রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার কালুপাড়া ইউনিয়নের চারারীর বিল। আসলে ৪০ বছর আগে এটি বিল ছিল। ক্রমে ভরাট হয়ে যায়। এরপর ব্যক্তি-মালিকানায় রেকর্ডও হয় এর অনেকটা অংশ। বর্তমানে সেখানে চাষাবাদ হচ্ছে। হঠাৎ করেই বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহারের জন্য তিন কোটি টাকা ব্যয়ে চারারীর বিলের বড় একটি অংশসহ গোপীনাথপুরের নৈমুল্লার বিল ও পৌর শহরের পাটোয়াকামড়ী বিল খননের উদ্যোগ নিয়েছে। আর এতেই ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন এলাকাবাসী।
স্থানীয়রা জানান, সড়কের পাশে আবাদি জমি নষ্ট করে বিল উদ্ধারের নামে খনন করা হচ্ছে। এটি আসলে প্রকল্পের টাকা লুটপাটের চেষ্টা বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের।
চারারীর বিল ১৩ একর ১৮ শতক, নৈমুল্লার বিল ১২ একর ৫০ শতক ও পাটোয়াকামড়ী বিল ১১ একর ৩০ শতক খননের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে গত ২ ফেব্রুয়ারি এই খননকাজ শুরু করা হয়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে উপজেলা আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, ‘চারারীর বিলটি ৪০ বছর আগেই আবাদি জমিতে পরিণত হয়। তখন থেকে এলাকার মানুষ ধানসহ বিভিন্ন ফসল চাষ করে আসছিলেন। সেখানে খনন প্রকল্প নিয়ে বরেন্দ্রর কর্মকর্তারা ঠিকাদারের সঙ্গে মিলে লাখ লাখ টাকা হরিলুট করে খাচ্ছেন।’
‘নৈমুল্লার বিল খননে বরাদ্দ ১ কোটি টাকার ওপর। কিন্তু সেখানে সর্বোচ্চ কাজ হবে ১০ লাখ টাকার,’ বললেন গোপীনাথপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমান।
আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বলেন, ‘সবাই জানে সরকারি টাকা হরিলুট করতেই খনন প্রকল্প হাতে নিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ।’
সম্প্রতি পৌর শহরের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে পাটোয়াকামড়ী প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, প্রকল্পে চারটি এক্সকাভেটর যন্ত্র (ভেকু) দিয়ে খননকাজ করা হচ্ছে। এই যন্ত্রগুলোর চালক সুমন ও আতিক বলেন, ‘৬০ লাখ ৪৩ হাজার টাকার পাটোয়াকামড়ী বিলের পুনর্খননের কাজটি মূল ঠিকাদার স্বপনের কাছ থেকে ১৭ লাখ টাকায় নিয়েছেন সাব ঠিকাদার শাহাদত।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ঠিকাদার স্বপন বলেন, ‘শাহাদতের কাছে কোনো কাজ বিক্রি করিনি। শাহাদতসহ চারজন যৌথভাবে ওই প্রকল্পের কাজ করছি।’
পৌর সভার প্যানেল মেয়র মানিক রায় বলেন, ‘এই জায়গাটির মূল্য শত কোটি টাকা। বছরে দুই ফসল হয়। প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এক ইঞ্চি জায়গা যেন অনাবাদি না থাকে। আর সেই আবাদি জায়গায় খাল খনন করে পৌরবাসীকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলা হচ্ছে।’
পৌর মেয়র টুটুল চৌধুরী বলেন, ‘পৌর শহরের ভেতর এই জায়গাটি খাল খনন না করে বড় ধরনের যে কোনো শিল্পপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা যেত, এতে এলাকার হাজারও মানুষের কর্সংস্থানের ব্যবস্থা হতো।’
এদিকে চারারীর বিলের ব্যক্তি-মালিকানাধীন আবাদি জমি খননে প্রশাসন এনওসি দিয়েছে বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে। এরপর কর্তৃপক্ষ বিল খননে দরপত্র আহ্বান করলেও স্থানীয়দের বাধার মুখে তা করতে পারছে না।
এ বিষয়ে কালুপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল হক মানিক বলেন, ‘রেকর্ডভুক্ত জমি খনন করতে প্রশাসন কীভাবে এনওসি দেয়। আর দিলেও এখন খনন করতে পারছে না কেন। এসব করে শুধু এলাকার মানুষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করা হচ্ছে।’
চেয়ারম্যান মানিক আরও অভিযোগ করে বলেন, ‘চারারীর বিল খননকাজে যে বরাদ্দ নেয়া হয়েছে, তার অর্ধেক টাকাও খনন করতে লাগবে না। মূলত বরেন্দ্র যত্রতত্র খননকাজ নিয়ে ঠিকাদারের মাধ্যমে টাকা লুটপাট করছে।’
গোপীনাথপুর ইউনিয়নের নৈমুল্লার বিল এলাকায় খননকাজ করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়ে বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষ।
এলাকার আওয়ামী লীগ নেতা লুৎফর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘বিলটি খনন করতে সর্বোচ্চ ব্যয় হবে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। কিন্তু বরাদ্দ নেয়া হয়েছে ১ কোটি ১ লাখ টাকা।’
এ বিষয়ে রংপুর নির্বাহী প্রকৌশলী এ কে এম মশিউর রহমান বলেন, ‘দরপত্রের আগে স্থানীয় প্রশাসন তিনটি বিলের এনওসি দিয়েছে। সেখানে বলা ছিল, সরকারি বিল খননে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু এখন অনেক বাধা। বিলের দরপত্র নিয়ে কিছুটা বিপাকে পড়েছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের কাজে কোনো অনিয়মের সুযোগ নেই। থাকলে এত কাজ করতে পারতাম না।’
রংপুরের প্রকল্প সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান বলেন, ‘কাজে কোনো অনিয়ম হচ্ছে না। বিধি অনুযায়ী বদরগঞ্জের তিনটি বিলের দরপত্র আহ্বান করা হয়। এখন শুনছি, বিলের কিছু অংশ নাকি ব্যক্তি-মালিকানায় আছে। যদি কারও মালিকানায় থাকে তাহলে সেটি বাদ দিয়ে খননকাজ করা হবে।’
এ ব্যাপারে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন, ‘পৌর শহরে বিল খননে সংসদ সদস্য ডিও লিটার দেয়ায় সেখানে খনন প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। যদি সেখানে কারও নামে রেকর্ড থাকে তাহলে সেটি বাদ দিয়ে খনন করতে বলা হয়েছে।’
ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।
পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।
বাংলাদেশে খাদ্য উৎপাদন বাড়লেও বালাইনাশকের অনিয়ন্ত্রিত ব্যবহারে স্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিপদে পড়েছে। বিষাক্ত এসব বালাইনাশক মানব স্বাস্থ্য, মাটি, পানি ও পরিবেশের ক্ষতি করছে। দেশে বালাইনাশকের মধ্যে ছত্রাকনাশকের ব্যবহার সর্বাধিক ৪৫-৪৬ শতাংশ, এরপর কীটনাশক ৩৩ শতাংশ এবং আগাছানাশক ২০-২১ শতাংশ। এগুলোর বেশির ভাগই মাটি, পানি ও বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে। এই সমস্যা সমাধানে দেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তি ও অনুজীব দিয়ে ফসলের উৎপাদন বর্ধক ও পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবনের দাবি করেছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।
বাকৃবির উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের নেতৃত্বে গবেষক দলটি ট্রাইকোডার্মা এসপেরেলাম নামক ছত্রাক ব্যবহার করে একটি নতুন ছত্রাকনাশক উদ্ভাবন করেছেন যার নাম পি.জি. ট্রাইকোডার্মা। অধ্যাপক মঞ্জিল ছত্রাকটি আইসোলেট ও বায়োফর্মুলেশন উন্নয়ন করেন। গবেষক দলের অন্য দুই গবেষক- কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. কে. এম. মহিউদ্দিন এর গুণগত মান ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করেন এবং ফার্ম স্ট্রাকচার ও এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আলী আশরাফ উৎপাদন ও পরিবেশগত মূল্যায়ন পরিচালনা করেন। গবেষণাটি বাকৃবির মাইক্রোবায়োলজি ও বায়োকন্ট্রোল ল্যাবে সম্পন্ন হয়।
পরিবেশবান্ধব এই ছত্রাকনাশক সম্পর্কে গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির মূল উপাদান ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম যা আমাদের দেশের মাটি থেকে গবেষণার মাধ্যমে শনাক্ত ও আলাদা করা হয়েছে। অর্থাৎ এটি সম্পূর্ণ স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা এবং বাংলাদেশের জলবায়ুতে অনুজীবটি ভালোভাবে অভিযোজিত। গবেষণার শুরুতে দেশের বিভিন্ন কৃষি পরিবেশ অঞ্চল থেকে কয়েক হাজার মাটি ও রাইজোস্ফিয়ারের (শিকড়ঘেঁষা) মাটির নমুনা সংগ্রহ করে শতাধিক ট্রাইকোডার্মা ছত্রাক পৃথক করা হয়েছে। ট্রাইকোডার্মার শতাধিক প্রজাতি থাকলেও আমরা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম বেছে নিয়েছি কারণ এটি আমাদের দেশের পরিবেশের সঙ্গে সবচেয়ে ভালোভাবে অভিযোজিত এবং অধিক কার্যকর। এছাড়া দেশীয় অণুজীব থেকে এই ছত্রাকনাশকটির উন্নয়ন করা হয়েছে বিধায় বাজারে প্রাপ্ত অন্যান্য আমদানিকৃত ট্রাইকোডার্মার চেয়ে এটি বেশি কার্যকর।
ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল আরও বলেন, ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হলো এটি একযোগে ছত্রাকনাশক এবং জৈব সার হিসেবে কাজ করে। এটি একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন জৈব ছত্রাকনাশক যা এনজাইম, উদ্বায়ী যৌগ ও সেকেন্ডারি মেটাবোলাইটসহ বিভিন্ন জৈব উপাদান উৎপাদনে সক্ষম। এই উপাদানগুলো উদ্ভিদের রোগ প্রতিরোধ শক্তি বাড়ায়, শিকড়ে বসবাস করে পুষ্টি গ্রহণ ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং তাপ, অম্লতা ও লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। আমাদের এই গবেষক দলই দেশে প্রথমবারের মতো স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ করা ট্রাইকোডার্মা এস্পেরেলাম প্রজাতির জিন সিকুয়েন্সিং করতে সক্ষম হয়েছে এবং আন্তর্জাতিকভাবেও তা নথিভুক্ত হয়েছে। NCBI Gene Bank-এ এটি সংরক্ষণ করা হয়েছে (এর একসেশন নম্বর: OR125623)।
পি.জি. ট্রাইকোডার্মা ব্যবহারে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি সম্পর্কে অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, ছত্রাকনাশকটির প্রয়োগে আমরা ছত্রাকজনিত রোগ প্রতিরোধের পাশাপাশি বিভিন্ন ফসলের উল্লেখযোগ্য ফলন বৃদ্ধি লক্ষ্য করেছি। টমেটো, আলু ও বেগুনে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ, পালং ও পুঁইশাকে ফলন বেড়েছে ৪০-৫০শতাংশ, পানে ফলন বেড়েছে প্রায় ৪৫-৫০ শতাংশ, চা গাছে ফলন বৃদ্ধি পেয়েছে ৮০-১০০ শতাংশ, ঢেঁড়স, মরিচ ও শসায় ফলন বেড়েছে ১৫-২০ শতাংশ। ডাল, ধান ও ফলগাছে রোগ দমন ও গাছের স্বাস্থ্য ভালো থাকায় ফলন স্থিতিশীল বা ধীরে ধীরে বৃদ্ধির ধারা দেখা যাচ্ছে। অধ্যাপক মঞ্জিল আরও বলেন, পি.জি.ট্রাইকোডার্মা গোড়াপচা, কান্ডপচা, পাতাপচা ও ব্লাইট দমনে কার্যকর, শিকড়ের বৃদ্ধি ও পুষ্টি গ্রহণ বাড়িয়ে ফসলের উৎপাদন ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ায়। এটি ছাদ কৃষি ও মৎস্য চাষেও উপযোগী যা কৃষকের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক।
অধ্যাপক মহিউদ্দিন বলেন, ছত্রাকনাশকটি জৈব সার হিসেবেও কাজ করার কারণে মাঠ পর্যায়ের পরীক্ষায় দেখা গেছে ফসল উৎপাদনে রাসায়নিক সার প্রায় ২০-২৫ শতাংশ কম ব্যবহার করেও প্রায় একই বা বেশি ফলন পাওয়া সম্ভব হয়েছে। জৈব সার হিসেবে এটি ফসফেট দ্রাব্যকরণ করে, নাইট্রোজেন ব্যবহারের দক্ষতা বাড়ায়, মাটির অম্লতা ও লবণাক্ততা নিয়ন্ত্রণ করে। শিশা, ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম ইত্যাদি ভারী ধাতু সম্বলিত দূষিত মাটিতে নিরাপদ ফসল উৎপাদন সংক্রান্ত গবেষণায় ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেছে। তাই নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিতকরণে এটি টেকসই ও বিজ্ঞানসম্মত জৈবিক বিকল্প হতে পারে।
গবেষক দলের প্রধান অধ্যাপক শাহজাহান মঞ্জিল বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশকটি জলজ পরিবেশের জন্যও নিরাপদ। এটি কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক উপাদান বহন করে না এবং প্রয়োগের পর পানিতে পড়ে গেলে মাছ, ব্যাঙ, শামুক বা অন্যান্য জলজ প্রাণীর উপর কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। আমাদের গবেষণায়ও এ পর্যন্ত জলজ প্রাণীতে কোনো বিরূপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
এই বিষয়ে তিনি আরও বলেন, বাকৃবির অ্যাকুয়াকালচার বিভাগের সহযোগিতায় তেলাপিয়া মাছের ওপর একটি যৌথ গবেষণা পরিচালনা করেছি। এই গবেষণায় পি.জি. ট্রাইকোডার্মা-এর প্রয়োগ শুধুমাত্র জমির ফসল নয়, বরং জলজ পরিবেশ ও মাছের চাষেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে প্রমাণিত হয়েছে। নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে ফিড সাপ্লিমেন্ট হিসেবে পি.জি. ট্রাইকোডার্মার প্রয়োগে মাছের ওজন ও আকার বৃদ্ধি, পানির গুণমান উন্নয়ন, ক্ষতিকর রাসায়নিক ও প্যাথোজেনিক ছত্রাক কমেছে এবং দূষণ হ্রাস পেয়েছে। বড় পরিসরে ব্যবহারের আগে মাছ চাষের ধরন ও পুকুর পরিস্থিতি বিবেচনা জরুরি। আমাদের গবেষণা চলছে, আশা করি ভবিষ্যতে এটি টেকসই অ্যাকুয়াকালচারের সমাধান হতে পারে।
গবেষকবৃন্দ বলেন, এই উদ্যোগটি ২০০১ সাল থেকে শুরু হয়। তখন থেকে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ছোট ছোট অনুদানের মাধ্যমে গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। গত বছর বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) এর মাধ্যমে এই প্রযুক্তির প্রসার ও প্রচারের জন্য আর্থিক সহায়তা প্রদান করেছে। বর্তমানে এটি পরীক্ষামূলক উৎপাদন পর্যায়ে রয়েছে এবং বাণিজ্যিক নিবন্ধন প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। দেশীয় কাঁচামাল ব্যবহৃত হওয়ায় এটি সহজলভ্য ও কম মূল্যে কৃষকদের কাছে পৌঁছানো সম্ভব হবে। পর্যাপ্ত গবেষণা বরাদ্দ পেলে ভবিষ্যতে আমাদের বায়ো-ইনসেক্টিসাইড এবং বহুমুখী কার্যক্ষমতা সম্পন্ন জৈব বালাইনাশক তৈরির লক্ষ্য নিয়ে কাজ করার ইচ্ছা রয়েছে।
ইতোমধ্যে ছত্রাকনাশকটির বেশ কয়েকটি পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে। ছত্রাকনাশকটির ব্যবহারকারীদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা এটির বাস্তবিক সুফলতা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন।
মৌলভীবাজারের ফুলতলা টি এস্টেটের এসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার শিহাব উদ্দিন চৌধুরী বলেন, আমি আমার চা বাগানে পিজি ট্রাইকোডার্মা ব্যবহার করে পূর্বের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি ফলন পেয়েছি। আগে যেসব রাসায়নিক ছত্রাকনাশক ও মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট ব্যবহার করতাম সেগুলোর ব্যবহার অনেকটাই কমিয়ে দিয়েছি। ট্রাইকোডার্মা একদিকে যেমন ছত্রাকনাশক হিসেবে কাজ করে, অন্যদিকে গাছের শুটিং বিহেভিয়ারও (নতুন কুঁড়ি আসার প্রবণতা) বাড়িয়ে দেয়। আমি সাধারণত প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম ব্যবহার করি, তবে ৫ গ্রাম দিলে ফল আরও ভালো হয়। এছাড়া এটি তুলনামূলকভাবে সস্তা।
নরসিংদীর পান চাষি কৃষিবিদ শফিকুল ইসলাম বলেন, পান চাষে গোড়া পচা মারাত্মক একটি রোগ। এর আক্রমণে গাছ মারা যায়। এই সমস্যা সমাধানে বিভিন্ন রাসায়নিক বালাইনাশক ব্যবহার করতাম। তবে এই ছত্রাকনাশক ব্যবহারের পরে গাছ আর ওই রোগে মারা যায় নি বিধায় ব্যাপক লাভবান হয়েছি। প্রায় অর্ধেক খরচ সাশ্রয় করে ফলন অনেক বেড়েছে।
ময়মনসিংহ বিভাগীয় কৃষি অফিসের অতিরিক্ত পরিচালক ড. সালমা লাইজু বলেন, পরিবেশবান্ধব ছত্রাকনাশক উদ্ভাবিত হলে তা মানুষের স্বাস্থ্য, পরিবেশ, গবাদিপশু সকলকিছুর জন্যই উপকারী হবে। এটি দেশের জন্য বিশাল এক সম্ভাবনা হতে পারে। যদি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শাহজাহান মঞ্জিলের উদ্ভাবিত ছত্রাকনাশকটি সাশ্রয়ীমূল্যে পাওয়া গেলে আমাদের কৃষি অফিস থেকে সেটি কিনে সাধারণ কৃষকদের সাহায্য করতে পারবো।
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) উপদেশমূলক মতামত বাধ্যতামূলক না হলেও বর্তমান বৈশ্বিক বৈরি রাজনৈতিক বাস্তবতার বিপরীতে জলবায়ু নীতি পরিবর্তনে অনেক নৈতিক সাহস যোগাবে। এটি আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণে চাপ সৃষ্টি করবে। এ চাপ বিবেচনায় নিয়ে রাষ্ট্রগুলোকে নীতিমালায় পরিবর্তন আনতেই হবে।”
আজ পরিবেশ অধিদপ্তরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের (আইসিজে) জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রগুলোর বাধ্যবাধকতা সংক্রান্ত উপদেশমূলক মতামত বিষয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্যে পরিবেশ উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন এমন একটি ইস্যু যেখানে শুধু সুশীল সমাজ নয়, তরুণ প্রজন্মকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আজকের প্রজন্ম হয়তো টিকে যাবে, কিন্তু ভবিষ্যৎ প্রজন্ম মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। আমরা যদি এখনই পদক্ষেপ না নিই, তবে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আমাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনবে।”
উপদেষ্টা তার বক্তব্যে নদীভাঙন, অবকাঠামোগত দুর্বলতা, জলবায়ু অভিযোজন পরিকল্পনা, এবং স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “নদীভাঙনপ্রবণ এলাকায় পুনর্বাসন ছাড়া টেকসই সমাধান সম্ভব নয়। ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ডকে আরও কার্যকর করতে হবে, যেখানে সরকার এবং এনজিও একসাথে কাজ করবে।”
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ‘ন্যাচারাল রিসোর্স প্রটেকশন’ ও 'মরাল অবলিগেশন'-এর দৃষ্টিভঙ্গির কথাও তুলে ধরেন এবং উপদেষ্টা সবার প্রতি আহ্বান জানান—“আসুন, ১০-১২টি পরিবেশবান্ধব বার্তা তৈরি করে তরুণদের মাধ্যমে দেশের জন্য শক্তিশালী জলবায়ু বার্তা পৌঁছে দিই।”
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত গোলটেবিল বৈঠকে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী ও জলবায়ু পরিবর্তন নিগোশিয়েটর অ্যাডভোকেট হাফিজ খান। অধ্যাপক পায়াম আখভান, অধ্যাপক মেরি-ক্লেয়ার এবং নিকোল অ্যান ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (জলবায়ু পরিবর্তন) মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ; পরিবেশ অঅধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড মো: কামরুজ্জামান ; ন্যাকমের নির্বাহী পরিচালক এস.এম. মুনজুরুল হান্নান খান; অ্যাকশনএইডের কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির; পিকেএসএস এর পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন বিভাগের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডঃ ফজলে রাব্বী সাদেক আহমেদ; পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মো: জিয়াউল হক ও মির্জা শওকত আলী ; ব্রাকের পরিচালক লিয়াকত আলী ; সিপিআরডির প্রধান নির্বাহী মোঃ শামসুদ্দোহা; ফ্রেন্ডশিপের সিনিয়র পরিচালক কাজী আমদাদুল হক এবং ইয়ুথ নেট গ্লোবালের নির্বাহী সমন্বয়কারী সোহানুর রহমান প্রমুখ।
গোলটেবিল আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, তরুণ প্রতিনিধি, পরিবেশবাদী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলার মদনপুর-মদনগঞ্জ সড়কের দীর্ঘদিনের বেহাল অবস্থার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় জনতা। গত শুক্রবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বন্দর নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড এলাকায় এই কর্মসূচি পালন করা হয়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এতে প্রায়ই যানবাহন উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে, এমনকি মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। তারা দ্রুত এই সড়ক সংস্কারের দাবি জানান এবং এ বিষয়ে দায়িত্বে অবহেলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনার আহ্বান জানান। বিক্ষোভে একাত্মতা প্রকাশ করে যাত্রীরা এবং পরিবহন শ্রমিকরাও অংশগ্রহণ করেন।
গণঅধিকার পরিষদের নারায়ণগঞ্জ জেলার সহ-সভাপতি মেহেবুবা আক্তার বলেন, “বহুবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও জেলা প্রশাসকের (ডিসি) দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সাবেক সদস্যসচিব হৃদয় ভূইয়া বলেন, “এই সড়কে অতিরিক্ত ওজনের পরিবহন চলাচলের ফলে দ্রুত সড়কটি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অনুমোদনবিহীন এসব যানবাহনের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার দাবি জানাচ্ছি।”
বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লিয়াকত আলী জানান, “সকাল ১০টা থেকে স্থানীয় ছাত্র-জনতা সড়ক অবরোধ করে। খবর পেয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে এসে আশ্বাস দেন যে, আগামী রবিবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হবে। এরপর অবরোধ তুলে নেওয়া হয়।”
জুলাই পুনর্জাগরণ উদযাপনের অংশ হিসেবে নওগাঁয় ‘জুলাইয়ের মায়েরা’ শীর্ষক চলচ্চিত্র প্রদর্শণ, অভিভাবক সমাবেশ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (২ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর নওগাঁর সহযোগিতায় জেলা প্রশাসন এর আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল।
অনুষ্ঠানে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সাদিয়া আফরিনের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সাফিউল সারোয়ার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সোহেল রানা, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইবনুল আবেদীন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদ মাহফুজ আলম শ্রাবণের মা বেবি নাজনীন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থী ফজলে রাব্বী, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মা হিসেবে তাসলিমা ফেরদৌস, নুর তাজসহ অন্যান্যরা।
এসময় বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তারা, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে শহীদের পরিবারের সদস্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে সন্তানদের অনুপ্রেরনা দেওয়া মায়েরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্য জেলা প্রশাসক বলেন, জুলাই আগস্টে ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে মমতাময়ী মায়েদের অবদান অনস্বীকার্য। আন্দোলনরে সময় মায়ের সামনে থেকে সন্তানকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, মা জানে না সে সন্তানকে মেরে ফেলা হবে কিনা গুম করা হবে। তারপরও অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে মায়েরা তাদের সন্তানদের সাহস জুগিয়েছেন, সমর্থন দিয়েছেন এবং প্রয়োজনে আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। যাতে তাদের সন্তানরা একটি বৈষম্যহীন সমাজে বেড়ে উঠতে পারে। মায়েরা শুধু সন্তানদের সাহস ও সমর্থন দেননি, বরং আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়ে পুরুষতান্ত্রিক সমাজে আন্দোলনকে সফল করতে সহায়তা করেছেন। অনেক মা আন্দোলনকারীদের বাড়িতে আশ্রয় দিয়েছেন এবং তাদেরকে খাবার সরবরাহ করেছেন। এ ঘটনা গুলোকে আমাদের হৃদয়ে পুনর্জাগরণ ও নতুন প্রজন্মের কাছে তোলে ধরতেই এই অনুষ্ঠানের আয়োজন।
এসময় জেলা প্রশাসক পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীদের সব জায়গায় সমান অংশ গ্রহণ ও সমান মর্যাদা নিশ্চিত করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহবান জানান।
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে পৃথক তিনটি অভিযানে মাদকদ্রব্য, কারেন্ট জাল ও আতশবাজি জব্দ করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।
শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি দেওয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শনিবার ভোরে মহিষকুন্ডি আশ্রায়ন বিওপি এলাকার পুরাতন ঠোটারপাড়া পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় ৮ হাজার ৮০ পিস ইয়াবা ও ৭৭ কেজি কারেন্ট জাল জব্দ করা হয়। এসব মালামালের বাজারমূল্য প্রায় ২৭ লাখ ৩২ হাজার টাকা।
এর আগে শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যায় রামকৃষ্ণপুর বিওপির আওতাধীন মোহাম্মদপুর মাঠে অভিযান চালিয়ে ভারতীয় ২৪ বোতল মদ এবং ২৫৭ পিস ট্যাপেন্ডেবল ট্যাবলেট জব্দ করে বিজিবি। এসবের আনুমানিক বাজারমূল্য এক লাখ ১৩ হাজার ১০০ টাকা।
একইদিন রাত ১১টার দিকে চিলমারী বিওপির আওতাধীন শান্তিপাড়া মাঠ এলাকায় আরও একটি অভিযান চালানো হয়। এ সময় বিজিবি সদস্যরা এক হাজার পিস সিলডিনাফিল ট্যাবলেট এবং ১ হাজার ৮০ পিস আতশবাজি জব্দ করেন। যার বাজারমূল্য প্রায় তিন লাখ ২৭ হাজার টাকা।
বিজিবির সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, মালিক বিহীন এসব জব্দকৃত কারেন্ট জাল তাৎক্ষণিকভাবে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়েছে এবং মাদকদ্রব্যগুলো মাদক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী ধ্বংসের জন্য ব্যাটালিয়নের মাদক স্টোরে জমা দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কুষ্টিয়া ৪৭ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহবুব মুর্শেদ রহমান বলেন, “সীমান্ত নিরাপত্তা রক্ষার পাশাপাশি মাদক ও চোরাচালান প্রতিরোধে বিজিবি সর্বদা কঠোর অবস্থানে রয়েছে। ভবিষ্যতেও এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে”
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের শমশেরনগর চা বাগান লেক থেকে রামলাল রবিদাস (৭৫) নামে এক বৃদ্ধার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১ আগস্ট) সকালে উপজেলার শমশেরনগর দেওছড়া চা বাগানের ১২ নম্বর সেকশনের একটি লেক থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়। নিহত রামলাল রবিদাস শমশেরনগর চা বাগানের বজ্রনাথ রবিদাসের ছেলে।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রামলাল গোসল করতে গিয়ে আর বাড়ি ফিরে আসেনি। পরিবারের সদস্যরা খোঁজাখুজি করে কোথাও পায়নি। পরে লেকের পাড়ে দেখতে পাওয়া যায় রামলালের গামছা, জুতা ও সাবান। গোসল করতে গিয়ে লেকে ডুবে মারা গেছেন এমন ধারনা থেকে শুক্রবার শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ি ও ফায়ারসার্ভিসের ডুবুরি সিলেট থেকে এসে লেকের পানি থেকে লাশ উদ্ধার করে।
বিষয়টি নিশ্চিত করে শমশেরনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক মাসুদ আহমদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেলে বাগানের লেকে রামলাল গোসল করতে গিয়ে পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে আমরা ধারণা করছি।পরে মরদেহ সুরতহাল রিপোর্ট তৈরী করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে জানিয়ে পরিবারের কাছে মরদেহ দেওয়া হয়েছে।’
=====
দেশের নৌপথ উন্নয়নে সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়নে কাজ করছে। নদীবন্দরগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধির মাধ্যমে আঞ্চলিক বাণিজ্য আরও গতিশীল হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন। রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন করে নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন এ কথা বলেন।
নৌ পরিবহন উপদেষ্টা ব্রি জে: অব: ড. এম সাখাওয়া হোসেন বলেন, সুলতানগঞ্জ নৌবন্দরের অবকাঠামো গত উন্নয়ন করতে উচ্চ পর্যায়ে আলাপ করতে হবে। এটা আমি পজিটিভলি দেখবো।
শুক্রবার বেলা ১১টায় রাজশাহীর গোদাগাড়ীতে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও পোর্ট অব প্রটোকল পরিদর্শন ও স্থানীয়দের সাথে মতবিনিময় করেছেন।
এ সময় তিনি বলেন, নৌবন্দরের কার্যক্রম শুরু করার জন্য এনবিআরের অনুমোদনসহ অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাস্তাঘাট প্রয়োজন। এই কার্যক্রমের সাথে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা জড়িত। কাজেই সকল পক্ষের ইতিবাচক সাড়া পাওয়া গেলে অচিরেই নদীবন্দরের কার্যক্রম শুরু হবে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান কমডোর আরিফ আহমেদ মোস্তফা, রাজশাহী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুর রহমান রিংকু ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আব্দুল ওয়াহেদ।এর আগে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাখাওয়াত হোসেন সরেজমিনে সুলতানগঞ্জ নদীবন্দর ও কোর্ট অব কল ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করেন।
ছোট্ট সিয়াম(১১)বাসার হেলিকপ্টারের আওয়াজ শুনে জানালার পাশে গিয়ে বাবাকে ডেকে দেখাচ্ছে বাবা দেখ হেলিকপ্টার অমনি একটি বুলেট এসে লাগল রায়হানের বুকে, বাবার চিৎকার! শাহবাগ উত্তাল,ছাত্র জনতার শ্লোগানে শ্লোগানে মুখর রাজপথ,উত্তপ্ত রোধে হাঁপিয়ে উঠেছে সবাই,এসময় পানির বোতল নিয়ে হাজির মুগ্ধ,পানি লাগবে পানি...মুহুর্তেই বুলেটে ঝাঝড়া হয়ে গেলে মুগ্ধের বুক, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে মুগ্ধ। রংপুরে ছাত্র জনতার মিছিলে নির্বিচারে গুলি ছুড়ছে পুলিশ,মিছিলের সামনে গিয়ে বুক পেতে দিয়ে বুলেট বুকে নিয়ে সবাইকে রক্ষা করল আবু সাঈদ। আবু সাইদের বুকে বুলেট আটকে বেঁচে গেল গণতন্ত্র,রক্ষা পেল দেশ আর এতেই পালাতে হল ১৬ বছরের স্বৈরাশাসককে।
গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের অংগ্রহণে চট্টগ্রামে ২৪ এর রঙে গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এভাবেই তোলে ধরেন আনোয়ারা উপজেলার বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা। আর এতেই চট্টগ্রাম অঞ্চলে কলেজ পর্যায়ে ১৯৩ নম্বর পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে মাদ্রাসাটি। এতে প্রথম স্থানে ব্রাক্ষ¥ণবাড়িয়া সরকারি মহিলা কলেজ পেয়েছে১৯৭ নম্বর ও তৃতীয় স্থান অধিকারী খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ পেয়েছে ১৯০ নম্বর।
গতকাল বুধবার চট্টগ্রাম মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়ের দেয়ালে চট্টগ্রাম অঞ্চলের ১১ জেলা ৩৩ টি কলেজ ও মদ্র্রাসার শিক্ষার্থী দল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা চেতনায় জুলাই ধারণ করে গ্রাফিতি তুলে ধরে।
পরে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করা হয়। প্রতিযোগীতায় অংশ গ্রহণ করেন মাদ্রাসার শিক্ষার্থী উম্মে হাবিবা মায়া, উম্মে জান্নাতুল মাওয়া সাইমা,নুসরাত শাহীন জেরিন,সুমাইয়া আক্তার মাহি ও মেহেরন্নেসা। প্রতিযোগী সকলেই খুবই স্বত:স্ফুর্ত অনুভূতি প্রকাশ করেন। তাদের ভাষায়,গ্রাফিতি ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জুলাই শহীদদে প্রতি শ্রদ্ধা ও তাঁদের স্মরণ করতে পেরে আমরা গর্বিত।
উম্মে হাবিবা মায়া বলেন,জুলাই গণঅভ্যুথানের চেতনা আগামী প্রজন্মের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে গ্রাফিতি ও চিত্রাংকন প্রতিযোগীতা অসাধারণ ভূমিকা রাখছে। গত বছর এই সময় যে সংগ্রামী যোদ্ধারা রক্তা দিয়েছে, নির্যাতিত হয়েছে, আন্দোলন করেছে, জীবন দিয়েছে তাদেরকে স্মরণ করি। আর সেই চিত্রই এই গ্রাফিতিতে ফুটে তোলার চেষ্ঠা করেছি।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ কাজী আবদুল হান্নান বলেন,প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি ও শিক্ষকরা সব ধরণের সহযোগিতা করেছে। আমার আনন্দিত।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌস হোসেন বলেন, বখতিয়ার পাড়া চারপীর আউলিয়া মাদ্রাসার এই অর্জনে পুরো উপজেলা গর্বিত। এ প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মাঝে জুলাই চেতনা ধারণ করে রাখতে বিশেষ ভুমিকা রাখবে।