রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, জয়পুরহাট জেলাসহ রাজশাহী বিভাগের ৩২টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত হতে যাচ্ছে। এ ছাড়া ময়মনসিংহের গৌরীপুর, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর, মানিকগঞ্জের সিংগাইর, দৌলতপুরসহ দেশের মোট ৭০টি উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী বুধবার সকাল ১০টায় আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারা দেশের উপকারভোগী পরিবারগুলোর কাছে জমিসহ গৃহ প্রদান কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন। এরপরই এসব জেলা ও উপজেলাকে গৃহ ও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো প্রতিবেদনে।
রাজশাহী
সোমবার রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিভাগীয় কমিশনার জি এস এম জাফরউল্লাহ বলেন, আগামী বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজশাহীর তিনটি জেলাসহ ৩২টি উপজেলা ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত পরিবার ঘোষণা করবেন।
এগুলো হলো রাজশাহী জেলার পবা, গোদাগাড়ী, তানোর, দুর্গাপুর, পুঠিয়া ও বাগমারা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার সদর, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট ও নাচোল। জয়পুরহাট জেলার সদর, আক্কেলপুর, কালাই ও ক্ষেতলাল উপজেলা।
এ ছাড়া রয়েছে বগুড়া জেলার কাহালু, ধুনট, শাজাহানপুর, সোনাতলা ও শিবগঞ্জ। নওগাঁ জেলার ধামইরহাট, মহাদেবপুর ও পত্নীতলা উপজেলা। সিরাজগঞ্জ জেলার সদর, উল্লাপাড়া, কাজীপুর ও রায়গঞ্জ উপজেলা। পাবনা জেলার সদর, আটঘরিয়া ও সাঁথিয়া উপজেলা এবং নাটোর জেলার গুরুদাসপুর, বড়াইগ্ৰাম ও লালপুর উপজেলাকেও ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
গৌরীপুর (ময়মনসিংহ)
সোমবার দুপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফৌজিয়া নাজনীন জানান, বুধবার সকাল ৯টায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশের মতো গৌরীপুর উপজেলার উপকারভোগীদের মাঝে ২১টি গৃহ হস্তান্তর করে এ উপজেলাকে গৃহহীন ও ভূমিহীনমুক্ত এলাকা ঘোষণা করবেন।
লালমনিরহাট
৩০ জুনের মধ্যে লালমনিরহাট জেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মাদ উল্লাহ।
গাইবান্ধা
গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক মো. অলিউর রহমান জানান, গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলাকে গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
মানিকগঞ্জ
মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় মানিকগঞ্জের সাতটি উপজেলায় ৩৬৭টি ঘর হস্তান্তর করা হবে। এর মধ্যে সদরে ৩১টি, সিংগাইরে ১৬৩টি, শিবালয়ে ৬২টি, হরিরামপুরে ৭৭টি এবং দৌলতপুর উপজেলায় ৩৪টি। একই সঙ্গে সিংগাইর ও দৌলতপুর উপজেলাকে ভূমিহীন-গৃহহীনমুক্ত উপজেলা ঘোষণা করা হবে।
ফরিদপুর
ফরিদপুর জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, জেলার নগরকান্দা উপজেলাকে ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করার পর এবার জেলার আলফাডাঙ্গা ও সালথা এ দুটি উপজেলাকেও ভূমিহীনমুক্ত ঘোষণা করা হবে।
চকরিয়া
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেপি দেওয়ান জানান, উপজেলাটিতে ভূমিহীন ও গৃহহীন লোক না থাকায় আগামী ২২ মার্চ প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৭০টি উপজেলার মতো চকরিয়াকেও ভূমিহীন ও গৃহহীন উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করবেন।
শেরপুর
টাস্কফোর্স কমিটি ও বিভিন্ন দপ্তরের যৌথসভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক শেরপুরের নকলা, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ী উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণার প্রস্তাব পাস হয়েছে। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিন উপজেলাকে ভূমিহীন ও গৃহহীনমুক্ত ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছেন শেরপুর জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাঁচ অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনারকে (এডিসি) বদলি করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলির আদেশ জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড অ্যানালাইসিস বিভাগের মো. নাজিম উদ্দিন আল আজাদকে লালবাগ বিভাগে, মোহাম্মদ আবু তাহেরকে ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগে, এস্টেট বিভাগের মো. শওকত আলীকে রমনা বিভাগে, ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের মো. জাহিদ হোসেনকে মতিঝিল বিভাগে এবং প্রটেকশন বিভাগের কে এইচ এম এরশাদকে উত্তরা বিভাগে বদলি করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগরে দায়িত্ব পালনের সময় ইনচার্জ ছাড়া অন্য পুলিশ সদস্যদের মোবাইল ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ ডিএমপি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম সফলভাবে প্রতিরোধ করতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল সোমবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়।
অফিস আদেশে বলা হয়েছে, সম্প্রতি উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে ঢাকা মহানগর পুলিশের সদস্যরা দায়িত্ব পালনের সময়ে মোবাইল ব্যবহার করার ফলে তাদের সতর্ক নজরদারি ও দায়িত্ব পালন ব্যাহত হচ্ছে। ফলে পুলিশ দৃশ্যমান থাকা সত্ত্বেও নিজেদের ও জনসাধারণের নিরাপত্তা দিতে সক্ষম হচ্ছে না।
আদেশে আরও বলা হয়েছে, এমন পরিস্থিতিতে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা ও নিষিদ্ধ সংগঠনের কার্যক্রম সফলভাবে প্রতিরোধ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের দায়িত্ব পালনরত সদস্যদের মধ্যে ইনচার্জ ছাড়া অন্যদের মুঠোফোন ব্যবহার না করার নির্দেশ প্রদান করা হলো। কোনো পুলিশ সদস্য এ নির্দেশ অমান্য করলে তা শৃঙ্খলা পরিপন্থী কাজ বলে বিবেচিত হবে। তার বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সকাল-সন্ধ্যার হালকা ঠান্ডা হাওয়ায় শীতের আগমনী বার্তা। শীত এখনো জেঁকে না বসলেও খেজুর রস সংগ্রহ করতে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন গাছিরা। এখন তারা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন খেজুর গাছ পরিষ্কার ও ছাঁটাইয়ের কাজে। শীতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে খেজুর রসের।
গাছি মিজানুর বলেন, 'লাভ প্রায় নেই বললেই চলে। আগে ছুরি পাওয়া যেত ৩০০/৪০০ টাকায়, এখন দাম হাজার/পনেরশ টাকা। হাঁড়ি ৩০/৪০ টাকায় কিনতাম। এখন কিনতে হয় ১০০/১৫০ টাকায়।
উপজেলার বরুনা, হরিনা, বাঘবেড়, টিনর, কেড়াব, মাসাব, কুশাব, কান্দাপাড়া, মুশরী, টান মুশরী, বিরাব, দক্ষিণবাঘ এলাকায় খেজুরের রস আহরণ শুরু করেছেন গাছিরা এবং তারা নিয়মিতভাবে গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন রাস্তার দু’পাশে সারিবদ্ধ খেজুরগাছ। গাছিরা প্রথমে গাছের মাথা থেকে ডালপালা কেটে পরিষ্কার করেন। পরে নির্দিষ্ট স্থান হালকা করে কেটে পরিষ্কার করেন তারা। এর কিছুদিন বিরতির পর আবার কয়েক দফায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে ছেঁটে ফেলা হয় গাছের ছাল। গাছ কাটার এ কাজে গাছিরা ছ্যান (স্থানীয় ভাষায়) নামে ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করেন। গাছ কাটার সময় খেজুর গাছের সঙ্গে নিজেদের শক্তভাবে দড়ি দিয়ে বেঁধে নেন তারা। তাদের সঙ্গে থাকে বাঁশের তৈরি পাত্র। যার ভেতর থাকে গাছ পরিষ্কার করার বিভিন্ন সরঞ্জামাদি। গাছ তৈরির প্রস্তুতি সম্পন্ন করার পর থেকেই মূলত রস নামানোর পর্বটা শুরু হয়।
এরপর গাছের মাথার নির্দিষ্ট স্থানে বাঁশের বানানো দু’টি চোখা খুঁটি পোতা হয়। সঙ্গে দড়ি বা সুতা বেঁধে মাটির পাত্র ঝুলে দেয়া হয়। পাত্রের ভেতর রস পড়ার জন্য বাঁশের তৈরি নালার মতো ভিন্ন একটি খুঁটি পুঁতে দেওয়া হয় সেই গাছের সঙ্গে। এভাবেই গাছির নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় ফোঁটায় ফোঁটায় ঝরে খেজুর রস।
উপজেলার গাছি রফিক, রশিদ, মাসুদ জানান, শীতে গ্রামে গ্রামে চলে খেজুর রসের পায়েস, পিঠা-পুলি তৈরির ধুম। মেয়ে জামাই ও স্বজনদের নিমন্ত্রণ করে বাড়ি বাড়ি চলে শীতের বাহারি পিঠা উৎসব।
গাছিরা জানান, একটি সময় এখানে বিপুল সংখ্যক খেজুর গাছ ছিল। মানুষ সিংহভাগ খেজুর গাছ কেটে ফেলেছেন।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ২৪ হাজারের মতো খেজুর গাছ রয়েছে। তবে কালের আবর্তে খেজুর গাছের সংখ্যা দিন দিন কমে যাচ্ছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা সুলতানা জানান, সরকারি প্রকল্পের আওতায় গাছিদের মাঝে হাঁড়ি-ছুরি বিতরণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, 'আমরা যদি তাদের আধুনিক চুলা, গাছে ওঠার সরঞ্জাম ও উন্নত প্রশিক্ষণ দিতে পারি, তাহলে ওই ঐতিহ্য আরও সমৃদ্ধ হবে।'
সোনাইমুড়ীর বাজারে সিএনজি স্ট্যান্ডে যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করছে চালক সাইফুল ইসলাম। তার বাড়ি এই উপজেলার কালুয়াই গ্রামে। তখন বেলা বারোটা বাজে। সে যাত্রী নিয়ে সোনাইমুড়ী থেকে চৌমুহনী যাবে। তার ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। গাড়ীর ফিটনেসসহ অন্যান্য কাগজপত্রও নেই। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। পরিবারের ভরণ পোষণ চালিয়ে আর তেমন টাকা থাকে না। প্রতিদিনই গাড়ি আটক করে ট্রাফিক পুলিশ ডাইভিং লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটলেস না থাকায় হয়রানি করে। নোয়াখালী বিআরটিএ'র অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীরা সরকারি ফি'র চেয়ে অতিরিক্ত ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করায় ড্রাইভিং লাইসেন্স,গাড়ীর ফিটনেস কাগজ করতে পারছে না নাইসেন্স প্রত্যাসীরা। এমন অভিযোগ তুলে ধরেন এই সিএনজি চালক প্রতিবেদকের কাছে।
সোনাইমুড়ী উপজেলার শিমুলিয়া গ্রামের সিএনজির চালক লিটন একইভাবে বলেন, সে অতি কষ্টে উপার্জিত অর্থ দিয়ে একটি সিএনজি ক্রয় করে। ওই সিএনজি চালিয়ে দীর্ঘ ৬ বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। তার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন এবং হালনাগাদ ফিটনেস সার্টিফিকেট, রুট পারমিট ও ট্যাক্স টোকেন নেই।শুধু গাড়ির কাগজপত্র নয় তার ড্রাইভিং লাইসেন্সও নেই। নোয়াখালী বিআরটিএ অফিসে গেলে সরকারি ফির চেয়ে অতিরিক্ত দুই গুণ টাকা দাবি করায় লাইসেন্স ও গাড়ীর কাগজপত্র করতে পারেনি।
জানা যায়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) নোয়াখালী সার্কেলে ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে ভোগান্তির পোহাতে হয়। একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে চার থেকে পাঁচবার ধরণা দিতে হচ্ছে বিআরটিএ অফিসে। চাহিদা মতো ঘুষ না দিলে কিংবা দালাল ছাড়া ড্রাইভিং লাইসেন্স পেতে হলে পদে পদে ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে লাইসেন্স প্রত্যাশীদের। লিখিত, মৌখিক ও ফিল্ড (মাঠ) টেস্ট পরীক্ষায় পাস করার পর নির্ধারিত ফি জমা দিয়ে ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার জন্য সরাসরি ছবি তোলা ও আঙুলের ছাপ দেওয়ার সিরিয়াল পেতেও দিতে হচ্ছে উৎকোচ।
বিআরটিএ নোয়াখালী সার্কেলে দালাল চক্রের সদস্যের মাধ্যমে করাতে হয় ড্রাইভিং লাইসেন্স। সরকার নির্ধারিত পেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্সের জন্য ১৬৭৯ টাকা এবং রেফারেন্স বাবদ ৩৪৫ টাকা মোট ২০২৪ টাকা ও অপেশাদারদের ক্ষেত্রে ২৫৪২ এবং রেফারেন্স ৫১৮ টাকা মোট ৩০৬০ টাকা ব্যাংকে জমা দেয়ার পরে পরীক্ষা দিতে যাওয়ার আগেই দিতে হচ্ছে ২ হাজার টাকা। আবার অনেকের কাছ থেকে এর থেকে বেশিও নেয়া হয়। ড্রাইভিং লাইসেন্সের ফাইল বাবদ দিতে হয় ৫০০ টাকা, অফিস সহকারীকে দিতে হয় ৩০০ টাকা, ছবি তুলতে দিতে হয় ১০০ টাকা পরিশেষে লাইসেন্স নিয়ে আসার সময় চা-পান খেতে দিতে ১০০ টাকা।
নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী, বেগমগঞ্জ, চাটখিলসহ ৯ টি উপজেলায় প্রায় ২৫ হাজার সিএনজির কাগজপত্র নেই। নসিমন- করিমন, ট্রাক্টর, টেম্পু, পিকআপ, নির্মাণ সামগ্রী বহনকারী বড় ট্রাক্টর রয়েছে প্রায় ১০ হাজার। আন্ত: জেলা বাস ও ট্রাকের কাগজপত্র থাকলেও অন্যান্য গাড়ীর নোয়াখালী জেলায় কাগজপত্র নেই। প্রতিদিন ৯ টি থানায় ১০/১২ টি সিএনজি লাইনম্যানরা আটক করে থানায় দেয়। এই গাড়িগুলো থানার বিভিন্ন কাজে ব্যবহার করা হয়। বিনিময়ে চালকদের কোন পারিশ্রমিক দেওয়া হয় না। ফলে থানা পুলিশের সামনে অনুমোদনহীন গাড়িগুলো চলাচল করলেও গাড়ীগুলো আটক করছেনা পুলিশ।
জেলার বিভিন্ন গাড়ীর শো-রুমের সাথে বিআরটিএ কর্মকর্তা-কর্মচারিদের যোগসাজশে ড্রাইভিং লাইসেন্স এবং গাড়ীর লাইসেন্স করা হচ্ছে মোটা অংকের টাকা দিয়ে। এই টাকা না দিতে পেরে অনেকেই ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস বিহীন গাড়ী রাস্তায় চলাচলের কারণে সড়কে প্রতিনিয়ত বাড়ছে ঝুঁকি।
নোয়াখালী বিআরটিএ'র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) উথোয়াইনু চৌধুরীর সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে মুঠোফোনে বার বার কল দিয়ে চেস্টা করেও তাকে পাওয়া নি।
ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়ায় আলম এশিয়া পরিবহনের একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে দগ্ধ হয়ে চালক জুলহাস মিয়ার (৩৫) মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার রাত সোয়া ৩টার দিকে উপজেলার ভালুকজান এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। নিহত জুলহাস উদ্দিন উপজেলার কৈয়ারচালা গ্রামের বাসিন্দা সাজু মিয়ার ছেলে।
ফুলবাড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রোকনুজ্জামান বলেন, গভীররাতে আলম এশিয়া পরিবহন নামের একটি বাসে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এতে বাসটি পুড়ে যায়। এ সময় বাসে থাকা চালক জুলহাস মিয়া দগ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। ইতোমধ্যে লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।
রাজধানীর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গুলিতে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল সোমবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে হাসপাতালের এ ব্লকের গেট থেকে ১০ থেকে ১৫ ফুট সামনে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই ব্যক্তির নাম তারিক সাইফ মামুন (৫৫)। তার বাবার নাম এস এম ইকবাল। তিনি লক্ষ্মীপুর জেলার বাসিন্দা। ঢাকায় আফতাবনগরে ভাড়া বাসায় থাকেন বলে জানা গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, মামুনকে লক্ষ্য করে মুখোশ পরা দুজন গুলি চালান। পরে গুলিবিদ্ধ ওই ব্যক্তিকে প্রথমে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলে নেওয়া হয়, সেখান থেকে নেওয়া হয় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার শরীরে চারটি গুলি পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।
ঘটনাটি নিশ্চিত করে কোতোয়ালি জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) ফজলুল হক বলেন, ১০টা ৫৫ মিনিটে ঢাকার ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে গুলি করে দুই দুর্বৃত্ত। গুলিবিদ্ধ মামুনকে ন্যাশনাল মেডিকেল থেকে ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হয়। ১১টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেলের ওয়ার্ড মাস্টার মহিবুল্লাহ জানান, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ হাসপাতালের সামনে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। পরে শব্দ শুনে সবাই হাসপাতালের মেইন গেটের সামনে এসে সাইফ মামুন নামের ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখেন। ওই সময় প্রথমে তাকে ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, তারিক সাইফ মামুন জজ কোর্টে মামলার হাজিরা দিতে এসেছিলেন। তবে তিনি আসামি না বাদী সেটা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। গোলাগুলির কারণ নির্ণয়ের অনুসন্ধান চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
লালবাগ বিভাগ পুলিশের উপকমিশনার আহসান উদ্দিন সামি বলেন, নিহত মামুন একজন শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। তিনি বলেন, হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
পুরান ঢাকায় গুলিতে নিহত ব্যক্তি ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’ মামুন: পুলিশ
পুরান ঢাকায় ন্যাশনাল মেডিকেলের সামনে দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হয়েছেন তারিক সাঈফ মামুন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি। নিহত মামুন ছিলেন ‘শীর্ষ সন্ত্রাসী’। জানা গেছে, চিত্রনায়ক সোহেল চৌধুরী ও সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাই সাঈদ আহমেদ টিপু হত্যা মামলার আসামি ছিলেন নিহত মামুন।
এর আগে ২০২৩ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলাকায় শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈফ মামুনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি চালায় একদল সন্ত্রাসী। সেই গুলি লেগেছিল মোটরসাইকেল আরোহী ভুবন চন্দ্র শীলের মাথায়। পরে ২৫ সেপ্টেম্বর ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতালে ভুবন চন্দ্র শীল মারা যান।
ঘটনার পর তখন পুলিশ বলেছিল, শীর্ষ সন্ত্রাসী তারিক সাঈফ মামুনকে লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি গুলি ছুড়েছিলেন কারাবন্দী শীর্ষ সন্ত্রাসী সানজিদুল ইসলাম ওরফে ইমনের লোকজন। ওই গুলি লেগেছিল ভুবনের মাথায়। কয়েক মাস আগে শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন জামিনে মুক্ত হন।
এদিকে গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তারিক সাঈফ মামুনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়।
কোতোয়ালি থানার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর নাসির উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, ‘গুলির শব্দ শুনতে পেয়ে ন্যাশনাল হাসপাতালের সামনে এসে দেখি অজ্ঞাত এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে পড়ে আছেন। খুব কাছ থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে।’
গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির নাম-পরিচয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা গুলিবিদ্ধ ব্যক্তির জাতীয় পরিচয়পত্র ন্যাশনাল আইডি থেকে জানতে পেরেছি তার নাম তারিক সাঈফ মামুন এবং তার বাড়ি লক্ষ্মীপুর। এ সম্পর্কে তদন্ত চলমান রয়েছে।’
প্রত্যক্ষদর্শীদের কয়েকজন বলেন, ‘দুইজন ব্যক্তি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের প্রবেশমুখে এসে ওই ব্যক্তিকে পেছন থেকে গুলি করে। বেশ কয়েকটি গুলি করার পর ওই ব্যক্তি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। এরপর তারা মোটরসাইকেলে পালিয়ে যায়।’
শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপির লালবাগ বিভাগ উপপুলিশ কমিশনার (ডিসি) মল্লিক আহসান উদ্দিন সামী বলেন, ‘নিহত ব্যক্তি ইমন গ্রুপের শীর্ষ সন্ত্রাসী মামুন। আমরা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। দ্রুত অপরাধীদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।’
যশোরের কেশবপুরের আপারভদ্রা নদীর অবৈধ দখল-দূষণ ও নাব্যতা সংকটে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানের নদী পরিদর্শন করেছেন। গত বৃহস্পতিবার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মকসুমুল হাকিম চৌধুরী যশোর সফরে, কেশবপুরের বিভিন্ন পয়েন্টে নদীর দখল, দূষণ ও খনন কার্যক্রম পর্যালোচনা করবেন। আরও উপস্থিত ছিলেন কেশবপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফ নেওয়াজসহ অনেক কর্মকর্তরা। কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলায় অবস্থিত আপারভদ্রা, মুক্তেশ্বরীসহ অন্যান্য নদীতে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখল, বর্জ্য প্রবাহ ও নাব্যতা হ্রাসের কারণে পানি নিষ্কাশন ও সেচের সমস্যা ক্রমশ তীব্র হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে ৫ নভেম্বর থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান মকসুমুল হাকিম চৌধুরী জেলার বিভিন্ন পয়েন্ট সরেজমিন পরিদর্শন করেন।
কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন পয়েন্টে আপারভদ্রা নদীর অবৈধ দখল, দূষণ ও নাব্যতার বর্তমান অবস্থা পর্যালোচনা করা হবে। একই সাথে হরিহর, হরিতেলিগাতি, টেকা ও শ্রী নদীসহ ৬টি নদীর মোট ৮১.৫ কিলোমিটার পুনঃখনন কাজের উদ্বোধন করা হয়েছে। এই খননকার্যের উদ্দেশ্য হলো ভবদহ অঞ্চলের দীর্ঘমেয়াদি জলাবদ্ধতা ও নদীর নাব্যতা সংকট ঘুরিয়ে দাঁড়ানোর। মুক্তেশ্বরী নদীতে অনেক অংশ দখল হয়ে ধীরে ধীরে নাব্যতা হারাচ্ছে।
ভবদহ অঞ্চলে দীর্ঘদিন ধরে প্রায় ৫ লাখেরও বেশি মানুষ জলাবদ্ধতায় ভুগছেন। ২৪ অক্টোবর কেশবপুর ও মনিরামপুর উপজেলায় মোট ৬টি নদীর জন্য ১৪০ কোটি টাকার খনন কাজের উদ্ধোধন করা হয়। খননের পরিমাণ ৮১.৫ কিলোমিটার। সেনাবাহিনী-পানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে এই কাজ করছে। স্থানীয় প্রশাসন আশা করছে, এই কাজের মাধ্যমে ভবদহ এলাকার স্থায়ী জলাবদ্ধতার শিকড় থেকে মুক্তি মিলবে।
যশোর জেলা প্রশাসক মো. আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘খুবই দ্রুতগতিতে কাজ এগোয়নি গেল কয়েক বছর; এখন কার্যক্রম ত্বরান্বিত করা হবে।
পরিবেশ-উপদেষ্টা সৈয়দা রেজওয়ানা হাসান মোবাইল ভার্চুয়াল মাধ্যমে বলেন, ‘নদীর নাব্যতা, দখল ও দূষণ একসাথে বিবেচনায় নিয়ে সমন্বিত পরিকল্পনা প্রয়োজন।
চট্টগ্রামের রাউজানে পুকুর সেচে একটি চায়নিজ রাইফেল, একটি শটগান ও সাতটি গুলি উদ্ধার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, উদ্ধার হওয়া এসব অস্ত্র ও গুলি গত বছরের ৫ আগস্ট থানা থেকে লুট হয়েছিল। সোমবার বেলা ২টার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট বাজার-সংলগ্ন আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির পেছনের পুকুর সেচে এসব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়।
পুলিশ জানায়, উদ্ধার করা অস্ত্র ও গুলি প্লাস্টিকের প্যাকেটে আবৃত করে পুকুরে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। চট্টগ্রামের রাউজানে এক বিএনপি কর্মীকে হত্যার মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া দুই যুবকের তথ্যে এসব অস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত দুজন হলেন- নোয়াপাড়ার চৌধুরীহাটের আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়ির মুহাম্মদ শওকতের ছেলে মো. সাকিব (২০) ও মুহাম্মদ সোবহানের ছেলে মো. শাহেদ (২৫)। সোমবার ভোরে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার দুজনের তথ্যে এর আগে ভোরে ৪টি বিদেশি পিস্তল ও ১টি রিভলবার, ৪২টি রাইফেলের গুলি, ১৯টি পিস্তলের গুলি, শটগানের ১৬টি কার্তুজ, ৭টি খালি ম্যাগাজিন, ১টি রকেট ফ্লেয়ার, ২টি রামদা, ৫০টি ইয়াবা ও ২৫০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার হয়। এছাড়া ৯৬ হাজার টাকা জব্দ করে পুলিশ।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী এলাকায় প্রাইভেট কারে গুলি চালিয়ে বিএনপিকর্মী আবদুল হাকিম হত্যা মামলায় সাকিব ও শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গত ৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের মদুনাঘাট পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের মাত্র ২০০ মিটার দূরে আবদুল হাকিমকে প্রকাশ্যে গুলি করে হত্যা করে একদল অস্ত্রধারী। তিনি রাউজানে নিজের খামার থেকে চট্টগ্রাম নগরে ফিরছিলেন।
মোটরসাইকেলে আসা ওই অস্ত্রধারীদের গুলিতে আবদুল হাকিমের গাড়ির চালক মুহাম্মদ ইসমাইলও (৩৮) আহত হন। হাকিমের শরীরে ১০টি গুলির আঘাতের চিহ্ন পায় পুলিশ। এছাড়া গাড়িতে ২২টি গুলির চিহ্ন ছিল। গুলিতে গাড়ির সামনের দুটি চাকাও ফুটো হয়ে যায়। ঘটনার দুই দিন পর আবদুল হাকিমের স্ত্রী তাসফিয়া আলম বাদী হয়ে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন।
হত্যা মামলাটিতে গত সপ্তাহে আবদুল্লাহ খোকন, মুহাম্মদ জিয়াউর রহমান, মুহাম্মদ মারুফ ও মুহাম্মদ সাকলাইন নামের চারজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সে সময় একটি একনলা বন্দুক ও একটি এলজি উদ্ধার হয়। ওই আসামিদের তথ্যেই সাকিব ও শাহেদকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ কর্মকর্তারা।
রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, পুকুর সেচে যে দুটি অস্ত্র এবং গুলি উদ্ধার করা গেছে, সেগুলো গত বছর রাউজান থানা থেকে লুট করা হয়েছিল।
অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় বিকেলে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, রাউজানের আবদুল হাকিম হত্যা মামলায় এ পর্যন্ত মোট ছয়জন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। ঘটনার পরিকল্পনাকারীদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম আরও বলেন, রাউজানে মোট ছয়টি দল সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশ তাদের সহযোগীদের গ্রেপ্তার ও অস্ত্র উদ্ধার করেছে। পুলিশ সন্ত্রাসী একসঙ্গে থাকতে পারে না। হয় পুলিশ থাকবে, না হয় সন্ত্রাসী থাকবে।
গোপালগঞ্জের নতুন জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মো. আরিফ উজ জামান। তিনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন।
অন্যদিকে গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামানকে খুলনা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক করা হয়েছে। এজন্য তিনি স্থানীয় সরকার বিভাগে ন্যস্ত হয়েছেন। ২৪ বিসিএস এর কর্মকর্তা মুহম্মদ কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক হিসেবে যোগদান করেছিলেন ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪।
গত রোববার গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসকসহ ১৪ জেলায় নতুন ডিসি নিয়োগ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত ডিসি নিয়োগের প্রজ্ঞাপন ওয়েব সাইটে প্রকাশ করা হয়।
মো. আরিফ উজ জামান গোপালগঞ্জের ২২তম জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। মো. আরিফ উজ জামান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পুলিশ অনুবিভাগের উপসচিব হিসেবে র্যাব-১ ও র্যাব-২ শাখায় কর্মরত রয়েছেন।
এর আগে মো. আরিফ উজ জামান ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক, যশোর সদর ও মেহেরপুরের গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ৭ মার্চ ২০২১ তারিখে উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি লাভ করেন মো. আরিফ উজ জামান।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাঠ প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পদে বড় ধরনের এই রদবদল করা হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনে ডিসিরা রিটার্নিং কর্মকর্তার দায়িত্ব পালন করেন।
রাজশাহী জেলায় পৌরসভার সংখ্যা ১৪। এর মধ্যে ১৩টিতেই নেই নির্ধারিত ময়লা-আবর্জনা ফেলার জায়গা বা ডাম্পিং স্টেশন। ফলে দীর্ঘদিন ধরে এসব পৌর এলাকার বর্জ্য খোলা আকাশের নিচে, ড্রেন, পুকুর কিংবা নদীতে ফেলা হচ্ছে। এতে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বাড়ছে। ইতোমধ্যে অনেকে চর্মরোগ এবং ডায়রিয়াসহ অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। দিন দিন ঝুঁকি আরও বাড়ছে।
যদিও আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য চারটি পৌরসভায় প্রায় ছয় কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প থাকলেও দীর্ঘদিনে সেগুলোর বাস্তবায়ন হয়নি। বর্জ্য সংগ্রহ ও নির্দিষ্ট জায়গায় নেওয়ার জন্য কোটি টাকায় কেনা যানবাহন ও সরঞ্জাম ব্যবহারের সুযোগ না পাওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পৌরসভাগুলো বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বছরে প্রায় দুই কোটি টাকা ব্যয় করলেও বাস্তবচিত্র ভিন্ন। কোথাও গড়ে তোলা হয়নি ডাম্পিং স্টেশন।
জানা যায়, পবা উপজেলার নওহাটা পৌরসভায় ডাম্পিং স্টেশন নেই। ফলে পৌর শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় বারনই নদীতে। একই নদীতে ফেলা হয় বাগমারা উপজেলার ভবানীগঞ্জ ও তাহেরপুর পৌরসভার বর্জ্য। দুর্গাপুর পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় হোজা নদীতে। গোদাগাড়ী পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় পদ্মার বিভিন্ন স্থানে। এছাড়া কাটাখালী পৌরসভার বর্জ্য ফেলা হয় সিটি হাটের ভাগাড়ে। তবে বেশিরভাগ ময়লা-আবর্জনা ফেলা হয় কাটাখালী বাজারের ড্রেনে। ফলে বৃষ্টি হলে বড় ড্রেনটি সংকুচিত হয়ে পানি জমে থাকে। আর বাঘা পৌরসভার নির্ধারিত জায়গা থাকলেও বর্জ্য ফেলা হয় শাহী মসজিদের পুকুরে।
বাঘা পৌর এলাকার বাসিন্দা শহিদুল হক বলেন, ‘পৌরসভার বর্জ্য পুকুরে ফেলার কারণে দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়। সেই পুকুরে গোসল করলে চর্মরোগ ছাড়াও ডায়রিয়া রোগ দেখা দিচ্ছে। কখনো কখনো খোলা আকাশের নিচে ছাড়াও বর্জ্যগুলো ফেলা হয় ড্রেনে। এর ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়। জলাবদ্ধতার জমে থাকা পানিতে মশা বংশবিস্তার করে। সেই মশা-মাছি থেকে ছড়াচ্ছে রোগব্যাধি। জমে থাকা সেই পানিতে পা-চুলকায়।’
পবা উপজেলার স্কুলশিক্ষক সাকিলা খাতুন বলেন, ‘নওহাটা পৌরসভার বর্জ্য বারনই নদীতে ফেলা হচ্ছে। সেগুলো ভেসে ভেসে বাগমারায় চলে যাচ্ছে। সেই বর্জ্য পচে দুর্গন্ধ ও জীবাণু ছড়াচ্ছে।’
বাঘা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জানান, এসব বর্জ্য ফেলায় পানি দূষিত হয়ে পড়ছে। এর ফলে নদী অববাহিকার মানুষ চর্মরোগ ও ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এছাড়া বর্জ্য থেকে সৃষ্ট বায়ুদূষণে হাপানি, ফুসফুসের ক্যান্সার ও হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ছে। এ জন্য এসব বর্জ্য ধ্বংস করা জরুরি।
স্থানীয় সরকার (পৌরসভা) আইন, ২০০৯ অনুযায়ী, বর্জ্য অপসারণ ও ডাম্পিং ব্যবস্থাপনা প্রতিটি পৌরসভার অন্যতম মৌলিক দায়িত্ব। অথচ রাজশাহীর ১৪টি পৌরসভার ১৩টিতে নেই ডাম্পিং স্টেশন। শুধু চারঘাটে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা থাকলেও পরিবেশগত ছাড়পত্র নেই জেলার কোনো পৌরসভার।
রাজশাহী পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কবির হোসেন বলেন, ‘নদী, পুকুর এবং খোলা স্থানে বর্জ্য ফেলার কারণে দূষণ বাড়ছে। খুব সহজে রোগ ছড়াচ্ছে। পরিবেশগত সমস্যা আমাদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। আমরা দূষণ প্রতিকারে অচিরেই সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করব। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। আশা করছি, অল্প সময়ের মধ্যে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’
এদিকে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কাটাখালী, তাহেরপুর, বাঘা ও গোদাগাড়ী পৌরসভায় প্রায় ছয় কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু জমি না পাওয়া এবং প্রশাসনিক জটিলতাসহ নানা প্রতিবন্ধকতায় প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। ডাস্টবিন, ভ্যান, ভেকুসহ বিভিন্ন পরিবহন ব্যবহারের সুযোগ না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। কাটাখালী পৌরসভায় কয়েক কোটি টাকার পরিবহন দীর্ঘদিন পড়ে থেকে অকেজো হয়ে পড়েছে। সেগুলো কাজে লাগানোর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
কাটাখালী পৌরসভার প্রশাসক জাহিদ হাসান বলেন, ‘বর্জ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের জন্য এখনো নির্দিষ্ট জায়গা পাইনি। খোঁজা হচ্ছে। পেলে সেখানে একটি ডাম্পিং স্টেশন করা হবে।’
রাজশাহী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, ‘পচনশীল বর্জ্য থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও ব্যাকটেরিয়া ছড়ায়। এটি নানা রোগের কারণ হতে পারে। ভবিষ্যতে এটি স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। এ জন্য এসব বর্জ্য নির্দিষ্ট স্থানে ফেলে ধ্বংস করতে হবে।’
রাজধানী ঢাকাকে পাশ কাটিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগের সবচেয়ে কার্যকরী ও গুরুত্বপূর্ণ সড়ক হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর আঞ্চলিক সড়ক। বিশেষ করে মালবাহী ট্রাক, কাভার্ডভ্যান ও লরিগুলো ঢাকায় প্রবেশে বাধ্যবাধকতা থাকায় এই রাস্তায় ২৪ ঘণ্টাই নির্বিঘ্নে যান চলাচল করে। দীর্ঘ যানজট, পথে পথে বাঁধা আর সংক্ষিপ্ত দূরত্ব হওয়ায় লাখো মানুষের ভরসা এই সড়ক। সরু হলেও এটি চালকদের প্রথম পছন্দের রাস্তায় পরিণত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিন কোন সংস্কার না হওয়ায় রাস্তাটির বিভিন্ন অংশে বড় বড় গর্ত, ভাঙন ও ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে যান চলাচল ধীরগতির পাশাপাশি দুর্ঘটনার আশঙ্কাও বেড়েছে। অনেকে বাধ্য হয়ে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করছে, ফলে চালক, যাত্রী ও পথচারীদের মূল্যবান সময় এবং অতিরিক্ত অর্থের অপচয় হচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কের কানারচর থেকে ঝাউচর পর্যন্ত বেশ কিছু জায়গায় বিশাল গর্ত তৈরি হয়েছে। এক কিলোমিটার রাস্তায় তিন-চার জায়গায় এমন বিপজ্জনক গর্ত রয়েছে যেখানে প্রায়ই যানবাহন উল্টে যায়, চালক ও যাত্রী আহত হন। বড় যানবাহনগুলো পার্স গেং বা যান্ত্রিক ত্রুটিতে অকেজো হয়ে মাঝেমধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে যায়, ফলে সৃষ্ট হয় দীর্ঘ যানজট।
আলিপুর ব্রিজ থেকে জালাল মেম্বারের বাড়ি হয়ে জগন্নাথপুর ব্রিজ পর্যন্ত রাস্তাতেও ছড়িয়ে আছে ছোট-বড় গর্ত ও ভাঙন। বিশেষ করে অসুস্থ, গর্ভবতী নারী, শিশু ও বয়স্করা জীবনের ঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন এই সড়কে চলাচল করেন।
একই চিত্র রোহিতপুর ইউনিয়নের রোহিতপুর বাজার, ধর্মশুর ও বালুয়াটেক এলাকায়। রোহিতপুর বাজারের তিন রাস্তা মোড়, সান প্লাজার সামনে সামান্য জায়গায় চার-পাঁচটি বিপজ্জনক গর্ত তৈরি হয়েছে। বালুয়াটেক গ্রামে প্রায় ২০ গজ জায়গা জুড়ে নিচু ও ভাঙা রাস্তা সামান্য বৃষ্টিতেই হাঁটু সমান পানিতে তলিয়ে যায়। বৃষ্টি এলেই এই সড়কে সৃষ্টি হয় চরম দুর্ভোগ, ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
রোহিতপুর বাজারের ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ভূইয়া ও শাহজালাল জানান, স্থানীয়ভাবে নিজেরা অর্থ ব্যয়ে কয়েকবার সংস্কার করলেও বৃষ্টিতে আবার আগের অবস্থায় ফিরে গেছে রাস্তা। চোখের সামনেই প্রতিদিন দুর্ঘটনা ঘটছে, বড় ট্রাক বিকল হয়ে যানজটের সৃষ্টি করছে।
কানারচর গ্রামের বাসিন্দা বিল্লাল হোসেন বলেন, রাস্তার এমন বাজে অবস্থা আগে দেখিনি, দীর্ঘদিন যাবৎ এভাবে রাস্তা পড়ে আছে অথচ দেখার যেনো কেউ নেই। সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তায় হাটু সমান পানি জমে, মাঝে মাঝেই রিকশা উল্টে মারাত্মক আহত হন চালক ও যাত্রীরা। আমরা দ্রুত সময় রাস্তার সংস্কার চাই।
রিকশাচালক মতিন মিয়া বলেন, ভাঙা রাস্তায় রিকশার চাকা ভেঙে যায়, যাত্রী পড়ে যায়, তাই এখন আর এই পথে যেতে চাই না।
ইকবাল হোসেন নামে আরেকজন জানান, সামান্য এই ভাঙা রাস্তার কারণে লাখো মানুষ ভোগান্তিতে পড়েছেন। দ্রুত সংস্কার প্রয়োজন।
কেরানীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুর রহমান বলেন, সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় হেমায়েতপুর-কলাতিয়া-রোহিতপুর সড়কের চার লেন করার কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে। জমি অধিগ্রহণে বিলম্ব হওয়ায় কিছুটা দেরি হয়েছে, তবে জনদুর্ভোগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কাজ শুরু করা হবে। কানারচর, আলিপুর-জালাল মেম্বার-জগন্নাথপুর এবং রোহিতপুর-ধর্মশুর-বালুয়াটেক অংশগুলো সংস্কারের ক্ষেত্রে প্রাধান্য পাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।
জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ভিজিডির বরাদ্দে দূর্গন্ধযুক্ত ও পচা চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন দুঃস্থ ও অসহায় ভিজিডির কার্ডধারীদের মাঝে চাল বিতরণের কার্যক্রম শুরু করা হয়। এসময় দেখা যায় দুর্গন্ধযুক্ত পচা ও জমাটবাধা চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এসময় পচা ও নিম্নমানের চাল পেয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেন সুবিধাভোগীরা।
জানা যায়, পোগলদিঘা ইউনিয়নের ৪৫৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের জন্য দুঃস্থ ও অসহায় নারীদের মাঝে প্রতিমাসে ৩০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়। ৩ মাস পর ইউনিয়ন পরিষদ গোডাউন থেকে ৩০ কেজি করে ৩ বস্তা চাল উত্তোলন করেন কার্ডধারীরা। এসময় গোডাউনে জমাট বাধা পচা চাল বিতরণ করতে দেখা যায়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কার্ডধারী বলেন, ‘লালচে, দুর্গন্ধযুক্ত ও অনেকটা পচা এই চাল মানুষ কেন কোনো পশুরও খাওয়ার যোগ্য না। এসব চাল খেলে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়বে। এক রকম বাধ্য হয়েই নিতে হচ্ছে।
পোগলদিঘা ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. লাল মিয়া বলেন, খাদ্যগুদাম থেকে চালের বস্তা গুলো সরবরাহ করা হয়। এ মাসে ৩ মাসের চাল একবারে দিয়েছে। ফলে সব বস্তা দেখে নেওয়া সম্ভব হয় না। তবে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরার প্রশাসনের ইতিহাসে নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে, জেলার প্রথম নারী জেলা প্রশাসক (ডিসি) হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন মিজ আফরোজা আখতার। গত শনিবার মধ্যরাতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে তার এ নিয়োগের ঘোষণা দেওয়া হয়।
মিজ আফরোজা আখতার বর্তমানে পাবনা ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরে জোনাল সেটেলমেন্ট কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি বর্তমান জেলা প্রশাসক মোস্তাক আহমেদের স্থলাভিষিক্ত হবেন।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাম্প্রতিক এই প্রশাসনিক রদবদলের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরাসহ দেশের ১৫টি জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসানকে নোয়াখালী, কুষ্টিয়ার ডিসি আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীনকে হবিগঞ্জ, ভোলার ডিসি মো. আজাদ জাহানকে গাজীপুর, বরগুনার ডিসি মোহাম্মদ শফিউল আলমকে ঢাকা, সিরাজগঞ্জের ডিসি মুহাম্মদ নজরুল ইসলামকে গাইবান্ধা এবং খুলনার ডিসি মো. তৌফিকুর রহমানকে বগুড়ার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সিলেট জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সন্দ্বীপ কুমার সিংহকে বরগুনা, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের সচিব (উপসচিব) মো. আমিনুল ইসলামকে সিরাজগঞ্জ, বাণিজ্য উপদেষ্টার একান্ত সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদকে মাগুরা, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপসচিব আবু সাঈদকে পিরোজপুর, স্থানীয় সরকার ফেনীর উপপরিচালক গোলাম মো. বাতেনকে বাগেরহাট, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের একান্ত সচিব স. ম. জামশেদ খোন্দকারকে খুলনা, রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের পরিচালক মো. ইকবাল হোসেনকে কুষ্টিয়া এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের উপসচিব ডা. শামীম রহমানকে ভোলার জেলা প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘদিন ধরে পুরুষ কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে পরিচালিত সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনে এবার প্রথমবারের মতো একজন নারী সর্বোচ্চ প্রশাসনিক দায়িত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছেন, যেটি জেলার নারী নেতৃত্বের অগ্রযাত্রায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে বলে আশা করছেন স্থানীয়রা।