সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) নির্বাচনের দিন-তারিখ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। অথচ মাঠে নেমে পড়েছেন সম্ভাব্য মেয়র প্রার্থীরা। তাদের ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগর। তবে প্রচার চালানো প্রায় সবাই আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশী। সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির নেতাদের এখন পর্যন্ত কোনো তৎপরতা নেই।
সিসিকের গত দুই নির্বাচনে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হন আরিফুল হক চৌধুরী। টানা দুই মেয়াদে বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কারণে আরিফের জনপ্রিয়তা আরও বেড়েছে বলে মনে করা হয়। তবে এবার বিএনপির পক্ষ থেকে এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশ না নেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সরকার পতন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে দলটি। এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী সিটি নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না, এ নিয়ে চলছে জল্পনা-কল্পনা।
আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে সিলেটসহ পাঁচ সিটিতে নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর। গত রোববার নির্বাচন ভবনের নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এমনটি জানান।
আগামী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে সিলেট সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেছেন, বিএনপি এখন নির্বাচন নিয়ে ভাবছে না। এ ব্যাপারে দলীয় সিদ্ধান্তই তিনি মেনে নেবেন।
তবে আরিফুল হকের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, বিএনপির চলমান আন্দোলনে সক্রিয় থাকলেও নিজের মতো করে নির্বাচনের প্রস্তুতিও নিচ্ছেন আরিফ। শেষ সময়ে তিনি অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেবেন।
এই সূত্রের দাবি, সিলেট সিটিতে সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রার্থী ছিলেন সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক মেয়র প্রয়াত বদরউদ্দিন আহমদ কামরান। ২০১৩ ও ২০১৮ সালে কামরানকে হারিয়েই মেয়র নির্বাচিত হন আরিফ। ২০২০ সালে কামরানের মৃত্যুর কারণে এবার সিলেটে আওয়ামী লীগের শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই। ফলে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আরিফের জয় অনেকটাই সহজ হবে। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতাদের এটি বুঝিয়ে শেষ মূহূর্তে তিনি নির্বাচনে রাজি করাতে পারেন অথবা শীর্ষ নেতাদের সম্মতি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থীও হতে পারেন।
তবে সবকিছুই সে সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে জানিয়ে আরিফ-ঘনিষ্ঠ বিএনপির এই সূত্র জানায়, সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন চাচ্ছেন আরিফ। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিলে এবং সে নির্বাচনে মনোনয়নপ্রাপ্তি নিশ্চিত হলে সিটি নির্বাচনে আরিফ অংশ নিতে নাও পারেন।
আরিফুল হক চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়নি। তফসিল ঘোষণার পর দল এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে। তা ছাড়া আমরা এখন সরকার পতনের দাবিতে আন্দোলনে রয়েছি। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনই সুষ্ঠু হবে না।’
আওয়ামী লীগের তোড়জোড়
বিএনপি নীরব থাকলেও সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগে রীতিমতো প্রার্থীজট দেখা দিয়েছে। দলটির যে কয়েকজন নেতা দলীয় মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন, তাদের পোস্টার-বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে নগর। এ ছাড়া জনসংযোগও শুরু করে দিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
আওয়ামী লীগ নেতাদের ধারণা, এবার সিটি র্নিাচনে বিএনপি নাও অংশ নিতে পারে। এ ক্ষেত্রে দলীয় মনোনয়ন পেলে জয় অনেকটা নিশ্চিত। তাই দলীয় মনোনয়নের জন্য মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে তৎপরতা চালাচ্ছেন আওয়ামী লীগের যুক্তরাজ্য শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী, দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, সিলেট মহানগরের সহসভাপতি আসাদ উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এ টি এম হাসান জেবুল ও কাউন্সিলর আজাদুর রহমান আজাদ, সদস্য প্রিন্স সদরুজ্জামান এবং বদরউদ্দিন আহমদ কামরানের ছেলে আরমান আহমদ শিপলু।
এদের মধ্যে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী দলের হাইকমান্ডের সবুজ সংকেত পেয়েছেন বলে প্রচার চালাচ্ছেন।
আরিফের প্রার্থী হওয়া প্রসঙ্গে আনোয়ারুজ্জামান বলেন, ‘বিএনপি বা আরিফুল হক নির্বাচনে অংশ নেবেন কি না, এটা তাদের বিষয়। এ নিয়ে আমার কোনো চিন্তা নেই। আমি দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। জনগণের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছি।’
তিতাস গ্যাস কর্তৃক গ্যাসের অবৈধ ব্যবহার শনাক্তকরণ এবং উচ্ছেদ অভিযান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। নিয়মিত অভিযানের অংশ হিসেবে গত ১৭ আগস্ট (রবিবার) ২০২৫ তারিখে জনাব সিমন সরকার, বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় -এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ-সাভার, জোবিঅ-সাভার আওতাধীন কলমা, গৌরীপুর, গরুরহাট, আশুলিয়া কলেজ রোড, বড় আশুলিয়া সাভার, ঢাকা এলাকার ০৫ টি স্পটে অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, আনুমানিক ০.১ কি:মি: বিতরণ লাইনের রুট নেক্স ওয়াশিং ও মা থ্রেড এন্ড এক্সেসরিজ নামক ২টি শিল্প ও ৩টি মিটারবিহীন আবাসিক সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ১০০ মিটার লাইন পাইপ অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। এতে মাসিক ৮,২৮,৫৮৫/- টাকার গ্যাস চুরি রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এছাড়া, একটি শিল্প গ্রাহককে ১,০০,০০০/- (এক লক্ষ) টাকা অর্থদন্ড আরোপ করা হয়েছে।
একই দিনে, জনাব হাসিবুর রহমান, সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ-এর নেতৃত্বে তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিসন এণ্ড ডিষ্ট্রিবিউশন পিএলসি -এর আঞ্চলিক বিক্রয় বিভাগ -সোনারগাঁও, জোবিঅ -সোনারগাঁও আওতাধীন নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁও উপজেলার পিরোজপুরের সোনারগাঁও ইকোনোমিক জোন সংলগ্ন এলাকায় অবৈধ বিতরণ লাইন উচ্ছেদ/সংযোগ বিচ্ছিন্নের জন্য অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে, ৩টি অবৈধ চুনা কারখানা ও ২টি হোটেল/রেস্টুরেন্টের সংযোগ বিচ্ছিন্নসহ ১.৫” ডায়া বিশিষ্ট ২০ ফুট এমএস লাইন পাইপ, বিভিন্ন ক্যাপাসিটির স্টার বার্নার ১৫ টি অপসারণ/জব্দ করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের সহায়তায় পানি স্প্রে করে চুনা ভাট্টির মালামাল নষ্ট করা হয়েছে এবং এক্সকেভেটরের মাধ্যমে মালামাল গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ১.৫" পিভিসি পাইপ উৎসস্থলে বিনষ্ট করা হয়েছে। ২টি রেস্টুরেন্টের মালিকের কাছ থেকে মোট ৩,০০,০০০/- (তিন লক্ষ) টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে।
এছাড়া, অভিযোগের প্রেক্ষিতে গ্রাহক আবু তাহের (গ্রা.সং-১০২ -০১৭০৭), ঠিকানা-ডি এম সি ৮৬, পশ্চিম নাখাল পাড়া, ঢাকা এর আঙিনা ভিজিল্যান্স বিভাগ কর্তৃক সরজমিনে পরিদর্শন করা হয়েছে। পরিদর্শনে ০৭ তলা বিশিষ্ট ভবনে ১১(এগারো) ডাবল চুলায় গ্যাস ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়। গ্রাহক প্রদর্শিত বিল বই অনুযায়ী অনুমোদিত চুলার সংখ্যা ০৪(চার) ডাবল। অনুমোদন অতিরিক্ত ০৭ (সাত) ডাবল চুলায় গ্যাস ব্যবহার জনিত কারনে সংযোগটি তাৎক্ষণিক ভাবে বিচ্ছিন্ন করে TGTDCL-1388137 নম্বরের প্ল্যাস্টিক সীল স্থাপন করা হয়েছে। বিচ্ছিন্নকৃত ০১(এক) টি রেগুলেটর সংশ্লিষ্ট জোনে (মেঢাবিবি-৪) জমা প্রদান করা হয়েছে।
দেশের প্রথম পাতাল মেট্রোরেল এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ হাজার ৫৪৫ কোটি টাকায়। শুরুতে ধরা হয়েছিল ৪৯ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
গতকাল রোববার ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের (লাইন-১) পরিচালক মো. আবুল কাসেম ভূঁঞার সই করা বিজ্ঞপ্তিতে প্রকল্পের ব্যয় বাড়ার এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, মূল ডিপিপিতে (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব) পিএ খাতের ব্যয় ধরা হয়েছিল ৩৯ হাজার ৪৫০ কোটি টাকা। তবে হালনাগাদ হিসাবে তা বেড়ে আনুমানিক ৭৫ হাজার ৬৪৯ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। তবে সব প্যাকেজের দরপত্র প্রক্রিয়া শেষ না হওয়ায় এখনই ডিপিপি সংশোধনের প্রস্তাব পাঠানো হয়নি।
আরও বলা হয়, ২০১৯-২৪ সালের মধ্যে ডলারের বিনিময় হার ৪২ শতাংশ বেড়েছে।
পাশাপাশি রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি, নির্মাণসামগ্রীর দাম ও শ্রমিকের মজুরি বাড়ার কারণে ব্যয় বেড়েছে। এছাড়া অংশীজনদের অনুরোধে পাতাল স্টেশনের নকশা একাধিকবার সংশোধন করতে হয়েছে। এ জন্য ব্যয় বেড়েছে।
প্রকল্পের দরপত্র প্রস্তাবের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এমআরটি লাইন-১ প্রকল্পের ১২টি প্যাকেজের মধ্যে এখন পর্যন্ত আটটির দরপত্র জমা পড়েছে।
এর মধ্যে একটির কাজ প্রায় শেষ। সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে চারটি জাপানি, দুটি চীনা ও দুটি ভারতীয় প্রতিষ্ঠান। এছাড়া তিনটি প্যাকেজে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশি কন্ট্রাক্টর সহযোগী হিসেবে যুক্ত রয়েছে। তবে সামগ্রিকভাবে কন্ট্রাক্টরদের প্রস্তাবিত দর ডিপিপিতে ধরা অনুমানের তুলনায় অনেক বেশি।
রাজধানীতে ৩১ দশমিক ২৪১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাতাল ও উড়াল রুট মিলিয়ে গড়া হচ্ছে এমআরটি লাইন-১।
১২টি প্যাকেজের মাধ্যমে নির্মাণ হবে পাতাল মেট্রো। এরই মধ্যে ডিপো এলাকার উন্নয়নকাজ শেষ হলেও অন্য ১১টি প্যাকেজের ক্রয়প্রক্রিয়া এখনো চলমান।
২০২৬ সালের ডিসেম্বরে এ প্রকল্পের কাজ শেষ করার কথা রয়েছে।
লন্ডনে বসবাসরত বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি নারীরা এখনো উচ্চশিক্ষিত হয়েও ভালো বেতনের চাকরি পেতে মারাত্মক বাধার সম্মুখীন হচ্ছেন। অন্য জাতিগোষ্ঠীর তুলনায় বৈষম্য, কাঠামোগত অসাম্য এবং কর্মক্ষেত্রে অনমনীয়তার কারণে তারা অর্থবহ কর্মসংস্থান থেকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে বঞ্চিত হচ্ছেন। সম্প্রতি গ্রেটার লন্ডন অথরিটি (জিএলএ) প্রকাশিত ‘বাংলাদেশি অ্যান্ড পাকিস্তানি উইমেন ইন গুড ওয়ার্ক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
অনলাইন ডন জানিয়েছে, প্রতিবেদনে হতাশাজনক পরিসংখ্যান উঠে এসেছে। ২০২২ সালে লন্ডনে প্রায় অর্ধেক পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি নারী (৪৮.১ শতাংশ) ছিলেন অর্থনৈতিকভাবে নিষ্ক্রিয়। একই সময়ে একই পটভূমির পুরুষদের মধ্যে এ হার ছিল মাত্র ১৫.৩ শতাংশ। নারীদের বেকারত্বের হার দাঁড়ায় ১৬.৯ শতাংশ, যা পুরুষদের তুলনায় তিন গুণ বেশি (৫.৫ শতাংশ)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সবচেয়ে উদ্বেগজনক চিত্র হলো লিঙ্গভিত্তিক মজুরি বৈষম্য। লন্ডনে পাকিস্তানি নারীরা গড়ে পুরুষদের চেয়ে প্রায় ৬০ শতাংশ কম আয় করেন, যা যেকোনো জাতিগত গোষ্ঠীর মধ্যে সর্বাধিক পার্থক্য।
এই তথ্যকে ‘চমকপ্রদ’ আখ্যা দিয়ে লন্ডনের ডেপুটি মেয়র ফর কমিউনিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল জাস্টিস ড. ডেবি উইকস-বার্নার্ড বলেন, অভিজ্ঞ পাকিস্তানি ও বাংলাদেশি নারীরা এখনো পদোন্নতি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন, এমনকি সাক্ষাৎকারের সুযোগ পেতে অনেকে নিজেদের নাম পরিবর্তন করতে বাধ্য হচ্ছেন। তার ভাষায়, ‘এটি গ্রহণযোগ্য নয়। এসব অভিজ্ঞতা যেমন তাদের দৃঢ়তার প্রতিফলন ঘটায়, তেমনি আমাদের দেখায় যে এসব বাধা দ্রুত ভাঙা জরুরি।’
প্রতিবেদনটিতে ৩২ জন নারীর অভিজ্ঞতা তুলে ধরা হয়েছে। তাদের মধ্যে হতাশার সুর স্পষ্ট হলেও, অনেকেই দৃঢ় সংকল্পের কথাও বলেছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ সলিসিটর খাদিজা (বয়স ৩০ থেকে ৩৫) বলেন, ‘লিগ্যাল প্র্যাকটিস কোর্স (এলপিসি) করতে এখন ১৪ হাজার পাউন্ড লাগে। আমি দীর্ঘদিন ধরে সঞ্চয় করছিলাম। কিন্তু যখন জানালাম আমার বাবা ট্যাক্সি ড্রাইভার, তারা আমাকে অবজ্ঞার চোখে দেখল। অথচ অন্যদের জন্য বিষয়টি সহজ ছিল—তাদের বাবা-মা টাকা দিয়ে দিয়েছেন।’
বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ ফারজানা জানান, তার এক সহকর্মীকে পদোন্নতি না দিয়ে তা এক শ্বেতাঙ্গ নারীকে দেয়া হয়, যিনি দলের কাজ সামলাতেই পারছিলেন না। অথচ তার সহকর্মীর অভিজ্ঞতা ছিল ১০ বছরের বেশি। পাকিস্তানি শিক্ষিকা আমেনা জানান, সাক্ষাৎকারে তাকে বলা হয় তার উচ্চারণে শিক্ষার্থীরা বিভ্রান্ত হবে এবং ‘আমাদের অ্যাকসেন্টের সঙ্গে তা মেলে না।’
অন্যদিকে, মুসলিম পরিচয়ের কারণে বৈষম্যের শিকার হওয়ার কথাও উঠে আসে প্রতিবেদনে। বাংলাদেশি স্বেচ্ছাসেবী মাহমুদা বলেন, ‘আমরা যখন হিজাব পরি, তখন অনেকেই সন্দেহ করে—এ কি কাজ করতে পারবে? ঠিকমতো কথা বলতেও পারবে তো?’ এছাড়া পারিবারিক দায়িত্ব এবং কর্মজীবনের ভারসাম্য রক্ষা করাও বড় চ্যালেঞ্জ। বিশেষ করে সাশ্রয়ী চাইল্ডকেয়ারের অভাব তীব্র সমস্যা হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ কর্মী জায়না বলেন, ‘আমি যদি সন্তানদের ডে কেয়ারে রাখি এবং দীর্ঘ সময় কাজ করি, তবে আমার অধিকাংশ বেতনই সেখানে চলে যাবে। এটি বাস্তবসম্মত নয়।’
তবে সব প্রতিকূলতার মধ্যেও অনেক নারী দৃঢ়তা দেখিয়েছেন। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত নীতি-নির্ধারক আনিসা বলেন, ‘আমি শুধুমাত্র একটি বৈচিত্র্য ইন্টার্নশিপের মাধ্যমে কাজের সুযোগ পেয়েছি। না হলে আজ আমি এখানে থাকতাম না।’
প্রতিবেদনটিতে সংস্কারের আহ্বান জানানো হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ব্লাইন্ড রিক্রুটমেন্ট, বিদেশি যোগ্যতার স্বীকৃতি, সাশ্রয়ী চাইল্ডকেয়ার এবং বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি নারীদের জন্য বিশেষ পদোন্নতি কর্মসূচি। ড. উইকস-বার্নার্ড বলেন, ‘অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও বৈষম্য কমানো একসঙ্গে হতে হবে। যেন কোনো সম্প্রদায় পিছিয়ে না থাকে।’ তিনি আরও বলেন, ব্যবসায়ী নেতা, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং সিটি হলকে অবশ্যই অন্তর্ভুক্তিমূলক কর্মক্ষেত্র তৈরির প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে, যা লন্ডনের বহুমাত্রিক বৈচিত্র্যকে প্রতিফলিত করবে।
কালা মিয়ার বয়স এখন প্রায় ৭২। পুরো ৬০ বছর ধরে তিনি একটি মাত্র কাজ করে আসছেন। সাগর তীরের তৃণভূমিতে গরু চরানো। মজুরির বিনিময়ে গৃহস্থদের গরু চরানোই তার জীবনের প্রধান পেশা। এ দীর্ঘ সময়ে তিনি এক ডজনেরও বেশি গৃহস্থের গরু চরিয়েছেন। তার বাড়ি কক্সবাজার টেকনাফ সাবরাং কচুবনিয়া গ্রামে।
এখনো প্রতিদিন ভোরে কাঁধে গামছা, হাতে বাঁশের লাঠি আর একটি পলিথিন নিয়ে গরুর পাল নিয়ে মাঠে ছুটে যান তিনি। জ্বর থাকলেও কিংবা শরীর খারাপ হলেও কাজ ফেলে ঘরে বসে থাকেন না।
কালা মিয়া বলেন, ‘গরুর চোখের দিকে তাকালেই মনে হয়, ওরা আমার সঙ্গে কথা বলছে। আমি প্রতিটি গরুর নাম রেখেছি- কেউ ‘ধইল্ল্যা’, কেউ ‘কালু’, কেউ বা ‘সোনামণি’। নাম ধরে ডাকলেই তারা আমার দিকে ছুটে আসে। কোনো গরু অসুস্থ হলে আমি রাত জেগে থাকি। একবার এক গরু পায়ে আঘাত পায়, তখন নিজের ওষুধই তাকে খাইয়ে দেই। ভুল হলেও গরুটি সুস্থ হয়ে গিয়েছিল।’
মাত্র ১২ বছর বয়সে মাত্র ২০ টাকায় রাখালের কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এখন মাসিক মজুরি পান ৫-৬ হাজার টাকা। পাশাপাশি প্রতি বছর দুটি ছোট গরু কিনে লালন করেন, বড় হলে বিক্রি করে কিছু লাভ পান। কিন্তু আর্থিক লাভই তার মূল টান নয়- গরুর গায়ে হাত বোলানো আর মাঠে তাদের সঙ্গে সময় কাটাতেই তার শান্তি।
টেকনাফের সাগর তীরে গরু চরানো একসময় জনপ্রিয় পেশা ছিল। বছরের ৭-৮ মাস বালুচরে অসংখ্য গরুর পাল ঘুরে বেড়ায়। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম আর কষ্টকর পরিবেশের কারণে অনেকেই এই পেশা ছেড়ে দেন। কিন্তু কালামিয়ার জীবন কেটেছে সাগর তীরেই, গরুর সঙ্গেই।
তিনি বলেন, ‘আত্মীয়রা আমাকে দোকান করতে বলেছে, কিন্তু আমি পারিনি। দোকানে আরাম আছে, কিন্তু শান্তি নেই। শান্তি আমি পাই মাঠে, গরুর পাশে।’
গ্রামবাসীর চোখে কালামিয়া কেবল একজন রাখাল নন, তিনি একজন প্রেরণাদায়ী মানুষ। স্থানীয় তরুণরা মাঝে মধ্যে তার সঙ্গে মাঠে যায়, শিখে নেয় গরু পালনের কৌশল। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, ‘কালা চাচা শুধু রাখাল নন, তিনি একজন ভালোবাসার মানুষ। গরুর প্রতি তার মায়া, দায়িত্ববোধ ও নিষ্ঠা আমাদের জন্য উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।’
যে সমাজে মানুষ প্রায়ই পেশা বদল করে, সেখানে কালামিয়ার ৬০ বছর একই কাজে থাকা সত্যিই বিস্ময়কর। তার জন্য গরু চরানো শুধু পেশা নয়, মায়ার বাঁধন। এমন মানুষের পাশে দাঁড়ানো আমাদের সবার দায়িত্ব।
মৌলভীবাজার জেলাকে ‘চায়ের রাজধানী’ বলা হয়, বিশাল চা বাগান এবং উন্নত মানের চায়ের জন্য এই অঞ্চলের খ্যাতি রয়েছে। তবে এই রাজ্যে এবার যুক্ত হয়েছে নতুন এক বিস্ময় আল্পনায় মোড়া একটি সড়ক, যা মুগ্ধ করছে পথচারী থেকে শুরু করে পর্যটক সবাইকে।
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই) সংলগ্ন প্রায় এক কিলোমিটার রাস্তার দুপাশজুড়ে বিস্তৃত সবুজ চা বাগানের মধ্যে আঁকা এই আল্পনাগুলো যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক অপূর্ব শিল্পসম্মত মিলন ঘটিয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিনের উদ্যোগে এই সড়কজুড়ে আঁকা হয়েছে মনোমুগ্ধকর আল্পনা।
উপজেলার পর্যটনের অন্যতম ব্যস্ততম ভানুগাছ রোডের বিটিআরআই মোড় থেকে শুরু করে বিটিআরআই সংলগ্ন ব্রীজ পর্যন্ত রাস্তার দুই পাশে আল্পনার বৈচিত্র্য নজর কাড়ছে স্থানীয়রা ও ভ্রমণপিপাসুদের। রাস্তার দুপাশজুড়ে বিস্তৃত সবুজ চা বাগানের মধ্যে আঁকা এই আল্পনাগুলো যেন প্রকৃতির সঙ্গে এক অপূর্ব শিল্পসম্মত মিলন ঘটিয়েছে। আলপনার রঙে রঙিন এই রাস্তা শুধু চলার পথ নয়, হয়ে উঠেছে আনন্দ, ভালোবাসা ও সৌন্দর্য খোঁজার একটি গন্তব্য।
শিল্প আর প্রকৃতির এক মোহনীয় মেলবন্ধনে রাস্তার দুই পাশে সুশৃঙ্খল সবুজ চা-বাগানের নীরব নিসর্গের মাঝখানে আল্পনার ছন্দের ঢেউ। এখানে লাল, নীল, হলুদ, সাদা রঙে আঁকা আল্পনাগুলো যেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ক্যানভাসে ছড়িয়ে পড়েছে নকশার মতো। শুধু দেখার নয়, এটি এখন একটি ‘ফটোস্পট’ হয়ে উঠেছে স্থানীয় ও ভিনজেলা থেকে আগত পর্যটকদের কাছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, রাস্তার দুই পাশে ভিড় জমেছে নানা বয়ুসি মানুষের। অনেকে মোবাইল বা ক্যামেরা হাতে দৃষ্টিনন্দন এই দৃশ্যকে ধরে রাখছেন ছবিতে। কেউ হাঁটছেন ধীরপায়ে, কেউ দাঁড়িয়ে আছেন রঙিন কোনো নকশার পাশে, কেউ আবার শিশুকে সঙ্গে নিয়ে শেখাচ্ছেন ‘এই হলো আমাদের সংস্কৃতি।’
স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তাটি শ্রীমঙ্গলের পর্যটন ব্যবস্থার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটক, প্রশাসন, সাধারণ মানুষসহ সবার কাছেই এই রাস্তার গুরুত্ব অনেক। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে যেভাবে সৃজনশীলভাবে আর্ট করা হয়েছে, তা দেখে মনে হয়েছে এটি শুধু রাস্তা নয়, যেন একটি স্থায়ী শিল্পকর্ম। এখানে ছবি তুলে বহু বছর সংরক্ষণ করে রাখার মতো অবস্থা, এখনে এমন মনোমুগ্ধকর পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।
ঢাকা থেকে ঘুরতে আসা চাকরিজীবী শারমিন জাহান জানান, শনিবার আমরা শ্রীমঙ্গলে এসেছি। বের হলাম চা বাগান দেখতে। হঠাৎ এই রাস্তাটি দেখে ছবি তুলতে লাগলাম। আমার মেয়ে এখন ছবি তোলাতেই ব্যস্ত। এর মধ্যেই ঝুম ঝুম বৃষ্টি শুরু হলো, বৃষ্টিতে ভিজেই তারা ছবি তুলছে।
তিনি বলেন, এই রাস্তাটি অসাধারণ সৌন্দর্যের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এমন উদ্যোগ সত্যিই প্রশংসনীয়। আমরা চাই, এভাবে আরও কয়েকটি রাস্তাও সৌন্দর্য বর্ধনের মাধ্যমে আকর্ষণীয় করে তোলা হোক। এখানকার মানুষ, প্রকৃতি হোটেল মোটেল সবগুলো খুবই সুন্দর। আমরা আবার ছুটি পেলে এখানে আসব।’
শ্রীমঙ্গল ট্যুরিস্ট পুলিশের ওসি মো. কামরুল হাসান চৌধুরী জানান, ‘দেশের নানা প্রান্ত থেকে পর্যটকরা ছুটে আসেন মৌলভীবাজারে। তাদের প্রথম দেখার স্থান হয় কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা। এখানকার উঁচু-নিচু পাহাড়, চা-বাগান, পান বাগান, খাসিয়া পুঞ্জি, বিটিআরআই, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, ক্যামেলীয়া লেক সহ বিভিন্ন পর্যটন স্থানগুলো মুগ্ধ করে পর্যটকদের। পর্যটকদের জন্য আমরা সবসময় ট্যুরিস্ট পুলিশ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে আসছে।’
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, চা-বাগান আর বৈচিত্র্যপূর্ণ জীববৈচিত্র্যের এক অপার সম্ভাবনাময় পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গল। এই পর্যটন নগরী সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশবিভুঁইয়েও সমানভাবে সমাদৃত। চা বাগানের পাশাপাশি হ্রদ, হাওর, উঁচু নিচু পাহার, ঘন জঙ্গল, খনিজ গ্যাসকূপ আর আনারস, লেবু, পান, আগর ও রাবার বাগান দিয়ে সাজানো অদ্ভুত সুন্দর এই স্থানটির নাম শ্রীমঙ্গল এখানকার প্রতিটি পথ, প্রতিটি গাছ, এমনকি প্রতিটি বাতাসেও মিশে আছে সৌন্দর্য ও আতিথেয়তার স্পর্শ। আমাদের চেষ্টার মূল লক্ষ্য হচ্ছে এই প্রাকৃতিক ঐশ্বর্যকে আরও শৈল্পিকভাবে উপস্থাপন করা, যেন দেশি-বিদেশি পর্যটকরা শ্রীমঙ্গলে এসে শুধু নয়নে নয়, হৃদয়ে ধারণ করেন এক মুগ্ধ অভিজ্ঞতা। পরিচ্ছন্নতা, নান্দনিকতা ও পরিকল্পিত উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা শ্রীমঙ্গলকে গড়ে তুলতে চাই এমন এক শহর, যেখান থেকে কেউ ফিরে না যান মুগ্ধতা আর ভালোবাসা ছাড়া।’
বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই)-এর পরিচালক ড. মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘রাস্তাটি চমৎকার সৌন্দর্যের রূপ নিয়েছে। এটি পর্যটকদের আকর্ষণ বাড়াবে নিঃসন্দেহে। এ ধরনের উদ্যোগ নিয়মিত চলমান থাকলে শ্রীমঙ্গলের সৌন্দর্য আরও বিকশিত হবে।’
বহু প্রতীক্ষিত গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলাধীন পাঁচপীর বাজার- কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলা সদর সড়কে তিস্তা নদীর উপর নির্মিত ১৪৯০ মিটার দীর্ঘ "মওলানা ভাসানী সেতু" উদ্বোধন হতে যাচ্ছে।
আগামী ২০ আগস্ট (বুধবার) অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া গাইবান্ধায় উপস্থিত হয়ে সেতুটি উদ্বোধন করবেন।
বাংলাদেশ সরকার (জিওবি), সৌদি ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট(এসএফডি) এবং ওপেক ফান্ড ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট(ওফিড) এর অর্থায়নে সেতুটি নির্মাণে মোট ব্যয় হয়েছে ৯২৫ কোটি টাকা। ১৪৯০ মিটার দৈর্ঘ্য এবং ৯.৬০ মিটার প্রস্থের সেতুটির লেন সংখ্যা ২ টি এবং মোট স্প্যান সংখ্যা ৩১টি। এটি একটি প্রি-স্ট্রেসড কংক্রিট গার্ডার সেতু।
সেতুটির মাধ্যমে গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাথে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের ফলে স্বল্প সময় ও খরচে শিল্প ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন এবং ছোট ও মাঝারী কলকারখানা প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়াও নদীর উভয় তীরের সংযোগসহ উন্নত রোড নেটওয়ার্ক প্রতিষ্ঠার ফলে ঐ অঞ্চলের শিক্ষা ব্যবস্থার উন্নয়ন ও প্রসার ঘটবে। এলাকায় দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং স্থানীয় আর্থ-সামাজিক অবস্থা উন্নয়নসহ জাতীয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে অবদান রাখবে। পর্যটনের সুযোগ সৃষ্টিসহ একটি নতুন পরিবহন করিডোর গড়ে ওঠায় রাজধানী ঢাকাসহ দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ স্থানের সঙ্গে ভুরুঙ্গামারী স্থলবন্দরসহ কুড়িগ্রাম জেলার যোগাযোগের দূরত্ব ৪০-৬০ কিলোমিটার পর্যন্ত হ্রাস পাবে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উদযাপিত হয়েছে। ‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’-এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে গতকাল সোমবার সকালে সোনারগাঁ উপজেলা পরিষদ চত্বরে মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন করেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান। এ উপলক্ষে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে আলোচনা সভা, সফল মৎস্য উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান, মাছের পোনা অবমুক্ত ও র্যালী বের করা হয়। সোনারগাঁ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য দপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা রহমান।
সোনারগাঁ উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহমুদা আক্তারের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শারমিন আহমেদ তিথি, কৃষি কর্মকর্তা আবু সাঈদ তারেক, উপজেলা প্রকৌশলী মো: আলমগীর চৌধুরী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে উপজেলা বিভিন্ন দপ্ততের অন্যান্য কর্মকর্তা ও মৎস উদ্যোক্তারা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা শেষে উপজেলার সফল মৎস উদ্যোক্তাদের পুরস্কার প্রদান করা হয়। পরে র্যালি বের করা হয় এবং উপজেলা পরিষদের পুকুরে বিভিন্ন জাতের মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। র্যালিটি উপজেলা চত্বরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ করেছেন আপিল বিভাগ। রায়ে আবেদনকারী এসব উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ২০০৭ সালে বরখাস্তের পর থেকে প্রাপ্য বকেয়া বেতনভাতা জ্যেষ্ঠতাসহ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।
এছাড়া এসব কর্মকর্তার বরখাস্ত থাকাকালীন সময়কে বিশেষ ছুটি হিসেবে বিবেচনা করতে বলা হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট) প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির দেওয়া এই রায়ের ১৭ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশ করেছেন।
এর আগে ২০২২ সালে আবেদনকারীদের আপিল খারিজ করে দেওয়া রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে করা পৃথক আবেদনের ওপর শুনানি শেষে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগ তাদের চাকরিতে পুনর্বহালের রায় দেন। আজ রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি প্রকাশিত হয়।
আদালতে আবেদনকারী পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সালাহ উদ্দিন দোলন, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী ও ব্যারিস্টার মো. রুহুল কুদ্দুস কাজল শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান ভূঁইয়া।
২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। চার দলীয় জোট সরকারের সময়ের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা নেওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামের তৎকালীন জোট সরকারের আমলে নিয়োগ পাওয়া এই ৮৫ জন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ দেওয়ার অভিযোগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়।
এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা আপিল করেন। এই আপিল মঞ্জুর করে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন।
এই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান।
এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকারপক্ষ পৃথক আপিল করে। ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া সিদ্ধান্ত বাতিল করেন আপিল বিভাগ। ফলে তাদের চাকরিতে ফেরত আটকে যায়। পরে ২০২৩ সালে আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) জন্য তারা আবেদন করেন। সেই আবেদনের ওপর ২০ ফেব্রুয়ারি শুনানি হয়। পরে ২৫ ফেব্রুয়ারি আবেদনকারীদের আবেদন মঞ্জুর করে এবং ২০২২ সালে আপিল বিভাগের দেওয়া রায় বাতিল করে তাদেরকে চাকরিতে পূর্ণবহালের নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ।
ভোলা জেলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার পক্ষিয়া ইউনিয়নের ছোট এক গ্রামে জন্ম নিয়েছিল ফুটফুটে কন্যা শিশু নুহামনি। আজ তার পাঁচ বছর বয়স। কিন্তু জন্মের পর থেকেই অন্য সব শিশুর মতো স্বাভাবিক জীবন নয়, তাকে লড়তে হচ্ছে এক অজানা ও বিরল চর্মরোগের সঙ্গে।
নুহামনির মুখমণ্ডল, হাত-পা, পিঠসহ সারা শরীরজুড়ে ছড়িয়ে আছে বড় বড় ফোসকা, ঘাঁ পাঁচরা ও খসখসে ত্বক। শরীরজুড়ে চুলকানি ও ব্যথা নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার অবস্থার অবনতি হচ্ছে। দারিদ্র্যপীড়িত পরিবারটি চিকিৎসার জন্য একাধিকবার স্থানীয়ভাবে চেষ্টা করলেও রোগের সঠিক নাম ও প্রতিকার এখনও মেলেনি।
বাবা-মায়ের সংসারে অভাব অনটনের টানাপোড়েনে শিশু নুহামনি যেনো এক ভারী বোঝা হয়ে আছে।
নুহামনির বাবা আলামিন মিয়া একজন দিনমজুর। সামান্য আয়ে চলে তাদের সংসার। বাবা মায়ের কণ্ঠে ও চোখে মুখে রয়েছে অসহায়ত্বের ছাপ।
মা শিল্পী বেগম জানান "মেয়ে জন্মের পর থেকেই শরীরটা আলাদা রকম। প্রথমে ভাবছিলাম, সময় গেলে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু এখন ওর যন্ত্রণা সহ্য হয় না। কোনো ভালো ডাক্তার দেখানোর সামর্থ্য নেই।"
আদরের নাতনিকে নিয়ে অঝোরে কাদঁছেন দাদী বিনু বেগম। নাতনিকে আগলে রেখে দেখভাল করেন তিনি। দাদী বিনু বেগম বলেন, " জন্মের পর থেকে তাকে ভালো করে গোসল করাতে পারেননি। এমনকি শরীরে লাগাতে পারেননি সাবানও। ব্যাথা আর চুলকানির কারণে রাতে ঘুমাতে পারেন না নুহামনি।"
স্থানীয় পল্লী চিকিৎসকের দেওয়া ঔষধেই চলছে শিশু নুহামনির চিকিৎসা। কিন্তু, তাতে তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে কিংবা ঢাকায় নেওয়ার পরামর্শ এলেও অর্থাভাবে থেমে গেছে চিকিৎসার পথ।
স্থানীয়রা বলেন, গ্রামের সব শিশুদের থেকে আলাদা নুহামনি। তার খেলাধুলার সাথীরা যখন একত্রিত হয়ে খেলা করে, তখন সে ঘরের কোনে বন্দী থাকে। তার শরীরের ভয়াবহতার কারণে শিশুরা তার সাথে মিশে না। তার চিকিৎসায় সমাজের বিত্তবান ও সরকারকে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানান তারা।
পক্ষিয়া ইউনিয়ন পরিষদের দায়িত্বে থাকা প্যানেল চেয়ারম্যান মো.হুমায়ুন কবির দৈনিক বাংলাকে জানান, 'মেয়েটার খোঁজ নিচ্ছি এবং আবেদন করে সমাজসেবার অধিদপ্তরের মাধ্যমে আমরা মেয়েটাকে যথাযথ সাহায্য করার চেষ্টা করছি।'
ভোলা ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিভিল সার্জন ডা. মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম সময়ের কন্ঠস্বরকে জানান, “এটি একটি মারাত্মক চর্মরোগ। উন্নত চিকিৎসা করালে সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শিশুটিকে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
উন্নত চিকিৎসা পেলে সুস্থ হয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসবেন নুহামনি, এমনটাই পত্যাশা পরিবারের। তাই, নুহামনির জীবনের জন্য প্রয়োজন সঠিক চিকিৎসা, যা তার পরিবারের সাধ্যের বাইরে। সমাজের মানবিক মানুষ, স্থানীয় প্রশাসন কিংবা সরকার এগিয়ে এলে হয়তো নতুন এক জীবন পেতে পারে এই অসহায় শিশুটি।
শিশুটির পরিবার তার চিকিৎসার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম দল দৌলতপুর উপজেলা শাখার উদ্যোগে বেগম খালেদা জিয়ার দ্রত রোগ মুক্তি কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল রবিবার রাতে স্থানীয় প্রজন্ম দলের নিজস্ব কার্যালয়ে এ মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দোয়া পরিচালনা করেন তারাগুনিয়া হাফেজিয়া মাদরাসার প্রধান মাহাততিম হাফেজ মাওলানা ফারুক হোসাইন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজু আহমেদ মোল্লা সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দৌলতপুর উপজেলা বিএনপি মোঃ আলাউদ্দিন মোল্লা সাধারণ সম্পাদক হোগলবাড়িয়া ইউনিয়ন বিএনপি মোঃ মাহবুবুর রহমান সবুর মোল্লা সাবেক সহ সভাপতি দৌলতপুর উপজেলা যুবদল মোঃ মিঠু যুগ্ন আহবায়ক দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রদল মোঃ সোহাগ সভাপতি দৌলতপুর ডিগ্রি কলেজ ছাত্রদল এবং সভাপতিত্ব করেন মোঃ হৃদয় আহমেদ শুভ, সাধারন সম্পাদক প্রজন্ম দল কুষ্টিয়া জেলা শাখা।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৫-এর উদ্বোধন করেছেন।
আজ রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এর উদ্বোধন করেন।
অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, সরকারের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা, মৎস্যচাষী, উদ্যোক্তা ও গবেষকগণ অংশ নেন।
উদ্বোধনী ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘মৎস্য খাতের অবদানের জন্য আমাদেরকে প্রকৃতি ও পানির প্রতি সদয় হতে হবে। প্রকৃতি- প্রতিবেশ নষ্ট হলে মাছ উৎপাদন একসময় বন্ধ হয়ে যাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদ ও তরুণ প্রজন্মের অংশগ্রহণে এ খাতকে সমৃদ্ধ করা সম্ভব।’
অধ্যাপক ইউনূস মৎস্য খাতের অপার সম্ভাবনা বিশেষ করে গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণের সুযোগকে কাজে লাগানোর ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা পুরস্কার বিজয়ীদের হাতে জাতীয় মৎস্য পদক ২০২৫ তুলে দেন।
মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষ্যে দেশব্যাপী প্রদর্শনী, কর্মশালা ও আলোচনা সভার মাধ্যমে চাষাবাদে আধুনিক প্রযুক্তি, মাছের রক্ষণাবেক্ষণ এবং বাজারজাতকরণ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানো হবে।
এবারের মৎস্য সপ্তাহের মূল প্রতিপাদ্য-‘অভয়াশ্রম গড়ে তুলি, দেশি মাছে দেশ ভরি’।
মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছে, মৎস্য সপ্তাহের মূল লক্ষ্য প্রকৃতির সুরক্ষা, স্থানীয় উৎপাদন বাড়ানো, রপ্তানি সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দেশের পুষ্টি নিরাপত্তায় অবদান রাখা।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদসহ পুলিশের ১৮ জন কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে সরকার। সোমবার (তারিখ) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সই করেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব নাসিমুল গনি।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে আছেন তিনজন ডিআইজি, ছয়জন অতিরিক্ত ডিআইজি, চারজন পুলিশ সুপার ও চারজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর ৩(গ) ধারা অনুযায়ী পলায়নের শাস্তিযোগ্য অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ায় বিধি ১২ উপবিধি (১) অনুযায়ী তাদের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সাময়িক বরখাস্তকালীন তারা খোরপোষ ভাতা পাবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।
বায়ুদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা, ২০২২–এর বিধি ৫ অনুযায়ী সরকার ঢাকা জেলার অন্তর্গত সাভার উপজেলাকে ‘ডিগ্রেডেড এয়ারশেড’ ঘোষণা করেছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. কামরুজ্জামান এনডিসি স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে রোববার (১৭ আগস্ট) এ ঘোষণা জারি করা হয়।
ঘোষণার ফলে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে সাভারে টানেল ও হাইব্রিড হফম্যান কিলন ছাড়া অন্য কোনো ইটভাটায় ইট পোড়ানো বা ইট প্রস্তুতের কার্যক্রম চলবে না। পাশাপাশি উন্মুক্ত স্থানে কঠিন বর্জ্য পোড়ানো, নতুন করে স্থাপিতব্য বায়ুদূষণ সৃষ্টিকারী শিল্প কারখানাকে অবস্থানগত ও পরিবেশগত ছাড়পত্র প্রদান এবং কর্মপরিকল্পনায় উল্লিখিত অন্যান্য কার্যক্রমও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
পরিবেশ অধিদপ্তরের সার্বক্ষণিক বায়ুমান পরিবীক্ষণ কেন্দ্রের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সাভারের পরিবেষ্টক বায়ুর বার্ষিক মানমাত্রা জাতীয় মানদণ্ডের প্রায় তিন গুণ ছাড়িয়েছে।
এর ফলে জনগণের স্বাস্থ্যের ওপর মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে প্রায় পাঁচ মাস ধরে উত্তর–পশ্চিম ও উত্তর–পূর্ব দিক থেকে প্রবাহিত বায়ু সাভারের দূষণকে ঢাকায় নিয়ে আসে, যা রাজধানীর ঘনবসতিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর জন্য ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করছে।
সরকার আশা করছে, এ ঘোষণার মাধ্যমে সাভার ও ঢাকা উভয় অঞ্চলের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পরিবর্তন আসবে এবং জনস্বাস্থ্য সুরক্ষিত হবে।