সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫
১১ কার্তিক ১৪৩২

ভগ্নিপতিকে ‘গলা কেটে’ হত্যার অভিযোগে শ্যালক আটক

ছবি: সংগৃহীত
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ২৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২ ১১:৫৭

মানিকগঞ্জের সদরে ভগ্নিপতিকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যার অভিযোগে শ্যালক সোহেল নুরুন নবীকে (২৬) আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার মধ্যরাতে উপজেলার পুটাইল ইউনিয়েনর কৈতরা এলাকায় এ ঘটনাটি ঘটে।

আটক সোহেল নুরুন নবী নেত্রকোনার কেন্দুয়ার রাজনগর এলাকার মৃত আলতু মিয়ার ছেলে। নিহত রুবেল মিয়া কিশোরগঞ্জের ইটনার তারাশ্বর এলাকার রেনু মিয়ার ছেলে।

মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রউফ সরকার জানান, রুবেল মিয়া কৈতরার মামুন হ্যাচারিতে কাজ করতেন। ১৬ সেপ্টেম্বর সেখানে বেড়াতে আসেন শ্যালক সোহেল। আসার পর থেকে দেখেন হ্যাচারিতে রাখা ইট প্রতিদিন রাতে ভগ্নিপতি রুবেল চুরি করে বিক্রি করেন। এতে বাধা দেন সোহেল এবং ইট বিক্রির টাকা মালিককে ফেরত দিতে বলেন। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ধারালো দা দিয়ে প্রথমে কুপিয়ে ও পরে গলা কেটে রুবেলকে হত্যা করেন সোহেল।

পরে পুলিশ রাতেই সোহেলকে আটক করে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় সদর থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলেও ওসি জানিয়েছেন।


চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবায় চরম ভোগান্তিতে চরবাসী

কুড়িগ্রাম জেলায় ভূমি হারিয়ে অনেকেই হয় নিঃস্ব
কুড়িগ্রামের চরাঞ্চলে স্বাস্থ্যসেবায় চরম ভোগান্তিতে চরবাসী। ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুড়িগ্রাম সংবাদদাতা

কুড়িগ্রাম জেলার বড় অংশজুড়ে রয়েছে চর এলাকা। চরাঞ্চল অধ্যুষিত এ জেলার স্বাস্থ্যসেবা পেতে পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদী পার হয়ে চরবাসীদের যেতে হয় হাসপাতালে।

দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন এসব চরের অধিকাংশ মানুষই দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করছে। দরিদ্র এ জনগোষ্ঠীকে প্রতিনিয়তই টিকে থাকতে হয় প্রকৃতির ভাঙা-গড়ার খেলায়। বন্যা ও নদীভাঙনের ফলে প্রতি বছরই এসব চরের অনেক পরিবার হয় গৃহহীন। বিনষ্ট হয় তাদের আরাধ্য ফসল। আবার ভূমি হারিয়ে অনেকেই হয় নিঃস্ব।

বন্যা-খরার সঙ্গে বাড়তি দুর্ভোগ যোগ করে অসুস্থতা। অথচ অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল এসব মানুষের ন্যূনতম প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নেওয়ারও ব্যবস্থা নেই বেশির ভাগ চরাঞ্চলে। হাতে গোনা কয়েকটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থাকলেও সেখানে মিলছে না প্রত্যাশিত সেবা। শিশু কিংবা বৃদ্ধরা অসুস্থ হলেও ভরসা করতে হয় গ্রাম্য কবিরাজের ওপর। বিচ্ছিন্ন এসব চরের বাসিন্দারা বলছেন, চরাঞ্চলগুলোতে ফার্মেসি না থাকায় পাওয়া যায় না সাধারণ রোগের কোনো ওষুধ। মৃত্যুর ঝুঁকি থাকলেও গর্ভবতী নারীদের নির্ভর করতে হয় স্থানীয় ধাত্রীদের ওপর। সড়ক বা যানবাহনের ব্যবস্থা না থাকায় গুরুতর রোগীদের হাসপাতালে নিতে পড়তে হয় নানা ভোগান্তিতে।

২২৪৫ বর্গকিলোমিটার আয়তন ও ২৩ লাখ ২৯ হাজার জনসংখ্যার কুড়িগ্রামের ওপর দিয়ে প্রবাহিত ১৬টি নদ-নদীর অববাহিকা ও বুকজুড়ে জেগে রয়েছে ছোট-বড় ৪৬৯টি চর। তবে ২৬৯টি চরে মানুষের বসবাস। প্রায় সাড়ে ৮০০ বর্গকিলোমিটার এসব চরে বসবাস করছেন প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ মানুষ। কয়েক বছর আগে চার শতাধিক চরাঞ্চলের মধ্যে মাত্র ৫০টি চরে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেছে সরকার। এসব ক্লিনিক থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা পাওয়া গেলেও বাকি চরগুলোতে সে সুযোগটুকুও মিলছে না। যেকোনো রোগের চিকিৎসা করাতে নদীপথ পাড়ি দিয়ে আসতে হয় উপজেলা বা জেলা শহরের হাসপাতালে।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার কালির আলগা চরের বাসিন্দা হোসেন আলী তিনি ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য। তিনি জানান, ওই চরে প্রায় ৭০০ জন বসবাস করে। চরে স্বাস্থ্যসেবার জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ছিল নদীভাঙ্গনে সেটিও নেই। চরটি ভারতের সীমান্তঘেঁষা। চরের সঙ্গে জেলা শহরের যোগাযোগের জন্য প্রথমে পাড়ি দিতে হয় নৌপথ। প্রায় ২ ঘণ্টার নদীপথ পাড়ি দিলে যাত্রাপুর ঘাট। সেখান থেকে কিছুদূর হেঁটে গেলে পাওয়া যায় অটোরিকশা। এরপর আরও ৮ কিলোমিটার সড়কপথ পাড়ি দিলে জেলা শহর। পার্শ্ববর্তী অনেক চরেই কমিউনিটি ক্লিনিকও নেই।’

জেলার রাজারহাট উপজেলার বিদ্যিনন্দ ইউনিয়নের তিস্তা নদীর অববাহিকার চর বিদ্যানন্দ বাস করেন আব্দুল আজিজ। কয়েকদিন আগে তার স্ত্রী অসুস্থ হয়ে পড়েন। চরে অন্তত ৫০০টি পরিবার বাস করলেও স্বাস্থ্যসেবা নেই বললেই চলে। পরে তার স্ত্রীকে বাঁশ দিয়ে তৈরি ভাড়ে করে প্রথমে নৌকা ঘাটে নিয়ে আসেন। সেখান থেকে নদী পার হয়ে তারপর অটোরিকশায় করে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। একই অবস্থা উলিপুর, রৌমারী, রাজিবপুর, চিলমারী, ফুলবাড়ী ও নাগেশ্বরী ভূরুঙ্গামারী উপজেলার দুর্গম চরাঞ্চলগুলোর।

সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের পোড়ার চরের বাসিন্দা খোদেজা বেগম বলেন, ‘সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়তে হয় গর্ভবতী নারীদের। প্রসব ব্যথা উঠলে স্থানীয় ধাত্রীরাই একমাত্র ভরসা। তাতেও সন্তান প্রসব না হলে এক থেকে দেড় ঘণ্টা নৌপথ পারি দিয়ে যেতে হয় শহরের হাসপাতালে।’

যাত্রাপুর ইউনিয়নের ঝুনকার চরে স্থাপিত কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডার মো. মিজানুর রহমান জানান, ঝুনকার চরে কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও পার্শ্ববর্তী চরগুলোতে নেই। কমিউনিটি ক্লিনিকে একজন স্বাস্থ্য সহকারী, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও একজন কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডারের পদ রয়েছে। গর্ভবতী নারীদের প্রাথমিক কিছু চিকিৎসা দেওয়া হলেও প্রসবের ব্যবস্থা নেই।

স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য বলছে, নয়টি উপজেলায় ২৯৫টি কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে চরাঞ্চলে রয়েছে মাত্র ৫০টি। এর মধ্যে নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে ছয়টি ক্লিনিক। তবে জেলা সিভিল সার্জন ডা. স্বপন কুমার বিশ্বাস বলেন, ‘চরাঞ্চলের মানুষ যাতে চিকিৎসাসেবা পায়, সে জন্য কাজ করছি আমরা।’


সরিষাবাড়ীতে হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার ডারকি চাঁই-পলো

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সরিষাবাড়ী (জামালপুর) প্রতিনিধি

বৃষ্টি হলে বা নদীতে পানি এলেই খাল-বিল, নদী-নালায় শুরু হয় মাছ ধরার উৎসব। আধুনিকতার ছোঁয়া ও অবৈধ কারেন্ট জালের দৌরাত্ম বাড়ার কারণে তেমন চলছে না গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যবাহী বাঁশ-বেতের তৈরি ডারকি, চাঁই, পলো ও আনতার মতো দেশীয় মাছ ধরার ফাঁদ। মানবেতর জীবনযাপন করছে এই শিল্পের সাথে জড়িত মানুষরা। গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করা হয় বাঁশ ও বেতের তৈরি এসব পণ্য। গ্রামগুলোতে বর্ষা ও বন্যার পানির সঙ্গে আজও ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে আছে এই মাছ ধরার সরঞ্জামগুলো। তবে অবৈধ চায়না জাল ব্যবহার বন্ধের জন্য সরকারের সহযোগীতা চান বাঁশ ও বেত শিল্পের কারিগররা।

উপজেলার পৌর এলাকার কোনাবাড়ী গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিটি বাড়িতেই ছোট-বড় ভাবে প্রতিবছরই বর্ষাকালে ও বন্যার শুরুতে এ পল্লীতে শুরু হয় বাঁশ-বেত দিয়ে তৈরি মাছ ধরার ফাঁদ চাঁই, পলো ও আনতা তৈরির কাজ। আগে এই সময়টুকুতে খাওয়ার সময় পেতেন না বাঁশ-বেতের কারিগররা। স্থানীয় হাটবাজারে প্রতি হাটের দিনগুলোতে নানা ডিজাইন, নানা রঙের ও বিভিন্ন আকারের চাঁই, পলো ও আনতা বিক্রি করা হতো। তবে একসময় গ্রামে গ্রামে এসব ফাঁদের ব্যবহার বেশি থাকলেও এখন বাঁশ ও বেতের দাম বৃদ্ধির কারণে ও অবৈধ বিভিন্ন চায়না জাল বাজারে নামার কারণে একবারেই বিক্রি নেই বললেই চলে এসব চাঁই, পলো ও আনতার। আবার গভীর রাতে বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাটারি দিয়ে নদীর পানিতে কারেন্টের শক দিয়েও অবৈধ উপায়ে ধরা হচ্ছে মাছ। এসব জেনে দেখেও না দেখার ভান করে থাকে উপজেলা মৎস্য অফিস।

চাঁই ও পলো কারিগর বৃদ্ধ আফসার আলী, মোবারক হোসেন রোকসানা বেগম বলেন, এসব চাঁই, পলো, ডারকি সাধারণত খাল-বিল কিংবা ডুবে যাওয়া ক্ষেতে ফেলা হয়। এটাতে শোল, শিং, কৈ, খইলসা, পুঁটি চিংড়িসহ দেশীয় সকল মাছ সহজেই ধরা পড়ে। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বড় আকারের চাঁই তৈরি হচ্ছে, এ গুলোতে রুই-কাতলও ধরা সম্ভব। দেশীয় এসব ফাঁদ শুধু মাছ শিকারিদের জীবিকা নয়, বরং আমাদের গ্রামীণ সংস্কৃতির অংশ।

স্থানীয় গ্রামীণ সরঞ্জাম তৈরির কারিগর ছানোয়ার হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এটা আমাদের বাপ-দাদাদের ব্যবসা ছিল। তাদের মৃত্যুর পর আমি প্রায় ৪৫ বছর ধরে আমি বাঁশ ও বেত দিয়ে মাছ ধরার চাঁই, পলো ও আনতা তৈরি করছি। আগে প্রতি মৌসুমে ৫ হাজার থেকে ৭/৮ হাজার ডারকি, পলো, আনতা ও চাঁই বিক্রি হতো। ২০/২৫ জন শ্রমিক কাজ কারত।

সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা দেবযানী ভৌমিক বলেন, চায়না জালগুলো খুবই মারাত্মক একটি জাল। এটাতে ছোট বড় মাছ ও রেনু পর্যন্ত ধরা পড়ে। আমরা যথেষ্ট চেষ্টা করছি এই চায়না জাল বন্ধ করতে। ইতোমধ্যে আমরা একাধিক স্থানে ও জালের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অভিযান ও মোবাইল কোর্টও পরিচালনা করেছি। অনেক জাল পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


নওগাঁর সরকারি মৎস্য খামারের রেনুর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে

চাহিদার তুলনায় কম উৎপাদন, তবুও জনপ্রিয় সরকারি রেনু
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
সবুজ হোসেন, নওগাঁ

নওগাঁয় সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে উন্নত মানের রেনু সরবরাহ করায় মাছ চাষিদের কাছে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তবে চাহিদা থাকলেও পর্যাপ্ত পরিমাণ রেনু উৎপাদন হচ্ছে না। চাষিদের বাড়তি দামে বেসরকারি খামার থেকে কিনতে হচ্ছে। উপকরণ ও জনবল বাড়ানো গেলে রাজস্ব আয়ের পাশাপাশি জেলায় মাছ চাষিরা চাহিদা মতো রেনু পেয়ে উপকৃত এবং লাভবান হবেন।
কৃষিতে সমৃদ্ধ উত্তরের জেলা নওগাঁ। পাশাপাশি মৎস্য খাতেও এগিয়ে এ জেলা। সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার থেকে উন্নত মানের রেনু সরবরাহ করায় সুবিধা পাচ্ছে মাছ চাষিরা। তবে উন্নত মানের রেনু সরবরাহ নিশ্চিত করার মাধ্যমে, এটি দেশের সামগ্রিক মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। পাশাপাশি প্রোটিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস হিসেবে কাজ করবে এমন প্রত্যাশা সংশ্লিষ্টদের।
জানা যায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২০০ কেজি রেনু। যা থেকে রাজস্ব আয় হবে ৭ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এছাড়া বিগত অর্থবছরগুলোতে আয় হয়েছে সন্তোষজনক। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে ১৩৭ কেজি রেনু থেকে রাজস্ব আয় ৭ লাখ ৯ হাজার টাকা। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১২২ কেজি রেনু থেকে রাজস্ব আয় ৬ লাখ ৮৫ হাজার ৫০০ টাকা। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২০ কেজি রেনু থেকে রাজস্ব আয় ৬ লাখ ৫২ হাজার ৫০০ টাকা। এবং ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭৭ কেজি রেনু থেকে রাজস্ব আয় ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা।
নওগাঁ শহরের আরজি-নওগাঁয় অবস্থিত সরকারি মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারের আয়তন প্রায় ১১ একর। যেখানে সাড়ে ৪ একর জায়গায় রয়েছে ১০টি পুকুর। এসব পুকুরে কার্প জাতীয় মা-মাছ- রুই, মৃগেল, কাতলা, কালবাউস ও পাঙাশসহ অন্য মাছ চাষ করা হয়। যা থেকে উন্নত মানের রেনু উৎপাদন করে চাষিদের কাছে সরবরাহ করা হয়। এ খামার থেকে বছরে ৫ মাস রেনু উৎপাদন হলেও চাহিদার তুলনায় অপ্রতুল। সরকারি খামারে রেনু উৎপাদন কম হওয়ায় বেসরকারি খামারের রেনু দিয়ে চাহিদা পুরণ করে মাছ চাষিরা। জেলায় ৩১টি বেসরকারি মৎস্য বীজ (হ্যাচারি) উৎপাদন খামার রয়েছে। যা থেকে বছরে প্রায় ১৩ মেট্রিক টন কার্প জাতীয় রেনু উৎপাদন হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে পাশের জেলায় সরবরাহ করা হয়।
মৎস্য বীজ উৎপাদন খামারগুলো মৎস্য চাষ, সরবরাহ এবং জনসাধারণের জন্য অনেকভাবে উপকারী। এই খাবারগুলোর উন্নত মানের পোনা সরবরাহ করে মৎস্য চাষিদের উপকৃত করে, যা মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
মাছ চাষিরা জানান, সরকারি খামারে তুলনামূলক রেনুর দাম কম ও মানে ভালো। তবে এ খামার থেকে চাহিদা মতো রেনু না পাওয়ায় মাছ চাষিদের ভরসা বেসরকারি খামার। প্রতি কেজিতে অন্তত ৫০০-৯০০ টাকা বেশি দামে বেসরকারি খামার থেকে কার্প জাতীয় রেনু কিনতে হয়। তবে সরকারি খামারের রেনু থেকে গুণগত মানসম্পন্ন মাছ উৎপাদন হওয়ায় লাভবান চাষিরা।

সদর উপজেলার চকআবরশ গ্রামের মাছচাষি মীর বকস বলেন, ‘সরকারি খামারের রেনু উন্নত মানের। এ রেনু থেকে মাছ চাষ করলে মাছের স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি বেশি হয়। এতে দাম ভালো পাওয়া যায় এবং লাভবান হওয়া যায়।’
হ্যাচারি টেকনিশিয়ান ইমরান হোসেন বলেন, ‘এ খামারে খামার ব্যবস্থাপকসহ পদসংখ্যা রয়েছে ৫ জন। জনবল কম থাকায় উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। জনবল ও উপকরণ বাড়ানো গেলে আরও বেশি পরিমাণ রেনু উৎপাদন হবে এবং রাজস্ব বেশি আয় হতো।’
মৎস্য বীজ উৎপাদন খামার ব্যবস্থাপক কৃষিবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, ‘আমাদের প্রধান উদ্যেশ্য গুণগত মানসম্পন্ন রেনু ও পোনা উৎপাদন করা। পাশাপাশি চাষিদের উদ্বৃদ্ধ করা এবং ভালো মানের পোনা সরবরাহ করা। এছাড়া চাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ চাষকৃত পুকুর পরিদর্শন করা হয়। তবে খামারে গবেষণা করে নতুন জাত সরবরাহ করা হলে চাষিরা আরও উপকৃত হবে।’
তিনি বলেন, ‘জেলায় বেশকিছু বেসরকারি মাছের খামার (হ্যাচারি) গড়ে উঠেছে। যা আমাদের বিভাগ থেকে তদারকি করা হয়। সরকারি এবং বেসরকারি হ্যাচারি মিলে মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারছি বলে মনে করা হচ্ছে।’
নওগাঁ জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফেরদৌস আলী বলেন, ‘মা-বাবা মাছ যদি ভালো হয় তা থেকে উৎপাদিত রেনু ভালো হবে। পদ্মা ও যমুনাসহ বিভিন্ন উৎস থেকে ভালো মানের মা-মাছ সংগ্রহ করে রেনু উৎপাদন করা হয়। সরকারি খামার থেকে মাছ চাষিদের রেনু কেনার জন্য উদবুদ্ধ করা হয়। এতে ভালো রেনু পেয়ে চাষিরা লাভবান ও উপকৃত হবেন।’


পাবনায় বাঁশ বোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শিশু শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা সংবাদদাতা

পাবনায় বাঁশ বোঝাই ট্রাক উল্টে দুই শিশু শিক্ষার্থীসহ তিনজন নিহত হয়েছ। পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। রোববার সকাল ৭টার দিকে একটি স্কুলগামী ভ্যানের উপড় বেড়া থেকে ছেড়ে আসা একটি বাঁশ বোঝাই ট্রাক অপর একটি গাড়িকে বাঁচাতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্কুল ভ্যানের উপড় পড়লে ভ্যানে থাকা দুই শিক্ষার্থীসহ ভ্যানচালক ঘটনাস্থলেই নিহত হয়।

এ ঘটনায় আহত সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাদ হোসেনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতদের মাঝে গয়েশপুর ইউনিয়নের পঞ্চমপুর গ্রামের বাসিন্দা আহম্মদ আলী শেখের ছেলে ৫ম শ্রেণির ছাত্র নূর মোহাম্মদ তোহা (১৩), জাফরাবাজ গ্রামের শামসুল মোল্লার মেয়ে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া (১৩) ও গঙ্গারাম পুর ইউনিয়ন এর ধর্মগ্রামের মৃত আব্বাস হোসেনের ছেলে ভ্যানচালক আকরাম আলী (৫৬)। দুই শিক্ষার্থী পাবনার জালালপুরের পাবনা ক্যাডেট কলেজিয়েট স্কুলের শিক্ষার্থী।

প্রত্যক্ষদর্শী জানায়, স্থানীয় জনতা এগিয়ে এসে বাঁশের স্তূপ সরিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করেন। এবং সড়কজুড়ে বাঁশ পড়ে, যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এসে সড়ক থেকে গাড়ি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যাওয়ার পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

স্থানীয়রা জানান, গত কয়েক মাসে এই স্থানে কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটেছে, সড়কে স্পিড ব্রেকার না থাকায় এমন দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তারা একটি স্পিড ব্রেকার স্থাপনের জোর দাবি জানায়।

মাধপুর হাইওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বেড়া থেকে বাঁশ বোঝাই ট্রাক পাবনা আসার পথে দুর্ঘটনা ঘটে এবং ট্রাকের হেলপার চালিয়ে আসছিল। ভ্যান ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও একজন আহত হয়েছ তাকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। দুর্ঘটনাকবলিত ট্রাকটি জব্দ করতে পারলেও তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাকচালককে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।


বাম্পার ফলনে করলা চাষে লাভবান বুড়িচংয়ের কৃষক

এবার উপজেলায় ৬০ হেক্টর জমিতে হচ্ছে করলা চাষ
বুড়িচংয়ের মাচা পদ্ধতিতে চাষ করা করলার খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত এক কৃষক।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
তরিকুল ইসলাম তরুন, কুমিল্লা দক্ষিণ

কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলা অঞ্চলে করলা চাষে বাম্পার ফলন হওয়ায় সত্যিই কৃষকদের জন্য আনন্দের বিষয়। বিগত বছরগুলোর চেয়ে করলা (বিটার গার্ড) ও মাচা পদ্ধতিতে এ বছর করলা চাষ করে কৃষকরা ভালো ফলন পেয়েছে। ফলে অন্যান্য বছরের চেয়ে এবারে লাভ পাচ্ছেন বেশি।

বুড়িচং উপজেলার কৃষি অফিসার মিসেস আফরিন আক্তার বলেন, ‘বিশেষ করে আধুনিক কৃষিপ্রযুক্তি, মানসম্মত বীজ ও সঠিক পরিচর্যার কারণে উৎপাদন বেড়েছে।’

কৃষিবিদ আফরিন আক্তার ও সহকারী কৃষিবিদ নাছরিন সুলতানা বলেন, ‘করলা চাষে মাচা পদ্ধতি ও বিটার গার্ড পদ্ধতি অনুসরণ করলেই করলা চাষে বাম্পার ফলন সম্ভব।’

জানা যায়, কুমিল্লার উর্বর দোআঁশ মাটি ও অনুকূল জলবায়ু করলা চাষের জন্য উপযুক্ত। নিয়মিত সেচ, আগাছা দমন ও রোগ-বালাই নিয়ন্ত্রণ করায় ফলন বেড়েছে। মৌসুমের শুরুতে করলার দাম ভালো থাকায় কৃষকরা ভালো লাভ পাচ্ছেন বলে অনেকে জানিয়েছেন।

বুড়িচং উপজেলার বাকশিমুল ইউনিয়নে হরিপুর, কালিকাপুর এলাকায় সরেজমিন ঘুরে কৃষক কবির হোসেন, মিজানুর রহমান, ফারুক জানান, অন্যান্য সবজির তুলনায় করলা চাষে কম খরচে বেশি লাভ করা যায়। তারা বলেন, প্রতি একর জমিতে উৎপাদনে খরচ হয় ৬০-৭০ হাজার টাকা। আর ফসল বাজারে বিক্রি প্রায় দু থেকে তিন গুণ লাভ হচ্ছে।

কৃষক কবির বলেন, ‘আমি সামন্য কিছু জমিতে করলা বীজ রোপণ করে সময় মতো পরিচর্যা করে অল্প খরচে দ্বিগুণ লাভ করেছি। এ মৌসুমেই মাচা পদ্ধতিতে করলা চাষ করে ভালো ফলন হওয়ায় মোটামুটি লাভবান হয়েছি। তবে, সরকারি সহযোগিতা কিংবা প্রণোদনা হিসেবে সার বীজ, কিটনাশক পেলে ফসল উৎপাদনে কৃষকের আগ্রহ আরও বাড়বে।’

কৃষক কবির আরও বলেন, ‘মৌসুমি সবজি করলা, বেগুন, লাউ, পেঁপে, চিচিঙ্গা, টমেটো, সিম, ফুলকফি, বাধাকপি, লালশাক, আলু, চাষে উৎসাহ জোগাতে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ দিয়ে পাশে থাকার আহ্বান জানান।’


আহসানগঞ্জ স্টেশনে ট্রেনের স্টপেজের দাবিতে মানববন্ধন

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নওগাঁ প্রতিনিধি

নওগাঁ জেলার আত্রাই উপজেলার মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ পুনরায় চালু ও স্টেশনটির সংস্কারের দাবিতে রোববার সকাল ৯টায় আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আত্রাই উপজেলাবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত এ মানববন্ধনে অংশ নেন আত্রাইয়ের বিভিন্ন ইউনিয়নসহ পার্শ্ববর্তী রাণীনগর, বাগমারা ও সিংড়া উপজেলার হাজারও সাধারণ মানুষ।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, আহসানগঞ্জ স্টেশন এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াত, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রাণকেন্দ্র। সকল আন্তঃনগর ট্রেনের স্টপেজ না থাকায় চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত এমপি প্রার্থী ও আত্রাই উপজেলার ৪নং পাঁচুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান খবিরুল ইসলাম এবং আত্রাই নতুন বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু শাহীন।

তারা বলেন, ‘আহসানগঞ্জ স্টেশন শুধু আত্রাই নয়, আশপাশের কয়েকটি উপজেলার মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে জড়িয়ে আছে। তাই ঢাকাগামী সকল আন্তঃনগর ট্রেনের এখানে স্টপেজ দেওয়া ও স্টেশনটির সংস্কার এখন সময়ের দাবি।’

এ সময় মানববন্ধনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা অবিলম্বে আহসানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনে সকল আন্তঃনগর ট্রেনের নিয়মিত স্টপেজ চালু ও স্টেশনটির অবকাঠামোগত সংস্কার দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য রেল মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি জোর দাবি জানান।


অতিথি পাখির কোলাহলে মুখর ঘাটাইলের খাল-বিল

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ঘাটাইল (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

শরৎ বিদায় নিচ্ছে, হেমন্তের পরশে প্রকৃতি যখন শীতের আগমনের প্রস্তুতি নিচ্ছে- ঠিক তখনই টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলা সদর থেকে প্রায় ১৮ কিলোমিটার দূরে ধলাপাড়া ইউনিয়নের শহরগোপিনপুর এলাকার খালপাড়ে দেখা মিলছে অতিথি পরিযায়ী পাখির ঝাঁক।

প্রতি বছরের মতো এবারও তারা এসেছে হাজার মাইল দূরের শীতপ্রধান সাইবেরিয়া ও উত্তরাঞ্চলীয় দেশগুলো থেকে। এখানে তারা ডিম ফোটানো, বাচ্চা বড় করা ও কিছু সময় কাটানোর জন্য অবস্থান নেয়।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ি জনপদ শহরগোপিনপুরে ভোর থেকে বিকেল পর্যন্ত খাল ও বিলজুড়ে নানা রঙের অতিথি পাখির আনাগোনা চোখে পড়ে। সকালবেলায় ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি খাবারের সন্ধানে বিলে নেমে আসে, আবার বিকেলে দলবেঁধে ফিরে যায়। পাখিদের এমন অবাধ বিচরণ ও কলকাকলি দেখে বিমোহিত হচ্ছেন এলাকাবাসী ও পথচারীরা।

তবে আনন্দের এই দৃশ্যের মাঝেও রয়েছে দুঃসংবাদ- শিকারিদের সক্রিয়তা। স্থানীয়দের অভিযোগ, কিছু শিকারি ছদ্মবেশে খাল-বিলে ঘোরাফেরা করে বিষটোপ ও জাল পেতে পাখি ধরে নিয়ে যাচ্ছে। এতে ধীরে ধীরে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্য হুমকির মুখে পড়ছে।

ইতোমধ্যে নেদার বিল ও চাপড়া বিলে এসেছে নানা প্রজাতির অতিথি পাখি। স্থানীয়দের মতে, এখানে বেশি দেখা যাচ্ছে বড় পানকৌড়ি, পাতি-কুট, গিরিয়া হাঁস ও তিলা হাঁস। পাশাপাশি বছরজুড়ে কিছু দেশীয় বিরল প্রজাতির পাখিও এখানে আশ্রয় নেয়। ফলে এসব বিল এখন পাখিদের জন্য নিরাপদ আবাসস্থল হিসেবে পরিচিতি পাচ্ছে।

গোপিনপুর গ্রামের শাহাদত হোসেন জানান, সাধারণত নভেম্বর মাসের শেষ দিকে পাখি আসা শুরু হয়। কিন্তু এবার অক্টোবরের শেষ দিক থেকেই ঝাঁকে ঝাঁকে পাখি আসতে শুরু করেছে। প্রতিদিন ভোরে বিলে নেমে তাদের কলকাকলিতে মুখরিত হয়ে ওঠে চারপাশ।

ধলাপাড়ার আষাঢ়িয়াচালা এলাকার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বালি হাঁস, পাতি সরালি, বেগুনি কালিমসহ নানা প্রজাতির হাঁস আসছে। তারা খাল ও বিলের চারপাশে কচুরিপানার ভেতর অবস্থান করছে। এখন পুরো এলাকা যেন পাখির রাজ্য।

অন্যদিকে স্থানীয় রফিকুল ইসলাম জানান, ‘দিনে গরু-মহিষ চড়ানোর অজুহাতে কিছু লোক হাওরে ঘোরাফেরা করে। সুযোগ বুঝে তারা বিষটোপ বা জাল ফেলে পাখি ধরে। রাতেরবেলাতেই তাদের আসল শিকার শুরু হয়।’

পাখি গবেষক ও আলোকচিত্রী মোহাম্মদ কামাল হোসেন বলেন, ‘ঘাটাইলের বিস্তীর্ণ বনভূমি, খাল-বিল ও নদী এলাকায় পানকৌড়ি, ডাহুক, জলপিপি, সরালি, বালি হাঁসসহ অসংখ্য প্রজাতির পাখির সমাগম ঘটে। এসব দৃশ্য ধারণ করতে অনেক ফটোগ্রাফার ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। তবে এসব পাখির টিকে থাকার জন্য নিরাপদ আবাস গড়া ও শিকার বন্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।’

ঘাটাইল ব্রাহ্মণশাসন সরকারি কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সাবেক শিক্ষক জুলফিকার-ই-হায়দার বলেন, ‘উত্তরের সাইবেরিয়া অঞ্চলে তীব্র তুষারপাতের কারণে এই পাখিরা উষ্ণতার খোঁজে আমাদের দেশে আসে। তারা প্রতি বছর একই পথে উড়ে আসে এবং এই অভ্যাস থেকে সরে আসে না। এ কারণে তাদের ‘পরিযায়ী পাখ’ বলা হয়।’

শীতের আগমনে ঘাটাইলের খাল-বিল এখন পরিণত হয়েছে অতিথি পাখির অভয়ারণ্যে। প্রকৃতিপ্রেমীরা যেমন উপভোগ করছেন তাদের মনোমুগ্ধকর দৃশ্য, তেমনি স্থানীয়রা চান- এই অতিথিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রশাসন ও সচেতন মহল একসঙ্গে এগিয়ে আসুক।


বেনাপোল বন্দরে ৬টার পর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ

*পণ্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে সরকারের কঠোর সিন্ধান্ত *কাস্টমসের হঠকারী সিদ্ধান্ত বলে অভিযোগ ব্যবসায়ীদের
বেনাপোল স্থলবন্দর থেকে পণ্যবাহী ট্রাক বের হচ্ছে।
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বেনাপোল প্রতিনিধি

কাগজপত্র বিহীন ও চোরাই পণ্য অনুপ্রবেশ ঠেকাতে কোনো পূর্ব ঘোষণা বা প্রস্ততি ছাড়াই বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে সন্ধ্যা ৬টার পর সব ধরনের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম বন্ধ করেছে বেনাপোল কাস্টমস।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্ট স্টাফ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুর রহমান বলেন, এক সপ্তাহ ধরে চলছে এই নিয়ম।

তাদের এমন সিদ্ধান্তে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দরে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। দুদেশের সীমান্ত জুড়ে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ জটের সৃষ্টি হয়েছে। বিপাকে পড়েছেন ব্যবসায়ী, আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকরা।

তবে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ বলছেন, সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতাদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অপরদিকে সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা বলছেন, এ ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে তবে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।

আগে প্রতিদিন গড়ে ৪০০ থেকে ৪৫০ ট্রাক পণ্য বেনাপোল বন্দরে প্রবেশ করলেও এ সিদ্ধান্তের পর তা কমে ১৮০-২০০টিতে নেমে এসেছে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হতো প্রতিদিন ১৩০ থেকে ১৫০ ট্রাক পণ্য।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ১ আগাস্ট দুদেশের সিদ্ধান্তে বেনাপোল-পেট্রাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট (আইসিপি) ২৪ ঘণ্টা চালুর ঘোষণা দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) দেশের সব কাস্টমস হাউসকে ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখার নির্দেশ দেয়। কিন্তু বেনাপোলে তা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলছেন, বন্দর ও কাস্টমস কার্যক্রমে সমন্বয়ের অভাবে প্রায়ই প্রশাসনিক জটিলতা তৈরি হয়। প্রতিদিন গড়ে ২০০-২৫০ কোটি টাকার আমদানি-রপ্তানি হয় এ বন্দর দিয়ে। সময়সীমা কমে যাওয়ায় বাণিজ্যে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে।

বেনাপোল সিঅ্যান্ডএফ ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, পূর্ব ঘোষণা ছাড়া সন্ধ্যার পর বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ করায় ব্যবসায়ীরা হতবাক। দুপাশে শত শত ট্রাক আটকে আছে। কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে। এভাবে সিদ্ধান্ত চলতে থাকলে ব্যবসায়ীরা বিকল্প হিসেবে ভোমরা, হিলি বা সোনামসজিদমুখী হতে বাধ্য হবে, এতে সরকারের রাজস্বও কমে যাবে।

ভারতের পেট্রোপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কার্তিক চক্রবর্তী বলেন, বাংলাদেশের এই একতরফা সিদ্ধান্তে ভারতীয় ব্যবসায়ীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। দুদেশের বাণিজ্যে আস্থার সংকট তৈরি হয়েছে। পেট্রাপোল বন্দরে প্রতিদিন ট্রাক জটের মধ্যে পড়ছি। প্রতিদিন হাজারেরও বেশি ট্রাক পণ্য নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকছে পেট্রাপোল বন্দরে। বিগত সময়ে রাত ১২টা পর্যন্ত আমদানি-রপ্তানি চালু ছিল।

বেনাপোলে বন্দর ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মতিউর রহমান বলেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট পক্ষদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল। তা না করে একতরফাভাবে সময়সীমা কমানো হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী, কর্মচারী এবং সরকারও। আমরা কাস্টমস কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছি। প্রতিদিন অন্তত ৪০০-৫০০ আমদানিমুখী ট্রাক প্রবেশ নিশ্চিত করা জরুরি।

বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদুল হক লতা বলেন, কয়েকদিন আগে আমাদের সাথে কাস্টমস কর্তৃপক্ষের একটি বৈঠক হয়েছিল। তারা প্রস্তাব করেছিল সন্ধ্যা ৬টার পর আমদানি-রপ্তানি বন্ধ থাকার। আমরা বলেছি বন্দর ব্যবহারকারী সবার সাথে কথা বলে বিষয়টি জানানো হবে।

বেনাপোল স্থলবন্দরের পরিচালক শামীম হোসেন বলেন, আমরা বন্দর পরিচালনা করি। তবে কাস্টমস অনুমোদন ছাড়া কোনো পণ্য ক্লিয়ার করা সম্ভব নয়। আকস্মিক এই সিদ্ধান্ত রাজস্ব এবং বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

বেনাপোল কাস্টমসের কোনো কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলছেন না। কাস্টমসের কোনো তথ্য ও সংবাদকর্মীদের জানানো হয় না। বর্তমান বেনাপোল কাস্টম হাউসে কর্মরত কাস্টমস কমিশনার হাউসের কোনো কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়নি সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলার। এর আগে একজন সহকারী কমিশনার পর্যায়ের কর্মকর্তা সংবাদকর্মীদের সাথে কথা বলতেন।

তবে কাস্টমসের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, অভ্যন্তরীণ প্রশাসনিক সমন্বয়ের কারণে সাময়িকভাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত সমাধান হতে পারে।


সাফারী পার্ক থেকে বিলীন হলো জিরাফের অস্তিত্ব

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

ছন্দময় ভঙ্গিতে ধীর লয়ে দল বেধে সাফারী পার্কের ভেতর ঘুরে বেড়াতো জিরাফগুলো। কখনো কখনো দৌঁড়াতো গাছ পালায় আচ্ছাদিত প্রশস্ত প্রান্তরে। সামনের দুই পা এক সঙ্গে ও পেছনের দুই পা একসঙ্গে চলা জিরাফের দৌড়াদৌড়ি দৃশ্যও ছিল উপভোগ্য। গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার ইন্দ্রবপুর এলাকায় গড়ে ওঠা সাফারী পার্কে এক সময় ১৬ সদস্যের জিরাফ পরিবারের চঞ্চলতা বাড়তি আনন্দ দিত দর্শনার্থীকে। কিন্তু অল্প সময়ের ব্যবধানে গাজীপুর সাফারী পার্ক থেকে একেবারেই বিলিন হলো জিরাফের অস্তিত্ব। ধুকে ধুকে বেঁচে থাকা সর্বশেষ জিরাফটিও মারা গেছে।
জানা গেছে, টিবি রোগে আক্রান্ত হয়ে স্ত্রী জিরাফটি বৃহস্পতিবার মারা যায়। তবে কর্তৃপক্ষ সর্বশেষ জিরাফের মৃত্যুর খবরটি গোপন রাখে। সাফারী পার্ক থেকে জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হওয়ার বিষয়টি জানাজানি হয় গতকাল শনিবার সকালে।
গাজীপুর সাফারী পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক তারেক রহমান গণমাধ্যমকে জানান, দীর্ঘদিন ধরেই বেঁচে থাকা একমাত্র জিরাফটি টিবি আক্রান্ত ছিল। জিরাফটিকে সুস্থ করতে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়। কিন্ত শেষ পর্যন্ত সেটাকে বাঁচানো গেল না। বৃহস্পতিবার রাতে শেষ জিরাফের মৃত্যু হয়। মৃত্যুর পর ময়নাাতদন্ত শেষ করে পার্কের ভেতরেই জিরাফটিকে মাটি চাপা দেওয়া হয়। এ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে একেবাইরেই জিরাফের অস্তিত্ব বিলিন হলো সাফারী পার্কে।
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহম্মদ আব্দুল বারিক জানান, জিরাফ মারা যাওয়ার পরপরই পার্ক কর্তৃপক্ষ একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
পার্ক কর্তৃপক্ষ জানায়, ২০১৩ সালে সাফারী পার্ক প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক প্রাণী বিপণন প্রতিষ্ঠান ফ্যালকন ট্রেডার্সের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ১২টি জিরাফ আনা হয়। পরে উপযুক্ত পরিবেশ পাওয়ায় এসব জিরাফ থেকে জন্ম হয় আরও ৪টি জিরাফের। এর মধ্যে যদিও ২০১৮ সালের জুলাই মাসে কমন ইল্যান্ডের গুতোয় আহত হয়ে একটি ও পরে ২০১৯ সালে জুলাই মাসে অসুস্থ হয়ে বেশ কয়েকটি জিরাফসহ মোট ১৩টি জিরাফের মৃত্যু হয়। এরপর বেঁচে থাকা আরও দুটি জিরাফ মারা যায়। সর্বশেষ টিকে থাকা স্ত্রী জিরাফটিও মারা যায় বৃহস্পতিবার।


জামালপুর সদর আসনের গণঅধিকার পরিষদের এমপি প্রার্থী জাকিরের জনসংযোগ

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
জামালপুর প্রতিনিধি

জামালপুরে গন অধিকার পরিষদের চতুর্থ প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে নির্বাচনী গণসংযোগ ও আনন্দ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

রবিবার ২৬ অক্টোবর দুপুরে সদর উপজেলার গোপালপুর বাজার থেকে এক বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে উপজেলার ভারুয়াখালি, নান্দিনা, শরীফপুর বাজার হয়ে শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। এ সময় জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো: জাকির হোসেন নেতা কর্মীদের নিয়ে জামালপুর সদর-৫ আসনের এমপি প্রার্থী হিসেবে গণঅধিকার পরিষদের ট্রাক প্রতীকে ভোট প্রার্থনা করেন। পরে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিজেকে সদর আসনের প্রার্থী হিসেবে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিতের দাবি জানান এবং এমপি মনোনীত হলে অবহেলিত জামালপুর সদরের কৃষক শ্রমিক জনতার পাশে থাকার কথা জানান। এ সময় কয়েকশ নেতা কর্মীসহ সাধারণ মানুষ শোভাযাত্রায় অংশ নেয়।


আড়াই কেজির এক ইলিশের দাম ৯২০০ টাকা

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি

বঙ্গোপোসাগরে জেলে সাদ্দাম হোসেনের জালে আড়াই কেজি ওজনের একটি বড় ইলিশ ধরা হড়েছে। ইলিশটি লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের মতিরহাট মাছঘাটে ডাকে ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়।

রোববার (২৬ অক্টোবর) সকালে ইলিশটি সর্বোচ্চ দামে কিনে নেন স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী আমির হোসেন।

জানা গেছে, ভোলার জেলে সাদ্দাম ১৫ জন সঙ্গী নিয়ে সাগরে মাছ শিকারে যান। শনিবার (২৫ অক্টোবর) রাতে জাল ফেললে অন্যান্য ইলিশের সঙ্গে ওই বড় ইলিশটিও ধরা পড়ে। পরে মাছটি আড়তে আনা হলে ডাকে (নিলামে) ৯ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। তবে মেঘনা নদীতে মাছ কম পাওয়াতে তিনি এমন চড়া দাম পেয়েছেন বলে জানান আড়ৎদার।

আড়ৎদার মো. বাবুল বলেন, জেলে সাদ্দাম অনেকগুলো মাছসহ বড় ইলিশটি আড়তে নিয়ে আসেন। ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রথমদিনেই একটি বড় ইলিশ আড়তে এসেছে। বেশি দামেই বিক্রি হয়েছে। সচরাচর এতো বড় ইলিশ ধরা পড়ে না।

ব্যবসায়ী আমির হোসেন বলেন, আড়াই কেজি ওজনের ইলিশটি ৯ হাজার ২০০ টাকায় কিনেছি। ঢাকার মোকামে বড় ইলিশের প্রচুর চাহিদা রয়েছে। সেখানে পাঠানো হবে। আশা করছি অন্তত ১১ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করতে পারব।


৩ হাজার টাকায় স্ত্রীকে দেয়া হয় বন্ধুদের কাছে, গ্রেপ্তার ৫

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কুমিল্লা প্রতিনিধি

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তিন হাজার টাকার বিনিময়ে নিজের স্ত্রীকে বন্ধুদের কাছে দিয়ে দেয় এক ইটভাটা শ্রমিক। এরপর তিন দিন ধরে পালাক্রমে ধর্ষণের শিকার ওই নারী থানায় অভিযোগ দেয়। এতে পুলিশ তাৎক্ষণিক অভিযান চালিয়ে স্বামীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানী এলাকার ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডের শ্রমিকদের থাকার ঘরে।

আটক ব্যক্তিরা হলো ভুক্তভোগীর স্বামী নোয়াখালী জেলার সুধারাম (সদর) থানার রামহরিতালুক গ্রামের আবুল কাশেমের ছেলে রাজু আহমেদ (২৬), একই এলাকার মৃত সিরাজ মাঝির ছেলে বেলাল হোসেন (৩৫), আবুল কাশেমের ছেলে মো. হৃদয় (২৫), চাঁন মিয়া মাঝির ছেলে মহিন উদ্দিন (২৬) ও মুন্সীতালুক গ্রামের শাহ আলমের ছেলে আবুল কালাম (৪৫)।

থানায় দায়ের করা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, রাজুর সঙ্গে তার স্ত্রীর বিয়ে হয় ২০২৩ সালে। রাজু মাদকাসক্ত হওয়ায় বিয়ের পর থেকেই দাম্পত্য জীবনে অশান্তি বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে স্ত্রী বাবার বাড়ি নোয়াখালীর মান্দারতলী গ্রামে ফিরে যান। চলতি মাসের শুরুতে সালিশ বৈঠকের পর রাজু আবারও স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে আসে।

গত ১৫ অক্টোবর রাজু কুমিল্লা শহরে থাকার কথা বলে স্ত্রীকে নিয়ে আসে চৌদ্দগ্রামের কালিকাপুর ইউনিয়নের মিরশ্বানীর ইসলামিয়া ব্রিকস ফিল্ডে। সেখানে গিয়ে সে স্ত্রীকে শ্রমিক বেলাল হোসেনের একটি ঘরে থাকার ব্যবস্থা করে দেয়।

ভুক্তভোগীর অভিযোগ, ১৬ অক্টোবর রাতে বেলাল হোসেন রাজুর উপস্থিতিতে তাকে প্রথমবার জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এরপর ১৮ অক্টোবর রাতে রাজুর দুই বন্ধু হৃদয় ও মহিন উদ্দিন একইভাবে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। ২০ অক্টোবর রাতে হৃদয় আবার ধর্ষণের চেষ্টা করলে ভুক্তভোগী চিৎকার দিলে সে পালিয়ে যায়।

ঘটনার পর রাজু স্ত্রীকে হুমকি দেয়, বিষয়টি কাউকে জানালে তাকে হত্যা করে লাশ গুম করে ফেলবে। ভয়ে ভুক্তভোগী মুখ না খুললেও একই ইটভাটায় কাজ করা এক সহকর্মী বিষয়টি তার পিতাকে জানায়। খবর পেয়ে পিতা ঘটনাস্থলে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করেন।

পরে শুক্রবার রাতে ভুক্তভোগী নারী চৌদ্দগ্রাম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ বিশেষ অভিযান চালিয়ে রাজু ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করে।

চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ হিলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, “অভিযোগ পাওয়ার পরপরই পুলিশ অভিযান চালিয়ে আসামিদের গ্রেপ্তার করে। শনিবার বিকালে তাদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।”


পাবনায় ট্রাকচাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থীসহ নিহত ৩

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
পাবনা  প্রতিনিধি

পাবনার সদরে মালবাহী ট্রাকের চাপায় বিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী তিনজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আরও দুইজন গুরুতর আহত হয়েছে।

‎রোববার (২৬ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৭টার দিকে সদরের গয়েশপুর ইউনিয়নের বাঙ্গাবাড়িয়া এলাকায় ঢাকা-পাবনা মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- পাবনা কলেজিয়েট স্কুল অ্যান্ড কলেজের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রী তাসমিয়া আক্তার, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র আবু তোহা ও ভ্যানচালক আকরাম হোসেন।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুল শিক্ষার্থীদের নিয়ে একটি ভ্যান পুষ্পপাড়া নামক স্থান থেকে জালালপুরের দিকে আসছিল। এ সময় বিপরীত দিক থেকে বাঁশবোঝায় একটি ট্রাক আসছিল। ঘটনাস্থলে পৌঁছালে আরেকটি গাড়িকে বাঁচাতে ব্রেক করতেই ট্রাকটি ভ্যানের ওপরে উল্টে পড়ে। এতে ঘটনাস্থলেই দুই শিক্ষার্থী ও ভ্যান চালক নিহত হোন। এঘটনায় আহত সদর উপজেলার মধুপুর গ্রামের আব্দুর রশিদের ছেলে সাদ হোসেনকে পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

‎মাধপুর হাইওয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ভ্যানের ড্রাইভারসহ তিনজন নিহত ও দুজন চায়ের দোকানে থাকা ব্যক্তি আহত হয়েছে। নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। আইনগত ব্যবস্থা পক্রিয়াধীন।


banner close