বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪

সীমান্তে গোলার অভিযোগ অস্বীকার মিয়ানমারের

বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্ত।
জেসমিন পাপড়ি
প্রকাশিত
জেসমিন পাপড়ি
প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:২২

বারবার বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি ছোড়া, আকাশসীমা লঙ্ঘনের পর আন্তর্জাতিক আইন অমান্য করে এবার নির্দ্বিধায় অস্বীকার করেছে মিয়ানমার। ঢাকার প্রতিক্রিয়ার জবাবে প্রতিবেশী দেশের সীমানায় মর্টার শেল ফেলা বা আকাশসীমা লঙ্ঘনের মতো কোনো বিষয় ঘটেনি বলে দাবি করেছে নেপিদো।

তবে মিয়ানমার সীমান্তের চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘাতের বিষয়টি অস্বীকার করেনি দেশটি। কূটনৈতিক সূত্র এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে।

সূত্র বলছে, গত সপ্তাহেই মিয়ানমার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঢাকায় মিয়ানমারের দূতাবাসের মাধ্যমে বাংলাদেশের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে এ দাবি করেছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কেউই উদ্ধৃত হতে চাননি।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে কূটনৈতিক পত্র হস্তান্তরের বিষয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, মিয়ানমার বলেছে, তাদের ছোড়া গুলি ভুল করে বাংলাদেশ সীমান্তে এসে পড়েছে।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও স্থানীয় সূত্রের তথ্য মতে, গত এক মাস ধরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মি (এএ) মিয়ানমারের সামরিক জান্তার সঙ্গে লড়াই করছে। এরই মধ্যে মিয়ানমার সীমান্তের ভেতর থেকে গুলি ও বেশ কয়েকটি মর্টার শেল বান্দরবানের ঘুমধুমের তুমব্রু সীমান্তে বাংলাদেশ প্রান্তে এসে পড়ে। মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান ও ফাইটিং হেলিকপ্টার একাধিকবার বাংলাদেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে।

এসব ঘটনার প্রতিবাদে দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনবার ঢাকায় নিযুক্ত মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াও মোকে তলব করে প্রতিবাদ জানায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। কূটনৈতিক পত্র হস্তান্তরের মাধ্যমে এ বিষয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগ জানানো হয়। এমনকি ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসও বিষয়টি মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে উত্থাপন করে।

কূটনৈতিক সূত্র জানায়, বাংলাদেশের পাঠানো চিঠির জবাব দিয়েছে মিয়ানমার। চিঠিতে মিয়ানমার দাবি করেছে, তাদের ছোড়া গুলি বাংলাদেশে প্রবেশ করেনি। এমনকি মিয়ানমারের কোনো যুদ্ধবিমান বা হেলিকপ্টারও বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করেনি।

তবে চিঠিতে মিয়ানমার সীমান্তে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে দেশটির সেনা অভিযান চালানোর বিষয়টি উল্লেখ আছে।

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা দৈনিক বাংলাকে বলেন, যে ভাষায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে সরকারের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে, একই ভাষায় ইয়াঙ্গুনে বাংলাদেশ দূতাবাসও দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে অবহিত করেছে। বাংলাদেশের চিঠির জবাবে মিয়ানমার বেশ কিছু বিষয় অস্বীকার করেছে। বাংলাদেশের সীমানায় গুলি ও মর্টারের গোলা আসা এবং আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়টি অস্বীকার করলেও সীমান্তে সংঘর্ষের বিষয়টি চিঠিতে অস্বীকার করা হয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, আরাকান আর্মি মিয়ানমার সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু ক্যাম্প দখল করে নিয়েছে বা নিচ্ছে, এ বিষয়টি তারা অস্বীকার করেনি। তারা বলেছে, আরাকান আর্মিকে নিয়ন্ত্রণে তাদের বিরুদ্ধে অভিযানে নেমেছে মিয়ানমারের সেনারা।

এর আগে গত ৪ সেপ্টেম্বর এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এসব ঘটনায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে তলব করে আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। প্রতিবাদ করেছি। ওরা (মিয়ানমার) বলেছে যে, এটা মোটেই উসকানিমূলক না। এটা আকস্মিক চলে এসেছে, ভুলবশত।

মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের জেরে প্রথমে ২০ আগস্ট, এরপর ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে মর্টারের গোলা এসে পড়ে বাংলাদেশের সীমানায়। এর ঠিক ছয় দিন পর গত ৩ সেপ্টেম্বর শনিবার মিয়ানমারের দুটি যুদ্ধবিমান ও দুটি হেলিকপ্টার থেকে বান্দরবানে বাংলাদেশের সীমানায় গোলাবর্ষণ করা হয়।

বাংলাদেশের সীমান্তে মিয়ানমারের গোলা এসে পড়ার বিষয়ে সরকার কী ব্যবস্থা নিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে গতকাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ‘মিয়ানমার সীমান্ত ক্রস করে দু’-একটি গোলা আমাদের সীমান্তের কাছাকাছি এসে পড়েছে। আমরা প্রতিবাদ করেছি। আমাদের বিজিবি প্রতিবাদ করেছে। তাদের রাষ্ট্রদূতকে আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মেসেজ দেয়া হয়েছে, সব কিছু বলা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সবপর্যায়ে প্রতিবাদ করেছি।’

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আমরা মনে করি, তারা খুব শিগগিরই সংযত হবে। তাদের গোলা যাতে এ দিকে না আসে, সে দিকে খেয়াল রাখার জন্য আমরা তাদের বলেছি।

বিষয়টি আন্তর্জাতিক ফোরামে তোলা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা তো তাদের প্রথমে ডেকে বলেছি। এর পর যদি আসে আমরা বিষয়টি জানাব।


কেএনএফের ১৭ নারীসহ ৫২ জনের ৪ দিনের রিমান্ড

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংকে সন্ত্রাসী হামলা, ব্যাংক ম্যানেজারকে অপহরণ এবং অস্ত্র ও টাকা লুটের দুটি মামলায় ‘কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট (কেএনএফ)’ সংশ্লিষ্টতায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার করা ৫৭ জনকে আজ বৃহস্পতিবার আদালতে তোলা হয়। এর মধ্যে ১৭ জন নারীসহ ৫২ জনের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এছাড়া চারজনকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ১২টায় আসামিদের বান্দরবান চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইনের এজলাসে হাজির করা হয়।

এসময় কোর্ট ইন্সপেক্টর বিশ্বজিৎ সিংহ রিমান্ডের আবেদন এবং আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট কাজী মহতুল হোসেন যত্ন জামিন আবেদন করেন। আদালত জামিন আবেদন নামমঞ্জুর করে রিমান্ডের আবেদনের ওপর শুনানি শেষে তাদের চারদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

আদালত সূত্র জানায়, রিমান্ডে পাঠানো হয়েছে ৫২ জনকে। এছাড়া এক নারী আসামিকে জেল গেটে জিজ্ঞাসাবাদের শর্ত আরোপ করা হয়েছে।

গত ৮ এপ্রিল যৌথবাহিনী বিশেষ অভিযান চালিয়ে রুমা উপজেলার বেথেলপাড়া থেকে ১৮ নারীসহ ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করে।

বাকিদের বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২ এপ্রিল রাতে রুমা উপজেলা সদরের সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি করে কেএনএফ। ওই সময় তারা পুলিশের ১০টি অস্ত্র এবং আনসারের চারটি অস্ত্র লুট করে নেয়। যাওয়ার সময় তারা ব্যাংক ম্যানেজার নিজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এর পরদিন ৩ এপ্রিল দুপুরে পার্শ্ববর্তী উপজেলা থানচির সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতি করে তারা। ওই সময় সন্ত্রাসীরা দুটি ব্যাংকের ক্যাশ কাউন্টার থেকে নগদ টাকা লুট করে। এ ঘটনার পর বান্দরবান জেলার রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে যৌথবাহিনীর বিশেষ চিরুনি অভিযান চলছে। এসব অভিযানে এ পর্যন্ত ৬৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।


সড়কে প্রাণ হারালেন সঙ্গিতশিল্পী পাগল হাসান

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ‘আসমানে যাইওনারে বন্ধু ধরতে পারব না তোমায়’সহ অনেক জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শিল্পী মতিউর রহমান হাসান ওরফে পাগল হাসান। বৃহস্পতিবার সকালে সুনামগঞ্জের ছাতকের সুরমা ব্রিজ এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় বাসের ধাক্কায় প্রাণ হারান তিনি।

ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

দুর্ঘটনায় অটোরিকশার চালকসহ তিনজন গুরুতর আহত হন। পাগল হাসান অটোরিকশার যাত্রী ছিলেন। ওই সময় তার সঙ্গে থাকা ছাত্তার নামের একজনের মৃত্যু হয়।

প্রাণ হারানো পাগল হাসানের বাড়ি সুনামগঞ্জের ছাতকের শিমুলতলা গ্রামে।

পুলিশে জানায়, দোয়ারবাজার থেকে যাত্রী নিয়ে গন্তব্যে যাচ্ছিল অটোরিকশাটি। খালি বাসটি গোবিন্দগঞ্জ থেকে ছাতক যাচ্ছিল। পথে সুরমা ব্রিজ এলাকায় অটোরিকশায় ধাক্কা দেয় বাসটি। ওই সময় পাগল হাসান ও ছাত্তার ঘটনাস্থলেই নিহত হন। অন্য তিন যাত্রী গুরুতর আহত হন।

ছাতক ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার জালাল আহমদ বলেন, ‘ঘটনাস্থলেই পাগল হাসানসহ আরেকজন মারা যান। আমরা পুলিশের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করেছি। আহত তিনজনের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।’

বিষয়:

শ্রীমঙ্গলে ময়লায় সয়লাব পুকুর

সাঁতার শিখতে পারছে না শিশুরা
শ্রীমঙ্গল পৌরসভা সংলগ্ন সরকারি পুকুর ময়লা-আবর্জনায় ভরা। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুজিবুর রহমান রঞ্জু, শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার)

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের পুর্বাশা এলাকায় একটি বাড়িতে ভাড়াটে সুইটি আক্তার। তার ছয় বছরের একটি ছেলে। সুইটি আক্তারের বয়স যখন ছয় বছর ছিল তখনই তিনি বাবার সঙ্গে পুকুরে নেমে সাঁতার শিখেছেন। নিজে সাঁতার জানলেও সাঁতার শেখানোর উপযোগী পুকুর না পাওয়ায় ছেলেকে সাঁতার শেখানোর সুযোগ পাচ্ছেন না তিনি। এ অবস্থা শুধু সুইটি আক্তারেরই নয়; পুকুর, জলাশয় ভরাট হয়ে যাওয়া ও নোংরা আবর্জনায় পুকুরের পানি অপরিষ্কার থাকায় শ্রীমঙ্গলে শিশুদের সাঁতার শিখাতে পারছে না অভিভাবকরা। শিশুকালে সাঁতার না শেখার কারণে বড় হয়ে আর সাঁতার শিখতে পারছে শিশুরা। সুইটি আক্তার বলেন, ‘শিশুদের সাঁতার শেখানো অতন্ত জরুরি। শহরের পুকুরগুলো এত নোংরা যে সেখানে পা ধুতেই ঘেন্না লাগে। সেখানে কীভাবে আমার ছেলেকে সাঁতার শেখাব; কিন্তু আমার শিশুকে সাঁতার শিখাতে চাই, সুইমিংপুলগুলোতে সাঁতার শেখানোর জন্য অনেক টাকা খরচ করতে হয়। অন্য শিশুরাও যেন সাঁতার শিখতে পারে সেটা চাই।’

সরেজমিন শ্রীমঙ্গল ঘুরে দেখা গেছে, ১০ বছর আগেও যেখানে পুকুর ছিল সেগুলোর অনেকটাই মাটিতে ভরাট হয়ে গেছে। এ ছাড়া শহরের ডাকবাংলা পুকুর, সাগরদিঘি পুকুর সাধারণ মানুষের জন্য উন্মুক্ত থাকলেও ময়লা-আবর্জনায় এই পুকুরগুলোর পানি খুবই নোংরা। ময়লা পলিথিন পুকুরের চারপাশে ভেসে থাকে। এই নোংরা পানিতেই শ্রমজীবী অনেক মানুষ গোসল করে। তবে উপজেলা প্রশাসনের একটি বড় পুকুর রয়েছে। সেখানে সাধারণ মানুষ তেমন একটা যান না। শ্রীমঙ্গলের দ্বারিকা পাল মহিলা কলেজের প্রভাষক ও নাগরদোলা থিয়েটারের সভাপতি অনিরুদ্ধ সেনগুপ্ত বলেন, ‘আমাদের ছোট বেলায় আমাদের আশপাশে অনেক পুকুর ছিল, দিঘি ছিল। এসবের বেশিরভাগই এখন ভরাট হয়ে গেছে। যেগুলো এখনো আছে সেগুলো নোংরা-আবর্জনায় ভরা, পানি অপরিষ্কার। এসব পানিতে শিখতে গেলে উলটো পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ থাকবে এসব পুকুরের পানি পরিষ্কার করে শিশুদের সাঁতার শেখার ব্যবস্থা করার। প্রতি বছর সাঁতার না জানার কারণে অনেক শিশুই ডুবে মারা যায়। ছোট বেলায়ই যদি শিশুরা সাঁতার শিখে ফেলে তাহলে পানিতে ডুবে শিশু মৃত্যুর হার অনেক কমবে।

কবি ও লেখক সজল দাশ বলেন, সাঁতার তো একটা খেলা। আমরা খেলার ছলেই সাঁতার শিখেছি। এখন শিশুরা সাঁতার শেখার জায়গা পায় না। আমার ছেলেকে সুইমিংপুলে নিয়ে গিয়ে সাঁতার শিখিয়েছি। সুইমিং পুলে সাঁতার শেখা ব্যয় বহুল পাশাপাশি সাঁতার শেখার জন্য উপযুক্ত নয়। সরকার যদি প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সাঁতার শেখার একটা অধ্যায় রাখে এবং উপজেলা পর্যায়ে শিশুদের সাঁতার শেখার জন্য সরকারিভাবে পুকুর তৈরি করে সাঁতার প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রাখে তাহলে সবার জন্য ভালো হবে।’ শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তালেব বলেন, আমরাও বিভিন্ন সময়ে অভিভাবক সমাবেশে শিশুদের সাঁতার শেখানোর কথা বলি। শিশুরা সাঁতার শিখে রাখলে ভালো। আমাদের উপজেলা প্রশাসনের একটি পুকুর রয়েছে এখানে চাইলে শিশুরা সাঁতার শিখতে পারে। পাশাপাশি আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে বলে দেব, যেন উপজেলার সরকারি পুকুরগুলোর পানি পরিষ্কার রাখার ব্যবস্থা রাখেন।

বিষয়:

আড়াই শ বছরের ঐতিহ্য ধরে রেখে এখনো জনপ্রিয় বগুড়ার দই

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রবীর মোহন্ত, বগুড়া 

বগুড়া এলাকাটির নাম মুখে এলেই আরেকটি শব্দ চলে আসে, তা হলো দই। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, স্বাদ আর জনপ্রিয়তার কারণে এখন বগুড়ার সমার্থক হয়ে দাঁড়িয়েছে এই দই। বগুড়াকে দেশের আনাচে-কানাচে পরিচিত করে তুলেছে দই।

জানা গেছে, দেশ বিভাগের সময় ১৯৪৭ সালে গৌর গোপাল ভারত থেকে বগুড়া আসেন পরিবার নিয়ে। বগুড়া থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার দক্ষিণে বর্তমানে শেরপুর উপজেলা সদরে তার আত্মীয়-স্বজনের কাছে আশ্রয় নেন। দই বানানোর পদ্ধতি তার জানা ছিল। শেরপুর থেকে দই বানিয়ে হেঁটে ভাঁড়ে করে আনতেন বগুড়া শহরের বনানী এলাকায়। মূলত দই তৈরি প্রথমে শুরু হয় শেরপুর থেকেই। এখনও দই তৈরিকে কেন্দ্র করে শেরপুরে একটি মহল্লার নামকরণ হয়েছে ‘ঘোষপাড়া’।

একসময় ঘোষ পরিবারকে বলা হতো দই তৈরির কারিগর। তবে এখন আর ঘোষদের হাতে সেই দইয়ের বাজার নেই। এটি এখন চলে গেছে মুসলিম সম্প্রদায়সহ অন্য প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের হাতে। এদের মধ্যে রফাত দই ঘর, মহররম আলী দই ঘর, বগুড়া দই ঘর, আকবরিয়ার দই, রুচিতা দইসহ আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে নিয়মিত দই তৈরি হচ্ছে।

প্রায় আড়াইশ বছরের পুরোনো ইতিহাস হলেও বগুড়ার দইয়ের প্রস্তুত প্রণালী ছিল অতি গোপনীয়। তবে সেটিকে আর তারা ধরে রাখতে পারেনি। এখন শেরপুরেই প্রায় শতাধিক ব্যবসায়ী দই তৈরি করে। এদের মধ্যে মাত্র ৯-১০ জন ঘোষ পরিবারের লোক।

জানা যায়, ব্রিটেনের রানি এলিজাবেথ থেকে শুরু করে মার্কিন মুল্লুকেও গিয়েছে বগুড়ার দই। এ দই প্রথমবারের মতো বিদেশে যায় ১৯৩৮ সালে। ওই বছরের গোড়ার দিকে তৎকালীন ব্রিটিশ গভর্নর স্যার জন এন্ডারসন বগুড়ায় এলে দইয়ের স্বাদে এতটাই অভিভূত হন যে, তিনি সুদূর ইংল্যান্ডে নিয়ে যান সেই দই।

বগুড়া ও শেরপুরের বেশ কয়েকজন দই ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখানকার আবহাওয়া, পানি ও মাটি- তা পুরোটাই দই তৈরির উপযোগী। দই তৈরিতে এ জেলায় প্রতিদিন প্রায় ১৫শ মণ দুধের প্রয়োজন হয়। পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলা ও উপজেলা থেকে দুধ সংগ্রহ করে এর চাহিদা মেটাতে হয়। প্রতিদিন ৫০ লাখ টাকার দই বিকিকিনি হয় এ জেলায়। কাপ দই বিক্রি হয় ১৫ থেকে ২০ টাকা, সরার দই বিক্রি হয় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, পাতিল ২০০ থেকে ২৫০ টাকা, ডুঙ্গি ১০০ থেকে ৩০০ টাকা, খাদা ১৫০ থেকে ২০০ টাকা, স্পেশাল সরার দই ২০০ টাকায় বিক্রি হয়।

দই প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, বিবোফ্লাভিন, ভিটামিন ই ১৬, ভিটামিন ই ১২ সমৃদ্ধ। দই খেলে মানব দেহের পাকস্থলীর উপকারীর ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি পায়। যার ফলে বিষাক্ত রাসায়নিকের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে শরীর সুরক্ষিত থাকে। তাই দই শিল্পের সম্ভাবনা খুবই আশাব্যঞ্জক।

তবে অনেক অসাধু ব্যবসায়ী রয়েছেন, যারা দইয়ের মান ঠিক রাখছেন না। উপরি টাকার লোভে তারা ভেজাল দিচ্ছেন। ফলে বগুড়ার দইয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তবে দেশীয় বাজারের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাজার সৃষ্টি করতে পারলে এর মাধ্যমে প্রতিদিন প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা অর্জিত হওয়া সম্ভব বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

দই কারিগর সচীন বলেন, ৪০০ মণ দুধে দই হয় ৩০০ মণ। যা চুলার আগুনে কড়াইয়ের মধ্যে দুধ জাল দিয়ে কমাতে হয়। প্রতি সরায় দুধ লাগে ৭০০ গ্রাম, চিনি ১৮০ গ্রাম। শেরপুর উপজেলায় প্রায় ৩০ হাজার মানুষ এই দই তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে যুক্ত থেকে জীবিকা নির্বাহ করে। প্রতিষ্ঠানও রয়েছে শতাধিক।

দই কারিগর টিপু বলেন, ‘দই তৈরি করতে আমার ভালো লাগে। কারণ এটি আমাদের শেরপুরের ঐতিহ্য।’

দুধ বিক্রেতা সুকুমার বলেন, ‘শেরপুরের দইয়ের নাম-ডাক সারাদেশে। আমরা দূর-দূরান্ত থেকে ভালো দুধ নিয়ে এখানে আসি। দইয়ের সুনাম যেন আরও ছড়িয়ে পড়তে পারে, সে জন্য সবকিছু ভালো দেওয়ার চেষ্টা করি।’

দই শো-রুমের ব্যবসায়ী বাসুদেব সরকার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ কয়েক যুগ ধরে এ পেশার সঙ্গে যুক্ত আছি। আমাদের পূর্ব পুরুষরাও এটা করেছেন। কিন্তু দই তৈরির পদ্ধতি অন্যদের হাতে চলে যাওয়ায় মান যেমন কমেছে, তেমনি লাভের মুখ দেখাও কমেছে।’

বিষয়:

তীব্র দাবদাহ বিরাজ করছে ছয় জেলায়

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

দেশের ছয়টি জেলার ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। তারা বলেছে, এই অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে পারে।

বুধবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন বার্তা দেওয়া হয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে।

পূর্বাভাসে সিনপটিক অবস্থা নিয়ে বলা হয়, ‘পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে।’

বৃষ্টিপাতের বিষয়ে পূর্বাভাসে বলা হয়, ‘রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল, চট্টগ্রাম এবং সিলেট বিভাগের দুই-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে। এ ছাড়া দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।’

তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ নিয়ে বলা হয়, ‘রাজশাহী, পাবনা, বাগেরহাট, যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলাসমূহের ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ এবং মৌলভীবাজার জেলা, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগের অবশিষ্টাংশ ও ঢাকা, রংপুর ও বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।’

তাপমাত্রার বিষয়ে বলা হয়, সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণ অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।


অনুপ্রবেশের সুযোগ খুঁজছে আরও দুই হাজার রোহিঙ্গা

সম্প্রতি অনুপ্রবেশ করে বেশ কিছু রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৪৩
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

মিয়ানমারে জান্তাবাহিনী ও সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠীর চলমান সংঘাতে কক্সবাজারের টেকনাফের ওপারে নাফ নদের তীরে কয়েকটি গ্রামে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা। এ রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থান নিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রাতেও কড়া পাহারা বসিয়েছে, দিনেও চলছে কঠোর নজরদারি। স্থানীয়দের দাবি, এত কড়া পাহারার মধ্যেও ফাঁক গলিয়ে বেশ কিছু রোহিঙ্গা এরই মধ্যে গোপনে অনুপ্রবেশ করে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছে। সীমান্তের ওপারের বিভিন্ন চর ও দুর্গম এলাকা এবং ঝাউবনে লুকিয়ে থেকে অনুপ্রবেশের সুযোগ খুঁজছে আরও দুই হাজার রোহিঙ্গা। এরই মধ্যে নৌকা বোঝাই করে আসা কিছু রোহিঙ্গাকে আটকের পর পুশব্যাকও করা হয়েছে। বেশ কদিন ধরেই এমন পরিস্থিতি বিরাজ করছে সীমান্তে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি সূত্র জানিয়েছে, ঈদের দিন ১১ এপ্রিল রাত থেকে বুধবার পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় এসে আশ্রয় নিয়ে বেশ কিছু রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আত্মীয়-স্বজনের কাছে চলে গেছেন।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের দাবি, এবার মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর পাশাপাশি মগদের সশস্ত্র বাহিনী আরাকান আর্মি (এএ) রাখাইনে মুসলিম সংখ্যালঘুদের ওপর চড়াও হয়েছে। সংঘর্ষ বেড়ে যাওয়ায় তারা এপারে চলে আসতে বাধ্য হচ্ছেন।

গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে শাহপরীর দ্বীপে নাফ নদী সংলগ্ন গোলাপাড়া ঝাউবন বরাবর অনুপ্রবেশের সময় একটি রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকা আটক করে বাংলাদেশে কোস্টগার্ড। এ ইঞ্জিন চালিত বড় নৌকায় ২৬ জন রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছিল বাংলদেশে। এর মধ্যে থাকা ১২ জন পুরুষ, ৯ জন নারী এবং ৫ জন শিশুসহ ৩ জন দালালকে আটক করা হয় এ সময়।

কোস্টগার্ডের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা এসব তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গোপনীয়তা বজায় রেখে অনুপ্রবেশ করা রোহিঙ্গাদের যাচাই-বাছাই করার পর তাদের পুশব্যাক করা হবে।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা রোহিঙ্গাদের ভাষ্য, শাহপরীর দ্বীপ হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশের চেষ্টায় বর্তমানে নাফ নদীর ওপারের মনডি পাড়া চরে কমপক্ষে ২ হাজার রোহিঙ্গা লুকিয়ে আছেন। সুযোগ বুঝে তারা অনুপ্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছেন।

শাহপরীর দ্বীপ বেড়িবাঁধ সংলগ্ন লবণচাষি মো. করিম বলেন, গত সোমবার থেকে বুধবার পর্যন্ত গভীর রাতে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ গোলার ঝাউ বাগান এবং কচুবনিয়া দুর্গম চরে সন্দেহভাজনদের আনাগোনা দেখতে পাই আমরা। দুর্গম ও খারাপ যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণে সেখানে যেতে ভয় করে অনেকেরই। সহজে বিজিবির সদস্যদের সেখানে টহলে যেতে দেখা যায় না। এই দুর্গম পথকে বেছে নিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে রোহিঙ্গারা।

সরেজমিনে দেখা যায়, তিন-চার দিনের মধ্যে সীমান্ত দিয়ে অনুপ্রবেশ করে ২ শতাধিক রোহিঙ্গা। শাহপরীর দ্বীপে ৪ দালালদের মাধ্যমে তারা এপারে পৌঁছায়। জনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে নিয়ে থাকে দালালচক্র।

পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের সবাই রাখাইনের বুথেডং গ্রামের বাসিন্দা। মংডুর কয়েকটি গ্রামের রোহিঙ্গা তারা। তারা ওপারের নাফের তীরে আশ্রয় নিয়ে দুই একদিন পর নৌকা নিয়ে এপারের শাহপরীর দ্বীপ পৌঁছায়। পরে সেখান থেকে ক্যাম্পে আত্মীয়-স্বজনের কাছে চলে যায়।

অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা মো. তৈয়ব বলেছেন, আমরা ১৫ জন দলবদ্ধ হয়ে নদীর পাড়ে কেউ ঝাউবাগানে এক দিন কাটিয়েছি। এর পরদিন জনপ্রতি ২৫ হাজার টাকা করে নৌকা ভাড়া করে সীমান্তের পাহারা এড়িয়ে আমরা নাফ নদী পাড়ি দিয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপে উঠেছি। শাহপরী দ্বীপ থেকেই আমরা বিভিন্ন জায়গায় আত্মীয়ের কাছে এসেছি।

শাহপরীরদ্বীপ বিওপির ক্যাম্প কমান্ডার আবু আহমেদ বলেন, গত রোববার শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া ঝাউবাগান দিয়ে ২১ রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করলে তাদের আটকের পর রাতেই পুশব্যাক করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক কর্মকর্তা বলেন, রোহিঙ্গারা এখন দলে দলে আসছে না। মাঝেমধ্যে দু-একটি পরিবারের অনুপ্রবেশ ঘটছে।

আগের তুলনায় এই সংখ্যা অনেক কম। জীবনের নিরাপত্তার জন্য বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করছে তারা। এ অনুপ্রবেশের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখার কথাও বলেছে স্থানীয় প্রশাসন।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে বিদ্রোহী আরাকান আর্মির সঙ্গে সে দেশের সেনাবাহিনীর সংঘাতের কারণে টেকনাফ সীমান্তের বিপরীতে নলবুনিয়া, পেরংপুর, নুরুল্লাপাড়া, আজিজের বিল, কাদির বিল, মেগিচং, মাংগালা, ফাদংচা ও হাস্যুরতা এলাকায় রোহিঙ্গারা অবস্থান নিয়ে আছে বলে এক রোহিঙ্গা নেতা বলেন।

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, আমার ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি এলাকা দিয়ে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের চেষ্টা করছে। সুযোগ বুঝে অনুপ্রবেশ করবে তারা। তবে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ঠেকানো চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

এ বিষয়ে টেকনাফ-২ বিজিবির অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, মহাপরিচালকের নির্দেশনা মতো সীমান্তে সর্বোচ্চ সতর্কতায় বিজিবি দায়িত্ব পালন করছেন। সীমান্তে অনুপ্রবেশসহ যে কোনো ধরনের অপরাধ দমনে গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হত্যা ও নির্যাতন চালায়। সে সময় বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ঢল নামে। তখন সীমান্ত অতিক্রম করে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশের কক্সবাজারে আশ্রয় নেয়। আগে আসা রোহিঙ্গাসহ ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার ঠাঁই হয় উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে।


বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৩:৩৩
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ

প্রতিবছর বৈশাখ আসার আগেই আকস্মিক বন্যার ভয়ে হাওর পাড়ের কৃষকরা আতঙ্কিত থাকেন। এবার মনে হচ্ছে আতঙ্ক কিছুটা কম। হাওরের লাখ লাখ হেক্টর জমিতে সবুজ ধানের গালিচায় এখন সোনালি রং ধরেছে। ধান পাকায় কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক। বৈশাখের শুরুতেই কৃষকরা ধান কাটায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় আশা জাগছে কৃষকের মনে। আশা করছেন হয়তো এবার শতভাগ ধান তারা গোলায় তুলতে পারবেন। সুনামগঞ্জের ১২ উপজেলার ১৩৭টি হাওরের এক ফসলি বোরো ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় এবার কৃষক কৃষাণিরা অনেক খুশি।

কৃষি অফিস বলছে, চলতি মৌসুমে সুনামগঞ্জের হাওরের ১০ লাখ কৃষক বোরো ধানের চাষাবাদ করেছেন। অন্য বছরের তুলনায় এই বছর ফলন ভালো। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার সুনামগঞ্জে ২৬২ হেক্টর বেশি ধান উৎপাদন হয়েছে। ধানগুলো বর্তমানে হাওরে কাঁচাপাকা অবস্থায় রয়েছে।

তাহিরপুর উপজেলার বরদল গ্রামের কৃষক মন্তাজ মিয়া বলেন, তিনি বিআর ৯২ ধান রোপণ করেছিলেন। মাঝামাঝি সময়ে কিছুটা পানির সংকট ছিল; কিন্তু এতেও কোনো সমস্যা হয়নি। ফলন ভালো হয়েছে। আর যদি ৪-৫ দিন আবহাওয়া ভালো থাকে তাহলে তিনি তার জমির ধান কাটা শেষ করতে পারবেন।

সুনামগঞ্জ সদরের গৌরারং ইউনিয়নের কৃষক আশরাফ উদ্দিন বলেন, ধানের ফলন ভালো হয়েছে। মাঠে পাকা, আধাপাকা ধান থাকা অবস্থায় যদি শিলা বৃষ্টি হয় তাতে ব্যাপক ক্ষতি হবে। শিলা বৃষ্টি না হলে আশা করছেন আনন্দের সঙ্গে সব ধান ঘরে তুলতে পারবেন।

শাল্লা উপজেলার আঙ্গারুয়া গ্রামের কৃষক আজমান গণি বলেন, সঠিক সময়ে হারভেস্টার মেশিন ও ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া গেলে ফসল কাটা, মাড়াই সহজ হবে। শিলা বৃষ্টি, অতিবৃষ্টি, আকস্মিক বন্যা না হলে খুশি মনে ধান কাটা যাবে। কোনো ধরনের সমস্যা ছাড়া ঠিক সময়ে ঘরে ধান উঠাতে পারলেই তারা খুশি।

সুনামগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী ৫ মের মধ্যে হাওরের শতভাগ ধান কাটা শেষ হবে। মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা পরামর্শের জন্য কৃষকের পাশে রয়েছেন এবং হারভেস্টার মেশিনগুলো প্রস্তুত রয়েছে। সুনামগঞ্জ জেলায় এ বছর বোরো ধানের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২ লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর। অর্জন হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার ৪০৭ হেক্টর।
তিনি আরও বলেন, এবার ৯ লাখ ১৩ হাজার ৪০০ মে. টন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সুনামগঞ্জের হাওরে বৈশাখজুড়ে অন্য রকম এক উৎসব চলে। এটি কৃষকের শ্রম-ঘামে জমিতে ফলানো সোনার ধান গোলায় তোলার উৎসব। এ উৎসবে কৃষক পরিবারের নারী-পুরুষ, বৃদ্ধ-শিশু সবাই যোগ দেন। এমনকি গ্রামের বাইরে থাকা স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও ছুটে আসেন পরিবারের অন্যদের সহযোগিতা করতে। এ ধানের ওপরই পুরো পরিবারের এক বছরের খাবার, সব ব্যয়, বিয়েশাদি ও সন্তানদের লেখাপড়া নির্ভর করে। এ ধান তুলতে পারলেই হাওরপাড়ের কৃষকরা ‘ধনী’। কোনো কারণে গোলায় ধান না উঠলে হাওরে বেদনা ভর করে। কৃষক পরিবারে কষ্টের সীমা থাকে না। কৃষি বিভাগের ভাষ্য, এবার ধানের ফলন ভালো হয়েছে। নির্বিঘ্নে হাওরের ফসল গোলায় তুলতে পারলে এবার সুনামগঞ্জে ৪ হাজার ১১০ কোটি টাকার ধান উৎপাদিত হবে।


গাজীপুরে বয়লার বিস্ফোরণ চীনা প্রকৌশলী নিহত, আহত ৬

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গাজীপুর প্রতিনিধি

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর থানাধীন দক্ষিণ পানিশাইল এলাকায় ব্যাটারি কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে এক চীনা প্রকৌশলী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন ওই কারখানার ৬ শ্রমিক।

গত মঙ্গলবার রাতে ঘটনাটি ঘটে। স্থানীয় পলাশ হাউজিং এলাকায় স্থাপিত চায়না মালিকানাধীন ওই কারখানাটির নাম টং রুই দ্যা ইন্ডাস্ট্রি। নিহতের নাম পিউ জুকি (৫২)। আহতরা হলেন- অমল ঘোষ, দেলোয়ার হোসেন, আব্দুর রহিম, আমিনুর রহমান, ডালিম আহমেদ ও রাজু।

কাশিমপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মহিউদ্দিন জানান, মঙ্গলবার কারখানার বয়লার মেশিনটি চালু করতে যান চীনা প্রকৌশলী পিউ জুকি। হঠাৎ বিকট শব্দে বয়লারটিতে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে আগুন ধরে যায়। ঘটনাস্থলে প্রকৌশলী পিউর মৃত্যু হয়। আহত হন অন্যরা।

আহতদের মধ্যে কারখানার শ্রমিক অমল ঘোষকে ঢাকার শেখ হাসিনা বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিশেষায়িত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এসব তথ্য নিশ্চিত করেন গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ-আল-আরেফিন। তিনি বলেন, বয়লার বিস্ফোরণ ও আগুনের বিষয়টি জানতে পেরে কাশিমপুর সারাবো ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিটের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভায়। দুর্ঘটনার তদন্ত চলছে।


মার্চে ৫৫২ সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৫৬৫

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

গত মার্চ মাসে ৫৫২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৬৫ জন নিহত ও ১২২৮ জন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে ১৮১টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৩ জন নিহত ও ১৬৬ জন আহত হয়েছেন, যা মোট দুর্ঘটনার ৩২.৭৮ শতাংশ, নিহতের ৩৫.৯২ শতাংশ ও আহতের ১৩.৫১ শতাংশ।

আজ বুধবার সন্ধ্যায় সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পাঠানো এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। দেশের জাতীয়, আঞ্চলিক ও অনলাইন সংবাদপত্রে প্রকাশিত সড়ক, রেল ও নৌ-পথের দুর্ঘটনার সংবাদ মনিটরিং করে তারা এই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে বলে জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্চ মাসে রেলপথে ৩৮টি দুর্ঘটনায় ৩১ জন নিহত ও ৮৬ জন আহত হয়েছেন। নৌ-পথে সাতটি দুর্ঘটনায় ১৬ জন নিহত ও ১৭ জন আহত হয়েছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সর্বমোট ৫৯৭টি দুর্ঘটনায় ৬১২ জন নিহত ও ১৩৩১ জন আহত হয়েছেন।

এতে আরও বলা হয়, মার্চ মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে ঢাকা বিভাগে। এ বিভাগে ১৬২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১৬৫ জন নিহত ও ৩০৬ জন আহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে বরিশাল বিভাগে। সেখানে ২৩টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩২ জন নিহত ও ৯২ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, প্রকাশিত এই তথ্য দেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার প্রকৃত চিত্র নয়। এটি কেবল গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য। দেশে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় অংশ প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত গণমাধ্যমে স্থান পায় না। তাই এসব তথ্য আমাদের প্রতিবেদনে তুলে ধরা সম্ভব হয় না। দেশে সড়ক দুর্ঘটনার প্রাথমিক উৎসস্থল দেশের হাসপাতালগুলোতে দেখলে এমন ভয়াবহ তথ্য মেলে।

ঢাকা জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন কেন্দ্র (পঙ্গু হাসপাতালে) মার্চ মাসে ১৩৬৯ জন সড়ক দুঘর্টনায় গুরুতর আহত পঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বিজ্ঞান বলে একটি দুর্ঘটনায় ১০ জন আহত হলে তার মধ্যে কেবল একজন গুরুতর আহত বা পঙ্গু হন। বাংলাদেশে ১০ হাজার সরকারি ও ছয় হাজার বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। এসব হাসপাতালে প্রতিবছর সড়ক দুর্ঘটনায় আহত প্রায় তিন লাখের বেশি রোগী ভর্তি হচ্ছে। অথচ গণমাধ্যমে তার ১০ ভাগের এক শতাংশ তথ্যও প্রকাশিত হয় না বলে আমরা ঘটনার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরতে পারি না।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে মার্চ মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হচ্ছে, ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক-মহাসড়কে অবাধে চলাচল, সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা, রাতের বেলায় ফগ লাইটের অবাধ ব্যবহার, সড়ক-মহাসড়কে নির্মাণ ক্রটি, ফিটনেস যানবাহন ও অদক্ষ চালকের হার ব্যাপক বৃদ্ধি, ফুটপাত বেদখল, যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা, উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি এবং অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।


ঝালকাঠিতে ত্রিমুখী সংঘর্ষ: ট্রাক চালক ও সহকারী আটক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩২
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনায় ট্রাকের চালক ও তার সহকারীকে আটক করেছে ঝালকাঠি গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) পুলিশ। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঝালকাঠি জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুজ্জামান।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- চাপা দেওয়া ট্রাকের চালক আল-আমিন (২৯) ও সহকারী নাজমুল (২২)। আল-আমিন ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসিন্দা। আর নাজমুলের বাড়ি খুলনায়।

এর আগে, বুধবার দুপুর ২টার দিকে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান সেতু এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন নিহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দুইজন নিহত হন। নিহত ১৪ জনের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুর ২টার দিকে রাজাপুর থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক। গাবখান সেতু থেকে নামার সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোলপ্লাজায় অবস্থানরত একটি মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে খাদে পড়ে। এতে ট্রাকের ক্ষতি কম হলেও মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালান। এসময় রক্তাক্ত অনেকগুলো দেহ উদ্ধার করা হয়।

ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক তারাহ গুল নিঝুম জানান, ঝালকাঠির গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্ট বোঝাই একটি ট্রাক তিনটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও একটি প্রাইভেটকারকে পেছন থেকে চাপা দেয়। দুর্ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, যারা পঙ্গুত্বের শিকার হবেন তাদের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য ১ লাখ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক।

বিষয়:

ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার-অটোরিকশা সংঘর্ষ: নিহত বেড়ে ১৪

আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:২৬
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার সংঘর্ষে নিহত ১২ জন থেকে বেড়ে ১৪ জনে দাঁড়িয়েছে। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২জন মারা যান।

বুধবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম জহিরুল ইসলাম।

এর আগে বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান সেতু এলাকায় এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী, শিশুসহ ১‌২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া যায়। চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর টোলপ্লাজায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঝালকাঠি পুলিশ সুপার (এসপি) আফরুজুল হক টুটুল গণমাধ্যমকে ১২ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। সেই ১২ জনের সঙ্গে এখন নিহত আরও ২জন যোগ হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, দুপুর ২টার দিকে রাজাপুর থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক। গাবখান সেতু থেকে নামার সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোলপ্লাজায় অবস্থানরত একটি মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে খাদে পড়ে। এতে ট্রাকের ক্ষতি কম হলেও মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালান। এসময় রক্তাক্ত অনেকগুলো দেহ উদ্ধার করা হয়।

শেখেরহাট হাট ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশ মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ৪টি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রো গাড়িতে শেখেরহাট গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। গাবখান সেতুর টোলে আসার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক আমাদেরকে সামনে থেকে চাপা দেয়। এতে আমার ছোট ভাই দশম শ্রেনিতে পড়ুয়া আতিকুর রহমান সাদি নিহত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মাইনুল হোসেন বলেন, বেপরোয়া গতিতে আসা ট্রাকটি ‘ব্রেক ফেইল’ করে চারটি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রোবাসকে সামনে থেকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন বিয়ের যাত্রী মারা যায়।

ক্ষতবিক্ষত দেহগুলো সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে ১২ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এসময় আহত আরও ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছেও বলে জানা গেছে। সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ জনের মারা যাওয়ার খবর গেছে। আহত আরও কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা যায়।

এদিকে দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের জন্য ৫ লাখ টাকা, যারা পঙ্গুত্বের শিকার হবেন তাদের জন্য ৩ লাখ টাকা এবং আহতদের জন্য ১ লাখ টাকা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক তারাহ গুল নিঝুম।

এছাড়া দুর্ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের স্পেশাল অফিসার শফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় সিমেন্টবোঝাই ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত যানবাহনগুলোর উদ্ধার কার্যক্রম চলমান আছে।


চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহ: মৌসুমের রেকর্ড তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি 

চুয়াডাঙ্গায় তীব্র তাপপ্রবাহ অব্যাহত রয়েছে। সব রেকর্ড ভেঙে এ জেলার তাপমাত্রা দাঁড়িয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপপ্রবাহ বইছে তীব্র আকারের। টানা তাপদাহে অতিষ্ঠ সীমান্তবর্তী জেলার মানুষ। অসহ্য গরমে ওষ্ঠাগত হয়ে উঠেছে প্রাণীকূল।

আজ বুধবার বিকেল ৩টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪০ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা চলতি মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।

এ সময় বাতাসের আর্দ্রতার পরিমাণ ছিল ২২ শতাংশ। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়, ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে সূর্যের তাপ। তীব্র প্রখরতায় উত্তাপ ছড়ায় চারপাশে। নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষেরা পড়েছেন চরম বিপাকে। নির্মাণ শ্রমিক, কৃষি শ্রমিক, ইজিবাইক চালক ও ভ্যান-রিকশা চালকদের গরমে নাভিশ্বাস অবস্থায় হা-হুতাশ করতে দেখা গেছে তাদেরকে। প্রয়োজনের তাগিদে ঘর থেকে বেরিয়েও কাজ করতে পারছেন না তারা। ছন্দপতন ঘটেছে দৈনন্দিন কাজকর্মে।

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে চলছে। এ অবস্থা আরও কিছুদিন চলতে পারে। তবে এখনই বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।


ঝালকাঠিতে ট্রাক-প্রাইভেটকার-অটোরিকশা সংঘর্ষ: নিহত ১২

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:০৪
ঝালকাঠি প্রতিনিধি

গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক প্রথমে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোরিকশা ও প্রাইভেটকার নিয়ে খাদে পড়ে যায়। বরিশাল-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠির গাবখান সেতু এলাকায় এই ত্রিমুখী সংঘর্ষে নারী, শিশুসহ ১‌২ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আজ বুধবার চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী সেতুর টোলপ্লাজায় ভয়াবহ এ দুর্ঘটনা ঘটে।

ঝালকাঠি পুলিশ সুপার (এসপি) আফরুজুল হক টুটুল গণমাধ্যমকে ১২ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, দুপুর ২টার দিকে রাজাপুর থেকে বরিশালের দিকে যাচ্ছিল সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক। গাবখান সেতু থেকে নামার সময় ট্রাকটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে টোলপ্লাজায় অবস্থানরত একটি মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাকে ধাক্কা দিয়ে খাদে পড়ে। এতে ট্রাকের ক্ষতি কম হলেও মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। পরে স্থানীয়রা ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার অভিযান চালান। এসময় রক্তাক্ত অনেকগুলো দেহ উদ্ধার করা হয়।

শেখেরহাট হাট ইউনিয়ন পরিষদে কর্মরত গ্রাম পুলিশ মো. কামাল হোসেন বলেন, আমরা ৪টি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রো গাড়িতে শেখেরহাট গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠানে যাচ্ছিলাম। গাবখান সেতুর টোলে আসার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাক আমাদেরকে সামনে থেকে চাপা দেয়। এতে আমার ছোট ভাই দশম শ্রেনিতে পড়ুয়া আতিকুর রহমান সাদি নিহত হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী মাইনুল হোসেন বলেন, বেপরোয়া গতিতে আসা ট্রাকটি ‘ব্রেক ফেইল’ করে চারটি ইজিবাইক এবং একটি মাইক্রোবাসকে সামনে থেকে চাপা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই ১২ জন বিয়ের যাত্রী মারা যায়।

ক্ষতবিক্ষত দেহগুলো সদর হাসপাতালে নিলে সেখানে ১২ জনকে মৃত ঘোষণা করা হয়। এসময় আহত আরও ২০ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যায়। এদের মধ্যে গুরুতর আহত বেশ কয়েকজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছেও বলে জানা গেছে।

তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। এদের মধ্যে টোলপ্লাজার কয়েকজন কর্মীও রয়েছেন।

পুলিশ সুপার আফরুজুল হক টুটুল গণমাধ্যমকে জানান, গাবখান সেতু টোলপ্লাজায় একটি ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মাইক্রোবাস ও অটোরিকশাকে নিয়ে খাদে পড়ে। এ ঘটনায় টোলে দায়িত্বরত কর্মীসহ অনেকে হতাহত হন। এখন পর্যন্ত শিশুসহ ১২ জন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রেখেছেন।


banner close