নাটোরের আব্দুলপুর রেলওয়ে জংশনে চলন্ত ট্রেনে উঠতে গিয়ে পা পিছলে পড়ে হাসানুজ্জামান ইমতিয়াজ নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আজ শনিবার সকাল পৌনে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
২১ বছর বয়সী ইমতিয়াজ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুর এলাকার অ্যাডভোকেট ইসাহাক আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহীর বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ৬ষ্ঠ সেমিষ্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আব্দুলপুর রেলওয়ে স্টেশন মাষ্টার শেখ জিয়াউদ্দিন বাবলু জানান, শনিবার সকালে ঈশ্বরদী থেকে ছেলেকে নিয়ে কমিউটার ট্রেনে চড়ে রাজশাহী যাচ্ছিলেন অ্যাডভোকেট ইসাহাক আলী। ট্রেনটি আব্দুলপুর জংশনে দাঁড়ালে ইমতিয়াজ নাশতা করতে ট্রেন থেকে নামেন। পরে ট্রেনটি ছেড়ে দিলে ইমতিয়াজ দৌড়ে ট্রেনের হাতল ধরে উঠতে গিয়ে পা পিছলে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে মারা যান। খবর পেয়ে ঈশ্বরদী রেলওয়ে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। ময়নাতদন্ত শেষে লাশ তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সারিয়াকান্দির যমুনা চরাঞ্চল এখন ফসল উৎপাদনের হিমাগার হিসেবে স্থান করে নিয়েছে। এখানে মরিচ, মিষ্টি কুমড়া ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে। একসময়ের পতিত জমিতে ফসল ফলিয়ে তারা লাভবান হচ্ছেন এবং তাদের মুখে হাসি ফুটেছে। জমিতে নিরানি, পরিপক্ব ফসল উত্তোলন বা নতুন ফসল আবাদ করতে কৃষক ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে দেখাগেছে, সারিয়াকান্দি উপজেলার উপর দিয়ে যমুনা, বাঙালি, সুখদহ নদী বয়ে গেছে। ফলে এ উপজেলার বেশিরভাগ এলাকায় চরাভূমি রয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই এসব চরণ ভূমিতে পানিসেচ দেয়ার সুবিধা না থাকায় এসব জমি পতিত হয়ে থাকতো। কিন্তু গত কয়েকবছর আগে থেকে কৃষকেরা মাটিতে বোরিং করে ইঞ্জিন চালিত শ্যালো মেশিনের সাহায্যে পানি উত্তোলন করছেন এবং পলিথিন পাইপের সাহায্য উচুঁ নিচু জমিতে তা সরবরাহ করে সেচ সুবিধা চালু করেছেন। ফলে নদীর মাধ্যমে উজান থেকে বয়ে আসা উর্বর পলিমাটিতে প্রচুর পরিমানে ফসল ফলছে। সেখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় বসতবাড়ির আঙিনায় উচ্চ ফলনশিল হাইব্রিড জাতের মরিচ চাষ করছেন।
উপজেলার বিভিন্ন চরাঞ্চল ঘুরে দেখা যায়, সেখানে ধান, মরিচ, মিষ্টি কুমড়া, ভুট্টাসহ নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে। কৃষকেরা এখন এসব ফসলের পরিচর্যা করতে ব্যস্ত সময় পাড় করছেন। কেউবা জমিতে নিরানি দিচ্ছেন, কেউবা পানিসেচ দিতে ব্যস্ত রয়েছেন, কেউবা সদ্য পরিপক্ব হওয়া উচ্চ ফলনশীল জাতের কাঁচা মরিচ উত্তোলন করছেন, কেউবা বড়বড় মিষ্টি কুমড়া উত্তোলন করছেন, কেউবা উত্তোলিত ফসল ঘোড়ার গাড়িতে পরিবহন করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। চরাঞ্চলে উৎপাদিত ফসল কৃষকরা বাজারজাত করে ভালো দাম পাচ্ছেন। ফলে তারা লাভবান হচ্ছেন এবং তাদের মুখে হাসি ফুটেছে।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরে উপজেলায় ২৬৭০ হেক্টর জমিতে মরিচ, ৬৫২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা, ১৩০০০ হেক্টর জমিতে আমন ধান, ১১০ হেক্টর জমিতে মিষ্টি কুমড়া, ৬০৫ হেক্টর জমিতে আলু, ৩১৮০ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৭৩৫ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি, ৪৮৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু, ১২৬৫ হেক্টর জমিতে পিঁয়াজসহ রসুন, গম, মাসকলাই, বিভিন্ন প্রজাতির ডাল, তিল, তিসি, চিনাবাদাম, আখ, নেপিয়ার ঘাসসহ নানা ধরনের ফসলের আবাদ হয়েছে।
উপজেলার কাজলা ইউনিয়নের কৃষক আবু সাঈদ বলেন, চরের বিশালাকার জমিগুলো আগে পতিত হয়েই থাকতো। পানিসেচের অভাবে সেখানে বাদাম, কাউন, খেরাচি ছাড়া কোনও আবাদ হতো না। কিন্তু প্লাস্টিকের পাইপের সাহায্যে এসব জমিগুলোতে তারা এখন সোনার ফসল ফলাচ্ছেন। গত বছর ১৫ বিঘা জমিতে ভুট্টা, ১০ বিঘা জমিতে মরিচ, ৫ বিঘা জমিতে মিষ্টি কুমড়ার আবাদ করে বেশ লাভবান হয়েছেন। এসব দু'ফসলি জমিতে পাটেরও বাম্পার ফলন হয়েছে। এ বছরও মরিচ, ভুট্টা, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ বেশকিছু ফসলের আবাদ করেছেন তিনি।
কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের শোনপচা চরের মহব্বত হোসেন জানান, সেখানকার মাটি উর্বর হওয়ায় ধান, মরিচ, ভূট্টা চাষে তারা লাভবান হচ্ছেন। তবে এবছর বন্যার পানি জমিতে না উঠায় ফসল উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ বলেন, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে সারিয়াকান্দির চরাঞ্চলে কৃষকেরা আধুনিক পদ্ধতিতে উন্নত জাতের বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এখানে অনেক বেকার যুবকরা কৃষিকাজের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছেন এবং তাদের নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। একসময়ের পতিত চরাঞ্চল এখন নানা ধরনের ফসলে ভরপুর হয়ে উঠেছে এবং চরাঞ্চল অভিশাপ থেকে মুক্ত হয়ে আশীর্বাদে পরিণত হয়েছে।
ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ শিকারের অপরাধে মানিকগঞ্জের হরিরামপুর আন্ধারমানিক মাছের আড়ত থেকে তিনজনকে আটক করেছে স্থানীয়রা। আটকের পর উপজেলা মৎস্য অফিসের নিকট হস্তান্তর করলে প্রশাসন দুজনকে ৭ দিন করে জেল, একজনকে অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় মুচলেকা নিয়ে পরিবারের জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, গোয়লন্দ উপজেলার রাখালগাছি গ্রামের ইব্রাহিম শেখ ও সাইফুল শেখ এবং পাবনা জেলার আমিনপুর থানা ডালারচর গ্রামের কাউছার সরদার। এ সময় মাছ শিকারের সরঞ্জাম হিসেবে একটি ইলেকট্রিক ছুবনি/ছিপি, ১২ ভোল্টের তিনটি ব্যাটারি, ২৬,৮০,০০০ ওয়াটের একটি ইনভার্টার/আইপিএস, ২টি ফগ লাইট জব্দ করে থানার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে। ইঞ্জিনচালিত ট্রলারটি ভাড়ায় চালিত হওয়ায় সেটি জব্দ তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
জানা গেছে, গত কয়েক মাস ধরে ব্যাটারি, ইনভার্টারের সাহায্যে হাই ভোল্টেজ তৈরি করে ইলেকট্রিক ছুবনি/ছিপি দিয়ে নিয়মিত মাছ শিকার করে আসছিল বেশ কিছু জেলে। এ কারণে মাছ মরে ভেসে উঠার পর বড়, মাঝারি, ছোট মাছগুলোকে তুলে উপজেলার বিভিন্ন আড়ত, বাজারে বিক্রি করা হয়। আন্ধারমানিক পদ্মা নদীর পাড়ে মৎস্য আড়তে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছগুলো বিক্রির সময় স্থানীয়রা মাছ ও নৌকা দেখে চারজনকে ধাওয়া করে। একজন পালিয়ে গেলেও তিনজনকে আটক করে।
হরিরামপুর উপজেলা মৎস্য অফিসের ইলিশ প্রকল্পের ক্ষেত্র সহকারী মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ইলেকট্রিক শক দিয়ে মাছ ধরার ঘটনায় স্থানীয়রা তিনজনকে আটক করে আমাদের কাছে দিয়েছে। এ রকম নিয়মিত অভিযান অব্যহত থাকবে।’ অবৈধ মৎস্য শিকারিদের তথ্য দিয়ে সহযোগিতার আহ্বান জানান।
হরিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফাইজা বিসরাত হোসেন জানান, স্থানীয় জনতা কর্তৃক আটককৃত তিনজনের দুজনকে ৭ দিন করে জেল দেওয়া হয়েছে। আর একজন অপ্রাপ্ত বয়স হওয়ায় মুচলেকা দিয়ে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। জব্দ তালিকায় ইলেকট্রিক শকার, ব্যাটারি, জালসহ যাবতীয় সরঞ্জামাদি পুলিশের জিম্মায় দিয়েছি।
নওগাঁয় ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য সতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী শরিফ ওসমান হাদির গায়েবানা জানাজা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা ২টা ৩০ মিনিটের দিকে শহরের নওজোয়ান মাঠে এই জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন মাজলিসুল মোফাচ্ছেরিন নওগাঁ জেলা শাখার সভাপতি মাওলানা হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী।
জানাজা নামাজে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, বিএনপি, জামায়াত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, এনসিপি, হেফাজতে ইসলাম, এবি পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।
জানাজা নামাজের পূর্বে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম, নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, বিএনপি মনোনীত নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী জাহিদুল ইসলাম ধলু, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন, জেলা জামায়াতের আমির খন্দকার আব্দুর রাকিব, জেলা জামায়াতের সেক্রটারি আ স ম সায়েম, নওগাঁ-৩ (বদলগাছী ও মহাদেবপুর) আসনের জামায়াত মনোনীত এমপি পদপ্রার্থী মাওলানা মাহফুজুর রহমান, নওগাঁ-২ (পত্নীতলা-ধামুইরহাট) আসনের জামায়াতের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হক, নওগাঁ-৬ (আত্রাই-রাণীনগর) আসনের জামায়াতের প্রার্থী খবিরুল ইসলাম, নওগাঁ-৫ (সদর) আসনের এবি পার্টির প্রার্থী কাজী আতিকুর রহমান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁয় নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী আরমান হোসেন, তানজিম বিন বারী, ফজলে রাব্বি, সাদনান সাকিবসহ অন্যরা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় বক্তারা বলেন, ওসমান হাদি বাংলাদেশের রাজনীতির আকাশে একজন উজ্জ্বল নক্ষত্র। দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক চক্র মিলে তাকে হত্যা করেছে। হাদি দেশের মানুষের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। দেশের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় হাদির অনেক বড় প্রয়োজন ছিল। হাদি ভাইকে আমরা কেউ দেখিনি কিন্তু তার বক্তব্য, তার দেশপ্রেম, তার যুক্তির কাছে সকল ফ্যাসিস্ট স্বৈরাচার এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদ পরাজিত হয়েছিল। এটা বুঝতে পেরেই তারা হাদি ভাইকে হত্যার জন্য গুলি করেছে। কিন্তু তারা এক হাদিকে শহীদ করেছে এখন আমাদের হৃদয়ে লক্ষ্য কোটি হাদি জেগে উঠেছে। আমরা আজকে জানাজা থেকে শপথ নিচ্ছি আমরা সকলেই একেকটা হাদি হব এবং বাংলাদেশকে আধিপত্যবাদ থেকে মুক্ত করে ছাড়ব। আমরা ভারতের আধিপত্যের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব।
নওগাঁর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ তারিকুল ইসলাম বলেন, ‘ওসমান হাদী হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং বিচার নিশ্চিত করতে পুলিশ সর্বাত্মক কাজ করে যাচ্ছে। অতীতে নওগাঁতে যারা মানুষের উপর জুলুম করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সকলকে সাথে নিয়ে নওগাঁর শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে সাবেক শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়। ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের সাবেক সদস্য ও পেট্রোবাংলার পরিচালক প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান।
বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের আহ্বায়ক ও মাইটিভির সিনিয়র সাংবাদিক ইউসুফ আলীর সভাপতিত্বে এবং রোকনুজ্জমানের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন, নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাংসদ মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল, সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি খন্দকার আবু জাফর, বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানের সদস্য সচিব ইব্রাহিম আদহাম, মুখ্য সমন্বয়ক দেওয়ান ফজলুর রহমান, লায়ন তোফাজ্জল হোসেন, প্রধান উপদেষ্টা হাজী মুজিবুর রহমান, বারদী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলী আজগরসহ সাবেক শিক্ষার্থীরা।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, শিশু সাহিত্যিক শাহআলম, দেওয়ান হাবিবুর রহমান, প্রকৌশলী শাহাদাত হোসেন, বারদী হাইস্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মুহাম্মদ মোস্তফা, সোনারগাঁ থানা মহিলা দলের সভানেত্রী সালমা আক্তার, সোনালী ব্যাংকের এজিএম দেওয়ান মতিউর রহমান, ব্যাংকার মনির হোসেন, প্রকৌশলী মো. আসাদুজ্জামান, অধ্যাপক মোস্তফা কামাল প্রমুখ।
এদিকে সকালে পিঠা পুলি আপ্যায়নের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। দিনভর সাবেক শিক্ষার্থীদের আড্ডা ও স্মৃতিচারণে মুখরিত হয়ে ওঠে শিক্ষাঙ্গণ। অনুষ্ঠানে দেশ, জাতি ও প্রয়াত শিক্ষকদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। বর্ণাঢ্য আয়োজন থাকলেও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ওসমান হাদীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান স্থগিত করা হয়।
সম্প্রতি কুমিল্লা জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারাবাহিক অভিযানে সন্ত্রাসী ও তাদের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে।
গত কিছুদিনে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের গুলিতে ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত ওসমান হাদীসহ একাধিক ব্যক্তি নিহত হওয়ার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ তৈরি হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে কুমিল্লা জেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আরও তৎপর হয়ে ওঠে।
এরই অংশ হিসেবে গেল দুদিনে কুমিল্লায় র্যাব ও সেনাবাহিনীর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১১-এর একটি বিশেষ অভিযানে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন, একটি দেশীয় এলজি ও চার রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। র্যাব জানায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কুমিল্লা শহরতলীর সংরাইশ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করা হলে অস্ত্রগুলো উদ্ধার করা হয়। অভিযানের সময় অস্ত্রধারীরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। উদ্ধারকৃত অস্ত্র ও গোলাবারুদ অবৈধ এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের আশঙ্কা ছিল বলে জানায় র্যাব।
এছাড়া শনিবার (২০ ডিসেম্বর) ভোরে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৩ বীর ও র্যাব-১১ (সিপিসি-২)-এর যৌথ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ ও অপরাধমূলক সরঞ্জাম উদ্ধারসহ চিহ্নিত সন্ত্রাসী মো. নজমুল ইসলাম শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ২০ ডিসেম্বর ভোর ২টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত পরিচালিত এ অভিযানে শামীমের নিজ বাসভবন থেকে তিনটি স্থানীয়ভাবে তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র (পাইপগান), ৬০ রাউন্ড শটগান কার্তুজ, ১৮ রাউন্ড মেশিনগান গোলাবারুদ, বিভিন্ন ধরনের গুলি, ছুরি, চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ালসহ মোট ১০টি দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এছাড়া দুটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রও জব্দ করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত শামীম জাঙ্গালিয়া বাসস্ট্যান্ডের সহসভাপতি হিসেবে পরিচিত ছিলেন এবং পূর্বে আওয়ামী লীগ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক কার্যক্রমে সক্রিয় ছিলেন। একাধিক সূত্রে তাকে কুমিল্লা শহরের চিহ্নিত চাঁদাবাজ হিসেবেও উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সচেতন নাগরিক কমিটির সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু বলেন, যত বেশি অস্ত্র ও সন্ত্রাসী গ্রেপ্তার হবে, জনমনে তত বেশি স্বস্তি ফিরবে। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।
গোয়েন্দা সূত্রে আরও জানা গেছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে কয়েকটি সিন্ডিকেট বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনার পরিকল্পনা করছে।
কুমিল্লা র্যাব-১১-এর অধিনায়ক মেজর সাদমান ইবনে আলম জানান, অপরাধ নির্মূলে র্যাব নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে এবং অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারে এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
এদিকে কুমিল্লা জেলা পুলিশ সুপার মু. আনিসুজ্জামান জানান, অস্ত্রধারীদের গ্রেপ্তারসহ জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সর্বাত্মক প্রস্তুত রয়েছে।
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী পাহাড়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) বিশেষ অভিযানে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র, গোলাবারুদ, মর্টারের শেল, বোমা তৈরির উপকরণ ও হ্যান্ড গ্রেনেড উদ্ধার করা হয়েছে। এ সময় ডাকাতদলটি গুলি ছোড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। গত বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন উখিয়া (৬৪) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন।
বিজিবি জানায়, হ্নীলা ইউনিয়নের রঙ্গীখালী পাহাড় ও বাহাড়ছড়া ইউনিয়নের মেরিন ড্রাইভ সংলগ্ন পাহাড় এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে কয়েকটি সশস্ত্র ডাকাত চক্র অস্থায়ী ঘাঁটি গড়ে তুলে স্থানীয় বাসিন্দা ও পর্যটকদের অপহরণ, গুম, খুন এবং মানবপাচারের মতো অপরাধে জড়িত ছিল। এসব চক্র সীমান্ত এলাকায় মাদক ও চোরাচালান কার্যক্রমেও সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ রয়েছে।
উখিয়া (৬৪) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন জানান, গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে উখিয়া ব্যাটালিয়নের (৬৪ বিজিবি) একটি দল তিন স্তরের কৌশলে অভিযান শুরু করে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে রঙ্গীখালী পাহাড়ে সন্দেহজনক গতিবিধি লক্ষ্য করা হলে এলাকা ঘিরে ফেলে বিজিবির সদস্যরা। এ সময় ডাকাত দলটি গুলি ছোড়লে আত্মরক্ষার্থে বিজিবিও পাল্টা গুলি ছোড়ে। পরে ডাকাতরা তাদের অস্থায়ী ঘাঁটি ছেড়ে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে পালিয়ে যায়।
অভিযান শেষে পরিত্যক্ত ঘাঁটি থেকে একটি জি-৩ রাইফেল, রাইফেলের বিভিন্ন অংশ ও ম্যাগাজিন, ওয়ান শুটার গান, এলজি শুটার গান, এমএ-১ (এমকে-২ ভ্যারিয়েন্ট), একনলা গাদা বন্দুক, সিলিং, তিনটি আরজিএস হ্যান্ড গ্রেনেড, একটি মর্টারের গোলা, ১৭ কেজি গান পাউডার, হাতবোমা তৈরির উপকরণ, দেশীয় অস্ত্রসহ মোট ৩০২ রাউন্ড গুলি ও ব্যবহৃত খালি খোসা উদ্ধার করা হয়।
বিজিবির প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে, এসব অস্ত্র ব্যবহার করেই ডাকাত দলটি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ছিল।
লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ জসীম উদ্দিন বলেন, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৬৪ বিজিবি সর্বদা সতর্ক রয়েছে। ভবিষ্যতেও গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক ও সমন্বিত অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আধুনিক সেচব্যবস্থা ‘ভ্যালি ইরিগেশন সেন্ট্রাল পিভট’ স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি)। অস্ট্রিয়ার আর্থিক সহায়তায় বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে এই অত্যাধুনিক সেচ প্রকল্প। এটি স্থাপন করা হবে নাটোরের লালপুর উপজেলার নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের কৃষি খামারে।
বিএডিসি জানায়, বিশ্বের উন্নত কৃষি ব্যবস্থায় বহুল ব্যবহৃত সেন্ট্রাল পিভট ইরিগেশন প্রযুক্তি এবার প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে স্থাপন হতে যাচ্ছে। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে নিচ থেকে নয়, পাইপের সঙ্গে যুক্ত স্প্রিংকলারের মাধ্যমে ওপর থেকে জমিতে পানি ছিটানো হবে। বড় আকারের কৃষিজমিকে কম সময় ও কম পানি ব্যবহার করে সেচ দেওয়ার এই আধুনিক ব্যবস্থা দেশের কৃষিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের ভবানীপুর কৃষি খামারে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি চালু হলে বিভিন্ন খামার ও বেসরকারি উদ্যোগেও এই প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়বে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা। এতে একই জমিতে একাধিক ফসল ফলানো, চাষের সময় কমানো এবং পানির সাশ্রয় সম্ভব হবে। ফলে খামারের আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও বৃদ্ধি পাবে এবং আখসহ অন্যান্য ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
বিএডিসির বড়াইগ্রাম জোনের সহকারী প্রকৌশলী জিয়াউল হক বলেন, আধুনিক কৃষিতে পানি ব্যবস্থাপনা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। সেন্ট্রাল পিভট প্রযুক্তি সেচ ব্যবস্থাকে দ্রুত, স্বয়ংক্রিয় ও সাশ্রয়ী করবে। এই প্রকল্প সফল হলে দেশের বৃহৎ কৃষিখাতে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলের মহাব্যবস্থাপক (খামার) মো. বাকি বিল্লাহ বলেন, ‘দেশে প্রথমবারের মতো এই আধুনিক সেচ ব্যবস্থা আমাদের খামারে স্থাপন হচ্ছে। এটা শুধু মিলের জন্য নয়, এ অঞ্চলের কৃষির জন্যও বড় অর্জন। আমরা আশা করছি, সেন্ট্রাল পিভট প্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা সময়, শ্রম এবং পানি- তিনটিই সাশ্রয় করতে পারবো। আগে যেখানে সেচ দিতে দুদিন লাগত, সেন্ট্রাল পিভট সেটিতে কয়েক ঘণ্টায় কাজ শেষ করবে। এর ফলে আমরা একই জমিতে আখের সাথে একাধিক সাথী ফসল ফলাতে পারবো।’
নওগাঁ বাইপাস সড়কের দুই পাশে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি প্রায় ৫শতাধিক তালগাছের ডালপালা কেটে ন্যাড়া করে দেওয়া হয়েছে। এসব তালগাছের ওপর দিয়ে বিদ্যুতের সরবরাহ লাইনের সুরক্ষা দিতে গাছগুলোর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের (নেসকো) অফিসের কর্মীরা। বিদ্যুৎ বিভাগের এমন কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা।
পরিবেশকর্মীরা বলছেন, সরকার যখন পরিবেশ রক্ষা ও বজ্রপাতের হাত থেকে রক্ষা পেতে তালগাছ রোপণের উদ্যোগ নিচ্ছে, সেখানে গাছগুলো এইভাবে ডালপালা কেটে ন্যাড়া করা ঠিক হয়নি। এতে হুমকির মুখে পড়বে পরিবেশের ভারসাম্য। বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করেই বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা সম্ভব ছিল। এতে গাছও বাঁচত, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা পেত। নওগাঁতে গত কয়েক বছরে সরকারি ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে সড়কের দুই ধারে হাজারো তালগাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এর মধ্যেই নওগাঁ পৌরশহরের বাইপাস সড়কের তালগাছের পাতা কেটে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, সড়কের দুইপাশে বেড়ে ওঠা এসব তালগাছের বয়স প্রায় ২০-৩০ বছর। স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি বিভিন্ন এলাকা থেকে তালের বীজ সংগ্রহ করে সড়কের দুইপাশে রোপণ করে। এখন এসব তাল গাছগুলোর কারনে সড়কটি সৌন্দর্যবর্ধন হয়ে উঠে। গাছগুলোর ডালপালা ছেঁটে ন্যাড়া করে ফেলার কারণে ধীরে ধীরে মরে যেতে পারে গাছগুলো। এর আগেও ডাল কেটে ফেলার কারণে কিছু গাছ মরে গেছে। গাছগুলো বাঁচাতে কারও কোনো উদ্যোগ নেই। এর আগেও সড়ক সংস্কারের নামে নির্বিচারে কাটা হয় গাছ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নওগাঁ বাইপাস সড়কের রামভদ্রপুর থেকে বটতলী বোয়ালিয়া পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটারে থাকা কয়েক হাজার তালগাছ। এসব গাছের উচ্চতা ১০-১২ ফুট। তালগাছের সামান্য দূরত্বে বিদ্যুতের খুঁটি। এরমধ্যে দুইপাশে থাকা প্রায় ৫শতাধিক তালগাছ মাথা ন্যাড়া অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে। মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে থাকা সারি সারি এসব গাছে ন্যাড়া করে ফেলায় সড়কটি সৌন্দর্য হারিয়ে গেছে।
নওগাঁ পৌরসভার বোয়ালিয়া এলাকার বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, নব্বইয়ের দশকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে নওগাঁ-সান্তাহার বাইপাস সড়কের দুই পাশে তালগাছগুলো রোপণ করা হয়। সেই তালগাছগুলো বড় হয়ে বছরের পর বছর ধরে শোভা ছড়াচ্ছে। বছরে দুবার বিদ্যুৎ অফিসের লোকজন এসে সড়কের এক পাশের তালগাছের পাতা ছেঁটে দেন। আর এবার একদম মাথা মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা বেলাল হোসেন বলেন, ‘এভাবে তালগাছগুলোর মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া ঠিক হয়নি বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের। এর আগেও কিছু গাছ ন্যাড়া করে দেওয়ায় মরে গেছে। আমরা প্রতিবাদ করলেও তারা শুনে না। প্রশাসনের লোকজন সাথে নিয়ে কাটে। শুধু এখানে নয়, গ্রামের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইনের জন্য গাছ কাটা পড়ে।’
আরেক বাসিন্দা মুনছুর রহমান বলেন, ‘দিন দিন তালগাছ হারিয়ে যাচ্ছে। এই গাছগুলো একদিনে বড় হয়নি? বিদ্যুতের লাইন পরিষ্কারে নামে বিদ্যুতের লোকজন এসে সমানে ডালপালা কেটে একেবারে মাথা ন্যাড়া করে ফেলেছে। তালগাছের ওপর দিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের খুঁটিগুলো দুই-তিন হাত সরিয়ে নেওয়া যেত। কিন্তু তারা সেটি না করে গাছগুলোর ক্ষতি করলেন। মনে হচ্ছে তালগাছগুলো পরিকল্পিতভাবে মেরে ফেলার চিন্তা করা হয়েছে। বিদ্যুৎ অফিসের লোকদের আরো ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত ছিল।’
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) নওগাঁ কমিটির সভাপতি রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘এভাবে গাছ কাটা উচিত নয়। কারণ, গাছ আমাদের জীবন বাঁচায়। কিন্তু ওনারা (বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন) কোনো কথা শোনেন না। শুধু এখানে নয়, বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইনের জন্য গাছ কাটা পড়ে। গাছ না কেটে বিদ্যুতের খুঁটি একটু সরিয়ে বসালেই এই সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।’
স্থানীয় পরিবেশ ও মানবাধিকার কর্মী নাইস পারভীন বলেন, ‘নওগাঁতে প্রতিবছর বজ্রপাতের অনেক মানুষ মারা যায়। সেখানে বজ্রপাত রোধে তালগাছ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এসব গাছ না থাকলে আমাদের বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে পড়বে। যেখানে সরকার গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিচ্ছে সেখানে গাছগুলো ন্যাড়া করে দিয়ে নেসকো পরিবেশ বিধ্বংসী আচরণ করলো। প্রাকৃতিক বিপর্যয় কখনোই আমাদের কাছে কাঙ্খিত নয়। এমন কর্মকান্ড বন্ধ না হলে আন্দোলনের হুশিঁয়ারি দেন এই পরিবেশকর্মী।’
এ সম্পর্কে নেসকোর উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মোহাম্মদ কালামের তার ধারণা, তালগাছগুলো লাইন বসানোর পর লাগানো হয়েছে। তিনি বলেন, লাইন সরাতে হলে অন্যের জমির ওপর দিয়ে যাবে হয়তো, তখন আবার স্থানীয় ব্যক্তিরা বাধা দেবেন। লাইন স্থানান্তরের খরচও আছে। বিদ্যুৎ বিভাগের প্রয়োজনে লাইন সরালে বিদ্যুৎ বিভাগ খরচ বহন করে আর স্থানীয় ব্যক্তিদের প্রয়োজনে সরাতে হলে তাদের খরচ বহন করতে হয়।
ছায়ানটে হামলা করা ব্যক্তিদের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রত্যেককে শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরোয়ার ফারুকী।
শুক্রবার (১৯ ডিসেম্বর) হামলা ও ভাঙচুর হওয়া ছায়ানট পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
ফারুকী বলেন, আমরা যে মুহূর্তে একটা গণতান্ত্রিক দেশের স্বপ্ন দেখছি ঠিক সেই মুহূর্তে এরকম একটা সাংস্কৃতিক সংগঠনে আক্রমণ করাটা কতবড় নিন্দনীয় কাজ হতে পারে তা বলার ভাষা নেই। যারা এই হামলা করেছে তাদের বিভিন্ন রকম সিসি ক্যামেরা দেখে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী শনাক্তের কাজ করছে। তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। এ বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। ছায়ানটে হামলার মধ্যে দিয়ে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ছায়ানট সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, তারা নিজেদের তহবিল থেকে পরিচালিত হয়। তারা সরকারের কাছ থেকে কোনো তহবিল নেয় না।
তিনি আরও বলেন, আমরা বলেছি ছায়ানটের যা কিছু ক্ষতিসাধন হয়েছে তারা যদি আমাদেরকে জানায়, আমরা আমাদের তরফ থেকে তাদের সহায়তা করবো। এছাড়াও তাদের নিরাপত্তার বিষয়ে আমাদের কেবিনেট মিটিং ছিল সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমরা যেন আমাদের মূল ফোকাসের জায়গা থেকে হারিয়ে না যাই। আমাদের মূল ফোকাসের জায়গা ছিল, আমরা একটি গণতান্ত্রিক সমাজে যেতে চাই। গণতান্ত্রিক সমাজ বলতে, যেখানে নানান রকম সমাজের মানুষ থাকবে, নানান রুচির মানুষ থাকবে। এ সব মানুষই আমরা একটা জায়গায় সহাবস্থান করবো।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, আমরা যদি সত্যিকার অর্থে একটা গণতন্ত্র চাই, তাহলে সব সমাজ, সব দলমতের, সব রুচির মানুষের সহাবস্থান করতে দিতে হবে। হয়ত আমার সঙ্গে আপনার অনেক কিছু মিলবেনা কিন্তু আমি আপনি পাশাপাশি বসে যেন এক টেবিলে খেতে পারি এ জায়গাটা আমি চাই।
ছায়ানটে হামলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে তিনি বলেন, আমি ছায়ানটের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা তাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ দুই-তিন দিনের মধ্যে খসড়া করে বুঝতে পারবেন টোটাল ক্ষয়ক্ষতিটা কেমন হয়েছে।
এ সময় তিনি ফারুকী বলেন, এটা অবশ্যই নির্বাচন বানচাল করার জন্য এমন ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে প্রতিবাদের কোন সম্পর্ক নেই। আসলে যদি প্রতিবাদ হয়ে থাকে, আমরা কার সঙ্গে প্রতিবাদ করছি, কী জন্য প্রতিবাদ করছি? একটা বিষয় লক্ষ্য করে দেখেন, যে মুহূর্তে জাতি হাদিকে নিয়ে শোকাহত থাকার কথা, যে মুহূর্তে হাদিকে নিয়ে জাতি কথা বলার কথা।
বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পৃথক দুইটি অভিযান চালিয়ে ৩ টি আর্টিসানাল ট্রলিং বোট, ৩০টি ট্রলিং জাল ও বিপুল পরিমাণ সামুদ্রিক মাছসহ ৫৩ জন জেলেকে আটক করেছে। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) কোস্ট গার্ড মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার রাত ১০টায় কোস্ট গার্ড কন্টিনজেন্ট বাঁশখালী চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন খাটখালী নদীর মোহনায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সিয়াম-উল-হক আরও বলেন, অভিযান চলাকালে ওই এলাকা থেকে একটি অবৈধ আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দ করা হয়।
পরবর্তীতে জব্দকৃত বোটে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ২৮ লাখ টাকা মূল্যের পাঁচটি ট্রলিং জাল ও ২৫০০ কেজি বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছসহ ১৬ জন জেলেকে আটক করা হয়। অপরদিকে, গত বুধবার মধ্যরাত ৩টায় কোস্ট গার্ড জাহাজ সবুজ বাংলা কর্তৃক সেন্টমার্টিন ছেড়াদ্বীপ সংলগ্ন উত্তর-পশ্চিম সমুদ্র এলাকায় একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা হয়।
এই অভিযানের সময় ওই এলাকা থেকে দুইটি আর্টিসানাল ট্রলিং বোট জব্দ করা হয়। পরবর্তীতে ওই জব্দকৃত বোটে তল্লাশি চালিয়ে প্রায় ৬ কোটি ২৮ লাখ টাকা মূল্যের ২৫টি ট্রলিং জাল ও ৩ হাজার কেজি বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছসহ ৩৭ জন জেলেকে আটক করা হয়।
পাহাড় ঘেরা সবুজ চা-বাগানের কোলে আজ যেন আনন্দের মেলা বসেছিল। কেক কাটা, নাচ, গান আর শিশুদের উচ্ছ্বাসে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চাম্পারায় চা-বাগানে উদযাপিত হলো প্রাক-বড়দিনের বিশেষ উৎসব। বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নের মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্যোগে ৩ শতাধিক শিশুর অংশগ্রহণে এই বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
সকাল থেকেই চাম্পারায় প্রকল্প প্রাঙ্গণ সেজেছিল রঙিন সাজে। বড়দিনের ঐতিহ্যবাহী ক্রিসমাস ট্রি, রঙিন বেলুন আর ঝালর দিয়ে সাজানো অনুষ্ঠানস্থলটি শিশুদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে ওঠে। উৎসবের আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় বড়দিনের বিশেষ কেক কাটার মধ্য দিয়ে। এরপর শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, যেখানে চা-বাগানের শিশুরা তাদের নিজস্ব সংস্কৃতি ও বড়দিনের গান পরিবেশন করে। ছোট ছোট শিশুদের নাচ আর গানের সুর পুরো চা-বাগান এলাকায় এক উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি করে।
মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্প, চাম্পারায় (বিডি-০৪১৮)এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রকল্প চেয়ারম্যান সাজু মারছিয়াং এর সভাপতিত্বে মধ্য ও দক্ষিণ বাংলাদেশ শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যাবস্থাপক (ভারপ্রাপ্ত), রনি দাস এর সঞ্চালনায় প্রাক-বড়দিনের বিশেষ উৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ‘ন্যাশনাল টি কো.’ চাম্পারায় চা-বাগানের ব্যবস্থাপক রাহেল রানা।
এ সময় শিশু উন্নয়ন প্রকল্পের পক্ষ থেকে শিশুরা প্রধান অতিথি রাহেল রানা ও বিশেষ অতিথি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট অফ সিলেট প্রেসবিটারিয়ান সিনড, পিডিএ চেয়ারম্যান যাকব কিস্কু হাতে সম্মাননা স্বারক তুলে দেওয়া হয়।
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইসলামপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, চাম্পারায় চা-বাগান সহকারী ব্যাবস্থাপক মো. ইউসুফ খান, বাগান পঞ্চায়েত কমিটির সভাপতি শংকর বোনার্জী, ইউপি সদস্য সজয় কিশোর যাদব, চাম্পারায় প্রেসবিটারিয়ান মন্ডলির ডিকন সানু বিশ্বাস এবং প্রকল্পের এলসিসি কমিটির সদস্যরা। আলোচনা সভা শেষে অতিথিরা প্রকল্পের ৩৩৬ জন শিশু ও ১৫ জন মায়েদের মাঝে বার্ষিক উপহার সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
অনুষ্ঠানটি অর্থায়নে কম্প্যাশন ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং সহযোগিতায় চ্যারিটেবল ট্রাস্ট অফ সিলেট প্রেসবিটারিয়ান সিনড। অনুষ্ঠানে প্রকল্পের শিশুদের পরিবেশনায় নাচ, গান, কবিতা আবৃত্তি ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক আয়োজন। অনুষ্ঠান শেষে সকলের মঙ্গল কামনা করে এবং বড়দিনের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে অনুষ্ঠানটি সমাপ্ত হয়।
রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলার এক যুবককে পরিকল্পিতভাবে ফাঁদে ফেলে নৃশংসভাবে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার উপজেলা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে তার মাথাবিহীন মরদেহ।
নিহত যুবক আব্রাহাম খান ওরফে আলিম (২৫) পাংশা পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের চরদুর্লভদিয়া এলাকার বাসিন্দা এবং ওয়াজেদ খানের ছেলে।
নিহতের পরিবার জানায়, আলিম কাতারপ্রবাসী ছিলেন। প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মাস আগে দেশে ফেরেন তিনি। গত ১৫ ডিসেম্বর কালুখালী উপজেলার বন্ধু শাকিল শেখের সঙ্গে ঢাকায় কাজের উদ্দেশে যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হন আলিম। এরপর থেকেই তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায় এবং পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
পরদিন ১৬ ডিসেম্বর সকালে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার মাহমুদপুর ইউনিয়নের শ্রীনিবাসদী এলাকায় একটি রাস্তার পাশে অজ্ঞাত পরিচয়ের মাথাবিহীন মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ফিঙ্গারপ্রিন্ট পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহটির পরিচয় নিশ্চিত হয়।
পুলিশ জানায়, মরদেহটি ছিল সম্পূর্ণ নগ্ন, গলা কাটা এবং পেটের নাড়িভুঁড়ি বের করা অবস্থায়। পরে মরদেহ উদ্ধারের পাশের একটি খাল থেকে বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে নিহতের বিচ্ছিন্ন মাথা উদ্ধার করা হয়।
নিহতের পরিবার অভিযোগ করে বলেছে, পাংশা পৌর শহরের পারনারায়ণপুর এলাকার প্রবাসী মোবারক মন্ডলের স্ত্রী মরিয়ম খাতুনের সঙ্গে আলিমের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। ওই সম্পর্কের জের ধরেই তাকে নারায়ণগঞ্জে ডেকে এনে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, কিছুদিন আগে আলিম ও মরিয়মকে পরকীয়ার ঘটনায় এলাকাবাসী হাতেনাতে ধরে ফেলেন। এরপর মরিয়ম খাতুন তার বাবার বাড়ি নারায়ণগঞ্জে চলে যান। ঘটনার পর পারনারায়ণপুরে মরিয়মের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি এবং তার সঙ্গে যোগাযোগও সম্ভব হয়নি।
পাংশা মডেল থানার ওসি শেখ মঈনুল ইসলাম জানান, আড়াইহাজার থানা পুলিশের মাধ্যমে ঘটনাটি জানতে পেরে নিহতের পরিবারকে অবহিত করি। মরদেহ গ্রহণের জন্য তারা নারায়ণগঞ্জে গেছেন।
নিহতের পরিবার এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ফাঁসির দাবি জানিয়েছে।
গাজীপুরে দুই শতাধিক সুবিধাবঞ্চিত শীতার্ত ও দুস্থ পরিবারের সদস্যদের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। গাজীপুর আর্মি ক্যাম্পের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সেনাবাহিনী প্রধানের দিকনির্দেশনায় জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের দুস্থ ও শীতার্ত প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র (কম্বল ও সোয়েটার) বিতরণ করা হয়েছে। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) রাতে গাজীপুর আর্মি ক্যাম্প সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সেনাবাহিনীর ১৪ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারির অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. লুৎফর রহমান পিএসসি, জি ওই ইউনিয়নের সুবিধাবঞ্চিত ২০০ টি পরিবারের সদস্যদের হাতে শীতবস্ত্র কম্বল ও সোয়েটার তুলে দেন। এ সময় শীতবস্ত্র পেয়ে শীতার্ত ও দুস্থ জনসাধারণ উচ্ছ্বসিত হন এবং বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
গাজীপুর সেনা ক্যাম্প কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল লুৎফর রহমান বলেন, দেশের যে কোন দুর্যোগ ও সঙ্কটময় সময়ে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়ানো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অন্যতম দায়িত্ব। শীতার্ত মানুষের কষ্ট লাঘবের লক্ষ্যে এ পর্যায়ে প্রায় দুই শতাধিক পরিবারের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে ভবিষ্যতেও দেশের সুবিধাবঞ্চিত জনসাধারণের জন্য সহায়তা কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি তিনি সমাজের বিত্তবানদেরও শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানান।