শুক্রবার, ৯ মে ২০২৫
২৬ বৈশাখ ১৪৩২

পুরোপুরি জেন্ডার সমতা অর্জনে লাগবে আরও ৩০০ বছর

প্রতীকী ছবি। সংগৃহীত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত
দৈনিক বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত : ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১২:২৭

জেন্ডার সমতা অর্জনের চেষ্টায় অগ্রগতির চলমান হার বিবেচনা করলে সেটা পুরোপুরি অর্জন করতে আরও প্রায় ৩০০ বছর লাগবে। জাতিসংঘ গত বুধবার এক প্রতিবেদনে এ কথা জানিয়েছে।

এএফপি জানায়, জাতিসংঘের অধীন ইউএন উইমেন ওই গবেষণা প্রতিবেদন সংকলন করেছে। এতে বলা হয়, বর্তমান বেশ কয়েকটি সংকটের কারণে জেন্ডার বৈষম্য বেড়েছে। জেন্ডার সমতা অর্জনের চেষ্টায় চলমান অগ্রগতির ধারা অনুযায়ী আইনি সুরক্ষায় বৈসাদৃশ্য দূর করতে এবং বৈষম্যমূলক আইনগুলো বাতিল করতে প্রায় ২৮৬ বছর লেগে যাবে। আর কর্মক্ষেত্রে সমান ক্ষমতা ও নেতৃত্বমূলক স্থান অর্জনে নারীর আরও ১৪০ বছর লাগবে। এ ছাড়া জাতীয় আইনসভা বা পার্লামেন্টে সমান প্রতিনিধিত্ব পেতে অন্তত ৪০ বছর লাগবে।

জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার আওতায় ২০৩০ সালে জেন্ডার সমতা অর্জনের যে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছিল, তার চেয়ে বর্তমান বাস্তবতা অনেক দূরে। এ বিষয়ে ইউএন উইমেন এক বিবৃতিতে জানায়, কোভিড-১৯ মহামারি ও তার পরবর্তী প্রভাব, সহিংস যুদ্ধবিগ্রহ, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভৃতি বৈশ্বিক সংকট এবং নারীর যৌন ও প্রজননস্বাস্থ্য ও অধিকার প্রভৃতি নিয়ে নেতিবাচক মনোভাবের কারণে এখনো জেন্ডার বৈষম্য প্রকট আকারে রয়ে গেছে।

২০২২ সালের শেষ নাগাদ আনুমানিক ৩৮ কোটি ৩০ লাখ নারী ও মেয়ে চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করবে যাদের আয় দিনে এক দশমিক নয় ডলারেরও কম। একই সময়ে এমন দুরবস্থায় থাকা পুরুষ ও ছেলেদের সংখ্যা হবে আনুমানিক ৩৮ কোটি ৮০ লাখ। দারিদ্র্য বিমোচনের লড়াইয়ে নিঃসন্দেহে এটা এক নেতিবাচক চিত্র।

২০২১ সালের শেষ নাগাদ বিশ্বজুড়ে ৪ কোটি ৪০ লাখ নারী ও মেয়ে জোরপূর্বক বাড়িছাড়া হয়েছে। এটা যেকোনো সময়ের হিসেবে সবচেয়ে বেশি। একই সময়ে সন্তান ধারণের উপযোগী ১২০ কোটি নারী ও মেয়ে এমন দেশগুলোতে বসবাস করছে যেখানে গর্ভপাতের ওপর নিষেধাজ্ঞা বা নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।

ইউএন উইমেনের নির্বাহী পরিচালক সিমা বাহুস বলেন, ‘উপার্জন, নিরাপত্তা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে নানা বৈশ্বিক সংকটের প্রভাবে নারীর জীবন উন্নতির পরিবর্তে আগের অবস্থার দিকে চলে যাচ্ছে। প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী এটা অস্বীকার করার উপায় নেই। অবস্থার পরিবর্তনে উদ্যোগী হতে যত দেরি হবে, মাশুলও তত বেশি দিতে হবে।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট আরও করুণ

জাতিসংঘের এ গবেষণাটিকে পুরো বিশ্বের বাস্তব অবস্থার সত্যিকার প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি সালমা আলী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের প্রেক্ষপটে জেন্ডার সমতার বিষয়টি এখন সুদূরপরাহত মনে হয়। কেননা দশ বছর আগেও এ দেশের মানবাধিকার সংস্থাগুলো নারীর প্রতি সব ধরনের বৈষম্য বিলোপ সনদ (সিডও) নিয়ে যতটা সোচ্চার ছিল, এখন ততটুকুও আর দেখা যাচ্ছে না। নীতিনির্ধারণী পর্যায়েও সিডও সনদ বাস্তবায়নের কোনো কার্যকর প্রক্রিয়া নেই। অথচ নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও নারী পুরুষের বৈষম্য দূর করতেই ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশে সিডও সনদে স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করে। সংসদে নারী সদস্য থাকলেও নারীর সুরক্ষা নিয়ে তাদের শক্ত কোনো ভূমিকা নেই।

২০০৯ সালে যৌন নিপীড়ন নিয়ে একটি রায়ের পর আইনের আলোকে যে গাইডলাইন এসেছে, তাতে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একটি করে কমিটি করার কথা বলা হয়েছে। অথচ বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানেই সেই কমিটি অনুপস্থিত। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও এ নিয়ে কোনো তাগাদা বা কার্যক্রম নেই।

পথে-ঘাটে, যানবাহনে, কর্মক্ষেত্রে হরহামেশা নারীদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনা ঘটলেও এ নিয়ে কোনো আইন হয়নি এখন পর্যন্ত। এগুলো দেখলেই বোঝা যায়, মেয়েরা এখনো কতটা বঞ্চিত। অনেক মেয়ে এখনো আইনের দ্বারস্থ হতে পারে না দ্বিতীয়বার ভুক্তভোগী হওয়ার ভয়ে।

২০১০ সালে প্রণীত পারিবারিক সহিংসতা (প্রতিরোধ ও সুরক্ষা) আইনের বাস্তবায়ন নেই বললেই চলে। এ জন্য কোনো বাজেট বরাদ্দ নেই। এমনকি সরকারের পক্ষ থেকে ভুক্তভোগী ও সাক্ষীদের সুরক্ষা দেয়ারও ব্যবস্থা নেই। ভুক্তভোগী নারীর সুরক্ষায় পুলিশি নিরাপত্তা দেয়ার দৃষ্টান্তও এ দেশে কম। এসব বিষয়ই বুঝিয়ে দেয় দেশে নারী অধিকার কতটা ভূলণ্ঠিত হচ্ছে আর নারী-পুরুষ বৈষম্য কতটা প্রকট।


ফুলবাড়িয়ায় সার্ভার জটিলতায় কর আদায়ে বিড়ম্বনা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফুলবাড়িয়া(ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে সার্ভার জটিলতায় বিড়ম্বনা ও ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সেবা গ্রহিতারা। ভূমির এমন স্থবির সেবায় দলিল সম্পাদনের কার্যক্রমেও বিঘ্নতার সৃষ্টি হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার (৮মে) উপজেলার ১৩ ইউনিয়নের ১১টি ইউনিয়ন ভূমি উপ- সহকারী কর্মকর্তাদের অফিসে আনুষ্ঠানিকভাবে একযোগে দু- সপ্তাহ ব্যাপী ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ক্যাম্পেইন শুরু হলেও ভূমিসেবা অনলাইন সার্ভারের সমস্যায় কর আদায়ে ভোগান্তি পোহাতে হয় সেবা গ্রহিতাদের। ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও সার্ভার সমস্যার কোন নিরসন না হওয়ায় কর না দিয়েই অনেকেই বাড়ি ফিরেছেন।

ফুলবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের ইউনিয়ন ভূমি উপ- সহকারী লুৎফর রহমান জানান, কর আদায়ে আজ থেকে ক্যাম্পেইন শুরু হলেও সকাল থেকেই সার্ভারের সমস্যা দেখা দিয়েছে। মাঝে মধ্যে সার্ভার কিছুটা সচল হলেও পরে আবার তা বন্ধ হয়ে যায়। এ সমস্যায় আমরা কাজ করতে পারতেছিনা। যার কারণে সেবা প্রত্যাশীরা খাজনা না দিয়েই বাড়ি চলে যাচ্ছে। এ রিপোর্ট লোখার আগ মুহুর্তে দুপুর আড়াইটা নাগাদ পর্যন্ত তিনি এ সমস্যায় ভোগেন। একই অবস্থা বাকতা ইউনিয়ন ভূমি অফিসের।

পৌর সদরের গৌরীপুর এলাকার বাসিন্দা মোফাজ্জল হোসেনের পুত্র বোরহান উদ্দিন জানান, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ের ক্যাম্পেইন উপলক্ষে পৌত্রিকসুত্রে প্রাপ্ত ২৭.৭৫ শতক জমির খাজনা আদায়ে গিয়েছিলাম। সার্ভারের জটিলতার কারণে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও খাজনা দিতে পারিনি।
কৈয়ারচালা গ্রামের জাকির হোসেন ও আন্ধারিয়া পাড়া গ্রামের আঃ মজিদ বলেন, কতক্ষন পরপর ভূমি অফিস ও কম্পিউটারের দোকানে খোঁজ খবর নিচ্ছি সার্ভারের সমস্যা দূর হয়েছে কিনা? সারাদিনেও কোন সু- সংবাদ পাইনি। এ সমস্যায় আমরা খুব বেকায়দায় পড়ে গেছি। দ্রুত এ সমস্যা সমাধান করা প্রয়োজন। ক্যাম্পেইনের প্রথম দিনেই এমন ভোগান্তিতে তিনি হতাশা প্রকাশ করেন।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা সাবরেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান বলেন, চালান পরিশোধপূর্বক দলিলের লেখা শেষ করেও দাখিলার জন্য দলিল সম্পাদনা করতে পারিনা। সার্ভারের সমস্যায় সকলেই এ ভোগান্তিতে পড়ছে।

ফুলবাড়িয়া উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) মেহেরুন্নাহার দৈনিক বাংলা কে বলেন, ভূমি উন্নয়ন কর আদায়ে সকালে ক্যম্পেইনের উদ্বোধন করা হয়েছে। আগামী ২২ মে পর্যন্ত আমাদের এ ক্যম্পেইন চলবে। নতুন ভার্সনের ফলে সার্ভারের সমস্যা হচ্ছে।


রাতভর পুলিশি অভিযানের পর সাবেক নাসিক মেয়র আইভী গ্রেপ্তার

শুক্রবার সকালে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

রাতভর অভিযানের পর নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের (নাসিক) সাবেক মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

শুক্রবার (৯ মে) সকাল পৌনে ৬টার দিকে দেওভোগের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার হন তিনি।

নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ওসি জানান, সাবেক এ মেয়রকে দেওভোগের ‘চুনকা কুটির’ থেকে জুলাই অভ্যুত্থানে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও হামলার ঘটনায় একাধিক থানায় হওয়া অন্তত পাঁচটি মামলার পর গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার হাসানুজ্জামানের নেতৃত্বে নারায়ণগঞ্জ সদর থানার ওসি নাসির উদ্দিনসহ অন্তত ৫০ জন পুলিশ সদস্যের একটি দল পশ্চিম দেওভোগে ডা. আইভীর পৈত্রিক বাড়িতে অভিযান চালায়। এরপর রাত ১২টার দিকে সদর থানা, সিদ্দিরগঞ্জ ও ফতুল্লা থানার ওসি ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন। সে সময় বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য বাড়িটি ঘেরাও করে রাখেন।

পুলিশি অভিযানের খবর পেয়ে আইভীর সমর্থকরা দেওভোগ ও বাবুরাইল এলাকার মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে ঘটনাস্থলে গিয়ে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। এর পরপরই হাজারো সমর্থক আইভীর বাড়ির সামনে জড়ো হন। সে সময় তারা আইভীর পক্ষে স্লোগান দিতে থাকেন। এমনকি বাড়ির প্রবেশপথের দুই রাস্তায় বাঁশ, ঠেলাগাড়ি ও ভ্যানগাড়ি ফেলে অবরুদ্ধ করে রাখেন স্থানীয়রা। এতে পুরো এলাকাজুড়ে এক উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।

অভিযান চলাকালে বাড়ির ভেতরেই ছিলেন আইভী রহমান। সমর্থকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘পুলিশকে বলুন, আমি রাতের বেলা বাড়ি ছেড়ে যাব না। আমাকে গ্রেপ্তার করতে হলে দিনের আলোতে করতে হবে।’

রাতভর কর্মী-সমর্থক ও জনতার প্রতিরোধের পর শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারের আগে সমর্থকদের শান্ত থাকার আহ্বান জানান আইভী। গ্রেপ্তার করলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে নারায়ণগঞ্জ জেলার অধিকাংশ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী আত্মগোপনে চলে গেলেও নিজের বাড়িতেই ছিলেন আইভী। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি ছিলেন। পরে তাকে সিটি করপোরেশনের মেয়র পদ থেকেও অপসারণ করা হয়।

সাবেক এই নাসিক মেয়রের বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা রয়েছে। পুলিশে সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় হত্যা ও হত্যাচেষ্টাসহ একাধিক মামলায় আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি সেলিনা হায়াৎ আইভীকে।

সবশেষ গত ১৩ সেপ্টেম্বর নিহত রিকশাচালক তুহিনের স্ত্রী আলেয়া আক্তার মীম বাদী হয়ে ৯৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায়ও তাকে আসামি করা হয়। তার আগে গত ৩ সেপ্টেম্বর গুলিবিদ্ধ হয়ে মনিরুল ইসলামের মৃত্যুর ঘটনায় তার বড় ভাই নাজমুল হকের করা মামলায় ১৩০ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়। ওই হত্যা মামলায়ও শামীম ওসমান ও আইভী দুজনকেই আসামি করা হয়।


ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা: যশোরের ৭০ কিলোমিটার সীমান্তে সতর্ক বিজিবি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ভারত ও পাকিস্তানের চলমান সংঘাতকে ঘিরে যশোরের ৭০ কিলোমিটার সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা দেখা দিয়েছে। তবে বিজিবি টহল জোরদারের পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানোয় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে।

বিজিবির দেওয়া তথ্যমতে, যশোরে ৭০ কিলোমিটার এই সীমান্ত রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে সাতক্ষীরার ৭০ ব্যাটালিয়ন রয়েছে। সীমান্ত এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নীরব নজরদারির সঙ্গে বিজিবি জোরদার করেছে টহল। এলাকাবাসীও সীমান্তের দিকে নজর রাখছেন।

সীমান্তবাসী আল মামুন জানিয়েছেন, এখনও যশোর সীমান্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। বিএসএফের অপতৎপরতায় কোনো প্রকার অনুপ্রবেশ বা চোরাচালান বিজিবির কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে প্রতিহত করতে প্রস্তুত এলাকাবাসী।

সীমান্ত এলাকার জনপ্রতিনিধি আলমগীর হোসেন বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের থাকলেও এই সীমান্ত এখন স্বাভাবিক। তবে আগে ৫০০ গজ অন্তর একজন বিএসএফ সদস্য দায়িত্ব পালন করলেও এখন ৩০০ গজ অন্তর দেখতে পাওয়া গেছে। এটা কিছুটা ভাবিয়ে তুলেছে। যদি বিএসএফ কোনোরকম তৎপরতা দেখায়, তাহলে বিজিবিকে সঙ্গে নিয়ে তা প্রতিহত করা হবে।’

৪৯ বিজিবির কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, সীমান্তে বিজিবিকে কঠোর আবস্থানে রাখা হয়েছে।

নিরাপওা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। ভারত থেকে যাতে কোনো অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশে ঢুকতে না পারে, সেজন্য বিজিবিও টহল ব্যবস্থা জোরদার করেছে।


মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্স আরোহীসহ নিহত ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে থেমে থাকা রোগীবাহী অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কায় নারীসহ ৫ জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও ৩ জন। হতাহতের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩ মে) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন— আব্দুস সামাদ ফকির, তার ছেলে বিল্লাহ ফকির, মেয়ে আফসানা ও এ্যাম্বুলেন্স চালক। অপরজনের নাম জানা যায়নি।

আহতরা জানান, তাদের বাড়ি মাদারীপুরের সদর উপজেলার মিঠাপুকুর এলাকায়। বিল্লাল ফকিরের স্ত্রী রোজিনা বেগম (৩০) অন্তঃসত্ত্বা। চলতি মাসের ২৩ তারিখ তার বাচ্চা প্রসবের সম্ভাব্য তারিখ রয়েছে। তবে গতরাত থেকে তার ব্যাথা হচ্ছিল। এজন্য সকালে একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে তাতে পরিবারটির ১০ জন মিলে ঢাকার পথে আসছিলেন। ঢাকার ধানমন্ডি এলাকার একটি প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার কথা ছিল। অ্যাম্বুলেন্সে করে রওনা দেওয়ার পর এক্সপ্রেসওয়ের নীমতলি এলাকায় আসার পর সেটির চাকা ব্লাস্ট হয়ে যায়। এরপর রাস্তার ডান পাশে চাপিয়ে সেটির চাকা মেরামত করছিলেন চালক। আর তারা কয়েকজন অ্যাম্বুলেন্সের ভিতরে বসে ছিলেন, আর কয়েকজন পাশেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। মেরামত প্রায় শেষের দিকে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাস পিছন থেকে এসে সজোরে অ্যাম্বুলেন্সে ধাক্কা দেয়।

এদিকে, গোল্ডেন লাইন পরিবহনের বাসটির হেল্পার সাইফুল ইসলাম শান্ত জানান, তারা কুষ্টিয়া থেকে যাত্রীবোঝাই বাসটি নিয়ে আসতেছিলেন ঢাকার আব্দুল্লাহপুর এলাকায়। নীমতলি এলাকায় এক্সপ্রেসওয়ের ডান পাশের লেনে দাঁড় করানো ছিল অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন দ্রুতগতির বাসটি চালক ফয়সাল (৪০) ব্রেক করেও থামাতে পারেনি। সজোরে গিয়ে ধাক্কা লাগে থেমে থাকা অ্যাম্বুলেন্সের পিছনে।

এদিকে হাসাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল কাদের জিলানী জানান, মাওয়ার নিমতলা এলাকায় একটি অ্যাম্বুলেন্সে বাস ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে একজন মারা যান। আর আহতদের সবাইকে ঢাকা মেডিকেল পাঠান হয়েছে। ঢাকা মেডিকেলে কেউ মারা গিয়েছে কিনা সেটি তার জানা নেই। তবে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। ঘটনাস্থলে যেই নারী নিহত হয়েছেন তার লাশ পুলিশ হেফাজতে আছে। বাস, অ্যাম্বুলেন্স দুটিই জব্দ করা হয়েছে।


খাগড়াছড়িতে ৮১ ভারতীয়কে পুশ-ইন করল বিএসএফ

আপডেটেড ৮ মে, ২০২৫ ১৪:৪৭
ইউএনবি

খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ৮১ জন ভারতীয় নাগরিককে ঠেলে দিয়েছে (পুশ-ইন) ভারতের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ( বিএসএফ)। বুধবার (৭ মে) জেলা প্রশাসন ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, জেলার মাটিরাঙ্গার শান্তিপুর সীমান্ত দিয়ে ২৭ জন, পানছড়ি উপজেলার রুপসেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ৩০ জন, তাইন্দংয়ের আচালং বিটিলা বিওপি সীমান্ত দিয়ে ২৩ জন, রামগড় সীমান্ত দিয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ১ জনসহ মোট ৮১ জন বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করিয়েছে ভারতীয় বাহিনী।

তাদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। জানা যায়, খাগড়াছড়ির পানছড়ি সীমান্তে আসা ৩০ জনকে বুধবার রাত ৮টা নাগাদ পানছড়ির লোগাং বাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রাখা হয়েছে। মাটিরাঙ্গায় অনুপ্রবেশকারীদের বিভিন্ন বিওপিতে বিজিবি নিরাপত্তা হেফাজতে রাখা হয়েছে।

এদিকে, খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা, পানছড়িসহ বিভিন্ন সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় মুসলিম নাগরিকদের বাংলাদেশে পুশ ইনের ঘটনায় সীমান্তজুড়ে ভয় ও আতঙ্ক ছড়িতে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার মধ্যে দিন যাপন করছেন। দেশের সীমান্ত নিরাপত্তায় বিজিবিকে সর্তক পাহারায় রাখা হয়েছে। টহল জোরদারের পাশাপাশি বিজিবিকে সহায়তা করার জন্য জনপ্রতিনিধিদের মাধ্যমে স্থানীয় গ্রামবাসীদের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

বুধবার (৭ মে) ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিকের অনুপ্রবেশের ঘটনা নিশ্চিত করেছেন খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ-পরিচালক নাজমুন আরা সুলতানা।

তিনি জানান, ‘বাংলাদেশ সীমান্ত অতিক্রম করে প্রবেশ করা সবাইকে বিভিন্ন স্থানে নিরাপত্তা হেফাজতে রেখেছে বিজিবি। মানবিক সহযোগিতা বিবেচনায় তাদের খাবারের ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। তাদের সব ধরনের তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’

বুধবার (৭ মে) ভোর রাতে ভারতীয় এ নাগরিকদের সীমান্ত পার করে বাংলাদেশের ভূখণ্ডে প্রবেশ করতে বাধ্য করে বিএসএফ। জানা গেছে, ভারতের গুজরাট থেকে প্রায় সাড়ে চার শত জনকে আটক করে দুটি বিমানে তাদের ত্রিপুরায় নিয়ে আসা হয়। পরে বিএসএফের তত্ত্বাবধায়নে গাড়িতে করে পুশ ইনের জন্য বিভিন্ন সীমান্তে জড়ো করা হয় তাদের।

অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকাতে মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি সীমান্তে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফকে ফ্ল্যাগ মিটিংয়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানা যায়।


অবৈধ নেট জালে রেণু পোনা নিধন হাজার কোটি টাকার ক্ষতি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাসরিন সিপু, বরগুনা

বঙ্গোপসাগরের মোহনা ও ৯০ কিলোমিটার পায়রা নদীতে অবাধে অবৈধ জাল দিয়ে রেণু পোনার সঙ্গে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের পোনা নিধন করছে জেলেরা। এতে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে।

মৎস্য বিভাগ কর্তৃপক্ষ অবৈধ সুবিধা নিয়ে পোনা নিধনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে না, এমন অভিযোগ সচেতন জেলেদের। এতে অসাধু রেণু পোনা ব্যবসায়ীরা আরও উৎসাহিত হচ্ছেন।

দ্রুত রেণু পোনা নিধনের সঙ্গে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে সাগর ও পায়রা নদী থেকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন জেলেরা।

জানা গেছে, বছরের মধ্য ফাল্গুন থেকে শুরু করে মধ্য জ্যৈষ্ঠ মাস পর্যন্ত চিংড়ি ও বাগদা মা-মাছ সাগরের মোহনা ও নদ-নদীর মিঠা পানিতে রেণু পোনার জন্ম হয়। বড় হওয়ার আগ পর্যন্ত রেণু পোনা মিঠা পানিতে থাকে। ওই সময় জেলেরা অবৈধ মশারি জাল ফেলে ওই পোনাগুলো শিকার করেন। এ রেণু পোনা শিকারের সঙ্গে আমতলী-তালতলী উপজেলার অন্তত ৩০ হাজার জেলে পরিবার জড়িত। প্রতিদিন তারা অন্তত এক কোটি রেণু পোনা আহরণ করেন। ওই রেণু পোনার সঙ্গে অন্তত ১০ গুণ বিভিন্ন প্রজাতির পোনা নিধন হচ্ছে। এতে অন্তত কয়েক হাজার কোটি টাকার মৎস্য সম্পদ নষ্ট হচ্ছে।

দাদন ব্যবসায়ীরা জেলেদের থেকে ১০০ চিংড়ি ও বাগদা রেণু পোনা ১৫০-২০০ টাকা দরে ক্রয় করেন। ওই পোনা খুলনা, বাগেরহাট ও যশোরসহ বিভিন্ন এলাকার ঘের মালিকদের কাছে ৭০০-৮০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এতে গত আড়াই মাসে অন্তত কয়েকশ কোটি টাকার চিংড়ি ও বাগদার রেণু পোনা আহরণ করেছেন জেলেরা।

অভিযোগ রয়েছে দাদন ব্যবসায়ীরা উপজেলা মৎস্য অফিস, পুলিশ ও নৌপুলিশের সঙ্গে আঁতাত করে অবৈধ নেট মশারি জাল ফেলে জেলেদের দিয়ে সরকারিভাবে নিষিদ্ধ রেণু পোনা শিকার করাচ্ছে। জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিল রেখে জেলেরা পরিবার-পরিজন নিয়ে দাদন ব্যবসায়ীদের প্ররোচনায় পড়ে ওই রেণু পোনা শিকার করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন দাদন ব্যবসায়ী বলেন, তালতলী উপজেলা মৎস্য অফিসার ভিক্টর বাইনকে প্রতি মাসে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিতে হয়। ফলে তারা অবাধে জেলেদের থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করে গাড়িতে রপ্তানি করতে পারছেন। তারা আরও বলেন, পুলিশ ও নৌপুলিশ সবাই এ বিষয়টি জানে।

আমতলী-তালতলী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, নারী-পুরুষ ও শিশুরা নেট মশারি জালের মাধ্যমে বাগদা ও চিংড়ির রেণু পোনা শিকার করছে। লাভজনক হওয়ায় জেলে পরিবারের নারী-পুরুষ ও শিশুরা এ পেশায় ঝুঁকে পড়েছেন।

আমতলী-তালতলী উপজেলার শতাধিক পয়েন্টে আড়তদাররা জেলেদের থেকে রেণু পোনা সংগ্রহ করে গভীর রাতে মিনি ট্রাক, মোটরসাইকেল ও বাসে করে খুলনা, বাগেরহাট, যশোরসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে রপ্তানি করছে।

গতকাল দুপুরে তালতলী উপজেলার রেণু পোনার আড়তদার দুলাল মিয়ার আড়তে গিয়ে দেখা গেছে, আড়ত ঘরের সামনের তালা দেওয়া, পেছনের দরজা দিয়ে জেলেরা পোনা নিয়ে আসেন। দুলালের কর্মচারী শহিদুল ইসলাম ওই পোনা গণনা করে পাত্রে রাখছেন।

জেলে মালেক ও জয়নাল বলেন, জোয়ার-ভাটার সঙ্গে মিল রেখে রেণু পোনা শিকার করতে হয়। রেণু পোনা শিকার করা অন্যায় কিন্তু কেউ তো নিষেধ করছে না। তারা আরও বলেন, মহাজনদের যন্ত্রণায় বাধ্য হয়ে রেণু পোনা আহরণে আসতে হয়।

শিশু নাদিম বলেন, ‘হুনছি পোনা ধরা নিষেধ কিন্তু স্যারেরা তো মোগো মানা হরে নাই।’

তালতলীর অবৈধ বাগদা রেণু পোনা ব্যবসায়ী বশির হাওলাদার বলেন, ‘বাগদা ও চিংড়ির রেণু আহরণ নিষিদ্ধ তা জানি। কিন্তু জেলেরা নিয়ে এলে আমরা তো ফেলে দিতে পারি না। তারা আরও বলেন, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা, নৌপুলিশ ও থানা পুলিশ সবই জানেন, তারা তো কিছু বলেন না। শুধু আপনারাই (সাংবাদিক) মোদের ডিস্টার্ব করেন।’

তালতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা ভিক্টর বাইন টাকা নেওয়ার কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১২টা অভিযান চালানো হয়েছে। বেশ কিছু জাল পুড়ে ফেলেছি।’ উপজেলা শহরের নিকটবর্তী দুলাল মিয়া ও বশির উদ্দিনের আড়তে রেণু পোনা জেলেদের থেকে সংগ্রহ করে গাড়িতে চালান করছে, এ বিষয়ে কি ব্যবস্থা নিয়েছেন? এমন প্রশ্নের তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

আমতলী উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা তন্ময় কুমার দাশ বলেন, অবৈধ রেণু পোনা নিধন বন্ধে অভিযান পরিচালনা করে শতাধিক নেট মশারি জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে এবং অভিযান অব্যাহত আছে।

তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সামলা বলেন, রেণু পোনা আহরণ অবৈধ। রেণু পোনা নিধন বন্ধে প্রতিদিন অভিযান অব্যাহত আছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) তারেক হাসান বলেন, উপজেলা মৎস্য অফিসারকে নিয়ে প্রায়ই অভিযান চালানো হয়।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসিন বলেন, রেণু পোনা নিধন রোধে অভিযান অব্যাহত আছে। উপজেলার কোনো মৎস্য কর্মকর্তা রেণু পোনা নিধনের যোগসাজশের সঙ্গে জড়িত থাকলে তদন্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরগুনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সফিউল আলম বলেন, ‘যারা অবৈধভাবে রেণু পোনা মজুত করে বিভিন্ন এলাকায় রপ্তানি ও পরিবহনের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও বলেন, এ মৎস্য সম্পদ রক্ষায় সব ধরনের পদক্ষেপ নেব।’


গোয়ালন্দে সাবেক মেয়র ও আ.লীগ নেতার বালুর রাজ্যে ইউএনওর হানা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী:

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও আওয়ামী নেতা শেখ মো. নিজামের বালুর রাজ্যে হানা দিয়েছেন গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান।

বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার পশ্চিম উজানচর এলাকায় শেখ নিজামের মালিকানাধীন গোধূলি পার্কে অভিযান চালিয়ে সেখানকার বিশাল জলাশয় থেকে বালু উত্তোলনের দায়ে ৩টি ড্রেজার মেশিনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন এবং ৫টি বালুবাহী ট্রাক জব্দ করেন ইউএনও।

বিগত বেশ কয়েক বছর ধরে শেখ নিজাম সেখানে তার ক্রয়কৃত কয়েক শ বিঘা জমিতে মৎস্য প্রকল্পের পুকুর খননের নামে বিপুল পরিমাণ মাটি ও বালু উত্তোলন করে আসছিলেন। এভাবে সেখানে পুকুরের নামে বড় বড় দিঘির সৃষ্টি করে তিনি কোটি কোটি টাকার মাটি ও বালু বিক্রি করেন।

এ বিষয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধেও ছিল সহায়তার অভিযোগ। প্রকল্পের আশপাশের বহু লোকের কৃষি জমি ওই জলাশয়ে ধসে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। হয়েছে একাধিকবার মানববন্ধন। গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে অনেক সংবাদ।

কিন্তু শেখ নিজাম রাজবাড়ীর সাবেক এমপি ও শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী কাজী কেরামত আলীর একান্ত স্নেহধন্য হওয়ার সুবাদে সেখানে প্রশাসন কখনোই কোনো ধরনের অভিযান চালায়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। কাজী কেরামত আলী বর্তমানে কারাগারে রয়েছেন।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের দায়ে মোট ৪টি ড্রেজার মেশিন ধ্বংস এবং মাটি ও বালু পরিবহনের দায়ে ১০টি মাটি বহনকারী ড্রাম ট্রাক জব্দ করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নাহিদুর রহমান।

এদিকে গত ৬ মে মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের মাখন রায়ের পাড়া এলাকায় মরা পদ্মা নদী হতে বালু উত্তোলনের দায়ে শহিদ নামের এক বালু ব্যবসায়ীর একটি ড্রেজারের ৫০-৬০টি পাইপ ধ্বংস করে উপজেলা প্রশাসন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনকে তথ্য দিয়ে সহায়তার অভিযোগ এনে স্থানীয় দুলাল বিশ্বাস নামের এক ব্যক্তির উপর চড়াও হয়েছেন বালু ব্যবসায়ী সহিদ ও স্থানীয় ইউপি সদস্য লিপু মন্ডল।

তবে ইউএনও নাহিদুর রহমান জানান, লিপু মন্ডলের সেখানে একটি সরকারি রাস্তায় বালু ফেলার কথা থাকলেও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বালু ফেলা হচ্ছিল। সে জন্য সেখানে অভিযান চালানো হয়েছে। দুলাল বিশ্বাস বা এলাকার অন্য কেউ এ বিষয়ে তাকে কিছু বলেনি।

ইউএনও আরও জানান, অনুমতি ছাড়া অবৈধভাবে কৃষি জমি থেকে মাটি উত্তোলন কিংবা নদী ও জলাশয় হতে বালু উত্তোলন বন্ধ করে সড়কে জান-মালের নিরাপত্তা ও ক্ষতিরোধ নিশ্চিত করতে এ ধরনের অভিযান আগেও হয়েছে, এখনো হচ্ছে। ভবিষ্যতেও চলবে।

অভিযানে আটক করা মাটিবাহী ড্রাম ট্রাকগুলোর চালকরা পলাতক রয়েছেন। মালিকরা এলে তাদের কাছ থেকে বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইনে মোটা অঙ্কের টাকা জরিমানা আদায়সহ সতর্ক করা হবে।


বেগমগঞ্জ নির্বাচন অফিসে অনিয়ম-হয়রানি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খোরশেদ আলম, নোয়াখালী উত্তর

বেগমগঞ্জ উপজেলা উপজেলা নির্বাচন অফিস অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। নির্বাচন অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণ দুর্ব্যবহারসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। টাকা না দিলে পদে পদে ভোগান্তি পোহাতে হয়। এই অফিসের ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (ফেসবুক) ভুক্তভোগীরা পোস্ট দিচ্ছেন।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, ভোটার জটিলতার কারণে নাগরিক নানান সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নতুন ভোটার হওয়া, জাতীয় পরিচয়পত্রে ভুল সংশোধন ও ভোটার স্থানান্তরসহ সব কাজেই গুনতে হয় টাকা। ২০২৫ সালের ২৬ জানুয়ারি রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলা থেকে নির্বাচন অফিসার বুলবুল আহমেদ এখানে যোগদান করেন। যোগদানের পরেই তিনি বিভিন্ন ঘুষ ও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। প্রবাসীরা তাদের ভোটার আইডি কার্ড সংশোধন করতে এলে বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তিনি ঘুরাতে থাকেন। পরে জরুরী ভিত্তিতে করে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোট অংকের টাকা দাবি করেন ওই কর্মকর্তা। তার অফিসে প্রায় ১ হাজার সেবা প্রার্থীর ভোটার স্থানান্তর ও সংশোধনের তদন্ত প্রতিবেদন আটকে রয়েছে। এই কর্মকর্তাকে ৩ বছর আগে এ ধরনের অনিয়ম ও সেবাপ্রার্থীদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় কুমিল্লার সদর থেকে শাস্তিমূলক বদলি করা হয় রাঙ্গামাটির লংগদু উপজেলায়।

সরেজমিনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় ঘুরে দেখা যায়, দুপুরের দিকে নির্বাচন অফিসের সামনে ও বিভিন্ন কক্ষের ভেতর সেবাগ্রহীতাদের ঘুরতে দেখা যায়। নির্বাচন কর্মকর্তা ভিড় ঠেকাতে অফিসের ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে রাখেন। নতুন আইডি কার্ড করতে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে শতাধিক সেবাগ্রহীতা এসেছেন। বেশ কয়েকজন দালাল অফিসের ভেতরে অবস্থান করে। সেবা গ্রহীতারা দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেই অফিসের পিয়ন শহীদ রুমে ঢুকতে দেন। পরে মেলে কাজের রাস্তা। দালালদের অধিকাংশই নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের কর্মচারীদের সাথে রয়েছে সখ্যতা।

ভুক্তভোগী শাহিদুর রহমান অভিযোগ করে জানান, গত ৩০ এপ্রিল বেলা ২ টার দিকে নতুন ভোটার হতে বেগমগঞ্জ নির্বাচন অফিসে যান। নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ আবেদনে কাগজপত্রের ত্রুটির অজুহাত দেখিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। তিনি একইভাবে অন্যান্য নতুন ভোটারদের সাথে দুর্ব্যবহার করেন।

বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর গ্রামের শাকিল তার ফেইসবুক আইডিতে লিখেছেন, তিনি এরআগে এনআইডি সংশোধন করতে উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়েছিলেন। নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ সংশোধন হবে না মর্মে জানিয়ে দেন। পরে তার কাছে সংশোধন করিয়ে দিতে ১০ হাজার টাকা ঘুষ করেন। দাবিকৃত টাকা না দেওয়ায় তার সাথে দুর্ব্যবহার করে ওই কর্মকর্তা তার রুম থেকে তাড়িয়ে দেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেগমগঞ্জ নির্বাচন অফিসের এক কর্মচারী অভিযোগ করে বলেন, নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ এই অফিসে যোগদান করার পর অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়েছে। তিনি নিজেই সেবা প্রার্থীদের কাছে এনআইডি সংশোধন, স্থানান্তর ও নতুন ভোটার হতে ঘুষ নেন। আর সেবা প্রার্থীদের সাথে প্রতিদিন দূর ব্যবহার করে থাকেন। বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বুলবুল আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, নতুন ভোটার হতে সেবা প্রার্থীরা ত্রুটিপূর্ণ কাগজপত্র নিয়ে আসেন। তাই তিনি একটু রাগান্বিত হন। এখান থেকে সেবা না পেয়ে ফিরে যাওয়া লোকজনই ফেইসবুকে দুর্নাম ছড়াচ্ছে।


খাগড়াছ‌ড়িতে ভারতীয় ৬৬ নাগ‌রিককে পুশ ইন করেছে বিএসএফ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

‌সীমান্তবর্তী জেলা খাগড়াছ‌ড়ির মা‌টিরাঙ্গা ও পানছড়ি উপজেলার একাধিক প‌য়েন্ট দি‌য়ে ভারতীয় ৬৬ নাগ‌রিক‌কে বাংলাদেশে ঠেলে দিয়েছে (পুশ ইন) দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলার গোমতী ইউনিয়নের দক্ষিণ শান্তিপুর এলাকায় গিয়ে জানা যায়, আজ ভোর ৬টার দিকে ভারতের গুজরাট থেকে ২৭ জন ও তাইন্দং ইউনিয়নের আচালং পাড়া দিয়ে ১৫ জন ভারতীয় নাগরিককে বাংলাদেশে পুশ ইন করেছে বিএসএফ। পানছড়ি উপজেলার জয়সেন পাড়া সীমান্ত দিয়ে ২৪ জনকে পুশ ইন করা হয়েছে।

স্থানীয় আলী আহাম্মেদ জানান, ভারতীয় নাগরিকদের সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি তাদেরকে গুজরাট এয়ারপোর্ট থে‌কে আগরতলা এয়ারপোর্টে আনা হয়। সেখান থে‌কে গা‌ড়িতে করে ত্রিপুরা সীমা‌ন্ত দি‌য়ে খাগড়াছ‌ড়ির মা‌টিরাঙ্গা উপজেলার শা‌ন্তিপুর পয়ে‌ন্টে গভীর রা‌তে তা‌দের পুশ করা হ‌লে ৬ জন পুরুষ, ৪ জন ‌শিশু ও নারী সহ ২৭ জন বাংলাদে‌শের অভ‌্যন্ত‌রে প্রবেশ ক‌রেন। তারা গোমতী ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড শা‌ন্তিপুর হাজীপাড়া আবুল হোসেন মেম্বরের বাড়িতে অবস্থান করেন।

এর আগে ভার‌তের গুজরা‌টে তা‌দের প‌রিবা‌রের পুরুষদের ধ‌রে নি‌য়ে যায়। এর একদিন বোলডুজার দি‌য়ে তা‌দের বাড়ি ঘর গু‌রিয়ে দেওয়া হয় এবং তা‌দের গ্রামের নারী ও শিশু‌দের ধ‌রে নি‌য়ে যায়। এসময় তা‌দের মোবাইল, টাকা পয়সা সব কে‌ড়ে নেওয়া হয়। তাদের এক কাপড়ে বাংলা‌দে‌শের সীমা‌ন্তের ‌বি‌ভিন্ন প‌য়েন্ট দি‌য়ে তা‌দের পুশ ইন করা হয়।

তবে, এ বিষয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সেক্টর গুইমারা প্রধান দপ্তর থেকে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক কোনো বিবৃতি পাওয়া যায়নি।

খাগড়াছড়ি জেলার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক নাজমুন আরা সুলতানার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে মাটিরাঙ্গা ও পানছড়ি উপজেলার সীমান্ত দিয়ে সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ৬৬ জন ভারতীয় নাগরিক অনুপ্রবেশ করেছে। যেহেতু নারী, শিশু ও পুরুষ রয়েছে, তাই তাদের খাবার ও নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন সজাগ রয়েছে।


চট্টগ্রামে ক্যাম্পের অফিসে র‍্যাব কর্মকর্তার আত্মহত্যা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রামের র‍্যাব-৭ এর বহদ্দারহাট ক্যাম্পের অফিস কক্ষে র‍্যাব কর্মকর্তা নিজের আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন বলে জানা গেছে। বুধবার(৭ মে) সকালে এই ঘটনা ঘটেছে।

নিহত পলাশ সাহা সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) পদমর্যাদার কর্মকর্তা। তিনি র‍্যাব-৭ ব্যাটালিয়নের অধীনে বহদ্দারহাট ক্যাম্পে কর্মরত ছিলেন।

র‍্যাব সূত্র জানায়, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে এএসপি পলাশ যখন অভিযানে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন, তখন ঘটনাটি ঘটে। তিনি তার কাছে থাকা আগ্নেয়াস্ত্রটি নিয়ে তার অফিস কক্ষে প্রবেশ করেন।

র‍্যাব-৭ এআরএমের সিনিয়র এএসপি (মিডিয়া) মোজাফফর হোসাইন জানান, কক্ষে প্রবেশের কিছুক্ষণ পরে র‍্যাব সদস্যরা গুলির শব্দ শুনতে পান এবং তাকে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় দেখতে পান। তার সার্ভিস পিস্তলটি মেঝেতে পাওয়া যায় এবং টেবিলে একটি সুইসাইড নোট পাওয়া যায়।

তাকে তাৎক্ষণিকভাবে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ময়নাতদন্তের পর আরও বিস্তারিত জানা যাবে বলে কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।


আজ সারা দেশে বইতে পারে তাপপ্রবাহ

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ৭ মে, ২০২৫ ১৩:৪১
unb

সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা বাড়তে পারে কিছুটা। এমনকি তাপপ্রবাহও বইতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এছাড়া রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দুয়েক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ বিদ্যুৎ চমকানো বা বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে।

বুধবার (৭ মে) সারাদেশের সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ১২০ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, অন্যান্য স্থানে আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এছাড়া, রাজধানী ঢাকাসহ পাশ্ববর্তী এলাকার সকাল ৭টা থেকে পরবর্তী ৬ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, আজ (বুধবার) রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি দক্ষিণ অথবা দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস প্রবাহিত হতে পারে। তবে আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।

এদিকে গতকাল (মঙ্গলবার) সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২১ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া খুলনার কয়রাতে ৪১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।


আরও ৪ মামলায় গ্রেপ্তার ইসকন নেতা চিন্ময়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রাম মহানগরীর কোতোয়ালী থানায় দায়ের করা পুলিশের কাজে বাধাসহ চার মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার দেখানোর (শ্যোন অ্যারেস্ট) আদেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দীনের আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।

আদালতে সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ বলেন, কোতোয়ালী থানার পুলিশের কাজে বাধা, আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলাসহ চার মামলায় চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তারা। আদালতে শুনানি হয় ও আসামি চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কারাগার থেকে ভার্চুয়াল শুনানিতে যুক্ত ছিলেন। আদালত শুনানি শেষে চার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দিয়েছেন।

এদিকে চিন্ময় দাসকে গ্রেপ্তার দেখানোর ভার্চুয়াল শুনানিকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সকাল থেকে চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়।

গত ২৬ নভেম্বর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম আদালতে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর জামিন নামঞ্জুর করার পর কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজন ভ্যানে তোলা হয়।

এসময় তার অনুসারীরা বিক্ষোভ করলে পুলিশ ও বিজিবি লাঠিচার্জ এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষ চলাকালে এদিন বিকেলে রঙ্গম কমিউনিটি হল সংলগ্ন এলাকায় আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

এ হত্যার ঘটনায় তার বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ছয়টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।


কমলনগরে ৮০ প্রভাবশালীদের দখলে জারিরদোনা খাল

উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নেই প্রশাসনের
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
এমরান হোসেন, কমলনগর (লক্ষ্মীপুর)

ময়লা-আবর্জনা আর অবৈধ দখলের কারণে অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে লক্ষ্মীপুরের কমলনগর উপজেলার জনগুরুত্বপূর্ণ জারিরদোনা শাখা খালটি। এ জন্য যথাযথ ব্যবস্থাপনার অভাব ও প্রশাসনের উদাসীনতাকে দুষছেন এলাকাবাসী।

উপজেলা সদর হাজিরহাট বাজার অংশে জারিরদোনা খাল দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট-বড় বহু দোকানপাট ও বহুতল ভবন। কোনো ধরনের অনুমোদন ছাড়াই খালের পানি বাধাগ্রস্ত করে ইচ্ছামতো সরু পুল, কালভার্ট নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালীরা। সেই সঙ্গে গড়ে তুলেছেন অবৈধ দোকানপাট। এ ছাড়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী বাজারের আবর্জনা দিয়ে উদ্দেশ্যমূলকভাবে খালটি ভর্তি করে ফেলেছেন। যাতে করে পরে সময় সুযোগ বুঝে ওই স্থান দখলে নেওয়া যায়।

এলাকাবাসী জানান, চরফলকন, চরলরেন্স, হাজিরহাট ও সাহেবেরহাট ইউনিয়নসহ উপজেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের কৃষিকাজ এ খালের পানি প্রবাহের ওপর নির্ভরশীল। পানির স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হওয়ায় শুষ্ক মৌসুমে যেমন পানি সংকটে কৃষিকাজ ব্যাহত হয়, তেমনি বর্ষা মৌসুমে পানি নিষ্কাশনজনিত সমস্যায় সয়াবিন, ধান, মরিচ, বাদাম ও সবজীসহ বিভিন্ন ফসল ও বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্তমান এ অঞ্চলে ভয়াবহ বন্যা চলছে। খালটি দখলের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জীবনযাত্রা চরম দূর্বিষহ হয়ে উঠেছে মানুষের। বন্যার পানি না নামার কারণ হিসেবে খাল দখলকে দায়ী করছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।

হাজিরহাট এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু নূর সেলিম বলেন, জারিরদোনা শাখা খালটির সংযোগ সরাসরি মেঘনা নদীর সঙ্গে। আশির দশক পর্যন্ত এ খালটি গুরুত্বপূর্ণ নৌপথ হিসেবেই বিবেচিত ছিল। এ অঞ্চলের ব্যবসা বাণিজ্যেও এর অবদান ছিল অনস্বীকার্য। ওই সময়ে কাঁচা রাস্তা দিয়ে বাস-ট্রাক যাতায়াত করা ছিল দুর্সাধ্য। এমনকি ৬০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে এ অঞ্চলের সড়ক পথই ছিল না।

এদিকে লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে ৮০ দখলবাজের কবজা থেকে খালটি উদ্ধার করতে উচ্ছেদের আদেশ হলেও কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না স্থানীয় প্রশাসন। তারা খাল উদ্ধারে গড়িমসি করে সময় পার করছেন বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।

উপজেলা ভূমি অফিসের তথ্যমতে, পিএস জরিপে হাজিরহাট বাজার অংশে খালের প্রশস্ততা ছিল গড়ে প্রায় ৩২ ফুট। বর্তমান আরএস জরিপে তা দাঁড়িয়েছে মাত্র ২০ ফুটে। কিন্তু কিছু ইমারত (ভবন) এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে ওই সব অংশে খালের প্রশস্ততা বর্তমানে ২ থেকে ৩ ফুটের বেশি নেই।

হাজিরহাট বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. কামরুল হাছান বলেন, ‘এলাকার বৃহত্তর স্বার্থে খালটি সংস্কার করে পানির প্রবাহ ঠিক রাখা একান্ত জরুরি। পুরো খাল দখল করে যারা ইমারত তৈরি করেছেন তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিয়ে খালটি দখলমুক্ত করা এ অঞ্চলের মানুষের প্রাণের দাবি।’

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ আরাফাত হুসাইন বলেন, ‘জারিরদোনা খাল দখলমুক্ত করতে ইতোমধ্যে আদেশ হয়েছে। আমরা দ্রুত কাজ শুরু করব।’

এ বিষয়ে কমলনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাহাত-উজ জামান বলেন, খালটি সংস্কার ও অবৈধ দখল উচ্ছেদ করতে প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।


banner close