ময়মনসিংহের ফুলপুরে ১২ দিন আগে গলিত অবস্থায় অজ্ঞাত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। পরিচয় শনাক্ত না হওয়ায় মরদেহটি দাফনও করা হয়। ফুলপুরে হাজির হয়ে মরদেহটি মা রহিমা বেগমের বলে দাবি করেছেন খুলনার দৌলতপুরের মরিয়ম মান্নান। তবে মরদেহটির পরিচয় নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। এ পরিস্থিতিতে পরিচয় শনাক্তে ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন মরিয়ম।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) ফুলপুরে যান মরিয়ম মান্নান। তার দুই বোন মাহফুজা আক্তার ও আদুরী আক্তার তার সঙ্গে ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফুলপুর থানায় পৌঁছলে পুলিশ অজ্ঞাত ওই নারীর ছবিসহ পরনে থাকা পোশাক দেখায় তিন বোনকে। ছবি ও পোশাক দেখেই মরিয়ম মান্নান বলেন, এটি তার মায়েরই মরদেহ।
মরিয়ম মান্নান দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘২৭ দিন ধরে আমার মা নিখোঁজ। আমরা প্রতিনিয়ত আমাদের মাকে খুঁজছি। এরই মধ্যে গত ১০ সেপ্টেম্বর ফুলপুর থানায় একটি অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধারের খবর পেয়ে এখানে ছুটে এসেছি। সালোয়ার-কামিজ ছাড়াও ছবিতে আমার মায়ের শরীর, মায়ের কপাল ও হাত দেখে মনে হয়েছে এটাই আমার মা।’
তবে মরিয়মের মতো নিশ্চিত হতে পারছে না পুলিশ। ফুলপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুল মোতালেব চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মরিয়মের মায়ের বয়স ৫৫ বছর। আর আমরা যে গলিত মরদেহটি উদ্ধার করেছি, সেটির আনুমানিক বয়স ২৮ থেকে ৩২ বছর মনে হচ্ছে। এসব দিক বিবেচনায় মরদেহটি তার মায়ের নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।’
এ অবস্থায় ডিএনএ পরীক্ষা করা হবে কি না- জানতে চাইলে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মরিয়ম মান্নান ওই মরদেহটি তার মা রহিমা খাতুনের দাবি করলেও নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করতে পারেননি। চূড়ান্তভাবে মরদেহ শনাক্তে মরিয়মের ডিএনএ টেস্ট করা প্রয়োজন। এর জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংরক্ষণ করা হয়েছে।’
মরিয়ম মান্নান জানান, গত ২৭ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুর মহেশ্বরপাশা বণিকপাড়া থেকে নিখোঁজ হন তার মা রহিমা বেগম। পানি আনতে বাড়ি থেকে নিচে নামার পর থেকেই তার আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। দীর্ঘ অপেক্ষার পর মাকে খুঁজে না পেয়ে প্রথমে থানায় জিডি ও পরে অপহরণ মামলা করেন রহিমা বেগমের মেয়েরা। এ মামলায় এরই মধ্যে পুলিশ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করলেও সন্ধান মেলেনি রহিমা বেগমের।
এর মধ্যেই গত বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে মরিয়ম মান্নান জানান, তার মায়ের সন্ধান পেয়েছেন।
এক দশক আগেও দেশে বধিরতায় ভোগা মানুষের জন্য ‘কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট’ চিকিৎসা প্রচলিত ছিল না। অনেকে তখন বিদেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকায় এ চিকিৎসা করাতেন। এখন অবশ্য দেশেই ১০ থেকে ১৫ লাখ টাকায় তা সম্ভব। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে নামমাত্র টাকায় এ চিকিৎসা করা যাচ্ছে।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অর্থায়নে কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট চিকিৎসা করা হয় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। এর ফলে সম্পূর্ণ শ্রবণপ্রতিবন্ধী বা জন্মগত মূক ও বধির শিশুরা এখন কানেও শুনবে, কথাও বলতে পারবে। গত অক্টোবরের ২৬ ,২৭ ও ২৯ তারিখে ভোলা জেলার ৩ বছর ১০ মাসের ছোট শিশু ওমর ফারুক, বরিশাল জেলার ৩ বছর ৮ মাস বয়সের শিশু হাফিজা, কুষ্টিয়া জেলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সের আদিবা, বরিশাল জেলার ৪ বছর ৮ মাস বয়সের শিশু আলিফ খান, নওগাঁ জেলার ৪ বছর ৭ মাস বয়সী শিশু রিয়াজ হাসান ও মুন্সিগঞ্জ জেলার ৩ বছর ১০ মাস বয়সের শাহেল ইসলাম এই ৬ জন জন্মগতভাবে বধির শিশুদের কানে ইমপ্ল্যান্ট অস্ত্রোপচার করা হয়।
হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিভাগের প্রধান ও হেড-নেক সার্জারি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক (কক্লিয়ার ইমপ্ল্যাট) অধ্যাপক ডা. নৃপেন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হচ্ছে একটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন চিকিৎসাপদ্ধতি। দক্ষ ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশুর কানে ইলেকট্রনিক ডিভাইস লাগিয়ে এ চিকিৎসা করে থাকেন।
জাতিসংঘের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২ হাজার ৬০০ শিশু বধির হয়ে জন্ম নেয় উল্লেখ করে চিকিৎসক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, ফরিদপুরে এই চিকিৎসাব্যবস্থা চালু হওয়ায় জন্ম থেকে কানে না শোনা এবং কথা বলতে না পারা শিশুদের চিকিৎসায় একটা নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হয়েছে।
চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, যা মারাত্মক বা সম্পূর্ণ শ্রবণপ্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে শব্দ শুনতে সহায়তা করে। এটা বায়োনিক কান নামেও পরিচিত। এটি অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অন্তঃকর্ণের কক্লিয়ায় স্থাপন করা হয়। এর দুটি অংশ। বাইরের অংশে মাইক্রোফোন, স্পিস প্রসেসর ও ট্রান্সমিটার কয়েল থা। ভেতরের অংশে রিসিভার স্টিমুলেটর ও ইলেকট্রেড থাকে।
ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (কক্লিয়ার ইমপ্ল্যান্ট) বিশেষজ্ঞ লেফটেন্যান্ট কর্নেল ডা. ইফতেখারুল আলম, নাক-কান-গলার বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস, সহকারী অধ্যাপক ডা. এস এম ফয়সাল সিজন, জুনিয়র কনসালটেন্ট ডা. এটিএম সুমাইয়েফ-উর রহমান (সৈকত) সহ বিভিন্ন ডিপার্টমেন্টের চিকিৎসকরা উপস্থিত থেকে এই চিকিৎসা সম্পন্ন করেন।
চলতি বর্ষা মৌসুমের বর্ষার পানি চলে যেত না যেতেই মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মানদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নাব্য সংকট দেখা দিয়েছে। এর ফলে গত আট দিন ধরে উপজেলার আন্ধারমানিক ঘাট থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছেড় আসা সার বোঝাই এমভি আম্বু হালিমা-৪ নামের একটি জাহাজ আটকে আছে। এছাড়াও প্রতিদিন পদ্মায় চলাচলকৃত জাহাজ, বালুবাহী বাল্কহেডসহ ছোট বড় নৌকা চলাচলে ব্যাহত হচ্ছে নিয়মিত।
স্থানীয়দের সাথে কথা জানা যায়, বর্ষার পানি কমতেই উপজেলার ধুলশুরা, হারুকান্দি থেকে গোপীনাথপুর, কাঞ্চনপুরের আংশিক পর্যন্ত নদীর এ পার থেকে প্রায় ২ কিলোমিটার দূরে নদীর মাঝ দিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ডুবোচর জেগে উঠে। প্রায় তিন বছর আগে প্রথম এ চরটি দেখা গেলেও ভরা বর্ষা মৌসুমে তা ডুবে যায়। বর্ষার পানি কমা শুরু হতেই আবার জেগে উঠে। এতে করে উপজেলা সদরের সাথে দুর্গম চরাঞ্চলের জনগণের যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম ইঞ্জিনচালিত ট্রলার চলাচলেও ব্যাহত হচ্ছে বলে জানান ট্রলার মাঝিরা।
স্থানীয়রা আরও জানান, উপজেলার আন্ধারমানিক ও বাহাদুরপুর ঘাট থেকে প্রতিদিন ১০টি ট্রলার যাতায়াত করে দুর্গম চরাঞ্চল হরিণাঘাট ও সেলিমপুর। প্রতিদিন প্রায় পাঁচ শতাধিক মানুষ উপজেলা সদরে যাতায়াত করে দুর্গম চরাঞ্চলের মানুষ। এছাড়াও ট্রলারে চরাঞ্চলে বিভিন্ন ধরনের কৃষিপণ্যসহ সার ও অন্যান্য মালামাল আনা নেয়া করে থাকে। নদীর নাব্য সংকটে এসব মালামাল আনা নেয়া দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে বলে দাবি করেন চরাঞ্চলের কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
গত কয়েক দিন ধরে সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর এ পাড় থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে লম্বা ধূ-ধূ বালুচর। বালুচরের পাশেই দেখা যায় আটকে আছে একটি জাহাজ। নদীর পাড়ে চায়ের দোকান থেকে এগিয়ে আসে জাহাজের মাস্টার মো. বাচ্চু মিয়া। তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার সময় ডুবোচরে আমাদের জাহাজটি আটকে যায়। গত আট দিন ধরে আমরা বসে আছি। আমরা চট্টগ্রাম থেকে টিএসপি সার নিয়ে নগরবাড়ি যাব। সময় মতো সার পৌছে দিতে না পারলে তো কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে। অনেক চেষ্টা করেও এখনো আমরা জাহাজ নামাতে পারছি না। প্রতি বছর এই অঞ্চলে আমাদের সমস্যায় পরতে হয়। তাই সংশ্লিষ্টদের কাছে আমাদের অনুরোধ নৌরুট সচল রাখতে এসব ডবোচর ড্রেজিং করে নদীর গতিপথ প্রসারিত করার ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
আন্ধারমানিক ঘাটের ট্রলারের মাঝি ফরহাদ জানান, আমাদের এখান থেকে প্রতিদিন ৬টি ট্রলারে চরাঞ্চলের মানুষজন যাতায়াত করে। এখান থেকে নদীর ওপরের দূরত্ব প্রায় ১০ কিলোমিটার। কিন্তু নদীর মাঝ দিয়ে লম্বা ডুবোচর জেগে উঠায় প্রায় ৩ কিলোমিটার পথ ঘুরে আমাগো যাইতে হচ্ছে। এতে যেমন সময়ও বেশি লাগে। তেমনি আমাগো তেলের খরচও বেশি হয়। কিন্তু যাত্রীরা তো আর আমাগো ভাড়া বাড়াই দেয় না। এই ডুবোচরে আমাগো ট্রলারসহ মালবাহী জাহাজ চলাচলেও সমস্যা হয়। তাই ড্রেজিং এর মাধ্যমে ডুবোচর কেটে না ফেললে নৌযান চলাচল করতে পারবে না।
অন্য আরেকটি ট্রলারের মাঝি শাহীন জানান, আমাগো এই জায়গা ২/৩ বছর যাবত নদীর মাঝ দিয়ে লম্বা ডুবোচর পরা শুরু হয়েছে। বর্ষার পানি টান দিলেই এই ডুবোচর দেখা যায়। এতে করে এখানে প্রতি বছর অসংখ্য মালবাহী বড় বড় জাহাজ দিনের পর দিন আটকে থাকে। এবার আটদিন ধরে সার বোঝাই একটা আটকা পরে আছে। আমরা ট্রলার চালাই। এখান থেকে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে বিকেলে ৫টা পর্যন্ত চরাঞ্চলের মানুষ এই ট্রলারে যাতায়াত করে। এই পয়েন্টে ডুবোচরের কারণে আমরাও ট্রলার চালাইতে পারি না। প্রায় ৪কিলোমিটার ঘুরে আমাগো চরে যাইতে হয়।
এ বিষয়ে বিআইডব্লিউটিএর আরিচা অঞ্চলের ড্রেজিং ইউনিটের নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান আহমেদ জানান, ডুবোচর ড্রেজিং আমাদের অধীনে না। আমরা সাধারণ নৌরুটে ক্লিয়ার রাখতে নৌযান চলাচল এলাকা মার্কিং থাকে। এই সব এলাকায় যদি নাব্য সংকট দেখা দেয় তাহলেই আমরা ড্রেজিং করে থাকি। এছাড়াও প্রতিটি জাহাজে নৌরুট শনাক্তের জন্য পাইলট থাকে। তারা যদি কোনো এলাকা ড্রেজিং প্রয়োজন মনে করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে রিকোয়ারমেন্ট দেয় যে, এই এলাকা ড্রেজিং প্রয়োজন তবেই ড্রেজিং করা হয়। প্রতিটি পাইলটই রুট শনাক্ত করে জাহাজ পরিচালনা করেন।
যে জাহাজটি আটকে আছে ওই জাহাজে সম্ভবত পাইলট ছিলেন না। পাইলট থাকলে হয়তো এমনটি হতো না। কারণ পাইলটেরা পানির রঙ দেখলেই বুঝতে পারেন কোথায় পানি কম বেশি আছে। কোন জায়গা দিয়ে জাহাজটি সচরাচর যেতে পারবে।
অক্টোবর মাস বিশ্বজুড়ে পালিত হয় ‘স্তন ক্যান্সার সচেতনতা মাস’ হিসেবে। নারীদের প্রাণঘাতী এই রোগ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে মাসটি গুরুত্ব পায় পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হলো সচেতনতামূলক মিনি ম্যারাথন ‘পিংক রান ২০২৫’।
গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ৭টায় ক্যান্সার কেয়ার অ্যান্ড রিসার্চ ট্রাস্ট বাংলাদেশ (সিসিআরটিবি)-এর আয়োজনে এই মিনি ম্যারাথন অনুষ্ঠিত হয়।
ম্যারাথন শহীদ মিনার থেকে শুরু হয়ে জগন্নাথ হলের পাশ দিয়ে টিএসসি, শিববাড়ি মোড় হয়ে কার্জন হল ঘুরে পুনরায় শহীদ মিনারে এসে শেষ হয়। এতে বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার এবং বয়সের মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
ম্যারাথন উদ্বোধনকালে সিসিআরটিবির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ও বায়োটেকনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মুশতাক ইবনে আয়ুব বলেন, ক্যান্সার নিয়ে আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। বিশেষ করে নারীদের স্তন ক্যান্সার নিয়ে যথেষ্ট সচেতনতার অভাব রয়েছে। আমরা শুরু থেকেই সচেতন থাকলে স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ সম্ভব। তা ছাড়া, যেকোনো ক্যান্সারের জন্য ডায়েট (খাবারে সচেতন হওয়া) পর্যাপ্ত ঘুম ও শারীরিক পরিশ্রম এর গুরুত্ব অনেক বেশি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের ট্রাস্টি মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন ও ট্রেজারার কামরুল ইসলাম রিপন ক্যান্সার সচেতনতায় দিকনির্দেশনামূলক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য প্রদান করেন। ম্যারাথনে কবি সুফিয়া কামাল হল ছাত্র সংসদের এজিএস শিমু আক্তার ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি ট্যুরিস্ট সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক শুভ্র দেব অন্যান্যরা।
রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি থেকে রহস্যজনকভাবে ‘নিখোঁজ’ হয়েছেন পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এহসানউল্লাহ। গত বুধবার সকাল থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিষয়টি জানাজানি হয়।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি সূত্রে জানায়, মানবতাবিরোধী অপরাধের একটি মামলায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের একটি প্রতিনিধি দল রাজশাহী জেলা পুলিশের সহায়তায় বৃহস্পতিবার সকালে সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ডিআইজি এহসানউল্লাহকে আটক করতে যায়। পুলিশ কর্মকর্তা এহসানউল্লাহ বিষয়টি জানতে পেরে আগেই সেখান থেকে ‘আত্মগোপনে’ চলে যান। বরিশালের সাবেক এই পুলিশ সুপার বর্তমানে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ডিআইজি হিসাবে সাপ্লাই বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির পুলিশ সুপার (প্রশাসন) সাইফুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ডিআইজি এহসানুল্লাহ বুধবার থেকে একাডেমিতে অনুপস্থিত রয়েছেন। তিনি ছুটির আবেদন বৃহস্পতিবার ডাকযোগে পাঠিয়েছেন। কিন্তু সে আবেদন গৃহীত হয়নি। উনার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমির একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ডিআইজি এহসানুল্লাহকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের একটি টিম একাডেমিতে আসছেন এ খবর তিনি আগেই জেনে ফেলেন। তিনি মোটরসাইকেলে একাডেমি ত্যাগ করেন বলেও জানা গেছে।
বাংলাদেশের অনেক অঞ্চলেই উৎসব, আড্ডা, চায়ের দোকান আর গৃহস্থের বাড়িতে পান খাওয়ার প্রচলন রয়েছে। এই পান চাষেই কুমিল্লার চারটি গ্রামে এসেছে রঙিন সমৃদ্ধি।
কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বরুড়া সীমান্তবর্তী কাদুটি, পাইকের করতলা, চাঁদসার ও লনাই গ্রামে প্রায় শত বছর ধরে পানের চাষ হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি পান চাষ হয় কাদুটি গ্রামে। এই গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ পান চাষি, ব্যবসায়ী ও শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন। এখানে মহালনী, চালতাগোটা ও সাচি জাতের পানের চাষ হয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, বাঁশের টুকরোতে খুব যত্নে বেড়ে উঠেছে পানের চারা। সবুজ পান চারায় যেন হাসছে পুরো জমি। ওপরে দেওয়া হয়েছে খড়ের হালকা ছাউনি, যার ফাঁক দিয়ে হালকা সোনালি আলো পানের পাতায় পড়ে লুকোচুরি খেলছে।
কাদুটি গ্রামের পানচাষি ইউনুছ মিয়া বলেন, এক একরের বেশি জমিতে পান চাষ করেছেন তিনি। খরচ হয়েছে সাড়ে আট লাখ টাকা, বিক্রি হয়েছে দ্বিগুণের বেশি। একটি জমিতে একবার পান চাষ করলে তা ১০ বছর বা তারও বেশি সময় ফলন দেয় বলেও জানান তিনি।
আরেক কৃষক আবুল বাশার বলেন, ‘আমাদের কাদুটি গ্রামের ৮০ ভাগ মানুষ পান চাষে জড়িত। এই পান ১৫ দিন পর পর উঠানো হয়। পান চাষের কারণে এলাকায় মানুষ সচ্ছল হয়েছে।’
তিনি আরও জানান, এই গ্রামের পান কাদুটি, নবাবপুর, গৌরীপুর, সাচার, বদরপুরসহ বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হয়। আগে পানের ভিড়া ২০০-২৬০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কৃষক কামাল হোসেন বলেন, ৩০ শতক জমিতে পান চাষ করতে তার চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ভালো লাভ পেয়েছেন। তবে বর্তমানে পানের দাম কমায় তারা বেকায়দায় পড়েছেন।
ব্যবসায়ী রমিজ মিয়া বলেন, যে পান ৩০০ টাকায় বিক্রি হতো, এখন তা ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবার ও অন্যান্য খরচ বাড়ায় কৃষকরা বেকায়দায় পড়েছেন।
পাইকারি ব্যবসায়ী মিন্টু চন্দ্র দত্ত বলেন, কাদুটি, ঝলম, মাধাইয়া ও বদরপুরসহ বিভিন্ন হাট থেকে তিনি পান কেনেন। এখানের পান বিভিন্ন উপজেলায় যায়। এই পানের স্বাদ চমৎকার।
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুলতান আহমেদ বলেন, এই পানের রোগ কম, ফলন ভালো হয়েছে। উৎপাদন বেশি হওয়ায় কৃষক দাম কম পাচ্ছেন। কিছুদিন পর সে সমস্যা কেটে যাবে বলেও মনে করেন তিনি।
উপজেলা কৃষি অফিসার মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বলেন, চান্দিনা উপজেলায় ৪২ হেক্টর জমিতে পান চাষ হয়। কাদুটিতে হয় ১২ হেক্টর জমিতে। এক বিঘা জমিতে খরচ হয় ৩ লাখ টাকা আর বিক্রি হয় সাড়ে ছয় লাখ টাকা।
তিনি আরও বলেন, এটি ছায়া জাতীয় ফসল। সরাসরি আলো পড়লে ফলন ভালো হয় না। বৃষ্টি বেশি হওয়ায় এবার উৎপাদন ভালো হয়েছে। এজন্য এখন একটু দাম কম। তবে সামনের শীতে দাম আরও বাড়বে। চান্দিনায় পান চাষের আরও সম্ভাবনা রয়েছে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।
সূত্র: ইউএনবি
নারায়ণগঞ্জে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের ঝটিকা মশাল মিছিল থেকে ৫ জনকে আটক করা হয়েছে। শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) দিবাগত রাতে ফতুল্লার রঘুনাথপুর এলাকার ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।
আটকরা হলেন— ফাহিম আহম্মেদ (২৩), মো. নিরব হোসেন (১৮), মো. ফয়সাল (২০), মো. অনিক আহমেদ অনিন (২১), মো. আবির (১৫)। তবে তাদের পদবী জানা যায়নি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গভীর রাত আনুমানিক দুইটার দিকে ঢাকা–নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডের পাসপোর্ট অফিসের সামনে ছাত্রলীগের ৬০- ৭০ জন নেতাকর্মী মশাল হাতে হঠাৎ ঝটিকা মিছিল বের করে। বিষয়টি জানাজানি হলে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করে ও পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে ছাত্রলীগের ৫ জনকে আটক করে। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি ব্যানার, কয়েকটি মশাল, লাঠি ও একটি পিকআপ ভ্যান জব্দ করে।
এ বিষয়ে জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি বলেন, রাতে একটি কাজে যুবদলের নেতা কর্মীদের নিয়ে সাইনবোর্ড এলাকায় যাই। ওই সময় সেখানে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে। এ ঘটনা দেখে পুলিশকে অবহিত করলে, পুলিশ এসে তাদের ধাওয়া দিয়ে পাঁচজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফতুল্লা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আনোয়ার হোসেন বলেন, রাতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে ব্যানার, লাঠিসহ বিভিন্ন জিনিস জব্দ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী মামলা হবে।
দিনাজপুরে সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন এবং চাকরিচ্যুত
সাংবাদিকদের পূণর্বহালের দাবিতে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ঘোষিত কর্মসুচির অংশ হিসেবে সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর এই বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
শনিবার শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ১১ টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সভাপতি অধ্যাপক সাদাকাত আলী খান।
সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সহসাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল হক খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন দিনাজপুর চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি'র পরিচালক জেলা বিএনপি'র তথ্য ও প্রচার বিষয়ক সম্পাদক মোঃ মঞ্জুর মুর্শেদ সুমন, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুরের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহফিজুল ইসলাম রিপন, সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি মােঃ ফারুক হোসেন, অর্থ সম্পাদক আব্দুস সালাম দৈনিক বাংলার জেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান প্রমূখ।
সমাবেশ থেকে সাগর-রুনিসহ সকল সাংবাদিক হত্যার বিচার, নবম ওয়েজ বোর্ড বাস্তবায়ন ও দশম ওয়েজ বোর্ড গঠন এবং চাকরিচ্যুত সাংবাদিকদের পূণর্বহালসহ সাংবাদিকদের ২১ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহবান জানান বক্তারা। শুধু কথায় নয়, কথার সাথে কাজের মিল রেখে তা বাস্তবায়ন করার আহবান জানান বক্তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে সাংবাদিক সালাহ উদ্দিন আহেমদ, স্বপ্ন মৃধা.আবুল ওহাব, লুৎফর রহমান, সাজেদুর রহমান নওশাদ মামুনুর রশিদ বিপ্লব, মেনহাজুল ইসলাম, মোঃ ইসমাইল হোসেন প্রমূখ।
রাতভর বৃষ্টির কারণে চাঁপাইনবাবগঞ্জের বিভিন্ন এলাকাসহ রেললাইনে পানি জমে থাকায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আন্তঃনগর বনলতা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট বিলম্বে ছেড়ে গেছে। এতে যাত্রীরা ভোগান্তিতে পড়েন।
শনিবার (১ নভেম্বর) সিডিউল অনুযায়ী ট্রেনটি সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও, রেললাইনে পানি জমে থাকার কারণে এটি সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্টেশন ছেড়ে যায়।
আব্দুল হামিদ নামে এক যাত্রী বলেন, ঢাকায় বিকেল ৩টার দিকে একটি ব্যাংকের চাকরি পরীক্ষা দিতে যাচ্ছি। কিন্ত আজকে প্রায় ২ ঘণ্টা মতো ট্রেন লেট হয়েছে। এর ফলে আমরা সাধারণ যাত্রীরা দুর্ভোগে পড়েছি। চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভা কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, তারা যেন দ্রুত ড্রেনেজ ব্যবস্থা ঠিক করেন।
আবু সাঈদ নামে আরেক যাত্রী বলেন, আমার মায়ের অসুস্থতার কারণে চিকিৎসা করাতে ঢাকায় যাচ্ছি। কিন্ত রেললাইনে বৃষ্টির পানি জমে থাকার কারণে ট্রেন লেট হয়েছে। একদিকে রাতভর বৃষ্টি, অপরদিকে ট্রেন লেটের ফলে যাত্রীদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ রেল স্টেশনমাস্টার শহিদুল আলম বলেন, শনিবার সারারাত ধরে বৃষ্টি হয়েছে, এতে স্টেশনের রেললাইনে হাঁটু পানি জমে যায়। এমনকি রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ রুটের বিভিন্নস্থানে পানি জমে ছিল। তাই বনলতা এক্সপ্রেস সকাল ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ২ ঘণ্টা ১৫ মিনিট পর ছেড়ে যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী তোফিকুল ইসলাম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ পৌরসভায় কয়েকটি স্থানে ড্রেনের কাজ চলমান আছে। এজন্য হঠাৎ বৃষ্টিতে কিছুটা জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। শহরে জমে থাকা পানি মেশিনের মাধ্যমে নিষ্কাশন করা হচ্ছে। এছাড়া আশা করি ড্রেনের কাজ শেষ হলে জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের লক্ষীপুর গ্রামে পানিতে ডুবে মারা গেছে তিন বছরের শিশু আরওয়া। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুসংবাদ শুনে আফ্রিকা প্রবাসী বাবা ওসমান গনি শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টার যোগে ছুটে আসেন মেয়ের শেষ দেখায়।
শুক্রবার বিকেলে গ্রামের গুণবতী স্কুল মাঠে হেলিকপ্টার অবতরণের সময় সেখানে উপস্থিত সবাই চোখে জল নিয়ে দেখেন এক বাবার ছুটে যাওয়া। কোনো হৈচৈ ছিল না— ছিল শুধু নিস্তব্ধতা, কান্না আর বুকভাঙা আহাজারি।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওসমান গনি বাদল গত ১৫ বছর ধরে আফ্রিকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করে আসছেন। দেশে থাকাকালীন মেয়ের জন্মের পর তিনি ছয়-সাত মাস তাদের সঙ্গে কাটিয়ে চলতি বছরের আগস্টে আবার বিদেশে ফিরে যান।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বাড়ির সামনের পুকুরে পড়ে যায় আরওয়া। পরিবারের সদস্যরা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। একমাত্র সন্তানের মৃত্যুসংবাদ পেয়ে প্রবাসী বাবা ওসমান গনি বৃহস্পতিবার রাতেই ফ্লাইটে ঢাকায় ফেরেন এবং শুক্রবার সকালে হেলিকপ্টারে নিজ গ্রামে পৌঁছান।
তিনি মেয়ের জানাজায় অংশ নিয়ে নিজ হাতে দাফন সম্পন্ন করেন।
এ সময় উপস্থিত সবাই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
ওসমান গণির বন্ধু মো. ইস্রাফিল বলেন, “ওসমান আরওয়াকে শেষবারের মতো দেখতে চেয়েছিলেন। তাই আমরা লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে মেয়ের মরদেহ সংরক্ষণ করে রেখেছিলাম।”
ওসমান গণির ফুফা সাইদুল ইসলাম জানান, “বৃহস্পতিবার দুপুরে মৃত্যুর খবর পেয়ে তিনি রাতেই রওনা দেন, পরদিন সকালে আমাদের গ্রামে পৌঁছান।
গাজীপুরের কালীগঞ্জে অল্পের জন্য বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেয়েছে কিশোরগঞ্জগামী ‘এগার সিন্ধুর গোধূলি (৭৪৯) এক্সপ্রেস’ ট্রেনের শতাধিক যাত্রী। ট্রেনটির একটি হুইসপাইপ খুলে যাওয়ায় আকস্মিকভাবে গতি কমে যায় এবং এক পর্যায়ে ট্রেনটি সম্পূর্ণ থেমে যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
ঘটনাটি ঘটেছে গত বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে, যখন ট্রেনটি আড়িখোলা রেলস্টেশন অতিক্রম করছিল।
রেলওয়ে সূত্রে জানা যায়, টঙ্গী–ভৈরব রেলপথে চলাচলরত ট্রেনটি আড়িখোলা স্টেশন পার হওয়ার পরপরই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ধীরে ধীরে গতি হারায়। কিছুদূর এগিয়ে মুনসরপুর টেকপাড়া এলাকায় গিয়ে ট্রেনটি সম্পূর্ণ থেমে যায়। পরে চালক ও ট্রেনের পরিচালকেরা দেখতে পান, ট্রেনের ‘ক’ বগির হুইসপাইপ খুলে গেছে- এই পাইপ দিয়েই ট্রেনের ব্রেকসহ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় কমপ্রেসড এয়ার প্রবাহিত হয়। পাইপটি খুলে যাওয়ার ফলে ট্রেনের ব্রেক সিস্টেম অচল হয়ে পড়ে, ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি হয়।
রেলওয়ের প্রকৌশল বিভাগ ও উদ্ধারকারী দল দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ট্রেনটি পেছনের দিকে চালিয়ে আড়িখোলা স্টেশনে আনা হয়। প্রায় দেড় ঘণ্টা ভৈরবগামী লাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকলেও ঢাকাগামী লাইনে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক ছিল।
পরে ক্ষতিগ্রস্ত ‘ক’ বগিটি আড়িখোলা স্টেশনে রেখে বাকি বগিগুলো নিয়ে রাত ১০টা ১৮ মিনিটে ট্রেনটি কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে পুনরায় যাত্রা শুরু করে। এরপর টঙ্গী–ভৈরব রেললাইনে ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হয়।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ (পরিদর্শক) নাজিমুদ্দিন বলেন, ‘এটি একটি যান্ত্রিক ত্রুটি ছিল। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়েছে।’
এদিকে ট্রেন হঠাৎ থেমে যাওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে সৌভাগ্যক্রমে কেউ আহত হননি।
দেশের পর্যটন খাতে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে তিন সাংবাদিকসহ ১৩ জনকে পুরস্কৃত করা হয়েছে।
রাজধানীর বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ কনফারেন্স সেন্টারে (বিসিএফসিসি) শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী ‘১৩তম বিমান বাংলাদেশ ট্রাভেল অ্যান্ড ট্যুরিজম ফেয়ার (বিটিটিএফ) ২০২৫’। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ পুরস্কার ঘোষণা করা হয়।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব) আয়োজিত এ মেলায় দেশের শীর্ষ পর্যটন ব্যক্তিত্ব, ভ্রমণ ব্লগার, ফটোগ্রাফার ও সাংবাদিকরা বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সম্মাননা পেয়েছেন। সাংবাদিক ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন- দৈনিক কালের কণ্ঠের বিজনেস এডিটর মাসুদ রুমী, এশিয়ান টিভির চিফ নিউজ এডিটর ও এটিজেএফবির সাধারণ সম্পাদক বাতেন বিপ্লব এবং বাংলাদেশ টেলিভিশনের সিনিয়র রিপোর্টার ও এটিজেএফবির যুগ্ম সম্পাদক শফিউল্লাহ সুমন। এছাড়া প্রেস্টিজিয়াস অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন শুভাশীষ ভৌমিক।
অন্যান্য ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন- স্টোরিটেলিং ট্রাভেল ভ্লগার আরকে সোহান, উইমেন ট্রাভেল ভ্লগার জান্নাত (দ্য লুনাটিক ট্রাভেলার), কাপল ও ফ্যামিলি ট্রাভেল ভ্লগার পেটুক কাপল, রাইজিং ট্রাভেল ভ্লগার জাস্ট এ মিনিট, ফটো প্রতিযোগিতায় হৃদয়, বিপুল আহমেদ ও তন্ময় দাস, ভিডিও প্রতিযোগিতায় শাহরিয়ার হোসেন শিজু এবং গল্প লেখা প্রতিযোগিতায় সাজিব মাহমুদ।
এবারের মেলায় দেশি-বিদেশি ১২০টির বেশি সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে, যেখানে ২২০টি স্টল ও ২০টি প্যাভিলিয়ন রয়েছে। অংশগ্রহণকারী দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে- পাকিস্তান, নেপাল, ভূটান, মালদ্বীপ, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ড, চীন, শ্রীলঙ্কা, ফিলিপাইন, তুরস্ক ও স্বাগতিক বাংলাদেশ।
আর মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষা। পূর্ণিমার আলোয় মহারাস উৎসবে মেতে উঠবেন মণিপুরিরা। এটিই তাদের সবচেয়ে বড় উৎসব। মণিপুরি পাড়াগুলোতে বিকেল থেকেই মৃদঙ্গের তালে মণিপুরি গান ভেসে বেড়ায়। গান আর মৃদঙ্গের তাল অনুসরণ করে একটু এগিয়ে গেলেই চোখে পড়ে মণিপুরিদের নাচের প্রস্তুতি। মণিপুরি–অধ্যুষিত গ্রাম ও পাড়াগুলোতে বইছে উৎসবের হাওয়া। চলছে গোষ্ঠলীলা বা রাখাল নৃত্য এবং রাসনৃত্যের মহড়া।
বৃহত্তর সিলেটের আদিবাসী মণিপুরি সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় ও ঐতিহ্যবাহী উৎসব মহারাসলীলা মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে অন্যান্য বছরের মতো এবারও মণিপুরিদের পৃথক দুটি গ্রামে আয়োজন করা হয়েছে রাস উৎসবের। উপজেলার মাধবপুরের জোড়া মণ্ডপে বিষ্ণুপ্রিয়া (মণিপুরি) সম্প্রদায়ের ১৮৩তম এবং আদমপুর মণিপুরি কালচারাল কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে মীতৈ (মণিপুরি) সম্প্রদায়ের ৪০তম মহারাস উৎসব হবে। রাসপূর্ণিমার আলোয় ভেসে যাওয়ার জন্য মাত্র কয়েক দিনের অপেক্ষার পালা।
স্থানীয় লোকজন জানায়, মণিপুরের রাজা ভাগ্যচন্দ্র মণিপুরে প্রথম এই রাসমেলা প্রবর্তন করেছিলেন। মণিপুরের বাইরে ১৮৪২ সালে কমলগঞ্জের মাধবপুরে প্রথম মহারাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। রাস উৎসবে সকাল বেলা ‘গোষ্ঠলীলা’ বা ‘রাখাল নৃত্য’ হয়। গোধূলি পর্যন্ত চলে এই রাখাল নৃত্য। এরপর সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা শেষে রাত সাড়ে ১১টা থেকে শুরু হয় রাস উৎসবের মূল পর্ব শ্রী শ্রী কৃষ্ণের মহারাসলীলা অনুসরণ। মণিপুরিদের ঐতিহ্যবাহী নৃত্যের পোশাকে নেচে গেয়ে কৃষ্ণবন্দনা ভোর পযন্ত চলে রাসলীলা। রাসনৃত্যে শ্রীকৃষ্ণ, রাধা ও প্রায় ৫০ জনের মতো গোপী থাকেন। গোপীর সংখ্যা অনেক সময় কমবেশি হয়। শুক্রবার দেখা যায়, পাড়াগুলোতে চলছে রাস উৎসবের মহড়া। প্রায় ১৫ দিন ধরে এখানে রাস উৎসবের মহড়া চলছে। মহড়ায় আসা মণিপুরি ছেলেমেয়েদের রাসনৃত্যের বিভিন্ন কৌশল ও নিয়মকানুন শিখিয়ে দিচ্ছিলেন রাসনৃত্যের শিক্ষক অজিত কুমার সিংহ। সঙ্গে সজল কুমার সিংহ মৃদঙ্গ বাজিয়ে ও রীনা সিংহা গান গেয়ে সেই মহড়ার তাল দিচ্ছিলেন। রাস উৎসবে এই গান ও তালের সঙ্গেই সারারাত ধরে নাচতে হবে শিল্পীদের। প্রায় ১৫-২০ জন ছেলে-মেয়ে শিক্ষকদের কথা অনুযায়ী মহড়া দিচ্ছিলেন।
শিক্ষক অজিত কুমার সিংহ বলেন, ‘মূলত রাস উৎসবের প্রায় এক মাস আগ থেকেই মহড়া শুরু করি। রাস উৎসবে অংশ নেওয়া মণিপুরি ছেলে-মেয়েদের অনেকেই নতুন। আবার অনেকে পুরোনো। আমরা এক মাস প্রস্তুতি নিয়ে তাদের প্রস্তুত করি। প্রতিদিন নিয়ম মেনে সবাই আসেন। বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত কাজ মহড়া চলছে।’
রাসনৃত্যের শিক্ষক সজল কুমার সিংহ বলেন, ‘৫ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টা থেকে রাখাল নৃত্য শুরু হবে। সন্ধ্যায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। রাত সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হবে রাস নৃত্য। এই রাসনৃত্যের জন্যই মহড়া হচ্ছে। দেশ-বিদেশ দর্শনার্থীরা এই রাস উৎসব দেখতে এখানে ভিড় করেন। এটা মণিপুরিদের ঐহিত্যবাহী উৎসব।
মণিপুরি মহারাসলীলা সেবা সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্যাম সিংহ বলেন, ‘রাস উপলক্ষে আমাদের পাড়ায় পাড়ায় প্রস্তুতি চলছে। প্রতি বছরের মতো ঐতিহ্য ও ধর্মীয় ভাবধারায় ১৮৩তম শ্রীকৃষ্ণের মহারাসলীলা ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই মহোৎসব উপলক্ষে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছি। রাসলীলা মণিপুরিদের আয়োজন হলেও সকলের আগমনে মানুষের মানবিক মূল্যবোধ বৃদ্ধির পাশাপাশি অপরাপর সকল জাতিগোষ্ঠীর মাঝে সম্প্রীতির বাঁধনে বেধে চলেছে এই উৎসব রাসলীলা, গৌড়ীয় বৈষ্ণবধর্মের প্রেমপ্রীতির ঐতিহ্য দর্শন।
সপ্তাহ পার হয়েছে। লাঞ্ছিতের ঘটনায় বিচার পায়নি দুজন শিক্ষক। এ নিয়ে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এমন ঘটনা নড়াইলের কালিয়া উপজেলা শহরের প্যারী শংকর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের। বিদ্যালয় প্রধান বলছেন, অভিযুক্তদের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ের দুজন সহকারী শিক্ষক প্রশান্ত বিশ্বাস ও সহকারী শিক্ষক চৈতালী বিশ্বাসকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় কোনো প্রতিকার মেলেনি। এতে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সদয় দৃষ্টি কামনা করেছেন।
প্রতিবেশী ও বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা জানান, এক সপ্তাহ আগে বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে সাধারণ শিক্ষকদের সঙ্গে কোনো এক বিষয় নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ সাহিদুর রহমান বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক প্রশান্ত বিশ্বাস ও চৈতালী বিশ্বাস সাধারণ শিক্ষকদের পক্ষ নিয়ে প্রতিবাদ করলে সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ সাহিদুর রহমাস ও তার এক ছোট ভাই শেখ তবিবুর রহমান উত্তেজিত হয়ে প্রশান্ত বিশ্বাস ও চৈতালী বিশ্বাসকে অপমান-অপদস্তকরাসহ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। তারা বলেন, কোনো কারণ ছাড়াই সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যার আমাদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে থাকেন। ভদ্রতার খাতিরে আমরা তাদের কিছুই বলি না।
জানতে চাইলে চৈতালী বিশ্বাস বলেন, ঘটনার দিনে সব শিক্ষকরা শিক্ষক রুমে গল্প করছি। কোনো এক বিষয় নিয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যার শেখ সাহিদুর ইসলাম অন্য শিক্ষকদের সঙ্গে তর্ক-বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। একপর্যায়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক সহকর্মী প্রশান্ত বিশ্বাসকে হাতুড়ি দিয়ে মারতে গেলে আমিসহ অন্য সহকর্মীরা ঠেকাতে যাই। তখন সহকারী প্রধান শিক্ষক স্যার আমাকে একটা ঘুষি দেন। ঘুষিটি কপালের ডান পাশে লেগে রক্ত জমাট হয়ে যায়। প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেই। গত ২৭ অক্টোবর খুলনায় গিয়ে সিটিস্ক্যান করেছি। চিকিৎসক বলেছেন কপালের উপরিভাগে বেশ ক্ষত হয়েছে। বিশ্রামসহ চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বলেন, আমি ১৫ দিনের ছুটিতে আছি। এ ঘটনায় বিচার চেয়ে ওই দিনই প্রধান শিক্ষক বরাবরে আবেদন করছি। আজ ৮ দিন পার হয়েছে কোনো বিচার পাইনি।
সহকারী শিক্ষক প্রশান্ত বিশ্বাস বলেন, ঘটনার দিনে আমি প্রতিবাদ করলে সহকারী প্রধান স্যার রুমের বাইরে গিয়ে হাতুড়ি নিয়ে এসে আমাকে মারতে যান। সহকর্মী চৈতালী ম্যাডাম ঠেকাতে গেলে তাকে ঘুষি মারেন। তিনি গুরুতর আহত হন। আজও তার বিচার পাইনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা বলেন, সহকারী প্রধান স্যারের ছোট ভাই শেখ তকিবুর রহমান। তিনি বিদ্যালয়ের শিক্ষক হলেও মাসের বেশিরভাগ দিন ছাত্রদের ক্লাস নেন না। হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে জমি বেচাকেনা কাজে বিদ্যালয় ত্যাগ করেন। মাস পেরোলেই বেতন নিতে বিদ্যালয়ে থাকেন। বিদ্যালয়ের পাশে কালিয়া পৌরসভার বেন্দা গ্রামে তাদের বাড়ি।
গত ১৯১১ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে লেখাপড়ার মান ধরে রাখার চেষ্টা করা হলেও স্থানীয় শিক্ষকদের দাপটে অন্যরা ভয়ে থাকেন। তাদের অনুকূলে চলতে হয়। বিপক্ষে গেলে লাঞ্ছিত ছাড়াও করা হয় হাতুড়ি পেটা। বিদ্যালয়ে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৫১ জন। কয়েক বছর আগেও ৭৫০ থেকে ৮০০ ছিল।
শিক্ষক লাঞ্ছিতের সঙ্গে জড়িত সহকারী প্রধান শিক্ষক শেখ সাহিদুর রহমানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সাত কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। এমনটাই বলেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপ্তি রানী বৈরাগী। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, সহকারী শিক্ষক শেখ তকিবুর রহমান মাঝে মধ্যে জমির কাজ করতে যান। তবে ক্লাস ফাঁকি দিয়ে নয়। আশেপাশে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠায় আমাদের এখানে দূল থেকে আসা কিছু শিক্ষার্থী কমে গেছে।
কালিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (চলতি দায়িত্বে) মুহম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের দুজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে সে অভিযোগ পেয়েছি। প্রধান শিক্ষকের কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগের প্রতিবেদনের অপেক্ষায় আছি। প্রতিবেদন পাওয়া গেলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে অভিযুক্ত শিক্ষককের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।