সেশনজটের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বেশির ভাগ বিভাগই। কোনো কোনো বিভাগে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হয়ে যেত ক্লাস-পরীক্ষা। করোনা-পরবর্তী সময়ের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিন বছর দুই মাসেও দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টি বিভাগ। এর মধ্যে দুটি বিভাগ আছে যাদের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। আরেকটি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হলেও শুরু হয়নি দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস। সাতটি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলেও শুরু হয়নি তৃতীয় বর্ষের ক্লাস। আর তৃতীয় বর্ষই নেই ১০ বিভাগে।
মূলত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেশন জটের ভুক্তভোগী। সেশন জটের কারণেই ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, ফোকলোর ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে নেই কোনো তৃতীয় বর্ষ। এসব বিভাগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শুরু করলেও ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বর্ষেই আছেন। ফলে এসব বিভাগে তৃতীয় বর্ষ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা বলছেন, এ পরিস্থিতির পেছনে মূলত দুটি কারণ দায়ী। প্রথমত, করোনা পরিস্থিতির কারণে এক বছরের বেশি সময় বন্ধ ছিল ক্লাস। কয়েকটি বিভাগ অনলাইনে ক্লাস নিতে পারলেও বেশির ভাগ বিভাগ তা পারেনি। দ্বিতীয়ত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেশির ভাগ বিভাগের সেমিস্টার সিস্টেম চালু হয়। আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘ইয়ার সিস্টেমে’ অভ্যস্ত ছিলেন। হুট করে সেমিস্টার সিস্টেম চালু এবং একই বছরে করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। এরপর ৩ বছর দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও ২৮টি বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেনি। এই বিভাগগুলোর মধ্যে ৬টি বাদে বাকি ২২টি বিভাগ চলছে সেমিস্টার সিস্টেমে। এতে পিছিয়ে পড়া বিভাগগুলো হচ্ছে ইংরেজি, নাট্যকলা, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, ফোকলোর, আগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফিশারিজ, সংগীত, উর্দু ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।
অন্যদিকে ইয়ার সিস্টেমে পিছিয়ে পড়া বিভাগগুলো হচ্ছে আইন ও ভূমি প্রশাসন, পদার্থবিজ্ঞান, মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য, গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি পিছিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উর্দু ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাসই শেষ হয়নি। এ নিয়ে কয়েক দফা আন্দোলন, প্রশাসন ভবনে তালা ও অনশনে বসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিন্তু তৃতীয় বর্ষের ক্লাস শুরু হয়নি- এমন বিভাগ রয়েছে সাতটি। বিভাগগুলো হচ্ছে আইন, দর্শন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা।
তবে সেমিস্টার সিস্টেমে ৯টি বিভাগ তৃতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু করেছে। বিভাগগুলো হচ্ছে ইতিহাস, বাংলা, ইসলামিক স্টাডিজ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, সংস্কৃত, মার্কেটিং, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মধ্যে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ সব থেকে বেশি এগিয়ে আছে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ১০ এপ্রিল তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হবে। এ ছাড়া এই সেশনে ইয়ার সিস্টেমে বাকি ১৩টি বিভাগে তৃতীয় বর্ষের ক্লাস চলছে।
সেশন জটের ভুক্তভোগী অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আসাদুল আমীন বলেন, ‘কিছু বিভাগ আছে যার সেমিস্টার সিস্টেম হয়েও তৃতীয় বর্ষের ক্লাস করছে। কিন্তু আমরা পিছিয়ে আছি।’
পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ তোফা বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে বের হতে পারলেও আমরা তা পারব না। ২৬ বা ২৭ বছর বয়স যদি পড়ালেখা শেষ করতেই লেগে যায়, তাহলে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ব।’
জানতে চাইলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, করোনা মহামারির কারণে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে। এ ছাড়া এত বছর ধরে ইয়ার সিস্টেম চলে আসছে। পড়ানো, উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও রেজাল্ট আগে বছরে একবার করতে হতো। এখন বছরে দুইবার ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা করতে হয়। প্রথমবার হওয়ায় কিছুটা সময় বেশি লাগছে।
অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেক বিভাগ অনলাইনে ক্লাস নিতে পারেনি। নেট সমস্যাসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারেনি। এ বছর থেকে সব সেমিস্টারে একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সেমিস্টার সিস্টেমের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে সমস্যা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে উপ-উপাচার্য সুলতান-উল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ফলাফলসহ অন্যান্য তথ্য কন্ট্রোল সেকশন থেকে নিয়ে সেগুলো পর্যালোচনা করেছি। এরই মধ্যে দুবার বিভাগগুলোর সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি, যেন সেশনজট কমিয়ে সঠিক সময়ে পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা যায়।
সেমিস্টার সিস্টেম পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-উপাচার্য বলেন, দীর্ঘদিনের একটি সিস্টেম থেকে আরেকটি সিস্টেমে গেলে একটু বিপর্যয় হয়। ছোট-খাটো সমস্যার কথা বিভাগগুলো বলেছে। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু সেমিস্টার সিস্টেমে চলছে, তাই আমরাও পারব।
ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ক্যাম্পাসে অবস্থিত কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (কেবি) কলেজের অধ্যক্ষ ড. মো. আতাউর রহমান আমরণ অনশন শুরু করেছেন। তার এই পদক্ষেপে সংহতি জানিয়ে কলেজের অন্যান্য শিক্ষকরা আন্দোলনে যুক্ত হয়েছেন। শনিবার কলেজ প্রাঙ্গণে অনশন করেন।
সরেজমিনে জানা গেছে, কেবি কলেজে বোমা হামলার হুমকি, শিক্ষকদের শারীরিক নির্যাতনের ভয়ভীতি প্রদর্শন এবং প্রতিষ্ঠানটিকে ঘিরে অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক নানা ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে তারা এই আমরণ অনশন কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক বি. এম. আব্দুল্লাহ রনি জানান, দুপুর ১২টার দিকে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অধ্যক্ষ ঘোষণা দেন, কলেজ ও শিক্ষকদের বিরুদ্ধে চলমান হুমকি এবং বহিরাগতদের অনুপ্রবেশের প্রতিবাদে তিনি আমরণ অনশনে বসবেন। তখন অন্যান্য শিক্ষকরা একসাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। তিনি আরও বলেন, ‘আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করুক। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হলে আমরা অনশন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেব।’
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় দিনদুপুরে গ্রামীণ ব্যাংকের টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় নগদ ৬০ হাজার ৬০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত যুবকের নাম আরকান চৌধুরী (২৫)। তিনি কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকার মো. জাকির হোসেনের ছেলে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মনুফকিরহাট জাফর চৌধুরীবাড়ি এলাকায় এ অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
থানার ওসি জাহেদুল ইসলাম জানান, জিজ্ঞাসাবাদে আরকান চৌধুরী ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছেন। শনিবার তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর দুপুরে কাঞ্চনা মনুফকিরহাট হাটের জলদাশপাড়া ব্রিজের ওপর গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তা অভি চৌধুরীর কাছ থেকে নগদ ৩ লাখ টাকা ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেন ছিনতাইকারীরা। অভি কাঞ্চনা শাখার কেন্দ্র ব্যবস্থাপক। পরে এ ঘটনায় অজ্ঞাত পরিচয়ে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন ব্যাংক কর্মকর্তা।
নেত্রকোনার খালিয়াজুরী উপজেলায় ধনু নদে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে স্পিডবোট উল্টে শিশুসহ ৪ জন নিখোঁজ হয়। নিখোঁজের ২৪ ঘণ্টা পর উষা মনির (৪) তার লাশ উদ্ধার করে স্থানীয়রা। শনিবার ধনু নদের চরপাড়া এলাকায় ভাসমান অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
খালিয়াজুরী থানার ওসি মকবুল হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করেন। ময়মনসিংহ ফায়ার সার্ভিস ও ডুবুরি দল অন্যদের লাশ উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। নিখোঁজ রয়েছেন, গাজীপুর ইউনিয়নের বয়রা গ্রামের নবাব মিয়ার মেয়ে শিরিন আক্তার (১৮), আন্ধাইর গ্রামের স্বপন মিয়ার মেয়ে লায়লা (৭) ও সামসু মিয়ার মেয়ে সামিয়া (১১)।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ভুলুয়া নদীর তীব্র ভাঙনে নিঃস্ব হয়ে গেছে কয়েক হাজার পরিবারের ঘরবাড়ি ও কয়েক একর কৃষি জমি। ভাঙন রোদে ভূলুয়া নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ভূলুয়া নদীর পাড়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এ সময় বক্তব্য রাখেন- চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বার হুমায়ুন কবির, মীর সমাজ জামে মসজিদের সভাপতি মো. আব্দুল্লাহ, স্থানীয় বাসিন্দা জহির উদ্দীন, শিক্ষার্থী নাহিদুল ইসলাম, আজিমা বেগম, কুলছুম ও রাবেয়া বেগম প্রমুখ। বক্তারা বলেন, লক্ষ্মীপুরের রামগতি ও নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার সিমান্তের চররমিজ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মীর সমাজের ওপর দিয়ে বয়ে গেছে ভূলুয়া নদী। নদীটির সুবর্ণচর অংশে চর জেগে ওঠায় রামগতির অংশে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে মীর সমাজের কয়েক হাজার পরিবার নদীভাঙনের মুখে পড়ে। ইতোমধ্যে অন্তত শতাধিক ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এখনো ৪০টির মতো বসতবাড়ি হুমকির মুখে আছে। এছাড়া কয়েক একর কৃষি জমি ভূলুয়া নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। নদীর পাশেই রয়েছে, উত্তর চর আফজাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরআফজল মীর সমাজ নুরানী মাদ্রাসা, চরআফজল মীর সমাজ জামে মসজিদসহ অন্তত ১০ হাজার মানুষের বসবাস। এসব মানুষগুলো রয়েছে চরম উদ্বিগ্ন উৎকণ্ঠায়। বক্তারা আরও বলেন, ভুলুয়া নদীর ওই স্থানে দ্রুত ব্লক বাঁধ নির্মাণ না করলে অল্প সময়ের মধ্যে মীর সমাজটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই তারা দ্রুত নদীর তীরে বাঁধ নির্মাণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে ওই স্থানে বাঁধ নির্মাণের উদ্যোগ নেবেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিন সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে স্ট্রোক করে মারা যান চ্যানেল এস-এর সাংবাদিক তরিকুল ইসলাম শিবলী।
নবনির্বাচিত ডাকসু নেতা ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতারা গত শুক্রবার সন্ধ্যায় টঙ্গীর মধুমিতা রোডের শিবলীর বাসায় তার পরিবারের সঙ্গে দেখা করেন। এ সময় তারা মৃতের পরিবারের খোঁজখবর নেন এবং তরিকুল শিবলীর পরিবারের হাতে নগদ দুই লাখ টাকা তুলে দেন।
ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম, ডাকসুর নব-নির্বাচিত ভিপি ও শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রকাশনা সম্পাদক সাদিক কায়েম, ডাকসু জিএস এস এম ফরহাদ, পরিবহন সম্পাদক আসিফ আব্দুল্লাহ ও শিবিরের গাজীপুর মহানগর সভাপতিসহ অন্যান্য নেতারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
গত শুক্রবার রাতেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ডাকসুর নবনির্বাচিত জিএস ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ লেখেন, ‘ডাকসু নির্বাচনের দিন সংবাদ কাভার করতে গিয়ে ইন্তেকাল করেছেন তরিকুল শিবলী ভাই। তিনি রেখে গেছেন দুই সন্তান। বড় সন্তান আয়াতের বয়স চার বছর এবং ছোট সন্তান আজমীনের বয়স দেড় বছর।’
ফরহাদ আরও লেখেন, চার বছর বয়সী আয়াত দীর্ঘ আলাপের ফাঁকে আমাকে বলছে- ‘আমার বাবাকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন এবং আল্লাহ বাবাকে সুন্দর একটা জায়গায় রেখেছেন। যেহেতু বাবা আসবেন না, তাই আমি ও আমার মা ছোট বোন আজমীনের খোঁজখবর রাখবো, আদর করবো।’ অবুঝ শিশুর মুখে এমন ভারি কথা!
তিনি জানান, আমরা পরিবারের সঙ্গে প্রাথমিক সাক্ষাতে ছোট্ট দুই শিশুর খরচের জন্য ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে আপাতত দুই লাখ টাকা পৌঁছে দিয়েছি। ইনশাআল্লাহ, আমরা সব প্রয়োজনে সাধ্যমতো পরিবারটির পাশে থাকবো। বাবা হারানো ছোট শিশুদের জন্য দোয়া চাই।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন অপরাধ প্রবণ এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মোহাম্মদপুর থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো- মো. দুলাল মিয়া (২৭), গোলাম রাব্বি ওরফে বাপ্পি (১৯), মো. শাকিল হাওলাদার (২৫), মো. বাপ্পি (৩০), মো. হৃদয় হোসেন (৩০), মো. বিজয় (১৮), মো. ইজাজুল হোসেন (১৮), মো. কামাল হোসেন (৩২), মো. বাবু ওরফে ছোট বাবু (৩০) ও মো. সুমন (৩২)।
এতে বলা হয়, গত শুক্রবার দিনব্যাপী বিশেষ অভিযান চালিয়ে মোহাম্মদপুর থানার বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাদের হেফাজত থাকা দুটি সামুরাই উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে রয়েছে নিয়মিত মামলার আসামি, দস্যুতা মামলার আসামি, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী।
গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
রাজধানীর বনানীর একটি বাসা থেকে চুরি যাওয়া ২৪ লাখ সাড়ে ৮৪ হাজার টাকা, মোটরসাইকেল এবং দুইটি মোবাইল ফোনসহ মো. কাউছার আহমেদ (২২) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গত শুক্রবার রাত পৌঁনে ১২টার দিকে মানিকগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিএমপির বনানী থানা পুলিশ।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, গত ৯ সেপ্টেম্বর ব্যবসায়ী মুস্তাজিরুল শোভন ইসলামের বনানীর বাসায় চুরি হয়। হ্যান্ড সুটকেসে থাকা ব্যবসায়িক কাজের জন্য রাখা ৩০ লাখ টাকা চোর চুরি করে নিয়ে যায়। পরে ১১ সেপ্টেম্বর ভিক্টিম মুস্তাজিরুল বাদী হয়ে বনানী থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও বলা হয়, আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্তকারী দল দ্রুত চুরির সাথে জড়িত ব্যক্তির পরিচয় ও অবস্থান শনাক্ত করে। পরবর্তীতে মানিকগঞ্জে অভিযান চালিয়ে কাউছারকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে চুরির ঘটনা স্বীকার করেছে।
গ্রেপ্তারকৃতের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। পাশাপাশি মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ট্রাফিক আইন লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে গত দুইদিনে অভিযান চালিয়ে ৩ হাজার ৫৪১টি মামলা করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ। এছাড়াও অভিযানকালে ৫৯৫ গাড়ি ডাম্পিং ও ৩১৫টি গাড়ি রেকার করা হয়েছে।
শনিবার ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-কমিশনার মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, গত বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগ কর্তৃক রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব মামলা করা হয়।
ঢাকা মহানগর এলাকায় ট্রাফিক শৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির ট্রাফিক বিভাগের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।
ভোর হলেই জমে ওঠে পটুয়াখালীর বড় মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র আলিপুর-মহিপুর ঘাট। রাতভর মাছ ধরে বড় ট্রলার গভীর সমুদ্র থেকে ফিরছে। পন্টনে নোঙর করছে একের পর এক ট্রলার, লেবাররা মাছ উঠানোর জন্য প্রস্তুত, আড়তদাররা ব্যস্ত হিসাব কষতে আর পাইকাররা ব্যস্ত কত দ্রুত মাছ কিনে ঢাকায় পাঠানো যায়। তবে এ আড়তগুলোর ব্যস্ততা সারা বছর থাকে কিন্তু বর্তমান মাছের পরিমাণ বাড়লেও দেখা নেই বড় ইলিশের। মনকে মন উন্মুক্ত ডাকে মাছ বিক্রি হচ্ছে যার ওজন ৩০০ থেকে পাঁচশো গ্রাম। এদিকে, বড় ও মাঝারি আকারের ইলিশের দাম সাধারণ ক্রেতাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। তবে, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, এবার ইলিশের দাম কেজিপ্রতি ৯০০ থেকে ২২০০ টাকার মধ্যে। গত বছর একই সময় এই দাম ছিল ৮০০ থেকে ১৬০০ টাকার মধ্যে।
বন্দরে ঘুরে দেখা যায়, বন্দরে মাছ বিক্রি হয় ৩০ থেকে ৩৫টি আড়তে, যার প্রতিটি আড়তে আবার ৩-৪ টি ট্রলারে মাছ বিক্রি করে। এ ট্রলারগুলো মূলত এ বন্দরের নয়, কিছু এ বন্দরের থাকলেও বাকিগুলো চট্টগ্রাম কক্সবাজার, বাঁশখালী, ভোলা, নোয়াখালী, সন্দীপ, হাতিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে এখানে মাছ বিক্রি করেন।
যে কারণে যখন সমুদ্রে মাছ দেখা যায় তখন হাঁকডাকে মুখর থাকে এ বন্দর। তবে অনেক জেলেরা বড় মাছ না পেয়ে হতাশ, ছোট মাছ পরিমাণে বেশি পেলেও আর্থিকভাবে লাভবান কম হয়। যে কারণে সব জেলেদের আকাঙ্ক্ষা বড় মাছ শিকার করার।
জেলেরা বলছে, বেশ কয়েক বছর বড় মাছ কমে আসছে। আবার সমুদ্রে অবৈধ ট্রলিং ট্রলার চলার কারণে মাছ অনেকটা কমে আসছে। তবে বর্তমানে কিছু ট্রলিং এর ওপরে প্রশাসন নজরদারি বাড়ানোর কারণে ট্রলিং বন্ধের পথে তাই কিছু মাছের আবার দেখা মিলছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের মৎস্য ব্যবসায়ী মো. রাসেল জানায়, বর্তমানে সমুদ্রের জেলেরা বড় মাছ কম পায় ছোট মাছ বেশি পায় যার ওজন ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম। আর এ ছোট মাছগুলোর দাম মন প্রতি ১৫ হাজার ৫০০ থেকে ২০ হাজার টাকা পর্যন্ত।
মাছগুলো এক কেজি পরিমাণ হইতে ৫ থেকে আটটি মাছ দরকার হয়। তবে মার্কেটে এক কেজি ৮০০ গ্রাম, ৭০০ গ্রামের মাছও পাওয়া যায় তবে পরিমাণে খুবই কম।
ইউনুস নামের আর এক ব্যবসায়ী জানান, ‘আলিপুর মৎস্য অবদান কেন্দ্রে অনেক মাছের দেখা মিলছে। তবে সবগুলো মাছ জাটকা এবং অন্যান্য সামুদ্রিক মাছ। ইলিশ বড় মাছের পরিমাণ খুবই সামান্য, কে আমি কিছু নরম (সামান্য পচা) মাছ কিনেছি ২৫০ টাকা কেজি। আমাদের এ বন্দরের বড় মাছগুলো অনেক সুস্বাদু হয়, বড় মাছের চাহিদাও বেশি তবে বড় মাছের এখন দেখা নেই। যখন সাগরে টলিং চলছে তখন কোনো ধরনের মাছ পাইনি জেলেরা।’
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ১ কেজি ওজনের ইলিশের মন এক লাখ টাকার ওপরে বিক্রি হয়েছে। ৭-৮ শো গ্রামের ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টাকায়। ৫-৬ শো গ্রামের ওজন ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৬০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। বেশিরভাগ ট্রলার ১০ থেকে ৫০ মন পর্যন্ত মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরেছে।
আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মো. কামাল ব্যাপারী জানান, আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মোট ৩৫টি মৎস্য আড়ত রয়েছে। যার প্রতিটিতে দৈনিক গড়ে ২-৩টি ট্রলার মাছ বিক্রি করে। বর্তমানে প্রতিটি ট্রলার মাছ নিয়ে ঘাটে ফিরছে কিন্তু কোনো ট্রলারে বড় মাছের দেখা নেই। একসময়ে জেলেরা উপকূলের কাছাকাছি মাছ পেত কিন্তু এখন উপকূলের বেশিরভাগ স্থানে চর পরার কারণে মাছের অভায়শ্রম পরিবর্তন হয়েছে। যেটা বড় মাছ না পাওয়ার অনেক বড় কারণ।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা বলেন, সাম্প্রতিক সময় আমরা লক্ষ্য করছি জেলেদের জালে বেশিরভাগ ছোট ইলিশ ধরা পড়ছে। আবহাওয়া জনিত কারণে জেলেরা অনেক সময় গভীর সমুদ্র যেতে পারে না, যে কারণে ছোট মাছগুলো বেশি ধরা পড়ছে। গভীর সমুদ্র যখন জেলেরা যেতে পারবে তখন আরো বড় মাছের দেখা মিলবে। জাটকা ইলিশের অবরোধকালীন সময় হলো পহেলা নভেম্বর থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত। তাই বর্তমানে জাটকা ইলিশের বৈধতা রয়েছে।
ময়মনসিংহের ভালুকায় দুটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই হেলপার নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। শনিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার ভরাডোবা তাফরিদ কটন মিলের সামনে ময়মনসিংহগামী সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, ময়মনসিংহগামী আয়ান রিয়ান পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে উল্টো দিক থেকে আসা শ্যামলী বাংলা পরিবহনের একটি বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই অন্তত ১৫ জন আহত হন। গুরুতর অবস্থায় দুইজনকে হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতরা হলেন হালুয়াঘাট কড়ইকান্দার নুরুল আমিনের ছেলে শরীফ মিয়া (২১) এবং ময়মনসিংহের বলাশপুর গ্রামের আমিনুল ইসলামের ছেলে নিরব (১৫)।
ভরাডোবা হাইওয়ে থানার ওসি এবিএম মেহেদী মাসুদ জানান, নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে থানায় রাখা হয়েছে। আহতদের ভালুকা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং গুরুতর কয়েকজনকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
সকল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ বাতিলের দাবীতে রংপুরে মানবন্ধন সমাবেশ করেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। সংগঠনের জেলা ও মহানগর কমিটির উদ্যোগে শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর কাচারী বাজারে কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি ছিলেন, ইসলামী আন্দোলন জেলা কমিটির সভাপতি এটিএম গোলাম মোস্তফা। জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা কমিটির সভাপতি আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে এতে বক্তব্য রাখেন, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম মহানগরের সভাপতি আওলাদ হোসেন, মাইলস্টোন স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক ধর্মীয় শিক্ষক এইচ এম হাবিবুর রহমান, রফিজ উদ্দিন মডেল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মোজাম্মেল বিন আজাদ, ইসলামী আন্দোলন রংপুর জেলা শাখার সহ প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক মুহাঃ লিয়াকত বিন সিদ্দিক, জাতীয় শিক্ষক ফোরাম জেলা শাখার সেক্রেটারী মুহাঃ মশিউর রহমান।
এ সময় বক্তারা বলেন, ধর্মীয় শিক্ষা মানুষের মধ্যে নৈতিকতা ও মূল্যবোধ তৈরী করে। একজন শিশু সেই শিক্ষা পেলে ছোট বয়স থেকেই তার সৎ আচারণের ভিত্তি গড়ে উঠে। ফলে ভবিষ্যতে তারা যখন নেতৃত্বে যাবে, তাদের মাধ্যমে ন্যায় ভিত্তিক সমাজ গড়ে উঠবে। অপরদিকে সংগীত বা নৃত্য কখনো প্রতিষ্ঠানে আবশ্যিক বিষয় হতে পারে না। কেউ চাইলে তাদের সন্তানকে আলাদাভাবে এসব শিখাতে পারে। তাই প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ না দিয়ে সংগীত ও নৃত্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া কোনভাবেই মেনে নেয়া হবে না।
কুমিল্লায় আমিনুল ইসলামকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় সজীব নামে এক যুবককে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার রাতে চান্দিনা উপজেলার এতবারপুর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। এই সময় তার দেয়া তথ্যমতে হত্যার সময় ব্যবহার করা একটি দা এবং রক্তমাখা কাপড় উদ্ধার করা হয়। শনিবার দুপুরে র্যাব-১১ সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার সাদমান ইবনে আলম সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেন। আটককৃত সজীব (২০) কুমিল্লা চান্দিনা থানার বদরপুর এলাকার সফিকুল ইসলামের ছেলে।
র্যাব জানায়, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ভুক্তভোগী আমিনুলের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছিল তার নিকটতম আত্মীয় সিরাজ। কিন্তু দীর্ঘদিন চাকরি না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকে সে। টাকা ফেরত চাইলে সিরাজ পরিকল্পিতভাবে আমিনুলকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ৯ সেপ্টেম্বর সিরাজ ও তার সহযোগীরা আমিনুলকে সিলেট ভ্রমণের কথা বলে বাসা থেকে বের করে। ওই রাতে তারা কুমিল্লার পদুয়ার বাজার বিশ্বরোড এলাকার বিসমিল্লাহ আবাসিক হোটেলে অবস্থান করে। পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর রাতে সদর দক্ষিণ উপজেলার মোস্তাফাপুর এলাকায় নিয়ে গিয়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিছন থেকে গলা কেটে আমিনুলকে হত্যা করা হয়। পরে লাশ বালু চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায় তারা।
উল্লেখ্য যে, ১১ সেপ্টেম্বর দুপুরে স্থানীয় সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ বালুর নিচ থেকে আমিনুলের গলা কাটা মরদেহ উদ্ধার করে এবং পরিচয় শনাক্ত করে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা ১২ সেপ্টেম্বর সদর দক্ষিণ থানায় অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। নিহত আমিনুল ইসলাম কুমিল্লা বুড়িচং উপজেলার পারুয়ারা গ্রামের আলী আজমের ছেলে।
নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় স্বাস্থ্যসেবা মারাত্মক সংকটে পড়েছে। প্রায় ৩ লাখ ১৬ হাজার মানুষের জন্য ৫০ শয্যা বিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বর্তমানে কর্মরত আছেন মাত্র ৬ জন চিকিৎসক। ফলে প্রতিদিন অসংখ্য রোগীকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ২০১০ সালে ডিমলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৩১ শয্যা থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত হলেও দীর্ঘ ১৪ বছরেও কাঙ্খিত চিকিৎসক নিয়োগ হয়নি।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সূত্রে জানা গেছে, এখানে মোট ৩২টি চিকিৎসক পদ অনুমোদিত থাকলেও বর্তমানে রয়েছেন একজন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএন্ডএফপিও), একজন আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ও চারজন মেডিকেল অফিসার। বিশাল জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, নিয়ম অনুযায়ী বহির্বিভাগ সকাল ৮টা থেকে দুপুর ২টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত খোলা থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে দুপুর ১টার পর ডাক্তার পাওয়া যায় না। ভর্তি রোগীদেরও নিয়মিত সেবা দেওয়া হয় না। হাসপাতালের ঔষধ সরবরাহ পর্যাপ্ত নয়, ফলে রোগীদের ওষুধ বাহির থেকে কিনতে হয়। বিদ্যুৎ চলে গেলে জেনারেটর থাকে না।
ডিমলার সদর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,“এত বড় এলাকার জন্য যদি মাত্র কয়েকজন ডাক্তার থাকেন, তাহলে আমরা যাব কোথায়? চিকিৎসা নিতে এসে শুধু হয়রানি আর অবহেলা পাচ্ছি।”
রোগীর স্বজন মকবুল ইসলাম জানান, চিকিৎসক সংকটের কারণে অনেক সময় ইমারজেন্সি সেবা পেতে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হয়। জায়গার অভাবে রোগীদের মেঝে কিংবা বারান্দায় শুয়ে থাকতে হয়, অনেকে আবার চিকিৎসা না পেয়ে ফিরেও যান।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন,“এখানে চিকিৎসক, জনবল ও ওষুধের সংকট রয়েছে। তারপরও আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি রোগীদের সর্বোচ্চ সেবা দেওয়ার।”
জানতে চাইলে সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুর রাজ্জাক বলেন,“৪৮ তম বিসিএসের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। এখান থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক দ্রত সময়ের মধ্যে পদায়ন করা হবে।”