বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪

বিএনপির কমিটিতে ১১ বছর আগে ‘নিখোঁজ’ ইলিয়াস

এম ইলিয়াস আলী
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশিত
সিলেট ব্যুরো
প্রকাশিত : ২০ মার্চ, ২০২৩ ২১:১৪

সিলেট জেলা বিএনপির সদ্য ঘোষিত কমিটিতে প্রথম সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে এম ইলিয়াস আলীকে, যিনি ১১ বছর আগে রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হন। একই কমিটিতে স্থান পেয়েছেন তার স্ত্রী ও সন্তান। বিএনপি শুরু থেকেই অভিযোগ করে আসছে, সরকার গুম করে রেখেছে ইলিয়াস আলীকে।

২০১২ সালে ‘নিখোঁজ’ হওয়ার সময় বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ও সিলেট জেলা কমিটির সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন ইলিয়াস। পরে সংগঠনের দুই ইউনিট থেকেই তার নাম বাদ দেয়া হয়। এবার আবার কমিটির সদস্য করা হয়েছে সিলেট-২ আসনের সাবেক এই সংসদ সদস্যকে।

গত রোববার রাতে সিলেট জেলা বিএনপির পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ১৫১ সদস্যের এই কমিটিতে ইলিয়াস আলী ছাড়াও তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনাকে দ্বিতীয় এবং ছেলে আবরার ইলিয়াসকে ১১ নম্বর সদস্য হিসেবে রাখা হয়েছে। তাহসীনা রুশদীর বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পদেও রয়েছেন।

গত বছরের ২৯ মার্চ সিলেট জেলা বিএনপির কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। কাউন্সিলে সরাসরি ভোটে সভাপতি পদে আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক পদে এমরান আহমদ চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে মো. শামীম আহমদ নির্বাচিত হন। কাউন্সিলের প্রায় এক বছর পর পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় বিএনপি।

দীর্ঘদিন ধরে ‘নিখোঁজ’ থাকা ইলিয়াস আলীকে কমিটির প্রথম সদস্য রাখা প্রসঙ্গে সিলেট জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি ইলিয়াস আলী জীবিত আছেন। সরকার তাকে গুম করে রেখেছে। তিনি দলের অত্যন্ত জনপ্রিয় নেতা। সবদিক বিবেচনায় তাকে কমিটিতে রাখা হয়েছে।’

কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, ‘আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারের পতন ঘটিয়ে আমরা ইলিয়াস আলীকে মুক্ত করে নিয়ে আসব।’

২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল ঢাকা থেকে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী। সেদিন মধ্যরাতে ঢাকার বনানীতে সড়কের পাশ থেকে তার গাড়ি উদ্ধার করা হয়। তার সঙ্গে তার গাড়িচালক আনসার আলীও ওই দিন ‘নিখোঁজ’ হন।

ইলিয়াস আলী ‘নিখোঁজ’ হওয়ার পর তার সন্ধান দাবিতে আন্দোলনে নামে বিএনপি। সিলেটে এই দাবিতে হরতাল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে প্রাণ হারান দলটির একাধিক কর্মী। এ ছাড়া ইলিয়াস আলীর সন্ধান চেয়ে বনানী থানায় মামলা করেন তার স্ত্রী তাহসীনা রুশদীর লুনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেও স্বামীর সন্ধানে সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

তবে ১১ বছরেও ইলিয়াস আলীর কোনো সন্ধান মেলেনি। প্রথমদিকে তার সন্ধানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালালেও সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এসব তৎপরতাও স্তিমিত হয়ে এসেছে।


মা-বাবা হারানো ২১ শিশু বড় হচ্ছে অরকা হোমসে

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ০৪:০৯
মাসুম বিল্লাহ, গাইবান্ধা

আজ ২৪ এপ্রিল, সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১১ বছর। ২০১৩ সালের আজকের এই দিনে সকাল পৌনে ৯টার দিকে সাভার বাসস্ট্যান্ডের পাশে রানা প্লাজা নামে একটি ৯ তলা ভবন ধসে ঘটেছিল বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অন্যতম বড় শিল্প দুর্ঘটনা। বিশ্ব ইতিহাসে তৃতীয় বৃহত্তম শিল্প দুর্ঘটনা বলা হয় একে। সে দিনের সেই ভয়াল দুর্ঘটনায় জীবন দিতে হয়েছিল ১ হাজার ১৭৫ জন শ্রমিককে। আর সে দিন দুই হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়। তাদের মধ্যে অনেকে বেঁচে থাকলেও আজীবনের জন্য পঙ্গুত্ব বরণে বাধ্য হয়েছেন।

লোমহর্ষক এই ট্র্যাজেডির শিকার অনেকেরই সন্তান নিঃসঙ্গতা আর অর্থাভাবে ভিন্ন ভিন্ন পথের সারথি হলেও অত্যন্ত মমতার আশ্রয়ে গাইবান্ধার ‘অরকা হোমস’ নামের একটি প্রতিষ্ঠানে বেড়ে উঠছে ২১ জন শিশু, কিশোর-কিশোরী। যাদের কেউ হারিয়েছে বাবাকে, কেউবা মাকে। কেউ কেউ আবার বাবা-মা উভয়কে হারিয়ে একেবারেই হয়েছে নিঃস্ব। কারও কারও বাবা-মা আহত হয়ে পঙ্গুত্ববরণ করেছে আজীবনের জন্য। এ ছাড়াও আরও ৩২ জন এতিম-অসহায় শিশু-কিশোর-কিশোরীর ঠিকানা হয়েছে অরকা হোমস। বাবা-মা হারানো বিভিন্ন জেলার এসব শিশুর লেখাপড়া, খেলাধুলা ও বিনোদনসহ পুনর্বাসনের দায়িত্ব নিয়েছে জেলার অরকা হোমস নামের প্রতিষ্ঠানটি।

অরকা হোমসের প্রথম কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৪ সালে চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গায়। পরে একই বছরের ২২ ডিসেম্বর গাইবান্ধা শহর থেকে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে ফুলছড়ি উপজেলার কঞ্চিপাড়া ইউনিয়নের হোসেনপুর গ্রামে অরকা-হোমস প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি প্রতিষ্ঠা করেছে রাজশাহী ক্যাডেট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থীদের সংগঠন ওল্ড রাজশাহী ক্যাডেট অ্যাসোসিয়েশন (অরকা)।

অরকা হোমস কার্যালয় সূত্র জানায়, ওই বছরের ২৬ ডিসেম্বর প্রায় ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা ব্যয়ে তিনতলাবিশিষ্ট দুটি এবং পরবর্তীতে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয়ে চারতলাবিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। যেখানে ৫২ জন এতিম অসহায় শিশু, কিশোর-কিশোরী আশ্রয় পেয়েছে। এর মধ্যে ২১ জন মেয়ে, ৩১ জন ছেলে। তাদের মধ্যে ২১ জন রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির ঘটনায় এতিম হওয়া শিশু। এখানে থেকেই তারা লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে ৯ জন মেয়ে, ১২ জন ছেলে।

এদের মধ্যে ২০১৪ সালে অরকা হোমস যখন গাইবান্ধায় প্রতিষ্ঠিত হয় তখন রানা প্লাজা ধসে মাকে হারিয়ে ভর্তি হয় সব থেকে কম বয়সি শিশু সৌরভ। তখন সৌরভের বয়স মাত্র ছয় বছর। সেই সৌরভের বয়স এখন ১৭। সে বর্তমানে নবম শ্রেণিতে পড়ে। সৌরভের বাড়ি জামালপুর জেলার সদর উপজেলার বলমুইপাড়া গ্রামে। ছয় বছরে বয়সে আসা শিশু সৌরভের তখনকার কোনো কিছুই মনে পড়ে না। তবে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবই জেনে গেছে সৌরভ। প্রতিবছরই পড়ে পত্রিকার পাতায়, দেখে টেলিভিশনে।


একান্ত সাক্ষাৎকারে দৈনিক বাংলার গাইবান্ধার এ প্রতিবেদককে সৌরভ জানায়, তারা বাবা বাদশা মিয়া কাজ করতে অক্ষম হওয়ায় তার মা কল্পনা বেগম পোশাক শ্রমিকের কাজ নেন। তার মা ওই ভবনের তিন তলায় পোশাক শ্রমিকের অপারেটর ছিলেন।

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিতে প্রাণ হারান তিনি। এরপর এতিম সৌরভের জায়গা হয় অরকা হোমসে।

সৌরভ জানায়, ‘শুনেছি আমার বয়স যখন ছয় বছর; তখন মা রানা প্লাজায় মারা যান। ধ্বংসযজ্ঞের ১৬ দিন পর মাকে খুঁজে পান বাবা-ভাই ও আমার স্বজনরা। মায়ের দেহ নাকি তখন গলে পচে গেছে, কিন্তু তার গলায় থাকা পোশাক কারখানার আইডি কার্ড দেখে আমার মাকে চিনতে পারেন আমার বাবা।

এ ছাড়া সৌরভ আরও জানায়, শুনেছি মায়ের উপার্জনে আমাদের পরিবার চলত। মা চলে যাওয়ার পর বাবা নিরূপায় হয়ে আমাকে এখানে রেখে যান। আমার ভাই বড় হয়ে বিয়ে করে সংসার করছেন। বাবাও দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। এখন আমার খোঁজ-খবর রাখছেন দাদা। এখানে আমি ভালো আছি।

মাকে মনে পড়ে কি না জানতে চাইলে সৌরভ বলে, ‘সব সয়ে গেছে’। ছয় বছরের শিশু থাকতেই মাকে হারিয়েছি তো। এখন খুব একটা কষ্ট হয় না। তবে প্রতিবছর এই দিনটি আসলে সাংবাদিক এবং বিভিন্নভাবে মায়ের কথা মনে করিয়ে দেয়। তখন মনে হয় আমারও একজন মা ছিলেন।

সৌরভ জানায়, বড় হয়ে প্রতিষ্ঠিত হতে চাই। আর কাজ করতে গিয়ে আমার মা জীবন দিয়েছেন। একটা মাহারা শিশুর আশ্রয় হয়েছে অরকা হোমসে। আমিও এরকম একটি প্রতিষ্ঠান গড়ার স্বপ্ন দেখি। যেখানে অসহায়-এতিম ছেলে-মেয়েরা বিনা টাকায় খেয়ে-থেকে পড়ালেখা করতে পারবে।

প্রতিষ্ঠানটির সহকারী ম্যানেজার মিল্লাত মণ্ডল প্রতিষ্ঠাকালীন সময় থেকেই অরকা হোমসে আছেন। সৌরভের বিষয়ে জানতে চাইলে স্মৃতিচারণ করে তিনি দৈনিক বাংলাকে বলেন, ২০১৪ সালে সৌরভ যখন এখানে আসে তখন ওর বয়স ছয় বছর। তখন এটি প্রসারিত ছিল না, ছিল না জনবলও। ও (সৌরভ) তখন বিছানায় পেশাব করত, আমি পরিষ্কার করতাম। এখন অনেক বড় হয়েছে। এখানে আসার পর প্রায় টানা এক মাস সৌরভ প্রায় সার্বক্ষণিক মায়ের জন্য, বাড়ির জন্য কেঁদেছে। ওকে আমরা সবাই অনেক স্নেহে মানুষ করেছি। কারণ সব থেকে ছোট এবং কম বয়সের ছিল সৌরভ।

এ সময় তিনি আরও বলেন, মাহারা সৌরভ অনেক ভদ্র এবং নম্র। সৌরভ প্রচণ্ড মেধাবী। সে এখানে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেক ক্লাসে প্রথম ছিল। আর এবার নবম শ্রেণিতে উঠেছে সৌরভ। এ সময় সৌরভের আচরণে সন্তুষ্ট হয়ে প্রাণ ভরে দোয়া করেন- সৌরভ জীবনে অনেক বড় হোক।

শুধু সৌরভই নয়, আল-আমিন মিয়া, জিয়াদ হোসেন, তাহমিনা আক্তার, বীথিসহ হোমসে আশ্রয় হওয়া সবারই আছে প্রায় একই রকম শোকগাথা ইতিহাস। তবে, এতিম-অসহায় এই শিশুদের স্বপ্ন পূরণে কাজ করেই চলেছে অরকা হোমস।

প্রকৃতির ছায়াঘেরা অরকা হোমসের ক্যাম্পাস। ক্যাম্পাসের ভেতরেই ভবন, স্কুল, চারতলা ভবনের একটিতে থাকে ছেলেরা। আর মেয়েরা থাকে তিনতলার অপর ভবনটিতে। এখানে থাকা শিশু-কিশোরের সবাই পড়াশোনা করছে পাশের মুসলিম একাডেমিতে। আছে খেলার মাঠ, লাইব্রেরি ও বিনোদনের ব্যবস্থা। এ ছাড়া তাদের দেখভালের জন্য রয়েছেন একজন তত্ত্বাবধায়ক, একজন ম্যানেজার, সহকারী ম্যানেজার, নারী কেয়ারটেকারসহ আটজন। তাদের জন্য রয়েছে ২২ জন গৃহশিক্ষক। রয়েছেন শরীরচর্চার শিক্ষকও। ধর্ম শিক্ষার ব্যবস্থাও রয়েছে সেখানে। নামাজের জন্য ক্যাম্পাসেই রয়েছে পাকা মসজিদ।

গাইবান্ধা অরকা হোমসের পরিচালক মো. জাহিদুল হক জানান, ২০১৪ সালে মাত্র ৮টি শিশু নিয়ে অরকা হোমসের যাত্রা শুরু হয়। এখন এখানে শিশু রয়েছে ৫২টি। তার মধ্যে ২১টি শিমু রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির বাবা-মা হারানো; বাকিরা এতিম অসহায়। তাদের পড়াশোনা থেকে সবকিছুই আমরা দিচ্ছি।

তিনি বলেন, এই ২১ জন ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে এখানকার ৩১ শিশু-কিশোরের কেউ মাধ্যমিক পেরিয়ে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ছে, কেউ কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হচ্ছে, আবার কারও কর্মসংস্থান হওয়ায় অরকা হোমস ছেড়ে চলেও গেছে।

এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ-বিদেশে থাকা অরকার সদস্যদের আর্থিক সহায়তায়ই মূলত হোমসের ব্যয় মেটানো হয়। এ ছাড়া বাংলাদেশের তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারকদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) প্রতি মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণ আর্থিক অনুদান দিয়ে আসছে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এই অনুদান প্রদানে বিজিএমইএ গড়িমসি করছে বলে অভিযোগ হোমস-সংশ্লিষ্টদের।


কেএনএফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা: ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জন কারাগারে

কেএনএফের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার দায়ে আটককৃতরা। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৩৮
নিজস্ব প্রতিবেদক

কুকি চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে যৌথ অভিযানে এক ছাত্রলীগ নেতাসহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে তাদের আদালতে তোলা হলে বান্দরবানের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এএসএম এমরান কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- রুমা সদর ইউনিয়নের মুনলাই পাড়ার বাসিন্দা লাল নুন নোয়াম বম (৬৮), লাল দাভিদ বম (৪২), চমলিয়ান বম (৫৬), লাল পেক লিয়ান বম (৩২), ভান মুন নোয়াম বম (৩৩), লাল মিন বম (৫০) ও বান্দরবান সদর লাইমি পাড়ার বাসিন্দা ভান বিয়াক লিয়ান বম (২৩)।

তাদের মধ্যে ভান মুন নোয়াম বম রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। সংগঠনবিরোধী কার্যক্রমে জড়িত থাকার অভিযোগে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। ২৩ এপ্রিল জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলু ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন মানিক স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে রুমা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে ভান মুন নোয়াম বমকে বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি অং ছাইং উ পুলুয়ের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

এর আগে গতকাল সোমবার রুমা সদর ইউনিয়নের মুনলাইপাড়া থেকে ছয়জন এবং বান্দরবানের মিলনছড়ি পুলিশ চেকপোস্ট থেকে ভান বিয়াক লিয়ান বমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গত ২ এপ্রিল বান্দরবানের রুমায় সোনালী ব্যাংকে ডাকাতি, ম্যানেজারকে অপহরণ, মসজিদে হামলা, পুলিশ ও আনসার সদস্যদের অস্ত্র লুটের ঘটনায় পাঁচটি মামলা হয়। এরপর ৩ এপ্রিল দুপুরে বান্দরবানের থানচি উপজেলার সোনালী ব্যাংক ও কৃষি ব্যাংকে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তাতে চারটি মামলা দায়ের হয়। এ পর্যন্ত নয় মামলায় সর্বমোট ৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে ৫৬ জনকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।

বিষয়:

প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী যারা

নির্বাচন কমিশন ভবন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৩৬
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনে সাতজন চেয়ারম্যান, নয়জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ১০ জন মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছেন। চূড়ান্ত তালিকা এলে এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার ইসি থেকে এই তথ্য জানানো হয়।

যেসব উপজেলায় প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন

বালিয়াডাঙ্গী (ঠাকুরগাঁও) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, হাকিমপুর (দিনাজপুর) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সাঘাটা (গাইবান্ধা) উপজেলার চেয়ারম্যান, বেড়া (পাবনা) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, সিংড়া (নাটোর) উপজেলার চেয়ারম্যান ও কুষ্টিয়া সদরের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ ছাড়া, বাগেরহাট সদরে তিনটি পদে, মুন্সীগঞ্জ সদরে তিনটি পদে ও শিবচর (মাদারীপুর) তিনটি পদে প্রার্থীরা বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

পাশাপাশি, বড়লেখা (মৌলভীবাজার) উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান, পরশুরাম (ফেনী) উপজেলায় তিনটি পদে, সন্দ্বীপ (চট্টগ্রাম) উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান, কক্সবাজার সদরে ভাইস চেয়ারম্যান, রোয়াংছড়ি (বান্দরবান) উপজেলার চেয়ারম্যান পদ ও কাউখালী (রাঙ্গামাটি) উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছেন।

চার ধাপে অনুষ্ঠেয় ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ইতোমধ্যে তফসিল দিয়েছে ইসি। এবার প্রথম ধাপে ১৫০ ও দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলার ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তৃতীয় ধাপে ১১২টির ভোট ২৯ মে এবং চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে ৫ জুন।

প্রথম ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ও বাছাইয়ের সময় শেষ। বৈধ প্রার্থী এক হাজার ৭৮৬ জন, রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিলের সময় ছিল ১৮ থেকে ২০ এপ্রিল। আপিল নিষ্পত্তি ২১ এপ্রিল, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ছিল ২২ এপ্রিল। প্রতীক বরাদ্দ ২৩ এপ্রিল, আর ১৫২ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ৮ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপিল আবেদন নিষ্পত্তি করবেন আপিল কর্তৃপক্ষ হিসেবে জেলা প্রশাসক।

দ্বিতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র দাখিল ২১ এপ্রিল শেষ সময়, মনোনয়নপত্র বাছাই ২৩ এপ্রিল, আপিল গ্রহণ ২৪-২৬ এপ্রিল, আপিল নিষ্পত্তি ২৭ থেকে ২৯ এপ্রিল। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ৩০ এপ্রিল, প্রতীক বরাদ্দ ২ মে। আর ১৬১ উপজেলায় ভোটগ্রহণ হবে ২১ মে।

এই ধাপের নির্বাচনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকদের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। ভোটারের সংখ্যা ৫ লাখের বেশি যেখানে, সেখানে একাধিক সহকারী রিটার্নিং অফিসার নিয়োজিত থাকবেন।

তৃতীয় ধাপের তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়ন ফরম জমার শেষ তারিখ ২ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ৫ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ৬ থেকে ৮ মে। আপিল নিষ্পত্তি ৯ থেকে ১১ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের মাঝে প্রতীক বরাদ্দ ১৩ মে এবং ভোট ২৯ মে। এই ধাপে ১১২ উপজেলায় ভোট হবে।

আগামী ৫ জুন দেশের ৫৪ উপজেলায় চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হবে। এর সঙ্গে নওগাঁ জেলার মহাদেবপুর উপজেলার প্রার্থীর মৃত্যুতে স্থগিত হওয়া ভোটও এ ধাপে অনুষ্ঠিত হবে। এতে করে মোট ৫৫ উপজেলায় ভোট হবে।

চতুর্থ ধাপে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় ৯ মে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ১২ মে। রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল ১৩ থেকে ১৫ মে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৯ মে। প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ২০ মে।

চতুর্থ ধাপের নয়টি উপজেলায় ভোট হবে ইভিএমে। বাকিগুলোতে ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে।

বিষয়:

মসজিদ নির্মাণ না হওয়ায় গোডাউনে নামাজ

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কালিয়াকৈর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বরাব শুয়াপুর গ্রামে গত দুই বছর ধরে অর্থাভাবে বন্ধ রয়েছে মসজিদ সংস্কার কাজ। ফলে অন্যের গোডাউনে নামাজ আদায় করছেন মুসল্লিরা।

বরাব শুয়াপুর গ্রামটি উপজেলার একেবারে শেষপ্রান্তে। এক সময় এ গ্রামে জনসংখ্যা ছিল অনেক কম। বর্তমানে নদীভাঙন কবলিত বিভিন্ন জেলার লোকজন এখানে ঘরবাড়ি বানিয়ে বসবাস করছেন। বাসিন্দাদের বেশির ভাগই হতদরিদ্র।

প্রায় আড়াই যুগ আগে ওই গ্রামের চাঁন মিয়া মাতব্বর মসজিদের নামে ৯ শতাংশ জমি ওয়াকফ করে দেন। এরপর গ্রামের সবাই মিলে মাটি তুলে সেখানে বরাব (শুয়াপুর) জামে মসজিদ স্থাপন করা হয়। সেই ছাপড়া মসজিদেই নামাজ আদায় করা হচ্ছিল। দুই বছর আগে মসজিদটি সংস্কারের জন্য ভাঙা হয়। এরপর অর্থাভাবে আর নতুন করে গড়ে তোলা যায়নি। পাঁচ তলা ভবনের ফাউন্ডেশন দিয়ে মসজিদের কাজ শুরু করলেও বর্তমানে শুধু নিচ তলার পিলার তৈরি করা হয়েছে। এ অবস্থায় বাধ্য হয়ে পাশের একটি ব্যক্তি মালিকের গোডাউনে মসজিদের কার্যক্রমসহ নামাজ আদায় করছেন এলাকার মুসল্লিরা।

মসজিদ কমিটির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদের কিছু কাজ করার পর টাকার অভাবে তা বন্ধ হয়ে যায়। এখন কিছু অনুদান পেয়েছি, গ্রামের সবাই সহযোগিতা করছে। খুব দ্রুত আবার কাজ শুরু করব। তবে মসজিদ তৈরিতে আরও অর্থ প্রয়োজন।’

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সারোয়ার আলম বলেন, ‘ওই মসজিদের এমন অবস্থার কথা আগে জানা ছিল না। আবেদন করলে ওই মসজিদের উন্নয়ন কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

বিষয়:

মাদারীপুরে হিট স্ট্রোকে কৃষকের মৃত্যু

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মাদারীপুর প্রতি‌নি‌ধি

মাদারীপুরের ডাসারে তীব্র গরমের মধ্যে জমিতে কাজ করতে গিয়ে এক বৃদ্ধ কৃষক হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছে তার পরিবার।

মারা যাওয়া আজগর আলী বেপারী (৭৫) উপজেলার গোপালপুর এলাকার পশ্চিম বনগ্রাম গ্রামের মৃত বরম আলীর ছেলে।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কৃষক আজগর আলী বেপারী প্রচণ্ড রোদের মধ্যে তার বাড়ির পাশের একটি জমিতে কাজ করতে যান। এ সময় তিনি প্রচণ্ড গরমের ফলে হিট স্ট্রোকে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে বাড়িতে নওয়ার পথেই তিনি মারা যান।

ইউপি সদস্য হালিম জানান, গরমের ভেতর জমিতে কাজ করতে গিয়ে আজগর আলী হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন।

এ ব্যাপারে ডাসার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম শফিকুল ইসলাম জানান, বৃদ্ধ বয়সে আজগর আলী জমিতে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে তাপমাত্রা সইতে না পেরে হিট স্ট্রোকে মারা গেছেন। ঘটনাটি দুঃখজনক। পারিবারিকভাবে তাকে দাফন করা হয়েছে।

বিষয়:

কুমিল্লার দাউদকান্দিতে বাসচাপায় একই পরিবারের ৪ জন নিহত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলায় ডাক্তার দেখানোর পর বাড়ি ফেরার সময় বাসচাপায় মা, মেয়ে ও দুই নাতনি নিহত হয়েছেন।

সোমবার রাত সাড়ে ৮টায় উপজেলার মালিখিল এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন দাউদকান্দি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জহুরুল হক।

নিহতরা হলেন তিতাস উপজেলার ভিটিকান্দি ইউনিয়নের কদমতলী গ্রামের শাহজালালের স্ত্রী দিলবার নেছা (৬৫), তার মেয়ে পাশের দড়িকান্দি গ্রামের প্রবাসী সফিক মিয়ার স্ত্রী শাহিনুর বেগম, শাহীনুরের দুই মেয়ে সায়মা (৫) এবং রাইছা (২)।

ওসি জহুরুল জানান, মহাসড়ক পারাপারের সময় ঢাকাগামী দ্রুতগামী একটি যাত্রীবাহী বাসের চাপায় দিলবর নেছা ঘটনাস্থলে মারা যান, তাঁর মেয়ে শাহীনুর আক্তার, নাতনি সায়মা আক্তার দাউদকান্দি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মারা যায়। আরেক নাতনি রাইসা আক্তারকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় নেওয়ার পথে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার শহীদনগর এলাকায় মারা যায়।

দুই নাতনি ও পুত্রবধূকে হারিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন দাদা রসিদ মোল্লা। তিনি বলেন, আমার ছোট ছেলের স্ত্রী তার মা আর নাতনিদের ডাক্তার দেখাতে সকালে কুমিল্লা শহরে যায়। সকালে যাওয়ার সময় আমি নিষেধ করেছিলাম। তারা ডাক্তার দেখিয়ে কুমিল্লা থেকে ফেরার পথে শেষ হয়ে গেল। ভিটিকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবুল আহমেদ বলেন, এ দুর্ঘটনার খবরে আমার এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান দাউদকান্দি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরফাতুল আলম। তিনি বলেন, বাস ও চালককে দ্রুত শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।


বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত

চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ, বাসে আগুন
বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা চট্টগ্রাম কাপ্তাই মহাসড়ক অবরোধ করে এবং একটি বাসে আগুন দেয়। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ২২:৪৪
চট্টগ্রাম ব্যুরো ও চবি প্রতিনিধি

বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত ও একজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। নিহতরা হলেন, শান্ত সাহা ও তৌফিক হোসেন। সোমবার বিকালে চট্টগ্রাম কাপ্তাই সড়কের সেলিনা কাদের চৌধুরী কলেজ সংলগ্ন এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহত শান্ত সাহা পুরকৌশল বিভাগের ’২০ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি নরসিংদীর কাজল সাহার ছেলে। তৌফিক হোসেন একই বিভাগের ’২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী। তিনি নোয়াখালী সুধারামের নিউ কলেজ রোডের মোহাম্মদ দেলোয়ারের সন্তান।

এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা শাহ আমানতের কয়েকটি বাস আটক করার পর চট্টগ্রাম কাপ্তাই মহাসড়ক অবরোধ করে এবং একটি বাসে আগুন দেয় তারা। রাত ১০টার দিকে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। এরপর মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার বিকালে জিয়া নগরে মোটরসাইকেল নিয়ে ঘুরতে যায় চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী সান্ত সাহা, ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী তাওফিক হোসাইন ও জাকারিয়া হিমু। এসময় শাহ আমানত নামের একটি বাসের ধাক্কায় ঘটনাস্থলে মারা যায় শান্ত সাহা এবং গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায় তাওফিক হোসাইন। মোটরসাইকেলে থাকা জাকারিয়া হিমুকে গুরুতর আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম শহরের এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেয়া হয়।

যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২য় বর্ষের ('২১ ব্যাচ) শিক্ষার্থী পল্লব ঘোষ বলেন, শান্ত ভাই আমার খুবই কাছের বড় ভাই এবং একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ছিলেন। কিন্তু বাসের বেপরোয়া গতির জন্য একটি প্রাণ ঝরে গেলো। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের পাশাপাশি উপযুক্ত বিচার দাবি করি এবং ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে, তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) ছাত্রকল্যাণ পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ‘আমাদের চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী ঘুরতে বের হয়ে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় দুইজন নিহত হয়েছেন। ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। তাদের মৃত্যুতে চুয়েটে ক্যাম্পাসে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।’

চুয়েটের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) ফজলুর রহমান বলেন, ‘দুর্ঘটনায় নিহত শান্ত সাহার মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এবং তৌফিকের মরদেহ এভারকেয়ার হসপিটালে রাখা হয়। আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’


ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহত ৪ কারণে

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ফরিদপুর প্রতিনিধি

ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় ১৫ জন নিহতের ঘটনায় গঠন করা তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দাখিল করেছে। এতে চারটি কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এর মধ্যে রয়েছে- ঈদের পরে বাসচালকের দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালানোয় ক্লান্তি আর চোখে ঘুম, দুটি যানের অধিক গতি, মহাসড়কে নিজস্ব লেনে ব্রেক করা ও মহাসড়কে অটোরিকশার উপস্থিতি।

রোববার রাতে জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদারের কাছে তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা দেওয়া হয়।

তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত ১৬ এপ্রিল ফরিদপুর-খুলনা মহাসড়কে বাস-পিকআপভ্যানের সংঘর্ষে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহত ইকবাল হোসেনের বড় ভাই এনামুল শেখ বাদী হয়ে যাত্রীবাহী বাসের চালককে আসামি করে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সড়ক দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলী সিদ্দিকীকে প্রধান করে সাত সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

হাইওয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাহিনুর আলম খান জানান, ফরিদপুরে-খুলনা মহাসড়কে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা খুলনাগামী উত্তরা ইউনিক পরিবহনের সঙ্গে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই পিকআপে থাকা নারী, পুরুষ, শিশুসহ ১১ জন মারা যান। আহত হন সাতজন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান আরও চারজন।


রামুতে বাবা-ছেলেকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা

কক্সবাজারের রামু থানা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কক্সবাজার প্রতিনিধি

কক্সবাজারের রামু উপজেলায় দুইজনকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিহত দুজন সম্পর্কে বাবা ও ছেলে। রোববার রাত ১টার দিকে উপজেলার গর্জনিয়া ইউনিয়নের উত্তর থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীরঘোনা এলাকার নজরুল ইসলামের চায়ের দোকানের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত দুইজন হলেন-একই এলাকার জাফর আলম (৫৫) এবং তার ছেলে মো. সেলিম (৩৫)।

রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু তাহের দেওয়ান বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, ঘটনাটি কারা, কী কারণে ঘটিয়েছে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। প্রাথমিকভাবে স্থানীয় দুইপক্ষের মধ্যে পূর্ব বিরোধের জেরে ঘটনাটি ঘটেছে বলে তথ্য পাওয়া গেছে।

স্থানীয়দের ভাষ্য, মিয়ানমার থেকে পাচার হয়ে আসা গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে বিরোধের জের ধরে জোড়া খুনের এ ঘটনা ঘটেছে।

ওসি আবু তাহের বলেন, ‘রোববার মধ্যরাতে রামুর গর্জনিয়া ইউনিয়নের থোয়াইঙ্গাকাটা মৌলভীঘোনা এলাকায় স্থানীয় স্টেশনের একটি দোকানে সেলিমসহ কয়েকজন বন্ধু মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। এ সময় মুখোশ পরিহিত ১৫ থেকে ২০ জনের একদল অজ্ঞাত দুর্বৃত্ত অতর্কিত তার ওপর হামলা করে। দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্রের কয়েকটি কোপ দিলে তিনি চিৎকার করে পালানোর চেষ্টা চালায়। এ সময় ছেলের চিৎকার শুনে তাকে লক্ষ্য করে বাবা জাফর আলম টর্চের আলো ফেলেন। পরে দুর্বৃত্তরা তাদের লক্ষ্য করে গুলি করে পালিয়ে যায়।’

ওসি আরেও বলেন, দুর্বৃত্তরা পালিয়ে গেলে স্থানীয়রা ঘটনাস্থল থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় বাবা-ছেলেকে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতদের স্বজন জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘রাতে স্থানীয় একটি দোকানে আড্ডা দেয়ার সময় মুখোশ পরিহিত একদল লোক ধারালো অস্ত্র ও গুলি করে বাবা-ছেলেকে হত্যা করেছে। তাদের সঙ্গে কোনো লোকজনের পূর্ব শত্রুতা ছিল কিনা জানি না।’

স্থানীয়রা জানায়, একই এলাকার ‘আবছার ডাকাত’ এবং ‘শাহীন ডাকাত’ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিন যাবত আধিপত্য বিস্তার এবং বার্মিজ গরু চোরাচালানকে কেন্দ্র করে বিরোধ চলে আসছিল। রোববার রাতে শাহীন ডাকাত গ্রুপের ১৪ থেকে ১৫ জন লোক চোরাচালানের গরু পার করার জন্য ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। সেখানে আবছার ডাকাত গ্রুপের ২০ থেকে ২২ জন দেশীয় অস্ত্র ও বন্দুক নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়।

ওসি আবু তাহের জানান, ঘটনার কারণ জানার পাশাপাশি জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বিষয়:

চা বাগান থেকে যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের একটি চা বাগানে গাছের সঙ্গে ফাঁস লাগা অবস্থায় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সোমবার সকালে উপজেলার ফুলবাড়ি চা বাগান এলাকার ৮ নম্বর সেকশনে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে কমলগঞ্জ থানা পুলিশ। প্রাণ হারানো যুবক ১৯ বছর বয়সী সজল বাউরি, যিনি ওই বাগানের চা শ্রমিক চুন্নু বাউরির ছেলে।

স্থানীয় একজন জানান, ‘রাতে মা-বাবার সঙ্গে ভাত নিয়ে সজল বাউরির ঝগড়া হয়। আমরা তাদের ঝগড়া শুনতে পাই। সকালে বাগানে গাছের সঙ্গে তার মরদেহ দেখে তার মা-বাবাকে জানাই। পরে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। সে বাগানে শ্রমিকের কাজ করত।

সজল বাউরির বাবা চুন্নু বাউরী বলেন, ‘আমার সঙ্গে ও ছেলের মায়ের সঙ্গে গরম ভাত করে দেয়ার জন্য সন্ধ্যায় ঝগড়া হয়। সে ঠাণ্ডা ভাত খাবে না। পরে রাত ৮টার দিকে ঘর থেকে বের হয়ে যায়। আমরা ভাবছি হয়তো প্রতিবেশী কারও ঘরে রাতে থাকতে পারে। তাই আর খোঁজখবর নিইনি।’

তিনি আরও বলেন, ‘সকালে হঠাৎ শ্রমিকরা কাজে গেলে চা বাগানের ৮ নম্বর সেকশনে এলাকায় গাছের সঙ্গে ফাঁস লাগা অবস্থায় সজলের মরদেহ দেখতে পেয়ে আমাদের খবর দেয়। আমরা পুলিশকে বিষয়টা জানাই। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’

কমলগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউল বলেন, ‘বাগানের ৮ নম্বর সেকশন এলাকায় একটি গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া সজল বাউরির মরদেহ সকালে উদ্ধার করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘মরদেহ ময়নাতদন্ত করার জন্য মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।’


তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা, বিপাকে খেটে খাওয়া মানুষ 

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মইনুল হক মৃধা, রাজবাড়ী

তীব্র গরমে যেন নাভিশ্বাস উঠছে! সারা দেশের মতোই দাবদাহে পুড়ছে রাজবাড়ী জেলার গোয়ালন্দ। গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৩টায় এখানে তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। দাবদাহে আমের গুটি, ধানের শিষ ঝরে যাচ্ছে। সবজি খেতসহ সব ধরনের চাষ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে কৃষক। হাসপাতালে শিশু রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে টানা দাবদাহে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমের সাধারণ ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তি আর কষ্ট বেড়েছে। তবে সবচেয়ে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। তীব্র রোদের কারণে দিনমজুর, রিকশাচালক ও ভ্যানচালকরা কাজ করতে পারছেন না। এদিকে কাজ না করলে খাবার জুটবে না। তাই পেটের তাড়নায় প্রচণ্ড দাবদাহ উপেক্ষা করে কাজে বেরিয়েছেন অনেকে। প্রচণ্ড গরমে কয়েক দিন ধরেই হাট-বাজারে মানুষের সমাগম কম। অনেকেই ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছেন। ভ্যানচালক বাবু শেখ বলেন, ‘গরমে কাজ করতে না পেরে আয় কমে গেছে। আগে দিনে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় করা যেত। এখন প্রচণ্ড গরমের কারণে সারা দিনে ২০০ টাকা আয় করা মুশকিল হয়ে পড়েছে।’

গোয়ালন্দ পৌর এলাকার বিপেন রায়ের পাড়া এলাকার শারমিন আক্তার বলেন, ‘প্রচণ্ড গরম পড়েছে। বাচ্চা নিয়ে খুবই সমস্যায় আছি। ঘরের মধ্যে গরমে থাকা যায় না। আমার দুই সন্তান গত কয়েক দিন ধরে জ্বর-সর্দি ও কাশিতে ভুগছে। আজ গোয়ালন্দ হাসপাতালে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে আসছি।’

গোয়ালন্দ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শরিফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের বেশিরভাগই গরমজনিত রোগে আক্রান্ত। তীব্র গরমে শিশুদের ডায়রিয়া, টাইফয়েড, শরীরে ঘাম বসে নিউমোনিয়া, ঠাণ্ডা, সর্দি, কাশি, জ্বর ও প্রস্রাবে সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে। তিনি পরামর্শ দেন, প্রখর রোদে শিশুকে ঘরের বাইরে বের হতে দেওয়া যাবে না। টাটকা খাবার খাওয়াতে হবে এবং ফ্যানের নিচে রাখতে হবে। গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, তীব্র তাপদাহের কারণে বোরো ধান, আমের গুটি ঝরে শুকিয়ে যাচ্ছে। আমগাছে পানি স্প্রে এবং বোরো ধানসহ সব ধরনের সবজিখেতে প্রতিদিনই সেচ দিতে এবং সেচের পানি ধরে রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি কর্মকর্তারা।

গোয়ালন্দ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. খোকন উজ্জামান বলেন, ‘প্রচণ্ড দাবদাহের কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। আমাদের কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক গরমে করণীয় বিষয়ে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন।’ গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জ্যোতি বিকাশ চন্দ্র বলেন, ‘উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সোস্যাল মিডিয়ায় জনসাধারণকে সতর্ক করা হচ্ছে এবং জনসাধারণকে আরো সতর্ক করতে মাইকিং করা হবে, তারা যেন অতি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বাহির না হয়। শরবত, পানি ও ফলমূল বেশি বেশি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’ এ ছাড়া স্ট্রোক, ডায়রিয়াসহ গরমজনিত রোগীদের চিকিৎসার জন্য উপজেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।


৫ বছরেও চালু করা যায়নি সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস

আপডেটেড ২২ এপ্রিল, ২০২৪ ০৫:০৬
আবু সাঈদ, সাতক্ষীরা

৫ বছরেও চালু করা যায়নি সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল্স। ফলে নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। এ ছাড়া হতাশায় ভুগছেন চাকরি হারানো বিপুলসংখ্যক শ্রমিক। সব ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে মিলটি আবারও চালুর দাবি বাস্তবায়ন কমিটিসহ শ্রমিকদের। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, পিপিটির মাধ্যমে চালু করার চেষ্টা করা হচ্ছে মিলটি।

সুন্দরবন টেক্সটাইল মিল্স সূত্রে জানা যায়, সাতক্ষীরার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান এই মিলটি। ১৯৮৩ সালে সাতক্ষীরা শহর উপকণ্ঠের মাগুরা এলাকায় ৩০ একর জায়গায় স্থাপন করা হয় সুন্দরবন কেক্সটাইল মিলস। মিলটিতে একসময় দেড় হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। মূল ইউনিট ও নীলকমল ইউনিটের আওতায় ৩৯ হাজারেরও বেশি টাকু ঘুরতো প্রতিনিয়ত। মিলের দুটি ইউনিটের সুতা উৎপাদন ক্ষমতা দৈনিক ১০ হাজার কেজি। তবে এর জৌলুস বেশি দিন থাকেনি। ক্রমাগত লোকসানের ফলে ২০০৭ সালে শ্রমিক-কর্মচারীদের বিদায় জানানো হয় গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে। পরে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে মিলটি চালু হয়। তাও টেকেনি বেশি দিন।

২০১৭ সালের শেষের দিকে মিলটি ভাড়ায় নেয় নারায়ণগঞ্জের ট্রেড লিংক লি.। লোকসান হতে থাকায় একবছর কয়েক মাস চালানোর পর ২০১৯ সালে আবারও বন্ধ ঘোষণা করা হয় মিলটি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় মরিচা পড়ে নষ্ট হচ্ছে কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি। প্রতিষ্ঠানটি দেখভালের জন্য বর্তমানে আটজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত আছেন। ৫ বছর মিলটি বন্ধ থাকায় বেকার জীবনযাপন করছেন এলাকার ৪০০ শ্রমিক। জেলার একমাত্র ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠানটি অবিলম্বে চালু করতে সরকারি পৃষ্টপোষকতার দাবি শ্রমিকদের। এ বিষয়ে শ্রমিক রেজাউল হক রেজা বলেন, ‘আমি এখানে চাকরি করতাম। এখন সেটা বন্ধ হয়ে গেছে। মিলটা চালু হলে আমাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ হবে।’

মিলটি চালুর দাবিতে কমিটি গঠন হয়েছে সম্প্রতি। পরিকল্পিতভাবে চালু করতে পারলে লাভবান হতে পারবেন কর্তৃপক্ষ- অভিমত শ্রমিক নেতাদের। এ বিষয়ে সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস চালু বাস্তবায়ন কমিটির দপ্তর সমন্বয়কারী শেখ শওকত আলী বলেন, ‘এই মিলের লাভ দিয়ে আমিন টেক্সটাইল মিল ও মাগুরা টেক্সটাইল মিল গঠিত হয়েছে। কিন্তু বিএনপি সরকারের ভ্রান্তনীতির কারণে আজ মিলটি দেউলিয়া হয়ে গেছে। সেসময় পাকিস্তানি তুলা আমদানি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিলটি। আমাদের দাবি, সরকার যেকোনোভাবে মিলটি চালু করুক।’

সুন্দরবন টেক্সটাইল মিলস চালু বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য সচিব মাগফুর রহমান বলেন, ‘সরকার লস দিয়ে মিল চালাবে না। পিপিপির মাধ্যমে বিটিএমসি ইতোমধ্যে তিনটি মিল চালু করেছে। ৩০ বছরের লিজে সেগুলো তারা চালাচ্ছে। তারা লাভবান হতে পারলে এই মিল চালু হতে পারবে না কেন।’ কমিটির আহ্বায়ক শেখ হারুন-উর-রশিদ বলেন, ‘সম্প্রতি মিলটি চালুর বিষয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান আশু সংসদে জোরালো বক্তব্য রেখেছেন। মিলটি চালু না হলে একদিকে যেমন কয়েক কোটি টাকার যন্ত্রপাতি নষ্ট হবে, তেমনি আগে কর্মরত শ্রমিকরা বেকার হয়ে পড়বে।

চালুর বিষয়ে মিলটির বর্তমান ইনচার্জ শফিউল বাশার বলেন, ‘১৯৮০ সালে ২৯.৪৭ একর জায়গার ওপর এটি গড়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালে এটি চালু হয়। দেড় হাজারেরও বেশি শ্রমিক একসময় কর্মরত ছিল। ১৯৯২ সালে মূল ইউনিটের বাইরে ‘নীলকমল’ নামে আরও একটি ইউনিট প্রস্তুত হয়। সুতা উৎপাদন থেকে থানকাপড় পর্যন্ত তৈরি হতো। তবে ক্রমাগত লোকসানের কারণে ২০০৭ সালে গোল্ডেন হ্যান্ডশেকের কারণে শ্রমিক ও কর্মচারীদের বিদায় করা হয়। কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়ে যায় মিলটি দেখাশুনার জন্য। পরে সার্ভিস চার্জ পদ্ধতিতে মিলটি পরিচালিত হতো। তবে সেটাও বন্ধ হয়ে যায়। পরে ভাড়া পদ্ধতিতে চালানোর চেষ্টা চলে; কিন্তু বিদ্যুৎ সংকট ও মেশিনারিজ পুরোনো হওয়ায় ২০১৯ সাল থেকে আবারও বন্ধ হয়ে যায় মিলটি। আর চালানো সম্ভব হয়নি। আমি যতটুকু জানি, দূর অথবা অদূর ভবিষ্যতে পিপিপির (সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব) মাধ্যমে মিলটি চালানোর চিন্তা বিটিএমসির আছে।

তবে বাস্তবতার নিরিখে মিলটিকে চালানো সম্ভব নয় বিধায় টেক্সটাইল ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট তৈরি করার চিন্তাও সরকারের মাথায় রয়েছে বলে জানান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক হুমায়ুন করিব।

তিনি বলেন, ‘মিলটি বেশ আগে থেকে বন্ধ রয়েছে। বাস্তবতার নিরিখে ক্রমাগত লোকসান দিয়ে টেক্সটাইল মিলকে হয়তো আর চালু করা সম্ভব হবে না। আমরা চিন্তা করছি একটা ভোকেশনাল ইনস্টিটিউট করা যায় কি না, যাতে শিক্ষার্থীরা এটা নিয়ে পড়ালেখা করতে পারে। আমি ডিসি সম্মেলনে এই প্রস্তাব দিয়েছি। বস্ত্র মন্ত্রণালয়ে এই প্রস্তাব দেওয়ার পরে তা তারা গ্রহণ করেছেন। তিন একর জায়গা লাগবে ইনস্টিটিউট করতে। বাকি জায়গা অন্যভাবে ব্যবহারের কথা ভাবছে মন্ত্রণালয়, যাতে ভিন্ন ধরনের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়।’


উপজেলা নির্বাচন থেকে সরে গেলেন পলকের শ্যালক

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নাটোর প্রতিনিধি

নাটোরের সিংড়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন থেকে নিজের প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন চেয়ারম্যান প্রার্থী লুৎফুল হাবীব রুবেল। রুবেল ডাক টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের শ্যালক।

আজ রোববার নাটোরের গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে পাঠানো ভিডিও বার্তায় নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন রুবেল।

ভিডিওতে নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার দাবি করে লুৎফুল হাবীব রুবেল বলেন, ২০০২ সাল থেকে ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, ২০০৫ সালে সিংড়া গোল ই আফরোজ কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন, বর্তমানে উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্বরত। গত ৩ তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে পদত্যাগ করেন। ইউনিয়ন পরিষদেও পরপর তিনবার নির্বাচিত হন।

গত ৮ তারিখে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র জমা দেন। তারপর যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তার সঙ্গে তিনি জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছে। তাকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখতে বিভিন্ন মহল সক্রিয় আছে।

রুবেল আরও বলেন, উপজেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোনো মন্ত্রী-সংসদ সদস্যের আত্মীয়-স্বজন নির্বাচন করতে পারবে না। তারই আলোকে এই ঘোষণার প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এবং প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের নির্দেশনা অনুযায়ী মনোনয়নপত্রটি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন তিনি। অফিসিয়াল যে প্রক্রিয়াগুলো রয়েছে সেগুলো যত দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করবেন।

ভিডিও বার্তার বিষয়ে কথা বলতে লুৎফুল হাবীব রুবেলের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।

সিংড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, ভিডিওটি তাকেও পাঠানো হয়েছে এবং রুবেলের পক্ষের লোকজন ফোন দিয়ে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাকে জানিয়েছেন।


banner close