বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২৭ ভাদ্র ১৪৩২

ফখরুলদের হুমকি-ধমকিতে হনুমানও ভেংচি কাটে: হাছান মাহমুদ

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
১৮ মার্চ, ২০২৩ ১৬:৫৪
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত : ১৮ মার্চ, ২০২৩ ১৫:৩৮

সরকারকে ক্ষমতা থেকে টেনে নামানোর বিষয়ে বিএনপি নেতাদের হুমকি-ধমকিতে হনুমানও ভেংচি কাটে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবদের সরকারকে টেনে নামানোর হুমকি-ধমকি এখন মানুষের কাছে কৌতুক। এগুলোতে এখন হনুমানও ভেংচি কাটে।’

শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের ১৭ নম্বর পশ্চিম বাকলিয়া মৌসুমি আবাসিক এলাকায় আরসিসি ড্রেনসহ রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে হাছান মাহমুদ এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকরা বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক মন্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘২০০৯ সালে সরকার গঠনের এক মাস পর থেকেই বিএনপি সরকার পতনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বহুবার সরকারকে টেনে নামাতে চেষ্টা করে বিএনপিই জনবিচ্ছিন্ন হয়েছে, তারাই দড়ি ছিঁড়ে পড়ে গেছে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে তারাই ঘি ঢেলেছিল। বিডিআর বিদ্রোহের সঙ্গে বিএনপি এবং তাদের নেত্রী খালেদা জিয়ার সংশ্লিষ্টতা ছিল। বিডিআর বিদ্রোহ যেদিন হয়, সেদিন প্রত্যুষে খালেদা জিয়া ক্যান্টনমেন্টের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন এবং তারেক জিয়ার সঙ্গে বহুবার কথা বলেছিলেন। সেই রেকর্ড আমাদের কাছে আছে।’

জনগণই সরকার পরিবর্তনের মালিক উল্লেখ করে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘সরকার ক্ষমতায় থাকবে কি থাকবে না, দেশ পরিচালনার দায়িত্ব পালন করবে কি করবে না, সেই সময় দেয়া না দেয়ার মালিক হচ্ছেন জনগণ। বাংলাদেশের জনগণ দেশ পরিচালনার জন্য গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত দায়িত্ব দিয়েছেন। সে জন্যই তিনি দেশ পরিচালনা করছেন।’

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি নির্বাচনেও বিএনপি সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে যত কলঙ্কজনক ঘটনা ঘটেছে সবকিছুই বিএনপি ঘটিয়েছে। তারা ইতিপূর্বে প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছিল। এবার ঢাকা বারের নির্বাচনে শোচনীয় পরাজয়ের পর সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচনে জয়লাভের কোনো আশা নেই বুঝেই তারা প্রথমে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেয়, এরপর নির্বাচনী কার্যক্রমকে ভণ্ডুল করার জন্য ব্যালট ছিনতাই ও নির্বাচনী প্যান্ডেলসহ সব স্থাপনা ভাঙচুর করে। ২০১৪ সালের জাতীয় নির্বাচনে যেভাবে তারা নির্বাচনী কেন্দ্র পুড়িয়ে দিয়েছিল, ঠিক সেই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড এখন সুপ্রিম কোর্টে নিয়ে গেছে বিএনপি। এ জন্য তাদের বিচার হওয়া প্রয়োজন।’

চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে সরকারের ভূমিকা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরাসনের জন্য ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার সমপরিমাণ বরাদ্দ দিয়েছেন। এটি ঢাকা শহরের জন্যও দেয়া হয়নি। এই প্রকল্পের কাজ চলছে, আশা করি আগামী মৌসুমে আগের মতো জলাবদ্ধতা আর হবে না।’

নগরবাসীকে শহরের পরিচ্ছন্নতা ও নর্দমা সচল রাখার আহ্বান জানিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘চট্টগ্রাম শহরের পৌনে ১ কোটি মানুষ মিলে শহর ময়লা করলে সিটি করপোরেশনের ৪ হাজার কর্মীর পক্ষে তা পরিষ্কার রাখা সম্ভব না। আর পলিথিন ও বাসাবাড়ির ময়লা না ফেললে ড্রেন সচল থাকবে।’

১৭ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ শহিদুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা রেজাউল করিম চৌধুরী এবং কাউন্সিলর শাহীন আক্তার রোজী।


১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি, স্বপ্ন পূরণ লিজা ও রাকিবের

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা

মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বিলকিস সুলতানার, বাবা-মায়ের আদর–স্নেহ না পেয়ে বেড়ে ওঠা বিলকিস সুলতানা সরকারি চাকরি পেয়ে এবার নিজেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করবেন। একই সাথে নাজমিন নাহার লিজা তার বাবা ইসমাইল কারিগর বহু বছর আগে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে অতি কষ্টে লেখাপড়া করেছেন লিজা। বাবার স্নেহ–ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মায়ের আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এবারের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন নাজমিন নাহার লিজা (১৮)।

নিজের যোগ্যতায় সরকারি চাকরি হওয়ায় স্বপ্ন পূরণের আনন্দে চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে লিজার। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের লিজা বলেন, “নানা–নানীর সংসারে থেকে লেখাপড়া করেছি। সেভাবে বাবা-মায়ের আদর পাইনি, তারা থেকেও যেন নেই। আমার চলার পথ সহজ ছিল না। স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে কলেজে পড়ছি। আমি ভাবিনি সরকারি চাকরি হবে। বাড়ি থেকে একাই পুলিশ লাইন্সে এসেছি পরীক্ষা দিতে, আমার সাথে কেউ আসেনি। এখন সবাইকে ফোন করে চাকরির বিষয়টি জানাচ্ছি। মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে আমি অনেক খুশি এখন থেকে আমার আনন্দের সময় শুরু।

শুধু লিজা নন, সাতক্ষীরায় এবার মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ২৮ জন চাকরিপ্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৬ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে। কোন তদবির বা অনৈতিক লেনদেন ছাড়াই, শুধুমাত্র শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে এসব তরুণ–তরুণীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে জেলার পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃতদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।

সাতক্ষীরার রাকিব রায়হান (১৯) পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তিনি জানান এর আগে আরও দুইবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। দেখেছি, সবারই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকরি হয়েছে। তাই হাল ছাড়িনি, এবার তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার চাকরি হয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই—আলহামদুলিল্লাহ। আমি ব্র্যাক স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করে আমার এলাকার হাইস্কুলে পড়েছি। কখনো ভাবিনি ঘুষ ছাড়া চাকরি হবে। কিন্তু টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে সত্যিই আজ আমি আনন্দে আত্মহারা।”

বাবুল, আনোয়ার হোসেন (১৮), তাপসী (২০) ছাড়াও আরও কয়েকজন নিয়োগপ্রাপ্ত বলেন, “এত স্বচ্ছ নিয়োগ হবে জানতাম না। ভাবতাম পুলিশে চাকরি নিতে অনেক তদবির করতে হয়, লাখ লাখ টাকা ঘুষ লাগে। চাকরি হবে কিনা সংশয় ছিলাম, তবুও পুলিশ লাইন্সে এসেছি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে। কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, তদবির ও লেনদেন ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকায় যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি হয়েছে।

সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন ২৪ জুলাইয়ের বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ যে জনআকাঙ্ক্ষার পুলিশ চায়, সেই পুলিশ গড়ে তুলতে হলে সবার আগে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা দরকার। সারাদেশে এভাবেই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুলিশে নিয়োগ হচ্ছে। আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন তাদের সন্তানদের পুলিশে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন।”

ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এবার প্রায় ১৯ শত জন আবেদন করেন। যাচাই–বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৩৪৪ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে ৫৮ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে মোট ২৮ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া অপেক্ষমান রয়েছেন আরও ৬ জন।


সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটিতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন বিষয়ক সেমিনার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০

সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির (এসইইউ) ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি) এর আয়োজনে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে “দি নিড ফর রিহেবিলেশন অ্যাজ এ মেজর পার্ট অব ডিজেবল কেয়ার” শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক ভ্যালেরি এ. টেইলর, যিনি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষের যত্ন ও পুনর্বাসনে আজীবন অবদান রেখে অসংখ্য মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে নতুন ও স্বল্প খরচের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করতে সিআরপি অত্যন্ত আগ্রহী।

অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, যিনি শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানান।

সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরটি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হাসনাত এম. আলমগীর। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রযুক্তি ও নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।

পুরো আয়োজনটি অংশগ্রহণকারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন খাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।


জাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা জোরদার 

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রায় ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সোয়া আটটার দিকে ক্যাম্পাসের পেছনে গেরুয়া এলাকা সংলগ্ন ফটকে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ লেখা ব্যানার ঝোলানো হয়েছে।

ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (পিপিএম) আনিসুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকি নেই। তবে অন্যান্য ফটকের তুলনায় গেরুয়া ফটক দিয়ে বাইরের লোকজন ঢোকার চেষ্টা করবে। এ কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি রাখা হয়েছে।

এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি গতকাল রাজধানীতে সাংবাদিকদের জানান, জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি– সব বাহিনীই মাঠে থাকবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থায় থাকবে। প্রয়োজনে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দায়িত্ব পালন করবে।

জাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য নেওয়া হয়েছে সব প্রস্তুতি। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ ফিরবে বলে আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।

এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৭৭ ও হল সংসদে ৪৪৫ প্রার্থী আছেন ভোটের এই লড়াইয়ে। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গঠনতন্ত্র সংস্কার করে ১১টি পদ বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে। এর আগে ছিল ১৪টি পদ।

২৫ পদের মধ্যে ছাত্রীদের জন্য আছে ছয়টি সংরক্ষিত। নেতৃত্বে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এমন উদ্যোগ। ৩৩ বছর পর হচ্ছে জাকসু নির্বাচন। ভোটে অংশ নিচ্ছে ক্যাম্পাসে সক্রিয় সব সংগঠন।

ভোট গণনায় ব্যবহার করা হবে বিশেষ ওএমআর মেশিন। ফলাফল তাৎক্ষণিক সিনেট হলে বসানো বড় স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হবে এবং প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আপডেট জানানো হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও জনসংযোগ দপ্তরের ফেসবুক পেজে ফলাফল ও নির্দেশনা প্রকাশ করা হবে।


পদ্মার এক কাতলের দাম ৪৪ হাজার টাকায়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজবাড়ী প্রতিনিধি

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের একটি বড় কাতল মাছ ধরা পড়েছে। মাছটি ৪৪ হাজার ১৬০ টাকায় কিনে নিয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা।

গতকাল বুধবার দুপুরে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় মানিকগঞ্জ জেলার জাফরগঞ্জ এলাকার জেলে সোনাই হালদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে।

জানা গেছে, জেলে সোনাই হালদার তার সঙ্গীদের নিয়ে সকালে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় উজানের ভাটিতে জাল ফেলে। এ সময় তাদের জালে বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়ে। পরে জেলে সোনাই হালদার মাছটি বিক্রির জন্য বিকাল সোয়া ৩টার দিকে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাট এলাকার আনোয়ার খাঁর আড়তে নিয়ে আসেন। এ সময় উন্মুক্ত নিলামে ২ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা দিয়ে মাছটি কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা।

মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতল মাছটি উন্মুক্ত নিলামে ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা দিয়ে কিনেছি। মাছটি বিক্রির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। কেজি প্রতি ৫০ টাকা লাভ হলে মাছটি বিক্রি করে দেব।


ভারতে প্রবেশের সময় ৫ নারী-পুরুষকে আটক

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত থেকে ৫ নারী-পুরুষকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্তের ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলারের নিকট থেকে তাদের আটক করা হয়।

বিজিবি জানায়, শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সময় ২ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারীকে আটক করে।

আটককৃত ব্যক্তিদের বাড়ি, যশোর, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আটককৃতদের শার্শা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বিজিবি। খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধকল্পে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।


জাতীয় লেখক ফোরামের সাহিত্য আড্ডা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
প্রতিবেদক, দৈনিক বাংলা

জাতীয় লেখক ফোরাম আয়োজিত সাপ্তাহিক সাহিত্য আড্ডা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রাজধানীর ধানমন্ডিতে হওয়া এ সাহিত্য আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন সংগঠেনর সভাপতি ড. দেওয়ান আযাদ রহমান, মহাসচিব কবি-কথাসাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন এবং উপদেষ্টা মণ্ডলীর সদস্য মো. আবদুল মান্নানসহ বাংলাদেশের খ্যাতিমান লেখকরা। অনুষ্ঠানটি একটি সাধারণ প্রাণবন্ত আড্ডার মধ্যেই শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি ৩টি পর্বে সাজানো হয়েছে। প্রতি পর্বে চারজন কবিকে মঞ্চে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য এবং কবিতা পাঠ করেছেন। পুরো অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেছেন কবি-কথা সাহিত্যিক জাহাঙ্গীর হোসাইন।


শ্রীমঙ্গলে গলায় ফাঁস দিয়ে তরুণীর মৃত্যু

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বৃষ্টি নুনিয়া (২০) নামে এক তরুণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। বুধবার উপজেলার পৌর এলাকার সিন্দুরখান রোডের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ। বৃষ্টি ওই এলাকার হীরালাল নুনিয়ার মেয়ে।

শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাইদুর রহমান জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। গত মঙ্গলবার রাতে পরিবারের সঙ্গে খাবার খেয়ে নিজ কক্ষে ঘুমাতে যান বৃষ্টি। রাতের কোনো একসময় পরিবারের অজান্তে তিনি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বাসার ছাদের মন্দিরের পিলারের সাথে ফাঁস দেন। রাত আড়াইটার দিকে তার মা ডাকতে গেলে কক্ষে তাকে না পেয়ে ছাদে গিয়ে ওই অবস্থায় দেখতে পান এবং পরে পুলিশকে খবর দেন।

শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আমিনুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।


চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণা, এক মাসের জেল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সাতক্ষীরা প্রতিনিধি

সাতক্ষীরায় পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে প্রতারণার অভিযোগে আব্দুস সামাদ (৫২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। গত মঙ্গলবার রাতে তাকে আটকের পর ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে এক মাসের সাজা দেওয়া হয়। তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার রসুলপুর এলাকার বাসিন্দা। পুলিশ সুপার মনিরুল ইসলাম জানান, সাতক্ষীরায় পুলিশের ট্রেইনিং রিক্রুট কনস্টেবল পদের জন্য পরীক্ষা নেওয়া হয়। লিখিত পরীক্ষার পর আব্দুস সামাদ বেশ কয়েকজন প্রার্থীর কাছ থেকে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আব্দুস সামাদকে শহরের সঙ্গীতা মোড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সাতক্ষীরা কারাগারে পাঠানো হয়।


ফটিকছড়ির ধুরুং নদীর ভাঙন বিলিন হচ্ছে শতবর্ষী কবরস্থান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফটিকছড়ি (চট্রগ্রাম) প্রতিনিধি

ফটিকছড়ি উপজেলর কাঞ্চন নগর ইউনিয়নে ধুরুং নদীর ভাঙনের মুখে পড়েছে দুইশত বছরের পুরোনো কবরস্থান ও বসতভিটা।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধুরুং নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে নদীপাড় ভাঙনের সৃষ্টি হয়ে বসতভিটাসহ শতবর্ষী কবরস্থান বিলীন হতে চলেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের পশ্চিম কাঞ্চননগর গ্রামের আবদুল হাকিম কেরানীবাড়ী-সংলগ্ন বিশাল কবরস্থানের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা ভেঙে পার্শ্ববর্তী ধুরুং নদীতে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে স্বনামধন্য ধন্য আলেম ও ইসলামী ব্যক্তিত্ব হজরত অছিউদ্দিন শাহর মাজারও রয়েছে।

স্থানীয়রা জানান ধুরুং নদীর পাড়ঘেঁষা শতবর্ষী এ কবরস্থানে বছর দুয়েক আগেও শতাধিক কবর ছিল। প্রতি শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে মুসল্লিরা এখানে জিয়ারত করতে আসত।

কিন্তু নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিনিয়ত বালু উত্তোলনের ফলে ভাঙন বৃদ্ধি পেয়ে কবরস্থানটি দিন দিন ছোট হয়ে আসছে।

এ স্থানটিতে খাল এমনভাবে ভেঙেছে, এখানে যে কিছুদিন আগেও কবরস্থান ছিল, তা বোঝার উপায় নেই। বর্তমানে অনেক কবরের স্মৃতি চিহ্ন পর্যন্ত মুছে গেছে।

এদিকে স্থানীয় একাধিক বাসিন্দার সাথে কথা হলে তারা নাম প্রকাশে না করার শর্তে বলেন প্রভাবশালী একটি মহল নদী থেকে অবৈধ ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করার কারনে ভাঙন মাত্রা আগের চাইতে বেড়ে গেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের চট্টগ্রাম বিভাগীয় উপপ্রকৌশলী সোহাগ তালুকদার বলেন, নদীর ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করে অর্থ বরাদ্দের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে এ নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন বন্ধ না হলে বেড়িবাঁধ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।

এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কাঞ্চন নগর ইউপির প্রশাসক মো. নজরুল ইসলম ড্রেজার মেশিন বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার কথা জানিয়ে বলেন ভাঙনকবলিত কবরস্থানটি শীঘ্রই পরিদর্শন করা হবে।


পঞ্চগড়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মিজানুর রহমান, পঞ্চগড়

পঞ্চগড় জেলার সর্বত্র এখন দেখা যাচ্ছে কচুরিপানার ফুল ফুটে থাকার অপূর্ব দৃশ্য। বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের পুকুরগুলোতে যেন সৌন্দর্যের নতুন আবেশ ছড়িয়ে দিয়েছে এই বেগুনি রঙের ফুল। শহরের তুলনায় গ্রাম-গঞ্জেই কচুরিপানার ফুল বেশি দেখা যায়।

প্রকৃতিপ্রেমী অনেকে শহর থেকে গ্রামে গিয়ে পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে কচুরিপানার ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পুকুরে কচুরিপানার সারি ভেসে থেকে জলে ফুটন্ত ফুলগুলো যেন ছোট ছোট বাগানের মতো দৃশ্য তৈরি করছে। নদীতে কচুরিপানা ভেসে গেলেও পুকুরে থেকে যায় বলে সেখানে ফুল ফোটার সৌন্দর্য অনেক বেশি মনোমুগ্ধকর হয়।

কচুরিপানাকে সাধারণত অনেকে পানি পরিশোধনের কাজে ব্যবহার করেন। তবে বর্ষার এই সময়ে যখন এক সাথে ফুল ফোটে, তখন পুরো পুকুরপাড় রঙিন হয়ে ওঠে। স্থানীয়রা জানান, গ্রামীণ পরিবেশে এটি এক ধরনের প্রাকৃতিক বিনোদনের জায়গা তৈরি করে।

স্থানীয়দের পাশাপাশি ভ্রমণপিপাসুরাও এখন কচুরিপানার ফুল দেখতে আসছেন। পুকুরপাড়ে দাঁড়িয়ে ছবি তোলা ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে দেখা যায় অনেক তরুণ-তরুণীকে। কেউ কেউ বলছেন, ‘প্রকৃতির এই সৌন্দর্য আমাদের গ্রামবাংলার আসল পরিচয়।’

প্রকৃতিবিদদের মতে, কচুরিপানার ফুল সাধারণত বর্ষা ও শরৎকালে বেশি ফোটে। সূর্যের আলো ও পানির স্থিরতার কারণে পুকুরেই এরা বেশি ফুটে থাকে। যা স্থানীয় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও এক অনন্য দৃশ্য তৈরি করে।


টঙ্গীবাড়ীতে নদীভাঙন রোধে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
টঙ্গীবাড়ী (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপির) ভাইস চেয়ারম্যান ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেছেন, ‘নদীভাঙন রোধে জায়গায় জায়গায় কিছু বালুর বস্তা ও ব্লক ফেলা হয়। কিন্তু এতে কোনো কার্যকর ফল পাওয়া যায় না। এখানে অনিয়ম-দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাতের ঘটনা ঘটে। ফলে ভাঙন রোধের বদলে মানুষ আরও বিপদে পড়ে।’

তিনি অভিযোগ করেন, টঙ্গীবাড়ী, লৌহজং ও মুন্সীগঞ্জের মানুষ দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙনের শঙ্কায় নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে। অথচ কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বুধবার মুন্সীগঞ্জের দিঘিরপাড় বাজারে স্থানীয় বিএনপি আয়োজিত মানববন্ধন কর্মসূচিতে প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ড. রিপন বলেন, পদ্মা-মেঘনায় অবৈধ ও অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের কারণে ভাঙন আরও তীব্র আকার ধারণ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে টেকসই স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান তিনি। একই সঙ্গে তিনি পদ্মার তীরে মেরিন ড্রাইভ নির্মাণকে বিএনপির ভবিষ্যৎ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত করার আশ্বাস দেন।

তিনি বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো যারা বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান হারিয়েছে, তাদের সরকারি জমিতে পুনর্বাসন করা উচিত। এছাড়া বাঁধ নির্মাণ কাজের ধীরগতি, অবৈধ বালু উত্তোলন, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপের দাবি জানান তিনি।

বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ড. রিপন বলেন, দেশে এক বছর ধরে কোনো নির্বাচিত সরকার নেই। ফলে মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, পানিসম্পদ উপদেষ্টা এখনো ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে আসেননি, অথচ এটি তার দায়িত্ব ছিল। আগামী জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, নির্বাচনের মাত্র কয়েক মাস বাকি। এই কয়েক মাস থাকতে নানা ষড়যন্ত্র শুরু হবে। কুচক্রী মহল চায় দেশে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত না হোক। তবে বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ষড়যন্ত্র প্রতিহত করবে এবং ইউনূস সরকারের রোডম্যাপ বাস্তবায়নে সহযোগিতা করবে। মানববন্ধনে সর্বস্তরের জনগণ ছাড়াও স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।


কাপাসিয়ায় শহীদ ও অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য দোয়া অনুষ্ঠান

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কাপাসিয়া (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের উদ্যোগে শহীদ ও মৃত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মার মাগফিরাত এবং অসুস্থ মুক্তিযোদ্ধাদের সুস্থতা কামনা করে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা ভবনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ দোয়া অনুষ্ঠান হয়।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা সামসুদ্দীন খানের সভাপতিত্বে দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. জাহিদুল হক। মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডের সদস্য সচিব মো. মফিজ উদ্দিনের পরিচালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা কামাল উদ্দিন আহমেদ নান্নু, কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা। এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন কাপাসিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মণ্ডল, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) রবিউল ইসলাম, সিরাজ উদ্দিন মাস্টার, মোজাম্মেল হক, রফিকুল আলম খান, সিরাজ উদ্দিন, কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিতির আহ্বায়ক আফজাল হোসাইন, সদস্য সচিব সাংবাদিক সাইফুল ইসলাম শাহীন, কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন প্রমুখ। দোয়া অনুষ্ঠানে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের শতাধিক সদস্য অংশগ্রহণ করেন। দোয়া অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন কাপাসিয়া উপজেলা মডেল মসজিদের পেশ ইমাম ও খতিব মাওলানা মোহাম্মদ মাহমুদুল হাসান।

দোয়া অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধারা বিগত দিনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৯১ সালে বিএনপির শাসনামলে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য তাদের অবদান অনস্বীকার্য। তৎকালীন কাপাসিয়ার কৃতিসন্তান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্ মুক্তিযোদ্ধাদের ভবন নির্মাণের জন্য ইট এবং টাকার ব্যবস্থা করেন। কিন্তু তখন দায়িত্বশীলরা তা লুটপাট করে খেয়েছে। তারপর থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের আর তেমন কোনো উন্নতি হয়নি। দীর্ঘদিন পর একটি সুষ্ঠু পরিবেশে মুক্তিযোদ্ধারা একত্র হতে পেরে তারা অত্যন্ত খুশি। দীর্ঘ ৭ বছর যাবত নতুন ভবনটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। নতুন আহ্বায়ক কমিটির নেতৃত্বে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ও সংস্কার করে ভবনটি উপজেলা ডায়াবেটিস সেন্টারকে ভাড়ার ভিত্তিতে দেওয়ার সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে গত ১০ আগস্ট গাজীপুর জেলা কমান্ড ৭ সদস্যবিশিষ্ট কাপাসিয়া উপজেলা কমান্ড আহ্বায়ক কমিটি গঠন করেন।


জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত এখন আস্তান মোল্লার বসতভিটা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

কখনো কি শুনেছেন, প্রজার ভয়ে রাজা নিরুদ্দেশ? শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, এমন ঘটনাই ঘটেছিল নওগাঁয়।

সদর উপজেলার দুবলহাটির জমিদার রাজা হরনাথ রায় চৌধুরীর নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়ে সাধারণ কৃষকদের পক্ষ নিয়ে এক সাহসী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন আস্তান মোল্লা। তিনিই আজ নওগাঁবাসীর কাছে কৃষক বিদ্রোহের কিংবদন্তি। জমিদারের অত্যাচার ছিল সীমাহীন। অতিরিক্ত খাজনা, জোরপূর্বক ফসল ও গৃহপালিত পশু ছিনিয়ে নেওয়া, এমনকি সুন্দরী মেয়েদের অপহরণ-প্রজাদের ওপর একের পর এক নিপীড়ন চলতো। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে প্রজারা এসব নিপীড়নের শিকার হতো। এমন এক সময়, সমাজে আবির্ভাব ঘটে আস্তান মোল্লার-যিনি প্রজাদের আশা-ভরসার প্রতীক হয়ে ওঠেন।

প্রচলিত আছে, ১৮৯৩ সালে রাজা হরনাথ রায় চৌধুরীর বিরুদ্ধে প্রায় ৫০-৬০ গ্রামের প্রায় ৫০ হাজার কৃষককে সংগঠিত করে বিদ্রোহ গড়ে তোলেন আস্তান মোল্লা। তার নেতৃত্বে সাত বছরব্যাপী চলা এই আন্দোলনের ফলে জমিদারকে খাজনা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে হয়। ১৯৩২ সালে তিনি শান্তিপূর্ণভাবে ন্যায্যতার দাবি নিয়ে নওগাঁ আদালতে ‘শান্তি মামলা’ করেন, যার রায় যায় কৃষকদের পক্ষে। তদন্তের জন্য সেটেলমেন্ট অফিস থেকে পাঠানো হয় কাজী মাহিউদ্দিন নামে একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, যিনি কৃষকদের দাবি বৈধ বলে রায় দেন। ফলে জমিদারের অবস্থান আরও দুর্বল হয়ে পড়ে। পরাজয়ের শঙ্কায় রাজা একপর্যায়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যান, কখনো কলকাতা, কখনো অন্য প্রদেশে। শেষ পর্যন্ত তিনি নিরুদ্দেশ হয়ে পড়েন।

জানা যায়, আস্তান মোল্লার জন্ম ১৮৫০ সালে নওগাঁ সদর উপজেলার হাঁসাইগাড়ী ইউনিয়নের হাঁসাইগাড়ী গ্রামে এক কৃষক পরিবারে। তিনি ছিলেন চার ভাইয়ের মধ্যে বড়। পিতার নাম ছিল আসফদি মোল্লা। ১৯৪০ সালে ৯০ বছর বয়সে নওগাঁ সদর হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। তার বসতভিটা এখনো গ্রামে রয়েছে, তবে জরাজীর্ণ ও পরিত্যক্ত অবস্থায়।

ইতিহাস বলছে, রাজা মুসলিম প্রজাদের কোরবানি, গাভী দিয়ে হালচাষ এবং ধর্মীয় অধিকারেও হস্তক্ষেপ করতেন। একবার জমিদারের আত্মীয় শশীভূষণ মাদী ঘোড়ার গাড়িতে চড়লে, আস্তান মোল্লা প্রশ্ন করেছিলেন—"প্রজাদের মাদী গরু দিয়ে হালচাষ নিষিদ্ধ, অথচ আপনি মাদী ঘোড়ার গাড়িতে ঘুরে বেড়ান কিভাবে?"—প্রশ্ন শুনে শশীভূষণ সটকে পড়েন।

১৯৩১ সালে ভয়াবহ বন্যায় জমি ডুবে গেলে কচুরিপানা ও পানি নিষ্কাশনের জন্য একটি নদীর বাঁধ কেটে দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে। জমিদারের বাধার কারণে কেউ সাহস পাচ্ছিল না। তখন আস্তান মোল্লা নিজেই মহকুমা প্রশাসক অন্নদাশংকর রায়কে সঙ্গে নিয়ে প্রজাদের নিয়ে বাঁধ কেটে দেন। পরে সেই বাঁধ নবনির্মাণের সময় উদ্বোধন করেন প্রশাসক নিজেই। এটি ছিল একটি অনন্য উদাহরণ প্রশাসন ও কৃষকের সম্মিলিত প্রয়াসের।

চিরস্মরণীয় বীর:

১৯৯২ সালে তার নামে প্রতিষ্ঠিত হয় “আস্তান মোল্লা কলেজ”। এখানে বর্তমানে প্রায় আড়াই হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত, রয়েছে বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও অর্থনীতিতে অনার্স কোর্স। শিক্ষক ও কর্মচারী রয়েছেন ৫৬ জন।

নওগাঁ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “তিনি ছিলেন প্রজাদের প্রকৃত বন্ধু, ৭ বছরব্যাপী আন্দোলনের মাধ্যমে তিনি জমিদারের দুঃশাসনের অবসান ঘটান।”

প্রবীণ লেখক আতাউল হক সিদ্দিকী বলেন, “আস্তান মোল্লা ছিলেন সাধারণ কৃষকের প্রতিনিধি। গায়ে ফতুয়া, পরনে লুঙ্গি, মাথায় টুপি, মুখে হালকা দাঁড়ি এভাবেই খালি পায়ে চলাফেরা করতেন। তার সাহসিকতা ও নেতৃত্ব ছিল অবিস্মরণীয়।

স্মৃতিচারণ ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা:

স্থানীয় সংগঠন একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এম.এম রাসেল জানান, “দুবলহাটির গোয়ালী থেকে কাঠখৈইর পর্যন্ত সড়কটিতে আস্তান মোল্লার জীবনী সংবলিত স্মৃতিফলক স্থাপন করা দরকার, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার অবদানের কথা জানতে পারে।

পরিশেষে বলতে হয়, আজ থেকে প্রায় শত বছর আগে নওগাঁয় এক কৃষক এসেছিলেন মানুষের মুক্তির বার্তা নিয়ে। রাজা পালিয়েছেন, জমিদার শাসন ভেঙেছে, কিন্তু আস্তান মোল্লা থেকে গেছেন মানুষের হৃদয়ে—একটি কৃষক বিদ্রোহের প্রতীক হিসেবে। তার সাহস, নেতৃত্ব, আইনগত লড়াই এবং মানবিক চিন্তার জন্য আজও তিনি নওগাঁবাসীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণীয় হয়ে আছেন।


banner close