রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪

রোগীর সঙ্গী মশা, আবর্জনা

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতাল। ছবি: দৈনিক বাংলা
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত
চাঁদপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১০:৩৩

চাঁদপুর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি জেনারেল হাসপাতালে নোংরা পরিবেশেই দেয়া হচ্ছে চিকিৎসাসেবা। ওয়ার্ডগুলোতে স্যানিটেশন ব্যবস্থা একেবারেই নাজুক। ওয়ার্ডগুলোতে মশা, তেলাপোকাসহ বিভিন্ন পোকামাকড়ের বাসা গড়ে উঠেছে। এ ছাড়া রোগীদের পরিবেশন করা হচ্ছে নিম্নমানের খাবার।

হাসপাতালটিতে প্রতিদিন কয়েক শ মানুষ চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। চাঁদপুরসহ লক্ষ্মীপুর ও শরীয়তপুর জেলার মানুষও আসেন এই হাসপাতালে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে পুরো হাসপাতাল নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন অবস্থায় রয়েছে। নোংরা ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে টয়লেট ব্যবহার করছেন রোগী ও তাদের স্বজনরা।

চাঁদপুর সরকারি হাসপাতালের ২য় তলায় পুরুষ, ৩য় তলায় শিশু ওয়ার্ড, পেইং এবং কেবিন। ৪র্থ তলায় মহিলা ওয়ার্ড। সেখানকার টয়লেটগুলোও নোংরা, বেশির ভাগ টয়লেটেই নেই দরজা। বেসিনগুলো ব্যবহার না হওয়ায় চার পাশজুড়ে পড়ে আছে ময়লা। অনেক জায়গায় টয়লেটের পাইপ ভেঙে পানি পড়ছে। দেয়ালে শ্যাওলা জমে লাল হয়ে আছে।

হাসপাতালের রোগীর স্বজন সাদ্দাম হোসেন ও আকলিমা বলেন, ‘মেঝেগুলো অপরিষ্কার। কিন্তু আসন কম থাকায় বাধ্য হয়েই মেঝেতে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। কোথাও কোথাও বৈদ্যুতিক পাখাও চলে না। টয়লেটে নাক চেপে যেতে হয়। এখানে আসলে সুস্থ মানুষও অসুস্থ হয়ে যাবে।’

সাদ্দাম হোসেন আরও বলেন, ‘হাসপাতাল অপরিষ্কার থাকার দায় রোগীর স্বজনদেরও নিতে হবে। কারণ তারা যেখানে-সেখানে ময়লা-আবর্জনা ফেলে রাখেন। টয়লেট ব্যবহারের পর পরিষ্কার করে রাখেন না। হাসপাতালে দায়িত্ববানরা একটু নজর দিলে এই সমস্যা আর থাকবে না।’

চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক এ কে এম মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘হাসপাতালে স্যানিটেশন সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে পুরো হাসপাতালের পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কাজ করা হবে। খাবারের মান যাতে ভালো হয়, সে জন্য নির্দিষ্ট কর্মীরা তদারকি করছেন।’

মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সরকারি এই হাসপাতালে সব সময় রোগীর চাপ বেশি থাকে। এতে করে অনেক রোগীর স্বজনরা হাসপাতাল নোংরা করে ফেলেন, যেখানে-সেখানে থুথু ফেলেন। মূলত হাসপাতালে রোগী ও স্বজনরা একটু সচেতন হলে সুন্দর একটি পরিবেশে চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব।’


সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ২০:০৪
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ায় কালবৈশাখী ঝড়ে রেললাইনের ওপর গাছ পড়ায় সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে। আজ রোববার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যার দিকে সিলেটের সঙ্গে সারা দেশের ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার কবির আহমেদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

কী ঘটেছিল

স্থানীয়রা জানান, রোববার বিকেলে হঠাৎ করেই মৌলভীবাজার জেলাজুড়ে হয় কালবৈশাখী ঝড়। এতে লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে যাওয়া আখাউড়া-সিলেট রেলপথের একাধিক স্থানে গাছ ভেঙে পড়ে। ফলে ওই লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুর্ভোগে পড়েন এই রুটের ট্রেনের যাত্রীরা।

কমলগঞ্জের ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার বলেন, ঝড়ে সিলেট-শ্রীমঙ্গলের মাঝে রেললাইনের ওপর কয়েকটি গাছ ভেঙে পড়ে। এতে বিকেল থেকে সারা দেশের সঙ্গে সিলেটের ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়।

কবির আহমেদ আরও বলেন, শ্রীমঙ্গল স্টেশনে জয়ন্তীকা এক্সপ্রেস ট্রেন ৫টা ২০ মিনিটে আটকা পড়ে। এ ছাড়া ঢাকাগামী পারাবত এক্সপ্রেস ভানুগাছ রেলওয়ে স্টেশনে ৫টা ৩৭ মিনিটে আটকা পড়ে।

বিষয়:

দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:১৬
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি ও বাসস

অতি তীব্র দাবদাহে চুয়াডাঙ্গায় মানুষের জনজীবন ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে। গত কয়েক দিন ধরে মাঝারি, তীব্র ও অতি তীব্র দাবদাহ চলছে চুয়াডাঙ্গায়। এর মধ্যে ৭ দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায়।

আজ রোববার বিকেল ৩ টায় চুয়াডাঙ্গা জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস বলে জানিয়েছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। এরপর সন্ধ্যা ছয়টায় জেলার তাপমাত্রা একই থাকে। এসময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৪১ শতাংশ। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় রেকর্ড করা হয়েছে ৪২.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তীব্র দাবদাহের কারনে প্রশাসনের তরফ থেকে জনসাধারণকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়েছে। হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়াসহ বিভিন্ন রোগীর চাপ অস্বাভাবিকহারে বেড়ে গেছে।

প্রচণ্ড তাপদাহে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। সেই সঙ্গে বাতাসের আদ্রতা বেশি থাকায় অনুভূত হচ্ছে ভ্যাপসা গরম। তাপদাহে খুব প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সর্বত্র লু হাওয়া বয়ে যাচ্ছে। জেলায় দুপুরের পর ঘরে থাকা দুরূহ হয়ে পড়েছে। তাপদাহে সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়েছেন শ্রমজীবীরা। চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া সিনিয়র পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান জানায়, আগামী ৫-৬ দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমার লক্ষণ নেই। আরো বাড়তে পারে। এদিকে আবহাওয়া অফিস থেকে সিলেট অঞ্চল বাদে সারা দেশে নতুন করে চতুর্থ দফায় ৭২ ঘন্টার হিট এলার্ট জারি করেছে।


বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে ২ কেএনএফ সদস্য নিহত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:৫৬
থানচি (বান্দরবান) প্রতিনিধি

বান্দরবানে সেনাবাহিনীর অভিযানে সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) দুই সদস্য নিহত হয়েছেন। এ অভিযানের সময় তাদের কাছ থেকে তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকিসহ অন্যান্য সরঞ্জামাদিও জব্দ করা হয়।

আজ রোববার সকালে রুমা ও থানচি উপজেলার সীমান্তের দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় অভিযানটি পরিচালনা করা হয়। তবে নিহতদের নাম পরিচয় এখনও জানা যায়নি।

আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপি আর) সহকারী পরিচালক রাশেদুল আলম খান এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করছেন।

তিনি বলেন, ‘বান্দরবানের জেলার রুমা ও থানচি দুই সীমান্তে উপজেলার দুর্গম বাকলাই পাড়া এলাকায় সেনাবাহিনী অভিযানের কুকি-চিনের দুইজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় তিনটি আগ্নেয়াস্ত্র, বিপুল পরিমান গোলাবারুদ, ওয়াকিটকিসহ অনান্য সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে।’

স্থানীয়রা জানায়, রোববার সকালে রুমা ও থানচির দুই উপজেলা সীমান্তের বাকলাই পাড়া এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। তবে তারা কে বা কারা সে বিষয়ে কেউ না জানলেও তাদের গায়ে কেএনএফের পোশাক দেখা যায়।

থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘স্থানীয়রা বাকলাই এলাকায় দুটি মরদেহ দেখতে পায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার পুলিশ। মরদেহ দুটি থানচি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ময়নাতদন্তের জন্য রাখা হয়েছে।

বিষয়:

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে বৃদ্ধার মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি

মুন্সীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে রোকেয়া বেগম (৬০) নামে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। জানা যায়, মাদ্রাসা পড়ুয়া নাতিকে মাদ্রাসায় দিয়ে ফিরে আসার পথে তিনি সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের নিচে ট্রেনে কাটা পড়েন।

আজ রোববার সকাল ৯টার দিকে জেলার শ্রীনগর উপজেলার পাটাভোগ ইউনিয়নের কামারখোলা গ্রামে ঘটনাটি ঘটে। নিহত রোকেয়া একই উপজেলার পূর্ব কামারখোলা গ্রামের প্রয়াত ইয়াকুব শিকদারের স্ত্রী।

স্থানীয়দের ভাষ্য, রোকেয়া আজ সকালে তার নাতিকে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় পৌঁছে দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে বের হন। সকালে তাকে মাদ্রাসায় পৌঁছে দিয়ে ফেরার পথে অসতর্ক অবস্থায় ট্রেন লাইনে অবস্থান করলে খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেসে নিচে কাটা পড়েন তিনি।

মাওয়া রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার সাইফুল ইসলাম জানান, সকালে সুন্দরবন এক্সপ্রেস নামে ট্রেনটি ঢাকা থেকে ছেড়ে খুলনা যাচ্ছিল। ট্রেনটি জেলার শ্রীনগর উপজেলার কামারখোলা অতিক্রম করছিল। এ সময় কামারখোলা দারুস সুন্নাহ জিনিয়া সালেহিয়া মাদ্রাসা ও লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের পূর্বপাশে বৃদ্ধা রোকেয়া অসাবধানতাবশত রেললাইন পারাপার হতে গেলে ট্রেনের নিচে কাটা পড়েন।

শ্রীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল তায়াবীর বলেন, নিহতের বাড়ি দুর্ঘটনাস্থলের কাছে হওয়ায় ঘটনার পরপরই স্বজনরা মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে যায়। এ বিষয়ে শ্রীনগর থানা ও রেল পুলিশ আইনি পদক্ষেপ নেবে।


উখিয়ায় অস্ত্র ও গুলিসহ ৫ রোহিঙ্গা আটক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১৪:৫৯
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় রোহিঙ্গাদের আশ্রয় শিবির থেকে দেশি-বিদেশি অস্ত্র ও গুলিসহ পাঁচজন রোহিঙ্গাকে আটক করেছে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন (এপিবিএন)। রোববার ভোর রাতের দিকে উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন এপিবিএনের অধিনায়ক অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক (এডিআইজি) মোহাম্মদ ইকবাল।

আটকরা হলেন- ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের মোহাম্মদ জোবায়ের (২২)। একই ক্যাম্পের সি-২ ব্লকের দিল মোহাম্মদ (৩৫)। সি-৭ ব্লকের মোহাম্মদ খলিল (৩৪)। সি-২ ব্লকের মোহাম্মদ ইদ্রিছ (২৮) ও এ-৬ ব্লকের মোহাম্মদুল্লাহ (২৫)।

আটকরা সকলে রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য বলে জানিয়েছে এপিবিএন পুলিশ।

এডিআইজি ইকবাল বলেন, ‘রোববার ভোর রাতে উখিয়া উপজেলার কুতুপালং ২-ওয়েস্ট নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৯ ব্লকের একটি ঘরে কতিপয় লোকজন অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশে সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান করছিল। খবরে এপিবিএন পুলিশের একটি দল অভিযানে নামে। পরে ঘরটি ঘিরে ফেললে ১০ থেকে ১২ জন লোক পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে পালানোর চেষ্টা করে। এসময় তাদের পিছেু নিয়ে ৫ জনকে আটক করা সম্ভব হলেও অন্যরা পালায়। পরে আটকদের দেহ এবং ওই ঘরটি তল্লাশি করে পাওয়া যায় বিদেশি ৫টি পিস্তল, দেশিয় তৈরি ২টি বন্দুক ও ১৮টি গুলি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আটকরা রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক একটি সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠনের সক্রিয় সদস্য। তাদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে নানা অপরাধে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।’

আটকদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট আইনে উখিয়া থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।

বিষয়:

বৃষ্টির আশায় ব্যাঙের বিয়ে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

তীব্র গরম থেকে বাঁচতে ও বৃষ্টির আশায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলায় নেচে- গেয়ে ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেছে স্থানীয় লোকজন। গতকাল শনিবার সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ব্যাঙের বিয়ের অনুষ্ঠান চলে উপজেলার চন্দ্রখানা বালাটারি গ্রামে।

ওই এলাকার বাসিন্দা সাহাপুর আলীর স্ত্রী মল্লিকা বেগমের আয়োজনে বিয়েতে অসংখ্য নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন। নাচ-গানের মধ্যদিয়ে ব্যাঙের বিয়ে দেওয়া শেষে বরণ ডালায় ব্যাঙ দুটিকে নিয়ে পুরো গ্রাম ঘুরে বেড়ান তারা। এ সময় গ্রামবাসীদের কাছ থেকে চাল-ডাল সংগ্রহ করে ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণকারীদের খাবারের ব্যবস্থাও করা হয়।

ব্যাঙের বিয়ের আয়োজনকারী মল্লিকা বেগম জানান, কিছুদিন ধরে তীব্র গরম। তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কারণে আমরা কষ্টে রয়েছি। গ্রামের মানুষজন অস্বস্তিতে আছেন। কোনো কাজ-কামাই করতে পারছেন না। তারা বিশ্বাস করেন ব্যাঙের বিয়ে দিলে বৃষ্টি হয়। সেই বিশ্বাস থেকেই আজ তারা ব্যাঙের বিয়ের আয়োজন করেন।

ব্যাঙের বিয়ে দেখতে আসা জাহিদ নামে একজন বলেন, ‘আমার জীবনে প্রথম ব্যাঙের বিয়ে দেখলাম। খুবই ভালো লেগেছে।’

এলাকার বৃদ্ধ আজিজুল হক বলেন, ‘বৃষ্টি না হওয়ার কারণে আবাদে ক্ষতি হচ্ছে। তাই বৃষ্টির আসায় ব্যাঙের বিয়েতে অংশগ্রহণ করেছি।’

কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, কুড়িগ্রামে বেশকিছু দিন ধরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ ডিগ্রি থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠা-নামা করছে। গতকাল জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


নতুন কর্মস্থলে যোগদান করেননি নাথান বমের স্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ০৬:২১
মো. শাফায়েত হোসেন, বান্দরবান

বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) প্রধান নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে গত ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি এখনো চাকরিতে যোগদান করেননি। এদিকে রুমা সদরের ২নং ওয়ার্ডে তার নিজ বাসাতেও তিনি অবস্থান করছেন না। তাহলে তিনি কোথায় রয়েছেন তা নিয়ে এমন প্রশ্ন উঠেছে স্থানীয়দের মাঝেও। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ছাড়া প্রশাসনের কাছেও কোনো তথ্য নেই বলে জানা গেছে।

সম্প্রতি বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে কেএনএফের নেতৃত্বে ব্যাংক ডাকাতি ও সন্ত্রাসী হামলার পর ওই গোষ্ঠীর প্রধান নাথান বমসহ বাকি সদস্যদের গ্রেপ্তারে পাহাড়ে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বধীন যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ২৩ জন নারী সদস্য রয়েছে।

কেএনএফের এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে আলোচনায় আসে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমের নাম। জানা যায়, রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বম নার্স হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তবে নাথান বমের স্ত্রী হিসেবে লাল সমকিম বম আলোচনায় এলে সেখান থেকে তাকে গেল ৮ এপ্রিল লালমনিরহাট ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তিনি এখনো (২৭ মার্চ পর্যন্ত) সেখানে যোগদান করেননি। এবং নিজ বাড়িতেও তার সন্ধান মিলছে না। সর্বশেষ ৮ এপ্রিল লাল সমকিম বম রুমা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওইদিন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের উপসচিব (পরিচালক প্রশাসন) মো. নাসির উদ্দিন স্বাক্ষরিত স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, নার্সিং সেবা ১ শাখার এক স্মারকের আলোকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের লাল সমকিমকে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে বদলি করা হয়। তবে বদলি আদেশের পর লাল সমকিম বম বদলিকৃত কর্মস্থলে উপস্থিত হননি বলে জানা গেছে। বদলির পরিপত্রে ৯ এপ্রিলের মধ্যে কর্মস্থলে আবশ্যিকভাবে যোগদানের কথা বলা হয়। অন্যথায় ৯ এপ্রিল তারিখের অপরাহ্ণে স্ট্যান্ড রিলিজ বলে গণ্য করা হবে বলে নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এদিকে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. বামংপ্রু মারমা বলেন, ‘নার্স লাল সমকিম বমকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকে তিনি আর হাসপাতালে আসেননি। তিনি কোথায় আছেন সেই তথ্যও তাদের কাছে নেই বলেও জানান ডা. বামংপ্রু মারমা। বদলির বিষয়ে লালমনিরহাট ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. রমজান আলী বলেন, নার্স লাল সমকিম বম এখনো যোগদান করেননি। তবে তার এখানে যোগদান করার কথা ছিল। কবে যোগদান করতে পারে সেই বিষয়ে তার কাছে আর কোনো তথ্য নেই বলেও যোগ করেন ডা. রমজান আলী।

এ বিষয়ে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্বশীল এক অফিসার বলেন, লাল সমকিম বমকে বদলির পর তার আর কোনো সন্ধান মিলছে না। বদলি কার্যকর হওয়ার পর বদলির কাগজ নিয়ে তার বাড়িতে গিয়েও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তারা তাকে পায়নি বলেও জানান তিনি।

এ ছাড়া মোবাইলেও নার্স লাল সমকিম বমকে পাওয়া যায়নি বলেও যোগ করেন তিনি। রুমা উপজেলার সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য (সংরক্ষিত) কল্যানি চৌধুরী জানান, দীর্ঘদিন ধরে নাথান বমের স্ত্রী লাল সমকিম বমকে নিজ বাড়িতে দেখা যাচ্ছে না। তিনি কোথায় আছেন সঠিক তথ্যও জানা নেই বলেও জানান তিনি।

এদিকে লাল সমকিম বমের বাড়িতে নাথান বমের যাতায়াত ছিল কি না এমন প্রশ্নের জবাবে কল্যানি চৌধুরী জানান, ‘প্রায় দুই বছরেও নাথান বম এই বাড়িতে আসার কোনো খবর কেউ পাননি। রুমা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ মাহবুবুল হক বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি এই উপজেলায়। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জেনেছি তিনি (লাল সমকিম বম) এলাকাতে নেই। তিনি আরও বলেন, তাকে (লাল সমকিম বম) যদি প্রশাসন গ্রেপ্তার করত তাহলেও সবাই বিষয়টা জানত। তবে এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে বলেও নিশ্চিত করেন তিনি। রুমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমাদের কাছে নাথান বমের স্ত্রীর কোনো তথ্য নেই। তিনি এলাকায় আছেন কি নেই তাও পুলিশের জানা নেই।’

রিমান্ড শেষে কেএনএফের ১০ আসামিকে কারাগারে প্রেরণ

বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় নতুন গজিয়ে ওঠা সশস্ত্র সন্ত্রাসী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) আটককৃত ৭৮ জন আসামির মধ্যে আরও ১০ জনকে রিমান্ড শেষে কারাগারে প্রেরণ করেছে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। গতকাল শনিবার আসামিদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজির হলে শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক নুরুল হক।

আসামিরা হলেন, ভানলাল কিম বম, সাইরাজ বম, রুয়াল কমলিয়ান বম, গিলবার্ট বম, তিয়াম বম, লিয়ান নোয়াই থাং বম, নল থন বম, পেনাল বম, লাল মুন লিয়ান বম ও জাসোয়া বম। তারা সবাই রুমার বেথেল পাড়ার বাসিন্দা। আদালত সূত্র জানা যায়, রুমা ও থানচি দুই উপজেলার সোনালী ও কৃষি ব্যাংক ডাকাতির এবং অস্ত্র লুটপাটের ঘটনায় ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করে সেনাবাহিনীর নেতৃত্বাধীন যৌথবাহিনী। গ্রেপ্তারের পর তাদের আদালতের হাজির করা হলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী দুই দিনের জন্য রিমান্ড আবেদন করলে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। দুই দিন রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করা হলে কেএনএফের সদস্য ১০ জনকে কারাগারে প্রেরণের আদেশ দেন আদালত।

উল্লেখ্য, গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমা সোনালী ব্যাংক ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা, পুলিশের অস্ত্র লুটের ঘটনায় রুমা থানায় ৫টি মামলা দায়ের করা হয় এবং পরে ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে আর এই ঘটনায় ৪টি মামলা দায়ের হওয়ার পর পুলিশ অভিযান শুরু করে এই পর্যন্ত মোট ৯টি মামলায় ২২ জন নারীসহ ৭৮ জন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথবাহিনী।


বরিশালে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বরিশাল প্রতিনিধি

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের ঢালমাড়া গ্রামে পল্লি বিদ্যুতের ছিঁড়ে পড়ে থাকা তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শিশুসন্তানসহ মায়ের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটে।

বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মৃত ব্যক্তিরা হলেন- ওই গ্রামের বাসিন্দা মো. রিয়াজ মোল্লার স্ত্রী সোনিয়া বেগম (৩০), মেয়ে রেজবি আক্তার (৯) ও ছেলে সালমান মোল্লা (৫)।

স্থানীয়রা জানান, বসতঘরের পাশে বৈদ্যুতিক খুঁটি থেকে বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গেলে প্রথমে শিশু সালমান বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে প্রথমে সোনিয়া ও পরে রেজবি বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। আশপাশের লোকজন বাকেরগঞ্জ বিদ্যুৎ অফিসে খবর দিলে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হলেও, তার আগেই মৃত্যু হয় ৩ জনের।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাকেরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ সাইফুর রহমান।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আফজাল হোসেন বলেন, ছিঁড়ে পড়া তারে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মা ও তার দুই শিশুসন্তানের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। এর সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ইউএনও মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পানির মধ্যে পড়ে রয়েছে। পাশে লেবুগাছ রয়েছে। প্রথমে শিশু ছেলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়। তাকে রক্ষা করতে মা ও বোন গিয়ে তারাও বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যান। দায়িত্বে অবহেলায় এ ঘটনা ঘটলে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুতের লোকদের বলা হয়েছিল লেবু বাগানের ওপর দিয়ে যাওয়া তার যেকোনো সময় ছিঁড়ে পড়তে পারে; কিন্তু তারা গুরুত্ব দেয়নি।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ বাকেরগঞ্জ জোনাল অফিসের সহকারী জেনারেল ম্যানেজার সুবাস চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনা তদন্তে আলাদা দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাদের আজ রোববারের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


সখীপুর শাল-গজারি বনে এক মাসে ২৫ স্থানে আগুন! 

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সখীপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

শাল-গজারির বনে ঘেরা অপার সৌন্দর্যের লীলাভূমি টাঙ্গাইলের সখীপুরের বনাঞ্চলে এক মাসে অন্তত ২৫/৩০ টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। সর্বশেষ গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে গজারিয়া বিটে সখীপুর-সিডস্টোর সড়কের কীর্ত্তনখোলা এলাকায় দেখা যায়, সেখানে একটি বনে কে বা কারা আগুন ধরিয়ে দিয়েছে। স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, গত এক সপ্তাহে অন্তত চারটি শাল-গজারির বনে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা।

এর আগে গত বুধবার বিকেলে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারির বনে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে যায়। এছাড়া কৈয়ামধু বিটের বেতুয়াতেও গজারি বনে কয়েক দফায় আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে।

বনবিভাগের অনুমতি ছাড়া যেখানে প্রবেশ নিষেধ, সেখানে ঘটছে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা। প্রতিবছর এ মৌসুমে বনে আগুন দেওয়ার কারণে পুড়ে যায় ছোট ছোট গজারি গাছ, ঝোপঝাড়, পোকামাকড় ও কীটপতঙ্গ। বিনষ্ট হয় বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল। বন পোড়ানোর কারণে নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বাসা হারাচ্ছে পাখিরা। ফলে প্রাণ-প্রকৃতি ও পরিবেশের ভারসাম্য নিদারুণভাবে নষ্ট হচ্ছে।

গত এক মাসে সখীপুরের বনাঞ্চলের ২৫টি জায়গায় আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যেও সর্বশেষ গত সপ্তাহে উপজেলার বহেড়াতৈল বিটের আওতায় ছাতিয়াচালা সাইনবোর্ড এলাকায় একটি গজারি বনে আগুন দেয়। এতে প্রায় পাঁচ একর গজারির বন আগুনে পুড়ে গেছে।

ডিবি গজারিয়া বিট কার্যালয়ের আওতাধীন অন্তত চারটি স্থানে শাল-গজারির বনে আগুন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া কালিয়ানপাড়া, গজারিয়া, কীর্ত্তনখোলা, বংকী এলাকায় শাল-গজারির এসব বনে আগুন দেওয়া হয়। এতে প্রায় ৮ থেকে ১০ একর বন পুড়ে যায়।

স্থানীয় বন বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সখীপুরে ৪টি রেঞ্জের আওতায় ১৩টি বিট কার্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ১৫ হাজার একর জমিতে শাল-গজারির বন রয়েছে। বসন্তকালে শাল-গজারির পাতা ঝরে পড়ে। বনাঞ্চলের আশপাশের বাসিন্দারা জমি দখল ও লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে রাতের আঁধারে বা কখনো দিনের বেলাতেও বনে আগুন দেন। ঝরা পাতাগুলো শুকনা থাকার কারণে মুহূর্তেই বনে আগুন ছড়িয়ে পড়ে।

তুহিন আহমেদ নামের স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, বনের কাছাকাছি নিম্নআয়ের মানুষের বসবাস বেশি। তারা লাকড়ি সংগ্রহের উদ্দেশ্যে অনেক সময় গজারি বনে আগুন দিয়ে থাকেন। আবার কেউ বনের জমি দখলের উদ্দেশ্যে বন পোড়ানোর সঙ্গে জড়িত থাকেন। বনের ভেতরের সড়ক দিয়ে চলাচলকারীরাও অনেক সময় বনে আগুন দেন। মূলত জমি দখল আর লাকড়ি সংগ্রহ করতেই আগুন দিয়ে থাকে দুর্বৃত্তরা।

স্থানীয় বাসিন্দা জুলহাস আহমেদ বলেন, গজারির বনে মাদক সেবীদের আনগোনা থাকে, মাদক সেবনের পর তারা অনেক সময় গাছের পাতায় আগুন ধরিয়ে দেয়। এছাড়া কিছু অসচেতন বাসিন্দারাও পাতা পুড়ে সার হবে বলে আগুন ধরিয়ে দেয়।

এ প্রসঙ্গে নলুয়া বিট কর্মকর্তা সাফেরুজ্জামান বলেন, দুই সপ্তাহের মধ্যে বেশ কয়েকটি গজারির বনে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। আমরা খুবই সতর্ক অবস্থায় আছি। জনবল কম থাকায় দেখভাল করতে আমাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা টাঙ্গাই‌ল শাখার সভাপতি ও মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এএসএম সাইফুল্লাহ বলেন, এক শ্রেণীর অসাধু লোকজন অযথা শাল-গজারি বনে আগুন দিয়ে বন ধ্বংস করছে। এর ফলে পশু-পাখি বিলুপ্ত হতে চলছে। হুমকির মুখে পড়েছে এ অঞ্চলটির বন্যপ্রাণী।

উপজেলা বনায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী বলেন, এ জন্য বন বিভাগের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোতে সচেতনতামূলক সভা করা প্রয়োজন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

টাঙ্গাইলের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সাজ্জাদুজ্জামান বলেন, সখীপুর উপজেলায় বন বিভাগের জনবল কম। তবে স্বল্প জনবল দিয়েই গণসচেতনতা বাড়ানোর কাজ করা হচ্ছে, যাতে লোকজন শাল-গজারি বনে আগুন না দেয়।


ভারতীয় চিনি ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগো দিয়ে বাজারজাতের চেষ্টা

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৯:৩৫
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

চট্টগ্রামের বহদ্দারহাট এলাকার একটি কাঠের কারখানা থেকে অবৈধভাবে মজুদ করা ৬০০ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। এই চিনি মেঘনা গ্রুপের ফ্রেশ ব্র্যান্ডের লগোর বস্তায় মজুদ করা হয়। এ ব্যাপারে কারখানা মালিকের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।

শনিবার দুপুরে বহদ্দারহাট এলাকায় জেলা প্রশাসনে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরাফাত সিদ্দিকী এই অভিযান চালান।

তিনি জানান, ৩০ টন ভারতীয় চিনি ফ্রেশ কোম্পানির নামে প্যাকেট করে এখানে মজুদ করা হয়। যা কয়েকদিনের মধ্যে বাজারে ছাড়া হতো। চিনিগুলো কোথা থেকে কীভাবে ভারত থেকে এসেছে তার কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেননি গুদাম মালিক।

গুদাম মালিক আব্দুর রব্বানীর দাবি, কাঠ ব্যবসায়ী সমিতি সাবেক নেতা জাহিদ বিন জয়নাল গুদামটি ভাড়া নেন। তিনি গত বৃহস্পতিবার এসব চিনি মজুদ করেন। তবে এগুলোর কোনো আমদানীর কাগজ নেই।

ভ্রাম্যমান আদালতের ধারণা চিনি গুলো চোরাই পথে অবৈধভাবে দেশে আনা হয। পুরো চক্রটিকে গ্রেপ্তার করতে নির্দেশ দিয়েছে আদালত। এ বিষয়ে নিয়মিত মামলা রুজুর সিদ্ধান্ত হয়েছে চাঁন্দগাঁও থানায়।


চট্টগ্রামে কাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘট

চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় আগুন ধরিয়ে দেওয়া একটি বাস। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১৭:১৭
চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রামে আগামীকাল থেকে ৪৮ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে বৃহত্তর চট্টগ্রাম গণপরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে এ ধর্মঘটের ডাক দেয়া হয়েছে বলে জানা যায়।

গণপরিবহন মালিক শ্রমিক-ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক মঞ্জুরুল আলম চৌধুরী গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘কয়েকদিন আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে আমাদের তিনটি বাস পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গাড়ি পোড়ানো ও সড়কে নৈরাজ্যের প্রতিবাদসহ চার দফা দাবি আদায়ে আগামীকাল সকাল ৬টা থেকে ৪৮ ঘণ্টার পরিবহন ধর্মঘটের ডাকা হয়েছে। এই ধর্মঘট পালিত হবে চট্টগ্রাম মহানগর, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান এবং কক্সবাজার জেলায়।’

গত সোমবার চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী দুই চুয়েট শিক্ষার্থী নিহত হন। এ ঘটনার পর থেকেই ১০ দফা দাবিতে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করে আসছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বাসে আগুন দেওয়া হয়।

গত বুধবার বাসচালককে পুলিশ গ্রেপ্তার করলে শিক্ষার্থীরা কিছুটা শান্ত হয়। পরের দিন বৃহস্পতিবার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে তিন ঘণ্টা বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেখানে আলোচনার প্রেক্ষিতে ক্যাম্পাসের মূল ফটকের সামনের সড়ক থেকে অবরোধ তুলে নেন শিক্ষার্থীরা।

এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে আগামী ১১ মে পর্যন্ত চুয়েট বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে চুয়েট সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীদের ছাত্রাবাস ত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই সময়ে একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ থাকলেও শিক্ষার্থীরা ছাত্রাবাসে অবস্থান করতে পারবেন। যদিও জরুরি সিন্ডিকেট সভায় নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আবারও আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।

বিষয়:

সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে পর্যটকের মৃত্যু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে বেড়াতে এসে হঠাৎ হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে এক পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘটনাটি ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পর্যটকদের নিরাপত্তায় নিয়োজিত সী-সেইফ লাইফ গার্ডের সুপারভাইজার মো. ওসমান গণি।

মৃত পর্যটকের নাম মতিউর রহমান (৪০)। তিনি কুমিল্লা জেলার বুড়িশ্চং এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

ওসমান গণি বলেন, শনিবার সকাল থেকে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে সী-সেইফ লাইফ গার্ডের কর্মীরা গোসলরত পর্যটকদের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। সকাল পৌনে ৯টার দিকে সৈকতের বালিয়াড়িতে ওই পর্যটক পায়চারি করছিলেন। একপর্যায়ে ফোনে কথা বলার সময় ওই পর্যটক মাটিতে পড়ে অবচেতন হয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, এসময় সেখানে কর্তব্যরত লাইফ গার্ড কর্মীরা তাৎক্ষণিক ওই পর্যটককে উদ্ধার করে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল কর্মকর্তা (আরএমও) মো. আশিকুর রহমান বলেন, ‘সকাল ৯টার পরপরই সৈকতের লাইফ গার্ড কর্মীরা একজন পর্যটককে অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে আসেন। কিন্তু হাসপাতালে আনার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আকস্মিক হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে ওই পর্যটকের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে তীব্র গরমে হিট স্ট্রোক নাকি অন্য কোনো রোগে মারা গেছেন তা ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া যাবে।’

মারা যাওয়া পর্যটকের মৃতদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে বলেও এসময়ে জানান তিনি।


ব্ল্যাকে টিকিট কিনে বিপাকে ১৩ যাত্রী

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

দ্বিগুণ দামে টিকিট কিনেও যাত্রীদের পড়তে হয় চরম বিপাকে। হাতে টিকেট থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষের কাছে সাব্যস্ত হতে হয় বিনা টিকিটের অবৈধ যাত্রী হিসেবে। হজম করতে হয় নানা ধরনের কটু কথা। শুধু কী তাই? সিনেমার সুটিংয়ের মতো যেন অভিনয় দেখতে থাকেন অন্য যাত্রীরা। আর দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা পালন করে সাংবাদিকের ভূমিকা।

মঙ্গলবার দিনগত রাতে এমনই ঘটনা ঘটেছে বুড়িমারী (লালমনিরহাট) থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তনগর ট্রেন বুড়িমারী এক্সপ্রেসে। এদিন ওই ট্রেনে নাটোর যাচ্ছিলেন দৈনিক বাংলার গাইবান্ধার এই প্রতিবেদক। সেদিন এই ট্রেনের একটি বগির ১৩ যাত্রীকে দ্বিগুন মূল্য দিয়ে টিকিট কিনেও পড়তে হয়েছে তোপের মুখে।

সেদিনের ট্রেনে দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টদের প্রশ্নের কোনো সদোত্তর দিতে পারেনি পাঁচ টিকিটে থাকা ওই ১৩ যাত্রী। তাদের মধ্যে দুই সন্তানসহ যেন দুমরে-মুচরে গেছেন এক নারীও। কারণ তাদের টিকিটগুলো ছিল কালোবাজারিতে ক্রয় করা। কোথায় আর কিভাবে পেয়েছেন এসব টিকিট? এমন প্রশ্নের উত্তরে কেবল এক নারী ছাড়া অপর ১১ যাত্রীর প্রত্যেকের মুখে ছিল একটিই নাম বোনারপাড়ার ‘জসিম’। প্রশ্ন হওয়াটাই স্বাভাবিক কে এই জসিম?

ব্ল্যাকে ক্রয় করা টিকিটগুলো বিশ্লেষন করে দেখা যায়, একই তারিখে ক্রয় করা ওই সব টিকিটে আসন সংখ্যা ছিল ১৩ টি। যার দুটি টিকেট ৮ যাত্রী, একটিতে ২ যাত্রী এবং অপর দুটি টিকিটে আসন সংখ্যা ৭ টি দেওয়া থাকলেও যাত্রী ৩ জন। যাত্রীদের মধ্যে পাঁচ যাত্রী কেউ কাউকেই চেনেন না। এছাড়া টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি, মোবাইল নম্বর, এবং যাদের নামে ক্রয় করা হয়েছে তাদেরকে যাত্রীদের কেউই চেনেন না।

এসব টিকিটে ঢাকাগামী যাত্রীদের মধ্যে একজন শাহিন (৫৫)। তার বাড়ি বোনারপাড়ায়। তিনি ফার্নিচারের ব্যবসা করেন, জরুরি কাজে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি। তার কাছে থাকা টিকিটের আসন নম্বর ঞ-৫, ৬, ৭ ও ১১। টিকিট দেওয়ার সময় তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ঞ-৭। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে অপর তিনটি আসন কার? এছাড়া তার এই টিকিটে টিকিট ক্রয়কারীর নাম আব্দুর রাজ্জাক।

এ সময় জানতে চাইলে যাত্রী শাহিন বলেন, কয়েকদিন চেষ্টা করেও টিকিট পাইনি। পরে জসিমের থেকে বাধ্য হয়ে দ্বিগুন দামে টিকিট কিনেছি। কিছু করার নাই সবখানেই একই অবস্থা। যেতে হবে তো!

আপনার হাতের টিকিটে আব্দুর রাজ্জাক কে? এনআইডি আর এই মোবাইল নম্বরইবা কার? এমন প্রশ্নের উত্তরে যাত্রী শাহিন বলেন, মোবাইল নম্বর এবং এনআইডি কার জানিনা। আর আব্দুর রাজ্জাক কেও আমি চিনিনা।

এছাড়া যাত্রীদের মধ্যে ওই নারীর বাড়ি সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়ার শিমুলতাইর গ্রামে। স্বামী দুলু মিয়া ঢাকায় বেসরকারি চাকরি করেন। মেয়ে মাহমুদা (১১) ও ছেলে মামুনকে (৬) সাথে নিয়ে ঢাকায় যাচ্ছেন তিনি।

ওই নারীর হাতে যে টিকিটটি ছিল তাতে আসন নম্বর ছিল ঞ-৫, ৭, ও ১১ নম্বর। ওই নারীর দাবি তাকে বলা হয়েছে তার আসন নম্বর ৫ ও ৭। তাহলে কোচের ১১ নম্বর আসনের যাত্রী কে?

এ সময় জানতে চাইলে ওই নারী বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য আমার স্বামী দুটি টিকিট ১৭০০ টাকা দিয়ে কিনেছে। স্টেশন থেকে নয়। তবে, কার থেকে কিনেছে টিকিট তা জানা নেই বলে জানান ওই নারী।

তিনি বলেন, টিকিট থাকার পরেও এমন ঘটনা খুব কষ্টের। এসময় পুলিশের নেওয়া ভিডিও ফেসবুকে ছেড়ে দিবে কি না-এমন প্রশ্ন করে আতঙ্কগ্রস্ত ছিলেন তিনি।

ব্লাকে টিকিট ক্রয় করা আরেক যাত্রীর নাম শাকিল (২৩) । তবে, শাকিলের কাছে একটি নয় রয়েছে দুটি টিকিট। ওই দুই টিকিটে আসন সংখ্যা ৮টি। তারাও ঢাকা যাচ্ছেন শাকিলসহ ৮জন।

শাকিলের হাতে থাকা দুটি টিকিটই কাউন্টার থেকে প্রিন্ট করা। যার মধ্যে ১, ৪,২৮ ও ৩০ নম্বরের ৪ টি আসনের একটি টিকিটে যাত্রীর নাম দেখাচ্ছে হাওয়া বেগম।

হাওয়া বেগম কে? শাকিলের কাছে টিটিইর এমন প্রশ্নে শাকিল বলেন, চিনিনা। তাহলে তার নামের টিকিটটি তোমার হাতে এলো কিভাবে? শাকিল বলে বোনারপাড়ার জসিম ভাইয়ের থেকে প্রতিটি টিকিট ৮০০ টাকা করে কিনেছি। এসময় জসিমের নাম শুনে ক্ষিপ্ত হন টিটিই। তখন টিটিই সহ ট্রেন সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তির মুখে এসব কালোবাজারিতে টিকিট ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে বোনারপাড়া স্টেশনের বর্তমান স্টেশন মাস্টার খলিলও জড়িত আছে বলে অভিযোগ তোলেন।

এ সময় টিকিট কালেক্টর গোলাম হাফিজ রিজু বলেন, এই ঞ বগির পাঁচটি টিকিটে থাকা ১৩ যাত্রীর প্রত্যেকেই ব্ল্যাকে টিকিট কিনেছেন। বিধি মোতাবেক তারা প্রত্যকেই অবৈধ যাত্রী। কেননা, তাদের কাছে থাকা টিকিট ক্রয়ে যে এনআইডি ব্যবহার করা হয়েছে সেই নামের বা সেই এনআইডিধারী ব্যক্তি মূলত যাত্রী নয়।

কে এই জসিম?

সেদিনের একটি বগির ১৩ যাত্রীর কাছে ব্ল্যাকে টিকেট বিক্রেতা কে এই জসিম? তার পরিচয় সনাক্তের চেষ্টা করেছে দৈনিক বাংলার গাইবান্ধা এই প্রতিবেদক। খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে,

সাঘাটা উপজেলার রাঘবপুর গ্রামের বীর মুক্তযোদ্ধা মৃত হায়দার আলীর ছেলে 'জসিম'। তিনি এক সময় বোনারপাড়া স্টেশনে ব্যবসা করতেন। জসিম ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর টিকিট কালোবাজারে বিক্রির সময় বোনারপাড়া থেকে তাকে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে বোনারপাড়া রেলওয়ে পুলিশ। সে সময় তার (জসিম) কাছ থেকে ট্রেনের চারটি টিকিট উদ্ধার করা হয়। পরে একই তারিখে রেলওয়ে পুলিশ বাদি হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে তার বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করে।

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত জসিম মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘এখন টিকিট সব অনলাইনে, আর টিকিটে আমার নাম বা আমার নম্বর নাই। বোনারপাড়াতে মানুষকে ভালবেসে কিছু করতে যায়া (গিয়ে) আমার নামে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। তারপর থেকে আমি অনেকটাই দূরে।

এ সময় তিনি বলেন, বোনারপাড়া স্টেশন মাস্টার থেকে শুরু করে সবাই এই ব্যবসার সাথে জড়িত। মূলত তারাই এসব টিকিট বিক্রি করে যদি কোনো সমস্যা হয় তারা আমার (জসিম) নামটা তাদেরকে বলতে বলে দেয়।

বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার খলিল মোবাইল ফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, টিকিট কালোবাজরীর বিষয়টি দেখার দায়িত্ব জিআরপি এবং আরএমপি পুলিশের। তারা কী করে? টিকিট এখন শতভাগ অনলাইনে। যদি কেউ আমার কথা বলে থাকে তা মিথ্যা বলেছে। আমি জসিমকে সেরকমভাবে চিনিও না।

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা রেলওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম বলেন, ‘অভিযুক্ত জসিমকে ২০১৯ সালে কালোবাজারে টিকিট বিক্রিকালে হাতেনাতে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায় রেলওয়ে পুলিশ। এই অভিযোগের বিষয়টিও অবশ্যই খতিয়ে দেখা হবে।’

এ বিষয়ে ডিভিশনাল ট্রাফিক সুপারিনটেনডেন্ট (লালমনিরহাট) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ট্রেনের টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে শতভাগ টিকিট এখন অনলাইনে।

তিনি বলেন, অনেক সময় সিন্টিকেটেরা এক সিটের টিকিট একাধিক ব্যক্তিকে দিয়ে থাকেন। সেক্ষেত্রে ট্রেনে থাকা সংশ্লিরা যাদের টিকিটের সঙ্গে নাম বা এনআইডির মিল পায় তাদের ওই সিটে বসিয়ে দেয় এবং অন্যজনকে জরিমানাসহ নতুন টিকিট করে দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে সৈয়দপুর রেলওয়ে পুলিশ সুপার ফারহাত আহমেদ বলেন, বিষয়টি জানলাম, অবশ্যই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।


banner close