রমজান দুয়ারে। তাই কুমিল্লার বরুড়ায় ঘরে ঘরে চলছে মুড়ি ভাজার ব্যস্ততা। মেশিনের সাহায্য ছাড়াই হাতে তৈরি এখানকার মুড়ি স্বাদে অনন্য। তাই চাহিদাও বেশি। সে চাহিদাকে মাথায় রেখেই স্থানীয়রা মুড়ি তৈরি করেন। সেই মুড়ি রোজার আগে স্থানীয় চাহিদা মেটানোর পর চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও রাজধানী ঢাকায় পাঠানো হয়।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে এ বছর রমজান মাস শুরু হতে পারে আগামী বৃহস্পতিবার। আর রমজানে ইফতারের অন্যতম উপাদান মুড়ি। আগে রোজা উপলক্ষে বাড়িতে বাড়িতে মাটির চুলায় লাকড়ির আগুনে হাতে মুড়ি ভাজা হতো। কালক্রমে সেই মুড়ি উৎসব হারিয়ে গেছে। এখন মেশিনে তৈরি মুড়িতেই ইফতার সারতে হয় রোজাদারদের। এর মধ্যেও ব্যতিক্রম কুমিল্লার বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রাম।
স্থানীয়রা বলছেন, বংশপরম্পরায় অর্ধশত বছর ধরে এ গ্রামের অন্তত ৩০টি পরিবার এখনো মাটির চুলায় লাকড়ির আগুনে মুড়ি ভাজে দেশীয় ঐতিহ্য ধরে রেখে। স্বাধীনতার আগে থেকেই হাতে ভাজা মুড়ি তৈরি হয় বলে গ্রামটি এখন মুড়ির গ্রাম নামেও পরিচিত হয়ে উঠেছে।
সরেজমিন লক্ষ্মীপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, কয়েকটি বাড়ির উঠানের কোণে রান্নাঘরে মুড়ি ভাজতে ব্যস্ত সময় পার করছেন নারীরা। কেউ চুলায় লাকড়ি দিচ্ছেন, কেউ চুলার ওপর মাটির হাঁড়িতে রাখা চাল নাড়ছেন। কেউ আবার পাত্রে রাখা গরম বালুতে চাল ঢেলে দিয়ে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে মুড়ি ফোটাচ্ছেন। বাড়ির পুরুষ সদস্যরা গরম মুড়ি চালনির ওপর ঘুরিয়ে বালুমুক্ত করেন। এরপর পরিষ্কার মুড়ি তারা বস্তায় ভর্তি করেন। সর্বশেষে চলে ভাজা মুড়ি প্যাকেটজাত করার কাজ। এভাবে দুপুর ১২টা থেকে গভীর রাত ৩টা পর্যন্ত মুড়ি ভাজেন তারা।
লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুর্গাচরণ পাল জানান, তাদের গ্রামে অন্তত ৩০টি পরিবার বাণিজ্যিকভাবে হাতে মুড়ি ভাজার কাজে যুক্ত। একেকটি পরিবার প্রতিদিন গড়ে ২ হাজার ৭০০ কেজি মুড়ি ভাজে। প্রতি কেজি মুড়ি পাইকারের কাছে বিক্রি হয় ১০০ টাকায়। কেজিতে ৮ থেকে ১০ টাকা লাভ হয়। বাজারে হাতে ভাজা এক কেজি মুড়ি বিক্রি হয় ১২০-১৩০ টাকায়।
দুর্গাচরণ পাল বলেন, দুই ধরনের চাল থেকে মুড়ি ভাজা হয়। এর একটি গিগজ চাল এবং এ চালের মুড়ি লম্বা হয়। আর সামনের বৈশাখ মাসে শুরু হবে টাফি চালের মুড়ি ভাজা। এ চালের মুড়ি গোল হয় এবং এগুলো বেশ সুস্বাদু।
একই গ্রামের শ্রীকৃষ্ণ পাল জানান, বছরের অন্য সময় প্রতি মাসে গড়ে অন্তত ৫ লাখ টাকার মুড়ি বিক্রি করেন তারা। তবে রমজানের বাড়তি চাহিদা মেটাতে তা ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত পৌঁছায়।
স্বপন পাল বলেন, মুড়ি ভাজার পর কখনো কখনো পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের ঠিকানায় পাঠিয়ে দেন। আবার কখনো কখনো পাইকাররা গাড়ি নিয়ে তাদের বাড়ির উঠান থেকেই সদ্য ভাজা মুড়ি নিয়ে যান।
উত্তম পাল আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‘আমরা বংশপরম্পরায় ঐতিহ্যের এই পেশাটি টিকিয়ে রেখেছি। অথচ কখনো সরকার থেকে কোনো ধরনের সহযোগিতা পাইনি। আমরা এখন, বিশেষ করে জ্বালানির সমস্যায় আছি। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা পেলে আমাদের অনেক উপকার হতো।’
কুমিল্লা নগরীর রাজগঞ্জ বাজারের মুদি দোকানি শাসছুল হক বলেন, ‘এখানকার বেশির ভাগ দোকানে মিলে তৈরি ভাজা মুড়ি বিক্রি হয়। তবে ক্রেতারা সবচেয়ে বেশি চান হাতে ভাজা মুড়ি। তাই তাদের কথা চিন্তা করে লক্ষ্মীপুর গ্রাম থেকে হাতে ভাজা মুড়ি আনতে হয়।’
বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মেহেদী হাসান বলেন, ‘তাদের (লাকড়ির চুলায় মুড়ি ভাজেন যারা) কী ধরনের সহযোগিতা লাগবে, সে বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো আবেদন পাইনি। আবেদন পেলে বিধি অনুযায়ী তাদের জন্য যা করার সুযোগ আছে, উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমরা তা করার চেষ্টা করব।’
নওগাঁ প্রতিনিধি
আইনের আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন স্ত্রী। কিন্তু সেখানে পৌঁছানোর আগেই স্বামীর নির্মমতার শিকার হয়ে প্রাণ গেল জুথি খাতুন (২৩) নামের এক তরুণ গৃহবধূর। বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নওগাঁ সদর উপজেলার কাঠাতলী এলাকায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।
নিহত জুথি সদর উপজেলার আনন্দনগর মৃধাপাড়া গ্রামের ঝুন্টু প্রামানিকের মেয়ে। প্রেম করে বিয়ে করলেও, ভালোবাসার সেই সম্পর্ক রূপ নেয় বিভীষিকায় শেষ পর্যন্ত প্রাণটাই গেল তরুণীটির।
জুথির বাবা ঝুন্টু প্রামানিক কাঁদতে কাঁদতে বলেন, প্রায় এক বছর আগে প্রেম করে গাজীপুরের তানভীর নামের এক ছেলেকে বিয়ে করেছিল আমার মেয়ে। প্রথম দিকে সব ঠিকঠাকই ছিল। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে জুথি জানতে পারে, তানভীরের আগে থেকেই আরেকজন স্ত্রী রয়েছে। এ নিয়ে শুরু হয় কলহ। মেয়েটা অনেক সহ্য করেছে। শেষে অন্যায় মেনে না নিয়ে নিজ গ্রামে ফিরে আসে এবং আদালতের দ্বারস্থ হয়।
বৃহস্পতিবার ছিল সেই মামলার শুনানির তারিখ। সকালে আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয় জুথি। কিন্তু তার আর আদালত পর্যন্ত যাওয়া হলো না। কাঠাতলী মোড়ে পৌঁছাতেই ওঁত পেতে থাকা তানভীর আচমকা ছুরি হাতে জুথির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। একের পর এক ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যায় সে। আশপাশের লোকজন দ্রুত জুথিকে উদ্ধার করে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনার বর্ণনায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি প্রত্যক্ষদর্শীরাও। সকালের ব্যস্ত সড়ক হঠাৎই থমকে যায় রক্তাক্ত দৃশ্যের সামনে। “মেয়েটা রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিল। হঠাৎ এক ছেলেকে দৌড়ে এসে ছুরি চালাতে দেখি। আমাদের চোখের সামনে সব হয়ে গেল বলেন এক প্রত্যক্ষদর্শী।
এ বিষয়ে নওগাঁ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয় ঘটনা। তদন্ত চলছে। ঘাতককে দ্রুত গ্রেফতারের জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, এই ঘটনায় শুধু এক তরুণীর জীবনই নিভে গেল না, প্রশ্ন উঠেছে সমাজব্যবস্থার প্রতিও। যেখানে একজন নারী নিজেই অন্যায়ের বিরুদ্ধে সাহস করে আইনের দ্বারস্থ হয়েছিল, সেখানেও নিরাপদ থাকলেন না তিনি। মানুষের মুখে মুখে এখন একটাই কথা, জুথির কী দোষ ছিল? শুধু একজন ভালোবাসা চাওয়া, সম্মান চাওয়া নারী তার জন্যই কি জীবন দিতে হলো।
২০২৫-২৬ অর্থ বছরের খরিপ-২ মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা ও পূনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় মাসকলাই উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে ২০০ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে মাসকলাই বীজ এবং সার বিতরণ কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলা পরিষদ চত্বরে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে এবং উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় সুবিধাভোগী প্রতি কৃষকদের মাঝে ৫ কেজি মাসকলাই বীজ, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ৫ কেজি এমওপি সার প্রদান করা হয়।
এ সময় উপজেলা কৃষি অফিসার মো. মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা নাজমুল হাসান মামুনসহ বিভিন্ন ব্লকের উপসহকারীরা উপস্থিত ছিলেন।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী দাবিকৃত চাঁদা না দিয়ে থানায় অভিযোগ করায় হিজড়াদের ওপর সংঘবদ্ধ হামলা করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে অন্তত ১২ জন হিজড়া আহত হয়েছেন।
বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টার দিকে পৌর সদরের গোমদণ্ডী ফুলতল এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
আহতরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাদের মধ্যে আছেন—সিমি (২৮), অপর্না (১৭), তিশা (২৭), নদী (২৯), লতা (৩০), নাদিয়া (৩৮), মেঘলা (২৯), দুষ্টু (৩০), শিখা (৩০), বদ্দুনি (৪২) সহ আরও কয়েকজন।
দক্ষিণ জেলা হিজড়া সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুফিয়া হিজড়া বলেন, 'পৌর সদরের মীরপাড়ার বাসিন্দা ফারুক ওরফে অনিক (৩০) আমাদের কাছ থেকে ১ হাজার টাকা করে মাসোহারা দাবি করে আসছিলো। এজন্য প্রায় সময় ভীতি দেখাতে থাকে। গত ৮ সেপ্টেম্বর বিকেল ৫টার দিকে তৃষ্ণা হিজড়াকে ফারুক জানায় বাজার থেকে সংগ্রহ করা টাকা থেকে ভাগ দিতে হবে নয়তো সে দেখে নিবে।'
'এ বিষয়ে বুধবার সন্ধ্যার পর বোয়ালখালী থানায় অভিযোগ দিয়ে বাসায় ফেরার পথে গাড়ির গতিরোধ করে ফারুকের নেতৃত্বে ২০-২৫ লোক লাঠিসোটা দিয়ে সংঘবদ্ধ হামলা চালিয়েছে।'
'এসময় আমরা ২৪ জন হিজড়া ছিলাম। ওদের মারধরে বেশ কয়েকজন হিড়জা আহত হয়েছে বলে দাবি করেন এ হিজড়া নেত্রী।'
বোয়ালখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ লুৎফুর রহমান বলেন, থানায় অভিযোগ করে হিজড়ারা বাসায় ফেরার পথে হামলার শিকার হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি।
খবর পেয়ে পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে যায়। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ড করা হয়েছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
নেপালের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি দেশটির অন্তর্বর্তীকালীন নেতা হওয়ার জন্য ‘জেন জি’ বিক্ষোভকারীদের প্রথম পছন্দ।
বৃহস্পতিবার জেন জি’র একজন প্রতিনিধির বরাত দিয়ে কাঠমাণ্ডু থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
একজন সামরিক মুখপাত্র বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল অশোক রাজ সিগডেল বুধবার সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন এবং জেন জি প্রতিনিধিদের সঙ্গে একটি বৈঠক করেছেন।
তবে তিনি আন্দোলনের এই সংগঠনের বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি।
সেনাবাহিনী ৩ কোটি মানুষের হিমালয়ের এই দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে চাইছে।
মঙ্গলবারের সহিংসতায় গত দুই দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন এবং সংসদ ভবনে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা রক্ষা বাম বলেন ‘এ মুহূর্তে সুশীলা কার্কির নামই অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসার জন্য আলোচনায় আছে। আমরা এখন প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি।
তিনি এএফপিকে জানান, আমরা সেনাপ্রধানের সঙ্গে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে কথা বলেছি। আলোচনাটি ছিল কীভাবে আমরা দেশকে এগিয়ে নিতে পারি, দেশের শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখতে পারি— তা নিয়ে।
৭৩ বছর বয়সী নেপালের প্রথম নারী সুপ্রিম কোর্ট প্রধান বিচারপতি কার্কি এএফপিকে বলেন, সংসদ এখনও বহাল আছে। এগিয়ে যাওয়ার পথ খুঁজে বের করার জন্য বিশেষজ্ঞদের একত্রিত হওয়া দরকার।
তবে আন্দোলনকারীদের এই পছন্দ যে সর্বসম্মত নয়, সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন অন্যরা। পরস্পরবিরোধী যুক্তি ও বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করা হয়েছে।
অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ডিসকোর্ডে অনুষ্ঠিত একটি ভার্চুয়াল সভায় হাজারো তরুণ তাদের ভিন্ন ভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং কে তাদের প্রতিনিধিত্ব করবেন সে বিষয়ে বিতর্ক করেছেন। এসব আলোচনায় বিভিন্ন যুক্তি ও প্রস্তাবিত নাম উঠে এসেছে।
সাংবাদিক প্রণয় রানা বলেন, এখানে বিভাজন আছে। এমন বিকেন্দ্রীভূত আন্দোলনে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থ ও ভিন্নমত থাকাই স্বাভাবিক।
বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো সেনারা রাজধানীর রাস্তায় টহল দিয়েছে। শহর শান্ত থাকলেও বিভিন্ন স্থানে একাধিক সেনা চৌকি বসানো হয়েছে।
সোমবার কাঠমাণ্ডুতে সরকারের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধকরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়।
কিন্তু তা দ্রুত সারাদেশে ক্ষোভের বিস্ফোরণে রূপ নেয় এবং সরকারি ভবনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।
এসময় নিরাপত্তা বাহিনীর প্রাণঘাতী দমন অভিযানে অন্তত ১৯ জন নিহত হয় ।
কক্সবাজারের মহেশখালীতে দুর্বৃত্ত গুলিতে পুলিশের ৩সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হয়েছে। বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন কোহেলিয়া সেতুর পাশে এ ঘটনা ঘটে।
গুলিবিদ্ধরা হলেন, মহেশখালী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মোহাম্মদ সেলিম (৩৬), কনস্টেবল সোহেল (৪৪) ও কনস্টেবল মো. মাসুদ (৩৬)। এদের মধ্যে দুজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে নিয়মিত চোরাই মালামাল বের হয়। এসব মালামাল বহনকারী গাড়ি আটকিয়ে একদল ডাকাত দীর্ঘদিন ধরে চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি করে আসছে। মঙ্গলবার রাতেও ১০-১৫ জনের একটি সংঘবদ্ধ ডাকাতদল ডাকাতির প্রস্তুতি নেয়।
খবর পেয়ে পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে ডাকাতদের ধাওয়া দিলে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে তিন পুলিশ সদস্য গুলিবিদ্ধ হন। আহতদের দ্রুত বদরখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুরুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘আহত পুলিশ সদস্যরা চিকিৎসাধীন আছেন, ঘটনায় জড়িতদের আটক করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।
কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় পদ্মা নদীতে বেশ কয়েক স্থানে অতি সম্প্রতিকালে তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়েজুল্লাপুর, হাটখোলাপাড়া এবং বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুর এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমিসহ হিন্দুদের ব্যবহৃত শ্মশানঘাটও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।এতে ৭০--৮০ জনের পান চাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে এবং তাদের ৩০০০ পান বরজের সারি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
গত ৯ সেপ্টেম্বর সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুর, হাটখোলাপাড়া ও বাহাদুরপুর ইউনিয়নের আড়কান্দি ও মাধবপুরে গত কয়েকদিন ধরে পদ্মা নদীর পাদদেশে কয়েক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জুনিয়াদহ ইউপি'র ভাঙ্গন কবলিত এলাকা থেকে পদ্মা নদী রক্ষা বাঁধের রায়টা-মহিষকুন্ডি বেরিবাঁধের দূরত্ব ৫০ মিটারেরও কিছুটা কম।ভাঙ্গনে হুমকিতে রয়েছে উক্ত এলাকার বসতবাড়িসহ সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্থাপনা। ফলে ভাঙ্গন নিয়ে এলাকাবাসী আতঙ্কে দিন কাটচ্ছে।এলাকাবাসীর দাবি, এমনি অবস্হা চলতে থাকলে আরো মারাত্মক বিপর্যয় ঘটতে পারে। অন্যদিকে বাহাদুরপুরের মাধবপুরের ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় রয়েছে কৃষিজ অর্থনৈতিক সমৃদ্ধ বিস্তীর্ণ প্রান্তিক চাষিদের পান বরজ।গত কয়েক দিনের ভাঙ্গনে ৭০-৮০ জন পান চাষির প্রায় ৩০০০ পিলি পান বরজ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তাছাড়া এ অঞ্চলে সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সৎকারে ব্যবহৃত একমাত্র শ্মশান ঘাটটিও নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
আমিরুল নামের এক কৃষক জানান,তার ভাই আরজেত ও তার পুত্রদের ৭/৮ বিঘা জমির প্রায় ৮০০ পিলি পানের বরজ নদীতে বিলীন হয়েছে ।তাদের একমাত্র উৎস পান বরজ হারিয়ে তারা দিশেহারা ও পাগলপ্রায়। উপার্জনের জায়গা হারিয়ে তারা এখন পথের ফকির।
মবির পন্ডিত,রেজাউল, জামশেদ, রাব্বি, রহমান, কাশেম, নুরা,নাসির, আনেজ,আজগর,আবু,শিহাব নামের কৃষক এরা সকলেই ১০০ পিলি করে পানের বরজ হারিয়েছেন।
পানচাষি আবুল আলী জানান, মাধবপুর এলাকায় গত দুই বছর আগে এই সমস্ত বরজ আগুনে পুড়ে গিয়েছিল।এবার তা পদ্মা নদী গ্রাস করলো। আমরা কৃষকরা খুবই অসহায়ভাবে দিন কাটাচ্ছি।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা আপনাদের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।অতি শীঘ্রই আমরা সেখানে পরিদর্শনে যাবো। এছাড়া বসতবাড়ি থাকার কারণে জুনিয়াদহ ইউনিয়নের ফয়জুল্লাহপুরে নদীর পানি কমে যাবার সঙ্গে সঙ্গেই ভাঙ্গন প্রতিরোধে কাজ শুরু হবে। পরবর্তীতে অন্যান্য অঞ্চলগুলোতেও পর্যায়ক্রমে কাজ শুরু হবে।
ভেড়ামারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম বলেন, পদ্মা নদীতে ভাঙ্গনের বিষয়টি আমরা জেনেছি।ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিদের আবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
জামালপুরে ট্রাকচালক রিপন মিয়াকে (৪২) গরুচুরির অপবাদে পরিকল্পিতভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। হত্যাকারীদের বিচারের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া ইউনিয়নের পলাশী বাজারে পরিবার ও স্থানীয়রা এই মানববন্ধন কর্মসুচির আয়োজন করে।
ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধনে নিহতের ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়া, শাহীন, ফুপু মঞ্জুয়ারা, ভাবী নার্গীসসহ অন্যান্যরা বক্তব্য রাখেন। এ সময় বক্তারা বলেন, উপজেলার রেহাই পলাশতলা এলাকার মৃত কছর আলীর ছেলে প্রবাসী মওলানা (৩৫) সৌদি আরবে থাকাকালীন চার বছর আগে তার স্ত্রীর সাথে ট্রাকচালক রিপন মিয়ার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিষয়টি জানাজানি হলে রিপন মিয়া ঢাকায় চলে যায় এবং গত ৬ মাস আগে রিপন মিয়া আবার নিজ এলাকায় ফিরে আসে। এরই মধ্যে মওলনা দেশে আসেন। এরপর তাদের প্রেমের বিষয়টি নিয়ে প্রবাসী মওলনার সাথে রিপন মিয়ার একাধিকবার কথা কাটাকাটি হয় এবং তাকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আক্রোশের জেরে ট্রাকচালক রিপন মিয়া গত ৬ সেপ্টেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে একই এলাকার মৃত কছর উদ্দিনের চার ছেলে মওলনা, বুরহান, রাজু, দিলুসহ তাদের লোকজন পরিকল্পিতভাবে রিপন মিয়াকে টেনেহিচড়ে বুরহানের বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পিটিয়ে রশি দিয়ে গাছের সাথে বেধে রাখে। এ সময় প্রতিবেশীরা ছুটে এলে গরুচুরির অপবাদ দিয়ে গাছের সাথে বাধা অবস্থায় তাকে বাঁশ ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটানো হয়। এ সময় রিপন মিয়ার চিৎকারে তার বাবা মোজাম্মেল হক (৬০), ভাই ফরিদ মিয়া, তপন মিয়াসহ পরিবার ও স্বজনরা তাকে উদ্ধারের জন্য গেলে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়। পরে তারা মেলান্দহ থানায় গিয়ে রিপন মিয়াকে উদ্ধারের জন্য পুলিশের সহায়তা চাইলে পুলিশ গিয়ে রিপন মিয়ার মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পরের দিন ময়নাতদন্তের পর মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। এ ঘটনায় মেলান্দহ থানায় হত্যা মামলা দায়ের করতে গেলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামলা না নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করার কথা বলেন। মানববন্ধন থেকে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের মাধ্যমে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী করেন বক্তারা। পরে বিক্ষোভ করে স্থানীয় এলাকাবাসী।
উল্লেখ্য, এই ঘটনায় নিহতের বাবা মোজাম্মেল হক বাদী হয়ে ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৭ থেকে ৮ জনের বিরুদ্ধে গতকাল মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) জামালপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
জয়পুরহাটে ডিমের নষ্ট ও পরিত্যাক্ত খোসা থেকে পাউডার তৈরী করে সাড়া ফেলেছেন এক উদ্যোক্তা। এই পাউডার ব্যবহার হচ্ছে মাছ, মুরগি, গরুর খাবারের ক্যালসিয়াম হিসেবে ও জমির জৈব সার হিসেবে। জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি-হ্যাচারি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করে এই পাউডার তৈরি করা হয়। বর্তমানে যা বিক্রি হচ্ছে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। এতে ভাগ্য বদলেছে উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লার। আর এই পাউডার নিয়ে নানা সম্ভাবনার কথা বলছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
জানা যায়, জয়পুরহাট সদর উপজেলার বেলতলী গ্রামের বাসিন্দা বেলাল মোল্লা ১০-১২ বছর থেকে জেলার বিভিন্ন পোল্ট্রি হ্যাচারি থেকে পরিত্যক্ত ডিমের খোসা সংগ্রহ করতেন। সেই খোসা তিনি বগুড়াসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করতেন। এরপর জানতে পারেন সেই খোসা দিয়ে পাউডার তৈরী করে বিক্রি করা হয়। সেই ভাবনা থেকে ২০২৪ সালে স্থাপন করেন ডিমের খোসা থেকে পাউডার তৈরির কারখানা। এরপর থেকে তাকে আর পেঁছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তার ছোট কারখানায় প্রতিদিন ডিমের খোসার পাউডার তৈরি করে জেলাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বিক্রি করছেন। আর এ পাউডার ব্যবহার হচ্ছে জৈব সার হিসেবে। এছাড়া গরু, মাছ ও মুরগির জোগান দিচ্ছে ক্যালসিয়ামের। উপকার পেয়ে প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে ডিমের পাউডার নিতে আসছেন কৃষক ও মৎসচাষীরা। ৫০ কেজির পাউডার বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ টাকায়। সব খরচ বাদ দিয়ে মাসে তার লাভ থাকছে ২০ হাজার টাকা।
উদ্যোক্তা বেলাল মোল্লা বলেন, আগে বিভিন্ন হ্যাচারি ও পোল্ট্রি থেকে ডিমের খোসা সংগ্রহ করতাম। পাউডারের বিষয়ে জানতে পেরে নিজে কারখানা স্থাপন করেছি। আমার এখানে ৫ জন কাজ করে। এই পাউডারের প্রচুর চাহিদা। বর্তমান জয়পুরহাটসহ আরও ১৫টি জেলায় এই পাউডার সরবরাহ করছি। চাহিদা মতো সরবরাহ দিতে পারছিনা।
কারখানার শ্রমিক আব্দুল খালেক বলেন, ডিসের খোসা পরিস্কার করে মেশিনের ভেতর দেওয়ার পর তা পাউডার হয়ে বের হয়ে আসে। তারপর এখান থেকে বাজারজাত করা হয়। আমরা এখানে ৫ জন কাজ করি। এখান থেকে যে বেতন পাই তা দিয়ে আমাদের সংসার ভাল মতো চলে।
সদর উপজেলার জামালগঞ্জ এলাকার হাবিব হাসান বলেন, এতোদিন জানতাম ডিমের খোসা অপ্রয়োজনীয় জিনিস। কখনো ভাবিনি যে এটা কোন কাজে লাগতে পারে। এখন দেখছি এখান থেকে যে পাউডার তৈরি হচ্ছে তা মাছের খাবার হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। কেউ জমির জন্য কিনে নিয়ে যাচ্ছে।
সদর উপজেলার বেতলী গ্রামের বিপ্লব হোসেন বলেন, আমাদের এলাকাতে ডিমের খোসা থেকে যে পাউডার তৈরী হচ্ছে সেটা অনেক ভাল বিষয়। এমন উদ্যোগে পরিবেশ রক্ষা হচ্ছে তেমন বেকারদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হচ্ছে।
কালাই উপজেলার মাদাই গ্রামের মকবুল হোসেন বলেন, আমি একজন মাছ চাষী। এখান থেকে ডিমের পাউডার কিনে দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে মাছকে খাইয়েছি। এতে দেখছি, মাছ যে পরিমাণ বাড়ার কথা ছিল, তার চেয়ে একটু বেশি বেড়েছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রাফসিয়া জাহান বলেন, এই ডিমের খোসার পাউডার অনেক কৃষক জমিতে ব্যবহার করছে। ডিমের খোসাতে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সালফার এই জাতীয় উপাদানগুলো পাওয়া যায়। যেটা কোন গাছের খাদ্য উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে থাকি। এটাকে আমরা যদি গাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতে পারি, তাহলে নিশ্চিতভাবে উপকারে আসবে। বেলাল মোল্লা যে পাউডার উৎপাদন করছেন সেটাতে কি পরিমাণ কোন উপাদান আছে সেটা যদি পরীক্ষা করা হয়, তাহলে জমিতে কি পরিমাণ ব্যবহার করা যাবে তার একটা মাত্রা নির্ধারণ করা যাবে। এ ব্যাপারে অনেক কাজ করার সুযোগ আছে।
জয়পুরহাট সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. জিয়াউর রহমান বলেন, জয়পুরহাট জেলায় পোল্ট্রি অধ্যষিত এলাকা হওয়ায় এখানকার প্রচুর ডিম বর্জ্য হিসেবে ফেলে দেওয়া হতো। এখন সেই ডিমের খোসা থেকে বেলাল মোল্লা পাউডার তৈরি করছেন। এই পাউডার মৎস্য, পোল্ট্রি ও কৃষি জমিতে ব্যবহার হচ্ছে। ডিমের খোসায় ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ম্যাংগানিজ, বোরন, জিংকসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ উপাদান রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, এই খোসা ব্যবহারের মাধ্যমে একদিকে পরিবেশ দূষণ থেকে মুক্ত হচ্ছে, অন্যদিকে আমাদের খাদ্যের মিনারেলের ঘাটতি পূরণ হচ্ছে। এই উপাদানগুলো আমাদের আমদানি করতে হয়, যখন আমরা এর উৎপাদন বাড়াতে পারবো, তখন আমদানি পরিমাণ কমে আসবে।
মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশের চাকরি পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হয়েছে বিলকিস সুলতানার, বাবা-মায়ের আদর–স্নেহ না পেয়ে বেড়ে ওঠা বিলকিস সুলতানা সরকারি চাকরি পেয়ে এবার নিজেই নিজের স্বপ্ন পূরণ করবেন। একই সাথে নাজমিন নাহার লিজা তার বাবা ইসমাইল কারিগর বহু বছর আগে মারা গেছেন। অভাবের সংসারে অতি কষ্টে লেখাপড়া করেছেন লিজা। বাবার স্নেহ–ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে মায়ের আশ্রয়ে বেড়ে উঠেছেন তিনি। এবারের ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চাকরি পেয়েছেন নাজমিন নাহার লিজা (১৮)।
নিজের যোগ্যতায় সরকারি চাকরি হওয়ায় স্বপ্ন পূরণের আনন্দে চোখ বেয়ে অশ্রু গড়িয়ে পড়ছে লিজার। সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার নগরঘাটা গ্রামের লিজা বলেন, “নানা–নানীর সংসারে থেকে লেখাপড়া করেছি। সেভাবে বাবা-মায়ের আদর পাইনি, তারা থেকেও যেন নেই। আমার চলার পথ সহজ ছিল না। স্থানীয় উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করে বর্তমানে কলেজে পড়ছি। আমি ভাবিনি সরকারি চাকরি হবে। বাড়ি থেকে একাই পুলিশ লাইন্সে এসেছি পরীক্ষা দিতে, আমার সাথে কেউ আসেনি। এখন সবাইকে ফোন করে চাকরির বিষয়টি জানাচ্ছি। মাত্র ১২০ টাকায় চাকরি পেয়ে আমি অনেক খুশি এখন থেকে আমার আনন্দের সময় শুরু।
শুধু লিজা নন, সাতক্ষীরায় এবার মাত্র ১২০ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়েছেন ২৮ জন চাকরিপ্রার্থী। তাদের মধ্যে ২৬ জন ছেলে ও ২ জন মেয়ে। কোন তদবির বা অনৈতিক লেনদেন ছাড়াই, শুধুমাত্র শারীরিক যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি পেয়ে এসব তরুণ–তরুণীরা বেশ উচ্ছ্বসিত। বুধবার (১১ আগস্ট) রাতে জেলার পুলিশ লাইন্সের ড্রিল শেডে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে চূড়ান্তভাবে বাছাইকৃতদের নাম ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম।
সাতক্ষীরার রাকিব রায়হান (১৯) পুলিশে চাকরি পেয়েছেন। তিনি জানান এর আগে আরও দুইবার পরীক্ষা দিয়েছিলাম। দেখেছি, সবারই নিজ নিজ যোগ্যতায় চাকরি হয়েছে। তাই হাল ছাড়িনি, এবার তৃতীয়বারের মতো পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। আমার চাকরি হয়েছে, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই—আলহামদুলিল্লাহ। আমি ব্র্যাক স্কুল থেকে ৫ম শ্রেণী পাশ করে আমার এলাকার হাইস্কুলে পড়েছি। কখনো ভাবিনি ঘুষ ছাড়া চাকরি হবে। কিন্তু টাকা ছাড়া চাকরি পেয়ে সত্যিই আজ আমি আনন্দে আত্মহারা।”
বাবুল, আনোয়ার হোসেন (১৮), তাপসী (২০) ছাড়াও আরও কয়েকজন নিয়োগপ্রাপ্ত বলেন, “এত স্বচ্ছ নিয়োগ হবে জানতাম না। ভাবতাম পুলিশে চাকরি নিতে অনেক তদবির করতে হয়, লাখ লাখ টাকা ঘুষ লাগে। চাকরি হবে কিনা সংশয় ছিলাম, তবুও পুলিশ লাইন্সে এসেছি নিজের যোগ্যতা প্রমাণ করতে। কোন অনিয়ম, দুর্নীতি, তদবির ও লেনদেন ছাড়াই মাত্র ১২০ টাকায় যোগ্যতা ও মেধার ভিত্তিতে চাকরি হয়েছে।
সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন ২৪ জুলাইয়ের বিপ্লব তথা ৫ আগস্টের পর সাধারণ মানুষ যে জনআকাঙ্ক্ষার পুলিশ চায়, সেই পুলিশ গড়ে তুলতে হলে সবার আগে স্বচ্ছ নিয়োগ ব্যবস্থা দরকার। সারাদেশে এভাবেই স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় পুলিশে নিয়োগ হচ্ছে। আমরা অভিভাবকদের আহ্বান জানাবো, তারা যেন তাদের সন্তানদের পুলিশে যোগ দিতে উদ্বুদ্ধ করেন।”
ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে এবার প্রায় ১৯ শত জন আবেদন করেন। যাচাই–বাছাই শেষে তাদের মধ্যে ৩৪৪ জন লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। সেখান থেকে ৫৮ জন মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন। তাদের মধ্যে মোট ২৮ জনের নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়েছে। এদের মধ্যে ২৬ জন পুরুষ ও ২ জন নারী। এছাড়া অপেক্ষমান রয়েছেন আরও ৬ জন।
সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির (এসইইউ) ইনস্টিটিউট অফ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং (আইআরটি) এর আয়োজনে গত ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ তারিখে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাল্টিপারপাস হলে “দি নিড ফর রিহেবিলেশন অ্যাজ এ মেজর পার্ট অব ডিজেবল কেয়ার” শীর্ষক একটি বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সিআরপি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সমন্বয়ক ভ্যালেরি এ. টেইলর, যিনি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী মানুষের যত্ন ও পুনর্বাসনে আজীবন অবদান রেখে অসংখ্য মানুষের জীবন পরিবর্তন করেছেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, প্রতিবন্ধী মানুষের কল্যাণে পুনর্বাসন কার্যক্রমকে প্রাধান্য দিতে হবে এবং এ ক্ষেত্রে নতুন ও স্বল্প খরচের প্রযুক্তি উদ্ভাবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কাজ করতে সিআরপি অত্যন্ত আগ্রহী।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইউসুফ মাহবুবুল ইসলাম, যিনি শিক্ষার্থীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রতিবন্ধী মানুষের অধিকার ও সম্ভাবনাকে এগিয়ে নিতে আহ্বান জানান।
সেমিনারটি সঞ্চালনা করেন আইআরটি’র পরিচালক অধ্যাপক ড. হাসনাত এম. আলমগীর। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থেকে আলোচনায় অংশ নেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রতিবন্ধী বান্ধব প্রযুক্তি ও নীতি প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন।
পুরো আয়োজনটি অংশগ্রহণকারীদের কাছে এক অনুপ্রেরণাদায়ক অভিজ্ঞতা হয়ে ওঠে এবং বিশেষজ্ঞদের মতে, এ ধরনের উদ্যোগ ভবিষ্যতে প্রতিবন্ধী যত্ন ও পুনর্বাসন খাতে নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
প্রায় ৩৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচন। বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হয় ভোটগ্রহণ। বিরতিহীনভাবে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।
নির্বাচনকে ঘিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটগুলোতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। সকাল সোয়া আটটার দিকে ক্যাম্পাসের পেছনে গেরুয়া এলাকা সংলগ্ন ফটকে বহিরাগত প্রবেশ নিষেধ লেখা ব্যানার ঝোলানো হয়েছে।
ক্যাম্পাসের বিভিন্ন জায়গায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার (পিপিএম) আনিসুজ্জামান বলেন, এখন পর্যন্ত কোনো ঝুঁকি নেই। তবে অন্যান্য ফটকের তুলনায় গেরুয়া ফটক দিয়ে বাইরের লোকজন ঢোকার চেষ্টা করবে। এ কারণে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বেশি রাখা হয়েছে।
এছাড়া নির্বাচনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি গতকাল রাজধানীতে সাংবাদিকদের জানান, জাকসু নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ, আনসার, বিজিবি– সব বাহিনীই মাঠে থাকবে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীও সতর্ক অবস্থায় থাকবে। প্রয়োজনে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দায়িত্ব পালন করবে।
জাকসু নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে উৎসবের আমেজ। শান্তিপূর্ণ ভোটের জন্য নেওয়া হয়েছে সব প্রস্তুতি। নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাস জুড়ে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকে ভোটের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন ও শিক্ষার্থীদের মাঝে সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার দাবি জোরালো হয়ে ওঠে। এ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্যাম্পাসে গণতান্ত্রিক চর্চার পরিবেশ ফিরবে বলে আশা করছেন শিক্ষার্থীরা।
এ নির্বাচনে কেন্দ্রীয় সংসদে ১৭৭ ও হল সংসদে ৪৪৫ প্রার্থী আছেন ভোটের এই লড়াইয়ে। কেন্দ্রীয় সংসদে ভিপি পদে ৯ ও জিএস পদে আটজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। গঠনতন্ত্র সংস্কার করে ১১টি পদ বাড়িয়ে ২৫টি করা হয়েছে। এর আগে ছিল ১৪টি পদ।
২৫ পদের মধ্যে ছাত্রীদের জন্য আছে ছয়টি সংরক্ষিত। নেতৃত্বে ছাত্রীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এমন উদ্যোগ। ৩৩ বছর পর হচ্ছে জাকসু নির্বাচন। ভোটে অংশ নিচ্ছে ক্যাম্পাসে সক্রিয় সব সংগঠন।
ভোট গণনায় ব্যবহার করা হবে বিশেষ ওএমআর মেশিন। ফলাফল তাৎক্ষণিক সিনেট হলে বসানো বড় স্ক্রিনে প্রদর্শন করা হবে এবং প্রতি ঘণ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে আপডেট জানানো হবে। এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট ও জনসংযোগ দপ্তরের ফেসবুক পেজে ফলাফল ও নির্দেশনা প্রকাশ করা হবে।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়ার পদ্মা নদীতে ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের একটি বড় কাতল মাছ ধরা পড়েছে। মাছটি ৪৪ হাজার ১৬০ টাকায় কিনে নিয়েছেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা।
গতকাল বুধবার দুপুরে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় মানিকগঞ্জ জেলার জাফরগঞ্জ এলাকার জেলে সোনাই হালদারের জালে মাছটি ধরা পড়ে।
জানা গেছে, জেলে সোনাই হালদার তার সঙ্গীদের নিয়ে সকালে পদ্মা নদীর কলাবাগান এলাকায় উজানের ভাটিতে জাল ফেলে। এ সময় তাদের জালে বড় একটি কাতল মাছ ধরা পড়ে। পরে জেলে সোনাই হালদার মাছটি বিক্রির জন্য বিকাল সোয়া ৩টার দিকে দৌলতদিয়া ৫নং ফেরিঘাট এলাকার আনোয়ার খাঁর আড়তে নিয়ে আসেন। এ সময় উন্মুক্ত নিলামে ২ হাজার ৩০০ টাকা কেজি দরে ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা দিয়ে মাছটি কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা।
মাছ ব্যবসায়ী চান্দু মোল্লা বলেন, ১৯ কেজি ২০০ গ্রাম ওজনের কাতল মাছটি উন্মুক্ত নিলামে ৪৪ হাজার ১৬০ টাকা দিয়ে কিনেছি। মাছটি বিক্রির জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হয়েছে। কেজি প্রতি ৫০ টাকা লাভ হলে মাছটি বিক্রি করে দেব।
পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশের সময় যশোরের শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত থেকে ৫ নারী-পুরুষকে আটক করেছে বিজিবি সদস্যরা। গত মঙ্গলবার রাতে সীমান্তের ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলারের নিকট থেকে তাদের আটক করা হয়।
বিজিবি জানায়, শার্শা উপজেলার কায়বা সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশি নাগরিকরা বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশ করতে পারে। ওই সংবাদের ভিত্তিতে বিজিবির একটি টহল দল সীমান্ত পিলার ১৭/৭ এস এর ২২ আর পিলার থেকে আনুমানিক ৫০ গজ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে ভারতে প্রবেশের সময় ২ জন পুরুষ এবং ৩ জন নারীকে আটক করে।
আটককৃত ব্যক্তিদের বাড়ি, যশোর, বাগেরহাট, মুন্সীগঞ্জ, ঢাকা এবং সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকায়। আটককৃতদের শার্শা থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান বিজিবি। খুলনা-২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মোহাম্মদ খুরশীদ আনোয়ার আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সাম্প্রতিককালে সীমান্ত দিয়ে অবৈধ অনুপ্রবেশ রোধকল্পে বিজিবি সীমান্তে কঠোর নজরদারি ও টহল তৎপরতা বৃদ্ধি করেছে।