পীরগঞ্জ (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি
দীর্ঘদিন শিক্ষকসংকটে রয়েছে ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ সরকারি কলেজ। অধ্যক্ষসহ ৪৬ শিক্ষকের পদ থাকলেও কলেজটিতে কর্মরত আছেন ২১ জন শিক্ষক। শূন্যপদের সংখ্যা ২৫। এতে বিপাকে পড়েছেন এই কলেজের প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থী। শিক্ষকসংকটের কারণে যথাযথভাবে ক্লাস না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তিত অভিভাবকরা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যক্ষ নেই বেশ কয়েক মাস ধরে। কলেজে চালু থাকা অনার্সের ৯ বিষয়সহ মোট ১৫টি বিষয়ের মধ্যে পদার্থ বিজ্ঞান ও কৃষি বিজ্ঞান বিভাগ ছাড়া কোনোটিতেই পরিপূর্ণ শিক্ষক নেই। হিসাববিজ্ঞান, দর্শন, উদ্ভিদবিজ্ঞান এবং ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ চলছে একজন করে শিক্ষক দিয়ে। কলেজের অধ্যক্ষসহ অধ্যাপক পদে একজন, সহযোগী অধ্যাপক পদে চারজন, সহকারী অধ্যাপক পদে ৯ জন এবং প্রভাষক পদে ১১ জনের পদ শূন্য। প্রদর্শকের চার পদের বিপরীতে কর্মরত রয়েছেন মাত্র দুজন।
শিক্ষকরা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে অতিথি শিক্ষক দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে কোনোমতে চালানো হচ্ছে কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম। শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতি মাসে প্রতিবেদন দেয়া হলেও পাওয়া যাচ্ছে না কোনো শিক্ষক। শিক্ষকসংকটের কারণে কলেজের ১৯ হাজার শিক্ষার্থী স্বাভাবিক পাঠগ্রহণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
সরকারি এই কলেজটির অধ্যক্ষের পদ শূন্য থাকায় অধ্যক্ষের দায়িত্বে ছিলেন উপাধ্যক্ষ অধ্যাপক কামরুল হাসান। তবে তিনি প্রশিক্ষণে থাকায় সহযোগী অধ্যাপক বদরুল হুদা বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বদরুল হুদা দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘কলেজে বাংলা, ইংরেজি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু আছে। এর মধ্যে ব্যবস্থাপনা বিভাগে প্রায় এক বছর কোনো শিক্ষক নেই। এ বিভাগে একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও দুজন প্রভাষকের পদ শূন্য। বর্তমানে এ বিভাগে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থী প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন।’
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আরও জানান, গণিত বিভাগে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ৮০০। কিন্তু মাসখানেক হলো এ বিভাগটিও শিক্ষকশূন্য হয়ে পড়েছে। এ বিভাগে একজন সহকারী অধ্যাপক এবং একজন প্রভাষকের পদ শূন্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে মাত্র একজন প্রভাষক ছিলেন। তিনিও গতকাল রোববার বদলি নিয়ে অন্য প্রতিষ্ঠানে চলে যাওয়ায় এই বিভাগেও এখন কোনো শিক্ষক নেই। বিভাগটিতে একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও দুজন প্রভাষকের পদ অনুমোদিত রয়েছে। এ বিভাগে বর্তমানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১ হাজার ৪০০।
এদিকে পীরগঞ্জ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপকের পদ শূন্য রয়েছে। এ বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক ড. হান্নান মিয়া কর্মরত থাকলেও তিনি নিয়মিত কলেজে আসেন না। এ অবস্থায় ২ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থীর বিভাগটি চলছে মাত্র দুজন প্রভাষক দিয়ে।
কলেজটির ইংরেজি বিভাগেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৭০০ জন। এ বিভাগে একজন সহযোগী অধ্যাপক এবং একজন প্রভাষক পদ শূন্য রয়েছে। একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষক দিয়ে চলছে বিভাগটি। ১ হাজার ৪০০ শিক্ষার্থীর অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকের চার পদের মধ্যে প্রভাষকের একটি পদ শূন্য। ৯০০ শিক্ষার্থীর দর্শন বিভাগও চলছে একজন সহকারী অধ্যাপক দিয়ে। শূন্য আছে প্রভাষকের একটি পদ।
এ ছাড়া কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষার্থী প্রায় ১ হাজার ৩০০, যা চলছে একজন প্রভাষক দিয়ে। শূন্য আছে একজন সহযোগী অধ্যাপক, একজন সহকারী অধ্যাপক ও একজন প্রভাষকের পদ। ১ হাজার ১০০ শিক্ষার্থীর রসায়ন বিভাগে দুজন প্রভাষক ও একজন প্রদর্শক থাকলেও শূন্য রয়েছে একজন সহকারী অধ্যাপকের পদ। এক হাজার শিক্ষার্থীর প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগও চলছে দুজন প্রভাষক দিয়ে। শূন্য রয়েছে একজন করে সহকারী অধ্যপক ও প্রদর্শকের পদ। উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগেও একজন প্রভাষক ছাড়া সব পদ শূন্য। এ বিভাগে পড়ালেখা করছে প্রায় এক হাজার শিক্ষার্থী। আর পূর্ণ শিক্ষক থাকা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগে ৮০০ ও কৃষি বিজ্ঞান বিভাগে এক হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে।
শিক্ষকরা বলছেন, কলেজে শিক্ষকসংকটের কারণে এক বিভাগের শিক্ষককে অন্য বিভাগের ক্লাস নিতে হচ্ছে। কলেজের দর্শন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রবিউল আওয়াল জানান, তিনি দর্শনের শিক্ষক হলেও দর্শনের পাশাপাশি রাষ্ট্রবিজ্ঞান পড়াতে হচ্ছে।
হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী কাশমুন আকতারসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, শিক্ষক না থাকায় তাদের ঠিকমতো ক্লাস হচ্ছে না। বাইরে প্রাইভেট পড়তে হচ্ছে।
এ বিষয়ে অভিভাবক মাহাবুবুর রহমান বুলু বলেন, ‘এই কলেজে এত শিক্ষকসংকট আগে জানলে এখানে সন্তানকে ভর্তি করতাম না।’
ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ বদরুল হুদা বলেন, ‘শিক্ষকসংকটের কথা আমরা বারবার বলে আসছি। কিন্তু কোনো সমাধান পাচ্ছি না। প্রায় ১৯ হাজার শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ এই কলেজের ওপর নির্ভরশীল। অবিলম্বে এ সংকটের সমাধান হওয়া জরুরি।’
শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ইকরামুল হক বলেন, ‘শিক্ষকসংকটের কারণে কলেজে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। কলেজে যেসব বিভাগে শিক্ষক নেই, সেসব বিভাগে স্থানীয়ভাবে অতিথি শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। তাদের দিয়েই চালিয়ে নেয়া হচ্ছে পাঠদান কার্যক্রম। তবে এ অঞ্চলের বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে এখানে অবিলম্বে শিক্ষকের শূন্যপদ পূরণ হওয়া দরকার।’
শিক্ষকসংকট বিষয়ে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সংসদ সদস্য জাহিদুর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি জানান, শিক্ষকসংকট নিরসনে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলবেন।
মৌলভীবাজারে কমলগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মো. আওলাদ হোসেন (২০) নামে এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের হীড বাংলাদেশ নামক স্থানে দুর্ঘটনাটি ঘটে। এসময় মোটরসাইকেলের অপর আরোহী রাসেল (২০) গুরুতর আহত হন। তিনি মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
নিহত আওলাদ উপজেলার সদর ইউনিয়নের ফুলবাড়ি গ্রামের আসাদুল মিয়ার ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন দুই মোটরসাইকেল আরোহী। এসময় তারা কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল সড়কের হীড বাংলাদেশে নামক স্থানে আসলে একটি গাড়ির সঙ্গে তাদের ধাক্কা লাগে। এসময় ঘটনাস্থলে নিহত হন আওলাদ। মোটরসাইকেলে পেছনে বসা রাসেল গুরুতর আহত হন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে কমলগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী জানান, মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগা গাড়িটি আটকের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ইমাম হোসেন (৩০) নামে এক রোহিঙ্গা যুবককে গুলি করে হত্যার ঘটনা ঘটেছে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে উখিয়ার কুতুপালং ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমাম হোসেন ক্যাম্প-১ ইস্ট এর জি/১২ ব্লকের মনি উল্লাহর ছেলে।
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শামীম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এফ/১৬ ব্লকে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীরা ইমাম হোসেনকে সরাসরি গুলি করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঘটনার পর ঘটনাস্থলে টহল বাড়ানো হয়েছে। এ ব্যপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’
বাগেরহাট জেলার খানজাহান আলীর মাজারের পাশের দীঘি থেকে প্রহলাদ কুমার দাস ওরফে ভোলা (৪৫) নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার দুপুরে দীঘিতে ভাসমান অবস্থায় মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
মৃত ভোলা পেশায় ভ্যানচালক। তিনি কচুয়া উপজেলার সাংদিয়া গ্রামের পরিতোষ কুমার দাসের ছেলে। কয়েক দিন আগে থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন বলে জানা গেছে।
তার গায়ে থাকা সোয়েটার, জামা ও লুঙ্গি দেখে তার পরিবারের সদস্যরা তাকে শনাক্ত করেছে বলে জানিয়েছেন বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম।
স্থানীয় বাসিন্দা জুথি জানান, সকাল সাড়ে ৮টার দিকে তিনি দীঘির ঘাটে থালাবাসন ধোয়ার জন্য গেলে অনেক দূরে একটি মরদেহ ভাসতে দেখেন তিনি।
ওসি আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা মরদেহটি উদ্ধার করি। মরদেহটির বেশিরভাগ অংশ পঁচে গেছে। পুলিশ অনুমান করছে পাঁচ থেকে ছয় দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।’
এ বিষয়ে ওসি আরও বলেন, ‘নিহতের বাবা পরিতোষ কুমার দাস ও তার ভাই থানায় এসে মৃতের শরীরে কাপড় দেখে তাকে তাকে শনাক্ত করেছেন তার বাবা। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে আইনগত প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।’
চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকায় একটি তিন তলা ভবন আংশিক হেলে পড়েছে।
মঙ্গলবার নগরীর পাহাড়তলী থানার সরাইপাড়া এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। তবে এতে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ফায়ার সার্ভিসের চট্টগ্রাম অঞ্চলের উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসেছি। ভবনটির পূর্বদিকে সিটি করপোরেশনের খালে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পে কাজ করছে সিডিএ। এতে ভবনের পূর্বদিকে পাইলিংয়ের মাটি সরে গেছে। পাশে আরেকটি তিনতলা ভবন আছে। দুই ভবনের খুব অল্পই খালি জায়গা, ৬ ইঞ্চির মতো হবে।’
তিনি বলেন, ‘ভবনটি উত্তর দিকে হেলে গেছে বলে মনে হচ্ছে। তবে অন্য ভবনের সঙ্গে লাগেনি। আনোয়ারের ভবন নামের তিন তলার ওই ভবনে চারটা পরিবার বসবাস করে। যেহেতু আমরা কোনো স্ট্রাকচারাল ক্ষতি পাইনি তাই বাসিন্দারা এখনও ভবনেই আছে। বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পেলে তাদের সরিয়ে নেওয়া হবে। আপাতত তাদের সতর্ক করা হয়েছে।’
গাইবান্ধা জেলা শহরের ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসার রান্না করা খাবার খেয়ে অসুস্থ হওয়া ১৬ শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা বর্তমানে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়া বিভাগে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে বিষয়টি দৈনিক বাংলাকে নিশ্চিত করেন গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) এএসএম রুহুল আমিন।
শিক্ষার্থীরা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে একইদিন সকালে তাদের হাসাপতালে ভর্তি করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার এএসএম রুহুল আমিন বলেন, ‘সকালে গাইবান্ধার ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা ১৬ জন শিক্ষার্থী ডাইরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসে। অবস্থা পর্যবেক্ষণ করে তাদের সবাইকে ভর্তি নেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের ডাইরিয়া ওয়ার্ডে (বিভাগে) তাদের চিকিৎসা চলছে।’
তিনি আরও বলেন, তাদের ফুড পয়জনিং (খাবারে বিষক্রিয়া) হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। তবে বর্তমানে তারা আশঙ্কামুক্ত রয়েছে।’
ফোরকানিয়া হাফিজিয়া মাদরাসার মোহতামিম মাওলানা মানসুর রাহমান মুঠোফোনে দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘মাদ্রাসায় প্রায় ২০০ জন শিক্ষার্থী আবাসিকে থাকে। তারা তিনবেলাই মাদরাসার রান্না করা খাবার খায়। প্রতিদিনের মতো গত রাতেও তারা স্বাভাবিক (সাদা ভাত, ডাল ও শিম ভাজি) খাবার খেয়ে শুয়ে পড়ে। এরপর রাত দুইটার দিকে হঠাৎ কয়েকজনের ডায়রিয়ার সাথে বমিও করে। পরে আমরা স্যালাইনসহ প্রাথমিক ওষুধ খাওয়াই। তারপরেও কন্ট্রোল না হওয়ায় আমরা সকালে তাদেরকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করি। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। আমরা প্রত্যেক শিক্ষার্থীদের অভিভাবদের খবর দিয়েছি।’
নাটোরের সিংড়ায় পৌরসভার গাড়ি রাখার গ্যারেজে আগুন লেগে মেয়রের গাড়িসহ আরও ১১টি যানবাহন পুড়ে গেছে। মঙ্গলবার ভোর ৪টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মিজানুর রহমান জানান, আজ ভোর ৪টার দিকে পৌরসভা ভবনের পাশে অফিসের গাড়ি রাখা একটি গ্যারেজে আগুন জ্বলতে দেখে স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস দূর্ঘটনাকবলিত স্থানে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই গ্যারেজের ভেতর রাখা মেয়র মো. জান্নাতুল ফেরদৌসের একটি ব্যক্তিগত গাড়িসহ, দুটি কমিউনিটি অ্যাম্বুলেন্স ও আটটি ইজিবাইক পুড়ে যায়।
এ বিষয়ে সিংড়া থানার ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুমন আলী জানান, বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট হয়ে আগুনের সুত্রপাত হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। আগুন লাগার মূল কারন এখনো জানা যায়নি।
রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে মরা পদ্মা নদীর ওপর নির্মিত উজানচর নতুন ব্রিজ এলাকায় ঘোষিত পর্যটন এলাকায় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে চলছে পাকা স্থাপনা নির্মাণকাজ। এ জন্য নদীর মাঝ বরাবর রাস্তার ঢাল কেটে পাকা ভিম তৈরি করা হচ্ছে। এতে রাস্তার ঢালে বসানো বড় বড় কংক্রিটের বোল্ডার সরিয়ে ফেলা হয়েছে। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে রাস্তাটি।
গোয়ালন্দ পৌরসভার কুমড়াকান্দি এলাকার বাসিন্দা প্রবাসফেরত আ. কাদের জমি কিনে সেখানে এ স্থাপনা নির্মাণ কাজ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগের বিষয়ে আ. কাদের ফোনে জানান, কিছুদিন আগে তিনি আতিয়ার রহমান খুশি নামের এক দলিল লেখকের কাছ থেকে নতুন ব্রিজের পাশ থেকে ৯ শতাংশ জমি কেনেন। এরপর সেখানে দোকানঘর নির্মাণকাজ শুরু করি। কাজ করার বিষয়ে আতিয়ার ভাই আমাকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘আপনি কাজ করেন, আমি সব দেখব।’
এ বিষয়ে আতিয়ার রহমান খুশি বলেন, ‘স্থানীয়ভাবে প্রশাসন গত বছর নতুন ব্রিজ এলাকাকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে; কিন্তু এ ব্যাপারে পর্যটন মন্ত্রণালয় থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানি না। সেটা হলে তো আমাদের কাছ থেকে জমি অধিগ্রহণ করার কথা; কিন্তু তা করা হয়নি। তাই আমাদের দালিলিক সম্পত্তি বেচাকেনা করছি এবং সেখানে কাজকর্ম করা হচ্ছে। তবে রাস্তার ঢালের অন্তত ১০ ফুট দূর থেকে কাজ করা হচ্ছে। এখানে কারও বাধা দেয়ার কিছু নেই।’
উজানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গোলজার হোসেন মৃধা বলেন, ‘পদ্মা নদীর নতুন ব্রিজ এলাকা গোয়ালন্দের ব্যাপক সম্ভাবনাময় একটি পর্যটন এলাকা। ঈদ-পূজাসহ বিভিন্ন উৎসব, এমনকি সারা বছরই এখানে ব্যাপক জনসমাগম হয়। স্থানীয় প্রশাসন গত বছর এলাকাটিকে পর্যটন এলাকা ঘোষণা করে সরকারের ঊর্ধ্বতন পর্যায়ে অবহিত করে। ইতোমধ্যে সেখানে সৌন্দর্য বর্ধনে এলজিইডি ও জাইকার ব্যবস্থাপনায় বেশ কিছু কাজও করা হয়েছে। আশা করি, সেখানে শিগগিরই বড় ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। সেখানে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ হলে সৌন্দর্য ব্যাহত ও রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়বে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আ. কাদেরকে মৌখিকভাবে কাজ বন্ধ করতে বললেও তিনি শোনেননি। যে কারণে রোববার তাকে অফিসিয়ালি নোটিশ দিয়ে কাজ বন্ধ রাখতে বলেছি। গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। কাজ বন্ধ রাখার ব্যবস্থা নিতে ইউপি চেয়ারম্যানকে নির্দেশ দিয়েছি।’
জামালপুর-৫ (সদর) আসনের আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম।
আজ সোমবার বিকালে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শফিউর রহমানের বরাবর স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিমের পক্ষে সমন্বয়কারী ইকরামুল হক নবীন স্বাক্ষরীত লিখিত অভিযোগ পত্র দিয়েছেন।
লিখিত অভিযোগে দাবি করা হয়েছে, সদর আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ জনপ্রতিনিধিদেরকে নিয়ে ইতিমধ্যে সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের বাংলাদেশ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, শরিফপুর উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে, লক্ষীরচর ইউনিয়নের বারুয়ামারী স্কুল মাঠে বিশাল গাড়ী বহর এবং গরু জবাই করে ভুঁড়ি ভোজের ব্যবস্থা করে আচরণ বিধি লঙ্ঘন করেছেন। সোমবার তুলশীর চর ইউনিয়নের টিকরাকান্দি মাঠে বিশাল গাড়ী বহর এবং গরু জবাই করে ভুঁড়িভোজের আয়োজন করেছে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম রেজনু’র নির্বাচন সমন্বয়কারী ইকরামুল হক নবীন বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী দলীয় সভার নামে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করে যাচ্ছেন, আমরা এর বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছি।
নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচন আচরণবিধির বিষয়ে নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে, নির্বাচন আচরণবিধি ভঙ্গের কোন কিছু হচ্ছে না।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা শফিউর রহমান বলেন, আমি অভিযোগের বিষয় জেনেছি, তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর সীমান্তের এপার-ওপারে গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
আজ সোমবার ভোর রাতে উপজেলার কাঠালডাঙ্গী বিওপি সীমান্তে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন হরিপুর উপজেলার গেরুয়াডাঙ্গী গ্রামের নজরুল ইসলামের ছেলের মকলেছ (২৮) এবং একই এলাকার বাসেদ আলীর ছেলে জহিরুল ইসলাম (২৫)।
এদিকে দুইজন নিহতের খবরের মধ্যে প্রথম জনের তথ্য নিশ্চিত করেছেন হরিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ ওয়াহিদ এবং অপরজনের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছেন হরিপুর কাঠালডাঙ্গী বিওপি কোম্পানি কমান্ডার এন্তাজুল হক।
ওসি ফিরোজ ওয়াহিদ জানান, আজ সোমবার ভোর রাতে একজন ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ নাগর নদীর উপশাখা শিরানী নদীতে ভাসমান অবস্থায় পাওয়া যায়। আমরা লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছি।
অন্যদিকে কাঠালডাঙ্গী বিওপি কোম্পানি কমান্ডার এন্তাজুল হক জহিরুল ইসলাম বলেন, ভারত সীমান্তের ভিতরে এক বাংলাদেশিকে গুলি করে বিএএসএফ। পরে তাকে সেখানকার একটি হাসপাতালে নেয়া হয় এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়। তার লাশ এখনো বিএসএফের কাছে আছে।
দুজনকেই বিএসএফ গুলি করেছে বলে জানা যায়। তবে ঠিক কি ঘটনায় বিএসএফ গুলি চালিয়েছে তা গণমাধ্যমকে এখনো নিশ্চিত করতে পারেনি বিজিবি ও পুলিশ।
অন্যদিকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় শিরানী নদীতে যে ব্যক্তির লাশ পাওয়া গেছে তিনি বিজিবির গুলিতে নিহত হতে পারেন বলে পুলিশের ধারণা।
ফরিদপুরের নগরকান্দায় ট্রাকের ধাক্কায় ঝর্না বেগম (৪০) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
সোমবার দুপুরে উপজেলার তালমার মোড় এলাকায় ফরিদপুর-বরিশাল মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ঝর্না বেগম ডাংগী ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর গ্রামের সালাম সর্দারের স্ত্রী।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খায়রুল আলম।
স্থানীয়রা জানায়, ঝর্না বেগম বাড়ি থেকে ভ্যানযোগে এসে তালমা মোড় আবুল মেম্বার বাস কাউন্টারের সামনে নামেন। পরে ফরিদপুরগামী একটি ট্রাকের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। স্থানীয়রা ট্রাক ও ট্রাকচালককে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
ওসি খায়রুল আলম জানান, ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে এবং ট্রাকচালক হাসানুর রহমানকে (৪২) আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে নিহত ঝর্নার ভাতিজা লিয়াকত হোসেন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।
মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের শেষ দিনে বাগেরহাটের ৪টি আসন ৩০ জনের মধ্যে স্বতন্ত্র ও দলীয় প্রার্থীসহ মোট ছয় জনের মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে। এদের মধ্যে ৩ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত এবং ৩ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন।
ঋণ খেলাপির দায়ে দলীয় তিনজনের এবং সমর্থনকারীদের স্বাক্ষরের মিল না থাকায় ৩ স্বতন্ত্র প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল কর হয়। সোমবার জেলা রিটানিং অফিসারের কার্যালয়ে বাছাই শেষে এ ঘোষণা দেয়া হয়।
বাগেরহাট জেলা রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মোহা. খালিদ হোসেন জানান, বাগেরহাটের ৪টি আসনে ৩০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। এদের মধ্যে যাছাই-বাছাই শেষে ঋণ খেলাপির দায়ে বাগেরহাট-১ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী কাজী রবিউল, বাগেরহাট-২ আসনে ঋণ খেলাপির দায়ে তৃণমূল বিএনপির প্রার্থী মরিয়ম সুলতানা ও জাতীয় পার্টির হাজরা সহিদুল ইসলাম মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে বাগেরহাট-৩ আসনের শেখ নিজাম উদ্দিন, বাগেরহাট-৪ আসনের মো. জামিল হোসেন ও বাগেরহাট-২ আসনে এস এম আজমল হোসেনের সমর্থকারীদের স্বাক্ষরের মিল না থাকায় মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। ফলে বাগেরহাটের ৪টি আসনে মোট বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২৪ জন।
বাতিল হওয়া প্রার্থীরা আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে আপিল করতে পারবে বলেও জানান তিনি।
দীর্ঘ ৯৪ বছর ধরে নামাজের সময় ছাড়া বাকি সময় টানা কোরআন তেলাওয়াত চলছে এই মসজিদে। কোনো বিরাম নেই। পালাক্রমে একেকজন কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকেন ৭০০ বছরের পুরোনো এই মসজিদে। টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী এলাকায় অবস্থিত মসজিদটি ধনবাড়ী নবাববাড়ী মসজিদ নামেই পরিচিত।
ঐতিহাসিক স্থাপত্যের নিদর্শন ও গুণীজনেরা টাঙ্গাইল জেলার ইতিহাসকে করেছে নানাভাবে সমৃদ্ধ। ধনবাড়ী একটি প্রাচীন জনপদ ও একসময়ে জমিদারির জন্য বিখ্যাত।
মোঘল সুবেদার ইসলাম খানের শাসন চলাকালে সেনাপতি ইস্পিঞ্জার খা ধনবাড়ী আক্রমণ করে দখল নেন। তারাই জমিদার বাড়ির ৩০ বিঘা দিঘির পাড়ে সুদৃশ্য, স্থাপত্য শিল্পের অপরূপ নিদর্শন এ মসজিদটি নির্মাণ করেন।
কালের পরিক্রমায় ধনবাড়ী জমিদারির দায়িত্বে আসেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী। তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
কথা হয় হাফেজ আব্দুল ওয়ারেছের সঙ্গে। তিনি প্রায়ই এখানে কোরআন তেলাওয়াত করেন। আব্দুল ওয়ারেছ জানান, অবসরে সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদের সামনে পুকুরঘাটের এই স্থানে বসে কোরআন তেলাওয়াত শুনতেন। মৃত্যুর আগে তিনি ওসিয়ত করে যান, এখানে যেন তার কবর দেয়া হয় আর কবরের পাশে টানা কোরআন তেলাওয়াত করা হয়। ১৯২৯ সালের ১৭ এপ্রিল ৬৫ বছর বয়সে নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী মারা যান। ওসিয়ত অনুযায়ী, তিনি মারা যাওয়ার পর থেকেই প্রতিদিন পাঁচজন হাফেজ এখানে কোরআন তেলাওয়াতের দায়িত্বে আছেন।
দিন-রাত আলাদা শিফটে একেকজন কোরআন পাঠের দায়িত্বে থাকেন। বর্তমানে হাফেজ আব্দুস সামাদ, হাফেজ মো. কামরুজ্জামান, হাফেজ ওমর ফারুক, হাফেজ মো. ওয়ারেজ আলী নিয়মিত কোরআন তেলাওয়াতের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন।
বর্তমানে একটি পদ শূন্য রয়েছে। এদের কেউ অনুপস্থিত থাকলে মসজিদের পাশেই হিফজখানা থেকে ছাত্রদের দিয়ে শূন্যস্থান পূরণ করা হয়।
আগে ট্রাস্টের মাধ্যমে ইমাম, মুয়াজ্জিন, হিফজখানা ও তেলাওয়াতকারী হাফেজদের বেতন পরিশোধ করা হলেও এখন মসজিদের আয় থেকেই বেতন-ভাতা পরিশোধ করা হয়।
হাফেজ কামরুজ্জামান বলেন, তিনি ২৬ বছর ধরে এখানে কোরআন তেলাওয়াত করছেন। মসজিদের পশ্চিম পাশে অনেক পুরোনো কবরের ওপরে মাইকের হর্নের মাধ্যমে সেই তেলাওয়াতের সুর পৌঁছে দেয়া হচ্ছে।
মসজিদের ইমাম ও খতিব মুফতি মো. ইদ্রিস হোসাইন দৈনিক বাংলাকে বলেন, সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী নবাব মঞ্জিলের পাশে জনকল্যাণমূলক ৩৯টি প্রতিষ্ঠান গড়েন ও সম্পদ ওয়াকফ করে যান। তিনি ছিলেন হযরত আব্দুল কাদের জিলানীর বংশধর।
নওয়াব আলীর কবরের পাশের দৃষ্টিনন্দন, মার্বেল পাথরে কারুকার্য খচিত এই মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসেন। অনেকেই মনের আশা পূরণে এই মসজিদে বিভিন্ন মানত করে থাকেন।
ময়মনসিংহ থেকে আসা লিমা আক্তার বলেন, ‘লোকমুখে শুনে মসজিদটি দেখতে এসেছি। সুন্দর পরিবেশে এত সুন্দর মসজিদ দেখে মুগ্ধ হয়েছি।’
মৌলভিবাজারের কমলগঞ্জে ৩২তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২৫তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস-২০২৩ দিবস পালিত হয়েছে।
রোববার (৩ ডিসেম্বর) দুপুরে চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফোরামের উদ্যোগে উপজেলার শমশেরনগর চা বাগানে র্যালী, আলোচনা সভা ও ২ জন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।
চা জনগোষ্ঠী প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফোরামের সভাপতি উত্তম কুমার গোয়ালার সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কমলগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক মো. রফিকুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. রইছ আল রেজুয়ান, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান বিলকিস বেগম, চা শ্রমিক ছাত্রনেতা মোহন রবিদাস, স্কুল শিক্ষক গোয়ালা।
আলোচনা সভা শেষে উপজেলা পরিষদের পক্ষ থেকে ২ জন শারিরীক প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে দুইটি হুইল চেয়ার বিতরণ করেন অতিথিরা।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধী নাগরিকরা সমাজের বোঝা নয়। তারা যেন সমাজে অন্যসব নাগরিকের মতো সমান অধিকার ও মর্যাদা নিয়ে বসবাস করতে পারেন, সে বিষয়ে সচেতনতা তৈরি ও কার্যকর পদক্ষেপ নেয়ার জন্য প্রতিবছর আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস পালিত হয়। শারীরিকভাবে অসম্পূর্ণ মানুষদের প্রতি সহমর্মিতা ও সহযোগিতা প্রদর্শন ও তাদের কর্মকান্ডের প্রতি সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যেই দিবসটির সুচনা হয়। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিরাও জাতীয় উন্নয়নে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।