেনীতে ১৫০ পূজামণ্ডপে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। দুর্গোৎসবকে সামনে রেখে প্রতিমা তৈরির কাজ শেষ পর্যায়ে। এখন চলছে সাজসজ্জা ও মণ্ডপ নির্মাণের কাজ।
ফেনীতে গত বছর ১৪৭টি পূজামণ্ডপে পূজা উদযাপন হলেও তা এবার বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর তিনটি বেড়ে ১৫০টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্র জানায়, এ বছর কোনো পূজামণ্ডপকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করা হচ্ছে না, তবে সার্বিকভাবে সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি এ বছর দুর্গোৎসবের নিরাপত্তায় থাকবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও বিজিবি। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় সর্বোচ্চ সতর্কাবস্থায় রয়েছে জানালেন পুলিশ সুপার।
এ বছর দুর্গাপূজায় মা দুর্গা হাতিতে চড়ে আসবেন এবং দোলায় করে গমন করবেন। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় উৎসব উদযাপন উপলক্ষে প্রতিটি মণ্ডপে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।
দুর্গাপূজায় পুলিশ, র্যাব, আনসারের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিজিবি নিরাপত্তায় সহযোগিতা করবে। মণ্ডপগুলোতে চলছে সাজসজ্জা ও প্রতিমা তৈরির কাজ। কোনো কোনো মন্দিরে দেখা যায় প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ। দুর্গোৎসব পালনের জন্য সরকারি সহযোগিতা আগের তুলনায় বৃদ্ধির দাবিও জানিয়েছেন অনেকে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেক মন্দিরে সিসি ক্যামেরা সচল রাখা ও পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত রাখতে বলা হয়েছে। সেনাবাহিনী ও বিজিবির টহল জোরদার করা হলে কোনো বিশৃঙ্খলা হবে না- এমনটাই মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ফেনীতে ১৫০টি পূজা মণ্ডপের মধ্যে কোনো ঝুঁকিপূর্ণ মণ্ডপ নেই। তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে প্রতিটি পূজামণ্ডপে প্রশাসনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানানো হয়েছে। দুর্গোৎসব সফল করতে সব ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। মন্দির কমিটিগুলো সতর্ক করা হয়েছে।
ফেনী শহরে সবচেয়ে বড় ও বেশি প্রতিমা তৈরি হচ্ছে শ্রী শ্রী গুরুচক্র মন্দিরে। প্রতিমা তৈরির কারিগর সুশীল পাল গত ৪০ বছর যাবত প্রতিমা তৈরি করে আসছেন। তিনি বলেন, আমরা অত্যন্ত সুন্দর ও নিখুঁতভাবে সেরা প্রতিমা তৈরি করে থাকি। ভক্তরা খুবই পছন্দ করেন।
শ্রী শ্রী গুরুচক্র মন্দিরের পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক শিফন চৌধুরী বলেন, এই মন্দিরে প্রতিমা তৈরিতে আমাদের কারিগররা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, যাতে ভক্তদের মন জুড়িয়ে যায়।
শহরতলির বারাহীপুর সার্বজনীন পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি তপন কুমার কর বলেন, আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি শহর থেকে প্রত্যন্ত গ্রাম- সবখানেই দুর্গাপূজা উদযাপনের জন্য সবার মাঝে আনন্দ উৎসব পরিলক্ষিত হচ্ছে। আমাদের প্রত্যাশা, এবার অত্যন্ত সুন্দর ও আনন্দঘন পরিবেশে পূজা উদযাপন হবে।
ফেনী জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হীরালাল চক্রবর্তী বলেন, সনাতন হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সর্ববৃহৎ আনন্দ-উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব। এবারের পূজায় কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা যেন না ঘটে- এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। অত্যন্ত আনন্দঘন পরিবেশে এ উৎসবটি পালিত হবে- এটাই আমরা প্রত্যাশা করি।
ফেনী জেলা হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি শুক দেবনাথ তপন বলেন, সকল ধর্মের জনগণের প্রতি আমাদের আহ্বান- শারদীয় দুর্গোৎসবটি সুন্দর ও শান্তিশৃঙ্খলার মাধ্যমে পালনে সবাই যেন সহযোগিতা করেন। জেলার সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের প্রতিও এ ব্যাপারে সজাগ ও সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানাই।
হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট পার্থ পাল চৌধুরী বলেন, দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে আমরা বারবার জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, রাজনৈতিক নেতারা, সামাজিক সংগঠনের নেতারাসহ সবার সাথে বৈঠক করেছি। আমাদের প্রত্যাশা, এবার দুর্গাপূজা সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠিত হবে।
ফেনী পুলিশ সুপার বলেন, নাশকতা ঠেকাতে মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। দুর্গোৎসব ঘিরে যেন কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, পূজার পূর্বেই গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। মন্দিরগুলোতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কমিটি নিয়ে দ্বন্দ্ব ও মন্দিরের জায়গা-সংক্রান্ত বিরোধ দুর্গাপূজার আগেই সমাধান করতে হবে, তা না হলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাত্র তিন মাসের ব্যবধানে নীলফামারী জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হলেন প্রীতম সাহা। তিনি কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
গত রোববার জেলা প্রশাসন হলরুমে জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সভায় নীলফামারীর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এ সম্মাননা সনদ প্রদান করেন।
বাল্যবিবাহ, মাদক, অবৈধ বালু উত্তোলন ও অসাধু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাসহ বিশেষ অবদান রাখায় তিনি জেলার শ্রেষ্ঠ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নির্বাচিত হয়। তিনি বিসিএস ৩৫তম ব্যাচের (প্রশাসন) ক্যাডার মেধাবী কর্মকর্তা। ২০২৫ সালের ০১ জুলাই তিনি কিশোরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে যোগদান করেন। দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র তিন মাসের মধ্যেই তিনি নিষ্ঠা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উপজেলাবাসীর কল্যাণে কাজ করে তাদের মনে জায়গা অর্জন করেছেন।
জানাগেছে এর আগে তিনি যশোর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে তিন বছর সঠিভাবে দায়িত্ব পালন করে জেলার শ্রেষ্ঠ কর্মকর্তা নির্বাচিত হয়ে শুদ্ধাচার পুরস্কার পান।
এরপর দিনাজপুর জেলার পার্বতীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দিনাজপুর জেলার শ্রেষ্ঠ এসিল্যান্ড নির্বাচিত হয়ে পুরস্কার পেয়েছেন।
তিনি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ থেকে কৃষিতে স্নাতক ও স্নাতোকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা বলেন, যোগদানের পর থেকেই উপজেলাবাসীর সহযোগিতা পেয়েছি। জেলা প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ, জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট,উপজেলার সকল দপ্তরের কর্মকর্তাগণ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং সাধারণ মানুষের ঐকান্তিক সহযোগিতায় প্রতিটি কাজ সহজ হয়েছে। এজন্য আমি সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে উপজেলাকে কিভাবে রোল মডেল উপজেলা হিসেবে গড়ে তোলা যায় সেজন্য টিম গঠন করে কাজ করে যাচ্ছি। আগামী দিনেও যেন এরকম আরও সাফল্য অর্জন করতে পারি সেজন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেন।