শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪

লক্ষ্মীপুরে যুবলীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা

প্রতীকী ছবি
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত : ১ অক্টোবর, ২০২২ ০৯:২১

লক্ষ্মীপুর সদরে সন্ত্রাসীদের গুলিতে আলাউদ্দিন পাটওয়ারী নামের এক যুবলীগ নেতা নিহত হয়েছেন। গতকাল শুক্রবার রাত ১০ টার দিকে উপজেলার বশিকপুরের পদ্মাদীঘির পাড়ে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আলাউদ্দিন বশিকপুর ইউনিয়ন যুবলীগের সহসভাপতি ছিলেন। তিনি রশিদপুর এলাকার সাদেক পাটওয়ারীর ছেলে।

আলাউদ্দিনের বিরুদ্ধে চন্দ্রগঞ্জ ও সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতিসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সে পুলিশের তালিকাভুক্ত শীর্ষ সন্ত্রাসী বশিকপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম জিহাদী বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হিসেবে পরিচিত ছিল।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০ টার দিকে সদর উপজেলার বশিকপুর এলাকার পদ্মা দিঘীরপাড় পাড়ে কালভার্টের উপর বসে মোবাইলে কথা বলছিলেন আলাউদ্দিন। হঠাৎ ৫-৬ জনের একদল সন্ত্রাসী মুখোশ পরে এসে তাকে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। পরে আলাউদ্দিনকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এলাকায় চিহিৃত সন্ত্রাসীদের দুপক্ষের আধিপত্য বিস্তার, অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও ভাগবাটোয়ারাকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করছে পুলিশ ও স্থানীয়রা।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে পুলিশ সুপার মো. মাহফুজ্জামান আশরাফ বলেন, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের চিহিৃত করে গ্রেপ্তার করা হবে।


চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি

আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৬:১৬
চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

চুয়াডাঙ্গায় অব্যাহত রয়েছে অতি তীব্র তাপদাহ। এতে ওষ্ঠাগত হয়ে পড়েছে এখানকার মানুষের জনজীবন। গরমে অস্বস্তি বেড়েছে কয়েকগুণ।

চলতি মৌসুমে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভাঙলো চুয়াডাঙ্গা। আজ শুক্রবার বিকেলে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে জেলা ও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

গরমে একটু স্বস্তি পেতে গাছের ছাঁয়ায় আশ্রয় নিচ্ছে মানুষ। কেউ আবার পান করছেন ফুটপাতের অস্বাস্থ্যকর পানীয়। তীব্র গরমে জেলার হাসপাতালগুলোতে বাড়ছে গরমজনিত রোগীর সংখ্যা। চলমান দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে কৃষিকাজ। পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় ব্যাহত হচ্ছে সেচ কার্যক্রমও। নষ্ট হচ্ছে ধান, আম, লিচু ও কলাসহ মাঠের অন্যান্য ফসল।

চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার তালতলা গ্রামের কৃষক আবু তালেব বলেন, ‘এই তাপে মাঠে দাঁড়ানো যাচ্ছে না। ভ্যাপসা গরমে কৃষি কাজ করা যাচ্ছে না। ধানের জমি শুকিয়ে যাচ্ছে। ধানে বেশি সেচ লাগছে। কিন্তু সেচ পাম্পে ঠিকমত পানিও উঠছে না।’ চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, ‘গতকাল থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলার উপর দিয়ে অতি তীব্র তাপদাহ অব্যাহত রয়েছে। আগামী তিন দিন এমন পরিস্থিতি থাকতে পারে।’

এদিকে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের দু'এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে এবং সেই সঙ্গে কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলা বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে সংস্থাটি।

এতে আরও বলা হয়, দেশের অন্যত্র অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে। এসময়ে সারাদেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ করতে পারে।

এছাড়া, চুয়াডাঙ্গা ও যশোর জেলাসমূহের ওপর দিয়ে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, দিনাজপুর ও নীলফামারী জেলাসহ খুলনা বিভাগের অন্যান্য জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং ঢাকা, মাদারীপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, বগুড়া, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, কুড়িগ্রাম, পঞ্চগড়, ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারী ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।


মানিকগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানের চাপায় দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি

মানিকগঞ্জের সাটুরিয়ায় তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে কাভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই সবজি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার সকালে সাটুরিয়া উপজেলার ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ডে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার কাটিগ্রাম এলাকার মৃত সাইজুদ্দিনের ছেলে আব্দুস সালাম (৫০) এবং একই এলাকার আব্দুস সামাদের ছেলে ছানোয়ার হোসেন (৪৫)। নিতরা স্থানীয় কাটিগ্রাম বাজারে সবজি ব্যবসা করতেন।

হাইওয়ে পুলিশ জানান, সকালে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর বন্দর আড়াৎ থেকে চাষীদের কাছ থেকে সবজি কিনে তিন চাকার ভ্যানের মাধ্যমে কাটিগ্রাম যাচ্ছিলেন ব্যবসায়ী আব্দুস সালাম ও ছানোয়ার হোসেন। কিন্তু ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গোলড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পৌঁছালে পাটুরিয়াগামী একটি কাভার্ড ভ্যান ওভারটেক করতে গিয়ে ওই তিন চাকার ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই আব্দুস সালাম নিহত হন এবং গুরুতর অবস্থায় ছানোয়ার হোসেনকে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

গোলড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুখেন্দু বসু জানান, দুর্ঘটনায় নিহতদের পরিবারের সদস্যকে খবর দেওয়া হয়। নিহতদের একজনের মরদেহ সদর হাসপাতালে এবং অপরজনের মরদেহ গোলড়া থানায় রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনার পর কাভার্ড ভ্যানের চালক ও হেলপার পালিয়ে গেলেও কাভার্ড ভ্যানটি জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় গোলড়া থানায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলেও ওসি জানান।


পাবনায় অগ্রণী ব্যাংক থেকে ১০ কোটি ১৩ লাখ টাকা উধাও, আটক ৩ কর্মকর্তা

আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১৩:০৫
পাবনা প্রতিনিধি

পাবনার সাঁথিয়ায় অগ্রণী ব্যাংকের কাশিনাথপুর শাখার ভোল্ট থেকে ১০ কোটি ১৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৩শ’ ৭৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ওই ব্যাংকের প্রধান তিন কর্মকর্তাকে আটক করেছে পুলিশ।

গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে অগ্রনী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। দিনভর নানা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাতে তাদেরকে সাঁথিয়া থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।

আটককৃতরা হলেন- সাঁথিয়া উপজেলার কাশিনাথপুর এলাকার মৃত জান বক্সের ছেলে ও অগ্রণী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখার প্রিন্সিপ্যাল অফিসার আবু জাফর, ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম তার বাড়ী সুজানগর দুর্গাপুর গ্রামে এবং ব্যাংকের ক্যাশিয়ার সৃব্রত চক্রবর্তী বেড়া উপজেলার নতুন ভারেঙ্গা গ্রামের মৃত শুশীল চক্রবর্তীর ছেলে। টাকা আত্মসাতের কথা স্বীকার করেছেন ওই শাখার ক্যাশিয়ার সুব্রত চক্রবর্তী।

সাঁথিয়া থানা ও অগ্রনী ব্যাংক সুত্রে জানা গেছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী বিভাগীয় ও পাবনা আঞ্চলিক শাখা থেকে ৫ জন কর্মকর্তা বুহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে আকস্মিক অডিটে যান অগ্রনী ব্যাংক কাশিনাথপুর শাখায়। অডিট শেষে সেখানে ১০ কোটি ১৩ লক্ষ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকা আর্থিক অনিয়ম দেখতে পান। পরে ওই অডিট কর্মকর্তা সাঁথিয়া থানাকে অবহিত করলে পুলিশ অভিযুক্ত তিনজনকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় অগ্রনী ব্যাংক পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপমহাব্যবস্থাপক রেজাউল শরীফ বাদী হয়ে সাঁথিয়া থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন জানান, আটককৃতদের ৫৪ ধারা মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শুক্রবার আদালতে প্রেরণ করা হবে। তিনি আরও বলেন, অর্থ আত্মসাৎ ও অন্যান্য বিষয়গুলো দুদক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।


ভৈরবে ধানের মোকামে ক্রেতা কম, দুশ্চিন্তায় বিক্রেতারা

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:৫১
কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি

বৈশাখের নতুন ধানে ভরপুর কিশোরগঞ্জ ভৈরবের মোকাম। তবে বাজারে ক্রেতা কম থাকায় দুশ্চিন্তায় ধান বিক্রেতারা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে ভৈরবের মোকামে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, একাধিক ধানবোঝাই নৌকা ঘাটে নোঙ্গর করা। সবকটি নৌকা হাওর থেকে এসেছে। শ্রমিকরা নৌকা থেকে ধান খালাস করে ঘাটে স্তূপ আকারে বিক্রির জন্য সাজিয়ে রাখছেন। এসব ধান ঘাটেই কেনাবেচা হয়ে থাকে।

হবিগঞ্জের আজমেরিগঞ্জ শাহ হোসেন মাঝি ধানবোঝাই নৌকা নিয়ে ভৈরব ঘাটে এসেছেন। তিনি বলেন, ‘সকাল ১০টার দিকে ২ হাজার ৪০০ মণ বৈশাখী ধান নিয়ে আমরা ভৈরব মোকামে এসেছি। এ বছর হাওরে ধানের ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় ভালো হয়েছে। তাই কৃষকরা পাইকারদের কাছে ধান বিক্রি করেছেন। তবে এ বছর ধানের দাম খুব কম। তাই ফসল বেশি পেলেও দাম না পাওয়ায় মন ভালো নেই কৃষকদের।’

ভৈরব মোকামের আব্দুস ছাত্তার মিয়া অ্যান্ড সন্স একটি প্রতিষ্ঠিত ধানের আড়ত। এই আড়তের প্রতিনিধিরা ঘাটে নৌকা বোঝায় ধান বিক্রির জন্য ঘাটে স্তূপ করে সাজিয়ে রাখছেন। এ সময় আব্দুস ছাত্তার বলেন, ‘হাওর এলাকায় এখন পুরোদমে ধান কাটা শুরু হয়েছে। এসব এলাকা থেকে নৌকাযোগে বিক্রির জন্য পর্যাপ্ত ধান মোকামে আসছে। তবে মোকামে খরিদ্দার কম থাকায় ধান বিক্রি করতে পারছি না। সরকার যদি কৃষক পর্যায় থেকে ধান কেনা শুরু করে তাহলে কৃষক ও আমরা ব্যবসায়ীরা ধানের নায্য দাম পাব।’

বর্তমানে ধানের বাজারে মোটা ধান প্রতি মণ ৭৮০-৮০০ টাকা ও চিকন ধান প্রতি মণ ৯০০-৯২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

আজমেরিগঞ্জের কাকাইলছেও ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের ধানের ব্যাপারী রফিক উদ্দিন বলেন, ‘বাজারে বাহির এলাকার খরিদ্দার খুব কম। তাই নতুন ধান বিক্রি করতে পারছি না। সরকারের দাম নির্ধারণের আশায় মিল মালিকরা বসে আছেন। যখন দাম নির্ধারণ করবে তখনই ক্রেতাদের আগমন বাড়বে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ জেলার হাওরে এবার বোরো ধানের ভালো ফলন হয়েছে। গত বছর চিটায় ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন কৃষকরা। বিশেষ করে গত বছর চিটার কারণে বিআর-২৮ ধান অনেক কৃষক গোলায় তুলতে পারেননি।

এবার বৈশাখ মাসের কয়েক দিন আগ থেকে হাওরে মোটা জাতের ধান কাটা শুরু হয়। মোটা জাতের ধানের বিঘাপ্রতি গড় ফলন ২২ মণ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত এই ধান বিঘায় ১৮ মণের বেশি উৎপাদন হয় না। উৎপাদন বাড়ার মূল কারণ ধানের পরিপূর্ণ পুষ্টতা। ধানের ব্যাপারীরা হাওর এলাকার কৃষকের কাছ থেকে মণপ্রতি ৮০০ টাকা দরে কিনছেন।

ভৈরব চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি হুমায়ুন কবীর বলেন, নতুন ধান প্রতি মণ ৭৮০-৮০০ টাকা দরে বিক্রি করে কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন না। কৃষকরা ধান উৎপাদনে যে ব্যয় করেছেন, তা পুষিয়ে উঠতে পারবেন না। যদিও কৃষকরা বর্তমান বাজারে ভেজা ধান বিক্রি করছেন। যদি শুকনা ধান বাজারে আসে, তাহলে ধানের দাম বাড়বে বলে তিনি আশা করছেন।


লালমনিরহাট সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি রাখাল নিহত

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:৪৯
দৈনিক বাংলা ডেস্ক

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে আবুল কালাম ডাকু (২৫) নামে এক বাংলাদেশি রাখাল নিহত হবার ঘটনা ঘটেছে।

আজ শুক্রবার ভোরে উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সীমান্ত ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব-পিলারের ওপারে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবু সাইদ।

নিহত আবুল কালাম ডাকু উপজেলার শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকার মৃত অপির উদ্দিনের ছেলে।

নিহতের পরিবার জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে কয়েকজন গরু পারাপারকারী রাখালসহ শ্রীরামপুর ইউনিয়নের পকেট সীমান্তের ৮৪৮ নম্বর মেইন পিলারের ৯ নম্বর সাব-পিলারের ওপারে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহযোগিতায় গরু আনতে যান আবুল কালাম ডাকু।

এ সময় বিএসএফের ডোরাডাবরী ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা চোরাকারবারিদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েন। এতে গুরুতর আহত হন আবুল কালাম। তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে তার সঙ্গীরা। পরে তাকে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

৬১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের ঝালাংগী ক্যাম্পের ভারপ্রাপ্ত নায়েব সুবেদার নুরুল আমিন বলেন, ‘এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে কড়া প্রতিবাদপত্র পাঠিয়ে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে।’


চুয়েট শিক্ষার্থীদের আন্দোলন স্থগিত, ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
ইউএনবি

চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন কর্মসূচি স্থগিত করা হয়েছে। বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় গত সোমবার মোটরসাইকেল আরোহী চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। চতুর্থ দিনের মতো গতকাল বৃহস্পতিবারও ক্যাম্পাসে নিহত শিক্ষার্থীদের সহপাঠীরা আন্দোলন পালন করার পাশাপাশি বিক্ষোভ কর্মসূচি ও ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে। তবে বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে শিক্ষর্থীদের বৈঠক শেষে আন্দোলন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানান শিক্ষার্থীরা। রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আন্দোলনকারী ২০ শিক্ষার্থী অংশ নেন।

বৈঠক শেষে অবরোধ তুলে নেওয়া হলে রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে যান চলাচল শুরু হয়। কর্মসূচি স্থগিত করার পর শিক্ষার্থীরা ক্লাসে ফেরার সিদ্ধান্ত নেন। রাতে চুয়েট প্রশাসনের পক্ষ থেকে রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এক বিবৃতিতে বলেন, একাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণার ব্যাপারটি পুনর্বিবেচনা করার জন্য শুক্রবার অনুষ্ঠিতব্য সিন্ডিকেট সভায় সিদ্ধান্ত হবে। ততক্ষণ হলগুলোতে শিক্ষার্থীরা থাকতে পারবেন।

এর আগে, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য চুয়েট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার একাডেমিক কাউন্সিলের সভা শেষে বিকাল ৪টার দিকে অধ্যাপক ড. শেখ মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বন্ধের বিষয়টি জানানো হয়।

একই সঙ্গে বিকাল ৫টার মধ্যে ছাত্র ও শুক্রবার সকাল ৯টার মধ্যে ছাত্রীদের হলত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখান করে হল না ছাড়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে তারা শাহ আমানত পরিবহনের আটকে রাখা বাসে আগুন ধরিয়ে দেন। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে তার কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখেন।

উল্লেখ্য, গত সোমবার বিকালে কাপ্তাই সড়কে আমানত পরিবহনের একটি বাসের ধাক্কায় চুয়েটের ২ শিক্ষার্থী নিহত ও এক শিক্ষার্থী আহত হণ। ঘটনার প্রতিবাদে ও ১০ দফা দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ, গাড়ি ভাঙচুর ও গাড়িতে আগুন দেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


গাজীপুরে স্বামী স্ত্রীর আত্মহত্যা, পাশে স্বামীর লেখা চিরকুট 

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:২৫
শ্রীপুর (গাজীপুর)প্রতিনিধি

‘মা বাবা আমাকে মাফ করে দিও। আমি তোমাদের কাছে থাকতে পারলাম না। আমার জান আমার জন্য ফাঁসিতে ঝুলেছে। তাই আমি থাকতে পারলাম না, আমি কাউকে দোষারোপ করিনা। কারো কোন দোষ নাই। আমার জান আমার জন্য অপেক্ষা করতেছে। মা আমার পাশে রোকেয়ার কবর দিও। মা আমি জানি না আমার জান কেন ফাঁসি দিল। তার জন্য সম্পুর্ন আমি দায় নিলাম। এতে কারো কোন দোষ নাই। স্ত্রী আত্মহত্যার পর সাদা কাগজে চিরকুট লিখে আত্নহত্যা করেছে স্বামী।’

এটি স্বামীর লেখা চিরকুট। গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি বহুতল ভবনের ফ্ল্যাট থেকে স্বামী-স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এসময় টেবিলের উপর থেকে উপরের লেখা চিরকুটটি উদ্ধার করা হয়। চিরকুট থেকে বোঝা যায়- প্রথমে স্ত্রীর আত্মহত্যা করার পর স্বামী পরে আত্মহত্যা করেন।

শুক্রবার সকালে উপজেলার মুলাইদ গ্রামের তমিজ উদ্দিন খান ফারুকের বহুতল ভবনের নিচ তলার একটি ফ্লাট থেকে স্বামী স্ত্রীর জোড়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

নিহত মোঃ ইসরাফিল (১৭) শেরপুর জেলার ঝিনাইগাতি থানান হলদি গ্রামের মোঃ মফিজুল হকের ছেলে ও মোছাঃ রোকেয়া খাতুন (১৫) ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ থানার পস্তারি গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে।

প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে গত ৭/৮ মাস আগে তারা পরিবারের অমতে বিয়ে করেন। তারা দুজনই ওই ফ্ল্যাট বাসায় ভাড়া থাকতো। ইসরাফিল স্থানীয় একটি ওয়ার্কসপে ও রোকেয়া স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করতেন।

নিহত রোকেয়ার ভাই মোঃ বোরহান উদ্দিন জানান, সাত মাস আগে পরিবারের অমতে তারা বিয়ে সম্পর্কে জড়িয়েছিল। তাদের সম্পর্ক ভালই চলছিল। সম্প্রতি ইসরাফিল তার বাবা-মায়ের সঙ্গে ঝগড়া করে বাড়ি থেকে চলে গিয়েছিল। পরে গতকাল বৃহস্পতিবার তাদের বুঝিয়ে বাসায় আনা হয়। আর আজ সকালে তাদের মৃত্যুর খবর পেলো।

নিহত ইসরাফিলের বাবা মফিজুল হক জানান, পাশাপাশি ফ্লাটে বসবাস করতেন তারা। পরিবারের রান্নার কাজ তারা ইসরাফিলের ফ্লাটে করতেন। শুক্রবার সকালে ইসরাফিলের ফ্লাটের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে ভেতরে যান। ভেতরে গিয়ে ইসরাফিলকে ওড়নায় পেঁচানো ঝুলন্ত অবস্থায় এবং রোকেয়ার মরদেহ খাটের উপর বিছানায় দেখতে পান। মরদেহের পাশের টেবিল থেকে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান, খবর পেয়ে স্বামী স্ত্রী মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে প্রথমে স্ত্রী আত্মহত্যা করে। স্ত্রী আত্মহত্যার বিষয়টি স্বামী সইতে না পেরে তিনি আত্মহত্যা করেন। এবিষয়ে গাজীপুর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট আসার পরে আত্মহত্যা নাকি হত্যা বুঝা যাবে। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।


টেকনাফে আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে চলছে ভাড়াবাণিজ্য

ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ১০:৪৫
রহমত উল্লাহ, টেকনাফ (কক্সবাজার)

মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার একটি পৌরসভা ও পাঁচটি ইউনিয়নের মোট ৫২৩ জন ভূমি ও গৃহহীনদের মধ্যে ঘর বিতরণ করা হয়। মাথা গোঁজার স্থায়ী একটি আবাসন পেয়ে নতুন জীবন শুরু করেন এসব ভূমিহীন অসহায় মানুষ।

তবে কিছুদিন যেতে না যেতেই এসব আশ্রয়ণের ঘর ভাড়া দিয়ে শুরু হয় রমরমা বাণিজ্য। দুর্নীতি ও প্রভাব খাটিয়ে অনেক সচ্ছল পরিবারের লোকজন এই ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। তারা এসব ঘরে বসবাস না করে ভাড়া দিচ্ছেন। গত বুধবার সরেজমিনে গিয়ে বিষয়টির সত্যতা মেলে।

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের নয়াপাড়ার শেষ মাথায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের তালিকায় ৫ নম্বর সিরিয়ালে রয়েছে নয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা কামালের ঘর। ওই গ্রামেই কামালের টিনশেড ঘর রয়েছে। তবুও তিনি আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর বরাদ্দ পেয়েছেন। বরাদ্দ পাওয়া ঘর কামাল এখন ভাড়া দিয়েছেন অন্যের কাছে। আশ্রয়ণের বাসিন্দাদের অভিযোগ, সেখানকার মোট ৭টি ঘর ভাড়া দেওয়া হয়েছে অন্যের কাছে। কামাল ২ লাখ টাকার বিনিময়ে তার ঘরটি বিক্রি করেন রাশেদার কাছে। পরে জানাজানি হলে টাকা ফেরত দিয়ে দিয়েছেন বলে জানান বসবাসকারীরা।

টেকনাফ সাবরাং নয়াপাড়ার (পুরান পাড়ার) আশ্রয়ণের ঘরে থাকা এক নারী (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) বলেন, ‘আমাদের ১০টি ঘরের মধ্যে তিনটি ঘরে উপকারভোগীরা বসবাস করে। বাকি ৭টি ঘরে কেউ থাকে না। বর্তমানে সেই ৭টি ঘরে তালা ঝুলিয়ে রাখলেও বরাদ্দপ্রাপ্তরা নতুন ভাড়াটিয়া খোঁজ করছেন।’ এ ব্যাপারে কামাল বলেন, ‘এখন ঘর বিক্রি করব না এবং ভাড়াও দেব না।’ এই ঘর বিক্রি করেছিলেন বলে স্বীকার করেন তিনি।

টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা মুফিত কামাল বলেন, প্রায় ৩০ বছর আগে সরকার টিনের গুচ্ছগ্রাম দিয়েছিলেন। তার প্রতিটি ঘরেই মানুষ থাকে। বর্তমানে ওইসব ঘর জরাজীর্ণ হয়ে গেছে। বৃষ্টি হলেই নির্ঘুম রাত কাটাতে হয়। তাদের পাশেই প্রধানমন্ত্রীর উপহারের পাকা ঘর রয়েছে। অথচ অনেকে বরাদ্দ পাওয়া ঘরে থাকছেন না। সেই ঘরগুলো সবসময় তালাবদ্ধ থাকে। সেগুলো যদি গুচ্ছগ্রামের জরাজীর্ণ ঘরে থাকা বাসিন্দাদের মধ্যে বণ্টন করে দেওয়া হয় তাহলে বেঁচে যান অনেকে।

স্থানীয় কলেজপড়ুয়া ছাত্র মো. শাহ্ আলম বলেন, ‘যাদের কাছে ঘরের প্রয়োজন নেই তারাই এসব ঘর বরাদ্দ নিয়েছেন। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা তাদের কাছের লোক এবং আত্মীয়দের ঘর দিয়েছেন। তাই সিংহভাগ ঘর তালাবদ্ধ থাকছে। প্রশাসনের কাউকে কোনোদিন আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব ঘর তদারকি করতেও দেখিনি।’

এ বিষয়ে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী দৈনিক বাংলাকে জানান, ‘নিজের নামের বরাদ্দ ঘর ভাড়া দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। তবু আমরা খোঁজ নিয়ে দেখছি। বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর কেউ বিক্রি অথবা ভাড়া দিয়ে থাকলে যাচাই-বাছাই করে তাদের ঘর বাতিল করা হবে।


হবিগঞ্জে টোল আদায় নিয়ে দুই পক্ষের সংঘর্ষ, আহত ২০

আপডেটেড ২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১৮:৫৭
মাধবপুর (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি

হবিগঞ্জের মাধবপুরে একটি সিএনজি স্ট্যান্ডের চাদা তোলা নিয়ে শ্রমিক ও পৌরসভার কাউন্সিলরদের মধ্য ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কাউন্সিলরসহ উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মাধবপুর কাটিয়ারা গাবতলি সিএনজি স্ট্যান্ডে এ ঘটনা ঘটে।

মাধবপুর পৌরসভার সচিব আমিনুল ইসলাম জানান, নীতিমালা অনুযায়ী বৃহস্পতিবার সকালে মাধবপুর পৌর কর্তৃপক্ষ টোল আদায় করছিল। দুপুরের দিকে ৫০ থেকে ৬০ জন শ্রমিক দা-লাঠি নিয়ে পৌরসভার কর্মচারী ও কাউন্সিলরদের ওপর আক্রমণ করে। এতে কাউন্সিলর জহিরুল ইসলাম, কাউন্সিলর হাকিম, কর্মচারী উৎপল সাহা ও সুহেল মিয়াসহ ১০ থেকে ১২ জন আহত হন।

কাটিয়ারা গাবতলি সিএনজি স্ট্যান্ডের শ্রমিকনেতা লাকমান হাসান জানান, বৃহস্পতিবার সকালে মাধবপুর পৌরসভার মেয়রের নির্দেশে পৌরসভার লোকজন সিএনজি থেকে চাদা উত্তালন শুরু কর। এ সময় সিএনজিচালকরা চাদা দিতে অস্বীকার করলে পৌরসভার লোকজন শ্রমিকদের ওপর হামলা করে। এতে শ্রমিক চেরাগ আলী, হারুন মিয়া, কামাল মিয়া, হারিছ মিয়া, হাকিম মিয়াসহ আহত হন। এ ঘটনায় শ্রমিকরা মাধবপুর থানায় মামলা করবেন বলে জানা যায়।

মাধবপুর পৌরসভার মেয়র হাবিবুর রহমান মানিক জানান, আইন অনুযায়ী টোল আদায় করতে গিয়ে কাউন্সিলরসহ পৌরসভার কর্মচারীদর পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। পৌরসভার রাজস্বের জন্য এ টোল আদায় করা হয়। পৌরবাসীকে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত করতে সন্ত্রাসী হামলা করা হয়েছে। সন্ত্রাসী ও হামলাকারিদের বিরুদ্ধ আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার পাশপাশি থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।

মাধবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল ইসলাম খান জানান, ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অভিযোগ পেলে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবে।


নিয়োগের আগেই পাঁচধাপ ডিঙিয়ে পদোন্নতি চসিকে!

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
চট্টগ্রাম প্রতিনিধি

স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ (চাকরি) স্থায়ী হওয়ার পাঁচ মাস পূর্বেই মো. আবু তাহের নামক এক ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি দিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন (চসিক)। ইতিমধ্যে তার পদোন্নতিপত্র প্রস্তুত করে চসিকের ভারপ্রাপ্ত সচিবের টেবিলে উত্থাপন করা হয়েছে। স্বাক্ষর হলেই দু/এক দিনের মধ্যে তাকে এই পদোন্নতিপত্র দেওয়া হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।

যদিও চাকুরি বিধি অনুসারে এই পদে পদোন্নতি পেতে হলে স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ স্থায়ী হওয়ার পর পাঁচটি ধাপে অন্তত ২০ হতে ২৫ বছর চাকরিকাল অতিবাহিত হওয়া বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

তবে স্বাস্থ্য সহকারী পদে চলতি মাসের ১ তারিখ (১ এপ্রিল ২০২৪) হতে নিয়োগ পাওয়া মো. আবু তাহের এর বেলায় সরকারের এই নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি বিধির কোনো নিয়মই অনুসরণ করেনি চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিরা। এই নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির স্বাস্থ্য বিভাগের স্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারিদের মধ্যে চাপাক্ষোভ বিরাজ করছে বলে জানা গেছে।

চসিকের সংস্থাপন শাখার একাধিক কর্মকর্তা জানান, স্বাস্থ্য সহকারী পদে নিয়োগ (চাকরি) স্থায়ী হয়ে অন্তত পাঁচ বছর চাকরি করার পর সিনিয়র স্বাস্থ্য সহকারী পদে পদোন্নতি হওয়ার কথা। এই পদে শান্তি-শৃঙ্খলা মেনে পাঁচ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি পাবেন সহকারী স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে। নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শকসহ আরও কয়েকটি কোর্স সম্পন্ন করার পাশাপাশি এই পদে চাকরিকাল পাঁচ বছর অতিবাহিত হওয়ার পর স্বাস্থ্য পরিদর্শক পদে পদোন্নতি পাবেন। এরপর পাঁচ বছর অতিক্রম হলে সিনিয়র স্বাস্থ্য পরিদর্শক এবং এর আরও পাঁচ বছর পর স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতির দেওয়ার বিধান রয়েছে।

তবে চসিকের অস্থায়ী স্বাস্থ্য সহকারী মো. আবু তাহেরকে চলতি মাসের ১ তারিখ হতে (১ এপ্রিল ২০২৪) স্বাস্থ্য সহকারী পদে স্থায়ী করে নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়। যা গত এক সপ্তাহ পূর্বে তার হস্তগত হয়েছে। এই নিয়োগপত্র হাতে পাওয়ার এক সপ্তাহ অতিক্রম না হতেই এবার তাকে পাঁচ ধাপ ডিঙিয়ে স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতি দিয়ে পত্র ইস্যু করা হয়েছে।

চসিক সচিবের দপ্তরের একাধিক সূত্র জানায়, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম গত বছরের ৩ ডিসেম্বর হতে ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসা জন্য বিদেশে অবস্থান করেন। ওই সময় চসিকের প্রধান মূখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করেন সংস্থাটির সচিব খালেদ মাহমুদ। এই সময়ে তিনি সম্পূর্ণ বিধিবর্হিভুতভাবে চসিকের অস্থায়ী স্বাস্থ্য সহকারী আবু তাহেরকে সংস্থাটির স্বাস্থ্য তত্ত্বাবধায়ক পদে পদোন্নতির ফাইল অনুমোদন দেন। বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত সচিবের দায়িত্বে থাকা (প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের টেবিলে সেই পদোন্নতিপত্রটি স্বাক্ষরের অপেক্ষায় রয়েছে।

এই বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত সচিব (প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা) মোহাম্মদ নজরুল ইসলামের দপ্তরে গিয়ে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করার পরও কোনো স্বাক্ষাৎ মিলেনি। এমনকি মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও এই কর্মকর্তার কোনো সাড়া দেননি।

প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ তৌহিদুল ইসলাম বলেন, এই ধরণের কোনো ফাইল আমার টেবিলে এসেছে কিনা জানা নেই। তবে বিধি উপেক্ষা করে কোনো নিয়োগ-পদোন্নতি অন্তত আমার হাতে হবে না- এটুকু বিশ্বাস রাখতে পারেন।


ব্যারিস্টার সুমনের উদ্যোগে লোডশেডিং থেকে রক্ষা পেল ৮ লাখ মানুষ

চালু হয়েছে ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ কেন্দ্র
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
হবিগঞ্জ প্রতিনিধি

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এমপির প্রচেষ্টায় বিদ্যুতের লোডশেডিং থেকে অনেকটাই রক্ষা পেয়েছে চুনারুঘাট-মাধবপুরের প্রায় ৮ লাখ মানুষ। দুই উপজেলায় চালু হয়েছে বন্ধ থাকা ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। বিষয়টি এক ভিডিও বার্তায় নিশ্চিত করেছেন ব্যারিস্টার সুমন।

এতে করে তার সংসদীয় এলাকায় পূর্বের তুলনায় তীব্র তাপদাহের এই সময়ে লোডশেডিং অনেকটা কমেছে। আগে যেখানে ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১৫-১৬ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকতো না, আর এখন ১৬-১৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছে ওই এলাকার মানুষ। ফলে জনজীবনে ফিরেছে স্বস্তি। ব্যারিস্টার সুমন এমপির এমন উদ্যোগকে প্রশংসায় ভাসাচ্ছেন জনগণ।

রমজান মাসে বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে এমপি সুমনের কাছে সমাধান চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরব হন চুনারুঘাট-মাধবপুরবাসী। জনতার এমপি ব্যারিস্টার সুমন তাঁর সংসদীয় এলাকার জনগণের কষ্টের কথা শুনে ফেসবুকে ভিডিও বার্তায় লোডশেডিং কমানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। সমাধান না হলে তিনি মহাসমাবেশের ডাক দিবেন বলেও হুশিয়ারী দেন।

পরবর্তীতে ব্যারিস্টার সুমনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র চালুর মাধ্যমে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আনতে বাধ্য হন সংশ্লিষ্টরা। এ সুখবর দিতে গিয়ে ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ না থাকার কারণে নসরতপুর ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র এতোদিন বন্ধ ছিল। বন্ধ থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রে গ্যাস সংযোগের মাধ্যমে চালু হয়েছে। এখন আশা করা যাচ্ছে, আগের মতো এতোটা লোডশেডিং হবেনা। তিনি বলেন, যদি আবারও অসহনীয় লোডশেডিং হয়, তবে পল্লীবিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে জবাবদিহি করতে হবে জনগণের কাছে। পরিশেষে তিনি জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সচিব ও ১১ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের ইনচার্জসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।


তীব্র দাবদাহে মেহেরপুরে দেখা দিয়েছে পানি সংকট

বৃদ্ধ আব্দুর রহিম টিউবওয়েল চাপছেন; কিন্তু পানি উঠছে না। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মেহেরপুর প্রতিনিধি

ছিয়াত্তর বছর বয়সি আব্দুর রহিম, বয়সের ভারে চলাফেরা করাটাই তার পক্ষে এখন কঠিন। স্ত্রীকে হারিয়েছেন দেড় যুগ আগে। পরিবারের সদস‍্য বলতে এক ছেলে, তাও থাকেন প্রবাসে। এ অবস্থায় রান্না বান্না থেকে শুরু করে সব কিছুই করতে হয় নিজেকে। জীবন যুদ্ধে তিনি কখনো দমে যাননি। তবে এবার হার মেনেছেন টিউবওয়েলের পানির কাছে। ১৫ থেকে ১৬ বার টিউবওয়েল চাপার পরেও মিলছে না এক গ্লাস পানি। তাই পানি সংকটের কারণে গোসল থেকে শুরু করে গৃহস্থালির সব কাজ হচ্ছে ব‍্যাহত। প্রচণ্ড গরমে তাই তিনি অধিকাংশ সময় বাড়ির পাশে থাকা মসজিদে গিয়ে পানির চাহিদা পূরণ করছেন।

গৃহবধূ ছানোয়ারা খাতুনের বাড়িতেও সপ্তাহ দুয়েক ধরে টিউবওয়েলে উঠছে না পানি। প্রতিবেশীদের পরামর্শে মটর কিনে এনে টিউবওয়েলে সেট করেও মিলছে না পানি। খাওয়া থেকে ওজু, গোসল সব কিছুতেই বেগ পেতে হচ্ছে পানি সংকটের কারণে।

মেহেরপুরের গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামের হস্তচালিত টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। ফলে এলাকায় পানির সংকট চরমে পৌঁছেছে। একদিকে গৃহস্থালির কাজে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে, অন্যদিকে পর্যাপ্ত পানির অভাবে বোরো চাষ ব্যাহত হচ্ছে।

এ অঞ্চলের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বললে তারা সুপেয় পানির সংকটের কথা জানান। বিশেষ করে মুজিবনগর উপজেলার, জয়পুর, আমদহ, তারানগর, বিশ্বনাথপুর, সদর উপজেলার শালিকা, আশরাফপুর, আমদাহ, বুড়িপোতা, আলমপুর এবং গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের আমতৈল, মানিকদিয়া, কেশবনগর, শিমুলতলা, রইয়েরকান্দি, সহড়াবাড়িয়া, মিনাপাড়া, ভোলাডাঙ্গা, কুমারীডাঙ্গা কাথুলি ইউনিয়নের গাঁড়াবাড়িয়া, ধলাসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় চলতি মৌসুমের শুরু থেকেই সুপেয় পানির সংকট প্রকট।

দীর্ঘ সময় ধরে অনাবৃষ্টি, ভূ-গর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার, অপরিকল্পিতভাবে শ্যালো মেশিন দিয়ে পানি তোলা এবং পুকুর-খাল-বিল ভরাটের কারণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, গ্রীষ্মকাল শুরু না হতেই এবার পানির সংকট দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ টিউবওয়েলে পানি উঠছে না। অথচ গ্রামে সুপেয় পানির জন্য নলকূপই শেষ ভরসা। তাই যেখানে পানি পাওয়া যাচ্ছে সেখানে এলাকার গৃহবধূ ও শিশুরা জগ, কলসি ও ঘড়া নিয়ে টিউবওয়েল থেকে পানি সংগ্রহ করছেন।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের তথ্যমতে, জেলার গাংনী ও মুজিবনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সুপেয় পানির স্তর প্রতিবছর ১০ থেকে ১১ ফুট নিচে নামছে। ১০ বছর আগেও এই এলাকায় ৬০ থেকে ৭০ ফুটের মধ্যে ভূগর্ভস্থ সুপেয় পানির স্তর পাওয়া যেত। অথচ এখন পানির জন্য যেতে হয় ৩০০ ফুটেরও বেশি গভীরে। ফলে অকেজো হয়ে পড়েছে হস্তচালিত অনেক টিউবওয়েল।

জেলায় গভীর-অগভীর মিলিয়ে ৯ হাজার ৯১৩টি নলকূপ আছে। এর মধ্যে অকেজো হয়ে পড়ে আছে ২ হাজার ২৩৯টি নলকূপ।

গাংনী উপজেলার ভোলাডাঙ্গা গ্রামের পল্লি চিকিৎসক আব্দুল মতিন বলেন, ‘আমি ২০ বছর ধরে গ্রামে গ্রামে চিকিৎসা দিয়ে বেড়াই। আজ ১০ দিন ধরে আমার বাড়ির নলকূপে পানি উঠছে না। রোদের মধ‍্যে সারাদিন গ্রাম গ্রাম ঘুরে বাড়ি এসে যদি পানি না পাই তাহলে কেমন লাগে? আমি তাই মসজিদের নলকূপে গিয়ে গোসল সেরে আসি। আর গিন্নি যায় পাশের বাড়িতে। বর্ষা শুরু হলে হয়তো এর সমাধান হবে।’

একই এলাকার দিনমজুর সিরাজ বলেন, ‘সারাদিন মাঠে কাজ করি। বাড়িতে দুটি গরুও পালন করি। গরু দুটির আজ কয়দিন গা ধুয়াতে পারিনি। আবার মাঠে এক বিঘা ধানের আবাদ আছে, তাতে সেচ দিতে গিয়ে বিপদে পড়তে হচ্ছে। যেখানে দুই ঘন্টা মেশিনে পানি দিলে হয়ে যেতো। সেখানে এখন চারটা ঘণ্টা পানি দিয়েও হচ্ছে না।’

চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান বলেন, কয়েকদিন ধরেই চুয়াডাঙ্গাসহ এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাচ্ছে। এখানে মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

মেহেরপুরের জনস্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মোসলেহ উদ্দিন বলেন, সুপেয় পানির সমস্যা নিরূপণে যেসব এলাকায় সংকট সেখানে ১০টি বাড়িকে কেন্দ্র করে একটি ৯০০ ফুট গভীর নলকূপ স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে সরকার। এসব এলাকায় ৫০০টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হবে। তবে অতিবৃষ্টি ও পানির অপচয় রোধ করা না গেলে পানি সংকটের সমাধান মিলবে না।


দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে সাফারি পার্কের প্রাণীরা

গাছের ছায়ায় ঝিমুচ্ছে সিংহ। ছবি: দৈনিক বাংলা। 
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
মোতাহার খান, শ্রীপুর (গাজীপুর)

পার্কজুড়ে সুনসান নীরবতা। প্রচণ্ড দাবদাহে দর্শনার্থীর সংখ্যা একেবারে নেই বললেই চলে। পার্কের দায়িত্বপ্রাপ্তরা অলস সময় কাটাচ্ছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে এমনটাই দেখা গেছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের সকল ইউনিটে।

কোর সাফারী পার্কে ঘুরে দেখা যায়, টানা তীব্র দাবদাহে হাঁসফাঁস করছে গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্কের প্রাণীকুল। পার্কের অপেক্ষাকৃত ছায়া যুক্ত স্থানে থাকতে চাচ্ছে প্রাণীরা। টানা খরায় পার্কের লেকগুলোতে কমে গেছে পানি। কর্তৃপক্ষ পানির সরবরাহ বাড়াতে চালাচ্ছেন প্রানান্ত চেষ্টা। আশার কথা তীব্র দাবদাহে দেশি-বিদেশি কোনো পশু পাখি অসুস্থ হয়ে পড়েনি। প্রাণীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরিচর্যা করছে কর্তৃপক্ষ। দাবদাহ থেকে প্রাণীদের রক্ষা করতে নেওয়া হচ্ছে বাড়তি যত্ন। পর্যাপ্ত পানির জন্য স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে পাম্প।

পার্কের আফ্রিকান সাফারি ঘুরে দেখা গেছে, জেব্রার পাল একটু ছায়ার জন্য দৌড়াচ্ছে। দূরে বনের গভীরে ঠাঁই দাড়িয়ে আছে নীল গাই, গয়াল, ওয়াইলবিস্ট, হরিণের পাল। শাবক হরিণের জন্য দেওয়া হয়েছে পানির চৌবাচ্চাসহ বিশেষ ইনক্লুজার। সেডের ছায়ায় খাবার সামনে রেখে হাঁপাচ্ছে ভাল্লুক।

রয়েল বেঙ্গল বাঘের বেষ্টনীর খালে কমে গেছে পানি। বেষ্টনীর যে জায়গায় ছায়া আছে বাঘ ছুটছে সেখানে। কখনোবা খালের পানিতে নিজেকে শান্ত করার চেষ্টাও করছে। আফ্রিকান সিংহ তীব্র রোদে ক্লান্ত হয়ে ঝিমাচ্ছে। বিশেষ গাড়িতে খুব কাছে গিয়ে দেখা গেছে সিংহ ছায়া যুক্ত গাছের নিচে আয়েশে ঝিমাচ্ছে। রোদের তীব্রতায় ময়ুর গুলো গাছের ছায়ায় পাখনা মেলে আছে। জলহস্তির বেষ্টনীতে কমে গেছে পানি। অল্প পানিতে দুটি জলহস্তি নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করছে। উট পাখিগুলো সেডের ভেতর সামান্য ছায়ায় বসে থাকতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড খরা আর দাবদাহে পার্কের প্রাকৃতিক জলাধারগুলোতে কমে গেছে পানি।

পার্ক ঘুরে দেখা গেছে কর্তৃপক্ষ নিয়েছেন বিশেষ ব্যবস্থা। জলা ধারে পানি সরবরাহ বাড়াতে স্থাপন করা হয়েছে সাতটি সাবমারসিভল পাম্প। বিভিন্ন প্রাণীর বেষ্টনীতে স্থানে স্থানে স্থাপন করা হয়েছে কৃত্রিম জলাধার। এসব জলাধারে পর্যাপ্ত পানি সরবরাহ করা হয়। আফ্রিকান সাফারিতে থাকা হিংস্র প্রাণীসহ সকল প্রাণীর গতিবিধি মনিটর করতে লাগানো হয়েছে সিসিটিবি ক্যামেরা। এসব ক্যামেরায় প্রত্যেকটি প্রাণীর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা হয়।

পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সহকারী বনসংরক্ষক মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে জানান, পার্কে বর্তমানে আটটি রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চারটি সিংহ,আটটি হাতি,প্রায় দেড় শত হরিণ, দুটি জিরাফ, নয়টি ননীলগাই,ত্রিশটি জেবরাসহ দেশি-বিদেশি দুর্লভ প্রাণী ও পাখি রয়েছে। তীব্র দাবদাহের কারণে পার্কের প্রাণিকুল এখন হাঁসফাঁস করছে। এসব পশু-পাখির স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য নেয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। হাতি, বাঘ, সিংহকে শান্ত রাখতে দিনে তিন চার বার গোসল করানো হচ্ছে। পানির সাথে সেলাইন,গ্লুকোজ দেওয়া হচ্ছে। পর্যাপ্ত খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। চব্বিশ ঘণ্টা প্রাণীদের মনিটরিং করা হচ্ছে। সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে হিংস্র প্রাণীদের মনিটরিং করা হয়। এ ছাড়া পার্কে দুইটি জেব্রা ও দুটি গয়ালের সাবক রয়েছে। এদের বিশেষ যত্ন নেওয়া হচ্ছে। দাবদাহের কারণে এখনো পার্কে কোন প্রাণী অসুস্থ্য হয়নি। তবে দর্শনার্থীর সংখ্যা কমে গেছে।


banner close