বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪

‘আমার মেয়েকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে’

রনি আকতারের মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের বিচার চেয়ে মানববন্ধন। ছবি: দৈনিক বাংলা
প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশিত
প্রতিনিধি, চকরিয়া (কক্সবাজার)
প্রকাশিত : ২১ মার্চ, ২০২৩ ২২:২২

কক্সবাজারের পেকুয়ায় কলেজছাত্রী রনি আকতারের হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে পেকুয়া সদরের চৌমুহনীতে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এ সময় রনি আকতারের মা অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়েকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

মানববন্ধনে রনির মা খালেদা বেগম বলেন, আমার মেয়েকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে গত ১৩ মার্চ সাতকানিয়ায় ডেকে নিয়ে যায় আমিনুর রহমান। বিয়ের কথা বললে পরদিন আমিনুরের মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজনরা তাকে নির্যাতন করে হত্যা করে। এ ঘটনায় সাতকানিয়া থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচণায় মামলা রুজু করে।’

খালেদা বেগম আরও বলেন, ‘আমার মেয়েকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করেছে আসামিরা। তাকে দাফনের আগে যারা গোসল করিয়েছে, তারা শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন দেখে আঁতকে উঠেছে। তার বুকের দুপাশ, ঘাড় ও দুই হাতে নির্যাতনের চিহ্ন ছিল। আমার মেয়েকে যারা হত্যা করেছে, আমি তাদের বিচার চাই।’

মানববন্ধনে বক্তারা জানান, নিহত রনি আকতার পেকুয়া উপজেলার টৈটং ইউনিয়নের দক্ষিণ সোনাইছড়ি এলাকার জাকের আহমদের মেয়ে। তিনি পেকুয়ার বিজনেস ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ১৩ মার্চ সকালে কলেজে যাওয়ার পথে রনিকে বিয়ের আশ্বাস দিয়ে আমিনুর রহমান সাতকানিয়ার বারদোনা গ্রামে তার বাড়িতে নিয়ে যান। পরদিন ভোরে সাতকানিয়া থানা পুলিশ সেখান থেকে রনির লাশ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় ওইদিন দুপুর পৌনে ২টার দিকে সাতজনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে মামলা হয়। মামলার আসামিরা হলেন— চট্টগ্রামের সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা এলাকার সাব্বির আহমদের ছেলে আমিনুর রহমান, তার ভগ্নিপতি মো. এনাম, ভাই মো. ফারুক, বোন হাছিনা আকতার ও নাছিমা আকতার এবং পেকুয়া সদরের শেখেরকিল্লাহ ঘোনার আবদুল হামিদ ও মো. কায়েস।

এদিকে মরদেহ উদ্ধারের পর সুরতহাল প্রতিবেদনে কীটনাশক পানে রনির মৃত্যু হয়েছে বলে উল্লেখ করে পুলিশ। এ বিষয়ে রনির মা খালেদা বেগম বলেন, নির্যাতনে মৃত্যু নিশ্চিত করার পর মুখে বিষ ঢেলে দিয়েছে হত্যাকারীরা, যেন আত্মহত্যা বলে চালানো যায়।

সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইয়াসির আরাফাত বলেন, রনিকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে যদি হত্যার আলামত আসে, অবশ্যই মামলাটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হবে এবং সে ধারায় অভিযোগপত্র দেয়া হবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন পেকুয়া উপজেলা যুবলীগ নেতা আজমগীর, সাংবাদিক এফ এম সুমন, বারবাকিয়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাক্তণ ছাত্র পরিষদের নেতা তারেক নাজেরী, টৈটং ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল হোসেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোস্তফা মানিক, উপজেলা ছাত্রলীগের নেতা মো. বাহাদুর ও নিহত কলেজছাত্রী রনি আকতারের বাবা জাকের আহমদ।


জমে উঠেছে শেরপুরের ঈদবাজার

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
শেরপুর প্রতিনিধি

শেরপুরে জমে উঠেছে ঈদবাজার। মার্কেটগুলোতে বাড়ছে ব্যবসায়ীসহ ক্রেতাদের ব্যস্ততা। সব বয়সি মানুষের মধ্যে এখন ঈদবাজার নিয়েই যত ভাবনা।

ঈদকে সামনে রেখে বিপণি বিতান, মার্কেটগুলো এখন নতুন নতুন দেশি-বিদেশি হরেক রকম জামা-কাপড়ে ঠাসা। দোকানগুলো ক্র‍েতার ভিড়ে জমজমাট। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিসহ পরিবারের সবার জন্য জামা-কাপড়, জুতো, প্রসাধনীসামগ্রী কিনতে ব্যস্ত মানুষ। বিশেষ করে পরিবারের কর্তারা ব্যস্ত পরিবারের সদস্যদের চাহিদা মেটাতে। শপিংমলগুলোতে সকাল থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত চলছে বেচা-কেনা।

ঈদের জামায় এবার মেয়েদের আলিয়া কাট, সারারা, নাইরা চলছে বেশি। ছেলেদের দৃষ্টি বেশি পাঞ্জাবির দিকে।

নারগিস নামের এক ক্রেতা বলেন, ‘পরিবারের সদস্যের জন্য প্রায় ১৫ হাজার টাকার কাপড় কিনলাম। গতবারের তুলনায় এবার দাম অনেক বেশি। যা সামর্থ্যে কুলাচ্ছে তাই কেনার চেষ্টা করছি।’

ছোট্ট জাবিরা বলে, ‘আমি মার সাথে মার্কেটে এসেছি। আলিয়া কাট জামাটা দেখছি। এটা আমার খুব পছন্দের। বান্ধবীরাও এটা কিনেছে। এই জামাটাই আমি নিব।’

ব্যবসায়ীরা জানান, ১০ রমজানের পর থেকেই তাদের ব্যবসা জমে উঠছে। বর্তমানে অত্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। বিভিন্ন মার্কেটে এখন চলছে জমজমাট বেচাকেনা। শিশু, পুরুষ ও মহিলাদের পছন্দের কাপড়-চোপড়ের দোকানগুলোতে এখন বেশ ভিড়। সামনের মাসের শুরুতে জুতা ও প্রসাধনীর দোকানগুলোতে ভিড় আরও বাড়বে।

জননী বস্ত্রালয়ের মালিক চন্দন কুমার বলেন, মার্কেটগুলোতে টাঙ্গাইলের সুতি, জামদানি, জর্জেট এবং সিল্ক শাড়ির চাহিদা এবার অনেক বেশি।

জে আর ফ্যাশনের জিহাদ বলেন, আলিয়া কাট জামার এবার ব্যাপক চাহিদা।

এদিকে ঈদের কেনাকাটায় ক্রেতাদের ভিড় জমে উঠেছে ফুটপাতগুলোতেও। বলতে গেলে ফুটপাতেই এখন মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্রদের ঈদের প্রধান বাজার। শ্রমিকশ্রেণির অনেকেই চাঁদ রাতে অথবা ১-২ দিন আগে কেনাকাটা করে। স্বল্প বেতনভোগী ও খেটে খাওয়া মানুষকেও আপাতত কেনাকাটায় খুব একটা দেখা যাচ্ছে না।

বস্ত্র মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হান্নান বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বিকিকিনি করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করায় তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর জিনিসপত্র‍ের দাম মানুষের হাতের লাগালের মধ্যেই আছে। তাই মানুষ ঈদবাজারে আগে থেকেই ঝুঁকে পড়েছে।


নোয়াখালীতে ৬৫০ টাকা দরে গরুর মাংস বিক্রি শুরু

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৩৩
নোয়াখালী প্রতিনিধি

‘প্রধানমন্ত্রীর উপহার সুলভ মূল্যে প্রাণীজ পুষ্টির সমাহার’ প্রতিপাদ্য নিয়ে নোয়াখালীতে প্রাণিজ আমিষ গরুর মাংসসহ নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে রাখতে জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উদ্যোগে ৬৫০ টাকা কেজি দরে গরুর মাংস বিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।

এর সঙ্গে আরও রয়েছে ১১০ টাকা দরে এক ডজন ডিম ও ৮০ টাকা কেজি ১ গরুর দুধ। এই কার্যক্রমের আওতায় প্রতিজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ১ কেজি মাংস এক কেজি দুধ ও এক ডজন ডিম কিনতে পারবেন।

মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান এই কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন।

কার্যক্রম উদ্বোধনের পর সাধারণ মানুষের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যায়। ক্রেতা সাধারণের সুবিধার্থে ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ভলেন্টিয়ারের সহযোগিতায় সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে মাংস কিনতে দেখা যায় ক্রেতাদের।

প্রথম দিনে দুটি গরু জবাই করে প্রায় ৩৫০ কেজি মাংস বিক্রি করা হয়েছে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কাছে এমন সেবা পৌঁছে দিতে পেরে ভালো লাগছে। প্রথম দিনে আমরা প্রায় ৩৫০ জন মানুষের মাঝে এই সেবা দিতে পেরেছি। জেলা প্রশাসন ও জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় এই কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা হবে।’

বিষয়:

ঈদ ঘিরে দর্জিদের নির্ঘুম রাত

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ডেইজী মউদুদ, চট্টগ্রাম

নগরীর ঘাট ফরহাদবেগের দর্জিপাড়া পরিচিত খলিফা পট্টি নামেই। দর্জিপাড়া বিধায় এখানে সারা বছরই সেলাই মেশিনের শব্দ নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার। তবে রোজা এলেই এই ব্যস্ততা, যেন মহাব্যস্ততা। দিবারাত্রির কোনো ভোদাভেদ নেই, দর্জি অথবা খলিফাদের চলে রীতিমতো নির্ঘুম রজনী। ঈদকে সামনে রেখে খালি অর্ডার আর অর্ডার। দম ফেলার জো নেই। খালি রাতদিন কাজ আর কাজ। অবিরাম চলছে মেশিন। মেশিনের ঝিকঝিক শব্দ আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের পদচারণায় ভিন্ন রকম ব্যস্তময় এক পরিবেশ।

খলিফা পট্টির দর্জিরা তাদের নিপুন হাতের তৈরি পোশাক বন্দর নগরী ছাড়াও নোয়াখালী, কুমিল্লাসহ দেশের বিভিন্ন জাগায় সরবরাহ করে থাকেন। বিভিন্ন এলকার শপিং মলগুলোতেই এসব পোশাক বিক্রি হয় চড়া মূল্যে। দর্জিপাড়ায় কর্মরত ইসমাইল খলিফা এই প্রতিবেদকে জানান, তিনি ২০ বছর ধরে এখানে কর্মরত। সারা বছরেই তো এখানে তারা কাজ করেন। কিন্তু রোজা এলেই সেই ব্যস্ততা ভিন্ন। একদম দম ফেলবার জো নেই। রাতদিন সেলাই আর সেলাই। মেশিনের শব্দ, কাজ করতে করতে ক্লান্তি আসে, অথচ জিরাবার কোনো সুযোগ একেবারেই নেই। খলিফা পট্টিতে সেলাই হয় না এমন পোশাক নেই। সেলোয়ার, কামিজ, কুর্তি, ফ্রক, গাগরা, নায়ারা, কারচুপি, জারদৌসি, লেহেঙ্গা, বেবী ডেস, কোটি, মিনি ও লং স্কার্টসহ যাবতীয় পোশাক এখানে শোভা পায়। দোকান ও কারখানা একসাথে থাকায় অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ খলিফাপট্টি। অনেকের শো রুম না থাকলেও ছোটখাটো কারখানা রয়েছে। প্রায় ৩৫০টি দোকান ও কারখানা মিলিয়ে খলিফাপট্টিতে মেশিনের সরগরম আর ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকে ডাকে উৎসবের আমেজ।

ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে ভোররাত ৩টা পর্যন্ত জমজমাট বিকিকিনি চললেও সকাল ১০টা থেকে দোকান ও কারখানায় ব্যস্ততা শুরু হয়। মূলত ঈদকে ঘিরেই চলে তাদের সিংহভাগ কাজ। তাই নির্ঘুম রাতই তাদের জন্য দিন। দৈনিক ১৮ ঘণ্টা কাজ করে ভোররাতে সেহেরি খেয়ে কারিগররা ঘুমাতে যান। কাটিং মাস্টার জুবায়ের এই প্রতিবেদককে জানান, দীঘদিন ধরেই কাজ করছি। সব কিছুই কাটতে ও সেলাই করতে পারি। দেশি-বিদেশি কোনো বিষয় নয়। একবার দেখলেই তা তৈরি করে দিতে পারি। খলিফাপট্টির কাটিং মাস্টার ও সুইং অপারেটররা একেকজন মাস্টারপিস।

সেলাই এর পাশপাশি খলিফাপট্টিতে তৈরি পোশাক বেচাবিক্রি চলে রাতদিন। এসব নগরী ছাড়াও পোশাকশিল্প কারখানায় চলে যায় লটে লটে। পোশাকশিল্প কারখানার মালিক জালালউদ্দীন এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে জড়িত এই ব্যবসায়। বর্তমানেও আছি। এখানে ৩০০ টাকা থেকে শুরু করে ৮ হাজার টাকার পোশাকও রয়েছে।’

আঁখি ফ্যাশনের মালিক আবদুর রহিম। তিনি বলেন, এখানে হাল ফ্যাশনের পোশাক আমরা বিক্রি করি পাইকারি দরে। বড় মার্কেটে গিয়ে সেগুলো ব্যবসায়ীরা চড়া দামে বিক্রি করেন। খলিফাপট্টির বাণিজ্য ঈদেই রমরমা। সারা বছর এখানে সেলাই ও বিকিকিনি চললেও ঈদেই তাদের মূল লভ্যাংশ উঠে আসে বলে জানালেন ব্যবসায়ী। তবে তিনি হতাশার বাণীও শোনান। তিনি বলেন, এখানকার ব্যবসায়ীদের অনেকেই ধার দেনা করে এমনকি পরিবারের গহনা অলংকার এবং পৈতৃক সম্পদ বন্ধক রেখে পূজির জোগান দেন, কেবল ঈদ বাজারকে টার্গেট রেখেই।’ এই বাণিজ্যে ক্ষুদ্র ঋণ ও সরকারি কোনো সহযোগিতা না থাকায় এই ব্যবসা টিকিয়ে রাখা বর্তমানে চ্যালেঞ্জিং বলেও তিনি মত প্রকাশ করেন।

বিষয়:

সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের কেরানির ঘুষবাণিজ্য

নারায়ণ দাস
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
খোরশেদ আলম, সোনাইমুড়ী (নোয়াখালী)

প্রকাশ্যে ঘুষ লেনদেনের চিত্র সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সর্বত্র। এ যেন ঘুষের স্বর্গরাজ্য। কোনো রাখঢাক নেই। ঘাটে ঘাটে বাঁধা ঘুষের রেট। মুখে মুখে ঘুরছে ফর্দ। ঘুষের কারবার চলছে অনেকটা সাধারণ ব্যাংকিংয়ের মতো। দিনশেষে ঘুষের টাকা বণ্টনে চালু আছে অটোপদ্ধতি। অর্থাৎ নির্বিঘ্নে নির্ধারিত কমিশন পৌঁছে যায় সংশ্লিষ্টদের টেবিলে। আর এসব ঘুষ লেনদেনের প্রধান হলেন অফিস সহকারী (কেরানি) নারায়ণ দাস।

তথ্য অনুসন্ধানে জানা যায়, নারায়ণ দাস সোনাইমুড়ী উপজেলার মকিল্যা গ্রামের সুচি দুলাল দাসের পুত্র। তিনি প্রথমে সোনাইমুড়ী সাব রেজিস্ট্রি অফিসে নকল নবিস থেকে ২০১৭ সালে মোহরার পদে পদোন্নতি পান। নোয়াখালী সদরের রেকর্ড কিপার পদে কর্মরত থেকে ২০২০ সালে বেগমগঞ্জ সাব রেজিস্ট্রি অফিসে অফিস সহকারী হিসেবে বদলি হন। সেখানে থাকাকালীন জেলা রেজিস্ট্রার আব্দুল খালেকের দলিল কমিশনসংক্রান্ত বিষয়ে আদেশ অমান্য করায় ২০২৩ সালে পুনরায় শাস্তিমূলক বদলি হন একই জেলার কবিরহাট সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। এরপরে তদবির করে সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অফিস সহকারী হাবিবুল্লাহর চাকরির মেয়াদ থাকার পরেও ৫ লাখ টাকা চুক্তি করে তাকে সরিয়ে এখানে আসেন। তবে এ অফিসে আসতে জেলা রেজিস্ট্রার আনোয়ারুল বাসিরকে মোট অঙ্কের ঘুষ দিয়েছেন বলে নারায়ণ দাস প্রকাশ্যে বলে বেড়ান।

সেবা নিতে আসা ভুক্তভোগী ও দলিল লেখকরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে দৈনিক বাংলাকে জানান, প্রতিটি দলিলের ক্ষেত্রে প্রত্যেক গ্রাহককে উৎস কর ২ শতাংশ, স্ট্যাম্প দেড় শতাংশ, রেজিস্ট্রি বাবদ ১ শতাংশ ও স্থানীয় কর হিসাবে ৩ শতাংশ ব্যাংক চালানের মাধ্যমে জমা দিতে হয়। এর বাইরে প্রতিটি দলিলে নগদ এক হাজার থেকে তিন হাজার টাকা, সামান্য ভুলের জন্য আরও বিভিন্ন অঙ্কের টাকা আদায় করা হয়ে থাকে।

সমিতির ফি নামে প্রত্যেক দলিলে ৫০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। প্রতিদিন ৫০-৬০টি দলিল এই অফিসে রেজিস্ট্রি হয়ে থাকে। আর অফিস সহকারী নারায়ণ দাস এই চাঁদা আদায় করে ভাগ পান ১০ হাজার টাকা। কমিশন দলিলে সাব-রেজিস্ট্রারকে ভাঙিয়ে সরকারি ফির অতিরিক্ত ২০ হাজার টাকা নিয়ে থাকেন তিনি। হেবা ঘোষণা দলিলে প্রতি লাখে ৪০০ টাকা ও সেরেস্তা ফি প্রতি লাখে ৩-৪ টাকা করে নিয়ে থাকেন নারায়ণ দাস। আর এ টাকা অফিসের অন্যদের ও দলিল লেখকদের মধ্যে ভাগ হয়। অতিরিক্ত অর্থের ঘুষের টাকা থেকে অফিস সহকারী ৩০ ভাগ পেয়ে থাকেন বলে জানা গেছে।

এসব প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নারায়ণ দাস বলেন, ‘আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে এখানে বদলি হয়ে এসেছি। এদিক-সেদিক না করলে চলবে কীভাবে।’

সোনাইমুড়ী সাব-রেজিস্ট্রার আনসার আহমদ বলেন, তিনি স্থানীয় এটা সত্য। তবে ঘুষের টাকা আদায় ও ভাগাভাগির বিষয়টি তিনি এড়িয়ে যান।

বিষয়:

কুড়িগ্রামে বাণিজ্যিকভাবে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের তালুক কালোয়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে দক্ষিণ আফ্রিকার গ্লাডিওলাস ফুল চাষ শুরু করছেন কৃষক নুরবখত আলী। গ্লাডিওলাস ফুলের পাশাপাশি তার জমিতে গাঁদা ও সূর্যমুখী ফুলের চাষ হচ্ছে। প্রায় ৫০ শতক জমিতে গ্লাডিওলাস চাষ করে লক্ষাধিক টাকায় বিক্রির আশা করছেন তিনি।

রংভেদে প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুলের স্টিক ৫-২৫ টাকা দরে বিক্রি করছেন নুরবখত। বাণিজ্যিকভাবে কুড়িগ্রাম জেলা শহর ছাড়াও লালমনিরহাটে এই গ্লাডিওলাস ফুল বিক্রি করছেন বলে জানান তিনি।

ফুল চাষের শুরু সম্পর্কে নুরবখত বলেন, ‘গ্লাডিওলাস ফুল চাষ সম্পর্কে আমার কোনো ধারণা ছিল না। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খামারবাড়ী থেকে ২০১৯ সালে প্রদর্শনী প্লট করি। ওই প্রর্দশনী প্লটে ফুলের সমাহার দেখে পরের বছর ফুল চাষে উদ্বুদ্ধ হই। এখন প্রায় তিন একর জমিতে প্রচলিত ফসল আবাদ না করে তেল-বীজ ও ফুলের চাষ করছি।’

তিনি বলেন, ধান, পাট, আলু চাষের চেয়ে ফুল ও বীজের আবাদে খরচ কম, লাভ বেশি। বিশেষ করে কম সময়ের মধ্যে খেত থেকে গ্লাডিওলাস ফুল বাজারজাত করা সম্ভব। বাজারে সারা বছর ফুলের চাহিদা থাকে। এ ফুল চাষে বাড়তি খরচ ও পরিচর্যার কোনো ঝামেলা নেই। সামান্য সেচ, সার ও কীটনাশক ব্যবহার করেই এই ফুল চাষ করা সম্ভব।

তিনি আরও বলেন, গ্লাডিওলাস বীজ রোপণের ৭৫ দিনের মধ্যে ফুল সংগ্রহ করা যায়। গ্লাডিওলাস গাছে তেমন কোনো রোগবালাই নেই। কেরাডে ও এন্টকল কীটনাশক ব্যবহার করে গ্লাডিওলাস গাছে ফুলের যত্ন নেওয়া হয়। বাজারে এ ফুলের চাহিদা থাকায় আগামীতে বড় পরিসরে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করবেন বলে জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আর্থসামাজিক উন্নয়নে কৃষকদের নতুন নতুন চাষাবাদে উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ। অন্যান্য ফসল আবাদের পাশাপাশি ব্যতিক্রমী ও লাভজনক চাষাবাদে আমরা কৃষকদের সহযোগিতা করছি। গত কয়েক বছর হলো কুড়িগ্রামে গ্লাডিওলাস ফুল চাষ প্রদর্শনী করি। জেলায় কয়েকজন চাষ শুরু করেছে। নুরবখতের গ্লাডিওলাস ফুলের বাণিজ্যিক চাষ দেখে নতুন উদ্যোক্তা তৈরি হচ্ছে। আগামীতে জেলায় এই ফুল চাষের পরিধি আরও বাড়বে বলে জানান তিনি।

বিষয়:

বাইডেন-জয়ার তিন শাবকের নাম রাখলেন জেলা প্রশাসক

চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় তিন বাঘ শাবককে কোলে নিয়ে আদর করলেন জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রতন কান্তি দেবাশীষ, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম নগরীর ফয়স লেকের চিড়িয়াখানায় গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বাঘ জো বাইডেন ও বাঘিনী জয়ার সংসারে জন্ম নিয়েছে ৩টি শাবক। গতকাল সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসক ও চিড়িয়াখানার সভাপতি আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান চিড়িয়াখানা পরিদর্শনে গেলে বাঘ শাবকগুলোকে জনসম্মুখে আনা হয়। এ সময় তিনি শাবক ৩টি কোলে নিয়ে এগুলোর নামকরণ করেন। এ তিন শাবকের নাম দেয়া হয়, প্রকৃতি, স্রোতস্বিনী ও রূপসী।

জেলা প্রশাসকের সহধর্মিণী ও চট্টগ্রাম লেডিস ওয়েলফেয়ার ক্লাবের সভাপতি তানজিয়া রহমান, কাট্টলী সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আরাফাত সিদ্দিকী, চিড়িয়াখানার সদস্য সচিব ও এনডিসি হুছাইন মুহাম্মদ, স্টাফ অফিসার টু ডিসি ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আল-আমিন ও চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শুভ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

বাঘের শাবক দেখতে চিড়িয়াখানায় গিয়ে জেলা প্রশাসক উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে দুটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নিয়ে এসেছিলাম। সময়ের বিবর্তনে সে দুটি বাঘ বংশ বৃদ্ধি করে বর্তমানে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় ৩টি শাবকসহ মোট বাঘের সংখ্যা ১৭টি। এর মধ্যে ৫টি বাঘ ও ১২টি বাঘিনী। এখানে সাদা বাঘও রয়েছে।

তিনি বলেন, গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রাণী বিনিময়ের আওতায় দুটি বাঘ রংপুর চিড়িয়াখানায় দিয়ে দুটি জলহস্তী চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় আনা হয়। প্যারিস জলবায়ু পরিবর্তন চুক্তিতে স্বাক্ষর করায় আমেরিকার প্রেসিডেন্টের সম্মাননার্থে সাবেক জেলা প্রশাসক বাঘটির নাম রাখেন জো বাইডেন। বাঘিনী জয়ার জন্ম ২০১৮ সালের জুলাইয়ে আর বাঘ জো বাইডেনের জন্ম ২০২০ সালে ২৮ ডিসেম্বর। বাঘ জো বাইডেন জন্মের পরপরই তার মা থেকে পরিত্যক্ত হলে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ব্যবস্থাপনায় লালন-পালন করা হয়। এক বছর লালন করার পর বিশেষ প্রক্রিয়ায় খাঁচায় অবস্থিত বাঘ পরিবারের সাথে সামাজিকীকরণের মাধ্যমে সদস্য হিসাবে রি-ইন্ট্রোডাকশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো সে নিজের সংসার তৈরি করলো। মানুষের হাতে লালন-পালন হয়ে পুনরায় বাঘ পরিবারের সঙ্গে একত্রীকরণের মাধ্যমে বংশবিস্তার করার চক্র একটি বিরল ঘটনা।

তিনি আরও বলেন, চিড়িয়াখানার পার্শ্ববর্তী প্রায় ১০ একর জমি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে ছিল, সেগুলো আমরা ইতোমধ্যে উদ্ধার করে সরকারের দখলে নিয়ে এসেছি। সেখানে আমরা বার্ডস পার্ক করার জন্য পরিকল্পনা করেছি এবং কিছু আমেরিকার ফ্ল্যামিংগোর ওয়ার্কঅর্ডার দিয়েছি। এর বাইরে কিছু পেলিক্যান ও কিছু ম্যাকাও পাখি পাওয়া গেলে চট্টগ্রামে আন্তর্জাতিক মানের একটি স্বয়ং সম্পূর্ণ বার্ডস পার্ক করতে পারব বলে আশা রাখি।

বিষয়:

ডলুরায় ৪৮ শহীদ মুক্তিযোদ্ধা সমাধি এবং একজন মধুমিয়া

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জাহাঙ্গীর আলম, সুনামগঞ্জ

একাত্তর সালে দেশের মাটিকে শত্রুমুক্ত করতে পাকিস্তানি হায়নার বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন বাংলার দামাল ছেলেরা। যখন শত্রুর বিরুদ্ধে অস্ত্র হাতে যুদ্ধ করতে করতে শহীদ হচ্ছিলেন মুক্তিযোদ্ধারা তখন সঙ্গী মুক্তিযোদ্ধারা সহযোদ্ধাদের লাশ বহন করে যখন যেখানে পেরেছেন সেখানে তাদের কবর দিচ্ছিলেন। আবার অনেক ক্ষেত্রে লাশ পানিতে ভাসিয়ে দিচ্ছিলেন। এ আগুনঝরা দিনে আনসারের এক জওয়ান শহীদদের লাশ মর্যাদার সঙ্গে দাফন করার জন্য এগিয়ে আসেন। তিনি আবুল কালাম ওরফে মধু মিয়া।

যুদ্ধে শহীদদের জন্য মধু মিয়া কবরের জায়গা খুঁজতে থাকেন। বাংলাদেশের সীমান্তে ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশে নিজের দখলে থাকা সরকারি খাস জায়গাকেই উপযুক্ত হিসেবে বিবেচনা করেন। ১৯৭১ সালের ১৮ জুলাই সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন মন্তাজ মিয়া। জামালগঞ্জের কামলাবাজ গ্রামে বাড়ি মন্তাজ মিয়ার। আনসার বাহিনীর এই তরুণ দেশ মাতৃকাকে শত্রুমুক্ত করার অদম্য বাসনায় যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। বালাট সাব-সেক্টরের এই যোদ্ধা মৃত্যুর আগে মীরেরচর গ্রামের কাঁচা মিয়াকে নিজের পাঞ্জাবি ও চশমা দিয়ে বলেছিলেন যুদ্ধে যদি আমি মারা যাই তবে আমার বৃদ্ধ মাতাকে এই দুটো জিনিস দিয়ে দিবেন। এর কিছুদিন পরই সম্মুখ যুদ্ধে শহীদ হন মন্তাজ মিয়া। মধু মিয়া শহীদ মন্তাজের খবর জানতে পেরে ছুটে যান তার সঙ্গী সাথী নিয়ে। আর শহীদ মন্তাজ মিয়াকে দাফন করেই গোড়াপত্তন হয় ডলুরা শহীদ স্মৃতি সৌধের। তারপর আর থেমে থাকেননি মধু মিয়া। যেখানেই খবর পেয়েছেন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হয়েছেন সেখানেই তিনি ছুটে গেছেন।

বাংলাদেশ সরকারের এ অঞ্চলের এমএনএ দেওয়ান ওবায়দুর রেজা চৌধুরী ১ সেপ্টেম্বর ১৯৭১ সালে মধু মিয়ার কাজের স্বীকৃতি দেন। দাফন-কাফনের পাশাপাশি আহত মুক্তিযোদ্ধাদের হাসপাতালে পাঠানো এবং প্রত্যেক শহীদকে তাদের ধর্মীয় অনুশাসন অনুযায়ী দাফন-কাফনের ব্যবস্থাসহ দাহ করার জন্য তাকে আহ্বায়ক করে একটি কমিটি করে দেন। আত্মনিবেদিত মধু মিয়া তার এই মহৎ কাজের অংশীদার করতে নিয়ে আসেন মুন্সী তারু মিয়াকে, যিনি মাওলানা হিসেবে জানাজা পড়াতেন। কবর দিতে ও আহত মুক্তিযোদ্ধাদের হাসপাতালে পাঠাতে সাহায্য করতেন আফসার উদ্দিন, কিতাব আলী, আব্দুর রহিম, মগল মিয়া, হযরত আলী ও মাফিজ উদ্দিন। হিন্দু মুক্তিযোদ্ধাদের দাহ করতে পুরোহিত হিসেবে কাজ করার জন্য নিয়ে আসেন নেপু ঠাকুরকে। এরাই ছিলেন প্রবাসী সরকারের ৯ সদস্যবিশিষ্ট অনুমোদিত কমিটি। মধু মিয়ার লেখাপড়া পাঠশালা পর্যন্ত হলেও তিনি ডায়েরিতে লিখে রাখতেন শহীদদের নাম এবং কোথায় কোন যুদ্ধে তারা শহীদ হয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রে কাউকে দিয়ে এ তথ্যগুলো লিখিয়ে রেখেছেন। আর এটাই হয়েছে আজ ইতিহাস।

মধু মিয়ার ডায়েরি থেকে জানা যায়, ৪২ জন মুসলিম শহীদকে দাফন করা হয়েছে এবং ৬ জন হিন্দু মুক্তিযোদ্ধাকে ডলুরাতে দাহ করা হয়েছে। তাদের মধ্যে যেমন সুনামগঞ্জ জেলার মুক্তিযোদ্ধা আছেন ঠিক তেমনি অন্যান্য জেলার মুক্তিযোদ্ধাও আছেন। ডলুরায় যেসব শহীদ মুক্তিযোদ্ধা শায়িত আছেন তারা হলেন মন্তাজ মিয়া, রহিম বকস, জবান আলী, সুরুজ মিয়া, হরকুম উল্লাহ, জয়নাল আবেদীন, মহরম আলী, আব্দুর রহমান, আব্দুছ ছাত্তার, আজমান আলী, আবেদ আলী, আতাহার আলী, লাল মিয়া, চান্দ মিয়া, সিদ্দিক মিয়া, আবু বকর সিদ্দিক, সায়েদুর রহমান, আব্দুল হামিদ খান, আব্দুল খালেক, যোগেন্দ্র দাস, শ্রীকান্ত দাস, অরবিন্দ রায়, কুবীন্দ্রনাথ দাস, সালাউদ্দিন, তাহের মিয়া, আব্দুল হক, মুজিবুর রহমান, নূরুল হক, আব্দুল করিম, সুরুজ মিয়া, সাজু মিয়া, ধনুমিয়া, ফজলুল হক, শামছুল ইসলাম, কেন্তু মিয়া, সিরাজ মিয়া, সমছু মিয়া, তারা মিয়া, দানু মিয়া, মন্নাফ মিয়া, রহিম মিয়া, আলী আহমদ। মধু মিয়ার এই ডায়েরিটি স্থান পেয়েছে জাতীয় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।

স্বাধীনতার পর দেশের শহীদ মুত্তিযোদ্ধাদের কবরকে সংরক্ষিত করার জন্য প্রশাসনসহ রাজনৈতিক নেতাদের কাছে ধর্না দিযেছেন মধু মিয়া। কোন লাভ হয়নি। পরবর্তীতে ১৯৭৯ সালে স্থানীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত মুক্তি সংগ্রাম স্মৃতি ট্রাস্ট শহীদদের কবরগুলি সংরক্ষণ করার উদ্যোগ নেয়। ৮২ ফুট লম্বা, ৮১ ফুট প্রস্থ ও ৫ ফুট উচ্চতার এই দেয়াল তৈরি করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের আরেক বীর সেনানী সাব সেক্টর কমান্ডার লে. কর্নেল (অব.) এ.এস. হেলালউদ্দিন শহীদদের নাম মার্বেল পাথরে খোদাই করে লিখে গেটে বসিয়ে দেন এবং শহীদদের আত্মীয়-স্বজনদের রাতযাপনের জন্য গেস্ট হাউস নির্মাণের জন্য অনুদান প্রদান করেন।

২০০৪ সালের ১৫ মার্চ মধু মিয়া মারা যাওয়ার পর ডলুরা শহীদ স্মৃতিসৌধের ভেতরেই তাকে দাফন করা হয়। ৪২ জন শহীদ এবং তিনি একসঙ্গে ঘুমিয়ে আছেন।

বর্তমানে জেলা প্রশাসন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদের সার্বিক সহযোগিতায় কবর পাকাকরণ ও সৌন্দর্যবর্ধন, স্মৃতি ফলক নির্মাণ, মূল ফটকে স্থায়ী তোরণ নির্মাণ, বৈদ্যুতিক লাইট পোস্টের বাতি জ্বালানোর ব্যবস্থা করা, সমাধির পাশের মাঠে পাশে মুক্তমঞ্চ নির্মাণ, মুক্তিযোদ্ধা ভাস্কর্য নির্মাণসহ বসার জন্য ছাউনি নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছে। ডলুরা শহীদ মিনারকে ঘিরে রাস্তা ঘাটের অবকাঠামোগত উন্নয়ন হওয়ায় মানুষ সহজেই কবর জিয়ারত করতে পারছে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে এখানে বেড়েছে দর্শনার্থীদের ভিড়। বীর মুক্তিযোদ্ধা মধুমিয়া আত্মত্যাগের কথা নতুন প্রজন্মের কাছে স্মরণীয় করে রাখতে সুনামগঞ্জের মঙ্গলকাটা বাজার থেকে ডলুরা শহীদ মিনার পর্যন্ত সড়কটি ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মধুমিয়া সড়ক’ নামে নামকরণের দাবি জানিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

বিষয়:

রাজশাহীতে ২৭ রমজান পর্যন্ত মিলবে ৫ টাকায় ডিম, ৭৫ টাকায় দুধ

প্রতীকী ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
রাজশাহী ব্যুরো

আগামী ২৭ রমজান পর্যন্ত মাত্র ৫ টাকা পিস ডিম ও ৭৫ টাকা লিটার দুধ কিনতে পারবেন রাজশাহীর সাধারণ মানুষ। মহানগর এলাকায় চলবে এই কার্যক্রম। জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের উদ্যোগে আমান পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেড এবং নাবা ক্যাটেল ফার্মের পক্ষ থেকে সুলভ মূল্যে ডিম এবং দুধ বিক্রির এই নতুন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে রাজশাহীতে। রাজশাহীর বাজারে এখন এক পিস ডিম ১০-১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অথচ এই কার্যক্রমের আওতায় একজন ক্রেতা ৫ টাকা পিস হিসেবে সর্বোচ্চ ৩০টি ডিম কিনতে পারবেন।

বাজারে যখন সব রকম নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য ঊর্ধ্বগতি ঠিক তখন রমজান মাস উপলক্ষে মাত্র ২০ টাকা হালিতে ডিম বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে আমান ফিড। মহানগরীর সাগরপাড়ায় থাকা গ্রুপের রাজশাহী অফিসের সামনে এই সুলভ মূল্যের ডিম পাওয়া যাচ্ছে।

আমান পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি লিমিটেডের রাজশাহী অফিসের ডিজিএম আব্দুল বারী বলেন, সাধারণ ভোক্তাদের কথা বিবেচনা করে রোববার থেকে তারা কম দামে এই ডিম বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছেন। ডিমের মান শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে আগামী ২৭ রমজান পর্যন্ত এই ডিম বিক্রি কার্যক্রম চলানোর কথা জানান এই কর্মকর্তা।

এদিকে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জুলফিকার মো. আখতার হোসেন বলেন, সরকার দেশব্যাপী স্থানীয় পর্যায়ে ডিম, দুধ, মাংস কম দামে বিক্রি করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করছে। সেই নির্দেশনায় তারা রাজশাহীর বিভিন্ন জায়গায় কোম্পানি বা উদ্যোক্তাদের উদ্বুদ্ধ করে এই কার্যক্রম শুরু করছেন। ডিম ছাড়াও পবিত্র রমজান উপলক্ষে দুধ বিক্রি হচ্ছে।


সিলিন্ডার বিস্ফোরণ: চলন্ত অবস্থায় অটোরিকশাচালক পুড়ে অঙ্গার

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
আনোয়ারা ও বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার (আরাকান সড়ক) সড়কে চন্দনাইশ গাছবাড়িয়া কলেজের সামনে হঠাৎ বিকট শব্দে চারপাশ কেঁপে উঠে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই দেখা যায় একটি চলন্ত সিএনজি চালিত অটোরিকশাতে দাউদাউ কিরে আগুন জ্বলছে। ধারণা করা হচ্ছে সিলিন্ডার বিস্ফোরণে এই ঘটনা ঘটেছে।

সোমবার বিকেল ৩টার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এতে ওই গাড়ির চালক মারা যায়। গাড়িতে কোনো যাত্রী না থাকায় আর কেউ হতাহত হয়নি বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা মো. হেফাজ উদ্দিন জানান, ঘটনাস্থল থেকে সামান্য দূরে দাঁড়িয়ে বাড়িতে ফেরার জন্য গাড়ির জন্য অপেক্ষা করছিলাম। হঠাৎ শব্দে চমকে উঠে দেখি গাড়িতে আগুন জ্বলছে। মুহুর্তেই চালক অগ্নিদগ্ধ হয়ে যায়। ঘটনা এত দ্রুত ঘটে যে সাধারণ মানুষের পক্ষে কিছু করা সম্ভব ছিল না।

চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবাইদুল ইসলাম জানান, ‘গাছবাড়িয়া কলেজের সামনের দুর্ঘটনায় চালকের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান।’

বিষয়:

চলন্ত ট্রেনে শিশুর জন্ম: সাহায্য করলেন চিকিৎসক

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৫ মার্চ, ২০২৪ ১৬:৫৮
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে চলন্ত ট্রেনে এক কন্যা শিশুর জন্ম হয়েছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর স্টেশন এলাকায় ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা চট্টগ্রামগামী ‘৭০২ সুবর্ণ এক্সপ্রেস’ নামক ট্রেনে শিশুটি জন্ম নেয়।

রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, ট্রেনের ‘ড’ বগিতে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামের দিকে যাচ্ছিলেন গর্ভবতী এক নারী। তার নাম মোছাম্মাৎ জান্নাতুল ইসলাম। সঙ্গে ছিলেন তার স্বামী ইকবাল হোসেন। ট্রেনটি ভৈরব বাজার স্টেশন পার হলেই ওই নারীর প্রসব বেদনা শুরু হয়। তখন ট্রেনের এক কর্মী ঢাকার কন্ট্রোল রুমে বিষয়টি জানায়। রেলওয়েস্টেশনের কন্ট্রোল রুম থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্ট্রেশন মাস্টারকে বিষয়টি অবগত করা হয় এবং ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে থামানোর ব্যাবস্থা করা হয়। তবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে পৌঁছানোর আগেই আশুগঞ্জ উপজেলার তালশহর রেলষ্টেশন এলাকায় জান্নাতুল ইসলাম কন্যা শিশুটিকে জন্ম দেয়।

কর্তৃপক্ষ আরও জানায়, এ সময় ওই নারীকে সাহায্য করেন ট্রেনে থাকা একজন চিকিৎসক। পরে ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনে পৌঁছালে জান্নাতুল ইসলাম ও নবজাতকটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাজুল ইসলাম বলেন, ‘ট্রেনে জন্ম নেয়া শিশু ও মাকে হাসপাতালে আনার পর ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেই।’

ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. জসিম উদ্দিন জানান, ঢাকা থেকে জানানো হয় সুবর্ণ এক্সপ্রেস ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশন যাত্রা বিরতি দেবে। কারণ একজন মহিলার প্রসব বেদনা হচ্ছে। তবে তালশহর স্টেশনেই মহিলাটি এক কন্যা শিশুর জন্ম দেয়। ৬টা ২০ মিনিটের দিকে সুবর্ণ এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টেশনে অনির্ধারিত যাত্রাবিরতি দেয়। তারপর মহিলা ও নবজাতকটিকে ট্রেন থেকে নামিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।


মেঘনায় ট্রলারডুবি: এক পরিবারের ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

সপরিবারে কনস্টেবল সোহেল রানা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

আশা ফুরিয়ে গেল। কেউ আর বেঁচে নেই। একে একে চারজনের মরদেহ উদ্ধার হলো। এলাকায় শোকের ছায়া। পাড়া প্রতিবেশীসহ দূরদূরান্ত থেকে স্বজনরা আসছেন। সবার চোখে পানি। কে কাকে সান্তনা দিবেন।

ভৈরবে মেঘনা নদীতে ট্রলার ডুবির ঘটনায় পুলিশ কনস্টেবল সোহেল রানার পরিবারের আর কেউ বেঁচে নাই। গত ৩ দিনে একে একে সকলের মরদেহ উদ্ধার হয়েছে।

সোমবার সকালে নিখোঁজ সোহেল ও তার ছেলে রায়সুলের মরদেহ উদ্ধার হয়। এর আগে শনিবার স্ত্রী মৌসুমী আক্তার ও রোববার মেয়ে মাহমুদার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

গ্রামবাসী আজ স্তব্ধ। শোকে মূহ্যমান গোটা পরিবার। সন্তান নাতি নাতনি হারিয়ে পাগল প্রায় বাবা মা।

সোহেল কুমিল্লা জেলার দেবিদ্বার উপজেলার ফতেহাবাদ গ্রামের আব্দুল আলিমের ছেলে। ২০১১ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে রিক্রুট হন।

ভৈরব হাইওয়ে থানার ওসি সাজু মিয়া বলেন, ‘সোহেল রানা আমাদের সহককর্মী ছিলেন। এভাবেই পুরো পরিবার দুর্ঘটনায় মারা যাওয়ার খবরে আমরা মর্মাহত। তার পরিবারের ৪টি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তার স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর শনিবার রাতে দেবিদ্বারের গ্রামের বাড়িতে পাঠানো হয়।’

গত শুক্রবার বিকেলে সোহেল তার স্ত্রী, দুই সন্তান ও ভাগনি মারিয়াকে নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জের সোনারচর দ্বীপ গ্রাম দেখতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে একই ট্রলারে থাকা কয়েকজন ব্যক্তি ছবি তোলার জন্য ট্রলার মাঝিকে অনুরোধ করলে মাঝি তার হাতের বৈঠা ছেড়ে ছবি তুলে দিচ্ছিলেন। এ সময় ট্রলারটি কিছুটা নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ে। তখন বিপরীত দিক থেকে আসা বালুবাহী একটি বাল্কহেড ট্রলারটিকে ধাক্কা দিলে সেটি উল্টে যায়। এ সময় মারিয়া প্রাণে বেঁচে গেলেও অপর চার জন পানিতে তলিয়ে যান।

বিষয়:

১৩ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে সুপার বোর্ড কারখানার আগুন

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
গজারিয়া (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি

ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিটের দীর্ঘ ১৩ ঘণ্টার চেষ্টায় রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে নিয়ন্ত্রণ এসেছে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় হোসেন্দী ইউনিয়নের জামালদীতে সুপার বোর্ড কারখানায় লাগা আগুন।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক। তবে এখনো অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, রোববার দুপুর ১টার দিকে প্রতিষ্ঠানটির পাটের গোডাউনে আগুন দেখতে পান কর্মরত শ্রমিকরা। সেখান থেকে আগুন নদীতে নোঙর করে রাখা একটি পাটখড়ি বোঝাই ট্রলারে লেগে যায়। প্রথমে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে অগ্নি নির্বাপনের কাজ শুরু করে। তবে প্রতিষ্ঠানের ভেতরে পার্টিকেল বোর্ড, পাটখড়ি, প্লাস্টিকের দরজা ও প্লাস্টিকের পাইপের মতো দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে নিভাতে গিয়ে আহত হয় কোম্পানিটির ৭ কর্মী।

সুপারবোর্ড কোম্পানির পরিচালক (ফিন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) শফিউল আতাহার তাসলিম বলেন, ‘অগ্নিকাণ্ডে আমাদের কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা সম্ভব নয়। ক্ষয়ক্ষতির সম্পূর্ণ চিত্র নিরূপণ করতে আরও বেশ খানিকটা সময় লাগবে।’

সোমবার সকাল ৭টার দিকে গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ রিফাত মল্লিক বলেন, ‘ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পরে রোববার দিবাগত রাত ২টার দিকে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হই। আগুন এখন আর বাড়ার বা অন্য ভবনে ছড়িয়ে পড়ার সুযোগ নেই। তবে ভেতরে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন সম্পূর্ণ নিভতে আরও বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় লাগতে পারে। আগুন নিয়ন্ত্রণে আসায় ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সংখ্যা কমিয়ে ফেলা হয়েছে। বর্তমানে ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট কাজ করছে।’


মরা গরুর মাংস বিক্রির অভিযোগে আটক ২

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাগেরহাট প্রতিনিধি

বাগেরহাটের শরণখোলায় মরা গরু জবাই করে প্রকাশ্যে সেই মাংস বিক্রির অভিযোগে দুই সহোদরকে আটক করা হয়েছে।

জানা যায়, রোববার সকালে মরা গরু জবাই করে প্রকাশ্যে সেই মাংস বিক্রি করছিল তারা। স্থানীয়রা মরা গরুর মাংস বিক্রির বিষয়টি টের পেয়ে জানায় প্রশাসনকে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অভিযান চালিয়ে দুই সহোদরকে আটক করা হয়। এ সময় তাদের আরেক ভাই হালিম পালিয়ে যায়। পরে তাদের কাছ থেকে দুটি ড্রামে ভর্তি প্রায় এক মণ মাংস, মাথা, চামড়া ও নাড়িভুড়ি জব্দ করা হয়।

আটক ব্যক্তিরা হলেন, উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের খাদা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে ডালিম (৩৫) ও আল আমীন (৩৮)।

উপজেলা সদরে রায়েন্দা পাঁচরাস্তা মোড়ের প্রশাসন মার্কেটে প্রকাশ্যে বিক্রি হচ্ছিল এই মরা গরুর মাংস। রমজান মাসে মরা গরুর মাংস বিক্রির খবর মুহুর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে চরম ক্ষোভ ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর বিচার দাবি করছেন এলাকাবাসি।

শরণখোলা থানার ডিউটি অফিসার এসআই তাইজুল ইসলাম জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার অভিযানে আটক দুই ব্যক্তি, গরুর মাংস ও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ থানা হেফাজতে রয়েছে। তদন্ত করে এদের বিরুদ্ধে আইগনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, পাঁচরাস্তা মোড়ের প্রশাসন মার্কেটে প্রকাশ্যে মরা গরুর মাংস বিক্রির খবর পেয়ে অভিযান চালানো হয়। এর আগে বেশ কিছু মাংস বিক্রিও করেছে তারা। অভিযান টের পেয়ে চক্রটি মাংস ও গরুর অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ লুকানোর চেষ্টা করছিল। একপর্যায়ে মার্কেট থেকে কিছুটা দূরে বান্দাঘাটা সুইন্স গেট এলাকা থেকে দুটি ড্রামে ভরা প্রায় এক মণ মাংস, চামড়া ও নাড়িভুড়ি জব্দ করা হয়েছে। এ সময় দুজনকে আটক করা গেলেও একজন পালিয়ে গেছে।

বিষয়:

banner close