রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের চারারীর বিল। আসলে ৪০ বছর আগে এটি বিল ছিল। ক্রমে ভরাট হয়ে যায়। এরপর ব্যক্তি-মালিকানায় রেকর্ডও হয় এর অনেকটা অংশ। বর্তমানে সেখানে চাষাবাদ হচ্ছে। হঠাৎ করেই বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য তিন কোটি টাকা ব্যয়ে চারারীর বিলের বড় একটি অংশসহ গোপীনাথপুরের নৈমুল্লার বিল ও পৌর শহরের পাটোয়াকামড়ী বিল খননের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, সড়কের পাশে আবাদি জমি নষ্ট করে বিল উদ্ধারের নামে খনন করা হচ্ছে। এটি আসলে প্রকল্পের টাকা লুটপাটের চেষ্টা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের।
চারারীর বিল ১৩ একর ১৮ শতক, নৈমুল্লার বিল ১২ একর ৫০ শতক ও পাটোয়াকামড়ী বিল ১১ একর ৩০ শতক খননের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি এই খননকাজ শুরু করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘চারারীর বিলটি ৪০ বছর আগেই আবাদি জমিতে পরিণত হয়। তখন থেকে এলাকার মানুষ ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছিলেন। সেখানে খনন প্রকল্প নিয়ে বরেন্দ্রর কর্মকর্তারা ঠিকাদারের সঙ্গে মিলে লাখ লাখ টাকা হরিলুট করে খাচ্ছেন।’
‘নৈমুল্লার বিল খননে বরাদ্দ ১ কোটি টাকার ওপর। কিন্তু সেখানে সর্বোচ্চ কাজ হবে ১০ লাখ টাকার,’ বললেন গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমান।
আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বলেন, ‘সবাই জানে সরকারি টাকা হরিলুট করতেই খনন প্রকল্প হাতে নিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।’
সম্প্রতি পৌর শহরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে পাটোয়াকামড়ী প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পে চারটি এক্সকাভেটর যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে খননকাজ করা হচ্ছে। এই যন্ত্রগুলোর চালক সুমন ও আতিক বলেন, ‘৬০ লাখ ৪৩ হাজার টাকার পাটোয়াকামড়ী বিলের পুনর্খননের কাজটি মূল ঠিকাদার স্বপনের কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকায় নিয়েছেন সাব ঠিকাদার শাহাদত।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার স্বপন বলেন, ‘শাহাদতের কাছে কোনো কাজ বিক্রি করিনি। শাহাদতসহ চারজন যৌথভাবে ওই প্রকল্পের কাজ করছি।’
পৌর সভার প্যানেল মেয়র মানিক রায় বলেন, ‘এই জায়গাটির মূল্য শত কোটি টাকা। বছরে দুই ফসল হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জায়গা যেন অনাবাদি না থাকে। আর সেই আবাদি জায়গায় খাল খনন করে পৌরবাসীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।’
পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরী বলেন, ‘পৌর শহরের ভেতর এই জায়গাটি খাল খনন না করে বড় ধরনের যে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যেত, এতে এলাকার হাজারও মানুষের কর্সংস্থানের ব্যবস্থা হতো।’
এদিকে চারারীর বিলের ব্যক্তি-মালিকানাধীন আবাদি জমি খননে প্রশাসন এনওসি দিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। এরপর কর্তৃপক্ষ বিল খননে দরপত্র আহ্বান করলেও স্থানীয়দের বাধার মুখে তা করতে পারছে না।
এ বিষয়ে কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক বলেন, ‘রেকর্ডভুক্ত জমি খনন করতে প্রশাসন কীভাবে এনওসি দেয়। আর দিলেও এখন খনন করতে পারছে না কেন। এসব করে শুধু এলাকার মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান মানিক আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘চারারীর বিল খননকাজে যে বরাদ্দ নেয়া হয়েছে, তার অর্ধেক টাকাও খনন করতে লাগবে না। মূলত বরেন্দ্র যত্রতত্র খননকাজ নিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে টাকা লুটপাট করছে।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের নৈমুল্লার বিল এলাকায় খননকাজ করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়ে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘বিলটি খনন করতে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু বরাদ্দ নেয়া হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ টাকা।’
এ বিষয়ে রংপুর নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মশিউর রহমান বলেন, ‘দরপত্রের আগে স্থানীয় প্রশাসন তিনটি বিলের এনওসি দিয়েছে। সেখানে বলা ছিল, সরকারি বিল খননে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এখন অনেক বাধা। বিলের দরপত্র নিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাজে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। থাকলে এত কাজ করতে পারতাম না।’
রংপুরের প্রকল্প সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। বিধি অনুযায়ী বদরগঞ্জের তিনটি বিলের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এখন শুনছি, বিলের কিছু অংশ নাকি ব্যক্তি-মালিকানায় আছে। যদি কারও মালিকানায় থাকে তাহলে সেটি বাদ দিয়ে খননকাজ করা হবে।’
এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, ‘পৌর শহরে বিল খননে সংসদ সদস্য ডিও লিটার দেয়ায় সেখানে খনন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যদি সেখানে কারও নামে রেকর্ড থাকে তাহলে সেটি বাদ দিয়ে খনন করতে বলা হয়েছে।’
মানিকগঞ্জের সিঙ্গাইরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) চারুকলা অনুষদের শিক্ষার্থী শাকিল আহমেদের (২৪) মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার দক্ষিণ জামশা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তার মরদেহ করে পুলিশ।
নিহত শাকিল ঢাবির চারুকলা অনুষদের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি দক্ষিণ জামশা গ্রামের নাসিরুদ্দিন আহমেদের ছেলে।
সিঙ্গাইর পুলিশ জানায়, প্রায় সাত থেকে আট মাস আগে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে অন্যের পোস্টে ধর্ম নিয়ে কটূক্তিকর মন্তব্য করেন। পরে নিজের ভুল বুঝতে পেরে তিনি কমেন্ট মুছে ফেলেন। এরপর গত সোমবার ওই কমেন্টের স্ক্রিনশট ফেসবুকে নতুন করে ভাইরাল হয়। এ নিয়ে ফেসবুকে শাকিলকে অনেকে হুমকি দেন। সোমবার রাতে নিজ এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষজন বাড়িতে গিয়ে শাকিলকে ও তার পরিবারকে হুমকি দেন। এরপর মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এ বিষয়ে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিক আজম বলেন, মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে ওই শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
নরসিংদীর শিবপুরে বাসচাপায় মোটরসাইকেলের আরোহী তিন তরুণ নিহত হয়েছেন। সম্পর্কে তারা একে অপরের বন্ধু ছিলেন।
গতকাল সোমবার (৯ জুন) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা ইটাখোলা-শিবপুর আঞ্চলিক সড়কের বান্দারদিয়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন— একই উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের মির্জাকান্দি এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫), একই এলাকার বাবুল মিয়ার ছেলে অপু মিয়া (২০) ও বদু মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া (২৩)।
স্বজনরা জানান, সোমবার সন্ধ্যার দিকে সাইফুল, অপু ও আশিক নরসিংদী শহরে ঘুরতে গিয়েছিলেন। রাত সাড়ে ১১টার দিকে বাড়ি ফেরার পথে বান্দারদিয়া এলাকায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি বাসের সামনে পড়ে যায় তাদের মোটরসাইকেল। এতে মোটরসাইকেলটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং তিনজনই সড়কে ছিটকে পড়ে গুরুতর আহত হন।
স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে শিবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক সাইফুল ইসলাম ও আশিক মিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে গুরুতর আহত অপু মিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। তবে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনিও মারা যান বলে জানিয়েছে পুলিশ।
দুর্ঘটনার তিন তরুণের নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে শিবপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অজয় বালা জানান, নিহতদের পরিবার থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে মেডিকেল অফিসার ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর উপর হামলার অভিযোগে সোহেল হাওলাদার (২৫) নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ।
আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় হাসপাতালটির জরুরী বিভাগে এ ঘটনা ঘটে।
আটককৃত যুবক সোহেল হাওলাদার উপজেলার ফেরধারা গ্রামের বিএনপি নেতা আব্দুল আজিজ হাওলাদারের ছেলে।
জানা গেছে, ঘটনার সময় ডাক্তার অনুপম বাড়ৈ নিজ কক্ষে রোগী দেখছিলেন। রুমে থাকা রোগীরা বের হয়ে গেলে হঠাৎ সোহেল হাওলাদার রুমে প্রবেশ করে দরজার সিটকানী বন্ধ করে দেয়। এরপর সোহেলের হাতে থাকা একটি এসএস পাইপ দিয়ে ডাক্তার অনুপম বাড়ৈকে বেধরক পিটাতে থাকে। এসময় তার চিৎকারে হাসপাতালের কর্মচারীরা রুমের দরজা ভেঙ্গে ডাক্তার অনুপম বাড়ৈকে উদ্ধার ও হামলাকারী সোহেল হাওলাদারকে আটক করে।
পরবর্তীতে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার কুমার মৃদুল দাস পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে যুবক সোহেল হাওলাদারকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এ ঘটনায় হামলার শিকার ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর পক্ষ থেক কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
ডাক্তার কুমার মৃদুল দাস বলেন, আমি যতটুকু জানতে পেরেছি, গত কয়েকদিন আগে সোহেল নাকি এক রোগী নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। তখন তিনি নাকি কাঙ্খিত সেবা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। এই অভিযোগ এনে আজ সকালে জরুরী বিভাকে কর্মরত ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে তাকে বেধরক পিটিয়েছে। এ ঘটনায় ডাক্তার অনুপম বাড়ৈ অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি আমি আমার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, ডাক্তার অনুপম বাড়ৈর পক্ষ থেকে কোটালীপাড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। কোটালীপাড়া থানা পুলিশ যুবক সোহেল হাওলাদারকে ইতোমধ্যে আটক করেছে। আমরা আইনগতভাবে এর সুষ্ঠ বিচার চাই।
কোটালীপাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। মামলার প্রস্তুতি চলছে। তদন্তপূর্বক পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
গত ১ সপ্তাহ ধরে গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে পুড়ছে দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়। দিনের বেলায় প্রচণ্ড রোদ আর গরমে জনজীবন অতিষ্ঠ। প্রচন্ড তাপদাহের ফলে ঘর থেকে বের হতে পারছেনা মানুষ। তবে দিনের অংশে গরম হলেও রাতে পড়ছে ভারি কুয়াশা।
আজ মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ জেলাজুড়ে নেমে আসে ঘন কুয়াশা। সকাল ৮টা পর্যন্ত জেলার বেশ কয়েকটি এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি ধরনের কুয়াশা দেখা যায়।
এতে রীতিমতো অবাক হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
সদর উপজেলার ভাবরঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা মোমিনুল ইসলাম সবজি বিক্রি করতে এসেছেন পঞ্চগড় বাজারে। তিনি বলেন, গৃীস্মকালে এমন কুয়াশা তিনি কখনো দেখেননি। এমন আবহাওয়া থাকলে এ সময়ের অর্থকরী ফসলের ক্ষতি হতে পারে। কায়েত পাড়া গ্রামের আনিসুর রহমান বলেন, গত কয়েকদিন ধরে প্রচণ্ড গরম। বাদাম শুকানোর জন্যে এই আবহাওয়া ভালো। কিন্ত তীব্র গরমে টিকে থাকা মুশকিল হয়ে পড়েছে। দিন ও রাতে কষ্টের মধ্যে সময় কাটাচ্ছি। কিন্তু আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি চারপাশ কুয়াশায় ঢেকে গেছে, ভাবতেও পারিনি এমন কিছু দেখতে পাবো।
পঞ্চগড় সরকারী কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী রাকিব হাসান বলেন, নদ নদীতে পানি নেই অপরিকল্পিতভাবে সমতল ভূমি কেটে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে, কেটে ফেলা হচ্ছে
গাছপালা। ফলে প্রকৃতিতে বিপর্যয় নেমে আসছে। এদিকে গরমের পাশাপাশি প্রায় সকাল ৮টা পর্যন্ত কুয়াশা ছিল। এমন আবহাওয়া জীবনে কখনো দেখিনি। অবাক হয়ে গেছি।
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্র নাথ রায় বলেন, মূলত আকাশে ধূলিকণার পরিমাণ বেড়ে গেছে। যার কারণে বাতাসে সেগুলো জমে গিয়ে কুয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। একে ধূলিকণা প্রভাবিত কুয়াশা বলা যায়। এটি সাধারণ কুয়াশা নয়, বরং পরিবেশ দূষণ ও আবহাওয়ার বিশেষ অবস্থার কারণে সৃষ্টি।
তিনি আরও বলেন, মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ২৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে গতকাল সোমবার (৯ জুন) দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলমান দাবদাহের মধ্যে আগামী ১৪ জুন থেকে পঞ্চগড়ে বৃষ্টিপাত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে কিছুটা স্বস্তি মিলতে পারে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
মানিকগঞ্জের আরিচা-দৌলতপুর- টাঙ্গাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের ঘিওরে ফ্লাইওভার ব্রিজে বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে মটরসাইকেল আরোহী সিরাজুল ইসলাম শেখ ( ২৫ ) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। নিহত সিরাজুল ইসলাম শেখ দৌলতপুর উপজেলার চর গোবিন্দপুর গ্রামের মো. ঠান্ডু শেখের ছেলে।
রবিবার (৮ জুন) দুপুর ১ টার দিকে ঘিওর উপজেলার চরবাইলজুরী পঞ্চরাস্তায় ফ্লাইওভার ব্রিজের উপর এ দুর্ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দৌলতপুর থেকে ছেড়ে আসা স্বাধীনতা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে বরংগাইল থেকে আসা একটি রানার মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই মোটরসাইকেল আরোহী সিরাজুল ইসলাম শেখ মারা যান।
খবর পেয়ে ঘিওর থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুর্ঘটনা কবলিত বাস ও মোটরসাইকেল জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়।
ঘিওর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ রফিকুল ইসলাম এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানিয়েছে ।।
বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ভারতে যাওয়ার সময় গোপালগঞ্জ জেলার আওয়ামীলীগ এর সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম কে আটক করেছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। মঙ্গলবার ( ১০ জুন) সকাল ১১ টার সময় তাকে আটক করা হয়।
বেনাপোল ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইলিয়াস হোসেন মুন্সি জানান,পূর্ব থেকে ইমিগ্রেশনে খবর ছিল গোপালগঞ্জ জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক জি এম শাহাবুদ্দিন আজম ভারতে যেতে পারে।সেই মোতাবেক বহির্গমন বিভাগের সকল অফিসারকে সতর্ক করে দেওয়া হয়।পরবর্তীতে সকাল ১১ দিকে তার পাসপোর্টটি ডেস্ক এ জমা দিলে যাচাই-বাছাই করে তাকে আটক করা হয়। তার নামে একাধিক মামলা রয়েছে।
এ ব্যাপারে বেনাপোল পোর্ট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ রাসেল মিয়া বলেন ইমিগ্রেশনে আটক আসামী আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গোপালগঞ্জ থানায় তার নামে মামলা থাকায় তাকে গোপালগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা করা হবে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ব্যাটারী চালিত অটোরিক্সা ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ২ জন নিহত হয়েছে।
সোমবার রাতে উপজেলার তারাবো এলাকায় এ দূর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন, তারাবো সুলতানবাগ এলাকার দৈনিক ইনকিলাব পত্রিকার সাবেক রূপগঞ্জ প্রতিনিধি মরহুম আবুল হাসান আসিফের ছেলে শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫)।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, সোমবার রাতে তারাবো বিশ্বরোড এলাকা থেকে অটোরিক্সা যোগে তারাবো সুলতানবাগ এলাকার বাড়িতে ফিরছিলেন শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। পথিমধ্যে সাইফিং ফ্যাক্টরীর সামনে একটি হাইয়েস মাইক্রোবাসের সাথে অটোরিক্সাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষে অটোরিক্সাটি দুমড়েমুচড়ে যায়।
এ সময় ঘটনাস্থলেই নিহত হয় অটোরিক্সা চালক অজ্ঞাত (৩৫) এবং আহত হয় অটোরিক্সার যাত্রী শাহরিয়ার হাসান আকাশ (২৯) ও তার বন্ধু সায়মন (২৯), তামিম সরকার (২৯)। তাদের মধ্যে শাহরিয়ার হাসান আকাশ ও তার বন্ধু তামিম সরকারকে গুরুত্বর আহত অবস্থায়
স্থানীয়রা উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা শাহরিয়ার হাসান আকাশকে মৃত ঘোষনা করেন।
এ ব্যাপারে রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, দূর্ঘটনার পর হাইয়েস মাইক্রোবাসের চালক মাইক্রোবাসটি নিয়ে পালিয়ে যাওয়ায় তাকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয় নি।
কুষ্টিয়া শহরের একটি বহুতল ভবনের পার্কিং স্পেসে একটি বিলাসবহুল ল্যান্ড ক্রুজার প্রাডো গাড়ির সন্ধান মিলেছে। কোটি টাকা দামের গাড়িটি ঝিনাইদহ-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নিহত আনোয়ারুল আজীম আনারের বলে ধারণা করছেন পুলিশ ও স্থানীয়রা।
সোমবার (৯ জুন) দিবাগত রাত বারোটার দিকে কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনের আটতলা বিশিষ্ট সাফিনা টাওয়ার নামের ভবনের গ্যারেজে এটি খুঁজে পাওয়ার কথা জানায় পুলিশ। গাড়ির ভেতরে পাওয়া গেছে গাড়ির কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার। কালো রঙের গাড়িটির নম্বর ‘ঢাকা মেট্রো-ঘ ১২-৬০৬০’।
এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) স্বপন। তিনি বলেন, ‘গাড়ির খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। গাড়ি থেকে কাগজপত্র, সংসদ সদস্য ও সিআইপি স্টিকার উদ্ধার করা হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গাড়িটি সাবেক এমপি আনারের।’
বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে এবং গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। ে
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাব্বির বলেন, ‘প্রথমে শুনি সাবেক শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের গাড়ি রাখা আছে সাফিনা টাওয়ারের গ্যারেজে। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ এসে গাড়ির কাগজপত্র ও সংসদ সদস্যের স্টিকার উদ্ধার করে। গাড়ির চালক কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগার আলীর সাবেক চালক ছিলেন। তিনিই কাগজপত্র ও স্টিকার দেন। এতে দেখা যায়, গাড়িটির মালিক আনোয়ারুল আজীম আনার।”
তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী জুনায়েদ হোসাইন বলেন, ‘সাধারণ জনগণের কাছ থেকে জানতে পারি যে সাফিনা টাওয়ারে একটি দামি প্রাডো গাড়ি রাখা আছে, যা মাসের পর মাস বের করা হয় না, শুধু মাঝে মাঝে স্টার্ট দেওয়া হয়। পরে আমরা গিয়ে দেখি গাড়িটি। আমাদের দেখে চালক পালানোর চেষ্টা করেন। পরে একজনকে কল দেন, আমি তার সঙ্গে কথা বলি, কিন্তু তিনি কোনো তথ্য দেননি। পরে পুলিশ এসে কাগজপত্র উদ্ধার করে, যেখানে এমপি আনারের নাম পাওয়া যায়।’
ঘটনার তদন্ত করে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। এদিকে স্থানীয়রা জানান, জেনুইন লিফ কোম্পানি নামের একটি সিগারেট কোম্পানি ভবনের দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলা ভাড়া নিয়েছে। তারাই গাড়িটি এখানে রাখার ব্যবস্থা করেছে।
এ বিষয়ে বাসার কেয়ারটেকার আলমগীর হোসেন বলেন, ‘জেনুইন লিফ কোম্পানি ভবনের তিনটি তলায় ভাড়া নিয়েছে। সেখানে বিদেশিরা আসেন, থাকেন ও খাওয়াদাওয়া করেন। গাড়িটি তারাই রেখেছেন। কোম্পানির বেলাল স্যার জিএম ও জাহিদ স্যার সিইও। এর বেশি আমি জানি না।’
গাড়িটির চালক শান্ত বলেন, ‘পাঁচ বছর আগে আমি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগার আলীর গাড়ি চালাতাম। এখন জেনুইন লিফ কোম্পানির গাড়িচালক হিসেবে চাকরি করি। জিএম বেলাল স্যার ও সিইও জাহিদ স্যারের গাড়ি চালাই। তাদের হুকুমে আমি গাড়ি স্টার্ট দিয়েছি। গাড়ির মালিক কে, তা জানি না। আমি কখনো রাস্তায় গাড়িটি চালাইনি।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভবনের একজন নিরাপত্তাকর্মী বলেন, ‘গাড়িটি এনে তারা গ্যারেজে রাখেন। আমি জানতাম না এটি কার। আজ শুনলাম এটি এক এমপির। গাড়িটি কয়েক মাস ধরে রাখা আছে।’
এ বিষয়ে সাফিনা টাওয়ারের মালিক জেনুইন লিফ টোব্যাকোর সিইও জাহিদ ও জিএম বেলালের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি। তাদের অফিসে গিয়ে কেয়ারটেকার ও দারোয়ান ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাড়িটির রেজিস্ট্রেশন ও মালিকানা পত্রে এমপি আনারের নাম রয়েছে। এ ছাড়া, সাফিনা টাওয়ারের ফ্ল্যাট মালিক ও ভাড়াটিয়ার চুক্তিপত্র অনুযায়ী মেহেরপুর জেলার গাংনী পৌরসভার বাঁশবাড়িয়া দক্ষিণপাড়ার বাসিন্দা মো. মুস্তাফিজুর রহমান ভবনের তিনটি ইউনিট ও তিনটি গাড়ির পার্কিং স্পেস ভাড়া নিয়েছেন। গাড়িটি বর্তমানে তার পার্কিং স্পেসেই রাখা আছে।
তিনি ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে এটি ভাড়া নিয়েছেন। মুস্তাফিজুর রহমান কুষ্টিয়ার দশমাইল এলাকায় অবস্থিত ‘তারা টোব্যাকো’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারহোল্ডার।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে গাড়িটি কলকাতায় খুন হওয়া সাবেক সংসদ সদস্য আনারের। তবে গাড়িটির মালিকানা সম্পর্কে অধিকতর নিশ্চিত হওয়ার জন্য বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। একইসঙ্গে কে বা কারা গাড়িটি এনে এখানে রেখেছে, সেটিও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার তারাগুনিয়া এলাকার একটি বেসরকারি ক্লিনিকে সিজারিয়ান ডেলিভারির সময় আখি খাতুন (২২) নামের এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। অভিযোগ রয়েছে, ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এক রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে টাকার বিনিময়ে ঘটনাটি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করে এবং দ্রুত লাশ দাফনের পরামর্শ দেন।
নিহত আখি খাতুন উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়নের পূর্ব কবিরাজ পাড়া গ্রামের ইমনের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রোববার (৮ জুন) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আখিকে প্রথমে থানার মোড় এলাকার ‘আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’-এ নেওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা রোগীর জটিল অবস্থা বুঝে উন্নত পরীক্ষার পরামর্শ দেন। তবে রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, আলসেফা হাসপাতালের পরামর্শ উপেক্ষা করে তারাগুনিয়া ক্লিনিকের দালালদের প্ররোচনায় তাকে সেখানে নেওয়া হয়।
নিহতের মা ও খালা জানান, তারাগুনিয়ার আবুলের ক্লিনিকে (তারাগুনিয়া ক্লিনিক) নেওয়ার পর কয়েকজন চিকিৎসক আখিকে সিজারিয়ান অপারেশনের জন্য নিয়ে যান। সিজার শেষ করে বেডে আনার পর থেকেই রোগীর অবস্থা অস্বাভাবিক ছিল। চিকিৎসকরা একপর্যায়ে তার পেটে চাপাচাপি করে, পরে অবস্থার অবনতি দেখে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করেন, কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা আখিকে মৃত ঘোষণা করেন।
মৃতের পরিবার আরও বলেন, ক্লিনিকেই আঁখি মারা গিয়েছে কিন্তু ক্লিনিক মালিক দায়ভার এড়াতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড এর নাটক করে।
পরে মৃতদেহ আবার ক্লিনিকে ফেরত আনা হয় এবং মৃতের পরিবার ও এলাকাবাসী ক্লিনিকের সামনে হট্টগোল করে ও ক্লিনিক ভাঙচুরের চেষ্টা করলে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে স্থানীয় এক প্রভাবশালী নেতার বাড়িতে ডেকে নিয়ে টাকার বিনিময়ে মীমাংসা করেন এবং রাত ৮ টার সময় দাফন সম্পন্ন করা হয়।
ঘটনার বিষয়ে ওই দিন ব্যবহৃত অ্যাম্বুলেন্স চালক ফারুক হোসেন বলেন, "আমাকে ক্লিনিক থেকে রোগী গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়। কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা জানান, রোগী মারা গেছে। এরপর তারা জোরাজুরি করে ইসিজি করেন ও সদর হাসপাতাল থেকেই ডেট সার্টিফিকেট নিয়ে আবার ক্লিনিকে ফিরিয়ে আনা হয়।"
সিজারিয়ান অপারেশনে অংশ নেওয়া চিকিৎসকের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
আলসেফা ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও হাসপাতাল’ থেকে রোগী কেন ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবিষয় ওই প্রতিষ্ঠানের ব্যাবস্থাপক সুজন হোসেন জানান, “রোগীর শারীরিক সমস্যা বুঝতে পেরে আমরা উন্নত পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরামর্শ দিই। তবে রোগীর স্বজনরা আমাদের পরামর্শ না নিয়ে অন্য ক্লিনিকে চলে যান।”
এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী সিজারের ৬ ঘন্টা পূর্ব পর্যন্ত খাবার খাওয়া নিষেধ থাকলেও রোগী খাবার খেয়ে সেটা ডক্টরের কাছে গোপন রাখে যার ফলে সিজার পরবর্তী সমস্যা হয় ও রোগী মারা যায়।'
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের তেতৈতলা হাঁস পয়েন্ট এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় এক মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় আহত হয়েছে অপর একজন।
আজ সোমবার পৌনে বারোটার দিকে মহাসড়কের তেতৈতলা হাঁস পয়েন্ট এলাকায় এই ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
নিহতের নাম মোহাম্মদ ইয়াসিন (৩২)। সে নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার ধামগড় ইউনিয়নের আমূর বটতলা গ্রামের হারুন-অর-রশিদের ছেলে। আহত অপরজন তার বন্ধু ফয়সাল হোসেন (৩৩)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোটরসাইকেল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে কুমিল্লার দিকে যাচ্ছিল দুই বন্ধু। পথিমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া অংশের তেতৈতলা হাঁস পয়েন্ট এলাকায় আসলে চট্টগ্রামগামী একটি বাস মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দেয়। এতে গুরতর আহত হয় মোটরসাইকেলে থাকা দুই বন্ধু। পরে আশপাশের লোকজন ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।
হামদর্দ জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, 'দুপুর পৌনে একটার দিকে তাদের হাসপাতালে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত দুজনকে নিয়ে যাওয়া হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে একজনকে মৃত ঘোষণা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক। অপরজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া ভবেরচর হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ি ইনচার্জ মো. শওকত হোসেন বলেন,
'নিহতের লাশ বর্তমানে হামদর্দ জেনারেল হাসপাতালে রয়েছে। ঘাতক বাসটিকে আটক করেছে পুলিশ। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন'।
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রাম - গোমড়া ও কান্দুলীর বাসিন্দারা দীর্ঘদিন ধরে কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা এক যুগ এবং কান্দুলী গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা গত ৬ বছর ধরে কুরবানীর মাংস পায়নি। তবে এবার ‘দৈনিক বাংলাদেশের খবর’ পত্রিকায় বিষয়টি প্রকাশিত হওয়ার পর স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের উদ্যোগে এই দুটি গ্রামের মানুষ কোরবানির মাংস পেয়েছে।
গোমড়া গুচ্ছগ্রামের স্বামী পরিত্যাক্তা আঙ্গুরী বেগম (৭০) বলেন, ‘১২ বছর ধরে আমরা কোরবানির মাংসের স্বাদ পাইনি। এবার রক্তসৈনিক ফাউন্ডেশন আমাদের জন্য গরু দিয়েছে। আল্লাহ তাদের ভালো রাখুন।’
গুচ্ছগ্রামের সাধারণ সম্পাদক আলী বলেন, ‘আমাদের এলাকার অনেক গরিব মানুষ আছে যারা কোরবানি দিতে পারে না। এই উদ্যোগ আমাদের জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ। আমরা সংগঠনটির কাছে কৃতজ্ঞ।’
ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশরাফুল আলম রাসেল বলেন, ‘গুচ্ছগ্রামের দুঃস্থ মানুষেরা দীর্ঘদিন ধরে কোরবানির মাংস থেকে বঞ্চিত ছিল। স্থানীয় সংগঠন ও দাতাদের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। আমরা সামাজিক সংগঠনগুলোর সঙ্গে কাজ করে সবাইকে কোরবানির মাংসের আওতায় আনার চেষ্টা করব। আমাদের বিভাগীয় কমিশনার স্যারও গোসত পাঠাচ্ছেন। যদি কোনো অসহায় মানুষ কোরবানির মাংস না পেয়ে থাকে, আমরা নিশ্চিত করব যেন তারা গোসত পায়।’
পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর রক্তসৈনিক বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন সংগঠনটি বিষয়টি নজরে নিয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়। সংগঠনের সভাপতি রাজিয়া সামাদ ডালিয়া গোমড়া গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দাদের জন্য একটি গরু কোরবানির ব্যবস্থা করেন।
অন্যদিকে কান্দুলী গুচ্ছগ্রামে শাহ অলি উল্লাহ ইসলাম সেন্টার বাংলাদেশের তত্ত্বাবধানে এবং অরফান শেল্টার ফাউন্ডেশন, যুক্তরাজ্যের আর্থিক সহায়তায় একটি গরু কোরবানি দেওয়া হয়। স্থানীয়রা জানান, গত ৬ বছর ধরে এই গ্রামে কুরবানীর মাংস বণ্টন হয়নি। এবার দাতাদের সহযোগিতায় গ্রামবাসী মাংস পেয়ে খুশি।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে ঝিনাইগাতীর দুটি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দারা দীর্ঘদিন পর কুরবানীর মাংস পেয়ে আনন্দিত। স্থানীয়রা আশা প্রকাশ করেছেন, ভবিষ্যতে আর কেউ যেন কুরবানীর মাংস থেকে বঞ্চিত না হয়।
মানিকগঞ্জের সিংগাইরে বেলুন ফুলানোর গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে সুবর্ণা আক্তার (১৮) নামের এক গৃহবধূ নিহত হয়েছে।এ ঘটনায় আরো গৃহকর্তা আরিফসহ দুইজন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে উপজেলার চারিগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য চারিগ্রামে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে।
নিহত ওই নারীর নাম সুবর্ণা আক্তার (১৮)। সে ওই গ্রামের বেলুন বিক্রেতা হাসান মিয়ার ছেলে আরিফ হোসেনের স্ত্রী। নিহত সুবর্ণা আক্তার পৈতৃক বাড়ী নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলায়। আহত আরিফ হোসেনকে (২২) ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। প্রতিবেশী অন্য এক নারীও আহতের খবর পাওয়া যায়।
স্থানীয় কহিনুর জানান, উপজেলার মধ্য চারিগ্রামের মো. হাসান মিয়ার বাড়িতে সকাল ৯টার দিকে বেলুন ফুলানোর জন্য ব্যবহৃত গ্যাস সিলিন্ডারে গ্যাস তৈরি করছিল আরিফ। এ সময় অতিরিক্ত গরম হয়ে হঠাৎ বিস্ফোরিত হয়। এতেপাশে রান্না করছিল আরিফের স্ত্রী সুবর্ণা। এতে তার বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে গুরুতর আহত হয়। এ সময় তাদের ডাকচিৎকারে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে এসে আরিফের স্ত্রী সুবর্ণাকে (১৮) সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হলে কর্তৃব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আরিফ (২২) গুরুতর আহত হওয়ার তাকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে রেফার্ড করেন। এ ঘটনায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দে হাসানের প্রতিবেশী কাওছারের স্ত্রী জোস্না আক্তার (৩৩) আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
সিংগাইর থানার ওসি জেওএম তৌফিক আজম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে ও আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি)'র মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘যদি দৃশ্যমান বিচারিক প্রক্রিয়াটি দেখতে পাই, মৌলিক সংস্কারগুলো আমাদের সামনে দৃশ্যমান হয় এবং নির্বাচনকালীন থেকে সংস্কার প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘বিচার বিভাগের, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর, নির্বাচন কমিশনের সংস্কারগুলো সম্পন্ন হলে এপ্রিলে নির্বাচন নিয়ে আমাদের কোন দ্বিমত নেই৷ কিন্তু তার পূর্বে নির্বাচনকালীন সংস্কারগুলো নিশ্চিত করতে হবে। বিচার ও দৃশ্যামান বিচারিক কার্যক্রম নিশ্চিত করতে হবে এবং মৌলিক সংস্কারের দৃশ্যমান অবস্থা দেখতে চাই।’
আজ সোমবার দুপুরে পঞ্চগড় জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়ে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এসব কথা বলেন।
সারজিস আলম বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা সব সময় দেখে এসেছি নির্বাচনকালীন সময় ক্ষমতার অপব্যবহার করা হয়, কালো টাকার ব্যবহারসহ পেশি শক্তি অপব্যবহার করা হয়। আমরা এই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এই নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড দেখতে চাই। যেখানে ছোট দল হউক, বড় দল হউক সবাই তাদের জায়গা থেকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু একটি নির্বাচনে একদম স্বয়ংক্রিয় ও স্বয়ং সম্পূর্ণভাবে নির্বাচনে তারা অংশগ্রহণ করতে পারবে।’
নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে সারজিস আলম বলেন, ‘কেউ যেন কারও দ্বারা ক্ষমতার অপব্যবহারের শিকার না হয়৷ এমন কি অপ্রীতিকর ঘটনাগুলো আমরা বিগত নির্বাচনগুলোতে ভোট কেন্দ্র থেকে শুরু করে নির্বাচনী এলাকায় দেখেছি, ভোটকেন্দ্র দখল করা, ব্যালট চুরি করা, এই ধরনের ঘটনাগুলো যেন আর আমরা আগামীর বাংলাদেশে কোন নির্বাচনে না দেখি৷ এক্ষেত্রে অন্তবর্তীকালীন সরকারকে ততোটুকই পেশাদারিত্বের পরিচয় দিতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনির মাধ্যমে, নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে এবং এবং বিচার বিভাগের মাধ্যমে৷
এসময় জাতীয় নাগরিক পাটি (এনসিপি) মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণ অঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ, জাতীয় নাগরিক পাটির সদর উপজেলা শাখার সমন্বয়ক তানবিরুল বারী নয়ন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন ।
এর আগে সারজিস আলম হাসনাত আবদুল্লাহকে সঙ্গে নিয়ে চৌরঙ্গী মোড়ে তার নেতাকর্মী ও সমর্থকদের সঙ্গে ঈদ পরবর্তী শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।