মাদারীপুরের শিবচরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মহাসড়কের রেলিং ভেঙে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে হতাহতের ঘটনা তদন্তে চার সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। কমিটির প্রধান করা হয়েছে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পল্লব কুমার হাজরাকে। আগামী ২ কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
রোববার সকালে শিবচরে হাইওয়ে এক্সপ্রেসের রেলিং ভেঙে একটি যাত্রীবাহী বাসটি খাদে পড়ে যায়। এতে ১৯ জনের নিহতের তথ্য পাওয়া গেছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ২৫ জন।
পুলিশ জানায়, রোববার সকাল ৮টার দিকে খুলনা থেকে ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। বাসটি পদ্মা সেতুর আগে ঢাকা-খুলনা এক্সপ্রেসওয়ের শিবচরের কুতুবপুর সীমানা এলাকায় পৌঁছালে বাসটির সামনের একটি চাকা ফেটে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এ সময় দুমড়েমুচড়ে যায় বাসটি। এতে ঘটনাস্থলেই ১৪ জন নিহত হন। আহত অন্তত ২৫ জনকে উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পাঁচ্চর রয়েল হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে নেয়ার পর আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে।
সংকটাপন্ন রোগীদের জন্য খুলনার অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালগুলোয় অপরিশোধিত ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন ব্যবহারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠেছে, মেডিকেল অক্সিজেনের তুলনায় দাম কম হওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জেনেবুঝেই বেশি লাভের আশায় রোগীদের এই অক্সিজেন দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপরিশোধিত অক্সিজেন গ্রহণের ফলে রোগীদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিকল হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি মৃত্যুও ঘটতে পারে।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালের আইসিইউ বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. তাহেরুল ইসলাম বলেন, ‘মেডিকেল অক্সিজেনের মধ্যে কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও পানির মিশ্রণের মাত্রা একেবারে কম বিধায় তা শরীরের জন্য সহনীয়। অন্যদিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনে বিশুদ্ধতার মাত্রা অনেক কম থাকে। অক্সিজেনের সঙ্গে মিশ্রিত বিভিন্ন ধরনের গ্যাস শরীরের রক্ত, ফুসফুস ও মস্তিষ্কসহ বিভিন্ন কোষকে ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ।’
খুলনা মহানগরীর কেডিএ এভিনিউ রোডের রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতালে গত সোমবার গিয়ে দেখা যায়, এক ব্যক্তি সেখানে অক্সিজেন সরবরাহ করতে এসেছেন। তিনি যে সিলিন্ডার নিয়ে এসেছেন, সেটা কোন কোম্পানির, তার তথ্য সিলিন্ডারের গায়ে নেই।
জানতে চাইলে আনোয়ার হোসেন নামের ওই ব্যক্তি বলেন, ‘আমি নিজে অক্সিজেন বিক্রি করি না। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমার সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করেছে। তাদের ফাঁকা সিলিন্ডারগুলো আমি রিফিল করে নিয়ে আসি।’ তিনি জানান, খুলনা নগরীর কয়লাঘাট এলাকায় অবস্থিত ‘রকি অক্সিজেন’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এই অক্সিজেন রিফিল করা হয়। শহরের এমন ১০টি হাসপাতালে এই অক্সিজেন তারা সরবরাহ করেন।
রাশিদা মেমোরিয়াল হাসপাতালের পাশেই রয়েছে কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল। সেখানে গিয়েও দেখা যায়, সিলিন্ডারের গায়ে কোনো কোম্পানির ট্যাগ নেই। কোথা থেকে এই অক্সিজেন নিয়ে এসেছেন জানতে চাইলে সেখানে কর্মরত কেউ কথা বলতে চাননি।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, কোথা থেকে হাসপাতালে বা ক্লিনিকগুলোয় অক্সিজেন আসে তা মালিকপক্ষ জানে না। কিছু ব্যক্তি আছেন, যারা হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহ করেন। তাদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তি করলে নিয়মিত সিলিন্ডারগুলো রিফিল করে দিয়ে যান। তারা মেডিকেল অক্সিজেন দিলেন নাকি ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন দিলেন, তা কেউ খোঁজ নেন না। শহরের অধিকাংশ বেসরকারি হাসপাতালে এভাবেই চলছে।
খুলনায় প্রতি ঘনমিটার (১ ঘনমিটার সমান ১ হাজার লিটার) মেডিকেল অক্সিজেনের দাম হলো ৫২ থেকে ৫৫ টাকা। আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের দাম প্রতি ঘনমিটার ২০-২৫ টাকা। মেডিকেলের চেয়ে ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনে লাভ বেশি বলে ব্যবসায়ীরা হাসপাতালগুলোয় এই অক্সিজেন বিক্রি করছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনায় ছয়টি প্রতিষ্ঠান থেকে অক্সিজেন সরবরাহ করা হয়। এর মধ্যে তিনটি প্রতিষ্ঠানের বৈধ কাগজপত্র রয়েছে। সেগুলো হলো খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি, লিন্ডে বাংলাদেশ ও স্পেকট্রা অক্সিজেন লিমিটেড। খুলনা অক্সিজেন কোম্পানি নামের প্রতিষ্ঠানটি খুলনায়ই মেডিকেল অক্সিজেন উৎপাদন করে। অন্যদিকে লিন্ডে ও স্পেকট্রার খুলনায় ডিপো রয়েছে।
এ ছাড়া বাকি তিনটি কোম্পানির বৈধ কাগজপত্র নেই বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। এগুলো হলো মহানগরীর জয় বাংলার মোড়ে অবস্থিত এসবি অক্সিজেন, কয়লাঘাট এলাকায় অবস্থিত রকি অক্সিজেন ও বাগেরহাটের ফকিরহাটে গ্যাস অ্যান্ড গিয়ার বাংলাদেশ। এদের মধ্যে ফকিরহাটের প্রতিষ্ঠানটি প্রাথমিকভাবে চালু করেছে আর্গন গ্যাস প্লান্ট।
সংশ্লষ্ট সূত্র বলেছে, খুলনার বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোয় সব থেকে বেশি অক্সিজেন সরবরাহ করে রকি অক্সিজেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তাদের শুধু ফায়ার সার্ভিসের অনুমোদন রয়েছে। তবে ওষুধ প্রশাসন ও বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ অন্যান্য দপ্তরের অনুমোদন নেই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানটি করা হয়েছে একেবারেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায়। ৩০০ গজ দূরেই রকি ডকইয়ার্ড। সেখানে প্রতিনিয়ত কাজ চলে জাহাজ নির্মাণের। অক্সিজেন কোম্পানির ঠিক বিপরীত পাশে ১০০ গজ দূরেই একটি ভাতের হোটেল। ১০ হাত দূরে একটি কাঠগোলা ও স-মিল। অবশ্য এসবি অক্সিজেনের আশপাশে ঘনবসতি নেই। তবে তারাও অনুমতি ছাড়াই সিলিন্ডার রিফিল করছে।
জানতে চাইলে রকি অক্সিজেনের মালিক মো. খুরশিদ আলম বলেন, ‘আমার সব প্রতিষ্ঠানের অনুমতি রয়েছে। ফায়ার সার্ভিস, ওষুধ প্রশাসন, বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সংস্থার লাইসেন্স রয়েছে। যেখানে কোম্পানি করেছি সেখানে কোনো ধরনের সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’
তবে বিস্ফোরক পরিদপ্তর খুলনার পরিদর্শক ড. মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, ‘মেডিকেল ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেনের কিছু কিছু উপাদানের মাত্রা একেবারেই ভিন্ন। ফলে দুটির উৎপাদন ও পরিশোধন পদ্ধতি ভিন্ন। মেডিকেল অক্সিজেন পরিশোধনে বিশুদ্ধতার মাত্রা থাকে ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশের ওপরে। এতে দশমিক ৫ শতাংশের মতো কার্বন ডাই-অক্সাইড, কার্বন মনোক্সাইড ও পানির মিশ্রণ থাকে। আর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অক্সিজেন পরিশোধনে বিশুদ্ধতার মাত্রা ৯০ শতাংশের নিচে থাকে। এই অক্সিজেনের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলের অন্যান্য গ্যাসের মিশ্রণের মাত্রা থাকে বেশি। যা দিয়ে ভারী লোহা ও ধাতব পদার্থ গলানো ও কাটা হয়। এটি মানুষের শরীরের জন্য ক্ষতিকর। এসবি বা রকি অক্সিজেনের কোনো লাইসেন্স বা অনুমোদন নেই।’
নরসিংদীর মাধবদী পৌরসভায় ৬০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে গরুর মাংস। পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিকের উদ্যোগে এই দাম নির্ধারণ করা হয়েছে। এখন থেকে পুরো রমজান মাসজুড়ে সপ্তাহে দুই দিন এই দামে গরুর মাংস কিনতে পারবেন শহরের বাসিন্দারা।
শুক্রবার ভোরে পৌরসভা প্রাঙ্গণে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চারটি দেশীয় ষাঁড় জবাই করে মাংস বিক্রি করা হচ্ছে। এতে সহযোগিতা করছেন স্থানীয় কসাইসহ পৌর শ্রমিকরা। ভোর থেকেই মাংস কিনতে পৃথক পৃথক সারিতে লাইনে দাঁড়িয়েছেন নারী-পুরুষরা। কম দামে মাংস কিনে খুশি মনে বাড়ি ফিরছেন তারা।
বিক্রেতারা জানান, এখানে সঠিক ওজন ও বাজারের চেয়ে কম দামে বিকেল পর্যন্ত গরুর মাংস বিক্রি করা হবে। প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও মঙ্গলবার এখান থেকে প্রত্যেক ব্যক্তি সর্বোচ্চ তিন কেজি করে গরুর মাংস কিনতে পারবেন।
এদিকে পৌর মেয়রের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে শহরবাসী। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পৌর শহরের কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, বর্তমান বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়ায় মধ্যবিত্ত ও দিনমজুরদের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে গরুর মাংস। এখন দাম কম হওয়ায় পৌরসভা থেকে মাংস কিনে নিতে এসেছেন তারা।
রিকশাচালক মনির হোসেন বলেন, ‘এখান থেকে কিনে নেয়া তিন কেজি মাংস চার কেজির মতো লাগতেছে। কারণ এই মাংস নিজের চোখের সামনে কসাইরা কেটে দিল। কোনো পানি বা ভেজাল নেই। এখান থেকে ওজনে সঠিক ও বাজারের চেয়ে কম দামে মাংস কিনছে সবাই।’
মাংস কিনতে আসা সাবেক নারী কাউন্সিলর শাহানাজ আক্তার বলেন, ‘সামনে থেকে নিজ চোখে দেখে মাংস কিনে নিলাম। একদম খাঁটি মাংস। সঙ্গে পরিমাণমতো হাড় ও কলিজাও দিয়েছে। তিন কেজি মাংস কিনে ৬০০ টাকা সাশ্রয় হলো। এই রোজায় এমন মহতি উদ্যোগ নেয়ার জন্য পৌর মেয়রের জন্য দোয়া রইল।’
মাধবদী পৌরসভার মেয়র হাজী মোশাররফ হোসেন প্রধান মানিক বলেন, ‘ভালো কাজগুলো মানুষকে দেখানোর জন্য করি না। বরং আল্লাহকে খুশি করার জন্য করে থাকি। সাশ্রয়ী মূল্যে গরুর মাংস বিক্রির এই উদ্যোগটি নিয়েছি আমার পৌরবাসীর স্বার্থে। এই রমজান মাসে সপ্তাহে শুক্র ও মঙ্গলবার, এই দুই দিন পৌরসভা থেকে ১০০ গ্রাম থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ তিন কেজি গরুর মাংস যে কেউই কিনে নিতে পারবেন।’
মেয়র মোশাররফ আরও বলেন, ‘বর্তমান বাজারে ৮০০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি হয়। এত দাম হওয়ায় অনেকেই মাংস কিনে খেতে পারছে না। সেটি চিন্তা করেই পৌরসভা প্রাঙ্গণে মাংস বিক্রির এই উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ বলেছেন, স্বাধীনতাকে কটাক্ষ করে কোনো উক্তি কারো উদ্ধৃতি দিয়ে ছাপানো একটি চরম অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড। এটি রাষ্ট্র ও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। যারা এই কাজের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়াটাই যৌক্তিক।
শুক্রবার কুষ্টিয়া সদর উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ট্যাবলেট বিতরন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, ‘এ সরকারের সময় সব চেয়ে বেশি সুযোগ-সুবিধা দেয়া হয়েছে সাংবাদিকদের। ঘটানো হয়েছে সংবাদ মাধ্যমের ব্যাপক বিস্তৃতি। সাংবাদিকরা নিয়মিত যেভাবে খুশি লিখছে, সরকারের সমালোচনা করছে তাতে কারো কোনো সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু আমাদের যেখানে মূল জায়গা সেই স্বাধীনতার ওপর যদি আঘাত আসে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া সরকারের দায়িত্ব, জনগনও সেটাই প্রত্যাশা করে।
এ সময় হানিফ আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন নয় । এক এগারোর সময় শেখ হাসিনাকে মাইনাস করারও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। পদ্মা সেতু নিয়েও অনেক ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, যা এই পত্রিকায় ফলাও করে সেসময় ছাপানো হয়েছে। ২৬ শে মার্চের এ ঘটনাও আগের মতই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আরেকটি ষড়যন্ত্র।
রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ায় পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ৪ কেজি ১৮০ গ্রাম ওজনের দুটি ইলিশ। যা বিক্রি হয়েছে ১৬ হাজার ৩৮৪ টাকায়।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাট এলাকায় জেলে সদেশ হালদারের জালে ইলিশ দুটি ধরা পরে।
স্থানীয়রা জানান, ভোরে জেলে সদেশ হালদার তার সঙ্গীদের নিয়ে পদ্মায় মাছ ধরতে বের হলে সকাল সাড়ে ৭টার দিকে জাল তুলতেই দেখেন বড় দুটি ইলিশ জালে আটকা পড়েছে। পরে সকালে মাছ দুটি দৌলতদিয়ার মৎস্য আড়তে নিয়ে আসলে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের শাকিল সোহান মৎস্য আড়তের মাছ ব্যবসায়ী মো. শাহজাহান শেখ প্রতি কেজি ৩ হাজার ৮০০ টাকা দরে মাছ দুটি মোট ১৫ হাজার ৮৮৪ টাকায় কিনে নেন।
শাহজাহান শেখ বলেন, ‘শুক্রবার সকালে ইলিশ দুটি ১৫ হাজার ৮৮৪ টাকায় ক্রয় করে বেলা ১১টার দিকে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের মাধ্যমে ঢাকায় এক ব্যবসায়ীর কাছে ৫০০ টাকা লাভে মোট ১৬ হাজার ৩৮৪ টাকায় বিক্রি করেছি।’
গাজীপুরে নির্মাণাধীন ভবনের তৃতীয় তলার দেয়াল ধসে পাশের টিনশেড বাড়িতে পড়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন ওই শিশুর মাসহ চারজন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত পৌনে একটার দিকে সিটি করপোরেশনের জরুন এলাকার ফারুক আহমেদের মালিকানাধীন ভবনে এ ঘটনা ঘটে। বৃষ্টির সময় ওই ভবনের দেয়াল ধসে পড়ে নিচের ১৮টি টিনশেড কক্ষের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
নিহত শিশুর নাম মো. মুশফিক (৪)। দেয়াল ধসে তার মা মোছাম্মৎ মুক্তা, টিনশেড ঘরের ভাড়াটিয়া মোহাম্মদ রুবেল (৩৫), মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম (২৮) ও শহিদুল ইসলাম (২২) আহত হয়। নিহত মুশফিকের বাবার নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তাদের বাড়ি রাজশাহীতে। জরুন এলাকায় বাচ্চু খানের টিনশেড বাড়িতে তারা ভাড়া থাকেন।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস জানায়, কোনাবাড়ী জরুন এলাকায় ফারুক আহমেদের পাঁচতলা ভবনের নির্মাণকাজ চলছে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে একটার দিকে প্রচণ্ড ঝড় ও বৃষ্টি শুরু হলে তৃতীয় তলার পূর্ব পাশের ১৫ ফুট উঁচু দেয়াল হঠাৎ পাশের মোহাম্মদ বাচ্চু খানের টিনশেড বাড়ির ওপর ধসে পড়ে। এতে ১৮টি কক্ষের ক্ষয়ক্ষতি হয়।
কাশিমপুর ডিবিএল ফায়ার সার্ভিসের পরিদর্শক মিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ভবনধসের খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে যান। এ ঘটনায় কয়েকজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ দেয়ালধসে চার বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ওই শিশুর মায়ের অবস্থাও আশঙ্কাজনক। তিনিও হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় পুলিশের পক্ষ থেকে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে অবস্থানরত জাহাজ থেকে সাগরে পড়ে নিখোঁজের তিনদিন পর চীনের পতাকাবাহী মাদার ভেসেল ‘ক্যাং হুয়ান-১’ এর প্রধান প্রকৌশলীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
শুক্রবার সকালে নগরীর হালিশহরের আনন্দবাজার খাল থেকে ঝাং মিংইয়ান (৪৩) নামের ওই চীনা প্রকৌশলীর মরদেহ উদ্ধার করে কোস্ট গার্ড। ২৮ মার্চ বিকেলে দুর্ঘটনায় নিখোঁজ হন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম বন্দরের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম জানান, উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে জাহাজের প্রটেকশন অ্যান্ড ইনডেমনিটি (পিঅ্যান্ডআই) ক্লাবের মাধ্যমে চীনে পাঠানো হবে।’
এর আগে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে আলফা এলাকায় জাহাজ থেকে স্পীডবোট নিয়ে নামার সময় দড়ি ছিঁড়ে ওপর থেকে পানিতে পড়ে যান ১৬ ক্রু। এসময় কোস্ট গার্ড ও বন্দর ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় ১৫ জনকে উদ্ধার করা হলেও নিখোঁজ থাকেন ঝাং মিংইয়ান। এরপর থেকেই তাকে উদ্ধারে অভিযান চালায় কোস্ট গার্ড পূর্ব জোন এবং বন্দরের উদ্ধারকারী দল।
জয়পুরহাটে ট্রাক্টর ও ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষ এক শিশু নিহত হয়েছে। এতে আহত হয়েছেন আরও দুজন। শুক্রবার দুপুর ১টার দিকে সদর উপজেলার পুরানাপৈল বাইপাস মোড়ের পাকুরতলী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু নুসরাত জাহান রুমা (৪) সদর উপজেলার পুরানাপৈল মাস্টারপাড়া এলাকার রুহুল আমিনের মেয়ে। আহতরা হলেন, শিশুর মা কুলসুম (২১) ও অটোরিকশা চালক মীর শহীদ (২৫)।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, সদর উপজেলার পুরানাপৈল বাজার থেকে একটি ট্রাক্টর হিচমীর দিকে আসছিল। পথে পুরানাপৈল বাইপাস মোড়ের পাকুরতলী এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা ব্যাটারি চালিত অটোরিকশার সঙ্গে ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে তিনজন আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসকরা শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত শিশুটির মা কুলসুম ও অটোরিকশা চালক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
জয়পুরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সিরাজুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, ট্রাক্টর ও অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে এক শিশু নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত দুজন জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। দুর্ঘটনার পর চালক ট্রাক্টর ফেলে পালিয়ে গেছে। তাকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে জমি-সংক্রান্ত বিরোধ মীমাংসা করতে গিয়ে হাসান মিয়া ওরফে হাসু (৬৫) নামে এক ব্যক্তি মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের পিটুনিতে নিহত হয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার সকালে উপজেলার ভাওড়া ইউনিয়নের সরিষাদাইড় গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পরপরই অভিযুক্তরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
নিহত হাসু মির্জাপুর পৌর এলাকার পুষ্টকামুরী গ্রামের মোকছেদ মিয়ার ছেলে। তার পরিবার জানায়, প্রায় ১০ বছর আগে হাসুর মেয়ে রুবিনার (২৫) ও সরিষাদাইড় গ্রামের মফেজ উদ্দিনের ছেলে সৌদিপ্রবাসী জুয়েলের বিয়ে হয়। কয়েক দিন আগে বাড়ির সীমানা নিয়ে দেবর সজল, ননদ নিলুফা, শাশুড়ি লাইলি বেগম ও দেবরের বউ ঝুমার সঙ্গে ঝগড়া হয় রুবিনার। পরে একপর্যায়ে গত সোমবার শ্বশুর বাড়ির লোকজনের নির্যাতনের শিকার হয়ে রুবিনা বাবার বাড়ি চলে যান। বিষয়টি মীমাংসার জন্য শুক্রবার সকালে হাসু তার মেয়ে রুবিনা, ছেলে রাকিব ও মেয়ের জামাই মান্নানকে নিয়ে রুবিনার শ্বশুর বাড়ি যান। সেখানে সীমানা বিরোধ নিয়ে মেয়ের শ্বশুর বাড়ির লোকজনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে রুবিনার শ্বশুর বাড়ির লোকজন হাসুকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারে। এতে তিনি অচেতন হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে উদ্ধার করে কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ছেলে রাকিব বলেন, ‘আমরা বোনের বাড়িতে গিয়ে কথা বলার চেষ্টা করতেই ওই বাড়ির লোকজন আমাদের ওপর হামলা করে। তারা আমার বাবাকে এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকে। একপর্যায় বাবা মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে কুমুদিনী হাসপাতালে নেয়া হলে চিকিৎসক বাবাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ বিষয়ে মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।’
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে একটি বাজারে অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। শুক্রবার ভোর ৪টার দিকে উপজেলার চরএলাহী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে ১০টি দোকান। তবে কেউ হতাহত হননি।
চরএলাহী বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, ‘রাতে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজ থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। আগুন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে মুদি দোকান, মোটরসাইকেল গ্যারেজ, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা গ্যারেজ, কসমেটিকস দোকানসহ দশটি দোকান পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।’
কোম্পানীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. জামিল মিয়া বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এক ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। ১০টি দোকান পুড়ে গেছে।’
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে মাইক্রোবাসের ধাক্কায় বিজয় দাশ (১২) নামে এক স্কুলছাত্র নিহত হয়েছে। শুক্রবার সকাল ১০টায় উপজেলার কলাকান্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ দশানী গ্রামে মেঘনা-ধনাগোদা বেড়িবাঁধ সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মহিউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত বিজয় ওই গ্রামের মরন দাসের ছেলে ও মোহনপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র ছিল।
নিহতের স্বজন ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে ডিম কেনার জন্য দশানী বেড়িবাঁধ এলাকায় দোকানে যায় বিজয়। এ সময় একটি মাইক্রোবাস তাকে ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
রাজশাহীতে ছয় যুগের বেশি সময় ধরে ঐতিহ্য বহন করে চলেছে শহরের গণকপাড়া মোড়ের রহমানিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁর ‘দিল্লির শাহী ফিরনি’। ১৯৫২ সালে বিক্রি শুরুর পর দ্রুত জনপ্রিয়তা পায় এই ফিরনি, যা প্রায় ৭২ বছর পর আজও অক্ষুণ্ণ রয়েছে। রমজান মাসে এই ফিরনির চাহিদা বহুগুণে বেড়ে যায়।
গণকপাড়ার মোড়ের অদূরেই বাটার মোড়। সেখানে নাম ও সাইনবোর্ডহীন একটি দোকানে ৬৫ বছর ধরে জিলাপির রমরমা ব্যবসা চলছে। দোকানটির অবস্থানের কারণে পণ্যটি ‘বাটার মোড়ের জিলাপি’ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। রসে টইটম্বুর আর মচমচে জিলাপির টানে সারা বছরই এই দোকানে ভিড় লেগে থাকে। রমজানে ইফতারের জন্য জিলাপি কিনতে ছোট্ট দোকানটিতে ভিড় বাড়ে।
রহমানিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্তোরাঁয় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে ‘দিল্লির শাহী ফিরনি’ কিনছিলেন ব্যবসায়ী সাদিকুল ইসলাম স্বপন। তিনি বললেন, ঐতিহ্য এবং স্বাদের কারণে প্রায় এক যুগ ধরে রোজায় ইফতারের সঙ্গে এই শাহী ফিরনি কেনেন তিনি। কয়েক বছর আগেও এই ফিরনি এক বাটি ১৫ টাকায় বিক্রি হতো। এখন দাম হয়েছে ৩৫ টাকা।
নগরীর ষষ্ঠীতলা এলাকার ষাটোর্ধ্ব নারী সুরা বেগম প্রায় ২৫ বছর ধরে ইফতারে অন্যান্য খাবারের সঙ্গে এই সুস্বাদু ফিরনি রাখেন। আরেক ক্রেতা শাহীনুর রহমান বলেন, ‘আমার বাবা এই ফিরনির ভীষণ ভক্ত। তাই প্রতিদিনই ইফতারের জন্য ফিরনি কিনে নিয়ে যাই।’
‘দিল্লির শাহী ফিরনির’ একমাত্র বিক্রেতা রহমানিয়া হোটেলের বর্তমান স্বত্বাধিকারী রিয়াজ আহমেদ খান জানান, ১৯৫০ সালে তার দাদা আনিছুর রহমান খান এই রেস্তোরাঁ প্রতিষ্ঠা করেন। প্রতিষ্ঠার দুই বছর পর তিনি ভারত থেকে ‘দিল্লির শাহী ফিরনি’ রাজশাহীতে এনে প্রচলন শুরু করেন। তখন এক বাটি ফিরনির দাম ছিল চার আনা। শুরু থেকেই প্রতিটি বাটিতে ১০০ গ্রাম করে ফিরনি দেয়া হয়। এখন দাম বেড়ে হয়েছে ৩৫ টাকা, যা বর্তমান বাস্তবতায় কম।
আনিছুর রহমান খানের মৃত্যুর পর তার ছেলে আব্দুল বারি খান এই ব্যবসার হাল ধরেন। তার মৃত্যুর পর ছেলে রিয়াজ আহমেদ খান ব্যবসাটি দেখাশোনা করছেন। শাহী ফিরনি ছাড়াও এখানকার শাহী হালিম, শামি কাবাব, কাঠি কাবাব, শিক কাবাব, পেঁয়াজু, বেগুনি, কচুরি ও জিলাপি বেশ জনপ্রিয়।
এক টাকা চার পয়সা বেতনে প্রায় ৪৭ বছর আগে রহমানিয়া হোটেলে ফিরনি তৈরির কারিগর হিসেবে চাকরি শুরু করেন মো. চান। তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, দুধ, পোলাওয়ের চালের গুঁড়া, কিশমিশ, চেরি ফল ও চিনির সঙ্গে নানা ধরনের মসলা মিশিয়ে তৈরি করা হয় এই ফিরনি। পরে মাটির একটি পাত্রে করে জমিয়ে রেখে তা বিক্রি করা হয়। আগে প্রতিদিন মিলত। কিন্তু বর্তমানে রমজান ও বিশেষ অর্ডার ছাড়া এই শাহী ফিরনি তৈরি করা হয় না। এবার রমজানে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার শ বাটি ফিরনি বিক্রি হচ্ছে।
বাটার মোড়ে গিয়ে গতকাল কথা হয় নগরের শালবাগান এলাকার ইউনুস আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘আমার বয়স এখন ৬০। ৩০ বছর বয়স থেকে এই জিলাপি খেয়ে আসছি। এখন ডায়াবেটিসের ভয়ে কম খাই। কিন্তু ইফতারে এই জিলাপি থাকাই লাগে। তা না হলে মনে হয় ইফতারটা পরিপূর্ণ হলো না।’
বাটার মোড়ের জিলাপির দোকানের যাত্রা শুরু পঞ্চাশের দশকে। নাম ছিল রানিবাজার রেস্টুরেন্ট। তখন মালিক ছিলেন সোয়েব উদ্দিন। রানিবাজার রেস্টুরেন্ট নামের সাইনবোর্ড নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর আর সাইনবোর্ডের দরকার পড়েনি। বাটার মোড়ের জিলাপির নামেই পরিচিতি পায় দোকানটি। তখন এই দোকানের একমাত্র কারিগর ছিলেন যামিনী সাহা। পরে যামিনী সাহার কাছ থেকে জিলাপি বানানো শিখে নেন তার ছেলে কালিপদ সাহা। ১৯৮০ সালে বাবার মৃত্যুর পর প্রধান কারিগর হন কালিপদ সাহা। কালিপদর হাতে তৈরি এই জিলাপি একসময় রাজশাহী শহরের মানুষের কাছে ‘কালিবাবু’ নামেও পরিচিত হয়ে ওঠে। কালিপদ সাহা মারা যান ২০১৭ সালে। এখন তার দুই শিষ্য সাফাত আলী ও শফিকুল ইসলাম জিলাপি বানাচ্ছেন।
বর্তমানে দোকানটির মালিকানা শোয়েব উদ্দিনের ছেলেদের। দেখাশোনা করেন মো. শামীম। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে দাম বাড়ানো হলেও মান ধরে রাখা হয়েছে। গত বছর রোজার সময়েও ১৪০ টাকা কেজি দরে জিলাপি বিক্রি হয়েছে। এখন প্রতি কেজির দাম ১৮০ টাকা রাখা হচ্ছে। কারণ জিলাপি তৈরির সব উপাদানের দাম বেড়েছে। এখানকার কারিগররা মান অটুট রেখে বছরের পর বছর জিলাপি বানাচ্ছেন। স্বাদেও কোনো হেরফের নেই। তাই সাধারণ সময়ে দোকানটিতে দিনে ৮০ থেকে ৯০ কেজি জিলাপি বিক্রি হলেও রোজায় তা বেড়ে ২০০ কেজি ছাড়িয়ে যায়।
কারিগর সাফাত আলী বলেন, ‘কয়েক ধরনের ময়দা আর ভালো তেল দিয়ে জিলাপি ভাজি। বছরের পর বছর একই কৌশল, একই স্বাদ।’
মো. শামীম বলেন, এই জিলাপি বানাতে চালের আটা, ময়দা ও মাষকলাইয়ের আটা ব্যবহার করা হয়। এসব উপাদান পানিতে বিভিন্ন পরিমাণে মিশিয়ে রাখা হয় ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা। আর এরপরই তৈরি করা হয় ঐতিহ্যবাহী বাটার মোড়ের জিলাপি। তবে ভোজ্যতেল হিসেবে ব্যবহার করা হয় পাম অয়েল ও ডালডা।
চট্টগ্রামের খুলশীতে বর্ষা আক্তার (৭) নামের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গত বৃহস্পতিবার রাত সোয়া ১০টার দিকে খুলশী থানার কুসুমবাগ আবাসিকে ডেবার পার এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত বর্ষা যশোরের সৈয়দপুরের আসলাম উদ্দিনের মেয়ে। বাবা-মায়ের সঙ্গে চট্টগ্রাম নগরীর কুসুমবাগ আবাসিকে ডেবার পার এলাকায় বসবাস করত সে। ওই এলাকার শেখ রাসেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল বর্ষা।
বর্ষার প্রতিবেশী ইব্রাহীম খলিল বলেন, ‘বিকেল ৩টা থেকে বর্ষাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে এলাকার মসজিদে মাইকিং করা হয়। একপর্যায়ে তাকে খুঁজতে খুঁজতে বাসা থেকে ৫০-৬০ ফুট দূরে একটি নির্মাণাধীন ভবনের লিফটের গর্তে পাওয়া যায়। ওই গর্তটির গভীরতা পাঁচ ফুট। সেখানে জমে থাকা পানিতে পড়ে মারা যায় সে।’
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সন্তোষ কুমার চাকমা বলেন, ‘নিখোজের পর রাতে বাসার পাশের একটি নির্মাণাধীন ভবনে লিফটের গর্তের পানিতে শিশুটিকে পাওয়া যায়। দ্রুত উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলের আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, বাচ্চাটি গর্তের পানিতে পড়ে গিয়েছিল। পরিবারের অভিযোগ না থাকায় অপমৃত্যু মামলা হবে।’
সাতক্ষীরার শ্যামনগরে তিনটি বন্দুক ও দুই রাউন্ড গুলিসহ এক অস্ত্র ব্যবসায়ীকে আটক করেছে কোস্টগার্ড। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ২টার দিকে কোস্টগার্ড পশ্চিম জোনের সদস্যরা শ্যামনগরের পার্শ্বেমারী এলাকা থেকে তাকে আটক করেন।
আটক আজিজুল হক (২৭) উপজেলার গাবুরা এলাকার লিয়াকত গাজীর ছেলে।
কোস্টগার্ড পশ্চিম জোন অধীনস্থ বিসিজি স্টেশন কয়রার লেফটেন্যান্ট ইকবাল হোসেন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শ্যামনগরের পার্শ্বেমারী এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে আটক করা হয়। এ সময় তার কাছ থেকে দুটি একনলা বন্দুক, একটি চারনলা বন্দুক, দুই রাউন্ড তাজা কার্তুজ, একটি দেশীয় দা ও একটি রড জব্দ করা হয়।
আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল জানিয়েছে ২০১৮ সালে আত্মসমর্পণকারী ডাকাত মেহেদী গ্রুপের সক্রিয় সদস্য ছিলেন এবং বিভিন্ন সময়ে সুন্দরবন এলাকায় ডাকাতি তিনি করতেন। তাকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম চলছে।