এনায়েত করিম, রাজশাহী ব্যুরো
প্রাচীনকাল থেকেই রেশমের জন্য সুপরিচিত রাজশাহী। সেই সুখ্যাতি থেকেই রাজশাহীর প্রধান পরিচয় হয়ে ওঠে ‘সিল্কসিটি’। তবে মাঝে খেই হারিয়ে ফেলেছিল রেশমশিল্প। বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ইনস্টিটিউটের হাত ধরে সেই রেশম আবার স্বপ্ন দেখাচ্ছে সুদিন ফেরানোর। রেশম নিয়ে গবেষণায় নিয়োজিত এই প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি রেশমের ৩৫টি নতুন জাত উদ্ভাবন করেছে। এর মধ্যে ১৫টি মালবেরি (তুঁত) গাছ ও ২০টি রেশম কীট। নতুন এসব জাত রেশমশিল্পে সাড়া ফেলবে বলে মনে করছেন গবেষকরা। তারা বলছেন, আগের জাতের চেয়ে নতুন জাতে অন্তত ১২ থেকে ১৫ শতাংশ বেশি উৎপাদন আসবে। এতে চাষিদেরও সাশ্রয় হবে।
বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রাজশাহীর তথ্য অনুযায়ী, রেশমশিল্পের উন্নয়নে পাঁচ বছর আগে ‘রেশম প্রযুক্তি উন্নয়ন বিস্তার ও দক্ষ জনশক্তি সৃষ্টির মাধ্যমে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকরণ’ নামে একটি প্রকল্প হাতে নেয় রেশম বোর্ড। চলতি বছরের জুনে শেষ হয়েছে প্রকল্পটি। ৩৫ কোটি ৬৬ লাখ টাকার এই প্রকল্পের মাধ্যমে নতুন করে রেশমে যুক্ত হয়েছে ১৫টি মালবেরি (তুঁত) জাতের গাছ ও ২০টি নতুন জাতের কীট। ফলে বর্তমানে মালবেরি জাতের গাছের সংখ্যা ৩৮টি ও রেশম কীটের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১৪টিতে।
বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটের ঊর্ধ্বতন গবেষণা কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ ও রুমানা ফেরদৌস বিনত-এ রহমানের যৌথ গবেষণায় নতুন এসব জাত উদ্ভাবন হয়। নতুন ৩৫টি জাত (১৫টি তুঁত ও ২০টি কীট) উদ্ভাবনের ফলে বর্তমানে বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রাজশাহীতে জার্মপ্লাজম ব্যাংকে তুঁত জাতের গাছের সংখ্যা ৬০ থেকে ৮৪ ও রেশম কীট জাতের সংখ্যা ৮৫ থেকে ১১৪টিতে উন্নীত হয়েছে। এর মধ্যে ২৭টি উচ্চফলনশীল রেশম কীটের জাত রয়েছে।
নতুন ২০টি রেশম কীট উদ্ভাবনের ফলে প্রতি ১০০টি রোগমুক্ত ডিমে ৭০ থেকে ৭৫ কেজি রেশমগুটি উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে। আগে এর পরিমাণ ছিল ৬০ থেকে ৬৫ কেজি। এ ছাড়া উচ্চফলনশীল ১৫টি তুঁতজাত উদ্ভাবনের ফলে বছরে হেক্টরপ্রতি তুঁতপাতার উৎপাদন ৪০ থেকে ৪৭ মেট্রিক টনে উন্নীত করা সম্ভব হয়েছে। এর আগে প্রতি হেক্টরে রেশমের সর্বোচ্চ উৎপাদন ছিল ৩০ থেকে ৩৭ মেট্রিক টন। ফলে স্বল্প সময়ে ও অল্প ব্যয়ে মানসম্পন্ন কাঁচা রেশম সুতা উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে।
গবেষণা কর্মকর্তা ফারুক আহম্মেদ দৈনিক বাংলাকে বলেন, ‘একটি নতুন জাত তৈরি করতে অন্তত ১০ বছর সময় লেগে যায়। এই গবেষণার কাজ আগেই কিছুটা এগিয়ে রাখায় পাঁচ বছরের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হয়েছে। রাজশাহী রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে জার্মপ্লাজম থেকে গবেষণার মাধ্যমে নতুন এই ১৫টি জাতের মালবেরি (তুঁত) জাত উদ্ভাবন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে বিএসআরএম-৬৪, বিএসআরএম-৬৫ ও বিএসআরএম ৭৪ জাতের ট্রায়াল শেষ হয়েছে। এগুলো রেশম সম্প্রসারণের মাধ্যমে চাষিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হবে। বাকি জাতগুলো ট্রায়ালের জন্য রাখা হয়েছে।’
এই গবেষক আরও বলেন, ‘প্রকল্পটি দ্বিতীয় পর্যায়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে। অনুমোদন পেলে দ্বিতীয় পর্যায়ে এগুলোর ট্রায়াল শেষ করা হবে। এগুলো থেকে হেক্টরপ্রতি তুঁতপাতার উৎপাদন ৪০ থেকে ৪৭ মেট্রিক টনে উন্নীত করা সম্ভব হবে। তবে ট্রায়াল শেষ না হওয়া পর্যন্ত এগুলোর নামসহ বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না।’
ঊর্ধ্বতন গবেষণা কর্মকর্তা রুমানা ফেরদৌস বিনত-এ রহমান বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে উদ্ভাবিত ২০টি নতুন রেশম কীটের জাতের সবগুলোই এখন ট্রায়াল পর্যায়ে আছে। এগুলো চাহিদা অনুযায়ী রেশম সম্প্রসারণের মাধ্যমে ক্রস হাইব্রিড জাত উৎপাদন করে সরবরাহ করা হবে।
বাংলাদেশ রেশম গবেষণা ও প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট রাজশাহীর পরিচালক কাজী রফিকুল ইসলাম বলেন, প্রধান ফসল হিসেবে চাষিদের তুঁত চাষ করতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এখন বাড়ির আনাচকানাচে, রাস্তার ধারে পরিত্যক্ত জায়গায় বেশির ভাগ তুঁত চাষ হয়। রেশম গবেষণা ইনস্টিটিউটের পক্ষ থেকেও তুঁত চাষকে জনপ্রিয় করতে সাথি ফসল প্রবর্তন করা হয়েছে। চাষিরা এভাবে চাষাবাদ করলে লাভবান হবেন।
তিনি আরও বলেন, নতুন এসব জাত উদ্ভাবনের পর সেগুলো দিয়ে বিভিন্ন এলাকার কৃষক নিয়ে এখানে প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে। এখন এগুলো ট্রায়ালে আছে। কিছু কিছু জাত রেশম সম্প্রসারণকে দেয়া হয়েছে। আর কিছু জাতের কাজ এখনো চলছে। সামান্য কিছু উন্নয়ন করতে হবে। এগুলো শেষ হলেই এই ৩৫টি নতুন জাত রেশম সম্প্রসারণ শাখার মাধ্যমে চাষিদের হাতে পৌঁছে দেয়া হবে।
উল্লেখ্য, রাজশাহীর ঐতিহ্যবাহী রেশম কারখানা ২০০২ সালে বন্ধ করে দেয় তৎকালীন জোট সরকার। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর ফের সচলের উদ্যোগ নিয়ে ২০১৮ সালে কারখানাটি চালু হয়। সে সময় রেশমের সুদিন ফেরাতে ১৫৩ কোটি টাকার চারটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। এরপর ২০২১ সালে আন্তর্জাতিক ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি পায় রাজশাহীর ঐতিহ্য রেশম। স্বীকৃতি পাওয়ার পর রেশম কাপড়ের চাহিদা বেড়েছে। বর্তমানে রেশমচাষিদের উৎপাদিত রেশমগুটি থেকে কারখানার সামনের রেশম ডিসপ্লেতে মিলছে প্রিন্টেড শাড়ি, টু-পিস, থান কাপড়, ওড়না, স্কার্ফ, টাই ইত্যাদি খাঁটি রেশমপণ্য।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. নুরুন্নাহার চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের মেরিটাইম খাত এখন বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার মুখোমুখি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন মেরিন অফিসার ও ইঞ্জিনিয়ার তৈরিতে সরকার প্রশিক্ষণের গুণগত মান উন্নয়ন, আধুনিক সরঞ্জাম সংযোজন এবং অবকাঠামো সম্প্রসারণে নিরলসভাবে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমিকে আধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠানে রূপ দিতে বর্তমানে ১১৫ কোটি টাকার সরকারি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে এই একাডেমি দেশের মেরিটাইম খাতের দক্ষ জনশক্তি তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে।’
নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও একাডেমির অবদান উল্লেখযোগ্য উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘২০১২ সাল থেকে নারী ক্যাডেটদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু হওয়ার পর আজ (রোববার) তারা আন্তর্জাতিক সমুদ্রে সাহসিকতা ও দক্ষতার সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা বহন করছেন।’ শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) চট্টগ্রামের আনোয়ারায় বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত ৫৯তম ব্যাচের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
দুই বছরের কঠোর শৃঙ্খলা, একাডেমিক পাঠ ও রেজিমেন্টাল প্রশিক্ষণের সফল সমাপ্তি ঘটে এই বর্ণাঢ্য গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডের মধ্য দিয়ে। এ বছর প্রি-সি সনদ অর্জন করেন মোট ১৬০ জন ক্যাডেট। এর মধ্যে ১১ জন নারী ক্যাডেটসহ নটিক্যাল শাখায় ৮২ জন এবং মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং শাখায় ৭৮ জন রয়েছেন।
সাদা ইউনিফর্মে দৃঢ় পদচারণায় ক্যাডেটরা জানান দিলেন বিশ্বের যে কোনো সমুদ্র তাদের জন্য প্রস্তুত।
অনুষ্ঠানের অন্যতম আকর্ষণ ছিল শ্রেষ্ঠ ক্যাডেটদের পদক প্রদান। সকল ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ কৃতিত্বের জন্য ৫৯তম ব্যাচের ক্যাডেট নম্বর-৫৭৮৯ মিফতাহুল ইসলাম রাজ্য অর্জন করেন মহামান্য রাষ্ট্রপতির স্বর্ণপদক। এ মুহূর্তটি পুরো প্যারেড মাঠজুড়ে গর্বের আবহ তৈরি করে।
একাডেমি সূত্রে জানা গেছে, ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মেরিন একাডেমি থেকে মোট ৫ হাজার ৮৬০ জন নটিক্যাল ও মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং ক্যাডেট প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করেছেন। তারা বর্তমানে বিশ্বের বিভিন্ন সমুদ্রগামী জাহাজে দায়িত্ব পালন করে দেশের জন্য বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
বর্ণাঢ্য এই গ্র্যাজুয়েশন প্যারেডে সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা, সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা এবং ক্যাডেটদের অভিভাবকদের উপস্থিতিতে একাডেমি প্রাঙ্গণ পরিণত হয় গর্ব, আনন্দ ও প্রত্যাশার মিলনমেলায়।
বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবী মামলা, মাদক দিয়ে ফাঁসানো, মিথ্যা নাশকতা মামলা দিয়ে শত শত নেতা-কর্মীদের জেল খাটানো পুলিশ কর্মকর্তা জীবননগর থানার সাবেক ওসি এস এম জাবীদ এখন ঝিনাইদহ পিবিআইতে কর্মরত। রাজনৈতিক কর্মীদের বিরুদ্ধে ধারাবাহিক মামলার অভিযোগে আলোচিত ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে ঝিনাইদহ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) পদায়ন করায় রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
জানা গেছে, ২০২৩ সালের জুলাই মাসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে জীবননগন থানায় বদলি করা হয় এস এম জাবীদ হাসানকে। এরপর থেকে বিএনপি ও জামায়াত নেতা-কর্মীদের ধর-পাকড় শুরু করেন তিনি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের আস্থাভাজন থেকে নিরীহ বিএনপি নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার শুরু করেন।
সূত্র জানায়, জীবননগরে দায়িত্বকালীন সময়ে ওই কর্মকর্তা একাধিক রাজনৈতিক মামলার দায়িত্বে ছিলেন। সে সময়ে মামলার ভয় দেখিয়ে নিরীহ মানুষের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেয়।
বিএনপির নেতা-কর্মীরা অভিযোগ করেন, নিরীহ ও সাধারণ কর্মীদের বিরুদ্ধেও রাজনৈতিক প্রভাবে মামলা দেওয়া হয়, যা ছিল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক স্বার্থ বাস্তবায়নের অংশ। তাদের ভাষায়, ‘আইন নয়, নির্দেশই ছিল সবকিছুর ভিত্তি।’
২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর বিশেষ অভিযানের নামে বাড়ি থেকে ধরে এনে নাশকতা মামলায় চালান দেওয়া হয় জীবননগর থানা বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি ও উথলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কালামকে। ৪ নভেম্বর বাড়ি থেকে ধরে এনে নাশকতা মামলায় চালান দেওয়া হয় জীবননগর পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডাবলুকে। নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন এমন অভিযোগে মামলা দেয় ওসি এস এম জাবীদ হাসান। বিএনপি-জামায়াতের এমন শত শত নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় দেওয়ায় ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে তাকে চুয়াডাঙ্গা জেলার শ্রেষ্ঠ ওসি হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছিল। স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের পর জাবীদ হাসানকে ২০২৪ সালের অক্টোবর মাসে বদলি করে দেওয়া হয়। বর্তমানে তিনি ঝিনাইদহ পিবিআইতে কর্মরত আছেন।
অভিযোগের বিষয়ে জীবননগর থানার সাবেক ওসি ও ঝিনাইদহ পিটিআইয়ের পরিদর্শক এস এম জাবীদ এ নিয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।
এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার গাজী রবিউল ইসলাম বলেন, ‘তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
নারায়ণগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীতে ‘বোগদাদীয়া-১৩’ নামের লঞ্চের ধাক্কায় একটি বালুবাহী বাল্কহেড ডুবে গেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১০টার দিকে ফতুল্লার লঞ্চঘাট এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায়, লঞ্চটির সামনের অংশ বালুবাহী বাল্কহেডটির উপরে উঠে যায়। বাল্কহেডটি ডুবে যেতে দেখে শ্রমিকরা তখন প্রাণ বাঁচাতে নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। পরে তারা সাঁতরে তীরে উঠে যায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসা ভোলামুখী ‘বোগদাদীয়া-১৩’ লঞ্চটির সঙ্গে মুন্সীগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা জান্নাতি নামের সদরঘাটমুখী বাল্কহেডের সংঘর্ষ হয়। এতে বাল্কহেডটি মুহূর্তের মধ্যে ডুবে যায়। এ সময় প্রাণ বাঁচাতে বাল্কহেডের শ্রমিকরা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
ডুবে যাওয়া জান্নাতি বাল্কহেডের মালিক আলি আহেম্মদ বলেন, চাদপুর দশআনি থেকে সিলেকশন বালু নিয়ে ঢাকায় আসার পথে ফতুল্লা লঞ্চঘাট অতিক্রমকালে বিপরীত দিক থেকে আসা বোগদাদিয়া-১৩ নামের একটি যাত্রীবাহী লঞ্চ বাল্কহেড বরাবর আসতে দেখে তারা গতি পরিবর্তন করতে চাইলেও ব্যর্থ হয়। এতে এ দুর্ঘটনা ঘটে। তবে কেউ হতাহত হয়নি।
পাগলা নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘এ ঘটনার পর পর পাঁচজন শ্রমিক সাঁতরে তীরে উঠতে সক্ষম হয়েছেন। এতে কেউ হতাহত হয়নি। ডুবে যাওয়া বাল্কহেডটি উদ্ধারে কাজ শুরু হবে।’
গাজীপুরের কাপাসিয়ার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবার লক্ষ্যে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পে চিকিৎসাপত্র এবং ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে। রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভ খান আ. হাই সরকার স্কুল অ্যান্ড কলেজ প্রাঙ্গণে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন গাজীপুর-৪, কাপাসিয়া আসনে বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের পদপ্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নান।
কাপাসিয়ার কৃতিসন্তান বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য প্রয়াত নেতা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আ স ম হান্নান শাহ্ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত মেডিকেল ক্যাম্পের আনুষ্ঠানিকতার সভাপতিত্ব করেন কাপাসিয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ খন্দকার আজিজুর রহমান পেরা। স্থানীয় বিএনপি নেতা দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির সিনিয়র নেতা ফ ম মমতাজ উদ্দীন রেনু। এ সময় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক সদস্য ও কাপাসিয়া প্রেসক্লাবের সভাপতি এফ এম কামাল হোসেন, জেলা কৃষক দলের সদস্য সচিব ফকির ইস্কান্দার আলম জানু, বারিষাব ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মাওলানা কফিল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম মাস্টার, বিএনপির প্রার্থী শাহ রিয়াজুল হান্নানের নির্বাচনী প্রচারণা কমিটির আহ্বায়ক বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. জাহাঙ্গীর আলম, আবুল বাসার মাস্টার, সাইফুল ইসলাম জামাল, নজরুল ইসলাম, বেলায়েত হোসেন ডাক, ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক বিল্লাল হোসেন বুলবুল, সদস্য মনির পালোয়ান, ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি সাইফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ইয়াহিয়া ফরাজি প্রমুখ। ঢাকা থেকে আগত মেডিকেল টিমে ছিলেন, কার্ডিয়াক সার্জন ডা. মো. সাজেদুল বারী, মেডিসিন বিভাগের ডা. নিশাত তাসনিম, ডা. ওয়ালিসা ইব্রাহিম, ডা. হুমাইরা বিনতে আহমেদ, ডা. আয়েশা সিদ্দিকা এশা, শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. মো. মাসুদুর রহমান, গাইনোকোলজিস্ট ডা. মেজর (অব.) শিরিন আক্তার।
গাজীপুরের টঙ্গীতে আরিফ (২৭) নামে এক বিকাশকর্মীকে গুলি করে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা ছিনতাইয়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আজাদ নামের আরও এক বিকাশকর্মী। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় টঙ্গী পূর্ব থানাধীন আনারকলি রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ ও র্যাব।
আহত আজাদ জানান , টঙ্গী বিসিক ফকির মার্কেট এলাকার এজেন্টদের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৭৭ হাজার টাকা সংগ্রহ করে টঙ্গী বাজার সেনা কল্যাণ ভবনের অফিসে ফিরছিলেন তারা। পথিমধ্যে আনারকলি রোডের ডা. নাজিম উদ্দীন মার্কেটের পাশের গলিতে পৌঁছালে কয়েকজন ছিনতাইকারী তাদের পথরোধ করে। এ সময় ছিনতাইকারী তাদের সাথে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে অস্ত্র দিয়ে দুই রাউন্ড গুলি করে ছিনতাইকারীরা। এতে আরিফের বুকে ও পেটে গুলি লাগে। আজাদ বাধা দিতে গেলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করে ছিনতাইকারীরা।
পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় তাদের টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ আরিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। অপর আহত আজাদকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
টঙ্গী শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার জেনারেল হাসপাতালে সহকারী সার্জন ডা. নাহিদা সুলতানা বলেন, ‘আহত আরিফের ডান পাশে একটি গুলির ক্ষত রয়েছে। বামপাশার আরেকটি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গুলিবিদ্ধ আরিফকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।’
এ ঘটনায় টঙ্গী পূর্ব থানার অফিসার ইনচার্জ মেহেদী হাসান বলেন, ‘ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে একটি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।’
অ্যাসোসিয়েশন অব টেলিভিশন চ্যানেল ওনার্স (অ্যাটকো)-এর ৯ম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৩ ডিসেম্বর ২০২৫) রাজধানীর বনানীর হোটেল শেরাটনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাটকো সভাপতি ও মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী।
সভায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও দায়িত্বশীলতা নিয়ে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখেন সভাপতি অঞ্জন চৌধুরী। তিনি বলেন, সংবাদমাধ্যমকে নিরপেক্ষভাবে তাদের আবেগ নয়, বরং বিবেককে প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে। স্বাধীন চিন্তাভাবনা ও মত প্রকাশের অধিকার রক্ষায় সচেষ্ট থাকার আহ্বান জানিয়ে তিনি সকলকে সম্মিলিতভাবে দেশ গড়ার কাজে ভূমিকা রাখার অনুরোধ করেন।
এ সময় সভায় উপস্থিত ছিলেন এনটিভির চেয়ারম্যান আলহাজ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক আলী, ইটিভির চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম, বাংলা ভিশন টিভির চেয়ারম্যান আব্দুল হক, আরটিভির ভাইস চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন, ডিবিসি নিউজের চেয়ারম্যান ইকবাল সোবহান চৌধুরী, দীপ্ত টিভির ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী জাহেদুল হাসান এবং বৈশাখী টিভির উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিপু আলম মিলনসহ সংগঠনের অন্যান্য সম্মানিত সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
সভায় উপস্থিত সকল সদস্য সাংবাদিকতা ও গণমাধ্যম পরিচালনায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখার বিষয়ে একমত পোষণ করেন। একটি সুন্দর ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে নিজেদের অবস্থান থেকে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন তারা।
সকাল থেকেই গ্রামের বাতাস ভারী। মসজিদের মাইকে বারবার ভেসে আসছে সেই ঘোষণা- ‘কোয়েলহাট পূর্বপাড়া নিবাসি রাকিব উদ্দীনের দুই বছরের শিশু সন্তান সাজিদ মারা গেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার নেককিড়ি কবরস্থানের সামনের ফাঁকা মাঠে জানাজা শেষে নেককিড়ি কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।’
সবাই গ্রামের রাস্তা ধরে গায়ে পাঞ্জাবি জড়িয়ে মাথায় টুপি দিয়ে আসছেন সাজিদের বাড়ির দিকে। তারা একবার দেখতে চান সেই নিষ্পাপ মুখটা, যে মুখে প্রতিদিন হাসি ছিল, আজ সেখানে নিস্তব্ধতা।
জানাজার মাঠে মানুষের ঢল নামে সকালেই। গ্রামের বৃদ্ধ থেকে শুরু করে স্কুলপড়ুয়া ছেলেরা সবার চোখ ভেজা। কারও কণ্ঠে ফিসফিস, ‘আল্লাহ, এমন মৃত্যু যেন কেউ না পায়।’ সাজিদের ছোট্ট দেহটি যখন সাদা কাপড়ে মোড়ানো অবস্থায় আনা হলো, তখন কান্নার রোল পড়ে গেলো চারপাশে। তার মা-বারবার ছুটে আসতে চাইছিলেন; করছেন আহাজারি। লোকজন ধরে রেখেছিল তাকে, কিন্তু কান্না থামাতে পারেনি কেউ।
জানাজার নামাজের ইমাতি করেন কাজী মাওলানা মিজানুর রহমান। ইমাম সাহেব জানাজা শেষে যখন তাকবির দিলেন, মানুষ হাত তুললো দোয়ার ভঙ্গিতে। হাজারো কণ্ঠে দোয়া অনুষ্ঠিত হলো। সবাই মাগফিরাতের জন্য দোয়া করেন সাজিদের জন্য। একই সঙ্গে তার পরিবারকে আল্লাহ যেন ধৈর্য ধরার তৌফিক দান করেন– এমন দোয়াও সবাই করেছেন।
জানাজা শেষে সাজিদের ছোট্ট কফিনটা যখন কবরের দিকে নেওয়া হলো, তখন বাতাস যেন থেমে গেলো, শুধু শোনা যাচ্ছিল কান্নার শব্দ। কান্না করছেন স্বজনরা। একটি শিশুর জানাজায় অংশ নিয়েছে পুরো গ্রাম– এমন দৃশ্য কখনও দেখেননি গ্রামবাসী।
এর আগে গত বুধবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার পাচন্দর ইউনিয়নের কোয়েলহাট পূর্বপাড়া গ্রামে সাজিদ গভীর নলকূপের গর্তে পড়ে নিখোঁজ হয়। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ৪০ ফুট মাটি খনন করে ৩২ ঘণ্টা পর শিশুটিকে উদ্ধার করেন। এরপর তাকে উদ্ধার করে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ১৮৮০ সালের এইদিনে সিরাজগঞ্জের ধানগড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছেন মজলুম জননেতা মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী। দেশের নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানুষের মুক্তি আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া এই নেতার জীবনের বড় অংশই কেটেছে টাঙ্গাইলের সন্তোষে। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি ছিলেন কিংবদন্তী। কাগমারী সম্মেলন থেকে ফারাক্কা লং মার্চ- সবকিছুতেই তিনি রেখে গেছেন সুদূরপ্রসারী ছাপ। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ভাসানী ১৪৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করছে।
এদিন সকাল ৯ টার দিকে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) বিশ্ববিদ্যালয় পক্ষ থেকে টাঙ্গাইলের সন্তোষে ভাসানীর মাজারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।
এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মতিউর রহমান, লাইফ সায়েন্স অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. আবু জুবাইর, প্রক্টর প্রফেসর ড. মো. ইমাম হোসেন, রেজিস্ট্রার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. সাজ্জাদ ওয়াহিদসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরীফ ওসমান হাদীর ওপর দুর্বৃত্তদের গুলির ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)।
শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় বিক্ষোভ মিছিলটি ডাকসু ভবনের সামনে থেকে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ভিসি চত্বরে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়।
এসময় শিক্ষার্থীরা- ‘আমরা সবাই হাদী হব, গুলির মুখে কথা কবো’, ‘হাদীর বুকে গুলি চলে, প্রশাসন কি করে’সহ বিভিন্ন স্লোগান দিতে দেখা গেছে।
সমাবেশে হাজী মুহম্মদ মুহসিন হল সংসদের ভিপি সাদিক শিকদার বলেন, সহস্র শহিদের বিনিময়ে আমরা যে বাংলাদেশ পেয়েছি সেই বাংলাদেশ যাদের কাছে দিয়েছি সেই ইন্টেরিম সরকার জুলাই বিপ্লবীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা হাদীর ওপর গুলি করা সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার চাই। তিনি বলেন, এক ওসমান হাদীর মৃত্যু হবে, লক্ষ হাদী জন্ম নেবে। আমরা শহীদ তিতুমীরের বংশধর।
ডাকসুর স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক এস এম আল মিনহাজ বলেন, ওসমান হাদী ভাইয়ের ঠিক কানের নিচে টার্গেট করে পেশাদার শ্যূটার দিয়ে গুলি করা হয়েছে। হাদীর চিকিৎসা নিয়ে কোনও ধরণের ষড়যন্ত্র যেন না হয় তা নিয়ে আমাদের সজাগ থাকতে হবে।
ডাকসুর এজিএস মহিউদ্দিন খান বলেন, ওসমান হাদীর সংগ্রাম মূলত আমাদের সংগ্রাম। ওসমান হাদীর সংগ্রাম জুলাইয়ের সংগ্রাম। তিনি শরীফ ওসমান হাদীর দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন।
সাধারণ গ্রামীণ জনগণকে ন্যায়বিচার পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টিতে ‘ভিলেজ কোর্ট’ তথা ‘গ্রাম আদালত’ ব্যবস্থা যথেষ্ট কার্যকর ও ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে। বিরোধ নিষ্পত্তিতে কুড়িগ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই আদালত। গত এক বছরে জেলায় এই আদালতের মাধ্যমে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। যার ৪০ ভাগ বিচারপ্রার্থী নারী। বৃহস্পতিবার কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত অংশীজনদের সঙ্গে সমন্বয় সভায় এই তথ্য জানানো হয়।
স্থানীয় সরকার বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বি এম কুদরত-এ-খুদার সভাপতিত্বে এবং বাংলাদেশ গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ-তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের জেলা ব্যবস্থাপক দৌলতুন্নেছার সঞ্চালনায় সভায় জেলার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দফতরের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা অংশ নেন।
স্থানীয় অংশীজনদের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় জানানো হয়, গত এক বছরে কুড়িগ্রামের বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) গ্রাম আদালতে ৩ হাজার ৮৫ জন আবেদনকারী মামলা করেন। এর মধ্যে ২ হাজার ৮৫২টি মামলা নিষ্পত্তি করা হয়। এর মধ্যে সরাসরি ইউপিতে দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা ২ হাজার ৭৫৮। আর জেলা আদালত থেকে ৩২৭টি মামলা গ্রাম আদালতে পাঠানো হয়। বিচারপ্রার্থীদের মধ্যে ৬৫৩ জন নারী গ্রাম আদালতের মাধ্যমে বিচার পেয়েছেন যা মোট বিচারপ্রার্থীর প্রায় ৪০ ভাগ। এ ছাড়াও গত এক বছরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ ৩৪ হাজার ৬২০ টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে।
তবে প্রচারণার ঘাটতি এবং ইউনিয়ন পরিষদের অসহযোগিতার কারণে এই ব্যবস্থা চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে সভায় মত প্রকাশ করেন অংশীজনরা। বর্তমান পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং মামলার আসামি হয়ে পলাতক থাকায় বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যানদের অনুপস্থিতিতে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম ঝিমিয়ে পড়েছে। এ ছাড়াও গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর একটি বৃহৎ অংশ এখনও এই আদালতের কার্যক্রম, পরিধি এবং সুফল সম্পর্কে অবগত নয়। ফলে গ্রাম আদালতের লক্ষ্য অর্জন বিলম্বিত হচ্ছে। আদালতের কার্যক্রম আরও বেগবান ও ফলপ্রসূ করতে সভায় মতামত তুলে ধরা হয়।
অংশীজনরা মতামত তুলে ধরে বলেন, ‘প্রচলিত আদালতে মামলা জট কমিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তিতে গ্রাম আদালত অসাধারণ ও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। এই আদালতের কার্যক্রম বেগবান করতে আদালতের সদস্যদের জন্য সম্মানীর ব্যবস্থা রাখা, গ্রাম আদালত যেসব অভিযোগের বিরোধ নিষ্পতি করতে পারে সেসব অভিযোগ থানায় এবং আদালতে না নিয়ে গ্রাম আদালতে পাঠানো, বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষকে নিয়মিত তাগাদা দেওয়াসহ আদালতের কার্যপরিধি ও সুবিধা নিয়ে ব্যাপক প্রচারণার ব্যবস্থা করতে হবে।’
উল্লেখ্য, স্থানীয় সরকারের সর্বনিম্ন কাঠামো ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি পদ্ধতির মাধ্যমে গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর ছোটখাটো বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য ‘গ্রাম আদালত অর্ডিনেন্স ১৯৭৬’-এর বিধানের আলোকে গ্রাম আদালত প্রতিষ্ঠিত হয়। গ্রাম আদালত আইন, ২০০৬ অনুযায়ী স্থানীয়ভাবে কতিপয় ফৌজদারি ও দেওয়ানী বিরোধের সহজ ও দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য ইউনিয়ন পরিষদে গ্রাম আদালত অনধিক তিন লাখ টাকা মূল্যমানের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে পারে। এই আদালতে আইনজীবী নিয়োগের বিধান নেই।
এই সমস্যার সমাধানকল্পেই স্থানীয় সরকার বিভাগ ও ইউএনডিপি মিলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগীতায় গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, বিশেষ করে নারী, ক্ষুদ্র জাতিসত্তা ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সুবিচার প্রাপ্তিতে কাজ করছে অ্যাক্টিভেটিং ভিলেজ কোর্টস অব বাংলাদেশ তথা গ্রাম আদালত প্রকল্প। ২০০৯ সালে ইউএনডিপির সহায়তায় সরকার বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির এই ব্যবস্থাটি সারা দেশে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয়। স্থানীয় সরকার বিভাগের নেতৃত্বে পরিচালিত প্রকল্পটি বর্তমানে তৃতীয় পর্যায়ে রয়েছে। এতে আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
বগুড়ায় আদালত হাজতখানা থেকে পালিয়ে যাওয়া আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে আদালতে কর্মরত সাত পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালত পুলিশের পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম।
এর আগে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বগুড়ার চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় হাতকড়া খুলে পালিয়ে যায় পকেটমার শাহীন ওরফে মিরপুর (১৯)। শাহীন শহরতলীর সাবগ্রাম (চানপুর) এলাকার নুর আলমের ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানায়, বুধবার রাত ৮টার দিকে শহরের থানারোড এলাকায় পকেটমারার সময় স্থানীয়রা তাকে আটক করে মারধর করে। খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ তাকে হেফাজতে নেয়। ভুক্তভোগীরা কেউ লিখিত অভিযোগ না করায় বৃহস্পতিবার তাকে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। জামিন না হওয়ায় আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয় এবং তাকে আদালত হাজতখানায় রাখা হয়। সন্ধ্যায় প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় কৌশলে হাতকড়া খুলে পুলিশের সামনেই দৌড়ে পালিয়ে যায় শাহীন।
এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে হাজতখানার ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) ইব্রাহীম হোসেন, সহকারী টাউন উপপরিদর্শক (এটিএসআই) মাসুদ রানা, জাহাঙ্গীর আলম, জাহাঙ্গীর হোসেন এবং কনস্টেবল আব্দুল জলিল, শহীন মিয়া ও গোলাম মোস্তফাকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ইনচার্জ ইকবাল বাহার জানান, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে শহরতলীর সাবগ্রাম এলাকা থেকে শাহীন ওরফে মিরপুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান এই কর্মকর্তা।
দেশের উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলেছে। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এর আগে বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তেঁতুলিয়া উপজেলাসহ জেলার আশপাশের এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মত বয়ে চলেছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এর আগে সপ্তাহ জুড়ে ১০ এর ঘরেই ছিল সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। তবে দিনের তাপমাত্রা ছিল ২৬ দশমিক ৮ ডিগ্রি।
এদিকে ভোরের দিকেই সূর্যের মুখ দেখা গেলেও হিমালয় থেকে বেয়ে আসা বাতাসের কারণে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে দেখা গেছে স্থানীয়দের। রাতের তাপমাত্রা কমে দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহের ফলে শীতের প্রকোপ আরও বৃদ্ধি পেয়েছে।
জানা যায়, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ঘনকুয়াশা নেই। হালকা কুয়াশার সঙ্গে উত্তরের হিমশীতল বাতাসে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। তবে অন্য দিনের মতো বৃহস্পতিবারও ভোরের দিকেই সূর্যের দেখা মিলে। সকালে ঝলমলে রোদ ছড়িয়ে পরলে কমতে থাকে শীতের তীব্রতা। শৈত্যপ্রবাহের কারণে প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে উত্তরের হিমেল বাতাস আর হালকা কুয়াশার কারণে কনকনে শীত অনুভূত হয়।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, তেঁতুলিয়া এবং এর আশেপাশের এলাকায় দ্বিতীয় দিনের মতো মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে চলছে। তাপমাত্রা সামান্য বেড়ে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়। বৃহস্পতিবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ৮ থেকে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি জানান, আরও ২ থেকে ১ দিন মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
চাঁদপুরের বড়স্টেশন মাছঘাটে ফের আকাশছোঁয়া ইলিশের দাম। শুক্রবার (১২ ডিসেম্বর) ছুটির দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঘাটে আসা ক্রেতারা ইলিশের দাম শুনে হতাশ হয়ে খালি হাতে ফিরছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরবরাহ কমে যাওয়ায় বাজারে ইলিশের দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে।
ঘাট ঘুরে দেখা গেছে, এক কেজি ওজনের একটি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৪ হাজার টাকা থেকে ৪ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে। এদিকে ক্রেতাদের অভিযোগ, দাম অতিরিক্ত বেশি রাখায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে ইলিশ।
ঢাকা থেকে বড়স্টেশন মাছঘাটে আসা ক্রেতা ফাহিম হাসান ও নুর উদ্দিন বলেন, সাধারণ বাজারদরের সঙ্গে এই দামের কোনো মিল নেই। অনেকেই ধারণা করছিলেন, ছুটির দিনে সরবরাহ বাড়লে দাম কিছুটা কমবে, কিন্তু বাস্তবে হয়েছে উল্টো ইলিশ আরও দুর্লভ ও দাম আরও বেশি। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এক-দেড় মণের বেশি ইলিশ সরবরাহ হয়নি।
ইলিশ বিক্রেতা সম্রাট বলেন, ইলিশ মৌসুম না থাকায় নদীতে ইলিশ কম ধরা পড়ছে। এর জন্য বাজারে সরবরাহ সংকট তৈরি হয়েছে। দাম বাড়ার কারণে বিক্রি কমে গেছে। সারাদিন মাত্র ২-৩ পিস বড় ইলিশ বিক্রি হয়। এক কেজি ওজনের ইলিশ ৪ হাজারের ওপরে বিক্রি হয়। আর তার নিচেরগুলো ৩ হাজার ৫০০ থেকে, ৩ হাজার ৭০০ টাকা।
উদ্যোক্তা ইকবাল বাহার বলেন, এই বছরে ইলিশের সরবরাহ খুম কম হয়েছে। শুরু থেকে দাম বেড়েছে, যা আর কমেনি। এখন রেকর্ড দাম ইলিশের। দাম দিয়ে সবার কেনার সক্ষমতা নেই। ক্রেতারা ঘাটে এসেও ইলিশ কিনতে পারছেন না। চাঁদপুরে পদ্মা-মেঘনার তাজা ইলিশ এখন নেই বললেই চলে। আবার মৌসুম শুরু হলে দাম কমতে পারে।