সেশনজটের কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বেশির ভাগ বিভাগই। কোনো কোনো বিভাগে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই শেষ হয়ে যেত ক্লাস-পরীক্ষা। করোনা-পরবর্তী সময়ের চিত্রটি সম্পূর্ণ ভিন্ন। তিন বছর দুই মাসেও দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৮টি বিভাগ। এর মধ্যে দুটি বিভাগ আছে যাদের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস চলছে। আরেকটি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের প্রথম সেমিস্টার পরীক্ষা শেষ হলেও শুরু হয়নি দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস। সাতটি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হলেও শুরু হয়নি তৃতীয় বর্ষের ক্লাস। আর তৃতীয় বর্ষই নেই ১০ বিভাগে।
মূলত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা এই সেশন জটের ভুক্তভোগী। সেশন জটের কারণেই ইংরেজি, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, ফোকলোর ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে নেই কোনো তৃতীয় বর্ষ। এসব বিভাগে ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা চতুর্থ বর্ষের ক্লাস শুরু করলেও ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় বর্ষেই আছেন। ফলে এসব বিভাগে তৃতীয় বর্ষ নেই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র অধ্যাপকরা বলছেন, এ পরিস্থিতির পেছনে মূলত দুটি কারণ দায়ী। প্রথমত, করোনা পরিস্থিতির কারণে এক বছরের বেশি সময় বন্ধ ছিল ক্লাস। কয়েকটি বিভাগ অনলাইনে ক্লাস নিতে পারলেও বেশির ভাগ বিভাগ তা পারেনি। দ্বিতীয়ত, ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বেশির ভাগ বিভাগের সেমিস্টার সিস্টেম চালু হয়। আগে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ‘ইয়ার সিস্টেমে’ অভ্যস্ত ছিলেন। হুট করে সেমিস্টার সিস্টেম চালু এবং একই বছরে করোনার কারণে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২০ সালের ২১ জানুয়ারি ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীদের ক্লাস শুরু হয়। এরপর ৩ বছর দুই মাসের বেশি সময় পার হলেও ২৮টি বিভাগ দ্বিতীয় বর্ষ শেষ করতে পারেনি। এই বিভাগগুলোর মধ্যে ৬টি বাদে বাকি ২২টি বিভাগ চলছে সেমিস্টার সিস্টেমে। এতে পিছিয়ে পড়া বিভাগগুলো হচ্ছে ইংরেজি, নাট্যকলা, ফাইন্যান্স, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইন্স্যুরেন্স, অর্থনীতি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সমাজকর্ম, সমাজবিজ্ঞান, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড লাইব্রেরি ম্যানেজমেন্ট, লোকপ্রশাসন, নৃবিজ্ঞান, ফোকলোর, আগ্রোনমি অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার এক্সটেনশন, ক্রপ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি, কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রিকাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ম্যাটেরিয়ালস সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ফিশারিজ, সংগীত, উর্দু ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক।
অন্যদিকে ইয়ার সিস্টেমে পিছিয়ে পড়া বিভাগগুলো হচ্ছে আইন ও ভূমি প্রশাসন, পদার্থবিজ্ঞান, মৃৎশিল্প ও ভাস্কর্য, গ্রাফিক ডিজাইন, কারুশিল্প ও শিল্পকলার ইতিহাস, উদ্ভিদবিজ্ঞান ও প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। এর মধ্যে সব থেকে বেশি পিছিয়ে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের উর্দু ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থীরা। তাদের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাসই শেষ হয়নি। এ নিয়ে কয়েক দফা আন্দোলন, প্রশাসন ভবনে তালা ও অনশনে বসেছেন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এদিকে ২০১৯-২০ সেশনের দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা শেষ হয়েছে কিন্তু তৃতীয় বর্ষের ক্লাস শুরু হয়নি- এমন বিভাগ রয়েছে সাতটি। বিভাগগুলো হচ্ছে আইন, দর্শন, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, ফলিত রসায়ন ও রসায়ন প্রকৌশল, চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান এবং ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা।
তবে সেমিস্টার সিস্টেমে ৯টি বিভাগ তৃতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শুরু করেছে। বিভাগগুলো হচ্ছে ইতিহাস, বাংলা, ইসলামিক স্টাডিজ, ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, সংস্কৃত, মার্কেটিং, ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ও ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং। এর মধ্যে ট্যুরিজম অ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ সব থেকে বেশি এগিয়ে আছে। এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের ১০ এপ্রিল তৃতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হবে। এ ছাড়া এই সেশনে ইয়ার সিস্টেমে বাকি ১৩টি বিভাগে তৃতীয় বর্ষের ক্লাস চলছে।
সেশন জটের ভুক্তভোগী অর্থনীতি বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী আসাদুল আমীন বলেন, ‘কিছু বিভাগ আছে যার সেমিস্টার সিস্টেম হয়েও তৃতীয় বর্ষের ক্লাস করছে। কিন্তু আমরা পিছিয়ে আছি।’
পরিসংখ্যান বিভাগে শিক্ষার্থী তোফায়েল আহমেদ তোফা বলেন, ‘অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সঠিক সময়ে বের হতে পারলেও আমরা তা পারব না। ২৬ বা ২৭ বছর বয়স যদি পড়ালেখা শেষ করতেই লেগে যায়, তাহলে প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে আমরা অনেক পিছিয়ে পড়ব।’
জানতে চাইলে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন বকুল বলেন, করোনা মহামারির কারণে ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে পড়েছে। এ ছাড়া এত বছর ধরে ইয়ার সিস্টেম চলে আসছে। পড়ানো, উত্তরপত্র মূল্যায়ন ও রেজাল্ট আগে বছরে একবার করতে হতো। এখন বছরে দুইবার ও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা করতে হয়। প্রথমবার হওয়ায় কিছুটা সময় বেশি লাগছে।
অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, বিভিন্ন সমস্যার কারণে অনেক বিভাগ অনলাইনে ক্লাস নিতে পারেনি। নেট সমস্যাসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে অংশ নিতে পারেনি। এ বছর থেকে সব সেমিস্টারে একসঙ্গে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া সেমিস্টার সিস্টেমের সঙ্গে আমাদের তাল মেলাতে সমস্যা হচ্ছে।
সার্বিক বিষয় নিয়ে উপ-উপাচার্য সুলতান-উল ইসলাম দৈনিক বাংলাকে বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোর ফলাফলসহ অন্যান্য তথ্য কন্ট্রোল সেকশন থেকে নিয়ে সেগুলো পর্যালোচনা করেছি। এরই মধ্যে দুবার বিভাগগুলোর সভাপতির সঙ্গে কথা বলেছি, যেন সেশনজট কমিয়ে সঠিক সময়ে পরীক্ষাগুলো সম্পন্ন করা যায়।
সেমিস্টার সিস্টেম পিছিয়ে পড়ার অন্যতম কারণ কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে উপ-উপাচার্য বলেন, দীর্ঘদিনের একটি সিস্টেম থেকে আরেকটি সিস্টেমে গেলে একটু বিপর্যয় হয়। ছোট-খাটো সমস্যার কথা বিভাগগুলো বলেছে। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয় যেহেতু সেমিস্টার সিস্টেমে চলছে, তাই আমরাও পারব।
মাগুরায় বিআরটিএ ট্রাস্টি বোর্ড কর্তৃক মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার সংগঠিত সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত ও আহত পরিবারের মাঝে চেক বিতরণ করা হয়েছে।
শুক্রবার বেলা ১১ টায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিআরটিএ মাগুরা। অনুষ্ঠানে বিআরটিএ চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) আবু মমতাজ সাদ উদ্দিন আহাম্মেদ প্রধান অতিথি হিসেবে আহত ও নিহত পরিবারের হাতে চেক তুলে দেন। চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ অহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, বিআরটিএ খুলনা বিভাগের সহকারী পরিচালক জিয়াউল হাসান, ঝিনাইদহ বিআরটিএ সহকারী পরিচালক লিটন বিশ্বাস, মাগুরা বিআরটিএ সহকারী পরিচালক কেশব কুমার দাস, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান, মাগুরা বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বাবু মিয়া, জেলা ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি কাজল মিয়া ও জেলা বাস মিনিবাস মালিক গ্রুপের উপদেষ্টা ফুরকানুল হামিদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে দুটি ক্যাটাগরিতে ১ কোটি ৬১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। এর মধ্যে নিহতের পরিবারের মাঝে ৫ লাখ টাকা, আহতদের পরিবারের মাঝে ৩ লাখ ও ১ লাখ টাকার চেক প্রদান করা হয়। অনুষ্ঠানে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে নানা সুপারিশ তুলে ধরেন বক্তারা।
চট্টগ্রাম বোয়ালখালী পৌরসদরের তুলতলা এলাকায় রেল লাইনের উপরে বসেছে বাজার। চলছিল বেচাকেনা। প্রতি রোববার ও বৃহস্পতিবার বাজারটি বসে। গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকেও জমজমাট ছিল বাজার। তুলাতলা ক্রসিং দিয়ে পারাপার হচ্ছিল যানবাহন। এরই মধ্যে সারাশব্দ ছাড়া এসে পড়ে ওয়াগন ট্রেন। তবে অল্পের জন্য রক্ষা পায় শত শত মানুষের প্রাণ।
এ নিয়ে ক্ষুব্ধ মানুষ বলছেন, রেলওয়ের লোকের গাফিলতিতে (বৃহস্পতিবার) অনেক মানুষের প্রাণহানি হতো।
সিএনজিচালিত অটোরিকশা রেলক্রসিং দিয়ে তখন পার হচ্ছিলেন সংগীত শিল্পী জুসি বড়ুয়া। তিনি বলেন, আমাদের গাড়িটি রেল লাইনের উপরে যাবে এমন সময় সামনে দিয়ে ট্রেন ছুটে গেল। একটু ঊনিশ-বিশ হলেই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে যেত। বাজারেও ছিল প্রচুর লোক।
জুসি অভিযোগ করে বলেন, ‘ট্রেন আসার আগে ফেলা হয়নি রেলগেটের ব্যারিকেড, উন্মুক্ত ছিল যান চলাচল। ট্রেনটির আলোও দেখা যায়নি। দেয়নি সাইরেন।’
এ বিষয়ে গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
তুলাতল রেল গেটের দায়িত্বরত গেটম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন ট্রেন আসার আগে মোবাইল গ্রুপে মেসেজ আসে। সন্ধ্যায় নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে মেসেজটি দেরিতে পাই। ফলে এ সমস্যা হয়েছে।’
গোমদণ্ডী রেলওয়ে স্টেশন মাস্টার মো. শরীফ বলেন, ‘এবিষয়ে জুসি বড়ুয়া নামের একজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। ট্রেনটি দোহাজারীতে ফার্নেস অয়েল খালাস করে চট্টগ্রাম ফিরছিল।’
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রহমত উল্লাহ বলেন, ‘এ বিষয়ে ইতিমধ্যে রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগপূর্বক অবহিত করা হয়েছে।’
দেশের সর্বউত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা পঞ্চগড়। শান্তশিষ্ট মানুষের প্রাণের জনপদ হিসেবেও পরিচিত এই জেলাটি।
শুধু চা উৎপাদনেই নয়, দুগ্ধ উৎপাদনেও এ জেলা এখন দেশের অন্যতম শীর্ষ স্থানীয় অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।
জাতীয়ভাবে চা উৎপাদনে ৩য় স্থানে থাকা পঞ্চগড় জেলাটি এখন দুধ উৎপাদনেও ব্যাপক সুনাম কুড়িয়েছে।
জেলার পাঁচটি উপজেলায় বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে প্রায় ১৫ হাজারেরও অধিক খামার। এর মধ্যে প্রায় চারশ বড় খামারি নিয়মিতভাবে বৃহৎ পরিসরে দুধ উৎপাদন করছেন।
জেলায় প্রতিদিন উৎপাদিত হয় প্রায় ১৮ থেকে ২০ হাজার লিটার দুধ। কিন্তু স্থানীয় চাহিদা তুলনামূলক কম প্রায় ৭-৮ হাজার লিটার। ফলে বিপুল পরিমাণ দুধ অবিক্রীত থেকে যাওয়ার আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে খামারিরা। ঠিক এ জায়গাটিই শক্তভাবে দখল করে নিয়েছে দেশের সবচেয়ে পুরোনো দুগ্ধ সংগ্রহ ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা।
মিল্কভিটা যাত্রা শুরু করেন ২০১০ সালের ১৪ নভেম্বর। এরপর নিয়মিত খামারিদের কাছ থেকে দুধ নিয়ে প্রক্রিয়াজাত করছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিল্কভিটার দুধ সংগ্রকারী সমিতির সংগঠক মহসিন আলম জানান, আমাদের ৫ উপজেলায় মোট ৪৮টি খামার রয়েছে। যা থেকে প্রতিনিয়ত দুধ আসছে আমাদের কাছে। আমাদের কাছে আসা দুধের ফ্যাট অনুয়ায়ী আমরা দাম দেই। সাধারণত ৩.৬০/৩.৭০% ফ্যাটের দুধ আমরা ৪৬/৪৭ টাকায় ক্রয় করি। ফ্যাট এর কম হলে দাম ও কম হয়।
দাম কম দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, হেড অফিস থেকে লিটার প্রতি ৫ টাকা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাই আমরা কম নিতে বাধ্য হচ্ছি।
গরু খামারি বাবুল জানান, আমি সমিতির ম্যানেজার। আমার সমিতিতে মোট ৪০ জন সদস্য আছে। সবার দুধ সংগ্রহ করে আমি মিল্কভিটায় নিয়ে আসি। এখানে লিটার প্রতি এক টাকা করে পাই আমি। টাকা প্রতি সপ্তাহে ব্যাংকের মাধ্যমে পেয়ে যাই।
আরাজি শিকারপুরের খামারি আজিজুল জানান, আমার সমিতির ১০-১২ জন খামারি দুধ দেই। দুধের দাম ৪৬ থেকে ৪৭ টাকা প্রতি লিটার। তাও আবার ফ্যাটের উপর নির্ভর করে।
পুর্ব জালাসীর খামারি আব্দুল মালেক জানান, আমরা ডেইলি ৮০ থেকে ১০০ লিটার দুধ মিল্ক ভিটার কাছে দেই। আগে দাম বেশি ছিল। এখন প্রতি লিটার দুধ ৫ টাকা কমে বিক্রি করতে হয়। মিল্ক ভিটার পাশাপাশি স্থানীয় বাজারেও দুধ বিক্রি করি।
দুধ নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি কমেছে এবং দুধ উৎপাদন বাড়াতে উৎসাহ পেয়েছেন অনেকেই। অনেক পরিবার নতুনভাবে খামার গড়ে তুলছেন, আবার কেউ কেউ ছোট খামারকে বড় পরিসরে নিয়ে যাচ্ছেন। দুধ উৎপাদনকে কেন্দ্র করে জেলার পশুখাদ্য ব্যবসা, পশু চিকিৎসা সেবা এবং পরিবহন খাতে কর্মসংস্থানের সুযোগও বেড়েছে।
পঞ্চগড়ের উপব্যবস্থাপক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. সাইদুর রহমান খান জানান, এখন দুধ উৎপাদনে আত্মনির্ভরশীল পঞ্চগড়কে সামনে রেখে মিল্কভিটা আরও উন্নত সংগ্রহ ব্যবস্থা, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রক্রিয়াজাত পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা বাড়লে আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই পঞ্চগড় দেশের অন্যতম বৃহৎ দুগ্ধ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে আরও শক্ত অবস্থান তৈরি করবে।
উল্লেখ্য যে, গত ২ নভেম্বর সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সমবায়ী খামারিরা ছয় দফা দাবিতে মিল্কভিটায় দুধ সরবরাহ বন্ধ রেখেছিল। তারা দুধের দাম ৪৮-৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ টাকা করার দাবি জানিয়েছেন।
খামারিদের দাবি, ক্রমাগতভাবে গো-খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেলেও সেই অনুপাতে দুধের দাম বাড়ায়নি মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষ দুধের দাম দিচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকার মধ্যে। মিল্কভিটা কর্তৃপক্ষের কাছে দুধের দাম ৬০ টাকা করার দাবি জানায়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই ঘাটতি মেটাতে গো-খাদ্যের বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণে নজর রাখার পাশাপাশি সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়ন হলে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পর রপ্তানি করা সম্ভব হবে।
এক দুগ্ধ খামারি বলেন, এক লিটার দুধ উৎপাদনে যে ব্যয় হয়, তার ৭০ শতাংশই যায় গো-খাদ্যে। এর বাইরে শ্রমমূল্য এবং অন্য নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ও রয়েছে। দেশি গরু খায় কম, তাই দুধ উৎপাদন কম, সংকর জাতের গরু খায় বেশি, তাই দুধ উৎপাদন অনেক বেশি। সংকর জাতের খামারের তুলনায় দেশি গরুর খামারে এত বেশি দুধ উৎপাদন সম্ভব নয়। গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় দেশি খামারে মালিকদের লোকসান গুনতে হচ্ছে।
রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আব্দুর রহমানের ফ্ল্যাটে ঢুকে তার ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করেছে এক দুর্বৃত্ত। বিচাকরের ছেলের নাম তাওসিফ রহমান সুমন। এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী ও হামলাকারী যুবকও আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা ৩টার দিকে নগরের ডাবতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। স্পার্ক ভিউ নামের দশতলা ভবনের পাঁচ তলার একটি ফ্ল্যাটে ভাড়া থাকেন বিচারক।
আবদুর রহমানের গ্রামের বাড়ি জামালপুর জেলায়। তিনি পরিবার নিয়ে নগরের ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বসবাস করতেন। তাওসিফ রহমান নবম শ্রেণিতে পড়ত বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রামেক হাসপাতালের মুখপাত্র শংকর কুমার বিশ্বাস বলেন, তাসমিন নাহারকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার শরীরে অস্ত্রপচার করা হচ্ছে। ঘটনাস্থল থেকে একজন দুর্বৃত্তকে আটক করা হয়েছে। আহত হওয়ায় তাকেও রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামলাকারী হিসেবে আটক ব্যক্তির নাম ইমন। তার বাড়ি গাইবান্ধায়। ভবনে ঢোকার সময় ওই যুবক দারোয়ানের কাছে থাকা খাতায় নিজের নাম লিখেছেন লিমন। ‘বিচারকের ভাই’ পরিচয় দিয়ে তিনি পাঁচ তলার ফ্ল্যাটে যান।
ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী বলেন, ওই যুবককে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারককে ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তবে তার আগে নাম ও মুঠোফোন নম্বর লিখিয়ে নেন। দুপুর আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান, ফ্ল্যাটে বিচারকের ছেলেকে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, নিহত সুমনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। আর হামলকারী যুবক ও বিচারকের স্ত্রীকে অস্ত্রোপচার কক্ষে নিয়ে যাওয়াা হয়েছে।
খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান। পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হামলাকারী ব্যক্তির পকেটে একটি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া গেছে। ধারণা করা হচ্ছে তিনি চালক। তার সঙ্গে পূর্ববিরোধ থাকতে পারে।
পুলিশ কমিশনার জানান, সিলেটের সুরমা থানায় এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে জিডি করেছিলেন তাসমিন নাহার। কেন এই ঘটনা ঘটেছে তা তারা এখনো বিস্তারিত জানেন না।
কক্সবাজারের সেন্টমার্টিনের ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ-সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ খাদ্য ও নির্মাণ সামগ্রীসহ ২২ জন পাচারকারীকে আটক করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। বৃহস্পতিবার ১৩ নভেম্বর বিকেলে কোস্ট গার্ড পূর্ব জোনের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট বিএন শাকিব মেহবুব এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়- একটি চক্র বাংলাদেশি পণ্যের বিনিময়ে ইয়াবা, মদসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য মিয়ানমার থেকে দেশে আনার পরিকল্পনা করছে। এ তথ্যের ভিত্তিতে গত বুধবার রাত ১টার দিকে কোস্ট গার্ডের জাহাজ জয় বাংলা সেন্টমার্টিন ছেড়াদ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম সংলগ্ন সমুদ্র এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে।
অভিযানে সন্দেহজনক দুটি ফিশিং ট্রলার থামিয়ে তল্লাশি চালানো হলে শুল্ক-কর ফাঁকি দিয়ে মিয়ানমারে পাচারের উদ্দেশ্যে নেওয়া প্রায় ৩৩ লাখ ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের ৬০০ বস্তা মটর ডাল ও ৬৫০ বস্তা সিমেন্ট জব্দ করা হয়। এ সময় পাচারে জড়িত ২২ জনকে আটক করা হয়। জব্দকৃত মালামাল, ট্রলার ও আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কোস্ট গার্ডের ওই কর্মকর্তা। তিনি আরও বলেন, পাচার ও চোরাচালান রোধে কোস্ট গার্ডের এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও অব্যাহত থাকবে।
ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক, অভিভাবক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে দিনব্যাপী আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে এই আনন্দ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. আবুল বাশার মৃধার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী মহিলা দল কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ফরিদপুর-৩ সদর আসনের বিএনপি মনোনীত এমপি প্রার্থী চৌধুরী নায়াব ইউসুফ।
অনুষ্ঠানে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সমাজ সেবক মো. হানিফ মনণ্ডল, ফরিদপুর জেলা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আফজাল হোসেন খান পলাশ, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এএফএম কাইয়ুম জঙ্গি, ফরিদপুর সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান বেনজীর আহমেদ তাবরিজ, সাদীপুর উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল হালিম মিয়াসহ অন্যান্যরা।
আনন্দ উৎসবকে কেন্দ্র করে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কুচকাওয়াজ ও মনোঙ্গ ডিসপ্লে প্রদর্শন ও নানা খেলার অয়োজন করে। পবিত্র কোরআন তেলওয়াত ও জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্যে দিয়ে আনন্দ উৎসবের সূচনা হয়।
এ সময় অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চৌধুরী নায়াব ইউসুফ বলেন, গত বছরেই ফ্যাসিবাদীর শাসন শেষ হয়েছে। আমরা একটি নতুন সময়ে পর্দাপন করেছি, নতুন একটি ফরিদপুর পেয়েছি। কিন্তু আমাদের মাঝে এখনো সেই ফ্যাসিবাদী পেতাত্বারা রয়েছে। তাদের ব্যাপারে আমাদের সবসময়ই সচেতন থাকতে হবে। দেশে অনেক ষরযন্ত্র চলছে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে। এ মুহূর্তে আমাদের নির্বাচনটি হওয়া খুবই জরুরি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না। এ সময় চৌধুরী নায়াব ইউসুফ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের ফেজবুক ও অনলাইন ছেড়ে পড়াশোনা বিশেষভাবে মনোনিবেশ করতে হবে। পড়াশোনার জন্য সময় ব্যয় করতে হবে। কারণ আগামীতে তোমাদেরই দেশের জন্য বড় ভূমিকা রাখতে হবে।
মাগুরা জেলা প্রশাসককে বিদায় জানাতে প্রেসক্লাব সম্মেলন কক্ষে এক শুভেচ্ছা বিনিময় সভার আয়োজন করা হয়।
প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার বিকালে এ সভার আয়োজন করা হয়। এ সময় ফুল এবং ক্রেস্ট দিয়ে জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামকে বিদায় শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে জেলা প্রশাসক মো. ওহিদুল ইসলাম মাগুরার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের দিক তুলে ধরে বলেন ৫ আগস্টের পর মাগুরার প্রশাসনিক পরিস্থিতি দুর্বল হয়ে পড়েছিল তারপর আমি জেলা প্রশাসকের দায়িত্বে আসার পর সর্বস্তরের মানুষের সমন্বয়ে মাগুরাকে একটি উন্নত জেলা হিসেবে গড়ে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেছি। তিনি আরও বলেন, মাগুরা ডায়াবেটিস হাসপাতালের উন্নয়ন মেডিকেল কলেজের ভূমি অধিগ্রহণের সমস্যার সমাধান করেছি।
এছাড়া তিনি মাগুরার চক্ষু হাসপাতাল ও শিশু হাসপাতালের উন্নতি এবং মাগুরা কালেক্টরেট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ও সূর্যমুখী শিশু বিদ্যালয়ের মেধাবী ও গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে বৃত্তি কল্যাণ ফান্ড গঠন করেন। মাগুরায় খেলাধুলার মান উন্নত করতে বিভিন্ন ইভেন্টে টুর্নামেন্ট চালু করা হয়। মাগুরা শিল্পকলা একাডেমির উন্নয়নে তার যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। এছাড়া জুলাই আগস্টে শহীদ পরিবার ও আহতদের সঠিক তালিকা করে তাদের আর্থিক অনুদান প্রদান করেন। তিনি বিভিন্নভাবে মাগুরায় উন্নয়নের চেষ্টা করে গেছেন এবং এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
এ সময় মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইদুর রহমান এবং ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাসুম বিল্লাহ কলিন্স, দপ্তর সম্পাদক শেখ ইলিয়াস মিথুন, সাংবাদিক শরীফ তেহেরান টুটুলসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা তার কাজের প্রশংসা করে মূল্যবান বক্তব্য রাখেন।
সচেতন নাগরিক কমিটি, ইয়েসগ্রুপ (সনাক) ও এসিজি মাদারীপুর শাখার সদস্যদের সমন্বয়ে টিআইবির সহায়তায় মাদারীপুরে স্থানীয় পর্যায়ে দর্নীতিবিরোধী অভিজ্ঞতা বিনিময়ে বৃহস্পতিবার সরকারি সমন্বিত অফিস ভবনের মাল্টিপারপাস হল রুমে এক আলোচনা সভা ও মতবিনিময়ের আয়োজন করা হয়। সচেতন নাগরিক কমিটি মাদারীপুর জেলা শাখার সভাপতি খান মো. শহীদের সভাপতিত্বে ও কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য শাহাদাত হোসেন লিটনের সঞ্চালনায় এসময় দুর্নীতি প্রতিরোধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে বক্তব্য রাখেন, সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর জেলা শাখার সভাপতি মো. এনায়েত হোসেন নান্নু, ইয়েস গ্রুপ (সনাক)-এর জেলা শাখার আহ্বায়ক আঞ্জুমান জুলিয়া, জেলা সনাকের সহসভাপতি আন্না আক্তার, সুজনের সদস্য কুমার লাভলুসহ অন্যান্য প্রতিনিধিরা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশাল বাংলাদেশের ঢাকাস্থ কো-অর্ডিনেটর মো. আতিকুর রহমান, ক্লাস্টার কো-অর্ডিনেটর মাহান-উল-হক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রবীণ শিক্ষক মহাদেব বর্মন, প্রফেসর (অব.) মো. মকবুল হোসেনসহ মাদারীপুর জেলা শাখার অন্যান্য প্রতিনিধিরা। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, দুর্নীতি আজ সমাজে এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে, সরকারি-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত কোনো প্রতিষ্ঠান আর বাকি নাই। এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে না পারলে দুর্নীতিবাজরা অপ্রতিরোধ্যভাবে দুর্নীতি চালিয়ে যাবে। টিআইবি এ জন্য ২০০১ সাল থেকে প্রথমে ৯ জন সদস্য নিয়ে ঢাকায় কাজ শুরু করলেও সারাদেশে আজ এর সদস্য সংখ্যা ১২ হাজারেরে উপরে। দুর্নীতিবিরুদ্ধে ব্যক্তি পর্যায় থেকে শুরু করে, সামাজিক, সাংগঠনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়েও আন্দোলন গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নাই। রন্ধ্রে-রন্ধ্রে আজ দুর্নীতি ছেয়ে গেছে। দেশ থেকে ২৮ লাক কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। লন্ডনে বিগত সরকারের একজন মন্ত্রীর ৩৬০টি ফ্লাট বাড়ির খবর পাওয়া গেছে।
বক্তারা আরও বলেন, ভূমি অফিস, বিআরটিএ, রেজিস্ট্রি অফিস, পাসপোর্ট অফিসসহ সকল অফিসে দুর্নীতির খবর হরহামেশা পাওয়া যায়। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক বাংলার মাদারীপুর প্রতিনিধি শরীফ মো. ফায়েজুল কবীরসহ অন্যান্য গণ্যমান্য ব্যক্তিরা।
বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকতে ঘুরতে যাওয়ার পথে কক্সবাজারের চকরিয়ায় বাস ও মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে গুরুতর আহত কলেজ ছাত্র শাহেদ মজুমদার লিশান বুধবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন। ঢাকার নিউরো সাইন্স হসপিটালে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। লিশান বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন এন্ড টেকনোলজির অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ও চৌদ্দগ্রাম পৌরসভার ফালগুনকরা গ্রামের আবদুল মন্নান মজুমদারের একমাত্র ছেলে। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন নিহতের জেঠাতো ভাই সৈকত মজুমদার
জানা গেছে, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ফাঁসিয়াখালী ঢালা এলাকায় গত ৫ নভেম্বর বুধবার সকালে চট্টগ্রামমুখী মারসা পরিবহনের একটি বাসের সাথে কক্সবাজারমুখী মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মারা যান লিশাসনের বোন ফারজানা মজুমদার লিজা, ফারহানা মজুমদার টিজা, মা রিজওয়ানা মজুমদার শিল্পী, বোনের শাশুড়ী রুমি বেগম ও ননদ সাদিয়া পাটোয়ারী। আহত হন লিশান মজুমদার, দুলাভাই উদয় পাটোয়ারী ও ভাগিনা সানাদ পাটোয়ারী। খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন, ফায়ার সার্ভিস কর্মী ও প্রশাসন আহতদেরকে উদ্ধার শেষে চকরিয়া ও কক্সবাজারের হাসপাতালে ভর্তি করায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য লিশান মজুমদারকে প্রথম দুইদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ও পরে চট্টগ্রাম পার্কভিউ হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় লিশান মজুমদারকে বুধবার সকালে ঢাকার নিউরো সাইন্স হসপিটালে প্রেরণ করলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সন্ধ্যায় তাঁর মৃত্যু হয়। আগে স্ত্রী ও দুই মেয়ের পর একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে পিতা আবদুল মন্নান মজুমদার বাকরুদ্ধ।
বুধবার সন্ধ্যায় নিহতের প্রতিবেশি সাংবাদিক আবু বকর সুজন বলেন, একটি দুর্ঘটনায় একই পরিবারের ৪ জন সদস্য মারা যাওয়ায় একা হয়ে পড়েছেন আবদুল মন্নান মজুমদার।
২০২১ সালের জুন মাস নাগাদ দেওয়ানগঞ্জের জিল বাংলা চিনিকলটিতে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ ছিল। পুঞ্জীভূত ঋণের সুদসহ বর্তমানে তা দাঁড়িয়েছে ৭০৬ কোটি ২ লাখ টাকায়। পুঞ্জীভূত ওই ঋণের বিপরীতে শুধু ২০২৫ সালের জুন মাসে সুদ দিতে হয়েছে ৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা। তিন বছরের সুদের সামারী হিসেব করলে দেখা যায়, ২০২৩ থেকে ২০২৫ সালের জুন মাসে ৮৪ কোটি এক লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছে। যার কারণে প্রতি অর্থ বছরে মিলটির লোকসানের বোঝা বড় হচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জিল বাংলা চিনিকল লিমিটেড উৎকৃষ্ট মানের চিনি উৎপাদনকারী ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান। বাজারে এ মিলের উৎপাদিত চিনির ব্যাপক চাহিদা। দেশের অন্যান্য মিলগুলোর তুলনায় জিল বাংলা চিনিকলে চিনি উৎপাদনের হার সর্বাধিক।
বিগত পাঁচ বছরের তথ্যানুসন্ধানে দেখা যায়, ২০২০-২১ মৌসুমে ৬.৬৪, ২০২১-২২ মৌসুমে ৭, ২০২২-২৩ মৌসুমে ৬.৬১, ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৬.০৪ এবং সর্বশেষ ২০২৪-২৫ আখ মাড়াই মৌসুমে মিলটির চিনি উৎপাদনের হার ছিল ৬.৩৮ শতাংশ। এরপরও প্রতি অর্থবছরে চিনিকলটিকে গুনতে হচ্ছে বিপুল পরিমাণ লোকসান। কর্তৃপক্ষের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে পুঞ্জীভূত ঋণের সুদ দিতে গিয়ে লোকসান গুনতে হচ্ছে মিলটিকে।
জিল বাংলা চিনিকল লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) শরিফ মো. জিয়াউল হক জানান, ২০২১ সালের জুন মাস নাগাদ মিলটিতে ৪৫০ কোটি টাকা ঋণ ছিল। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ২১৬ কোটি এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের ২৩৪ কোটি টাকা। বর্তমানে ঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৭০৬ কোটি ২ লাখ টাকায়। এর মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ২৭৭ কোটি ৯৮ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সরকার ও অন্যান্য খাতে ১৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্যশিল্প করপোরেশনের কাছে ২৪৪ কোটি ৫ লাখ টাকা। তার বিপরীতে গত ২৩ সালের জুন মাস নাগাদ ২৫ কোটি ৬৩ লাখ টাকা, ২৪ সালের জুন মাস নাগাদ ২৬ কোটি ৮ লাখ টাকা এবং ২০২৫ সালের জুন মাস নাগাদ ৩২ কোটি ৩০ লাখ টাকা সুদ দিতে হয়েছে। সুদ মওকুফ করা হলে মিলটির লোকসান ৭০ শতক কমে আসবে বলে দাবি তার।
গত পাঁচ বছরের আখ মাড়াই, চিনি উৎপাদন ও লাভ-লোকসানের রেকর্ড অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২০-২১ মৌসুমে ৭২ দিনে ৫৮ হাজার ৯৫১ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে ৩ হাজার ৯০৮.৫০ টন চিনি। ওই মৌসুমে লোকসান ৬৯ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ২০২১-২২ মৌসুমে ৪৪ দিনে ৩৫ হাজার ৬৯৮ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে ২ হাজার ৪৯৮ টন। ওই মৌসুমে লোকসান ৫২ কোটি ৯৬ লাখ টাকা। ২০২২-২৩ মৌসুমে ৪১ দিনে ৩৫ হাজার ১৭১.৬৬ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে ২ হাজার ৩২২ টন। ওই মৌসুমে লোকসান ৫৩ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ২০২৩-২৪ মৌসুমে ৫২ দিনে ৪৪ হাজার ৯৮৮ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে ২ হাজার ৭১৭ টন। ওই মৌসুমে লোকসান ৪৪ কোটি ৬৩ লাখ টাকা। সর্বশেষ ২০২৪-২৫ মাড়াই মৌসুমে ৮৩ দিনে ৭২ হাজার ৭৯ টন আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদন করে ৪ হাজার ৫৯৯ টন। ওই মৌসুমে লোকসান ৪৭ কোটি ২০ লাখ টাকা।
জিল বাংলা চিনিকল ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি একেএম রায়হানুল আজীম ইমরানের ভাষ্য, পুঞ্জীভূত ঋণের সুদ দিতে গিয়ে প্রতি অর্থবছরে বাড়তি লোকসানের মুখে পড়ছে মিলটি। এ অবস্থায় স্বল্প মূলধনের নতুন ‘প্রজেক্ট বাই প্রোডাক’ উৎপাদন করতে পারলে মিলটি লাভবান হবে। পুঞ্জীভূত ঋণের সুদ মওকুফ করে স্বল্পমূলের প্রজেক্ট বাই প্রোডাক্ট উৎপাদনের জন্য সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
জিল বাংলা চিনিকলের মহাব্যবস্থাপক (কৃষি) মো. কাওছার আলী সরকার জানান, দেশের অন্যান্য চিনিকলের তুলনায় জিল বাংলা চিনিকলে চিনি আহরণের হার সর্বাধিক। এরপরও পুঞ্জীভূত ঋণের কারণে মিলটিকে প্রতি বছর লোকসান দিতে হচ্ছে। সুদ মওকুফ করে মিলটিতে শিল্পে বহুমুখী করা হলে মিলটি লাভজনক শিল্পে রূপান্তরিত হবে। সুদ মওকুফের দাবি তার।
বিষয়টি নিয়ে কথা হয় জিল বাংলা চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. তরিকুল আলমের সঙ্গে। তিনি জানান, জিল বাংলা চিনি কল লিমিটেড বাংলাদেশের সর্বপেক্ষা উৎকৃষ্টমানের চিনি উৎপাদনকরী প্রতিষ্ঠান। পুঞ্জীভূত ঋণের কারণে মিলটিকে প্রতি বছর লোকসানের বোঝা টানতে হচ্ছে। পুঞ্জীভূত ঋণের সুদ মওকুফের জন্য সদরদপ্তরে জানিয়েছেন বিগত এমডিরা। সরকার সদয় হয়ে ঋণের সুদ মওকুফ করলে মিলটি লোকসান একেবারেই কমে আসবে।
মাদারীপুরের শিবচরে হত দরিদ্রদের মাঝে বিনামূল্যে গাভী বিতরণ ও গাভী পালন প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩, নভেম্বর) সকালে স্থানীয় বেসরকারী সংস্থা ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ভিডিএস) এর উদ্যোগে ও বাংলাদেশ এনজিও ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে উপজেলার বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদে এ কর্মসুচি পরিচালিত হয়।
এসময় বাঁশকান্দি ইউনিয়নের ৭টি হতদরিদ্র পরিবারের মধ্যে ৭টি গাভী বিতরণ ও উপকার ভোগীদের গাভী পালন প্রশিক্ষণ দেয়া হয়। বাঁশকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের ২ নং ওয়ার্ড মেম্বার ও প্যানেল চেয়ারম্যান মো: সরোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিবচর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ,এম ইবনে মিজান। তিনি উপকারভোগীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আপনারা বিনামূল্যে প্রাপ্ত গাভীগুলোর যথাযথ যত্ন নিবেন, তাহলে সেগুলো হৃষ্টপুষ্ট ও বড় হয়ে বাচ্চা দেবে, দুধ দেবে। আপনাদের অর্থনৈতিক চাকা সচল হবে। আপনারা গাভীগুলো যেনো আবার অগোচরে বিক্রি করে না দেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ভিডিএস) এর পরিচালক এ,বি,এম মাহবুব হোসেন বাদল এর সার্বিক পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা হরিশ চন্দ্র বোস, উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা মোঃ বেল্লাল হোসেন, উপজেলা সমাজ সেবা কর্মকর্তা এ,বি,এম, সৌরভ রেজা শিহাব। এছাড়াও বাঁশকান্দি ইউনিয়নের প্রশাসনিক কর্মকর্তা দুলাল চন্দ্র মৃধা,বিভিন্ন ওয়ার্ডের সদস্য,স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য যে,ভিলেজ ডেভেলপমেন্ট সোসাইটি (ভিডিএস) একটি স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী (NGO) সংগঠন। বিগত ১৯৮৫ সাল থেকে মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে স্বাস্থ্য সেবা, স্যানিটেশন, নারীর ক্ষমতায়নসহ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সহ বিভিন্ন কর্মসূচী নিয়ে সফলতার সাথে কাজ করে আসছে।
রাজধানীর জাতীয় ঈদগাহ মাঠের পাশে পানির পাম্পের সামনে ফুটপাতে একটি ড্রাম থেকে এক ব্যক্তির খণ্ড-বিখণ্ড লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। যে ড্রামে লাশ পাওয়া গেছে পাশেই আরেকটি ড্রাম ছিলো যেখানে চাল পাওয়া যায়। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। এদিকে মরদেহ পাওয়া ব্যক্তির পরিচয় প্রথমেই জানতে পারেনি পুলিশ। পরে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ, বিশেষ শাখা এবং পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন ঘটনাস্থলে পৌঁছে খণ্ডিত মরদেহের সুরতহাল করে।
জানা যায়, নিহত ব্যক্তির নাম মো. আশরাফুল হক, বয়স ৪৩। তার পিতার নাম মো. আব্দুর রশিদ এবং মাতার নাম মোছা. এছরা খাতুন। বাড়ি রংপুর জেলার বদরগঞ্জ থানার গোপালপুর নয়াপাড়ায়।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর জানান, ‘বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটার দিকে একটি ভ্যান ড্রামগুলো ফেলে চলে যায়। ড্রামের ভেতর থেকে এক ব্যক্তির খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। আমরা তদন্ত শুরু করেছি এবং দেখতে চেষ্টা করছি কে বা কারা এই ড্রামগুলো রেখে গেছে।’
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢামেকে পাঠানো হয়। ধারণা করা হচ্ছে, দু-একদিন আগে হত্যার পর হত্যাকারীরা এখানে ড্রামে করে মরদেহ ফেলে গেছে। খণ্ডিত মরদেহের গলা থেকে পা পর্যন্ত সবকিছুই আলাদা করা।’
স্থানীয়রা জানান, হাইকোর্টের পাশে জাতীয় ঈদগাহ মাঠের কাছে একটি ভ্যান এসে দুটি নীল রঙের ছোট ড্রাম ফেলে চলে যায়। পরে স্থানীয়রা ড্রামগুলো দেখে সন্দেহ করলে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ড্রামগুলো খোলার পর প্রথমে মনে হয় যে ড্রামগুলোতে চাল রাখা আছে। কিন্তু পরে ড্রামের ভেতরে মানুষের খণ্ডিত দেহের অংশ দেখতে পান।
পুলিশ ও অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্র গণমাধ্যমকে জানায়, মরদেহের আঙুলের ছাপ থেকে তার পরিচয় শনাক্ত করা হয়েছে এবং মরদেহটি মোট ২৬টি টুকরোয় খণ্ডিত ছিল।
ঢাকা মহানগর পুলিশের রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মো. মাসুদ আলম বলেন, জাতীয় ঈদগাহ মাঠের পাশে দুটি ড্রাম পাওয়া গেছে- একটিতে লাশ, অন্যটিতে চাল। আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে- তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এদিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ড্রামগুলো খোলার পর প্রথমে মনে হয় যে ড্রামগুলোতে চাল রাখা আছে। কিন্তু পরে ড্রাসের ভেতরে মানুষের খণ্ডিত দেহের অংশ দেখতে পান।
মাগুরা জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলামের বদলিজনিত বিদায় উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছে জেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা ও সুধীজনরা। বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে পুলিশ সুপার মিনা মাহমুদা বিপিএম, সিভিল সার্জন ডা. শামীম কবীর গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী নাহিদ পারভেজ, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বিএনপি মনোনীত মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী মনোয়ার হোসেন খান, জেলা জামায়াতের মাগুরা-২ আসনের মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী এমবি বাকের, মাগুরা প্রেসক্লাবের সভাপতি অধ্যাপক সাইদুর রহমান, মাগুরা বারের সভাপতি শাহেদ হাসান টগর, ইসলামী আন্দোলন মাগুরা জেলা শাখার সভাপতি মুফতি মোস্তফা কামাল, ওলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা ওসমান গনি সাঈফী, মাগুরা জজ আদালতের জিপি মঞ্জুরুল হাসান, মাগুরা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মহশীন ফকির, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আলমগীর কবীর, উপপরিচালক যুব উন্নয়ন ইলিয়াসুর রহমানসহ জেলা পর্য়ায়ের কর্মকর্তারা বক্তব্য রাখেন।
এ সময় অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট শাশ্বতী শীল, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সার্বিক আব্দুল কাদের, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব মাহবুবুল হক, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী হাসিনা মমতাজ, মাগুরা এখন এসে আই সহকারী পরিচালক রাজিব হাসান, প্রমুখ। বিদায়ী জেলা প্রশাসক মো. অহিদুল ইসলাম তার বিদায়ী বক্তব্যে মাগুরার বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তা মাগুরা জেলার সুধীজন এবং জনগণের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং মাগুরার উন্নয়নে সকলকে সক্রিয় থাকার আহ্বান জানান।