জামালপুরে ১২০ টাকা খরচে পুলিশে চাকরি পেলেন ৮৭ জন তরুণ-তরুণী। এর মধ্যে ১৩ জন নারী, ৭৪ জন পুরুষ। ১২০ টাকা দিয়ে আবেদন ফরম পূরণের পর নিয়োগ প্রক্রিয়ায় তাদের আর কোনো অর্থ খরচ করতে হয়নি বলে জানিয়েছেন জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন।
রোববার রাত ১২টার দিকে জামালপুর পুলিশ লাইনসে পুলিশ কনস্টেবল পদের জন্য মনোনীতদের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণা করা হয়। চূড়ান্তভাবে নির্বাচিতদের পুলিশ সুপার ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়ে বরণ করে নেন।
সদর উপজেলার টিকরাকান্দি গ্রামের সোমাইয়া আক্তার রিচি। বাবা হাফিজুল ইসলাম বিনা বেতনে স্থানীয় একটি স্কুলের নৈশপ্রহরী। পরীক্ষাকেন্দ্রে যাতায়াতের জন্য বান্ধবীর কাছ থেকে ৪০০ টাকা ধার করে রিচি দাঁড়িয়েছিলেন জামালপুর পুলিশ লাইনসে। পুলিশ কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত হওয়ার ঘোষণা শুনে আনন্দে কেঁদে ফেলেন তিনি। রিচি বলেন, সংসারে আয়-রোজগারের কেউ নেই। তাই চাকরিটা খুব প্রয়োজন ছিল।
ভেলামারি গ্রামের মাহমুদ হাসান সোহানের মা-বাবা মারা গেছেন কয়েক বছর আগে। ছোট বোন সুমাইয়াকে নিয়ে দুই ভাই-বোনের সংসার চলত প্রাইভেট পড়ানোর টাকায়। বিনা পয়সায় পুলিশে চাকরি পেয়ে সোহান আনন্দে আত্মহারা।
মাদারগঞ্জের তারতাপাড়া গ্রামের বর্গাচাষি আকরাম হোসেনের ছেলে রাশেদুল এর আগেও কনস্টেবল পদে চাকরির জন্য মুখোমুখি হয়েছিলেন তিন বার। কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়েন বারবার। তবে হতাশ না হয়ে কঠোর পরিশ্রম আর চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে ফের অংশ নেন। অবশেষে সফলতা পেয়েছেন এবার।
জেলা পুলিশ জানিয়েছে, নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন ২ হাজার ৯৫৪ জন প্রার্থী। শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের লিখিত পরীক্ষা হয়। সর্বশেষ সেই পরীক্ষায় যারা কৃতকার্য হন, তাদের মধ্য থেকে ১৬৮ জন মুখোমুখি হন মৌখিক পরীক্ষায়। তাদের মধ্য থেকেই নির্বাচিত হয়েছেন ৮৭ জন।
পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, আবেদনকারীদের ঘুষ কিংবা দালালদের মাধ্যমে চাকরির সুযোগ দেয়া হয়নি। কোনো ধরনের তদবির ছাড়াই শুধু মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে ১৩ জন নারী ও ৭৪ জন পুরুষকে কনস্টেবল পদে চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত করা হয়েছে। নিয়োগ প্রক্রিয়াটি চ্যালেঞ্জিং ও খুবই কঠিন কাজ। সেটি আমরা সফলভাবে সম্পন্ন করেছি।
মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ চলছে দেশের বেশির ভাগ জেলায়। এদিকে বিদ্যুৎ সংকটে লোডশেডিং চরমে। দিনে ১২ ঘণ্টাও বিদ্যুৎবিহীন থাকছে বিভিন্ন এলাকা। এ অবস্থায় চাহিদা বেড়েছে তালপাতার হাতপাখার। আর সুযোগটা লুফে নিতে কালক্ষেপণ করেননি ব্যবসায়ীরাও। ৩০ টাকার হাতপাখা বিভিন্ন স্থানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দামে। বিস্তারিত প্রতিবেদকদের পাঠানো প্রতিবেদনে।
মেহেরপুর
চলতি তাপপ্রবাহে খেটে খাওয়া মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। গরমের মধ্যে বিদ্যুৎ চলে গেলে মেহেরপুরে সাধারণ মানুষের এখন একটাই ভরসা- তা হলো হাতপাখা। কেননা, ইতিমধ্যেই বাজারে সংকট দেখা দিয়েছে আইপিএস ও চার্জার ফ্যানের। তীব্র গরমের মধ্যে শরীর শীতল করতে তাই তালপাতার হাতপাখাই সই!
শুক্রবার বিভাগের ঐতিহ্যবাহী বামন্দী বাজার ঘুরে দেখা যায়, এলাকায় মৌসুমি পাখা ব্যবসায়ীর কাছ থেকে হাতপাখা কিনতে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। সপ্তাহখানেক আগে যে হাতপাখা ৩০ থেকে ৩৫ টাকায় বিক্রি হতো, বর্তমানে তা ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
হাতপাখা প্রস্তুতকারক রেখা বালা বলেন, ‘আমরা গরমের মৌসুম পড়লেই পাখা বানানোর কাজ শুরু করি। বছরের অন্য সময়ে ঝুড়ি ও সরপোশ তৈরি করি। একটা পাখা তৈরি করে পাইকারি ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি করতাম। বর্তমানে বাজারে হাতপাখার চাহিদা বেশি। তাই পাখা পাইকারি বিক্রি করছি ৫৫-৬০ টাকা করে।’
গাংনী উপজেলার ষোলটাকা গ্রামের পাখা ব্যবসায়ী দীপক বলেন, ‘গড়ে আমরা ৮০ টাকা করে পিস বিক্রি করছি। তবে এটা ঠিক যে, কারেন্টের অবস্থা এমন থাকলে আগামী হাটে এই হাতপাখা ১০০ টাকা করে বিক্রি হবে।’
উপজেলার মটমুড়া গ্রামের গৃহিণী শারমিন বলেন, ‘বাড়িতে এগারো মাসের বাচ্চা। সারা দিন দুই-তিন ঘণ্টা কারেন্ট থাকে। রাতের বেলায়ও একই অবস্থা। গরিব মানুষ, আমাদের তো আর আইপিএস-টাইপিএস কেনার সামর্থ্য নাই। আমাদের এসি বলেন আর আইপিএস বলেন সবই হাতপাখা। যতক্ষণ হাত ঘুরাবেন ততক্ষণ শরীর ঠাণ্ডা।’
বাগেরহাট
বাগেরহাট জেলার ওপর দিয়েও বয়ে যাচ্ছে মৃদু তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, বৃষ্টি ছাড়া সহসা কমার সম্ভাবনা নেই এই গরম।
এদিকে তীব্র গরম ও লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মানুষ। ফলে বেচাকেনা বেড়েছে হাতপাখা ও হারিকেনের দোকানে।
নাগেরবাজার এলাকার হাতপাখা দোকানি লক্ষ্মী রানী সাহা বলেন, ‘গত কয়েক বছরে হাতপাখার এমন চাহিদা দেখিনি। আমার দোকানে যত হাতপাখা ছিল সব বিক্রি হয়ে গেছে। নতুন করে হাতপাখার অর্ডার দিয়েছি।’
রাজবাড়ী
রাজবাড়ীতে গত দুদিন ধরে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক শোরুম ও দোকান থেকে বৈদ্যুতিক চার্জার ফ্যান উধাও। টাকা দিয়েও মিলছে না চার্জার ফ্যান। আর তালপাতা দিয়ে তৈরি ৩০ থেকে ৪০ টাকার হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা পর্যন্ত।
সরেজমিনে রাজবাড়ী বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দুই থেকে তিনটি দোকানে তালপাতার হাতপাখা বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে ৪০ টাকার তালপাতার পাখা মানভেদে বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকায়, বাঁশের হাতলের পাখা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।
ভিশন শোরুমে আসা সুমন শিকদার বলেন, ‘একে তো প্রচণ্ড গরম, তার ওপর আবার শুরু হয়েছে তীব্র লোডশেডিং। তাই ভিশন শোরুমে চার্জার ফ্যান কিনতে এসেছিলাম। কিন্তু এসে দেখলাম ফ্যান নেই। সব নাকি শেষ হয়ে গেছে। এখন হাতপাখাই ভরসা।’
পাখা ক্রেতা মীর সৌরভ বলেন, ‘এক ঘণ্টা পরপর লোডশেডিং হয়। দিনে কষ্ট সহ্য করে থাকা গেলেও রাতে আর সহ্য হয় না। এ ছাড়া রাতে বেশি সমস্যা হয় বাচ্চাদের। তারা গরমে ঘুমাতে পারে না। তাই হাতপাখা কিনতে আসলাম। কিন্তু এসে দেখি গরমের সঙ্গে সঙ্গে হাতপাখার বাজারেও আগুন। ৩০ টাকার পাখা চাচ্ছে ৮০ টাকা। দামাদামির সুযোগ নেই। বেশি দাম হলেও বাধ্য হয়ে কিনতে হলো।’
পাখা বিক্রেতা সেকেন্দার মন্ডল বলেন, ‘আগে পাখা কম দামে কিনতাম, কম দামে বিক্রি করতাম। কিন্তু এখন বেশি দাম দিয়ে কিনতে হচ্ছে। তাই বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে ক্রেতারা সেটা বোঝার চেষ্টা করছেন না। তারা ভাবছেন আমরাই হয়তো সুযোগ বুঝে দাম বাড়িয়েছি।’
উত্তরের জেলা নওগাঁয় তীব্র দাবদাহ অব্যাহত রয়েছে। কাঠফাটা রোদে দুঃসহ হয়ে উঠেছে জনজীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া মানুষজন পড়েছেন ভোগান্তিতে। প্রতিদিন সকাল থেকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে গরমের তীব্রতা। এর মধ্যে জেলাজুড়ে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের ফলে গ্রীষ্মের অত্যধিক এ তাপমাত্রা অসহনীয় মাত্রায় পৌঁছেছে। প্রচণ্ড গরমে শিশু ও নারীরা অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
জেলার বদলগাছী উপজেলা আবহাওয়া অফিসের উচ্চ পর্যবেক্ষক হামিদুল হক বলেন, গতকাল মঙ্গলবার বেলা ১টায় নওগাঁয় তাপমাত্রা ছিল ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিন সকাল ৯টায় ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১টায় তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। ওইদিন সকাল ১০টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগের দিন বুধবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
জেলায় চলমান এ দাবদাহ আরও কয়েক দিন চলবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদ হামিদুল হক বলেন, আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে নওগাঁয় বৃষ্টিপাতের কোনো সম্ভাবনা নেই। এ সময়ে জেলার তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে তীব্র গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে দিনমজুরদের জীবন। দৈনিক মজুরিতে কাজ করতে এসে হাঁপিয়ে উঠেছেন তারা। অসহনীয় রোদের মধ্যেও পেটের টানে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা। তীব্র গরমের মধ্যে কাজ করতে গিয়ে ঘেমে দুর্বলও হয়ে পড়ছেন।
নওগাঁ শহর ঘুরে দেখা যায়, অতিরিক্ত গরমের কারণে রাস্তাঘাটে মানুষের উপস্থিতি ছিল খুবই কম। যাত্রীর অভাবে গাছ বা অন্য কিছুর ছায়ায় বসে অলস সময় পার করছেন রিকশা ও ইজিবাইকচালকরা। তীব্র গরমে স্বস্তি পেতে অনেকেই শরবত, তালশাঁস কিংবা ঠাণ্ডা পানি পান করছেন।
শহরের বাসিন্দারা বলছেন, প্রচণ্ড রোদের মধ্যে সারা দিন বাইরে কাজ করে রাতে ঘুমানোর সময় তাদের লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হয়। এর ফলে আরও বেশি দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে তাদের জীবন।
শহরের তাজের মোড়ের রিকশাচালক শহিদুল হক বলেন, ‘এত গরম আগে কখনো হয়নি। খুব কষ্ট হচ্ছে। মনে হয় রোদে হাত-পা পুড়ে যাবে। পেটের দায়ে বাধ্য হয়েই এই গরমের মধ্যেও রিকশা চালাতে হচ্ছে।’
শহরের উকিলপাড়া মহল্লার বাসিন্দা শারমিন বেগম বলেন, ‘একদিকে প্রচণ্ড গরম অন্যদিকে ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে বাচ্চাদের নিয়ে খুব সমস্যায় আছি। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাইরে যাচ্ছি না। কিন্তু ঘরের মধ্যে থেকেও গরম থেকে রেহাই নেই।’
এদিকে অতিরিক্ত গরমে হিটস্ট্রোকসহ বিভিন্ন রোগ থেকে বাঁচতে শহরবাসীদের নানা পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। একই সঙ্গে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যেতেও নিষেধ করেছেন তারা।
নওগাঁ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, তীব্র গরমে জেলায় বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে সাধারণ ডায়রিয়া, জ্বর ও সর্দি-কাশি নিয়ে প্রায় ৩৪ জন রোগী ভর্তি আছেন। তবে গরমের কারণে হিটস্ট্রোক করা কোনো রোগী এখনো পর্যন্ত ভর্তি হয়নি।
দাবদাহের মধ্যে বাইরের খোলা খাবার না খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ডা. জাহিদ নজরুল চৌধুরী বলেন, তাপমাত্রা যদি ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি উঠে যায়, তবে হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যাবে। এ কারণে গ্রীষ্মকালীন ফল, যেমন- আম, কাঁঠাল ও লিচুসহ অন্য রসালো ফল পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। তবে ডায়াবেটিক রোগীদের মিষ্টি জাতীয় ফল মাত্রাতিরিক্ত না খাওয়াই ভালো। যথাসম্ভব সবাইকে তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে। আর এই তীব্র গরমে খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে রোদে বের না হওয়াই ভালো।
রাজবাড়ীর পাংশা ও কালুখালীতে এক নারী ও কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার সকালে উপজেলার বাবুপাড়া ইউনিয়নের দুর্গাপুর এলাকা থেকে ভ্যানচালক হাসিবের (১২) আর কালুখালী উপজেলার মাছবাড়ি ইউনিয়নের একটি এলাকা থেকে রাশিদা বেগম (২৫) নামের ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হাসিব উপজেলার মাছপাড়া ইউনিয়নের খালকুলা গ্রামের হামিদুল শেখের ছেলে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সকালে হাসিব ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর সন্ধ্যায় আর বাড়িতে ফিরে আসেনি। এ ঘটনায় হাসিবের বাবা পাংশা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরে বুধবার সকাল ৭টার দিকে হাসিবের মরদেহ উদ্ধার করে। ভ্যান ছিনতাইয়ের জন্য হাসিবকে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
অন্যদিকে জমির একটি দলিল সংক্রান্ত বিষয়কে কেন্দ্র করে রশিদার বাবার বাড়িতে গিয়ে ইট দিয়ে তাকে আঘাত করে তাকে হত্যা করেন স্বামী আব্দুল। এরপর থেকে রাশিদার স্বামী পলাতক রয়েছে।
রাজবাড়ী জেলা পুলিশ সুপার এম এম শাকিলুজ্জামান বলেন, দুইটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের মরদেহ মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। দুইটি ঘটনা নিয়ে পুলিশ মাঠে কাজ করছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ অনিরাপদ অঞ্চল হয়ে উঠছে। স্থানীয়রা রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীদের ভয়ে এলাকা ছেড়েছে। শিশুরা এখন মাঠে খেলতে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মাঝিরাও রাত হলে ভয়ে ক্যাম্প ছেড়ে পালিয়ে যান। গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে সন্ত্রাসীদের আটক করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকেও ভাবতে হচ্ছে।
টেকনাফের বিভিন্ন পাহাড়ে রোহিঙ্গারা গড়ে তুলেছে ‘অপহরণ সংগঠন’। চলছে বিদেশি পিস্তল, বিদেশি ইয়াবার রমরমা বাণিজ্য। বাধা দিতে গেলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপরও গুলি চালাচ্ছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা।
এ ছাড়া বিশ্বের উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। অপহরণকারী চক্রের সদস্যদের নিয়মিত অভিযানে আটক করেও ঠেকানো যাচ্ছে না। হত্যাকাণ্ড, অপহরণ, ধর্ষণ, স্বর্ণের চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যকলাপে অপরাধের রাজ্য তৈরি করেছে রোহিঙ্গারা।
একসময়ের শান্তিপূর্ণ টেকনাফে এখন অপহরণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। রোহিঙ্গাদের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারাও অপহরণের শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। টেকনাফের পাহাড়-জঙ্গলে আস্তানা গড়ে অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায় করছে রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীরা। মুক্তিপণ দিলেও আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে ফেলে লাশ মাটির গর্তে পুঁতে রাখা হচ্ছে। এসব কঙ্কাল উদ্ধার করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
ক্যাম্পে খুন এখন নিয়মিত ঘটনা। যে একটু পরিচিত হয়ে উঠছে, তাকেই খুন করা হচ্ছে।
গত রোববার অপহরণের শিকার হয়েছে হ্নীলা ইউনিয়নের লেদা এলাকার দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্র মোহাম্মদ হোসাইন সূর্য। তার পরিবারের কাছে ইতিমধ্যে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছে অপহরণকারীরা।
স্থানীয় লেদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র সূর্য এলাকার সোলতান আহমেদের ছেলে। রোববার স্কুল ছুটির পর অপহরণ করা হয় তাকে। সোলতান জানান, দুর্বৃত্তরা ফোন করে বলছে যে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ না দিলে ছেলেকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারা হবে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানো হয়েছে।
এদিকে গত শুক্রবার লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে পাঁচ রোহিঙ্গা যুবককে অপহরণ করে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছে অপহরণকারীরা। মুক্তিপণ না দেয়ায় গত শনিবার রাতে এক যুবকের হাতের কবজি কেটে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। পরে ওই হাতসহ তাকে ফেরত পাঠায় অভিভাবকের কাছে। মুক্তিপণ না দিলে বাকিদের হত্যা করা হবে বলে পরিবারের কাছে হুমকি দিয়েছে অপহরণকারীরা।
হ্নীলা ইউপির চেয়ারম্যান রাশেদ মাহমুদ আলী বলেন, তার ইউনিয়নের দমদমিয়া, জাদিমোরা, লেদা, আলীখালী, রঙ্গীখালী, পানখালী, কম্মুনিয়াপাড়া ও মরিচ্চ্যঘোনা এলাকার মানুষ অপহরণ আতঙ্কে ভুগছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া, হোয়াইক্যং, হ্নীলা ও সদর ইউনিয়নে কয়েকটি পাহাড় আছে। এসব পাহাড়ে আস্তানা গেড়েছে ১০-১২টি রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী গোষ্ঠী। তাদের অপহরণ থেকে রক্ষা পাচ্ছে না শিশু, ছেলেমেয়ে, স্কুলছাত্র এমনকি অটোরিকশাচালকরা। যেকোনো সময় কেউ অপহরণের শিকার হন। ফলে আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন সেখানকার বাসিন্দারা।
গত ২৮ এপ্রিল পাত্রী দেখতে গিয়ে অপহরণের শিকার হন কক্সবাজারের চৌফলদণ্ডী উত্তরপাড়ার মোহাম্মদ আলমের ছেলে জমির হোসেন রুবেল। তার দুই বন্ধু ঈদগাঁও উপজেলার জালালাবাদ সওদাগরপাড়া এলাকার মোহাম্মদ ইউসুফ ও কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া এলাকার ইমরান। গত ২৪ মে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা এখন পুলিশের রিমান্ডে রয়েছে।
টেকনাফ থানার তথ্যমতে, ২০২২ সালের ১ নভেম্বর থেকে গত ৩০ মে পর্যন্ত সাত মাসে টেকনাফ থানায় অপহরণের মামলা হয়েছে আটটি। এসব মামলায় আসামির সংখ্যা অন্তত ৫০। এ পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা হয়েছে ২০ জনকে। একই সময়ে অপহৃত অনেককে উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বাহারছড়ার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. হুমায়ুন বলেন, ‘এই ইউনিয়নে অর্ধলাখ মানুষের বসবাস। অধিকাংশই জেলে এবং কৃষিকাজ করেন। সবাই অপহরণ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে দিনেও ঘর থেকে বের হন না।’
বাহারছড়া ইউনিয়নের এক নারী সদস্য এবং ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চৌকিদার মো. ইসহাক অপহরণ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেও উল্লেখ করেন হুমায়ুন। তিনি বলেন, ‘অপহরণে জড়িত থাকায় বর্তমানে কারাগারে ইসহাক। তবে নারী সদস্য এখনো গ্রেপ্তার হননি। বারবার অভিযোগ করার পরও অপহরণরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি পুলিশ। এ অবস্থায় চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছি আমরা।’
বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন বলেন, পাহাড়ে দীর্ঘদিন ধরে অপরাধী কোনো চক্র রয়েছে, যাদের অবস্থান বেশ শক্ত। গত ৫ মাসে তারা বাহারছড়া ইউনিয়নের ২০ জনকে অপহরণ করে। তাদের দমনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর অভিযানের দাবি করেন তিনি।
হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর আহমদ আনোয়ারী বলেন, ‘তার ইউনিয়নের কম্বনিয়াপাড়া মহেশখালিয়াপাড়া, কাঞ্জরপাড়া, খারাংখালী, সাতঘড়িয়াপাড়া ও রইক্ষ্যম এলাকায় অন্তত ৭০০ পরিবার অপহরণ আতঙ্কে ভুগছে। এসব গ্রামের চারজনকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়েছে।
টেকনাফ থানার ওসি আবদুল হালিম বলেন, ‘যারা মুক্তিপণ দিয়ে ফিরে আসছেন, তাদের কেউ থানায় অভিযোগ করছেন না। তাদের অনেকের সঙ্গে ইয়াবা ব্যবসার সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। একাধিক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী বাহিনী এসব অপহরণের সঙ্গে জড়িত। তবে তাদের সঙ্গে স্থানীয় কিছু লোকও আছে।
টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, ‘এসব এলাকার পাহাড়-জঙ্গল পরিষ্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। পাশাপাশি সিসিটিভি ক্যামেরা ও পুলিশ চৌকি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এগুলো বাস্তবায়ন হলে অপহরণের ঘটনা কমে যাবে। এ জন্য পাহাড়ি এলাকার চাষিদের দলবেঁধে কাজে যাওয়ার কথা বলেছি।’
ঠাকুরগাঁওয়ের ভুল্লীতে পুত্রবধূর যৌতুকের মামলায় শ্বশুর হাসান আলীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সদর উপজেলার ভুল্লি কিসমত শুকানপুকুরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ভুল্লি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিক হাসান জানান, দুদিন আগে যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগ এনে রেজিয়া বেগম তার স্বামী জয়নাল আবেদিন, শ্বশুর হাসান আলী, শাশুড়ি জামিলা বেগম ও দেবর বাবুল ইসলামসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনের নামে ভুল্লি থানায় এজাহার দেন। প্রাথমিক তদন্ত শেষে এজাহারটি মামলা হিসেবে নিয়ে অভিযান জালিয়ে শ্বশুর হাসান আলীকে আটক করা হয়েছে।
মামলার বাদী রেজিয়া বেগম জানান, ১৬ বছর আগে জয়নালের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তাদের সংসারে এক মেয়ে ও এ ছেলে জন্ম নিয়েছে। কিন্তু জয়নাল বিয়ে বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়লে তা নিয়ে রেজিয়ার সঙ্গে তার ঝগড়া হতো। যৌতুকের জন্যও চাপ দিতেন জয়নাল। তারপরও সংসার টিকিয়ে রাখতে নির্যাতন সহ্য করতেন।
রেজিয়া বেগম বলেন, কয়েক দফায় বাবার হালের গরু ও কামলা দিয়ে জমানো টাকা এনে দিয়েছি। কিন্তু যৌতুকের আবদার দিন দিন বাড়ছিল। সম্প্রতি স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা যৌতুকের জন্য মারধর করে আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দেয়। আমি বাবার বাসায় গিয়ে উঠি। সেখানে তারা গিয়ে বলে, যৌতুক দিতে পারলে সংসার করতে পারব, না দিলে সংসার করতে পারব না। তাই বিচারের প্রত্যাশায় মামলা করেছি।
এ বিষয়ে জানতে জয়নাল আবেদিন ও তার ভাইয়ের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও তারা রিসিভ করেননি। বাড়িতে গিয়েও জয়নাল, তার মা ও ভাইকে পাওয়া যায়নি।
ভুল্লি থানার ওসি বলেন, মামলার বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। শিগগিরই গ্রেপ্তার করে তাদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।
জন্মদিন এলে স্বাভাবিকভাবেই অনেকে শুভেচ্ছা জানান। যার জন্মদিন তিনি যদি পরিচিত বা ক্ষমতাবান হন, তাহলে তো শুভেচ্ছার বহরটা আরও বেশিই হয়। চট্টগ্রামের হাটহাজারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রুহুল আমীন সবুজও জন্মদিনে ফেসবুকে এমন অনেক শুভেচ্ছাই পেয়েছেন। তাকে শুভেচ্ছা জানানোর তালিকায় রয়েছেন ছাত্রদলের কয়েকজন নেতাও। সেই শুভেচ্ছা নিয়ে আবার ক্ষোভ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রোববার হাটহাজারী মডেল থানার ওসি রুহুল আমীন সবুজের জন্মদিন ছিল। সেই দিন তার সঙ্গে দেখা করে ও ফেসবুকে অনেকে শুভেচ্ছা জানান। ফেসবুকে কার্ড বানিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সালাউদ্দিন খালেক, হাটহাজারী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক তকিবুল হাসান চৌধুরীসহ কয়েকজন নেতা-কর্মী।
তকিবুলের দেওয়া শুভেচ্ছা কার্ডের ওপরের দিকে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রওনাকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মোহাম্মদ জুয়েলের ছবি আছে। কার্ডের নিচে এক পাশে ওসি রুহুল আমীন ও অন্য পাশে তকিবুলের ছবি।
সালাউদ্দিন খালেকের দেয়া ফেসবুক কার্ডেও ওপরে জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ছবি। মাঝে বড় করে ওসি রুহুল আমীন ও নিচে সালাউদ্দিন খালেকের ছবি।
ফেসবুক পোস্টগুলোতে রুহুল আমীনকে সৎ, যোগ্য ও বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর গর্ব ও সময়ের সাহসী যোদ্ধা হিসেবে সম্বোধন করা হয়। আর দুটি কার্ডেই একেবারে ওপরে ছাত্রদলের মূলনীতি ‘শিক্ষা, শান্তি ও প্রগতি’ লেখা ছিল।
এদিকে এই শুভেচ্ছা পোস্টগুলো ছড়িয়ে পড়লে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। এ নিয়ে সোমবার রাতে ফেসবুকে উত্তর জেলা যুবলীগের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও পাঠাগার বিষয়ক সম্পাদক জয়নাল আবেদিন লিখেন, ‘হাটহাজারী মডেল থানার ওসি সাহেবকে নিয়ে উপজেলা বিএনপি, ছাত্রদলের রমরমা অবস্থা দেখি। ওসি সাহেব আগামী নির্বাচনে হাটহাজারী থেকে বিএনপির প্রার্থী হবেন নাকি?’
জয়নালের সেই পোস্টটিতে ছাত্রলীগ-যুবলীগের অনেকেই মন্তব্য করেছেন। তাদের অনেকে লিখেছেন, একজন ওসিকে নিয়ে ছাত্রদল নেতাদের উচ্ছ্বাস দেখে মনে হয় ওসি তাদের কেউ। কেউ কেউ আবার ওসির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেছেন জানিয়ে লিখেছেন, ওসিকে বিতর্কিত করতে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ছাত্রদলের নেতারা। ওসি এ নিয়ে বিব্রত, তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন। এর কিছুক্ষণ পর থেকে অবশ্য ওসিকে জন্মদিনে জানানো শুভেচ্ছা কার্ডগুলো ছাত্রদল নেতাদের ফেসবুকে আর দেখা যায়নি।
এ নিয়ে জানতে ফোন করা হলে হাটহাজারী মডেল থানার ওসি রুহুল আমীন বিব্রত নন বলে জানিয়েছেন। বিএনপির নেতাদের সঙ্গে নিজের ছবি লাগিয়ে শুভেচ্ছা পোস্ট বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ‘বিব্রত হওয়ার কী আছে?’ বলেই সংযোগ কেটে দেন তিনি।
এরপর কয়েকবার ফোন করা হলেও ওসি আর কল রিসিভ করেননি। এ বিষয়ে ছাত্রদলের নেতাদের বক্তব্য নেয়াও সম্ভব হয়নি।
বাস, মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাকের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল পুনর্বিবেচনা করে ৩০ বছর নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। সম্প্রতি নগরের স্টেশন রোডে আন্তজিলা বাস মালিক সমিতির সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ দাবি জানান সংগঠনটির নেতারা।
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের নেতাদের দাবি, ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের কারণে পরিবহন ব্যায় বাড়বে। অন্যদিকে সম্প্রতি যাত্রীবাহী বাস-মিনিবাসের ২০ বছর এবং পণ্যবাহী ট্রাক-কাভার্ড ভ্যানের ২৫ বছর অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ। এতে পরিবহন খাতসংশ্লিষ্ট সবাই ক্ষতির মুখে পড়বেন। তাই বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করে বাস, মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাকের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ৩০ বছর করার দাবি তাদের।
সভায় সংগঠনের মহাসচিব মনজুরুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘করোনা মহামারির দীর্ঘ সময়ে গাড়ির মালিক ও শ্রমিকরা কাজ না পেয়ে অত্যন্ত দুর্বিষহ সময় কাটিয়েছেন। সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রণোদনা আমরা সাধারণ মালিকরা পাইনি। অথচ গাড়ির সব কর নিয়মিত পরিশোধ করতে হয়েছে। এতে মালিক-শ্রমিকরা নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে এখন আবার গাড়ির আয়ুষ্কাল কমিয়ে দেয়া হয়েছে। তাই আমরা বাস-মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাকের আয়ুষ্কাল ৩০ বছর করার যৌক্তিক দাবি জানাচ্ছি।’
চট্টগ্রাম সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের যুগ্ম সম্পাদক মো. শাহজাহান বলেন, বাস-মিনিবাস ও মালবাহী ট্রাকের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল বাড়ানোর দাবি এবং বিভিন্নভাবে গাড়ির মালিক ও শ্রমিকদের হয়রানি বন্ধের দাবি বাস্তবায়নে সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। আলহাজ্ব কফিল উদ্দিন আহমেদ, আলহাজ্ব মোরশেদুল আলম কাদেরী ও হাজী জহুর আহমেদকে সমন্বয়কের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সংগঠনের সহসভাপতি নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যদের মধ্যে সৈয়দ হোসেন, আহসান উল্লাহ চৌধুরী, আব্দুর রহমান, মোশারফ হোসেন, মনসুর আনোয়ার, ফারুক খান, মো. জাফর, মো. শাহজাহান, মনসুর রহমান, মো. ইসহাক, রেজাউল খান, মনসুর, আবুল বশর, মোবারক হোসেন, খোরশেদ আলম, মো. হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মেহেরপুরের গাংনীতে ব্যাটারিচালিত ভ্যানের চার্জার খুলতে গিয়ে এক মা ও তার ১৪ মাস বয়সী মেয়ের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলার কাজিপুর ইউনিয়নের হাড়াভাঙা গ্রামে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন ওই গ্রামের মিন্টু মিয়ার স্ত্রী তাসলিমা খাতুন (২৩) এবং তাদের কন্যা শিশু মারিয়া।
কাজিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলম হুসাইন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ‘মিন্টু মিয়া তার নিজ বাড়িতে ব্যাটারিচালিত পাখি ভ্যান চার্জে দিয়ে বাইরে যায়। চার্জ দেয়া শেষ হলে মিন্টুর স্ত্রী তাসলিমা চৌদ্দ মাস বয়সি মেয়ে মারিয়াকে কোলে নিয়ে চার্জার খুলতে যান। এস বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই মা-মেয়ের মৃত্যু হয়।’
ভবানীপুর পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসেছি। আমাদের প্রাথমিক তদন্ত চলমান রয়েছে।’
গাইবান্ধায় মাটির গাড়ি জমির ওপর দিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে দ্বন্দ্বের জের ধরে মারধরে কৃষক জাহাঙ্গীর আলম (৪০) নিহত হয়েছেন। হত্যায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করেছিল পুলিশ। হত্যা মামলায় সেই তিনজনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিহত জাহাঙ্গীর আলম উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ গয়েশপুর (কামাড়পাড়া) গ্রামের লাল মিয়া ওরফে কোনা মিয়ার ছেলে। যে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তারা হলেন একই এলাকার মৃত আমান উল্লাহর ছেলে আব্দুর রেজ্জাক (৬৫) ও নান্নু মিয়া আকন্দ (৫৫) এবং দারাজ মিয়ার ছেলে সাজ্জাম মিয়া (২২)।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) মাহাবুব আলম জানান, সোমবার সন্ধ্যায় মারধরে আহত জাহাঙ্গীরকে সাদুল্লাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। পরে এ ঘটনায় তিনজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, ওই এলাকার রুহুল আমিন নামের এক ব্যক্তির আবাদি জমির ওপর দিয়ে ট্রাক্টরে করে মাটি নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর পর্যায়ে সেখানে মারধরে গুরুতর আহত হন জাহাঙ্গীর। তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে তিনজনকে আটক করে পুলিশ।
এ ঘটনায় জাহাঙ্গীরের ছোট ভাই লিখন আকন্দ সাদুল্লাপুর থানায় রেজ্জাক, নান্নু ও সাজ্জাতকে প্রধান আসামী হিসেবে উল্লেখ করে ২১ জনের নামে হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে দুপুরে তিনজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সাদুল্লাপুর থানার ওসি (তদন্ত) মাহাবুব আলম বলেন, সোমবার রাতে রেজ্জাকের বাড়ি থেকে জাহাঙ্গীর আলম নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্ত শেষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মরদেহ দাফন করা হয়েছে। তদন্ত ও ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
কক্সবাজারের টেকনাফে শহিদ উল্লাহ নামে একজনের বিরুদ্ধে এক নারীকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। শহিদ উল্লাহ স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ছিদ্দিক আহমদের ভাজিতা। ভুক্তভোগীর পরিবার ও এলাকাবাসীর অভিযোগ, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় ইউপি সদস্য ছিদ্দিকের প্রশ্রয় রয়েছে।
এরই মধ্যে এ ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন ভুক্তভোগী। সিদ্দিকসহ শহিদকে ওই মামলায় গ্রেপ্তারের দাবিতে মঙ্গলবার বিকেলে সাবরাং আলীর ডেইল এলাকায় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন এলাকাবাসী।
ধর্ষণচেষ্টার ঘটনায় বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগী নারী মামলা করেছেন কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল (৩) আদালতে। মামলায় শহিদকে মূল আসামি এবং তার চাচা ইউপি সদস্য ছিদ্দিককে ২ নম্বর আসামি করা হয়েছে।
ভুক্তভোগী নারী বলেন, শহিদ আমাকে দীর্ঘ দিন ধরে আমার সঙ্গে সম্পর্ক করার প্রস্তাব দিয়ে আসছে। আমি রাজি না হওয়ায় বলত, আমাকে নির্যাতন করবে। শেষ পর্যন্ত আমাকে ধর্ষণের চেষ্টা করে এখন এলাকায় ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমার পরিবারকে নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে। আমি আমার পরিবারের নিরাপত্তা চাই, আমার ওপর যে নির্যাতন হয়েছে তার সুষ্ঠু বিচার চাই।
মামলার প্রধান আসামি শহিদ ছাড়াও তার চাচা ছিদ্দিককেও গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন ওই মেয়ের পরিবারের সদস্যরা। তারা বলেন, আলীর ডেইল এলাকায় সংঘটিত প্রায় সব অপরাধের ক্ষেত্রেই অপরাধীরা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যায়। ফলে এলাকায় দিন দিন অপরাধ বেড়ে চলেছে।
মানববন্ধনে উপস্থিত স্থানীয়রা বলেন, ওই ইউপি সদস্য দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই এলাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডকে প্রশ্রয় দিয়ে আসছেন। এতে তরুণদের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। তারা শহিদ ও ইউপি সদস্য ছিদ্দিককে গ্রেপ্তার করে বিচারের দাবি জানান। পরে সবাই এ দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শহিদ উল্লাহর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার চাচা ইউপি সদস্য ছিদ্দিক আহমদ তার বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করেন। বলেন, ঘটনা সত্য কি না, আপনারা এলাকায় এসে তদন্ত করে দেখেন।
জানতে চাইলে সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নুর হোসেন বলেন, বিষয়টি আমি এলাকার লোক মারফত শুনেছি। এখন পর্যন্ত উভয় পক্ষের কেউ আমার কাছে অভিযোগ করেনি। ভুক্তভোগী আদালতে মামলা করছে শুনেছি। আইন অনুযায়ী তার বিচার হবে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেননি। এ ঘটনায় আদালতে মামলা হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
গ্রামাঞ্চল থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা সহজ-সরল রোগীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করার কারণে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতাল থেকে চারজনকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে তাদের হাসপাতাল থেকে আটক করেন চাঁদপুর সদর মডেল থানার সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মেহরাজ মাহমুদ।
গ্রেপ্তার ৪ ব্যক্তি হলেন- শহরের পুরানবাজার পশ্চিম শ্রীরামদী মৃত মিরাজ ব্যাপারীর ছেলে মাসুদ (২৬), কোড়ালিয়া রোডের দুলালের ছেলে সবুজ (২২), ঘোষপাড়ার বিষু দের ছেলে দীপ দে (২৩) ও পুরানবাজার মেরকাটিজ রোডের কানাই দাসের ছেলে হৃদয় দাস (২৫)।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রতিদিন সকালে হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসাসেবা নেয়ার জন্য শত শত রোগী আসেন। রোগীরা যখন লাইনে দাঁড়িয়ে থাকেন টিকিট কিংবা ওষুধ নেয়ার জন্য তখনই দালালরা গিয়ে সিরিয়াল ছাড়া আগে টিকিট নিয়ে দেবেন বলে টাকা নেন। আবার যারা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে চেম্বার থেকে বের হন, তাদের এক রকম জোর করে নিয়ে যান হাসপাতালের সামনে থাকা বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। যে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় দালাল হিসেবে কাজ করেন তারা।
এএসআই মেহরাজ মাহমুদ জানান, চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের আউটডোরে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের হয়রানি করার কারণে তারা মোবাইলে ফোনে থানায় অভিযোগ করেন। তাৎক্ষণিক হাসপাতালে এসে এই চারজনকে আটক করা হয়।
চাঁদপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ আবদুর রশিদ জানান, রোগীদের একশ্রেণির দালাল বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে। তারা রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার নাম করে তাদের পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে যায়। তাদের ফাঁদে পড়ে অনেকেই সঠিক চিকিৎসাসেবা পান না। রোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে চারজনকে আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
মাদারীপুরে চার্জার ফ্যান অতিরিক্ত দামে বিক্রি করায় খান ইলেকট্রনিক্স নামের একটি প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর।
মঙ্গলবার বিকেলে অভিযান পরিচালনা করে ওই প্রতিষ্ঠানকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
সদর উপজেলার পুরান বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভোক্তা অধিকার অধিপ্তর মাদারীপুর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক জান্নাতুল ফেরদাউস।
জান্নাতুল ফেরদাউস জানান, লোডশেডিং ও তাপমাত্রা বেশি থাকার সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী চার্জার ফ্যানের দাম বেশি নিচ্ছে বলে অভিযোগ আসে। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে খান ইলেকট্রনিক্সকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। তাদেরসহ অন্য দোকানদারদের সতর্ক করা হয়।
মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন দেয়াকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের দুই পক্ষের দ্বন্দ্বে ছয় ঘণ্টা বন্ধ থাকার পর নওগাঁয় অভ্যন্তরীণ সকল রুটের বাস চলাচল শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টিকালের জন্য শ্রমিক ইউনিয়নের একাংশ দাবি আদায়ে বাস ধর্মঘটের ঘোষণা দেয়। তবে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে দুপুর ১২টার পর থেকে বাস চলাচল শুরু হয়।
শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৫ মার্চ জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার দুই মাস পার হলেও বর্তমান কমিটি সাধারণ সভা ও নির্বাচনের কোনো আয়োজন করছে না। সাধারণ শ্রমিকরা বারবার সভা ও নির্বাচনের দাবি জানালেও বর্তমান কমিটি কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৯ মে ইউনিয়নের একটি অংশ সাধারণ সভার ডাক দেয়। ওই সভা থেকে সভা ও নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার জন্য বর্তমান কমিটিকে সাত দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় নির্বাচনের দাবি তোলা শ্রমিকরা জেলার অভ্যন্তরীণ রুটে সকাল থেকে ধর্মঘট শুরু করে।
জেলা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আজাহারুল ইসলাম বলেন, ‘২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইউনিয়নের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব পায় ওই বছরের মার্চে। কিন্তু করোনার কারণে ঠিক মতো তখন কাজ করতে পারেনি কমিটি। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে গত জানুয়ারিতে সাধারণ সভা আহ্বান করা হয়েছিল। ওই সভায় ইউনিয়নের সদস্যদের মতামতের ভিত্তিতে বর্তমান কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয় এবং এটা রেজুলেশন করা রয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘কিছু লোক বর্তমান কমিটিকে অবৈধ বলে যে অভিযোগ করছে, তা মিথ্যা। সময় হলেই নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হবে। এসব আন্দোলনের ডাকে আমরা ভয় করি না। আমাদের সঙ্গেও সাধারণ শ্রমিকরা আছেন। এরই মধ্যে কিছু বাস চলাচল শুরু করেছে। ধীরে ধীরে সব বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে।’
এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়তে হয়েছে অভ্যন্তরীণ রুটের যাত্রীদের। বিশেষ করে চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী এবং শিক্ষার্থীরা বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন। তবে বাস চলাচল শুরু হওয়ায় তাদের দুর্ভোগ কিছুটা লাঘব হয়েছে বলে জানান তারা।