যথাযোগ্য মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে সারা দেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হচ্ছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা, দোয়া, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সারাদেশে দৈনিক বাংলার প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর পড়ুন।
নওগাঁ
বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে নওগাঁয় পালিত হয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের আয়োজনে শহরের মুক্তির মোড়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অস্থায়ী বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু হয়।
প্রথমে ফুল দিয়ে প্রথমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান। পরে পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রাশিদুল হক, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, সিভিল সার্জনসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের পাশাপাশি বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে সেখানে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃকি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
এছাড়া সকাল ৯টায় জেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলন, বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় চার নেতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, এক মিনিট নীরবতা পালন ও সংক্ষিপ্ত আলোচনাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালিত হয়।
ভোলা
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ভোলায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে জেলা প্রশাসক চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এসময় সেখানে দাঁড়িয়ে নীরবে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক তৌফিক ই-লাহী চৌধুরী, ভোলা জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগ, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদসহ জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং বিভিন্ন সরকারি- বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা। এরপর জেলা শিল্পকলা মিলনায়তনে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন তৌফিক ই-লাহী চৌধুরী।
এসময় বক্তারা বলেন, বঙ্গবন্ধুর সেই ভাষণ ছিল বাংলা ও বাঙালিদের প্রতি বঙ্গবন্ধুর হৃদয়ের ভালোবাসা আর দেশপ্রেমের বহিঃপ্রকাশ। ৭ মার্চের ভাষণ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে মুক্তিপাগল জনতা দেশ স্বাধীনের প্রস্তুতি নিয়েছিল। দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেছিল।
শেরপুর
শেরপুরে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ, আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রথমে শ্রদ্ধা জানান জাতীয় সংসদের হুইপ মো. আতিউর রহমান আতিক।
পরে একে একে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার, পুলিশ সুপার মো. কামরুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছানুয়ার হোসেন ছানু, সিভিল সার্জন ডা. অনুপম ভট্টাচার্য্য, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহনাজ ফেরদৌস, জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিটের সাবেক কমান্ডার নুরুল ইসলাম হিরুসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তর ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা।
এদিন সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা, চিত্রাঙ্কন ও ভাষণ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়। এতে জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা, সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে ভোরে শহরের চকবাজারস্থ জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দলীয় ও জাতীয় পতাকা উত্তোলন শেষে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
গোপালগঞ্জ
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে।
মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিসৌধ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক কাজী মাহাবুবুল আলম। এরপর মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, পুলিশ সুপার আয়েশা সিদ্দিকা, জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, গোপালগঞ্জ ও টুঙ্গিপাড়া পৌরসভা, উপজেলা প্রশাসনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানানো হয়।
পরে বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্ট পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাত করা হয়। কর্মসূচিতে জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আওয়ামী লীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
বরিশাল
ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস উপলক্ষে বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে বর্ণাঢ্য কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসানের নেতৃত্বে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনসহ সরকারি বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
পরে জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ দিবস ২০২৩ উপলক্ষ্যে অলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
নীলফামারী
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ, ভাষণ প্রচার, র্যালি ও আলোচনা সভার মধ্যমে নীলফামারীতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালন করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, মুক্তিযোদ্ধা সংসদ, জেলা আওয়ামী লীগ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন পুষ্পস্তবক অর্পণ করে।
বঙ্গবন্ধু চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বক্তব্য দেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও নীলফামারী পৌরসভার মেয়র দেওয়ান কামাল আহমেদ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুজার রহমান, উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মসফিকুল ইসলাম রিন্টু।
দিনাজপুর
দিনাজপুরে নানা আয়োজনে পালন করা হয়েছে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। মঙ্গলবার বিরামপুরে উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ছিলেন সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক।
অনুষ্ঠানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিমল কুমার সরকারের সভাপতিত্বে একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালামের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান খায়রুল আলম, পৌর মেয়র মো. আক্কাস আলী, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন কুমার মহন্ত, আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি শিবেশ কুমার কুন্ডু, মুক্তিযোদ্ধা হবিবর রহমান।
রাঙামাটি
রাঙামাটিতে যথাযথ মর্যাদায় ঐতিহাসিক ৭ মার্চ পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে জেলা প্রশাসনের আয়োজনে জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্যে রাখেন, পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ, রাঙামাটি উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অজিত কুমার রুদ্র, রাঙামাটি পাবলিক কলেজের অধ্যক্ষ তাসাদ্দিক হোসেন কবির, জেলা স্কাউটের সাধারণ সম্পাদক নুরুল আফসার, বীর মুক্তিযোদ্ধা ইকবাল হোসেন চৌধুরী।
ফেনী
ফেনীতে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ উপলক্ষে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে ফেনী পৌর চত্বর থেকে জেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে একটি র্যালি বের করা হয়।
র্যালি শেষে শহরের জেল রোডস্থ মুক্তিযোদ্ধা স্মৃতিস্তম্ভ প্রাঙ্গনে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন ফেনী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারী, জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ-উল হাসান, পুলিশ সুপার জাকির হাসান, জেলা আওয়ামী লীগ, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ, পৌর আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগের নেতারা।
সিরাজগঞ্জ শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত হেল্থ এইড ও আভিসিনা হাসপাতাল ও প্যাথলজিতে নেই নিজস্ব ও কার্যকর কোন পার্কিং ব্যবস্থা। অথচ নিয়মিতভাবে লাইসেন্স নবায়ন ও প্রত্যয়ন দিয়ে যাচ্ছে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা ও সিভিল সার্জন কার্যালয়। ফলে প্রতিদিনই চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, হাসপাতাল দুটির সামনে পার্কিং নিষেধের সাইনবোর্ড টানানো থাকলেও রাস্তার দুপাশে শতশত মোটরসাইকেল ও যানবাহন অবৈধভাবে পার্কিং করে রাখা হচ্ছে। এতে করে সড়ক সংকুচিত হয়ে পড়ছে এবং প্রায়ই সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট।
আভিসিনা হাসপাতালের গার্ড মুসলিম উদ্দিন জানান, আমি প্রায় দুই বছর ধরে এখানে কর্মরত। এই সময়ে হাসপাতালের ভেতরে কোন পার্কিং ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। সবসময় গাড়ি বাহিরেই পার্কিং হয়। আমাদের এখানে পার্কিং নিষেধ লেখা সাইনবোর্ডও রয়েছে।
হেলথ এইড প্যাথলজির ম্যানেজার সংগ্রাম বলেন, অফিসের সামনে পার্কিং নিষেধের সাইনবোর্ড লাগানো আছে। পাশের পুরাতন ভবনে পার্কিংয়ের জায়গা আছে। তবে ওই ভবনে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে বর্তমানে নির্মাণকাজ চলমান থাকায় কোন ধরনের পার্কিং সুবিধা নেই।
এ অবস্থায় গত বুধবার আভিসিনা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক রোগীর মোটরসাইকেল অবৈধ পার্কিংয়ের দায়ে জব্দ করে সিরাজগঞ্জ পৌরসভা। পরে জরিমানা হিসেবে মোট ১০ হাজার টাকা আদায় করা হয়।
চিকিৎসা নিতে আসা আবুল হাসেম বলেন, প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ সিরাজগঞ্জ শহরে চিকিৎসা নিতে আসে। কিন্তু বেশিরভাগ হাসপাতাল ও প্যাথলজির নিজস্ব পার্কিং নেই। গাড়ি রাস্তায় রেখে যেতে হয়, এতে চুরি হয়, জরিমানা হয়, আর শহরে যানজট লেগেই থাকে। হাসপাতালের অব্যবস্থাপনার দায়ে জরিমানা দিতে হচ্ছে রোগীদের- এটা কেমন বিচার?
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, হাসপাতাল ও প্যাথলজি পরিচালনার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তর, ফায়ার সার্ভিস, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, কলকারখানা ও মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা থাকা বাধ্যতামূলক। পাশাপাশি পর্যাপ্ত খোলামেলা জায়গা, নার্স-ডাক্তার অনুপাত ও আধুনিক অপারেশন থিয়েটার থাকার কথা। এসব শর্ত পূরণ সাপেক্ষেই পৌরসভার ট্রেড লাইসেন্স এবং সিভিল সার্জনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স নবায়ন হওয়ার নিয়ম।
তবে বাস্তব চিত্র বলছে ভিন্ন কথা। বছরের পর বছর ধরে এসব শর্ত লঙ্ঘন করেও কীভাবে লাইসেন্স নবায়ন হচ্ছে- তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সচেতন মহল।
এ বিষয়ে আভিসিনা হাসপাতালের ম্যানেজার আতাউর রহমান বলেন, আমাদের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা রয়েছে। তবে বাইরের লোকজন ব্যবহার করায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছিল। গতকাল থেকে আবার চালু করা হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, ইতোপূর্বে আভিসিনা হাসপাতালকে জরিমানা করা হয়েছে। তবে রোগীদের জরিমানা কেন করা হলো- এ প্রশ্নের কোন সুনির্দিষ্ট উত্তর দিতে পারেননি তিনি।
সিরাজগঞ্জ সিভিল সার্জন ডা. নুরুল আমীন বলেন, গত সপ্তাহে আভিসিনা হাসপাতালকে লাইসেন্স নবায়ন না করার কারণে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। পার্কিংসহ অন্যান্য বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এই অভিযান সারা জেলায় চলমান থাকবে।
কক্সবাজারের টেকনাফে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৮ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করেছে কোস্ট গার্ড।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) বিকালে কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ তারিখ বুধবার রাত ১১ টায় কোস্ট গার্ড স্টেশন টেকনাফ কর্তৃক কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন হাবিরছড়া এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযান চলাকালীন উক্ত এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা মূল্যের ৮ হাজার পিস ইয়াবা জব্দ করা হয়। এসময় কোস্ট গার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে মাদককারবারি পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি।
জব্দকৃত ইয়াবার পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, মাদক পাচার রোধে কোস্ট গার্ড ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
পটুয়াখালীর কুয়াকাটার একটি আবাসিক হোটেল থেকে ফাহিমা আক্তার নামের এক নারীর ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কুয়াকাটা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আলীশান নামের একটি আবাসিক হোটেলে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২ ডিসেম্বর আরিফ হোসেন ও ফাহিমা আক্তার ভ্রমণের উদ্দেশ্যে হোটেল আলীশানের ১০৫ নম্বর কক্ষটি ভাড়া নেয়, দীর্ঘদিন অবস্থান করার পরে আজ রাতে এ ঘটনা ঘটে।
হোটেলে ডায়েরী সূত্রে জানা যায়, নিহত নারী পর্যটকের নাম ফাহিমা আক্তার। ঠিকানা পটুয়াখালী কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে।
খবর পেয়ে মহিপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। প্রাথমিকভাবে এটি আত্মহত্যা বলে ধারণা করা হলেও মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে তদন্ত চলছে।
এ বিষয়ে মহিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহব্বত খান বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করেছে। সুরতহাল প্রতিবেদন সম্পন্ন শেষে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে।এখন পর্যন্ত আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।তদন্ত সাপেক্ষে আইনি ব্যবস্হা নেয়া হবে।
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া শহরে দ্রুতগামী মোটরসাইকেলের চাপায় উপজেলা হাসপাতালের সম্মুখস্হ কনক ফার্মেসীর স্বত্বাধিকারী সাইফুর রহমান ফুল (৫০) এর মর্মান্তিক মৃত্যু ঘটেছে। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) রাতে ফার্মেসির সম্মূখস্হ প্রধান রাস্তার পাশে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে।
জানা যায় বুধবার রাত সাড়ে ৯ টার দিকে নিজস্ব ফার্মেসীর সম্মুখস্হ প্রধান সড়ক পারাপারের সময় ফার্মেসি মালিক সাইফুর রহমানকে ৩ জন আরোহীর দ্রুতগামী এক মোটরসাইকেল সজোরে ধাক্কা দিলে তিনি রাস্তায় পড়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন। নিহত ফার্মেসি মালিকের বাড়ি উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের পুরষাই গ্রামে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, এক ছেলে, এক মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজন ও গুনগাহী রেখে যান।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী, চারটি হত্যাসহ ২৩ মামলার আসামি সাজেদুল হক লালু ও তার তিন সহযোগীকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বুধবার ( ১৭ ডিসেম্বর) দিনভর নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকা, রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়। রাত বারোটার দিকে গণমাধ্যমে প্রেস রিলিজ পাঠিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে জেলা পুলিশ।
আটককৃতরা হলো, হোগলাকান্দি গ্রামের মৃত মনির হোসেনের ছেলে সাজেদুল হক লালু (৪৫), চৌদ্দকাহনিয়া গ্রামের আলাউদ্দিনের ছেলে শাকিল (২৭), একই গ্রামের মৃত মাহমুদ হোসেনের ছেলে দুই ছেলে আলাউদ্দিন (৬৫) ও জসিম (৪৫)।
গজারিয়া থানা সূত্রে জানা যায়, গত ২৬ নভেম্বর রাতে গজারিয়া উপজেলার বাউশিয়া ইউনিয়নের চৌদ্দকাউনিয়া গ্রামে টিকটক বানানোর কথা বলে বাসা থেকে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে খুন করা হয় জয় সরকার (২৫) নামে এক তরুণকে। আটকৃতরা সবাই এই মামলার এজহার নামীয় আসামি। এই ঘটনায় মামলা দায়ের এর পর থেকে তারা সবাই পলাতক ছিল। তাদের ধরতে মাঠে নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সর্বশেষ গতকাল (বুধবার) দিনভর অভিযান চালিয়ে রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকা থেকে সন্ত্রাসী লালুকে আটক করে র্যাব-৩। অন্যদিকে র্যাব-১১ এর একটি টিম নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকা থেকে শাকিলকে, কাচপুর বালুর মাঠ এলাকা থেকে আলাউদ্দিনকে ও ফতুল্লা থানা এলাকা থেকে জসিমকে আটক করে । বুধবার গভীর রাতে তাদের গজারিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ হাসান আলী বলেন, ' লালু গজারিয়া উপজেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী। চারটি হত্যা মামলাসহ, অস্ত্র, মাদক, মারামারি-সহ বিভিন্ন অপরাধে তার নামে অন্তত ২৩ টি মামলা রয়েছে। এই আসামিদের গ্রেফতারের খবরে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এসেছে। বাকি আসামিদেরও দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে।'
এদিকে শীর্ষ সন্ত্রাসী লালু গ্রেফতার হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন জয় সরকার হত্যা মামলার বাদী ও নিহতের বোন জান্নাতি আক্তার ও স্যুটার মান্নান হত্যা মামলার বাদি নিহতের স্ত্রী সুমী আক্তার।
এবিষয়ে নিহত মান্নানের স্ত্রী সুমী আক্তার বলেন,' ঘটনার প্রায় ছয় মাস পরে সন্ত্রাসী লালু আইনের আওতায় আসলো। গত জুলাই ২৮ জুলাই মান্নান হত্যাকাণ্ডের পর যদি তাকে আইনের আওতায় আনা হতো তবে হয়তো সে অন্য কাউকে আর খুন করতে পারতো না। সে যাতে জামিন না পায়। তার যাতে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হয় আইনের কাছে আমার এটাই চাওয়া।'
দেশের সার্বিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে কোনো ধরনের সংশয়ের কারণ নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, কোনো প্রার্থী যদি ব্যক্তিগতভাবে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেন, তবে তা তার একান্তই নিজস্ব মতামত, এর সঙ্গে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির কোনো সম্পর্ক নেই।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) নারায়ণগঞ্জের বিকেএমইএ ভবনে জেলা পুলিশ ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের কাছে ছয়টি টহল গাড়ি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের প্রার্থী মাসুদুজ্জামান মাসুদের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, কোনো প্রার্থী কেন নির্বাচনে অংশ নেবেন না, তা সম্পূর্ণ তার ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত। নিরাপত্তার অজুহাতে যিনি সরে দাঁড়িয়েছেন, তিনি আসলে কী ধরনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন তা তিনিই ভালো বলতে পারবেন। তবে সাংবাদিক ও ব্যবসায়ীদের উপস্থিতিতে এমন স্বাভাবিক পরিবেশে কেউ নিরাপত্তাহীনতার কথা বললে সেটি তার ব্যক্তিগত অনুভূতির বিষয় হতে পারে; কিন্তু সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থায় উদ্বেগের কোনো কারণ নেই। এ সময় তিনি সাম্প্রতিক হামলায় আহত শরিফ ওসমান হাদির সুস্থতার জন্য সবার কাছে দোয়া কামনা করেন।
বিকেএমইএর পক্ষ থেকে পুলিশকে ছয়টি লেগুনা ভ্যান উপহার দেওয়ার উদ্যোগকে প্রশংসনীয় ও দৃষ্টান্তমূলক বলে অভিহিত করেন জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি উল্লেখ করেন, জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় পুলিশের অনেক যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এমতাবস্থায় ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর এমন সহায়তা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশের গতিশীলতা বাড়াবে এবং দায়িত্ব পালনে কার্যকর ভূমিকা রাখবে। অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের অতিরিক্ত আইজিপি, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি এবং বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় অভিযান চালিয়ে ১ হাজার ৯২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মধ্যে বিভিন্ন মামলা ও ওয়ারেন্টে ৫২৩ জন। অপারেশন ডেভিল হান্ট ফেজ ২-তে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১ হাজার ৩৯৮ জন।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে।
পুলিশ সদর দপ্তর জানায়, অভিযানে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ওয়ান শ্যুটার গান, একটি বন্দুক, ৩ রাউন্ড গুলি, একটি ফায়ার করা গুলি, ৩ রাউন্ড কার্তুজ, ১১টি দেশীয় অস্ত্র এবং ১২টি ককটেল।
পুলিশ আরও জানায়, পুলিশি কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ২১ হাজার ৬৩০টি মোটরসাইকেল ও ১৯ হাজার ৯৪টি গাড়ি তল্লাশি করা হয়। তল্লাশিকালে একটি একনলা বন্ধুক, দুটি ধারালো ছুরি, একটি বার্মিজ চাকু, এক রাউন্ড গুলি ও একটি ফায়ার করা গুলি উদ্ধার করা হয়।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় থানা ভাংচুরের মামলায় শাহজাহান মিয়া (৫২) নামে এক ইউপি মেম্বারকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ফুলবাড়িয়া থানার ওসি সাইফুল্লাহ সাইফ জানান, শাহজাহান মিয়া পুটিজানা ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড বৈলাজান গ্রামের বাসিন্দা। তিনি ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও ইউপি সদস্য।
পুলিশ জানায়, গত ৪ আগস্ট থানা ভাংচুরের মামলার অন্যতম আসামি শাহজাহান মেম্বারকে মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১ টার দিকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের একটি টিম উপজেলার শিবগঞ্জ বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করেন। শাহজাহান মেম্বার দীর্ঘদিন ধরে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
১৯৭১ সালে নওগাঁ ছিল তৎকালীন ইস্ট পাকিস্তান রাইফেলস (ইপিআর)-এর ৭ নম্বর উইংয়ের গুরুত্বপূর্ণ হেডকোয়ার্টার। ১৮ মার্চ পর্যন্ত এখানে কমান্ডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন পাঞ্জাবি মেজর আকরাম বেগ। তার অধীনে দুজন ক্যাপ্টেন ছিলেন পাঞ্জাবি ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজাল এবং বাঙালি ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন।
২৫ মার্চের পূর্বে মেজর আকরাম বেগের স্থলে বাঙালি মেজর নাজমুল হক নওগাঁয় ইপিআরের নতুন কমান্ডিং অফিসার হিসেবে বদলি হয়ে আসেন। তবে দেশের উত্তপ্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে মেজর আকরাম বেগ তার কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরে অসম্মতি জানান। পরবর্তীতে কৌশলে ২৪ মার্চ মেজর আকরাম বেগ ও ক্যাপ্টেন নাভেদ আফজালকে গ্রেপ্তার করা হয়।
একই সঙ্গে পশ্চিম পাঞ্জাবের ঝিলামের অধিবাসী নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক নিসারুল হামিদকেও গ্রেপ্তার করা হয়। বন্দিদশায় সপরিবারে তারা নিহত হন।
এর ফলে নওগাঁ মহকুমা সদ্য ঘোষিত স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের মুক্ত এলাকায় পরিণত হয় এবং এ সময় নওগাঁর প্রশাসনিক দায়িত্বভার গ্রহণ করে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ।
২৫ মার্চ পাক হানাদার বাহিনীর আক্রমণের শিকার হলেও নওগাঁ প্রায় এক মাস মুক্ত ছিল। তবে ২২ এপ্রিল নওগাঁ পুনরায় পাক বাহিনীর দখলে চলে যায়। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে সমগ্র বাংলাদেশকে ১১টি সেক্টরে বিভক্ত করা হয়।
৭ নম্বর সেক্টরের আওতায় ছিল নওগাঁ, নবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, হিলি, রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর অঞ্চল। এই সেক্টরের প্রথম অধিনায়ক ছিলেন ক্যাপ্টেন গিয়াস উদ্দিন, পরবর্তীতে মেজর নাজমুল হক এবং তার মৃত্যুর পর মেজর নুরুজ্জামান দায়িত্ব পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১১টি সেক্টর থেকে মোট ১১৪ জন যোদ্ধাকে সি অ্যান্ড সি স্পেশাল প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ভারতের দেরাদুনের কবুলিয়া নামক স্থানে এই প্রশিক্ষণ হয়। নওগাঁ থেকে মাত্র দুজন কৃতি সন্তান এই দুর্লভ প্রশিক্ষণ গ্রহণের গৌরব অর্জন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী ও আখতার আহমেদ সিদ্দিকী।
এছাড়া স্বাধীনতা যুদ্ধের সূচনালগ্নেই নওগাঁর বহু ছাত্র-যুবক মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন মোখলেসুর রহমান রাজা, আফজাল হোসেন, মুনির আহমেদ, আব্দুল মালেক, আবু রেজা বিশু, আনিসুর রহমান তরফদার, মোজাম্মেল হক, মকলেসার রহমান চৌধুরী, শামসুল হক, ওহিদুর রহমান, হাসেম আলী, ময়নুল ইসলাম ময়েন, ময়নুল হক মুকুল, খায়রুল আলম, শফিকুল ইসলাম খান, আব্দুস সাত্তার মল্লিক, হাফিজুর রহমান, আব্দুল ওহাব, আব্দুর রাজ্জাক, মোয়াজ্জেম হোসেন, হারুন-অল-রশিদ, আখতারুজ্জামান রঞ্জু, অনিমেশ চন্দ্র দাস, সিরাজুল ইসলাম আনসারী, মোরশেদ তরফদার, আলমগীর নাব সিদ্দিকী, ইব্রাহিম তারা, আবু তাহের, আব্দুস সালাম, মনিরুজ্জামান, জাহাঙ্গীর হোসেন, খন্দকার ওয়ালিউল ইসলাম টুকু, জুলফিকারুল ইসলাম নার্গিস, আজাদ, জহুরুল ইসলাম স্বপন, এ বি এম ফারুক, গোলাম সামদানী, মকছেদ আলী, ডা. শাহ আব্দুল খালেক, হাবিলদার গোলাম রাব্বানী মুকুল, এস এম সিরাজুল ইসলাম, এ এফ এম নুরুজ্জামান নান্টু, আবু তালেব, খলিলুর রহমান, আবুবকর সিদ্দিক, আবুল হোসেনসহ আরও অনেকে।
১৬ ডিসেম্বর বিজয়ের সংবাদ পাওয়ার পর বীর মুক্তিযোদ্ধা জালাল হোসেন চৌধুরী নওগাঁ আক্রমণের সিদ্ধান্ত নেন। তার আগে নদীকূল এলাকায় তিনি গ্রুপ কমান্ডারদের ব্রিফিং দেন। তিনি জানান, নওগাঁ তখনো অবাঙালিদের নিয়ন্ত্রণে এবং সমগ্র শহর মেজর সাঈদের নেতৃত্বে শক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় সুরক্ষিত। পাঞ্জাব, বেলুচ, সিন্ধি ও পাঠান রেজিমেন্টকে সতর্ক অবস্থানে রাখা হয়েছিল।
১৭ ডিসেম্বর শীতল সকালে বিশাল মুক্তিযোদ্ধা বাহিনী নওগাঁ আক্রমণ করে। মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে অবস্থান নিলে দুই বাহিনীর মধ্যে দূরত্ব কমে আসে। মাঝখানে ছিল শাখা যমুনা নদী। এ অবস্থায় জালাল হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে শুরু হয় গোলাগুলি, যা রাত পর্যন্ত অব্যাহত থাকে।
নওগাঁ জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা এস এম সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসরমান ভারতীয় বাহিনীর মেজর চন্দ্রশেখর এবং পশ্চিম দিনাজপুরের বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে অগ্রসরমাণ মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী একযোগে নওগাঁয় প্রবেশ করে। তখন পাক হানাদার বাহিনীর আর প্রতিরোধের সক্ষমতা ছিল না।
ফলে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা কেডি সরকারি স্কুল, পিএম গার্লস স্কুল, সরকারি গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্বর ও এসডিও অফিসসহ বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র ফেলে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে। এ সময় নওগাঁর বিহারী সম্প্রদায়ের লোকজন সপরিবারে কেডি সরকারি স্কুলে আশ্রয় নেয়।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীকে স্বাগত জানান। এসডিও অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এর মধ্য দিয়েই ১৮ ডিসেম্বর নওগাঁ চিরতরে হানাদারমুক্ত হয়।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লে এবং ব্যান্ডবাদনে মনোমুগ্ধকর নৈপুণ্যময় পরিবেশনা প্রদর্শন করেন বান্দরবান জেলার লামা উপজেলার সরই ইউনিয়নের দুর্গম পাহাড়ের কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থী কোয়ান্টারা। লামায় এবারও তারা কুচকাওয়াজ ও ডিসপ্লেতে ১ম এবং ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননা স্মারক পুরস্কার অর্জন করেছে।
এতে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের প্যারেড বড় (৩৫জন) ও প্যারেড ছোট দল (৩৫জন) প্রাথমিক ও মাধ্যমিক ক্যাটাগরিতে অংশ নেয়। লামা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গনে প্রতিযোগিতা হয়।
এ পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে ছিলেন- লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মঈন উদ্দিন, থানার ওসি শাহাজাহান কামাল, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. গোলাম মোস্তফা নাদিম ও পৌরসভার সাবেক মেযর মো. আমির হোসেন প্রমুখ।
কুচকাওয়াজ, ডিসপ্লেতে প্রথম ও ব্যান্ডবাদনে বিশেষ সম্মাননার অর্জনের সত্যতা নিশ্চিত করে কোয়ান্টাম কসমো স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ছালেহ আহমেদ জানান, ‘এবারে তিনটি কুচকাওয়াজ, দুইটি ডিসপ্লে ও দুইটি ব্যন্ডবাদন মিলে সর্বমোট ৪৭৫ জন শিক্ষার্থী অংশ নেয়।’
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি গুদামে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল সার জব্দ করা হয়েছে। পরে গুদামটি সিলগালা করে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। বিভিন্ন ব্যান্ডের নামে বস্তাভর্তি করে ভেজাল সার গুদামজাত করা হচ্ছিল। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালানো হয়।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) দুপুরে তেলিহাটি ইউনিয়নের টেপিরবাড়ী গ্রামে ডালের ভিটা এলাকায় ভেজাল সার উৎপাদন কারখানার সন্ধান পেয়েছে কৃষি অফিস। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে সেখানে অভিযান চালিয়ে সারগুলো জব্দ করা হয়। তবে এ সময় কাউকে আটক করা যায়নি।
শ্রীপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমাইয়া সুলতানা বন্যা জানান এখানে প্রায় ১৮ টন সার ও কাঁচামাল জব্দ করা হয়েছে যার বাজারজাত মূল্য প্রায় ১৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ অভিযান পরিচালনা করে গুদাম সিলগালা করে কারখানার মেশিন জব্দ করেছেন। তিনি জানান ভেজাল সারগুলো নষ্ট করে দেওয়া হবে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মাহবুব আলম ও আফরোজা আক্তার।
সারাদেশের ন্যায় কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামেও ডেভিল হান্ট ফেজ-২ এর অভিযানে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের পৌর সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তিনি পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের পাঁচড়া পাটোয়ারীর বাড়ীর মৃত হাফেজ মিয়ার ছেলে।
বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) বিকেলে তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ।
পুলিশ জানায়, চৌদ্দগ্রাম পৌর আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারী বিগত আ’লীগ সরকারের সময় বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর হামলা মামলা চালিয়েছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আত্মগোপনে চলে যায়। তাঁর বিরুদ্ধে সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলা রয়েছে। তিনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন। বুধবার ভোরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ পাঁচরা রাস্তার মাথা থেকে তাকে গ্রেফতার করে। বুধবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে জেলহাজতে প্রেরন করা হয়।
চৌদ্দগ্রাম মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার সানা উল্লাহ বলেন, ‘কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগের চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন পাটোয়ারীকে গ্রেফতার শেষে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে’।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মীরসরাইয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকের ধাক্কায় শামসুল আলম (৪৫) নামের এক সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ট্রাকচালক রবিউল হোসেন (৩৩) ও তার সহকারী এমরান হোসেন (১৭)। বুধবার (১৭ ডিসেম্বর) ভোরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বারইয়ারহাট পৌরসভার চিনকি আস্তানা এলাকায় ঢাকাগামী লেনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শামসুল আলম বান্দরবান জেলার নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সুলতান সওদাগরের ছেলে। আহত দুজনের বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলায়।
ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ভোরে মহাসড়কের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি ট্রাকের পেছনে সবজিবাহী ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ধাক্কা দেয়। এতে সবজিবাহী ট্রাকের চালক, সহকারী ও সবজি ব্যবসায়ী কেবিনে আটকে পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলেই নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বারইয়ারহাট ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন ইনচার্জ জয়নাল আবেদীন তিতাস বলেন, ভোরে কিছু আগে দুর্ঘটনার খবর পাই। তিন মিনিটের মধ্যে দুটি ইউনিট নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে আটকে থাকা চালক ও সহকারীকে উদ্ধার করে। পরে তাদের হাসপাতালে পাঠাই এবং নিহত ব্যক্তিকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করি।
জোরারগঞ্জ হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক বোরহান উদ্দিন বলেন, দুর্ঘটনাকবলিত দুটি ট্রাক জব্দ করে থানায় আনা হয়েছে। নিহতের পরিবারকে খবর দেওয়া হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, চালকের চোখে ঘুম নিয়ে গাড়ি চালানোর কারণেই দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকটিতে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।